Powered By Blogger

Sunday, January 12, 2020

সুপ্রীম---------

প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি. চিদাম্বরম ১০৬দিন জেল খাটার পর হাসি মুখে হাত নাড়তে নাড়তে বাইরে বেরিয়ে এলেন, যেন দেশের মুখ উজ্জ্বল ক'রে রাজ্য জয় ক'রে ফিরলেন!! চোখে মুখে এতটুকু লজ্জা, অপমানের লেশ নেই, নেই কোনও অনুতাপ!!!!! আছে শুধু শরীরী ভাষায় পরবর্তী প্ল্যান-প্রোগ্রাম!!!!!!

এইজন্যই বোধহয় আগাম ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন সম্রাট আলেকজান্ডার তাঁর সেনাপতিকে, "সত্য সেলুকাস! কি বিচিত্র এই দেশ!!!!!!"

এখন প্রশ্ন জাগে মনে,
এই ভারতের একজন আপাদমস্তক ভদ্রলোক ও উচ্চ লেখাপড়া জানাওয়ালালোক অপরাধী!?
সত্যিই কি তিনি কোনও অপরাধ করেছিলেন!? নাকি বিনা দোষে কারাদন্ড!?
কর্মফল নাকি চক্রান্তের শিকার!?
কাকে বিশ্বাস করবো আর কাকেই বা অবিশ্বাস (বাদী-বিবাদী)!?
কে বলে দেবে কোনটা সত্যি কোনটা মিথ্যা!?
সুপ্রিম কোর্ট নাকি সুপ্রিম ফাদার!!!!!!!!
আর জনগণ!?-----প্রবি।

কবিতাঃ প্যারালাইজড সভ্যতা

বক্তা আছে শ্রোতা নেই
লেখক আছে কিন্তু পাঠক নেই
বলছে নেতা, বলছে নেত্রী
কিন্তু কাজ করার নেই কোনো কর্মী!

ধর্মক্ষেত্র শিক্ষাক্ষেত্র সবক্ষেত্রেই
সবাই বলছে যা সব অসম্পূর্ণ!
বলছে ভুল, শেখাচ্ছে ভুল কারণ
তাদের ভুলে ভরা জীবন সম্পূর্ণ!

রাজনীতি নোংরানীতি নয়কো রাজার নীতি
ছল-চাতুরী, চুরি-চামারী, ধান্দা আর মিথ্যার বেসাতি!

কেন!? কেন এমন হয়? কারণ
বিধির নিয়ম সবার জন্য
শুধু মানুষের জন্য নয়!
কুকুর বিড়াল গাছপালা পোকামাকড়
টিকটিকিটাও বলছে 'ঠিক ঠিক'
প্রকৃতির নিয়মকে ধরো! কিন্তু মানুষ বলছে, বেঠিক!
মানুষ নিজেই বিধি! বিধির বিধানের চেয়েও বড়!
বিধির বিধানে উল্টো নজির
মানুষ এমন শক্তিমান বিধিকে পায় না ভয়!
বিধির বিধান তাই আজ আর মানুষের জন্য নয়।

বর্ণাশ্রম ধ্বস্তন্যস্ত!
উপর পড়ছে নিচে, নিচ উঠছে উপরে
যা ইচ্ছে তাই করছে মানুষ, খুঁড়ছে কবর
আর পড়ছে নিজেই নিজের খোঁড়া কবরে!
পা করছে মাথার কাজ, মাথা করছে পায়ের
হাত করছে পেটের কাজ, পেট করছে হাতের!
প্রকৃতির নিয়ম উল্টে দিতে সবাই সদাই ব্যস্ত!
'চতুর্বরণ্যং ময়া সৃষ্ট্যং----' তত্ত্ব আজ বিলুপ্ত!

বিপর্যস্ত জন্মবিজ্ঞান, বিধ্বস্ত প্রকৃতি!
কল্পবিজ্ঞান জনম মাঝে মারছে ঘাই,
জন্ম নিচ্ছে সেথায় বিকৃতি!
প্রকৃতির নিয়মে চলছে সবাই
গাছ, পশু, পাখি থেকে টিকটিকি
মানুষের জন্মের বেলায় নিয়ম প্রকৃতির নয়
নিয়ম বুদ্ধিজীবীর! কারণ মানুষ শ্রেষ্ঠ জীব
জীব-জগৎ-জীবন-কারণ মাঝে মানুষ ব্যতিক্রমী!!

তাই যা হচ্ছে হ'ক কারন দেশ জুড়ে চলছে খেলা বিধি ভঙ্গের!
হাতে-ভাতে-কাপড়ে মারছে-মরছে সবাই, অপেক্ষা ভয়ঙ্কর ধংসের!!
দুর্যোধনেরা লম্প দিয়ে ঝম্প মারে, আজও দুঃশাসনেরা নারীর কাপড়ে মারে টান!
ভীষ্মরা আজও রাজসভায় চুপ ক'রে থাকে
নীতির কচকচিতে প্যারালাইজড সভ্যতা, শিক্ষা-চেতনা ম্রিয়মান!!
-----------প্রবি।

দিদি নং ওয়ানঃ জি বাংলা ও রচনাদিকে খোলা চিঠি।

প্রতিদিনের মত আজও (শুক্রবার/৬.১২.১৯) টিভিতে সন্ধ্যাবেলায় দিদি নং 1 টেলিকাস্ট হচ্ছিলো। সঞ্চালকের ভুমিকায় প্রতিদিনের মত রচনা ব্যানার্জী। সেইখানে হঠাৎ একটা কথায় টিভির পর্দায় চোখ আটকে গেল! আমার স্ত্রী ও আমি মাঝেমাঝে 'দিদি নং ওয়ান' প্রোগ্রাম দেখি। ভালো লাগে সংগ্রামী নারীদের জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার কাহিনী। টিভির সামনে বসে জানাই, হ্যাটস অফ!
যাই হক, প্রোগ্রাম চলার সময় কানে আসে কথাটা। কথাটা হ'লো "যতই ঘুড়ি ওড়াও রাতে লাটাই তো আমার রাতে।" এই কথাটা এর আগেও শুনেছি এই প্রোগ্রামে! তখন ভেবেছিলাম হয়তো সংশোধিত হ'য়ে যাবে পরবর্তী সময়ে। কিন্তু দেখলাম, না! হওয়ার নয়! তাই বিষয়টা তুলে ধরার প্রয়োজন অনুভব করলাম একজন সচেতন নাগরিক ও প্রোগ্রামের দর্শক হিসাবে। কানে হেড ফোন লাগানো অবস্থায় যে গান ভেসে আসে তখন সঞ্চালক রচনা ব্যানার্জী প্রশ্ন করেন প্রতিযোগীকে আর তখন অংশগ্রহণকারী নারীপ্রতিযোগী তাঁর স্বামীর সামনে দাঁড়িয়ে রচনার প্রশ্নের উপরে গানের প্রথম লাইন বলেন। সেই গানের লাইন "যতই ঘুড়ি ওড়াও রাতে, লাটাই তো আমার রাতে।"!!!

আমার চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ও রচনা ব্যানার্জীর কাছে প্রশ্ন, এই গানের লাইনের মানে কি!? রচনা ব্যানার্জী এবং জি বাংলা অথরিটিকে প্রশ্ন এমন একটা গানের লাইনের খুল্লমখুল্লা মায়েদের অর্থাৎ নারীদের অনুষ্ঠানে উল্লেখ করার উদ্দেশ্য কি!? প্রকাশ্যে একটা চ্যানেলে নারীর মুখ দিয়ে যে গানের লাইন স্বামীর উদ্দেশ্যে খুল্লমখুল্লা বেরিয়ে আসছে সেই গানের অন্তর্নিহিত মানে কি!? সেই গানের সেটিং জি বাংলা অথরিটি করেছিলেন আর তা নারীর মুখ দিয়ে বলিয়াছিলেন! যারা সেটিং-এ ছিলেন তারা কি পুরুষ ছিলেন নাকি নারী? যদি পুরুষ হ'য়ে থাকে তাহ'লে তারা নারীকে দিয়ে প্রকাশ্যে মিডিয়াতে রাতের নিষিদ্ধ গোপন দিদিগিরির রূপ দিদি নং ওয়ান প্রোগ্রামে উলঙ্গ ক'রে দিয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন? নারী তাদের হাতের পুতুল মাত্র!? আর যদি নারী হ'য়ে থাকে প্রোগ্রাম সেটার তাহ'লে তারা নিজেরা নিজেদের উলঙ্গ ক'রে পুরুষের কাছে নিজেদেরকে সস্তা পণ্য ক'রে তুললো!?

আশ্চর্য লাগে যখন রচনা ব্যানার্জী জিজ্ঞেস করলেন প্রতিযোগীনিকে, স্বামীকে কি বলবেন? তখন স্ত্রী হাসতে হাসতে বললেন গানের লাইনটা যেটা তার কানের হেডফোনে বাজছে, "যতই ঘুড়ি ওড়াও রাতে লাটাই তো আমার হাতে।" আর এই লাইন শুনে সঞ্চালক রচনা জিভ কেটে হেসে উঠলেন, হা হা হা ক'রে বিকট! জিভ কেটেছেন মানে লজ্জা লেগেছে আর হেসে উঠলেন মানে ভালো লেগেছে, মজা পেয়েছেন! স্ত্রী প্রতিযোগিনীর হাসির উচ্ছাস প্রমাণ করে লাটাই যে তার হাতে সেটা বেশ অহংকার ও গর্বের ব্যাপার!

এরকম চ্যানেলে চ্যানেলে প্রোগ্রামে, সিরিয়ালে, বিজ্ঞাপনে নারীকে খিল্লির বিষয়বস্তু ক'রে তোলে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ! তা'তে কোনও হেলদোল হয় না নারীবাদীদের বা নারী এলিট সমাজের! কিছুদিন আগে শ্যাম স্টিলের একটা বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছিল একটা দৃষ্টিকটু বিষয়! বিজ্ঞাপনটা ছিল বিরাট কোহলি ও অনুষ্কা শর্মার। বিজ্ঞাপনে স্ত্রী অনুষ্কা লাথি মেরে স্বামী কোহলিকে ডাকছে! এই হ'লো ভারতীয় এলিট সমাজের শিক্ষা-চেতনা-সভ্যতার নিদর্শন! চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বা শ্যাম স্টীলের কর্ণধারদের এই বিষয়ে প্রথমদিকে কোনও হেলদোল বা মাথাব্যথা ছিল না। এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এইখানে আমার টাইম লাইনে লিখেছিলাম।
যাই হ'ক পরবর্তী সময়ে সেই দৃষ্টিকটু জায়গাটা এডিট হ'য়ে যায়।

এবার আসি হক কথায়। আচ্ছা 'দিদি নং ওয়ান' নারীদের প্রোগ্রাম কি মেসেজ দিচ্ছে সমাজকে!? প্রথমতঃ আজকে ডঃ প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির অপরাধীদের বিরুদ্ধে ভোরবেলায় হওয়া এনকাউন্টারের কোনও প্রতিফলন পড়লো না প্রোগ্রামে! অথচ এই দিদি নং ওয়ান প্রোগ্রামে কত নারীর মুখে শুনেছি তাদের স্বামীদের কাছে, বয় ফ্রেন্ডদের কাছে কিংবা দরিন্দাদের হাতে সীমাহীন যন্ত্রণাদায়ক অত্যাচারিত হওয়ার, অবহেলিত, অপমানিত হওয়ার কাহিনী! অথচ আজকের দিনে দিদিদের প্রোগ্রামে ডঃ প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির দরিন্দাদের এনকাউন্টার সম্পর্কিত বিষয়ে কোনও উচ্চবাচ্য হ'লো না। এতে জি বাংলার মনোভাব স্পষ্ট হ'য়ে উঠলো, 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা।' অথচ প্রোগ্রামে বৃত্তি-প্রবৃত্তির সুড়সুড়ি দিতে এক্সপার্ট চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। এতে সমাজে কি মেসেজ যাচ্ছে তার ধার ধারে না জি বাংলা। অত গভীরে যাওয়ার মত সময়, শিক্ষা, চেতনা নেই চ্যানেল কর্তৃপক্ষের। নারীর প্রগতি নিয়ে শুধু উপরসা ভন্ডামী করো আর পয়সা কামাও! ভার মে যায় সমাজ! ভার মে যায় নারীর ইজ্জৎ!! ভার মে যায় শিক্ষা-সংস্কৃতি!!!
কারণ না নারী বড়া না সমাজ, না শিক্ষা বড়া না চেতনা দা হোল থিং ইজ দ্যাটস সে মাইয়া সবসে বড়া রুপাইয়া!!!!!!
কি বলেন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ? কি বলেন রচনাদি?
....................প্রবি।

কবিতাঃ আনন্দ ধারা!

চলো চলো ভাই চলো চলে যাই
জীবন থেকে অনেক দূরে চলো চলে যাই।
জীবন বলে, যেও না যেও না গো
আমায় ছেড়ে গেলে তুমি মরণ পাবে গো!
আমি বলি, চলো চলো চলো চলে যাই
শহর ছেড়ে অনেক দূরে চলো চলে যাই।
জীবন বলে, পাগল তুমি বোঝো না ভাই কেন?
শহর ছেড়ে যেথা যাবে সেথা আঁধার পাবে জেনো!
আমি বলি, ইট-কাঠ-পাথর ছেড়ে চলো বহুদূরে যাবো
প্রকৃতির মাঝে সেথা আলো খুঁজে পাবো!
হিংসা, নিন্দা, কুটিলতা যত নেগেটিভ ভাব
নিয়ে চিন্তা-ভাবনা, কাম কামনায় জীবন বরবাদ!
তাই বলি, ধুর শালা জীবন থেকে পলাই চলো
বল হরি হরি বোল, সদাই হরি হরি বলো!
পাবে না পাবে না কোথাও আলো পাবে না
হরি বোল হরি বোল ব'লে যতই তুমি কাঁদো না!
জীবন বলে, বুকের থেকে যতদিন আঁধার না যাবে
দুঃখ-ব্যথা জ্বালা-যন্ত্রনা ফিরে ফিরে পাবে!
বনে গেলে শান্তি পাবো পাহাড়ে গেলে সুখ
আমি বলি, সাগরে গেলে সারবে যে অসুখ।
জীবন বলে, ভুল ভুল সব ভুল, সব ভুল ভাই
শান্তি-সুখ অসুখ-বিসুখ সব মনের বালাই!
সব ছেড়ে এসো বন্ধু চলো যাই নিজ নিকেতনে
আনন্দের ধারা বহে সেথা পরম ধামে!
সেই ধাম পরম ধাম আনন্দের ধাম
সেই ধামে ব'সে করি এসো সদা পরমপিতার নাম!
নাম-ধ্যান মাঝে আছে অপার শান্তি
আছে সুখ, আছে জীবন, সেথা 'জীবন' খুঁজে পাবি।
প্রবি।

নেগেটিভ ও পজেটিভ!

নেগেটিভ নেগেটিভ আর পজিটিভ পজিটিভ আর একই সঙ্গে কুৎসিত কুৎসিত আর সুন্দর সুন্দর। নেগেটিভের মধ্যে যেমন পজিটিভ নেই ঠিক তেমনি পজিটিভের মধ্যে নেগেটিভ নেই। একইরকম ভাবে সুন্দরের মাঝে কুৎসিত থাকতে পারে না ঠিক তেমনি কুৎসিতের মাঝে সুন্দরের অবস্থান নেই। আর তাই সেই অযোগ্য ও অপাত্র স্থানে সময় ব্যয় ও পরিশ্রম নিরর্থক। এইখানে ঠাকুরের বাণী স্মরণ করতে পারি। ঠাকুর বলেছেন, " অযোগ্যে ও অপাত্রে করিলে দান, দাতা গ্রহীতা দুইই ম্লান। আসলে আমরা যদি ভেবে দেখি রাবণের ব্যাপারটা তাহ'লে কি  দেখবো? দেখবো, রাবণ জানতেন সীতা স্বয়ং রাম রূপী বিষ্ণুর স্ত্রী তবুও তিনি সেই চরম অন্যায় কাজটা করতে দ্বিধাবোধ করেননি। আর, শিশুপালের মধ্যে কি কোনও সুন্দর খুঁজে পেয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ? তিনি জেনেশুনেই ১০০টা অপরাধ ক্ষমা ক'রে তাকে পরিবর্তনের সুযোগ দিয়েছিলেন,আর সেই সুযোগ দিয়েছিলেন লোকশিক্ষার জন্য। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি শিশুপাল। দুর্যোধনের ক্ষেত্রেও কি তাই হয়নি? অনেকবার যুদ্ধ আটকাবার জন্য শ্রীকৃষ্ণ চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি যুদ্ধের আগের মুহূর্তেও তিনি পাঁচ ভাইয়ের জন্য পাঁচটা গ্রাম চেয়েছিলেন কিন্তু চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী। দুর্যোধন তার উত্তরে কি ঔদ্ধত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন তা সবারই জানা। স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণকে জীবন্ত নারায়ণ জানা সত্ত্বেও শ্রীকৃষ্ণের মুখের ওপর বলতে দ্বিধা করেনি দুর্যোধন যে, "বিনা যুদ্ধে নাহি দিবো সুচাগ্র মেদিনি।" আর তখনই শ্রীকৃষ্ণ তাঁর পাঞ্চজন্য শঙ্খে ফুঁ দিয়েছিলেন যুদ্ধ শুরু করার জন্য। আর এই পাঞ্চজন্য বাজাবার আগে কি বলেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ, জানেন কেউ? কি বলেছিলেন এই কথা গীতায় বা কোথাও লেখা নেই। গভীর নিস্তব্ধতার অন্তরের অন্তস্থলে ডুব দিয়ে কান পাতলে আজও খুব সুক্ষভাবে শুনতে পাওয়া যাবে তিনি গভীর বিতৃষ্ণায় ক্ষোভে বিরক্তিতে ব'লে উঠেছিলেন, 'তবে তাই হ'ক চার অক্ষর'। Don't take it otherwise. It is my, only my realization. জুডাসকে কি বলবেন? প্রভু যীশুকে হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের প্রধান সহযোগী ছিলেন এই জুডাস। আপনারা বন্ধুরা দেখুন, হজরতের বেলায় কি ঘটেছিল। কুরাইশরা তাঁকে সমাজে একঘরে ক'রে দিয়েছিলেন ও অবরুদ্ধ ক'রে রেখেছিলেন। ইসলাম প্রচারে ইটের আঘাতে ভয়ঙ্গকরভাবে রক্তাক্ত হন তিনি এবং অনেকবার তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এমনকি কুরাইশরা যখন তাঁর সঙ্গে আপোষ করার চেষ্টা করেন তখন প্রভু মহম্মদ কিন্তু তাঁর আদর্শের জন্য তা মেনে নেয়নি, তাঁর আদর্শকে ঘায়েল ক'রে চুক্তির মাধ্যমে কোনও রফা করেননি। রামকৃষ্ণকে পাগল বলতে মানুষ দ্বিধা করতো না। আর ঠাকুরের জীবদ্দশায় ঠাকুর কি কষ্ট পেয়েছিলেন, ঠাকুরের আশ্রমের উপর কি নির্মম, নিষঠুর অত্যাচার হয়েছিল সে সব দুঃখের কথা অনেকেই জানেন।

তাই বলছিলাম, নেগেটিভ নিংড়ে পজিটিভ কিছু পাবো না আর পজিটিভ নিংড়েও নেগেটিভ কিছুই পাবো না। নেগেটিভ ও পজিটিভ সবটাই ঐ বায়োলজিক্যাল ব্যাপার। যেমন, শিশুপাল, দুর্যোধন, দুঃশাসন, জুডাস, কুরাইশ ইত্যাদি ইত্যাদিরা এরা বায়োলজিক্যালি নেগেটিভ এদের মধ্যে থেকে নিংড়ে পজিটিভ কিছুই পাবো না; ঠিক তেমনি রত্নাকর, দস্যু সল, জগাই মাধাই, অশোক ইত্যাদি ইত্যাদি এরা বায়োলজিক্যালি পজিটিভ; পরিবেশগত কারণে এদের মধ্যে সাময়িক নেগেটিভিটির প্রকাশ দেখা গিয়েছিল কিন্তু উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত পরিবেশে অরিজিন্যাল বায়োলজিক্যাল মেক আপের উত্তরণ ঘটে। তাই ব্যাপারটা ঠাকুরের কথা অনুযায়ী শুধু Generous pose অর্থাৎ উদারতার ভঙ্গী নিয়ে সবটা দেখলে চলবে না। দেখবার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে চার আল দেখে চলছি কিনা; বাস্তবের মাটি থেকে যেন পা উঠে না যায়। জয়গুরু।

উপলব্ধি: ৭

বিবেকানন্দের জন্মদিন।

আজ স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন। তাঁর এই পবিত্র জন্মদিনে তাঁকে আমার অন্তর উৎসারিত ভক্তি, শ্রদ্ধা ও প্রণাম জানিয়ে আসুন আজ তাঁর ব'লে যাওয়া কথা স্মরণ করি।

শিকাগোয় স্বামী বিবেকানন্দ, সেপ্টেম্বর, ১৮৯৩ তাঁর ফটোর বাঁদিকে ইংরেজিতে লিখেছিলেন: "one infinite pure and holy – beyond thought beyond qualities I bow down to thee" অর্থাৎ "প্রণাম করি সেই একক, অনন্ত, শুদ্ধ ও পবিত্র –চিন্তা ও গুণের অগম্য ঈশ্বরকে।

মনে প্রশ্ন জাগে, কে সেই একক, অনন্ত, শুদ্ধ ও পবিত্র চিন্তা ও গুণের অগম্য অর্থাৎ ঈশ্বর? তিনি কি আকাশের ভগবান? তিনি কি মাটির কোনো মূর্তি বা পুতুল? তিনি কি নিরাকার? তাঁর কি কোনো আকার নেই? তিনি কি দৃশ্যমান? তাঁকে কি আমার মত রক্তমাংসের মানুষ হিসাবে আমাদের মাঝে পাই? তিনি সমস্ত প্রাণে প্রাণে অবস্থান করেন এত গভীর তত্ত্ব জ্ঞানে আমার রুচি নেই, নেই কোনো তাত্ত্বিক আমেজে বুঁদ হ'য়ে ডুবে থাকার চুলকুনি। বাইবেলে প্রভু যীশু বলেছেন, " God has created the man after his own image". এর মানে কি? সৃষ্টির বুকে সমস্ত জীবের মধ্যে মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। মানুষকে তাঁর নিজের প্রতিবিম্ব রূপে ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন। পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭০০কোটি। তাহ'লে ৭০০কোটি মানুষই তাঁর নিজের প্রতিবিম্ব। এই যদি হয় তাহ'লে এই ৭০০ কোটির মধ্যে আলাদা ক'রে কি ঈশ্বরের কোনো অবস্থান বা উপস্থিতি আছে যাকে ঐ বিবেকানন্দের "one infinite pure and holy – beyond thought beyond qualities I bow down to thee" অর্থাৎ "প্রণাম করি সেই একক, অনন্ত, শুদ্ধ ও পবিত্র –চিন্তা ও গুণের অগম্য ঈশ্বরকে" কথা অনুযায়ী প্রণাম করতে পারি!? বিবেকানন্দ কার কথা বলেছেন? তিনি কি নিরাকার রূপে ঈশ্বরকে প্রণাম করার কথা বলেছেন নাকি সাকার রূপে কাউকে প্রণাম করার কথা বলতে চেয়েছেন?

তিনি কি বলতে চেয়েছেন সেটা স্বামীজির ব্যাপার। স্বামীজির উপলব্ধির কাছে আমার উপলব্ধি স্বামীজীর পায়ের ধূলিকণারও যোগ্য নয়। আমার উপলব্ধিতে যা ধরা দেয় তা' হ'লো প্রভু যীশু যা বলতে চেয়েছেন তার মর্মার্থ হ'লো, সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর স্বয়ং ব্রহ্মাণ্ডের পর ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করতে করতে এই ব্রহ্মাণ্ডের গ্রহ, নক্ষত্র সৃষ্টি করতে করতে এই পৃথিবী গ্রহের মধ্যে এসে পাহাড়-পর্বত, নদনদী, গাছপালা, পশুপাখি, পোকামাকড় সর্বশেষ মানুষ সৃষ্টি করেন। আর এখানেই লুকিয়ে আছে প্রভু যীশুর মর্মবাণী। পৃথিবীর এই ৭০০কোটি মানুষের মধ্যে স্বয়ং ঈশ্বর নিজেকে নিজে আবার আলাদাভাবে প্রকাশ করেছেন। সেই ৭০০কোটি মানুষের মধ্যে তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রকাশিত রূপ হ'লো প্রভু শ্রীরাম, শ্রীকৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ ও তাঁর পূর্ণ প্রকাশ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। বাইবেলে বলা হচ্ছে, যীশু ঈশ্বরপুত্র। আমার উপলব্ধি তিনি স্বয়ং ঈশ্বর আর আমরা তাঁর পুত্র।

তাই আজ পরম শ্রদ্ধেয় স্বামী বিবেকানন্দের পবিত্র জন্মদিনে তাঁর কথা  "one infinite pure and holy – beyond thought beyond qualities I bow down to thee" অর্থাৎ "প্রণাম করি সেই একক, অনন্ত, শুদ্ধ ও পবিত্র –চিন্তা ও গুণের অগম্য ঈশ্বরকে"- স্মরণ করি এবং আমি যা বুঝি তাহ'লো সেই একক, অনন্ত, শুদ্ধ ও পবিত্র- চিন্তা ও গুণের অগম্য ঈশ্বর শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের রাতুল চরণে শতকোটি প্রণাম জানাই। জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের শ্রীচরণে প্রণাম জানিয়ে আভূমি প্রণাম জানাই তাঁর মিশন প্রচারের প্রধান ভক্তপ্রবর স্বামী বিবেকানন্দের শুভ জন্মদিনে স্বামীজীর শ্রীরাঙা চরণে।

স্বামীজী ও আমরা!

আজ স্বামীজীর জন্মদিন। আর কতদিন জন্মদিনের নামে সরকারী-বেসরকারী বাচ্চা-বুড়োর লোকদেখানো শ্রদ্ধাজ্ঞাপন চলবে!? প্রতিবছর এই গোড়া কেটে আগায় জল ঢালার মত কেন এইসব মহাত্মাদের নিয়ে হুল্লোড়বাজি চলে!? যারা এইসব মহাত্মাদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন ও পালন করেন তারা কি এদের চরিত্রকে নিজের চরিত্রে মেলাবার বা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন!? আর কতদিন, কতবছর এইসব অনুষ্ঠান প্রধান নাটকের আয়োজন চলবে!? আর কতকাল ছাত্রযুবসমাজ পথ খুঁজে পথ হারাবে এইসমস্ত অনুষ্ঠান প্রধান আয়োজনের মহড়ায়!? আর কতকাল এইসমস্ত মহাত্মাদের আত্মা শুধু আপাদমস্তক বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে ডুবে থাকা লোকদেখানো হৈহুল্লোড়ে ভরপুর অনুষ্ঠানের অপমান সহ্য করবে!? কবে বন্ধ হবে এইসমস্ত ব্যবসায়ী উপকরণে পরিণত মহাত্মাদের জীবন নিয়ে ঝাঁ চকচকে ফাঁপা অনুষ্ঠানের আয়োজন!? হবে না। কোনোদিনই হবে না। সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে ও চলবে! কারণ উদ্যোক্তারা যতদিন না উদ্যোগ নেবে নিজের চরিত্রে মহাত্মার চরিত্র বপনের কাজ ততদিন চলবে এই ভণ্ডামির বীজ বপন আর বপন, বপন আর বপন!!!!!!!---------প্রবি।

ভারতের রাজধর্ম!!

আজ যদি সত্যি সত্যিই ভারতের রাজধর্ম পাল্টে যায় তাহ'লে এর জন্যে দায়ী কে? বর্তমান শাসক? পূর্বতন শাসক?  দেশের সমস্ত নেতৃবৃন্দ? জনগণ? নাকি ভারত ভাগের নাটের গুরুরা? কার বিরুদ্ধে দোষ বা অপরাধের তকমা সাঁটবেন? কে দোষী? কে অপরাধী? ভাগ ক'রে দেশটাকে কে বা কারা চক্রান্ত ক'রে জাহান্নামের পথে হাত ধ'রে ঠেলে দিয়েছিল? তাদের বিচার হবে না? দেশ যখন ভাগ হয় তখন কেন ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হয়েছিল? আর হয়েছিল হয়েছিল অদ্ভুত ভাবে কেন দেশটা ভাগ হয়েছিল? ভৌগোলিক সীমারেখা কেন দেশটাকে ত্রিভঙ্গ ক'রে দিয়েছিল? দেশে তখন পন্ডিত জ্ঞানী গুণী ব্যক্তির অভাব ছিল? কেন সবাই চুপ ছিল? কেন অদ্ভুত ভাবে কোন যুক্তিতে বাংলাকে ভাগ ক'রে পূর্ব পাকিস্তানের সাথে  যুক্ত করা হয়েছিল? পূর্ব বাংলাকে অদ্ভুতভাবে ভাগ ক'রে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে যুক্ত করার পিছনে কি শুধু ধর্মের ভিত্তি ছিল? আরো বড়, অনেক বড় চক্রান্ত ছিল না? কি ছিল সেই চক্রান্ত? বাংলা আর বাঙালি ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ না হ'লে কাদের অসুবিধা হ'তো? আর কাদেরই বা সুবিধা হ'য়েছিল? কি ছিল সেই অসুবিধা? আর কিই বা ছিল সেই সুবিধা? তখনই যদি ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হ'য়ে দু'টুকরো হ'য়েছিল তো কেন ভারত উদারতা দেখিয়েছিল? তখনই কেন হিন্দু রাষ্ট্র হ'লো না? যদি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান মানবতার ধর্মের ধার না ধারে তাহ'লে কেন ভারত একা মানবতার ধ্বজা তুলে ধরার ন্যাকামো ক'রেছিল বা এখনো ক'রে চলেছে? যদি সত্যি সত্যিই মানবতা রাজধর্ম হ'য়ে থাকে ভারতের তাহ'লে মানবতার স্বার্থে, মানবতাকে রক্ষা করতে কেন ৭০বছর বলিষ্ঠ কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি? কার বা কাদের স্বার্থে নেয়নি? কাকে খুশী করার জন্য তথাকথিত ধর্ম নিরপেক্ষতাকে রক্ষা ক'রে চলেছিল ভারত? ধর্ম নিরপেক্ষতার আড়ালে কাদের খুশী ক'রে চলছিল ভারত সরকার এতদিন? কার বা কাদের অঙ্গুলি হেলনে ভারত ৭০ বছর তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজা উড়িয়ে সব ধর্মের সাধারণ আম মূর্খ জনতাকে বোকা বানিয়ে ক্ষমতার শিখরে বসেছিল? পাকিস্তানের রাজধর্ম যদি ইসলাম হ'য়ে থাকে, বাংলাদেশের রাজধর্ম ইসলাম হ'য়ে থাকে, আফগানিস্তানের রাজধর্ম ইসলাম হ'য়ে থাকে তাহ'লে ভারতের রাজধর্ম কি হওয়া উচিত ছিল? কেন ভারত একা মহান সাজবে? মহানতার দোহাই দিয়ে, সুযোগ নিয়ে আর কতদিন ভারতকে আঙ্গুল তুলে মিথ্যের বেসাতি ক'রে বলা হবে, ভারত তুমি অপরাধী? পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান যদি সংখ্যাগরিষ্ঠের জোরে ইসলামিক দেশ হ'তে পারে তাহ'লে ভারত কেন সংখ্যাগরিষ্ঠের জোরে হিন্দু রাষ্ট্র হ'তে পারবে না? এই সেদিন বাংলাদেশ ভারতের সাহায্যে স্বাধীন হ'লো আর স্বাধীন হ'য়েই ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার পদাঙ্ক অনুসরণ না ক'রে পাকিস্তান, আফগানিস্তানের মত তাদের পথ অনুসরণ ক'রে ইসলামিক রাজধর্মকে গ্রহণ করলো? কেন? কেন বাংলাদেশ ভারতের মত মহান মানবতা প্রেমী হ'লো না? কেন ভারতের মত বাংলাদেশের রাজধর্ম মানবতা হ'লো না? কেন বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষিত হ'লো না? কেন বাংলাদেশের ঘোষিত ধর্ম ইসলাম হ'লো? কেন পূর্ব পাকিস্তান থেকে ছিন্ন হওয়ার পর বাংলাদেশে হিন্দু বাঙালি-মুসলিম বাঙালি এক হ'য়ে মিলেমিশে থাকতে পারলো না? তাহ'লে বাংলাদেশ বাঙালিদের দেশ নয়? বাংলাদেশ মুসলমানদের দেশ? বাঙালির কাছে বাঙালির থেকে বড় তাহলে মুসলমান বাঙালি,  হিন্দু বাঙালি? তাহ'লে এত বাঙালি বাঙালি ব'লে নাটকীয়তা কেন? বাঙালির আন্তর্জাতিক পরিচয় কি? সে প্রথমে বাঙালি নাকি প্রথমে হিন্দু-মুসলমান? এসবের পিছনে কে বা কারা লুকিয়ে আছে? কে বা কারা ভারতবর্ষ দেশটাকে টুকরো ক'রে দিয়ে গিয়েছিল কিন্তু একটা সুতো দেশের পিছনে বেঁধে দিয়ে সুতোটা নিয়ে চলে গিয়েছিল ভয়ে দেশ ছেড়ে? কারা বছরের পর বছর সংখ্যালঘুদের ভয় দেখিয়ে চলেছে? মুষ্টিমেয় কয়েকজন মানুষ কেন সব ধর্মের মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি ক'রে বছরের পর বছর কায়েমী স্বার্থকে বজায় রেখে আখের গুছিয়ে চলেছে? কেন সব ধর্মের বুদ্ধিজীবীরা হয় চুপ ক'রে থাকে 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতায় নতুবা বিকিয়ে দেয় কারও না কারও কাছে অর্থ-মান-যশের লোভে? কেন তারা অন্যায়কে অন্যায় জেনেও মদদ দিয়ে চলে বছরের পর বছর? আর তার খেসারত দিতে হয়েছে পরবর্তী প্রজন্মকে, বছরের পর বছর আপনাকে-আমাকে!

কেন দেশটা ভাগ হ'লো দাদা? কেন সেদিন দেশপ্রেমিকরা চুপ ক'রে ছিলেন? কেন সেদিন মহাত্মারা কোনও মন্তব্য করেননি? কেন সেদিন নেতাজীকে দেশের অভ্যন্তরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি? কেন সেদিন হঠাৎ করেই জিগির উঠেছিল হিন্দু-মুসলমানের ভাগ-বাটোয়ারার? সেদিন যদি পূর্ব বাংলাকে পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে অন্যায়ভাবে অনৈতিক পদ্ধতিতে জোর ক'রে কিম্ভুতকিমাকার ভৌগোলিক সীমারেখা তৈরি ক'রে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যুক্ত ক'রে দেওয়া না হ'তো, যদি ভারতের সঙ্গে পশ্চিমবাংলার সাথে যুক্ত থাকতো তাহ'লে কি আজ বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হ'তো? এই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মগজ কার ছিল দাদা? কেন সেদিন বাংলাকে ভাগ করা হয়েছিল? কি উদ্দেশ্য ছিল এর পিছনে? ধর্মকে সামনে রেখে বাংলা ভাগের পিছনে যে গোপন এজেন্ডা ছিল রাজনৈতিক নেতাদের সেই গোপন এজেন্ডার শিকার কি সার্বিক ভাবে বাঙালি হয়নি? বাঙালির মধ্যেও কি বিশেষতঃ হিন্দু বাঙালি, মুসলিম বাঙালি নিয়ে সংকীর্ণ মনোভাব ছিল না? যার সুযোগ নিয়েছিল অন্য রাজ্যের লোকেরা ও বিশেষ করে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী দেশ? কেউ কি আজ পর্যন্ত প্রশ্ন তুলেছে, যে দেশকে ব্রিটিশ দু'শো বছর ধ'রে ভোগ করেছে সেই দেশের মানুষের সঙ্গে যাওয়ার আগে বিশেষ ক'রে বাঙালির সঙ্গে কেন এমন বিমাতৃসুলভ আচরণ করলো? কেন ভারতের খেয়ে ভারতের সঙ্গে, ভারতবাসীর সঙ্গে বেইমানি করলো? কেন অকৃতজ্ঞ আচরণ করলো পৃথিবীর সভ্য জাত ব্রিটিশ ভারতবাসীর সঙ্গে? কেন দেশটাকে ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে এমন নির্মমভাবে ভেঙে টুকরো টুকরো ক'রে দিয়ে গেল? যার ফল ভোগ করছে তিন দেশের সাধারণ মানুষ!!!! ভোগ করছে আজ ৭০বছর ধ'রে! এই জঘন্য অপরাধের কোনও ক্ষমা আছে? বিশ্বের সভ্যজাত ব'লে পরিচিত ব্রিটিশ কি আজ ৭০ বছর ধ'রে ভারত-পাকিস্তানের বর্তমানে বাংলাদেশ এই তিন দেশের মধ্যে নারকীয় রক্তক্ষয়ী অস্থিরতার যে ফল্গুধারা ব'য়ে চলেছে তার জন্য বিন্দুমাত্র লজ্জিত বা দুঃখিত?

এর উত্তর কি?
হয় বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ইত্যাদি পড়শী দেশের মত ভারত ধর্ম ভিত্তিক দেশ হ'ক। ভারত হিন্দু রাষ্ট্র হ'ক। নতুবা বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ইত্যাদি দেশও ভারতের পদাঙ্ক অনুসরণ ক'রে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষিত হ'ক। আর নয়তো ব্রিটিশের মুখে ঝামা ঘষে দিয়ে আবার পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির মত অখন্ড ভারতবর্ষ হ'ক। আর যদি সেদিন কখনো আসে এবার যেন আর 'ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র' হিসাবে অখন্ড ভারতবর্ষ গড়ে না ওঠে। সেদিন যেন অখন্ড ভারতবর্ষ বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র সম্পর্কে বলা কথা অনুসরণ করে। দীর্ঘ ৭০বছর একটা ভুলের উপর দাঁড়িয়ে ভারত নামক দেশটা চলেছে! এত পন্ডিত, এত মহাত্মায় ভরা দেশ এই ভুল ধরতে পারেনি! আর বললেও ভুলকে ভুল ব'লে স্বীকার করেনি! তার ফল তো দেশবাসীকেই ভুগতে হবে। যেমন দেশভাগের সময় শ্রীশ্রীঠাকুরের বলা কথাকে পাত্তাই দেয়নি সেই সময়ের বোদ্ধা দেশনেতারা। যেমন দেয়নি শ্রীশ্রীঠাকুরের হিন্দু-মুসলমানের স্থান ভিত্তিক শক্তিকে সাম্যতায় আনার পরিকল্পনা। ঠাকুর দেশভাগ সম্পর্কে বলেছিলেন, "Divining compromise is the hatch of animosity".  যা আজ হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে ও পাচ্ছে ৭০বছর ধ'রে দেশবাসী। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র আরো বললেন, "ধর্ম নিরপেক্ষ কথাটা আমার মতে ভুল। ধর্ম কখনও নিরপেক্ষ হ'তে পারে না। বরং সম্প্রদায় নিরপেক্ষ দেশ কথাটা হ'তে পারে।"

তাই অখন্ড ভারতবর্ষ যতদিন না হচ্ছে ততদিন ভারত সরকারের কাছে আবেদন আসুন শ্রীশ্রীঠাকুরের বলা 'সম্প্রদায় নিরপেক্ষ দেশ' এই বিষয়টিকে ভেবে দেখুন, আলোচনা করুন, ভুল ব্যাখ্যা থেকে দেশকে, দেশের মানুষকে বাঁচান, পথ দেখান দেশকে, বিশ্বকে, বিশ্ববাসীকে। দেশ সোজা পথে হাঁটা শিখুক। ধর্ম নিরপেক্ষ কথাটা ভুল তা দেশের মানুষ, বিশ্বের মানুষ জানুক। মূলে হাত দিন। সাংবিধানিক গলদ দূর করুন। ঘোষণা হ'ক 'ভারত সম্প্রদায় নিরপেক্ষ রাষ্ট্র'। অনেক নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণের মত শব্দের রুটে গিয়ে রুট মিনিংয়ের ওপর দাঁড়িয়ে বৈপ্লবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করুক ভারত সরকার।

আর সবচেয়ে জরুরী যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার তা হ'লো আম দেশবাসীকে বিশেষ ক'রে দেশের মায়েদের অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারের অন্ধকার নরক কুন্ড থেকে মুক্তির উপায় বের করা! যাতে ধর্মের নামে, জাতপাতের নামে বা অন্য যে কোনও বিষয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা বানাতে না পারে আর কেউ, কোনও নেতানেত্রী, কোনও অন্যায় -অশুভ শক্তি, কোনও দেশ। মনে রাখতে হবে, সাধারণ মানুষের অজ্ঞানতা, বিশৃঙ্খল-উচ্শৃঙ্খল জীবনযাপন অন্যায়ের প্রধান পৃষ্ঠপোষক!!!!!!!!!!!

Saturday, January 11, 2020

বিবেকের ডাকে।

তোমার কাছে যখন এসেছিলাম ভেবেছিলাম তোমায় ভালোবাসি;
আর ভালোবেসে ভেবেছিলাম প্রয়োজনে হাসিহাসি পরবো ফাঁসি।
তোমায় দেখেছিলাম প্রথম যেদিন ভেবেছিলাম স্বপ্নে ডুবে আছি!
আর স্বপন মাঝে যখন দিলাম ডুব দেখি শয়নে-জাগরণে সবসময়ে
স্বপ্নে আছি! এখন স্বপ্ন আমার হারিয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে আমার
স্বপ্নে দেখা মুখ! ভালোবাসা আমার শুকিয়ে গেছে শুকিয়ে গেছে সুখ!
দুঃখ সেথায় তুলেছে ফণা মারবে বলে ছোবল, কণ্ঠধ্বনি ঐ শোনা যায়
'হরিবোল, হরিবোল! বলো হরি হরিবোল।'

হরিবোল নামে পরাণ শুখায় চিত্তে জাগে ভয়!
ভালোবাসা পালায় ছুটে ভয়রে করতে নারে জয়।
শ্মশান ছবি ভেসে ওঠে পরপারের যায় ডাক শোনা!
প্রদীপ যেন নিবু নিবু আর মন বলে, শুরু হ'লো দিন গোনা!
কেমনতর ছিল সে প্রেম-স্বপ্ন-ভালোবাসা? ছিল কি তা খাসা?
ছিল কি তা খাঁটি সোনা? ছিল কি তোমার প্রতি ভরসা?
শুনেছি মহাশক্তি নাকি ঘুমিয়ে থাকে বুকের গভীরে নীরবে!?
তোমার প্রতি নিবিড় ভালোবাসায় তা নাকি জেগে ওঠে সরবে।

তমসার পার হ'তে কে যেন বলে,
বিবেকের ডাকে দাও সাড়া করো না মনের অনুসরণ;
অন্তর হ'ক শুদ্ধ আর শুদ্ধ চিত্তে করো তাঁকে বরণ।
প্রবি।

.

ঘরপোড়া গরু।

কবিতা লিখে হবেটা কি সত্যি আমার চিন্তা!
দেশ যখন জ্বলছে আগুনে আরামে খাচ্ছি ডিগবাজিটা!!
কবিতা লিখে হবেটা কি সত্যি আমার চিন্তা!
জ্বলুক দেশ! জ্বালাও দেশ! মরুক আমজনতা,
আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা!!
সত্যি! কবিতা লিখছি, কবিতা বলছি, কবিতা শুনছি আমি!
সাম্যের নামে দিচ্ছি ধ্বনি, মুক্তির কসম খাচ্ছি!!
কবিতার সঙ্গে ছড়াও লিখছি, ছুঁড়ছি ছড়ার ছররা!
বিপ্লবের নামে তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে ডুবে খাচ্ছি ভদকা!!
ছড়ার ছররা নাকি শব্দের ছররা ছুঁড়ছি এলোমেলো!
শিক্ষা-চেতনা-বিপ্লব-মুক্তির মারছি ঘাই, দেখাচ্ছি আলো!!
কবিতা লিখছি, ছড়া লিখছি, লিখছি কতকিছু!
জ্বলো, জ্বালো, জ্বালাও হাঁক দিয়ে ভাই ছুটছি সবাই
অর্থ, মান আর যশের পিছুপিছু!!
কবিতা, ছড়া লিখে হবেটা কি সত্যি আমার চিন্তা!
ঘরপোড়া গরু আমি ডরাই দেখে সিঁদুরে শেষের সেদিনটা!!
---------প্রবি।

মৌনী বাবা!

চারপাশে শুধুই মারদাঙ্গা আর হিংসা দেখে দেখে
ক্লান্ত লাগে নিজেকে। না পারলাম বাঁচতে-বাঁচাতে,
না পারলাম মান যশ, না পারলাম অর্থ কামাতে।
দিয়ে গেলাম শুধুই পেলাম না কিছুই!
বেগার খেটে ম'লাম বাড়ির খেয়ে মোষ তাড়াতে!
বাড়ির খেয়ে তাড়াতে মোষ হ'লাম ক্ষতবিক্ষত!
নিজের লোকেই মারলো গুঁতো ছুতোনাতায় অনবরত!
তবুও তাড়িয়ে এনে মোষ রাখলাম বেঁধে যেই বারান্দায়
কথা নেই বার্তা নেই নেপোয় দই মেরে দিয়ে যায়!
করবে না নিজে কিছুই ভর দিয়ে কাঁধে দাঁড়াবে
স্বার্থে টান পড়লে পরেই পা দিয়ে সেই কাঁধ মারাবে!
চারপাশে শুধু হিংসা আর পরনিন্দা পরচর্চা!
মানসিক অখাদ্য-কুখাদ্য খেয়েই জীবন হ'লো খরচা।
চিল নিয়ে গ্যাছে কান, শুনে চিলের পিছনে ছুটবে
তবু দেবে না কানে হাত! সমালোচনার দাঁড় যাবে টেনে
একই জায়গায় সকাল থেকে রাত, অসত্যের পায়ে মাথা খুঁটবে!
কথা তো নয় যেন সাপ, ব্যাঙ, ছুঁচো, ইঁদুর
মুখ দিয়ে বেরিয়ে চলেছে হিংসা, নিন্দা, কুৎসার সমুদ্দুর!
চিমটি কাটার সুযোগ খোঁজে সকাল থেকে রাত
এমনি ভাবেই বেলা গেল হ'লো জীবন বরবাদ!
যার হাত ধ'রে উঠলো ওপরে তাকেই ফেলে প্রথমে ধাক্কা দিয়ে নীচে
বাড়ির খেয়ে শুধু শুধুই বনের মোষ তাড়ালাম মিছে!
যার জন্য করলাম  চুরি দিনশেষে সেই বলে চোর!
হামাগুড়ি দেওয়া লোক হাত ধ'রে দাঁড়িয়ে উঠেই
'ভাগ শালা' ব'লে দেয় দৌড়!
চারপাশে শুধু কানাকানি হানাহানি আর মিথ্যের বড়াই
লম্প দিয়ে মারছে ঝম্প করতে সত্যের বিরুদ্ধে লড়াই!
চারপাশে সবাই পরস্পর পরস্পরকে উদ্যত মারতে থাবা
যাক, যা হচ্ছে হ'ক চারপাশে হ'য়ে যাই বাবা মৌনী বাবা!

দায়!

টিভি চ্যানেলে চ্যানেলে আলোচনার নামে বন্ধ হ'ক প্রতিদিন বুড়ো-বুড়ি খোকা-খুকীদের চিৎকার চেঁচামেচির সংস্কৃতি! বন্ধ হ'ক সঞ্চালকের মাঝখানে বক্তার কথা বলা এবং বক্তার মাঝে সঞ্চালকের কথা বলা! কে কি বলছে, কে কি বলতে চাইছে কারও কথায় শুনতে পাই না, বুঝতে পারি না। আগামী প্রজন্ম কি শিখছে? দেশের ধার কেউ ধারছে না। আমজনতার ও আগামী প্রজন্মের সুখ সমৃদ্ধি ভাঁড় মে যায়! আলোচকরা কেউ কাউকে বলতে দেয় না। অবাক লাগে সবাই বোদ্ধা!!!! কেউ ভুল নয়!!!!!! সবাই ঠিক!!!!!! আর সঞ্চালক খুব কৌশলে সঠিক সময়ে প্রসঙ্গ থেকে প্রসংগান্তরে চলে যান!!!!! যে বিষয়ে আলোচনা শুরু হয় ডিবেট শেষে সেই বিষয় থেকে ১৮০ডিগ্রি ঘুরে চলে যায় অন্য বিষয়ে। শ্রোতাদের সঙ্গে মস্করা করে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ও সঞ্চালক! হয় এই বোকাবাক্সের বোকা বানানো ভিত্তিহীন ডিবেট বন্ধ হ'ক, মানুষ সন্ধ্যাবেলায় চ্যানেলে চ্যানেলে তিতিবিরক্ত উচ্ছের পায়েস খাওয়ার হাত থেকে বাঁচুক, সুখের বদলে অন্তত স্বস্তি পাক নতুবা যে বিষয়ে ডিবেট সেই বিষয়ে একে একে বক্তারা তাদের বক্তব্য পেশ করুক, সঞ্চালক প্রশ্ন করুক বক্তারা উত্তর দিক এবং যাকে জিজ্ঞেস করবেন সঞ্চালক তিনি উত্তর দিক। কথার মাঝখানে, কথা শেষ হওয়ার আগে কেউ যেন টাং না গলায়। কারও বক্তব্যের উত্তরে কারও যদি বক্তব্য থাকে সে বক্তার বক্তব্যের শেষে পাল্টা বক্তব্য পেশ করুক এবং অবশ্যই সঞ্চালকের অনুমতি নিয়ে। কথার মাঝখানে যেন কেউ কথা না বলেন। বললে তাকে অনুষ্ঠান থেকে বহিস্কার করা হ'ক। আর অনুষ্ঠান হ'ক স্বাস্থ্যসম্মত। সঞ্চালক ও বক্তারা যেন টিভি শ্রোতাদের চার অক্ষর না ভাবেন যে শ্রোতা বা দর্শকদের যে যা খাওয়াবে আর তাই অভুক্তের মত নোলা ঝরিয়ে খেয়ে নেবে।
এখনও সময় আছে আসুন একটু ভাবুন অনুষ্ঠান হরিহরের গোয়াল ঘরে যেন আর পরিণত না হয়। আসুন বাংলা তথা ভারতের সংস্কৃতিকে সবাই মিলে রক্ষা করি। এ দায় আমার আপনার সবার!!!

বুদ্ধিজীবীদের প্রতি আবেদন।

বুদ্ধিজীবীদের প্রতি আবেদন।

মেঘ যখন সূর্যকে ঢেকে রাখে তখন মনে হয় চতুর্দিকে ঘোর অন্ধকার! সেই অন্ধকারে তৈরি হয় নানা সংশয়, বিরক্তি। কিন্তু তার স্থায়িত্ব কাল সাময়িক, ঠিক তেমনি মিথ্যে ঢেকে রাখে সত্যকে কিছুদিন। মিথ্যের শক্তি প্রবল! মিথ্যের লম্পঝম্প পাহাড় কাঁপানো। সেই মিথ্যের ঝলকানিতে সত্যের প্রতি অবিশ্বাস দানা বেঁধে ওঠে। অস্থিরতা মাথা চাড়া দেয়। সাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে। নেমে আসে অরাজকতা। সর্বনাশের বেজে ওঠে সাইরেন।

সত্য কিন্তু ধীর স্থির। হাঁকডাক, লম্পঝম্প, মাতামাতি সত্যের স্বভাব বিরুদ্ধ। তাই সত্যের প্রতি বিশ্বাসও কম। অবিশ্বাস তাকে গ্রাস করে দ্রুত। কিন্তু মিথ্যের মেঘ তাকে চিরদিন ঢেকে রাখতে পারে না। সময়ের অপেক্ষা মাত্র। মেঘ সরিয়ে যেমন সূর্য আবার আত্মপ্রকাশ করে আর চারিদিক আলোয় ভাসিয়ে দেয় ঠিক তেমনি মিথ্যের জাল ছিঁড়ে ছিন্নভিন্ন ক'রে সত্যও একদিন উদ্ভাসিত হয় জগতের বুকে। শুধু সময়ের অপেক্ষা।

আর এই যে যখন মিথ্যে সত্যকে ঢেকে রাখে তখন মিথ্যে তার অন্ধকার নিয়ে চারপাশ আচ্ছন্ন ক'রে দেয় আর মানুষ সেই মিথ্যের অন্ধকারে অভ্যস্ত হ'তে থাকে ধীরে ধীরে। এইটাই আম আদমির স্বভাব। আর তার ফলস্বরূপ সত্য উদ্ভাসিত হওয়ার আগেই যা সর্বনাশ হওয়ার তাই-ই হয়।

কিন্তু খারাপ লাগে ভাবতে, দুঃখ লাগে আম আদমী না হয় সত্যের গভীরতা তো দূরের কথা উপরি ভাসা ভাসা সত্যকেই বুঝতে পারে না, চিনতে পারে না কিন্তু যারা বুদ্ধি বেচে খায়, বিচার শক্তি, বোধবুদ্ধি প্রবল তারা যখন এই মিথ্যের মেঘের স্থায়িত্ব কালকে বাড়িয়ে দেয়, মিথ্যের ঘনত্বকে বাড়িয়ে তোলে, মিথ্যের পালে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হাওয়া দেয়, মিথ্যের পরিস্থিতিকে অনিচ্ছেয় হ'ক আর ইচ্ছেয় হ'ক জটিল ক'রে তোলে, সত্য-মিথ্যের তফাৎ করতে না পারার মত বিভ্রান্তি তৈরি করে তখন ভবিষ্যৎ কোন সর্বনাশের খাদের কিনারায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে তা ভাবলেও ঘুমের ঘোরে সচেতন মানুষ মাত্রই চমকে ওঠে।

তাই বর্তমান ভারতে শরণার্থীদের নাগরিকতা প্রদান বিলের বিরুদ্ধে যে আগুন জ্বলছে সেই আগুন জ্বলার পিছনে সত্যই বা কি মিথ্যাই বা কি তা আমআদমির পক্ষে বোঝা কঠিন হ'য়ে উঠেছে। এমনিতেই এইরকম কঠিন ও জটিল প্রশ্নে স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা কঠিন তার উপর যদি এরকম অগ্নিগর্ভ জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। তাই দেশের বর্তমান জটিল অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে রাজনীতির বাইরে দেশের সমস্ত ক্ষেত্রের শিক্ষাবিদ, ইতিহাসবিদ, অভিনেতা, কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক ইত্যাদি স্বনামধন্য মানুষের কাছে অনুরোধ আপনারা দেশের স্বার্থে, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে সত্যকে জানুন, সত্যকে বুঝুন ও আমাদের মত আম মানুষের কাছে সত্যকে সহজ সরল ক'রে তুলে ধরুন। আর বিনীত অনুরোধ আপনারা দেশের সম্মানিত ব্যক্তিরা মতামত প্রকাশ করার আগে, সত্যকে তুলে ধরার আগে দেশের সর্বত্র ঘটে চলা বর্তমান জঘন্য, নিন্দনীয় ঘটনার নিন্দা করুন, বলিষ্ঠ প্রতিবাদ করুন তাদের বিরুদ্ধে যারা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে  দেশের সম্পদ নষ্ট করেছে ও করছে, আগুন জ্বালাচ্ছে, অরাজকতার সৃষ্টি করেছে ও করছে। আপনারা নাগরিকত্বের দাবিতে আনা বিলের বিরুদ্ধে অন্যায্য, অন্যায় যদি কিছু থাকে বলুন, অবশ্যই বলুন, বলিষ্টভাবে কঠোরভাবে বলুন কিন্তু বলার আগে, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তোপ দাগার আগে দয়া ক'রে তোপ দাগুন সেই সমস্ত সুযোগ সন্ধানী মানুষ, সেইসমস্ত দেশবিরোধী পদক্ষেপ, স্লোগান, সেইসমস্ত অগ্নিগর্ভ ঘটনা, সেইসমস্ত উচ্ছৃঙ্খল-বিশৃঙ্খল জনতা ও ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে।

আসুন, আপনারা আপনাদের সুনামের প্রতি যত্নশীল হ'ন। আপনারা নিউজ চ্যানেলে আপনাদের সুচিন্তিত, বলিষ্ঠ, স্পষ্ট বক্তব্য রাখুন। দেশের এন আর সি ও ক্যাব-এর বিরুদ্ধে বিশ্লেষণমূলক বক্তব্য রাখুন। যদিও এন আর সি এখন আলোচ্য বিষয় নয়, এখন মূল আলোচ্য বিষয় ছিল নাগরিকত্ব বিল অথচ দুটো বিষয়কে এক ক'রে খিচুড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। আপাততঃ নাগরিকত্ব বিল নিয়ে আপনাদের সুচিন্তিত মতামত সাংবাদিক সম্মেলন ক'রে বলুন। আপনাদের কাছে একজন সাধারণ মানুষ হিসাবে আবেদন আপনারা বর্তমান স্পর্শকাতর অরাজকতার ভূমিতে নেমে শান্তিপূর্ণভাবে বক্তব্য রেখে পরিস্থিতিকে আরো জটিল ক'রে তুলে অস্থির অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিকে আরও অগ্নিগর্ভ ক'রে তুলবেন না, অন্যায়কারী অপরাধীদের ঘোলা জলে মাছ ধরার সুযোগ ক'রে দেবেন না। অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভাবে আপোষহীন মনোভাবে অকপট হৃদয়ে প্রতিবাদের মজবুত পাঁচিল গড়ে তুলুন তারপর সরকারের অন্যায় পদক্ষেপ, সিদ্ধান্ত যদি কিছু থাকে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামুন দ্বিধাহীন চিত্তে স্বচ্ছ তথ্য ও তত্ত্ব হাতে নিয়ে। আমজনতাকে বিভ্রান্তির হাত থেকে বাঁচাবার দায়িত্ব আপনাদেরও। আসুন আপনাদের প্রতি সাধারণ মানুষদের ভরসা অক্ষুন্ন থাকুক সেই কামনা করি। নতুবা------------।
--------------প্রবি।

উত্তর দেবে কে!?

৩৭০ ধারা বিলুপ্তি, তিন তালাক নিষিদ্ধ এবং রাম মন্দিরের মত স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে যা হ'লো না দেশে আজ শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নে দেশ হ'লো অগ্নিগর্ভ!? তখন কোথায় ছিলেন দেশের বিরোধী দল ও নেতৃবৃন্দ!? কোথায় ছিলেন দেশের প্রতিবাদী বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়!? তখন কেন এরকম অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি!? যদিও অল্পবিস্তর চেষ্টা হয়েছিল। সফল হয়নি। সফল হওয়ার সুযোগ পায়নি। যখন নির্ভয়া বলাৎকার ও হত্যা ঘটনায় অপরাধীদের নিয়ে টালবাহানা চলছে, মস্করা চলছে আইনি ব্যবস্থায় তখন কোথায় ছিলেন দেশের তামাম নেতৃবৃন্দ ও বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়!? কোথায় ছিলেন বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় ও বিপ্লবী নেতৃবৃন্দ তখন যখন ডঃ প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির উপর নারকীয় নির্ম্মমভাবে গণ বলাৎকার ও হত্যা হয়!? এইসব ঘটনা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয় যে স্বনামধন্য বুদ্ধিজীবীদের কলম ধরতে হবে, কোনও মন্তব্য করতে হবে কিংবা নেতানেত্রীদের হুঙ্কার ছাড়তে হবে। আর আজ দেশজুড়ে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদান বিলের বিরুদ্ধে যে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে চলেছে দেড় জুড়ে সেইসব ঘটনা কিসের ইঙ্গিত বহন করে!? কায়েমী স্বার্থ রক্ষাকারী মানুষ লাফ দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন হাটে-বাটে, পথে-ঘাটে,  মাঠে-ময়দানে "দে মা লন্ডভন্ড ক'রে লুটে পুটে খায়" গান গাইতে গাইতে! কে বা কারা সুযোগ ক'রে দিচ্ছেন এদের!? এগুলি কি হতাশার প্রতিফলন!? কাদের হতাশা!? কিসের হতাশা!? এসবের উত্তর কে দেবে?

সরল অঙ্ক।

জীবনটা কিন্তু সরল অংক শুধু শুধুই তাকে করছি বা করেছি জটিল!
অঙ্কের যত নিয়ম কানুন ক'রে দিয়ে জীবন থেকে বাতিল!
জীবনের অঙ্কটা কিন্তু সরল যদি না জন্মবিজ্ঞানে থাকে ভুল!
যে জীবন জন্মালো তার কি দোষ? তাকে কিন্তু দিতে হবে মাশুল!
জীবনটা কিন্ত অংক সরল তাকে গোঁজামিল দিয়ে চাইছি মেলাতে
না মিললে পরে জীবন অংক দিচ্ছি দোষ সমাজ ব্যবস্থাকে!
দিচ্ছি দোষ শিক্ষা ব্যবস্থার, দিচ্ছি দোষ রাজনীতি আর ধর্মের
কিন্তু দেখছি না দোষ আমার-তোমার, দেখছি না দোষ জীবনযাপনের!
মুষ্টিবদ্ধ হাত নিয়ে আজ যে শিশু জন্মায় কোথায় দোষ, কোথায় ত্রুটি
কাল যখন তার মুষ্টিবদ্ধ হাত আলগা হ'য়ে নিচে ঝুলে যায়!?
জীবন কিন্তু এক সরল অংক যে সরলরেখায় চলে
মেইন লাইন ছেড়ে কর্ড লাইনে চলে যায় বাপ-মায়ের ভুলে।
বাপ-মাকে বুঝতে হবে ছেলের জীবন মাঝে এত ত্রুটি কিসের?
জন্মগত ত্রুটি আর পরিবেশগত ত্রুটির মাঝে ফারাক নয় উনিশ-বিশের!
পরিবেশগত ত্রুটির মাঝে বড় হওয়া জীবন যদিও শোধরানো যায়,
ফিরে আসে মেইন লাইনে। কিন্তু জন্মবিজ্ঞানে থাকলে ত্রুটি
শোধরানোর নেই কোনও বিধান বিধাতার জন্ম আইনে!
তাই তো বলি, জীবন কিন্তু একটা সরল অংক
ক'রো না তাকে বেমতলবে অকারণ জটিল
শেষের সেদিন হবে কিন্তু ভয়ঙ্কর ভয়াবহ কুটিল!
-------প্রবি।

বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য!

আমার এক গুরুভাই আমাকে লিখেছিলেন দেশের বর্তমান অস্থির ও অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে "বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য" কথাটার বাস্তব রূপ আজও দেখতে পেলেন না। তাই দেশে কোনও জাতীয় নায়কের আবির্ভাব হ'লো না আর হ'লো না ব'লেই কোনও কিছু কেন্দ্রায়িত ক'রে তুলতে পারলেন না। এই আক্ষেপ ঝ'রে পড়েছিল তার কথায়। তার কথার উত্তরে সমবেদনায় শুধু এটুকুই বলতে পারি,
ওসব কথার কথা! বলতে হয়, বলতে ভালো লাগে, মানতে নেই। কিসের বৈচিত্র? বৈচিত্র তো চরিত্রের মধ্যে! চরিত্র নিয়ে না জন্মালে, চরিত্র গঠন না হ'লে, সংশোধিত না হ'লে, উন্নত না হ'লে ঐক্য আসে কোথা থেকে!? বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য ওসব কথার ফানুস। মরীচিকা ছাড়া কিছু নয়। তাই তাকে বললাম, 'বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য' কথাটার বাস্তব রূপ আজ অবধি দেখতে পাননি আর পাবেনও না। ওসব কাল্পনিক কথা মাঝে মাঝে নাটকীয়তা সৃষ্টি করার জন্য কায়েমী স্বার্থ রক্ষাকারীরা আম জনতার মাঝে পুষ্পবৃষ্টির মত ছিটিয়ে থাকে। রাজনীতির আঙিনায় আজ বিরাট শূন্যতা বিরাজ করছে। শূন্যতা! নেতৃত্বের শূন্যতা! আর এই শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল দেশ ভাগের সময় থেকেই যা আজও পূরণ হয়নি। আর আমরা যারা ওই 'বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য' কথাকে মূলধন ক'রে বাঁচতে চাই তাদের চরিত্রও শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের কথা অনুযায়ী "মুখেতে আছে ব্যবহারে নাই, সেই শিক্ষার মুখে ছাই" বাণীর জ্বলন্ত উদাহরণ! তাই দেশে জাতীয় নায়কের অভাব আজও দেশের স্বাধীনতার ৭৩বছর ও শ্রীশ্রীঠাকুরের ১৩২বছর বয়সের পরও রয়ে গেল আর রয়েও যাবে। যার ফলে কোনোদিনই কোনও কিছু কেন্দ্রায়িত ক'রে তুলতে পারবেন না। কারণ যা যা নিয়ে ঠাকুর ঠাকুর হয়েছিলেন আমরা তাঁর অনুগামীরা না জন্মগতভাবে তাঁর কথার প্রতিফলন হ'তে পেরেছি, না তাঁর কৃষ্টিসন্তান হ'তে পেরেছি!!!!!! কোয়ান্টিটিতে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে! কোয়ালিটির বড় অভাব! যদিও ঠাকুর বলেছেন দোয়ারে দীক্ষার কথা। সেই কথা মাথায় রেখে ঠাকুরের আদেশ পালন হ'য়ে চলেছে প্রশ্নহীন, যুক্তিহীনভাবে। কিন্তু আমরা কোয়ান্টিটি তাঁর নির্দেশমত, তাঁর ইচ্ছামত কোয়ালিটিতে উদ্ভিন্ন হ'তে পারছি না! এর মধ্যে আবার কিছু চরিত্র আছে যারা সৎসঙ্গী নামধারী অমানুষ অবৈধ ঠাকুরের ভক্ত সেজে,  ঠাকুর প্রেমিক সেজে ঠাকুর আত্মজদের বিরুদ্ধে ঠাকুর বিরোধীদের চেয়েও তীব্র অশ্লীল কুশ্লীল গালিগালাজ ক'রে চলেছে নিরন্তর বুকের জ্বালা মিটিয়ে! যাদের মুখের ভাষা পায়খানার দুর্গন্ধকে হার মানায়! হিন্দিতে কাহাবত হ্যায়, টাট্টি য্যায়সী বাত!!! যে দুর্গন্ধে ঠাকুর মূর্ছা যান!!! এমনই পরম চরম ভন্ড ভক্ত এরা!!!! তাহ'লে কোনদিকে যাবেন আপনি!? একদিকে ঠাকুর বিরোধী, অন্যদিকে ভন্ড অমানুষ ঠাকুরপ্রেমী ভক্ত আর মাঝখানে আমার আপনার মত কোয়ান্টিটি ভক্ত!!!!
তাই আপনার জাতীয় নায়কের স্বপ্ন ও সবকিছুকে কেন্দ্রায়িত ক'রে তোলার বাসনা অধুরাই থেকে যাবে। যদিও কথাগুলি মনে হ'তে পারে হতাশার কথা কিন্তু বাস্তব। জানি না ভাবার সময় এসেছে কিনা। জয়গুরু।---------প্রবি।
( রচনা ২১শে ডিসেম্বর'২০১৯)
নিজের জীবনে হাজার ভুল, গেছি অন্যের ভুল ধরতে!
ভুলের ঝুলে আষ্টেপৃষ্ঠে বন্দী আমি গেছি দেশের ঝুল ঝাড়তে!!----প্রবি।

তাত্ত্বিক আমেজ!

তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে আছো মণি তাত্ত্বিক আমেজেই ডুবে থাকো! তাত্ত্বিক আমেজ মানেই গরম কাপড়ে নিজেকে জড়িয়ে নিয়ে চুকচুক ক'রে সূরা পান করা আর ঢুলুঢুলু চোখে রঙিন স্বপ্ন দেখা। পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ টেনশন বিহীন আরামদায়ক কাজ হ'লো তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে দিনরাত ভুলভাল তত্ত্ব কথার জাবর কাটা আর জাবর কাটা! তাত্ত্বিক আমেজ মানেই নিজে কিছু না ক'রে অন্যকে খোঁচা মেরে মেরে অন্তঃসারশূন্য জ্ঞানগর্ভ কথার ফুলঝুরি ছোটানো! তাত্ত্বিক আমেজ মানেই অন্যের ঘাড়ে বন্দুক রেখে আন্দাগুনদা কথার ট্রিগার টেপা। তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে আছো মণি? তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে থেকে কখন যে সকাল কেটে দুপুর ঘনিয়ে শেষের সেদিনের সন্ধ্যে নেমে আসে তার খেয়াল থাকে। তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা মানুষ হঠাৎ হঠাৎ ক'রে ঘুমের ঘোরে লাফ দিয়ে ওঠার মত বিপ্লবী হ'য়ে উঠে দিগ্বিদিক জ্ঞান শূন্য হ'য়ে পা ছুঁড়তে থাকে! তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা মন শেষের দিনে হ'য়ে ওঠে ভারাক্রান্ত এক সের থেকে এক মন! তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা জীবন শীতের বিকেলে ধোঁয়া ওঠা চায়ে চুমুক দিয়ে ফুলের বাগানে বাগান চর্চায় মাততে চায়। এই তো জীবন! তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা নেশাগ্রস্থ জীবন!!-----প্রবি।

নির্বাচন ও জনগণ এবং জানতে ইচ্ছা করে!

এগুলি কোন দলের জনগণ যারা বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে!? এগুলি কোন জনগণ যারা ভোট দিয়ে বিজেপিকে ঝাড়খণ্ড নির্বাচনে পরাস্ত ক'রে আদর্শগতভাবে বিরোধ সর্বস্ব দলগুলির জোটকে জিতিয়ে এনেছে!? জানতে ইচ্ছে করে! তাহ'লে লোকসভা ভোটে যে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ বিজেপিকে জিতিয়ে এনেছিল তারা কি ভুল করেছিল!? জানতে ইচ্ছা করে, আজ যারা বিজেপিকে হারিয়েছে তারা একক শক্তিতে কেন জিততে পারে না!? আদর্শগত বিরোধ যাদের মজ্জাগত তারা কি ক'রে একজোট হয়!? কেন হয়!? কোন জনগণকে অভিনন্দন জানাবো আমরা যারা নেতাদের উস্কানিতে নিজেদের মধ্যে লড়াই করে আবার নেতাদের বানানো চাটনি খেয়ে এক হ'য়ে বৃহৎ শক্তির বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে নেতাদের রক্ষা করতে, সেই জনগণকে অভিনন্দন জানাবো!? জনগণকেই যদি অভিনন্দন জানাতে হয় তাহ'লে ভারতের জনগণই তো বিজেপিকে বিপুল পরিমাণে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে গনতান্ত্রিক দেশের গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাহ'লে সেই জনগণকে অভিনন্দন নয় কেন!? জনগণকে  অভিনন্দন-এর বেলায় পক্ষপাতিত্ব কেন!? কেন নিরপেক্ষ নয়!? এই জনগণই যখন লোকসভায় বিপুল ভোটে জিতিয়ে এনেছিল বিজেপিকে তখন মোদী বিরোধী সমস্ত দলগুলির সমস্ত নেতা ঐক্যবদ্ধভাবে বলেছিল জনগণ ভুল করেছে আর আজ সেই জনগণ যখন পাল্টে যায় তখন আবার নেতারা পাল্টি খেয়ে উল্টো সুরে সেই জনগণের জয়গান গায়! কেন!? আমার কাছে জনাদেশ আগে তা সেই জনাদেশ ভুল হ'ক আর ঠিক হ'ক!!! আর জনাদেশ কবে কোথায় 100% ঠিক হয়েছে!?  আমজনতা কোন দেশে কবে কায়েমী স্বার্থরক্ষাকারীদের রাজনীতির জটিল চাল বুঝতে পেরেছে!? আমজনতা কবে রাজনীতির ক্ষমতা দখলের ব্যাপারীদের ব্যাপার-স্যাপার বুঝতে পেরেছে!? আমজনতা কবে ঐক্যবদ্ধভাবে, সচেতনভাবে দূরদৃষ্টির ওপর দাঁড়িয়ে প্রজ্ঞার সাথে অসৎ শক্তিকে পরাস্ত করতে পেরেছে!? কেউ কি বলতে পারবেন কবে কখন কোথায়!?!?!?!?!?

নতুন বছর ২০২০!

নতুন বছরকে স্বাগত জানাবার বহর দেখে মনে হচ্ছে না দেশের বুকে কোনও গভীর অসুখ বাসা বেঁধেছে, দেশে কোনও গরিবী আছে, আছে কোনও কঠিন সমস্যা!! মনে হচ্ছে না কোনও বেকারত্ব আছে, আছে আকাশছোঁয়া দাম! মনে হচ্ছে না দেশে কোনও প্রবীণ-প্রবীণা আছে! না আছে কোনও অসুস্থ মানুষ! শুধুই আছে বুকের মাঝে, মাথার গভীরে ব্রেনের ঘিলুতে ডিজে-র কান ফাটানো শব্দ হাতুড়ির এলোপাতাড়ি বাড়ি আর বাড়ি, বাড়ি আর বাড়ি!! হে ঈশ্বর! ধ্বংস হ'য়ে যাক এই উচ্শৃঙ্খল পৃথিবী, নেবে আসুক মহাপ্রলয়!!   প্রবি।

শব্দদানব ডি জে!

শিব ঠাকুরের আপন দেশে-------

সরকার কি কোমায় আচ্ছন্ন!? নববর্ষের ডি. জে. শব্দ দানবের তান্ডব কি কানে পৌঁছোয় না!? চোখে দেখে না!?!?!? সরকার, প্রশাসন, প্রশাসক কি কালা!? অন্ধ!?!?

ঠিক এমনি বরাবরের অন্যান্য অনুষ্ঠান, উৎসব ও পুজোর মত ছট পূজার সময়ও পানিহাটি স্বদেশী মোড়ে জনবহুল বি. টি. রোডে প্রকাশ্যে দেখেছিলাম সারাদিনব্যাপী শব্দদানবের দাপাদাপি, শুনেছিলাম জনবহুল ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ির ভিড়ে ডি. জে. শব্দদানবের হুঙ্কার! কেউ কারও কথা শুনতে পাচ্ছে না, কারও সঙ্গে কথা বলতে পারছে না! গাড়ির হর্ন চাপা পড়ে যাচ্ছে ডি. জে-র ভয়ঙ্কর গর্জনের নীচে!!!!! একটা অদ্ভুত দানবীয় উল্লাসের খুল্লমখুল্লা স্বাধীনতা! কোনও প্রশাসন নেই, নেই কোনও শাসন ও নেই কোনও প্রশাসক! অনুরোধ করলে সামান্য একটু কমিয়ে দেয় একজন আর পরমুহূর্তেই আর একজন ছট পূজার উদ্যোক্তা এসে দ্বিগুন বাড়িয়ে দেয় শব্দের ভলিউম!! শব্দের প্রচন্ডতায় সৃষ্টি হয়েছে একটা উচ্শৃঙ্খল বিশৃঙ্খল পরিবেশ আর সেই পরিবেশে নীরবে মানুষ মুখ বুজে সহ্য ক'রে চলেছে ঈশ্বর পূজার অত্যাচার!!!!! কয়েকটি মাত্র মানুষ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে স্বদেশী মোড়ের মত জনবহুল রাস্তার পাশে সরকার, প্রশাসন, প্রশাসক আর তামাম নাগরিকের সুবিধা-অসুবিধাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বলাৎকার করতে করতে!!!!!! যেন মনে হচ্ছে দেশে কোনও সরকার, পুলিশ, প্রশাসন, প্রশাসক নেই! চালাও পানসি! শালা যা চলছে, চলুক! যা হচ্ছে, হ'ক! চলেছে! চলছে!! চলবে!!! হয়েছে! হচ্ছে!! হবে!!! শিব ঠাকুরের আপন দেশে আইনকানুন সর্বনেশে!! হ্যাটস অফ পুজোপার্বন! হ্যাটস অফ নববর্ষ!! হ্যাটস অফ অনুষ্ঠান-উৎসব!!! হ্যাটস অফ সরকার, প্রশাসন, প্রশাসক!!!! হ্যাটস অফ তামাম সাধারণ-অসাধারণ, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, লেখাপড়া জানা ও না-জানাওয়ালা আম নাগরিক!!!!! হ্যাটস অফ!!!!!!! -------প্রবি।

চ্যালেঞ্জ!

নতুন বছরে আসুন ঠাকুরকে ঠাকুর যা চেয়েছিলেন, যেভাবে চেয়েছিলেন ঠিক সেইভাবে প্রতিষ্ঠা করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করি। চ্যালেঞ্জ মানে চলনকে সঠিক পথে চালিত করার ও ক'রে চলার জন্য নিজেকে আরেঞ্জ করা। ঠাকুরকে মাথায় নিয়ে চলা অর্থাৎ তাঁর চলন পুজো করা, চরণ পুজো নয়, নয় ফুল বেলপাতা, ধূপধুনো দিয়ে পুজো, পুজো মানে স্বাগতম অর্থাৎ তাঁর চলা, বলা, কথা, আচার, ব্যবহার ইত্যাদিকে নিজের চরিত্রে আপন ক'রে নেওয়া, মিশিয়ে নেওয়া! দেখব সব সমস্যা কেটে যাবে ধীরে ধীরে! কাটবেই!! আসুন বিশ্বাস রাখি নিজের ও ঠাকুরের ওপর আর সেইভাবে চলি যেন ঠাকুর খুশী হন!!!!!
---প্রবি।

কর্ম-ধর্ম!

কর্মযোগী পুরুষ তুমি কর্ম নিয়েই থাকো;
কর্ম তোমার ধ্যান জ্ঞান কর্ম নিয়েই বাঁচো!
কর্ম মাঝে তুফান ওঠে কথার তুফান বটে!
ধর্মহীন কর্ম জেনো পুতুল কিন্তু বিকিকিনির হাটে।

ধর্মযোগী পুরুষ তুমি ধর্ম নিয়েই থাকো;
ধর্ম তোমার ধ্যান জ্ঞান ধর্ম নিয়েই বাঁচো!
ধর্ম মাঝে তুফান ওঠে ভক্তির তুফান বটে!
কর্মহীন ধর্ম জেনো প্রসব করে কিন্তু অশ্বডিম্ব ঘটে!

কর্মযোগী মারছে ঝাঁপ কর্ম নিয়ে ফাটিয়ে ঢাক
কর্মমাঝে মারছে ঘাই কর্ম কর্ম মারছে হাঁক!
ধর্ম ধর্ম জিগির তুলে ধর্মযোগী ছুটিয়ে ঘোড়া
দেশটাকে ক'রে টুকরো টুকরো করছে শেষে কানা খোঁড়া!
কর্ম-ধর্মের মনভুলানী বাদাম তুলে করতে চাইছো বাজিমাৎ!?
ভুলভুলাইয়ার ঘুলঘুলিতে হবেই হবে নিশ্চিত কুপোকাত।

এমনিভাবেই কর্মযোগী কর্ম করে, ধর্মযোগী ধর্ম;
কর্মধর্ম বিভেদ মাঝে যায় হারিয়ে আসল কথা মর্ম!
কর্মই ধর্ম ব'লে হাঁক পারে যে কর্মযোগী
কর্ম করার অহংকার তার মজ্জাগত, সে রোগী!
ধর্ম ধর্ম ব'লে যারা কর্মের নামে করছো খালি হট্টগোল
অনুষ্ঠানের নামে তোরা ধর্মটাকে চিতায় তোল!

কর্ম মাঝেই ধর্ম আছে আর ধর্ম মাঝে কর্ম
জেনো এ পরম সত্য!
বাঁচা-বাড়া আছে যেথায় তাহাই কর্ম, তাহাই ধর্ম!
এ নেই যেখানে তাহাই অসৎ, তাহাই অসত্য।

( লেখা ১১ই জানুয়ারী'২০১৯ )

Friday, January 10, 2020

মানুষ ও মানুষের মানসিকতা।


অনেক লেখার মত শুভ নববর্ষে একটা লেখা লিখেছিলাম। নববর্ষের সকাল থেকে উদ্দাম ডি জে-র হুঙ্কারকে মাথায় রেখে 'শিব ঠাকুরের আপন দেশে--------' নামে লেখায় শব্দদূষণের বিষয়টাকে নিয়ে লিখতে গিয়ে ভয়ঙ্কর অস্বাস্থ্যকর প্রতিবাদী মন্তব্যের মুখোমুখি হ'লাম! যা এখনও হ'য়ে চলছে!! নিমেষের মধ্যে ঝাঁকে ঝাঁকে মন্তব্য আসতে লাগলো! যেন মনে হচ্ছে যেন সবাই ওত পেতে বসেছিল! গরম গরম পাতে পড়তে না পড়তেই ঝাঁপিয়ে পড়লো ঠুকরে ঠুকরে ক্ষতবিক্ষত করবে বলে! মনে হচ্ছিল ফেসবুক থেকে ছোঁ মেরে তুলে নিয়ে যাবে! কথার ছোবল কি ভয়ঙ্কর নোংরা বিষাক্ত হ'তে পারে তা পোষ্টের মন্তব্যগুলি ছিল সাক্ষী! কিন্তু আমি বাধ্য হ'য়ে বেশীর ভাগ অশ্লীল কুৎসিত মন্তব্য ডিলিট ক'রে দিয়েছি। প্রথমে ভেবেছিলাম সব রেখে দেবো, দিয়েছিলামও পরে গা ঘিনঘিন করতে লাগলো, দুর্গন্ধ ছড়াতে লাগলো আমার টাইমলাইন থেকে! তাই ডিলিট করতে লাগলাম একে একে বিষাক্ত মন্তব্যগুলি। কিছু মন্তব্য এখনও রেখে দিয়েছি। মানুষ পড়ুক, জানুক।

পোষ্টের বিষয় ছিল একনাগাড়ে বেজে চলা ডি জে-র ভয়ঙ্কর বুক কাঁপানো গুরুম গুরুম শব্দদূষণ! সেই বিষয়কে সামনে রেখে ভেবেছিলাম একটি পরিবেশ সচেতন গঠনমূলক আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে। তার জন্য সবরকম পক্ষে-বিপক্ষের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য মানুষ হিসাবে মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। যদিও এতদিনের অভিজ্ঞতায় জেনেছি কেউই আলোচনার মুখোমুখি হয় না। শুধু কিছু লাইক আর গুরুভাইদের বিরক্তিকর 'জয়গুরু' ছাড়া আর কিছুই হয় না। এইযে জয়গুরু নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যটা করলাম এর জন্যেও সমালোচিত হ'তে হবে। কথাটা বাধ্য হয়েই লিখেছি। কারণ গুরুভাইবোনেদের মোল্লার দৌড় মসজিদের মতন দৌড় জয়গুরু পর্যন্ত। এতে রাগ হ'তে পারে আমার গুরুভাইবোনেদের (যদিও অবশ্যই ব্যতিক্রম আছে তবে তা খুবই নগণ্য) কিন্তু সত্য চিরকালই অপ্রিয়। আমরা গুরুভাইবোনরা যদি এই ফেসবুকের মত স্ট্রং মিডিয়াকে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের জীবন দর্শন কে তুলে ধরার কাজে ব্যবহার করতে না পারি তাহ'লে কোটি কোটি ঠাকুরের ঘুমিয়ে থাকা অনুগামী দিয়ে কি হবে!? কি হবে আজ শুধু কোয়ালিটি বিহীন কোয়ান্টিটি দিয়ে!? যদিও দোয়ারে নাম দেওয়ার কথা স্বয়ং ঠাকুর ব'লে গ্যাছেন। কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান দুর্যোগপূর্ণ ও আগামী ভয়াবহ ভয়ংকর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনুগামীদের কি কি করণীয় তাও ব'লে গ্যাছেন তিনি! অথচ আমরা কতটা তৈরি হয়েছি দূরের কথা কতটা তৈরি হওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছি বা চালাচ্ছি তা আমরা নিজেরাই জানি আর সামান্য হ'লেও তার ঝলক পায় ফেসবুকে! আর এলাকায় এলাকায় আমরা জানি আমাদের অবস্থান!

যখন ভাবছিলাম একটা পজিটিভ মানসিকতার প্রতিফলন দেখতে পাবো আমার লেখা ঐ 'শিব ঠাকুরের আপন দেশে-----' পোষ্টের ওপরে কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত নেগেটিভ, অতি নেগেটিভ হাওয়ার তোড়ে ভেসে যেতে লাগলো সব! মনে হ'লো দিগন্তব্যাপী ঘর অন্ধকারে ডুবে যাওয়া কালবৈশাখীর ঝড় আছড়ে পড়েছে পোষ্ট করা আমার লেখাটার উপর! অকথ্য কুকথ্য ভাষায় গালাগালি! সে কি ভাষা এখনও কানের কাছে গু'য়ে মাছির মত ভনভন ক'রে বেজে চলেছে! চোখ বন্ধ করলেও নোংরা ছবিগুলি ভেসে উঠছে বন্ধ চোখের সামনে! চোখ বন্ধ করলেই বিপদ! ঝাঁকে ঝাঁকে নোংরা লেখাগুলি, ছবিগুলি আছড়ে পড়ছে চোখের পাতার উপর, মণির উপর! আর সমস্ত গালাগালি, কুৎসা, নোংরা বাজারী শব্দের ডালি আর ছবির পশরা নিয়ে ফেসবুকে প্রতিবাদী যুবক-যুবতী সমাজ, অল্পবয়সী ছেলেমেয়ে হৈহৈ, রেরে ক'রে নেবে পড়েছে আমার লেখার বিরুদ্ধে বিপ্লব ঘটাবে ব'লে!!!!!! অবাক হ'য়ে শুধু ভাবতে লাগলাম এই আমার বাংলা ও বাঙালির বর্তমান প্রজন্ম!!!!!

বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়ে, যুবকযুবতী আমার পোস্ট করা লেখার বিষয়কে অজুহাত হিসেবে সামনে রেখে নেবে পড়েছে বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের বিরুদ্ধে পরিকলিপ্ত ও সংগঠিত কুৎসা, নিন্দা, গালাগালি করবে বলে! একের পর এক পোষ্ট ক'রে চলেছে ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবার নিয়ে ঘৃণ্য ছবি! চোখ অন্ধ হ'য়ে যায় ঐ সব অশ্লীল ছবি দেখলে ও পড়লে!!!!! তাদের লক্ষ্য শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও ঠাকুর পরিবার। অবাক হ'য়ে যাই, স্তম্ভিত হ'য়ে যাই অল্পবয়সী ছেলেমেয়ে, যুবকযুবতীদের মুখের ভাষা শুনে! আরো বেশি হতভম্ব হ'য়ে যায়, মুখের থেকে কথা হারিয়ে যায় যখন দেখি অল্পবয়সী মেয়েরা, যুবতীরা এমনকি কিছু মধ্য বয়সী নারীরা অনায়াসে অবলীলায়, অবহেলায় ঠাকুরকে, ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের খিস্তিখেউর করছে!!!!! এরা নারী জাতি!? এরা আগামী প্রজন্মের জন্মদাত্রী!? এরা কোনও সন্তানের মা!?

এই যুবকযুবতী, ছেলেমেয়েরা যখন নিঃসংকোচে  নির্দ্বিধায় মূহুর্তে মুহূর্তে নোংরা পোষ্ট ক'রে চলেছে তখন ভাবলাম এরা কোন পরিবারের সন্তান! এদের পিতামাতারা কি এই অপসংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক!? এদের পিতামাতারা এদের এইরকম ভাষা, ব্যবহার, কথাবার্তা, আচার-আচরণ সমর্থন করেন!? এরা কি জানেন এদের আদরের সন্তানরা এমন ঘৃণ্য বিপ্লবী কাজের সঙ্গে যুক্ত!? বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ সমান জ্ঞান নিয়ে এরা ঠাকুরের বাণীর ব্যাখ্যা করে!!!!!! খিস্তি দিয়ে, নোংরা ছবি দিয়ে ঠাকুরের বাণীর ব্যাখ্যা করে, ব্যাখ্যা চায়!!!!! আবার একে অপরকে উৎসাহ দেয়, প্রভোক করে, নাম লিখে আহবান করে কাঁচা কাঁচা গালি নিয়ে আসরে জমায়েত হ'য়ে আসরকে গরম করতে!!!! আহ্বান শুনে পিলপিল ক'রে নেবে পড়ে আসরে সব লাইন দিয়ে মজা লুটবে বলে!!!!!

আমি নোংরা ছবি, নোংরা লেখা ১টা ডিলিট করতে না করতেই ১০টা ছবি, ১০টা লেখা কমেন্ট বক্সে ভেসে ওঠে!!!! সমস্ত অশ্লীল কমেন্ট ডিলিট করতে করতে আমি আপাদমস্তক যেন মেথর হ'য়ে গেছি!!!! যেন মনে হচ্ছে গা দিয়ে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে!!!!

ঐ সমস্ত প্রতিবাদীদের শব্দদূষণ অভিযোগ একটা অজুহাত মাত্র! তাদের মূল লক্ষ্য শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও তাঁর পরিবার-পরিজন! ওই সমস্ত মানুষগুলির শিক্ষা, রুচি, বাড়ির পরিবেশ, বন্ধুবান্ধব, সঙ্গ কিরকম অস্বাস্থ্যকর ও সংক্রামক তা ওই সমস্ত পোষ্ট করা কমেন্ট, ছবি দেখলেই, ভাবলেই মাথা ভারী হ'য়ে আসে!! আমার লেখা ঐ পোস্টের প্রসঙ্গ বহির্ভুত শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিয়ে কুৎসার চর্চা হ'য়ে গেল মুখ্য আর পোষ্টের বিষয় ডি জে-এর ভয়াবহ শব্দদানব বিষয় হ'য়ে গেল গৌণ!!!!!! হা ঈশ্বর! কি বিচিত্র এই বাংলা আর কি বিচিত্র এই বাংলার বাঙালি!!!!!! ফেসবুক জুড়ে শুধু বাংলার বুকে বাঙালির গালাগালি বাংলা ও ভারত তথা বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে!!!!! ভারতের আর কোন রাজ্যে এই সীমাহীন অসভ্যতা নেই! বাঙালি ছাড়া শ্রীশ্রীঠাকুরকে কেউ নেই কানে গরম সীসা ঢেলে দেওয়ার মত তীব্র জ্বালাময় গা ঘিনঘিন করা গালাগালি করার?

যাই হ'ক এই সমস্ত ছেলেমেয়েরা, যুবকযুবতী-রা শব্দদূষণ নিয়ে আমাকে পাল্টা চার্জ করে অসম্মান, অপমানজনক গালাগালি ক'রে। তারা সৎসঙ্গের নানা অনুষ্ঠানে, উৎসবের সময়, বাড়িতে সৎসঙ্গের সময় মাইক বাজানো নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তোলে। প্রশ্ন তোলে বাঁকুড়ার দারকেশ্বরে উৎসব করা নিয়ে। উত্তর দিতে ইচ্ছে করলেও উত্তর দিতে মন সায় দেয় না। কাকে বা কাদের উত্তর দেবো? ওরা তো উত্তর চায় না! চাইলে আলোচনার টেবিলে বসতো, স্বাস্থ্যকরভাবে মতের আদান-প্রদান করতো। শব্দদানবের ন্যায্য প্রশ্ন তুলতো। কিন্তু তা হয়নি, হওয়ার কথা নয়। যতই এদের উত্তর দাও না কেন সেই ঘুরে ফিরে একই ঘৃণ্য কথার জাগলারি! তারা পায়খানার সেফটি ট্যাঙ্কের পোকার চেয়ে জঘন্য জীবনের অধিকারী আর তাই মুখে টাট্টি কা মাফিক বাত!!!!!!! এরা আলোচনার যোগ্য ও উপযুক্ত নয়।

যাই হ'ক, তবুও এখনও ঐ পোষ্টে অনেক কমেন্ট রয়ে গ্যাছে আর এসেও চলেছে! তাই যে উত্তর ওদের দিতে পারতাম কিন্তু দিইনি সেই উত্তর আমি এখানে দিচ্ছি। এখানে দিচ্ছি আমার গুরুভাইবোনদের উদ্দেশ্যে।

হ্যাঁ! শব্দদূষণ সব ক্ষেত্রেই শব্দদূষণ! তা যেখানেই সে রীতি লঙ্ঘন করুক না কেন! আমাদের সৎসঙ্গের অনুষ্ঠানে বাড়িতে, উৎসবে, মাইক লাগানো হয় আর সেই মাইক যখন সকাল থেকে অকারণে কেউ বাজায়, বাড়ির ছেলেমেয়েরা মিলে চেঁচামেচি করে, কেউ খ্যান খ্যানে গলায় গান গায়, কীর্তন করে, এলোমেলো ভিত্তিহীন সাপব্যাঙের গল্প শোনায় হেঁড়ে গলায় তখন নিঃসন্দেহে তা অসহ্য ও বিরক্তিকরভাবে সমাজে প্রভাব ফেলে। যে কোনদিন নিজের ঘরে গান গায়নি, গান শেখেনি, ঠাকুরের কথা বলেনি, শোনেনি, পড়েনি সেই ব্যক্তি যদি গান গায়, বক্তব্য রাখে তাও আবার মাইকে তাহলে যা হবার তাই হয়! বিরোধীরা সুযোগ পায় তেড়েফুঁড়ে উঠে তাদের বুকের ভিতর জমিয়ে রাখা বিষ উগলে দিতে। আর মাইক বা চোঙ লাইটপোষ্টে লাগালে তা কানের মধ্যে প্রবল ধাক্কা মারে। কারণ সেই আওয়াজ বেরিয়ে যেতে পারে না, বাঁধা পরে যায় চারপাশের গজিয়ে ওঠা ফ্ল্যাটে। এখন আর কোথাও ফাঁকা জায়গা নেই। চতুর্দিকে ফ্ল্যাট আর ফ্ল্যাট, ফ্ল্যাট আর ফ্ল্যাট!!!!! তাই মাইক লাগাবার সময় পরিস্থিতি, পরিবেশের কথা মাথায় রেখে উঁচু জায়গায়, ফ্ল্যাটের মাথায় মাইক লাগাতে হবে, বাজাতে হবে, নিচে অনুষ্ঠানের জায়গায় বক্স লাগাতে হবে, পরিমিত সাউন্ড দিতে হবে, রাস্তায় লাইট পোষ্টে মাইক না বাঁধায় ভালো, নির্দিষ্ট একটা সময়ে, একটা সময় পর্যন্ত বাজাতে হবে। ভালো ভালো গান, ভালো শিল্পীদের দিয়ে গাওয়াতে হবে, যথেষ্ট ঠাকুর সম্পর্কে জ্ঞানের অধিকারী ভক্ত মানুষকে দিয়ে বক্তব্য রাখাতে হবে আর নতুবা মাইক বিহীন সৎসঙ্গ করতে হবে। পরিবেশ-পরিস্থিতিকে অবজ্ঞা করার কথা ঠাকুর নিষেধ করেছেন। সবসময় বলেছেন পরিবেশের দিকে, পরিস্থিতির দিকে কঠোর তীক্ষ্ণ নজর দিতে, নজর রাখতে।

এইসমস্ত মানুষ যারা প্রতিবাদে সামিল হয়েছে তারা ভোটের সময় বা অন্য কোনও  রাজনৈতিক বক্তৃতার সময় প্রতিবাদের মুখ খোলে না। খুলতে সাহস পায় না। অথচ এরাই শব্দদূষণ-এর প্রতিবাদের নামে অজুহাত কে হাতিয়ার ক'রে ঠাকুর অনুকূলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। এদের মধ্যে তীব্র ধর্ম, ঈশ্বর, ঠাকুর বিরোধী ছাড়াও অনেক অন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অনুগামীও আছে। তারা সৎসঙ্গের ব্যাপক বিস্তারে কাতর, হিংসায় জর্জরিত! অনেক আছে অন্যের কথায় প্রভাবিত। কোনও খবর না রেখেই, তথ্য ও প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ ছাড়াই চিল কান নিয়ে গ্যাছে শুনে কানে হাত না দিয়ে চিলের পিছনে ছোটার মত ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারের বিরুদ্ধে, সৎসঙ্গের বিরুদ্ধে, উৎসবের বিরুদ্ধে কথা বলে, ঈর্ষাকাতর হ'য়ে মিথ্যে প্রোপাগান্ডা করে রাজনৈতিক দলের প্রোপাগান্ডার মত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই!!!

তাই আসুন আমরা এমনভাবে চলি যাতে এরা সুযোগ না পায় আর এদের কথার উত্তর না দিয়ে আমার ঠাকুরের চাহিদা মত আমার জীবনটাকেই এদের প্রশ্নের উত্তর ক'রে তুলি। ভেবে পা ফেলি, চারপাশের পরিবেশের কথা ভেবে সময় নির্বাচন করি। একটা উদাহরণ দিই, গত লোকসভা ভোটের সময় আমরা ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্র ও খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্রের মাসিক অনুষ্ঠান বন্ধ রেখেছিলাম। কারণ টানা ভোট প্রচারের মাইকের আওয়াজে আর বাজির আওয়াজে মানুষ তিতিবিরক্ত হ'য়ে গিয়েছিল কিন্তু ভয়ে মুখ ফুটে কেউ কিছু বলতে পারে নি, পারে না। সেই কথা বিবেচনা ক'রে আমরা দুটো কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ভোটের সময়ের মাসিক 'বিশেষ সৎসঙ্গ' বন্ধ রেখেছিলাম কিন্তু আমাদেরই পাশের একটি কেন্দ্র লোকসভা ভোটের যেদিন ডেট ছিল এই অঞ্চলে তার পরদিনই বড় ক'রে সৎসঙ্গের আয়োজন করেছিল। কিন্তু আয়োজকরা অনুষ্ঠান শেষে আর ফিডব্যাক নেয়নি যে অনুষ্ঠানের প্রতিক্রিয়া কি!? এরা ফিডব্যাক নেওয়া তো দূরের কথা ফিডব্যাক নেওয়ার কথায় মাথায় আসে না। ফলস্বরূপ এইসমস্ত অতি উৎসাহী গুরুভাইরা জানতেই পারেনি যে কি অকথ্য কুকথ্য ভাষায় প্রতিকূল ঠাকুর ব'লে গালাগালি করেছে উৎসব স্থলের বাইরে রাস্তায় অবস্থানরত লোকজন, দোকানদার, আশপাশের বাড়ির মানুষজন!!!!!! উৎসব বা অনুষ্ঠান শেষে ড্যাং ড্যাং ক'রে নিজেরাই আনন্দে মনে মনে মনকলা খেতে খেতে চলে গিয়েছিল উৎসবের আয়োজনকারীরা।

 যাই হ'ক, এইসমস্ত ফেসবুকে কুৎসকারীদের সঙ্গে আলোচনায় যেন আমরা না যায়, উত্তর দিলেও উত্তরকে সংযত ও যুক্তিনির্ভর যেন ক'রে তুলি। বাবাইদাদার কথামত নিন্দা, কুৎসা-কে তাচ্ছিল্যে ভরিয়ে দিন। জয়গুরু।
--------------প্রবি।

কবিতাঃ ষড়যন্ত্র!!!!!!!

দিকে দিকে শুনি ওই, শুনি উচ্ছৃঙ্খলতার জয়ধ্বনি!
বুক করে দুরুদুরু দেখে আকাশে-বাতাসে, জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে,
পাহাড়ে-পর্বতে, শহরে-নগরে, বনে বনান্তরে
বিশৃঙ্খলতার উৎসাহ-উদ্দীপনার খনি!!
ষড়যন্ত্রের হাপড় টেনে সকাল থেকে রাত
চক্রান্তের আগুন বমি দেয় উগরে পোড়ায় বরাত!
দুরাত্মা আজ মহাত্মা সেজে বসে রাজসভায়!
মহাত্মার স্থান আজ পায়ে, আস্তাকুঁড়ে পথের কিনারায়!
কে দুরাত্মা, কে মহাত্মা বোঝা বড় দায়!!
দুরাত্মার নামে রাস্তা মহাত্মা গালি খায়!
দানবের জন্য মানব অধিকার কোন মানব (?) চায়!?
দানব-মানব আজ একাকার হায়!!
কাল যে জেলের ভিতর আজ সে রাজসভায়!
আলো ক'রে বসে আসর ছড়িয়ে কালো রোশনাই!!
আর আজ যে মগ্ন বাঁচা-বাড়ার মহান যজ্ঞে!
কাল সে নিশ্চিত ষড়যন্ত্রের খোঁড়া অন্ধকার গভীর গর্তে!!
চরিত্র যার পিচ তুল্য কালো সে চরিত্রের কথা কয়!?
চরিত্রের ধ্বজা তুলে হাঁক পারে যে সেই চরিত্রবানে ভয়!!
কার কাছে যাবে আজ কে দেবে বিপদে সাহারা!?
সাহারা আজ মরুভূমি তৃষ্ণায় বুক ফেটে যাবে নিশ্চিত মারা!
আজ বিশ্বাস হয়েছে রেপড ধূলিসাৎ প্রত্যয়!
কেউ নেই পাশে, নেই কেউ দিতে বিপদে বরাভয়।
ঈশ্বর আজ শক্তিহীন নেই তাঁর কোনও ক্ষমতা
বাঁচাতে-বাড়াতে সংকট মোছাতে নেই কোনও মমতা!
কলির শেষে আসছে ওই হাঁকছে ঘোর কলি!
মুন্ডমালার পাহাড় জাগে জাগে রক্ত নদী খালি!!
হে জীবন্ত! হে রক্তমাংসের জীবন্ত ঈশ্বর!
তুমি আমার রক্ত রাঙা পথের নেশা গো!
তোমার চলন পূজার ভস্ম মাখি চরণ পূজা ভুলে গো!!
-----------প্রবি।

ক'রো ক্ষমা!

মাটির মাকে ডেকে বলি, মা! মাগো! রেখো আমায় তুমি ভালো!
যে মা দিল জন্ম তাঁকে অন্ধকারে রেখে কেড়ে নিয়েছি তাঁর আলো!!
মাটির মাকে ডাকি আর কেঁদে কেঁদে ভাসায় আমার বুক!
ঘরে যে আমার বুড়ী মা কাঁদে ছেঁড়া আঁচল দিয়ে মুখ ঢাকে
কখনো দেখেছি কি তাঁর মলিন, ব্যাথায় কাতর মুখ!?
প্রশ্ন করি নিজেকে, ভণ্ডামি আর মূর্খামি দিয়ে আর চলবে কতকাল?
নিজে আছো ঘুমিয়ে আর জাগাও অন্যকে? শালা! ঝরঝরে ইহকাল পরকাল!
মাটির বোবা মাকে ডাকি আর ইচ্ছেমত মাঙ্গি যা আসে তাই মনে
বৃত্তি-প্রবৃত্তির সুড়সুড়ি খাই আর যা ইচ্ছা তাই করি ভাই
আর মা, মা, বলে কেঁদে উঠি বিপদ যখন দেয় হানা শয়নে-স্বপনে!
মাটির মাকে ডেকে বলি, মা! মাগো! রেখো তুমি সন্তানেরে
মোর দুধে আর ভাতে; আর দিন গুজরান করি উচ্শৃঙ্খল আর
বিশৃঙ্খলার হাতে হাত রেখে!
এমনিভাবেই বেলা শেষে যখন আঁধার ধেয়ে আসে
মাটির বোবা মা কি তখন দাঁড়ায় এসে পাশে?
বিছানাতে শুয়ে পঙ্গু আমি যখন জানালা দিয়ে বাইরে চেয়ে দেখি
বিগত দিনের বাঁধন ছেঁড়া ষড়রিপুর উদ্দামতা মারছে উঁকিঝুঁকি!
চোখের জলে ভাসিয়ে বুক ব্যাথায় 'মা' 'মা' ব'লে উঠি ডেকে
কোথায় মাটির বোবা মা! এ যে আমার বুড়ি মা! আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে
মুছিয়ে দিয়ে চোখের জল বলে রুগ্ন মা আমার মিষ্টি হাসি হেসে
'ভয় কি বাবা! এই যে আমি! দ্যাখ চোখ মেলে তোর চেয়ে
ঐ যে পরমপিতা দাঁড়িয়ে আছে, হাত বাড়িয়ে ডাকছে তোকে
আসতে তাঁর কাছে! দুঃখ-ব্যাথা ভুলিয়ে দেবে, কষ্ট সব মুছে নেবে
তাঁর চলন পূজায় ভরিয়ে দে তোর জীবন জীবননাথকে ডেকে!'
মায়ের দিকে চেয়ে চেয়ে অশ্রুভেজা বোবা স্বরে বলি, এই তো আমার মা!
জীবননাথকে হেলায় ফেলে, চলন পূজা দূরে ঠেলে এতদিন করেছি বিষ পান!
জীবননাথই যে জগন্নাথ! নিজের মা-ই যে জগৎ মা! শিখিনি এই গান!?
হে প্রভু! হে পরমপিতা! তুমি ক'রো আমায় ক্ষমা!! জুড়াক আমার প্রাণ!!!