The greatest phenomenon of the world / বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ট বিস্ময়ঃ
SriSri Thakur Anukulchandra.
আমরা যারা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে ফেসবুকে লেখালিখি করি তখন সেই লেখা সমগ্র মানব সমাজ সে ঠাকুরের দীক্ষিত হ'ক বা না হক, গুণগ্রাহী বা সমালোচক হ'ক কিম্বা ঠাকুর প্রেমিক বা নিন্দুক যাই হ'ক না কেন সবার কাছে ফেসবুকের মধ্যে দিয়ে ঠাকুর সম্পর্কে একটা মেসেজ যায়। আর সেই মেসেজের মধ্যে দিয়ে একটা ভালো বা মন্দ, কিম্বা ভালোমন্দ একটা মিশ্রিত ধারণার সৃষ্টি হয়। ঠাকুর সম্পর্কে, ঠাকুরের ব'লে যাওয়া বাণী বা বিভিন্ন বিষয়ের উপর ঠাকুরের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গী সম্পর্কে অনেককেই ফেসবুকে লিখতে দেখি। ঠাকুরের ব'লে যাওয়া বাণীও অনেকে ফেসবুকে তুলে ধরেন। এই সমস্ত বিষয় দেখতে দেখতে মনে হ'লো ঠাকুরকে নিয়ে ফেসবুকে আমরা যারা লেখালিখি করি তারা কি চাই? ইষ্টপ্রতিষ্ঠা নাকি আত্মপ্রতিষ্ঠা? ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠা নাকি আত্মস্বার্থপ্রতিষ্ঠা? সবচেয়ে অবাক লাগে ঠাকুরকে নিয়ে প্রায় সবাই কমবেশি লেখালিখি করি। তুলে ধরি তাঁর দর্শন, তাঁর চিন্তা, তাঁর বাণী। তুলে ধরি গ্রন্থের নাম দিয়ে গ্রন্থের মধ্যে থাকা ও আদৌ না থাকা বাণী। তুলে ধরি তাঁর বাণী, তাঁর কথা তাঁর নাম ছাড়া ও ইনভার্টেড কমা ছাড়া।
ফেসবুকে ঠাকুরের বাণী লেখার সময় কেন ঠাকুরের নাম লেখেন না বা ইনভার্টেড কমা দেন না আমি বুঝতে পারি না। এটা কি অজ্ঞতার জন্যে নাকি ইচ্ছে করেই?? ঠাকুরকে ভালোবাসার অর্থ বেকুবি বা মুর্খামি করা নয়। এটা আমরা যেন ভুলে না যায় এই সমস্ত বাণীর মধ্যে দিয়ে সমগ্র মানব জাতির কাছে একটা পারিপার্শ্বিকসহ নিজের বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার বার্তা পৌঁছে যায়, তা মানুষ গ্রহণ করুক আর নাই করুক।
এছাড়া আবার দেখা যায় তাঁর ভাবকে নিজের ভাব ক'রে নিয়ে, তাঁর ভাষা, তাঁর লেখার ভঙ্গি বা ধরণকে নিজের ভাষা ও নিজের ভঙ্গি বা ধরণ ক'রে নিয়ে সেই লেখার মধ্যে তাঁর ব্যবহৃত শব্দ সম্ভার, টার্ম ইত্যাদি বিপুলভাবে নিজের লেখার মধ্যে ব্যবহার ক'রে নিজের বাহাদুরি তুলে ধরি। এছাড়া দেখতে পায় এমনভাবে ঠাকুরের লেখা পোষ্ট হচ্ছে যেন মনে হচ্ছে যে পোষ্ট করছে লেখাটা তার লেখা। আর সবচেয়ে যেটা ভয়ঙ্কর তা হ'ল অ-জ-স্র বানান ভুল!!!
ঠাকুর বলেছিলেন দোয়াড়ে দীক্ষার কথা অর্থাৎ প্রচুর দীক্ষার কথা, ব্যাপক দীক্ষার কথা। দোয়াড়ে দীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে চলছে দোয়াড়ে সৎসঙ্গ, দোয়াড়ে যাজন, দোয়াড়ে লেখালেখি। যে পারছে সেই দোয়াড়ে ঠাকুরের যাজন করছে, তা বক্তব্য রাখার ক্ষেত্রেই হ'ক আর লেখালেখির ক্ষেত্রেই হ'ক! চলছে দোয়াড়ে সৎসঙ্গ। সৎসঙ্গ পরিণত হয়েছে আখড়া বাজিতে। প্রশ্ন উঠতেই পারে তাই ব'লে কি যাজন অর্থাৎ ঠাকুরের কথা বলবে না, লিখবে না? সৎসঙ্গ করবে না?
লেখালেখি বা বক্তব্য রাখা চলতেই পারে কিন্তু মাথায় রাখতে হবে আমি যার লেখা লিখছি বা যার সম্বন্ধে বলছি তিনি কে? তিনি কি আমার লেবেলের? যদি বলা হ'য়ে থাকে রবীন্দ্রনাথ বা বিদ্যাসাগর, মধুসূদন বা নজরুল ইত্যাদি মনিষীদের নিয়ে বা এঁদের সম্পর্কে কি সবাই বক্তব্য রাখে বা এঁদের নিয়ে বা এঁদের লেখালেখি নিয়ে কি যে কেউ লেখা লেখে? লেখে না বা বলে না; তাই না? কেন? কারণ তাঁরা সাধারণের নাগালের বাইরে। তাঁদের নিয়ে বলতে বা লিখতে গেলে গবেষণা করার দরকার। তাহ'লে ঠাকুরর বেলায় অন্যথা হয় কেন? ঠাকুরের মন্ত্রশিষ্য ব'লে? মন্ত্রশিষ্য বলেই তাঁকে নিয়ে যে কেউ লেখালেখি বা বক্তব্য পেশ করতেই পারে? ঠাকুর তার মানে Taken for granted!
তবে এটা মনে রাখতে ঠাকুরের সৎসঙ্গের একটা মাহাত্ম্য আছে তা হ'ল ঠাকুরের দীক্ষায় দীক্ষিত, ঠাকুরের মন্ত্রশিষ্য এক অকপট ইষ্টপ্রাণ রিক্সাচালকের মুখেও জন্ম বিজ্ঞান বা বংশধারার বিজ্ঞান সম্পর্কিত অবাক করা বক্তব্য শোনা যায় যা এক উচ্চশিক্ষিতের কাছে শোনা যায় না বা জানা যায় না বা সে সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জ্ঞান তাঁর নেই। এটাই হ'ল সৎসঙ্গের বৈশিষ্ট্য! এটা কেন হয়? এটাকে বলে সেই ভক্তের ইষ্টের প্রতি dedication, অকপট ভালোবাসা। এখানে ইষ্টের চরণে সারেন্ডার হ'লো প্রথম ও শেষ কথা। এখানে তথাকথিত লেখাপড়ার কোনও মূল্য নেই। আর এটা ব্যতিক্রম। এই ব্যতিক্রম যত দ্রুত যত বেশী হয় ততই ভালো।
আর, সৎসঙ্গ করা সম্পর্কে সৎসঙ্গীদের ভাবতে হবে, মনে রাখতে হবে সৎসঙ্গ কোনও বাবাজীর আখড়া নয় বা তথাকথিত ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা গাঁজাখোর, মাতাল, মূর্খ ও শুধু বুড়োবুড়িদের সমাবেশ নয় বা কোনও মোড়ের মাথার বা বটগাছের তলার শনিপুজো বা মনসা বা শীতলা পূজার আড্ডাখানা নয় যে যেমন ইচ্ছে হেঁড়ে গলায় বেসুরে অসুরের মত চীৎকার ক'রে পরিবেশ দূষিত ক'রে গান, কীর্তন করলাম আর পেটে বোমা মারলে 'ক' অক্ষর বেরোয় না সেই আমি তাঁর কথা বললাম!
আমাদের জানতে হবে ও মনে রাখতে হবে সৎসঙ্গ একটা স্কুল আর সেখানে দেড় ঘন্টা থেকে দু'ঘন্টার হয় পারিপার্শ্বিক সহ নিজের বাঁচা ও বাড়ার (Being & Becoming with environment ) স্কুলিং বা ক্লাস।
তাই ফেসবুকে কিছু লেখার আগে বা সৎসঙ্গে বকতৃতা দেওয়ার আগে সৎসঙ্গীদের মাথায় রাখতে হবে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন The greatest phenomenon of the world অর্থাৎ বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ট বিস্ময়!!!!! এই যে তিনি বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ট বিস্ময় এটা নিজের গুরুর প্রতি ভাবের চুল্কুনি থেকে বলা নয় বা আবেগে ভেসে গিয়ে নিজের ভালোলাগা জনের প্রতি দুর্বলতাবশতঃ সুড়সুড়ি খাওয়া নয়। এই বর্তমান কঠিন সময়ের পৃথিবীতে, জটিল জীবনে দুর্বলতা, আবেগ, ভাবালুতা, বেকুবি, ভক্তির আধিখ্যেতা, তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা ইত্যাদির কোনও স্থান নেই।
তাই সেই সর্বশ্রেষ্ট বিস্ময়ের মান-সম্মান-ইজ্জৎ নিজের চলনবলন দিয়ে রক্ষা করা সৎসঙ্গীদের প্রথম ও প্রধান কর্তব্য।
No comments:
Post a Comment