Powered By Blogger

Friday, September 29, 2023

উপলব্ধিঃ সৎসঙ্গের প্রয়োজনীয়তা।


আজ প্রতি মুহূর্তে বুঝতে পারি সৎসঙ্গ-এর প্রয়োজনীয়তা!
সৎ-এর সঙ্গ পেয়েও যে নিজেকে পরিবর্তন করতে পারে না সৎ-এর পথে তার চেয়ে দুর্ভাগা আর কেউ নয়!
সৎসঙ্গে আছি অসৎ-এর হাত ধ'রে নিজেও মরে পরিবার-পরিজনসহ অন্যকেও মারে!
সৎসঙ্গ ঠাকুরবাড়ি সম্পর্কে স্ট্রং সেন্টিমেন্ট না থাকলে গুরুভাইদের ঠাকুরবাড়ি না আসায় ভালো!
ভন্ডামির চরম উদাহরণ:
ঠাকুর যা ভালোবাসেন না তা করি
আর যা ভালোবাসেন তা করি না অথচ আমি তাঁর ফলোয়ার!
\ভন্ডামির চরম নিদর্শন:
শারীরিক, মানসিক সদাচারের লেশমাত্র নেই জীবনে আর আত্মিক সদাচার তো দূরের কথা অথচ আমি সৎসঙ্গী!
ভন্ডামির চরম নিদর্শন:
ঠাকুরের কথা বলি কিন্তু তা বিন্দুমাত্র মেনে চলি না, চলার চেষ্টাও করি না, ইচ্ছেও নেই অথচ আমি সৎসঙ্গী।
ভন্ডামির চরম নিদর্শন:
ভুল করি, ভুল বলি, ভুল হয় প্রতিমুহূর্তে!
শিক্ষা লাভ করি না, চেষ্টাও করি না, ইচ্ছেও নেই অথচ সৎসঙ্গী।
ঠাকুরের কথা যদি বলি এসো একটু হ'লেও কথাগুলি মানি আর যদি একটুও না মানি এসো চুপ ক'রে থাকি!
সহযোগিতা নেই, নেই কোনও কর্মযজ্ঞ!
আছে বিরোধীতা, আছে সমালোচনা
এরা নাকি ঠাকুর ভক্ত!!
প্রকৃত সৎসঙ্গী চিনে নিন:
ঠাকুর আদর্শ আর ঠাকুরবাড়ির প্রতি গালাগালি, কুৎসা, নিন্দা, সমালোচনা, অপমান, অশ্রদ্ধা ভক্তের অলংকার!
ঠাকুরের পরম ভক্ত এযুগের হনুমান শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের প্রতি তীব্র ঘৃণা, কটূক্তি ও সমালোচনাকারীর জিভ পাপে ভারী, নরাধম!
( লেখা ২৯শে সেপ্টেম্বর'২০২০ )















Thursday, September 28, 2023

তথ্য সম্প্রচার। বিশেষ বিজ্ঞপ্তি: (FAKE PAGE ALERT !!!)

বিষয়: মূল পেজ ও ক্লোন পেজ।
সম্প্রতি 'খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্র'-এর নামে আরো একটি পেজ খুলে কতিপয় 'খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্র' বিরোধী সুযোগসন্ধানী ঠাকুরকে আয়ের উপকরণ বানিয়ে সাধারণ সৎসঙ্গীদের বিভ্রান্ত করার মরিয়া প্রচেষ্টা চালিয়ে চলেছে। এই ফেক পেজের সঙ্গে যুক্ত কিছু ইস্টবিরোধী মানুষ সৎসঙ্গী সেজে বহুদিন ধরে খড়দার সাধারণ সৎসঙ্গীদের সঙ্গে ভয়ঙ্কর ৪২০খেলায় মেতে উঠেছে। খড়দার সাধারণ সৎসঙ্গীদের কাছে আত্মপ্রতিষ্ঠার উন্মাদনায় খড়দার বুকে ফেক পেজ খোলার মধ্যে দিয়ে যে কলঙ্কজনক অধ্যায় সূচিত হ'লো তা সৎসঙ্গের বুকে ইতিহাস সৃষ্টি করলো! এই ফেক পেজের খল নায়কেরা এমনভাবেই ক্লোন কেন্দ্রের জন্ম দিয়ে সাধারণ সৎসঙ্গীদের কাছ থেকে শ্রীশ্রীঠাকুর ও সৎসঙ্গের নামে আগামীদিনে অবৈধ রোজগারের রাস্তা খুলে দেওয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। এই পেজের জনকেরা সৎসঙ্গ জগতে পৃথিবীর প্রথম সৎসঙ্গ ক্লোন কেন্দ্রের জনক! খড়দহ সৎসঙ্গীদের জানার সুবিধার জন্য নিম্নে মূল খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্র ও ক্লোন কেন্দ্রের নমুনা তুলে ধরা হ'লো।
মূল কেন্দ্র: Khardaha Satsang Kendra. (ইংরেজিতে)
ক্লোন কেন্দ্র: খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্র। (বাংলায়)
মূল কেন্দ্র 'খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্র'-এর জন্ম তারিখ ১০ই সেপ্টেম্বর'২০১৭
মূল কেন্দ্র খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য আশীর্বাদ প্রদান করেন পরম পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবাবাইদাদা। তিনি শ্রী প্রকাশ বিশ্বাসদাকে ১০ই সেপ্টেম্বর'২০১৭ ভোরবেলা এই আশীর্ব্বাদ প্রদান করেন এবং আশীর্ব্বাদ প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে মূল কাজ হিসেবে বর্তমানে খড়দা অঞ্চলে 'সৎসঙ্গ, দীক্ষা, ইষ্টভৃতি' এই তিন বিষয়ে কাজ করার নির্দেশ দান করেন। সেইদিন প্রকাশদার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রকাশদার স্ত্রী ও পুত্র-কন্যা। সেই নির্দেশ মাথায় নিয়ে আজও খড়দার বুকে 'সৎসঙ্গ, দীক্ষা ও ইষ্টভৃতি' এই তিন মহান যজ্ঞ নিষ্ঠার সঙ্গে পালন হ'য়ে চলেছে খড়দহ অঞ্চলের দীক্ষিতদের নিয়ে।
মূল কেন্দ্র Khardaha Satsang Kendra পেজের জন্ম তারিখ ১৯শে সেপ্টেম্বর'২০১৭।
আজ তিন বছর ধ'রে খড়দহ অঞ্চলে Khardaha Satsang Kendra দ্বারা অনুষ্ঠিত ও পরিচালিত সমস্ত অনুষ্ঠানের বিবরণ এই পেজে বর্তমান! যে কেহ এই পেজের মাধ্যমে এই কেন্দ্র সম্পর্কে প্রকৃত সত্য জানতে পারে ও নিজেকে আপডেট রাখতে পারে।
ক্লোন কেন্দ্র খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্রের পেজের জন্ম তারিখ ১৫ইআগস্ট'২০২০। এই কেন্দ্রের জনকদের চেতনা ফিরে আসুক, শুভবুদ্ধির উদয় হ'ক। ঠাকুরের মিশনকে যে বা যারা ফেক পেজ তৈরি ক'রে কলঙ্কিত করতে চাইছে, ঠাকুরের রথকে আটকাতে চাইছে, সাধারণ সৎসঙ্গীদের বিভ্রান্ত করতে চাইছেন, আমিত্ব প্রতিষ্ঠার অন্ধ মোহে শ্রীশ্রীবাবাইদাদার আশীর্ব্বাদ কে পা দিয়ে নির্ম্মমভাবে কুচলে দিতে দ্বিধা করছে না, অবৈধ ক্ষমতার অধিকারী হ'য়ে খড়দহ অঞ্চলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ঠাকুর ও তাঁর সৎসঙ্গ কেন্দ্র কে হাস্যকর ক'রে তোলার নিরবচ্ছিন্ন যে ঠাকুর বিরোধী ঘৃণ্য ক্রিয়াকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনারা এই অবৈধ বেআইনি মরণ পদক্ষেপ থেকে নিজেদের সরিয়ে আনুন নতুবা অচিরেই শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর। আপনারা যারাই এই ঘৃণ্য অবৈধ বেআইনি কাজ করুন না কেন আপনাদের এই কাজের পরিণামস্বরূপ ভয়ঙ্কর ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র-এর সৎসঙ্গ কেন্দ্রের অফিসিয়াল পেজের নামে ক্লোন পেজ তৈরি করা কতটা গর্হিত আইন বহির্ভূত কাজ তা সম্ভবত তলিয়ে দেখার চেষ্টা করছে না এই অন্ধ মানুষেরা! শ্রীশ্রীবাবাইদাদার আশীর্বাদকে লাথি মেরে শ্রীশ্রীঠাকুরের বুকে যে তীব্র ভয়ঙ্কর আঘাত দিচ্ছেন তাতে আপনাদের সাহস দেখে স্তম্ভিত হ'য়ে যায়! যে বা যারা যাদের সহযোগিতায় এই অবৈধ পেজ ক্রিয়েট করে ঠাকুর ও খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্রকে কলঙ্কিত ক'রে চলেছেন তাদের আই পি এড্রেস অচিরেই আইনি সহায়তায় চিহ্নিত করা হবে এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চিহ্নিত করণের কাজ চলছে। শুধু যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আগে এই ঘৃণ্য পদক্ষেপ গ্রহণকারী ফেক পেজের আড়ালে থাকা মানুষদের সংশোধনের সুযোগ দেওয়া ঠাকুরের আদর্শ ও শ্রীশ্রীবাবাইদাদার নির্দেশানুযায়ী কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। তাই আমরা Khardaha Satsang Kendra-এর কর্মীবৃন্দ অপেক্ষায় রইলাম।
নিম্নে ক্লোন পেজের নমুনা সঙ্গে লিঙ্ক দিলাম।
https://www.facebook.com/%E0%A6%96%E0%A7%9C%E0%A6%A6%E0%A6%B9-%E0%A6%B8%E0%A7%8E%E0%A6%B8%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0-227995335294323/




(লেখা ২৮শে সেপ্টেম্বর'২০২০)

প্রবন্ধঃ শ্রীকুমার মুখার্জীদার পোষ্টের আলোকে।

দেখছো যখনই কেউ কাউকে দোষারোপ করছে---
নিন্দা ক'রে বেড়াচ্ছে--
কোন হেতুর ধার না ধেরে,---
তা'র বাহ্যিক বা আভ্যন্তরীণ
বাস্তব অবস্থা সম্বন্ধে ওয়াকিব হওয়ার
তোয়াক্কা না রেখে,---
যাকে নিন্দা করে বেড়াচ্ছে--
সহজভাবে তা'র অবস্থার কথা
তা'কে জিজ্ঞাসা করার ও
ফুরসৎ হয়নি তা'র,---
অযৌক্তিক চরিত্রের খোলস প'রে
হাত নেড়ে, বাক্যের সমারোহসজ্জা নিয়ে
কায়দায় লোক ভেড়াতে চাচ্ছে
তা'র নিজের পক্ষে,---
ঠিক বুঝবে, সেখানে
এর অন্তরালে আছে
হয় কামিনী, নয় কাঞ্চন ,
নয় হীনম্মনতা ,
কিংবা এ তিনেরই সংমিশ্রণ,---
যার ফলে, সে স্বতঃই একটা
অলীক ভাঁওতা সৃষ্টি করছে---
যা'কে নিন্দা করছে--
সে তার অন্তরায় ভেবে ,
ঐ নিন্দাটা হ'চ্ছে নিজেকে লুকিয়ে চলার
একটা সাবধানী চালবাজী অভিব্যক্তি,
একটু নাড়া দিলেই ঠিক পাবে ।।
#শ্রীশ্রীঠাকুর
(যতি-অভিধর্ম্ম)
এই বাণীটা শ্রীকুমার মুখার্জীদা পোষ্ট করেছেন তার টাইমলাইনে। আমি শ্রীকুমারদাকে প্রশ্ন করেছিলাম, এই বাণীটা কার বা কাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শ্রীকুমারবাবু? ঠাকুরের অবস্থা কি হয়েছে জানেন? পঞ্চ ভূতের ফাঁদে ব্রহ্মা পড়ে কাঁদে যেমন ঠিক তেমনি ভক্ত (?) কূল মাঝে পরমপিতা মুখ ঢাকে লাজে!
(শ্রীকুমার মুখার্জীদার এই পোষ্টটা শেয়ার করলাম। মুখার্জীদার সঙ্গে কথোপকথনের আমার অংশটা আমি এখানে তুলে দিলাম সমস্ত গুরুভাইদের জানার সুবিধার্থে)।
শ্রীকুমারবাবু আপনি লিখেছেন, "নিশ্চই যাদের গায়ে ছেঁকা লাগছে বাণীটা তাদেরই জন্যে".......ইত্যাদি।
কাদের গায়ে ছেঁকা লাগছে শ্রীকুমারবাবু? সবসময় ধোঁয়াশা রেখে কথা বলেন কেন? সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে অসুবিধা কিসের বা কোথায়? কেন হিম্মতের অভাব? আমি যদি বলি বাণীটা আপনার গায়ে ছেঁকা দিচ্ছে না তাহ'লে আপনার কথা অনুযায়ী এটা ধ'রে নিতেই পারি বাণীটা আপনার জন্য নয়। আবার আপনিই বলছেন তাঁর সব বাণী আপনারই জন্য, আপনার উন্নতি ও আদর্শের স্বার্থ রক্ষার জন্য। তাহ'লে কথাগুলি পরস্পর বিরোধী হ'লো নাকি? একবার বলছেন যাদের গায়ে ছেঁকা লাগছে তাদের জন্য উপরে আপনার পোষ্ট করা বাণীটা, আবার বলছেন আপনার জন্য বাণীটা। আচ্ছা শ্রীকুমারবাবু একই মানুষের একই বিষয়ের উপর কথা এত fluctuate করে কখন ও কেন? বাণীটা আপনি পোষ্ট করেছেন আর নিশ্চয়ই বাণীটা ভালোভাবেই পড়েছেন ও মানে বুঝেছেন। আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে আপনার সঙ্গে আমার আগের দীর্ঘ আলোচনায় আপনি যে যে কথাগুলি বলেছিলেন সেই বলাগুলি কার বা কদের উদ্দেশ্যে ছিল বলতে পারেন? আলোচনা যখন ক্রমাগত চলছিল তখন আপনি আপনার রাগ প্রকাশ ক'রে দিয়েছিলেন আর সেই রাগটা ছিল ঠাকুরের আত্মজদের উপর। কেন? কি কারণ? এই পোষ্টেও দেখা যাচ্ছে আপনি বাইরের কোন এক অদৃশ্য শত্রুর কথা বলেছেন। আপনার কাছে জিজ্ঞাস্য আপনার ভিতরের ও বাইরের কোন শত্রু ধ্বংসের কথা বলছেন?
দাদা, যদি ঠাকুরের বাণীগুলি আপনার কথানুযায়ী আপনার শিক্ষার জন্য হয়, আপনার উন্নতির জন্য হয়, আপনাকে শানিত ক'রে তুলবার জন্য হয় তাহ'লে আপনার আমাকে করা কমেন্টগুলির মধ্যে ঠাকুরের আত্মজদের উপর একটা বিতৃষ্ণা ঝ'রে পড়ে কেন? এই কি শিক্ষার নমুনা? এই কি আপনার উন্নতির নমুনা? এই কি আদর্শের স্বার্থ রক্ষার জন্য নিজেকে শানিত ক'রে তোলার নমুনা? আপনি তো এক অদৃশ্য শত্রুর পিছনে ছুটে বেড়াচ্ছেন। আপনি যে শত্রুর কথা বলছেন সে তো আপনার খুবই পরিচিত। তাহ'লে কেন সরাসরি নাম তুলে আক্রমণ করছেন না? তাহ'লে আপনাকে উত্তর দিতে সুবিধে হয়। এর আগেও আপনি আক্রমণ করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কিন্তু কোথায় যেন ঘোমটার তলায় খেমটা নাচের মতন। আপনারা শ্রীশ্রীবড়দা বিরোধী, শ্রীশ্রীঅশোকদাদা বিরোধী ঠাকুর পরিবার বিরোধী; আপনার বাড়ীর সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে আপনি শুধু ঠাকুরের ফটো রেখেছেন দেখেছি সেখানে আর কারও ফটো ছিল না। অর্থাৎ আপনি প্রমাণ করেছেন আপনি মূল কেন্দ্র বিরোধী তথাকথিত সৎসঙ্গী। আপনার আচরণে, কথায় ও বার্তায়, চিন্তায় ও চলনে সবেতেই প্রমাণ হয় আপনি ঠাকুর পরিবার ও মূল কেন্দ্র বিরোধী। তাহ'লে উপরের পোষ্ট করা বাণীটা যদি আপনার পরামর্শ মতো 'বুঝে বুঝে দেখতে হয়' তাহ'লে কি দেখবো? দেখবো, ঠাকুর যে কতবড় ভবিষ্যৎ বক্তা, কত দূরদৃষ্টি তাঁর তা' তাঁর কত আগের দেওয়া এই উপরোক্ত বাণীটা তার প্রমাণ। তিনি জানতেন, তাঁর ভক্তকূলের আহাম্মকি ক্রিয়াকর্মের জন্য তাঁকে লজ্জায় মুখ ঢাকতে হবে! আর দেখুন কি অদভুত তাঁর লীলা আপনাকে দিয়েই তাঁর বিরাশি সিক্কার থাপ্পর আপনাকেই দিয়েছেন আপনার হাত দিয়ে বাণীটা পোষ্ট করিয়ে। যাই হ'ক আসুন সরাসরি খোলাখুলি আলোচনার টেবিলে বসুন, কেন মূল কেন্দ্র বিরোধী, কেন ঠাকুরের আত্মজদের বিরোধী, কেন ঠাকুর পরিবার বিরোধী। এতবড় ভক্ত হ'য়ে গেছেন আপনারা সবাই যে আপনারা ঠাকুরের পরেই বড়দার চেয়েও যোগ্য ব্যক্তি!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
দেখুন শ্রীকুমারবাবু আপনি লিখেছেন কে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে ঘোমটার নীচে খেমটা নাচ নাচছে তা' চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন তথ্য ও তত্ত্ব দিয়ে। দাদা, সাধারণ ভাঙাচোরা মানুষকে আপনি কোনদিনই তথ্য ও তত্ত্ব দিয়ে জাগাতে পারবেন না সে আপনি যতই চোখে আঙ্গুল দিয়ে খোঁচা দিন। আপনার মত গোটা মানুষ ক’টা আছে? আপনাকে সোজাসুজি সহজ সরল ভাবে সত্য তুলে ধরতে হবে, আপনার ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বলা কথা দিয়ে খেমটা নাচের কুশীলবদের মুখোশ খুলতে পারবেন না উল্টে আপনারই খুলে যাবে। তাই বলি, সোজা ব্যাটে খেলতে হবে যদি আউট হ’তে না চান। আর বলি, হ্যাঁ, আবার চাই। আপনার কথামতই বলছি, আবার তুলে ধরা চাই। তুলে ধরুন যে, যে উদ্দেশ্য নিয়ে যে দুর্বুদ্ধি বা নির্বুদ্ধিতা থেকে যে ঘোমটার পিছনে থেকে খেমটা নাচ নাচছে সেই ঘোমটা ও উদ্দেশ্যের রহস্য উন্মোচন করার জন্য আবার তুলে ধরা চাই। ধরুন, বৃহত্তর স্বার্থে খোলাখুলি তুলে ধরুন।
আপনি লিখেছেন, আপনি পয়েন্ট টু পয়েন্ট সব সোজা ক'রে বলেছেন, এখন না বুঝলে, উল্টো বুঝলে আপনার কিছু করার নেই।
আপনি বলি কি, আপনি বলেন সোজা কিন্তু ঐ ভূতের হাঁটার মত। তাই উল্টো বোঝে সবাই। আপনিই বা কি করবেন আর যারা উল্টো বোঝে তারাই বা কি করবে? গন্ডগোল তো ঐ, যে পা দিয়ে ভূত হাঁটছে সেই পায়ে। পাদুকা দেখেই তো সবাই ধ'রে ফেলছে ঐটা মানুষের হাঁটা না ভূতের হাঁটা! ভূত বেচারা কি আর করবে সে যে ধরা পড়ে যাচ্ছে তা'তো আর সে বুঝতে পারছে না। সে তো আর জানে না কিম্বা জানলেও এত বেহুঁশ যে খেয়ালই নেই যে সবাই তার পায়ের দিকে তাকিয়ে আছে আর ভূত ভাবছে সবাই বোধহয় মাথা নীচু ক'রে সসম্ভ্রমে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে! আসলে যে সবাই ভূতের অদ্ভুত হাঁটাটার দিকে মাথা নীচু ক'রে তাকিয়ে দেখছে সেইটা আর ভূতের মাথায় নেয়। সে ভাবছে আমায় সবাই সমীহ করছে তা ই সবাই মাথা নিচু ক'রে রেখেছে। ভূতের হাঁটা হ'লো, ভূত যখন হাঁটে তখন তার পায়ের গোড়ালি ঘুরে সামনে চলে আসে আর আঙ্গুল থাকে পিছনে। তাই ভূত আর কি করবে বেচারা। সে ভূত হ'য়েই থেকে গেল আজীবন, মানুষ হওয়া আর হ'লো না। কি করবে, স্বভাব যায় না ম'লে, ময়লা যায় না ধুলে। যাই হ'ক কি আর করবো দাদা আমরা যে সাধারণ ভাঙাচোরা মানুষ।
মনে মনে মন কলা খাওয়ার রোগটা বেশ ভালোই ধরেছে বোঝা গেল। নিজের মনে নিজে ভেবেই নিলেন আমার ছেঁকা লেগেছে। আহাঃ কি আনন্দ আজ আকাশে বাতাসে! ছেঁকা খাওয়ার কথাটা আপনিই বলেছিলেন প্রথমে আমাকে। আপনার পোষ্ট করা ঠাকুরের বাণীটা প’ড়ে আপনাকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম, “বাণীটা কার বা কাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?” উত্তরে আপনি ছেঁকা খাওয়ার কথা বলেছিলেন। আমি আপনাকে ধোঁয়াশা কথা ছেড়ে স্পষ্ট ক’রে বলার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু আপনি আনন্দে ডগমগ হ’য়ে বুঝেই ফেললেন ছেঁকাটা আমার লেগেছে। এই যে মনে মনে নিজের মত ক’রে সব কিছু ভেবে নেওয়া, ধ’রে নেওয়া এটা অপরিণত বালখিল্য মস্তিষ্কের লক্ষ্মণ। এতে বোঝা যায় দূরদৃষ্টির দৌড় কতদূর।
আমাকে সাবধান ক’রে লাভ নেই নিজেকে নিজে সাবধান করুন। নিজেই আপনার অনেক আগের লেখায় বলেছেন ‘হয়তো ভুল মেসেজ চলে গেছে।‘ তাই বলি, সুকান্তবাবু কেউ তার নিজের দুস্থ (বা দুষ্ট) বুদ্ধির নির্যাস আপনার মুখে বসানোর চেষ্টা করার সাহস করেনি। আপনি আপনার আগের এবং এখনের লেখাগুলি আবার বারবার পড়ুন, নিজের প্রতি নিজে কঠোর হ’য়ে দেখুন, দেখতে পাবেন কোথায় কখন কিভাবে ঠাকুরের জ্যেষ্ঠত্মজের প্রতি, তার পরিবারের প্রতি আপনার ঘৃণা বিতৃষ্ণা ইত্যাদি পোষণ পেয়েছে। আপনার অবচেতন মনে এটা হয়েছে ব’লে আমি মনে করিনা, কারণ আপনার ব্যাক্তিগত উপস্থিতি ও আপনার চারপাশের পরিস্থিতি তা’ স্বীকার করে না। আর ঘৃণা ও বিতৃষ্ণা পোষণের সূত্র আপনি নিজেই, আপনার করা মন্তব্যগুলি ও মন্তব্যগুলির ভাষা নিয়ে একটু ভালো ক’রে নেড়েচেড়ে দেখুন পোষণের সূত্র আবিষ্কার করতে পারবেন। কার শিক্ষা কি হ’লো সেই বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার রুচি ও সময় নেই। পরস্পর বিরোধী কথাবার্তায় স্বাভাবিক ভাবেই শিক্ষার প্রতি সন্দেহের জন্ম দেয়। ইষ্টের প্রতি অস্খলিত, অচ্যুত, অকপট নিষ্ঠা, ভালোবাসা, বিশ্বাস ভেতরের শত্রুকে অটোম্যাটিক কন্ট্রোলে রাখে, তার জন্য আলাদা ক’রে সংগ্রাম করতে হয় না।
শ্রীকুমারবাবু, আপনি লিখেছেন আপনি কাউকে পয়েন্ট ক'রে কিছু লেখেননি। আমি নিজে থেকেই গায়ে পড়ে ছেঁকা নিয়েছি। আমি কি কাউকে বা আপনাকে পয়েন্ট ক'রে কিছু বলেছিলাম? যখন কেউ ঠাকুরের কোনও বাণী বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পোষ্ট করছে তখন সেই বাণীর অন্তর্নিহিত অর্থ ও তার প্রভাব সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যেতেই পারে। ঠাকুরের বাণী নিয়ে বিশ্লেষনাত্মক আলোচনা হবে তা'তে দোষ, ভুল বা অন্যায়টা কোথায় শ্রীকুমারবাবু? আর আপনি কোন মনোভাব থেকে কাকে বা কাদের উদ্দেশ্য ক'রে এই বাণীটা পোষ্ট করেছেন তা' কি কারও আর অজানা আছে? আপনি নিজেই তো তার রহস্য উদ্ঘাটন ক'রে দিয়েছেন আপনার বিভিন্ন লেখায়, মন্তব্যে ঠাকুর বাড়ির বিরোধীতা ক'রে; এখন আবার বিড়ালের মত 'আর মাছ খাবো না, কাশীবাসী হবার' কথা বলছেন? আপনাকে কে বললো আমার গায়ে ছেঁকা পড়েছে? আপনার কলমে এত ধার হ'য়ে গেছে, এত তাপ সৃষ্টি হ'য়েছে যে আপনার কলমের খোঁচায়, কলমের তাপে কারও রক্তপাত হবে, গায়ে ছেঁকা পড়বে? এ'তো অহংকারের কথা দাদা!!!!!!! আপনি ঠিকই বলেছেন, এটা প্রতিযোগিতা বা হার জিতের জায়গা নয়; এই জায়গা সত্য, মিথ্যা, মুখ ও মুখোশ আর ঠিক, বেঠিক উন্মোচনের জায়গা। তার জন্য আপনাকে আমাকে উভয়কে প্রস্তুত থাকতে হবে।
সুজিত রায়বাবু, আপনি ঠাকুরের যে বাণীটা পোষ্ট করেছেন সেটার ইঙ্গিত কার দিকে সেটা সহজেই অনুমেয়।
"শিষ্য গুরুর ভেদ গণে না
একনজরে ভজে,
ধর্ম তাহার দ্বিধা হ'য়ে
দুর্ব্বিপাকেই মজে।
--শ্রীশ্রীঠাকুর--
এটা ঠাকুরের বাণী আর ঠাকুরের বাণী মানেই বেদবাণী যা জ্বলন্ত অঙ্গার। ঠাকুরের বাণীটা আপনি পোষ্ট করেছেন আমার কমেন্টের উত্তরে তাহ'লে ধ'রেই নিতে পারি বাণীর অর্থটা বুঝেই আপনি আমার কমেন্টের উত্তরে এই বাণীটা পোষ্ট করেছেন। আর অর্থটা যদি আমি বুঝে থাকি তাহ'লে এই অর্থটা দাঁড়ালো যে আমাদের উভয়কেই এই বাণীর ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। দেখে নিতে হবে, বুঝে নিতে হবে, পরখ ক'রে নিতে হবে যে ঠাকুরের এই বাণীটার ভিতরে সত্যিই কোনও সত্য আছে কিনা, দম আছে কিনা; নাকি শুধুই বকোয়াস। আপনার এই বাণীটা পোষ্ট ক'রে আপনি প্রমাণ করলেন আপনি শ্রীকুমারদার সমগোত্রীয়। আর তাই লম্ফ দিয়ে ঝম্প মেরে আমার মন্তব্যের অন্তর্নিহিত অর্থের ধার কাছ দিয়ে না গিয়ে অন্যের প্রভাবে প্রভাবিত হ'য়ে বিজ্ঞের মত অল্প কথায় শুধু ঠাকুরের একটা বাণী তুলে ধ'রে প্রমাণ করতে চাইলেন আপনি অনেক বড় মহাপন্ডিত, বোদ্ধা; আর আমি চার অক্ষর। যাই হ'ক বাণীর মর্মার্থ যদি আমি বুঝে থাকি এবং আপনিও বুঝে থাকেন তাহ'লে আপনার মনোভাব অনুযায়ী পোষ্ট করা বাণীর ফলাফল স্বরুপ আমাকে অপেক্ষা করতে হবে দুর্ব্বিপাকের দিনটার জন্য। আর যদি ধর্ম্ম আমার দুই ভাগে বিভক্ত হ'য়ে সংশয় ও সন্দেহের মধ্যে ভুগে ভুগে আমি দুর্ব্বিপাকে না মজি অর্থাৎ দৈব দ্বারা সংঘটিত বিপদগ্রস্থ বা দুর্ঘটনাগ্রস্থ না হ'ই তাহ'লে বুঝে নিতে হবে ঠাকুর মিথ্যা আর ঠাকুরের বাণী বকোয়াস, ফালতু। আর ঠাকুরের এই বাণীটা যদি আপনার বিকৃত অর্থে প্রয়োগ হ'য়ে থাকে, মিথ্যার বেসাতি হ'য়ে থাকে তাহ'লে সুজিত বাবু আপনিও প্রস্তুত থাকুন শ্রীকুমারবাবুদের মতন আপনার ঠাকুরবিরোধী, ঠাকুর পরিবার বিরোধী, ঠাকুরের আত্মজ বিরোধী কৃতকর্মের ফলভোগের জন্য। এটা মনে রাখবেন ঠাকুরের বাণী "তুমি যা করছো বা ক'রে রেখেছো ভগবান তাই গ্রাহ্য করবেন আর সেগুলির ফলও পাবে ঠিক তেমনি" আমার আপনার উভয়ের জন্য প্রযোজ্য।
শ্রীকুমারবাবু, কথায় আছে, পাগলে কিনা বলে ছাগলে কিনা খায়, আপনারও সেই দশা হয়েছে নাকি!? আপনার প্রোফাইল দেখলে তো পান্ডিত্যের বিচ্ছুরণ ঘটে তাহ'লে এত সস্তা ভাবনা-চিন্তা, বালখিল্য ধারণা ধারণ করেন কি ক'রে? তাহ'লে কি সবটাই ঠাকুরের কথা অনুযায়ী তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকার কারণে হচ্ছে? এসব মন্তব্য করেন কি ক'রে? সুজিতবাবুকে লেখা আমার মন্তব্যের কোথাও কি কোনও আপনার মন্তব্যে লেখা আজেবাজে অর্থহীন ভিত্তিহীন কথা " ভয় দেখানো, সন্ত্রাস করা, সমাজচ্যুত করা, ইষ্টদ্রোহী ঘোষণা, হুমকি দেওয়া, শারীরিক আক্রমণ" ইত্যাদির আভাস বা ছোঁয়া আছে? " সবই হাউইবাজি, খুব দেখা আছে এসব" ইত্যাদি আরও সব ছ্যাবলা কথা রাস্তার ছেলেদের মানায় আপনার মত এলিট ও ঠাকুরের একনিষ্ঠ কর্মীকে মানায় না। আপনি আমার মন্তব্যের ভুল ও বিকৃত ব্যাখ্যা করবেন না; ভুল ব্যাখ্যা ক'রে নিজের ও অন্যের ক্ষতি করবেন না, এটা আমার বিনীত অনুরোধ। আপনার প্রত্যেকটি কথার জবাব দিতে আমি প্রস্তুত কিন্তু শালীনতা বজায় রেখে।
আপনি লিখেছেন আপনি ভুক্তভোগী। খুব কাছে থেকে সব দেখেছেন, অনুভব করেছেন। সীমাহীন নীচে নাবার ও শাস্তিদানের নমুনা দেখেছেন।
এই ভুক্তভোগী বলেই আপনার ভিতরে রোগটা বাসা বেঁধেছে। আপনার আজকের যে অবস্থা তার জন্য আপনি দায়ী নন; দায়ী আপনার পূর্বপুরুষ। আপনার অবস্থা ভগীরথের মত। ভগীরথকেও ভুগতে হয়েছিল তার পূর্বপুরুষের জন্য। আপনি যা লিখেছেন তাতে পরিস্কার আপনি ভীষণ ভাবে প্রভাবিত। জানি না ভগীরথ হ'য়ে সবাইকে মুক্তি দিতে আর পারবেন কিনা এ জন্মে। কারণ আপনার বোধ, আপনার রাগ, আপনার ঘৃণা আপনাকে আজ অন্ধ ক'রে দিয়েছে। তাই সব কিছু আজ আপনার কাছে ঘেঁটে ঘ হ'য়ে গেছে। তাই শ্রীশ্রীবড়দা ব্যতীত ঠাকুরের অন্য সন্তানদের সব ঠিক আর শ্রীশ্রী বড়দার সব বেঠিক ব'লে মনে হয় আপনার। শ্রীশ্রীবড়দার সব যদি বেঠিক, ভুল ও অন্যায় হ'য়ে থাকে তাহ'লে ঠিক, নির্ভুল ও ন্যায়কারীদের আজ ঠিকানা কোথায়? যদি শ্রীশ্রীবড়দা মিথ্যা হ'য়ে থাকে আর বাকীরা যারা বড়দার চরম বিরোধী তাঁরা সত্য হ'য়ে থাকে তাহ'লে কালের গতিতে কেন আজ মিথ্যা সত্য ও সত্য মিথ্যা হ'য়ে যায়? "ঠাকুর কি তোর এতই বেকুব ফাঁকি দেখে নয় সামাল?" এটা তো ঠাকুরেরই কথা! তাহ'লে ঠাকুর তো আজ মিথ্যা হ'য়ে যাচ্ছে। কে মানবে ঠাকুরকে? যদি মিথ্যার রমরমা রশ্মি সূর্যের রশ্মির মত চারিদিকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে তাহ'লে কে বিশ্বাস করবে ঠাকুর যেমন দয়াল তেমনি ভয়াল? কোথায় তাঁর ভয়াল রূপ অন্যায়কারীদের ওপর? তাঁর বংশধর ব'লে? আজ কার নেতৃত্বে বিশ্বব্যাপী ঠাকুরের মিশন ঘূর্ণিঝড় হুদহুদের মত আছড়ে পড়েছে ও পড়ছে দেশবিদেশের মাটিতে? বুকে হাত দিয়ে সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলার সময় এসেছে; বলুন যদি সত্যের পূজারী হ'য়ে থাকেন, কার নেতৃত্বে ঠাকুর আজ বিশ্বব্যাপী ধর্মের অঙ্গনে বিশ্ব ধর্মীয় নেতা? শ্রীশ্রীবড়দার নেতৃত্বে নাকি ঠাকুরের অন্য সন্তানদের নেতৃত্বে নাকি অন্য কোনও কারও নেতৃত্বে? বলুন, ঠাকুর পরবর্তী কে সেই শারীরিক-মানসিক-আত্মিক শক্তিতে শক্তিমান মহান সিদ্ধপুরুষ যিনি ঠাকুরের মিশনকে অ্যাটলাসের মত বলিষ্ট কাঁধে বহন ক'রে চলেছিল বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে? বলুন একটা নাম? আজকের বিশাল 'সৎসঙ্গ' আপনার কাছে মূল্যহীন। কিন্তু আপনি যে প্ল্যাটফর্ম তৈরীর চেষ্টায় আছেন তার মূল্য, তার অস্ত্বিত্ব থাকবে তো ভবিষ্যতে?
আপনি প্রতিবারের মত এবারও একটা ভুলের বৃত্তের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছেন। কেন খাচ্ছেন বুঝতে পারছি না। কে শেখালো, কে বোঝালো, কে শোনালো আপনাকে যে শ্রীশ্রীঠাকুরকে ছাড়া আর কাউকে ইষ্টের আসনে বসানো হয়েছে? কেন এই মিথ্যে প্রচার? কে সে? কাকে ইষ্টের আসনে বসানো হয়েছে? ঠাকুর ছাড়া কে সে যিনি সৎসঙ্গীদের কাছে আর এক ইষ্ট? আপনারা মুষ্টিমেয় কয়েকজন সব বুঝে গেলেন যে ইষ্টের আসনে ঠাকুর ছাড়া আরও কেউ আছেন? কে তিনি? আর আমরা কোটী কোটী ঠাকুরের অনুগামী তাঁরা জানতে পারলাম না? আমরা এতবড় চার অক্ষর যে আমাদের ঠাকুর পরিবার বোকা বানাচ্ছে আর ঠাকুর আমাদের রক্ষা করছে না? কিন্তু আপনারা মুষ্টিমেয় কয়েকজন এতবড় ভাগ্যবান যে আপনারা ঠাকুরের দয়ায় আজ ভেসে যাচ্ছেন আর আমরা ভোগে যাচ্ছি?
আপনি ভুক্তভোগী আর এত কাছ থেকে সব দেখেছেন আর আমরা সব দূরে ছিলাম? আপনার ঋত্বিক কে আমি জানি না। তবে আমার মা-বাবা ও বড়দার ঋত্বিক ছিলেন শ্রদ্ধেয় নরেন্দ্রনাথ মিত্র। আমি কার দীক্ষিত, এই কথা ব'লে আপনি আমায় খোঁচা মেরেছেন। আর এর পরেও বলেছেন আপনার কথায় নাকি তেজ আছে, ক্রোধ নেই। আপনার প্রতিটি লেখায় বর্ণনা আছে কোনটা ক্রোধ আর কোনটা তেজ। আপনাকে জানাই আমার ঋত্বিক ছিলেন শ্রদ্ধেয় হরপ্রসন্ন মজুমদার। একেবারে ছোটোবেলা থেকে এদের দেখেছি। শ্রদ্ধেয় প্রফুল্ল দাসদা, শ্রদ্ধেয় রেবতী মোহন বিশ্বাসদা, শ্রদ্ধেয় মণিলাল চক্রবর্তীদা ইত্যাদি ঠাকুরের লীলাসঙ্গী তথা মহান ব্যক্তিসহ আরও অন্যান্যদের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ট সময় কাটিয়েছি। এদের কে কতটা নীচে নেবেছে আর নাবেনি তার মূল্যায়ন করার মানসিকতা কোনোদিন ছিল না কিন্তু কাদের কথা আপনি বলছেন যে তারা "কতটা নীচে নাবতে পারে তা কল্পনা করা যায় না"? ঠাকুরবাড়ির কোন সদস্য তিনি? নাম বলুন। শ্রীশ্রীবড়দা? কিন্তু শ্রীকুমারদা আমরা কোনোদিনই ঠাকুর পরিবারের কোনও সদস্যদের সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করাকে ব্রহ্মহত্যার মত পাপ ব'লে মনে করি। আর আমরা শ্রীশ্রীঠাকুরের আত্মজ ঠাকুরের প্রথম সন্তান অত্যন্ত আদরের বড়খোকা শ্রীশ্রীবড়দার পরিচালনায় এই অপসংস্কৃতির ধারক বাহক হবার শিক্ষায় শিক্ষিত হ'ইনি। আমরা যে শ্রদ্ধার চোখে শ্রীশ্রীবড়দাকে দেখি সেই একই চোখে ঠাকুরের সব সন্তানকেই দেখি। তাঁরা সবাই আমাদের চোখে প্রতীক, গুরু বংশধর। কিন্তু ঠাকুরের মিশন প্রতিষ্ঠার কীলক নয়; কীলক হ'লেন ঠাকুরের প্রথম সন্তান আদরের বড়খোকা বিশ্বের সমস্ত সৎসঙ্গীর বড়ভাই পরম ভক্ত ঠাকুরের এ যুগের হনূমান, বিবেকানন্দ, অর্জুনরুপী পরম পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা। (লেখা ২৮শে সেপ্টেম্বর'২০১৭)

Tuesday, September 26, 2023

প্রবন্ধঃ NRC (National Register of Citizens) ও আমরা আমজনতা।

(ধীরে ধীরে পড়ুন, বারবার পড়ুন, জানুন ও অন্যকে শেয়ার ক'রে জানান)।
NRC নিয়ে জল ঘোলা হচ্ছে আর ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেবে পড়েছে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ। আমজনতা বেসামাল। বেসামাল দায়িত্বজ্ঞানহীন রাজনৈতিক দলগুলি। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্য ছাড়া আর কোনও লক্ষ্য নেই এদের। জনসমাজের অকারণ দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য কোনও ভাবনাচিন্তা বা সক্রিয় পদক্ষেপ নেই। সরকারের ঠিক বেঠিক যেকোনও পদক্ষেপ নিয়ে শুধু চিৎকার-চেঁচামেচি-হৈ হট্টগোল, কথায় কথায় মিছিল মিটিং ক'রে একে অপরের বিরুদ্ধে খেপিয়ে দাও, লেলিয়ে দাও। ভাঁড় মে যায় দেশ, দেশের জনগণ। একটা সুশিক্ষিত জনসমাজ, একটা শৃঙ্খলিত দেশ গঠনের লক্ষ্যে সরকারিভাবে এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতা আজ মৃত। বলিষ্ঠ কোনও কাজের প্রোগ্রাম নেই, আছে শুধু কথায় কথায় মিছিল, মিটিং, চিৎকার-চেঁচামেচি-মারামারি-কাটাকাটি! একটা নিখুঁত পদক্ষেপে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার ভাবনা আজ অতীত, আজ শুধু আন্দোলনকারীদের একটাই লক্ষ্য, দে মা লন্ডভন্ড ক'রে, লুটে পুটে খায়!!!!!!!!!!!!! নিজের জীবনের চূড়ান্ত উচ্শৃঙ্খলতা, বিশৃঙ্খলতা নিয়ে দেশ, দেশের জনগণকে উদ্ধার করতে নেবে পড়েছে। নিজের জীবন ভুলের ঝুলে ভর্তি, নেবে পড়েছি দেশের ঝুল ঝাড়তে!
তাই, বর্তমান NRC নিয়ে দেশজুড়ে যে অস্থিরতার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে বা বলা ভালো তৈরি করা হয়েছে তা সম্ভব হয়েছে শুধু নিজেদের না জানার কারণে আর হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি ও তাদের সমর্থকদের পরস্পরের বিবাদের কারণে। ঠিক এই সময় দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদেরও কিছু সামাজিক দায় ও দায়িত্ববোধ থাকা উচিত। শুধু সরকার ও রাজনৈতিক দলের উপর নির্ভরতা অজ্ঞতা ও দূর্ভোগকে বেশি বেশি ক'রে ডেকে আনে নিজের ও সমাজ জীবনে। সেই দায় ও দায়িত্ববোধের কারণেই অপূর্ব মজুমদারের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তাঁকে আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে সম্মান জানাচ্ছি। আর সেই সঙ্গে জানাচ্ছি দেশের সচেতন বুদ্ধিজীবী মানুষ আপনারা যারা যারা এই বিষয়ে আরও স্পষ্ট তথ্য জানেন (যদি কিছু থাকে) যা এর সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হ'তে পারে (যদি অসম্পূর্ণ ও ভুল কিছু থাকে এই তথ্য) তাহ'লে সচেতন ও দায়িত্ববোধসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে সেই সমস্ত তথ্য এর সঙ্গে সংযুক্ত ক'রে এই তথ্যকে আরো সমৃদ্ধ ক'রে আমাদের মতো দেশের আমজনতাকে স্বস্তি দানে সহায়তা করার জন্য আপনার নির্ভরযোগ্য হাত বাড়িয়ে দিয়ে নিজেকে নির্ভেজাল আনন্দিত করার সুযোগ পেতে পারেন অপূর্ব মজুমদারের মত। আসুন আমরা দেশের মানুষেরা এইভাবে অপূর্ব মজুমদারের মত সচেতন নাগরিক হওয়ার যজ্ঞে সামিল হ'ই ও নিজের দেশকে ক'রে তুলি মহান।---------------প্রবি।      ( লেখা ২৬শে সেপ্টেম্বর'২০২৯)




*1) NRC কি ?*
Ans. খুব সহজে বলতে গেলে 1971 সালের পরে পরে যারা অবৈধ ভাবে ইন্ডিয়ায় এসেছে ,তাদের সনাক্তকরণ ।
*2) NRC কি সারা ভারতের জন্য?*
Ans. না আপাতত শুধু মাত্র আসাম রাজ্যের জন্য ।
*3 ) NRC করা হয়েছে কি মুসলমান দের তাড়ানোর জন্য?*
Ans. একদম না, NRC এর সঙ্গে হিন্দু মুসলমানের কোনো সম্পর্ক নেই ।
*4 ) তাহলে BJP যে বলে বেড়াচ্ছে মুসলমান দের তাড়ানো হবে ।*
Ans ওদের কথায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই । আসাম 19 লক্ষ মানুষের মধ্যে 60% ই হিন্দু(19 লক্ষের মধ্যে 12 লক্ষ হিন্দু বাদ)।
*5) NRC কি BJP করছে?*
Ans না, কংগ্রেসের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর 1985 সালের আসাম চুক্তি অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে NRC হচ্ছে, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত BJP এর কোনো ভূমিকা নেই ।
*6) তাহলে ওরা NRC NRC করে সারা দিন লাফাচ্ছে কেন?*
Ans ধর্মীয় মেরুকরন,ধর্মীয় আবেগ করে রাজনীতি করার জন্য ।
*7) ভবিষ্যতে কি সারা ভারতে চালু হতে পরে?*
Ans. হাঁ পারে, তবে শুধুমাত্র আসাম এ NRC করতে খরচ হয়েছে 1220 কোটি টাকা । সারা দেশে করতে গেলে,সরকার এর খরচ হবে প্রায় 48800 কোটি টাকা, দেশের যা অর্থিক অবস্থা তাতে এই মুহুর্তে ওতো টাকা খরচ করা সম্ভব হবে না । আর সারা দেশে এক সাথে মোতায়েন করার মত সেন্ট্রাল বাহিনীও নেই ।
*8) তাহলে কি শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে আর পরে হতে পারে কি?*
Ans, হতেই পারে। কিন্তু আসামে যা ধাক্কা খেয়েছে তাতে সরকার এক্ষুনি কিছু করবে না ।
*9) তাহলে শুনছি নাকি 2020 সালের এপ্রিল মাস থেকে NRC চালু হবে?*
Ans. একদম না, এই রকম কিছুই নেই, যেটা হবে সেটা হল NPR , মানে জনগণনা যেটা প্রত্যেক 10 বছর অন্তর জনগণনা হয় । একজন লোক আপনার বাড়ি আসবে তাঁকে নিজের নাম, পরিবারের সদস্যদের নাম ইত্যাদি বলতে হবে ।
*10) শুনছি নাকি নাকি CAB করে পশ্চিমবঙ্গে NRC চালু করা হবে? CAB কি?*
Ans CAB হল, Citizenship Ammendment Bill , যাতে বলা হয়েছে মুসলমান বাদ দিয়ে অন্য যে কোন ধর্মের মানুষ যারা 2014 সালের 31 শে ডিসেম্বরের অন্য দেশ( বাংলাদেশ,পাকিস্তান, আফগানিস্তান,নেপাল,ভূটান প্রভূতি দেশ) থেকে যারা আগে এসেছে ভারতে শুধুমাত্র ধর্মীয় কারনে বিতাড়িত তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে ।
*11) তাহলে কি CAB করে NRC করলে হিন্দু দের কিছুই করতে হবে না?*
Ans অবশ্যই করতে হবে, তারা যে ধর্মীয় কারনে অন্য দেশ ছেড়ে পালিয়ে এসেছে এবং 2014 সালের আগেই এসেছে সেটা প্রমান করতে হবে। তার ঐ দেশের প্রমানপত্র দিতে হবে যে শুধুমাত্র ধর্মীয় কারনে অত্যাচারিত হয়ে বিতাড়িত

*12) CAB বিল পাস হলেই কি অন্য দেশ থেকে আসা হিন্দুরা নাগরিক হয়ে যাবে?*
Ans না, তাদের 6 বছর ইন্ডিয়ায় থাকার অনুমতি দেওয়া হবে, 6 বছর পর তারা নাগরিকেত্বর জন্য আবেদন করতে পারবেন । মানে এই রকম হতে পারে সে ছিল নাগরিক, কিন্তু তাঁকে 6 বছরের জন্য সব অধিকার কেড়ে নিয়ে, অনেকটা অন্য দেশে ঘুরতে যাওয়া মানুষের মত করে দিল, তারা না ভোট দিতে পরবে না সরকারি কিছু সুবিধা পাবেন ।
*13) এখন ভোটার কার্ড নিয়ে কি সব করতে বলছে, না করলে কি, দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবে ??*
Ans. একদম না, আপনার যদি ভোটার কার্ডে নাম,ঠিকানা সব থিক থাকে তো আপনাকে কিছুই করতে হবে না, ভূল থাকলে থিক করে নেবেন ।
*14) যদি ভবিষ্যতে NRC চালু হয় তাহলে কি কি DOCUMENTS লাগবে?*
Ans অনেক কিছুর কথাই বলা আছে, কিন্তু যে গুলো দিয়ে সহজে প্রমাণ করা যাবে 1971 সালের আগের ভোটার লিস্ট, জমির রেকর্ড, আর কিছু হিন্দু বন্ধু দের জন্য 1971 সালের আগে শরনার্থী কার্ড । যে কোন একটি হলেই চলবে ।
*15) উপরে বলা Documents গুলো তো আমার কাছে নেই, তাহলে কি হবে?*
Ans আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, আপনার কাছে না থাকলেও সরকারের কাছে সব রেকর্ড আছে । নির্দিষ্ট সময়ে চাইলেই পাবেন ।
*16) NRC নিয়ে আমাদের রাজ্যের কোন কোন রাজনীতিক দলের কি অবস্থান?*
Ans BJP সরাসরি NRC আর পক্ষে, TMC,CPIM,Congress সরাসরি বিপক্ষে ।অন্যদের অবস্থান নিরপক্ষে ।
*17) এখন কি করণীয়?*
Ans কিছুই করণীয় নেই, গুজবে কান দেবেন না, গুজব ছড়াবেন না, নিজের কাজ করুন, অানন্দে থাকুন আগে যেমন ছিলেন । ঘাবড়ে যাওয়ার মত কিছুই হয় নি । জানুন ও জানান। নাগরিক ও মানবিক দায়িত্ব পালন করুন।
******************
NPR - National Population Register.
NRC - National Register of Citizens.
এখন গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে চলছে ভোটার লিস্টে নিজেদের নাম যাচাইয়ের কাজ, সংক্ষেপে যেটাকে বলে NPR (National Population Register)।
কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই ভুল করে এই NPR কে গুলিয়ে ফেলছেন NRC এর সাথে। আর সেই কারণেই তাদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে আশঙ্কা।
NPR ও NRC এর মধ্যে যে পার্থক্য আছে, সেটা আলোচনা করবো এবং তার সাথে NRC সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
NPR এদেশে NPR 2010 সালেও তৈরি করা হয়েছিল, 2015 সালে তা আপডেট করা হয়। এখনও চলছে সেই তথ্য ডিজাইনেশনের কাজ। এবারও কেন্দ্রের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে যে, 2020 সালের 30 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ করা হবে।
NRC NRC সর্বপ্রথম তৈরি হয় 1951 তে আসামে। 2013 তে NRC এর আপডেটের কাজ সুপ্রিমকোর্টের পর্যবেক্ষণে শুরু হয় আসামে। 2017 এর 31 ডিসেম্বর একটি part draft NRC list প্রকাশিত হয় এবং 2018 এর 30 জুলাই NRC এর সম্পূর্ণ ড্রাফট প্রকাশিত হয়।
চূড়ান্ত NRC 2019 এর 31 আগস্ট প্রকাশিত হয় আসামে, যেখান থেকে জানা যায় যে, NRC এর অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করেছিলেন প্রায় 3 কোটি 30 লক্ষ মানুষ। কিন্তু তাদের মধ্যে নথিভুক্ত করা হয়েছে প্রায় 3 কোটি 11 লক্ষ মানুষের নাম। অর্থাৎ প্রায় 19 লক্ষ মানুষ বাদ পড়ে গেছেন আসামের NRC থেকে।
কেনো এই 19 লক্ষ মানুষ বাদ পড়লেন? আসলে এই 19 লক্ষ মানুষ দুটো নির্দিষ্ট
ডকুমেন্ট জমা দিতে পারেননি।
NRC তে নিজের নাম নথিভুক্ত করার জন্য একজন ব্যাক্তিকে দুই ধরনের ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে।
1) List A document
2) List B document
List A document হিসেবে জমা দিতে হবে ঐ ব্যক্তির নিজের বা ঐ ব্যক্তির পূর্বপুরুষের ডকুমেন্ট, যেগুলো 1971 এর 24 শে মার্চের মধ্যরাতের আগে ইস্যু করা হয়েছিল।
List A documents এর মধ্যে যে কোনো একটি জমা দিতে হবে।
1) 1951 NRC
2) Electroral Roll(s) upto 24 March (midnight) , 1971
3) Land &Tenancy Records
4) Citizenship Certificate
5) Permanent Residential Certificate
6) Refugee Registration Certificate
7) Passport
Any Govt. issued License/Certificate
9) Govt. Service/Employment Certificate
10) Bank/Post office accounts
11) Birth certificate
12) Board/University Education Certificate
13) Court Records/Process
এবার যদি এমন হয় যে, ঐ ব্যক্তি List A এর যে ডকুমেন্ট জমা দিলেন, সেটি ঐ ব্যক্তির পূর্বপুরুষের হয়, মানে সোজাভাবে বললে, ঐ ব্যক্তির নিজের নাম যদি ঐ ডকুমেন্টে না থাকে, তাহলে ঐ ব্যক্তিকে আরও একটি ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে List B থেকে, যেই ডকুমেন্টে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা থাকবে যে, List A এর ডকুমেন্টে উল্লিখিত পূর্বপুরুষের সাথে ঐ ব্যক্তির সম্পর্কটি কি ধরনের। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, এই সম্পর্কটি হতে হবে শুধুমাত্র বাবা বা মা বা ঠাকুরদা বা ঠাকুরমা বা ঠাকুরদার বাবা বা ঠাকুরদার মা বাবা এইরকম।
অর্থাৎ জেঠু, কাকু, মামা, মাসি, পিসি, ভাই, বোন এইসব সম্পর্ক হলে চলবে না।
List B এর ডকুমেন্ট গুলো কি কি, সেটা এবার জেনে নিন। এই ডকুমেন্ট গুলোর মধ্যে যে কোনো একটা জমা দিতে হবে।
1) Birth certificate
2) Land Document
3) Board/University Certificate
4) Bank/LIC/Post office Document
5) Circle office/GP secretary certificate in case of married women
6) Electroral roll
7) Ration Card
Any other legally acceptable document
যাঁদের NRC তে নাম আছে, তাঁরা সমস্ত ধরনের সাংবিধানিক অধিকার ও সুরক্ষা (constitutional rights & safeguards) পাবেন এবং সরকারি প্রকল্পের সুবিধে গুলো পাবেন।
অন্যদিকে যাদের NRC তে নাম নেই, তাদেরকে "রাষ্ট্রহীন" আখ্যা দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি, তাদেরকে নির্বাসন (Detention) দেওয়া হতে পারে ও কারাবন্দী করে রাখা হতে পারে।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, অসমে যে 19 লাখ মানুষের নাম NRC তে নেই, তাদেরকে নির্বাসন দেওয়ার জন্য অসম সরকার তৈরি করছে মোট 11 টি ডিটেনশন ক্যাম্প। অলরেডি একটি ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করা হয়ে গেছে । 2•5 হেক্টরের বেশি জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা এই ক্যাম্পটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে 46 কোটি টাকা এবং এখানে অন্তত 3 হাজার মানুষ থাকতে পারবেন। এই ক্যাম্পে আছে থাকা খাওয়ার জায়গা, হাসপাতাল, অডিটোরিয়াম, কমন কিচেন ও 180 টি শৌচালয়। ডিটেনশন ক্যাম্পের বাইরেই আছে প্রাথমিক স্কুল ও মহিলাদের প্রতি বিশেষ নজর দেবার ব্যবস্থা। তবে ক্যাম্পের বাইরে থাকবে পরপর দুটি দেওয়াল, একটি 6 ফুটের দেওয়াল ও অন্যটি 20 ফুটের দেওয়াল। যেগুলো টপকে বাইরে যাওয়া প্রায় অসম্ভব।
NRC তে যদি কারো নাম না থাকে, তাহলে আর একটি পদ্ধতি আছে নাম নথিভুক্ত করার জন্য। NSK বা NRC সেবা কেন্দ্রতে আবেদন করা যেতে পারে নাম নথিভুক্ত করার জন্য। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়,
আসামে যাদের নাম NRC তে নেই, তাদের এখনই বিদেশী বলে দিতে আপত্তি রয়েছে আসামের রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের। যাদের নাম নেই, তাদের আপাতত ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের লড়াইয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
(যদি বেশী বেশী করে Share করে মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছনোর দায়িত্ব নেন আর সাধারণ মানুষের বিভ্রান্তি দূর হয় তাহলে আমাদের অনেক কষ্ট করে তথ্য গুলি জোগাড় করা ও উদ্দেশ্যে স্বার্থক হবে।)
------ অপূর্ব মজুমদার

Saturday, September 23, 2023

প্রবন্ধঃ চ্যানেল ১০ ও অন্যান্য সংবাদ মাধ্যম।



চ্যানেল ১০ ছিল ভারতের সংবাদ এবং বর্তমান ঘটিত সংবাদভিত্তিক একটি প্রধান বাংলা ভাষার টেলিভিশন নেটওয়ার্ক। কলকাতা ভিত্তিক এই চ্যানেলটি অংশীদারিত্বমূলক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার অঞ্চলগুলোতে এবং পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাথমিকভাবে সম্প্রচার শুরু করা হয়েছিল। সম্প্রতি প্রায় ৫০ জন দুষ্কৃতীর একটি দল এই চ্যানেলটির ওপর আক্রমণ চালায়। ভেঙ্গে চুরমার ক’রে দেওয়া হয় চ্যানেল ১০ অফিস। কোটি কোটি টাকার ক্ষয় ক্ষতি করা হয়। বর্তমানে চ্যানেলটির খবর সম্প্রচার সম্পূর্ণ বন্ধ। কবে আবার স্বমহিমায় ফিরে আসবে চ্যানেল ১০ কর্মীদের কেউ জানে না। কর্মীরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে ফিরে আসার। কিন্তু যে ভয়ংকর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে স্টুডিয়োর তা সারিয়ে ফিরে আসা খুব কঠিন। এমনিতেই প্রচন্ড আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে চ্যানেলটি। এমনিতেই কর্মীরা বহুমাস বেতন না পেয়ে চালিয়ে যাচ্ছে চ্যানেলটি। তার ওপর এতবড় ভয়ংকর আঘাত যা কর্মীদের ভবিষ্যৎ এক কঠিন প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে। কর্মীরা আজ চোখের জলে শ্মশান স্টুডিয়োয় হাতড়ে বেড়াচ্ছে ভাঙ্গাচোরাকে জোড়া লাগাবার তীব্র প্রচেষ্টায়।

কিন্তু সবচেয়ে দুঃখের ও আশ্চর্যের বিষয় কলকাতার বুকে একটা সংবাদ মাধ্যমের ওপর এতবড় আঘাত নেমে এলো অথচ অন্য সব টিভি সংবাদ মাধ্যম একেবারে চুপ!!!!!!!!! অদ্ভুত এক শ্মশান নীরবতা!!!!!! এই চরম সংকটের দিনে চ্যানেল ১০ একা!
একেবারে একা!! কেউ নেই! তুমি একা!!
কেন??????????
( লেখা ২৪শে সেপ্টেম্বর'২০১৪)

Thursday, September 21, 2023

প্রবন্ধঃ যাদবপুর কান্ড/ Divide & Rule

 


ছাত্রদের 'হোক কলরব'-এর বিরুদ্ধে ছাত্রদের 'হোক গর্জন' কলকাতার রাজপথে আছড়ে পড়ল!!!!!!!!!!!!!!


আজ যাদবপুরের ছাত্র মিছিলের বিরুদ্ধে টিএমসিপির পাল্টা ছাত্র মিছিল। এই মিছিলে ছাত্রদের সঙ্গে অন্য সব ক্ষেত্রের মানুষেরাও যোগ দিয়েছেন। মিছিল আর পাল্টা মিছিলে মুখরিত হ'য়ে উঠেছে কলকাতার রাজপথ। এই আন্দোলন অবশেষে রাজনীতির রঙ্গে রাঙিয়ে গেল। ব্রিটিশের দেখানো পথ 'Divide & Rule'-এ দ্বিখণ্ডিত হ'য়ে গেল ছাত্র সমাজ।
'হোক কলরব আর হোক গর্জন'-এ আন্দোলন্রত ছাত্রছাত্রীদের ভেবে দেখা উচিত নয় কি কেন এই আন্দোলন নিরপেক্ষ স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন হিসাবে স্বীকৃতি পেল না? ভেবে দেখা উচিত নয় কি কেন ছাত্রছাত্রীদের এই আন্দোলনের অভিমুখ সরাসরি সরকার বিরোধী বা কোন রাজনৈতিক রঙ বিরোধী বা ছাত্রছাত্রী বিরোধী আন্দোলনে ঘুরে গেল বা যাচ্ছে????? কেন এই ছাত্র আন্দোলন শুধুমাত্র রঙ বিহীন, তকমা বিহীন, কোনরকম ছাপহীন স্বচ্ছ সাচ্চা নিরপেক্ষ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখ হ'য়ে উঠল না????? কেন দোষী অপরাধীদের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীরা ঐক্যবদ্ধ হ'তে পারে না????? ছাত্রছাত্রীরা কি পুতুল নাটকের দড়ি টানা পুতুল???? কারা পর্দার পিছন থেকে ছাত্রছাত্রীদের পুতুলের দড়ি টানার মত নাচায়????? বাদ-প্রতিবাদের কলরোলে, আন্দোলনের চোরাগলিতে হারিয়ে গেল কি নির্যাতিতা ছাত্রী?????? ফাঁকতালে গলে বেরিয়ে গেল না-তো দোষী অপরাধী ছাত্ররা?????? কবে চোখ খুলবে ছাত্রছাত্রীদের?????

কবে বুঝতে পারবে ছাত্রীরা তাঁদের মান-সম্মান, ইজ্জত একবার হারিয়ে গেলে কোনও আন্দোলন, কোনও ছাত্র, কোনও সরকার,  কোনও শিক্ষক, কোনও আইন, দুনিয়ার কোন শক্তি তা ফিরিয়ে দিতে পারে না।
(লেখা ২২শে সেপ্টেম্বর'২০২২)

কবিতাঃ দয়ালের অভিধান!

বন্ধু! অবাক করলে তুমি!
নিজেকে নিজে ছাড়া আর কাকে ঠকাচ্ছ তুমি!?
আমাকে ঠকাবে ব'লে মিথ্যে কোমর ক'ষে বাঁধছ তুমি
দিনরাত ক'রে একাকার স্বর্গ, মর্ত, পাতাল ভুমি!
বন্ধু! মনকে একবার জিজ্ঞেস ক'রে দেখো দেখি মন কি বলে!
মনকে বলো, মন! রাত্রিদিন প্রতিদিন কেন তুমি পরবাসী
নিজ নিকেতন ফেলে!?
কেন তুমি আঁধারেতে করো বাস, করো হাঁসফাঁশ
আলোর বাতায়ন ছেড়ে!?
বন্ধু! থমকে একটু দাঁড়াও! কোথা ছুটে যাও?
দেখো চোখ মেলে চেয়ে সম্মুখে তোমার
গহীন অন্ধকার সর্বনাশের এক দীর্ঘ সুড়ঙ্গ
তোমায় গ্রাস করবে ব'লে অপেক্ষা করছে!
ভয়ংকর এক তীব্র টান
সেই কালো ঘন অন্ধকারের বুক ভেদ ক'রে
তোমায় সেই ঘোর অন্ধকারে টেনে নিয়ে যাবে ব'লে ধেয়ে আসছে!
সাবধান বন্ধু! সাবধান! ছুটে যেও না;
বৃত্তি-প্রবৃত্তির বেসামাল টানে যেও না ভেসে!
রিপুর নেশায় হ'য়ে মাতাল উঠো না তুমি মেতে!
দাঁড়াও! থমকে দাঁড়াও বন্ধু!
তমসার পার অচ্ছেদ্য বর্ণ মহান পুরুষ
ইষ্টপ্রতীক রূপে আবির্ভুত হ'য়ে ডাকছে তোমায়!
ডাক শোনো! শোনো ডাক ঐ মহামানবের!
বন্ধু! কাকে ঠকাচ্ছ তুমি!
বন্ধু! কখনো কি দেখেছো ভেবে এ ভবে
আছে কি তোমার আপন কেউ?
পেরেছো কি কাউকে আপন ক'রে নিতে তোমাকে বাঁচাতে
নিজ গুণে জন্ম থেকে মৃত্যু দীর্ঘ সফর মাঝে
নিশিত রাতে যখন ডাকে ফেউ!?
আচ্ছা বন্ধু! একবারও কি দেখেছো ভেবে
ভাঙ্গা গড়ার খেলায় কোন খেলাটা তোমার প্রিয়?
বুকে হাত দিয়ে বলবে কিন্তু আর বিবেকের দিকে মুখ ক'রে নিও।
বন্ধু! মন কি তোমার শুনতে পায় বিবেকের ডাক?
যে হাত একদিন তোমায় খাদের থেকে এনেছিল তুলে
শক্ত ক'রে ধ'রেছিল তোমার দুর্বল হাত
আর দাঁড় করিয়েছিল শক্ত ভুমির 'পরে,
যে হাত একদিন আদর সোহাগে ভরিয়ে তোমায়
অন্ধকার জগত থেকে তুলে এনে দিয়েছিল আলোর সন্ধান,
যে হাত তোমায় মিথ্যের পথ থেকে সরিয়ে এনে
দিয়েছিল সত্য পথের সন্ধান,
যে হাত তোমায় কুয়োর আকাশ ছাড়িয়ে
এনে দাঁড় করিয়েছিল আলো ঝলমলে বিশাল অসীম আকাশের নীচে;
সেই বলিষ্ঠ, মজবুত, পবিত্র হাত কে তুমি দাও কেটে
নির্মম নিষ্ঠুর উল্লাসে এক কোপে!?
ভেঙ্গে দাও টুকরো টুকরো ক'রে
তিল তিল ক'রে ঘাম রক্তের বিনিময়ে গড়ে ওঠা মুক্তির প্রাসাদে!?
বন্ধু! এই পাপ, এই অমানবিক আচরণ কি
মানুষের অভিধানে আছে?
জানি না বন্ধু অভিধানে কি আছে আর না আছে।
শুধু জানি বন্ধু দয়ালের অভিধানে আছে,
"অকৃতজ্ঞ আর বেইমানকে
ঝেটিয়ে তাড়াও এক ধমকে।"
(লেখা ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২১)

Wednesday, September 20, 2023

উপলব্ধি/ Realization. সাবধান আমার সব বন্ধু/ BE CAREFUL MY ALL FRIENDS.

RELATIONSHIP DEPENDS ON TRUST ON EACH OTHER, REMAINS LIVELY FOREVER IN THE PRESENCE OF HOLY HEART AND YOU CAN MAINTAIN THE RELATIONSHIP WITH CARE FOREVER BY BEING POSSESSOR OF TRUST AND HOLY HEART ONLY THEN WHEN LIVING SUPREME BEING (ALMIGHTY) BELONGS WITHIN YOUR HEART BY INITIATING HIM. OTHERWISE EVERYTHING IS INTOLERABLE PRATTLING OR OVERMUCH TALKING. BE CAREFUL MY ALL FRIENDS. -----Probi.

সম্পর্ক একে অপরের বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে, পবিত্র হৃদয়ের উপস্থিতিতে চিরকাল প্রাণবন্ত থাকে এবং আপনি বিশ্বস্ততার অধিকারী হয়ে চিরকাল যত্ন সহকারে সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবেন যখন সর্বশক্তিমান বর্তমান জীবন্ত ঈশ্বরের দীক্ষা নিয়ে তাঁকে আপনার হৃদয়ের মধ্যে রাখবেন অন্যথায় সবকিছুই অসহনীয় প্র্যাটলিং বা অতিরিক্ত কথা বলা। সাবধান আমার সব বন্ধু।-----প্রবি।

চিঠিঃ প্রদ্যুত সাহাকে খোলা চিঠি। (২)

পরবর্তী অংশঃ

প্রদ্যুতবাবু লেখাটা দীর্ঘ তাই খন্ড খন্ড ক'রে পোষ্ট করলাম। এটা দ্বিতীয় অংশ। আশা করি ধৈর্য নিয়ে আলোচনার টেবিলে আমরা মুখোমুখি হবো।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জয়িতা কর্মকার ও মল্লিকা আচার্য যে কথাগুলি লিখেছে তার জন্য কতটা তারা দায়ী বা অপরাধী? সাধারণ ভাবে যদি তাদের বলা কথাগুলিকে মাইক্রোস্কোপের নীচে রাখা যায় তাহ’লে কি দেখবো? প্রদ্যুত বাবু কিছুক্ষণের জন্য আসুন তর্কের কূট কচালি দূরে সরিয়ে রেখে জয়িতার কথাটা ভেবে দেখি। আচ্ছা আপনি সামনাসামনি বাবাইদাদাকে দেখেছেন? সামনে বসে কথা বলেছেন? অবশ্য ফটো নিশ্চয়ই দেখেছেন। আমার অনুরোধ ফটোটার সামনে একবার বসুন প্রদ্যুতবাবু মাথা থেকে সব নেগেটিভ মনোভাব ঝেড়ে ফেলে দিয়ে; কারণ আপনার সঙ্গে কি কোনোদিন কোনও নেগেটিভ মনোভাব জন্মায় এমন কোনও তিক্ত ঘটনা বাবাইদাদার সঙ্গে ঘটেছে? উত্তর কি? ঘটেনি এবং কারও সঙ্গে ঘটে না। এবার বলি, ফটোটার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকুন শুদ্ধ মন নিয়ে, বায়াস না হ’য়ে। দেখতে পাবেন প্রদ্যুতবাবু এমন সুন্দর মানুষ সত্যিই পৃথিবীতে আর দ্বিতীয় নেই। আর কোনওদিন যদি একেবারে সামনে বসার এবং কথা বলার সুযোগ ঘটে তখন বুঝবেন কেন জয়িতা কর্মকার বলেছেন, বাবাইদাদাকে দেখলে মনে হয় তাঁকে ছাড়া পৃথিবীতে আর কিছুই নেই যা দেখা যায়। এত সুন্দর, এত শান্ত, এত সৌম্য একজন মানুষ যে হ’তে পারে তা সামনে থেকে না দেখলে বুঝতে পারবেন না। এত মিষ্টি মধুর প্রাণকাড়া যে কথা হ’তে পারে তা সামনে থেকে না শুনলে বোঝানো যাবে না। অন্যের কথায় প্রভাবিত হ’য়ে অকারণ রাগ বুকে পুষে নিয়ে যদি তাঁকে দেখতে যান তাহ’লে হবে না। সেখানে নিজেকেই দেখে ফিরে আসতে হবে। এই প্রসঙ্গেও ঠাকুরের বলা বাণীটার সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। ঠাকুর বললেন, “যদি পরিক্ষক সেজে অহংকার নিয়ে সদ্গুরু কিম্বা প্রেমী সাধুগুরুকে পরীক্ষা ক’রতে যাও তবে তুমি তাঁতে তোমাকেই দেখবে, ঠ’কে আসবে।“ এ ক্ষেত্রে বাবাইদাদাকে আমি সদগুরুর সাথে তুলনা করতে চাইনি; আমি যেটা বলতে চাইছি সেটা হ’লো ‘পরীক্ষা করা’র ব্যাপারটা আর ‘প্রেমী মানুষ’-এর কথা। প্রদ্যুতবাবু জয়িতা কর্মকারের এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অনুভূতি ও উপলব্ধির ব্যাপার। এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ভালোলাগার বিষয় যা কারও সঙ্গে ভাগ করা যায় না। কারও ব্যক্তিগত ভালোলাগার, ভালোবাসার বিষয়কে কেউ কি আঘাত করতে পারে প্রদ্যুতবাবু? আর প্রদ্যুতবাবু ভালোবাসা বা ভালোলাগা কি জোর ক’রে আদায় করা যায়? কি কি গুণের অধিকারী হ’লে সেই মানুষটার জন্য হাজার হাজার মানুষ পাগল হ’য়ে যায়? একটুও কি ভেবে দেখবো না প্রদ্যুতবাবু? এতটাই আমার তাঁর উপর রাগ? প্রদ্যুতবাবু একটা কথা বলি অন্যদিকে মানে করবেন না বা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেবেন না কথা দয়া ক’রে। আমরা যারা ঠাকুরকে দেখিনি------আমি দেখেছি, যদিও ঠাকুরের শেষের দিনগুলিতে ৬৭/৬৮ সাল নাগাদ, তখন ক্লাস এইটে কি নাইনে পড়তাম, সেই সময়ের ঠাকুরের মুখ এখন ঝাপসা হ’য়ে গেছে।----------- তারা ঠাকুরের ৫০ বছর বয়সের ছবিটা একটু দেখুন আর দেখুন ঠাকুরের মুখের সঙ্গে কি অদ্ভুত মিল বাবাইদার!!!!! তার মানে কি আমি বলতে চাইছি বাবাইদা ঠাকুর? আমি বা আমরা কি বলতে চাইছি বাবাইদাদা ভগবান? নিশ্চয়ই না। কিন্তু আমি যেটা বলতে চাইছি আমরা যারা তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি, তাঁর সামনে বসেছি তারা এ কথা বলতেই পারি বাবাইদাদা যদি এমন সুন্দর, সুপুরুষ হন, বাবাইদাদা যদি এত মিষ্টি-মধুর, প্রাণকাড়া কথা বলতে পারেন, বাবাইদাদার হেঁটে চলে যাওয়া যদি এত আকর্ষণীয় হয় তাহ’লে ঠাকুর কি ছিলেন!!!!!!!! ঠাকুরকে আমরা যারা পাইনি এটা কি ঠাকুরের অসীম দয়া বা করুণা নয় যে তিনি এবার বংশধারার মধ্যে দিয়ে রূপে, গুণে লীলা ক’রে চলেছেন? এই হ’লেন দর্শনধারী বাবাইদাদা! আর গুণ কি? ঐ যে বললাম মিষ্টি-মধুর, প্রাণকাড়া কথা! আর সেই কথা কি কথা? সবসময় ঠাকুর ছাড়া আর কোনও কথা নেই তাঁর মুখে! উঠতে, বসতে, চলতে, ফিরতে শুধুই ঠাকুরের কথা আর ঠাকুরের কথা! এখন বুঝতে পারি প্রদ্যুতবাবু, এত ঠাকুরকে ভালোবাসার, ঠাকুরের জন্য জীবন উৎসর্গ করার এত প্রেরণা, এত শক্তি পায় কোথা থেকে ঠাকুরের প্রকৃত কর্ম্মিরা? এত বিশাল বিশ্বজুড়ে যে ‘সৎসঙ্গ’-এর শ্রীবৃদ্ধি তার শক্তি কে যোগাচ্ছে বা কোথা থেকে আসছে? ঠাকুরবাড়িতে গেলে দেখবেন,----- যদি অবশ্য সুযোগ মেলে,----- ঠাকুর পরিবারের প্রত্যেকের মুখে শুধুই ঠাকুরের কথা আর ঠাকুরের কথা!!!! অন্য কোনও কথা নেই! অন্য কোনও আর বিষয় নেই। এ যে নিজের চোখে না দেখবে, না শুনবে তার পক্ষে সম্ভব না দূর থেকে কিছু বোঝার বা অনুভব করার। কারণ প্রতিকূল শক্তি, পরিবেশ, হাওয়া মানুষের পৃথিবীতে এত প্রবল, এত ভয়ঙ্কর, এত তীব্র ও বিষাক্ত যে সাধারণ সরল সাদাসিধে মানুষের পক্ষে বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠা মুস্কিল। চতুর্দিকে প্রতিকূল যুক্তির এত রবরবা, এত ঢক্কানিনাদ যে কান পাতা দায়। সেই কান পেতে শোনার মত অনুকূল পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সুযোগ যদি না থাকে তাহ’লে মানুষ জানবে কি ক’রে, বুঝবে কি ক’রে যে কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা? তাই প্রদ্যুতবাবু, অনুকূল যুক্তির প্রয়োজন। এখানে ঠাকুরের কথা স্মরণ করা যেতে পারে। ঠাকুর তাঁর সত্যানুসরণ গ্রন্থে বললেন, “প্রতিকূল যুক্তি ত্যাগ ক’রে বিশ্বাসের অনুকূল যুক্তি শ্রবণ ও মননে সন্দেহ দূরীভূত হয়, অবসাদ থাকে না।“ আর প্রয়োজন, প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ। প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণের মধ্যে দিয়ে ভুল ও মিথ্যে ধারণার বিলুপ্তি ঘটে। ঠাকুরের পুত্র, পৌত্র, প্রপৌত্রদের মধ্যে দিয়ে আমরা ঠাকুরকে জীবন্ত অনুভব করতে পারি। ঠাকুর আমাদের কাছে প্রথম ও প্রধান এই কথা তাঁরা তাঁদের কথাবার্তা, চালচলন, আচার ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে কখনও বা শাসনের মধ্যে দিয়ে প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এ যে না সামনা সামনি দেখেছে, অনুভব করেছে, উপলব্ধি করেছে তার বা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় তাঁদের জীবন, তাঁদের চরিত্রের মূল্যায়ন করার। প্রদ্যুতবাবু, ঠাকুরবাড়ির প্রতি প্রত্যেকের কত ঘটনার কথা আর বলবো বাবাইদাদার অনেক শাসনের একটা শাসনের গল্প শুধু তুলে ধরবো আপনার সামনে, যেটা আমার সামনে আরও অনেক ঘটনার মত ঘটেছিল।
ক্রমশঃ। (লেখা ২০শে সেপ্টেম্বর'২০১৭)

চিঠিঃ প্রদ্যুত সাহাকে খোলা চিঠি। (১)

প্রদ্যুতবাবু আমার নমস্কার জানবেন। আপনি জয়িতা কর্মকার ও মল্লিকা আচার্যের কমেন্টের উপরে আমার মতামত জানতে চেয়েছিলেন। জয়িতা কর্মকার আর মল্লিকা আচার্যের কমেন্ট আর আপনার আমাকে লেখা কমেন্ট দু'টোই এখানে তুলে ধ'রে চেষ্টা করলাম আপনার অনুরোধ রাখতে।
"পূজনীয় বাবাইদাকে দেখলে মনে হয় উনাকে ছাড়া এই পৃথিবীতে আর কিছুই নেই যা দেখা যায়।-----জয়িতা কর্মকার।
আর যাই হ’ক আমাদের জীবন সার্থক কারণ আমরা জীবন্ত ভগবানের সান্নিধ্য লাভ করতে পারছি।---মল্লিকা আচার্য।
প্রকাশ বাবু ,, এই পোষ্টের কমেন্ট টা একটু ভাল করে দেখে আপনার মুল্যবান মতামত জানিয়ে বাধিত করবেন............প্রদ্যুত সাহা।
ঠাকুর বাদ দিয়ে জীবন্ত ভগবান দাদারা ? আপনি কি বলবেন দাদা ?-----প্রদ্যুত সাহা।"
প্রদ্যুতবাবু আপনার অনুরোধ মত জয়িতা কর্মকার ও মল্লিকা আচার্যের কমেন্ট পড়লাম। এদের দৃষ্টিভঙ্গিকে পজিটিভ নেগেটিভ দু’ভাবেই দেখতে পারি। আপনার মনোভাব অনুযায়ী যদি নেগেটিভ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিষয়টাকে দেখি তাহ’লে আপনাকে আমি বাবাইদাদার অনেক ঘটনার মধ্যে একটা ঘটনার কথা তুলে ধরতে পারি। যদি কিছু না মনে করেন তাহ’লে প্রথমে বলি, আপনি দেওঘরে যান? বাবাইদাদার সঙ্গ করেছেন? এটা বললাম আলোচনার সুবিধার জন্য। কারণ যা আমরা দূর থেকে দেখি, লোক মুখে শুনি তার সঙ্গে বাস্তবের একেবারে আকাশ আর পাতাল ফারাক থাকে। আর দূর থেকে লোক মুখে শুনে কোনও কিছু সম্পর্কে ধারণা করা বা কিছু মন্তব্য করা দুটোই বুদ্ধিমানের কাজ নয়, অসিদ্ধির লক্ষণ। জয়িতা কর্মকার ও মল্লিকা আচার্যের কমেন্ট সম্পর্কে স্বাভাবিকভাবেই উপর উপর একটা নেগেটিভ ধারণা করা যেতেই পারে; এই হিসাবে আপনার মনোভাবকে সমর্থন করা যেতেই পারে এবং সাধারণ লোকের পক্ষে সেই ধারণা করা অসম্ভব নয়। এর ফলে মানুষের কাছে ভুল মেসেজও যায়। এই ভুল মেসেজ যাওয়ার জন্য জয়িতা কর্মকার ও মল্লিকা আচার্যের কমেন্ট যেমন দায়ী ঠিক তেমনি ততোধিক দায়ী যারা এই কমেন্ট নিয়ে অকারণ তর্কবিতর্ক করে ও মানুষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু যখন মানুষ সব কিছুর সংশ্লেষণ ও বিশ্লেষণ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নিরপেক্ষ মনোভাবে সত্য উদ্ঘাটনের তাগিদে কোনও কিছু তা’ সে ঘটনা বা ছবি, মন্তব্য ইত্যাদির বক্তব্য বিষয় যাই হ”ক না কেন তার বিচার ক’রে মতামত প্রকাশ করে সেই মতামতই হয় যথার্থ। এই জন্য মানুষের জীবনের কর্ম, চিন্তা ইত্যাদির মধ্যে ভারসাম্যের প্রয়োজন। নচেৎ সব পন্ড হ’য়ে যাবেই কি যাবে। এই ক্ষেত্রে ঠাকুরের ‘সত্যানুসরণ’ গ্রন্থে বলা কথাগুলি স্মরণ করা যেতে পারে। ঠাকুর বললেন,
“উপর উপর দেখেই কিছু ছেড়ো না বা কোনও মত প্রকাশ ক’র না। কোনও কিছুর শেষ না দেখলে তা’র সম্বন্ধে কোনও জ্ঞানই হয় না, আর না জানলে তুমি তা’র বিষয় কি মত প্রকাশ ক’রবে?
যা’ই কেন কর না, তা’র ভিতর সত্য দেখতে চেষ্টা কর। সত্য দেখা মানেই তাকে আগাগোড়া জানা, আর তা’ই জ্ঞান।
যা’ তুমি জানো না, এমন বিষয়ে লোককে উপদেশ দিতে যেও না।“-----শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র।
প্রদ্যুত বাবু, জয়িতা কর্মকার ও মল্লিকা আচার্যের মতো আরও অনেকের এরকম কমেন্ট সম্পর্কে আপনি আমাকে বলেছেন ভালো ক’রে দেখে মূল্যবান মতামত দিতে। সত্যি কথা বলতে কি প্রদ্যুত বাবু আমার পক্ষে মূল্যবান মতামত দেওয়া কঠিন কিন্তু সব কিছু দেখে বিচার বিশ্লেষণ ক’রে এ সম্পর্কে আমার একটা ধারণা শেয়ার করা যেতে পারে মাত্র। আর এই ধারণা আমার সম্পুর্ণ স্বাধীন চিন্তা থেকে উদ্ভূত ধারণা; আপনি গ্রহণও করতে পারেন আবার বর্জনও করতে পারেন। সেটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। এখানেও ঠাকুরের বলা বাণী স্মরণ করা যেতে পারে। ঠাকুর বললেন, “সত্যদর্শীর আশ্রয় নিয়ে স্বাধীনভাবে চিন্তা কর, এবং বিনয়ের সহিত স্বাধীন মত প্রকাশ কর। বই প’ড়ে বই হ’য়ে যেও না, তার essence (সার)-কে মজ্জাগত করতে চেষ্টা কর। Pull the husk to draw the seed ( তুষটা ফেলে দিয়ে শস্যটা নিতে হয়)।
প্রদ্যুত বাবু আপনার কি মনে হয়েছে জানি না এই কমেন্ট সম্পর্কে; কিন্তু আপনি যা লিখেছেন তা’তে এইটা বুঝতে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে আপনি এই ধরণের মন্তব্যে বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ। তবে আমি বলি, ভালোবাসা একটা অত্যাচার। যে ভালোবাসে আর যাকে ভালোবাসে এই দুই জনের ভুমিকা সম্পুর্ণ বিপরীত। যে ভালোবাসছে বা ভক্তি করছে সে ভালোবেসে বা ভক্তি দেখিয়েই খালাস। কিন্তু যাকে ভালোবাসলাম বা যাকে ভক্তি দেখালাম তার কিসে তৃপ্তি, কিসে সোয়াস্তি, কিসে আনন্দ আর কিসে অতৃপ্তি, কিসে অসোয়াস্তি বা কিসে নিরানন্দ তার ধার ধারী না, গুরুত্ব দিলাম না। আর ভালোবাসা পাওয়া মানুষটা ভক্তের অনিয়ন্ত্রিত বিশৃঙ্খল ভালোবাসা মুখ বুঝে সহ্য করে। আমার ভালোবাসা যে তাঁকে কষ্ট দিল, বদনাম দিল তার জন্য যে আমি দায়ী সে সবের গভীরে যাওয়ার কোনও দরকার মনে করি না আমরা যারা ভালোবাসি। আর এই-ই আমাদের জাতীয় চরিত্র।
ক্রমশঃ।
( লেখা ২০শে সেপ্টেম্বর ২০১৭)

Tuesday, September 19, 2023

Article: Central never thinks

Central never thinks about poor people. They never behave in a motherly manner for the interest of the common people, rather it has been noticed that the rich man become more richer whereas the poor become more poorer by the grace of the policies devised by the central government which has been an open secret in this 60yrs. The fight has been considered forever between haves and have nots for their illegal & legal rights. Rich people defeat the ardent fight of the poor people with the help of the poor people, poor people's ignorance and the perfidious leaders. Their leaders' surrender to the feet of the rich people took all the fight out of them. It is the high time, which never happened before, you should raise the issues of hike in price & F.D.I. ardently in the interest of the common & poor people. Do not loose this golden opportunity. Raise the voice that the vote politics should be stopped rather politics is to be entertained honestly in the interest of poor people. Rich remains forever rich, poor remains forever poor. As woman is the enemy of woman, Similarly, the poor is always the enemy of the poor. 

So when the poors become rich then they forget their past life and do not confess that they were the representatives of poor people one day and do not move in the interest of the poor people rather move eagerly with a philosophical outlook and kind attitude for the interest of the rich people. The situation has come when common masses' true intention has to come into the picture; whether poor people will fight in the interest of the poor people or will fight being a puppet in the hands of the rich people against poor people. Poor people should have understand their interest, their fighting; should have recognised their true companion of fightings. Who is true, who is false and who is the representive of satan, who is God's representative should be opened in this situation. Let it be either good or bad consequence, either success or failure. Don't bother. You are truely the representative of poor people among all the politicians. These waves of truth to be dashed on all over the world and rich & powerful people will understand & take lesson that poor people are the spine and breath of their life & future. May Supreme Father help & support you.

And, you will only succeed, become the savior of the poor, the real leader and liberator of the people suffering from hunger, lawlessness, oppression, when you surrender yourself to the Supreme Father. Otherwise it's all nonsense. Nothing but a stream of meaningless beautiful words.
Thanks a lot.
(Written September'19, 2012)

Monday, September 18, 2023

গান/ প্রাণকাড়া ঐ রাঙা চরণ পর

প্রাণকাড়া ঐ রাঙা চরণ পর
আমার মন হারায় রে ২
ওরে তাঁর প্রাণে মন প্রাণ হারিয়ে
লুটিয়ে যায় চরণ তলে মন হারায় রে।
প্রাণকাড়া ঐ রাঙা চরণ পর আমার মন হারায় রে।
ও যে আমায় ঘরের বাহির করে 
চরণ তলে জড়িয়ে রাখে
আমার প্রাণ জুড়ায় রে।
ও যে টেনে আমায় নিয়ে যায় রে ২
যায় রে কোন চুড়ায় রে আমার প্রাণ জুড়ায় রে।
প্রাণকাড়া ঐ রাঙা চরণ পর 
আমার মন হারায় রে ২

ও কোনখানে কি রূপ দেখাবে
কোনখানে কি সুর শোনাবে
কোথায় গিয়ে শেষ মেলে যে
ভেবেই না কুলায় রে আমার মন হারায় রে।
প্রাণকাড়া ঐ রাঙা চরণ পর 
আমার মন হারায় রে ২
( লেখা ২০২১-২২/( গ্রামছাড়া ঐ রাঙা মাটির পর গানের সুরে)

গানঃ চরণতলে এই জীবন

চরণতলে হুঁ হুঁ এই জীবন হুঁ হুঁ
চরণতলে কি আবার এই জীবন হয় কি না হয়
কি জানি এই জনমে আবার দেখা হয়!
চরণতলে--------

পেয়েছি তোমার চরণ যুগল কি ভাগ্য আমার যে
প্রাণ ভরে দেখি তোমায় চেয়ে তোমার মুখের পানে
কি জানি এই রাত দয়াল আবার হয় কি না হয়
চরণতলে----এ---------এ

চরণতলে কি আবার এই জীবন হয় কি না হয়
কি জানি এই জনমে এই রাত আবার কি হয়!

পাস আয়ে কে হাম নেহি আয়েঙ্গে বারবার
দয়া করো দয়াল প্রভু ঐ চরণে আসি আবার ২
চোখের জলে ভাসাবো জীবন চরণতলে লুটিয়ে তোমার।

আঁখ সে ফির ইয়ে প্যায়ার কি বরসাত হো না হো
কি জানি এই রাত দয়াল আমার হয় কি না হয়
চরণতলে কি আবার এই জীবন হয় কি না হয়
চরণতলে-------এ--------এ
(লেখা ২০২০-২১/( লগ যা গলে হিন্দি গানের সুরে)

কবিতাঃ এই বেলা হাত ধরো।

ও বন্ধু! এইবেলা হাত ধরো!
যাবার সময় হ'লো।
কোনোদিন দিলে না ভালোবাসা,
বাড়ালে না হাত!
এইবেলা তো বন্ধু ধরো হাত।
যাবার সময় হ'লো বন্ধু,
যাবার সময় হ'লো!
রাখো হাতে হাত, ভরসার হাত
শেষবেলায় বিশ্বাসে মেলায়, স্পর্শে
যাক কেটে যত অপূর্ণতার রাত!
বসন্ত শেষেও ডাকছে কোকিল,
বইছে বাতাস দখিনা হায়!
মিথ্যে অভিমান ছেড়ে বঁধু
শেষবারের মত ধ'রো হাত
দিন শেষে বসন্ত যদি আবার গায়!
সময় নষ্ট, নষ্ট জীবন, নষ্ট যৌবন হায়!
দেনা পাওনার দড়ি টানাটানিতে
বেলা যে কেবল ব'য়ে যায় বঁধু
বেলা যে কেবল ব'য়ে যায়!
এইবেলা ধরো হাত বন্ধু
এইবেলা হাত ধরো!
হাতের কোমল ছোঁয়ায় পরান জুড়ায়
মলয় বাতাস ভরে দেয় আলয়
আলোয় আলোয় ভুবন ভরো!
এইবেলা হাত ধরো বন্ধু,
এইবেলা হাত ধরো।
(লেখা ২০২১-২২)

গান/ প্রভুর সাথে আমরা।

প্রভুর সাথে আমরা ৬ 
চরণতলে থাকি বসে মোরা চলন পূজার ভোমরা।
এসো তোমরা। আরে (সবাই) এসো তোমরা।
এসো তোমরা সবাই মিলে সাজায় প্রভুর পশরা।
প্রভুর রঙে রাঙিয়ে জীবন রাঙায় মোদের মোরা ২
//মিউজিক//
নাম রসে ডুবে থাকি নামীর সাথে আমরা
নাম বিনা নামী যেন প্রাণ বিনা ভোমরা। ২
রাধাস্বামী রাধা রাধা প্রাণ কাঁদে রাধা রাধা ২
চরণ তলে থাকি বসে মোরা চলন পূজার ভোমরা।
এসো তোমরা। আরে সবাই এসো তোমরা।
এসো তোমরা সবাই মিলে সাজায় প্রভুর পশরা।
প্রভুর রঙে রাঙিয়ে জীবন রাঙায় মোদের মোরা। ২
//মিউজিক //
প্রভুর চরণ প্রভুর চলন প্রভু প্রাণ ভোমরা।
মাথায় নিয়ে চলবো মোরা মনে রেখো তোমরা।। ২
প্রভু বিনা জীবন শুনা অন্ত মে নাহী রোনা। ২
চলন পূজা ছাড়া জীবন জেনো জীবন হোমরা চোমরা।
এসো তোমরা! আরে (সবাই) এসো তোমরা।
এসো তোমরা সবাই মিলে সাজায় প্রভুর পশরা
প্রভুর রঙে রাঙিয়ে জীবন রাঙায় মোদের মোরা।
প্রভুর সাথে আমরা।
চরণতলে থাকি বসে মোরা চলন পূজার ভোমরা।
এসো তোমরা। আরে (সবাই) এসো তোমরা।
এসো তোমরা সবাই মিলে সাজায় প্রভুর পশরা।
প্রভুর রঙে রাঙিয়ে জীবন রাঙায় মোদের মোরা ৪

//মিউজিক//
( লেখা ২০২২-২০২৩/ Darru Piyala Chhord Da গানের সুর)

গান/ শরীর ভাঙা মন ভাঙা হৃদয় ভাঙা হয়

শরীর ভাঙা মন ভাঙা হৃদয় ভাঙা হয়
ইষ্ট টানে প্রবল হ'লে বৃত্তি ভাঙা হয়।
আগুন জ্ব'লে আগল ভাঙা হয় যে প্রাণে প্রাণে
হয়রানিতে ভাঙা জীবন (হয়) জোড়া ইষ্টটানে
বুক ভাঙা ঐ বুকেতে প্রেমের সুরা বয়
ইষ্ট টানে প্রবল হ'লে বৃত্তি ভাঙা হয়।

জনমে হয় সুরত ভাঙা বলো তো কখন?
আগল ভাঙা রিপুর তালে বৃত্তি প্রবল যখন
আঁতুড় ঘরে জীবন ভাঙা প্রথম প্রভাতে
দয়াল যখন থাকে না ঐ ঘরে দিনেরাতে
তাঁর অভাবে সুর ছাড়া যে জীবন ভাঙা হয়।
ইষ্ট টানে প্রবল হ'লে বৃত্তি ভাঙা হয়।
( লেখা ২০২২-২৩/ শিমুল রাঙা পলাশ রাঙা গোলাপ রাঙা গানের সুরে)

গান/বহে বহে প্রিয় দেখো প্রেমজল

আ আ------------
বহে বহে প্রিয় দেখো প্রেমজল
ফেনিল হয়েছে চুমে প্রভুর অধর শীতল।
বহে বহে প্রভুর চোখে প্রেমজল।
বহে বহে চোখে বহে প্রেমজল।
মিউজিক
হেরিয়া প্রভুর চোখে
প্রেমবারি দিনে রাতে
কাঁদি আমি আনন্দেতে ঝরিছে বাদল।
বহে বহে প্রভুর চোখে প্রেমজল।
বহে বহে প্রিয় দেখো প্রেমজল।
মিউজিক।

মরুবুকে প্রভু এলে
(নিয়ে) প্রেমবারি আঁখি তলে
তৃষিত বুকে বহে প্রেম যে কেবল.২
বহে বহে চোখে বহে প্রেমজল
বহে বহে প্রভুর চোখে প্রেমজল।
মিউজিক।

এ প্রেম চোখেমুখে
মুছায়ে দেয় আঁখিজলে
শিউড়ে ওঠে হৃদয় তাঁর প্রেমের আঁচল।
বহে বহে প্রিয় এ যে প্রেমজল।


বহে বহে চোখে বহে প্রেমজল।
ফেনিল হয়েছে চুমে প্রভুর অধর শীতল।
বহে বহে প্রিয় দেখো এ প্রেমজল।
মিউজিক।

কেন মন অকারণ
কেঁদে মরিস অনুক্ষণ
হাসিতে চাহি খালি কাঁদিলি কেবল।
বহে বহে প্রিয় এ যে প্রেমজল।
বহে বহে চোখে বহে প্রেমজল।
ফেনিল হয়েছে চুমে প্রভুর অধর শীতল।
বহে বহে প্রিয় দেখো প্রেমজল।
(লেখা সম্ভবত ২০২০-২১ করোনা সময়ে/ নহে নহে এ নয় আঁখিজল গানের সুরে)

গান/ ঘুম আসছে না আজ

ঘুম আসছে না আজ
ঘুম আসছে না আজ।
ঘুম আসবে না আর
ঘুম আসবে না আর।
প্রভুর নয়ন আমায় ডাকে বারেবারে
আমার নয়ন তারায় জল কেন ঝরে?
ঘুম আসছে না আজ
ঘুম আসছে না আজ।
ঘুম আসবে না আর
ঘুম আসবে না আর।
তুমি কোথায় আজ প্রাণ যে খোঁজে তোমায়
প্রেমের হাওয়া বহে ঐ চোখের তারায়
প্রাণের মাঝে তোমার কায়া আলো ফেলে।
ঘুম আসছে না আজ।
ঘুম আসছে না আজ।
ঘুম আসবে না আর।
ঘুম আসবে না আর।
আকাশ বাতাস আজ কাঁদে তোমার তরে
প্রতিটি প্রাণ আজ ডাকে তোমায় আকুল স্বরে
ঘুম আসছে না আজ
ঘুম আসছে না আজ
ঘুম আসবে না আর।
ঘুম আসবে না আজ।
তোমার চরণতলে (আজ) প্রভু দাও গো থাকিতে
চলনপুজায় দেব অঞ্জলি অর্ঘ ডালায়
বুকের মাঝে ওঠে বেজে আনন্দ লহরী
ঘুম আসছে না আজ।
ঘুম আসছে না আজ।
ঘুম আসবে না আর।
ঘুম আসবে না আর।
(লেখা ২০২০-২০২১ সালে সম্ভবত/ কবির সুমনের 'ঘুম আসবে না আর' সুরে)

গান/বড় ময়লা জমেছে মনে

বড়ো ময়লা জমেছে মনে ২
ময়লা জমেছে মনে
বড়ো ময়লা জমেছে মনে।
(স্থান) দাও গো তোমার চরণতলে
ছুঁতে দাও ঐ চরণে।
বড় ময়লা জমেছে মনে।
মরণের পথে চলে যেতে যেতে
হত প্রাণ মাঙ্গে বাঁচার আধারে
ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলি মৃত্যুর ঝুলি
প্রভু থাকো জীবনে।

বড় ময়লা জমেছে মনে।২
ফেলে দিয়ে রাতে খুঁজি তারে প্রাতে
কত দিন যাবে কপট চাতুরিতে।
করো দয়া দয়াল তুমি ফিরায়ো না।
দয়া কর অভাজনে।
বড় ময়লা জমেছে মনে
ময়লা জমেছে মনে
(স্থান) দাও গো তোমার চরণতলে
ছুঁতে দাও ঐ চরণে।
বড় ময়লা জমেছে মনে৩
( লেখা কয়েক বছর আগে/ বড় ময়লা জমেছে গানের সুরে)

গান/ আমি আগন্তুক আমি বার্তা দিলাম

আমি আগন্তুক আমি বার্তা দিলাম 
জীবন অংক আমি বলতে এলাম।
আমি আগন্তুক, আমি বার্তা দিলাম
To you to you and you and you and to everyone here
জীবন অঙ্ক আমি বলতে এলাম।
Triumphant in infusing life and growth equal to কি?
Supreme Father.
এখনো রিপুদাস রিপুগুলো ভেঙ্গে ভেঙ্গে খাচ্ছে
কামনায় বাসনায় জীবন যে আগুনে জ্বলছে
ফিকশান টেনশান মাথে নিয়ে ইনশান কি ভাবছে?
দয়ালধাম?
এখনো রিপুদাস রিপুগুলো ভেঙ্গে ভেঙ্গে খাচ্ছে
কামনায় বাসনায় জীবন যে তার আগুনে জ্বলছে
এদিকে মিথ্যের গ্যাসে ভরে গেলো জীবন দালান
Mistry ব্যাপার বেশ Mistry!
আমি আগন্তুক
আমি বার্তা দিলাম
জীবন অঙ্ক আমি বলতে এলাম।
মাঝখানে গোটা দুই জীবনে জীবন নেই
কৈশোর যৌবনে কেন জীবনে গতি নেই?
বৃত্তির বৃত্তে জীবন যে ঘুরছে
উদ্দাম রিপুতলে জীবন যে পুড়ছে
কালকূট বিষ দেহে নিলাম।

মুখের মিষ্টি হাসি রাশি রাশি ঝরে ঝরে পড়ছে
দু জোড়া ঐ মিষ্টি চোখ আকুল হ'য়ে তোমায় যে ডাকছে!
No dear don't get tension.
এতদিনে মানবতা ভুলে গেছে ভালবাসার নিদান।
Hear I am.
আমি আগন্তুক আমি বার্তা দিলাম
জীবন অংক আমি বলতে এলাম।
আমি আগন্তুক, আমি বার্তা দিলাম
Infusing life and growth-------No! না না না না
Triumphant in infusing life and growth equal to কি?
Supreme Father.

গান/ সৎসঙ্গী ভাইবোন ভুলিয়া দিনক্ষণ

সৎসঙ্গী ভাইবোন ভুলিয়া দিনক্ষণ
মিলিয়া গড়িলাম নব বৃন্দাবন।
দেখ কি সুন্দর দিন অনুক্ষণ (তোমরা)
দেখ কি সুন্দর দিন অনুক্ষণ।
দিন আমার আইতো রাত গড়াইতো
জীবন বীণার তারে শুধু রাধা নাম গাইতো।
দয়াল বলে ডাকিলে সাড়া মেলে অন্তরে
পরাণ রশি দিয়া তারে কইষ্যা বাঁধিলাম।
দেখ কি সুন্দর দিন রচিলাম (তোমরা)
দেখ কি সুন্দর দিন রচিলাম।
সৎসঙ্গী ভাইবোন আনন্দে প্রাণমন
ছলাৎ ছল ছলাৎ ছলাৎ
করে রে রে।
দেখ কি সুন্দর দিন হাসে রে (তোমরা)
দেখ কি সুন্দর দিন হাসে রে।

চারিদিকে লাল নিল দ্যাখো আলো ঝিলমিল
আলোক ছটার ঝলকানিতে নয়ন তোমার কাঁপিছে।
দয়ালের নয়ন যুগল তোমারে ডাকিছে
দয়ালের হাসিতে দেখ জগৎ হাসিছে ।
দেখ কি সুন্দর দিন আসিছে (তোমরা)
দেখ কি সুন্দর দিন আসিছে।

সৎসঙ্গী ভাইবোন তন মন দিয়া ধন
ধিনাধিন তা ধিনাধিন
নাচো রে-এ-এ।
দেখ কি সুন্দর দিন হাসে রে।
আজ দ্যাখো কি সুন্দর দিন হাসে রে!

জীবন হাসে জীবন কাঁদে পরাণ বলে রাধে রাধে
জীবন জুড়ে শুধুই রাধা স্বামী আমি গাইতাম
দয়াল বলে কত কাঁদিলাম রাধা নামে ভাসিলাম
আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে আমরা (সব) নাচিলাম।
দেখ কি সুন্দর দিন বাঁধিলাম (তোমরা)
দেখ কি সুন্দর দিন বাঁধিলাম।

সৎসঙ্গী ভাইবোন শোনো শোনো দিয়া মন
তাতা থৈ তাথৈ তাথৈ২
পরাণ আমার নাচে রে।
দেখ কি সুন্দর দিন হাসে রে।

শান্তি নগরে সৎসঙ্গ হইলো
আনন্দে নগরবাসী নাচিতে লাগিলো
অনুকূল পেয়ালায় রাধা নাম ঢালিলাম
নামমদে ডুবে মোরা সব মাতাল হইলাম।
আমরা কি সুন্দর দিন কাটাইলাম (আজ)
আমরা কি সুন্দর দিন কাটাইলাম।

(লেখা কয়েক বছর আগে/ সুর গ্রামের নওজওয়ান হিন্দু মুসলমান গান।) 

গান/ দুখিলা দুখিলারে মন

ঐ দয়াল দয়ালের চলন ধূলি এসো তুলি মাথায়
এ ধুলি শুধু নয়রে ধুলি ভুলিয়ো নারে
বন্ধু এ ধুলি এসো তুলি মাথায়।

দুখিলা দুখিলারে মন খুঁজে খুঁজে মরে
দুখিলা দুখিলারে মন দয়াল চরণ তরে!

দয়ালের চোখের তারায় প্রেমের ঢলাঢল
বঁধু ঐ চোখের তারায় হারিয়ে যাবো চল!
দু'চোখে প্রেমের আগুন হাওয়াই নিলো বাঁক
বাদল হ'য়ে পড়লো ঝ'রে বুকের মাঝে থাক!

*

হাসি ঐ প্রাণখোলা
ভরিয়ে প্রাণপেয়ালা
প্রেমেরই মাতাল সুরে
নিয়ে যায় অচিনপুরে
আমার হৃদমাঝারে জাগায় অসীম বল
আহারে আহারে প্রাণ যে টলমল!
বঁধু ঐ হাসির মাঝে হারিয়ে যাবো চল!
দয়ালের চোখের তারায় প্রেমের ঢলাঢল
বঁধু ঐ চোখের তারায় হারিয়ে যাবো চল।

প্রভু তুমি কোথায়! হে প্রভু তুমি কোথায়!
তোমার কথা ভাবি ভাবি যাবো আমি মরে ২
হে দুখিলা দুখিলা মন খুঁজে খুঁজে মরে এখন
পরাণ আমার উছলি হ'য়ে মন পাগলি
পরাণ আমার উছলি হ'য়ে মন পাগলি
মরি আমি যাবো রে চরণতলে মরি আমি যাবো।

চরণতলে মরি আমি যাবো রে দয়াল তোর চরণতলে।

দুখিলা দুখিলারে মন খুঁজে খুঁজে মরে
দুখিলা দুখিলারে মন দয়াল চরণ তরে!২-

(লেখা ২০২০-২০২১ সালে/ 'রঙ্গিলা রঙ্গিলা রে মন হারিয়ে যাবো দূরে' গানের সুরে)

গান/ এই বাজেরে মাদল ধিতাং ধিতাং

এই বাজেরে মাদল ধিতাং ধিতাং
আমার বুকের মাঝেতে
দয়াল সাথে নাইচবো মোরা
দয়াল প্রভুর ধামেতে।২

পরাণ জুড়ে ঝড় উঠেছে
পাগল আমার মন
প্রভু আমার মন কেড়েছে
ধুকপুক যৈবন।২
এই বাজেরে মাদল ধিতাং ধিতাং
আমার বুকের মাঝেতে
দয়াল সাথে নাইচবো মোরা
দয়াল প্রভুর ধামেতে।

ঝিমঝিমঝিম নেশা নেশা রুধিরাতে বান
মরা গাঙ্গে জোয়ার এলো দয়াল প্রভুর গান।
পরাণ জুড়ে ঝড় উঠেছে
পাগল আমার মন
প্রভু আমার মন কেড়েছে
ধুকপুক যৈবন।
এই বাজেরে মাদল ধিতাং ধিতাং
আমার বুকের মাঝেতে
দয়াল সাথে নাইচবো মোরা
দয়াল প্রভুর ধামেতে।

মিষ্টি হাসি বাজায় বাঁশি জাগায় বুকে বল
চোখের তারায় প্রেমের বাতি জ্বলছে ঝলমল!
চলন পুজায় মত্ত থেকে নে না চরণ মাথায় তুলে
জড়াই যাবো প্রভুর সাথে বৃত্তি বাঁধন খুলে
পরাণ জুড়ে ঝড় উঠেছে
পাগল আমার মন
প্রভু আমার মন কেড়েছে
ধুকপুক যৈবন।২

এই বাজেরে মাদল ধিতাং ধিতাং
আমার বুকের মাঝেতে
দয়াল সাথে নাইচবো মোরা
দয়াল প্রভুর ধামেতে।
(লেখা ২০২১  ) 

গান/ প্রভুরে প্রভুরে প্রভুরে

প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে ৪
চল মিনি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে২
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
প্রাণমন ভরিয়া। ২
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে ৪
প্রাণ বলে রাম রাম
মন বলে পলায় যাম
বিবেক বলে, দিব প্রাণারাম!
ও রাধেশ্যাম আঁখি দিয়া কাঁদাইলি আরাম!
চল মিনি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
প্রাণমন ভরিয়া।২
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে।২
বাঁচাবাড়া যেমন তেমন
নেপোয় মারা কাম গো
হায় রাধেশ্যাম! দয়া করি বাঁচাইলি পরাণ।
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে ৪
চল মিনি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
মনপ্রাণ ভরিয়া।২
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে।২
দয়াল আমার বাঁচার আশ
বেড়ে ওঠার তাল গো
পরম বাপে মাঙ্গে যদি
সঁপে দিব প্রাণ গো।২
চল মিনি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
প্রাণমন ভরিয়া।২
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে।২
হাওয়া বয় ঝির ঝির
পরাণ কাঁপে তির তির
দয়াল মুখে মিষ্টি হাসির ঝিলিক!
হায় দয়াল বাপরে
হাসি দিয়া জড়াইলি আমায়
আমার দয়াল বাপরে!
চল মিনি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
প্রাণমন ভরিয়া।২
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে।-------প্রবি।
(লেখা ২০২১ সালে। মিনিরে মিনিরে সুরে গান)

গান? প্রাণে প্রাণে ভরে আছে

প্রাণে প্রাণে ভরে আছে প্রাণ সখা প্রেমময়
(তাঁর) প্রেমের দোলায় চড়ে এই জীবন বয়
প্রাণপাখি প্রাণে প্রাণে রাধা রাধা রাধা গায়
সে জানে প্রাণপাখি রাধাস্বামী কেন গায়!---প্রবি।

গান/ আনন্দ ধারা বহিছে জীবনে

আনন্দধারা বহিছে জীবনে
আনন্দধারা বহিছে জীবনে
দিবসরজনী কত অমৃতরস উথলি যায় অশান্ত জীবনে।
আনন্দধারা বহিছে জীবনে।
আনন্দধারা বহিছে জীবনে।

মিউজিক।

আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
প্রভুর স্পর্শে কত আনন্দরস বহিয়া যায় ডুবন্ত জীবনে।
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে

মিউজিক
পান করে আমার আমি প্রাণ (পরাণ) ভরিয়া
সদা সুপ্ত রহে যৌবন গতি
নিত্য প্রেম বহে জীবনে যৌবনে।
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে।
আনন্দধারা বহিছে জীবনে।

মিউজিক

বসিয়া আছি আমি প্রভু তোমারি ধ্যানে
আত্মনিমগন তোমারি কারণে
চারিদিকে বাজে শুনি তোমারি বাঁশরী
আমার আমি তাতে ডুবে মরি
জীবন ভরিয়া লই অমৃত সুরা পানে
আনন্দধারা বহিছে জীবনে।
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে।

মিউজিক

আনন্দধারা বহিছে জীবনে
মিউজিক
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
মিউজিক
আনন্দধারা বহিছে জীবনে
মিউজিক
আনন্দধারা বহিছে জীবনে
দিনরজনী কত অমৃতরস উথলি যায় অশান্ত জীবনে।
মিউজিক
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
প্রভুর স্পর্শে কত আনন্দরস বহিয়া যায় ডুবন্ত জীবনে।
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে।---প্রবি। 
(লেখা২০২০- ২০২১ সালে)




গান/ শ্রাবণ ও ভাদর মাসে পরাণ ঘাসে

শ্রাবণ ও ভাদর মাসে পরাণ ঘাসে নতুন প্রাণের ফুল ফুটিছে
উথালি পাথালি মনে আঁধার ঘরে নতুন গানের সুর উঠিছে।
হেই হো বড়মা রে
হেই হো দয়াল রে
শ্রাবণ ও ভাদর মাসে পরাণ ঘাসে নতুন প্রাণের ফুল ফুটিছে
উথালি পাথালি মনে আঁধার ঘরে নতুন গানের সুর উঠিছে।২
ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি ঝরে বড়মা আমার আশা
দয়াল প্রভু ঐ এসেছে দয়াল আমার বাসা।
লুটি লুটি পায়ে লুটি আলতা রাঙ্গাটি
দয়াল আমার বুকের মাঝে ভয়টি আমার কি?
মিউজিক............
শ্রাবণ ধারা অঝোর ধারা
প্রাণ কেড়েছে ঐ রুপ সাগরের ঢেউয়ে
গুমোট হাওয়া ভাদর ছাওয়ায়
দয়াল খোঁজে পরাণ আমার হ'য়ে হন্যে।
ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি ঝরে বড়মা আমার আশা
দয়াল প্রভু ঐ এসেছে দয়াল আমার বাসা।
লুটি লুটি পায়ে লুটি রাতুল চরণটি
দয়াল আমার বুকের মাঝে ভয়টি আমার কি?
শ্রাবণ ও ভাদর মাসে পরাণ ঘাসে নতুন প্রাণের ফুল ফুটিছে
উথালি পাথালি মনে আঁধার ঘরে নতুন গানের সুর উঠিছে।

নতুন প্রাণের ফুল, নতুন গানের সুর
পরাণ রশি দিয়া বাঁধি রাঙা চরণখানা।৩
ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি ঝরে বড়মা আমার আশা
দয়াল প্রভু ঐ এসেছে দয়াল আমার বাসা।
লুটি লুটি পায়ে লুটি রাতুল চরণটি
দয়াল আমার বুকের মাঝে ভয়টি আমার কি?
নতুন প্রাণের ফুল, নতুন গানের সুর
পরাণ রশি দিয়া বাঁধি রাঙা চরণখানা। (টাপা টিনি সুরে গানটা)

গান/ তুমি আমার বলেছিলে আমায়

তুমি আমার বলেছিলে আমায় 
কোনও এক জ্যোৎস্না রাতে!
আমি একা বসে থাকি 
তারারা হাসে মিটিমিটি
কানে কানে বলে যায় 
সে তো আর একা নয়।
সে যে স্বপ্ন বিহ্বল জোছনা রাতে
অন্য কোনও সাথে।
তুমি আমার বলেছিলে আমায় 
কোনও এক জ্যোৎস্না রাতে!

তুমি আমার বলেছিলে আমায় 
কোনও এক জ্যোৎস্না রাতে!
আমি একা চেয়ে থাকি 
স্মৃতিরা আসে ভাসিভাসি
হৃদমাঝারে ঢেউ তুলে যায় 
ব্যথার গরল ঢালি
সে যে কষ্ট ভীষণ একেলা রাতে
নেই কেউ সাথে।
তুমি আমার বলেছিলে আমায়
কোনও এক জ্যোৎস্না রাতে!  
 ------------ সুর ও লেখা। প্রবি।
(বহু পূর্বে লেখা একেবারে প্রায় ৪০বছর আগে)

গান/বন্ধু কামনা কাহারে বলে

বন্ধু, কামনা কাহারে বলে? বন্ধু, বাসনা কাহারে বলে?
তোমরা যে বলো দিবস রজনী 'প্রেমময়, প্রেমময়'--
বন্ধু, প্রেমময় কারে কয়? সে কি কেবলই বাসনাময়?
সে কি কেবলই কথার ঢল? সে কি কেবলই কথার চাষ?
লোকে তবে করে কি সুখেরই তরে এমন কথার চাষ?।
বন্ধু! কামনা কাহারে বলে---------------------------------
----------------------------- এমন কথার চাষ?


আমার চোখে তো সকলই দয়াল শান্ত স্নিগ্ধ নরম সকাল,
সুনীল আকাশ মধুময় বাতাস আলোময় রুপময় রসময় বিকাল
সকলই দয়াময় দয়াল মত।
দয়া আকাশের গায় বাতাসে বায় শাখে শাখে হাসে পাতায় পাতায়
নাইরে দুঃখ নাইরে কষ্ট নাইরে জ্বালা যন্ত্রণা ক্ষত।
হাসিতে মুক্তো রাশি রাশি ঝরে নয়নে আলোক ঝর্ণা বায়
বাঁচিতে বাড়িতে পরতে পরতে দয়ালের ছোঁয়া লাগে যে গায়।
আমার মত নসিবি কে আছে আয় ছুটে আয় আমার কাছে
আমার মত নসিবি কে আছে আয় ছুটে আয় দয়ালের কাছে
আমার হৃদয়ে দয়ালের গান দয়ালের সুর দয়ালের তান।
প্রতিদিন যদি জিতিবি কেবল একদিন নয় হারিবি তোরা
একদিন নয় মিলিয়া মিশিয়া দয়ালের গান গাহিবো মোরা।


গান/তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা।

তোমার ঘরে বাস করে কারা ও মন জানো না
তোমার ঘরে বাস করে কারা ও মন জানো না
তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা মন জানো না
তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা।

এক জনে বাড়ির খেয়ে তাড়ায় বনের মোষ ও মন
আরেক জনে শুয়ে বসে নাক ডাকে
ও আবার সেই মোষের দেখো দুধ খেয়ে যায়
কোন জনা কোন জনা?
তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা মন জানো না
তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা মন জানো না

তোমার ঘরে বাস করে কারা ও মন জানো না
তোমার ঘরে বাস করে কারা ও মন জানো না
তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা মন জানো না
তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা।

এক জনে ইষ্টনামে পাগল হ'য়ে দৌড়ে মরে সাজায় কুঞ্জবন
আরেক জনে ঠান্ডা হাওয়ায় মস্তি করে
ও আবার দেখো সেই কুঞ্জবনে ঘুরে ঘুরে দোষ ধরে
কোন জনা কোন জনা?
তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা মন জানো না
তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা মন জানো না

তোমার ঘরে বাস করে কারা ও মন জানো না
তোমার ঘরে বাস করে কারা ও মন জানো না
তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা মন জানো না
তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা।


ইষ্টনামে হইয়া মাতাল
এক ক'রে দাও স্বর্গ মর্ত আর পাতাল
আবার রাধা নামের বাদাম তুলে
রাঙ্গিয়ে নাও হৃদয় খানা।
তোমার ঘরে বসত করে একজনা মন শোনো না
তোমার ঘরে বসত করে একজনা মন শোনো না।

তোমার ঘরে বাস করে কারা ও মন জানো না
তোমার ঘরে বাস করে কারা ও মন জানো না
তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা মন জানো না
তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা।


প্রবন্ধঃ বৈঠকি আড্ডা ও আমরা সৎসঙ্গীরা।

এই বৈঠকি আড্ডা নিয়ে কিছু কথা বলার জন্য কলম ধরলাম। মাঝে মাঝেই এই বৈঠকি আড্ডার চরিত্র, উদ্দেশ্য ও আড্ডার আয়োজক ও উপস্থিত সৎসঙ্গীদের করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করার প্রয়োজনে এই কলমচির প্রয়োজন হয়, যিনি আলোচনার মূল আলো ফোকাস করবে মানুষের মধ্যে বা পাঠক সমাজে। এই বৈঠকি আড্ডা আমরা শুরু করি পরম পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবাবাইদাদার আশীর্ব্বাদ মাথায় নিয়ে যেদিন শুরু হয়েছিল এই কেন্দ্রের জয়যাত্রা (২০১৫/১০/১০) তারপর বছর শেষেই অর্থাৎ ২০১৬ সালে। প্রথমদিকে আমরা সপ্তাহে একদিন রবিবার মিলিত হতাম সবাই পরবর্তী মাসের শেষ রবিবারের মাসিক বিশেষ সৎসঙ্গ-এর ব্যাপারে। আলোচনায় বসতাম কেমন ক'রে 'বিশেষ সৎসঙ্গ'-কে সুন্দর মনোমুগ্ধকর ক'রে মানুষের কাছে তুলে ধরা যায়। তখন আমরা শুধু আলোচনা করবার জন্য বসতাম। পরবর্তীতে স্থির করি মাঝে মাঝে এই সম্মিলিত বসাকে বিভিন্ন সৎসঙ্গী কর্মী গুরুভাইদের বাড়িতে বৈঠকি আড্ডায় রূপ দিতে। সেখানে আড্ডাকে জমিয়ে তোলার জন্য, প্রাণবন্ত করার জন্য স্থির করলাম, আড্ডা শুরু করা হ'ক প্রার্থনা দিয়ে। এইজন্য আড্ডাস্থল সাজানো হয় শ্রীশ্রীঠাকুর, শ্রীশ্রীবড়মা, শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীআচার্য্যদেব ও শ্রীশ্রীবাবাইদাদার প্রতিকৃতি দিয়ে। তারপর শুরু হয় প্রার্থনা, প্রার্থনা শেষে সম্মিলিতভাবে 'জয়রাধে' গাওয়া হয়। এইবার শুরু হয় আড্ডা। আড্ডা শুরু হয় শ্রীশ্রীঠাকুরের সত্যানুসরণ পাঠ ও পাঠের বিষয়বস্তুকে অনুধাবন করা দিয়ে। সেই আড্ডায় সক্রিয় মায়েরাও উপস্থিত থাকেন আর তাই সেখানে নারীর নীতিও পাঠ শুরু করা হ'লো। তারপর শুরু হ'লো গান। গান-বাজনা শেষে হ'তো বাবাইদাদার নির্দেশমত 'সৎসঙ্গ-দীক্ষা-ইষ্টভৃতি' নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা। আলোচনা করি পারস্পরিক মত বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে পরবর্তী অনুষ্ঠান সম্পর্কে। এইভাবে সুশৃঙ্খলভাবে পারস্পরিক মত আদান-প্রদানের মাধ্যমে জমে ওঠে ঠাকুর আড্ডা বা সৎসঙ্গ সান্ধ্য বৈঠকি আড্ডা।
ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্র দ্বারা ভদ্রকালী অঞ্চলে শুরু হয় এই আড্ডা এবং পরবর্তী সময়ে ২০১৭ সালে শ্রীশ্রীবাবাইদাদার আশীর্ব্বাদ মাথায় নিয়ে শুরু হয় খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্রের যাত্রা এবং বছর শেষে পরবর্তী বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয় খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্র দ্বারা এই বৈঠকি আড্ডা খড়দহ অঞ্চলে। পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবাবাইদাদা শ্রী প্রকাশ বিশ্বাসদাকে ভদ্রকালী ও খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্রের আশীর্ব্বাদ প্রদানের পর বলেন, এই আশীর্বাদের কথা সমগ্র ভদ্রকালী- খড়দহ অঞ্চলের গুরুভাইবোন-দের কাছে পৌঁছে দেবেন এবং ঠাকুর প্রণামীর এই অর্ঘ্য-প্রশ্বস্তি সবাইকে দেখাবেন আর 'সৎসঙ্গ-দীক্ষা-ইষ্টভৃতি' এই তিনটে বিষয়ের উপর দাঁড়িয়ে ঠাকুরকে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবেন। তারপর থেকে শুরু হয় ভদ্রকালী- খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্রের পরিচালনায় প্রকাশ্যে ভদ্রকালী-খড়দহ অঞ্চলের বিভিন্ন মন্দিরে, ক্লাবে, পুজো মণ্ডপে প্রতি মাসের চতুর্থ রবিবার (ভদ্রকালী) ও তৃতীয় রবিবার (খড়দহ) মাসিক 'বিশেষ সৎসঙ্গ' অনুষ্ঠান এবং গুরুভাইবোনেদের ঘরে ঘরে এই 'সৎসঙ্গ সান্ধ্য বৈঠকি আড্ডা'। এই বৈঠকি আড্ডার ছবি বা ফটো প্রকাশিত হয় ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্র ও খড়দহ সৎসঙ্গ কেন্দ্রের পেজে অনেক পরে। প্রথমদিকের অনেক অনুষ্ঠানের ছবি ধরা না থাকায় পোষ্ট করা যায়নি।
আজকের মত এইখানে সবাইকে 'জয়গুরু' জানিয়ে লেখায় দাঁড়ি টানলাম।
----------প্রবি।
(২৮শে নভেম্বর'২০১৯)

Sunday, September 17, 2023

প্রবন্ধঃ অবাক পৃথিবী! অবাক যে বারবার।

দেশের নেতাদের প্রকাশ্যে করা কিছু মন্তব্যে হতভম্ব হ’য়ে গেলাম! ইদানিং আর কোনো কিছুতেই অবাক হই না এই বিশ্বাস বা ধারণা আমার বদ্ধমূল ছিল। কিন্তু যতদিন যাচ্ছে পৃথিবীর, আরও স্পষ্ট করে বললে বলা ভালো বা উচিৎ কয়েক সহস্রাব্দ প্রাচীন বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতির দেশ ভারতের, প্রতিদিনের ঘটনাবলী বিবেককে কষে একটা বিরাশি সিক্কার চড় কষিয়ে দিয়ে বলছে, ‘ কি দেখেছো ভায়া? কিছুই এখনো দেখনি! এখন সময়...... শুধু কলি নয়, ...... ঘোর কলির! দেখার শেষ নেই, তাই হয় চুপচাপ দেখে যাও আর মেনে নাও আর না-হয় ঘোর অন্ধকার মাঝে আলোর দিশারী হয়ে দেখা দাও। খুঁজে নাও কোনটা করবে। হু, কোথাকার আমার চাঁদু, ‘অবাক হ’ই না’! বিরাশি সিক্কার চড় খেয়ে হতভম্ব আমি একটা শিক্ষা পেলাম, আশ্চর্য্যের শেষ নেই! তাই কবি সুকান্ত আজ থেকে বহু বছর আগেই যথার্থই লিখেছিল ‘অবাক পৃথিবী! অবাক যে বারবার’। কবিতার প্রতি লাইনেই কবি বারবার ‘অবাক’ হয়েছেন! বিরামহীন ঘূর্ণায়মান পৃথিবীর মত ‘আশ্চর্য্য বা অবাক হওয়ার ঘটনা’ও বিরামহীন ঘটে চলেছে আমার চারপাশে!
জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতানেত্রীদের বিরামহীন সবজান্তা, ঔদ্ধত্বপূর্ণ, অশিক্ষিত, অশালীন, নির্লজ্জ মন্তব্য মস্তিষ্কে এমন হাতুড়ির বাড়ি মারল যে ঘিলু বেরিয়ে যাবার পরিবর্তে চেতনার উন্মেষ হ’ল। কি সেই মন্তব্য যার জন্য চেতনার নূতন করে জন্ম হ’ল?
মন্তব্যঃ-
১) কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গড়করির ঘোষণা ''আমাদের সরকার রাম ভক্তদের। অযোধ্যা থেকে চিত্রকূট পর্যন্ত এই সরকার রামভক্তদের, যারা জয় শ্রী রাম নাম নিয়ে ভজন করেন তাঁদের।
২) প্রতিবন্ধী মানুষরা ঈশ্বরের ভুল, ''সমাজে এমন কিছু ভাই-বোনরা রয়েছেন যাদের কিছু শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধকতা আছে। ঈশ্বর তাদের কিছু জিনিস দিতে ভুলে গেছেন। ঈশ্বরের অবহেলার কারণে এই সমস্ত শিশুদের সারা জীবন ভুগতে হয়। ঈশ্বর যা করেননি, ''ডিসএবিলিটি রাইটস অ্যাসোসিয়েশন অফ গোয়া (DRAG)”-র মত এই এনজিও গুলো তাই করে যাচ্ছেন। ঈশ্বরের ভুল শুধরে দিচ্ছে এই এনজিও গুলি।'' মন্তব্য গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মীকান্ত পারেসকরের।
৩) দিল্লির মানুষকে এটা ঠিক করতে হবে, যে তাঁরা রামের সন্তানদের (রামজাদোঁ) সরকার চান, না হারামজাদাদের সরকার চান। দিল্লির নির্বাচনী সভায় বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতি।
৪) উত্তরপ্রদেশের উন্নাও-এর বিজেপি এমপি সাক্ষী মহারাজ মঙ্গলবার (২০.০১.১৫) মীরাটে সন্ত সমাগম অর্থাৎ হিন্দু পুরোহিতদের মহোৎসবের একটি অনুষ্ঠানে বলেন, “আমি হিন্দু নারীদের আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন কমপক্ষে চার জন শিশুর জন্ম দেন”।
৫) বিজেপির সংসদ সদস্য সাক্ষী মহারাজের বিতর্কিত বক্তব্য সমর্থন করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ প্রধান প্রবীণ তোগাড়িয়া বলেছেন, ‘হিন্দু রাষ্ট্র তৈরি করার জন্য এটা জরুরি বিষয়।’
৬) বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেত্রী সাধ্বী প্রাচী মধ্যপ্রদেশে একটি হিন্দু সম্মেলনে বলেছিলেন, “ একটি সন্তানে দেশ রক্ষা সম্ভব হবে না, এজন্য চার সন্তানের জন্ম দিতে হবে”।
৭) এদের সকলের সুরে সুর মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা ও জেলা কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট শ্যামল গোস্বামী বলেছেন, “ প্রত্যেক মা-বোন পাঁচটি করে সন্তানের জন্ম না দিলে হিন্দু ধর্ম লোপ পাবে। প্রত্যেক হিন্দুরই তাই উচিৎ পাঁচটি করে সন্তান জন্ম দেওয়া”।
৮) এদের সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন শংকরাচার্য বাসুদেবানন্দ সরস্বতী। তাঁর মতে, “ প্রত্যেক হিন্দু নারীর উচিৎ ১০টি করে সন্তানের জন্ম দেওয়া। তাহলেই ফের ক্ষমতায় আসতে পারবেন নরেন্দ্র মোদী”।
বিরাশী সিক্কার চড় খেয়ে নূতন করে জেগে ওঠা চেতনা জানান দিল এই সমস্ত সাচ্চা ধর্ম ও ঈশ্বর বিশ্বাসী, পুরুষোত্তম রামের প্রতি একনিষ্ঠ, জীবন উৎসর্গীকৃত প্রাণ মহাত্মাদের বলা কথাগুলি আপামর ভারতবাসীর কাছে কি মেসেজ পাঠাতে চায়?
• এরা নিজেদের কি প্রভু রামের একমাত্র একনিষ্ঠ ভক্ত মনে করেন?
• পরমপিতা প্রভু রাম কি এদের বা হিন্দুদের পৈত্রিক সম্পত্তি?
• পরমেশ্বর প্রভু রাম কি শুধু হিন্দুদের ঈশ্বর?
• পরমগুরু পরমপথপ্রদর্শক প্রভু রাম কি শুধু হিন্দুদের জন্যই এই পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন?
• এই সমস্ত মানুষগুলো বা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ কি নিজেদেরকে ভারতবর্ষের সমস্ত হিন্দুদের একচেটিয়া অভিভাবক বলে মনে করেন?
• বিজেপি সরকার তাহলে শুধু প্রভু রামের ভক্তদের সরকার?
• অন্য হিন্দুদের বা অন্য ধর্ম্মাবলম্বীদের সরকার নয়?
• পরবর্তী প্রভু কৃষ্ণ, নিমাই, রামকৃষ্ণ, অনুকূলঠাকুরের ভক্তদের সরকার নয়?
• ভারতবর্ষে বসবাসকারী অন্য ধর্মের নাগরিকদের সরকার নয়?
• পুরুষোত্তম প্রভু মোহাম্মদ, যীশু, বুদ্ধদেবের ভক্তমন্ডলীদের সরকার নয়?
• ঈশ্বরে নিবেদিত প্রাণ অন্যান্য সাধক, মহাসাধকদের অনুগামীদের সরকার নয়?
• তাঁরা কি মনে করেন রামের অনুগামী বা সন্তান ছাড়া উপরে উল্লিখিত বাকী সবাই শয়তানের সন্তান?
• এই সমস্ত ধর্মীয় পন্ডিতরা কি মনে করেন মুরগীর বাচ্চার মত ঘরে ঘরে ঝাঁকে ঝাঁকে শুধু পয়দা হলেই হিন্দু রাষ্ট্র গঠন হয়ে যাবে?
• সংখ্যা গরিষ্ঠের জোরে এতই সরলীকরণ রাষ্ট্র গঠনের মত জটিল একটা বিষয়?
• ভারতবর্ষের সমস্ত হিন্দু নারীরা কি এই সমস্ত ‘মুখে মারিতং জগৎ’ স্বঘোষিত হিন্দু ধর্মীয় পুরুষদের হাতের খেলনা?
• এরা নিজেদের কি সমস্ত হিন্দু নারীদের অভিভাবক মনে করেন?
• তাঁরা কি মনে করেন সমস্ত হিন্দু নারী তাঁদের পায়ের তলায় থাকার জন্য জন্মগ্রহণ করেছেন?
• এদের কথামত দেশের সমস্ত হিন্দু নারী একমাত্র হিন্দু রাষ্ট্র গঠনের খাতিরে ঘরে খাবার থাক আর না থাক, শিক্ষার আলো পাক আর না পাক, সভ্যতার আলো দেখুক আর না দেখুক মুরগীর বাচ্চা পয়দার মত জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ভোগ্যবস্তু হিসাবে বিবেচিত হয়ে গিলোটিন রুপী পুরুষের সামনে বলী প্রদত্ত পশুর মত উপস্থিত হবেন?
• পরমপিতা পরমেশ্বর প্রভু রামের স্ত্রী জগৎজননী মা সীতা কয়জন সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন? হিন্দু ধর্মের ধ্বজাধারী একচেটিয়া স্বঘোষিত ধর্মীয় অভিভাবক ও প্রভু রামের চরণে নিবেদিত প্রাণ কপট ভক্তরা জানেন কি?
• ঘরে ঘরে পাঁচটি সন্তান জন্ম দিলেই হিন্দু ধর্ম রক্ষা পাবে, নইলে হিন্দু ধর্ম লোপ পেয়ে যাবে?
• সনাতন হিন্দু ধর্মের ভিত এতই নড়বড়ে, এতই সস্তা?
• বহুকাল প্রচলিত প্রাচীন, অপরিবর্তনীয় ও চিরস্থায়ী, সনাতন হিন্দু ধর্ম্ম সম্পর্কে এত পাণ্ডিত্য?
• এইরকম ভয়ংকর জ্ঞান পরিবেশন হ’লে হিন্দু ধর্মের অনুগামীরা এত পাণ্ডিত্য হজম করবে কি ভাবে আর রাখবেই বা কোথায়?
• শংকরাচার্য বাসুদেবানন্দ সরস্বতীর কথা অনুযায়ী নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতাই আসার জন্য হিন্দু নারীদের একটা নয় দুটো নয় দশ দশটা সন্তান প্রসবের জন্য রোবটে পরিণত হতে হবে?
• এই সমস্ত বালখিল্য মানুষদের হিন্দু ধর্মের নারী জাতিকে অপমান করার অধিকার কে দিল?
• বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বা ভারতীয় জনতা দল কি এইসমস্ত ধর্মীয় প্রবক্তাদের ঔদ্ধত্যকে অনুমোদন করেন?
• এই বক্তব্য কি হিন্দু ধর্ম বা হিন্দু রাষ্ট্র গঠনের প্রতি নাকি নরেন্দ্র মোদীর প্রতি অকৃত্রিম প্রেম?
• এই প্রেম হিন্দু ধর্মের প্রতি বা শংকরাচার্যের প্রতি হিন্দুদের ঘৃণা জন্মাবে না-তো?
• কিম্বা নরেন্দ্র মোদীজির হজম হবে তো এই প্রেম?


এই সমস্ত অবাক করা মন্তব্যের জন্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে মন্তব্যকারীদের পদ্মশ্রী, পদ্মবিভূষণ ইত্যাদি উপাধি দেওয়া যেতেই পারে। আর সৃষ্টির আদি থেকে আজ পর্যন্ত শুধু নয় যতদিন সৃষ্টি থাকবে সেই শেষ দিন পর্যন্ত সবার সেরা হয়ে থাকবে যে মন্তব্য বা যার মন্তব্য যা নোবেল পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হতেই পারে সেই মন্তব্য এবং সেই মন্তব্যের জনককে ‘ভারত রত্ন’ শুধু নয় ‘পৃথিবী রত্ন’ উপাধিতে ভূষিত করা হোক অবিলম্বে এই দাবী ওঠা উচিৎ বিশ্বের সমস্ত সম্প্রদায়ের ঈশ্বর বিশ্বাসী মানুষের পক্ষ থেকে। কবি সুকান্তের সেই ‘অবাক পৃথিবী’র অবাক করা শ্রেষ্ঠ মন্তব্যের জন্য ‘পৃথিবী রত্ন’এর দাবীদার মানুষটি হলেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মীকান্ত পারেসকর।
এখন শুধু একটাই প্রশ্ন দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠন ও সার্বিক উন্নয়ন এবং সুশাসনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপির উত্থান কি এই সমস্ত অশিক্ষিত, অমার্জিত, অশালীন, অসভ্য, অজ্ঞ মানুষগুলোর বালখিল্য গোঁয়ারগোবিন্দ বক্তব্যের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না বা হয়নি? আলেকজান্ডারের বিশ্ববিজয়ের মত নরেন্দ্র মোদীর ভারত জয়ের স্বপ্ন এই সমস্ত অতি উৎসাহী, অধার্মিক, অজ্ঞ, ভণ্ড ও তথাকথিত রাম ভক্ত ও হিন্দু ধর্মের স্বঘোষিত ধারক বাহকদের জন্য অসম্পুর্ণ থেকে যাচ্ছে না-তো? দিল্লীর এই নির্বাচনী ফলাফল এর কোনও ইংগিত বহন করছে না-তো? এই সমস্ত শরীরে মনে আত্মায় চরম সীমাহীন ভাঙাচোরা মানুষগুলোর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ যাত্রার শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ছে না-তো? এই সমস্ত মানুষগুলোর অসংযত আচরণ ও অতি জ্ঞানের জন্যই নরেন্দ্র মোদীর সুশাসন ও উন্নয়নের স্বপ্নের জাহাজের ভরাডুবি ঘটছে না-তো?


তাই বলতে ইচ্ছে করে মোদীজী আপনার স্বচ্ছ ভারত অভিযান, সুশাসন ও উন্নয়নের যে স্বপ্ন আপনি দেখেছেন ও দেখিয়েছেন তামাম ভারতবাসীকে তা’ আপনি সফল করতে পারবেন না আপনার যুদ্ধ জয়ের জন্য নির্বাচিত অদক্ষ, অযোগ্য, অজ্ঞ, অসভ্য, অমার্জিত সেনাপতি ও সৈনিকদের জন্যে। এদের অতি উৎসাহী পদক্ষেপ, অজ্ঞানতা, অদূরদর্শী, অসহনশীল ও অসংবেদনশীল মনোভাবের কারণে আপনি নিশ্চিত এক পা এগোবেন তো দশ পা পিছিয়ে যাবেন। আরও বড় আরও বেশী ক্ষতি হওয়ার আগে যদি আপনি আপনার লক্ষ্য পূরণে সফল হ’তে চান, যদি আপনার দেশগঠন, সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসনের স্বপ্ন মেকী না হয়ে থাকে, লোক দেখানো কথার কথা না হয়ে না থাকে আর সব ‘মুখে মারিতং জগৎ’ নেতার মত তাহলে এখনই আপনি সাবধান হ’ন। যদি আপনি সত্যি সত্যিই বিবেকানন্দের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি নিশ্চয়ই ভুলে যাবেন না বিবেকানন্দের বাণী “চালাকির দ্বারা মহৎ কাজ সম্পন্ন হয় না”। নিজের ভেতরে ঝাক মেরে দেখুন আর চিহ্নিত করুন সত্য প্রতিষ্ঠার পথে কোথায় কোথায় কোন কোন বাধা, অজ্ঞানতা আপনার ভেতরে আপনার অজান্তে ও জান্তে বাসা বেঁধে আছে। আগে তাকে আপনার ভেতর থেকে নিরাশী নির্ম্মমভাবে উপড়ে ফেলুন। তারপর শুরু করুন যুদ্ধ জয়ের জন্য প্রথমে নিজের সৈনিক ও সেনাপতিদের স্বচ্ছ শরীর, স্বচ্ছ মন ও স্বচ্ছ আত্মা গঠন এবং আত্নশাসন ও আত্মোনয়নের অভিযান। প্রকৃতই আজ দেশ গঠনের জন্য দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নিরাশী নির্ম্মম প্রাজ্ঞ নেতার অভাব। আপনি সুযোগ পেয়েছেন দেশকে এক কঠিন সময়ে নেতৃত্ব দেবার। এই সুযোগ চলে গেলে আর পাবেন না। আপনার মধ্যে জেগে উঠুক দেশ গঠনের এক অন্তহীন নিরাশী সাধু প্রচেষ্টা আর তা’ প্রকৃত দেশ গঠনের কাজে যুক্ত দলের নেতা, কর্ম্মী ও সমর্থকদের মধ্যে সঞ্চারিত হোক নিরন্তর। আপনার স্বপ্ন, আপনার চিন্তা, আপনার সদিচ্ছা স্বপ্ন, চিন্তা ও ইচ্ছার গন্ডী ডিঙ্গিয়ে কর্ম্মে ফুটে উঠুক। আর যদি তা না হয় তাহলে The greatest phenomenon of the world Sri Sri Thakur Anukul Chandra-এর বলা বাণী স্মরণীয়ঃ “তুমি যা করছো বা করে রেখেছো ভগবান তাই-ই গ্রাহ্য করবেন আর সেগুলির ফলও পাবে ঠিক তেমনি। ভালো ছাড়া মন্দ করলে পরিস্থিতি ছাড়বে না” আর
“কর্ম্ম নাই চিন্তা সৎ,
পাথর পেছল নরক পথ”।
(লেখা ১৮ই সেপ্টেম্বর'২০১৮)

উপলব্ধিঃ ঠাকুর কেমন পাগল চেয়েছিলেন?

তুমি ঠাকুর প্রেমে পাগল হও, এমন পাগলপারা জীবনের অধিকারী হও যেন তোমায় দেখে সে যেন ঠাকুরকে চিনতে পারে ও আপনা থেকেই ঠাকুরের প্রতি পাগলপারা জীবনের অধিকারী হ'য়ে ওঠে! তোমার ঠাকুর প্রতিষ্ঠার পাগলামোর ধাক্কায় সে যেন সত্যি সত্যিই তোমাকে পাগল ভেবে ভয় পেয়ে পালিয়ে না যায় আর সবাইকে তোমার থেকে দূরে সরিয়ে না নেয়। যাজন করো, তাঁর কথা বলো, দীক্ষার উপকারিতার কথা বলো কিন্তু যাজনের নামে জোর ক'রে দীক্ষা দেওয়ানো ঠাকুর পছন্দ করতেন না। শুধু ঠাকুর নয় এর আগে তিনি যতবার এসেছিলেন ততবারই একই কথা বলেছেন। আমরা যেন ভুলে না যায় আমরা কার কথা মানুষের কাছে বলছি। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন The greatest phenomenon of the world. এই কথাটা যেন আমরা মাথায় রাখি যাজন মানে হ'ল নিজের জীবন। নিজের জীবনটাই যাজনের প্রধান উদাহরণ। ঠাকুরের জীবনে কয়েকটা প্রিয় কোটেশানের মধ্যে একটা কোটেশানঃ "Example is the better than precept."। জয়গুরু।
(লেখা ১৮ সেপ্টেম্বর'২০১৮)

Saturday, September 16, 2023

প্রবন্ধঃ কয়েকটি জিজ্ঞাসার উত্তর।

ক'দিন ধ'রে অনেকেই জানতে চাইছে ফোনে, ওয়াটস আপে একটা বিষয়। বিষয়টা ফেসবুক ঘিরে। ফেসবুকে কিছুদিন ধ'রেই সৎসঙ্গীদের একাংশ পোষ্ট ক'রে চলেছে এমন কিছু কিছু বিষয় যা নিয়ে নতুন ক'রে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিষয় আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদা ও পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে নিয়ে। পোষ্টগুলিতে আচার্যদেবের ফটো দিয়ে ক্যাপশনে বলা হচ্ছে "পরম পুরুষোত্তম নররূপী নারায়ণ, জীব উদ্ধারে দয়া ক'রে প্রভু দেন দরশন" ইত্যাদি। আর এগুলি যারা করছে তাদের মধ্যে অনেক পাঞ্জাধারী ও স্বস্ত্যয়নীধারী গুরুভাইও আছেন। আর এগুলোর প্রভাব পড়ছে ইয়ং জেনারেশনের ওপর। আরও আশ্চর্যের বিষয় এই ধরণের পোষ্ট যারা করছে বা যারা শ্রদ্ধেয় দাদাদের নিয়ে ঠাকুর সমকক্ষ ধারণা পোষণ করেন এবং তা প্রচার ক'রে বেড়ান তারাও আবার সবাই ইয়ং জেনারেশন অন্তর্ভুক্ত। ফলে বিতর্ক তুঙ্গে ও ইয়ং জেনারেশন দ্বিধাবিভক্ত। এদের মধ্যে বেশিরভাগ ঠাকুরবাড়ি ও পূজনীয় দাদাদের থেকে অনেক দূরে অবস্থানরত। ফলে আজকের যারা ফাস্ট জেনারেশন তারা বিশেষ ক'রে যারা নবাগত ও ইষ্টপ্রাণ তারা প্রবীণ সৎসঙ্গীদের বিশেষ ক'রে পাঞ্জাধারী ও স্বস্ত্যয়নীধারী সৎসঙ্গীদের দ্বারা প্রভাবিত হন এবং তাদের প্রায় দেবতার আসনে বসিয়ে তাদের কথার স্রোতে ভেসে গিয়ে পক্ষ বিপক্ষ রঙে রাঙিয়ে উঠছে আর তার ফলে যা ক্ষতি হওয়ার হ'য়ে যাচ্ছে। আর এ হ'য়ে এসেছে শ্রীশ্রীবড়দা আমল থেকে।

আমাকে যারা বিভিন্ন সময় এই সম্পর্কে জানতে চেয়ে মেসেজ করে বা ফোন করে তাদের চেষ্টা করি আমার বোধ অনুযায়ী বোঝাবার যা আজ আর্টিকেল হিসেবে এখানে তুলে ধরলাম তাদেরই অনুরোধে যাতে আরও অনেকের এই সম্পর্কে ধারণা ক্লিয়ার হয়। তাদের যা বলেছি তা হ'লো,
'তোমার বা তোমাদের কি মনে হয় স্বস্ত্যয়নী নিলেই সে কেউকেটা হ'য়ে গেছে? তুমি বা তোমরা কি মনে করো আমরা যারা স্বস্ত্যয়নীধারী তারা সবাই নিখুঁত স্বস্ত্যয়নী পালন করি? তোমার কি মনে হয় আমরা সবাই স্বস্ত্যয়নীর পাচটি নীতি পালন করি? আমাদের চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখো তো আমাদের চেহারায় স্বস্ত্যয়নীর প্রথম নীতি ফুটে ওঠে কিনা! অন্য চারটি নীতি বাদ দিলাম। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। আর ব্যতিক্রম অবশ্যই ব্যতিক্রম। আর ব্যতিক্রম আছে বলেই সৎসঙ্গ জগৎ আজ ফুলে ফুলে বিকশিত। আবার চেহারায় সৌন্দর্য প্রকাশ পেলেও আচরণ ১৮০ ডিগ্রী উল্টো। আর ঋত্বিক, যাজক, অধ্ব্যর্যু সম্পর্কে যা বলা আছে ঋত্বিক বইয়ে তার সঙ্গে কি এদের জীবনের মিল খায়? এখনও পর্যন্ত সৎসঙ্গীরা তো পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে এবং নেয়ও এমনকি বহু ঋত্বিক পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম নেয়; তাও আবার সৎসঙ্গে ব'সে ঠাকুরের সামনে! এবারের রাজ্য ভিত্তিক দেওঘরে যে কর্মী সম্মেলন হ'লো ১৫ই আগষ্ট পর্যন্ত সেখানে প্রতিদিন সকাল ৯টায় আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদার সামনে রাজ্যের ঋত্বিক, যাজক ইত্যাদি কর্মীদের জমায়েত হ'তো। আচার্যদেব তাদের সামনে বক্তব্য রাখতেন। তারপর আনন্দবাজারের বিল্ডিংয়ে হ'তো মেইন মিটিং তিনটের সময়। সেখানে অবিনদাদা উপস্থিত থাকতেন। ১২ তারিখ সম্ভবত ছিল আসামের দিন। পরদিন ছিল বিহারের। সেখানে কর্মীদের উদ্দেশ্যে আচার্যদেবের বক্তব্য উপস্থিত যেসব কর্মীরা শুনেছে তারা সম্ভবত আর মুখ খুলতে সাহস পাবে না। প্রতিদিনই আচার্যদেব কর্মীদের সামনে নিজের মনোভাব ব্যক্ত করতেন।

যাই হ'ক, এবার আসি অন্য কথায়। পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীঅবিনদাদার ফটো সৎসঙ্গে রাখা বা আসনে রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ও উঠতেই পারে। আচার্যদেব শ্রীশ্রীদাদার সময়ও সৎসঙ্গে শ্রীশ্রীবাবাইদাদার ফটো রাখা নিয়ে বিতর্ক তৈরী হয়েছিল। এমনকি কোনও কোনও সৎসঙ্গে শ্রীশ্রীবাবাইদাদার ফটো সৎসঙ্গে সাজানো আসন থেকে নামিয়েও দেওয়া হয়েছিল এবং দৃষ্টিকটুভাবে তা করেছিল ঋত্বিক, যাজক মিলিতভাবে। এই তিক্ত অভিজ্ঞতাও আমার আছে। আর আজ তারাই আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদার সামনে ভক্তিতে গদগদ!!!!! তাই ঋত্বিক ব'লে আলাদা ভাবার কিছু নেই। তাদের আলাদা ট্রিটমেন্ট দেওয়ার কিছু নেই। তাদের আর সাধারণ সৎসঙ্গীদের মধ্যে ছোটো বড়োর বিভাজনের রেখা টানার কিছু নেই। সম্মান শ্রদ্ধা আলাদা বিষয় আর ঠাকুরের দরবারে দীক্ষিতদের মধ্যে কাউকে ছোটো আর কাউকে বড়ো ভাবা সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। তাদের সম্মান করবো, শ্রদ্ধা করবো, প্রয়োজন হ'লে সামর্থানুযায়ী তাদের ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেব কিন্তু সৎসঙ্গে কেউই বড় নয়, কেউ ছোটো নয়। সম্ভবত যারা ১২ তারিখ উপস্থিত ছিলেন সেদিন আচার্যদেবের বলা "ঠাকুরের সামনে আমরা ঋত্বিক, যাজক, অধ্ব্যর্যু ও সাধারণ সৎসঙ্গী সবাই এক এবং একসঙ্গে ওঠা, বসা, খাওয়া ইত্যাদি পালনে একত্ববোধ জেগে ওঠে" ইত্যাদি এই এক ও একত্ববোধ সম্পর্কে তার বলা প্রতিদিনই যারা শুনেছে তারা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি।

যারা দীক্ষিত গুরুভাইবোনেদের মধ্যে ছোটো বড় বিশেষ বিভাজনের রেখা টানেন এবং যারা পাঞ্জাধারী ও স্বস্ত্যয়নীধারী হওয়ার কারণে বিশেষ মর্যাদার আসনে বসতে চান সাধারণ সৎসঙ্গীদের মাঝে, বাড়িতে, মন্দিরে তারা কেউই পাকা সৎসঙ্গী নয়। এমনও দেখেছি মন্দিরে এবং বহু বাড়িতে সৎসঙ্গে ভান্ডারার প্রসাদ গ্রহণে স্বস্ত্যয়নী যারা তাদের আলাদা প্রসাদ গ্রহণের ব্যবস্থা আর সাধারণ দীক্ষিতদের আলাদা ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থা দেওঘর অনুমোদিত নয়। এলাকা ভিত্তিক দেওঘর সংবিধান বহির্ভূত নিজস্ব মগজ উদ্ভুত ব্যবস্থা। অথচ মূল কেন্দ্র দেওঘর আনন্দবাজারে প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা সম্পর্কে এরা অবহিত। এরা সবাই কার্বাইড পাকা। গাছ পাকা নয়। গাছ পাকা ফলের আলাদা রঙ, আলাদা স্বাদ, আলাদা মিষ্টি, আলাদা গন্ধ, আলাদা রূপ!!!! আর কার্বাইড পাকা ফল দেখলেই বোঝা যায়, চেনা যায়। উপলব্ধিবান, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জ্ঞানী মানুষ মাত্রেই এই তফাৎ ধরতে পারে। হয়তো সাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায় কার্বাইড পাকারা কিন্তু শেষ রক্ষা হয় না; ডাষ্টবিনই হয় এদের শেষ আশ্রয়। এদের শেষের সেদিন ভয়ংকর।

ঠাকুর বলেছেন, "যেভাবে জীবন বলী দেবে তেমনই জীবন লাভ করবে।" যার যেমন করা, যতটুকু করা ঠাকুরের বলা অনুযায়ী নিখুঁতভাবে তার ততটুকুই অনুভূতি, ততটুকুই জ্ঞান। এদের ভক্তি অতিভক্তি, আবেগতাড়িত লাগামছাড়া বেসামাল ভক্তি। ভক্তির আতিশয্যে এরা মূলের সঙ্গে অন্যের তফাৎ হারিয়ে ফেলে। একধরনের ভক্তি আছে তা হ'লো ব্যাভিচারী ভক্তি। এরা ভারসাম্যহীন। এরা প্রকৃতপক্ষে কাউকেই ভালোবাসে না। না মূলকে ভালোবাসে, না ডালপালাকে ভালোবাসে। এরা নিজের বৃত্তি-প্রবৃত্তিকে ভালোবাসে। যেখানে যে কথায় এদের বৃত্তি প্রবৃত্তি পোষণ পায় সেখানে এরা ভক্তি শ্রদ্ধা ভালোবাসার ব্যাপারে একেবারে পাকা সোনা যেখানে বৃত্তি প্রবৃত্তি পোষণ পায় না সেখানে এরা খড়্গহস্ত। তখন তারা ঠাকুরের কথাতেও পালটা যুক্তি দেখায়। এটা আর কিছুই নয় প্রকৃত সাধনার অভাব। যদি এরা ঠাকুরের গ্রন্থ পড়ে থাকে তাহ'লে হয় এরা বই পড়া সাধু। বই পড়ে বই হ'য়ে গেছে; বইয়ের মূল এসেন্সকে এরা গ্রহণ করতে পারেনি। নয়তো কয়েকটা বই পড়ে কিম্বা অন্যের মুখে ঝাল খেয়ে খেয়ে পরোক্ষ আধা জ্ঞানের অধিকারী হ'য়ে অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী হ'য়ে বসেছে সৎসঙ্গ জগতে। কিচ্ছু করার নেই। ঠিক তেমনি প্রকৃত ভক্তের বিভ্রান্ত হওয়ারও কিচ্ছু নেই। মাথায় রেখো এটা ঘোর কলি যুগ। সামনে আরও আরও ভয়ঙ্কর দিন আসছে। সেদিন তুমি আমি থাকবো না কিম্বা নতুনভাবে জন্ম নিয়ে আসবো ঐ ভয়ঙ্কর দিনগুলোতে জ্বলেপুড়ে মরার জন্য। তাই সাবধান! যা তৈরী হওয়ার নীরবে তৈরী হও পরবর্তী দিনগুলো ও পরবর্তী জন্মের জন্য।
আর, প্রকৃত ভক্ত মাত্রেই ভগবান। যার ভজনা করা যায় সেই ভগবান। তুমি আমিও ভগবান হ'তে পারি। সাধনার উচ্চমার্গে পৌঁছে যদি যেতে পারো তাহ'লে তোমার মধ্যে যে ভগবানত্ব প্রকাশ পাবে তাতে তোমারও ভজনা করা যেতে পারে। বৃদ্ধির রাস্তা সবার জন্য খোলা আছে। তবে উত্তরণের জন্য, উন্নয়নের জন্য একটু পূর্ব সংস্কার কাজ করে, সাহায্য করে। যেমন শ্রীশ্রীবাবাইদাদা, শ্রীশ্রীঅবিনদাদা এরা জন্মগতভাবে উচ্চমার্গের পুরুষ, ঈশ্বরকোটি পুরুষ। তাই সেই অর্থে এরা ভগবান।

পুরুষোত্তম আর ভগবান শব্দের মধ্যে আসমানজমিন ফারাক আছে, যেমন ফারাক আছে সর্বজ্ঞ আর অন্তর্যামী শব্দের মধ্যে। যেমন পরমপিতা আর পিতা শব্দের মধ্যে তফাৎ পায় আমরা। যেমন স্পষ্ট তফাৎ বোঝা যায় স্রষ্টা আর আবিষ্কর্তার মধ্যে। যেমন আমরা তফাৎ পায় সদগুরু আর গুরুর মধ্যে।

যাই হ'ক পাঠক এবার তুমি নিজেই বুঝে নাও কে পুরুষোত্তম আর কেইবা ভগবান। কে সর্বজ্ঞ আর কে অন্তর্যামী তাও বুঝতে পারবে সহজেই। সর্ব্বজ্ঞ অর্থাৎ যিনি সব জানেন আর অন্তর্যামী অর্থাৎ যিনি অন্তরের কথা জানেন। অন্যের অন্তরের কথা তুমি একটু যত্নশীল হ'লেই জানতে পারবে। মা যেমন সন্তানের অন্তরের কথা বুঝতে পারে মাতৃত্বের স্বাভাবিক নিয়মেই। কিন্তু এই জগতের এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড-এর ভূত ভবিষ্যৎ বর্তমান সব জানেন একমাত্র সৃষ্টিকর্তা পুরুষোত্তম আর তিনিই তাই সর্বজ্ঞ। এছাড়া আর কেউই সর্ব্বজ্ঞ হ'তে পারে না, অন্তর্যামী হ'তে পারে। ঠিক তেমনি আমরা জাগতিক সবাই পিতা, পরমপিতা ন'ই। আবার আমরা আবিষ্কর্তা হ'তে পারি কিন্তু স্রষ্টা ন'ই। যেমন গুরু হ'তে পারি কিন্তু সদগুরু ন'ই। যদিও ঠাকুর গুরু হ'তেও বারণ করেছেন; বলেছেন গুরুমুখ হও।

আবার ভালোবাসা এমন জিনিস অনেক সময় নিজের অজান্তে ভারসাম্য হারিয়ে যায়। যারা ঠাকুরকে দেখেনি, ঠাকুরের ভালোবাসার কথা, দয়ার কথা, অন্তহীন অফুরন্ত জ্ঞানের কথা জেনেছে, পড়েছে, পড়ার মধ্যে দিয়ে ঠাকুরের প্রতিটি মুহূর্তের চলা, বলা, ওঠা, বসা, হাসি, কথা, চাউনি, হাত ও হাতের আঙুল নাড়ানোর ভঙ্গি ইত্যাদি অনুভব ক'রে মনের মণিকোঠায় সযত্নে আগলে রেখেছে তারা দইয়ের স্বাদ ঘোলে মেটাবার মতো ঠাকুরের বংশধরদের মধ্যে ঠাকুরের সেই ঝলক দেখতে পায়! আবার ঠাকুর ধরাও দেন বংশধরদের মধ্যে। যেমন সূর্য আর সূর্যের কিরণ! আমরা বর্ষার সময় গাছপালার দিকে তাকালেই ব্যাপারটা পরিস্কার বুঝতে পারবো। গাছগাছালিতে ঘেরা বাড়ি বা মন্দিরে বৃষ্টি হ'য়ে যাওয়ার পরে যদি ঘুরে দেখি কি দেখতে পাবো? দেখতে পাবো, বৃষ্টি থেমে গেছে। বৃষ্টির জলে স্নান ক'রে আনন্দে হাসছে চারপাশের গাছগাছালি। বৃষ্টির জলে ধুয়ে গেছে সর্বাঙ্গের ধুলিকনা। পরিস্কার চকচক করছে গাছের ছোটোবড় পাতা। বৃষ্টিস্নাত পাতার উপরে এসে পড়েছে সূর্যের আলো। সবুজের ঢল নেবেছে বাগান জুড়ে! বৃষ্টিস্নাত আলো ঝলমলে গাছগাছালিতে ঘেরা বাড়ি বা মন্দির সংলগ্ন বাগানকে যেন মনে হয় এক মায়াময় স্বপ্নপুরী। বৃষ্টির জলে ভেজা চারিদিকের গাছগাছালিতে ঘেরা আলোছায়াময় পরিবেশে ঘুরতে ঘুরতে চোখে পড়বে গাছের পাতা থেকে ঝ'রে পড়ছে টুপটুপ ক'রে জলের ফোটা। মনে হচ্ছে যেন বৃষ্টি পড়ছে। না, তা নয়; আসলে গাছের নীচে বৃষ্টি পরে পড়ে। সেইখানে হঠাৎ যদি চোখে পড়ে দেখতে পাবে গাছগাছালির পাতার ভিড়ে কোথা থেকে যেন ছিটকে আসছে সূর্যের তীক্ষ্ণ আলো! এগিয়ে গিয়ে দেখো দেখতে পাবে চিকচিক করছে হাজারো পাতার ভিড়ে একটা পাতা! কি আছে সে পাতায়!? গাছের হাজারো ডালপালার মাঝে মাথা গলিয়ে যদি আলোয় ঝিলমিল সেই পাতার কাছে যাও দেখবে, সেই আলো ঝলমলে পরিষ্কার পাতার ওপর রয়েছে একফোঁটা বৃষ্টির জল আর সেই জলকণার ওপর এসে পড়েছে ডালপালার হাজারো পাতার ফাঁক দিয়ে গলে আসা সূর্যের তীক্ষ্ণ আলো! কি অদ্ভুত মনোরম দৃশ্য! মাথার ওপরে আকাশের সূর্যটা গোটা নেবে এসেছে তার সমস্ত ঐশ্বর্য, সমস্ত শক্তি নিয়ে ঐ ছোট্ট জলকণার ওপর!! আর সেখান থেকে ছিটকে বেরোচ্ছে আলোর জ্যোতি!!!!! ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশের হাজারো পাতার ওপর! কি অপূর্ব দৃশ্য! হাতের মুঠোয় সূর্য!? চোখের সামনে সূর্য!? এও কি সম্ভব!? ইচ্ছে করলেই ধরতে পারি! কিন্তু না বন্ধু! এ ধরার নয়। এ যে চেয়ে চেয়ে মুগ্ধ বিস্ময়ে দেখার বিষয়! নিবিষ্ট মনে অনুভবের বিষয়! ভালো ক'রে যদি দেখো বন্ধু দেখতে পাবে ঐ ছোট্ট জলকণার মধ্যে যে সূর্য দেখতে পাচ্ছো তার মধ্যে দেখো সূর্যের সাত সাতটা রঙের কি অদ্ভুত মনোরম খেলা! ছিটকে আসছে সাত সাতটা রঙ! ঐ ছোট্ট পাতা তার ছোট্ট শরীর দিয়ে ধ'রে রেখেছে আকাশের ঐ বিশাল সূর্যকে! কে বলে সূর্য মর্ত্যে নেবে আসে না? যে দেখার দেখতে পায়। যার নির্মল স্বচ্ছ চোখ আছে, আছে নোংরা মুক্ত পরিস্কার ঝকঝকে মন, আছে পবিত্র হৃদয় সে পাবে দেখতে ঐ ছোট্ট জলকণার মধ্যে সূর্যের জীবন্ত উপস্থিতি, দেখতে পাবে সূর্য অবস্থান করছে তার সম্পূর্ণতা নিয়ে ঐ ছোট্ট জলকণার মধ্যে! ঐ যে ঠাকুর বলতেন, "আজও লীলা করে গৌড়চাঁদ রায়, কোনও কোনও ভাগ্যবানে দেখিবারে পায়।"

গাছগাছালির মনোরম পরিবেশে আলোছায়াময় হাজারো পাতার ভিড়ে ঐ বৃষ্টিস্নাত ঝলমলে পাতার ওপর আলোময়, রূপময় ছোট্ট ঐ জলকণা হ'লো সৎসঙ্গের বর্তমান আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদা!!!!শ্রীশ্রীআচার্যদেবের মুখের দিকে তাকালেই দেখতে পাবে এর সত্যতা! শ্রীশ্রীঠাকুর অবস্থান করছেন আচার্যদেবের সর্বাঙ্গে! কথায়, বার্তায়, চলনে, বলনে, চাউনিতে, শরীরী ভাষায়, অঙ্গুলি হেলনে ইত্যাদি প্রতি মুহূর্তে! সূর্য আর সূর্যের যেমন কিরণ! ঠিক তেমনি শ্রীশ্রীঠাকুর আর আচার্যদেব শ্রীশ্রী বাবাইদাদা! শ্রীশ্রীঠাকুর পূর্ণমাত্রায় পূর্ণশক্তি নিয়ে অবস্থান করছেন আচার্যদেবের ভিতর কিন্তু আচার্যদেব জানেন তিনি শ্রীশ্রীঠাকুর নন। আমরা যে যাই ভাবি না কেন তাকে নিয়ে তিনি কিন্তু নিজ সিদ্ধান্তে অটল, অচ্যুত এবং তা প্রতি মুহূর্তে প্রকাশিত হয় তার প্রতিদিনের কথায়। কিন্তু আমরা যারা শ্রীশ্রীঠাকুরকে দেখিনি বা যারা শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গ করেছি তারাও ঠাকুরকে পূর্ণমাত্রায় অনুভব করি আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদার ভিতর। সেইজন্যই আচার্য পরম্পরা!!!!!!

যাই হ'ক বন্ধু আমার! পাঠক আমার! এদের কথায় যারা ফেসবুকে উপরিউক্তভাবে পুরুষোত্তম, নর নারায়ণ ব'লে সৎসঙ্গের বর্তমান আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদাকে সম্বোধন করে বা প্রচার করে তাদের কথায় বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। মাথায় রেখো অতি ভালবাসাও একধরনের অত্যাচার। তুমি বিরক্ত হ'তে পারো বন্ধু কিন্তু রাগারাগি ক'রো না। পারলে বিরক্তও হ'য়ো না। কারণ রাগ, বিরক্তি সাধনার অন্তরায়। তোমারি ক্ষতি।

আজ এই পর্যন্ত। আবার পরে কথা হবে।
(লেখা ১০ই সেপ্টেম্বর'২০১৭)

Wednesday, September 13, 2023

কবিতাঃ আবার আসিবো ফিরে।

আবার আসিবো ফিরে দারোয়া নদীটির তীরে-----এই লাল মাটিতে
দেওঘরের দয়াল প্রভুর ধামে মানুষের মেলায়
হয়তো মানুষ হ'য়ে কিংবা মানুষ নয়--------অন্য কোনও বেশে;
হয়তো ভোরের আলো কিম্বা বাতাস হ'য়ে
এই দেওঘরে আমার দয়ালের দেশে
আলো আঁধারের বুক চিরে একদিন বইবো এই ঠাকুর বাংলোয়।
গান গেয়ে যাবো রাধাস্বামী নাম। জো গাওয়ে সোঈ তরে।
কল কলেশ সব নাশ। সুখ পাওয়ে সব দুঃখ হরে।।
হয়তো বা ফুল হবো------দয়ালের পুজারীর পুজার থালায়,
সারাদিন কেটে যাবে দয়ালের চরণ যুগল চুমে চুমে;
আবার আসিবো আমি দয়ালের পার্লার, নিরালা নিবেশ,
জামতলা অঙ্গন আর নিভৃত নিকেতন ভালোবেসে
তামাকের সুগন্ধে ভেজা দয়ালের বড়াল বাংলোর বারান্দায়।


হয়তো দেখিবে চেয়ে জ্যোৎস্না ঝরিতেছে সন্ধ্যার আকাশে;
আর সেই জ্যোৎস্নালোকিত আলোয় দেখিবে প্রণামরত শিশুদের;
হয়তো শুনিবে এক ফকির গাইছে বার বার করু বিনতি রাধাস্বামী আগে;
হয়তো সন্ধ্যাদীপ হাতে শিশু দয়ালের মুখপানে চেয়ে হাসে;
ডিগরিয়া পাহাড়ের কোলে হয়তো বা এক কিশোর বাঁশি বাজিয়ে
গান গায়ঃ জয় রাধে রাধে কৃষ্ণ কৃষ্ণ গোবিন্দ গোবিন্দ বল রে';
গোধূলির আলোয় স্নান ক'রে আসিতেছে ফিরে দয়ালের নীড়ে
রাখাল বালক নিয়ে ধবল গাই; আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে।
আবার আসিবো ফিরে দারোয়া নদীটির তীরে------
দেওঘরের এই লাল মাটিতে।