Powered By Blogger

Monday, November 30, 2015

শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর!!!!!



 
কোঝিকোরে মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের এক সভায় সুন্নি নেতা এপি আব্বোবেকার মুসলিয়ারের মত মানুষেরা আরো একবার প্রমাণ করলেন যে সমস্ত প্রবাদের একটা শক্ত ভিত আছে। কার্যকারণ সম্পর্কিত প্রবাদের সত্যতা প্রমাণ করার জন্য ও যুগ যুগ ধরে প্রবাদের প্রাণবায়ুর প্রবাহমানতা বজায় রাখার জন্য আবহমানকাল ধরে এই অভাগা দেশে দুর্ভাগা মহিলারা এমন সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকেন। প্রবাদটা হ''পাগলে কিনা বলে, ছাগলে কিনা খায়' আর মহিলাদের করারই বা কি থাকে, তারা তো বহনকারী মাত্র। সত্যই তো কোনও কোনও মহিলার মনের জোর না থাকার জন্যই এমন বিকৃত মনের দূষিত মানুষেরা পৃথিবীতে জন্ম নেবার সুযোগ পায়। সেই মনের জোর না থাকাটা সেই বিকৃত মনের ভ্রূণ বহনকারী দুর্ভাগা মহিলার পারিপার্শ্বিক অসহায় অবস্থার প্রভাবজনিত মানসিক প্রতিফলন। ইসলামের প্রধান নবী হজরত মুহাম্মদকে যে নারী গর্ভে ধারণ করেছিলেন ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী 'মুসলমান' (?) এই ইসলাম নেতা সেই মহীয়সী নারীকে কি মনে করেন? একজন দুর্বল মনের নারী একজন আল্লাহ প্রেরিত নবীকে, একজন পুরুষোত্তমকে জন্ম দিয়েছিলেন? আল্লাহ প্রেরিত নবী পুরুষোত্তম প্রভু হজরত মহম্মদকে যদি একজন দুর্বল মনের নারী, কঠিন সময়ে পুরুষদের আড়ালে লুকিয়ে থাকা একজন শুধুই সন্তান জন্ম দেওয়ার মেশিন নারী জন্ম দিয়ে থাকেন তাহলে ঐ অদ্ভুত 'পাগলে কিনা বলে ছাগলে কিনা খায়' প্রবাদের জ্বলন্ত উদাহরণ সুন্নি নেতা এপি আব্বোবেকার মুসলিয়ারকে কোন নারী জন্ম দিয়েছিলেন? তিনি এও বলেন, 'পৃথিবীতে মহিলাদের জন্ম হয়েছে শুধুমাত্র সন্তান প্রসব করার জন্য।' তাহলে কি ধরে নিতে হবে ঐ সুন্নি নেতাকে শুধুমাত্র জন্ম দেওয়ার জন্যই ঐ সুন্নি নেতার মায়ের জন্ম হয়েছিল? তার মত সন্তানের মুখে এই চরম অপমানকর কথা শোনার জন্য, এরকম ঠাপ্পা পাবার জন্যই মায়ের জন্ম হয়েছিল? আমার মনে হয় আজ যদি ঐ দুর্ভাগা নারী বেঁচে থাকেন বা থাকতেন তাহলে তিনিও বোধহয় তাঁর এই অপদার্থ সন্তানের বক্তব্যে লজ্জায় ঘৃণায় লাল হয়ে মুখ লুকোবার জন্য পাগলের মত জায়গা খুঁজবেন বা খুঁজতেন। আরও একবার হয়তো আমরা কান পেতে দিলে শুনতে পাবো ওই নারীর মুখে কিম্বা মহাকাশের বুক ভেদ করে ভেসে আসা সুক্ষ্ম লিঙ্গ শরীরে অবস্থানকারী ঐ মায়ের স্বর, রামায়নের মা সীতার পুনরুক্তি, 'ধরণী দ্বিধা হও, আমায় গ্রহণ করো'। সত্যিই তো এমন পুরুষ যে নারী গর্ভে ধারণ করেছে, নিজের রক্ত, রস দিয়ে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছে, বুকের অমৃত খাইয়ে বাঁচিয়ে রেখে লালন পালন করে এত বড় ষন্ডাগন্ডা মুসলমানদের দিগগজ মসিহা বানিয়েছেন সেই মহান পুরুষ সুন্নি নেতা জন্মদাত্রীর জন্মের ঋণ মেটাবেন না, তা হতে পারে? তাই তো তিনি মায়ের প্রতি, নারী জাতির প্রতি যোগ্য সন্তানের কর্তব্য পালনে ত্রুটি রাখতে চাননি। ত্রুটি রাখতে চাননি (যদি তিনি বিয়ে করে থাকেন, যদি তাঁর সন্তান থেকে থাকে) তাঁর স্ত্রীর প্রতি, তাঁর যোগ্য সন্তানের মাতার প্রতি যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শনে। তাই তিনি তাঁর মহান দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হয়েছেন; নারী জাতিকে মানসিক দুর্বল বলার সাথে সাথে পুরুষের সমান অধিকার না দেওয়ার স্বপক্ষে ইসলামের দোহাই দিয়ে বিকৃত ঠুনকো বক্তব্য পেশ করেছেন মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের অনুষ্ঠানে সমস্ত ছাত্রদের মধ্যে নিজের উৎকৃষ্ট চিন্তা, ধারণাকে তাদের কচি মস্তিষ্কে প্রয়োগ করতে। কিন্তু কেন, কিসের ভিত্তিতে, কোন যুক্তিতে ইসলাম বিরোধী, কোরানের কোথায় এ কথা বলা আছে সে সম্পর্কে কোনও তথ্য ও তত্ত্ব সম্বলিত বক্তব্য পেলাম না। আলটপকা যা মনে এলো, জিভের গোড়ায় যা এলো তাই বিশৃঙ্খল জীবনের অধিকারী হয়ে বলে ফেললাম আর শিক্ষিত সমাজ তাই মেনে নিল এমন আহাম্মকের শেষের দিনগুলি সত্যই ভয়ঙ্কর। আর দিনের আলোর মত এটা স্পষ্ট পৃথিবীর বুকে মানব জাতীর ইতিহাসে নারীর অবস্থান ও অবদান, নারীর কীর্তি ও বিক্রম, নারীর  ভুমিকা ও উপস্থিতি ইত্যাদি সম্পর্কে সুন্নি নেতা অর্বাচীন। মহিলাদের ৫০শতাংশ সংরক্ষণের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, "পুরুষদের সমান কোনওদিনই মহিলারা হতে পারবে না। তাই ওসব সংরক্ষণের কোনও প্রয়োজন নেই।'' কিন্তু দিগগজ সুন্নি নেতা অতিচালাক এক চক্ষু হরিণের মত অন্য দিকটা দেখতে পাননি। শুনতে পাননি বা পাচ্ছেন না তার দুর্ভাগা জন্মদাত্রী মায়ের, তার স্ত্রী ও তার সন্তানের মায়ের অভিশাপের কন্ঠস্বর, ' হে মূর্খ দিগগজ পন্ডিত! যদি নারী কোনোদিনই পুরুষদের সমান হতে না পারে, তাহলে ঠিক একইভাবে পুরুষও কোনোদিনই মহিলাদের সমান হতে পারবে না। স্মরণ কর, আসছে সেদিন! শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর'!!

তাই পৃথিবীর সমস্ত কলঙ্কিত ঠগ ধর্মীয় নেতা, গুরু, ঈশ্বরবিশ্বাসীদের উদ্দেশ্যে মনে পড়ে গেল শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত সৎসঙ্গের আচার্য্যদেব পরম পূজ্যপাদ শ্রীঅশোক চক্রবর্তী(বড়দাদা)-র একটা কবিতাঃ  

শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর।                                                                           

ফাঁকি দিয়েই ঘুরিস ভবে প্রবঞ্চনায় ভুলিয়ে লোকে
কথার তোড়ে মাতিয়ে সবে আত্মপ্রতিষ্ঠারই ঝোঁকে,
এমনি করেই বেলা গেল সন্ধ্যা-ছায়ায় ভরল ঘর;
এখনও তুই চেতনহারা? শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর।

নিত্য অহংমত্ত যারা গেছে চলে এমন কত----
কেরদানিতে কাঁপিয়ে ধরা চলত যারা অবিরত,
গুরুগিরির মোহে ছুটিস গরুর মতন নিরন্তর,
তোর খেয়াতে মাঝিই যে নেই; শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর।

পিছু পিছু চলছে যারা নিত্য নিয়ে মাথায় তোরে
মিষ্টি কথায় ভুলিয়ে ভাবিস অনন্তকাল রাখবি ধরে?
ডুববি যখন শুনবি ওদের অভিশাপের কলস্বর
হাতটি ধরার থাকবে না কেউ; শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর।

ইষ্ট ছেড়ে ইষ্ট সেজে ছড়িয়ে বাহার ভাবিস নাকি
বাহার দেখেই ভুলবে বিধি, পারবে নাকো ধরতে ফাঁকি?
সত্তা জুড়ে জাগছে ভাঙ্গন, জাগছে যে ঐ প্রলয় ঝড়
পারিস যদি ফের এখনও; শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর।

ঈশের বিষাণ উঠল বেজে, কাল ফণী তোর মাথার পরে,
মরণ তরে করছে তাড়া বাঁচবি এবার কেমন করে?
দ্রোহ-লোভের বাঁধন ছিড়ে ইষ্টতপে ঝাঁপিয়ে পড়
নইলে গতি কুম্ভীপাকে; শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর।


http://zeenews.india.com/bengali/nation/kanthapuram-rubbishes-gender-equality-backtracks_133855.html

Sunday, November 22, 2015

শবরীর আলো শ্রীময়ি!!!!!!



এ যুগের শবরী শ্রীময়ি, তুমি নও গো মতঙ্গ শিষ্যা
শবরীর ছায়ায় রাঙিয়েছ কায়া জাগিয়ে প্রবল তৃষা!
বসে আছো তুমি কার তরে সকাল থেকে রাত?
ঘুমহীন চোখে আশা নিয়ে বুকে বাড়াবে কেউ হাত!!
ঘুমিয়ে যখন পড়বে তুমি গভীর চাঁদনি রাতে          
চুপি চুপি এসে বরাভয় হেসে আমি রাখবো হাত হাতে!
কোমল হাতের স্পর্শে আমার হৃদ স্পন্দন জাগে!
শবরী সেজে বসে থাকা আর কি তোমায় সাজে?
সকাল থেকে রাত অবধি শুধুই বসে থাকা,
পথের পানে চেয়ে চেয়ে সময় কাটাও একা!
তোমার তরে নাও ভাসাইলাম, এই এলাম বলে আমি
দুঃখ জ্বালা সব মুছিয়ে দেবো, বলছে জীবন স্বামী।

Friday, November 20, 2015

এমনি ভাবেই.........



এমনি ভাবেই বেঁচে থাকতে থাকতেই
একদিন চলে যাবো ওপারে,
ঘুচিয়ে সব যত ভেদাভেদ;
সেদিন থাকবে না কোনো দুঃখ,
কোনো যন্ত্রণা, থাকবে না ব্যর্থতা
আর না পাওয়ার কোনো খেদ।
ঘুম ভাঙলেই পড়বে না মনে     
ছন্নছাড়া জীবনের ব্যথা,           
শুনবে না এ কান আর প্রতিনিয়ত
কিছু না হতে পারার জন্য
এ জীবনে আপনজনের কথা;
ভেসে উঠবে না আর কখনো
যৌবনের ফেলে আসা দিনগুলির
ব্যর্থতার নিদারুণ যন্ত্রণাময় ছবি।

অসংখ্য মানুষের অহেতুক কৌতুহল
জীবনকে করবে না আর ব্যতিব্যস্ত,
শুনবে না হুংকার আর এই জীবন
বেইমানি আর নেমকহারামীর;
প্রতিদিন ঘুম ভেঙ্গে মাঝরাতে
বিছানায় উঠে বসবে না আর এই জীবন
চরম বেইমানির সাবলীল রূপ দেখে!

আঃ কি শান্তি! কি সুখ! এই ভেবে_______
ভেসে আসবে না আর মীরজাফরের কান্না.........
‘তোমার ভাগ্য নিয়ে যারা হ’ল ভাগ্যবান,
সিঁড়ি হয়ে জীবনে যাদের বসালে সিংহাসনে
ব্যর্থ হয়ে নিজে যাদের করেছো সফলতা দান
বাঁচাতে প্রাণ অন্যের পড়েছো বিপদে বারেবারে জীবনে
সেই ভালোমানুষরা যদি করে নির্লজ্জ শয়তানি
কি এমন তবে করেছি আমি বেইমানি?
যে এই নাম আর রাখে না কেহ সন্তানের’!

বেঁচে যাবো সেদিন, মির্জাফরের প্রশ্নের
নিরুত্তর থাকার অসহ্য যন্ত্রণা থেকে,
যেদিন যাবো চলে।
বড় ভালো হবে সে দিনটা!
অনেক মানুষের ভালোবাসা
অকৃত্রিমভাবে ঝরে পড়বে
নিথর শরীরের ওপর! গুঞ্জনে গুঞ্জনে
ভরে যাবে চারপাশ! ভালোবাসার 
আলিঙ্গনে বন্দী হয়ে ঘুরে বেড়াবো
সকলের মন থেকে মনে স্মৃতিচারণের
অবসরে! সেদিন ঐ হিম হয়ে যাওয়া
শরীরের প্রতি থাকবে না কোনও কারও
অকারণ রাগ, ঘৃণা, কোনও প্রতিশোধ
শুধু ভালোবাসা শিউলি ফুলের মত অনবরত
ঝরে পড়বে উদার ও অকৃত্রিমভাবে!!

বন্ধু হয়েও অকারণ শ্ত্রু
যারা ছিল আমার, তারাও.........
ফুলের মালায় জানাবে অশেষ ভালোবাসা,
মনে করে সেই দিনের_______
প্রয়োজনে বা দুর্দিনে তাদের প্রতি
অকৃত্রিম আর নিঃস্বার্থ আমার
________বাড়ানো হাতের কথা!

এমন কেন হয় না এখন??
যা বেঁচে থাকতে চাই!!
             
আর যেদিন যাবো চলে সেদিন
আকাশের কোণে কোণে, শিউলির ডালে ডালে,
বাতাসে বাতসে ঘুরে ঘুরে দেখে যাবো সব
আর ভেজা চোখে মাতাল করা ভালোবাসায়
সবার শরীরে শরীর ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাবো চলে
অকৃত্রিম, নির্মল হাসিতে অশরীরী হয়ে!
নরম অশরীরী হাতের স্পর্শে
শরীরী হাতের মত তখনও
শুষে নেবো সকলের দুঃখকষ্ট
আর সেদিনও বলে যাবো সবার কানে কানে
ভালো থেকো আর সবাইকে রেখো ভালো,
ভালোবেসো আর দেখিও সবাইকে আলো;
ঐ শোনো, ডাক এসেছে, বন্ধু আমার যত
তমসার পার হতে মহান পুরুষের!
দিও তাঁরে কূল, হৃদয় ফুল
যাবার বেলায় কোরো নাকো ভুল
আর আগের মত।

এমন যেন থাকি এখন
বাকি সময় জুড়ে।