Powered By Blogger

Friday, January 31, 2014

প্রপবন্ধঃ প্রকৃত দাদাগিরি!!!!

রফিক ভাইকে নিয়ে লেখাটা post করার পর অনেক comments, message যেমন এসেছে তেমন অনেক পরিচিত জনের ফোনও পেয়েছি। প্রত্যেককেই রফিকের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। অনেকের অনেক প্রশ্নের উত্তর একসঙ্গে দেবার জন্য এই লেখাটা post করলাম। রফিক ভাই যেটা করেছে সেটা বিবেকের ডাকে সাড়া দিয়ে করেছে। বিবেকের ডাকে যারা সাড়া দেয় তাঁরা কখনোই প্রচারের জন্য করে না। ইতিহাস তাই বলে। আর এটা আমার বিলক্ষণ জানার মধ্যেই পড়ে। বিদ্যাসাগর, কর্ণ, তুলসীদাস, কবীর ইত্যাদি আরো অনেক অনেক মহাপুরুষদের জীবন তাই বলে। এঁরা এঁদের দানের কথা নিজের মুখে কোনদিনও বলেননি। তাহ’লে আমরা জানলাম কোথা থেকে? এঁরা বলেন না। নিজেদের ঢাক এঁরা নিজেরা পেটান না। কথায় আছে, “Empty vessels sound much” Too much talk ends in nothing. “অসারের তর্জন গর্জনই সার”। কারা নিজেদের ঢাক নিজেরা পেটায় এ-থেকে তা বোঝা যায়। কিন্তু রফিকরা তো এর বিপরীত তাই যাদের জন্য রফিকের মত মানুষেরা করেন তাদেরই দায়িত্ব, সামাজিক দায়িত্ব থেকে যায় এঁদের কথা সমাজের কাছে তুলে ধরার। এঁরা খুশি বা অখুশি হবেন কিনা সেদিকে তাকিয়ে সামাজিক দায়বদ্ধ মানুষেরা সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে সত্য প্রচারে পিছিয়ে আসেন না কিম্বা   এঁদের খুশি করার জন্যও সামাজিক দায়বদ্ধ মানুষেরা কোনও প্রচারে লিপ্ত হন না। সামাজিক দায়িত্ববোধ, কর্তব্যবোধ থেকেই এঁরা এই সমস্ত মহৎ মানুষদের জন্য যা করার করেন। এঁদের জীবনের কথা প্রচার নাহ’লে মানুষ সমাজের জন্য, মানুষের জন্য বা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ভাল কাজ করার উৎসাহ, প্রেরণা পাবে কোথা থেকে? আর বন্ধুরা আমার আমি তো সমাজের জন্য, মানুষের জন্য তেমন কোনো ভাল কাজ করতে পারিনি কিছু না’হয় রফিক ভাইয়ের কথা কিছুটা প্রচার ক’রে কিছু না’ করতে পারার গ্লানিটা পুষিয়ে নিলাম! এঁদের মতো মহান মানুষদের মঙ্গল যজ্ঞে না’হয় জীবন দেবতা প্রভু রামের সেতুবন্ধন কাজে কাঠবিড়ালির ভুমিকার মত আমিও সামান্য ভুমিকা পালন করলাম! আজকের অসভ্যতার যুগে কেউ কারও ঢাক পেটানো তো দুরের কথা কারো প্রশংসাজনক কাজকে কবরস্থ করতে বা করাতে তৎপর তীব্র ষষ্ট রিপুজ্বরে আক্রান্তরা। আর রফিক ভাইয়ের মতো মানুষেরা যেমন কাউকে বলেন না নিজের ভালো কাজের প্রশংসা বা প্রচার করতে ঠিক তেমনি কেউ যদি স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তাঁর ভালো কাজের প্রচার করে তা’তে তাঁরা অখুশি বা রুষ্ট হন না, এ আমার গভীর বিশ্বাস। প্রত্যেকেই নিজের ভালোকাজের জন্য প্রশংসা শুনতে ভালোবাসেন। এটা স্বাভাবিক ও স্বতঃসিদ্ধ। ব্রিটিশরা দু’শো বছর রাজত্ব করে গেছে এ-দেশটাতে। আমরা গোলামী করেছি দু’শো বছরতাই তাদের ছেড়ে যাওয়া খারাপ জিনিসটাই আমরা নিয়েছি আর তা’হ’ল divide & rule এবং অন্যান্য আরো অনেক কিছু। কিন্তু ভালোগুলি নিতে পারিনি। কি কি গুনের অধিকারী হ’লে একটা জাত প্রায় পুরো পৃথিবীটাতেই রাজত্ব করেছিল তা’ আমরা কোনদিন ভেবে দেখিনি। দেশটাকে স্বাধীন করার নেশাতেই আমরা মেতে থেকেছি। ভেবে দেখিনি তাঁরা চলে গেলে কাদের ওপর বহু ভাষা, বহু জাতি, বহু সম্প্রদায়, বহু ধর্ম্ম-এর এতবড় দেশটাকে চালাবার ভার দেবো! ইংরেজদের অনেক গুণের কথা নাইবা বললাম। অনেক গুণের মধ্যে একটা বড় গুণ ছিল ব্রিটিশদের তা’ হ’ল অন্যের ভালো কাজের প্রশংসা করা, তারিফ করা, বাহবা দেওয়া, মান্যতা বা স্বীকৃতি দেওয়া। প্রশংসা করা ছিল তাদের রক্তে! আমরা সেটা তাদের থেকে নিতে পারিনি। বুক বাজিয়ে বলতে পারিনি, তুলে ধরতে পারিনি সত্যকে সত্য বলে হীনমন্যতা ও পরশ্রীকাতরতার দরুণ। তথাকথিত উদারতার দোহাই দিয়ে, কথার ঝিকিমিকিতে নিষ্ক্রিয় ভালোমানুষ থাকার মানে রফিক ভাইদের মত মানুষদের প্রকৃত দাদাগিরি জানতে, চিনতে না দেওয়া এবং পরবর্তীকে, পরবর্তী প্রজন্মকে তাঁদের মত হ’তে না দেওয়া। রফিকের মত মানুষেরা যা করেছে বা করছে সেটাই তো প্রকৃত দাদাগিরি! তাই না?
ফেসবুক বন্ধুরা আমার তাই আসুন এবং এসো আমরা সবাই মিলে এই দাদাগিরি কথা তুলে ধরি, পৌঁছে দিই ঘরে ঘরে। সমস্বরে বলি রফিক ভাই দেশ তোমায় যা দিয়েছে, দেশের মানুষ তোমায় যা দিয়েছে, ভগবান বা আল্লা তোমায় যা দিয়েছেন তুমি ফিরিয়ে দিয়েছো তা’ তোমার দেশকে, তোমার দেশের মানুষকে। দেখিয়েছো প্রকৃত দাদাগিরি! তোমায় দেখে প্রেরণা পেয়ে এগিয়ে আসুক অন্য আরো সবাই। তুমি বাংলাদেশের রত্ন! দেশ তোমায় ‘বাংলাদেশ রত্ন’ উপাধি দিক না দিক তুমি আমাদের কাছে ‘বাংলাদেশ রত্ন’!!   


একেই বলে বীরত্ব! একেই বলে ত্যাগ!




আইসিসি ট্রফি জেতার পড়ে প্রাইম মিনিস্টার সবাইকে একটা করে জমি আর একটা করে গাড়ি গিফট করছিলো। একজন ক্রিকেটার জমিটা দিয়ে দিছিলো এলাকায় স্কুলের জন্যে আর গাড়িটা বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে স্কুল ঘর তুলে দিছিলো। ব্যাপারটা আমাদের মিডিয়াতে খুব একটা আগ্রহ দেখা যায়নি। অল্প কয়েকটা পেপারে ছাপা হইছিলো। সেই ক্রিকেটার বলছিলো- ভাই আমি তো পড়া লেখা কিছু শিখিনাই। খুব গরীব ঘরের ছেলে। আমার মহল্লার ছেলে মেয়েরা যেন পড়াশুনাটা শিখে। সেই ক্রিকেটারের নাম মোহাম্মদ রফিক।

সেলাম! মোহাম্মদ রফিক তোমায় সেলাম! একেই বলে বীরত্ব! একেই বলে ত্যাগ! প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেল The greatest phenomenon of the world Sri Sri Thakur Anukul Chandra-এর কথা, "কথায় আছে "বীরভোগ্যা বসুন্ধরা" ! তা' ঠিক, বিশ্বাস, নির্ভরতা আর আত্মত্যাগ এই তিনটিই বীরত্বের লক্ষণ।" ঠাকুরের কথা অনুযায়ী একজন গরীব ঘরের ছেলে সম্পদ পেয়েও তা'তে অভিভূত না 'য়েও তা' হাত থেকে ছেড়ে দিল তাঁর অতীতকে স্মরণ 'রে। গরীব ঘরের ছেলের পক্ষেই বোধহয় এটা সম্ভব যদি সে অতীত বিস্মৃত না হয়। কারণ ঠাকুরের "বীরভোগ্যা বসুন্ধরা"- তিনটি মন্ত্রের ওপর দাড়িয়েই তাঁর আজকের এই উত্থান। এই তিনটি মন্ত্রের ওপর দাড়িয়েই তাঁর এই ত্যাগ। এই তিনটি মন্ত্র ' এক, নিজের কর্মের ওপর, নিজের শক্তির ওপর "বিশ্বাস নির্ভরতা" এবং দুই দেশের জন্য, দেশের গরীব মানুষের জন্য "আত্মত্যাগ" তাঁকে সত্যিকারের দেশের রত্ন 'রে তুলেছে। তাঁর নিজের পরিশ্রমের ওপর দাঁড়িয়ে, আত্মবিশ্বাসের ওপর দাঁড়িয়ে সে আজ যা' অর্জন করেছে, দেশ দেশের মানুষ আজ তাঁকে যা' দিয়েছে, যে অর্থ, যে মান, যে যশ তাঁকে দিয়েছে তা' সে ফিরিয়ে দিয়েছে দেশকে, দেশের মানুষকে!!! সেলাম রফিক তোমায় সেলাম!! এপার বাংলার লক্ষ লক্ষ মানুষের পক্ষ থেকে তোমায় জানাই সেলাম!! তুমি বাংলা তথা বাঙ্গালীর মাথা উচু করে দিলে। শেখালে পরের জন্য, দেশের জন্য বেঁচে থাকাটাই জীবন! তুমি শ্রী শ্রী ঠাকুরের বলা "বীরভোগ্যা বসুন্ধরা" ব্যখ্যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত! তুমি বাংলাদেশের রত্ন! তোমায় সরকারিভাবে প্রকৃতপক্ষে দেশের পক্ষ থেকে "বাংলাদেশ রত্ন" দান করা উচিত। যাতে আগামীতে অন্য সকলের এই কাজে এগিয়ে আসার প্রেরণা হয়ে থাকো তুমি। যাই হোক সরকারী ভাবে না'হোক বেসরকারি ভাবে "বাংলাদেশ রত্ন" 'য়ে গেছ তুমি। কারণ তোমার এই আত্মত্যাগ দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে দিক থেকে দিগন্তে! আজকের এই তীব্র ভোগবাদের যুগে তোমার এই ত্যাগ আবার আমাকে Living Supreme Being শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র-এর আর একটা কথাকে মনে করিয়ে দিল। ঠাকুর ত্যাগ সম্পর্কে বলেছেন, "ভোগের বস্তু নিকটে রাখিয়া ত্যাগের নামই ত্যাগ" 
সত্যি বাণিটা আজ জীবন্ত 'য়ে ধরা দিল আমাদের কাছে, মানুষের কাছে, শ্রীশ্রীঠাকুরের তামাম ভক্তকুলের কাছে। বাণী কিভাবে জীবন্ত হয় তা' প্রমাণ 'রে দিলে তুমি। প্রমাণ করে দিলে তুমি গরীব 'য়েও ভোগের বস্তু হাতে আসার পর তাকে নিজের ভোগের জন্য না রেখে কিভাবে তুলে দিতে হয় অন্যের হাতে। এর জন্য যে হিম্মতের প্রয়োজন হয় তা' ' বীরত্ব! আর এই বীরত্বই তোমাকে আজ সত্যিকারের 'বাংলার বাঘে' পরিণত করল!!! তুমিই দেশের প্রকৃত রত্ন, প্রকৃত বাঘ!!! বাকি সব করে রব 'য়ে কাঁচের গুলি। তোমায় সেলাম, আবার, বারবার সেলাম!!!!!!!