আর তাছাড়া এই রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের সমালোচনা ও কুৎসা তো ভারতীয়রা ও বিশেষভাবে বাঙ্গালীরা অনবরত করেছে ও করছে নানাভাবে নানাঢঙ্গে। আর সেগুলির প্রচার হ'য়ে চলেছে ইউ টিউব, ফেসবুক ইত্যাদি নানা মাধ্যমে। সেগুলি কি কারও চোখে পড়ছে না?
আর, বিদেশীরা তো প্রেমের বান ডেকেছে। তাঁরা তো কৃষ্ণের সমালোচনা করছে না। তাঁরা কি করছে? তাঁরা কৃষ্ণপ্রেমে মাতোয়ারা হ'য়ে নাচছে, গাইছে, প্রবচন দিচ্ছে। তাঁরা তো গেরুয়া রঙ্গে শরীর রাঙিয়ে নিয়েছে, মনকে রাঙ্গিয়েছে কি নেয়নি সেটা কে দেখতে যাচ্ছে? ভারতীয় কৃষ্ণপ্রেমীরা কি কৃষ্ণের রঙ্গে নিজের মনকে রাঙ্গিয়েছে? আপনার ভারতীয় কৃষ্ণপ্রেমীরা ও সনাতনীরা কৃষ্ণ যে আবার আসবে বলেছিল সেই কথা মানে? বিশ্বাস করে? সেই কথায় তো তাঁরা মানে নি ও মানে না। গেরুয়া বসন ও চন্দনে ঢেকে যাওয়া ভারতীয় ধর্মগুরুরা বা ধর্মের পতাকার তলায় বসে থাকা কথার স্রোতে ভাসা শুধু প্রবচন দিয়ে যাওয়া বাচ্চা থেকে বুড়ো ধর্মাত্মারা তো কৃষ্ণের নবরূপকে অকথ্য কুকথ্য গালাগালি দিয়ে চলেছে এবং তা প্রকাশ হ'য়ে চলেছে মিডিয়ায়। তাহ'লে পথ দেখিয়েছে বা দেখাচ্ছে কে বা কারা? আপনি কি পারবেন বিপুল অর্থশক্তি যাদের হাতে আছে তাঁদের সঙ্গে? আপনার আমার না আছে অর্থের জোর আর না আছে ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি, ভালোবাসা, প্রেম, অনুভূতি, উপলব্ধি। যা আছে সবই লোক দেখানো। এই জালি জীবন নিয়ে লড়বেন পারমানবিক শক্তির চেয়েও শক্তিশালী অর্থ নামক বিনাশ সৃষ্টিকারী অস্ত্রের ভয়ংকর মারণ অস্ত্রের সঙ্গে?
ভারতের আগামী দিন ভয়ংকর এভাবেও হ'তে পারে--- তথাকথিত দেশীয় ও বহিরাগত কৃষ্ণপ্রেমীদের মধ্যে কে প্রকৃত ও কে অপ্রকৃত কৃষ্ণপ্রেমী তাই নিয়ে। আর তাই নিয়ে হ'তে পারে সংঘাত। আরও সংঘাত হ'তে পারে তথাকথিত হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও সনাতনীদের মধ্যে। ইদানীং দেখবেন হঠাৎ ক'রে সনাতনীদের জাগরণ আর সেই জাগরণ ইউটিউব ও ফেসবুকের মতো শক্তিশালী মিডিয়ায়। যেমন হঠাৎ ক'রে ১৯৭৫ সালে একটা 'জয় সন্তোষী মা' সিনেমা রিলিজ হওয়ার পর সারা দেশের ভক্তিমতি মায়েরা লাফ দিয়ে ঝাঁপ দেবার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল দেশ জুড়ে সন্তোষী মায়ের পুজায়। যেমন কিছুদিন আগেও আমরা দেখতে পেলাম ভারতবর্ষে এত মহান মহান সন্তপুরুষ সন্ন্যাসীর মধ্যে হঠাৎ লোকনাথ বাবার উত্থান! চোখে পড়ার মতো সেই উত্থান কলকাতা ও তার আশপাশের জেলা জুড়ে রমরমিয়ে ছেয়ে গেল। তারকেশ্বরে জল নিয়ে যাবার প্রাচীন ইতিহাসের মতো লোকনাথ বাবার নামে কাঁধে জল নিয়ে পুজো দিতে যাওয়া শুরু হ'য়ে গেল। কারণ লোকনাথ বাবা নাকি জ্যান্ত শিব। আর এই প্রচার উঠলো বালক ব্রহ্মচারী মহারাজের দেহ রাখার পরে যখন সন্তানদলের প্রচার ঝিমিয়ে গেল। আর এ সবই বিশেষ কিছু অঞ্চল জুড়ে সীমাবদ্ধ ছিল। আর, সেই উত্থান হাউই বাজির মত আলো ছড়িয়ে উপরে উঠে নিভে গিয়ে গভীর অন্ধকারে ডুবে যাবার মতো উত্থান।
তাহ'লে ইস্কনের হঠাৎ বিরাট বিশাল ব্যাপারে আশ্চর্যের কি আছে? কারণ পুকুর ভর্তি ছোটো বড় মাছ তো কিলবিল করছে। ভালোমতো সুগন্ধি চার তৈরী করলেই তো মাছ টপাটপ গিলবে! তাই না? পুকুর ভর্তি কিলবিল করা মাছ আর দেশজুড়ে কোটি কোটি মানুষের দেশ এই ভারতবর্ষ! ধর্ম ও রাজনীতির ময়দানে জাল ফেল আর ফটাফট ধ'রে নাও মানুষ-মানুষ আর মানূষ। আর, নাচুন গানের তালে তালে।
যেমন দেখলাম মহাত্মা অমোঘ লীলা দাসের শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণ ও শ্রীশ্রীবিবেকানন্দ কে কটুক্তির প্রতিবাদে একজন প্রতিবাদ করেছেন কটূক্তির ব্যাখ্যা সহ একটা ভিডিও দিয়ে। সেই ভিডিও দেখেছিলাম। ভিডিওতে দেখাচ্ছে অমোঘ লীলা দাস বক্তব্য শেষে বলছেন, আসুন আমরা একটু নাচা গানা করি। আর তারপরেই যে নাচের ভিডিওটা দেখলাম সেখানে দেখাচ্ছে গেরুয়া বসন ধারী ইসকন সন্ন্যাসীরা নাচছে একজন জাঙ্গিয়া আর ব্রেসিয়ার পড়া শ্বেতাঙ্গিনীর সাথে।
সেই ধর্মীয় নাচ দেখতে দেখতে তখন আমার মনে হ'লো এই-ই তো জীবন, যাক না যেদিকে যেতে চায় প্রাণ, বেয়ারা চালাও ফোয়ারা জিন শেরি স্যাম্পেন রাম। আর আমারও মনে হ'লে নাচতে হ'লে নাচো এই গান গেয়ে,
নাচ মেরী জান, ফটাফট ফট
বাত মেরী মান ফটাফট ফট
ইয়ে জমানা ইয়ে তারানা নয়া ফটাফট ফট।
দেখো দেখো দেখো দেখো নয়া ডান্স কা নামুনা
কভি ম্যায় তুমে ছুউঙ্গা কভি তু মুঝে ছুনা
মুঝে ছু মুঝে ছু মুঝে ছু মুঝে ছু-উ-উ-উ-উ
নঈ তান নঈ তাল ফটাফট ফট
নাচ মেরী জান, ফটাফট ফট
বাত মেরী মান ফটাফট ফট
ইয়ে জমানা ইয়ে তারানা নয়া ফটাফট ফট।
তেরী মেরী জোড়ি প্যারী তু হ্যায় শোলা ম্যায় চিঙ্গারি
তেরে রূপ কা ম্যায় মারা মেরে প্যার কি তু মারি
মেরা তু মেরী তু মেরা তু মেরী তু
ম্যায় হু তীর তু কামান
ফটাফট ফট
নাচ মেরী জান, ফটাফট ফট
বাত মেরী মান ফটাফট ফট
ইয়ে জমানা ইয়ে তারানা নয়া ফটাফট ফট।
আমার মনে হ'লো বর্তমানে এটাই কৃষ্ণ আরাধনার শ্রেষ্ঠ গান হওয়া উচিত তথাকথিত কৃষনপ্রেমীদের জন্য।
আপনার ধারণা মতো আগামী দিন ভয়ংকর হ'তে পারে। সংঘাত হ'তে পারে উচ্চ ও নীচ জাতের ভেদাভেদ নিয়ে ধর্ম কে কেন্দ্র ক'রে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। সবেতেই প্রধান ভুমিকা থাকবে ধর্ম্ম ও ঈশ্বর।
আর এখানেই প্রধান ভূমিকা পালনের দায়িত্ব এসে পড়বে সৎসঙ্গ ও সৎসঙ্গীদের মধ্যে। কারণ তিনি বলেছিলেন,
মনে রেখো______পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সৎসঙ্গের ওপর।"
সেইদিনই সারা ভারত তথা বিশ্ব বুঝতে পারবে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র কেন এসেছিলেন তাঁর সময়ের অনেক অনেক আগেই এত তাড়াতাড়ি আর তিনি প্রকৃত কি দিয়ে গেছিলেন এবং কি বলে গেছিলেন মানুষের কাছে। বুঝতে পারবে কেন তাঁকে তাঁর এক পরম ভক্ত হার্ট স্পেশালিস্ট ডঃ জে সি গুপ্ত তাঁর কোষ্ঠীর ছকটি বিচার ক'রে বলেছিলেন, "আপনার পরিবেশ আপনার মর্যাদা বুঝতে পারবে না। You are much in advance of your time. ( আপনি আপনার সময়ের নহু পূর্বে এসেছেন )।
আর, এই ভয়ংকর দিনের জন্য সেদিন সৎসঙ্গীরাও থাকবে দায়ী; বিশেষত বাঙালি সৎসঙ্গী। ( লেখা ১৪ই জুলাই, ২০২৩ )
No comments:
Post a Comment