একটা প্রবাদ আছে; সম্ভবত চাইনিজ প্রবাদ।
Where there is righteousness in the heartthere is beauty in the character.
Where there is beauty in the character
there is harmony in the home.
Where there is harmony in the home
there is an order in the nation.
Where there is order in the nation
there is peace in the world.
প্রবাদের বাংলা করলে দাঁড়ায়ঃ
হৃদয়ের পবিত্রতা আনে সুন্দর চরিত্র
সুন্দর চরিত্র আনে গৃহেতে সম্প্রীতি
এ জেনো বড় সত্য।
গৃহের সম্প্রীতি আনে জাতিতে শৃঙ্খলা
জাতির শৃঙ্খলা আনে পৃথিবীতে শান্তি
পূর্ণ হয় ষোলো কলা।
কিন্তু সত্যি সত্যিই কি ষোলো কলা পূর্ণ হয়? তাহ'লে জীবনের প্রতি পদে পদে এত জটিলতা কেন?
আমার হৃদয় যদি পবিত্র হয় তাহ'লে সেই পবিত্রতার স্পর্শে আমার চরিত্র সুন্দর হ'য়ে ওঠে। পবিত্রতা বলতে কি বুঝবো? পবিত্র অর্থ নির্মল, পরিশুদ্ধ; নিষ্পাপ। যেমন নির্মল মন-শরীর-আত্মা, পরিশুদ্ধ হৃদয়, নিষ্পাপ চরিত্র ইত্যাদি। আর এই পবিত্রতা জীবনব্যাপী যদি আমার হৃদয়ে থাকে অর্থাৎ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সমস্ত কর্ম, বিশ্বাস, কথা, রুচি, দৃষ্টি ও দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে যখন বহন করবো তখনই এই চলনের মধ্যে দিয়ে গড়ে ওঠে সুন্দর চরিত্র।
আর আমার চরিত্র যদি সুন্দর হয় তাহ'লে সংসারে সম্প্রীতি অর্থাৎ পরস্পরে সদ্ভাব থাকে, ভালোবাসা থাকে, থাকে আনন্দ। আর সেই আনন্দ, সেই সদ্ভাব, ভালোবাসার প্রভাব পড়ে সমাজের ওপর। সমাজে মানুষে মানুষে সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে প্রীতি, সংহতি, মানবতার বন্ধন গড়ে ওঠে। ফলে জাতি শৃঙ্খলিত হ'য়ে ওঠে। আর একমাত্র শৃঙ্খলিত জাতিই ঘরে-বাইরে, দেশে-বিদেশে বিশ্বজুড়ে শান্তি রচনা করতে পারে।
অতএব একজন ব্যক্তি যদি পবিত্র হৃদয়ের অধিকারী হয় তবে সে সুন্দর চরিত্রের অধিকারী হ'তে পারে। আর ঐ সুন্দর চরিত্রের ব্যক্তিই পারে সংসারে, সমাজে, পৃথিবীতে শান্তি নামক মহার্ঘ অর্থাৎ মহামিলনের শান্ত অবস্থাকে আনতে।
কিন্তু সৃষ্টির আদিকাল থেকে আজ পর্যন্ত কেন পবিত্র হৃদয়, সুন্দর চরিত্র, গৃহের সম্প্রীতি, জাতির শৃঙ্খলা বিশ্বে শান্তি আনতে পারছে না? কি তার কারণ? কেন ষোলো কলা পূর্ণ হচ্ছে না? কেন পনেরো কলাতেই আটকে আছে বা যাচ্ছে জীবন, সমাজ, সভ্যতা এত এত মহাপুরুষ, এত এত মতবাদ থাকা সত্বেও!? এই সমস্যার সমাধান কি?
এই সমস্যা সমাধান হওয়ার পরিবর্তে দিন দিন ভয়ংকর জটিল হ'য়ে ওঠার একটাই কারণ হৃদয় পবিত্র হওয়ার এক ও একমাত্র উপায় বা মাধ্যম পবিত্রতার মূর্ত প্রতীককে জীবনে গ্রহণ না করা। আর জীবনে গ্রহণ করলেও আপাদমস্তক ভন্ডামিতে ভরা। তাই বুঝি এবারে সৃষ্টিকর্তা জীবন্ত ঈশ্বরের আচার্য পরম্পরার সূচনা।
তাই, মানুষ যতবড় মহাত্মা বা পূর্ণাত্মা হ'ক না কেন যতক্ষণ ও যতদিন পর্যন্ত না মানুষ এই সৃষ্টির কারণের কারণ মূল কারণ, পরম কারণ, অস্তিত্বের অস্তিত্ব পরম অস্তিত্ব, জীবনের জীবন পরম জীবন, সত্ত্বার সত্ত্বা পরমসত্ত্বা, আত্মার আত্মা পরমাত্মা জীবন্ত ঈশ্বরকে জীবনে গ্রহণ না করবে, গ্রহণ ক'রে তাঁকে নিজ জীবনে জীবন্ত না রাখবে ততদিন মানুষ পনেরো কলাতেই আবদ্ধ থাকবে। কোনোদিনই ষোলোকলা পূর্ণ হবে না। ঐ উপরে উল্লিখিত প্রবাদ অসম্পূর্ণ প্রবাদে ও ইউটোপিয়ায় পরিণত হবে।
যদি এই প্রবাদকে ষোলোকলায় পূর্ণ করতে হয় তাহ'লে প্রবাদের প্রথমেই লিখতে হবে,
Where there is living God in the life
there is righteousness in the heart.
জীবনে যদি থাকে জীবন্ত ঈশ্বর জীবনেশ্বর
হৃদয় পবিত্র হয় অতি সত্বর।
তবেই প্রবাদ পূর্ণ ও সফল স্বার্থক হবে। নতুবা সবটাই বকোয়াস ও শেষের সেদিন ভয়ংকর।--------প্রবি।
(লেখা ৭ই সেপ্টেম্বর'২০২৩)
No comments:
Post a Comment