Powered By Blogger

Thursday, July 16, 2020

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র কে!? (১)

মুনি? ঋষি? সাধক? ধর্মগুরু? দীক্ষাগুরু? পন্ডিত? মহাত্মা? মহাপুরুষ? কবি? সাহিত্যিক? শিল্পী? গীতিকার? গায়ক? নাট্যকার? অভিনেতা? শিক্ষাবিদ? চিন্তাবিদ? গণিতজ্ঞ? শিক্ষক? ডাক্তার? বিজ্ঞানী? জ্যোতিষী? সমাজসেবী? সমাজ সংস্কারক? বিপ্লবী? নেতাজী? দেশপ্রেমী? মানবপ্রেমী?
কে তুমি ঠাকুর!?
মানুষ? দেবতা?? ঈশ্বর???
প্রবি।

প্রবন্ধঃ কে দায়ী? ( স্কুল/কোতরং ভূপেন্দ্র স্মৃতি বিদ্যালয়, হিন্দমোটর)

আজ রেজাল্ট বের হ'লো মাধ্যমিকের। কাল বাদে পরশু বের হবে উচ্চমাধ্যমিকের। তার আগে বেরিয়েছে দিল্লি ও সেন্ট্রাল বোর্ডের। আমার পরিচিত জনেদের আনন্দের খবর শুনতে শুনতে মনে পড়ে গেল অনেক কথা। সঙ্গে আমার সময়ের কথাও মনে পড়ে গেল।

সালটা ১৯৭০। অস্থিরতার চরম কাল! রাজ্য তথা দেশ জুড়ে নকশাল আন্দোলনের দুঃখজনক ভয়াবহতার কাল! শিক্ষাক্ষেত্রে চরম অরাজকতা! পরীক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে চুরচুর!তার মধ্যে সে বছর আমি যে স্কুলে পড়তাম (কোতরং ভূপেন্দ্র স্মৃতি বিদ্যালয়, হিন্দমোটর) সেই স্কুলের আমি স্কুল ফাইনাল ব্যাচের ছাত্র ছিলাম। সেই বছর আমার ব্যাচের তিনজন কি সম্ভবত চারজন বোর্ডের পরীক্ষায় ১০ জনের মধ্যে ছিল। অসাধারণ ব্যাচ ছিল আমাদের! নিজের গর্ববোধও হয় সেই ব্যাচের ছাত্র হিসেবে! সে বছর সহপাঠীরা কে কি স্থান অধিকার করেছিল তা এখন আর মনে নেই। এর আগের বছরও আমাদের স্কুলের একজন ছাত্র বোর্ডের পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিল! সে ছিল স্কুলের স্বর্ণযুগ! শুধু মনে আছে যে আগের বছর দ্বিতীয় হয়েছিল সে পরবর্তীতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ছিল অপারগ। কিন্তু তারপরে আর কোনও খবর জানি না তার। পরের বছর আমাদের সময়ে যে তৃতীয় না চতুর্থ হয়েছিল সে পরবর্তী জীবনে কোন সরকারী বড় পদে ছিল আর একজন যে সম্ভবত সপ্তম স্থান অধিকার করেছিল সে পরবর্তীতে হয়েছিল শিশুদের ডাক্তার আর দুজনের কথা ঠিকঠাক মনে পড়ে না! স্কুল জীবন শেষে সকলের সঙ্গে সকলের সম্পর্কের দূরত্ব হ'য়ে গিয়েছিল। এখন কে কোথায় তাও জানি না। শুধু এটুকু জানি আমরা কেউ ভালো নেই! স্কুলের সেই ঝলমলে ফলাফল পরবর্তী জীবনে আর আলো ফেলেনি! ফেলেও না! কেন ভালো নেই সেটা কি ক'রে জানলাম সেটা আর না হয় নাই বা কেউ জানতে চাইলেন, নিজের দিকে ও চারপাশের দিকে তাকালে সে সম্পর্কে একটা ধারণা করা যায় শুধু এটুকু বলতে পারি। আর কেন ভালো নেই তার উত্তর অন্যদের থেকে কিংবা সমাজ ব্যবস্থা ইত্যাদির মত ভেক পরনির্ভরতা থেকে বরং নিজেরাই নিজের সম্পর্কে ভালো দিতে পারি।

যাই হ'ক, আর সেই বছরই আমাদের ক্লাসের যে সবচেয়ে ভালো ছাত্র ছিল, যাকে আমরা বলতাম আমাদের ব্যাচের শুধু নয় আমাদের স্কুলে যত ভালো জুয়েল ছাত্র ছিল, ক্রিম ছিল সে ছিল ক্রিম অফ ক্রীমস!!!!!!! সেই ক্লাস তথা স্কুলের সবচেয়ে পড়াশুনায় ভালো ছাত্র সেই বছরের পরীক্ষায় যার স্ট্যান্ড করার কথা, ১০ জনের মধ্যে একজন হওয়ার কথা, গোটা স্কুল যার দিকে তাকিয়েছিল সে কিন্তু কিছুই হ'তে পারেনি! শুধু সাধারণভাবে ফাস্ট ডিভিশনে পাশ করেছিল! যদিও না হ'তে পারার নমুনা অর্থাৎ ডিরেইল্ড হওয়ার ইঙ্গিত সে অনেক আগেই দিতে শুরু করেছিল সেই ক্লাস এইট/নাইনে পড়ার সময় থেকে! তখন সাম্যবাদের ভুত তার মাথায় চেপে বসেছিল! চেপে বসেছিল শোষিত নিপীড়িত মানুষের মুক্তির কথা! চেপে বসেছিল রাষ্ট্র ব্যবস্থার শৃঙ্খল থেকে অত্যাচারিত মানুষের বন্ধন মুক্তির স্বপ্ন! মনে পড়ে একবার তখন বোধহয় এইটে কিংবা নাইনে পড়ি স্কুলের টিফিন পিরিয়ডের সময় আমাদের কয়েকজন ছাত্র বন্ধুকে সে নিয়ে গিয়েছিল স্কুলের পাশেই একটা বাড়িতে! রাস্তার ধারে বাড়িটার নীচে চায়ের দোকান আর উপরে দোতলায় একটাই মাত্র ঘর! সেই ঘরে বসেছিলাম। মনে পড়ে সেদিন সে আমাদের সাম্যবাদের পাঠ পড়িয়েছিল! চেয়েছিল স্কুলের ছাত্রদের নিয়ে একটা সাম্যবাদী সংগঠন তৈরির স্বপ্ন দেখতে! কিন্তু সেদিন আমি তার পথের বাধা হ'য়ে দাঁড়িয়েছিলাম! আমার উপর ছিল তার দারুণ নির্ভরতা ও বিশ্বাস! সে ছিল ক্লাসের শান্তশিষ্ট চুপচাপ থাকা আমাদের সবার প্রিয় মেধাবী ছেলে! চেহারায় ছিল রোগাপ্যাটকা কালো বেশ কালো ছেলে! কিন্তু চোখেমুখে ছিল অসম্ভব এক উজ্জ্বল ঝলমলে আলো! বাড়িতে কে কে ছিল তা ঠিক জানা ছিল না। তবে যতদূর মনে পড়ে সম্ভবত স্কুলের সামনেই কোন এক বাড়িতে থাকতো! একবার কি দুবার গিয়েছিলাম ওর বাড়িতে। রাস্তার ধারেই ছিল বাড়ি। ভাড়া বাড়ি কিংবা নিজের বাড়ি! তাও এখন আর মনে পড়ে না। শুধু আবছা মনে পড়ে বোধহয় বাড়ির লোকজন ওপারে ছিল আর অবস্থাও খুব একটা ভালো ছিল না। তার বাড়িতে যাওয়ার কারণও ছিল অদ্ভুত! তাও বাড়ির ভিতরে কোনোদিন যাইনি! বাড়ির বাইরে রাস্তার ধারে বাড়ির জানালা পর্যন্তই ছিল আমাদের যাওয়ার দৌড়। অদ্ভুত কারণটা ছিল, স্কুলে যদি কোনোদিন পড়া না পারতো-----এই না পারাটা শুরু হয়েছিল সেই সময় থেকে যে সময় তার ভালোলাগার বিষয় হ'য়েছিল সাম্যবাদ!------সেইদিন সে স্কুল থেকে টিফিনে শরীর খারাপের অজুহাতে ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে যেত, আর বাড়িতে গিয়ে সে দুপুরে সেই না পারা পড়া, পিছিয়ে থাকা বিষয় নিয়ে পড়াশুনায় ডুবে যেতো! এটা শুনেছিলাম! কিন্তু কার মুখে শুনেছিলাম তা মনে পড়ে না। তবে ব্যাপারটা দেখবার জন্য আমরা কয়েকজন ছাত্র একদিন এরকম দিনে টিফিনে তার ছুটি নিয়ে চলে যাবার পর তার বাড়ি গিয়েছিলাম। রাস্তার ধারে চুপি চুপি সেই জানালায় উঠে দেখেছিলাম সে কি করছে! দেখেছিলাম সত্যি সত্যিই সে ঘরে নিরালায় একাকী বই পড়ছে! তবে কি বই পড়ছে তা বুঝতে পারতাম না। এখন মনে হয়, হয়তো সেই না পারা পড়া পড়ার সাথে সাথে নতুন দুনিয়ার স্বপ্নে মশগুল স্বপ্নের জগতের পড়া পড়তো!
সেই যে আমার প্রতি স্কুলে তার নতুন দুনিয়ার স্বপ্ন ও ইচ্ছা পূরণ না হওয়ার জন্য তার অভিমান, রাগ হয়েছিল তা ছিল জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত! হয়তো বা সেই অভিমান বা রাগ পরবর্তীতে টার্ন নিয়েছিল ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে! দ্যাখ কার ক্ষমতা বেশী! এটাই ছিল অবচেতন মনে চাপা পড়া গুপ্ত মানসিকতা! ব্যাপারটা ছিল, সে ছিল মার্কসের সাম্যবাদ-এ বিশ্বাসী আর আমি ছিলাম The greatest phenomenon of the world SriSriThakur Anukul Chandra-এর সামঞ্জস্যবাদে বিশ্বাসী! সে ছিল শান্তশিষ্ট পাতলাপুতলা মুখচোরা আর আমি ছিলাম শরীর স্বাস্থ্যে শক্তপোক্ত ব্যায়াম করা ডাকাবুকো ছেলে! তাই সে স্বভাবগত ও স্বাভাবিকভাবেই আমাকে কাছে পেতে চেয়েছিল। কিন্তু সে ভাবেনি কোথাও একটা সূক্ষ্ম তফাৎ রয়ে গ্যাছে দুজনার চরিত্রে, ব্যক্তিত্বে! আমার মূলত যেটা ছিল ভাবনার মধ্যে তা হ'ল পড়াশুনায় ভালো দারুণ মেধাবী একটা সহপাঠী, স্কুলের মুখ উজ্জ্বল করার সম্ভাবনাময় একজন ছাত্র ক্রমশঃ ক্লাসের পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়ছে তা হ'তে পারে না! তাকে মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতেই হবে! সামনে স্কুল ফাইনাল পরীক্ষা! স্কুলের সেই সময়ের প্রতিষ্ঠাতা যিনি স্কুলের টিচারও ছিলেন আমার উপরে কেন জানি তাঁর ভরসা ও নির্ভরতা দুটোই ছিল! সেইসময় সাম্যবাদ আর সামঞ্জস্যবাদ নিয়ে আদর্শের লড়াই যতটা না ছিল তার থেকে বেশি ছিল, সহপাঠীর ভবিষ্যৎ ঝকঝকে রেজাল্ট, স্কুলের সুনাম সর্বোপরি স্কুলে রাজনীতি প্রবেশ করতে না দেওয়ার তীব্র প্রচেষ্টা ও মনে মনে চুপিচুপি চ্যালেঞ্জ! সেইসময় স্কুলে রাজনীতি ঢুকতে না দেওয়া, অন্য ছাত্রদের মধ্যে তার প্রভাব আটকানো গেলেও (যার ফলস্বরুপ স্কুল ফাইনালে দুর্দান্ত রেজাল্ট!) সেই সহপাঠী ছাত্রবন্ধুকে সাম্যবাদের ভুতের হাত থেকে বাঁচাতে পারিনি। ফলস্বরূপ স্কুলফাইনালে তার রেজাল্ট ছিল অতি সাধারণ! ফাস্ট ডিভিশন!!

তার পরবর্তী সময়ে সে হয়েছিল শ্রমিক নেতা! স্কুল ফাইনাল পরীক্ষার পরই তার সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ ছিল না। কিন্তু সে রাজনীতি করার সুবাদে ঢুকে গিয়েছিল কারখানায় আর তার সাম্যবাদের স্বপ্ন ধীরে ধীরে রূপান্তরিত হয়েছিল ট্রেড ইউনিয়নের জটিল রাজনীতিতে! সেইখানেই তার সঙ্গে পরবর্তী সময়ে দেখা হয় কর্মসূত্রে! তখন সে ট্রেড ইউনিয়ন রাজনীতিতে রীতিমত পরিচিত মুখ। সেইসময় একটা দূরত্ব মেইন্টেন হ'তো দুজনার মধ্যে! কর্মস্থলে অনেক সীমাহীন সমস্যার মধ্যে দিয়ে আমি যাওয়া সত্ত্বেও কোনোদিনও সে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলেনি, আয়! কি হয়েছে বল! আমি দেখছি! যখন ক্ষমতার শীর্ষে সে সেসময় কয়েকবার মুখোমুখি অফিসে কথা হয়েছে কিন্তু তা কখনোই আমার সমস্যা নিয়ে নয়। আমিও তাকে কোনোদিন মুখ ফুটে বলিনি আমার কষ্টের কথা। সে জানতো, সব জানতো! কে বা কারা কারা আমাকে কর্মক্ষেত্রে চূড়ান্ত সীমাহীন লেগপুল ক'রে চলেছে, ম্যানেজমেন্টের সহায়তায় কোন কোন নেতা আমায় আমার চাকরি জীবনের ক্যারিয়ার কবরে পাঠিয়ে দিয়েছে সব জানতো, ইচ্ছে করলেই আমাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারতো কিন্তু দেয়নি তা কোনোদিনই! আমি যে তার শুধু ক্লাস মেট তাই নয়, আমি ছিলাম একেবারে প্রাইমারি স্কুলে সেই ক্লাস ওয়ান থেকে একেবারে দশ ক্লাস পর্যন্ত পড়া এক ও একমাত্র ক্লাস মেট ও একই কর্মক্ষেত্রের একমাত্র শৈশব থেকে যৌবনের সাথী! যাই হ'ক দু'জনে নিজের নিজের ক্ষেত্রে সম্মানজনক দূরত্ব নিয়ে তার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাটিয়েছিলাম!

সেই স্কুলের সবচেয়ে মেধাবী, ক্রিম অফ ক্রীমস স্টুডেন্ট, শান্তশিষ্ট, চুপচাপ কালো পাতলাপুতলা দুর্দান্ত সম্ভাবনাময় সাম্যবাদের স্বপ্ন দেখা সমাজ কো বদল ডালোর সৈনিকের জীবন থেমে গেছিল ৯০দশকের শেষদিকে এক সন্ধ্যায় ক্লাব থেকে আড্ডা মেরে বাড়ি ফেরার পথে রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মের উপরে আততায়ীর গুলি ও ছুরির আঘাতে! থেমে গেছিল জীবনের প্রথমদিকে দীর্ঘদিনের কষ্টের উপর দিয়ে ছুটে চলা সুপারফাস্ট জীবনগাড়ি!
প্রশ্ন জাগে আজ মনে, কে দায়ী!? কেন এমনভাবে থেমে গেল জীবনগাড়ি!? কেন দুর্দান্ত ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাময় ক্রিম অফ ক্রীমসের জীবন ক্রিমহীন শুকনো খটখটে হ'য়ে অসময়েই শেষ হ'লো!? কেন একদিন স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষায় ১০ জনের মধ্যে স্ট্যান্ড করা আমার সাথীরা কেউ ভালো নেই, সুখে নেই!?

এই সুপারফাস্ট জীবনগাড়ি মাঝপথে অসফল অবস্থায় থেমে যাওয়া কিংবা সুখী না হওয়া, ভালো না থাকার জন্য কে দায়ী? বাড়ি? স্কুল? বন্ধুবান্ধব! পরিবেশ? সমাজ? সভ্যতা? দেশ? নাকি নিজে!?

জানি না! জানার আর এই বয়সে ইচ্ছেও নেই। শুধু আজকের এই পরীক্ষার ফলাফল বেরোবার আনন্দের দিনে সবাই আনন্দ করুক এই কামনা করি। আর শুধু স্মরণ করি The greatest phenomenon of the world SriSriThskur Anukul chandra-এর কথা:

"তুমি ঠিক-ঠিক জেনো যে, তুমি তোমার, তোমার নিজ পরিবারের, দশের এবং দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য দায়ী।"

Sunday, July 12, 2020

ধর্ম ও শান্তি!

আল্লা, গড, ঈশ্বর বা ভগবান অর্থাৎ এককথায় সৃষ্টিকর্তা যখন মানুষের রূপ ধ'রে মানুষের মাঝে নেবে আসেন সেখানে তিনি ধর্মকে সাথী ক'রেই নেবে আসেন। ধর্মের মূর্ত প্রতীক তিনি! ধর্ম মানে ধ'রে রাখা। আর যখন শব্দের আক্ষরিক অর্থের ধাতুগত রূপ ধ'রে এগোবো তখন দেখতে পাবো ধর্ম মানে ধ'রে রাখা। আর সৃষ্টিকর্তা সব কিছুকেই ধ'রে আছেন; ধ'রে আছেন তোমাকে আমাকে ইহাকাল-পরকাল, সবকাল! ধ'রে আছে অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ! ধ'রে আছেন স্পার্ম-ওভাম-এর মধ্যে দিয়ে বংশপরম্পরা! ধ'রে আছেন বিশ্বব্রম্যান্ডের সমস্ত কিছু নিখুঁত গাণিতিক নিয়মে! ধ'রে আছেন মহাবিশ্বের জাগতিক রহস্যের সমস্ত কারণের কারণকে! তাই তাঁকে বলা হয় পরমকারুনিক! আর এই গাণিতিক নিয়মের যেখানে এতটুকু ব্যতয় ঘটে, ধ'রে রাখায় ঘটে সামান্যতম বিচ্যুতি তখনই সেখানে নিয়ম ভেঙে অনিয়মের সূত্রপাত হয়, যেখানেই ধ'রে রাখার মেকানিজম-এ গন্ডগোল দেখা দেয় তখনই ভেঙে পড়ে ঘরেবাইরে দেশেদেশে পরস্পর ধ'রে রাখার শান্তির প্রাসাদ! শুরু হয় মহাপ্রলয়! সৃষ্টি হয় ভূগর্ভের, সমুদ্রের তলদেশের গভীরের ভু-অভ্যন্তরের শিলার স্থানচ্যুতির কারনে অর্থাৎ পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে ধ'রে রাখায় ব্যাঘাত ঘটলেই ঘটে ভূমিকম্প, হয় জলোচ্ছ্বাস! পরিণতিতে নেবে আসে ভয়ঙ্কর প্রলয়, অশান্তি অসুখের বিষাক্ত নিশ্বাস! এই ধ'রে রাখা যখনই যেখানে ধ'রে না রাখার শক্তিতে পর্যবসিত হয়েছে সেইখানেই তখন সৃষ্টি হয়েছে অধর্মের! আর অধর্ম সৃষ্টি হওয়ার ফলেই বিঘ্নিত হয়েছে সৃষ্টির বুকে শান্তির পরিবেশ! অধর্মের হাত ধ'রে এসেছে অশান্তি! আর অশান্তি এনেছে বিশ্বজুড়ে পৃথিবীর বুকে অসুখ, গভীর অসুখ! যার পরিণতি মৃত্যুতে, ধংসে। এই মৃত্যুভয়, এই ধ্বংসের হাত থেকে সৃষ্টিকে রক্ষা করতে, বাঁচাতে-বাড়াতে আল্লা, গড, ভগবান, ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তা যাই-ই বলি না কেন তিনি নেবে আসেন তাঁর ধ'রে থাকার মূল মরকোচকে সঙ্গে নিয়ে আর তার সঙ্গে সঙ্গে থাকে শান্তি! সৃষ্টির ধ'রে রাখার গাণিতিক নিয়ম আর শান্তি টাকার এ-পিঠ আর ও-পিঠ! বিশ্ব সংসারে ঘরেবাইরে যেখানেই ধ'রে রাখার গাণিতিক নিয়ম যতটুকু লঙ্ঘিত হয় বা হয়েছে ও হচ্ছে ঠিক ততটুকুই এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে বেশি পরিমাণও সেখানে শান্তি লঙ্ঘিত হয় বা হয়েছে ও হচ্ছে! তাই শান্তির ধর্ম মানে শান্ত থাকার, শান্তি বজায় রাখার ধর্ম পালন। যা যা করলে, গাণিতিক নিয়মে নিয়ম পালন করলে শান্তি বজায় থাকে সংসারে ও প্রতি জীবনে, শান্ত থাকে পরিবেশ-পরিস্থিতি তাই তাই পালনই ধর্ম! এছাড়া আলাদা আলাদাভাবে ধর্ম ও শান্তি ব'লে কিছু নেই! ধর্ম নেই শান্তি নেই! শান্তি নেই মানে ধর্ম পালন নেই! তাই জীবনে জীবনে, ঘরে ঘরে, দেশে দেশে, বিশ্বজুড়ে যে আগুন জ্বলছে তার কারণ অধর্ম আর অশান্তি হাত ধরাধরি ক'রে করে প্রেম মাখামাখি! তাই ধর্ম বা শান্তি পালন বা অর্জন সবটাই নিজের হাতে। মাথা একটাই, হয় সেখানে আল্লা, গড, ভগবান, ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তা বসবেন নাহয় শয়তান কিলবিশ বসবে অর্থাৎ মাথা ধ'রে রাখবে ধর্ম ও শান্তির মূর্ত প্রতীক জীবন্ত ঈশ্বরকে অর্থাৎ এককথায় রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মোহাম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ ও শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নতুবা শয়তান কিলবিশের মূর্ত প্রতীক রাবণ, কংস, দুর্যোধন ইত্যাদি ইত্যাদিকে! আর তা ঠিক করতে হবে নিজেকেই!!!!!! আর সেইমত আসবে জীবনে, ঘরে, দেশে, বিশ্বে শান্তি! শান্তি!! শান্তি!! অশান্তি! অশান্তি!! অশান্তি!!!

প্রভু!

প্রভু তুমি এসেছিল বারেবারে তোমার রঙে তোমার সৃষ্টিকে রাঙাতে!
ভন্ড ভক্তকুল ও আস্তিক আমরা বাধার পাহাড় হ'য়ে দাঁড়িয়েছি বারেবারে তোমার কাজে তে!!
"মুখেতে আছে, ব্যবহারে নাই
সেই শিক্ষার মুখে ছাই"
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের এই বাণীর জ্বলন্ত রূপ আমরা তথাকথিত সৎসঙ্গীরা!!
ফেসবুক, ইউ টিউব জুড়ে আমরা সবাই এখন
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বিশেষজ্ঞ পন্ডিত! চরিত্রে লেন্ডিত!!
প্রবি।

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও ফেসবুকে বাঙালি (৪)।

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও ফেসবুকে বাঙালি (৩) লেখায় বীরবাহাদুর বাঙালির শ্রীশ্রীঠাকুর সম্পর্কে কুৎসার ছবি তুলে ধরেছিলাম আর এবার আর একজন পুরুষ বাঙালির শিক্ষার পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। চেষ্টা করলাম এর পরের বাঙালি শ্রীশ্রীঠাকুর ও ঠাকুর পরিবার সম্পর্কে কুৎসা ক'রে যিনি মহান বাঙালি সেজেছিলেন তার কথা বলতে আর তার কথা বলেই আমি এই লেখার ইতি টানবো। এইযে যারা ফেসবুকে গালাগালি করছেন, অকথ্য কুকথ্য কথা বলছেন The greatest phenomenon of the world শ্রীশ্রীঠাকুর ও তাঁর পরিবার সম্পর্কে তারা সবাই বৃত্তিপ্রবৃত্তির কামড়ে জর্জরিত হতাশাগ্রস্ত রিপুতাড়িত বিশৃঙ্খল জীবনের অধিকারী বাঙালি নারীপুরুষ!

আমি তাকে তার কুৎসার জবাবে যা লিখেছিলাম তা আমার লেখার মধ্যেই কুৎসার ইঙ্গিত পেয়ে যাবেন পাঠককুল।

আমি বললাম, আপনি ঠাকুরের ভক্ত? আপনি ঠাকুরকে টাকা পয়সা পাঠান? না, আপনি ভক্তও না, কোনও টাকাপয়সাও পাঠান না। তাহলে আপনার এত গাত্রদাহ হচ্ছে কেন!? টাকাপয়সা দিচ্ছে ঠাকুরের প্রায় ১০কোটিতে পৌঁছে যাওয়া ভক্তমণ্ডলী; তাদের যখন পিছন ফাটছে না আরও আরও দেওয়ার জন্য বুক ফাটছে এবং দিচ্ছে ও দিয়ে চলেছে উজাড় ক'রে তার খবর রাখেন? তাহলে তারা তাদের ধন সম্পত্তি যদি দেয় তখন আপনার পিছন ফাটছে কেন!? কিসের এত জ্বালা!? আপনি কি নিজের চোখে দেখেছেন, নিজের কানে শুনেছেন নাকি চোখ দিয়ে শোনেন আর কান দিয়ে বলেন!? ঠাকুরের হোল ফ্যামিলি ঠাকুর হ'য়ে গেছে আর লাক্সারিয়াস লাইফ লিড করছে কে বললো আপনাকে? আপনি কোনোদিন ঠাকুরবাড়ি গেছেন? ঠাকুরবাড়ির সদস্যদের দেখেছেন? কে ধরিবাজ লোক? আপনার এত সাহস শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র যার পায়ের তলায় বিশ্বের তাবড় তাবড় জ্ঞানীগুণী পন্ডিত আশ্রয় নিয়েছেন ও নিয়ে চলেছেন তাকে আপনার মত বালখিল্য লোক ধরিবাজ বলেন? এখনকার সময়ে শ্রীশ্রীঠাকুর থাকলে কি-------ছিঁড়তেন? এখন তো ঠাকুর নেই তো কি হয়েছে তাঁর সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান আছে, তাঁর পরিবার আছে, অন্যায় অপরাধ করলে আর আপনার প্রমাণ করার ও কিছু করার ক্ষমতা থাকলে সরকারকে দিয়ে একশান নিন না, জেলের ঘানি টানান না। এখন থাকলে আশারাম বাপু আর রামরহিমের মত জেলের ঘানি টানাতেন শ্রীশ্রীঠাকুরকে? সুস্থ আছেন তো? হুঁশে আছেন তো? নাকি সারাদিনরাত কারণসুরা টেনে পেঁচো মাতালের মত বেহুঁশে কথা বলছেন? কোন মুখ দিয়ে কথা বলছেন? শরীরের উর্ধাঙ্গের বড় মুখ না নিম্নাঙ্গের ছোট মুখ? ভালো কাজ করেছেন কখনো জীবনে? নাকি হাওয়াই হাতি ঘোড়া মেরেছেন আর বাড়ির লোকের কাছে মর্দ সেজেছেন? ঠাকুর সম্পর্কে কিছু জানেন নাকি হিংসা দিয়ে শুধু বুকটা ভরে রেখেছেন? হ্যাংওভার কাটান! আর আসুন আগে ঠাকুর, ঠাকুর পরিবার আর তাঁর সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে একজন সচেতন সুনাগরিকের মত স্টাডি করুন তারপর এইধরনের চিল কান নিয়ে গেছে শুনেই কানে হাত না দিয়ে চিলের পিছনে ছোটার মত বালখিল্য কাজ বন্ধ করুন আর নিজেকে নিজে সমাজের কাছে হেয় করবেন না। হেয় না হওয়ার হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করুন।

আর পরিশেষে বলি, আসুন বাংলার বুকে বাঙালি হ'য়ে বিশ্বের বিস্ময়ের বিস্ময় সর্বশ্রেষ্ট বিস্ময়কর মানুষ পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে ও তাঁর পরিবারকে কুৎসা গালাগালি ক'রে নিজেদের ভারত তথা বিশ্বের মানুষের কাছে গোটা বাঙালি জাতটাকে কলঙ্কিত করবেন না! আপনাদের মুষ্টিমেয় কয়েকজন বাঙালি মানুষের (?) জন্য অন্যান্য প্রদেশের অন্যান্য জাতের লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি ঠাকুর পাগল মানুষ অবাক হ'য়ে প্রশ্ন তুলছে বাঙালি জাতটা এত নোংরা টাট্টি কা মাফিক বাত বলতে পারে!?!? বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের যিনি প্রাণপুরুষ, জীবন বৃদ্ধির উদ্ধাতা সেই মানুষটা বাঙালি আর কুৎসাকারীরা সব বাঙালি! এই সেই বাংলা ও বাংলার বাঙালি যে বাংলা আজ যা ভাবে গোটা ভারত তা ভাবতো!? এই কুৎসাকারী নারীপুরুষরা সেই বাংলার বাঙালি  'শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও ফেসবুকে বাঙালি-১'-তে উল্লেখিত যে বাংলার শ্রেষ্ঠ বাঙালিরা ও বর্তমান বাংলার বাঙালি দিকপালরা শ্রীশ্রীঠাকুর প্রেমী!?!?!?!?

যাই হ'ক এদের উদ্দেশ্যে বলি, আপনার, আপনাদের যদি কোনও ক্ষতি ক'রে থাকে ঠাকুর ও তাঁর সৃষ্ট 'সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠান এবং ঠাকুর পরিবার তাহলে বলুন, যত ইচ্ছা বলুন, নিশ্চয়ই বলুন, আইনের সাহায্য নিন। কিন্তু জেনে রাখুন শাক দিয়ে যেমন মাছ ঢেকে রাখা যায় না, সূর্যকে যেমন মেঘ ঢেকে রাখতে পারে না ঠিক তেমনি মিথ্যে দিয়ে ঠাকুর আর ঠাকুর পরিবারকে কলঙ্কিত করতে পারবেন না। আর আজ বাংলা যা বলে গোটা ভারত তা বলা তো দূরের কথা তা শুনেই না! গোটা ভারত তথা বিশ্ব যা বলবে একদিন বাংলা লজ্জায় মুখ ঢেকে তা শুনবে, শুনতে বাধ্য হবে নচেৎ মুছে যাবে এই জাতটাই একদিন! কারণ মহাভারতের পুনরাবৃত্তি হয় যুগে যুগে! সেদিনও মহাভারতের এলিটরা যেমন চুপ ক'রে দেখেছিল অপমান আজও তেমনি বাংলার এলিটরা এই ঠাকুরকে কুৎসা করার বিষয়ে 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতায় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলেন ধরি মাছ না ছুঁই পানি-র মতন! আর বলি, আপনারা খামোকা কুৎসা, নিন্দা ক'রে নিজেকে/ নিজেদের খামোকা ছোট করবেন না। কারণ আপনারা যত বলবেন তত ভীমবেগে গোটা পৃথিবীকে গ্রাস ক'রে ফেলবে শ্রীশ্রীঠাকুর ও তাঁর সৃষ্ট সৎসঙ্গ! ভালো থাকুন। আসুন সবাই ভালো থাকি, শান্ত থাকি, মিলেমিশে আনন্দে থাকি।

শেষ।

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও ফেসবুকে বাঙালি (৩)।

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও ফেসবুকে বাঙালি (২) লেখায় আমি একজনের ঠাকুরকে গালাগালি করা একটা নমুনা তুলে ধরেছিলাম। যিনি ঠাকুরকে ব্লাউজ পড়িয়ে ঠাকুর নারীবিরোধী ব'লে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যে কুৎসা করে ছবি পোস্ট করেছিলেন তিনি একজন নারী আবার যিনি শেয়ার করেছিলেন ঠাকুরকে মাল আখ্যা দিয়ে তিনিও একজন নারী আবার যারা সেই পোষ্টে অকথ্য কুকথ্য ভাষায় ঠাকুরকে নিয়ে না জেনে খিল্লি ক'রে অশ্লীল গালাগালি করেছিলেন তারা প্রায় সবাই ছিলেন নারী! আর তাদের মধ্যে কোনও কোনও বীরপুরুষ ছিলেন যারা ঐ শেয়ার করা পোস্টে লিখেছিলেন, আমি কাউকে অশ্রদ্ধা করি না, তবুও এরকম নারী বিদ্বেষী কোনও ধর্মগুরু থাকতে পারে তা ভেবে আমি অবাক হ'য়ে যাচ্ছি! তা হ'লে মা দুর্গা ও মা কালীও তো নারী আর তাদের পূজা করা হ'লে তিনি সেই মায়েদেরও বিরোধী! উনার অনেক নাম শুনেছি কKকিন্তু তিনি যে নারী বিদ্বেষী তা জানতাম না! আজ জানলাম! আমি প্রকাশ বিশ্বাস দা'র কাছে জানতে চাই এই নারী বিদ্বেষী মানুষটা সম্পর্কে তাঁর কি বক্তব্য।

এই মন্তব্য আমাদের কি শেখায়? একটু লক্ষ্য করলেই দেখুন মন্তব্য প্রমাণ করে যে কতটা চালাকি লুকিয়ে রয়েছে এই মন্তব্যে! পুরুষ মন্তব্যকারী ( আমি আগেই বলেছিলাম নাম উল্লেখ করবো না তাই নারী পুরুষ মন্তব্যকারীদের নাম উহ্য রাখি ) বলছেন উনি কাউকে অশ্রদ্ধা করেন না শুধু উনার জানার ইচ্ছে আমার কাছে। উনি ঠাকুরের বিরুদ্ধে নোংরা মন্তব্য, অশ্লীল শব্দ প্রয়োগ, গায়ে ব্লাউজ পড়ানো ইত্যাদির কোনও কিছুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেন না, তিনি সবাইকে শ্রদ্ধা করেন কিন্তু অশ্লীল গালাগালি, কুৎসা রটনা ও অশ্রদ্ধাকারীর বিরুদ্ধে টুঁ শব্দটি করেন না! উল্টে তার সঙ্গে রসিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে গল্প জমাতে পারেন আর ঠাকুর সম্পর্কে নানা প্রশ্ন তুলতে পারেন, আমাকে সত্য মিথ্যা জবাব দিতে বলেন! অথচ ঠাকুরের অনেক নাম শোনা সত্ত্বেও তাঁর সম্পর্কে স্টাডি করার কোনও ইচ্ছে নেই! কিন্তু মন্তব্য করতে বালখিল্য ঋষির মত একপায়ে খাঁড়া!

যাই হ'ক এবার আসি ঠাকুরের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আর একজনের কটু মন্তব্য সম্পর্কে। তিনি একজন ব্যাংকের কর্মচারী এবং ঠাকুরের সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠানকে ব্রোকারেজ হাউসের সঙ্গে তুলনা করেছেন আর সৎসঙ্গীদের সম্পর্কে বলেছেন কিছু হিন্দুদের এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে যাদের থেকে রেভিনিউ আদায় করা হয়!!!! পরে জানা গেল তিনি চাকরীর জায়গায় সহকর্মীদের মাঝে চাকরী সংক্রান্ত লেনদেনের দড়ি টানাটানির মাঝে সুবিধে করতে পারেননি তাই সৎসঙ্গের ওপর তার অবদমিত ইচ্ছার দুর্গন্ধযুক্ত হাই তুলেছেন, তুলেছেন টক ঢেঁকুর! কারণ সেখানে তার প্রতিপক্ষকে যিনি সাহায্য করেছেন তিনি একজন প্রভাবশালী ও সৎসঙ্গী! তাই যত দোষ নন্দ ঘোষের মত যত রাগ ঠাকুর ও ঠাকুরের প্রতিষ্ঠানের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন! আর ফেসবুকে সেই রাগের বমন উদ্গীরণ ক'রে চলেছেন নিত্য নূতন কায়দায় ঠাকুর আর সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠানকে কালিমালিপ্ত করার তাগিদে! তার সেই বমনের উত্তরে তাকে যা লিখেছিলাম তাই তুলে ধরলাম।

মিঃ -----------, যেহেতু আপনি দুঃখের সঙ্গে বলেছেন আপনার কথা সৎসঙ্গের বিরূদ্ধে তাই আমিও দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি 'বারো হাত কাঁকুরের তেরো হাত বীচি'-র মত হ'য়ে গেল আপনার কথা! দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, 'গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের মত' হ'য়ে গেল আপনার কথা! দুঃখের সঙ্গে এও বলতে বাধ্য হচ্ছি, বালখিল্য ঋষির মত আর অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী-র মত হ'য়ে গেল আপনার কথা! দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি আপনি সবজান্তা হরিদাস পালের মত সবজান্তা হরিদাস হ'য়ে সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠানকে ব্রোকারেজ হাউসের সঙ্গে তুলনা করেছেন! দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি আপনার মত অমাবস্যার চাঁদেরা, ডুমুরের ফুলেরা সৎসঙ্গকে বলা ব্রোকারেজ হাউজের স্বনামধন্য দালাল দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, নেতাজী সুভাষচন্দ্র, লালবাহাদুর শাস্ত্রী, গুলজারিলালনন্দ, অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী ফজলুল হক, বিজ্ঞানী কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য্য, বিজ্ঞানী শ্যামাচরণ মুখোপাধ্যায়, জাদুকর পি, সি, সরকার, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কবি হেমচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইত্যাদি এরা সব ছিল আপনার কথামত 'সৎসঙ্গ' নামক ব্রোকারেজ হাউজের দালাল! আমেরিকার বিশ্ববিখ্যাত হার্পার এন্ড ব্রাদার্স পাবলিশিং কোম্পানির তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট (১৯৬১) ইউজিন এক্সম্যান, দার্শনিক এডমান্ড স্পেনসার, রে আর্চার হাউজারম্যান, অভিনেতা ও সমাজসেবী মিস মিকি, প্রফেসর রবার্ট (বব) কামিং, চেকোশ্লোভাকিয়ার অধিবাসী ডাক্তার ও ইউএনও-এর মেডিকেল সদস্য ক্যারেল পডলিশক, আসামের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী গোপীনাথ বরদলৈ, বিহারের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিনোদানন্দ ঝা, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার শৈলকুমার মুখোপাধ্যায়, সাহিত্যিক অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, নরেন্দ্র দেব, উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, কমিউনিস্ট নেতা বঙ্কিম মুখার্জী আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক চপলাকান্ত ভট্টাচার্য, সাহিত্যিক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়, সংগীতশিল্পী নির্মলেন্দু ভট্টাচার্য্য ইত্যাদি ইত্যাদি কত নাম বলবো? ব"লে শেষ হবে না; শ'য়ে শ'য়ে ভারতের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে ছুটে ছুটে আসা এই ভারতরত্নরা ব্রোকারেজ হাউজের সব চার অক্ষর দালাল ছিল, তাই না সর্বজ্ঞ হরিদাস পাল দাদা!?!? আপনি সৎ জ্ঞানী ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ আগেগোড়া সব জানেন আর প্রায় ১০কোটিতে পৌঁছে যাওয়া সব চার অক্ষর নারীপুরুষ কিছুই জানে না, একেবারেই চার অক্ষর ও অন্ধ--------!!! তাই না!?

আর আপনি লিখেছেন কিছু হিন্দুকে জড়ো করা হয়েছে যারা রেভিনিউ আদায়ের উপকরণ! প্রথম কথা, বালখিল্য ঋষির মত কথা বলেন কেন!? আপনি তো রেভিনিউ দেন না, যারা দেয় তাদের তো -------ফাটছে না, আপনার কেন ফাটছে!? যারা দিচ্ছে তাদের পকেট কাটা যাচ্ছে তাতে আপনার কি!? আপনার কেন গায়ে জ্বালা ধরছে একটু বুঝিয়ে দেবেন!? আপনি ------- এক পয়সাও দিচ্ছেন না ও দেন না তাহ'লে আপনার অন্ডকোষে এত ব্যাথা কেন!?

আর শেষ কথা বলি, ভালো ক'রে পড়ার অভ্যাসও নেই! না পড়ে মন্তব্য করেন কেন গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের মত!? ভালো ক'রে পড়ে দেখুন ডঃ শ্যামাপ্রসাদ-এর কথার জবাবে আপনার বাচাল কথামত ব্রোকারেজ হাউজের মালিক শ্রীশ্রীঠাকুর কি উত্তর দিয়েছিল তারপর মন্তব্য করবেন। সৎসঙ্গ শুধু হিন্দুদের সংঘবদ্ধ করেছিল নাকি হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ ইত্যাদি ইত্যাদি সমস্ত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের একছাতার তলায় দাঁড়ানো সম্মিলিত সংঘবদ্ধ সংগঠন সেটা একবার ভালো ক'রে পড়ুন আর জানুন, জানুন, জানুন কে এই বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়কর মানুষ আর কি ও কেমন এই সংগঠন!!!!! না পড়ে, না জেনে, না বুঝে, না দেখে আবালের মত মতামত দিয়ে নিজেকে জনসমক্ষে ছোটো এবং নিজের ও অপরের ক্ষতি করবেন না! ভালো থাকুন।

এরপর তিনি আমায় আমার কেন এত ফাটছে সে সম্পর্কে অনেক গালাগালি দিয়ে বললেন আমায় জ্ঞান না দিতে। তা জ্ঞান দেওয়ার বদভ্যাস আমার নেই, অনধিকারচর্চাজনিত অসভ্য বদভ্যাসের বিরুদ্ধে জবাব দেওয়ার অভ্যাস ও অধিকার আমার আছে। যেহেতু বিষয় আমার অধিকারের মধ্যে পড়ে। তাই তাকে তার বদভ্যাসের বিরুদ্ধে যা লিখেছিলাম তা তুলে ধরলাম আমার সৎসঙ্গী পাঠকদের জন্যে।

আমার কিছু ফাটেনি আর আপনার লেখায় কোনও ফাটার মত মালমশালা নেই যে ফাটবে। আপনার ফাটাবার মত কোনও এলেম নেই। আপনার বক্তব্য মাকাল ফল সর্বস্ব। মাকাল ফল দেখেছেন? না দেখলে চেষ্টা ক'রে দেখুন বাজারে কোথাও দেখতে পান কিনা। তাহ'লে বুঝবেন কেন বললাম। লম্বা ভাষণ দিইনি উল্টে টেনে আপনার জন্ডিস চোখকে লম্বা করতে চেয়েছি। যাতে লম্বা ভাষণের অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝতে পারেন। ক্ষমতা থাকলে আমার লেখার উত্তর দিন। আপনি যদি ঢিল মারতে পারেন তাহ'লে পাটকেল খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েই ঢিল মারতে হয়। কাঁচের ঘরে বসে অন্যের ঘরে ঢিল মারবেন আর আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমোবেন? যখন উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা নেই তো বালখিল্য ঋষি সাজার শখ কেন? সৎসঙ্গ আপনার কি ক্ষতি করেছে? শ্রীশ্রীঠাকুর আপনার কি ক্ষতি করেছিল? বাচাল কথা বলবেন আর ভেবেছেন সবাই আপনার বাচাল কথা শুনে চুপ ক'রে বসে থাকবে? ক্ষমতা থাকলে গালাগালি না দিয়ে আলোচনার টেবিলে বসুন ভদ্রলোকের মত। আলোচনার টেবিলে বসে যুক্তি দিয়ে তথ্যের সাহায্যে আপনার বক্তব্যের সমর্থনে জোরালো সওয়াল করুন আর প্রমাণ করুন আপনার বক্তব্য সঠিক। আপনি শ্রীশ্রীঠাকুর ও তাঁর প্রতিষ্ঠানকে অপমান করেননি, করেছেন আমার মন্তব্যে  উল্লেখিত ভারত তথা বিশ্বের তাবড় তাবড় স্বনামধন্য প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিদের, সঙ্গে তাঁর কোটি কোটি অনুগামীদের যাদের পায়ের নখের যোগ্য আপনি নন। তাই বলি হুঁশ-এ আসুন। অকারণ কাউকে না জেনে কোনও অপমানজনক মন্তব্য ক'রে নিজেকে ছোটো ও অপমানিত করবেন না। ভালো থাকুন।

ক্রমশঃ।

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও ফেসবুকে বাঙালী (২ )

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও ফেসবুকে বাঙালি (১) লেখায় আমি লিখেছিলাম, যাদের যাদের সঙ্গে ঠাকুরকে ও ঠাকুরের সৎসঙ্গ সম্পর্কে কটূক্তি, গালাগালি করার জন্য কথা বলেছিলাম সেইসমস্ত নারীপুরুষদের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে বলা কথাগুলি পরবর্তী শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও ফেসবুকে বাঙালি (২) লেখায় তুলে ধরবো। তাই তুলে ধরছি প্রথম যে সাহসী ও আধুনিকা মহিয়সী নারীর সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছিল সেই কথাগুলি। একটু মন দিয়ে ভালো ক'রে পড়লেই আমার লেখার মধ্যে দিয়েই বুঝতে পারবেন মহিলার ঠাকুর সম্পর্কে কটূক্তির ধরণ আর সেই অনুযায়ীই উত্তর।

ঠাকুরের সেই এডিট করা ছবি যে ছবিতে এক নারী ঠাকুরকে ব্লাউজ পড়িয়ে ঠাকুর নারী বিরোধী লিখে ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছিল সেই ব্লাউজ পড়া ঠাকুরের ছবিকে যে নারী নিজের প্রোফাইলে শেয়ার করেছিল ঠাকুরকে 'মাল, সহ্য হয় না, পিরিত মারাচ্ছে' ইত্যাদি কথা লিখে তাকে লিখেছিলাম,

আপনার মুখের ভাষা আপনার জীবনের, চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ! আপনার মুখ দিয়ে ঠাকুর সম্পর্কে ভাষা বেরোচ্ছে "এই মালটা----" আপনার এই মালটাকে সহ্য হচ্ছে না লিখেছেন। আপনি লিখেছেন "কিসের পিরিত সবার এত এই মালটার ওপর কে জানে"!

প্রথম কথা,
'কিসের পিরিত সবার এত এই মালটার ওপর কে জানে' এই কথাটা আপনার মত উজ্জ্বল কন্যা রত্ন জন্ম দেবার বাবা-মাকে জিজ্ঞেস করুন না! কারণ আপনার বাবা-মা তো 'এই মাল'-টার দীক্ষিত! তা তারা বোধহয় ভালোই বলতে পারবেন কিসের পিরিতে তারা 'এই মাল'-টার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছেন!

দ্বিতীয় কথা:
আপনার বাবা-মা আপনার কথামত যে 'মাল'-টার কাছে দীক্ষা নিয়েছেন সেই তিনি আপনার বাবামার গুরু যদি আপনার চোখে 'মাল' হন তাহ'লে আপনি কি মনে করেন না আপনার বাবা-মা 'এই মাল'-টার থেকেও আরও বড় 'মাল', বামাল !? 'রতনে রতন চেনে আর শুয়োরে চেনে কচু' যদি হয় তাহ'লে সেই একই অর্থে একটা মাল আরেকটা মালকে চেনে, তাই নয় কি!

তৃতীয় কথা:
আপনি নিজেই লিখেছেন "সবার এত কিসের পিরিত এই মালটার ওপর কে জানে!" তা  আপনি জানেন কি 'সবার' বলতে 'এই অসহ্য মাল'-টার শিষ্য সংখ্যা কত? আর 'এত পিরিত' বলতে আপনি জানেন পিরিতের মাত্রা? সংখ্যা!?

চতুর্থ কথা:
আপনি লিখেছেন "কিসের এত পিরিত এই মালটার জন্য কে জানে? তার মানে মালটার প্রতি পিরিতের কারণ আপনার জানা নেই! তা যে বিষয় জানেন না সেই বিষয়ে আলটপকা বালখিল্য মন্তব্য করা কি আপনার স্মার্টনেসের মধ্যে পড়ে? আপনার আধুনিক নারী শিক্ষার মধ্যে পড়ে? এই আলটপকা বেসামাল অশ্লীল কথা বলার অভ্যাস ভুলে যাবেন না আপনার ছোট্ট একটা ছেলে আছে তার মধ্যে সঞ্চারিত হচ্ছে ধীরে ধীরে যেমন আপনার মধ্যে শিশু বয়স থেকে হ'য়েছিল!!!!!!

পঞ্চম কথা: আপনি কি মনে করেন 'এই মাল'-টার বিশ্বজুড়ে প্রায় ১০কোটিতে পৌঁছে যাওয়া শিষ্যরা (আপনার কথামত "সবার----------" কথার উত্তরে 'সবার' বলতে প্রায় ১০কোটি) সবাই চার অক্ষর অর্থাৎ বোকা------ আর আপনি একমাত্র পাঁচ অক্ষর অর্থাৎ চালাক--------!? প্রায় ১০কোটি সবার এই মালটার প্রতি এত পিরিত তাই তারা সবাই চার অক্ষর অর্থাৎ বোকা-------- আর আপনি পাঁচ অক্ষর অর্থাৎ চালাক------ আর তাই আপনার এত রাগ? এত ঘৃণা!?

ষষ্ঠ কথা:
যে মহিয়সী মহিলার এই পোস্ট আপনি শেয়ার করেছেন সেই মহিলার করা পোস্টে লেখা বক্তব্যে আপনি যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন সেই বক্তব্য আপনি কি চোখে শুনে আর কানে দেখে তারপর অশ্লীল প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন? আপনার এত অহংকার? এত ঔদ্ধত্ব? কতকগুলি আবাল কথা নিজের মনের আশ মিটিয়ে লিখে কেউ পোস্ট ক'রে দিল আর আপনি ময়দানে নেবে পড়লেন নারীবাদীদের ফেরিওয়ালা হ'য়ে দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়ের বিরুদ্ধে বিন্দুমাত্র না জেনে, না পড়ে তা শেয়ার ক'রে বমন উদ্গীরণ করতে!? নেবে পড়লেন বাপের বাপের চেয়েও বড় একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় মানুষকে 'মাল' সম্বোধন করতে? ছোটবেলা থেকে কি এরকম বিকৃত অসভ্য অশ্রাব্য অশ্লীল সম্বোধন শুনে শুনে বড় হয়েছেন? আপনার পরিবারে কে কাকে এই 'মাল' সম্বোধনে ডাকতো!? আজ আপনি একজন মা হ'য়ে যাকে 'মাল' সম্বোধনে ডাকলেন একদিন আপনার ছেলে আপনার দেওয়া এই শিক্ষায় শিক্ষিত হ'য়ে বড় হ'য়ে আপনাকে 'মাল' ব'লে ডাকবে না তো? নাকি যে শিক্ষা আজ আপনি ঐ ছোট্ট শিশুর মাথায় অহংকারে ঔদ্ধত্বের সঙ্গে স্থাপন  করলেন আপনার ছেলে সেদিন বড় হ'য়ে আপনাকে 'মাল'-এর 'ম' এর জায়গায় 'ব' যুক্ত ক'রে আপনাকেই বা------ ডাকবে না তো!? শেষের সেদিন কিন্তু ভয়ঙ্কর!!! আজ অশিক্ষা-কুশিক্ষার উপর দাঁড়িয়ে যে দৃষ্টান্ত তুলে ধরলেন অহংকারের উপর ভিত্তি ক'রে শুধু মনে রাখবেন চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়! সূর্য ঢোলছে, দিন যাচ্ছে, রাত আসছে, সময় দৌড়চ্ছে আর আপনার ঐ আজকের ছোট্ট শিশু ক্রমে ক্রমে বড় হচ্ছে, বড় হচ্ছে আপনার শিক্ষায় শিক্ষিত হ'য়ে!
আর প্রতিদিন আপনার মা আপনার জন্য আপনার নোংরা অপবিত্র মুখ দিয়ে বলা প্রায় ১০কোটি লোকের আরাধ্য দেবতা সম্পর্কে 'মাল' সম্বোধন করা মানুষটার কাছে যে মঙ্গল প্রার্থনা করেন তা কি আপনি জানেন? আপনি কি জানেন আপনার ছোট্ট সন্তানের ভবিষ্যৎ মঙ্গলের জন্য যাঁর পায়ে ফুল চড়ায়, ইষ্টার্ঘ্য পাঠায় আপনার বাবামায়ের সেই ইষ্টদেবতা তাঁকে আপনি বকের মত গলা উঁচু ক'রে, চোরের মায়ের বড় গলা ক'রে অশ্লীল 'মাল' সম্বোধন করেন, তাঁকে আপনার সহ্য হয় না! অসহ্য লাগে!! গা জ্বলে যায়!!!

একবার নিজেকে বিবেকের আয়নায় দাঁড় করান আর বিবেককে প্রশ্ন ক'রে দেখুন এই মানুষটা যাকে সহ্য হয় না, মাল ব'লে সম্বোধন করছেন সে আপনার বাঁচা-বাড়ার ক্ষেত্রে কি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল? আপনার বাপের বাপের চেয়ে বড় সবদিকে বড় বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় এই মানুষটার শরীরে ঐ ----?----- নামে নারী জাতি ও মা নামের কলঙ্ক মহিয়সী মহিলাটি ব্লাউজ পরিয়ে দিয়েছেন আর আনন্দে আপনি তা উপভোগ করেছেন আর সকলের সঙ্গে ব্লাউজ পড়ানো শরীরের উপরিভাগ নিয়ে হাসি মস্করা করেছেন আদিম উল্লাসে মাতাল হ'য়ে দলবদ্ধভাবে পরস্পর কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য আদানপ্রদান-এর মধ্যে দিয়ে। তা আপনি আপনার বাবার ও বাবার বাবার কিংবা আপনার স্বামীর কিংবা আগামীদিনে আপনার সন্তান যখন বড় হবে তখন তাদের শরীরে ব্লাউজ পড়াবেন তো? পড়িয়ে আদিম মজাকে মেতে উঠবেন তো? বাবাকে নিয়ে, স্বামীকে নিয়ে, ছেলেকে নিয়ে খিল্লি উড়াবেন তো? কাকে জাঙ্গিয়া পড়াবেন!? কাকে ব্লাউজের সাথে জাঙ্গিয়া পড়ালে ভালো হতো!? এতটা নীচে নাবতে পারেন!? আপনারা মায়ের জাত!? আপনার সন্তান আগামীদিনে আপনাকে 'মা' ব'লে ডাকবে তো? যে শিক্ষায় শিক্ষিত ক'রে তুলছেন ছেলেকে আগামীদিনে যেদিন আপনার যৌবন সূর্য ঢলে যাবে বার্ধ্যকের আকাশে সেদিন আপনার যৌবন মত্ত ছেলে আপনার যৌবনবতী বৌমা আপনাকে জাঙ্গিয়া পড়াবে নাতো!? কিম্বা হাগিস!? আপনি নিজেকে অনেক বড় বিদুষী মহিলা ভাবেন। আপনি কি চাকরি করেন? আপনি বা আপনারা যারা চাকরি করেন না, করেননি কোনোদিন তা আপনি বা আপনারা জানবেন কি ক'রে কি ধরণের নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় নারীদের কর্মস্থলে পুরুষকর্মীদের কাছে! ঘরে বসে স্বামীর রোজগারে খেয়ে আর হিল্লি দিল্লি ঘুরে বেড়িয়ে ফুর্তিতে উড়ে উড়ে নারীবাদী হওয়া যায় না। আপনি কি জানেন লক্ষ লক্ষ বিদুষী মহিলা, উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত মহিলা, চাকরি করা ও বিশ্বের বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারি বড় বড় পোস্টে চাকরি করা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী, প্রফেসর, শিক্ষিকা, ব্যবসায়ী ইত্যাদি বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত মহিলারা যাদের আপনি পায়ের নখের যোগ্য নন, যাঁকে আপনি সহ্য করতে পারেন না, মাল ব'লে সম্বোধন করেছেন সেই 'মাল' মানুষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের পায়ের কাছে বসে থাকেন!? ইচ্ছে করলেই ঐ সমস্ত শিক্ষায় দীক্ষায়, বংশমর্যাদায়, রুচিতে অতি উচ্চ মার্গে অবস্থানরত আদর্শ নারীরা, আদর্শ মায়ের জাতেরা আপনাদের কথার জবাব দিতে পারেন কিন্তু দেন না কারণ তারা "কুকুরের কাজ কুকুর করেছে কামড় দিয়েছে পায়, তাই ব'লে কি কুকুরকে কামড়ানো মানুষের শোভা পায়" তত্ত্বে বিশ্বাসী। তাঁদের আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদাবোধ প্রবল। আপনি বা আপনারা যারা ঠাকুরকে, ঠাকুর সম্পর্কে না জেনে, না বুঝে, না দেখে, না পড়ে ঠাকুরের ওপর নারী বিদ্ধেষীর তকমা লাগিয়ে দিয়ে অকথ্য কুকথ্য ভাষায় গালাগালি করছেন তারা শেষের দিনে যেদিন সত্য জানবেন (জানার যদি ভাগ্য থাকে বাকী জীবনে) সেদিন প্রায়শ্চিত্ত করবার সুযোগ পাবেন তো এই জন্মে? নারী ও মা জাতির কলঙ্ক যে মহিয়সী মহিলা ঠাকুরকে সবুজ রং দিয়ে খালি গায়ে এই ব্লাউজ এঁকে দিয়েছেন ও ফেসবুকে ব্লাউজ পড়ানো ঠাকুরের বিকৃত ছবি পোস্ট করেছেন এবং ঠাকুর সম্পর্কে ঐ পোষ্টে যে মনগড়া মিথ্যে কথা লিখেছেন তা আপনি বাস্তবে তলিয়ে দেখে নিয়েছেন তো ছবি শেয়ার করার আগে, ঠাকুরকে নিয়ে খিল্লি করার আগে? শেষের সেদিন কিন্তু ভয়ঙ্কর! আপনি আরো আরো গালাগালি করুন আপনার বাবামায়ের আরাধ্য দেবতা ঐ মালটাকে! কেমন!!!!!!

আর, আপনার মুখের ভাষা জবরদস্ত! আপনার মতোই ভয়ঙ্কর সুন্দর ও মিষ্টি! যখন আমি আপনাকে প্রশ্নগুলি করলাম তখন আপনার গায়ে ছ্যাকা লেগে গেল আর আমায় বলছেন নিজের চরকায় তেল দেওয়ার কথা!? শুনুন, আমি আপনার চরকায় তেল দিতে আসিনি। আপনি শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢুকে পড়ার মত, উপযাচক হ'য়ে অনধিকারচর্চা ক'রে নাক গলিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কোটি কোটি মানুষের প্রিয় মানুষটাকে অপমান, আঘাত করতে। আপনাকে ঠাকুরকে বিশ্বাস করবার জন্য কেউ বলেছিল? আগ বাড়িয়ে কথা বলার বদভ্যাস ভালোই রপ্ত করেছেন! আপনি আপনার পাঁঠা লেজে কাটুন, মাথায় কাটুন, আপনার বাগানে ঘেঁটু ফুল চাষ করুন, আর শ্যাওড়া গাছ লাগান কেউ দেখতে যাবে না; অন্যের বাগান নষ্ট করতে এলে স্বাভাবিক ভাবেই সেই বাগানের মালির এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে বাগানকে রক্ষা করার। আর আপনার সঙ্গে মনে হয়না কোনও ভদ্রলোকের কথা বলা পোষাবে!!!!! আমার কি জিনিস নিয়ে থাকার কথা বলছেন? আমার জিনিস আপনার বাবা-মার জিনিস অর্থাৎ শ্রীশ্রীঠাকুর তো এক যেখানে আপনি মূত্রপাত করেছেন!!!! সাহস থাকলে ক্ষমতা থাকলে বাবা-মাকে পাশে বসিয়ে যুক্তির উপর দাঁড়িয়ে আপনার মুখ দিয়ে সাপ ব্যং ইঁদুর ছুঁচো বের করুন! মুখ দিয়ে তো টাট্টি কা মাফিক বাত বের হয়; আবার বড় মুখে কথা বলছেন? আপনার জন্মদাতা জন্মদাত্রী আপনার দুর্গন্ধযুক্ত কথা সহ্য করেন তো!? খোঁজ নিয়ে দেখেছেন? আগে দেখুন, তারপর কথা বলুন।

এরপরই দেখলাম লড়াইয়ের ময়দান থেকে উধাও, হঠাৎ উধাও হ'য়ে গেলেন এতক্ষণ লড়াই করা আজকের আধুনিকা মহিয়সী মহিলা! সমস্ত কথোপকথন ডিলিট হ'য়ে গেল মুহূর্তে!!!!!!!!! আমাকে ব্লক ক'রে দিয়ে একেবারে পাত্তা কেটে হ'য়ে গেলেন নিরুদ্দেশ!!!

ক্রমশঃ।

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও ফেসবুকে বাঙালি (১)।

ফেসবুকে কত কিছুই দেখি। দেখি নানা মানুষের মুখ। বাচ্চাবুড়ো, যুবকযুবতী নানা নারীপুরুষের মুখ! দেখি প্রকৃতির নানা সুন্দর, কুৎসিত, আনন্দ, দুঃখ ভরা, অবাক করা, মজার মজার দৃশ্য! পড়ি কত শত অশ্লীল, সুশ্লীল, দুর্বোধ্য, সহজবোধ্য কবিতা, প্রবন্ধ, ছোট ও অনু গল্প। পড়ি ছোটো ছোটো ইংরেজী বাংলা কোটেশান। পড়ি অনেক কিছুই। ভালো লাগে, আনন্দ পাই। সময় কেটে যায় কোন ফাঁকে, বুঝে ওঠার আগেই দেখি নতুন দিনের শুরু, সূর্য হাসছে পূব আকাশে! আবার কখনো কখনো এমন কিছু পড়ি, এমন কিছু চোখে পড়ে তখন মন ভারাক্রান্ত হ'য়ে পড়ে। কালো মেঘের ফাঁকে আটকে যায় সূর্য! দিন ফুরোবার আগেই নেবে আসে অন্ধকার!

চোখ বন্ধ ক'রে বসে থাকি। চোখের সামনে ভাসতে থাকে মন ভারাক্রান্ত হওয়ার, মন ঝুলে পড়ার, অবসাদে শরীর ভারী হ'য়ে ওঠার লেখাগুলি। লেখাগুলি কখনো অসম্পূর্ণ ও শূন্যতায় ভরপুর, কখনো হতাশাগ্রস্ত দিকশূন্যপুরের নিশানা বহনকারী, কখনো অশ্লীল ও অপমান অশ্রদ্ধাপূর্ণ কুৎসিত ভাষাযুক্ত! দেখি সমাজের ধর্ম, রাজনীতি, শিক্ষা, ক্রীড়া ইত্যাদি বিভিন্ন সম্মানীয় ব্যক্তিত্বদের নিয়ে, প্রাতঃস্মরণীয় মহামানবদের সম্পর্কে, তথা হইতে আগত মহান পুরুষ ইষ্টপ্রতীকে আবির্ভুত পুরুষোত্তমদের সম্পর্কে কটু মন্তব্য ও তাঁদের এডিট করা অশ্লীল ছবি! কখনো কখনো দেবদেবীদের নিয়েও চলে অন্য ধর্মের মানুষের কটূক্তি ও অশ্লীল চিত্র প্রদর্শন।

একটা নিখুঁত ছবি ভেসে ওঠে চোখের সামনে! পৃথিবী যে নিখুঁত লক্ষ্যে অভ্রান্ত নিশানায় এগিয়ে চলেছে ধীর অথচ দৃঢ় পদক্ষেপে ধ্বংসের দিকে, আগামী মানব প্রজাতির বিলুপ্তির দিকে তার স্বচ্ছ ছবি ভেসে ওঠে মন ক্যামেরায়! কষ্ট হয়, একটা যন্ত্রণাময় ঘোর লাগা অবস্থার শিকার হ'ই! আর তখনি মনে ঝড় ওঠে, আর আছড়ে পড়ে মনের তটে! ভিতর থেকে কে যেন ভয়ংকর শব্দে সিংহ গর্জনে হামলে পড়তে চায়! আবার পরমুহূর্তেই মন বলে, ফিরে চলো মন নিজ নিকেতনে!

তাই ফিরে এলাম নিজের নিকেতন অর্থাৎ ঘরে! ফিরবো ঘরে কোথায় এমন ঘর!? নিকেতন অর্থাৎ ঘর সেথায় যেথায় থাকেন স্বয়ং জীবন্ত ঈশ্বর! ঘরে ফিরে বসি শান্ত মনে আর ভাবি মানুষ কেন এমন হয়!? কেন মানুষ মানুষের প্রতি এমন অসভ্যের মত, অমানুষের মত আচরণ করে!? কেন করে!? কোনও কারণ ছাড়া কি ক'রে একজন আরেকজনকে অপমান, অশ্রদ্ধা, অশ্লীল গালাগালি, নিন্দা, কুৎসা করে!? কি ক'রে একজন আরেকজনের সম্পর্কে বিন্দুমাত্র না জেনে, না দেখে, না বুঝে, না শুনে আবার কানে দেখা আর চোখে শোনা মানসিকতায় কটু মন্তব্য করে!? তাহলে কি জন্মগত দোষ নাকি পরিবেশের দোষ!? আরও অবাক হ'য়ে যায় যখন দেখি ঠাকুরের শিষ্য, ঠাকুরের জন্য বুক ফাটছে, ঠাকুর ঠাকুর ক'রে এলাকায় লাফিয়ে বেড়াচ্ছে, জগৎ মাতিয়ে তুলছে আবার পরমুহূর্তেই ঠাকুর পছন্দ করেন না, ঠাকুর দর্শন বিরোধী এমন কথা, ছবি, লেখা ইত্যাদি জিনিসে লাইক দিচ্ছেন, মন্তব্য করছেন, শেয়ার করেছেন, কোমর বেঁধে নেবে পড়ছেন প্রচারের উদ্দেশ্যে!!!!! এর থেকে প্রমাণ হয় ঠাকুর কি পছন্দ করতেন আর করতেন না সে সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধ্যান বা ধারণা নেই!!!!!!! কিংবা জানা থাকলেও চরিত্রে তার প্রতিফলন নেই!!!!!!!

যাই হ'ক এরকম ঘৃণ্য, নিচ, দুর্গন্ধযুক্ত মানসিকতা নিয়ে বিশ্বের সর্বকালের বিস্ময়ের বিস্ময় সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে অশ্লীল পোস্ট চোখে পড়ল! প্রায় সময় ঠাকুর বিরোধী ঘৃণ্য মন্তব্য চোখে পড়ে। আর সেই সমস্ত মন্তব্যের সবাই বাঙালি। দুঃখের বিষয় ঐ সমস্ত অশ্লীল অশ্রাব্য কটু ঘৃণ্য মন্তব্যের মধ্যে নারীরাও ভয়ঙ্কর ভূমিকা পালন ক'রে চলেছেন! এই একটা বিষয়ে নারী আর পুরুষ সমান সমান শুধু নয় অনেক ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষদেরও ছাড়িয়ে গেছে!!!!!!

আসুন একবার দেখে নিই পুরুষ, বিশেষত নারীজাতি ঠাকুরকে নিয়ে কি ধরণের অশ্লীল, অশ্রাব্য মন্তব্য করে, তার ছবিতে কি ধরণের অশ্লীল এডিট করে আর তার উত্তরে উত্তরটাই বা কি!?

আমি যাদের যাদের সঙ্গে ঠাকুর ও তাঁর সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে করা কটূক্তি ও এডিট করা ছবি পোস্ট করা সম্পর্কে আলোচনা করেছি সে সম্পর্কে যতটুকু মনে আছে তা তুলে ধরার চেষ্টা করছি। শুধু তাদের নামগুলো তুলে ধরলাম না তাদের সামাজিক অবস্থান নষ্ট না হওয়ার কারণে। যদিও এইসমস্ত মানুষগুলোর মনে হয়না আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদাবোধ আছে।

ঠাকুরকে নিয়ে একটা ছবি পোস্ট হয়েছে দেখতে পেলাম। সেই ছবিটার শেয়ারের সংখ্যা ইতিমধ্যে প্রায় ৬০০ কাছাকাছি পৌঁছে গেছে এবং সেই ছবি ও ছবিতে যে বক্তব্য লেখা হয়েছে সেই ছবি ও বক্তব্যের সমর্থনে লাইক, ইমোজি ও জবরদস্ত ঘৃণ্য কটু মন্তব্য হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আর সেই লাইক ও মন্তব্যের প্রায় সবাই নারী। আর মন্তব্যের প্রায় সব মন্তব্যই ঠাকুর ও ঠাকুরের সম্পর্কে বিন্দুমাত্র না জেনেই। ছবির বক্তব্য বিষয় ঠাকুর নাকি নারী বিদ্বেষী, নারী বিরোধী! বক্তব্য প্রাণখুলে মনগড়া সাজানো কথায় ভরা! কখনো বা ঠাকুরের বাণী বা বক্তব্যের অন্তর্নিহিত অর্থ না বুঝেই, অনুধাবন না করেই উপরি ভাসাভাসা খুশিমত, নিজের বৃত্তিপ্রবৃত্তিকে খুশি করার তাগিদে ইচ্ছেমত বালখিল্য শব্দ দিয়ে ভরা!!!! আরও আশ্চর্যের বিষয় এরা নারীপুরুষ প্রায় সবাই বাঙালী!!!! এদের মধ্যে অনেক নারী আছে যাদের জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিতে অস্বীকার করে, অনেক আছে বক্তব্যের সত্যতা যাচাই না ক'রেই বক্তব্যের স্বপক্ষে ঠাকুরের বিরুদ্ধে কটু মন্তব্য করার জন্য প্রশ্ন করাতে যুক্তিসঙ্গত উত্তর দিতে না পেরে রেগে গিয়ে আমাকেই কটু কথা শোনাতে দ্বিধা করে না। এর মধ্যে পুরুষরা আবার এই নারীদের সমর্থনে বীরপুঙ্গব সেজে ঢাল হ'য়ে দাঁড়ায় হাসির খোরাক হ'য়ে!!!!

যাই হ'ক ছবিটা ঠাকুরের। আর ঠাকুরকে সবুজ রং দিয়ে পড়ানো হয়েছে ব্লাউজ! আর বক্তব্য ছিল, ঠাকুর নারী বিরোধী! এছাড়া আরো কিছু আপত্তিকর বক্তব্য ছিল ঠাকুরের প্রতিষ্ঠান 'সৎসঙ্গ'-এর বিরুদ্ধে।

সেই ছবি ও বক্তব্য বিষয়ে আমার তাদের কারো কারো সঙ্গে হওয়া আলোচনার বিষয় তুলে ধরলাম। আমার তুলে ধরা উত্তরের মধ্যেই তাদের মন্তব্য কি ছিল তা একটু মন দিয়ে পড়লেই সহজেই পাঠকপাঠিকা বুঝতে পারবে।

এখন আসি তাদের যার যার সঙ্গে আমার ফেসবুকে যে যে আলোচনা হয়েছিল সেই প্রসঙ্গে। একে একে পরবর্তী "শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও ফেসবুকে বাঙ্গালী (২)" লেখায় তুলে ধরছি সেই কথোপকথন।

ক্রমশঃ।

কবিতাঃ সাবধান! সাবধান ভন্ডকুল!!

রাষ্ট্র নির্মাণ ও জাতি রক্ষার দায়িত্ব পালনে
মসিহারা এসে গেছে সব ভন্ডকুল স্খলনে!
আর এসে গ্যাছে সব বাংলার বুকে হ'য়ে বাঙালি!
তাই বলি,
হে বাঙালি ও অন্যান্য জাতি!
হে ভারত! হে বিশ্ববাসী!
সর্বোপরি হে মানবজাতি!
আর ভয় নেই!
নেই নেই ভয় হবেই হবে জয়!
এসে গেছে দায়িত্ব পালনে বাঙালি!
এসে গেছে বাঙালি ও অন্যান্য জাতি,
ভারত তথা বিশ্বের মুক্তির সময়!
আমাদের বাঁচাবে ব'লে
এসে গ্যাছে দলে দলে
ওঠো! জাগো! দ্যাখো চেয়ে!
থেকো না আর তোমরা ঘুমায়ে।
এসে গ্যাছে দলেদলে
নারীপুরুষ নির্বিশেষে
পেয়েছে নিঃশেষ অধিকার
করিতে ভন্ডকুল সাবার!
তাই থেকো না গো মুখ ফিরায়ে।
শোনো শোনো কান পেতে শোনো
শোনো ঐ খিস্তি খেউর আর
গালাগালিতে ভরা বাঙালির তীক্ষ্ণ হুঙ্কার
দিয়ে আসছে বাঙালি ধেয়ে
সনাতন ধর্মের গান গেয়ে
প্রতিকূল স্কোয়ার্ড সাথে
করিতে অনুকূল সংহার!
শোনো সোজা! শোনো ব্যাকা!
শোনো যত আছো যেথায় খ্যাপা
শোনো ঐ অশ্লীল শব্দের ঝংকার!

হে বাঙালি! হ'য়ে কাঙালী আর
থেকো না গো মুখ ফিরায়ে!
এসো সবে! এসো ছুটে ছুটে
ভন্ডকুল সব খাচ্ছে লুটেপুটে
দেখাতে মজা তাই এসেছে খোজা
হ'য়ে মসিহা এসেছে ঘটে ঘটে!
নেই ভয়, নেই আর সংশয়!
এসে গেছে মুক্তির পতাকা হাতে
জ্ঞানের নিশানা তাতে, এসে গ্যাছে ঐ বরাভয়!
হে মহান পথ প্রদর্শক! হে মুক্তিদাতা বাঙালি!!
আপনারে করি সাদর আমন্ত্রণ, করি আশ্রয়
ভন্ডকুল যত সবারে করিতে নিরাশ্রয়!

The greatest phenomenon of the world! WHO!!!!!

The greatest phenomenon of the world! WHO!!!!!

ঈশ্বর যতবার মানুষের রূপ নিয়ে এসেছে ততবারই মানুষ নিজের দুঃখ দুর্দশা, রোগ শোক, জ্বালা যন্ত্রণা ইত্যাদি হাজারো সমস্যা থেকে মুক্তি পাবার জন্যে তাঁর কাছে এসেছে, এসেছে নিজের ধান্ধা পূরণের জন্য ও আয়ের উপকরণ বানিয়ে তাঁকে পুজো করতে! তাই পঞ্চ ভুতের ফাঁদে পড়ে যেমন  ব্রহ্মা কাঁদে ঠিক তেমনি সরল বোকা এবং ভন্ড ধান্দাবাজ ভক্তকুল মাঝে জীবন্ত ঈশ্বর কাঁদে! কেউই জীবন্ত ঈশ্বর কেন এসেছে! তিনি কে! তা জানতে কেউ তাঁর কাছে আসে না!!! আর তাই হিন্দু ধর্ম, মুসলমান ধর্ম, খ্রিস্টান ধর্ম ইত্যাদি সমস্ত ধর্ম (যদিও এগুলি সব শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের মতে মত)-কে যারা নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তি ব'লে মনে ক'রে হুলিয়া জারী করে ধর্মভীরু মানুষের ওপর; গালিগালাজ, খিস্তিখেউর, অশ্লীল কুশ্লীল অশ্রাব্য কুশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণ ক'রে ধর্মভীরু মানুষকে বিভ্রান্ত করে তখন জীবন্ত ঈশ্বরের পক্ষে তাঁর স্বর্গরাজ্য সৃষ্টির পথে বাধা হ'য়ে দাঁড়ায় এইসমস্ত মানুষ! আর তার ফলভোগ করতে হয় সাধারণ মানুষকে তখন জীবন্ত সৃষ্টিকর্তার কিছু করার থাকে না! ধ্বংস অনিবার্য হ'য়ে ওঠে! তাই বাঁচতে হ'লে সাধারণ সরল সাধাসিধে বোকা কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধর্মভীরু মানুষকেই  ঘুম ভেঙে জেগে উঠতে হবে, চোখ খুলতে হবে, জ্ঞানের রাজ্যে প্রবেশ করতে হবে। জীবন্ত ঈশ্বরকে গ্রহণ ক'রে তাঁর চরণ পূজার পথ ছেড়ে চলন পূজার পথে শুরু করতে হবে ধর্মপথে যাত্রা! তবেই ধর্মব্যবসায়ীদের, জীবন্ত ঈশ্বরের বিরোধিতাকারীদের, মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ভুল পথে নিয়ে যাবার চক্রান্তকারীদের চক্রান্তের প্রাসাদ, সাম্রাজ্য তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়বে! তাই কথায় বলে,  জ্ঞান! জ্ঞান!! জ্ঞান!!! Knowledge rules the world! শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সেই জ্ঞানের অধীশ্বর! The greatest phenomenon of the world! বিশ্বের বিস্ময় সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়!!!!! আসুন স্বর্গরাজ্য সৃষ্টির পথে তাঁকে জানি, চিনি, বুঝি, গ্রহণ করি এবং তাঁর নির্দেশিত পথে চ'লে নিজেকে, দশকে, দেশকে সর্বোপরি বিশ্বকে বাঁচায় আগামী ভয়ঙ্কর ভয়াবহ করুণ দুঃখজনক পরিণতির হাত থেকে!!!! জয়গুরু।
পৃথিবীতে যারাই জন্মগ্রহণ করেছে তাদের সকলের জন্যই সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার জন্য সব ব্যবস্থায় রেখে দিয়েছেন, অনিয়ন্ত্রিত বৃত্তি-প্রবৃত্তির কারণে মানুষ যখন তা থেকে বঞ্চিত হয় তখন তিনি স্বয়ং মানুষের রূপ ধ'রে নেবে আসেন মানুষের জন্য তিনি যা রেখে দিয়েছেন সেই ঈপ্সিত বস্তু লাভের পথ দেখিয়ে দিতে! কিন্তু মানুষ যখন তাতেও কর্ণপাত করে না তখন তিনি অসহায় হ'য়ে পড়েন! তখনই ধ্বংস অনিবার্য!!----প্রবি।

Sunday, January 12, 2020

সুপ্রীম---------

প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি. চিদাম্বরম ১০৬দিন জেল খাটার পর হাসি মুখে হাত নাড়তে নাড়তে বাইরে বেরিয়ে এলেন, যেন দেশের মুখ উজ্জ্বল ক'রে রাজ্য জয় ক'রে ফিরলেন!! চোখে মুখে এতটুকু লজ্জা, অপমানের লেশ নেই, নেই কোনও অনুতাপ!!!!! আছে শুধু শরীরী ভাষায় পরবর্তী প্ল্যান-প্রোগ্রাম!!!!!!

এইজন্যই বোধহয় আগাম ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন সম্রাট আলেকজান্ডার তাঁর সেনাপতিকে, "সত্য সেলুকাস! কি বিচিত্র এই দেশ!!!!!!"

এখন প্রশ্ন জাগে মনে,
এই ভারতের একজন আপাদমস্তক ভদ্রলোক ও উচ্চ লেখাপড়া জানাওয়ালালোক অপরাধী!?
সত্যিই কি তিনি কোনও অপরাধ করেছিলেন!? নাকি বিনা দোষে কারাদন্ড!?
কর্মফল নাকি চক্রান্তের শিকার!?
কাকে বিশ্বাস করবো আর কাকেই বা অবিশ্বাস (বাদী-বিবাদী)!?
কে বলে দেবে কোনটা সত্যি কোনটা মিথ্যা!?
সুপ্রিম কোর্ট নাকি সুপ্রিম ফাদার!!!!!!!!
আর জনগণ!?-----প্রবি।

কবিতাঃ প্যারালাইজড সভ্যতা

বক্তা আছে শ্রোতা নেই
লেখক আছে কিন্তু পাঠক নেই
বলছে নেতা, বলছে নেত্রী
কিন্তু কাজ করার নেই কোনো কর্মী!

ধর্মক্ষেত্র শিক্ষাক্ষেত্র সবক্ষেত্রেই
সবাই বলছে যা সব অসম্পূর্ণ!
বলছে ভুল, শেখাচ্ছে ভুল কারণ
তাদের ভুলে ভরা জীবন সম্পূর্ণ!

রাজনীতি নোংরানীতি নয়কো রাজার নীতি
ছল-চাতুরী, চুরি-চামারী, ধান্দা আর মিথ্যার বেসাতি!

কেন!? কেন এমন হয়? কারণ
বিধির নিয়ম সবার জন্য
শুধু মানুষের জন্য নয়!
কুকুর বিড়াল গাছপালা পোকামাকড়
টিকটিকিটাও বলছে 'ঠিক ঠিক'
প্রকৃতির নিয়মকে ধরো! কিন্তু মানুষ বলছে, বেঠিক!
মানুষ নিজেই বিধি! বিধির বিধানের চেয়েও বড়!
বিধির বিধানে উল্টো নজির
মানুষ এমন শক্তিমান বিধিকে পায় না ভয়!
বিধির বিধান তাই আজ আর মানুষের জন্য নয়।

বর্ণাশ্রম ধ্বস্তন্যস্ত!
উপর পড়ছে নিচে, নিচ উঠছে উপরে
যা ইচ্ছে তাই করছে মানুষ, খুঁড়ছে কবর
আর পড়ছে নিজেই নিজের খোঁড়া কবরে!
পা করছে মাথার কাজ, মাথা করছে পায়ের
হাত করছে পেটের কাজ, পেট করছে হাতের!
প্রকৃতির নিয়ম উল্টে দিতে সবাই সদাই ব্যস্ত!
'চতুর্বরণ্যং ময়া সৃষ্ট্যং----' তত্ত্ব আজ বিলুপ্ত!

বিপর্যস্ত জন্মবিজ্ঞান, বিধ্বস্ত প্রকৃতি!
কল্পবিজ্ঞান জনম মাঝে মারছে ঘাই,
জন্ম নিচ্ছে সেথায় বিকৃতি!
প্রকৃতির নিয়মে চলছে সবাই
গাছ, পশু, পাখি থেকে টিকটিকি
মানুষের জন্মের বেলায় নিয়ম প্রকৃতির নয়
নিয়ম বুদ্ধিজীবীর! কারণ মানুষ শ্রেষ্ঠ জীব
জীব-জগৎ-জীবন-কারণ মাঝে মানুষ ব্যতিক্রমী!!

তাই যা হচ্ছে হ'ক কারন দেশ জুড়ে চলছে খেলা বিধি ভঙ্গের!
হাতে-ভাতে-কাপড়ে মারছে-মরছে সবাই, অপেক্ষা ভয়ঙ্কর ধংসের!!
দুর্যোধনেরা লম্প দিয়ে ঝম্প মারে, আজও দুঃশাসনেরা নারীর কাপড়ে মারে টান!
ভীষ্মরা আজও রাজসভায় চুপ ক'রে থাকে
নীতির কচকচিতে প্যারালাইজড সভ্যতা, শিক্ষা-চেতনা ম্রিয়মান!!
-----------প্রবি।

দিদি নং ওয়ানঃ জি বাংলা ও রচনাদিকে খোলা চিঠি।

প্রতিদিনের মত আজও (শুক্রবার/৬.১২.১৯) টিভিতে সন্ধ্যাবেলায় দিদি নং 1 টেলিকাস্ট হচ্ছিলো। সঞ্চালকের ভুমিকায় প্রতিদিনের মত রচনা ব্যানার্জী। সেইখানে হঠাৎ একটা কথায় টিভির পর্দায় চোখ আটকে গেল! আমার স্ত্রী ও আমি মাঝেমাঝে 'দিদি নং ওয়ান' প্রোগ্রাম দেখি। ভালো লাগে সংগ্রামী নারীদের জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার কাহিনী। টিভির সামনে বসে জানাই, হ্যাটস অফ!
যাই হক, প্রোগ্রাম চলার সময় কানে আসে কথাটা। কথাটা হ'লো "যতই ঘুড়ি ওড়াও রাতে লাটাই তো আমার রাতে।" এই কথাটা এর আগেও শুনেছি এই প্রোগ্রামে! তখন ভেবেছিলাম হয়তো সংশোধিত হ'য়ে যাবে পরবর্তী সময়ে। কিন্তু দেখলাম, না! হওয়ার নয়! তাই বিষয়টা তুলে ধরার প্রয়োজন অনুভব করলাম একজন সচেতন নাগরিক ও প্রোগ্রামের দর্শক হিসাবে। কানে হেড ফোন লাগানো অবস্থায় যে গান ভেসে আসে তখন সঞ্চালক রচনা ব্যানার্জী প্রশ্ন করেন প্রতিযোগীকে আর তখন অংশগ্রহণকারী নারীপ্রতিযোগী তাঁর স্বামীর সামনে দাঁড়িয়ে রচনার প্রশ্নের উপরে গানের প্রথম লাইন বলেন। সেই গানের লাইন "যতই ঘুড়ি ওড়াও রাতে, লাটাই তো আমার রাতে।"!!!

আমার চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ও রচনা ব্যানার্জীর কাছে প্রশ্ন, এই গানের লাইনের মানে কি!? রচনা ব্যানার্জী এবং জি বাংলা অথরিটিকে প্রশ্ন এমন একটা গানের লাইনের খুল্লমখুল্লা মায়েদের অর্থাৎ নারীদের অনুষ্ঠানে উল্লেখ করার উদ্দেশ্য কি!? প্রকাশ্যে একটা চ্যানেলে নারীর মুখ দিয়ে যে গানের লাইন স্বামীর উদ্দেশ্যে খুল্লমখুল্লা বেরিয়ে আসছে সেই গানের অন্তর্নিহিত মানে কি!? সেই গানের সেটিং জি বাংলা অথরিটি করেছিলেন আর তা নারীর মুখ দিয়ে বলিয়াছিলেন! যারা সেটিং-এ ছিলেন তারা কি পুরুষ ছিলেন নাকি নারী? যদি পুরুষ হ'য়ে থাকে তাহ'লে তারা নারীকে দিয়ে প্রকাশ্যে মিডিয়াতে রাতের নিষিদ্ধ গোপন দিদিগিরির রূপ দিদি নং ওয়ান প্রোগ্রামে উলঙ্গ ক'রে দিয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন? নারী তাদের হাতের পুতুল মাত্র!? আর যদি নারী হ'য়ে থাকে প্রোগ্রাম সেটার তাহ'লে তারা নিজেরা নিজেদের উলঙ্গ ক'রে পুরুষের কাছে নিজেদেরকে সস্তা পণ্য ক'রে তুললো!?

আশ্চর্য লাগে যখন রচনা ব্যানার্জী জিজ্ঞেস করলেন প্রতিযোগীনিকে, স্বামীকে কি বলবেন? তখন স্ত্রী হাসতে হাসতে বললেন গানের লাইনটা যেটা তার কানের হেডফোনে বাজছে, "যতই ঘুড়ি ওড়াও রাতে লাটাই তো আমার হাতে।" আর এই লাইন শুনে সঞ্চালক রচনা জিভ কেটে হেসে উঠলেন, হা হা হা ক'রে বিকট! জিভ কেটেছেন মানে লজ্জা লেগেছে আর হেসে উঠলেন মানে ভালো লেগেছে, মজা পেয়েছেন! স্ত্রী প্রতিযোগিনীর হাসির উচ্ছাস প্রমাণ করে লাটাই যে তার হাতে সেটা বেশ অহংকার ও গর্বের ব্যাপার!

এরকম চ্যানেলে চ্যানেলে প্রোগ্রামে, সিরিয়ালে, বিজ্ঞাপনে নারীকে খিল্লির বিষয়বস্তু ক'রে তোলে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ! তা'তে কোনও হেলদোল হয় না নারীবাদীদের বা নারী এলিট সমাজের! কিছুদিন আগে শ্যাম স্টিলের একটা বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছিল একটা দৃষ্টিকটু বিষয়! বিজ্ঞাপনটা ছিল বিরাট কোহলি ও অনুষ্কা শর্মার। বিজ্ঞাপনে স্ত্রী অনুষ্কা লাথি মেরে স্বামী কোহলিকে ডাকছে! এই হ'লো ভারতীয় এলিট সমাজের শিক্ষা-চেতনা-সভ্যতার নিদর্শন! চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বা শ্যাম স্টীলের কর্ণধারদের এই বিষয়ে প্রথমদিকে কোনও হেলদোল বা মাথাব্যথা ছিল না। এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এইখানে আমার টাইম লাইনে লিখেছিলাম।
যাই হ'ক পরবর্তী সময়ে সেই দৃষ্টিকটু জায়গাটা এডিট হ'য়ে যায়।

এবার আসি হক কথায়। আচ্ছা 'দিদি নং ওয়ান' নারীদের প্রোগ্রাম কি মেসেজ দিচ্ছে সমাজকে!? প্রথমতঃ আজকে ডঃ প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির অপরাধীদের বিরুদ্ধে ভোরবেলায় হওয়া এনকাউন্টারের কোনও প্রতিফলন পড়লো না প্রোগ্রামে! অথচ এই দিদি নং ওয়ান প্রোগ্রামে কত নারীর মুখে শুনেছি তাদের স্বামীদের কাছে, বয় ফ্রেন্ডদের কাছে কিংবা দরিন্দাদের হাতে সীমাহীন যন্ত্রণাদায়ক অত্যাচারিত হওয়ার, অবহেলিত, অপমানিত হওয়ার কাহিনী! অথচ আজকের দিনে দিদিদের প্রোগ্রামে ডঃ প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির দরিন্দাদের এনকাউন্টার সম্পর্কিত বিষয়ে কোনও উচ্চবাচ্য হ'লো না। এতে জি বাংলার মনোভাব স্পষ্ট হ'য়ে উঠলো, 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা।' অথচ প্রোগ্রামে বৃত্তি-প্রবৃত্তির সুড়সুড়ি দিতে এক্সপার্ট চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। এতে সমাজে কি মেসেজ যাচ্ছে তার ধার ধারে না জি বাংলা। অত গভীরে যাওয়ার মত সময়, শিক্ষা, চেতনা নেই চ্যানেল কর্তৃপক্ষের। নারীর প্রগতি নিয়ে শুধু উপরসা ভন্ডামী করো আর পয়সা কামাও! ভার মে যায় সমাজ! ভার মে যায় নারীর ইজ্জৎ!! ভার মে যায় শিক্ষা-সংস্কৃতি!!!
কারণ না নারী বড়া না সমাজ, না শিক্ষা বড়া না চেতনা দা হোল থিং ইজ দ্যাটস সে মাইয়া সবসে বড়া রুপাইয়া!!!!!!
কি বলেন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ? কি বলেন রচনাদি?
....................প্রবি।

কবিতাঃ আনন্দ ধারা!

চলো চলো ভাই চলো চলে যাই
জীবন থেকে অনেক দূরে চলো চলে যাই।
জীবন বলে, যেও না যেও না গো
আমায় ছেড়ে গেলে তুমি মরণ পাবে গো!
আমি বলি, চলো চলো চলো চলে যাই
শহর ছেড়ে অনেক দূরে চলো চলে যাই।
জীবন বলে, পাগল তুমি বোঝো না ভাই কেন?
শহর ছেড়ে যেথা যাবে সেথা আঁধার পাবে জেনো!
আমি বলি, ইট-কাঠ-পাথর ছেড়ে চলো বহুদূরে যাবো
প্রকৃতির মাঝে সেথা আলো খুঁজে পাবো!
হিংসা, নিন্দা, কুটিলতা যত নেগেটিভ ভাব
নিয়ে চিন্তা-ভাবনা, কাম কামনায় জীবন বরবাদ!
তাই বলি, ধুর শালা জীবন থেকে পলাই চলো
বল হরি হরি বোল, সদাই হরি হরি বলো!
পাবে না পাবে না কোথাও আলো পাবে না
হরি বোল হরি বোল ব'লে যতই তুমি কাঁদো না!
জীবন বলে, বুকের থেকে যতদিন আঁধার না যাবে
দুঃখ-ব্যথা জ্বালা-যন্ত্রনা ফিরে ফিরে পাবে!
বনে গেলে শান্তি পাবো পাহাড়ে গেলে সুখ
আমি বলি, সাগরে গেলে সারবে যে অসুখ।
জীবন বলে, ভুল ভুল সব ভুল, সব ভুল ভাই
শান্তি-সুখ অসুখ-বিসুখ সব মনের বালাই!
সব ছেড়ে এসো বন্ধু চলো যাই নিজ নিকেতনে
আনন্দের ধারা বহে সেথা পরম ধামে!
সেই ধাম পরম ধাম আনন্দের ধাম
সেই ধামে ব'সে করি এসো সদা পরমপিতার নাম!
নাম-ধ্যান মাঝে আছে অপার শান্তি
আছে সুখ, আছে জীবন, সেথা 'জীবন' খুঁজে পাবি।
প্রবি।

নেগেটিভ ও পজেটিভ!

নেগেটিভ নেগেটিভ আর পজিটিভ পজিটিভ আর একই সঙ্গে কুৎসিত কুৎসিত আর সুন্দর সুন্দর। নেগেটিভের মধ্যে যেমন পজিটিভ নেই ঠিক তেমনি পজিটিভের মধ্যে নেগেটিভ নেই। একইরকম ভাবে সুন্দরের মাঝে কুৎসিত থাকতে পারে না ঠিক তেমনি কুৎসিতের মাঝে সুন্দরের অবস্থান নেই। আর তাই সেই অযোগ্য ও অপাত্র স্থানে সময় ব্যয় ও পরিশ্রম নিরর্থক। এইখানে ঠাকুরের বাণী স্মরণ করতে পারি। ঠাকুর বলেছেন, " অযোগ্যে ও অপাত্রে করিলে দান, দাতা গ্রহীতা দুইই ম্লান। আসলে আমরা যদি ভেবে দেখি রাবণের ব্যাপারটা তাহ'লে কি  দেখবো? দেখবো, রাবণ জানতেন সীতা স্বয়ং রাম রূপী বিষ্ণুর স্ত্রী তবুও তিনি সেই চরম অন্যায় কাজটা করতে দ্বিধাবোধ করেননি। আর, শিশুপালের মধ্যে কি কোনও সুন্দর খুঁজে পেয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ? তিনি জেনেশুনেই ১০০টা অপরাধ ক্ষমা ক'রে তাকে পরিবর্তনের সুযোগ দিয়েছিলেন,আর সেই সুযোগ দিয়েছিলেন লোকশিক্ষার জন্য। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি শিশুপাল। দুর্যোধনের ক্ষেত্রেও কি তাই হয়নি? অনেকবার যুদ্ধ আটকাবার জন্য শ্রীকৃষ্ণ চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি যুদ্ধের আগের মুহূর্তেও তিনি পাঁচ ভাইয়ের জন্য পাঁচটা গ্রাম চেয়েছিলেন কিন্তু চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী। দুর্যোধন তার উত্তরে কি ঔদ্ধত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন তা সবারই জানা। স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণকে জীবন্ত নারায়ণ জানা সত্ত্বেও শ্রীকৃষ্ণের মুখের ওপর বলতে দ্বিধা করেনি দুর্যোধন যে, "বিনা যুদ্ধে নাহি দিবো সুচাগ্র মেদিনি।" আর তখনই শ্রীকৃষ্ণ তাঁর পাঞ্চজন্য শঙ্খে ফুঁ দিয়েছিলেন যুদ্ধ শুরু করার জন্য। আর এই পাঞ্চজন্য বাজাবার আগে কি বলেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ, জানেন কেউ? কি বলেছিলেন এই কথা গীতায় বা কোথাও লেখা নেই। গভীর নিস্তব্ধতার অন্তরের অন্তস্থলে ডুব দিয়ে কান পাতলে আজও খুব সুক্ষভাবে শুনতে পাওয়া যাবে তিনি গভীর বিতৃষ্ণায় ক্ষোভে বিরক্তিতে ব'লে উঠেছিলেন, 'তবে তাই হ'ক চার অক্ষর'। Don't take it otherwise. It is my, only my realization. জুডাসকে কি বলবেন? প্রভু যীশুকে হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের প্রধান সহযোগী ছিলেন এই জুডাস। আপনারা বন্ধুরা দেখুন, হজরতের বেলায় কি ঘটেছিল। কুরাইশরা তাঁকে সমাজে একঘরে ক'রে দিয়েছিলেন ও অবরুদ্ধ ক'রে রেখেছিলেন। ইসলাম প্রচারে ইটের আঘাতে ভয়ঙ্গকরভাবে রক্তাক্ত হন তিনি এবং অনেকবার তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এমনকি কুরাইশরা যখন তাঁর সঙ্গে আপোষ করার চেষ্টা করেন তখন প্রভু মহম্মদ কিন্তু তাঁর আদর্শের জন্য তা মেনে নেয়নি, তাঁর আদর্শকে ঘায়েল ক'রে চুক্তির মাধ্যমে কোনও রফা করেননি। রামকৃষ্ণকে পাগল বলতে মানুষ দ্বিধা করতো না। আর ঠাকুরের জীবদ্দশায় ঠাকুর কি কষ্ট পেয়েছিলেন, ঠাকুরের আশ্রমের উপর কি নির্মম, নিষঠুর অত্যাচার হয়েছিল সে সব দুঃখের কথা অনেকেই জানেন।

তাই বলছিলাম, নেগেটিভ নিংড়ে পজিটিভ কিছু পাবো না আর পজিটিভ নিংড়েও নেগেটিভ কিছুই পাবো না। নেগেটিভ ও পজিটিভ সবটাই ঐ বায়োলজিক্যাল ব্যাপার। যেমন, শিশুপাল, দুর্যোধন, দুঃশাসন, জুডাস, কুরাইশ ইত্যাদি ইত্যাদিরা এরা বায়োলজিক্যালি নেগেটিভ এদের মধ্যে থেকে নিংড়ে পজিটিভ কিছুই পাবো না; ঠিক তেমনি রত্নাকর, দস্যু সল, জগাই মাধাই, অশোক ইত্যাদি ইত্যাদি এরা বায়োলজিক্যালি পজিটিভ; পরিবেশগত কারণে এদের মধ্যে সাময়িক নেগেটিভিটির প্রকাশ দেখা গিয়েছিল কিন্তু উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত পরিবেশে অরিজিন্যাল বায়োলজিক্যাল মেক আপের উত্তরণ ঘটে। তাই ব্যাপারটা ঠাকুরের কথা অনুযায়ী শুধু Generous pose অর্থাৎ উদারতার ভঙ্গী নিয়ে সবটা দেখলে চলবে না। দেখবার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে চার আল দেখে চলছি কিনা; বাস্তবের মাটি থেকে যেন পা উঠে না যায়। জয়গুরু।

উপলব্ধি: ৭

বিবেকানন্দের জন্মদিন।

আজ স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন। তাঁর এই পবিত্র জন্মদিনে তাঁকে আমার অন্তর উৎসারিত ভক্তি, শ্রদ্ধা ও প্রণাম জানিয়ে আসুন আজ তাঁর ব'লে যাওয়া কথা স্মরণ করি।

শিকাগোয় স্বামী বিবেকানন্দ, সেপ্টেম্বর, ১৮৯৩ তাঁর ফটোর বাঁদিকে ইংরেজিতে লিখেছিলেন: "one infinite pure and holy – beyond thought beyond qualities I bow down to thee" অর্থাৎ "প্রণাম করি সেই একক, অনন্ত, শুদ্ধ ও পবিত্র –চিন্তা ও গুণের অগম্য ঈশ্বরকে।

মনে প্রশ্ন জাগে, কে সেই একক, অনন্ত, শুদ্ধ ও পবিত্র চিন্তা ও গুণের অগম্য অর্থাৎ ঈশ্বর? তিনি কি আকাশের ভগবান? তিনি কি মাটির কোনো মূর্তি বা পুতুল? তিনি কি নিরাকার? তাঁর কি কোনো আকার নেই? তিনি কি দৃশ্যমান? তাঁকে কি আমার মত রক্তমাংসের মানুষ হিসাবে আমাদের মাঝে পাই? তিনি সমস্ত প্রাণে প্রাণে অবস্থান করেন এত গভীর তত্ত্ব জ্ঞানে আমার রুচি নেই, নেই কোনো তাত্ত্বিক আমেজে বুঁদ হ'য়ে ডুবে থাকার চুলকুনি। বাইবেলে প্রভু যীশু বলেছেন, " God has created the man after his own image". এর মানে কি? সৃষ্টির বুকে সমস্ত জীবের মধ্যে মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। মানুষকে তাঁর নিজের প্রতিবিম্ব রূপে ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন। পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭০০কোটি। তাহ'লে ৭০০কোটি মানুষই তাঁর নিজের প্রতিবিম্ব। এই যদি হয় তাহ'লে এই ৭০০ কোটির মধ্যে আলাদা ক'রে কি ঈশ্বরের কোনো অবস্থান বা উপস্থিতি আছে যাকে ঐ বিবেকানন্দের "one infinite pure and holy – beyond thought beyond qualities I bow down to thee" অর্থাৎ "প্রণাম করি সেই একক, অনন্ত, শুদ্ধ ও পবিত্র –চিন্তা ও গুণের অগম্য ঈশ্বরকে" কথা অনুযায়ী প্রণাম করতে পারি!? বিবেকানন্দ কার কথা বলেছেন? তিনি কি নিরাকার রূপে ঈশ্বরকে প্রণাম করার কথা বলেছেন নাকি সাকার রূপে কাউকে প্রণাম করার কথা বলতে চেয়েছেন?

তিনি কি বলতে চেয়েছেন সেটা স্বামীজির ব্যাপার। স্বামীজির উপলব্ধির কাছে আমার উপলব্ধি স্বামীজীর পায়ের ধূলিকণারও যোগ্য নয়। আমার উপলব্ধিতে যা ধরা দেয় তা' হ'লো প্রভু যীশু যা বলতে চেয়েছেন তার মর্মার্থ হ'লো, সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর স্বয়ং ব্রহ্মাণ্ডের পর ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করতে করতে এই ব্রহ্মাণ্ডের গ্রহ, নক্ষত্র সৃষ্টি করতে করতে এই পৃথিবী গ্রহের মধ্যে এসে পাহাড়-পর্বত, নদনদী, গাছপালা, পশুপাখি, পোকামাকড় সর্বশেষ মানুষ সৃষ্টি করেন। আর এখানেই লুকিয়ে আছে প্রভু যীশুর মর্মবাণী। পৃথিবীর এই ৭০০কোটি মানুষের মধ্যে স্বয়ং ঈশ্বর নিজেকে নিজে আবার আলাদাভাবে প্রকাশ করেছেন। সেই ৭০০কোটি মানুষের মধ্যে তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রকাশিত রূপ হ'লো প্রভু শ্রীরাম, শ্রীকৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ ও তাঁর পূর্ণ প্রকাশ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। বাইবেলে বলা হচ্ছে, যীশু ঈশ্বরপুত্র। আমার উপলব্ধি তিনি স্বয়ং ঈশ্বর আর আমরা তাঁর পুত্র।

তাই আজ পরম শ্রদ্ধেয় স্বামী বিবেকানন্দের পবিত্র জন্মদিনে তাঁর কথা  "one infinite pure and holy – beyond thought beyond qualities I bow down to thee" অর্থাৎ "প্রণাম করি সেই একক, অনন্ত, শুদ্ধ ও পবিত্র –চিন্তা ও গুণের অগম্য ঈশ্বরকে"- স্মরণ করি এবং আমি যা বুঝি তাহ'লো সেই একক, অনন্ত, শুদ্ধ ও পবিত্র- চিন্তা ও গুণের অগম্য ঈশ্বর শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের রাতুল চরণে শতকোটি প্রণাম জানাই। জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের শ্রীচরণে প্রণাম জানিয়ে আভূমি প্রণাম জানাই তাঁর মিশন প্রচারের প্রধান ভক্তপ্রবর স্বামী বিবেকানন্দের শুভ জন্মদিনে স্বামীজীর শ্রীরাঙা চরণে।

স্বামীজী ও আমরা!

আজ স্বামীজীর জন্মদিন। আর কতদিন জন্মদিনের নামে সরকারী-বেসরকারী বাচ্চা-বুড়োর লোকদেখানো শ্রদ্ধাজ্ঞাপন চলবে!? প্রতিবছর এই গোড়া কেটে আগায় জল ঢালার মত কেন এইসব মহাত্মাদের নিয়ে হুল্লোড়বাজি চলে!? যারা এইসব মহাত্মাদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন ও পালন করেন তারা কি এদের চরিত্রকে নিজের চরিত্রে মেলাবার বা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন!? আর কতদিন, কতবছর এইসব অনুষ্ঠান প্রধান নাটকের আয়োজন চলবে!? আর কতকাল ছাত্রযুবসমাজ পথ খুঁজে পথ হারাবে এইসমস্ত অনুষ্ঠান প্রধান আয়োজনের মহড়ায়!? আর কতকাল এইসমস্ত মহাত্মাদের আত্মা শুধু আপাদমস্তক বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে ডুবে থাকা লোকদেখানো হৈহুল্লোড়ে ভরপুর অনুষ্ঠানের অপমান সহ্য করবে!? কবে বন্ধ হবে এইসমস্ত ব্যবসায়ী উপকরণে পরিণত মহাত্মাদের জীবন নিয়ে ঝাঁ চকচকে ফাঁপা অনুষ্ঠানের আয়োজন!? হবে না। কোনোদিনই হবে না। সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে ও চলবে! কারণ উদ্যোক্তারা যতদিন না উদ্যোগ নেবে নিজের চরিত্রে মহাত্মার চরিত্র বপনের কাজ ততদিন চলবে এই ভণ্ডামির বীজ বপন আর বপন, বপন আর বপন!!!!!!!---------প্রবি।

ভারতের রাজধর্ম!!

আজ যদি সত্যি সত্যিই ভারতের রাজধর্ম পাল্টে যায় তাহ'লে এর জন্যে দায়ী কে? বর্তমান শাসক? পূর্বতন শাসক?  দেশের সমস্ত নেতৃবৃন্দ? জনগণ? নাকি ভারত ভাগের নাটের গুরুরা? কার বিরুদ্ধে দোষ বা অপরাধের তকমা সাঁটবেন? কে দোষী? কে অপরাধী? ভাগ ক'রে দেশটাকে কে বা কারা চক্রান্ত ক'রে জাহান্নামের পথে হাত ধ'রে ঠেলে দিয়েছিল? তাদের বিচার হবে না? দেশ যখন ভাগ হয় তখন কেন ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হয়েছিল? আর হয়েছিল হয়েছিল অদ্ভুত ভাবে কেন দেশটা ভাগ হয়েছিল? ভৌগোলিক সীমারেখা কেন দেশটাকে ত্রিভঙ্গ ক'রে দিয়েছিল? দেশে তখন পন্ডিত জ্ঞানী গুণী ব্যক্তির অভাব ছিল? কেন সবাই চুপ ছিল? কেন অদ্ভুত ভাবে কোন যুক্তিতে বাংলাকে ভাগ ক'রে পূর্ব পাকিস্তানের সাথে  যুক্ত করা হয়েছিল? পূর্ব বাংলাকে অদ্ভুতভাবে ভাগ ক'রে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে যুক্ত করার পিছনে কি শুধু ধর্মের ভিত্তি ছিল? আরো বড়, অনেক বড় চক্রান্ত ছিল না? কি ছিল সেই চক্রান্ত? বাংলা আর বাঙালি ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ না হ'লে কাদের অসুবিধা হ'তো? আর কাদেরই বা সুবিধা হ'য়েছিল? কি ছিল সেই অসুবিধা? আর কিই বা ছিল সেই সুবিধা? তখনই যদি ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হ'য়ে দু'টুকরো হ'য়েছিল তো কেন ভারত উদারতা দেখিয়েছিল? তখনই কেন হিন্দু রাষ্ট্র হ'লো না? যদি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান মানবতার ধর্মের ধার না ধারে তাহ'লে কেন ভারত একা মানবতার ধ্বজা তুলে ধরার ন্যাকামো ক'রেছিল বা এখনো ক'রে চলেছে? যদি সত্যি সত্যিই মানবতা রাজধর্ম হ'য়ে থাকে ভারতের তাহ'লে মানবতার স্বার্থে, মানবতাকে রক্ষা করতে কেন ৭০বছর বলিষ্ঠ কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি? কার বা কাদের স্বার্থে নেয়নি? কাকে খুশী করার জন্য তথাকথিত ধর্ম নিরপেক্ষতাকে রক্ষা ক'রে চলেছিল ভারত? ধর্ম নিরপেক্ষতার আড়ালে কাদের খুশী ক'রে চলছিল ভারত সরকার এতদিন? কার বা কাদের অঙ্গুলি হেলনে ভারত ৭০ বছর তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজা উড়িয়ে সব ধর্মের সাধারণ আম মূর্খ জনতাকে বোকা বানিয়ে ক্ষমতার শিখরে বসেছিল? পাকিস্তানের রাজধর্ম যদি ইসলাম হ'য়ে থাকে, বাংলাদেশের রাজধর্ম ইসলাম হ'য়ে থাকে, আফগানিস্তানের রাজধর্ম ইসলাম হ'য়ে থাকে তাহ'লে ভারতের রাজধর্ম কি হওয়া উচিত ছিল? কেন ভারত একা মহান সাজবে? মহানতার দোহাই দিয়ে, সুযোগ নিয়ে আর কতদিন ভারতকে আঙ্গুল তুলে মিথ্যের বেসাতি ক'রে বলা হবে, ভারত তুমি অপরাধী? পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান যদি সংখ্যাগরিষ্ঠের জোরে ইসলামিক দেশ হ'তে পারে তাহ'লে ভারত কেন সংখ্যাগরিষ্ঠের জোরে হিন্দু রাষ্ট্র হ'তে পারবে না? এই সেদিন বাংলাদেশ ভারতের সাহায্যে স্বাধীন হ'লো আর স্বাধীন হ'য়েই ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার পদাঙ্ক অনুসরণ না ক'রে পাকিস্তান, আফগানিস্তানের মত তাদের পথ অনুসরণ ক'রে ইসলামিক রাজধর্মকে গ্রহণ করলো? কেন? কেন বাংলাদেশ ভারতের মত মহান মানবতা প্রেমী হ'লো না? কেন ভারতের মত বাংলাদেশের রাজধর্ম মানবতা হ'লো না? কেন বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষিত হ'লো না? কেন বাংলাদেশের ঘোষিত ধর্ম ইসলাম হ'লো? কেন পূর্ব পাকিস্তান থেকে ছিন্ন হওয়ার পর বাংলাদেশে হিন্দু বাঙালি-মুসলিম বাঙালি এক হ'য়ে মিলেমিশে থাকতে পারলো না? তাহ'লে বাংলাদেশ বাঙালিদের দেশ নয়? বাংলাদেশ মুসলমানদের দেশ? বাঙালির কাছে বাঙালির থেকে বড় তাহলে মুসলমান বাঙালি,  হিন্দু বাঙালি? তাহ'লে এত বাঙালি বাঙালি ব'লে নাটকীয়তা কেন? বাঙালির আন্তর্জাতিক পরিচয় কি? সে প্রথমে বাঙালি নাকি প্রথমে হিন্দু-মুসলমান? এসবের পিছনে কে বা কারা লুকিয়ে আছে? কে বা কারা ভারতবর্ষ দেশটাকে টুকরো ক'রে দিয়ে গিয়েছিল কিন্তু একটা সুতো দেশের পিছনে বেঁধে দিয়ে সুতোটা নিয়ে চলে গিয়েছিল ভয়ে দেশ ছেড়ে? কারা বছরের পর বছর সংখ্যালঘুদের ভয় দেখিয়ে চলেছে? মুষ্টিমেয় কয়েকজন মানুষ কেন সব ধর্মের মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি ক'রে বছরের পর বছর কায়েমী স্বার্থকে বজায় রেখে আখের গুছিয়ে চলেছে? কেন সব ধর্মের বুদ্ধিজীবীরা হয় চুপ ক'রে থাকে 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতায় নতুবা বিকিয়ে দেয় কারও না কারও কাছে অর্থ-মান-যশের লোভে? কেন তারা অন্যায়কে অন্যায় জেনেও মদদ দিয়ে চলে বছরের পর বছর? আর তার খেসারত দিতে হয়েছে পরবর্তী প্রজন্মকে, বছরের পর বছর আপনাকে-আমাকে!

কেন দেশটা ভাগ হ'লো দাদা? কেন সেদিন দেশপ্রেমিকরা চুপ ক'রে ছিলেন? কেন সেদিন মহাত্মারা কোনও মন্তব্য করেননি? কেন সেদিন নেতাজীকে দেশের অভ্যন্তরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি? কেন সেদিন হঠাৎ করেই জিগির উঠেছিল হিন্দু-মুসলমানের ভাগ-বাটোয়ারার? সেদিন যদি পূর্ব বাংলাকে পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে অন্যায়ভাবে অনৈতিক পদ্ধতিতে জোর ক'রে কিম্ভুতকিমাকার ভৌগোলিক সীমারেখা তৈরি ক'রে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যুক্ত ক'রে দেওয়া না হ'তো, যদি ভারতের সঙ্গে পশ্চিমবাংলার সাথে যুক্ত থাকতো তাহ'লে কি আজ বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হ'তো? এই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মগজ কার ছিল দাদা? কেন সেদিন বাংলাকে ভাগ করা হয়েছিল? কি উদ্দেশ্য ছিল এর পিছনে? ধর্মকে সামনে রেখে বাংলা ভাগের পিছনে যে গোপন এজেন্ডা ছিল রাজনৈতিক নেতাদের সেই গোপন এজেন্ডার শিকার কি সার্বিক ভাবে বাঙালি হয়নি? বাঙালির মধ্যেও কি বিশেষতঃ হিন্দু বাঙালি, মুসলিম বাঙালি নিয়ে সংকীর্ণ মনোভাব ছিল না? যার সুযোগ নিয়েছিল অন্য রাজ্যের লোকেরা ও বিশেষ করে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী দেশ? কেউ কি আজ পর্যন্ত প্রশ্ন তুলেছে, যে দেশকে ব্রিটিশ দু'শো বছর ধ'রে ভোগ করেছে সেই দেশের মানুষের সঙ্গে যাওয়ার আগে বিশেষ ক'রে বাঙালির সঙ্গে কেন এমন বিমাতৃসুলভ আচরণ করলো? কেন ভারতের খেয়ে ভারতের সঙ্গে, ভারতবাসীর সঙ্গে বেইমানি করলো? কেন অকৃতজ্ঞ আচরণ করলো পৃথিবীর সভ্য জাত ব্রিটিশ ভারতবাসীর সঙ্গে? কেন দেশটাকে ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে এমন নির্মমভাবে ভেঙে টুকরো টুকরো ক'রে দিয়ে গেল? যার ফল ভোগ করছে তিন দেশের সাধারণ মানুষ!!!! ভোগ করছে আজ ৭০বছর ধ'রে! এই জঘন্য অপরাধের কোনও ক্ষমা আছে? বিশ্বের সভ্যজাত ব'লে পরিচিত ব্রিটিশ কি আজ ৭০ বছর ধ'রে ভারত-পাকিস্তানের বর্তমানে বাংলাদেশ এই তিন দেশের মধ্যে নারকীয় রক্তক্ষয়ী অস্থিরতার যে ফল্গুধারা ব'য়ে চলেছে তার জন্য বিন্দুমাত্র লজ্জিত বা দুঃখিত?

এর উত্তর কি?
হয় বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ইত্যাদি পড়শী দেশের মত ভারত ধর্ম ভিত্তিক দেশ হ'ক। ভারত হিন্দু রাষ্ট্র হ'ক। নতুবা বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ইত্যাদি দেশও ভারতের পদাঙ্ক অনুসরণ ক'রে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষিত হ'ক। আর নয়তো ব্রিটিশের মুখে ঝামা ঘষে দিয়ে আবার পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির মত অখন্ড ভারতবর্ষ হ'ক। আর যদি সেদিন কখনো আসে এবার যেন আর 'ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র' হিসাবে অখন্ড ভারতবর্ষ গড়ে না ওঠে। সেদিন যেন অখন্ড ভারতবর্ষ বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র সম্পর্কে বলা কথা অনুসরণ করে। দীর্ঘ ৭০বছর একটা ভুলের উপর দাঁড়িয়ে ভারত নামক দেশটা চলেছে! এত পন্ডিত, এত মহাত্মায় ভরা দেশ এই ভুল ধরতে পারেনি! আর বললেও ভুলকে ভুল ব'লে স্বীকার করেনি! তার ফল তো দেশবাসীকেই ভুগতে হবে। যেমন দেশভাগের সময় শ্রীশ্রীঠাকুরের বলা কথাকে পাত্তাই দেয়নি সেই সময়ের বোদ্ধা দেশনেতারা। যেমন দেয়নি শ্রীশ্রীঠাকুরের হিন্দু-মুসলমানের স্থান ভিত্তিক শক্তিকে সাম্যতায় আনার পরিকল্পনা। ঠাকুর দেশভাগ সম্পর্কে বলেছিলেন, "Divining compromise is the hatch of animosity".  যা আজ হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে ও পাচ্ছে ৭০বছর ধ'রে দেশবাসী। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র আরো বললেন, "ধর্ম নিরপেক্ষ কথাটা আমার মতে ভুল। ধর্ম কখনও নিরপেক্ষ হ'তে পারে না। বরং সম্প্রদায় নিরপেক্ষ দেশ কথাটা হ'তে পারে।"

তাই অখন্ড ভারতবর্ষ যতদিন না হচ্ছে ততদিন ভারত সরকারের কাছে আবেদন আসুন শ্রীশ্রীঠাকুরের বলা 'সম্প্রদায় নিরপেক্ষ দেশ' এই বিষয়টিকে ভেবে দেখুন, আলোচনা করুন, ভুল ব্যাখ্যা থেকে দেশকে, দেশের মানুষকে বাঁচান, পথ দেখান দেশকে, বিশ্বকে, বিশ্ববাসীকে। দেশ সোজা পথে হাঁটা শিখুক। ধর্ম নিরপেক্ষ কথাটা ভুল তা দেশের মানুষ, বিশ্বের মানুষ জানুক। মূলে হাত দিন। সাংবিধানিক গলদ দূর করুন। ঘোষণা হ'ক 'ভারত সম্প্রদায় নিরপেক্ষ রাষ্ট্র'। অনেক নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণের মত শব্দের রুটে গিয়ে রুট মিনিংয়ের ওপর দাঁড়িয়ে বৈপ্লবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করুক ভারত সরকার।

আর সবচেয়ে জরুরী যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার তা হ'লো আম দেশবাসীকে বিশেষ ক'রে দেশের মায়েদের অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারের অন্ধকার নরক কুন্ড থেকে মুক্তির উপায় বের করা! যাতে ধর্মের নামে, জাতপাতের নামে বা অন্য যে কোনও বিষয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা বানাতে না পারে আর কেউ, কোনও নেতানেত্রী, কোনও অন্যায় -অশুভ শক্তি, কোনও দেশ। মনে রাখতে হবে, সাধারণ মানুষের অজ্ঞানতা, বিশৃঙ্খল-উচ্শৃঙ্খল জীবনযাপন অন্যায়ের প্রধান পৃষ্ঠপোষক!!!!!!!!!!!

Saturday, January 11, 2020

বিবেকের ডাকে।

তোমার কাছে যখন এসেছিলাম ভেবেছিলাম তোমায় ভালোবাসি;
আর ভালোবেসে ভেবেছিলাম প্রয়োজনে হাসিহাসি পরবো ফাঁসি।
তোমায় দেখেছিলাম প্রথম যেদিন ভেবেছিলাম স্বপ্নে ডুবে আছি!
আর স্বপন মাঝে যখন দিলাম ডুব দেখি শয়নে-জাগরণে সবসময়ে
স্বপ্নে আছি! এখন স্বপ্ন আমার হারিয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে আমার
স্বপ্নে দেখা মুখ! ভালোবাসা আমার শুকিয়ে গেছে শুকিয়ে গেছে সুখ!
দুঃখ সেথায় তুলেছে ফণা মারবে বলে ছোবল, কণ্ঠধ্বনি ঐ শোনা যায়
'হরিবোল, হরিবোল! বলো হরি হরিবোল।'

হরিবোল নামে পরাণ শুখায় চিত্তে জাগে ভয়!
ভালোবাসা পালায় ছুটে ভয়রে করতে নারে জয়।
শ্মশান ছবি ভেসে ওঠে পরপারের যায় ডাক শোনা!
প্রদীপ যেন নিবু নিবু আর মন বলে, শুরু হ'লো দিন গোনা!
কেমনতর ছিল সে প্রেম-স্বপ্ন-ভালোবাসা? ছিল কি তা খাসা?
ছিল কি তা খাঁটি সোনা? ছিল কি তোমার প্রতি ভরসা?
শুনেছি মহাশক্তি নাকি ঘুমিয়ে থাকে বুকের গভীরে নীরবে!?
তোমার প্রতি নিবিড় ভালোবাসায় তা নাকি জেগে ওঠে সরবে।

তমসার পার হ'তে কে যেন বলে,
বিবেকের ডাকে দাও সাড়া করো না মনের অনুসরণ;
অন্তর হ'ক শুদ্ধ আর শুদ্ধ চিত্তে করো তাঁকে বরণ।
প্রবি।

.

ঘরপোড়া গরু।

কবিতা লিখে হবেটা কি সত্যি আমার চিন্তা!
দেশ যখন জ্বলছে আগুনে আরামে খাচ্ছি ডিগবাজিটা!!
কবিতা লিখে হবেটা কি সত্যি আমার চিন্তা!
জ্বলুক দেশ! জ্বালাও দেশ! মরুক আমজনতা,
আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা!!
সত্যি! কবিতা লিখছি, কবিতা বলছি, কবিতা শুনছি আমি!
সাম্যের নামে দিচ্ছি ধ্বনি, মুক্তির কসম খাচ্ছি!!
কবিতার সঙ্গে ছড়াও লিখছি, ছুঁড়ছি ছড়ার ছররা!
বিপ্লবের নামে তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে ডুবে খাচ্ছি ভদকা!!
ছড়ার ছররা নাকি শব্দের ছররা ছুঁড়ছি এলোমেলো!
শিক্ষা-চেতনা-বিপ্লব-মুক্তির মারছি ঘাই, দেখাচ্ছি আলো!!
কবিতা লিখছি, ছড়া লিখছি, লিখছি কতকিছু!
জ্বলো, জ্বালো, জ্বালাও হাঁক দিয়ে ভাই ছুটছি সবাই
অর্থ, মান আর যশের পিছুপিছু!!
কবিতা, ছড়া লিখে হবেটা কি সত্যি আমার চিন্তা!
ঘরপোড়া গরু আমি ডরাই দেখে সিঁদুরে শেষের সেদিনটা!!
---------প্রবি।

মৌনী বাবা!

চারপাশে শুধুই মারদাঙ্গা আর হিংসা দেখে দেখে
ক্লান্ত লাগে নিজেকে। না পারলাম বাঁচতে-বাঁচাতে,
না পারলাম মান যশ, না পারলাম অর্থ কামাতে।
দিয়ে গেলাম শুধুই পেলাম না কিছুই!
বেগার খেটে ম'লাম বাড়ির খেয়ে মোষ তাড়াতে!
বাড়ির খেয়ে তাড়াতে মোষ হ'লাম ক্ষতবিক্ষত!
নিজের লোকেই মারলো গুঁতো ছুতোনাতায় অনবরত!
তবুও তাড়িয়ে এনে মোষ রাখলাম বেঁধে যেই বারান্দায়
কথা নেই বার্তা নেই নেপোয় দই মেরে দিয়ে যায়!
করবে না নিজে কিছুই ভর দিয়ে কাঁধে দাঁড়াবে
স্বার্থে টান পড়লে পরেই পা দিয়ে সেই কাঁধ মারাবে!
চারপাশে শুধু হিংসা আর পরনিন্দা পরচর্চা!
মানসিক অখাদ্য-কুখাদ্য খেয়েই জীবন হ'লো খরচা।
চিল নিয়ে গ্যাছে কান, শুনে চিলের পিছনে ছুটবে
তবু দেবে না কানে হাত! সমালোচনার দাঁড় যাবে টেনে
একই জায়গায় সকাল থেকে রাত, অসত্যের পায়ে মাথা খুঁটবে!
কথা তো নয় যেন সাপ, ব্যাঙ, ছুঁচো, ইঁদুর
মুখ দিয়ে বেরিয়ে চলেছে হিংসা, নিন্দা, কুৎসার সমুদ্দুর!
চিমটি কাটার সুযোগ খোঁজে সকাল থেকে রাত
এমনি ভাবেই বেলা গেল হ'লো জীবন বরবাদ!
যার হাত ধ'রে উঠলো ওপরে তাকেই ফেলে প্রথমে ধাক্কা দিয়ে নীচে
বাড়ির খেয়ে শুধু শুধুই বনের মোষ তাড়ালাম মিছে!
যার জন্য করলাম  চুরি দিনশেষে সেই বলে চোর!
হামাগুড়ি দেওয়া লোক হাত ধ'রে দাঁড়িয়ে উঠেই
'ভাগ শালা' ব'লে দেয় দৌড়!
চারপাশে শুধু কানাকানি হানাহানি আর মিথ্যের বড়াই
লম্প দিয়ে মারছে ঝম্প করতে সত্যের বিরুদ্ধে লড়াই!
চারপাশে সবাই পরস্পর পরস্পরকে উদ্যত মারতে থাবা
যাক, যা হচ্ছে হ'ক চারপাশে হ'য়ে যাই বাবা মৌনী বাবা!

দায়!

টিভি চ্যানেলে চ্যানেলে আলোচনার নামে বন্ধ হ'ক প্রতিদিন বুড়ো-বুড়ি খোকা-খুকীদের চিৎকার চেঁচামেচির সংস্কৃতি! বন্ধ হ'ক সঞ্চালকের মাঝখানে বক্তার কথা বলা এবং বক্তার মাঝে সঞ্চালকের কথা বলা! কে কি বলছে, কে কি বলতে চাইছে কারও কথায় শুনতে পাই না, বুঝতে পারি না। আগামী প্রজন্ম কি শিখছে? দেশের ধার কেউ ধারছে না। আমজনতার ও আগামী প্রজন্মের সুখ সমৃদ্ধি ভাঁড় মে যায়! আলোচকরা কেউ কাউকে বলতে দেয় না। অবাক লাগে সবাই বোদ্ধা!!!! কেউ ভুল নয়!!!!!! সবাই ঠিক!!!!!! আর সঞ্চালক খুব কৌশলে সঠিক সময়ে প্রসঙ্গ থেকে প্রসংগান্তরে চলে যান!!!!! যে বিষয়ে আলোচনা শুরু হয় ডিবেট শেষে সেই বিষয় থেকে ১৮০ডিগ্রি ঘুরে চলে যায় অন্য বিষয়ে। শ্রোতাদের সঙ্গে মস্করা করে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ও সঞ্চালক! হয় এই বোকাবাক্সের বোকা বানানো ভিত্তিহীন ডিবেট বন্ধ হ'ক, মানুষ সন্ধ্যাবেলায় চ্যানেলে চ্যানেলে তিতিবিরক্ত উচ্ছের পায়েস খাওয়ার হাত থেকে বাঁচুক, সুখের বদলে অন্তত স্বস্তি পাক নতুবা যে বিষয়ে ডিবেট সেই বিষয়ে একে একে বক্তারা তাদের বক্তব্য পেশ করুক, সঞ্চালক প্রশ্ন করুক বক্তারা উত্তর দিক এবং যাকে জিজ্ঞেস করবেন সঞ্চালক তিনি উত্তর দিক। কথার মাঝখানে, কথা শেষ হওয়ার আগে কেউ যেন টাং না গলায়। কারও বক্তব্যের উত্তরে কারও যদি বক্তব্য থাকে সে বক্তার বক্তব্যের শেষে পাল্টা বক্তব্য পেশ করুক এবং অবশ্যই সঞ্চালকের অনুমতি নিয়ে। কথার মাঝখানে যেন কেউ কথা না বলেন। বললে তাকে অনুষ্ঠান থেকে বহিস্কার করা হ'ক। আর অনুষ্ঠান হ'ক স্বাস্থ্যসম্মত। সঞ্চালক ও বক্তারা যেন টিভি শ্রোতাদের চার অক্ষর না ভাবেন যে শ্রোতা বা দর্শকদের যে যা খাওয়াবে আর তাই অভুক্তের মত নোলা ঝরিয়ে খেয়ে নেবে।
এখনও সময় আছে আসুন একটু ভাবুন অনুষ্ঠান হরিহরের গোয়াল ঘরে যেন আর পরিণত না হয়। আসুন বাংলা তথা ভারতের সংস্কৃতিকে সবাই মিলে রক্ষা করি। এ দায় আমার আপনার সবার!!!

বুদ্ধিজীবীদের প্রতি আবেদন।

বুদ্ধিজীবীদের প্রতি আবেদন।

মেঘ যখন সূর্যকে ঢেকে রাখে তখন মনে হয় চতুর্দিকে ঘোর অন্ধকার! সেই অন্ধকারে তৈরি হয় নানা সংশয়, বিরক্তি। কিন্তু তার স্থায়িত্ব কাল সাময়িক, ঠিক তেমনি মিথ্যে ঢেকে রাখে সত্যকে কিছুদিন। মিথ্যের শক্তি প্রবল! মিথ্যের লম্পঝম্প পাহাড় কাঁপানো। সেই মিথ্যের ঝলকানিতে সত্যের প্রতি অবিশ্বাস দানা বেঁধে ওঠে। অস্থিরতা মাথা চাড়া দেয়। সাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে। নেমে আসে অরাজকতা। সর্বনাশের বেজে ওঠে সাইরেন।

সত্য কিন্তু ধীর স্থির। হাঁকডাক, লম্পঝম্প, মাতামাতি সত্যের স্বভাব বিরুদ্ধ। তাই সত্যের প্রতি বিশ্বাসও কম। অবিশ্বাস তাকে গ্রাস করে দ্রুত। কিন্তু মিথ্যের মেঘ তাকে চিরদিন ঢেকে রাখতে পারে না। সময়ের অপেক্ষা মাত্র। মেঘ সরিয়ে যেমন সূর্য আবার আত্মপ্রকাশ করে আর চারিদিক আলোয় ভাসিয়ে দেয় ঠিক তেমনি মিথ্যের জাল ছিঁড়ে ছিন্নভিন্ন ক'রে সত্যও একদিন উদ্ভাসিত হয় জগতের বুকে। শুধু সময়ের অপেক্ষা।

আর এই যে যখন মিথ্যে সত্যকে ঢেকে রাখে তখন মিথ্যে তার অন্ধকার নিয়ে চারপাশ আচ্ছন্ন ক'রে দেয় আর মানুষ সেই মিথ্যের অন্ধকারে অভ্যস্ত হ'তে থাকে ধীরে ধীরে। এইটাই আম আদমির স্বভাব। আর তার ফলস্বরূপ সত্য উদ্ভাসিত হওয়ার আগেই যা সর্বনাশ হওয়ার তাই-ই হয়।

কিন্তু খারাপ লাগে ভাবতে, দুঃখ লাগে আম আদমী না হয় সত্যের গভীরতা তো দূরের কথা উপরি ভাসা ভাসা সত্যকেই বুঝতে পারে না, চিনতে পারে না কিন্তু যারা বুদ্ধি বেচে খায়, বিচার শক্তি, বোধবুদ্ধি প্রবল তারা যখন এই মিথ্যের মেঘের স্থায়িত্ব কালকে বাড়িয়ে দেয়, মিথ্যের ঘনত্বকে বাড়িয়ে তোলে, মিথ্যের পালে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হাওয়া দেয়, মিথ্যের পরিস্থিতিকে অনিচ্ছেয় হ'ক আর ইচ্ছেয় হ'ক জটিল ক'রে তোলে, সত্য-মিথ্যের তফাৎ করতে না পারার মত বিভ্রান্তি তৈরি করে তখন ভবিষ্যৎ কোন সর্বনাশের খাদের কিনারায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে তা ভাবলেও ঘুমের ঘোরে সচেতন মানুষ মাত্রই চমকে ওঠে।

তাই বর্তমান ভারতে শরণার্থীদের নাগরিকতা প্রদান বিলের বিরুদ্ধে যে আগুন জ্বলছে সেই আগুন জ্বলার পিছনে সত্যই বা কি মিথ্যাই বা কি তা আমআদমির পক্ষে বোঝা কঠিন হ'য়ে উঠেছে। এমনিতেই এইরকম কঠিন ও জটিল প্রশ্নে স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা কঠিন তার উপর যদি এরকম অগ্নিগর্ভ জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। তাই দেশের বর্তমান জটিল অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে রাজনীতির বাইরে দেশের সমস্ত ক্ষেত্রের শিক্ষাবিদ, ইতিহাসবিদ, অভিনেতা, কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক ইত্যাদি স্বনামধন্য মানুষের কাছে অনুরোধ আপনারা দেশের স্বার্থে, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে সত্যকে জানুন, সত্যকে বুঝুন ও আমাদের মত আম মানুষের কাছে সত্যকে সহজ সরল ক'রে তুলে ধরুন। আর বিনীত অনুরোধ আপনারা দেশের সম্মানিত ব্যক্তিরা মতামত প্রকাশ করার আগে, সত্যকে তুলে ধরার আগে দেশের সর্বত্র ঘটে চলা বর্তমান জঘন্য, নিন্দনীয় ঘটনার নিন্দা করুন, বলিষ্ঠ প্রতিবাদ করুন তাদের বিরুদ্ধে যারা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে  দেশের সম্পদ নষ্ট করেছে ও করছে, আগুন জ্বালাচ্ছে, অরাজকতার সৃষ্টি করেছে ও করছে। আপনারা নাগরিকত্বের দাবিতে আনা বিলের বিরুদ্ধে অন্যায্য, অন্যায় যদি কিছু থাকে বলুন, অবশ্যই বলুন, বলিষ্টভাবে কঠোরভাবে বলুন কিন্তু বলার আগে, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তোপ দাগার আগে দয়া ক'রে তোপ দাগুন সেই সমস্ত সুযোগ সন্ধানী মানুষ, সেইসমস্ত দেশবিরোধী পদক্ষেপ, স্লোগান, সেইসমস্ত অগ্নিগর্ভ ঘটনা, সেইসমস্ত উচ্ছৃঙ্খল-বিশৃঙ্খল জনতা ও ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে।

আসুন, আপনারা আপনাদের সুনামের প্রতি যত্নশীল হ'ন। আপনারা নিউজ চ্যানেলে আপনাদের সুচিন্তিত, বলিষ্ঠ, স্পষ্ট বক্তব্য রাখুন। দেশের এন আর সি ও ক্যাব-এর বিরুদ্ধে বিশ্লেষণমূলক বক্তব্য রাখুন। যদিও এন আর সি এখন আলোচ্য বিষয় নয়, এখন মূল আলোচ্য বিষয় ছিল নাগরিকত্ব বিল অথচ দুটো বিষয়কে এক ক'রে খিচুড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। আপাততঃ নাগরিকত্ব বিল নিয়ে আপনাদের সুচিন্তিত মতামত সাংবাদিক সম্মেলন ক'রে বলুন। আপনাদের কাছে একজন সাধারণ মানুষ হিসাবে আবেদন আপনারা বর্তমান স্পর্শকাতর অরাজকতার ভূমিতে নেমে শান্তিপূর্ণভাবে বক্তব্য রেখে পরিস্থিতিকে আরো জটিল ক'রে তুলে অস্থির অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিকে আরও অগ্নিগর্ভ ক'রে তুলবেন না, অন্যায়কারী অপরাধীদের ঘোলা জলে মাছ ধরার সুযোগ ক'রে দেবেন না। অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভাবে আপোষহীন মনোভাবে অকপট হৃদয়ে প্রতিবাদের মজবুত পাঁচিল গড়ে তুলুন তারপর সরকারের অন্যায় পদক্ষেপ, সিদ্ধান্ত যদি কিছু থাকে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামুন দ্বিধাহীন চিত্তে স্বচ্ছ তথ্য ও তত্ত্ব হাতে নিয়ে। আমজনতাকে বিভ্রান্তির হাত থেকে বাঁচাবার দায়িত্ব আপনাদেরও। আসুন আপনাদের প্রতি সাধারণ মানুষদের ভরসা অক্ষুন্ন থাকুক সেই কামনা করি। নতুবা------------।
--------------প্রবি।

উত্তর দেবে কে!?

৩৭০ ধারা বিলুপ্তি, তিন তালাক নিষিদ্ধ এবং রাম মন্দিরের মত স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে যা হ'লো না দেশে আজ শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নে দেশ হ'লো অগ্নিগর্ভ!? তখন কোথায় ছিলেন দেশের বিরোধী দল ও নেতৃবৃন্দ!? কোথায় ছিলেন দেশের প্রতিবাদী বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়!? তখন কেন এরকম অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি!? যদিও অল্পবিস্তর চেষ্টা হয়েছিল। সফল হয়নি। সফল হওয়ার সুযোগ পায়নি। যখন নির্ভয়া বলাৎকার ও হত্যা ঘটনায় অপরাধীদের নিয়ে টালবাহানা চলছে, মস্করা চলছে আইনি ব্যবস্থায় তখন কোথায় ছিলেন দেশের তামাম নেতৃবৃন্দ ও বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়!? কোথায় ছিলেন বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় ও বিপ্লবী নেতৃবৃন্দ তখন যখন ডঃ প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির উপর নারকীয় নির্ম্মমভাবে গণ বলাৎকার ও হত্যা হয়!? এইসব ঘটনা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয় যে স্বনামধন্য বুদ্ধিজীবীদের কলম ধরতে হবে, কোনও মন্তব্য করতে হবে কিংবা নেতানেত্রীদের হুঙ্কার ছাড়তে হবে। আর আজ দেশজুড়ে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদান বিলের বিরুদ্ধে যে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে চলেছে দেড় জুড়ে সেইসব ঘটনা কিসের ইঙ্গিত বহন করে!? কায়েমী স্বার্থ রক্ষাকারী মানুষ লাফ দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন হাটে-বাটে, পথে-ঘাটে,  মাঠে-ময়দানে "দে মা লন্ডভন্ড ক'রে লুটে পুটে খায়" গান গাইতে গাইতে! কে বা কারা সুযোগ ক'রে দিচ্ছেন এদের!? এগুলি কি হতাশার প্রতিফলন!? কাদের হতাশা!? কিসের হতাশা!? এসবের উত্তর কে দেবে?

সরল অঙ্ক।

জীবনটা কিন্তু সরল অংক শুধু শুধুই তাকে করছি বা করেছি জটিল!
অঙ্কের যত নিয়ম কানুন ক'রে দিয়ে জীবন থেকে বাতিল!
জীবনের অঙ্কটা কিন্তু সরল যদি না জন্মবিজ্ঞানে থাকে ভুল!
যে জীবন জন্মালো তার কি দোষ? তাকে কিন্তু দিতে হবে মাশুল!
জীবনটা কিন্ত অংক সরল তাকে গোঁজামিল দিয়ে চাইছি মেলাতে
না মিললে পরে জীবন অংক দিচ্ছি দোষ সমাজ ব্যবস্থাকে!
দিচ্ছি দোষ শিক্ষা ব্যবস্থার, দিচ্ছি দোষ রাজনীতি আর ধর্মের
কিন্তু দেখছি না দোষ আমার-তোমার, দেখছি না দোষ জীবনযাপনের!
মুষ্টিবদ্ধ হাত নিয়ে আজ যে শিশু জন্মায় কোথায় দোষ, কোথায় ত্রুটি
কাল যখন তার মুষ্টিবদ্ধ হাত আলগা হ'য়ে নিচে ঝুলে যায়!?
জীবন কিন্তু এক সরল অংক যে সরলরেখায় চলে
মেইন লাইন ছেড়ে কর্ড লাইনে চলে যায় বাপ-মায়ের ভুলে।
বাপ-মাকে বুঝতে হবে ছেলের জীবন মাঝে এত ত্রুটি কিসের?
জন্মগত ত্রুটি আর পরিবেশগত ত্রুটির মাঝে ফারাক নয় উনিশ-বিশের!
পরিবেশগত ত্রুটির মাঝে বড় হওয়া জীবন যদিও শোধরানো যায়,
ফিরে আসে মেইন লাইনে। কিন্তু জন্মবিজ্ঞানে থাকলে ত্রুটি
শোধরানোর নেই কোনও বিধান বিধাতার জন্ম আইনে!
তাই তো বলি, জীবন কিন্তু একটা সরল অংক
ক'রো না তাকে বেমতলবে অকারণ জটিল
শেষের সেদিন হবে কিন্তু ভয়ঙ্কর ভয়াবহ কুটিল!
-------প্রবি।

বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য!

আমার এক গুরুভাই আমাকে লিখেছিলেন দেশের বর্তমান অস্থির ও অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে "বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য" কথাটার বাস্তব রূপ আজও দেখতে পেলেন না। তাই দেশে কোনও জাতীয় নায়কের আবির্ভাব হ'লো না আর হ'লো না ব'লেই কোনও কিছু কেন্দ্রায়িত ক'রে তুলতে পারলেন না। এই আক্ষেপ ঝ'রে পড়েছিল তার কথায়। তার কথার উত্তরে সমবেদনায় শুধু এটুকুই বলতে পারি,
ওসব কথার কথা! বলতে হয়, বলতে ভালো লাগে, মানতে নেই। কিসের বৈচিত্র? বৈচিত্র তো চরিত্রের মধ্যে! চরিত্র নিয়ে না জন্মালে, চরিত্র গঠন না হ'লে, সংশোধিত না হ'লে, উন্নত না হ'লে ঐক্য আসে কোথা থেকে!? বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য ওসব কথার ফানুস। মরীচিকা ছাড়া কিছু নয়। তাই তাকে বললাম, 'বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য' কথাটার বাস্তব রূপ আজ অবধি দেখতে পাননি আর পাবেনও না। ওসব কাল্পনিক কথা মাঝে মাঝে নাটকীয়তা সৃষ্টি করার জন্য কায়েমী স্বার্থ রক্ষাকারীরা আম জনতার মাঝে পুষ্পবৃষ্টির মত ছিটিয়ে থাকে। রাজনীতির আঙিনায় আজ বিরাট শূন্যতা বিরাজ করছে। শূন্যতা! নেতৃত্বের শূন্যতা! আর এই শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল দেশ ভাগের সময় থেকেই যা আজও পূরণ হয়নি। আর আমরা যারা ওই 'বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য' কথাকে মূলধন ক'রে বাঁচতে চাই তাদের চরিত্রও শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের কথা অনুযায়ী "মুখেতে আছে ব্যবহারে নাই, সেই শিক্ষার মুখে ছাই" বাণীর জ্বলন্ত উদাহরণ! তাই দেশে জাতীয় নায়কের অভাব আজও দেশের স্বাধীনতার ৭৩বছর ও শ্রীশ্রীঠাকুরের ১৩২বছর বয়সের পরও রয়ে গেল আর রয়েও যাবে। যার ফলে কোনোদিনই কোনও কিছু কেন্দ্রায়িত ক'রে তুলতে পারবেন না। কারণ যা যা নিয়ে ঠাকুর ঠাকুর হয়েছিলেন আমরা তাঁর অনুগামীরা না জন্মগতভাবে তাঁর কথার প্রতিফলন হ'তে পেরেছি, না তাঁর কৃষ্টিসন্তান হ'তে পেরেছি!!!!!! কোয়ান্টিটিতে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে! কোয়ালিটির বড় অভাব! যদিও ঠাকুর বলেছেন দোয়ারে দীক্ষার কথা। সেই কথা মাথায় রেখে ঠাকুরের আদেশ পালন হ'য়ে চলেছে প্রশ্নহীন, যুক্তিহীনভাবে। কিন্তু আমরা কোয়ান্টিটি তাঁর নির্দেশমত, তাঁর ইচ্ছামত কোয়ালিটিতে উদ্ভিন্ন হ'তে পারছি না! এর মধ্যে আবার কিছু চরিত্র আছে যারা সৎসঙ্গী নামধারী অমানুষ অবৈধ ঠাকুরের ভক্ত সেজে,  ঠাকুর প্রেমিক সেজে ঠাকুর আত্মজদের বিরুদ্ধে ঠাকুর বিরোধীদের চেয়েও তীব্র অশ্লীল কুশ্লীল গালিগালাজ ক'রে চলেছে নিরন্তর বুকের জ্বালা মিটিয়ে! যাদের মুখের ভাষা পায়খানার দুর্গন্ধকে হার মানায়! হিন্দিতে কাহাবত হ্যায়, টাট্টি য্যায়সী বাত!!! যে দুর্গন্ধে ঠাকুর মূর্ছা যান!!! এমনই পরম চরম ভন্ড ভক্ত এরা!!!! তাহ'লে কোনদিকে যাবেন আপনি!? একদিকে ঠাকুর বিরোধী, অন্যদিকে ভন্ড অমানুষ ঠাকুরপ্রেমী ভক্ত আর মাঝখানে আমার আপনার মত কোয়ান্টিটি ভক্ত!!!!
তাই আপনার জাতীয় নায়কের স্বপ্ন ও সবকিছুকে কেন্দ্রায়িত ক'রে তোলার বাসনা অধুরাই থেকে যাবে। যদিও কথাগুলি মনে হ'তে পারে হতাশার কথা কিন্তু বাস্তব। জানি না ভাবার সময় এসেছে কিনা। জয়গুরু।---------প্রবি।
( রচনা ২১শে ডিসেম্বর'২০১৯)
নিজের জীবনে হাজার ভুল, গেছি অন্যের ভুল ধরতে!
ভুলের ঝুলে আষ্টেপৃষ্ঠে বন্দী আমি গেছি দেশের ঝুল ঝাড়তে!!----প্রবি।

তাত্ত্বিক আমেজ!

তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে আছো মণি তাত্ত্বিক আমেজেই ডুবে থাকো! তাত্ত্বিক আমেজ মানেই গরম কাপড়ে নিজেকে জড়িয়ে নিয়ে চুকচুক ক'রে সূরা পান করা আর ঢুলুঢুলু চোখে রঙিন স্বপ্ন দেখা। পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ টেনশন বিহীন আরামদায়ক কাজ হ'লো তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে দিনরাত ভুলভাল তত্ত্ব কথার জাবর কাটা আর জাবর কাটা! তাত্ত্বিক আমেজ মানেই নিজে কিছু না ক'রে অন্যকে খোঁচা মেরে মেরে অন্তঃসারশূন্য জ্ঞানগর্ভ কথার ফুলঝুরি ছোটানো! তাত্ত্বিক আমেজ মানেই অন্যের ঘাড়ে বন্দুক রেখে আন্দাগুনদা কথার ট্রিগার টেপা। তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে আছো মণি? তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে থেকে কখন যে সকাল কেটে দুপুর ঘনিয়ে শেষের সেদিনের সন্ধ্যে নেমে আসে তার খেয়াল থাকে। তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা মানুষ হঠাৎ হঠাৎ ক'রে ঘুমের ঘোরে লাফ দিয়ে ওঠার মত বিপ্লবী হ'য়ে উঠে দিগ্বিদিক জ্ঞান শূন্য হ'য়ে পা ছুঁড়তে থাকে! তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা মন শেষের দিনে হ'য়ে ওঠে ভারাক্রান্ত এক সের থেকে এক মন! তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা জীবন শীতের বিকেলে ধোঁয়া ওঠা চায়ে চুমুক দিয়ে ফুলের বাগানে বাগান চর্চায় মাততে চায়। এই তো জীবন! তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা নেশাগ্রস্থ জীবন!!-----প্রবি।

নির্বাচন ও জনগণ এবং জানতে ইচ্ছা করে!

এগুলি কোন দলের জনগণ যারা বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে!? এগুলি কোন জনগণ যারা ভোট দিয়ে বিজেপিকে ঝাড়খণ্ড নির্বাচনে পরাস্ত ক'রে আদর্শগতভাবে বিরোধ সর্বস্ব দলগুলির জোটকে জিতিয়ে এনেছে!? জানতে ইচ্ছে করে! তাহ'লে লোকসভা ভোটে যে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ বিজেপিকে জিতিয়ে এনেছিল তারা কি ভুল করেছিল!? জানতে ইচ্ছা করে, আজ যারা বিজেপিকে হারিয়েছে তারা একক শক্তিতে কেন জিততে পারে না!? আদর্শগত বিরোধ যাদের মজ্জাগত তারা কি ক'রে একজোট হয়!? কেন হয়!? কোন জনগণকে অভিনন্দন জানাবো আমরা যারা নেতাদের উস্কানিতে নিজেদের মধ্যে লড়াই করে আবার নেতাদের বানানো চাটনি খেয়ে এক হ'য়ে বৃহৎ শক্তির বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে নেতাদের রক্ষা করতে, সেই জনগণকে অভিনন্দন জানাবো!? জনগণকেই যদি অভিনন্দন জানাতে হয় তাহ'লে ভারতের জনগণই তো বিজেপিকে বিপুল পরিমাণে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে গনতান্ত্রিক দেশের গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাহ'লে সেই জনগণকে অভিনন্দন নয় কেন!? জনগণকে  অভিনন্দন-এর বেলায় পক্ষপাতিত্ব কেন!? কেন নিরপেক্ষ নয়!? এই জনগণই যখন লোকসভায় বিপুল ভোটে জিতিয়ে এনেছিল বিজেপিকে তখন মোদী বিরোধী সমস্ত দলগুলির সমস্ত নেতা ঐক্যবদ্ধভাবে বলেছিল জনগণ ভুল করেছে আর আজ সেই জনগণ যখন পাল্টে যায় তখন আবার নেতারা পাল্টি খেয়ে উল্টো সুরে সেই জনগণের জয়গান গায়! কেন!? আমার কাছে জনাদেশ আগে তা সেই জনাদেশ ভুল হ'ক আর ঠিক হ'ক!!! আর জনাদেশ কবে কোথায় 100% ঠিক হয়েছে!?  আমজনতা কোন দেশে কবে কায়েমী স্বার্থরক্ষাকারীদের রাজনীতির জটিল চাল বুঝতে পেরেছে!? আমজনতা কবে রাজনীতির ক্ষমতা দখলের ব্যাপারীদের ব্যাপার-স্যাপার বুঝতে পেরেছে!? আমজনতা কবে ঐক্যবদ্ধভাবে, সচেতনভাবে দূরদৃষ্টির ওপর দাঁড়িয়ে প্রজ্ঞার সাথে অসৎ শক্তিকে পরাস্ত করতে পেরেছে!? কেউ কি বলতে পারবেন কবে কখন কোথায়!?!?!?!?!?

নতুন বছর ২০২০!

নতুন বছরকে স্বাগত জানাবার বহর দেখে মনে হচ্ছে না দেশের বুকে কোনও গভীর অসুখ বাসা বেঁধেছে, দেশে কোনও গরিবী আছে, আছে কোনও কঠিন সমস্যা!! মনে হচ্ছে না কোনও বেকারত্ব আছে, আছে আকাশছোঁয়া দাম! মনে হচ্ছে না দেশে কোনও প্রবীণ-প্রবীণা আছে! না আছে কোনও অসুস্থ মানুষ! শুধুই আছে বুকের মাঝে, মাথার গভীরে ব্রেনের ঘিলুতে ডিজে-র কান ফাটানো শব্দ হাতুড়ির এলোপাতাড়ি বাড়ি আর বাড়ি, বাড়ি আর বাড়ি!! হে ঈশ্বর! ধ্বংস হ'য়ে যাক এই উচ্শৃঙ্খল পৃথিবী, নেবে আসুক মহাপ্রলয়!!   প্রবি।

শব্দদানব ডি জে!

শিব ঠাকুরের আপন দেশে-------

সরকার কি কোমায় আচ্ছন্ন!? নববর্ষের ডি. জে. শব্দ দানবের তান্ডব কি কানে পৌঁছোয় না!? চোখে দেখে না!?!?!? সরকার, প্রশাসন, প্রশাসক কি কালা!? অন্ধ!?!?

ঠিক এমনি বরাবরের অন্যান্য অনুষ্ঠান, উৎসব ও পুজোর মত ছট পূজার সময়ও পানিহাটি স্বদেশী মোড়ে জনবহুল বি. টি. রোডে প্রকাশ্যে দেখেছিলাম সারাদিনব্যাপী শব্দদানবের দাপাদাপি, শুনেছিলাম জনবহুল ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ির ভিড়ে ডি. জে. শব্দদানবের হুঙ্কার! কেউ কারও কথা শুনতে পাচ্ছে না, কারও সঙ্গে কথা বলতে পারছে না! গাড়ির হর্ন চাপা পড়ে যাচ্ছে ডি. জে-র ভয়ঙ্কর গর্জনের নীচে!!!!! একটা অদ্ভুত দানবীয় উল্লাসের খুল্লমখুল্লা স্বাধীনতা! কোনও প্রশাসন নেই, নেই কোনও শাসন ও নেই কোনও প্রশাসক! অনুরোধ করলে সামান্য একটু কমিয়ে দেয় একজন আর পরমুহূর্তেই আর একজন ছট পূজার উদ্যোক্তা এসে দ্বিগুন বাড়িয়ে দেয় শব্দের ভলিউম!! শব্দের প্রচন্ডতায় সৃষ্টি হয়েছে একটা উচ্শৃঙ্খল বিশৃঙ্খল পরিবেশ আর সেই পরিবেশে নীরবে মানুষ মুখ বুজে সহ্য ক'রে চলেছে ঈশ্বর পূজার অত্যাচার!!!!! কয়েকটি মাত্র মানুষ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে স্বদেশী মোড়ের মত জনবহুল রাস্তার পাশে সরকার, প্রশাসন, প্রশাসক আর তামাম নাগরিকের সুবিধা-অসুবিধাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বলাৎকার করতে করতে!!!!!! যেন মনে হচ্ছে দেশে কোনও সরকার, পুলিশ, প্রশাসন, প্রশাসক নেই! চালাও পানসি! শালা যা চলছে, চলুক! যা হচ্ছে, হ'ক! চলেছে! চলছে!! চলবে!!! হয়েছে! হচ্ছে!! হবে!!! শিব ঠাকুরের আপন দেশে আইনকানুন সর্বনেশে!! হ্যাটস অফ পুজোপার্বন! হ্যাটস অফ নববর্ষ!! হ্যাটস অফ অনুষ্ঠান-উৎসব!!! হ্যাটস অফ সরকার, প্রশাসন, প্রশাসক!!!! হ্যাটস অফ তামাম সাধারণ-অসাধারণ, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, লেখাপড়া জানা ও না-জানাওয়ালা আম নাগরিক!!!!! হ্যাটস অফ!!!!!!! -------প্রবি।

চ্যালেঞ্জ!

নতুন বছরে আসুন ঠাকুরকে ঠাকুর যা চেয়েছিলেন, যেভাবে চেয়েছিলেন ঠিক সেইভাবে প্রতিষ্ঠা করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করি। চ্যালেঞ্জ মানে চলনকে সঠিক পথে চালিত করার ও ক'রে চলার জন্য নিজেকে আরেঞ্জ করা। ঠাকুরকে মাথায় নিয়ে চলা অর্থাৎ তাঁর চলন পুজো করা, চরণ পুজো নয়, নয় ফুল বেলপাতা, ধূপধুনো দিয়ে পুজো, পুজো মানে স্বাগতম অর্থাৎ তাঁর চলা, বলা, কথা, আচার, ব্যবহার ইত্যাদিকে নিজের চরিত্রে আপন ক'রে নেওয়া, মিশিয়ে নেওয়া! দেখব সব সমস্যা কেটে যাবে ধীরে ধীরে! কাটবেই!! আসুন বিশ্বাস রাখি নিজের ও ঠাকুরের ওপর আর সেইভাবে চলি যেন ঠাকুর খুশী হন!!!!!
---প্রবি।

কর্ম-ধর্ম!

কর্মযোগী পুরুষ তুমি কর্ম নিয়েই থাকো;
কর্ম তোমার ধ্যান জ্ঞান কর্ম নিয়েই বাঁচো!
কর্ম মাঝে তুফান ওঠে কথার তুফান বটে!
ধর্মহীন কর্ম জেনো পুতুল কিন্তু বিকিকিনির হাটে।

ধর্মযোগী পুরুষ তুমি ধর্ম নিয়েই থাকো;
ধর্ম তোমার ধ্যান জ্ঞান ধর্ম নিয়েই বাঁচো!
ধর্ম মাঝে তুফান ওঠে ভক্তির তুফান বটে!
কর্মহীন ধর্ম জেনো প্রসব করে কিন্তু অশ্বডিম্ব ঘটে!

কর্মযোগী মারছে ঝাঁপ কর্ম নিয়ে ফাটিয়ে ঢাক
কর্মমাঝে মারছে ঘাই কর্ম কর্ম মারছে হাঁক!
ধর্ম ধর্ম জিগির তুলে ধর্মযোগী ছুটিয়ে ঘোড়া
দেশটাকে ক'রে টুকরো টুকরো করছে শেষে কানা খোঁড়া!
কর্ম-ধর্মের মনভুলানী বাদাম তুলে করতে চাইছো বাজিমাৎ!?
ভুলভুলাইয়ার ঘুলঘুলিতে হবেই হবে নিশ্চিত কুপোকাত।

এমনিভাবেই কর্মযোগী কর্ম করে, ধর্মযোগী ধর্ম;
কর্মধর্ম বিভেদ মাঝে যায় হারিয়ে আসল কথা মর্ম!
কর্মই ধর্ম ব'লে হাঁক পারে যে কর্মযোগী
কর্ম করার অহংকার তার মজ্জাগত, সে রোগী!
ধর্ম ধর্ম ব'লে যারা কর্মের নামে করছো খালি হট্টগোল
অনুষ্ঠানের নামে তোরা ধর্মটাকে চিতায় তোল!

কর্ম মাঝেই ধর্ম আছে আর ধর্ম মাঝে কর্ম
জেনো এ পরম সত্য!
বাঁচা-বাড়া আছে যেথায় তাহাই কর্ম, তাহাই ধর্ম!
এ নেই যেখানে তাহাই অসৎ, তাহাই অসত্য।

( লেখা ১১ই জানুয়ারী'২০১৯ )

Friday, January 10, 2020

মানুষ ও মানুষের মানসিকতা।


অনেক লেখার মত শুভ নববর্ষে একটা লেখা লিখেছিলাম। নববর্ষের সকাল থেকে উদ্দাম ডি জে-র হুঙ্কারকে মাথায় রেখে 'শিব ঠাকুরের আপন দেশে--------' নামে লেখায় শব্দদূষণের বিষয়টাকে নিয়ে লিখতে গিয়ে ভয়ঙ্কর অস্বাস্থ্যকর প্রতিবাদী মন্তব্যের মুখোমুখি হ'লাম! যা এখনও হ'য়ে চলছে!! নিমেষের মধ্যে ঝাঁকে ঝাঁকে মন্তব্য আসতে লাগলো! যেন মনে হচ্ছে যেন সবাই ওত পেতে বসেছিল! গরম গরম পাতে পড়তে না পড়তেই ঝাঁপিয়ে পড়লো ঠুকরে ঠুকরে ক্ষতবিক্ষত করবে বলে! মনে হচ্ছিল ফেসবুক থেকে ছোঁ মেরে তুলে নিয়ে যাবে! কথার ছোবল কি ভয়ঙ্কর নোংরা বিষাক্ত হ'তে পারে তা পোষ্টের মন্তব্যগুলি ছিল সাক্ষী! কিন্তু আমি বাধ্য হ'য়ে বেশীর ভাগ অশ্লীল কুৎসিত মন্তব্য ডিলিট ক'রে দিয়েছি। প্রথমে ভেবেছিলাম সব রেখে দেবো, দিয়েছিলামও পরে গা ঘিনঘিন করতে লাগলো, দুর্গন্ধ ছড়াতে লাগলো আমার টাইমলাইন থেকে! তাই ডিলিট করতে লাগলাম একে একে বিষাক্ত মন্তব্যগুলি। কিছু মন্তব্য এখনও রেখে দিয়েছি। মানুষ পড়ুক, জানুক।

পোষ্টের বিষয় ছিল একনাগাড়ে বেজে চলা ডি জে-র ভয়ঙ্কর বুক কাঁপানো গুরুম গুরুম শব্দদূষণ! সেই বিষয়কে সামনে রেখে ভেবেছিলাম একটি পরিবেশ সচেতন গঠনমূলক আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে। তার জন্য সবরকম পক্ষে-বিপক্ষের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য মানুষ হিসাবে মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। যদিও এতদিনের অভিজ্ঞতায় জেনেছি কেউই আলোচনার মুখোমুখি হয় না। শুধু কিছু লাইক আর গুরুভাইদের বিরক্তিকর 'জয়গুরু' ছাড়া আর কিছুই হয় না। এইযে জয়গুরু নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যটা করলাম এর জন্যেও সমালোচিত হ'তে হবে। কথাটা বাধ্য হয়েই লিখেছি। কারণ গুরুভাইবোনেদের মোল্লার দৌড় মসজিদের মতন দৌড় জয়গুরু পর্যন্ত। এতে রাগ হ'তে পারে আমার গুরুভাইবোনেদের (যদিও অবশ্যই ব্যতিক্রম আছে তবে তা খুবই নগণ্য) কিন্তু সত্য চিরকালই অপ্রিয়। আমরা গুরুভাইবোনরা যদি এই ফেসবুকের মত স্ট্রং মিডিয়াকে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের জীবন দর্শন কে তুলে ধরার কাজে ব্যবহার করতে না পারি তাহ'লে কোটি কোটি ঠাকুরের ঘুমিয়ে থাকা অনুগামী দিয়ে কি হবে!? কি হবে আজ শুধু কোয়ালিটি বিহীন কোয়ান্টিটি দিয়ে!? যদিও দোয়ারে নাম দেওয়ার কথা স্বয়ং ঠাকুর ব'লে গ্যাছেন। কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান দুর্যোগপূর্ণ ও আগামী ভয়াবহ ভয়ংকর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনুগামীদের কি কি করণীয় তাও ব'লে গ্যাছেন তিনি! অথচ আমরা কতটা তৈরি হয়েছি দূরের কথা কতটা তৈরি হওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছি বা চালাচ্ছি তা আমরা নিজেরাই জানি আর সামান্য হ'লেও তার ঝলক পায় ফেসবুকে! আর এলাকায় এলাকায় আমরা জানি আমাদের অবস্থান!

যখন ভাবছিলাম একটা পজিটিভ মানসিকতার প্রতিফলন দেখতে পাবো আমার লেখা ঐ 'শিব ঠাকুরের আপন দেশে-----' পোষ্টের ওপরে কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত নেগেটিভ, অতি নেগেটিভ হাওয়ার তোড়ে ভেসে যেতে লাগলো সব! মনে হ'লো দিগন্তব্যাপী ঘর অন্ধকারে ডুবে যাওয়া কালবৈশাখীর ঝড় আছড়ে পড়েছে পোষ্ট করা আমার লেখাটার উপর! অকথ্য কুকথ্য ভাষায় গালাগালি! সে কি ভাষা এখনও কানের কাছে গু'য়ে মাছির মত ভনভন ক'রে বেজে চলেছে! চোখ বন্ধ করলেও নোংরা ছবিগুলি ভেসে উঠছে বন্ধ চোখের সামনে! চোখ বন্ধ করলেই বিপদ! ঝাঁকে ঝাঁকে নোংরা লেখাগুলি, ছবিগুলি আছড়ে পড়ছে চোখের পাতার উপর, মণির উপর! আর সমস্ত গালাগালি, কুৎসা, নোংরা বাজারী শব্দের ডালি আর ছবির পশরা নিয়ে ফেসবুকে প্রতিবাদী যুবক-যুবতী সমাজ, অল্পবয়সী ছেলেমেয়ে হৈহৈ, রেরে ক'রে নেবে পড়েছে আমার লেখার বিরুদ্ধে বিপ্লব ঘটাবে ব'লে!!!!!! অবাক হ'য়ে শুধু ভাবতে লাগলাম এই আমার বাংলা ও বাঙালির বর্তমান প্রজন্ম!!!!!

বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়ে, যুবকযুবতী আমার পোস্ট করা লেখার বিষয়কে অজুহাত হিসেবে সামনে রেখে নেবে পড়েছে বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের বিরুদ্ধে পরিকলিপ্ত ও সংগঠিত কুৎসা, নিন্দা, গালাগালি করবে বলে! একের পর এক পোষ্ট ক'রে চলেছে ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবার নিয়ে ঘৃণ্য ছবি! চোখ অন্ধ হ'য়ে যায় ঐ সব অশ্লীল ছবি দেখলে ও পড়লে!!!!! তাদের লক্ষ্য শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও ঠাকুর পরিবার। অবাক হ'য়ে যাই, স্তম্ভিত হ'য়ে যাই অল্পবয়সী ছেলেমেয়ে, যুবকযুবতীদের মুখের ভাষা শুনে! আরো বেশি হতভম্ব হ'য়ে যায়, মুখের থেকে কথা হারিয়ে যায় যখন দেখি অল্পবয়সী মেয়েরা, যুবতীরা এমনকি কিছু মধ্য বয়সী নারীরা অনায়াসে অবলীলায়, অবহেলায় ঠাকুরকে, ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের খিস্তিখেউর করছে!!!!! এরা নারী জাতি!? এরা আগামী প্রজন্মের জন্মদাত্রী!? এরা কোনও সন্তানের মা!?

এই যুবকযুবতী, ছেলেমেয়েরা যখন নিঃসংকোচে  নির্দ্বিধায় মূহুর্তে মুহূর্তে নোংরা পোষ্ট ক'রে চলেছে তখন ভাবলাম এরা কোন পরিবারের সন্তান! এদের পিতামাতারা কি এই অপসংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক!? এদের পিতামাতারা এদের এইরকম ভাষা, ব্যবহার, কথাবার্তা, আচার-আচরণ সমর্থন করেন!? এরা কি জানেন এদের আদরের সন্তানরা এমন ঘৃণ্য বিপ্লবী কাজের সঙ্গে যুক্ত!? বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ সমান জ্ঞান নিয়ে এরা ঠাকুরের বাণীর ব্যাখ্যা করে!!!!!! খিস্তি দিয়ে, নোংরা ছবি দিয়ে ঠাকুরের বাণীর ব্যাখ্যা করে, ব্যাখ্যা চায়!!!!! আবার একে অপরকে উৎসাহ দেয়, প্রভোক করে, নাম লিখে আহবান করে কাঁচা কাঁচা গালি নিয়ে আসরে জমায়েত হ'য়ে আসরকে গরম করতে!!!! আহ্বান শুনে পিলপিল ক'রে নেবে পড়ে আসরে সব লাইন দিয়ে মজা লুটবে বলে!!!!!

আমি নোংরা ছবি, নোংরা লেখা ১টা ডিলিট করতে না করতেই ১০টা ছবি, ১০টা লেখা কমেন্ট বক্সে ভেসে ওঠে!!!! সমস্ত অশ্লীল কমেন্ট ডিলিট করতে করতে আমি আপাদমস্তক যেন মেথর হ'য়ে গেছি!!!! যেন মনে হচ্ছে গা দিয়ে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে!!!!

ঐ সমস্ত প্রতিবাদীদের শব্দদূষণ অভিযোগ একটা অজুহাত মাত্র! তাদের মূল লক্ষ্য শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও তাঁর পরিবার-পরিজন! ওই সমস্ত মানুষগুলির শিক্ষা, রুচি, বাড়ির পরিবেশ, বন্ধুবান্ধব, সঙ্গ কিরকম অস্বাস্থ্যকর ও সংক্রামক তা ওই সমস্ত পোষ্ট করা কমেন্ট, ছবি দেখলেই, ভাবলেই মাথা ভারী হ'য়ে আসে!! আমার লেখা ঐ পোস্টের প্রসঙ্গ বহির্ভুত শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিয়ে কুৎসার চর্চা হ'য়ে গেল মুখ্য আর পোষ্টের বিষয় ডি জে-এর ভয়াবহ শব্দদানব বিষয় হ'য়ে গেল গৌণ!!!!!! হা ঈশ্বর! কি বিচিত্র এই বাংলা আর কি বিচিত্র এই বাংলার বাঙালি!!!!!! ফেসবুক জুড়ে শুধু বাংলার বুকে বাঙালির গালাগালি বাংলা ও ভারত তথা বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে!!!!! ভারতের আর কোন রাজ্যে এই সীমাহীন অসভ্যতা নেই! বাঙালি ছাড়া শ্রীশ্রীঠাকুরকে কেউ নেই কানে গরম সীসা ঢেলে দেওয়ার মত তীব্র জ্বালাময় গা ঘিনঘিন করা গালাগালি করার?

যাই হ'ক এই সমস্ত ছেলেমেয়েরা, যুবকযুবতী-রা শব্দদূষণ নিয়ে আমাকে পাল্টা চার্জ করে অসম্মান, অপমানজনক গালাগালি ক'রে। তারা সৎসঙ্গের নানা অনুষ্ঠানে, উৎসবের সময়, বাড়িতে সৎসঙ্গের সময় মাইক বাজানো নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তোলে। প্রশ্ন তোলে বাঁকুড়ার দারকেশ্বরে উৎসব করা নিয়ে। উত্তর দিতে ইচ্ছে করলেও উত্তর দিতে মন সায় দেয় না। কাকে বা কাদের উত্তর দেবো? ওরা তো উত্তর চায় না! চাইলে আলোচনার টেবিলে বসতো, স্বাস্থ্যকরভাবে মতের আদান-প্রদান করতো। শব্দদানবের ন্যায্য প্রশ্ন তুলতো। কিন্তু তা হয়নি, হওয়ার কথা নয়। যতই এদের উত্তর দাও না কেন সেই ঘুরে ফিরে একই ঘৃণ্য কথার জাগলারি! তারা পায়খানার সেফটি ট্যাঙ্কের পোকার চেয়ে জঘন্য জীবনের অধিকারী আর তাই মুখে টাট্টি কা মাফিক বাত!!!!!!! এরা আলোচনার যোগ্য ও উপযুক্ত নয়।

যাই হ'ক, তবুও এখনও ঐ পোষ্টে অনেক কমেন্ট রয়ে গ্যাছে আর এসেও চলেছে! তাই যে উত্তর ওদের দিতে পারতাম কিন্তু দিইনি সেই উত্তর আমি এখানে দিচ্ছি। এখানে দিচ্ছি আমার গুরুভাইবোনদের উদ্দেশ্যে।

হ্যাঁ! শব্দদূষণ সব ক্ষেত্রেই শব্দদূষণ! তা যেখানেই সে রীতি লঙ্ঘন করুক না কেন! আমাদের সৎসঙ্গের অনুষ্ঠানে বাড়িতে, উৎসবে, মাইক লাগানো হয় আর সেই মাইক যখন সকাল থেকে অকারণে কেউ বাজায়, বাড়ির ছেলেমেয়েরা মিলে চেঁচামেচি করে, কেউ খ্যান খ্যানে গলায় গান গায়, কীর্তন করে, এলোমেলো ভিত্তিহীন সাপব্যাঙের গল্প শোনায় হেঁড়ে গলায় তখন নিঃসন্দেহে তা অসহ্য ও বিরক্তিকরভাবে সমাজে প্রভাব ফেলে। যে কোনদিন নিজের ঘরে গান গায়নি, গান শেখেনি, ঠাকুরের কথা বলেনি, শোনেনি, পড়েনি সেই ব্যক্তি যদি গান গায়, বক্তব্য রাখে তাও আবার মাইকে তাহলে যা হবার তাই হয়! বিরোধীরা সুযোগ পায় তেড়েফুঁড়ে উঠে তাদের বুকের ভিতর জমিয়ে রাখা বিষ উগলে দিতে। আর মাইক বা চোঙ লাইটপোষ্টে লাগালে তা কানের মধ্যে প্রবল ধাক্কা মারে। কারণ সেই আওয়াজ বেরিয়ে যেতে পারে না, বাঁধা পরে যায় চারপাশের গজিয়ে ওঠা ফ্ল্যাটে। এখন আর কোথাও ফাঁকা জায়গা নেই। চতুর্দিকে ফ্ল্যাট আর ফ্ল্যাট, ফ্ল্যাট আর ফ্ল্যাট!!!!! তাই মাইক লাগাবার সময় পরিস্থিতি, পরিবেশের কথা মাথায় রেখে উঁচু জায়গায়, ফ্ল্যাটের মাথায় মাইক লাগাতে হবে, বাজাতে হবে, নিচে অনুষ্ঠানের জায়গায় বক্স লাগাতে হবে, পরিমিত সাউন্ড দিতে হবে, রাস্তায় লাইট পোষ্টে মাইক না বাঁধায় ভালো, নির্দিষ্ট একটা সময়ে, একটা সময় পর্যন্ত বাজাতে হবে। ভালো ভালো গান, ভালো শিল্পীদের দিয়ে গাওয়াতে হবে, যথেষ্ট ঠাকুর সম্পর্কে জ্ঞানের অধিকারী ভক্ত মানুষকে দিয়ে বক্তব্য রাখাতে হবে আর নতুবা মাইক বিহীন সৎসঙ্গ করতে হবে। পরিবেশ-পরিস্থিতিকে অবজ্ঞা করার কথা ঠাকুর নিষেধ করেছেন। সবসময় বলেছেন পরিবেশের দিকে, পরিস্থিতির দিকে কঠোর তীক্ষ্ণ নজর দিতে, নজর রাখতে।

এইসমস্ত মানুষ যারা প্রতিবাদে সামিল হয়েছে তারা ভোটের সময় বা অন্য কোনও  রাজনৈতিক বক্তৃতার সময় প্রতিবাদের মুখ খোলে না। খুলতে সাহস পায় না। অথচ এরাই শব্দদূষণ-এর প্রতিবাদের নামে অজুহাত কে হাতিয়ার ক'রে ঠাকুর অনুকূলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। এদের মধ্যে তীব্র ধর্ম, ঈশ্বর, ঠাকুর বিরোধী ছাড়াও অনেক অন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অনুগামীও আছে। তারা সৎসঙ্গের ব্যাপক বিস্তারে কাতর, হিংসায় জর্জরিত! অনেক আছে অন্যের কথায় প্রভাবিত। কোনও খবর না রেখেই, তথ্য ও প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ ছাড়াই চিল কান নিয়ে গ্যাছে শুনে কানে হাত না দিয়ে চিলের পিছনে ছোটার মত ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারের বিরুদ্ধে, সৎসঙ্গের বিরুদ্ধে, উৎসবের বিরুদ্ধে কথা বলে, ঈর্ষাকাতর হ'য়ে মিথ্যে প্রোপাগান্ডা করে রাজনৈতিক দলের প্রোপাগান্ডার মত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই!!!

তাই আসুন আমরা এমনভাবে চলি যাতে এরা সুযোগ না পায় আর এদের কথার উত্তর না দিয়ে আমার ঠাকুরের চাহিদা মত আমার জীবনটাকেই এদের প্রশ্নের উত্তর ক'রে তুলি। ভেবে পা ফেলি, চারপাশের পরিবেশের কথা ভেবে সময় নির্বাচন করি। একটা উদাহরণ দিই, গত লোকসভা ভোটের সময় আমরা ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্র ও খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্রের মাসিক অনুষ্ঠান বন্ধ রেখেছিলাম। কারণ টানা ভোট প্রচারের মাইকের আওয়াজে আর বাজির আওয়াজে মানুষ তিতিবিরক্ত হ'য়ে গিয়েছিল কিন্তু ভয়ে মুখ ফুটে কেউ কিছু বলতে পারে নি, পারে না। সেই কথা বিবেচনা ক'রে আমরা দুটো কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ভোটের সময়ের মাসিক 'বিশেষ সৎসঙ্গ' বন্ধ রেখেছিলাম কিন্তু আমাদেরই পাশের একটি কেন্দ্র লোকসভা ভোটের যেদিন ডেট ছিল এই অঞ্চলে তার পরদিনই বড় ক'রে সৎসঙ্গের আয়োজন করেছিল। কিন্তু আয়োজকরা অনুষ্ঠান শেষে আর ফিডব্যাক নেয়নি যে অনুষ্ঠানের প্রতিক্রিয়া কি!? এরা ফিডব্যাক নেওয়া তো দূরের কথা ফিডব্যাক নেওয়ার কথায় মাথায় আসে না। ফলস্বরূপ এইসমস্ত অতি উৎসাহী গুরুভাইরা জানতেই পারেনি যে কি অকথ্য কুকথ্য ভাষায় প্রতিকূল ঠাকুর ব'লে গালাগালি করেছে উৎসব স্থলের বাইরে রাস্তায় অবস্থানরত লোকজন, দোকানদার, আশপাশের বাড়ির মানুষজন!!!!!! উৎসব বা অনুষ্ঠান শেষে ড্যাং ড্যাং ক'রে নিজেরাই আনন্দে মনে মনে মনকলা খেতে খেতে চলে গিয়েছিল উৎসবের আয়োজনকারীরা।

 যাই হ'ক, এইসমস্ত ফেসবুকে কুৎসকারীদের সঙ্গে আলোচনায় যেন আমরা না যায়, উত্তর দিলেও উত্তরকে সংযত ও যুক্তিনির্ভর যেন ক'রে তুলি। বাবাইদাদার কথামত নিন্দা, কুৎসা-কে তাচ্ছিল্যে ভরিয়ে দিন। জয়গুরু।
--------------প্রবি।

কবিতাঃ ষড়যন্ত্র!!!!!!!

দিকে দিকে শুনি ওই, শুনি উচ্ছৃঙ্খলতার জয়ধ্বনি!
বুক করে দুরুদুরু দেখে আকাশে-বাতাসে, জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে,
পাহাড়ে-পর্বতে, শহরে-নগরে, বনে বনান্তরে
বিশৃঙ্খলতার উৎসাহ-উদ্দীপনার খনি!!
ষড়যন্ত্রের হাপড় টেনে সকাল থেকে রাত
চক্রান্তের আগুন বমি দেয় উগরে পোড়ায় বরাত!
দুরাত্মা আজ মহাত্মা সেজে বসে রাজসভায়!
মহাত্মার স্থান আজ পায়ে, আস্তাকুঁড়ে পথের কিনারায়!
কে দুরাত্মা, কে মহাত্মা বোঝা বড় দায়!!
দুরাত্মার নামে রাস্তা মহাত্মা গালি খায়!
দানবের জন্য মানব অধিকার কোন মানব (?) চায়!?
দানব-মানব আজ একাকার হায়!!
কাল যে জেলের ভিতর আজ সে রাজসভায়!
আলো ক'রে বসে আসর ছড়িয়ে কালো রোশনাই!!
আর আজ যে মগ্ন বাঁচা-বাড়ার মহান যজ্ঞে!
কাল সে নিশ্চিত ষড়যন্ত্রের খোঁড়া অন্ধকার গভীর গর্তে!!
চরিত্র যার পিচ তুল্য কালো সে চরিত্রের কথা কয়!?
চরিত্রের ধ্বজা তুলে হাঁক পারে যে সেই চরিত্রবানে ভয়!!
কার কাছে যাবে আজ কে দেবে বিপদে সাহারা!?
সাহারা আজ মরুভূমি তৃষ্ণায় বুক ফেটে যাবে নিশ্চিত মারা!
আজ বিশ্বাস হয়েছে রেপড ধূলিসাৎ প্রত্যয়!
কেউ নেই পাশে, নেই কেউ দিতে বিপদে বরাভয়।
ঈশ্বর আজ শক্তিহীন নেই তাঁর কোনও ক্ষমতা
বাঁচাতে-বাড়াতে সংকট মোছাতে নেই কোনও মমতা!
কলির শেষে আসছে ওই হাঁকছে ঘোর কলি!
মুন্ডমালার পাহাড় জাগে জাগে রক্ত নদী খালি!!
হে জীবন্ত! হে রক্তমাংসের জীবন্ত ঈশ্বর!
তুমি আমার রক্ত রাঙা পথের নেশা গো!
তোমার চলন পূজার ভস্ম মাখি চরণ পূজা ভুলে গো!!
-----------প্রবি।

ক'রো ক্ষমা!

মাটির মাকে ডেকে বলি, মা! মাগো! রেখো আমায় তুমি ভালো!
যে মা দিল জন্ম তাঁকে অন্ধকারে রেখে কেড়ে নিয়েছি তাঁর আলো!!
মাটির মাকে ডাকি আর কেঁদে কেঁদে ভাসায় আমার বুক!
ঘরে যে আমার বুড়ী মা কাঁদে ছেঁড়া আঁচল দিয়ে মুখ ঢাকে
কখনো দেখেছি কি তাঁর মলিন, ব্যাথায় কাতর মুখ!?
প্রশ্ন করি নিজেকে, ভণ্ডামি আর মূর্খামি দিয়ে আর চলবে কতকাল?
নিজে আছো ঘুমিয়ে আর জাগাও অন্যকে? শালা! ঝরঝরে ইহকাল পরকাল!
মাটির বোবা মাকে ডাকি আর ইচ্ছেমত মাঙ্গি যা আসে তাই মনে
বৃত্তি-প্রবৃত্তির সুড়সুড়ি খাই আর যা ইচ্ছা তাই করি ভাই
আর মা, মা, বলে কেঁদে উঠি বিপদ যখন দেয় হানা শয়নে-স্বপনে!
মাটির মাকে ডেকে বলি, মা! মাগো! রেখো তুমি সন্তানেরে
মোর দুধে আর ভাতে; আর দিন গুজরান করি উচ্শৃঙ্খল আর
বিশৃঙ্খলার হাতে হাত রেখে!
এমনিভাবেই বেলা শেষে যখন আঁধার ধেয়ে আসে
মাটির বোবা মা কি তখন দাঁড়ায় এসে পাশে?
বিছানাতে শুয়ে পঙ্গু আমি যখন জানালা দিয়ে বাইরে চেয়ে দেখি
বিগত দিনের বাঁধন ছেঁড়া ষড়রিপুর উদ্দামতা মারছে উঁকিঝুঁকি!
চোখের জলে ভাসিয়ে বুক ব্যাথায় 'মা' 'মা' ব'লে উঠি ডেকে
কোথায় মাটির বোবা মা! এ যে আমার বুড়ি মা! আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে
মুছিয়ে দিয়ে চোখের জল বলে রুগ্ন মা আমার মিষ্টি হাসি হেসে
'ভয় কি বাবা! এই যে আমি! দ্যাখ চোখ মেলে তোর চেয়ে
ঐ যে পরমপিতা দাঁড়িয়ে আছে, হাত বাড়িয়ে ডাকছে তোকে
আসতে তাঁর কাছে! দুঃখ-ব্যাথা ভুলিয়ে দেবে, কষ্ট সব মুছে নেবে
তাঁর চলন পূজায় ভরিয়ে দে তোর জীবন জীবননাথকে ডেকে!'
মায়ের দিকে চেয়ে চেয়ে অশ্রুভেজা বোবা স্বরে বলি, এই তো আমার মা!
জীবননাথকে হেলায় ফেলে, চলন পূজা দূরে ঠেলে এতদিন করেছি বিষ পান!
জীবননাথই যে জগন্নাথ! নিজের মা-ই যে জগৎ মা! শিখিনি এই গান!?
হে প্রভু! হে পরমপিতা! তুমি ক'রো আমায় ক্ষমা!! জুড়াক আমার প্রাণ!!!