Powered By Blogger

Saturday, May 21, 2022

প্রবন্ধঃ কি করতে পারি?

আমরা সাধারণ সৎসঙ্গীরা কি করতে পারি?

আমরা সাধারণ সৎসঙ্গীরা অনেক কিছুই করতে পারি।

ঠাকুরের দীক্ষিত বহু প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব আছেন কলকাতার বুকে। তারা ইচ্ছে করলেই শীর্ষেন্দুবাবুকে আমার লেখা খোলা চিঠির বিষয় নিয়ে অনেক কিছু করতে পারেন; অন্ততঃ চেষ্টা করতে পারেন। ব্যক্তিগত কিম্বা সমষ্টিগত উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা সাহিত্য একাডেমির কাছে ঠাকুরের সমগ্র কিম্বা যে কোনও গ্রন্থ নিয়ে প্রস্তাব পেশ করতে পারেন। পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই বিষয়ে এবং স্কুল কলেজে ঠাকুরের সাহিত্য পাঠের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানাতে। শুনেছি পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ইসলামিক রাষ্ট্র হওয়া সত্বেও সেখানে স্কুলে মাধ্যমিকে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের মহান জীবনী পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এই ভারতে তা হয়নি। অন্তত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে সেই আবেদন পাঠাতে পারেন সৎসঙ্গ সমাজের এলিট সৎসঙ্গীরা।

কিন্তু প্রথিতযশা ব্যক্তিরা তারা সব নিজের নিজের কর্মজগতে ব্যস্ত। প্রফেশনাল কর্মজগতে তারা এত ব্যস্ত সময় বের ক'রে উঠতে পারেন না। কর্মজগত শেষে তারা আসে বুকে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে অবসর জীবন তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে ঠাকুর রস পান করার জন্য আর বিভিন্ন জায়গায় বক্তা হওয়ার জন্য। ভক্ত কেউ হ'তে আসিনি আমরা। আমি আপনি আমরা সাধারণ দীক্ষিত মানুষও তাই। কেউই সাধু ন'ই; সব আমরা সাজা সাধু।

আমরা আম সৎসঙ্গীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনার মধ্যে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা সাহিত্য একাডেমির কর্তাব্যক্তি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমাদের মনের কথা, হৃদয়ের ব্যথা পৌঁছে দিতে পারি। এটুকু করতে তো পারি। পারি না?

আমরা সাধারণ সৎসঙ্গীরা ফেসবুকের মত স্ট্রং মিডিয়ার সুযোগ নিতে পারি, মিডিয়ার মধ্যে দিয়ে পরস্পরের মধ্যে শীর্ষেন্দুবাবুকে লেখা চিঠির মহতী বিষয় নিয়ে নির্দোষ আলাপ আলোচনা করতে পারি, শেয়ার ক'রে নিজেরা জনমত তৈরি করতে পারি, জনমানসের মনে প্রশ্ন তুলে দিতে পারি, শীর্ষেন্দুবাবুর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্য একাডেমির কর্তাব্যক্তিদের কাছে জোরালো আবেদন পৌঁছে দিতে পারি, সরকারী প্রশাসনিক স্তরে দরজা নক করতে পারি, পারি আরও অনেক কিছু করতে। কিন্তু করি না। কি করি?

যেটা করি বা করতে পারি বা ক'রে চলেছি তা হ'লোঃ

ফেসবুকে কথার ফুলঝুরি ছিটিয়ে চলেছি আর কেউ বা নিজেদের মধ্যে শুধু হাই হ্যালো জয়গুরু করছি। আর, সুযোগ পেলে সৎসঙ্গীর উল্টো অসৎসঙ্গীর চরিত্রে অভিনয় করছি। পারি ভাবের ঘুঘু হ'য়ে মহান ভক্ত সেজে তাত্ত্বিক আমেজে মগ্ন হ'য়ে থাকতে। ব্যস মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত।

যাই হ'ক, এই লেখার মধ্যে দিয়ে দয়ালের কাছে প্রার্থনা হৃদয়ের এই অকপট অকৃত্রিম আন্তরিক আবেদন অন্ততঃ যেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছে যায়। -------প্রবি।

প্রবন্ধঃ চাপানউতোর।

 শীর্ষেন্দুবাবু ও সৎসঙ্গীদের চাপানউতোর।

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়কে আমার চিঠি লেখা নিয়ে শুরু হ'য়ে গেল সৎসঙ্গীদের চাপান উতোর। নানাজনের নানা মন্তব্য চিঠি লেখাকে ঘিরে। বেশীরভাগ সৎসঙ্গী সাধুবাদ জানিয়ে মন্তব্য করেছেন, ওয়াটস আপ, মেসেঞ্জারে তাদের মতামত জানিয়েছেন, ফোন ক'রে কুশল জিজ্ঞেস ক'রে এমন একটা লেখা লেখার জন্য তাদের অকৃত্রিম অকৃপণ আনন্দ ব্যক্ত করেছেন ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তাদের সকলের জন্য দয়ালের চরণে মঙ্গল প্রার্থনা করি। এছাড়াও কেউ কেউ নিম্নরূচীর মানসিকতা সম্পন্ন নিম্নমানের সৎসঙ্গী নামধারী অসৎসঙ্গী আছেন যারা আমার চিঠির সমর্থনকারী পাঠকদের মগজ ধোলাই ক'রে বিভ্রান্ত করেছেন যাতে মন্তব্য বা শেয়ার ডিলিট ক'রে দেয়। তা'তে সফলও হয়েছেন অনেকেই।

যাই হ'ক, সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের এবং বিশেষ ক'রে ঘৃণ্য নিন্দুকদের সকলের অবগতির জন্য জানাই শীর্ষেন্দুবাবুর সম্পর্কে আপনি বা আপনারা কি শুনেছেন আমি জানি না। তবে কারও কথা শুনে জাজমেন্টাল হওয়া উচিত না। তাহ'লে আমার দয়াল ঠাকুর সম্পর্কে হাজার হাজার প্রতিনিয়ত খুল্লমখুল্লা কুৎসা হ'য়ে চলেছে আজও দেহ রাখার ৫০ বছর পরেও। কুৎসার বন্যা ভাসিয়ে দিচ্ছে তাঁর পরবর্তী প্রজন্ম 'সৎসঙ্গ' পরিচালক পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীদাদাদের। আর এটা ঠাকুর যতবার এসেছিলেন ততবার হয়েছে এবং যে কোনও মহান ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও হয়েছে। আর কারা কুৎসা রটায়? মহাত্মারা কুৎসা রটায় না; কুৎসা রটায় জীবাত্মা।

তাই উদাহরণ স্বরুপ বলি, আমার এই লেখা একজন শেয়ার ক'রেছিল। আর সেই শেয়ারকে কেন্দ্র অনেক শেয়ার হ'য়ে চলেছিল। আশা করা গিয়েছিল এইভাবে শ্রদ্ধেয় শীর্ষেন্দুদার কাছে পৌঁছে যাবে এই চিঠি ও চিঠির মধ্যে দিয়ে সকলের আবেদন। সেখানে অনেক পজিটিভ কমেন্টের মধ্যে একজনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নেগেটিভ কমেন্টে ভয় পেয়ে সন্দেহবশতঃ জাজমেন্টাল হ'য়ে শেয়ার করা আমার লেখা ডিলিট ক'রে দেয় সেই ফেসবুক ব্যবহারকারী। ডিলিট করার আগে আমার চিঠির বিষবস্তু নিয়ে আমার সঙ্গে কথা ব'লে একবারও সত্য মিথ্যা যাচাই করার প্রয়োজন মনে করেনি; এতটাই প্রভাবিত হয়েছিল। কথায় আছে, চিল নিয়ে গেছে কান শুনে চিলের পিছনে না দৌড়ে নিজের কানে হাত দিয়ে পরীক্ষা ক'রে দেখে নিতে হয় সত্য মিথ্যা। যা করেনি ঐ যুবক সৎসঙ্গী। এর ফলে সমস্ত শেয়ারও ডিলিট হ'য়ে যায়। এই যদি সৎসঙ্গীদের নড়বড়ে চরিত্র হয়, মানসিকতা হয় মিথ্যা প্রচারে ভরসা রাখার, নির্ভর করে কুতসা রটনাকারীর রটনার ওপর তাহ'লে জন্মজন্মান্তরেও আমরা ঠাকুরের যোগ্য সন্তান হ'য়ে উঠতে পারবো না।

শীর্ষেন্দুবাবু সম্পর্কে শুধু বলতে পারি তিনি একজন অত্যন্ত ক্ষমতাশালী কলমচি। অসাধারণ তাঁর সমগ্র সাহিত্য। শুধু একটা দুটো বা দশটা বারোটা নয় একের পর এক, একের পর এক তিনি সৃষ্টি ক'রে গেছেন বড় ও ছোটোদের জন্য বহু উপন্যাস, বড়, ছোটো, অদ্ভুতুরে গল্প। তাঁর লেখা যদি অনুবাদ হয় তাহ'লে ভারত তথা বিশ্ববাসী জানতে পারতো কতবড় উচু মাপের প্রতিভাবান মানুষ তিনি। একদিন তিনি দেশের সেরা কোনও পুরস্কারে পুরস্কৃত হ'লেও আশ্চর্য হবো না। এই মানুষটি যেহেতু ঠাকুরের মন্ত্র শিষ্য ও ঋত্বিক মানুষ এবং প্রথিতযশা স্বাভাবিকভাবেই এদের দায়িত্ব সাধারণ ভক্তমন্ডলীর চেয়ে অনেক অনেক গুণ বেশী। এদের দায়িত্ব আছে 'সমাজ কো বদল ডালো'-র ক্ষেত্রে যেমন, ঠিক তেমনি আছে নিজের জীবনাদর্শকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার দায়িত্বও সমান। কম তো নয়ই বরং বেশী। কারন তার পরিচয়েই আজকে আমার পরিচয়। আমার পরিচয়ে পরিচিত নন তিনি। তাই একজন গুরুভাই হিসেবে গুরুভাইকে লিখেছিলাম চিঠি; এই যা মাত্র। এখানে কোনও অকারণ অহেতুক বিতর্ক নেই। যাদের বিতর্ক করার করবে কারণ তাদের সবরকম দৃষ্টিই অশুদ্ধ।

এছাড়া বলতে পারি আজকের এই শয়তানি পৃথিবীতে হাতে গোনা কয়েকজন মানুষের মধ্যে শ্রদ্ধেয় শীর্ষেন্দুবাবু একজন নিঃসন্দেহে ভদ্র, সভ্য, জীবন্ত ঈশ্বর বিশ্বাসী উৎকৃষ্ট মনের মানুষ।--------প্রবি।

সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়কে খোলা চিঠি।

আপনি আমার জয়গুরু ও প্রণাম নেবেন। আপনাকে হঠাৎ চিঠি লিখতে বসলাম বিশেষ কারণে। ভেবেচিন্তেই আপনাকে এই চিঠি লিখছি। উঠলো বাতিক তো কটক যাই'-এর মতো উঠলো খুজলি আর আপনাকে চিঠি লিখলাম তা' নয়। আর জানি না আপনার চোখে পড়বে কিনা এই চিঠি।

আমি আপনার একজন গুণমুগ্ধ পাঠক। বলা ভালো পাঠক ছিলাম যৌবনে এখন আর পড়ার সময়ও পাই না; বরং বলা ভালো পড়তে আর কোনও কিছুই ভালো লাগে না। পড়তে না পারার পিছনে কারণ অবশ্যই আছে আর সেই কারণ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। মাঝে মধ্যে উল্টে পাল্টে যদিও দেখতে বা পড়তে ইচ্ছে করে তা করে শুধু ঠাকুরের বিশাল গ্রন্থ। আপনার উপন্যাস ঘুণপোকা প্রথম পড়েছিলাম স্কুল জীবন শেষে কলেজ জীবনের সময়। সালটা সম্ভবত ১৯৭৪-৭৫ হবে।

সে যাই হ'ক ঘুণপোকা আমার সর্বাঙ্গ ঢেকে ফেলেছিল; আমার শরীর, আমার মন, আমার আত্মা। এরপর দূরবীন, রঙিন সাঁকো, মানব জমিন, পারাপার, যাও পাখি, কাগজের বৌ ইত্যাদি উপন্যাস কম বেশী পড়েছি। পড়েছি কয়েকটা গল্প। তারমধ্যে 'ট্যাঙ্কি সাফ' যে গল্প সমাজকে সরাসরি মেসেজ দিচ্ছে "বহুত গাদ্দা বাবু, এ সাফ হবার নয়' সেই গল্প নিয়ে কেন যে কেউ সিনেমা করলো না অবাক হ'তে হয়!  আপনার  সব লেখা মেসেজ দেয়; যেমন আজব 'গাঁয়ের আজব কথা' সিনেমা। 

যাক এসব কথা। আসল কথা সরাসরি বলার আগে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সাহিত্য আকাডেমি পুরস্কার পাওয়ার জন্য। যদিও এর আগেও আপনি আপনার উপন্যাস 'মানবজমিন' এর জন্য এই পুরস্কার পেয়েছেন।

এবার আসি অন্য পুরস্কারের কথায়। পেয়েছেন বিদ্যাসাগর পুরস্কার, আনন্দ পুরস্কার, পেয়েছেন বঙ্গবিভুষণ পুরস্কার আর গত বছর আপনি সাহিত্য আকাডেমি ফেলো নির্বাচিত হয়েছেন।

এবার আসি আসল কথায়। আপনি সাহিত্য সাধনায় সফল কৃতি পুরুষ। পেয়েছেন অর্থ, মান, যশ ইত্যাদি সব। আপনার অতীত অর্থাৎ যৌবনকাল ছিল ভয়ংকর। তা আপনি অনেকবার বলেছেন। এবং সেই ভয়ংকর অতীত যে শ্রীশ্রীঠাকুরের দয়ায় ১৯৬৫ সালে সরস্বতী পুজোর সকালে তাঁর দেওঘর আশ্রমে মন্ত্রশিষ্য হওয়ার পর সেখান থেকে ফিরে এসেছিলেন বাসে দীর্ঘ রাস্তা আপনার কলকাতার মেসে। আর সেদিনই মেসের দরজা খুলেই ঘরে প্রবেশ করার পর আপনি আপনার দীর্ঘদিনের যন্ত্রণাময় জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে নতুন জীবন, নতুন জগতের সন্ধান পেয়েছিলেন। তারপর থেকে শুরু হ'লো আপনার সাহিত্য জীবনের সুসংবদ্ধ উত্থান আর অন্যদিকে  The greatest phenomenon of the world SriSriTHakur Anukulchandra-এর জীবন দর্শন প্রচার। এই যে The greatest phenomenon of the world SriSriTHakur Anukulchandra কথাটা লিখলাম ঠাকুর সম্পর্কে এই বিশেষণ প্রয়োগও আপনারই। 

যাক, বারবার আসল কথা থেকে সরে যাচ্ছি। এবার বলি, আপনি তো জানেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র কে? আপনি তো জানেন তাঁর জীবন দর্শন? আমি ঠাকুর কে, ঠাকুরের জীবন দর্শনের কথা না হয় বাদ দিলাম। সেটা পক্ষপাতিত্য দোষে দুষ্ট হ'তে পারে। কিন্তু আপনি তো জানেন তাঁর কি বি-শা-ল সাহিত্য ভান্ডার! আপনি তো জানেন তাঁর ৮৮২৯ টি জীবনের সমস্ত বিষয়ে কথিত ছড়ার সমুদ্র! আপনি তো জানেন তাঁর প্রায় তিন হাজার ইংরেজি বাণির কথা! আপনি তো জানেন তাঁর গদ্য আকারে ১০ হাজার বাণির কথা! আপনি তো জানেন তাঁর সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার বাণির কথা! আপনি তো জানেন তাঁর শ্রীহস্তে লেখা একমাত্র ছোট্ট 'সত্যানুসরণ' গ্রন্থের কথা! আপনি তো জানেন তাঁর অজস্র মূল্যবান মধুর চিঠির বিষয় ও ভাষা সম্পদের কথা? আপনি তো জানেন তাঁর দীর্ঘ জীবনের কথোপকথন প্রফুল্লদা দ্বারা অনুলিখিত দুনিয়ার সমস্ত বিষয় উন্মোচিত 'আলোচনা প্রসঙ্গে ২৩ খন্ড'  গ্রন্থের কথা? আপনি তো জানেন দেবীদার 'দীপরক্ষী' রেবতীদা, মণিদা, আতপেন্দ্রদা ইত্যাদি দ্বারা অনুলিখিত ঠাকুরের অজস্র বিষয় সংকলিত বিভিন্ন গ্রন্থের কথা? আপনি তো জানেন ইসলাম প্রসঙ্গে, বিজ্ঞান বিভুতি, চলার সাথী, শাশ্বতী (৩ খন্ড), বিবাহ বিধায়না, সমাজ সন্দিপন, যতি অভিধর্ম ইত্যাদি বহু বিষয়ের উপর ব'লে যাওয়া কথা সম্বলিত গ্রন্থ (প্রায় ৪৬টি)? আপনি তো জানেন শ্রীশ্রীঠাকুরের সমাধি অবস্থায় কথিত ৭২ দিনের কথা সম্বলিত গ্রন্থ পূণ্যপুঁথি' গ্রন্থের কথা? যদিও ঠাকুর তাঁর সমাধি অবস্থায় বলা এই কথাগুলি অনুমোদন করেননি নিজে। আপনি তো জানেন শীর্ষেন্দুবাবু জগতে এমন কোনও বিষয় নেই যে বিষয়ে তিনি সহজ সাবলীল বিচরণ করেননি? আপনি তো জানেন জগতের সমস্ত সমস্যার সুচিন্তিত সমাধান তিনি দিয়ে গেছেন? আপনি তো জানেন ঠাকুর তাঁর রচনায় কত নতুন নতুন নিজস্ব বাংলা শব্দ তৈরি করেছেন, খুলে দিয়েছেন পুরোনো শব্দের রুটে গিয়ে উপরি অর্থের পরিবর্তন ক'রে নতুন অর্থের দরজা? যার জন্য তৈরি করতে হয়েছে নতুন ক'রে তাঁর শব্দের বাংলা অভিধান!  

তাই বলি, যাক এসব আপনি সবই জানেন। আপনাকে বলা ধৃষ্টতারই নামান্তর। আমি এর জন্যে ক্ষমাপ্রার্থী। শুধু বলতে চাই, এই চিঠি লিখলাম আপনাকে কারণ আপনি বৃত্তি প্রবৃত্তির উপরে অবস্থানকারী এই বাংলা তথা ভারতের একজন গুণী মানুষ। আপনি পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাডেমির ফেলো নির্বাচিত হয়েছেন। আপনি কি পারেন না তাঁর সমগ্র সাহিত্য ভান্ডার বাংলা আকাডেমির ছত্রছায়ায় এনে তাঁর মূল্যায়ন ক'রে তাঁকে যথাযোগ্য সম্মান দিতে? তিনি ধর্ম জগতের লোক, ঠাকুর আখ্যা প্রাপ্ত বিস্ময় পুরুষ ব'লে কি তিনি বঞ্চিত হবেন? তাঁর মূল্যায়ন করার কেউ নেই? যদিও নেই একথা সত্যি কারণ তাঁর মত এমন সমস্ত বিষয়ে নিখুঁত সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিশ্লেষণ, বর্ণনা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। এই কথা কেন বললাম সেটা আপনি জানেন আর যারা তাঁর বিশাল জ্ঞান ভান্ডার স্টাডি করেছে তারা জানে।

যাই হ'ক আপনি ও আপনার মতন যারা গুণী মানুষ আছেন তাঁরা এগিয়ে আসুন। অন্তত প্রতিবারের মত এবারও ধর্ম্মগ্রন্থ ব'লে তাঁর অর্থাৎ জীবন্ত ঈশ্বরের বি-শা-ল সাহিত্য ভান্ডারকে উপেক্ষা করবেন না, উপেক্ষিত হতে দেবেন না। যদিও জীবন্ত ঈশ্বর কোনো পুরুস্কারের লোভে সৃষ্টি করেন না তথাপি তাঁর গ্রন্থের প্রকৃত মূল্যায়ন হ'ক, সম্মান পাক তাঁর জীবন দর্শন ও জাগতিক সমস্ত বিষয়ের ওপর ব'লে যাওয়া অমূল্য রত্নসম বিপুল গ্রন্থ ভান্ডার! চালু হ'ক সমস্ত বিষয়ের ওপর ব'লে যাওয়া হাতে কলমে করা তত্ত্বকথা পাঠ্য হিসেবে স্কুল,কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে।

আপনার কাছে একজন শ্রীশ্রীঠাকুরের শিষ্য হিসেবে আমার আন্তরিক আবেদন আপনার জীবন সায়াহ্নের শেষ দিনগুলিতে ওকালতি হ'ক বিশ্বের বিস্ময় সর্ব্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের বিরাট সাহিত্যের স্বপক্ষে।

পরমপিতার রাতুল চরণে আপনার সর্বাঙ্গীন কুশল প্রার্থনা ক'রে চিঠি শেষ করলাম।

জয়গুরু।

Friday, May 13, 2022

কবতাঃ 'আমি' জনতা!

এই যাচ্ছো কোথায়? ঐদিকে। 
ঐদিকে কোথায়? জংগলে। 
ওই দিকে তো গভীর জঙ্গল, 
ঘোর অন্ধকার, হিংস্র জন্তুর আবাস; 
শয়তান কিল্বিসের নিবাস। 
তো, জংগলে কি আছে!? কেন যাচ্ছো? 
মঙ্গল। মঙ্গল আছে।
মঙ্গল আছে? 
কি পাগলের মতো বকছো আজকাল 
আর আবোল তাবোল আঁকছ!? 
হ্যাঁ আছে। মঙ্গল আছে। 
আর আমি না, তুমি পাগল। 
পাগলাখানায় থাকে না পাগল 
থাকে জনারণ্যে জনতার মাঝে। 
পাগলাগারদে যে আছে আঁধারে 
সে ভালো তুমি আছো বাইরে 
আলোর মাঝে; কালো। 
কি করতে যাচ্ছো? 
মারতে। মারতে? 
কাকে মারতে? নিজেকে। 
নিজেকে? মারতে মানে মরতে? 
না মারতে। যাব্বাবা! 
তা মারতে বা মরতে যাই-ই হ'ক যাচ্ছো কেন? 
ঐ ওরা মারবে। তাই আগেভাগে মারছি নিজেকে। 
কে মারবে? কারা মারবে? 
নেতারা। 
কে নেতা? কোন নেতা? 
নেতাদের যারা বানায় নেতা; সেই নেতা। 
আচ্ছা মুশকিল তো! সে তো জনতা! 
নেতাদের নেতা বানায় সে তো জনতা। 
আজ যে নেতা সে কাল ছিল জনতা 
আর জনতা ছিল নেতা। 
আর আজ জনতার রায়ে জিতে 
কালকের জনতা আজ হয়েছে নেতা। 
তা মারবে কোন নেতা!? 
মারবে জননেতা জনতা।। 
তাই নিজেকে নিজে মারতে 
যাচ্ছে জনতাকে মারতে জনতা। 
তা জঙ্গলে যাচ্ছো কেন মারতে? 
খোলা ময়দানে প্রকাশ্য রাজপথে 
অসুবিধা কোথায় জনতাকে ঘিরতে!? 
লজ্জা ভয় কোথায় তাকে মারতে!? 
অসুবিধা আছে। তা তুমি বুঝবে না। 
লজ্জায় মুখ ঢেকে মারবো নিজেকে 
কেউ এ মুখ আর দেখবে না; 
হারিয়ে যাবে চিরদিনের মত 
গভীর জঙ্গলের গহীন অন্ধকারে 
নিশ্চিন্তে নিশ্চিত মঙ্গলের বুকে। 
প্রতিবার বাঁচার আশা আর মুক্তির স্বপ্ন নিয়ে 
'আমি' জনতাকে কাউকে নেতা 
বানাতে হবে না যেতে আর কোনদিনও 
যেতে হবে না আর এ অধমেরে। প্রবি।

Saturday, May 7, 2022

কবিতাঃ যারা গেছো চলে-------

সবাই গ্যাছো চ'লে। 
কেউ নেই বাকী আজ অবশেষে। 
জীবন খুঁজে পাবার তরে এসেছিলে যারা 
তারা সব গেছো চলে ফিরে 
মরণ নদীর কূলে জীবন নদী পায়ে দ'লে। 
যারা তোমরা সবাই গেছো চ'লে 
দয়ালকে একা রেখে অনাদরে ফেলে 
দল বেঁধে নেচে নেচে হেসে হেসে 
কানে কানে মরণের ঢেউ তুলে 
তারা তোমরা যদি পারো যতটুকু পারো 
ক'রো দয়ালের যা আছে অসম্পূর্ণ কাজ প্রায়শ্চিত্ত রূপে, 
রেখো দয়ালের লাজ জীবন সূর্য পাটে যাবার আগে। 
আর যদি না পারো ফিরে এসো করি ত্বরা 
জীবন নদীর কুলে তাঁর দরবারে 
শেষ নিঃস্বাস ফেলার আগে তাঁর চরণতলে 
শেষের সেদিন ভয়ংকর একথা স্মরণ ক'রে। 
অশ্রুপাতে ভিজিয়ে তাঁর রাতুল চরণ 
নাশিও লক্ষ্য করি তাঁর অসহনীয় বুকে 
তোমার দেওয়া বিষ ব্যাথা; 
দেখো তোমার নিজ ব্যথা জ্বালা যন্ত্রণা 
যা আছে সব যাবে ঘুচে। 
কারণ তিনি দয়াল, আমার তোমার বাপ,
সকলের পরমবাপ!----প্রবি।

Thursday, May 5, 2022

কবিতাঃ ঘুরে দাঁড়াও চলো এগিয়ে।

হে প্রকাশ! ওঠো। জাগো। ঘুরে দাঁড়াও। 
পিছনে কে আছে দেখতে যেও না। 
ওঠো। সামনে বাধার পাহাড় ভেঙে যাও এগিয়ে। 
খুঁজতে যেও না সামনে পিছনে দাঁয়ে বাঁয়ে 
কে আছে না আছে তোমার। 
ওঠো। দাঁড়াও। সমস্ত শক্তি তাঁতে কেন্দ্রায়িত ক'রে 
ভীম বিক্রমে দাও ঝাঁপ। 
প'ড়ো না ভেঙ্গে, হ'য়ো না হতাশ। 
আর নির্ভর করো তাঁর প্রতি, রাখো বিশ্বাস। 
পিছনে হাজারো পদধ্বনি পাচ্ছো শুনতে 
সে পদধ্বনি নয় লক্ষ্য তোমার। 
তুমি একা! হ্যাঁ একা! 
তোমার লক্ষ্য সামনে 
তমসার পার অচ্ছেদ্যবর্ণ মহান পুরুষের দিকে। 
তুমি তাঁরই জন্য, শুধু প্রভুর জন্য। 
পিছনের পদধ্বনি সেও ঐ একই লক্ষ্যে চলেছে ছুটে। 
পদধ্বনি শুনে ক'রো না ভুল 
তোমাকে লক্ষ্য ক'রে নয় ছুটে আসা এ পদধ্বনি 
এ তোমার উদ্দেশ্যে ছুটে আসা পদধ্বনি নয়! 
তুমি যার দিকে চলেছো ছুটে 
পিছনের হাজারো পদধ্বনি তাঁকে উদ্দেশ্য ক'রে 
তাঁরি দিকে চলেছে ছুটে। 
হে প্রকাশ! হও অর্জুন! 
মাছের চোখের মত তুমি দেখতে পাচ্ছো 
শুধু প্রভুর প্রেমময় মুখ! 
শুনতে পাচ্ছো তাঁর সুধাভরা কণ্ঠস্বর। 
দিন শেষে দেখতে যেও না মার্কশীটে 
কত নম্বর পেয়েছো কোন ঘরে। 
হে প্রকাশ! ওঠো। 
বন্দে পুরুষোত্তমম ব'লে সমস্ত শক্তি নিয়ে 
মুষ্ঠিবদ্ধ দু'হাত তুলে উর্ধপানে দাও লাফ! 
শুরু হ'ক নতুন ক'রে চলা। 
পিছনের এতদিনের হিসেব নিকেশ পিছনে ফেলে 
শুরু হ'ক নতুন ক'রে চলা। 
 এ চলা অন্তহীন চলা! 
সকলের মাঝে একাকী চলা! 
গহীন অন্ধকার পথে শুধু সামনের দিকে এগিয়ে চলা 
দূরের দিকে তাকিয়ে একেলা। 
নদী নালা, খানাখন্দ, মাঠ পাহাড় ডিঙিয়ে 
অন্ধকার আলোর জগতকে পিছনে ফেলে 
নিশিডাকের মায়াময় হাতছানির মত 
প্রিয়পরমের ডাকে এগিয়ে চলা; 
অন্তহীন ক্লান্তিহীন ভয়হীন শঙ্কাহীন 
অমরধামের পথে নিঃশব্দে নীরবে এগিয়ে চলা। 
প্রকাশ চলো এগিয়ে। 
আচার্যদেবের বলা নির্দেশ মাথায় নিয়ে চলো এগিয়ে 
নিঃশব্দে নীরবে এবেলা ওবেলা দু'বেলা।