Powered By Blogger

Thursday, February 24, 2022

সেই একাকিত্ব, সেই নিঃসঙ্গতা!

গভীর এক শূন্যতা যেন গ্রাস করছে ক্রমশঃ চারপাশ, 

নেবে আসছে খা খা দুপুরের শশ্মান নিস্তব্ধতা! 

অনেক দূর থেকে হাড়িচাচা পাখির কণ্ঠস্বর 

নিস্তব্ধতা ভেঙে খানখান ক'রে ভেসে এলো 

নিস্তব্ধতাকে আরও জমাট ক'রে দেবে বলে।

মনে হ'লো যেন ভাঙ্গা বুকের ভেতর থেকে 

হাফ ধরা একাকিত্বের এক কণ্ঠস্বর 

নিস্তব্ধতার বুকে ভেসে উঠে বলছে, 

বন্ধু! তুমি ভালো আছো? আমি ভালো নেই। 

তবু্ও অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে 

গভীর নিঃসঙ্গতাকে সাথী ক'রে 

কে যেন ব'লে উঠলোঃ সবাই আজ একা, নিঃসঙ্গ। 

সবার খোঁজ নাও। 

তাই তোমায় এই খা খা করা নিস্তব্ধ শশ্মান দুপুরে 

ডেকে উঠে  বলি, বন্ধু! তুমি ভালো আছো? 

আমিও আজ একাকী তুমিও তাই। 

কিন্তু একাকী হ'লেও সাথে আছে দয়াল! 

তাই এই একাকিত্ব মাঝেও মনে হয় কে যেন আছে সাথে, পাশে! 

এই নিঃসঙ্গ নিস্তব্ধ দীর্ঘ রাস্তা হেটে চলেছি একা

শুধু মাঝে মাঝে মনে হয়, কে যেন ব'লে ওঠেঃ

ডর কিস বাত কি? ম্যায় হু না।

আকেলা কৌন বোলা? হাম হ্যায় না।

একবুক দীর্ঘ শ্বাস টেনে নিয়ে আবার হেটে চলি

নিঃসঙ্গ আমি নিস্তব্ধ দুপুরে একেলা।


কিন্তু বন্ধু তুমি? তুমি ভালো আছো তো বন্ধু? 

ভালো থেকো, সুখে-আনন্দে থেকো বন্ধু। 

শুধু মাঝে মাঝে বিষাদে ভরা মন বলতে চায় তোমায়,

কি লাভ হ'লো বন্ধু সব ভেঙ্গে দিয়ে!? কি পেলে বন্ধু!? 

দিন শেষে ভোরের সকালে পড়ন্ত বিকেলের 

সেই বিষন্নতা, সেই একাকিত্ব ছাড়া!? 

মনে পড়ে সেইসব পুরোনো দিনের কথা বন্ধু!?

সেই দল বেধে ইষ্ট ও ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠায় বেড়িয়ে পড়া? 

মাঠঘাট পেরিয়ে আড্ডা জমিয়ে সবাই মিলে ধরা করা?

'মানুষ আপন টাকা পর' তত্ত্বে হ'য়ে মশগুল শুধু ছুটে চলা? 

শুধু যেদিকে যাই, যেদিকেই তাকায় শুধু জীবনের হাতছানি!


আর আজ আবার 'টাকা আপন মানুষ পর' সেই চিরাচরিত 

পুরোনো হাফধরা দমবন্ধকরা তত্ত্বের পথ ধরা, করা, বলা!

আর পরিশেষে দিনশেষে সেই একাকিত্ব, 

বন্ধু সেই নিঃসঙ্গতা!!!! নিঃসঙ্গ মৃত্যুর হাতছানি!---প্রবি

Wednesday, February 23, 2022

প্রবন্ধঃ কেউ অপরিহার্য নয়' (৪) (২৪শে ফেব্রুয়ারী '২০১৫)


'কেউ অপরিহার্য নয়' এই বিকৃত, অবাস্তব, অবৈজ্ঞানিক দর্শন গ্রহণ করার ফল কি হয়েছিল তার শেষ কিস্তি তুলে ধরা হ'ল। 


এই একটা শেষ উদাহরণ দিলেই ‘কেউ অপরিহার্য নয়’ এই বিষয়টার অভ্যন্তরে কতটা ভয়ংকর বিষ লুকিয়ে রয়েছে সেটা সহজেই ভেসে উঠবে। আর এই ভয়ংকর বিষাক্ত বিষ গোটা পৃথিবী জুড়ে তামাম বিশ্বের তাবৎ অনেক অনেক লেখাপড়াজানাওয়ালা মানুষের অতি উব্বর মস্তিষ্ককে নীল করে দিয়ে এক নীলাভ স্বপ্নসাগরে নিমজ্জিত করে রেখেছে। আর সেখান থেকে মাঝে মাঝে ভেসে উঠে এই সমস্ত প্রচুর লেখাপড়াজানাওয়ালা মানুষেরা আমাদের মত সাধারণ মানুষের মস্তিষ্কে উগরে দিচ্ছে আসমুদ্রহিমাচলব্যাপী যে জ্ঞান সেই জ্ঞানে নীল হয়ে যাচ্ছে আমাদের শরীর, মন ও আত্মা। আর আমরাও সেই নীলজ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে আউড়ে যাচ্ছি দিবারাত্রি সেই একই কথা সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশ’-এর মগজ ধোলাই যন্ত্রের product-এর মত। 


যাই হোক আমাদের দেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতির নাম আমরা সবাই জানি। তিনি হলেন ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী। তাঁর রাজনৈতিক কর্মজীবন প্রায় ছয়দশক জুড়ে। এই এতগুলি বছরে তিনি বিভিন্ন সময়ে প্রতিরক্ষা, অর্থ, বিদেশ, রাজস্ব, জাহাজ-চলাচল, পরিবহন, যোগাযোগ এবং শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের মতো একাধিক মন্ত্রকের দায়িত্ব গ্রহণের মধ্যে দিয়ে তাঁর বিরল কৃতিত্বের প্রমাণ রেখেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর একজন বিশ্বস্ত সহকর্মীতে পরিণত হন। দলের ও দেশের সংকট মুহূর্তে তাঁর ভূমিকা আজ কিংবদন্তীতে পরিণত। তাঁর সমগ্র কর্মজীবনে তিনি নানা উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন মানুষের মুখে মুখে। কখনো তিনি দলের বা দেশের প্রয়োজনে এমনকি আন্তর্জাতিক ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন সময়ে আধুনিক চাণক্য, কখনো বা সংকটত্রাতা বা Crisis Manager, আবার কখনো বা তথ্য সমৃদ্ধ অসাধারণ অদ্ভুত অনুপম অদ্বিতীয় স্মৃতিমান রাজনীতিবিদ হিসাবে দেশে বিদেশে পরিচিতি লাভ করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে ইন্দিরা গান্ধীর অভিষেকের পর থেকেই আপন যোগ্যতায় তিনি দেশের দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেন। ইন্দিরা গান্ধীর পর থেকেই কংগ্রেস দলের শাসনকালের সমস্ত প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি ছিলেন প্রধান পরামর্শদাতা। এমনকি দেশের সংকটমুহূর্তে অন্য দলের শাসনাধীন দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছেও তিনি Crisis Manager-এর ভূমিকা পালন করেছিলেন। এই রকম একজন মানুষের ক্ষেত্রেও জুটেছিল সেই একই অভিশাপ। কি ঘটেছিল সেই সময়?

                           

১৯৮৪ সালের ৩১শে অক্টোবর তাঁর নিজের দেহরক্ষীর হাতে ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর ইন্দিরা গান্ধীর প্রিয় ও বিশ্বস্ত নির্ভরশীল সহকর্মী বহু বিশেষনে বিশেষিত প্রণব মুখার্জীর উত্থানের পারা দ্রুতগতিতে নেবে আসতে শুরু করে। চরম দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার হন প্রাজ্ঞ চতুর দূরদর্শী প্রখর বাস্তববোধসম্পন্ন প্রণব মুখার্জী। ১৯৮৪সালে অপারেশন ব্লু স্টারের প্রতিক্রিয়ায় আততায়ীর হাতে ইন্দিরা গান্ধী নিহত হলে  জাতীয় কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ রাজীবকেই দেশের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে। ১৯৮৪ সালে তাঁর নেতৃত্বে কংগ্রেস সংসদের ৫৪২টি আসনের ৪১১টিতে জয়লাভ করে। এই জয় ছিল ভারতীয় সংসদে কংগ্রেসের সর্বকালের রেকর্ড। এই সময় রাজনীতিতে সম্পুর্ণ নতুন অনভিজ্ঞ রাজীব গান্ধী প্রণব মুখার্জীকে নিজের ক্যাবিনেটে স্থান দেননি। কিছুকালের জন্য তাঁকে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল। (১৯৮৯ সালে কংগ্রেসকে পরাজিত করে নতুন জোটে সরকার গঠিত হয়, প্রধানমন্ত্রী হন বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং। পরবর্তী সময়ে ভিপিসিং পদত্যাগ করলে কংগ্রেসের সমর্থনে চন্দ্রশেখর নাইডু প্রধানমন্ত্রী হন।) আবার ১৯৯২ সালে দশম লোকসভা নির্বাচনের ঠিক প্রাক্কালে অল্পদিনের মধ্যে অভিজ্ঞ হয়ে ওঠার কারণে রাজীব গান্ধী দল ও দেশ চালানোর ক্ষেত্রে দলের মধ্যে প্রণব মুখার্জীর মত প্রাজ্ঞ নেতার অভাব অনুভব করেন ও দল, দেশ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পর্কে সমন্বয় রক্ষার জন্য তাঁর উপস্থিতির অপরিসীম গুরুত্ব উপলব্ধি করেন এবং পুনরায় প্রণব মুখার্জীকে দলে ফিরিয়ে নেন এবং নির্বাচনের গুরুত্বপুর্ণ দায়িত্ব অর্পণ করেন। ১৯৯২ সালের ২১ মে জনসভায় রাজীব গান্ধী এলটিটি জঙ্গী সংগঠনের আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে প্রাণ হারান। পরবর্তীকালে প্রধানমন্ত্রী  পি. ভি. নরসিমা রাও প্রণব মুখার্জীকে পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান নিযুক্ত করলে তাঁর রাজনৈতিক কর্মজীবনের পুনরুজ্জীবন ঘটে। রাওয়ের মন্ত্রিসভায় পরে তিনি ক্যাবিনেট মন্ত্রীরূপেও যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৯৫-৯৬ সালে তিনি রাওয়ের মন্ত্রিসভায় বিদেশমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ সাংসদ পুরস্কারে ভূষিত হন।


২০০৪ সালে, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল জোট কেন্দ্রে সরকার গঠন করে। এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদের দাবীদার হিসাবে দলের মধ্যে প্রণব মুখার্জ্জীই ছিলেন একমাত্র বরিষ্ঠ রাজনীতিবিদ হিসাবে অভিজ্ঞ, দক্ষ, যোগ্য, প্রাজ্ঞ, চতুর, দূরদর্শী কিন্তু তাঁকে বঞ্চিত করে মনমোহন সিংহ-কে প্রধানমন্ত্রী করা হয় আর প্রণব মুখোপাধ্যায় লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতার দায়িত্ব পান। 


এই ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর থেকে ১৯৯২ সালের দশম লোকসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত এক দুঃসময় প্রণব মুখার্জীকে ঘিরে ধরেছিল। দল থেকে বহিষ্কৃত দেশের এক সময়ের দ্বিতীয় ব্যক্তি ইন্দিরা গাব্ধীর প্রিয় ভরসারস্থল, সংকটত্রাতা বা Crisis Manager, আধুনিক চাণক্য, স্মৃতিমান রাজনীতিবিদ প্রণব মুখার্জী সম্পর্কে তখন দলের মধ্যে ঘুরপাক খেয়েছিল একটাই কথা ‘কেউ অপরিহার্য নয়’, ‘কেউ অপরিহার্য নয়’ 'কেউ অপরিহার্য নয়'!!!!!!!!!!!!!!!!


আর আজ কংগ্রেস দলের একসময়ের সেই পরিহার্য ও বঞ্চিত ব্যক্তি বহু রাজনৈতিক দুর্গম পথ পার হয়ে দেশের রাষ্ট্রপতি। আজ কি তিনি অপরিহার্য দলের কাছে তথা দেশের কাছে? রাষ্ট্রপতি মেয়াদ শেষে তিনি কি অপরিহার্য থেকে যাবেন কংগ্রেস দল তথা দেশের কাছে?  তাঁর অবর্তমানে আমরা সবাই শোনার অপেক্ষায় রইলাম সেই আশ্চর্য্য উক্তিঃ “......... এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল দেশের তথা দশের। দেশ............... এক অপরিহার্য ব্যক্তি ও ব্যক্তিত্বকে”!!!!!!!!

Tuesday, February 22, 2022

প্রবন্ধঃ সুপ্রিমকোর্ট বনাম শাহীনবাগ অসহযোগ আন্দোলন!

(প্রকাশ, ২২শে ফেব্রুয়ারী'২০)

দিল্লির শাহীনবাগের জনবহুল রাস্তা আটকে সিএএ ও এন আর সি বিরোধী আন্দোলন আজ দু'মাসের উপর চলছে। রাস্তা আটকে আন্দোলনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট ইমিডিয়েট রায় দেয়; রায় দেয় অবরোধ তুলে ফেলার। কিন্তু আন্দোলনকারীরা এতটাই উদ্ধত তারা দেশের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রায়কে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিতে দ্বিধা করেনি, করেনা! 


আমার দেশে আমার সুপ্রীমকোর্টের বিরুদ্ধে এমন আচরণ স্বপ্নেও ভাবেনি আমার দেশের মানুষ! যা কিনা পাকিস্তানের মাটিতে জন্মলগ্ন থেকে বাসা বেঁধেছিল! সুপ্রিমকোর্টকে আজ নপুংসক বানিয়ে ছাড়ছে কে বা কারা! সুপ্রিমকোর্ট অবমাননার বিরুদ্ধে সময় থাকতে সচেতন মানুষ ঘুম ভেঙে উঠুন! 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতা শেষে নাবিয়ে নিয়ে আসবে একদিন ভয়ঙ্কর শয়তানের হামলা! সেদিন আফসোসের শেষ থাকবে না। আগামী প্রজন্মকে ধ্বংসের খাদের কিনারায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করাচ্ছে যারা তাদের বিরুদ্ধে আজকের সচেতন প্রজন্ম ও প্রবীণ নাগরিকবৃন্দ ঘুম ভেঙে জেগে উঠুন। নীরব দর্শক সেজে আগামী প্রজন্মের কাছে অপরাধী হ'য়ে বেঁচে থাকার চেয়ে আজই নেবে আসুক মহাপ্রলয়! শেষ হ'য়ে যাক একসঙ্গে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। 


সেদিন দেশকে স্বাধীন করবার জন্য ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যে 'Non Co-operation movement (অসহযোগ আন্দোলন)-এর বীজ বপন করেছিলেন মহান কর্মযজ্ঞ-এর নিদর্শন হিসাবে মহাত্মা গান্ধী তার ফলস্বরূপ আজ রাজ্যে রাজ্যে, জেলায় জেলায়, ঘরে ঘরে অসহযোগিতার দামামা বেজে চলেছে! অফিসে-কাছাড়িতে, স্কুলে-কলেজে, দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠানে, মাঠে-ঘাটে সর্বত্র আজ পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে চলছে অসহযোগিতা! কেউ কাউকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় না! প্রায় প্রত্যেকের মধ্যে '--------মারাক, ঘটি হারাক, আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' ঘৃণ্য মানসিকতা! একটা পরশ্রীকাতরতার বিষাক্ত হাওয়া তীব্র বেগে ব'য়ে চলেছে ভারতের আকাশে-বাতাসে! আর পশ্চিমবঙ্গের কথা যত না বলা যায় ততই ভালো! যেদিকে যাই আর তাকাই শুধুই অসহযোগিতার বাতাবরণ! আজ থেকে ৯৬ বছর আগে যুগপুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের সঙ্গে মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন নিয়ে আলাপচারিতায় অসহযোগের ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে বলেছিলেন, "ব্রিটিশ চলে গেলেও এই অসহযোগ কিন্তু রাজপথ থেকে একেবারে রান্নাঘর পর্যন্ত পৌঁছে যাবিনি!" আজ দিনের  প্রখর সূর্যের আলোর মত সত্য হ'য়ে উঠেছে সত্যদ্রষ্টা যুগপুরুষোত্তম নররূপী নারায়ণ জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সেদিনের ভবিষৎ বাণী! আজ সত্যি সত্যি রাস্তার নোংরার মত অসহযোগ রাজপথ থেকে রান্নাঘরে এসে ঢুকে পড়েছে! বিষাক্ত ক'রে দিয়েছে রান্নাঘরের রান্নার পরিবেশ! আর সেই রান্নাঘরের রান্না খেয়ে আমরা শরীরে-মনে-আত্মায় ব'য়ে বেড়াচ্ছি সেই অসহযোগিতার বিষবাষ্প স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও প্রজন্মের পর প্রজন্ম আর ব'য়ে বেড়াবো জাতির পিতার পুঁতে যাওয়া অমৃতবৃক্ষের ফল খেতে খেতে!!!!!!!


সেদিন জাতির পিতা(?) মহাত্মা গান্ধী দেশকে স্বাধীন করার জন্য যে অসহযোগিতার পথের উপর দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দেশকে সেইদিন সেই পথ আগামীতে কি ভয়ঙ্কর উপহার নিয়ে হাজির হবে দেশবাসীর কাছে তা তিনি তাঁর দূরদৃষ্টি দিয়ে অনুধাবন করতে পারেননি, যেমন পারেননি নেতাজী তাঁর ও তাঁর বিশাল ব্যাপক কর্মকান্ডের পরিণতি কি হতে পারে! আর তার কুফল ভোগ করছে আজ দেশবাসী আর সুফল ভোগ করছে আজকের ভারতের দূরদৃষ্টিহীন সবজান্তা উদ্ধত উচ্শৃঙ্খল-বিশৃঙ্খল বৃত্তি-প্রবৃত্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত পথপ্রদর্শক তথা সব ক্ষেত্রের অগ্রণী মানব সমাজ। ঠিক তেমনি আজকের শাহীনবাগ দেশের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল আর দেশ চুপ! চুপ দেশের এলিট সম্প্রদায়! দেশের নেতৃবৃন্দ যার যার ভেস্টেড ইন্টারেস্টে আকণ্ঠ ডুবে রয়েছে! কিন্তু দেশে কি কোনও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সৎ সমাজ সচেতন মানব নেই যে বা যারা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিশ্চিত ভয়ঙ্কর ধ্বংস থেকে বাঁচাতে পারে!? কেন কোনও নাটক, গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস রচিত হয় না, আঁকা হয় না ছবি, তৈরি হয় না কোনও চলচিত্র!?!?!? মহাভারত কি ফিরে ফিরে আসে!? দুর্যোধন, দুঃশাসনরা কি চিরকাল রাজসভা আলোকিত ক'রে রাখে!? সমাজ, দেশ, সভ্যতাকে নিয়ন্ত্রন ও পরিচালনা করে!? ভীষ্মরা কি চিরকাল ঠুঁটো জগন্নাথ হ'য়ে বসে থাকবে আর চুপ ক'রে দেখবে আগামী ধ্বংসের বীজ বপন!? এমন 'কর্মনাই চিন্তাসৎ' মহান  ভীষ্মদের, ভুল পথপ্রদর্শক মহাত্মাদের কি প্রয়োজন আমাদের মত আনপর গাঁওয়ারের দেশে গাঁওয়ারদের জন্য!?!?!?!

উপলব্ধি ২২

(প্রকাশ, ২০শে ফেব্রুয়ারী '২০)

যত হাসি তত কান্না!?

ঘড়িতে তখন দুপুর ৩টে। আমি তখন ঘরে নিজের ব্যক্তিগত কাজে মগ্ন। শরীরটা বেয়াড়াপনা করছে দু'দিন ধ'রে। সিজন চেঞ্জের ধাক্কা ছাড়া আর কিছুই নয়। এ সময়টা সাবধানে থাকতে হয়; থাকি, তবুও হ'য়ে যায় এদিক ওদিক। আসলে বিশৃঙ্খলাই হ'য়ে গেছে আমার জীবনের শৃঙ্খলা আর তার ফল তো পেতে হবে। যাই হ'ক, আসল কথায় আসা যাক। ঘরে ব'সে যখন নিজের কাজ করছি তখন হঠাৎ একটা চীৎকার ভেসে এলো। একটা তীক্ষ্ণ চীৎকার। সেই চীৎকারে জড়িয়ে রয়েছে তীব্র যন্ত্রণা। বুঝলাম চীৎকারটা ভেসে আসছে বাড়ীর দোতলা থেকে। আমি উৎকণ্ঠায় নিজের মনেই ব'লে উঠলাম, কি হয়েছে রে!? পাশের ঘর থেকে মেয়ে ব'লে উঠলো, ছোটমা কাঁদছে। কথাটা বলেই মেয়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেল ঘর থেকে, চলে গেল সিঁড়ি দিয়ে দোতলায়। মনঃসংযোগে চিড় ধরলো। ছেলে তার বড় জেঠুর ঘরে ব'সে খেতে খেতে টিভি দেখছিল। খাওয়া ছেড়ে উঠে এসে বললো, বাবা, ছোটমা ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে। আমি বললাম, কেন কাঁদছেরে? ছেলে বললো, মা ওয়াশ করছে তো তাই জ্বালা আর যন্ত্রণায় কাঁদছে। ওয়াশের সময় আর ওষুধ লাগাবার সময় তীব্র জ্বালাযন্ত্রণা করে। তারপরে ধীরে ধীরে কমে যায়। খুব কষ্ট পাচ্ছে ছোটমা। আমি চুপ ক'রে শুনছিলাম। কিছুক্ষণ চুপ ক'রে থেকে বললাম, ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা কর ছোটমার জন্য। কথাটা ব'লে চুপ ক'রে গেলাম। উপর থেকে ভেসে আসতে লাগলো যন্ত্রণাময় কান্নার সুতীক্ষ্ণ স্বর ক্রমাগত। ছেলেমেয়ে আজ দু'জনেই ছুটিতে, তাই অফিস যায়নি। ঘরটা বেশ ভর্তি ভর্তি লাগছে। এতে মনে বেশ জোর অনুভব হয়, নিজেকে অসহায় লাগে না। এমনিতে শরীরটা খারাপ আর মনটাও ভালো নেই তার উপরে আজ বালটিকুড়িতে ঠাকুরের উৎসব, সেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যাওয়ার নিমন্ত্রণ আছে। কি করবো বুঝতে পারছি না। ঐ তীক্ষ্ণ চীৎকারটা সব ওলটপালট ক'রে দিচ্ছে।  


মনে পড়ে যাচ্ছে এক বছর আগের সন্ধ্যাবেলার কথা। দুপুরের অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে সন্ধ্যেবেলায় ফিরেই ঘটনাটা ঘটেছিল। হঠাৎ বৌদির হাত থেকে পড়ে যাছিল বারবার হাতের গ্লাসটা। যতবারই তুলতে যাচ্ছে ততবারই হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে গ্লাস। তারপর কোনরকমে বারান্দা থেকে ঘরে ঢুকেই বিছানায় এলিয়ে পড়া, বমি, মুখ বেঁকে যাওয়া ইত্যাদি। তারপর দৌড়ে ডাক্তার ডাকতে যাওয়া এবং যথারিতি ডাক্তারের না আসা রবিবার ব'লে এবং অ্যাম্বুলেন্স ডেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এবং যথারী্তি পরবর্তী সময়ে পিয়ারলেস হসপিটালে ভর্তি করা ইত্যাদি করা হ'ল। তারপর পিয়ারলেসে সেরিব্রাল অপারেশনের পর ও দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকার পর বাড়ি ফিরে এলো এবং যথারীতি বাড়ির লোক ভিখিরিতে পরিণত হ'ল।


দীর্ঘ একবছর বিছানায় শুয়ে থাকার পর হঠাৎ কয়েকদিন আগে পুনরায় শরীর খারাপ হয় এবং পুনরায় আর,জি,করে ভর্তি করা হয় এবং দু'দিন পর বাড়ি ফিরে আসে।  এই দুদিনেই যেটা ঘটার ঘটে গেল, পিঠে ঘা হ'য়ে গেল। ঘরে একবছর শুয়ে থেকে যা হয়নি তাই হ'য়ে গেল দু'দিনেই। কারণ সেখানে টানা দু'দিন বিছানায় শুয়ে ছিল একইরকম ভাবে। ডানদিক পুরোপুরি অকেজো হ'য়ে যাওয়াই কেউ ছিল না হাসপাতালে উঠিয়ে বসাবে, পাশ ফিরিয়ে শোয়াবে। ঐ সব সরকারী হাসপাতালে নার্সিং ফার্সিং এর আশা করতে নেই; কারণ শিব ঠাকুরের আপন দেশে আইন কানুন সর্বনেশে। আর তাই যা হবার হয়ে গেল, হ'য়ে গেল বেডসোর। তাই সেই বেডসোরের জায়গাটা আমার সহধর্মিণী প্রতিদিন ওয়াশ ক'রে দেয়। আর এই ওয়াশের ফলে হয় অসহ্য জ্বালা যন্ত্রণাস্বরূপ ঐ কান্না। হাসপাতালে এই দুদিন সময়ের ব্যবধানেই হ'য়ে গেছিল ঐ ঘা। কি অদভুত আমার দেশ!!!!!!    


কয়েকদিন ধ'রেই শুনে আসছিলাম কান্নাটা কিন্তু আজ যেন কান্নাটা শুনে মনে হ'ল চিন্তা জগতে হঠাৎ ক'রে একটা নতুন উপলব্ধির মাত্রা যোগ হ'ল। অনেক কিছু ভেসে এলো মনের মধ্যে, চোখের সামনে দিয়ে যেন একে একে ভেসে যাচ্ছে ছবিগুলি। মন্ত্রমুগ্ধের মত মৌন হ'য়ে বসে রইলাম ঘরের মধ্যে ঠাকুরের ফটোর দিকে চেয়ে আর দেখলাম ছবিগুলি আমায় হাত নাড়তে নাড়তে বিষন্ন মনে বিদায় নিচ্ছে।

 

ছবি এক, ছবি দুই, ছবি তিন, চার, পাঁচ ক'রে এগিয়ে চলেছে। হঠাৎ একটা ছবি থেকে কানে ভেসে এলো উচ্চস্বরে তীক্ষ্ণ হাসি। দেখলাম, ঘরের সামনে যে লম্বা বারান্দা সেখানে বসে আছে সবাই চেয়ারে যত্রতত্র। কেউ দাঁড়িয়ে আছে সামনে, পিছনে। চলছে নানা গল্প, নানা জল্পনা। এই আড্ডার কুশীলবরা সব বাড়ীর বৌয়েরা আর তাদের দাদামণি অর্থাৎ আমার বড়দা। সঙ্গে থাকে বাড়ীর ছেলেমেয়েরা। সবাই হৈ হৈ ক'রে ছোটায় জমাটি আড্ডার রেলগাড়ি। কেউ কারও চেয়ে কম নয়। এর মধ্যে একজনের উপস্থিতি বিশেষ হ'য়ে ওঠে। তিনি হ'লেন আমার ছোড়দার বৌ। গল্পের গরু যখন গাছে ওঠে, আড্ডা যখন জমাট বেঁধে ওঠে, তখন ঐ হাসি, ঠাট্টা, হট্টোগোলের মাঝে বৌদির হাসি এক লহমায় ভাসিয়ে নিয়ে যেত সবাইকে দিগন্তপারে। কথাটা বললাম এই জন্যে যে, বৌদির হাসির তীব্রতা এত বেশী আর এত তীক্ষ্ণ যে অনেকদূর থেকে তা শোনা যেত; এতটাই ছিল প্রাণবন্ত ও উদ্দাম হাসির গতি ও তীব্রতা। তেমনি এরকমই একদিনের ছবি মনের কোটায় ভেসে উঠলো। আর ভেসে ওঠা মাত্রই ঐ ঘটনার সঙ্গে আজকের ঘটনার অন্তর্নিহিত গভীর অর্থের সম্পর্কজনিত ইঙ্গিতে গভীর বিষন্নতায় ভ'রে গেল মন প্রাণ। একটা অবসাদ যেন সাপের মত পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে উঠে আসতে লাগলো পা বেয়ে উপর দিকে। একটা অব্যক্ত বোবা যন্ত্রণায় নীল হ'য়ে যেতে লাগলো মন, হৃদয়। আজ নিজেকে বড় অসহায় মনে হ'তে লাগলো। মনে হ'তে লাগলো যে বিরাট এক শূন্যতার মধ্যে ডুবে যাচ্ছি ক্রমশঃ; চারিদিকে শুধু  গভীর নিস্তব্ধতা আর জমাট অন্ধকার! 


সেই তীক্ষ্ণ হাসি আর তার তীব্রতা আমাকে সহসা যেন ঝড়ের বেগে আছড়ে এনে ফেললো আজকের একটু আগের তীক্ষ্ণ যন্ত্রনার তীব্র চীৎকারের পরিবেশে। মুহূর্তে পালটে গেল পটভূমি! সেদিনের তীক্ষ্ণ হাসির তীব্রতা আর আজকের তীক্ষণ যন্ত্রণার তীব্রতা মুহূর্তে আমাকে এক উপলব্ধিতে নিয়ে গেল। এমনও হয়!? হে ঈশ্বর! কে জানতো  সেদিনের সেই আনন্দঘন ছবিটা এমনভাবে পালটে যাবে সেই প্রবাদটার মত। কে যেন কানে কানে চুপিচুপি ব'লে গেল প্রবাদটাঃ 

"যত হাসি তত কান্না

ব’লে গেছে রামশর্মা।"


প্রবাদটা মনের তটে ঘুরে ফিরে বারবার আছড়ে পড়তে লাগলো তীব্রভাবে। সঙ্গে মনপাখি কেঁদে উঠলো গুনগুনিয়ে,


যত হাসি তত কান্না

ব'লে গেছে রামশর্মা। 

প্রবাদ ডানা মেলে 

উড়ে এসে বলে

আমি হ’লেম বাস্তব 

দ্যাখ আমি আর শুধু প্রবাদ না।


এইভাবেও প্রবাদ প্রমাণ করে প্রবাদ  মানেই বাস্তব আর যে প্রবাদ তখনই প্রবাদ হ'য়ে ওঠে যার মধ্যে থাকে নিশ্চিত বাস্তবতা!!!!!!!


আমি অপলক চেয়ে রইলাম ঠাকুরের চোখের দিকে ঝাপসা চোখে।

Monday, February 21, 2022

Poem: MY DEAR!

Get fear! Dayal says, Rectify your behavior.
As early as possible you dear!Poem:
Last days of life is coming, change character cunning.
Don't talk nonsense, Don't think so.
Don't hear rubbish, Don't do slow.
Don’t disturb anybody, Don’t be cause of obstruction.
Don’t do duplicity, Don’t be thorns to expansion.
Don't read negative. Don't accompany same.
Don't be away from positive. Don't dream lame.
Do fast, not slowly. But keep Old age within
They slow but do steadily, Would-be helpful finally.
Don't be delusional. Don’t be whimsical.
Do behave normal as well as do rational.
Show regards to elderly elders, Regards unto culture.
Save your dignity. Resist your nature of vulture.
Love everybody Love yourself
Love Almighty Love children.
Don’t be fickle minded
Don’t be sure about well ended.
Hold The reddish feet of Supreme Father
Neither uncertainty nor failure further.

Thursday, February 17, 2022

উত্তরপাড়ায় পোষ্টার!

গত বছর ২০২১-এর ঘটনা।

উত্তরপাড়ায় পোষ্টার! বজরং দলের পোষ্টার! সরস্বতী পুজোয় যুবক যুবতীদের একত্রে ঘোরাঘুরি করার বিরুদ্ধে পোষ্টার!


খবরটা জি২৪ ঘন্টা চ্যানেলে দেখলাম। এবং শুনলাম দুজন সাংবাদিক ও একজন নাট্যকার অভিনেতার কথা। আর দেখলাম ও শুনলাম জি২৪ঘন্টার খবর সম্প্রচারের ধরণ। 


প্রথমেই এই ধরণের প্রচার এবং সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র ক'রে সদ্য যৌবনে পা দেওয়া বা যৌবনে বিচরণরত যুবকযুবতীদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি ক'রে তাদের সরল সবুজ মনে উগ্র মানসিকতার বীজ বপন করার ঘৃণ্য সংস্কৃতির বিরুদ্ধে, যে সংস্কৃতি এইধরণের প্রচারকারীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সঙ্গে ঘরেবাইরে আপামর ইয়ং জেনারেশনের ভয়ংকর নিশ্চিত ক্ষতি ডেকে আনবে আর তার নির্মম ধাক্কা গিয়ে পড়বে ভবিষ্যৎ সমাজ ব্যবস্থার উপর সেই ভয়ংকর সংস্কৃতি প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আমি উত্তরপাড়ার একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।


আর এর সঙ্গে সঙ্গে উত্তরপাড়ার একজন অত্যন্ত সাধারণ মানুষ হিসেবে এই সংস্কৃতির বিরুদ্ধে এই চ্যানেলে প্রতিবাদে সরব হওয়া দুজন সাংবাদিক কুণাল ঘোষ ও প্রবীর ঘোষাল এবং অভিনেতা-নাট্যকার কৌশিক সেন মহাশয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ ক'রে কিছু বলার জন্য কলম ধরলাম। আমি এই তিনজনকে একেবারেই তাঁদের রাজনৈতিক আঙিনা ও ব্যক্তিত্বের পরিচয়ের বাইরে রেখেই বাংলার সংস্কৃতি জগতের মানুষ হিসেবে গণ্য ক'রেই এই আলোচনায় আগ্রহী। 


একজন সাধারণ শ্রোতা হিসেবে তাঁদের তিনজনের বক্তব্য শুনলাম এবং দেখলাম জি২৪ ঘন্টা চ্যানেল সঞ্চালকের ভুমিকা।


কুণালবাবু এই ঘৃণ্য পোষ্টারের জন্য সরাসরি বিজেপি ও তার সহযোগী উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে সমাজকে বারোটা বাজানোর জন্য দায়ী করলেন। তিনি বাংলাকে ও সমাজকে নিজেদের দলের ভুলত্রুটি সংশোধন ক'রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বললেন।


প্রবীরবাবু এই পোষ্টারের মালিক হিসেবে বজরং দলকে সরাসরি দায়ী করতে রাজি নন। তিনি এই বিষয়ে নিশ্চিত নন যে কারা এই পোষ্টার মেরেছে তাই আলটপকা কোনও মন্তব্য করতে রাজী নন। এবারের নির্বাচনে নামে-বেনামে-অনামে পোষ্টার একটা নিউ ফিচার। তাই এইসব আলোচনা অবান্তর ও অমূলক। তবে তিনি পোষ্টারের বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন।


কৌশিকবাবু সরস্বতী পুজোয় একসঙ্গে ঘুরেফেরা, মেলামেশা, হালকা প্রেম ইত্যাদি এটা নতুন কিছু নয় বললেন এবং এই অদ্ভুত রোমান্টিসিজমের স্মৃতির কথা তুলে ধরলেন। তিনি এর জন্য সরাসরি বিজেপি দলকে দায়ী করলেন এবং এই পার্টিটাকে কুৎসিত দল ব'লে উল্লেখ ক'রে এই দলটাকে ক্ষমতায় না আনার জন্য আবেদন করলেন। তিনি বাংলার সমাজকে যথেষ্ট শক্তপোক্ত বললেন, বললেন বাড়ির বাবামা, আত্মীয়স্বজন এবং ছেলেমেয়েরা নিজেদের সামলানোর জন্য যথেষ্ট তাই এই ধরণের প্ররোচনামূলক হিন্দু সংগঠনের দাদাগিরির দরকার নেই। তিনি বললেন, বাঙালি সমাজ যথেষ্ট খোলামেলা শক্তপোক্ত এবং কতদূর যেতে হয় আর কতদূর যেতে হয় না সেই সম্পর্কে সেলফ সেন্সারশিপ আছে।


আর চ্যানেল সঞ্চালকের পরিচালনায় দেখলাম উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সঞ্চালনা।

           

সাংবাদিক কুণালবাবু ও প্রবীরবাবু এবং অভিনেতা কৌশিকবাবু আমরা সাধারণ মানুষ কি আপনাদের থেকে সমাজের সার্বিক ও বৃহত্তর স্বার্থে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি আশা করতে পারি না? আপনাদের রাজনৈতিক সত্তা ছাড়া আলাদা একটা স ত্তা ছিল। অন্য রাজনৈতিক নেতাদের মত আপনাদের তো প্রথম থেকে শুধু রাজনৈতিক সত্তা ছিল না।  আপনাদের রাজনৈতিক সত্তা পরবর্তীতে যোগ হয়েছে। প্রথমে তো নিরপেক্ষ সাংবাদিক সত্তা ও নাট্যকার-অভিনেতার সত্তা ছিল, পরে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক সত্তা। তা আপনাদের বক্তব্যে আচ্ছা কুণালবাবু, প্রবীরবাবু এবং নাট্যকার ও অভিনেতা কৌশিকবাবু আমরা সাধারণ মানুষ কি আপনাদের থেকে সমাজের সার্বিক ও বৃহত্তর স্বার্থে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি আশা করতে পারি না? এটা সত্যি কি সত্যি না যে আপনাদের রাজনৈতিক সত্তা ছাড়া আলাদা একটা স ত্তা ছিল। এটা কি আমার ভুল ধারণা আপনাদের সম্পর্কে যে অন্য রাজনৈতিক নেতাদের মত আপনাদের তো প্রথম থেকে শুধু রাজনৈতিক সত্তা ছিল না? আপনাদের সক্রিয় রাজনৈতিক সত্তা পরবর্তীতে যোগ হয়েছে। প্রথমে তো নিরপেক্ষ সাংবাদিক সত্তা ও নাট্যকার-অভিনেতার সত্তা পরে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক সত্তা এটা কি সম্পূর্ণ অবান্তর ও অমূলক ধারণা? হয়তো মনের কোণে বিশেষ রাজনৈতিক দল বা মতবাদের রঙের ছাপ ছিল আর তা প্রকাশ পেয়েছে আপনাদের লেখায় কিন্তু সরাসরি কোনও দলের সক্রিয় সদস্য বা কর্মী ছিলেন না। তাই না? পরবর্তীতে সরাসরি দলের ছাপ পড়ে, ছাপ পড়ে দলের কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ করার বা মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে। আর তা তখন একচক্ষু হরিণের মত হ'য়ে যায়। আপনাদের কাছে তো আম জনতার অনেক আশা ছিল, ছিল প্রত্যাশা। কারণ আপনারা সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক অনেক বেশী দূরের জিনিস দেখতে পান, বুঝতে পারেন ভবিতব্য কি হ'তে পারে আর না পারে। তা আপনাদের বক্তব্যে কেন আমরা মানুষকে, সমাজ-সংস্কৃতিকে রক্ষা করার, বৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবার মেসেজ বা দিশা পায় না!? কেন আপনাদের কাছে একটা নির্দিষ্ট দলের হ'য়ে অন্য একটি দলের বিরুদ্ধে মত প্রকাশে একচক্ষু হরিণের মত ভুমিকা পালন করতে দেখি!? যারা সরস্বতী পুজোয় এইধরণের ঘৃণ্য পোষ্টার দেওয়ালে লাগিয়ে নতুন প্রজন্মকে, নবীন যুবসম্প্রদায়কে ক্ষেপিয়ে তোলার এবং সহজ সরল মনের অভ্যন্তরে, মস্তিষ্কের গভীরে ব্রেন সেলে তীব্র ঘৃণার, সঙ্ঘাতের কুটিল বিষ ঢেলে দিয়ে নবীন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ জীবনকে, ভবিষ্যৎ সমাজ ব্যবস্থাকে বিষাক্ত ক'রে দিতে পারে, ভেঙ্গে চুড়মার ক'রে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে তারা যেই হ'ক, যেই দলের হ'য়েই ক'রে থাকুক তার বিরুদ্ধে আপনাদের সোচ্চার হওয়ার কি এখনও সময় আসেনি। সময় আসেনি প্রকৃত কে বা কারা এই সমাজ জীবনকে, ব্যক্তি জীবন ও সমষ্টি জীবনকে ধ্বংস করার জন্য গুপ্ত ঘাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে তা কি তদন্ত ক'রে দেখার, সতর্ক হওয়ার এবং কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় কি এখনও আসেনি!? যদিও প্রবীরবাবু সরাসরি এই ঘৃণ্য অপরাধের জন্য কাউকে দায়ী করেননি বা যুক্ত থাকার কথা বলেননি। তবে আমার মনে হয় এই ধরণের পোষ্টারের বিরুদ্ধে আলোচনা অমূলক বা অবান্তর নয়। আপনারা যদি আপনাদের বিদ্যাবুদ্ধি, শিক্ষাগত যোগ্যতা, আপনাদের জ্ঞান, বিচার শক্তি, আপনাদের দূরদর্শিতাকে দু'চোখ খোলা বুদ্ধিমান হরিণের মত সমাজ সভ্যতা এবং বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বেঁচে থাকে ও বেড়ে ওঠার কাজে না লাগান তাহ'লে কি আপনাদের মহতী প্রতিষ্ঠিত জীবন কি মসিলিপ্ত ও কলঙ্কিত হ'লো না!? আপনারা কেন আমাদের মত চূড়ান্ত ভাঙাচোরা অজ্ঞানী অদূরদর্শী আম জনতার মতন চটজলদি আলটপকা ভিত্তিহীন উদ্দেশ্যপ্রোণোদিত মন্তব্য করবেন!? কেন আপনারা নিশ্চিত না হ'য়ে সরাসরি কোনও দলের তকমা লাগিয়ে দিয়ে এই ঘটনার জন্য সেই দলকে দায়ী ক'রে পরিবেশ পরিস্থিতিকে আরও জটিল ক'রে তুলবেন? এইধরণের ভুমিকা পালন কি এই ধরণের মস্তিষ্ক বিকৃত পোষ্টারের চেয়েও ভবিষ্যৎ বাংলার জন্য ভয়াবহ নয়? 


আর, চ্যানেল কর্তৃপক্ষ আপনাদের কি কোনও দায়বদ্ধতা নেই সমাজ গঠনের? আপনারা কি সমাজের বাইরে পরিযায়ী পাখির মত বাংলার বুকে অবস্থান করছেন? "আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা" ভাবছেন? সে গুড়ে বালি। আগুন যখন লাগে তখন সেই আগুন আপন পর ভেবে তার দাহ্য কাজ করে না। এটা যেন আমরা ভুলে না যাই।  


তাই আসুন এই ঘৃণ্য ভয়ংকর আগুন নিয়ে খেলার কাজ কে করেছে বা না করেছে সেটা যতটা বড় কথা নয় তার চেয়েও বড় কথা ও গুরুত্বপূর্ণ হ'লো সম্মিলিতভাবে দল মত সম্প্রদায়ের ঊর্ধ্বে উঠে এই ধরণের ভবিষ্যৎ অশনি সঙ্কেতের বিরুদ্ধে সচেতন হ'ই। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রুখে দিই এই ছোবলকে, রক্ষা করি আজকের ও ভবিষ্যতের নবীন প্রজন্মকে নিশ্চিত বিষাক্ত ছোবলের হাত থেকে। কারণ এইধরণের ভয়ংকর সংস্কৃতির যারা আমদানি করছে তাদের এই আমদানিকৃত জঞ্জালপূর্ণ সভ্যতায় যারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে সেই ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে আমাদের বংশধরদের সঙ্গে সঙ্গে তাদের বংশধরদের প্রজন্মও থাকবে; এই কথা যেন আমরা কেউ ভুলে না যায়। এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেল The greatest phenomenon of the world SriSriThakur Anukulchandra-এর বাণীঃ


"পড়শিরা তোর নিপাত যাবে 

তুই বেঁচে সুখ খাবি বুঝি

যা ছুটে যা তাদের বাঁচা

তাঁরাই যে তোর বাঁচার পূঁজি।"

Tuesday, February 15, 2022

উপলব্ধি ২০

 

The greatest phenomenon of the world / বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ট বিস্ময়ঃ 

SriSri Thakur Anukulchandra.


আমরা যারা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে ফেসবুকে লেখালিখি করি তখন সেই লেখা সমগ্র মানব সমাজ সে ঠাকুরের দীক্ষিত হ'ক বা না হক, গুণগ্রাহী বা সমালোচক হ'ক কিম্বা ঠাকুর প্রেমিক বা নিন্দুক যাই হ'ক না কেন সবার কাছে ফেসবুকের মধ্যে দিয়ে ঠাকুর সম্পর্কে একটা মেসেজ যায়। আর সেই মেসেজের মধ্যে দিয়ে একটা ভালো বা মন্দ, কিম্বা ভালোমন্দ একটা মিশ্রিত ধারণার সৃষ্টি হয়। ঠাকুর সম্পর্কে, ঠাকুরের ব'লে যাওয়া বাণী বা বিভিন্ন বিষয়ের উপর ঠাকুরের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গী সম্পর্কে অনেককেই ফেসবুকে লিখতে দেখি। ঠাকুরের ব'লে যাওয়া বাণীও অনেকে ফেসবুকে তুলে ধরেন। এই সমস্ত বিষয় দেখতে দেখতে মনে হ'লো ঠাকুরকে নিয়ে ফেসবুকে আমরা যারা লেখালিখি করি তারা কি চাই? ইষ্টপ্রতিষ্ঠা নাকি আত্মপ্রতিষ্ঠা? ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠা নাকি আত্মস্বার্থপ্রতিষ্ঠা? সবচেয়ে অবাক লাগে ঠাকুরকে নিয়ে প্রায় সবাই কমবেশি লেখালিখি করি। তুলে ধরি তাঁর দর্শন, তাঁর চিন্তা, তাঁর বাণী। তুলে ধরি গ্রন্থের নাম দিয়ে গ্রন্থের মধ্যে থাকা ও আদৌ না থাকা বাণী। তুলে ধরি তাঁর বাণী, তাঁর কথা তাঁর নাম ছাড়া ও ইনভার্টেড কমা ছাড়া।

ফেসবুকে ঠাকুরের বাণী লেখার সময় কেন ঠাকুরের নাম লেখেন না বা ইনভার্টেড কমা দেন না আমি বুঝতে পারি না। এটা কি অজ্ঞতার জন্যে নাকি ইচ্ছে করেই?? ঠাকুরকে ভালোবাসার অর্থ বেকুবি বা মুর্খামি করা নয়। এটা আমরা যেন ভুলে না যায় এই সমস্ত বাণীর মধ্যে দিয়ে সমগ্র মানব জাতির কাছে একটা পারিপার্শ্বিকসহ নিজের বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার বার্তা পৌঁছে যায়, তা মানুষ গ্রহণ করুক আর নাই করুক। 


এছাড়া আবার দেখা যায় তাঁর ভাবকে নিজের ভাব ক'রে নিয়ে, তাঁর ভাষা, তাঁর লেখার ভঙ্গি বা ধরণকে নিজের ভাষা ও নিজের ভঙ্গি বা ধরণ ক'রে নিয়ে সেই লেখার মধ্যে তাঁর ব্যবহৃত শব্দ সম্ভার, টার্ম ইত্যাদি বিপুলভাবে নিজের লেখার মধ্যে ব্যবহার ক'রে নিজের বাহাদুরি তুলে ধরি। এছাড়া দেখতে পায় এমনভাবে ঠাকুরের লেখা পোষ্ট হচ্ছে যেন মনে হচ্ছে যে পোষ্ট করছে লেখাটা তার লেখা। আর সবচেয়ে যেটা ভয়ঙ্কর তা হ'ল অ-জ-স্র বানান ভুল!!! 


ঠাকুর বলেছিলেন দোয়াড়ে দীক্ষার কথা অর্থাৎ প্রচুর দীক্ষার কথা, ব্যাপক দীক্ষার কথা। দোয়াড়ে দীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে চলছে দোয়াড়ে সৎসঙ্গ, দোয়াড়ে যাজন, দোয়াড়ে লেখালেখি। যে পারছে সেই দোয়াড়ে ঠাকুরের যাজন করছে, তা বক্তব্য রাখার ক্ষেত্রেই হ'ক আর লেখালেখির ক্ষেত্রেই হ'ক! চলছে দোয়াড়ে সৎসঙ্গ। সৎসঙ্গ পরিণত হয়েছে আখড়া বাজিতে। প্রশ্ন উঠতেই পারে তাই ব'লে কি যাজন অর্থাৎ ঠাকুরের কথা বলবে না, লিখবে না? সৎসঙ্গ করবে না? 


লেখালেখি বা বক্তব্য রাখা চলতেই পারে কিন্তু মাথায় রাখতে হবে আমি যার লেখা লিখছি বা যার সম্বন্ধে বলছি তিনি কে? তিনি কি আমার লেবেলের? যদি বলা হ'য়ে থাকে রবীন্দ্রনাথ বা বিদ্যাসাগর, মধুসূদন বা নজরুল ইত্যাদি মনিষীদের নিয়ে বা এঁদের সম্পর্কে কি সবাই বক্তব্য রাখে বা এঁদের নিয়ে বা এঁদের লেখালেখি নিয়ে কি যে কেউ লেখা লেখে? লেখে না বা বলে না; তাই না? কেন? কারণ তাঁরা সাধারণের নাগালের বাইরে। তাঁদের নিয়ে বলতে বা লিখতে গেলে গবেষণা করার দরকার। তাহ'লে ঠাকুরর বেলায় অন্যথা হয় কেন? ঠাকুরের মন্ত্রশিষ্য ব'লে? মন্ত্রশিষ্য বলেই তাঁকে নিয়ে যে কেউ লেখালেখি বা বক্তব্য পেশ করতেই  পারে? ঠাকুর তার মানে Taken for granted! 


তবে এটা মনে রাখতে ঠাকুরের সৎসঙ্গের একটা মাহাত্ম্য আছে তা হ'ল ঠাকুরের দীক্ষায় দীক্ষিত, ঠাকুরের মন্ত্রশিষ্য এক অকপট ইষ্টপ্রাণ রিক্সাচালকের মুখেও জন্ম বিজ্ঞান বা বংশধারার বিজ্ঞান সম্পর্কিত অবাক করা বক্তব্য শোনা যায় যা এক উচ্চশিক্ষিতের কাছে শোনা যায় না বা জানা যায় না বা সে সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জ্ঞান তাঁর নেই। এটাই হ'ল সৎসঙ্গের বৈশিষ্ট্য! এটা কেন হয়? এটাকে বলে সেই ভক্তের ইষ্টের প্রতি dedication, অকপট ভালোবাসা। এখানে ইষ্টের চরণে সারেন্ডার হ'লো প্রথম ও শেষ কথা। এখানে তথাকথিত লেখাপড়ার কোনও মূল্য নেই। আর এটা ব্যতিক্রম। এই ব্যতিক্রম যত দ্রুত যত বেশী হয় ততই ভালো।


আর, সৎসঙ্গ করা সম্পর্কে সৎসঙ্গীদের ভাবতে হবে, মনে রাখতে হবে সৎসঙ্গ কোনও বাবাজীর আখড়া নয় বা তথাকথিত ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা গাঁজাখোর, মাতাল, মূর্খ ও শুধু বুড়োবুড়িদের সমাবেশ নয় বা কোনও মোড়ের মাথার বা বটগাছের তলার শনিপুজো বা মনসা বা শীতলা পূজার আড্ডাখানা নয় যে যেমন ইচ্ছে হেঁড়ে গলায় বেসুরে অসুরের মত চীৎকার ক'রে পরিবেশ দূষিত ক'রে গান, কীর্তন করলাম আর পেটে বোমা মারলে 'ক' অক্ষর বেরোয় না সেই আমি তাঁর কথা বললাম!  


আমাদের জানতে হবে ও মনে রাখতে হবে সৎসঙ্গ একটা স্কুল আর সেখানে দেড় ঘন্টা থেকে দু'ঘন্টার হয় পারিপার্শ্বিক সহ নিজের বাঁচা ও বাড়ার (Being & Becoming with environment ) স্কুলিং বা ক্লাস।   


তাই ফেসবুকে কিছু লেখার আগে বা সৎসঙ্গে বকতৃতা দেওয়ার আগে সৎসঙ্গীদের মাথায় রাখতে হবে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন The greatest phenomenon of the world অর্থাৎ বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ট বিস্ময়!!!!! এই যে তিনি বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ট বিস্ময় এটা নিজের গুরুর প্রতি ভাবের চুল্কুনি থেকে বলা নয় বা আবেগে ভেসে গিয়ে নিজের ভালোলাগা জনের প্রতি দুর্বলতাবশতঃ সুড়সুড়ি খাওয়া নয়। এই বর্তমান কঠিন সময়ের পৃথিবীতে, জটিল জীবনে দুর্বলতা, আবেগ, ভাবালুতা, বেকুবি, ভক্তির আধিখ্যেতা, তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা ইত্যাদির কোনও স্থান নেই। 


তাই সেই সর্বশ্রেষ্ট বিস্ময়ের মান-সম্মান-ইজ্জৎ নিজের চলনবলন দিয়ে রক্ষা করা সৎসঙ্গীদের প্রথম ও প্রধান কর্তব্য।

কিছু প্রশ্নঃ হিন্দু ধর্ম ও হিন্দু সমাজ।

Anirban Sarkar, আপনি হিন্দুধর্মের করুণ অবস্থার জন্য সমগ্র হিন্দু সমাজকে দোষ দিয়েছেন; সঙ্গে সমস্ত ধর্মীয় পুরুষ, দেবদেবীদের।

 আমার আপনার কাছে জিজ্ঞাস্যঃ 

১) হিন্দু ধর্মের করুণ অবস্থাটা কি সেটা যদি একটু বিশ্লেষণ করেন ভালো হয়। 

২) হিন্দু সমাজ বা হিন্দু সমাজের দোষ বলতে কি বুঝিয়েছেন?

৩) আপনি কি হিন্দুসমাজের বাইরে?

৪) যদি বাইরে না হন তাহ’লে আপনিও কি একজন দোষী, অপরাধী?

৫) আপনার বা আপনাদের চোখ শুধুই দোষই দেখে? অন্য কিছু চোখে পড়ে না?

৬) ‘ঠগ বাছতে গাঁ উজার’ আর ‘কম্বলের লোমা বাছলে আর কি থাকে’ এই দুই প্রবাদ জানা আছে কি? 

৭) সবাই দোষী আর আপনি নির্ভেজাল নিখুঁত নিটোল গুণী পুরুষ?

৮) জানেন কি, যে ব্যাক্তি গাঁয়ের ঠগ বা কম্বলের লোমা বাছতে বসে তাকে কি বলে?

৯) বাংলাদেশের অগুন্তি হিন্দুদের বাঁচাবার দায়িত্ব যখন কেউ নেয়নি তখন শুধু উদারতার ভঙ্গি নিয়ে তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে পূর্বজদের সমালোচনা ক’রে, তাঁদের দোষ দেখে সময় নষ্ট না ক’রে বর্তমান অবশিষ্ট বাংলাদেশি হিন্দুদের বাঁচাবার দায়িত্ব আপনি নেবেন কি?

১০) আপনি বা আপনারা (উৎপল বিশ্বাসের মত শ্রদ্ধেয় জ্ঞানীগুণী সর্বজ্ঞ শক্তিশালীরা) সময় নষ্ট না ক’রে একটা কমন প্ল্যাটফর্ম তৈরি ক’রে হিন্দুদের শক্তিশালী বলশালী জাতিতে পরিণত করছেন না কেন?

১১) ‘এটা এতদিনে হয়নি আর কবে হবে?’ এটাতো হতাশার কথা। এই কথাটা কাকে বলছেন? 

১২) কেউ এসে ক’রে দিয়ে যাবে আর আপনি কিছু করবেন না? শুধু ভাসা ভাসা সমস্যা তুলে ধ’রে, সমালোচনা ক’রে, দোষ দেখে যাবেন আর বসে বসে শুধু ডুডু তামাক খাবেন নাকি?

১৩) বাংলাদেশে হিন্দুদের বাঁচাবার জন্য কেউ কিছু করেননি মানলাম বর্তমানে অবশিষ্টদের বাঁচাবার জন্য আপনি কিছু করছেন কি?

১৪) সমস্যা তুলে ধরার আগে সমস্যার গভীরে যেতে হয়, সমস্যার প্রকৃত স্বরুপকে চিনতে হয়, জানতে হয়, বুঝতে হয় তা জানেন কি?

১৫) সমস্যা তুলে ধরা সহজ (যদিও সহজ নয়) কিন্তু তার সমাধান জানা আছে কি?

১৬) প্রকৃত সমস্যা চিহ্নিত না হ’লে প্রকৃত সমাধানও সহজ নয়। এটা জানা আছে কি?

১৭) ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র পাবনা থেকে পালিয়ে এসেছিলেন এই জ্ঞানগর্ব তথ্য আপনি কোথায় পেলেন? কোন হিতাকাঙ্ক্ষী এই তথ্য আপনাকে দিল?

১৮) কারও সম্পর্কে বা কোন কিছু সম্পর্কে শেষ এবং সম্পূর্ণ না দেখে, না জেনে, না বুঝে কোনও মত প্রকাশ করা বা মন্তব্য করা বুদ্ধিমানের কাজ কি?

১৯) ‘ Empty vessels sound much’ Or ‘Too much talk ends in nothing’ অর্থাৎ বাংলা করলে যা দাঁড়ায় তাহ’ল ‘ফাঁকা কলসীর আওয়াজ বেশী’ বা ‘অসারের তর্জন গর্জনই সার’-এর প্রকৃষ্ট জলন্ত উদাহরণ নয় কি এই মন্তব্যগুলি? 

২০) আচ্ছা বলুন তো ‘অমৃতের পুত্রকন্যা’ না-কি ‘বিষের পুত্রকন্যা’!!!!!! কোনটা?

Sunday, February 13, 2022

উপলব্ধিঃ ১৯ঃ আস্তিক ও নাস্তিক।

কথা হচ্ছিল 'আসছে একটা নতুন যুগ, নতুন সময়! মহাপ্রলয়ে ভেসে যাবে সব, হবে সমূহ ক্ষতি, হবে মহাক্ষয়!! আস্তিক পাবে না ছাড়, নাস্তিকের নেই ভয়!!!'------কথাটা নিয়ে।

এখন প্রশ্ন এলো ভেসে, ''আস্তিক পাবে না ছাড়, তাহ'লে কি সব নাস্তিকের জয় হবে?"

উত্তর কি এখন? উত্তর মনে হয় আস্তিকরাই ভালো দিতে পারবে। তাই, আস্তিক নিজেকে প্রশ্ন করুক সে আস্তিক কিনা। নাস্তিকের ভয় কিসের? সে জানে সে নাস্তিক। ঈশ্বর জানে ঈশ্বরের সঙ্গে বেইমানী করেছে ও করছে কে বা কারা।

প্রশ্ন আসে ভেসে আবারঃ "নাস্তিক সাময়িক শক্তিধর হতে পারে, কিন্তুু আস্তিক মহাশক্তির অধিকারী"

উত্তরে বলতে হয়,  খুবই সত্যি কথা। একশোভাগ সহমত। কিন্তু কোন আস্তিক? 

কথায় আছে, "দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো।" যে গরু দুধ দেয় অথচ গোয়ালঘর অশান্ত ক'রে রাখে সে গরু যতই দুধ দিক না কেন সে থাকার চেয়ে না থাকায় ভালো। কারণ একজন ব্যাটসম্যান যতই রাণ তুলুক না কেন তার হাত দিয়ে যদি ফিল্ডিং-এর সময় বলের পর বল গলায় আর দল তার খেসারথ স্বরূপ হেরে যায় তখন সেই ব্যাটসম্যানকে নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে যায়। আর যে ব্যাটসম্যান রাণে ব্যর্থ হয় কিন্তু দলীয় ঐক্য বজায় রাখতে, মাথা ঠান্ডা রেখে পরিস্থিতি সামাল দিতে, সকলকে আগলে রাখতে পারদর্শী, সহযোগী এককথায় ভালো ফিল্ডসম্যান, স্বাভাবিকভাবেই দলে তার গ্রহণযোগ্যতার গুরুত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে; খেলায় চান্স না পেলেও টীম মেম্বার হিসাবে সে মধ্যমণি হ'য়ে ওঠে। ঠিক তেমনি যে গরু দুধ দেয় না অথচ খুবই শান্ত, মায়াবী তাকে তার প্রভু বুক দিয়ে আগলে রাখে, তাকে ভালোবাসে, আদর ক'রে। আর যে গরু দুধ দেয় না অথচ দুষ্ট, বদমাশ, মালিকের ক্ষতি করে, খায় আর জাবর কাটে তার ক্ষেত্রে কি করণীয় তা' সহজেই অনুমেয়। যে গরু দুধ দেয় অথচ বদমাশ তার ক্ষেত্রে কি করণীয় ব'লে মনে হয়? তাকে শাসনের বেড়াজালে রাখে তার মালিক। তাকে ভালোবাসা দিয়ে দিয়ে সংশোধনের চেষ্টা করে, শান্ত রাখার জন্য সচেষ্ট হয়, তার প্রতি মানবিক হ'য়ে ওঠে। তার সুবিধা অসুবিধার দিকে নজর রেখে চলে, বোঝার চেষ্টা করে কেন, কি জন্যে এমন করছে সে এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে মালিকের চার চোখো দৃষ্টি ও সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের মুন্সীয়ানাই মুখ্য হ'য়ে ওঠে কাউকে সংশোধনের ক্ষেত্রে।  কিন্তু দুধ দেয় অথচ যখন বদমাইশি, দুষ্টমি সীমা লঙ্ঘন করে, হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হ'য়ে পড়ে তখন স্বাভাবিকভাবেই মালিককে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধ্য করে। 

তাই বলি, সব দুষ্টমি, বদমাইশি কিন্তু দুষ্টমি, বদমাইশি নয় ঠিক তেমনি সব ভালো প্রকৃতপক্ষে ভালো বা মঙ্গল নয়, মুখোশ মাত্র; যা আল্টিমেট স্থায়ী আসন লাভ করে না এবং তা' চিহ্নিত করার প্রয়োজন আছে।

ঠিক তেমনি, বর্তমান চলতি উপরি অর্থানুযায়ী সব আস্তিক আস্তিক যেমন নয় তেমনি সব নাস্তিক নাস্তিক নয়। উপরে মনে হচ্ছে আস্তিক কিন্তু সে আস্তিক নয়, উপরে মনে হচ্ছে সে নাস্তিক কিন্তু সে নাস্তক নয়। তাই আস্তিক হ'লেই সে মহাশক্তিধর নয় বন্ধু আর নাস্তিক হ'লেই সে শক্তিহীন নয় !!!! 

এছাড়া, আস্তিক আর নাস্তিক শব্দের গভীর অর্থ ভিন্নরুপ। সে বিষয়ে পরে আলোচনা করা যেতেই পারে।

Saturday, February 5, 2022

কবিতাঃ একাই একশো।

ভাঙাতে আনন্দ বেশী।
কারণ নিজেকে গড়তে হয়নি কিছুই
গড়ার কষ্ট কি তা ভাঙার কারিগর কি বুঝবে?
গড়াতে আছে কষ্ট যন্ত্রণা লাঞ্ছনা পরিশ্রম
আর আছে সীমাহীন অপমান কারাদন্ড সশ্রম।
ভাঙার শেষে আছে হতাশা অবসাদ
আর গড়ার হাড়ভাঙা পরিশ্রম শেষে
পাবে অফুরন্ত ভালোবাসার প্রসাদ
আর উঠবে গড়ে আনন্দ আশ্রম।
ভাঙাতে আনন্দ বেশী কারণ তাতে আছে
লাগামহীন উচ্ছৃঙ্খল বেলেল্লাপনার স্বাধীনতা।
গড়াতে আছে কষ্ট যন্ত্রণাযুক্ত পরিশ্রম
আর সেই পরিশ্রমের গর্ভে আছে
অনাবিল অন্তহীন সৃষ্টির আনন্দ উল্লাস
আর আছে ভালোবাসাময় নির্মল সরলতা।
তাই ভাঙার শাতন হাজার হ'লেও
গড়ার কারিগর পাগল সত্য
কিন্তু একাই একশো, অদম্য হাজার হাতির বল

মূলধন তার সরলতা আর মন নির্মল।

ত্রাণকর্তা!

একটা ভয়ংকর অস্থির সময়ের খাঁচায় বন্দী আমি।
কেউ কি আছো যে এই খাঁচা থেকে
আমায় বের ক'রে নিয়ে যেতে পারো?
যাকেই ভেবেছি এ বুঝি saviour of the mankind (মানুষের ত্রাণকর্তা)!
সেই দিয়েছে ধোঁকা!
আমি কি বোকা? বিশ্বাস করা বা রাখা কি পাপ?
সেই যে কোন ছোটোবেলা থেকে
বিশ্বাসের চৌকাঠে হোঁচট খেয়ে মরছি
আজও তার হয়নি যাত্রা শেষ!
কত স্বপ্নের রঙ্গীন বেলুন ফুলিয়ে
রাজনীতির ফেরীওয়ালারা আসে দুয়ারে বারবার!
ভুলিয়ে নিয়ে যায় আমায়
বিশ্বাসের আতর মাখিয়ে দিয়ে গায়!
সম্মোহন! একটা তীব্র সম্মোহনের গ্যাস
আচ্ছন্ন ক'রে দিয়ে মনপ্রাণ
লুট ক'রে নিয়ে যায় আস্থা
পাঠিয়ে দিয়ে নরকের দ্বোরগোড়ায়!
কিন্তু তবুও ব'লে উঠি সেই নরক থেকে
কোমর ভাঙ্গা বিশ্বাসের কাঁধে ভর ক'রে
টলমল পায়ে দাঁড়িয়ে আবার
নূতনকে বন্ধু ভেবে সবার
হে বন্ধু! তুমি কি হবে আমার
future saviour of mankind (মানুষের ভবিষ্যৎ ত্রাণকর্তা)!?

কবিতাঃ হারিয়ো না সময়।

ধর্ম্ম মানে গঞ্জিকা সেবন আর সুরাপান?
খোল করতালে কীর্তনের নামে আসুরিক হৈচৈ গান !?
পুজা মানে ফুল-ফল-পাতা ধূপ ধুনো চন্দন!?
প্রভুর জন্যে খিচুড়ি ভোগ আর মায়ের মন্দিরে
উৎকৃষ্ট নধর কচি পাঁঠার মাংস রন্ধন!?
কবে কোথায় কে বলেছে তোমায়!?
মায়ের পূজার নামে জীব বলি আর
প্রধান প্রসাদের নামে মাছ-মাংসের হাড়!?
মায়ের পূজার নামে যত্তসব নচ্ছারগিরি
আর ভক্তির উগ্র বীভৎস হিংস্র বাড়াবাড়ি
কোন মা তারা, মা কালি আর যত অমূর্ত
মায়ের দল বলেছে!? কোথায় কোনখানে!?
কোন ধর্মগ্রন্থে তা' দেখাতে পারবে আমায়!?
ধর্ম্ম মানে হুল্লোর হুড়োহুড়ি আর বজ্জাতি
যত্তসব বৃত্তি-প্রবৃত্তির লাগামছাড়া নষ্টামি
কোথায় কোন দেবতা, কোন ধর্মগুরু
কাম-ক্রোধ-লোভ-মোহ-মদ-মাৎসর্য
রিপুতাড়নায় অস্থির জীবনের পথ দেখিয়েছে তোমায়!?
হে ধর্ম্মের নামে অধর্মের চরণ পূজারী
আর ধর্ম্মের বেদিমূলে ব'সে থাকা যত ভন্ড আনাড়ি
বৃত্তি-প্রবৃত্তির ল্যাজে তৈল মর্দনে আছে কে বেঁচে
বলতে ও দেখাতে পারো আমায়!?
যদি না পারো তবে ছাড়ো ঐ জীবন বিধ্বংসী
মিথ্যের রথে চড়ে এগিয়ে চলা নিরন্তর মৃত্যুর পথ!
চলে এসো, ছুটে এসো ঐ 'রাধাস্বামী' নামের পতাকার তলায়
যেখানে আছে জীবন, নেই মরণ, আছে বাঁচা আর বাড়া
আছে সুখ শান্তি ঐশ্বর্য অস্তি-বৃদ্ধি-যাজন জৈত্রের নাড়া
যেখানে এলে রোগ-শোক-গ্রহদোষ-বুদ্ধি বিপর্যয়
আর পালায় দারিদ্রতায় ভরা মৃত্যু ভয়!
এসো বন্ধু! এসো প্রিয়ে! সূর্য পাটে বসেছে যেতে
হারিয়ো না হেলায় কিছুদিনের জন্যে আসা সময়!
মানো আর না-মানো আমার কথা
শেষের সেদিন কিন্ত ভয়ংকর
যদি অকাল আর ভয়ংকর মৃত্যু না চাও
তবে 'মর' ব'লো না; বলো তুমি, অজর, অমর!


3 Comments


Friday, February 4, 2022

কবিতাঃ এসো বন্ধু! এসো--------

এসো বন্ধু! এসো প্রিয়ে!!
তুমি একা হ'লেও এ ভবে
জেনো তুমি অর্জুন;
আছো সখা দয়াল সাথে নিয়ে!
ভয় কি তোমার; যা নেই আমার
তা আছে তোমার; তুমি অমর,
তুমি অজেয় এ অনন্ত বিশ্বে!
তুমি অজর, অমর নিশ্বাসে-প্রশ্বাসে!
এসো বন্ধু! এসো প্রিয়ে!!
তুমি ভাগ্যাধীশ!
আছো দয়াল সখা সাথে নিয়ে!!
হে বন্ধু! হে আমার প্রিয়ে!!
তুমি হ'য়ো না দুর্যোধন
হ'য়ো না ভাই দুঃশাসন
হাজার লাখ সাথী যতই থাক না তোমার
যতই হাজার ঝাড়বাতি জ্বালিয়ে করো না উল্লাস
দিন শেষে অবশেষে যাবে তুমি নিভে।----প্রবি।