Powered By Blogger

Tuesday, August 29, 2023

কবিতাঃ শুনতে পাচ্ছেন আগামী রক্তবীজেরা গাইছে

 

প্রেসিডেন্সী, যাদবপুর আগামী প্রজন্মকে পথ দেখাবে বাংলার বুকে নেবে এসে বাংলাকে কবরে নিয়ে যাবার জন্য। জন্ম নেবে রক্তবীজের ঝাড়। শুনতে পাচ্ছেন আপনারা আগামী রক্তবীজেরা গাইছেঃ

আবার আসিব ফিরে
আবার আসিব ফিরে প্রেসিডেন্সী, যাদবপুরে –-- এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয় --- হয়তো বা দানব কংসের বেশে,
হয়তো ভোরের রাহু হয়ে এই ‘ধর্ষণ করো’র দেশে
তমসার বুকে ভেসে একদিন আসিব এই ‘সংস্কৃতি’র ছায়ায়;
হয়তো বা অশনি হবো – তমঘ্নোর - ব্যাটন রহিবে শ্বেত রেখায়,
সারাদিন কেটে যাবে অন্ধকারে ঢেকে থাকা আকাশে ভেসে ভেসে;
আবার আসিব আমরা বাংলায় অন্তর্বাস ন্যাপকিন চুমু সংস্কৃতি ভালোবেসে
উচ্ছৃঙ্খলার ঢেউ এ ভেজা বাংলার এ হলুদ বর্ণের ডাঙ্গায়;
হয়তো দেখিবে চেয়ে পাশুপাত উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে;
হয়তো শুনিবে এক শকুনি ডাকিতেছে শিক্ষাঙ্গনের ছাদে;
হয়তো ধ্বংসের বীজ ছড়াতেছে এক ছাত্র অঙ্গনের ঘাসে;
গঙ্গার ঘোলা জলে আগামী তমোঘ্ন ন্যাপকিন, অন্তর্বাস উড়িয়ে
ডিঙ্গা বায়; অসভ্যতার নিকষ আঁধার জড়িয়ে আসিতেছে নীড়ে
চুম্বনে মগ্ন উদোম ছাত্রী-ছাত্র; আমাদেরও পাবে তোমরা ইহাদের ভিড়ে।
(লেখা ৩০শে আগষ্ট'২০১৫)

প্রবন্ধঃ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলন

 

গত শনিবার (২২/৮/১৫) প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলনে উপস্থিত ছাত্রদের সম্পর্কে বিজ্ঞানী বিকাশ সিনহার প্রশ্নঃ "এরা কারা?

আর বিজ্ঞানীর পরবর্তী প্রতিক্রিয়া ছিল, “বেশিরভাগই বহিরাগত৷ সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় ওরা পড়ছে৷ ক্রমশ সীমা ছাড়াচ্ছে”।
বিকাশ সিনহার প্রশ্নের উত্তরঃ এরা ভারতের অগ্রণী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের এক একজন রত্ন, উচ্চমেধাসম্পন্ন সচেতন প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রছাত্রী। যারা দেশের সম্পদ, ভারতের আকাশের ধ্রুবতারা!!
আর পরবর্তী প্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে বলা যেতে পারে, এই বহিরাগত ব্যাপারটা আজ আর নতুন কিছু নয়। পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলনের নামে ছাত্র উচ্ছৃঙ্খলার ক্ষেত্রে এই বহিরাগত ব্যাপারটা গা সওয়া নিত্ত নৈমিত্তিক ঘটনা। মনের শক্তির সঙ্গে শারীরিক শক্তির সমান মিশ্রণ যেমন লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ বিরাট ভুমিকা পালন করে ঠিক তেমনি সবক্ষেত্রেই আন্তঃশক্তির সঙ্গে বহিঃশক্তির একটা মিলন প্রয়োজন। আর তা সৃষ্টিমূলক অথবা ধ্বংসাত্মক যে কাজের জন্যই হোক না কেন সমানভাবে ক্রিয়া করে। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্রে এই মিলন আজ এইডস বা ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে। দুঃখের বিষয় এই রোগের আতুর ঘর স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। আর এই রোগের শিকার অনামী, অখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে নামী ও খ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অসাধারণ উচ্চমেধাসম্পন্ন ছাত্রছাত্রী পর্যন্ত।
আর বিজ্ঞানীর ‘সাধারণ মানুষের টাকায় ওরা পড়ছে’ এই প্রসঙ্গে বলা যেতেই পারে, বেশ করছে। ওই উচ্চশিক্ষিতমেধাসম্পন্ন ছাত্রছাত্রীদের দায় সাধারণ মানুষ বইবে না-তো টাটা আম্বানি বইবে? যদিও টাটা আম্বানিও ট্যাক্স দেয়। ওরা অর্থাৎ ওই অসাধারণ উচ্চমেধাসম্পন্ন ছাত্রছাত্রীরা আগামীদিনের সমাজ ও দেশের কাণ্ডারি, সাধারণ মানুষের ভাগ্যবিধাতা। ভবিষ্যৎ সুন্দর সমাজের কথা ভেবেই তো সাধারণ মানুষকে নিজেদের স্বার্থেই ওই উচ্চমেধাসম্পন্ন ভবিষ্যৎ ভাগ্যবিধাতাদের ভাগ্য গড়ে দেওয়ার পিতৃদায় নিতেই হবে। খাও না খাও কেউ দেখতে যাবে না কিন্তু তোমাকে এই দেশের রত্নদের জন্য স্বার্থত্যাগ করতেই হবে। এখানে কোনও রকম প্রশ্ন চলবে না। প্রশ্ন করলেই চোখ পাকিয়ে বলা হবে, প্রশ্ন করবা না, উত্তর দিমু না।
এছাড়া বিকাশবাবুর কথা ‘সীমা ছাড়াচ্ছে’ প্রসঙ্গে একটা কথা উনাকে বলতে চাই, উনি সম্ভবত ছাত্রদের জন্য একটা স্পেস ছেড়ে রাখলেন। এক্ষেত্রে ‘সীমা ছাড়াচ্ছে’ প্রসঙ্গে স্পষ্টতই বলতে চাই, বিকাশবাবু সীমা বহু বহুদিন আগেই ছাড়িয়ে গেছে তার প্রমাণ কি আপনি পাননি? কুম্ভকর্ণের মত হঠাৎ জেগে উঠলেন না-কি? না-কি এখানেও ধমকের মোড়কে সাবধান হয়ে যাবার জন্য উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রছাত্রীদের স্পেস দিলেন? হয়তো আপনার সেরকম কোনও উদ্দেশ্য নেই এবং আপনি তা নন। তবুও একটু অপ্রিয় হলেও (নিজগুনে ক্ষমা করে দেবেন) আর কতদিন সত্যকে সরাসরি সত্য বলে তুলে ধরতে, স্পষ্ট কথা স্পষ্টভাবে বলতে সময় আমরা নেবো? আজও দেখলাম, কালও দেখেছি, প্রতিদিনই দেখছি টিভির চ্যানেলে চ্যানেলে একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবী কথার জাগ্লিং-এ ছাত্রছাত্রীদের অপরাধকে মেনে নিয়েও হাল্কাভাবে দেখতে ও দেখাতে চাইছেন, তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন এবং ঘুরিয়ে কথার মারপ্যাঁচে প্রশাসকদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন। আন্দোলনকারী ও প্রশাসক উভয় পক্ষকেই ডালেচালে মিশিয়ে খিচুড়ি বানিয়ে ছেড়ে দিচ্ছেন। ওঃ কি অসাধারণ প্রতিভা! আর বিকাশবাবু সীমা ছাড়ানোর এই বিষবৃক্ষটা বপন হয়েছে নির্দিষ্ট করে না বললেও বহু বহু বহু বছর আগেই। আর ধীরে ধীরে বপনকারী বুদ্ধিজীবীদের দেওয়া জল, ছায়া, রোদ্দুর পেয়ে পেয়ে সেই চারা ক্রমশঃ ডালপালা ছড়াতে ছড়াতে বিশাল বৃক্ষে পরিণত হয়েছে আর সেই বৃক্ষে ফলছে যে সুমিষ্ট বিষাক্ত ফল সেই ফল খেয়ে চলেছে জেনারেশনের পর জেনারেশন ছাত্রসমাজ।
বিকাশবাবু আপনি বলুনতো কিছুদিন আগে ‘হোক কলরব’ নামে যে ছাত্র আন্দোলন হ’ল সেই আন্দোলনে আজকের আন্দোলনের ছাত্রছাত্রীরা ছিল না? প্রাক্তন ও বর্তমান এই সমস্ত উচ্চমেধাসম্পন্ন ছাত্রছাত্রীদের টিভির চ্যানেলে চ্যানেলে বসে ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে বারবার নিজের ঢাক নিজে পেটাবার মত গর্বভরে তাদের নিজেদের উচ্চমেধা আর ‘যাদবপুর, প্রেসিডেন্সী’ প্রতিষ্ঠানের তারিফ করতে শুনেছি, শুনেছি দেশের প্রতিনিধিত্ব করার কথা, শুনেছি ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা। ‘হোক কলরব’-এ আমরা কি দেখেছিলাম আর কি পেয়েছিলাম? সেই একই রোগঃ উপাচার্য অপসারণ! আজও তাই। কি আন্দোলন! কি লড়াই! কি উৎসাহ! কি উদ্দীপনা! আন্দোলনের কি নূতনত্ব! “সেই একই Tradition সমানে বয়ে চলেছে”; সবসময় উচ্চমেধার অহংকারে টগবগ করে ফুটছে উচ্চমেধাসম্পন্ন ছাত্রছাত্রী সমাজ। একটা হিপি সংস্কৃতির আবহাওয়ায় আচ্ছাদিত ‘উত্তেজিত মস্তিষ্ক আর বৃথা আড়ম্বর যুক্ত কল্পনা’র অধিকারী প্রেসিডেন্সী, যাদবপুরের এক শ্রেণীর বর্তমান ও প্রাক্তন উচ্চমেধাসম্পন্ন ছাত্রসমাজকে একটা নেশার মত পেয়ে বসেছে। মুচমুচে পাঁপড় ভাঁজার মত সবসময় পড়াশুনার পাশাপাশি সময় কাটানোর জন্য Part time হিসাবে উদারতার ভঙ্গী নিয়ে একটা ‘সমাজকো বদল ডালো’র আঁতলামো সুড়সুড়ি চাই, আন্দোলন চাই, চাই হৈ চৈ, চাই কলরব, চাই গুঞ্জন, চাই ‘উত্তেজিত মস্তিষ্ক আর বৃথা আড়ম্বর যুক্ত কল্পনা’র তীব্র হলাহল ভরা কোলাহল যেখানে মিলবে এলোমেলো করে দেওয়ার সুযোগ আর বলতে পারবে, ‘দে মা লন্ডভন্ড করে, লুটে পুটে খায়’।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার বিভাগীয় প্রধান সোমক রায়চৌধুরি আন্দোলনের কড়া নিন্দা করে বলেন, "গুন্ডামি চলছে৷ প্রেসিডেন্সিতে বহিরাগতদের জায়গা নেই৷ অন্তর্বাস পরে ঘুরে বেড়ানোয় প্রেসিডেন্সির সম্মানহানি হল”৷
এই প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গুন্ডামি তো বাংলার সংস্কৃতি। আর সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বহিরাগতদের প্রবেশ, সে ছাত্রই হোক আর ছাত্রের ছদ্মবেশে গুন্ডা, মস্তান, নেশাখোর, হঠকারী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তথাকথিত এলিট বা ইন্টেলেকচুয়ালস ইত্যাদি যাই হ’ক, তাদের স্বাধীন অধিকারের মধ্যেই পড়ে। সোমকবাবু তো নিজেই এই কলেজের প্রাক্তনি ছিলেন, তাঁর সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির সংস্কৃতি কি ছিল তা অবশ্য তিনিই ভালো বলতে পারবেন আর এছাড়া তিনি বোধহয় বহু বছর দেশের বাইরে থাকায় বাংলার বুকে বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতির পটপরিবর্তন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। তাই তিনি ঐভাবে রিঅ্যাক্ট করেছেন।
‘অন্তর্বাস সংস্কৃতি’র জন্য প্রেসিডেন্সির সম্মানহানি হ’ল কি? আর হলেও শুধু প্রেসিডেন্সির কেন? অভিবক্ত গোটা বাংলা ও বাঙালির সম্মানহানি নয়, অপমান নয়? গোটা বাংলার ছাত্র সমাজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নয়? আসলে সোমকবাবু জানেনই না যে অনেক আগেই বাংলার উচ্চমেধাবী ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের ভাষাটাই পালটে গেছে। তিনি কি সুন্দর অভিনব ‘ন্যাপকিন আন্দোলন’-এর রুপটা দেখেননি!? অনেকদিন আগে সেই ব্যর্থ নকশালি আন্দোলন শেষে পরবর্তী সময়ে ব্যর্থ হতাশাগ্রস্ত কোমরভাঙ্গা অথচ নাকউঁচু উচ্চমেধাবী এক নকশালি যুবকের গাঁজার কলকেতে সকাৎ শব্দে টান দিয়ে আকাশপানে মুখ তুলে ধোঁয়ার মেঘ উড়িয়ে গেয়ে ওঠা ‘গাছে গাছে কবিতা ঝোলাবো’র মত সেই ট্রাডিশান ‘গাছে গাছে, দেওয়ালে দেওয়ালে ন্যাপকিন ঝোলাবো’ যেন সমানে বয়ে চলেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে উচ্চমেধাবী ছাত্রছাত্রীদের হাত ধরে। সেখানে শুধু ক্যাম্পাসের গাছেই নয়, ন্যাপকিনের উপর ধর্ষণবিরোধী বিভিন্ন্ ধরনের মন্তব্য লিখে বাথরুমে, হোর্ডিংয়ের গায়ে, দেওয়ালে সেঁটে দেওয়া হয়েছিল ন্যাপকিন, ন্যাপকিন আর ন্যাপকিন। সম্ভবত সেই সুন্দর মনোরম স্বাস্থ্যকর আধুনিক ‘ন্যাপকিন সংস্কৃতি’র কথা জানেন না সোমকবাবু। সেই অত্যন্ত উচ্চমার্গের রুচিশীল আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন নারীরাই!!!!!! “অবাক পৃথিবী! অবাক করলে তুমি”! সুকান্তকে বাঁচিয়ে রেখেছে এই নারীরাই!!!! হ্যাটস অফ আজকের আধুনিক নারীসমাজ!!!!!!!
প্রকাশ্য দিবালোকে যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীদের রাস্তার উপরে এই ‘চুমু আন্দোলন’-এর কথা কি জানেন না সোমকবাবু? কি অপুর্ব দৃষ্টিনন্দন দেশের নামকরা অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠানের উচ্চমেধাবী ছাত্রছাত্রীদের এই আন্দোলন। নারীদের নিজেদের লজ্জা নিয়ে প্রকাশ্যে কি বোল্ড আলট্রা মডার্ন আন্দোলন!? কত এগিয়ে গেছে রবীন্দ্রনাথ, বিদ্যাসগর, বিবেকানন্দ, জীবনানন্দ ইত্যাদির বাংলা! সত্য সেলুকস! কি বিচিত্র এই লেখাপড়া জানাওয়ালা নারী সমাজ, নারী চরিত্র, নারী শিক্ষা! নিজেদের শরীরের গোপন অঙ্গের গোপন লজ্জাবস্ত্র আজ আন্দোলনের হাতিয়ার! তাও আবার প্রকাশ্যে পুরুষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে! শিক্ষিত, ভদ্র, রুচি ও রক্ষণশীল জ্ঞানী নারী সমাজ আজ চুপ কেন!? কেন তাঁরা আজও নীরবে সব সহ্য করে যাচ্ছেন? আর কবে তাঁরা তথাকথিত এই লেখাপড়াজানা উচ্চমেধাসম্পন্ন অহংকারী নারী যারা নিজেদের নিজেরাই বাজারের পণ্য করে তোলেন তাদের ঘুম ভাঙ্গাবার জন্য পথে নামবেন? সোমকবাবু আপনি কি এসব ঘটনার সঙ্গে পরিচিত নন কিম্বা আপনাকে কেউ আপডেট করেনি? এরাই শেষ কথা। এর মধ্যে অবশ্য কিছু ভালো ছাত্রছাত্রী আছে যাদের কোনও ভুমিকা বা গুরুত্বই নেই এই সমস্ত বিকৃত রুচিসম্পন্ন হুলিগান ছাত্র সমাজের কাছে।
অতএব মাথা ঠান্ডা রাখুন সোমকবাবু, বিকাশবাবুরা। যখন সমাজ ব্যবস্থা ধ্বংসের Extreme Point-এ চলে যায় তখন আর কোনোকিছুই সেই ব্যবস্থাকে ঘুরে দাঁড় করাতে পারে না। ধ্বংস-ই তার ইতি, ধ্বংস-ই তার ভবিষ্যৎ সমাধান। তাই এরা বা এইসব ঘটনাই আগামী বাংলা আর বাংলার ছাত্র সমাজের কাছে ভবিষ্যৎ। যা আগামী প্রজন্মকে পথ দেখাবে বাংলার বুকে নেবে এসে বাংলাকে কবরে নিয়ে যাবার জন্য। জন্ম নেবে রক্তবীজের ঝাড়। শুনতে পাচ্ছেন আপনারা আগামী রক্তবীজেরা গাইছেঃ
আবার আসিব ফিরে প্রেসিডেন্সী, যাদবপুরে –-- এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয় --- হয়তো বা দানব কংসের বেশে,
হয়তো ভোরের রাহু হয়ে এই ‘ধর্ষণ করো’র দেশে
তমসার বুকে ভেসে একদিন আসিব এই ‘সংস্কৃতি’র ছায়ায়;
হয়তো বা অশনি হবো – তমঘ্নোর - ব্যাটন রহিবে শ্বেত রেখায়,
সারাদিন কেটে যাবে অন্ধকারে ঢেকে থাকা আকাশে ভেসে ভেসে;
আবার আসিব আমরা বাংলায় অন্তর্বাস ন্যাপকিন চুমু সংস্কৃতি ভালোবেসে
উচ্ছৃঙ্খলার ঢেউ এ ভেজা বাংলার এ হলুদ বর্ণের ডাঙ্গায়;
হয়তো দেখিবে চেয়ে পাশুপাত উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে;
হয়তো শুনিবে এক শকুনি ডাকিতেছে শিক্ষাঙ্গনের ছাদে;
হয়তো ধ্বংসের বীজ ছড়াতেছে এক ছাত্র অঙ্গনের ঘাসে;
গঙ্গার ঘোলা জলে আগামী তমোঘ্ন ন্যাপকিন, অন্তর্বাস উড়িয়ে
ডিঙ্গা বায়; অসভ্যতার নিকষ আঁধার জড়িয়ে আসিতেছে নীড়ে
চুম্বনে মগ্ন উদোম ছাত্রী-ছাত্র; আমাদেরও পাবে তোমরা ইহাদের ভিড়ে।


(লেখা ৩০শ্ব আগষ্ট'২০১৫)

বিশ্বভারতীর ঘুম

 


অবশেষে সংবাদ মাধ্যমের চাপে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের ইচ্ছাকৃত জেগে থাকা ঘুম ভাঙ্গলো! ছাত্রীকে যৌন হেনস্থার ঘটনায় শেষ পর্যন্ত পুলিসে অভিযোগ দায়ের করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। আজ চার জনের নামে বোলপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় কর্তৃপক্ষের তরফে। অভিযুক্তদের মধ্যে তিন জন বিশ্বভারতীর ছাত্র ও একজন বহিরাগত। ভাবলেও অবাক ও দুঃখ লাগে প্রশাসন কতটা মেরুদন্ডহীন হ'লে বহিরাগতর অবাধ বিচরণ রবীন্দ্রনাথের স্বপ্নকে নির্মম বলাৎকার করে দিয়ে চলে যায়। যাই হ'ক আমার গতকালের post-এ যারা মতামত দিয়েছেন তাঁদের সকলকেই আন্তরিক ধন্যবাদ। এই নারকীয় ঘটনার প্রচার যত বেশী বেশী মানুষের সামনে তুলে ধরা যায় ততই এই মেরুদন্ডহীন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়বে। এ ছাড়া সাধারণ মানুষ হিসাবে আর কিছু পারি কিনা জানি না কিন্তু এটুকু পারি। তাই আসুন 'বাড়িয়ে দাও তোমার হাত' ব'লে আর এই লেখা 'Share'-এর মাধ্যমে এবং মতামত আদান প্রদানের মধ্যে দিরে অনেক অনেক সচেতন, সৎ , বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের কাছে পৌঁছে যায়!
এই ঘটনাগুলির সময়ে প্রমাণ হয় FB-এর মত শক্তিশালী মাধ্যমকে আমরা FB-এর বন্ধুরা কতটা নিজেদের স্বার্থে আর কতটা সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে ব্যবহার করতে পারলাম!
কবিগুরুর কথা "অমন আড়াল দিয়ে লুকিয়ে গেলে চলবে না" তুমি কি শুনতে পাও না বন্ধু!!!???
(৩০শে আগষ্ট'২০১৪)

প্রবন্ধঃ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়

 


বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার বোলপুর শহরে অবস্থিত। ১৯২১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫১ সালে এটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে। কবিপুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। দেশবিদেশ থেকে প্রচুর ছাত্রছাত্রী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে আসেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য প্রাক্তনীদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, অস্কারবিজয়ী চিত্র-পরিচালক সত্যজিৎ রায়, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী প্রমুখ।যৌন হেনস্থার ঘটনায় এফআইআরই করতে দিল না বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ছাত্রী ও ছাত্রীর বাবাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে পৌছে দেওয়া হল বোলপুর স্টেশনে। সকালেই ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করেন, ঘটনা ধামাচাপা দিতে টাকা দিতে চেয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। আর বিকেলেই সম্পূর্ণ পাল্টে গেলেন ছাত্রীর বাবা। সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ না খুলে বোলপুর স্টেশন থেকে সিকিমের উদ্দেশে রওনা হলেন তিনি।
যৌন হেনস্থার ঘটনা ধামাচাপা দিতে টাকা দিতে চেয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ সিকিম থেকে কলা ভবনে পড়তে আসা নিগৃহীতা ছাত্রীর বাবার। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, পুলিসের কাছে মুখ না খুলতেও তাঁকে চাপ দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তাহীনতায় তাই বিশ্বভারতী ছাড়ছেন কলা ভবনের ওই ছাত্রী। গত আটই অগাস্ট শান্তিনিকেতন পোস্ট অফিস মোড় থেকে একটি গাড়িতে তুলে ওই ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা করে সিনিয়র তিন ছাত্র। ছাত্রীর আপত্তিকর ছবি তুলে শুরু হয় ব্ল্যাকমেল। কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টে টাকা দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ ছাত্রীর বাবার।
শান্তিনিকেতনের প্রতি আত্মিক টান। তাই নিজের মেয়েকে বিশ্বভারতীর কলা ভবনে পড়তে পাঠিয়ে ছিলেন সিকিমের বাসিন্দা। কিন্তু সিনিয়র ছাত্রদের হাতেই যৌন হেনস্থার শিকার হন কলা ভবনের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রী। এই অভিজ্ঞতার পর, নিরাপত্তাহীনতার কারণে শান্তিনিকেতন ছাড়ছেন ঐ ছাত্রী।
ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করেছিলেন, ঘটনার কথা জানানোর পরও কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
হায় রবীন্দ্রনাথ! এই তোমার সোনার বাংলা ও বিশ্বখ্যাত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়!!!!!
( লেখা ৩০শে আগষ্ট'২০১৪)

উপলব্ধিঃ হামিমদাকে উত্তর।

এটাই (টলে যাওয়া) সত্যি! নির্মম সত্যি হামিমদা। আর তার চেয়েও সত্যি আপনার উপলব্ধি, নির্ভুল আপনার বোধ। টলে গিয়েও আপনি যে টলেননি, ঘটনা আপনাকে টলাতে পারেনি তা' আপনার মজবুত বিশ্বাসের ভিত। আর এই বিশ্বাসই আপনার সারাজীবনের মূলধন, গুপ্তধন। একে যক্ষের মত আঁকড়ে ধ'রে রাখবেন, আগলে রাখবেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এবং তা' বয়ে যাবে জন্মজন্মান্তর হামিমদা!!!!! 

আবার যে আসতে হবে আমাদের, আবার যে আসবো নানা রঙের ফুল, ফলে ভরা রঙিন প্রজাপতিদের উড়ে বেড়ানো এই পৃথিবীর কোলে স্মৃতিবাহী চেতনায় ভর ক'রে! আবার আপনাকে পাবো অন্য কোথাও অন্য কোনও রূপে! এ আমার বিশ্বাস। 

তাই এই চিরন্তন সত্য হারিয়ে গেলে যে আর কিছু থাকে না এই জীবনে, আমার এই দুঃখকষ্টে ভরা ভারাক্রান্ত ছোট্ট পৃথিবীর চারপাশে! এই নিয়েই তো বেঁচে থাকা আর বেঁচেও আছি কখন আপনার মত মানুষদের একটা ছোট্ট ভালোবাসাময় আশাভরা মেসেজ দেখতে পাবো এই আশায় আর বুক ভরে নেবো, একবুক নির্মল বাতাস। পরমপিতার কাছে প্রার্থনা করি আপনি অনেক অনেক দিন সুস্থ, স্বস্থ, নীরোগ আনন্দময় জীবনের অধিকারী হ'ন আর আমাদের এইভাবে অবিশ্বাসের বন্যায় ভেসে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য আপনার পরম নির্ভর হাত বাড়িয়ে দিন। ভালো থাকবেন দাদা। ( August'29, 2017)



হামীম ফারুক
Agust 29'2017 Dhaka Bangladesh.


অহিংস নীতির কঠোর অনুসারি বৌদ্ধ ভিক্ষুদের প্রতি একধরণের শ্রদ্ধা সবসময় কাজ করে। কিন্তু মিয়ানমারের বৌদ্ধ ভিক্ষুদের আচরণে টলে যাচ্ছে আমার সে বোধ।
তারপরও বিশ্বাস করতে চাই- পৃথিবীর সব ভিক্ষু এরকম নয়, সব ধার্মিকই বক-ধার্মিক নয়।

প্রবন্ধঃ কথাটা আপাত সত্য

কথাটা আপাত সত্য; তবে সাময়িক। যা চিরন্তন নয় তা' কখনো সত্য হয় না। আর যা সত্য নয় তা' কিন্তু কখনো জগতে পূজনীয় হ'য়ে ওঠেনা এবং ওঠেনি। ইতিহাস বড় নির্ম্মম। সে কারও ঔদ্ধত্ব কখনো মেনে নেয়নি সে যতবড় পন্ডিত বা ক্ষমতাসীন হ'ক না কেন? যিনি দায়িত্বহীন, স্বেচ্ছাচারী, স্বার্থপর তারা জগতে পূজ্য হন নিজের বাহুবল, অর্থবল ও মূর্খ, বেকুব, দুর্বল, ভীরু, ধান্দাবাজ, লোভী ইত্যাদি গুণে গুণান্বিত লোকবলের জোরে। আর ধমনীর আগুন নিভিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা যারই থাক যিনি দায়িত্বহীন, স্বেচ্ছাচারী, স্বার্থপর সে আর যে ক্ষমতাই রাখুক নারীর ধমনীর আগুন নিভিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা ঐ সমস্ত নপুংসকরা রাখে না। আর এটা মনে রাখতে হবে ঐ সমস্ত নপুংসকরা জানে না, 'সময় সবসে বড়া বলবান' কিন্তু বুদ্ধদেব বাবু (বসু)র মত পন্ডিত লোকেরা সেটা জানেন না এটাই আশ্চর্যের!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

প্রেক্ষিতের প্রয়োজনে কোথাও কোনও উক্তি করা যেতেই পারে কিন্তু তা' চিরকালীন সত্যে পরিণত হ'তে পারে না এবং হয়ও না। আর প্রেক্ষিতের প্রয়োজন হ'লেই আমাকে আধা সত্যের জয়ঢাক পেটাতেই হবে পূর্ণ সত্যের ভঙ্গীতে তাহ'লে তা' হবে লেখকের পক্ষে মিথ্যাচার। আচ্ছা অম্বিকা কি এই উক্তির মধ্যে দিয়ে নারী হিসাবে নিজে গর্ব বোধ করে না-কি দুঃখবোধ, অপমানবোধ করে? বুদ্ধদেব বাবু কি বলেন? আমি বলি, নারীর নিজের মান-সম্মান রক্ষা হয় বা পায় এমন প্রেক্ষিতের প্রয়োজনে লেখককে একটু ভেবেচিন্তে সতর্কতার সঙ্গে সম্মানজনক উক্তি করা উচিত যাতে তা সার্বজনীন না হ'য়ে যায়। অনেক মানুষে একসঙ্গে একই কথা বললেই সেটা সত্য হ'য়ে যায় না; তাই যদি হ'তো তাহ'লে পাঁঠাকে কুকুর মনে ক'রে ত্যাগ করার সাথে সাথে পাঁঠা কুকুর হ'য়ে যেতো। কেউ তার কপটতার জন্য সাময়িক সফল হ'তে পারে কিন্তু তাই ব'লে মিথ্যা সত্য হ'য়ে যায় না আর তা' গ্রহণযোগ্য হয় না। সাদৃশ্য থাকতেই পারে আর তাই ব'লে সাদৃশ্যের দোহাই দিয়ে সমষ্টিকে যেন গ্রাস না করা হয়। আর সংবাদপত্রে যা' প্রতীয়মান হচ্ছে বা হয় তা প্রায়শই আধা সত্য নাহয় অসত্য কিম্বা ভুল।

আর সফলতার পিছনে যেমন করাপশানের উল্লাস থাকে ঠিক তেমনি "Success makes success, as money makes money"--- সফলতা আসে সফলতার হাত ধরেই যেমন টাকা আসে টাকার হাত ধরে" ঠিক তেমনি সফলতার পিছনে থাকা সাময়িক মিথ্যা, কুৎসা, নিন্দা ইত্যাদি প্রচারকে পদদলিত ক'রে সফলতা একদিন সত্যকে তুলে ধরতেও সফল হয়ই কি হয়।

এগুলি হতাশার কথা। কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ বা যেকোনও লেখাই হ'ক না কেন কিম্বা ছবি ইত্যাদি যাই হ'ক না কেন বিষয়বস্তু লেখক বা শিল্পীর মানসিকতার প্রতিফলন। এ ধরণের হালকা লেখা লেখকের ভিতরের অস্থির অবস্থাকে তুলে ধরে, না পাওয়ার যন্ত্রনাকে প্রকাশ ক'রে দেয়। নেগেটিভ দৃষ্টিভঙ্গি সত্যের হাতিয়ার নয়। আবার অন্যদিক দিয়ে দেখতে গেলে যে পুরুষের ধমনীর আগুন নারীর স্পর্শে নিভে যায় সে পুরুষই নয়; সে আকৃতিতে পুরুষ হ'লেও প্রকৃতিতে নপুংসক। কারণ পুরুষের ধমনীর আগুন নিভে যায় তখনই যখন পুরুষ আদর্শহীন জীবন যাপন করে। যে পুরুষ আদর্শকে লক্ষ্য করে ছুটে চলে, সপারিপার্শ্বিক জীবন বৃদ্ধির পথে এগিয়ে যায় সেই আদর্শবান পুরুষের ধমনীর আগুনকে নিভিয়ে দেয় এমন নারী সৃষ্টির বুকে জন্মায়নি আর যদি কোনও নারী সেই চেষ্টা করে কোনও আদর্শবান পুরুষের উপর তাহ'লে তাকে অপমানিত হ'তেই হবে নিজের নারী সত্ত্বার উপর নিজের কারণে বলাৎকার হওয়ার জন্য। আর বুদ্ধদেব বাবু যে পূজনীয় (!?) মানুষগুলোর কথা লিখেছেন তাদের দোষ কোথায়? তারা তো ঐ ধরণের চারিত্রিক বৈশিষ্টসম্পন্ন! বৈশিষ্টই তো মানুষকে চালিত করে। এখানে আবার এই ধরণের মানুষদের নিয়ে আক্ষেপ কেন? কিসের জন্য? বুদ্ধদেব বাবুর কথানুযায়ী বলতে পারি; প্রথম কথা, পূজনীয় কখনোই দায়িত্বহীন, স্বেচ্ছাচারী, স্বার্থপর হয় না। দ্বিতীয়ত, ব্যাপারটাকে তিনি খিচুড়ি বানিয়ে দিলেন। এই খিচুড়ি বানিয়ে দেবার পিছনে জীবনে অনেক কিছু না পাওয়ার যন্ত্রণায় মুহূর্তের অন্যমনস্কতা তাকে গ্রাস করে আর তখনই জন্ম নেয় এই বিতর্কিত অথচ হালকা লেখা; এটা আমার ধারণা বা বিশ্বাস। গ্রহণ বা বর্জন ব্যক্তিগত। অবশ্য অনেকে ইচ্ছে করেই বিতর্কিত হ'য়ে উঠতে চায় সেখানে নিজের ভাবমূর্তির কোনও ক্ষতি হচ্ছে কিনা সেদিকে নজর দেবার প্রয়োজন মনে করে না প্রচারের লোভে।
যাই হ'ক এবার বলি, ঐ যে পূজনীয় (!?) যারা নারীকে হাতিয়ার ক'রে ধমনীর আগুন নিভিয়ে দেয় বা নিভিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে তারা আদপেই কোনও ক্ষমতার অধিকারী নয়। তারা কখনোই কারও ধমনীর আগুন নিভিয়ে দেয় না বা নিভিয়ে দেওয়ার বিন্দুমাত্র ক্ষমতা রাখে না। কারণ বুদ্ধদেব বাবু যাদের কথা বলেছেন সেই উভয় পক্ষই অর্থাৎ যিনি ধমনীর আগুন নেভান ও যাদের ধমনীর আগুন নেভে তারা উভয়তই রত্ন! আর কথায় আছে রতনে রতন চেনে। উভয়েই দায়িত্বহীন, স্বেচ্ছাচারী ও স্বার্থপর। এদের উভয়ের কারও ধমনীতে কোনওকালে কোনোদিনই আগুন ছিল না যে আগুন নিভিয়ে দেওয়ার বা নিভে যাবার প্রশ্ন উঠবে! আর এই ধমনীর আগুনহীন পুরুষকে সে যতই নষ্টা নারী হ'ক না কেন সেই নারী কখনোই শ্রদ্ধার আসনে, স্নেহ, মায়া-মমতা, ভালোবাসার আসনে বসায়নি ও বসায় না।কারণ সেই নষ্টা নারীও জানে মূল্যবোধহীন নেইআগুন পুরুষ মাত্রেই নপুংসক। আর নপুংসক পুরুষকে আনাড়ি নারীও ঘৃণা ও অশ্রদ্ধার চোখে দেখে। এদিক দিয়ে দেখতে গেলেও নারী এতটাই মহান!!!!!! আর যথার্থ যোগ্যা নারীর কথা আলাদা তারা প্রাথঃস্মরণীয়া! সে সামাজিক, সাংসারিক,পারিবারিক ব্যবস্থার কারণেই হ'ক বা নিজের কারণেই নষ্টা হ'ক বা নষ্টা নারী না-হ'ক!!!! পুরুষের থেকে নারী সবদিক দিয়ে এগিয়ে এই সমস্ত কারণেই।
আর, নারীকে এতই সস্তা মনে করার মানসিকতা কখনোই সুস্থ মস্তিষ্কের লক্ষণ নয় সে নারী যতই সস্তা ও সহজলোভ্যা হ'ক না কেন। লেখকদের এই ধরণের লেখা বা লেখার মানসিকতা অজান্তে ঐ আশ্চর্য পূজ্যদের(!?) হাতকেই শক্ত করে এবং নারীকে করে তোলে আরও অসহায় ও দিশেহারা এবং ঐ তথাকথিত ধমনীতে বয়ে চলা মিথ্যে আগুনধারীদের লড়াকু যোদ্ধা হিসাবে তুলে ধরার ব্যর্থ ও ভুল প্রয়াস মাত্র। (লেখা ২৮শে আগষ্ট'২০১৭)


Projukti Bondyopadhyay

আগষ্ট ২৮' ২০১৭

"আশ্চর্য!
তাঁরাই পুজ্য হন জগতে
যাঁরা দায়িত্বহীন, স্বেচ্ছাচারী, স্বার্থপর।
যাঁদের পক্ষে নারী
শুধু এক রন্ধ্রপথ, যার মধ্য দিয়ে
ধমনীর আগুন তারা নিবিয়ে দেন-প্রয়োজনমতো"
-বুদ্ধদেব বসু








Saturday, August 26, 2023

কে বাঁচাবে?

সেই Tradition আজও সামনে চলেছে!!!!!!!!! সেই অসৎ নারী, অসৎ ভাই, অসৎ পুলিশ অফিসার মিলে আজও ছেলেদের ফাঁসিয়ে অর্থ লুটের কারবার খুলে বসেছে!!!!!! কার কাছে যাবে অসহায় মানুষ!? মায়ের জাত নারী আজ রাক্ষসীতে পরিণত হয়েছে! ভাই বোনের পবিত্র সম্পর্ক আজ অর্থ লালসার শিকার হ'য়ে বোনকে হাতিয়ার ক'রে ভাই অর্থ রোজগারের ব্যবসা খুলে বসেছে! যে রক্ষক সেই আজ ভক্ষরের ভূমিকায় অবতীর্ণ!!!!!! আম আদমির রক্ষাকর্তা মাইবাপ পুলিশ আজ আম আদমির কাছে শয়তান কিলবিস রূপে আবির্ভুত!!!!!!! কে বাঁচাবে এই অসৎ নারী পুরুষের হাত থেকে!? এখন প্রশ্ন এই ঘোর অন্ধকার মাঝে আলো ধরে পথ দেখাবে কে!? কে আলো ধ'রে ঘরে পৌঁছে দেবে অসহায় বিপদগ্রস্থ মানুষকে এই ঘোর কলিযুগের ঘোর অন্ধকার থেকে!? কেউ নেই বন্ধু তোমার চারপাশে! তুমি একা! তুমি একা!! তোমার চারপাশে ঘোর অন্ধকার! ভাই নেই, বন্ধু নেই, আত্মীয় নেই, পরিজন নেই, স্বজন নেই, সুজন নেই, থানা-পুলিশ-প্রশাসন, ডাক্তার-উকিল ইত্যাদি ইত্যাদি কেউ কেউ নেই এই কিলবিসের তৈরি সমাজে!!!!!! কেউ কোথাও নেই! চারিদিকে এক ঘন কালো ভয়ঙ্কর অন্ধকার! যে অন্ধকার বিকট বিরাট হাঁ ক'রে গিলতে আসছে তোমায় অসৎ নারী, অসৎ পুরুষ, অসৎ ভাই, অসৎ বন্ধু, অসৎ পুলিশ, অসৎ উকিল, অসৎ ডাক্তার, অসৎ শিক্ষক, অসৎ নেতা, অসৎ ধর্মগুরু, অসৎ ব্যবসায়ী, অসৎ------------ইত্যাদি ইত্যাদি বেশে!!!!!!!!!!!
ঠিক এই সময়, এই অসৎ দমবন্ধ করা পরিবেশে কে আছেন এই তামাম বিশ্বে যিনি আমায় বিপাক পথে হাত ধ'রে পথ পার ক'রে দেবেন!? কে!? কে!? কে!? কেউ আছে যে গ্যারান্টি দিতে পারে শান্তি স্বস্তিতে বাঁচা ও বাড়ার পথ দেখাতে পারে, সামনে দাঁড়িয়ে দুহাত বাড়িয়ে রক্ষা করতে ঘোর বিপদ থেকে!?
তমসার পার অচ্ছেদ্য বর্ণ মহান পুরুষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র এই ঘোর অন্ধকারের ঘোর কলির শেষে ইষ্টপ্রতীকে আবির্ভুত হ'য়ে বললেন, মাভৈ! "যখন কেউ নিজের ভুলে ঘোর অন্ধকারে পথ হারিয়ে ফেলে তখন তাকে আমার আলো ধ'রে ঘরে পৌঁছে দিয়ে আসতে হয়!"
তাই ভয় নেই বন্ধু! আসুন ভয় দুর্বলতাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে পা দিয়ে দ'লে দিয়ে গেয়ে উঠি, "দয়াল আছে আর আমি আছি ভয় কি আর আছে আমার!!!!!!!!!."
জয়গুরু।
(লেখা ২৬শে আগষ্ট'২০১৯)

Wednesday, August 23, 2023

কবিতা, Mim Aktar-ও আমি

বাঃ চমৎকার!!!!!!!! অপূর্ব!!!!!! তবে একটু অন্যভাবে ভেবে দেখা যেতে পারে। তাই আপনার লেখাটা Share করে আমার Timeline-এ অন্যভাবে ভেবে দেখা আমার ভাবনাটা Post করলাম। লেখাটা বড় ও বিশ্লেষণমুখী। তাই লেখাটা এখানে Post করলাম। ভাল লেখা অন্য লেখার জন্ম দেয়। আপনার লেখাটাও তাই। আমাকে একটু গভীরে বিস্তারিত লেখার জন্য উৎসাহিত করে তুলল। ভাবের গভীরে নিয়ে যাবার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।

আমি বলি কি যা সত্য তাই সুন্দর আর যা সুন্দর তাই জীবন। আর সুন্দর জীবনে নেই কোনও কঠিন, জটিল, কষ্ট, মায়া আর যন্ত্রণার কোনও চিহ্ন। শুধু সেই জীবনে আছে সত্যের উপস্থিতির চিহ্ন। আর সত্য যেখানে সেখানেই সুন্দর, সেখানেই আনন্দের ধারা বহমান। আর সত্য মানেই ঈশ্বর। যাহা সত্য, তাহাই ঈশ্বর আর যাহা ঈশ্বর তাহাই সত্য। তাই ঈশ্বরই সত্য বাকি সব মিথ্যা। আর যখন ঈশ্বরকে মানি তখন আমার চারপাশের সব আমার কাছে সত্য হয়ে ওঠে। আর ঈশ্বরকে যখন মানি না আমার চারপাশের সব তখন আমার সামনে মিথ্যা হয়ে ওঠে। তখন ওই মিথ্যার মধ্যে দিয়ে আমার সামনে এসে আত্মপ্রকাশ করে কঠিন, জটিল, কষ্ট, মায়া আর যন্ত্রণার বিভীষিকা। ঐগুলি সব ভ্রম, ভূত, প্রেত ছাড়া আর কিছুই নয়।
তাই সত্যকে না মানার মানেই হ'ল সে সুন্দর থেকে বঞ্চিত এক মানুষ; যে মানুষ হয়েও বেহুঁশ। আর বেহুঁশের তো কোনও বোধ নেই। অসাড়, অবশ, অনুভূতিহীন, বোধশক্তিহীন। তাহ'লে কোথায় তার কাছে কঠিন, জটিল, কষ্ট, মায়া আর যন্ত্রণার উপস্থিতি? সে তো রক্ত মাংসের এক রোবট বই আর কিছই নয়! আর রোবটের কাছে কিসের কঠিন আর কিসের সহজ, কিসের জটিল আর কিসের সরল, কিসের কষ্ট আর কিসের আনন্দ, কিসের মায়া আর কিসেরই বা যন্ত্রণা? সব তো একাকার! রোবটের জীবনে আলাদা আলাদা কোনও উপস্থিতি তো নেই এসবের। তাই বলি, আমি পরিস্থিতির দাস হ'তে যাবো কেন? আমি কি কারও রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা চালিত? আমাকে এই বিশ্বব্রম্মান্ডের সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কে আছে যে আমাকে পরিস্থিতির দাস বানাবে? আমি আমার বা আমার চারপাশের পরিস্থিতিকে আমার দাস বানাবো। তবেই না আমার এই জীবনের সার্থকতা। তবেই না আমার বেঁচে থাকা। তবেই না আমি বুক ফাটো ফাটো করে মাথা উঁচু করে দিগন্ত কাঁপিয়ে স্বর্গ, মর্ত, পাতালকে জানান দিতে পারবো,
'শোনো কে কোথায় আছো তমসার পার অচ্ছেদ্য বর্ণ মহান পুরুষ ইষ্টপ্রতিকে আবির্ভূত হ'য়ে বলছেন, ওঠো, জাগো ভুলে যেও না তুমি মানুষ, মানুষ,মানুষ’।
আর আমি মানুষ বলেই আমি সমস্ত কষ্ট, যন্ত্রণা, মায়া, কঠিন আর জটিলতাকে দূরে সরিয়ে তাঁর আলোর পানে ছুটে যাবো। তাঁর আলোর দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখে পিছন ফিরে ছায়ার দিকে চেয়ে বলবো না অন্ধকার, অন্ধকার। তাঁর হাসি, আনন্দে মাখা সহজ সরল ঝলমলে মুখ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে কষ্ট, যন্ত্রণার দিকে চেয়ে ডেকে বলবো না আমার চোখে মুখে তোমার প্রলেপ এঁকে দাও, এঁকে দাও মনের আঙিনায় কঠিন আর জটিলতার আলপনা। এর পরেও যদি তাঁর সংস্পর্শে 'ওইসব' আসে আসুক, তাঁর দেওয়া বা না দেওয়া 'ওইসব' মাঝে আছে প্রিয়তমের মঙ্গলইচ্ছা।
তবে পরিস্থিতিকে আমার দাস বানাতে গেলে আমাকে প্রথমে তাঁর দাস হতে হবে। তা ব্যতীত আমি মালিক, আমি প্রভু এই মানসিকতায় যদি পরিস্থিতিকে দাস বানাতে যাই তাহ’লে সমাজের বুকে আমি রাবণ, কংস, দুর্যোধন ইত্যাদির মত ভয়ংকর চরিত্র হ’য়ে উঠবো। আর তার ফলে ঐ সমস্ত কষ্ট, যন্ত্রণা, মায়া, কাঠিন্য আর জটিলতা আমার জীবনকে রাহু, কেতুর মত গ্রাস করে ফেলবে।
আর যদি তাঁর দাস হয়ে পরিবেশ, পরিস্থিতিকে আমার অনুকূলে আনতে চাই তাহ’লে সেই পরিবেশ, পরিস্থিতি আমার চাওয়ার আগেই আমার করায়ত্ত হবে অনায়াস স্বাচ্ছন্দ্যে। তাই তো বলি,
কোথায় দুঃখ, কোথায় কষ্ট, কোথায় আমার যন্ত্রণা?
জীবন মাঝে কোথায় কঠিন, কোথায় জটিল? আর
মায়া মমতার উন্মাদনা? জীবন আমার উদাস বাউল
উদার আমার জীবন আকাশ, জীবন আমার রামধনু
জীবন আমার মলয় বাতাস। জীবন মাঝে রপোলি চমক
মেঘমল্লারের বন্দনা! ঝরঝর সেই বরষণ বয়ে চলে
খরশান অবিরত প্রাণে প্রাণে নেই তার কোনও সীমানা!
পরম সত্তার তরে জীবন আমার উদার আকুল উন্মনা
জীবন জুড়ে আছে ভরে শুধু পরমেশ প্রভুর মন্ত্রণা!
জীবন জুড়ে শুধুই আলো, শুধুই জ্যোতির বিচ্ছুরণ
জ্যোতির মাঝে হারায় ‘আমি’ সত্তা খোঁজে জীবনস্বামী
জীবন জুড়ে শুধুই সাড়া পরম সত্তায় উত্তরণ!
আর তুমি,
জীবন খুঁজে মরছো কোথায়? কোথায় ফেলেছো নোঙ্গর তুমি?
দুঃখ, কষ্ট, জ্বালা, যন্ত্রণা, শোক, তাপ, ব্যথা-বেদনা
শব্দেরা সব মিলেমিশে মারে তোমায় সেথায় পিষে;
‘কঠিন’ ‘জটিল’ সব শব্দ ঘিরে নরক করেছে ধীরেধীরে
তোমার জীবন ভুমি। আবাদ তাই হ’ল না বন্ধু
বহু ফসলী তোমার জমি!
এখন তুমি......
জীবন যদি চাও পেতে রাখো হাত আমার হাতে
ঐখানেতে যাবো নিয়ে আলোয় ভুবন ভাসিয়ে দিয়ে
তমসার ওপার হ'তে যেথায় হাসিমুখে দাঁড়ায় এসে
জীবনস্বামী, বরাভয় দিয়ে দু’হাত তুলে বলছে হেসেঃ
আয়, বুকে আয়, আয়রে তোরা, করি ত্বরা
কোমর বেঁধে ছুট্টে সবাই, হেত্থায় জীবন খুঁজে পাবি।।
( লেখা ২৪শে আগষ্ট'২০১৫)

Mim Akter
বাস্তব বড় কঠিন, তবুও মানুষকে মেনে নিতে হয়।
জীবন এত জটিল, তবুও মানুষকে বেচে থাকতে হয়।
ভালবাসা বড় কষ্টের, তবুও মানুষকে ভালবাসতে হয়।
পৃথিবী এত মায়ার, তবুও তাকে ছেড়ে যেতে হয়।
মৃত্যু এত যন্ত্রনার, তবুও তাকে বরন করতে হয়।
....কেন????........ আসলে মানুষ পরিস্থীতির দাস!!!!!!

!

কবিতা/গানঃ আহা! চোখ তো নয় যেন হীরে

 

(লেখা ২৩শে আগষ্ট'২০২০(

কবিতা/গান

 

( লেখা ২৪শে আগষ্ট'২০২০)

Monday, August 21, 2023

কবিতাঃ জীবন করো সার্থক।

এসো-------
লেখক, কবি, শিল্পী তোমরা আছো যত বিশ্বে
লেখ কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস আর আঁকো ছবি,
গাও মানবতার জয়গান বিবেককে রেখে সাক্ষী।
তোমাদের দিকে আছে চেয়ে সিক্ত চোখে দয়াল;
ঈশ্বর তুমি মানো আর না-মানো
তাঁর জীবন্ত উপস্থিতি জানো আর না জানো
হও তুমি আস্তিক কি নাস্তিক
কাঁদে মানুষের তরে তাঁর প্রাণ চিরকাল!
এ সত্য, চিরসত্য, তিন সত্য;
জীবন্ত হ'য়ে আসেন তিনি বারেবারে
পান্ডিত্যের ঠুনকো অহঙ্কারে রাখো তাঁরে ক'রে ব্রাত্য!
আমাদেরই তরে জেনো তুমি আসেন তিনি নিশ্চিত!
তোমাদের কাছে তাঁর আহবান---
উঠাও কলম আর হাতে ধরো তুলি
শব্দ আর রঙ দিয়ে আঁকো জীবনের ছবি।
গানে গানে দাও ভরিয়ে ভুবন জীবনের তরে
বাঁচা আর বাড়ার গানে জাগাও জীবন
বৃত্তি প্রবৃত্তির জাল ছিন্ন ক'রে;
এসো বেরিয়ে রিপু তাড়িত জীবন থেকে
নয় মরণ, নয় তরণ থাকো জীবন নিয়ে শুধু মেতে।
তাত্ত্বিক আমেজে মগ্ন হ'য়ে আর
একচক্ষু হরিণ হ'য়ে নয় থাকা,
নয় মিথ্যের বেসাতি ক'রে জীবনে বেঁচে থাকা!
তুমি কবি, তুমি শিল্পী, তুমিই লেখক গায়ক
মনে রেখো নও তুমি হাল্কাপুল্কা সস্তা তালিবানি নায়ক!
মহাভারতের ভীষ্মের মত যত কলঙ্কিত চরিত্র হ'য়ে
থেকো না তুমি মুখ ফিরিয়ে সত্য থেকে,
থেকো না তুমি রত্ন, বিভূষণ, ভূষণ আর শ্রী-র লোভে
সস্তা জীবনের অধিকারী হ'য়ে।
তোমার কলম গর্জে উঠুক, গর্জে উঠুক মিথ্যে আর
কপটতায় ভরা নিজের নীল মূত্রপাতের বিরুদ্ধে!
সত্যকে করো তুমি অন্বেষণ, সত্যিকে করো উন্মোচন
তোমার বুদ্দিদীপ্ত বলিষ্ঠ কলমের আঁচড়ে!
তোমার মেধা, তোমার বুদ্ধি, তোমার জ্ঞান
নয়তো এ সহজলভ্য, তোমার ধমনিতে ব'য়ে যাওয়া
এ পূর্বপুরুষের গুণাবলী ক'রো তাকে ও তাঁদের সম্মান।
দিও তাকে ইজ্জৎ স্বস্তি আর আত্মার আরাম!
দিও না তাকে বিকিয়ে রিপু তাড়িত বৃত্তি-প্রবৃত্তির টানে,
দিও না তাকে যেতে হারিয়ে কুচক্রীর চোরাগলিতে।
মানো আর না মানো তাঁকে কিম্বা আমার কথা
মানো নিজের অস্তিত্ব আর অস্তিত্বের ব্যথা।
তোমার অস্তিত্বের উৎকর্ষতাকে দিও না হ'তে বিলুপ্ত
তোমার পরবর্তী প্রজন্মের ব'য়ে যাওয়া ধমনীতে
অকৃতজ্ঞতা, বেইমানি আর নেমকহারামির
বিষাক্ত ছোঁয়ায় আর কুসংস্কারের হাতছানিতে।
এসো কবি! এসো লেখক! যত বুদ্ধিজীবী!
চুরাশি লক্ষ যোনি ভ্রমণ ক'রে অবশেষে আসা
এ মনুষ্য জীবন করো সার্থক তুমি।
(লেখা ২১শে আগষ্ট'২০২১)

Friday, August 18, 2023

Viicky! Wow!!!!!!! What a tremendous magical incident!!!!!!!!

VICKY, What a happy news as well as happy moment!!!!!!!!!! Congrats my son, mamy mamy congrats!!!!!! But i think otherwise. Madhurima Mukherjee-r "Congo vai but BBA thake software....." ei kathata Ami nijeo majhe majhe vabi. Mone pore zai BBA-te vortir prothom dintar katha. Tomai BCA-te vorti na kore keno ze BBA-te vorti korechhilam vebe vebe abak hoye zai. Zokhon tokhon Computer, Tape Recorder etc. khule fela tarpor edik odik narachara kore fele rakha eguli savabik byapar chhilo tor kachhe.kintu asavabik byapar holo BBA-te join kora. BBA-er Final year-er age ekbar NIIT R ekbar JET KING-e vorti hobar prai sob thik hoye gechhilo kintu ta hoini THKUR BARIR apottite. Porom Pujyopado SriSriBabaidada onumoti denni. Mone pore tor sedin SriSriBabaidada ki bolechhilen? BBA-er Final Exam. debar por zokhon tui bolechhili Babaidadake tor computer khub valo lage, kono computer course korbi kina tokhon ek kathai tini nakoch kore diye bolechhilen, "Orokom onek kichhu ichchha korbe tumi ekhon BABAR pashe darao, ekhon tomar BABAR pashe darate hobe. Keno bolechhilen ei kothata? Tinito kichhu janten na, tahole keno bolechhilen. Zai hok, Tarpor tui chakrir chesta korte lagli r prottyekta Interview-te last round-e giye reject hoye zachchhili. Ei IT sector CAPGEMINAI-e interview dite zabar age zokhon tui BABAIDADA-ke bolechhili ei interview-te failure-er kathaguli tokhon SRISRIBABAIDADA ki bolechhilen? Tini bolechhilen "Ebar (CAPGEMINAI) chakri pabar akuti niye interview dite zabe na, emni anondo korte korte zabe". Mone pore sedingulir kotha? Tarpore sobtai ITIHAS. BBA-er student holo IT sector-er employee!!!!!!!!!!!!!!!!!!! R aaj se SOFTWARE ENGINEER !!!!!!!!!!!!!
Wow!!!!!!! What a tremendous magical incident!!!!!!!! REMEMBER MY SON! REMEMBER THE BLESSINGS OF LIVING SUPREME BEING SRISRITHAKUR ANUKULCHANDRA THROUGH REV. BABAIDADA!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!! DON'T FORGET MY SON HIS LIVING PRESENSE ON YOU THROUGH THIS MIRACULOUS BLESSING TILL DEATH; DON'T FORGET. MANY MANY WONDERFUL FUTURE WAITING FOR YOU. SURRENDER YOURSELF UNDER HIS CRIMSON FEET.
( লেখা ১৮ই আগষ্ট'২০১৬ )


Thursday, August 10, 2023

শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী।

আজ ১১/০৮/২০২০ মঙ্গলবার (বাংলা ২৬সে শ্রাবণ ১৪২৭) পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণের জন্ম তিথি। দেশজুড়ে পালন হচ্ছে তাঁর জন্মাষ্টমী। হিন্দু পঞ্জিকা মতে, সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয়, তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়। প্রতি বছর এই তিথির তারিখ পরিবর্তিত হয়। 

এইবছর জন্মাষ্টমীর তারিখ বুধবার ৬ই আগষ্ট'২০২৩। তাঁর গীতায় বলা বাণী স্মরণ করছে শ্রদ্ধার সঙ্গে কৃষ্ণভক্ত, ঈশ্বরবিশ্বাসী মানুষ!

“যদা যদাহি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মনং সৃজাম্যহম্। পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্ ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।'
অর্থাৎ
যখন যখন ধর্মের গ্লানি হয়, অধর্মের উত্থান ঘটে, তখন তখন সজ্জনদের পরিত্রাণ, দুষ্কৃতকারীদের বিনাশ এবং ধর্ম সংস্থাপনের জন্য, অন্যায়ের প্রতিবিধান করে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার জন্য ভগবান জীবদেহ ধারণ করে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন।
কিন্তু আমরা কি এই বাণীর মর্মার্থ কি তা’ বুঝি, মানি বা বিশ্বাস করি? যদি এর মানে বুঝবোই, এই কথা মানবোই এবং বিশ্বাস করবোই তাহ’লে আজ ধর্মের এই অবস্থা কেন? কেন ঈশ্বর বিশ্বাসী মানুষের আজ করুণ অবস্থা? প্রশ্ন জাগে মনে আমরা ঈশ্বর বিশ্বাসী মানুষেরা, কৃষ্ণপ্রেমীরা কি এই বাণীর মর্মাথ সত্যি সত্যিই বুঝেছি??????? কৃষ্ণের জীবনের কঠিন কঠোর শারীরিক ও মানসিক অবস্থানের দিক খেয়াল করেছি? লক্ষ্য করেছি শাসক হিসেবে, নেতা হিসেবে, যোদ্ধা হিসেবে, বিচারক হিসেবে, বন্ধু হিসেবে তাঁর নিখুঁত উপস্থিতি? তিনি যে আবার বারবার আসবেন ব'লে কথা দিয়েছিলেন তা তিনি কি সত্যি সত্যিই তাঁর কথা রেখেছেন? নাকি কৃষ্ণ ভক্ত সেজে, সনাতন ধর্মের একক অভিভাবক সেজে ধর্মের আঙিনায় একচ্ছত্র অধিপতি হ'য়ে খালি ঘাই মেরেছি? তাহ'লে তাঁর বারবার ফিরে আসা সত্ত্বেও ধর্মের, ধর্ম বিশ্বাসী মানুষের আজ এই করূণ অবস্থা কেন? না-কি সবটাই অজ্ঞানতার অন্ধকারে ডুব দিয়ে, তাত্ত্বিক আমেজে মজে গিয়ে নিছক ভালোবাসা কিম্বা ভন্ডামি??????????
কেন শ্রীকৃষ্ণকে পরমপুরুষ, জীবনস্বামী, পুরুষোত্তম ও মানবজাতির মুক্তির প্রাণপুরুষ বলা হয়? আসুন তাঁর বাঁশি হাতে, গোপীনি সাথে, বালগোপাল রূপে নাড়ু খেতে দেখা পরিচিত দিক ছেড়ে প্রকৃত তাঁর ভয়ঙ্কর কঠিন-কঠোর আর অসীম মানবতার কোমল রূপ দেখি।
শ্রীকৃষ্ণ শৈশবেই দুর্ধর্ষ আর অপ্রতিরোধ্য প্রকৃতির ছিলেন। পুতনা রাক্ষসী সহ অন্যান্য রাক্ষসদের এবং কালীয় নাগকে হত্যা ক’রে তিনি নিজের ও বৃন্দাবনবাসীর জীবনরক্ষা করে শৈশবেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে তিনি নিছকই একজন সাধারণ মানুষ নন! রহস্যময় তাঁর জীবনের প্রতি অধ্যায়ে অধ্যায়ে লুকিয়ে আছে ঘটনার ঘনঘটা! যৌবনে কৃষ্ণ তাঁর মামা কংসের অনুগামীদের দ্বারা সংঘটিত বহু হত্যার ষড়যন্ত্র থেকে আত্মরক্ষা ক’রে কংসকে বধ করেন এবং সেখানে কংসের পিতা উগ্রসেনকে পুনরায় যাদবকুলের রাজা হিসেবে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করেন এবং নিজে সেখানে অন্যতম যুবরাজ হিসেবে অবস্থান করেন। এই ধরণের ভয়ঙ্কর শত্রুদের বিরুদ্ধে কৃষ্ণের একক কৌশলী লড়াই ও তাদের পরাস্ত করা প্রমাণ করে কৃষ্ণ অসাধারণ চৌকশ মেধাবী শক্তিশালী প্রখর কূটবুদ্ধিসম্পন্ন পুরুষ ছিলেন যা বর্তমান উন্নত সামরিক শক্তিসম্পন্ন যে কোন দেশের যে কোন মিলিটারি জেনারেলের দুর্ধর্ষতাকে হার মানায়। এইখানে একটা লক্ষ্যনীয় বিষয় হ’ল ইচ্ছে করলে তিনি নিজেই স্বাভাবিক নিয়মেই মথুরার সিংহাসনে বসতে পারতেন কিন্তু তা’ তিনি করেননি। চেদি দেশের রাজা শিশুপালের একশত ঘৃণ্য অপরাধ সহ্য করা এবং তাকে ক্ষমা ক’রে শুধরে যাবার সু্যোগ দেওয়ার মধ্যে দিয়ে কৃষ্ণের চূড়ান্ত সহনশীলতা ও সংশোধনের মাধ্যমে ‘বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠা’-র মানসিকতার প্রমাণ পাওয়া যায় এবং এর সাথে এও প্রমাণ পাওয়া যায় একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর সমাজের স্বার্থে, মানবজাতির স্বার্থে সঠিক সময়ে প্রয়োজনে তিনি কতটা ভয়ংকর হ’য়ে উঠতে পারেন। শিশুপালের একশো একটা অপরাধের পর কৃষ্ণের ভয়ংকর হ’য়ে ওঠা এবং পরিশেষে নির্মম হত্যা প্রমান করে যে তার সীমাহীন চরম সহনশিলতা এবং নিজেকে সংশোধনের মাধ্যমে বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার জন্য সুযোগ দেওয়াকে যেন কেউ তার চরিত্রের দুর্বলতা বলে মনে না করে। এখানেই তিনি প্রমাণ করেছিলেন কেন তাঁকে পরমপুরুষ বলা হয়ে থাকে।
পরবর্তী সময়ে প্রাচীন গুজরাটে শ্রীকৃষ্ণ দ্বারকা নামে রাজ্য প্রতিষ্টিত করেন। ঠিক ঐ সময় কামরুপের রাজা ছিলেন অত্যাচারী, ধর্মদ্রোহী, নারী হরণকারী নরকাসুর। তিনি তার রাজত্বকালে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মানবতা বিরোধী চরম অত্যাচার চালিয়ে মানব সমাজের অস্তিত্বকে বিপন্ন ক’রে তোলেন। তিনি এতটাই নারকীয় আসুরিক ক্রিয়াকলাপে যুক্ত থাকতেন যে তাকে শুধু ‘অসুর’ না একেবারে সরাসরি নরকের অসুর ‘নরকাসুর’ আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। তিনি ভৌতিক শক্তি বলে বিভিন্ন রাজ্য থেকে নারী অপহরণ ক’রে ভোগের উদ্দেশ্যে নিজের কারাগারে বন্দী করে রাখতেন। সেই সময় প্রবল পরাক্রান্ত এমন কেউ ছিল না যে এমন ভয়ংকর নরপিশাচের হাত থেকে নারীদের তথা সমাজকে রক্ষা করে। আজকের এই বিজ্ঞানের চরম উন্নতির সময়ে, নানা 'বাদ'-এর উপস্থিতিতে বিশ্বে কোন দেশে এমন কেউ প্রবল পরাক্রান্ত ব্যক্তিত্ব আছেন না-কি যে আজকের দিনের নরপিশাচদের হাত থেকে আজকের নারীদের তথা বর্তমান সমাজকে রক্ষা করবে?
যাই হ'ক, এরপরই ঐ ভয়ংকর নরপিশাচের মানবতা বিরোধী নারকীয় ক্রিয়াকলাপে কৃষ্ণ ভয়ংকর ক্রুদ্ধ হ’য়ে ওঠেন ও তাকে হত্যা করে সমাজে সুখ শান্তি ফিরিয়ে আনেন এবং নরকাসুরের কারাগারে বন্দী ১৬১০০ নারীকে উদ্ধার করেন। নরকাসুরকে হত্যা করার পর কৃষ্ণ কামরূপের যুবরাজ ভগদত্তকে ঐ সিংহাসনে প্রতিষ্টিত করেন। কিন্তু সেই সময়ে বন্দী নারীদের সমাজে কোন সম্মান ছিল না এবং তাঁদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে এনে তাদের পুনরায় বিবাহের মাধ্যমে গার্হস্থ্য জীবনে প্রবেশের কোন উপায় ছিল না। তাই কৃষ্ণ সেই অসুরের কারাগার থেকে উদ্ধার করা অসহায় নারীদের সম্মান রক্ষার্থে এবং সমাজের কুটিল আবর্তে আবার হারিয়ে যাবার আগেই সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে এনে তাঁদের সম্মানের সঙ্গে মাথা উচু ক’রে বাঁচা ও বেড়ে ওঠার সুযোগ ক’রে দেবার মহৎ উদ্দেশ্যে শুধুমাত্র তাদের বিবাহ করেন এবং তাদের স্বনির্ভর ক'রে তোলেন! আর যেহেতু প্রবল পরাক্রান্ত পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণের তাঁরা স্ত্রী ছিলেন তাই সমাজে তাঁরা মাথা উঁচু ক'রে সসম্মানে বাস করতেন আর কোনও দুষ্টের সাহস হ'তো না শ্রীকৃষ্ণের মহিষীদের দিকে চোখ তুলে তাকাবার! সেই সময় কৃষ্ণের সমস্ত মহিষীগণই দেবী লক্ষ্মীর অবতার হিসাবে সমাজে পুজিত হতেন। এইখানেই, যুবরাজ ভগদত্তকে কামরুপ রাজ্যের রাজা হিসাবে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করা এবং ১৬১০০ নারীর সম্ভ্রম রক্ষা ক’রে তাঁদের লক্ষীর অবতার হিসাবে সমাজে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার মধ্যে দিয়ে আবার তিনি প্রমান করেন কেন তাঁকে জীবনস্বামী বলা হয়। আছে নাকি এমন পুরুষ তামাম বিশ্বে!?
মহাভারতের যুদ্ধ এবং তার পরিণতিতে কৃষ্ণের প্রভাব ছিল গভীর, তীব্র। মহাভারতের যুদ্ধকে থামাবার জন্য দু’পক্ষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের আপ্রাণ চেষ্টা যখন তাঁর ব্যর্থ হ’ল তখন কৃষ্ণের প্রখর কূটবুদ্ধির পরিচয় পেল সমগ্র মানবকূল! তাঁর ক্রূর কূটনীতিকের ভুমিকা মহাভারতের ভয়ংকর মহাযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সমস্ত রাজ্যের তাবড় তাবড় মহাবীর যোদ্ধাদের স্তম্ভিত ক’রে দিল! অথচ সেই ভয়ংকর নির্ম্মম কুটিল ঘোর মহাযুদ্ধে কৃষ্ণ যুদ্ধ করা তো দূরের কথা কোন অস্ত্রই হাতে নেননি! উপরন্তু সেই যুদ্ধে তিনি অর্জুনের রথের সারথীর ভুমিকা পালন করেছিলেন মাত্র! যুদ্ধ শুরুর সময় থেকে হতবল অর্জুনের মনোবলকে চাঙ্গা করার জন্য জীবন সম্পর্কে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিশ্লেষণ থেকে শুরু ক’রে একে একে ভীষ্ম, দ্রোণাচার্য, কর্ণ, জয়দ্রত এবং কৌরব প্রধান দূর্যোধন সহ সকল সেনাপ্রধানকে বধ করার অতুলনীয় ও অপ্রতিরোধ্য ক্রূর কৌশল পৃথিবীর ইতিহাসে আজও বিস্ময়ের সঙ্গে স্মরণ করা হয়ে থাকে! আঠেরো দিন ধরে চলা এই সংহারক যুদ্ধে ভারতবর্ষের বহু রাজার প্রাণ যায়। যুদ্ধ শেষে আবার রাজত্ব ফিরে পান জ্যেষ্ঠ পাণ্ডুপুত্র যুধিষ্ঠির।
মূলতঃ কৌরব ও পাণ্ডবদের গৃহবিবাদ থেকেই এই মহাভারতের যুদ্ধ শুরু। এই গৃহযুদ্ধকে ঠেকাতে গিয়েই কৃষ্ণ আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়েন এবং মহান মানবতা রক্ষার স্বার্থেই তিনি এই যুদ্ধকে পরিচালনা করেন। কিন্তু যুদ্ধে তিনি কখনোই অস্ত্র ধারণ করেননি। একবার মাত্র তিনি একটি রথের চাকাকে অস্ত্রে পরিণত ক’রে ভীষ্মকে আক্রমণ করতে উদ্যত হয়েছিলেন। এর পিছনেও ছিল তাঁর ক্রূর কূটিল চাল। পিতামহ ভীষ্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধে দ্বিধাগ্রস্থ অর্জুন ভীষ্মের ভয়ঙ্কর আক্রমণে যখন পর্যুদস্ত ঠিক সেই সময় অর্জুনকে রক্ষা করতে কৃষ্ণ ঢাল হয়ে অর্জুনকে ভীষ্মের হাত থেকে বাঁচান। এর ফলে আঘাতপ্রাপ্ত কৃষ্ণ ভীষ্মকে ক্রোধে আক্রমণ করতে উদ্যত হন। এতে অর্জুন লজ্জিত হন এবং নিজের কৃতকর্মের জন্য কৃষ্ণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং পূর্ণ উদ্যম নিয়ে যুদ্ধ করার প্রতিজ্ঞা করেন। এখানে একসঙ্গে কৃষ্ণ দু’টি নিদর্শন স্থাপন করলেন। এক, নিজে অস্ত্র ধারণ করার মধ্যে দিয়ে তিনি অর্জুনের অর্জুনত্বকে আঘাত ক’রে তাঁর চেতনাকে জাগ্রত করলেন অন্যদিকে তিনি সামান্য রথের চাকারুপী অস্ত্র ধারণ করলে কি মহাপ্রলয় হ’তে পারে তারও ঈঙ্গিত দিয়েছিলেন! কিন্তু তিনি অস্ত্র ধরেননি কারণ তিনি দেখাতে চেয়েছিলেন মানবজাতীকে আঠেরোদিনের যুদ্ধের প্রতিদিনের ধর্মের জয় আর অধর্মের পরাজয়ের জীবন্ত ছবি! এর মধ্যে দিয়ে তিনি বারেবারে প্রমান করেছিলেন কেন তাঁকে পুরুষোত্তম বলা হয়!
বৃষ্ণি বংশীয় সত্রাজিত ছিলেন দ্বারকার বিশিষ্ট নাগরিক। সূর্যদেব সত্রাজিতের ভ্রাতা প্রসেনকে স্যমন্তক মণি উপহার দেন। শ্রীকৃষ্ণ সত্রাজিতের কাছে স্যমন্তক মণি দেখতে চাইলে সত্রাজিত তাঁকে মণিটি দেখান এবং শ্রী কৃষ্ণ চলে গেলে সত্রাজিত ভাই প্রসেনকে স্যমন্তক মণিটি দিয়ে তাকে আত্মগোপন করে থাকতে বললেন এবং পরে প্রচার ক’রে দেন যে শ্রী কৃষ্ণ মণিটি দেখে চলে যাবার পর মণিটি আর পাওয়া যাচ্ছে না। এই বদনাম কৃষ্ণকে অনুপ্রাণিত করে মণিটি খুঁজে বার করার জন্য। পরে তিনি অনেক অনুসন্ধানের পর ভল্লুকরাজ জাম্ববানের কাছে স্যমন্তক মণির সন্ধান পেলেন। সেখান থেকে মণিটি উদ্ধার ক’রে এনে তিনি দ্বারকার সকল বিশিষ্ট নাগরিকের সামনে ঘটনাটি তুলে ধরেন এবং দ্বারকার সকল বিশিষ্ট নাগরিকের দেওয়া রায় সত্ত্বেও শ্রীকৃষ্ণ স্যমন্তক মণি গ্রহণ করেননি, ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সত্রাজিতকে। এখানেও প্রমাণ হয় বৃত্তি-প্রবৃত্তির কতটা উর্ধ্বে তিনি বিচরণ করেন এবং কেন তাঁকে মানবজাতির মুক্তির প্রাণপুরুষ বলা হয়!
কিন্তু ধর্ম ও ঈশ্বর বিশ্বাসী সাধারণ অজ্ঞ মানুষ, চূড়ান্ত বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে ডুবে থাকা রিপু তাড়িত ভাঙ্গাচোরা মানুষ আজ কৃষ্ণকে নিয়ে শুধু 'বালগোপাল, বালগোপাল' খেলা-ই করে আর লাড্ডু, মালপোয়ার মধ্যে তাঁর জীবন দর্শন খুঁজে পায়!!!!!!!!! তাঁর বাণী "যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত........................সম্ভবামি যুগে যুগে" প্রয়োগ করে যত্রতত্র এবং যে কোনও ব্যক্তির মধ্যে তাঁর প্রতিফলন দেখতে পান!!!!! কিন্তু দেখতে পান না তিনি যে তাঁর বলা অনুযায়ী তাঁর আসার আগে পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীরাম রূপে এসেছিলেন আর তারপর বুদ্ধ রূপে, যীশু রূপে এসেছিলেন আর যীশু রূপে এসে বলেছিলেন I shall come again. & again. সেই কথা রাখতে তিনি হজরত মহম্মদ রূপে এবং চৈতন্য মহাপ্রভু এসেছিলেন! তারপর মহাপ্রভু রূপে কৃষ্ণ মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য বলেছিলেন, এইমত হবে মোর দুই অবতার, নাচিবো কীর্তনানন্দে তোমা সবাকার! সেইমত কথা রাখতে শ্রীশ্রীকৃষ্ণ শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণ রূপে এলেন আর ব'লে গেলেন 'আমি যাবো আর আসবো'! সেইকথা রেখে তিনি রামকৃষ্ণ রূপে দেহ রাখার ২ বছর ২৯ দিনের মাথায় আবার নেবে এলেন মানুষ রূপে মানুষ মায়ের গর্ভে মাটির পৃথিবীতে রক্তমাংসের শরীর নিয়ে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র রূপে!!!!!. গীতায় ব'লে যাওয়া তাঁর কথা তিনি নিজে বারবার এসে রেখে গেলেন!
আর শেষরূপে এসে ব'লে গেলেন "যা দিয়ে গেলাম আগামী দশ হাজার বছরের মধ্যে কিছু লাগবে না।" অর্থাৎ হয়তো আগামী দশ হাজার বছর পুরুষোত্তম ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র রুপী শ্রীকৃষ্ণ আর মানবদেহে আসবেন না, আসার দরকার হবে না। তার জন্য তিনি রেখে গেছেন আচার্য পরম্পরা!!!!!!!
আজ শুধু ভারাক্রান্ত হৃদয়ে এই টুকুই বলতে ইচ্ছে করে, যেমন "পঞ্চ ভুতের ফাঁদে, ব্রহ্মা পড়ে কাঁদে"! ঠিক তেমনি, ভক্তকুল মাঝে জীবন্ত ঈশ্বর বাঁধা পড়ে কাঁদে! হে ঈশ্বর তুমি আমাদের অজ্ঞানতাকে, অহংকারকে ক্ষমা ক'রো! (লেখা ১১ই আগষ্ট'২০২০)

প্রবন্ধঃ বাঁচো, বাঁচাও ও বাঁচতে দাও।

রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত ভোট আগত। শুরু হয়েছে প্রচার। শুরু হয়েছে দেওয়াল লিখন। ভোটের দামামা বাজার সঙ্গে সঙ্গে আরও একটা দামামা বাজার শব্দ ভেসে আসছে কানে সঙ্গে ভেসে আসছে গানের কয়েক কলি।

ওরে বাবা দেখ চেয়ে
যম রাজা চলেছে সমরে!
ওরে বাবা দেখ চেয়ে
যম রাজা চলেছে সমরে!
যম সেনা! যম সেনা!
হাজারে হাজারে
হাতিয়ার বুঝি
কাটাকুটি করে!
কাটাকুটি কাটাকুটি
হাজারে হাজারে
হাতিয়ার বুঝি
কাটাকুটি করে
আহা রে, আহা রে!
আহা রে!
যৌবনে ও কয়েক বছর আগেও দেওয়াল লিখন কর্মযজ্ঞের সঙ্গে সক্রিয়ভাবেই যুক্ত ছিলাম। দেখেছি দেওয়াল লিখনের সুন্দর ও কদর্য ভাষা এবং শিল্পনৈপুণ্য। ৭০ দশকের হঠকারী নকশাল আন্দোলনের সমাপ্তির পর একটা অদ্ভুত দেওয়াল লিখন দেখেছিলাম। একজন অবসাদগ্রস্ত, হতাশ, ক্লান্ত, বিধ্বস্ত, রাজনৈতিক কর্ম্মকান্ডে বীতশ্রদ্ধ, জীবনযুদ্ধে পরাজিত মানসিকভাবে ক্ষতবিক্ষত নকশাল বন্ধুর দেওয়াল লিখন দেখেছিলাম। নকশাল আন্দোলনের ভয়ংকর পরিণতি দেখে সে লিখেছিলঃ
"চার অক্ষর জনগণ
রইলো তোদের নির্বাচন,
চললাম আমি বৃন্দাবন।"
তারপর কোথায় কোন বৃন্দাবনে যে সে হারিয়ে গেল তা আর জানা যায়নি। সমাজ ও সমাজের তার বন্ধুবান্ধব, তার রাজনৈতিক সাথী, নেতা, পরিবার-পরিজন ইত্যাদি কেউ তার খোঁজ রাখেনি, রাখবার প্রয়োজন মনে করেনি। কেউ প্রয়োজন মনে করে না। এটাই জ্বলন্ত সত্য, নির্ম্মম অপ্রিয় নগ্ন সত্য। আর প্রয়োজন মনে ক'রে তাকে খুঁজে ফিরিয়ে আনতে, সমাজের মূল স্রোতে কিম্বা পরিবারে ফিরিয়ে দিতে বাড়ির খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো এমন সরল বেকুব মহাপ্রাণ কেউ উদ্যোগ নিলেও সমাজ ও সমাজের প্রশাসন তা প্রয়োজন মনে করেনি। করে না। প্রয়োজন মনে করেনি, করে না ভোট পরবর্তী সময়ে নেতা-অভিনেতা-বুদ্ধিজীবি ইত্যাদি জমিদার থেকে জমাদার সমস্ত স্তরের মানুষ। কারণ তখন ক্ষমতা দখল ও আপন ঐশ্বর্যের সাম্রাজ্য বিস্তারে জয়ীরা ও ধান্দাবাজেরা মত্ত-উন্মত্ত। কারও সময় নেই আর পিছন ফিরে তাকাবার। কে কাকে ডিঙিয়ে কত দ্রুত কত তাড়াতাড়ি তড়িৎ গতিতে জয়ী নেতার বশংবদ দাস হ'য়ে কোলে চড়ে বসে ডুদু তামাক খাবে চলে তার নগ্ন প্রতিযোগিতা। ভাঁড় মে যায় নির্বাচনে প্রাণ উজার করা এবং প্রাণ হারানো কর্মী ও কর্মীর হতদরিদ্র পরিবার। এ নগ্ন উলঙ্গ সত্য যেন মনে রাখে সমস্ত দলের কর্মীরা।
আর, আজ আর একটা অদ্ভুত ভালোলাগা পোষ্টার দেখলাম। শরীরে শিহরণ জাগলো। ছলাৎ ছলাৎ শব্দে শরীরে ব'য়ে যাওয়া রক্ততরঙ্গ মাঝে দাঁড় টানার শব্দ শুনতে পেলাম! এমন পোষ্টারে পোষ্টারে ছেয়ে যাক বাংলার গ্রামগঞ্জের, শহরবন্দরের, পাহাড় থেকে সমতলের সমস্ত ঘর-বাড়ির ছোটোবড় দেওয়াল-দেওয়াল-দেওয়াল। এই আহ্বান ছড়িয়ে পড়ুক দিক থেকে দিগন্তে কাগজের পাতায় পাতায়, লিফলেটে, ব্যানারে, হোডিং-এ সর্বত্র। ছড়িয়ে পড়ুক মিডিয়ায়, ফেসবুকের ওয়ালে ওয়ালে খেয়ালে বে-খেয়ালে।
ভোট হ'ক, মানুষ বাঁচুক। সঙ্গে স্লোগান উঠুক শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের,
"নিজে বাঁচো এবং অন্যকে বাঁচাও ও বাঁচতে দাও। ম'রো না, মেরো না, পারো তো মৃত্যুকে অবলুপ্ত করো।"
( লেখা ২০শে জুন'২০২৩)


May be an image of 2 people and text that says 'ভোট আসবে ভোট যাবে তোটের গেলে করবেন আর আপনার বপ না তাবাবু'

Wednesday, August 9, 2023

কথায় আছে...।।

কথায় আছে, শক্তের ভক্ত নরমের যম।
প্রবি বলে, আমি নরমের ভক্ত শক্তের যম।
ঠাকুর বলেন, কথায় বেশী কাজে কম
নিজেই হয় নিজের যম। 
প্রবি বলে, আমি কাজে বেশী কথায় কম। 
নিশ্বাসে প্রশ্বাসে বীজনাম চলে হরদম।
তাই বলি, গাজন ক'রে বেড়ায় যারা
তাদের মুখে যাজন!?
যাজন আসলে তাদের কাছে আয়ের উপকরণ!!
মেঘের আড়ালে মেঘদূত যেমন করে আস্ফালন!
তেমনি মুখোশের আড়ালে মুখ করে উল্লম্ফন!!
ফলে মুখ আর মুখোশের জাঁতাকলে 
দিন শেষে মরে নিজেরই প্রতিকৃতি।
(লেখা ১০ই আগষ্ট'২০১৭)

প্রবির প্রশ্ন ও উত্তর।

প্রশ্নঃ ১) ঈশ্বর ক'বার এসেছেন তার সৃষ্ট এই পৃথিবীতে? উত্তরঃ আটবার।প্রশ্নঃ তারা কে কে?
উত্তরঃ রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মোহাম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ ও শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র।
প্রশ্নঃ ২) ঈশ্বর মানুষের রুপে কেন বারবার আসেন?
উত্তরঃ ঈশ্বর মানুষের রূপে আসেন তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষকে বাঁচাতে, রক্ষা করতে।
প্রশ্নঃ ৩) ঈশ্বর কি বিশেষ কোনও সম্প্রদায়ের জন্য মানুষ রুপে নেবে আসেন?
উত্তরঃ না। ঈশ্বর পৃথিবীর সমস্ত মানুষের জন্য (প্রায় ৮০০ কোটি) জীবন্ত ঈশ্বর হ'য়ে নেবে আসেন।
প্রশ্নঃ ৪) ঈশ্বর কি নিরাকার? নাকি সাকার? তাঁর কি কোনও রুপ আছে?
উত্তরঃ দু'টোই। আমাদের চোখের সামনে যা দেখতে পাই সবই তাঁর সাকার রুপ। আর যা দেখতে পাই না দৃষ্টির বাইরে বিদ্যমান সে সবই তাঁর নিরাকার রূপ। তাঁর শ্রেষ্ঠ সাকার রূপ পুরুষোত্তম রূপ।
প্রশ্নঃ ৫) ঈশ্বর যখনই কোথাও জীবন্ত ঈশ্বর হ'য়ে নেবে আসেন তখনই তিনি কেন বিশেষ গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের হ'য়ে যান?
উত্তরঃ তাঁর স্বার্থান্বেষী অনুগামীরা নিজেদের কায়েমি স্বার্থসিদ্ধির জন্য, মৌরসীপাট্টা জমিয়ে রাখার জন্য তাঁকে ছোট্ট গন্ডীর মধ্যে বেঁধে মানুষ থেকে দূরে সরিয়ে রাখেন।
প্রশ্নঃ ৬) যে সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরাকার ঈশ্বর রক্তমাংসের মানুষের রূপে জীবন্ত ঈশ্বর হ'য়ে নেবে এসেছেন সেই সম্প্রদায়ের সব মানুষই কি তাকে মেনে চলেন? তাকে অনুসরণ করেন?
উত্তরঃ না। যদি চলতো, নিখুঁত অনুসরণ করতো তবে সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে এত বিরোধ হ'তো না।
প্রশ্নঃ ৭) কাদের জন্য সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে এত বিরোধ?
উত্তরঃ সাধারণ মানুষের জন্য। প্রশ্নঃ কেন!? উত্তরঃ সাধারণ মানুষ চায় অন্ধকারে থাকতে। অজ্ঞ থাকতে। মূর্খ থাকতে। দূর্বল থাকতে। চায় ঠকতে। তাই ঠগবাজেরা সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে বিরোধ লাগাবার সুযোগ পায়।
প্রশ্নঃ ৮) মুনি, ঋষি, সাধু, সন্ন্যাসী ও আধ্যাত্মিক জগতের মানুষ, মহাপুরুষদের সংগে জীবন্ত ঈশ্বর পুরুষোত্তমের তফাৎ কি?
উত্তরঃ মুনি, ঋষি ইত্যাদিরা যা ব'লে যান, ব'লে গেছেন তাদের সেই বলার মধ্যে যেটুকু ফাঁক থেকে যায় সেই ফাঁকটুকু জীবন্ত ঈশ্বর পুরুষোত্তম ভরাট ক'রে দেন আর তিনিই পারেন একমাত্র সমস্ত বিপদ থেকে, মৃত্যু থেকে রক্ষা করতে যা বাকীরা পারেন না। 
প্রশ্নঃ ৯) ঈশ্বর ধ'রেও কেন এত কষ্ট পায় মানুষ?
উত্তরঃ ঈশ্বরকে ধরেনি মানুষ। আকাশের ঈশ্বর, মাটির ঈশ্বর, বোবা ঈশ্বর ধ'রে জাগতিক দুঃখ কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। 
(লেখা ৯ই আগষ্ট'২০২১)

প্রশ্নঃ ১০) জীবন্ত ঈশ্বর অর্থাৎ পুরুষোত্তম ধরেও কেউ ভালো নেই কেন?
উত্তরঃ তাঁকে কেউ আমরা ধরিনি। দীক্ষা নিলেই তাঁকে ধরা হয় না। তাঁর চরণপূজা করেছি মাত্র চলনপূজা কেউ করিনি। তাও চরণপূজা করেছি শুধু শুধুমাত্র অর্থ-মান-যশ ইত্যাদি পাওয়ার ধান্ধায়, রোগ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা থেকে মুক্তির আশায়। তিনি আমাদের কাছে না ক'রে পাওয়ার ও চাহিদা পূরণের যন্ত্র মাত্র। তাঁকে কেউ বুঝতে চাইনি আমরা তিনি প্রকৃত আমাদের কাছে কি চান। বোঝার মানসিকতাও নেই আমাদের। আমরাও আমাদের স্বভাব চরিত্র পাল্টাইনি, পাল্টাতে চাইনি। তাই কেউ আমরা ভালো নেই। কেউ ভালো থাকবোও না।
( লেখা ১০ই আগষ্ট'২০২১)







Tuesday, August 8, 2023

বিচারের ভার।

যে সমস্ত গুরুভাই নিজের নাম লুকিয়ে মুখোশের আড়ালে প্রথমে আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায় পরে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার পর আমাকে আক্রমণ শানানোর জন্য, আমাকে, আমার পরিবারকে এবং শ্রীশ্রী বাবাইদাদার আশীর্বাদপুতঃ ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত আমার সঙ্গী সাথী গুরুভাইবোনেদের অপমান, লাঞ্ছনা করার জন্য ফেসবুককে ব্যবহার ক'রে নোংরা গালিগালাজ ও অপমানজনক মন্তব্য করে যাতে ভদ্রকালীর বুকে উদ্দাম বেগে এগিয়ে চলা ঠাকুরের কাজে বাধা সৃষ্টি হয়, তাঁর কাজ বন্ধ হ'য়ে যায় এবং সেই সমস্ত ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিভ্রান্ত করে যারা সহজ সরল সাধারণ সৎসঙ্গী, ফেসবুকে শুধু লাইক আর জয়গুরু জানিয়ে ক্ষান্ত থাকে এবং যারা পোষ্টের বিষয়বস্তু না পড়ে, না বুঝেই লাইক দেয়, যারা তাদের নোংরা উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত নয়, যাদের ইনবক্সে গিয়ে আমার পোষ্ট সম্পর্কে এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে ভুল বুঝিয়ে অনুরোধ করে আমার পোষ্টের বিরুদ্ধে কমেন্ট করার জন্য এবং অনেকে সেই ফাঁদে পা দেয় সেই সমস্ত নামের আড়ালে মুখোশধারী ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিচারের ভার ঠাকুরের উপরেই ছেড়ে দিলাম। জয়গুরু।
(লেখা ৯ই আগষ্ট'২০১৭)

Saturday, August 5, 2023

কবিতাঃ বন্ধু, লম্ফ দিয়ে মারছো ঝম্প

বন্ধু, লম্ফ দিয়ে মারছো ঝম্প
বিধিকে ক'রে অস্বীকার!
বিধির বিধান নির্মম জেনো,
মানো আর না মানো; জানাই ধিক্কার।
স্বার্থের পৃথিবীতে
বন্ধুক যদি বা হয়
বন্ধু কেউ নয়।
আদর্শহীন যে জীবন সে বন্ধু কেমন?
তেল ফুরোলেই বাতি নিভে যায় যেমন।
বন্ধু সে কোন জন!
স্বার্থে ঘা লাগলে পরে
ফুঁসে ওঠে যার মন?
বন্ধু আবার আছে নাকি কেউ
এই স্বার্থের দুনিয়ায়!
মেঘের আড়ালে যেমন মেঘদূত, 
মুখোশের আড়ালে তেমন মুখ
দেখতে পাবে মনের আয়নায়।
বন্ধু বোলে তো বন্ধু,
ভাই বোলে তো ভাই;
স্বার্থ ফুরোলেই কিন্তু বলবে,
বাই বাই!!

মাল্লু ছাড়া হয় নাকি কেউ বন্ধু! 
দিতে পারলে ভালো না পারলেই বন্ধুক!!
বন্ধুর সাথে মিলিয়ে গলা কত বলেছি জিন্দাবাদ।
স্বার্থের লেজে না লেগেও পা শুনেছি মুর্দাবাদ !!
গুরুভাইয়ের চেয়ে ভাই বড় বন্ধু 
পৃথিবীতে কে আর আছে?
সেই বন্ধু হ'য়ে বন্ধুক 
কপটতার গুলি মারে পাছে!!
গুরুভাই যদি বন্ধু না হ'য়ে হয় বন্ধুক
প্রভু তবে কে হবে বন্ধু এই ভবে! 
সততার মুখোশের আড়ালে
প্রভু কপটতার বিচার কবে হবে?
পেরিয়ে মিথ্যে কপট বন্ধুত্বের তাপ উত্তাপ
শুনেছি তমসার পার অচ্ছেদ্যবর্ণ মহান বন্ধুর ডাক!!
বন্ধু আমার আছে জেনো আছে ফেরেশ্তানে!
এই স্থানেতে আছে বন্ধুক লুকিয়ে আস্তিনে!!
অন্তরেতে রেখে ঝাল হ’চ্ছো কেন নাজেহাল?
মিষ্টি মুখের ঐ চাউনি ছাওয়ায়
দে না তুলে নামের পাল।
দুঃখ দিলে দুঃখ পাবি, সুখ দিলে সুখ!
সহজ কথা সহজ ভাবে বোঝে না বেকুব!
ইষ্ট ধ’রেও তুষ্ট করো হাজার দেব দেবতারে
ঝোলের লাউ অম্বলের কদু
কয় জেনো তারে।













উপলব্ধি ৫১ঃ ধর্ম্মমা ও আমরা।

একজন ঠুনকো ভিত্তিহীন অত্যন্ত নিম্ন রুচিসম্পন্ন লোকদেখানো তথাকথিত মাতৃভক্ত হিন্দু ধর্মপ্রেমীর উক্তিঃ "আমার ধর্ম আমার কাছে মা, অন্য ধর্ম আমার কাছে কিছুই নয়"। এই উক্তিটি একজন অজ্ঞ ও দাম্ভিক মুসলিমভাইয়ের নিজের মিষ্টি মা অর্থাৎ নিজের ধর্মের প্রতি প্রশংসার কারণে প্রতিবাদ স্বরুপ ঐ হিন্দু ভাই করেছিলেন।
মন্তব্য বা মন্তব্যের উত্তরে জবাবটা ততক্ষণই ভালো যতক্ষণ অন্যে আঘাত না পায়। খুব সুন্দর উত্তর হয়েছিল প্রতিবাদী ধর্মপ্রেমী হিন্দু ভাইটির। কিন্তু কোথায় যেন শেষে এসে "আমার ধর্ম আমার কাছে মা, অন্য ধর্ম আমার কাছে কিছুই নয়" এবং “কেমন দিলাম জবাবটা?” এই কথায় সুরটা কেটে গিয়ে একটা আত্মশ্লাঘার কালির ছিটে লেগে গেল। আর ‘জবাবটা কেমন হয়েছে’ জানতে চাওয়া ও বলার মধ্যে একটা মিথ্যে অহঙ্কারের ছোঁয়া আছে যা অন্য ধর্মের প্রতি ঘৃণার মনোভাব প্রকাশ করে।

মুসলিমভাইটি ওর জ্ঞান আর বোধ অনুযায়ী যা মনে হয়েছে তাই বলেছে। ও যা জেনে এসেছে ওর পারিপার্শ্বিক থেকে ছোটবেলা থেকে আজ পর্যন্ত, যে শিক্ষা পরিসরে ও বড় হয়েছে তাই ওর মাথায় গেঁথে আছে আর তাই ও সব জায়গায় ওর মিষ্টি মায়ের প্রশংসা ক'রে এসেছে ও আসছে। কিন্তু ওকে কেউ শেখায়নি বা নিজেও বৃহত্তর পরিবেশে গিয়ে শেখার চেষ্টা করেনি যে ওর মার মত আরও মা আছে যারা ওর মায়ের মতই মিষ্টি ও সুন্দর আর এখানেই যত গন্ডগোল ও ভুলবোঝাবুঝি। তাই ঐ প্রতিবাদী হিন্দু ভাইটির নিজের মা অর্থাৎ নিজের ধর্ম সংক্রান্ত বিষয়ে বলাটাও অপূর্ব ছিল যদি শেষটা ওরকম খোঁচা মারা না হ'তো আর সংগে কোথায় ভুল সেই ভুলটাও যদি ধরিয়ে দিতেন তাহ’লে ঐ মুসলিম ভাইটি তার অসম্পূর্ণ জ্ঞানকে সম্পূর্ণ করার ও ভুলকে শুধরে নেবার সুযোগ পেত। ঐ মুসলিম ভাইটির ও প্রতিবাদী হিন্দু ভাইটির বলার মধ্যে নিজের মায়ের প্রতি ভালোবাসার বহির্প্রকাশ ছিল তীব্র। ভালোবাসা ভালো কিন্তু তীব্র ভালোবাসার অর্থ এই নয় যে অন্যের গায়ে ফোসকা পড়া। আর মা মা-ই-ই। নিজের গর্ভধারিণী মা আমার মা হ'তে পারে কিন্তু অন্যের মাও মা; এই বোধ যদি না থাকে তাহ'লে নিজের মাকে ভালবাসি কথাটার মধ্যে কপটতা লুকিয়ে রয়েছে। মায়েদের কোনও জাত হয় না। হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান ইত্যাদি তকমা লাগিয়ে মায়েদের জাতের বিচার হয় না। মা মা-ই-ই!!!! এক হিন্দু শিশু মুসলিম মা বা খ্রিষ্টান মায়ের বুকের দুধ খেয়ে, কিম্বা মুসলিম শিশু হিন্দু মা বা খ্রিষ্টান মায়ের বুকের দুধ খেয়ে কিম্বা কোনও খ্রীষ্টান শিশু হিন্দু বা মুসলিম মায়ের বুকের দুধ খেয়ে বা যে কোনও শিশু যে কোনও মায়ের দুধ খেয়েই বাঁচতে পারে বা বেঁচে থাকতে পারে এ ছাড়া বাঁচার দ্বিতীয় কোনও উপায় নেই। কালো মায়ের দুধ খেয়ে ফর্সা শিশু আর ফর্সা মায়ের দুধ খেয়ে কালো শিশু বেঁচে থাকে বা বাঁচতে পারে। ফর্সা মায়ের দুধ যেমন সাদা হয় ঠিক তেমনি কালো মায়ের দুধও সাদা হয় ও একই গুণ সমৃদ্ধ হয়। মায়ের বুকের দুধের কোনও আলাদা আলাদা রসায়ন হয় না; মাতৃদুগ্ধের রসায়ন এক সে পৃথিবীর যে প্রান্তের যে মা-ই হ’ক না কেন! যে মুহূর্তে শিশুর--সে যে শিশুই হ’ক না কেন-- বাঁচার জন্য মাতৃদুগ্ধের প্রয়োজন হবে সেখানে যে মা উপস্থিত থাকবে সেই মায়ের বুকের দুধ সেই শিশুর বাঁচার এক ও একমাত্র পথ্য; জাতের, ধর্মের, সম্প্রদায়ের কোনও গুরুত্ব, কোনও মূল্য সেখানে নেই। সব বকোয়াস, ফালতু, তুচ্ছ ও মূল্যহীন হ’য়ে যায়। মা ছাড়া কোনও শিশু সে পৃথিবীর যে প্রান্তের হ’ক না কেন মাথার ছাদ পায় না। নারীই একমাত্র মা হ’য়ে মানুষের সে নারীশিশুই হ’ক হ’ক আর পুরুষশিশুই হ’ক তাকে বুকের দুধ দিয়ে, আঁচল দিয়ে আগলে রেখে তাকে বাঁচাতে পারে, রক্ষা করতে পারে, পারে তাকে নিরাপদে বড় ক’রে তুলতে। এক মা হয়তো জন্ম দিল দেখা গেছে আর এক মা বুকের দুধ দিয়ে সেই বাচ্চাকে বাঁচিয়ে বড় ক'রে তুলেছে। ঐ প্রতিবাদী হিন্দু ভাইটি তার বক্তব্য শেষে যেমন ‘হরে কৃষ্ণ’ ব’লে গর্ব বোধ করেছিলেন সেই ভগবান কৃষ্ণের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। আর ঐ মুসলিম ভাইটি তার মিষ্টি মা অর্থাৎ তার ধর্ম নিয়ে যে প্রশংসা করেছিল সেই ধর্মমতের যিনি প্রবক্তা সেই বিশ্বনবী পুরুষোত্তম হজরত মহম্মদও নিজ জন্মদাত্রীকে জন্মের কিছুদিন পরেই হারিয়েছিলেন। পরমপ্রেমময় পুরুষোত্তম দু’জনেই অন্য মায়ের কোলে, অন্য মায়ের দুধ খেয়ে বড় হয়েছিলেন। তাই মায়ের রূপ আলাদা হ'তে পারে কিন্তু মায়ের সংজ্ঞা একই আর মায়ের দুধ দুধ-ই যা নারীপুরুষ সব শিশুর বাঁচার এক ও একমাত্র আধার।
ঠিক তেমনি ঐ মুসলিম ভাইয়ের নিজ মা অর্থাৎ নিজ ধর্মের পক্ষে প্রশংসাসূচক তীব্র অভিব্যক্তি প্রকাশ ও ঐ প্রতিবাদী হিন্দু ভাইয়ের বলা "আমার ধর্ম আমার কাছে মা, অন্য ধর্ম আমার কাছে কিছুই নয়" কথাটার মধ্যে নিজের মায়ের প্রতি বা ধর্মের প্রতি তীব্র ভালোবাসা প্রকাশের আড়ালে অন্য মায়ের প্রতি অর্থাৎ অন্য ধর্মের প্রতি একটা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ঘৃণার মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে, এই পাওয়াটা জ্ঞাতসারেও হ'তে পারে আবার অজ্ঞাতসারেও হ'তে পারে। সেটা আমার জানা নেই সেটা ঐ দু’জনেই ভালো বলতে পারবেন। তবে এই মনোভাব অজ্ঞানতার ফসল আর এই মনোভাবে সন্তান হিসাবে নিজের মায়ের প্রতিই অপমান, লাঞ্ছনাই করা হয় এবং অন্য মায়েদের সন্তানদের নিজের মায়ের প্রতি অপমান ও ঘৃণা ক'রে দেওয়ার অকারণ সুযোগ ক'রে দেওয়া হয় আর এই রকম পরমভক্ত সন্তানদের জন্য----সে যে মায়ের যে সন্তানই হ'ক না কেন----করুণ নির্মম ফল ভোগ করে মায়েরাই, ফল ভোগ করে গোটা মানবজাতি। আর তাই-ই ঘটছে চারপাশে আর এর জন্য দায়ী নিজের মায়ের প্রতি অর্থাৎ নিজের ধর্মের প্রতি আমাদের অপদার্থ সন্তানদের উগ্র, অন্ধ, অজ্ঞ, কপট, ধান্ধাবাজি, ল্যাংড়া ভালোবাসা। শুধরে নিলে ভালো কিন্তু যদি শুধরে না নেয় তাহ’লে এদের কি বলা উচিত? মায়ের সন্তান নাকি মাকে ধ্বংস করার কিলবিস শয়তান!? সেটা শুভবুদ্ধিসম্পন্ন ধর্মপ্রেমী ঈশ্বরপ্রেমী সন্তানরাই বিচার করুক।

আর এটা মাথায় রাখতে হবে আমার মা বা আমার ধর্ম, তোমার মা বা তোমার ধর্ম ইত্যাদি কথা ভুল। ধর্ম একটাই যা মানুষের বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠা ধ’রে রাখে এবং তা পারিপার্শ্বিক সহ সবাইকে নিয়ে; আর বাকী সব মত। তাই পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বললেন, “যার উপর যা’ কিছু সব দাঁড়িয়ে আছে তাই ধর্ম, আর তিনিই পরমপুরুষ। ধর্ম্ম কখনও বহু হয় না, ধর্ম্ম একই আর তার কোন প্রকার নেই। মত বহু হ’তে পারে, এমনকি যত মানুষ তত মত হ’তে পারে, কিন্তু তাই ব’লে ধর্ম্ম বহু হ’তে পারে না। হিন্দুধর্ম্ম, মুসলমানধর্ম্ম, খৃস্টানধর্ম্ম, বৌদ্ধধর্ম্ম ইত্যাদি কথা আমার মতে ভুল, বরং ও-সবগুলি মত। কোনও মতের সঙ্গে কোনও মতের প্রকৃতপক্ষে কোনও বিরোধ নেই, ভাবের বিভিন্নতা, রকমফের-----একটাকেই নানাপ্রকারে একরকম অনুভব। সব মতই সাধনা বিস্তারের জন্য, তবে তা’ নানাপ্রকারে হ’তে পারে; আর যতটুকু বিস্তারে যা’ হয় তাই অনুভূতি, জ্ঞান। তাই ধর্ম্ম অনুভূতির উপর।“

প্রত্যেকটি মতই একই ধর্ম ও এক ঈশ্বরের কথা বলেছে আর সম্প্রদায়কে ধর্মের সংগে ঘুলিয়ে যেন ঘোল ক'রে গোল বাধিয়ে না বসি। সম্প্রদায় ও ধর্ম্ম আলাদা আলাদা বিষয়, এটা যেন আমরা ধর্ম ও ঈশ্বর বিশ্বাসীরা ভুলে না যাই।

যাই হ'ক এটা বোধের গভীরতার ব্যাপার যেখানে আমাদের সকলকে জাতি, বর্ণ ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে এক ও অদ্বিতীয় ধর্ম ও ঈশ্বরের কাছে পৌঁছোবার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করতে হবে।
(লেখা ৬ই আগস্ট'২০১৮)

কবিতাঃ হাঁদা আর ভোঁদা।

হাঁদাদের নিয়ে ভোঁদা পড়েছে বেরিয়ে
অনিষ্ট প্রতিষ্ঠায় খুল্লমখুল্লা।
তাদের সাথে নেই আপস, নেই কোনও বিরোধ
লেগে থাকো ইষ্টপ্রতিষ্ঠায় বন্ধু না ক'রে হল্লাগোল্লা।
ঠাকুরের নাম ক’রে বদনাম নিজেকে দেয় তারা চিনিয়ে;
কথার ফানুশ উড়িয়ে মানুষ নিজের ঢাক নিজে
পেটায় ব’লে ইনিয়ে বিনিয়ে। মৌরসি পাট্টা জমাবে
ব’লে নিজের কেন্দ্র ছেড়ে অন্য কেন্দ্র দখলে
দিয়েছে হায়েনারা হানা।
সৎসঙ্গের বিধান জানে না সে
আর মানে না কারও মানা!
অর্থের অহঙ্কারে আর পাঞ্জার জোরে
দিনকে রাত আর রাতকে দিন করে;
তুমি ভাইগুরু হ’য়ে জার্সি গরু
আর থেকো না নিজেকে রাতকানা ক'রে।
হাঁদারা জানে না ভোঁদা তাদের নিয়ে কি করছে!
আত্মপ্রতিষ্ঠার মোহে আলেকজান্ডার ভোঁদা কেন্দ্র দখলে
কোদাল চালিয়ে নিজের কবর নিজে খুঁড়ছে!
গান গেয়ে ভোঁদা হাঁদাদের বলছে,
চল কোদাল চালাই, ভুলে কেন্দ্রের বালাই
ঝেড়ে সংহতির দায়, ভাসি ফুর্তির হাওয়াই।
যত ভক্তির বালাই, বলবে, পালাই পালাই
অর্থ মান যশের ধান্ধায় যাব ইষ্টের দরজায়।
চল কোদাল চালাই..................
বাবাইদাদার নাম নিয়ে বলে,
বাবাইদাদার আশীর্বাদ আমাদের সাথে আছে;
তাই সমস্ত সমস্যার সমাধান
আছে আমাদের হাতে,
আর সমাধান ঘোরে আমাদের পাছে পাছে!!
আসুন আমাদের কাছে, থাকুন আমাদের সাথে,
আমাদের বড় মন্দির আছে।
সংহতিতে ভাঙন ধরিয়ে ঠাকুরের কথায়
এরা হ’য়ে গেল ‘ছেদক’; ছেদকের বেশে
দিন অবশেষে নিজেরাই হ’লো নিজেদের খাদ্য
আর হায়! ভাইগুরু! হ’লো নিজেরাই খাদক!!
(লেখা ৬ই আগস্ট'২০১৮)

কবিতাঃ তবে তাই-ই হ'ক।

কারও চোখ খুললো না। 
এতবড় ভয়ংকর করোনার পরেও 
কারও শিক্ষা হ'লো না! 
ক্ষমতা দখলকারী ক্ষমতা দখলে ব্যস্ত! 
বুদ্ধিজীবী তাত্ত্বিক আমেজে মগ্ন! 
সাধারণ মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত 
সব্বাই আত্মস্বার্থে ক্ষিপ্ত!
যুবক যুবতী রিপু রসে  তপ্ত, উত্তপ্ত! 
খেতে না পাওয়া, দিন আনা দিন খাওয়া 
মানুষ সময়ের স্রোতের গড্ডালিকা প্রবাহে 
ভেসে যাওয়াতে অভ্যস্ত! 
কেউই বাঁচতে-বাড়তে চায় না। 
সবাই সবাইকে মেরে বাঁচতে চায়! 
'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' 
এই রোগে আক্রান্ত মানুষ! 
আরও বড়, আরও ভয়ংকর 
আগামী বিপর্যয়ের ইংগিত দিচ্ছে 
এ-সব কিছু! আর,
মানুষ যেন বলছেঃ তবে তাই-ই হ'ক। প্রবি।

কবিতাঃ সময় থাকতে------

কেউ ভালো নেই! 
ঠাকুর ধ'রেও কেউ ভালো নেই!
কেন ভালো নেই!?
ঠাকুর তো consciousness!? 
তবুও কেন কেউ ভালো নেই!?
আমরা অচেতন। ঠাকুর ধরেছি শুধু 
দ্যাও, দ্যাও চাইতেই ব্যস্ত মন।
জীবন নিয়ে ধ্বস্ত তুমি,
বিধ্বস্ত তোমার মন;
জীবন তোমার এলোমেলো, 
ক্ষতবিক্ষত যৌবন।
আমৃত্যু কেমন ক'রে কাটাবে এই জীবন!?
কথায় কথায় রাগকে করেছো সাথী
আর বিরক্তি চোখেমুখে!
দু'দিনের এই জীবন মাঝে 
বন্ধু, কাটাচ্ছো সময় দুঃখে!!
ঋষি বাদ দিয়ে যেমন ঋষিবাদের 
আরাধনায় করছো মিথ্যে জগৎ মাত,
ঠিক তেমনি জেনো
'জীবনবাদী' বাদ দিয়ে জীবনবাদের উপাসনায়
হবেই হবে কুপোকাত।
বেশী ব'লো না, বলার চেষ্টা ক'রো না। 
বললেও শুনবে না আর শুনলেও বুঝবে না।
খামোকা অপমানিত হবে।
কি বলবে? কাকে বলবে? কি জানো তুমি?
শ্রোতা কেউ নেই, সবাই বক্তা।
ঘোর আঁধারে পথ হারিয়ে গোলকধাধায় 
যে মরছে ঘুরে সেই দেখাচ্ছে পথ,
সেই হর্তা-কর্তা-বিধাতা!
পা যখন মাথার কাজ করে 
মাথাকে একটু থমকে দাঁড়াতে হয় তখন।
নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে দেখতে হয় 
তার দিন শেষের মর্মান্তিক পতন।
তাই বন্ধু, সময় থাকতে হও সাবধান।














সহজ প্রশ্নের আজব উত্তর।

সবচেয়ে কঠিন কাজ কি?
ভালো কাজ করা।
সবচেয়ে সহজ কাজ কি?
ভণ্ডামি। কপটতা।
সবচেয়ে বাধা কোন কাজে?
ভালো কাজে।
সবচেয়ে বাধা নেই কোন কাজে?
খারাপ কথায়, অন্যায় কাজে।
সবচেয়ে মিষ্টি হাসি কার?
শয়তানের।
সবচেয়ে আনন্দ কিসে?
অন্যকে খোঁচা মেরে, দুঃখ-কষ্ট দিয়ে, 
বিপথে চালিত ক'রে,
অন্যের ক্ষতি ক'রে, সর্বনাশ ক'রে।
সবচেয়ে সুন্দর কি?
সাজিয়ে গুছিয়ে সুন্দর ক'রে বলা
মিথ্যে কথা।।
সবচেয়ে বাহাদুরী কিসে?
খিস্তিখেউর, গালাগালি, নিন্দা, কুৎসা, 
অপমান, অশ্রদ্ধা আর অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিতে।
সবচেয়ে সুখ কিসে?
মিষ্টি হেসে অন্যকে চিমটি কেটে 
নুন ছাল তুলে দিতে।
সবচেয়ে শান্তি কিসে?
অন্যকে বাঁশ দিতে।
ঝাড়ের বাঁশ ---- দিতে।
সবচেয়ে বোদ্ধা কে?
বুদ্ধি বেশি বোঝে কম বা 
বোঝে বেশী বুদ্ধি কম যে।
সবচেয়ে দামী কে?
ফোর টু জিরো যে।
সবচেয়ে তৃপ্তি কিসে?
অন্যের------মেরে খেয়ে।-

প্রবন্ধঃ জীবনবাদ ও জীবনবাদী।

যত 'বাদ'-ই থাক দুনিয়ায়
সবার সেরা 'জীবনবাদ'!
'জীবনবাদ' বাদ দিয়ে যত 'বাদ'-ই ধরিস না তুই,
হ'বিই হ'বি বরবাদ।
ঋষি বাদ দিয়ে যেমন ঋষিবাদের আরাধনায়
করছো মিথ্যে জগৎ মাত,
ঠিক জেনো
জীবনবাদী বাদ দিয়ে জীবনবাদের
উপাসনায় হবেই হবে কুপোকাত।
জীবনবাদ মানে জীবনের কথা। দুনিয়ার বুকে কত বাদ বা কথা আছে? গান্ধীবাদ অর্থাৎ গান্ধীর কথা, মাওবাদ মানে মাও-এর কথা, লেনিনবাদ মানে লেনিনের কথা, মার্ক্সবাদ মানে মার্ক্সের কথা, সাম্যবাদ মানে সাম্যের কথা ইত্যাদি ইত্যাদি। ঠিক তেমনি জীবনবাদ
মানে জীবনের কথা। আমরা ঐ মহাত্মাদের সমাজ দর্শন বিষয়ের উপর বলে যাওয়া কথাকে ভিত্তি ক'রে যেমন বলি গান্ধিবাদ, মার্ক্সবাদ.....................ইত্যাদি; ঠিক তেমনি ঠাকুরের যাবতীয় ব'লে যাওয়া সব কথাগুলি জীবনের উপর ভিত্তি ক'রে বলা অর্থাৎ জীবনের কথা গুলিকে আমরা বলি জীবনবাদ। এখানে আমরা ঐ মহাত্মাদের নাম জড়িয়ে বলার মতন বলতে পারতাম অনুকূলবাদ কিন্তু আমরা তা' বলি না, ঠাকুর আমাদের তা' শেখাননি তিনি জীবনবাদ কথাটা বলেছেন আর তাই আমরা জীবনবাদ বলি। আর, জীবনের উপর, সমাজের উপর তাঁর বলে যাওয়া কথাগুলি সবার সেরা কারণ সেগুলি সমাজকে, জীবনকে সবদিক দিয়ে পূরণ করেছে; কোনোদিক বাদ যায়নি বা ফাঁক পড়েনি। নিখুঁত, পরিপূর্ণ এক জীবন দর্শন, সমাজ দর্শন। জীবন নিয়ে বা সমাজ নিয়ে বলা বাকী সব 'বাদ' বা কথা অসম্পূর্ণ শুধু নয় খুঁতে পূর্ণ। পৃথিবীর ৭০০ কোটি বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী (পৃথিবীতে প্রায় ৪৩০০০ হাজার ধর্ম আছে) মানুষকে তাদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পোষণ দিতে পারে, পালন করতে পারে, তাদের প্রয়োজন পূরণ করতে পারে কে? কে আছে এমন পৃথিবীতে ক্ষমতাধর যিনি ৭০০ কোটি মানুষের ৭০০ কোটি রকমের বৈশিষ্ট্যকে পোষণ দিতে পারেন? আছেন নাকি এমন কেউ এই পৃথিবীতে যিনি ৭০০ কোটি মানুষের উদ্ধাতা? তিনি একমাত্র বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের মালিক এক ও অদ্বিতীয় ঈশ্বর। যিনি মানুষ রূপে মানুষের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ জীবন্ত আদর্শরূপে নেবে আসেন আর পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পালন পোষণের পথের সন্ধান একমাত্র তিনিই অর্থাৎ জীবন স্রষ্টাই দিতে পারেন। একমাত্র জীবন স্রষ্টাই পারেন নিখুঁত পরিপূর্ণ সর্বাঙ্গীণ জীবনের কথা বলতে। জীবনবাদের বাদী তিনি আর তাই তাঁর কথাকে বাদ দিয়ে সে যত বড়ই মহাত্মা, মহাপুরুষ, মহাজ্ঞানী, মহাপণ্ডিত হ'ন না কেন তাঁদের যে কথা বা পথ শোনো না কেন, অনুসরণ করো না কেন জীবনে সর্বাঙ্গীণ সাফল্য, সুখ আসবে না, জীবন পরিপূর্ণ রূপে গড়ে উঠবে না, সমাজ ও জীবন চলবে অতি বোদ্ধা অহংকারী এক চক্ষু হরিণের মত। কোন অসতর্ক মুহূর্তে, কোন অজ্ঞানতার কারণে দেখতে না পাওয়া চোখের দিক দিয়ে হরিণের ঘাড়ের উপরে হিংস্র বাঘের ঝাঁপিয়ে পড়ার মত তোমার আমার জীবনের উপর অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়বে নির্মম মহাকাল, মারবে ছোবল, হানবে আঘাত, করবে ঘায়েল, শয়তান ঘাড়ের উপর বসে গরম নিশ্বাস ফেলে বাজাবে পায়েল। তাই 'জীবনবাদ' বাদ দিয়ে যে 'বাদ' বা যত 'বাদ'-ই ধরি না কেন আল্টিমেট প্রাপ্তি 'বরবাদ'।
এর সঙ্গে আরও একটা আরও বেশী গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হ'ল,
ঋষি বাদ দিয়ে যেমন ঋষিবাদের আরাধনায় করছো মিথ্যে জগৎ মাত, ঠিক তেমনি জেনো জীবনবাদী বাদ দিয়ে জীবনবাদের উপাসনায় হবেই কুপোকাত।
এই প্রসঙ্গে বলি, ঠাকুর সত্যানুসরণে বললেন,
"ভারতের অবনতি (degeneration) তখন-থেকেই আরম্ভ হয়েছে, যখন-থেকে ভারতবাসীর কাছে অমূর্ত ভগবান অসীম হ'য়ে উঠেছে------ঋষি বাদ দিয়ে ঋষিবাদের উপাসনা আরম্ভ হয়েছে।"
ঠাকুরের এই কথায় আমরা জানতে পারি, বুঝতে পারি এই যে এত অমূর্ত ভগবান বা Unseen God-এর আরাধনা দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে, এই শুরু হাজার হাজার বছর আগে থেকে। এই অমূর্ত ভগবানের অন্তর্নিহিত অর্থ আজ বিলুপ্ত হ'য়ে গেছে পরিবর্তে এই অমূর্ত ভগবানেরা চেপে বসেছে মানুষের জীবনে ফাঁসের মত। মূল হ'য়ে গেছে আজ গৌণ আর গৌণ হ'য়ে গেছে মূল। ঠিক তেমনি ঋষিরা মানুষের বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার জন্য যা বলে গেছিলেন সেই ব'লে যাওয়া গুলি আজ মানুষের কাছে প্রধান হ'য়ে উঠেছে আর বাতিল হ'য়ে গেছে মানুষের জীবন থেকে জীবন্ত আদর্শরুপী ঋষি। আর এই যে মানুষের কাছে ঋষির ব'লে যাওয়া গুলি প্রধান হ'য়ে উঠেছে তা' একশ্রেণীর ব্যবসায়ী মনোভাবাপন্ন মানুষের জন্য। এই ব্যবসায়ী মনোভাবাপন্ন অসৎ, ধান্দাবাজ, কপট মানুষেরা ঋষিদের বলাগুলিকে আয়ের উপকরণ বানিয়ে ভাঙিয়ে ভাঙিয়ে খেয়ে চলেছে যুগ যুগ ধ'রে মূর্খ, অজ্ঞানী, অশিক্ষিত, লেখাপড়াজানা ও না জানা সরল-সাধাসিধে, বেকুব, অতি বোদ্ধা, অতি চালাক, অহংকারী ও ধর্মভীরু মানুষদের সহযোগীতায়। এর জন্য দায়ী এই মানুষেরাই। কারণ ঠগবাজকে দায়ী করা হ'লে সেটা হবে নিজের সঙ্গে নিজের ফাঁকিবাজি, নিজেকেই ঠকানো। কারণ ডাক্তারের পেশা ডাক্তারি, উকিলের পেশা ওকালতি, শিক্ষকের পেশা শিক্ষা দান, ব্যবসায়ীর ব্যবসা ঠিক তেমনি ঠগবাজের পেশা ঠগবাজি। ঠাকুর বললেন, তুমি এত যত্নহীন নিজের প্রতি যে নিজেকে ঠকতে দিলে। তুমি নিজেকে ঠকতে দিলে কেন?
তাই ঠগবাজ যুগ যুগ ধ'রে তার কাজ ক'রে চলেছে, ক'রে যাবেও আর আমরা তাঁদের শিকার হবার জন্য সেজেগুজে বসে আছি অপেক্ষায় শবরীর মত, 'ক'বে তুমি এসে দেবে দেখা আর আমাকে ঠকাবে প্রিয়!'
আর এই মানুষদের জাগাবার জন্য, চোখ খুলে দেবার জন্য তাঁর বারবার এই ধরাধামে আগমন। তাঁর দুঃখ এতবার আসার পরেও মানুষ জাগে না, মানুষের চোখ খোলে না।
(লেখা ৫ই আগষ্ট'২০১৭)

কবিতাঃ সাধু সাবধান!!!

একচক্ষু হরিণ হ'য়ে ভাবছো বসে কাটিয়ে দেবে চিরটাকাল?
হিংস্র বাঘের মত অতর্কিতে পড়বে ঝাঁপিয়ে নির্মম মহাকাল!
মারবে ছোবল, হানবে আঘাত, করবে ঘায়েল;
ঘাড়ের উপর তোমার নিশ্বাস ফেলে গরম
পায়ের উপর পা তুলে মন খুলে চরম
ধ্বংস সুখের উল্লাসে শয়তান বাজাবে পায়েল!
সাধু সাবধান!
ঈশ্বরের সাথে বেইমানী করছে ও করেছে কে?
তুমি সাধু! তুমি যোগী! গোঁসাই-গোবিন্দ, ধ্যানী তুমি হে!
জানো কি তুমি মহান বেইমান কে সে?
জেনেও যদি না জানার মত থাকো হ'তে মালামাল
"ঈশ্বর কি এতই বেকুব তোর ফাঁকি দেখে নয় সামাল?"
সাধু সাবধান!!
ঈশ্বরের সাথে বেইমানী ক'রে ভাবছো বাঁচবে তুমি নেমকহারাম?
ধর্ম ধ্বজা উড়িয়ে সোজা তাঁর আসনে বসে করছো তুমি আরাম!
ধর্মভীরু বেকুব মানুষ না বুঝে করেছে সখা, করেছে তোমায় সাথী;
তোমার মাথায় নিশ্চিত জেনো তুলেছে ফণা কাল রাতি!
জনম জনম নরক ভ্রমণ তোমার একাল সেকাল পরকাল!
বিধির বিধানে লেখা হ'য়ে গেছে তা' জেনো আসছে ঘোর আকাল।
বাঁচার আর নেই উপায় এত করেছো পাপ আয়!
ঈশ্বরের সিংহাসনে বসেছো তুমি; কে হবে তোমার সহায়?
শয়তানের সহচর তুমি তুমিই তোমার ধ্বংসের মহাকাল;
ধর্মকে করেছো কলুষিত, জীবন্ত ইশ্বরকে করেছো হালাল।
সাধু সাবধান!!!
হে ধর্মাবতার! হে ধর্মপুত্র আজকের যুধিষ্ঠির!
এমনিভাবেই কেটে যাবে দিন? কাটিয়ে দেবে চিরটাকাল?
"ঈশ্বর কি তোর এতই বেকুব ফাঁকি দেখে নয় সামাল!?"
(লেখা ৫ই আগষ্ট'২০১৭)

Friday, August 4, 2023

প্রবন্ধঃ ট্রেন দুর্ঘটনা ও আর্থিক সাহায্য।

করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত যাত্রীদের পরিবারের সদস্যদের দেওয়া হচ্ছে আর্থিক সাহায্য। আদালতের নির্দেশ মেনে জানাল রেল। দারুণ দুর্দান্ত সুখবর! যথোপযুক্ত ব্রিলিয়ান্ট সিদ্ধান্ত।
দুর্ঘটনার পরই নিহতদের পরিবার পিছু ১০ লাখ টাকা আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করে রেল। গুরুতর আহত যাত্রীদের ২ লাখ টাকা ও অল্প আহতদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
রাজ্য সরকারও আর্থিক সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসছে। বিপদের দিনে সবাই একই নৌকোর যাত্রী হিসেবে রণক্ষেত্রে উত্তীর্ণ।
যাই হ'ক, টাকা-ই শেষ কথা? সবসে বড়া রপাইয়া। কিন্তু টাকা দিয়েই কি সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়? হয়েছে আজ পর্যন্ত? সমস্যা তো বহু কিন্তু সমাধান ক'ই? স্বাধীনতার আজ পর্যন্ত যত সরকার কেন্দ্রে আর রাজ্যে এসেছে সবাই টাকা দিয়েই সমস্যার ও বিরোধীতার মুখ চাপা দিয়েছে, তারপর সব চুপচাপ। এটাই বর্তমানে ভারতের সমস্ত রাজ্যের অসহায় জনগণের কাছে ভিন্ন ভিন্ন মত ও পথের সরকারের পক্ষ থেকে পৌঁছে দেওয়া একই শিক্ষা-সংস্কৃতি? কি শিখেছে আমাদের পূর্বপুরুষ? কি শিখেছি আমরা? কি শিখছে আমাদের বর্তমান প্রজন্ম? কি শিখবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর থেকে? স্বাধীনতার পর থেকে যে নেতা যা ভুল শিখিয়ে গেল, সস্তা রাস্তায় হেঁটে দেখিয়ে দিয়ে গেল সমস্যা সমাধানের চটজলদি পথ, জ্বালাপোড়ায় আরামের তাৎক্ষণিক মলম সেই একই ভুল আর সস্তা রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছে সেই সস্তা ও ভুল রাস্তা দেখানোর নেতাদের হাত ধ'রে অতীত থেকে বর্তমান নেতৃত্ব স্বাধীনতার ৭৫ বছর ধ'রে!? এর থেকে মুক্তি কি কোনওদিনই নেই? জনগণের এমনই দূরবস্থা? কবে আসবে সেই ইউটোপিয়ার দিনগুলি? এর জন্যে কে দায়ী? নেতা নাকি জনগণ? যাক অন্তত চীনের জনগণের মতো আফিম ক্ষতিকারক জানা সত্ত্বেও আফিমের নেশায় আচ্ছন্ন থাকার মতো সস্তার তিন অবস্থা জানা সত্ত্বেও নেতানেত্রীদের সস্তার দর্শনে আসুন সবাই আচ্ছন্ন থাকি। কোনও কিচ্ছু দেখতে ও বুঝতে হবে না; যে ক'দিন বাঁচবো আসুন পোলট্রির মুরগীর মতো বাঁচি।
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের
"মানুষ আপন টাকা পর
যত পারিস মানুষ ধর।"--- বাণী বা তত্ত্ব কথা এখন চলবে না। তা যারা পাগল কিছু ঠাকুরের ইষ্টপ্রাণ তঁনিষ্ঠ, তঁত্তপা ভক্ত আছে তাদের এসব বাণী নিয়ে থাকতে দিন। তারা দয়ালের লোক দয়াল তাদের রক্ষা করবে, বাঁচাবে, ভরণ পোষণের সব দায়দায়িত্ব নেবে। এদের কথা ছাড়ুন।
এখন যুগ পাল্টেছে। এখন টাকা স্বর্গ, টাকা ধর্ম। টাকাহি পরমং তপঃ। তাই
এখন পাল্টে গেছে শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী। আমি অনেকবার বলেছি এই বাণীর নূতন সংস্করণ। এর আগে আমাকে অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ কিছু সৎসঙ্গী আমাকে ঠাকুরের "মানুষ আপন-----মানুষ ধর" বাণীর এই যুগোপযোগী আধুনিক সংস্করণ রচনা করার জন্য ফেসবুকে, ফোনে অনেক সমালোচনা ও কুৎসা করেছে। এতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। পরবর্তীতে অনেককে আমার এই আধুনিক সংস্করণ সৎসঙ্গে আউড়াতেও দেখেছি। যাই হ'ক, আবারও বলছি নূতন সংস্করণ, তা হ'লোঃ
টাকা আপন মানুষ পর
যত পারিস টাকা ধর।--প্রবি।
এই-ই মোক্ষম সুযোগ। রাতারাতি গরীব থেকে বড়লোক হওয়ার। প্রত্যেককেই একদিন মরতে হবে। কেউ আজ কেউ কাল কি পরশু। একদিন আগে পরে। তাই যারা মারা গেল তারা মরে গিয়ে পরিবারকে সুযোগ ক'রে দিয়ে গেল লক্ষপতি হওয়ার। এ সুযোগ হাতছাড়া হ'লেই আর আসবে না। অন্তত সারাজীবন পরিবারের জন্য কিছু করতে না পারলেও মরে তো পরিবারকে প্রিয়জনকে কিছু দিয়ে গেলাম। এবার সেই টাকা দিয়ে কি করবে আর না করবে পরিবারের সসস্যারা ভাববে। হয়তো এই টাকা নিয়ে ভাগাভাগির করণে পরিবারে লাগবে সংঘাত, জ্বলবে আগুন। তা যা হয় হ'ক। যার যার পাঁঠা তা সে মাথায় কাটুক আর ল্যাজায় কাটুক তার তার ঘরোয়া ব্যাপার। ভাঁড় মে যায় সেসব ব্যাপার। আমি মরে পাইয়ে দিয়ে গেছি পরিবারকে আর সরকার টাকা দিয়ে দায় সেরেছে। ব্যাস, এর থেকে বেশী কিছু দেখার দরকার নেই।
একটা অপ্রিয় সত্য কথা বলি, বেশ কিছুদিন পর যখন এর রেশ কেটে যাবে আর যারা এই দূর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে গেছে তাদের ঘরে কখনও কোনও অশান্তি হ'লে ক্রোধে উন্মত্ত হ'য়ে আবার এই পুরোনো স্মৃতি টেনে এনে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তির উদ্দেশ্যে বলা না হয়, "রোজগারের মুরোদ নেই আবার বড় বড় কথা বলে, জ্ঞান ঝাড়ে; সেদিন মরলেও দশ লক্ষ টাকা পাওয়া যেত।" যদিও হয়তো এ কথা মনের কথা নয়। তাই বোধহয় আমাদের দয়াল ঠাকুর অতি প্রত্যুষে ইষ্টভৃতির আগে স্মরণ করতে বলেছেন, আবৃত্তি করতে বলেছেন 'স্বতঃ অনুজ্ঞা'-র কথাগুলিঃ "আমি অক্রোধী, আমি অমানী, আমি নিরলস------"।
যাই হ'ক এবার থেকে রেলে চড়লেই সঙ্গে নাম ঠিকানা সহ পরিচয় পত্র বহন ক'রে চলা উচিত। পারলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে সেই পরিচয় পত্রের ট্যাটু ক'রে রাখা দরকার।
প্রবি।

প্রবন্ধঃ ফেসবুক ও আমি।

ফেসবুক কত জনপ্রিয় কত সস্তা বলিষ্ঠ মাধ্যম
এখানে সব কিছুরই চলে বিকিকিনি উত্তম মধ্যম।
এখানে চলে উলঙ্গ হওয়ার প্রতিযোগিতা মাধ্যম রীল
উদোম আহ্বান নারী শরীরের ভরা রসালো কথা নীল।
নারীবাদীদের কথা এখানে প্রাণে প্রাণে তোলে প্রখর ঝড়
উদ্ধত পুরুষালী ঢঙে মুখর অশ্লীল ভাষ্যে কেউ কেউ আনপড়।
কুৎসার ফোয়ারা ছুটিয়ে ধর্মবিরোধী ধর্মের বুকে মারে ছুড়ি
জীবন্ত ঈশ্বর পুরুষোত্তমের আসনে বসে শোনায় ধর্মকথা
বৃত্তির বৃত্তে ব'সে রিপুরসে জারিত অতি ধার্মিক আনাড়ি।
রাবণের খাওয়া খায় আর ভিডিও ক'রে পাঠায় মায়ে-ছেলে
বাপে-মেয়ে খায় নারী-পুরুষ সবাই ফেসবুকে-ইউ টিউবে
নাকি রোজগারের আজব অভিনব মরণ ধান্দা খুঁজে পেলে!
কত জনে কত বিষয়ে কত কথা লেখে কবিতা-গল্প হাজার
রাতারাতি কবি হওয়ার আজব কবিতা প্রতিযোগিতার জোয়ার!
কবিতা লেখা নয়কো কঠিন। নয়কো মোটেই মেধার দরকার
লাফ দিয়ে ঝপাং বিচিত্র শব্দে গড়ে নাও কবিতার আধার।
নিজেরা নিজেরা গড়ে নাও যত খুশী সাহিত্য পরিষদ আর
সেরা কবিতার দাও পুরস্কার তুলে রাতারাতি নোতুন কবির কোলে
ছড়িয়ে প্রশংসার বাহার। প্রশ্ন করলে বলবে কলার তুলে
কে তুমি হে হরিদাস পাল বিচার করার?
(লেখা ৮ই জুন'২০২৩)

প্রবন্ধঃ ঢাকার রাজপথে হিন্দুদের হরি সঙ্কীর্তন।

বাংলাদেশে ঢাকার রাজপথে নানা দেবদেবী ও গুরুর ছবি নিয়ে হিন্দুদের নগর হরি সংকীর্তন দেখে আপ্লুত হিন্দুরা। হিন্দুদের আজ এটা দ্বিধাহীন চিত্তে মেনে নিতে হবে যে হিন্দুদের সংহতি নেই; হিন্দুরা বিক্ষিপ্ত। এক তো এক ও অদ্বিতীয় রসুলে আত্মনিবেদিত প্রাণ মুসলমান (খাঁটি-অখাঁটি পরের কথা) অধ্যুষিত দেশ বাংলাদেশ তার উপর সংখ্যালঘু হিন্দুরা বহুনৈষ্ঠিক হিন্দু। হাজার দেবতা আর হাজার গুরু নির্ভর হিন্দুধর্মের উল্লম্ফন আজ হিন্দু ধর্মের অধঃপতনের কারণ। এইসব হুল্লোরবাজী ভক্তি দেখে লাভ নেই। অনেক অনেক জীবনভর অনেক দেখেছি।

আজ, সারা পৃথিবীতে একটাই বোধহয় হিন্দু রাষ্ট্র নেপাল। তাও অন্ধ ধর্মীয় কুসংস্কারের আচ্ছাদনে ঢাকা দেশ। ভারতে হিন্দুদের আধিপত্য হওয়া সত্ত্বেও বুক টানটান ক'রে হিন্দুরা বলতে পারে না আমি হিন্দু। বললেও উগ্রতার দূর্গন্ধ ছড়ায় সেই হুঙ্কারে। আর, ধর্ম্মটর্ম্ম মানেটানে না, ভারতীয় মনীষী, ভারতীয় কৃষ্টি-সংস্কৃতির ধার ধারে না উদারতার ভঙ্গিতে সব সমান একাকার ক'রে দেওয়া সবজান্তা বিদেশী মনীষী, বিদেশী কালচারে আকৃষ্ট কিছু অতি বুদ্ধিজীবী হিন্দু (বিশেষতঃ বাঙ্গালী হিন্দু) যারা হিন্দুটিন্দু মানে না কিন্তু মুসলমান, খৃষ্টান ইত্যাদিদের ধর্মাচরণ মানে এমন হিন্দুর কু-হুঙ্কারে তটস্থ হিন্দুরা।
আবার একশ্রেণীর স্বঘোষিত সনাতনী হিন্দুরা নিজেদের সমগ্র হিন্দুদের বাপঠাকুর্দা মনে করে আর গালাগালি করে হিন্দুদের। তাদের সফট্ টার্গেট সৎসঙ্গীরা। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে ও সৎসঙ্গীদের তারা গালাগালি করে। তারা ভাবে সৎসঙ্গীরা দুর্বল। কিন্তু তারা জানে না সারাবিশ্বে প্রায় ১০কোটির লক্ষ্যে ছুটে চলা সৎসঙ্গীরা ধর্মজগতে বিশ্বে একটা জীবন্ত ইষ্টে নিবেদিত সুশৃঙ্খল সভ্য ভয়ংকর শক্তি। ইচ্ছা করলেই তারা অনেক কিছু করতে পারে না। না, তারা তা করে না। কারণ সৎসঙ্গীরা জীবন্ত ইষ্ট শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রে নিবেদিত প্রাণ আচার্য আদেশে চলা সমাজ গড়ার দক্ষ যোগ্য সুশৃঙ্খল কারিগর। হিন্দু-মুসলমান-খৃষ্টান-বৌদ্ধ-শিখ ইত্যাদি ইত্যাদি মূল ও শাখা-প্রশাখা সমন্বিত সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ আজ সৎসঙ্গের পতাকার তলায় সম্মিলিত এক সৎসঙ্গী সম্প্রদায়। তাই, বহুনৈষ্ঠিক হিন্দুদের ঢাকার রাজপথের হরিসঙ্কীর্তন কোনও বার্তা পৌঁছে দেয় না কোনও সম্প্রদায়ের কাছে; তা সে হিন্দু সম্প্রদায় হ'ক আর যে সম্প্রদায়ই হ'ক।

শ্রীশ্রীঠাকুরের পরিস্কার বলা আছে, "একটু কাঁদলেই বা নৃত্যগীতাদিতে উত্তেজিত হ'য়ে লম্ফ-ঝম্পাদি ক'রলেই যে ভক্তি হ'ল তা নয়কো। সাময়িক ভাবোন্মাত্তাদি ভক্তের লক্ষ্মণ নয়কো।" যেদিন সব হিন্দু এক ও অদ্বিতীয় জীবন্ত আদর্শের তলায় এক হ'তে পারবে, মেনে নিতে পারবে সত্যকে, তাঁর আবির্ভাবকে, মেনে নিতে পারবে ভন্ডামি ছেড়ে ব্যক্তিগত নীচ স্বার্থকে দূরে ঠেলে দিয়ে তাঁর ব'লে যাওয়া প্রত্যেকবারের 'আমি আবার আসবো' এই পরিস্কার স্পষ্ট বার্তাকে সেদিন হিন্দুধর্মের পুনঃজাগরণ সম্ভব হবে। আর, সেদিন নিরাকার ঈশ্বরের সাকার রূপে রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ ও সর্ব্বশেষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র রূপে বারবার আসার যে উদ্দেশ্য তা পূরণ হবে। নতুবা বালখিল্য সমস্ত ভন্ডামি-ধান্দাবাজি ও আবেগ তাড়িত অজ্ঞান ভক্তির গুড়ে বালি। মহাভারতের মতো ধ্বংস অনিবার্য।

হে হিন্দু, সেদিনের ইঙ্গিত আমরা প্রতিদিনই দিনের আলোর মত স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু চোখ বন্ধ ক'রে ভাবছি ক'ই আমি তো কিছু দেখতে পাচ্ছি না। খরগোসের মতো ঝোপের মধ্যে মুখটা ঢুকিয়ে নিজেকে লুকিয়ে রাখছি আর খরগোশের পোঁদটা যে ঝোপের বাইরে বেরিয়ে আছে আর তা দেখতে পাচ্ছে খরগোশকে তাড়া করা শেয়াল আর এক্ষুনি যে খপ ক'রে এসে এক ভয়ংকর নিষ্ঠুর হিংস্র কামড়ে খাবলে নেবে পোঁদের মাংস তা বুঝতে পাচ্ছে না খরগোশরূপী হিন্দুরা ! সে ভাবছে সে নিরাপদেই আছে। আমাদের হিন্দুদের তথা জগতবাসীদের আজ খরগোশের দশা।

জানি না সত্যিই কোনওদিন এর থেকে মুক্তি হবে নাকি অপেক্ষা করছে মানবতার বুনিয়াদ ধ্বংস হ'য়ে নিশ্চিত বীভৎস মৃত্যুর ধ্বংসলীলা।
(লেখা ৬ই জুন'২০২৩)
প্রবি।

কবিতাঃ ব্যভিচারী ভক্তি।

ব্যভিচারী ভক্তিতে তুই ভেবেছিস হবি ভবসাগর পার?
এমনি বেকুব তুই এখনো আছিস ডুবে সেথায়
যেথা আছে তোর চারপাশে ভক্তির নামে ঘোর আঁধার!
প্রেমের কথা বলিস মুখে, বলিস গান গেয়ে
যজন-যাজন-ইষ্টভৃতি-স্বস্ত্যয়নী-সদাচার
এই পাঁচ আছে তরী করতে ভবসাগর পারাপার।
কিন্তু তোমার আচরণে নেই এই পাঁচের তিলমাত্র
অহোরাত্র জীবন মাঝে নেই তার বিন্দুসম ব্যবহার।
ব্যভিচারী ভক্তিতে তুই ঠকাবি জন জাতি সমাজ?
ভেবেছিস করবি জয়, হবি বিজয় সৎসঙ্গ জগতে আজ?
কাঞ্চনের ঝঙ্কারে কাঁপিয়ে তোর তনুমন সারাক্ষণ
দয়াল কি তোর ভুলে যাবে ব্যভিচার এমনি তাঁর ভুলো মন?
সে গুড়ে বালি, মরবি হতাশায় অবসাদে খালি
ব্যর্থতার অলিতে গলিতে ঘুরে ধুকে ধুকে মরে
সফলতার ব্যর্থ মালা গেঁথে চলেছো দ্বারে দ্বারে
হাতি পাদবে, হাতি পাদবে শুনে সময় ঘন্টা গিয়েছো গুণে
দিনশেষে অবশেষে অশ্বডিম্ব প্রসব করেছো তুমি মালি।
ব্যভিচারী ভক্তির হিসেব সময়ে তুই পাবি
শিশুপালের অপরাধের হিসেব একবার স্মরণ ক'রে নিবি।
তাই বলি, হে বন্ধু! হও সাবধান! ফিরে চলো নিজ নিকেতন
আর যদি চাও বাঁচতে মুখ ফেরাও আলোর দিকে এখনি।
(লেখা ৬ই জুনে'২০২৩)

প্রবন্ধ; প্রধানমন্ত্রীর সাজেশান স্কীম।

ভোটে জিতে আসার পর সরকার গঠনের দু'মাস শেষে একটা চমক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

চমকই বটে। কিন্তু বিরোধী নিন্দুকের কাছে, ঈর্ষাকারীদের কাছে তা সস্তা চমক।


চমকটা কি?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী mygov.nic.in website-এর মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে দেশের সম্যক বিকাশের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে suggestion-এর আহবান জানিয়েছেন। তাঁর এই নজিরবিহীন অভূতপূর্ব উদ্যোগকে নতমস্তকে সেলাম জানাই। মাত্র দুমাস সরকার পরিচালনার মধ্যেই এই অভিনব উদ্যোগ প্রমাণ ক'রে তাঁর সরকার পরিচালনায় সদিচ্ছার কথা। কি করলে দেশের সর্ব্বাঙ্গীণ ভালো হবে, দেশের উন্নতি হবে সেই বিষয়ে তিনি দেশের আম জনতার কাছে সুপরামর্শ চেয়েছেন। তাঁর আহবানে যথারীতি সাড়া পড়তে শুরু করেছে দ্রুতবেগে। তাঁর 'সুরাজ্য' গঠনের এই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যার suggestion approve হবে তাকে ৫০০০০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথাও তিনি ঘোষনা করেছেন।
এখন দেখার এই প্রোগ্রাম কতটা সফল হয়। তাঁর জন্য সময়ের অপেক্ষা করতে হবে। সময় তার সঠিক জবাব দেবে।
কিন্তু, 'সময় সবসে বড়া বলবান' এই কথাটা সম্ভবত ভুলে যান নিন্দুকেরা, ছিদ্রান্বেষীরা। কিম্বা তাদের ঈর্ষা এতটাই প্রবল যে তাদের গায়ের চামড়া হ'য়ে যায় গন্ডারের চামড়ার মত শক্ত ও অভেদ্য।
একটা মানুষ সফল হ'তে নাই পারেন। তার সফল হ'তে না পারার পিছনে নানা পারিপার্শ্বিক, আভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক কারণ থাকে।
কিন্তু তার উদ্যোগকে ছোট ক'রে দেখা, খাটো ক'রে দেখা, তার উদ্যোগের যুক্তিহীন সমালোচনা, নিন্দা, কটুক্তি তার উদ্যোগকে সাময়িক সফল হওয়ার পথে বাধা দান ক'রে ঠিকই কিন্তু শেষ রক্ষা হয়না এবং উদ্যোগপতির তাতে সম্মানহানী ঘটে না। কিন্তু যেটা হয় সেটা ঐ প্রবাদের মত হয়,
"হাতী চলে বাজারমে, কুত্তা ভোঁকে হাজার।
সাধুয়ো কো দুর্ভাবন নেহী, যব ঘিরে সংসার"।
প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ প্রচার হতেই কংগ্রেস নেতা কমলনাথ নরেন্দ মোদীর প্রতি তীব্র কটাক্ষ ছুঁড়ে দিতে বিন্দুমাত্র দেরী করলেন না। তিনি প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে হেয় ক'রে তাকে সস্তা চমক ও নাটকবাজী আখ্যা দিলেন। এই ঈর্ষা আজ একটা ব্যাধি হ'য়ে সমাজ জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছেয়ে গেছে।
এই ঈর্ষা প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেল The greatest phenomenon of the world Sri Sri Thakur Anukulchandre-এর কথা।
বিহারের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী পন্ডিত বিনোদানন্দতঝা-কে ঠাকুরের মন্ত্রশিষ্য আমেরিকান ভক্ত হাউজারম্যানদা বললেনঃ
"আপনি বিহারের Chief Minister থাকলে সুবিধা হ'ত সবার। সকলেরই ভালো হ'ত। সবাই চায় আপনাকে।
বিনোদাবাবু বললেনঃ না, তা না। ঈর্ষা করে মানুষ।
এই কথার উত্তরে শ্রী শ্রী ঠাকুর বললেনঃ ঈর্ষা করাটা একটা ব্যাধি। ঐ সব ব্যাধি। ঐসব গুলির দিকে দেখতে নেই।
বিনোদাবাবুঃ বেরিয়ে এসেছি(মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে)। দরকার হ'লে যাব।
ঠাকুরঃ দরকার হয়েই আছে। যাবেনই। রক্তের একটা মহিমা আছে তো! তা যেমন করে আর কিছুতে তেমন করে না। বংশমর্যাদার একটা ঐতিহ্য আছে তো! আপনারা যদি front-এ না যান তবে দেশ গঠন করবে কারা? আপনারা হলেন পুরোধা। আপনাদের সবার দরকার আছেই।
( লেখা ৪ই আগিষ্ট'২০১৪)




All reacto