Powered By Blogger

Sunday, December 31, 2023

প্রবন্ধঃ বাংলাদেশে শ্রীশ্রীঠাকুরের ফেলে আসা সম্পত্তির বর্তমান অবস্থা। (দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব )

সত্ত্বার সত্ত্বা পরম সত্ত্বা, অস্তিত্বের অস্তিত্ব পরম অস্তিত্ব, কারণের কারণ পরমকারুণিক, পুরুষোত্তম, পরমপিতা, সদগুরু, বিশ্বব্রহ্মান্ডের মালিক, সৃষ্টীকর্তা জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের এই যে বিশাল সম্পত্তি এই সম্পত্তি তাঁর প্রকৃত উত্তরাধিকারীর কাছে ফিরিয়ে দেওয়া যে কোনও সরকারের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে পরে। এখানে রাষ্ট্রপ্রধানের দয়া বা করুণার কোনও জায়গা নেই। আর তা যদি থাকে তা হবে জীবন্ত ঈশ্বরের প্রতি অহংকার ও ঔদ্ধত্ব প্রদর্শন। রাষ্ট্র যদি পরের সম্পদ হরণ করে তাহ'লে সেই দেশের জনগণের বড় একটা অংশ রাষ্ট্রের পরোক্ষ মদতে সেই শিক্ষায় শিক্ষিত হ'য়ে ওঠে। ফলে সেই দেশের ও দেশের সরকারের পরিণতি হয় ভয়ঙ্কর। পাকিস্তান দেশ ও সরকারের জোর করে শ্রীশ্রীঠাকুরের সম্পত্তি দখল তাদের পতনের কারণ। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারও এই ব্যাপারে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে ৭০ বছর পার ক'রে দিল। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র The greatest phenomenon of the world. সেই সর্ব্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় বাংলাদেশের মাটিতে জন্মেছিলেন এটা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরাট গর্ব। বাংলাদেশীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম ও সংখ্যালঘু হিন্দু, খ্রীষ্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী জনগণ এই ব্যাপারে গর্ব করতে পারে যে তাদের দেশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিস্ময়ের বিস্ময় সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় সর্বশক্তিমান, সর্বদর্শী, সর্বজ্ঞ, সর্বত্র বিরাজমান জীবন্ত ঈশ্বর, সদ্গুরু, পুরুষোত্তম, পরমপিতা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। কিন্তু দুই বাংলার বাঙালির আজ এতটাই দুর্ভাগ্য যে তারা বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়কে চিনতে পারল না, তারা এতটাই অভাগা যে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ট বিস্ময় বাঙালি হ'য়ে বাংলাদেশে জন্মেছিলেন বাঙ্গালিরা ও তাদের পূর্বপুরুষরা তাঁকে চিনতে পারেনি, জানতে পারেনি তিনি কে? তারা আসল ফেলে দিয়ে নকল নিয়ে মত্ত ছিলেন ও আছেন। তাঁকে তো ধ'রে রাখতে পারেনি, প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেনি কোনও প্রতিভাবান, ক্ষমতাবান, জ্ঞানী, পন্ডিত, প্রাজ্ঞ বাঙালি; এমনকি তাঁর ফেলে যাওয়া সম্পত্তি তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়ার সৎ চেষ্টাও করেনি ও কোনও আন্দোলনও সংগঠিত করেনি তাঁরা।
কিন্তু যেদিন শ্রীশ্রীঠাকুরের বিপুল সম্পত্তি শ্রীশ্রীঠাকুর প্রতিষ্ঠিত দেওঘরের মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ'-এর হাতে সমর্পিত হবে সেদিন ভারত তথা বিশ্বের কোটি কোটি সৎসঙ্গী বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মৌমাছির মতো ঝাঁকে ঝাঁকে সৎসঙ্গী বিশাল ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়বে বাংলাদেশের পাবনা জেলার হিমাইতপুরের শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মস্থানে। সেদিন চেয়ে চেয়ে দেখবে গোটা বাংলাদেশ সহ গোটা বিশ্ব। সেদিন সমগ্র বিশ্বের হিন্দু, মুসলিম, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ ইত্যাদি ইত্যাদি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের দীক্ষিত সৎসঙ্গী, ইষ্টপ্রাণ মানুষ, ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকে ভরে যাবে বাংলাদেশ। পূণ্যতীর্থ হ'য়ে উঠবে বাংলাদেশের পাবনা জেলার হিমাইতপুরের পবিত্র মাটি। ব্যবসা, বাণিজ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে বাংলাদেশ। অর্থ শক্তিতে ভরপুর ও বিরাট শক্তিশালী হ'য়ে উঠবে বাংলাদেশ।
আর যদি এর উল্টো অবস্থায় অবস্থান করে বাংলাদেশ সরকার যদি শ্রীশ্রীঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত পাবনার হিমায়েতপুর মানসিক হাসপাতাল ক্যাম্পাসে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের স্মৃতি বিজড়িত বিশ্ববিজ্ঞান কেন্দ্রের স্থান ধ্বংস করার, চিহ্ন লুপ্ত করার চেষ্টা করে, আত্মসাৎ করার চেষ্টা করে শ্রীশ্রীঠাকুরের ( ১৩৩-২৫ একর জমি ও নির্মিত ভবন ) বিশাল সম্পত্তি-------যা ইতিমধ্যেই আত্মসাৎ হ'য়ে চলেছে; সুনিপুন তৎপরতায় লোডার রড, এ্যাংগেল, দরজা জানালা খুলে নিয়ে ভেঙে ফেলার চক্রান্ত চলেছে-------- তাহ'লে শেষের সেদিন ভয়ংকর অপেক্ষা করছে।
যাই হ'ক এই ব্যাপারে বহু আগেই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার (এন ডি এ) বিদেশ মন্ত্রী প্রয়াতা নেত্রী শ্রীমতি সুষমা স্বরাজের সুদক্ষ নেতৃত্বে আলোচনা ক'রে বিষয়টিকে জটিলতা মুক্ত করার উদ্যোগ নেয়। কেন্দ্রীয় সরকারের (এন ডি এ) হস্তক্ষেপে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার ও সরকারের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি শেখ হাসিনা এই ব্যাপারে উদ্যোগ নেন এবং যথাশীঘ্র সম্ভব সুপ্রীম কোর্টকে অনুরোধ করেন যত দ্রুত সম্ভব মামলাধীন এই বিষয়টির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে। এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশমন্ত্রী শ্রীমতি সুষমা স্বরাজ দ্রুত হস্তক্ষেপ করেন এবং তাঁর আন্তরিক প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ এবং হস্তক্ষেপে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনায় হিমঘরে পড়ে থাকা গুরুত্বপূর্ণ দলিল দিনের আলোয় উন্মোচিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের ও সুপ্রীম কোর্টের প্রতিনিধি দল এই ব্যাপারে বাংলাদেশে দায়িত্ব প্রাপ্ত সৎসঙ্গ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন ও দেওঘরে এসে শ্রীশ্রীদাদা থাকাকালীন মূল কেন্দ্র পরিদর্শন করেন ও প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ্য সংগ্রহ ক'রে যান। এবং পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট বিগত ৩১শে মে ২০১৮ ইং (বৃহস্পতিবার) শ্রীশ্রীঠাকুর প্রতিষ্ঠিত মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ'-এর পক্ষে তাদের রায় দেন। এবং ডি,সি, সাহেবকে বলা হয়, অনতিবিলম্বে জায়গার দখল বুঝিতে দিতে
কিন্তু যতদূর জানা যায়--------পাবনা জেলার হিমাইতপুরের স্থানীয় ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্রে কিছু সৎসঙ্গী ও অদীক্ষিত ক্ষমতাবান কিছু মানুষ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে--------বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের আইনী জটিলতায় কোনও এক স্তরে আটকে আছে। এই ব্যাপারে ভারত সরকারের একটু কড়া পদক্ষেপ ও আন্তরিক উদ্যোগ এবং বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় সরকারী প্রশাসনের ও সুপ্রিম কোর্টের তৎপরতায় বিষয়টির সমাধানে প্রকৃত সাহায্য হ'তে পারে। সম্প্রতি ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রীযুক্ত অমিত শাহ দেওঘর 'সৎসঙ্গ' আশ্রম পরিদর্শনকালে বর্তমান শ্রীশ্রীআচার্যদেব তাঁর কাছে এই বিষয়টি সমাধানে সাহায্য প্রার্থনা ও অনুরোধ করেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সম্মতিসূচক আগ্রহ প্রকাশ করেন।
আশা করা যায় লোকসভা নির্বাচন (২০২৪) পরবর্তী খুব শীঘ্রই দুই দেশের সরকারের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মধুরেণ সমাপয়েৎ হবে।
আমার জানাটুকু শেয়ার করলাম। সাম্প্রতিক আপ ডেট জানা নেই। জানলে শেয়ার করবো।
(লেখা ২৭শে অক্টোবর'২০২৩)

প্রবন্ধঃ বাংলাদেশে শ্রীশ্রীঠাকুরের ফেলে আসা সম্পত্তির বর্তমান অবস্থা। (প্রথম পর্ব)

গত ১৮ই অক্টোবর'২৩ বুধবার বাংলাদেশের জাতীয় সংবাদপত্র মুক্ত খবরে প্রকাশিত সাংবাদিক ও গবেষক মোহাম্মদ সেলিম রেজা লিখিত 'পাবনা মানসিক হাসপাতাল ও অতীত ইতিবৃত্তে হিমায়েতপুর' নামে একটি প্রতিবেদন ফেসবুকে চোখে পড়লো।

বাংলাদেশের জাতীয় সংবাদপত্র 'মুক্ত খবরে সাংবাদিক ও গবেষক মোহাম্মদ সেলিম রেজা মানসিক হাসপাতালের জমির পরিমাপ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন, হাসপাতালের মোট জমি ১৩৩. ২৫ একরের মধ্যে সিংহভাগই শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের। ৫০০ শয্যার এই মানসিক হাসপাতাল বাংলাদেশে প্রথম ও উপমহাদেশের মধ্যে প্রসিদ্ধ হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত। তিনি আরও লিখেছেন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ তাদের রোগীদের নিয়ে এই মানসিক হাসপাতালে ছুটে আসেন কারণ সুস্থতার নিরিখে বহুল প্রচারিত এই হাসপাতালের সুনাম রোগীদের আত্মীয় স্বজনদের কাছে একমাত্র আশা ও ভরসার স্থল।

এই হাসপাতালটি ১৯৫৯ সাল থেকে হিমাইতপুরে শ্রীশ্রীঠাকুর স্থাপিত 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠানের জমিতে অবস্থিত বিশ্ব বিজ্ঞান কেন্দ্রের একাংশে স্থানান্তরিত করা হয়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত সেখানে মানসিক রোগের চিকিৎসা হ'য়ে আসছে। কথিত আছে, সেখানে নাকি প্রায় সব রোগীই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যায়। এখানে ডাক্তার ও ওয়েলফেয়ার কর্মীদের সুনাম সুবিদিত। এখানকার পরিবেশের কারণে ও দক্ষ, সৎ ও শুভানুধ্যায়ী চিকিৎসকদের সুচিকিৎসায় ও মানবিক আচরণে রোগীরা সুস্থ হ'লেও এই হাসপাতালে এক অলৌকিকত্ব বাতাবরণ এই সুস্থতার প্রধান কারণ হিসেবে সেখানকার জনমানসে গেঁথে আছে। যে অলৌকিকত্ব অচ্ছিন্ন গভীর বিশ্বাসের রজ্জুতে বাঁধা। তারা বলেন, এখানে বিজ্ঞান ও অলৌকিকত্ব একাকার হ'য়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষদের ধারণা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতেই, তাঁর দয়া ও আশীর্বাদেই নাকি মানসিক রোগগ্রস্থ মানুষ সুস্থ হ'য়ে বাড়ি ফিরে যান। যার ফলে এই ছোট্ট দেশ বাংলাদেশের এই 'পাবনা মানসিক হাসপাতাল'-এর উপমহাদেশ জুড়ে এত সুনাম ও প্রচার। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী এমনও শোনা গিয়েছে, অনেক প্রত্যক্ষদর্শীর মতে মানসিক হাসপাতালের বিভিন্ন অংশে রাতের বেলা সাদা কাপড় পরিহিত দীর্ঘ এক অবয়বকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। সেই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের দৃঢ় বিশ্বাস শ্রীশ্রীঠাকুর এখনও সেখানে অবস্থান করেন এবং তাঁর সূক্ষ্ম শরীরের উপস্থিতির কারণে ও তাঁর অজচ্ছল দয়ায় রোগীরা এখানে সুস্থ হ'য়ে ওঠে। তাই এই বাংলাদেশে অবস্থিত মানসিক হাসপাতালের সুনাম উপমহাদেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।
এইসব কথা সত্যি মিথ্যা নিয়ে বিতর্ক হ'তে পারে। বিশ্বাস অবিশ্বাসের প্রশ্ন উঠতে পারে। কুসংস্কারের প্রচার আখ্যা দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের হিমাইতপুর ও বর্তমান ভারতের ঝাড়খন্ডের দেওঘরে অবস্থানকালে অবিভক্ত ভারত ও বহির্বিশ্বের প্রথিতযশা, প্রাজ্ঞ, অভিজ্ঞ ও বুদ্ধিবান, বিচক্ষণ যত মানুষ তাঁর কাছে ছুটে ছুটে গেছেন, তাঁর সঙ্গ করেছেন, যারা তাঁর লীলাসঙ্গী, তাঁর দীর্ঘ ৮১বছর জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন, তাঁর বহু অনালোকিত অনালোচিত অলৌকিক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন, সাক্ষী ছিলেন তাঁর অতিমানবিক ও অতিমানুষিক সত্তার তাঁরা জানেন তাঁর অলৌকিক সত্তার অস্তিত্বের সত্যতা ও রহস্য। আর সবার কাছে যা অলৌকিক শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে তা লৌকিক। শ্রীশ্রীঠাকুর বলতেন, অলৌকিক ব'লে কিছু নেই। যতক্ষণ তুমি কার্যকারণ জানতে পারছো না ততক্ষণ তা অলৌকিক। আর যখন কারণ হাতের মুঠোয় এসে যায় তখন তা হ'য়ে যায় লৌকিক। তাই পাবনা মানসিক হাসপাতালে শ্রীশ্রীঠাকুরের উপস্থিতি ও মানসিক রোগীর দ্রুত সুস্থ হ'য়ে ওঠাকে কেন্দ্র ক'রে যে অলৌকিক কাহিনী মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর পিছনে যে সত্য বা বিজ্ঞান রয়েছে সেই বিজ্ঞান যখন মানুষের করায়ত্ত হ'য়ে যায় তখন তা অলৌকিক থেকে লৌকিক হ'য়ে যায়। এই পাবনা মানসিক হাসপাতালে শ্রীশ্রীঠাকুরের উপস্থিতির যে বিজ্ঞান সেই বিজ্ঞান সংক্ষেপে বলতে পারি তিনি সর্বব্যাপী অর্থাৎ Omnipresent (present everywhere at the same time), একই সঙ্গে সব জায়গায় তিনি অবস্থান করেন যে রূপে তাকে কারণ দেহ বলে যা শ্রীশ্রীঠাকুরের ভাষায় Ecto-plasmic body. যা একজন দু'জন না সবাই মিলে বোধ করার জন্য তিনি Instrument আবিস্কারের কথা বলেছিলেন সবাইকে বারেবারে।
এছাড়া শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মভুমি, তাঁর মাতৃভুমি, পিতৃভুমি এবং তাঁর শৈশব, যৌবন ও প্রৌঢ়ত্বের দিনগুলি যেখানে কাটিয়েছেন সেই স্থানের সঙ্গে বিচ্ছেদ আমৃত্যু তাঁকে যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত করেছিল। তিনি বারবার তাঁর পুরোনো জায়গায় ফিরে যেতে চাইতেন। মাঝে মাঝে তিনি গভীর মৌনতায় ডুবে যেতেন, হারিয়ে যেতেন কোন অজানায়। তখন তাঁকে দেখে মনে হ'তো তাঁর শরীর এখানে থাকলেও তিনি অন্য কোনওখানে। তিনি যে মাঝে মাঝে শরীর থেকে বেরিয়ে অন্য কোথাও বিচরণ করতেন আবার ফিরে আসতেন নিজের শরীরে সে কথা তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আগত মানুষের কাছে বলেছেন। এর থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় তিনি যে বারবার তাঁর পুরোনো জায়গায় যেখানে তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন, যেখানে তাঁর শৈশব, কৈশোর, যৌবন, প্রৌঢ়ত্ব কেটেছে সেই স্মৃতি বিজড়িত স্থানে তিনি ফিরে যেতে চাইতেন সেই স্থানে সেই পাবনা মানসিক হাসপাতলে তাঁর সূক্ষ্ম শরীরের বা ভাব দেহের উপস্থিতির কেন এমন রহস্যময় কথা প্রচলিত আছে বা হয়েছে তা বোঝা যায়। অবশ্য বোঝে সে, প্রাণ বোঝে যার।

যাই হ'ক এইসমস্ত থ্রেকে বোঝা যায় পাবনা মানসিক হাসপাতালে শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিয়ে, তাঁর সূক্ষ্ম শরীরের উপস্থিতি সম্পর্কে যে রূপকথার জগত গড়ে উঠেছে তা সর্ব্বৈব সত্য। এ ব্যাপার সম্পূর্ণই উপলব্ধির ব্যাপার। এ সব আমাদের মতো সাধারণ ভাঙ্গাচোরা লেখাপড়াজানাওয়ালা মানুষের কাছে গা ছমছম করা ভুতের উপস্থিতি আর সমস্ত কারণের কারণ পরম কারুণিকের কাছে তা বিজ্ঞানের বিজ্ঞান পরমবিজ্ঞান।
ক্রমশ। ( এর পরে দ্বিতীয় পর্ব)
( লেখা ২৭শে অক্টোবর'২০২৩)

দূর্গাপূজা ২০২৩ঃ দ্বাদশীর নিবেদন।

মূর্তি পূজা ও শ্রীশ্রীঠাকুর।

মা চলে গেছে বাপের বাড়ি ছেড়ে আজ দু'দিন হ'লো শিবলোকে। বাড়িটা তাই বড্ড ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। কোনও কিছুই ভালো লাগছে না। এর থেকে আসছে আসছে ভালো ছিল। তার থেকেও ভালো একেবারে না আসা। যদি চলেই যাবে তাহ'লে আর আসা কেন? মন বলে, এসো মা তুমি, ব'সো মা তুমি, থাকো মা তুমি আমারও ঘরে। তোমারো গুণে গুণান্বিত হ'য়ে জীবন উঠুক ভরে।

তাই মা যখন চলে যায় তখন আবার শূন্যতায় ভরে ওঠে মন, অন্ধকার ঘিরে ধরে জীবন। কয়েকদিনের জন্য আলোয় ঝলমল ও আনন্দে ভরপুর হ'য়ে ওঠা জীবন মা চলে যাবার সঙ্গে সঙ্গে আবার ডুবে যায় হতাশার অন্ধকারে। তারপর আবার সেই দিন গত পাপ ক্ষয়।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কেন এই আনন্দ সাময়িক হয়? কেন এই সাময়িক কৃত্রিম আনন্দ শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে হতাশার ঘোর অন্ধকারে ডুবে যায় জীবন? কেন 'কেমন আছেন' প্রশ্ন করলে ভেসে আসে ক্লান্ত বিধ্বস্ত কন্ঠস্বর, 'অ্যায় চলে যাচ্ছে আর কি; দিন গত পাপ ক্ষয়'? এর উত্তর কি এখন?

আসলে আমরা যে মূর্তি পুজা করি তা'তে কোনও প্রাণ থাকে না। যদিও প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয় শাস্ত্র মতে। কিন্তু তা'তে প্রাণ থাকে না। কেন থাকে না? প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবে কে? প্রাণ প্রতিষ্ঠা করার মতো সেই অসীম শক্তিধর সদ ব্রাহ্মণ কোথায়? যে কেউ প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবে? মৃণ্ময়ী কে চিন্ময়ী ক'রে তুলবে এমন সেই ত্রিকালজ্ঞ বা ত্রিকালদর্শীর আধার কোথায়? মৃন্ময় অর্থাৎ মাটির তৈরী মূর্তির মধ্যে চিন্ময় অর্থাৎ চৈতন্যস্বরূপ, জ্ঞানময় সত্ত্বার প্রকাশ ঘটাবেন অর্থাৎ চেতনা জাগ্রত করাবেন এমন শক্তিমান পুরুষ কে? আর্থিক শক্তিতে শক্তিমান কোনও মানুষ? রাজনৈতিক ক্ষমতার অধীশ্বর কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব? কোনও সরকারী প্রধান? কোনও সেলিব্রেটি? কোনও ধর্মাত্মা? কে? কে? কে?
তাই কোনও প্যান্ডেলে, কোনও মন্দিরেই চিন্ময়ী মা দূর্গা থাকেন না, থাকেন প্রাণহীন মৃণ্ময়ী মা দূর্গা। থাকে শিল্পীর হাতে তৈরী নানা ঢঙের আধুনিক মাতৃমূর্তি, থাকে রঙ্গিন আলোর ঝলকানি, থাকে নানা কারুকার্যে ভরা প্যান্ডেলের বাহার, থাকে মিথ্যে 'আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে' গানের মিথ্যে মন-প্রাণ-হৃদয়ের বহির্প্রকাশ। কেন এমন হয়? কারণ অতি প্রগতিই দূর্গতি।
তাই মা চলে যাবার সঙ্গে সব সাময়িক নকল আনন্দ উধাও হ'য়ে মন-প্রাণ ডুবে যায় হতাশা আর অবসাদে। সংসারে, জীবনে নেমে আসে দূর্গতির ঘোর আঁধার। কেন এমন হয়?
এমন হয় তার কারণ আমরা মৃন্ময়ী মা দূর্গার পুজা করি চিন্ময়ী মা দূর্গার পুজা করি না। আমরা মূর্তি পুজা করি। যে যে গুণাবলী, বৈশিষ্ট্য ও চরিত্র নিয়ে মূর্তি গড়া হয়েছে মূর্তির সেই সেই গুণাবলী, বৈশিষ্ট্য ও চরিত্রের পুজা করি না। মূর্তির সেই চরিত্রকে নিজের চরিত্রে, নিজের জীবনে রুপায়িত করি না, করতে সচেষ্ট হ'ই না। ফলে পুজা বন্ধ্যা হয়। বন্ধ্যা জমিতে যেমন ফসল হয় না ঠিক তেমনি প্রাণহীন বন্ধ্যা মূর্তিতে পুজাও হয় বন্ধ্যা। কোনও প্রার্থনাতে সাড়া মেলে না। সেই মূর্তি পুজাতে থাকে শুধু হৈহুল্লোড়, কোমর দোলানো নারীপুরুষের নাচগান, থাকে সুরাপানের হিক্কার, থাকে ধান্দাবাজি, থাকে বৃত্তি-প্রবৃত্তির বৃত্তে উন্মাদের মতো ঘুরপাক। তাই নকল আনন্দের মাঝে কেটে যাওয়া চারদিনের জীবন আসল আনন্দ থেকে বঞ্চিত হ'য়ে হতাশা অবসাদে ডুবে যায়। সেই বন্ধ্যা পুজোর নকল আনন্দের হ্যাং অভার কাটাতে আবার আবার বারবার চাই মূর্তি পুজো, অমূর্ত ভগবান বা Unseen God-এর পুজো। আর এমনিভাবেই জীবন এগিয়ে চলে দ্রুত অকাল সমাপ্তির দিকে। অর্থাৎ দিন গত হয় অর্থাৎ দিন যায় আর পাপ ক্ষয় হ'তে হ'তে সময়ের অনেক আগেই মৃত্যুর দিকে ঢ'লে পড়ে জীবন।
তাহ'লে মূর্তি পূজার কি কোনও সার্থকতা নেই? মূর্তি পুজা কি অসাড়? মূর্তি পুজায় কি কোনও লাভ হয় না?
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র মুর্তি পুজা সম্পর্কে পরিষ্কার বললেন, "পৌত্তলিকা (অর্থ মূর্তি বা পুতুল পূজা) কি? স্মৃতি বা ভাবপ্রতীকতা বা স্মারকতার (হিন্দুরা) উপাসক বলুন। আর কোন- না-কোন রকমের ভিতর দিয়ে কেই বা তা' নয় সেটাও বলুন? ঋষিদের কেতাবেও মূর্তিপুজার কথা নাই। কোরাণ শরিফ, বাইবেল বা বৌদ্ধ-গ্রন্থাদিতে মূর্তি পূজার কথা নাই। যেখানে ওসব ব্যবস্থা আছে তা' দেবতা বা hero-দের পূজার কথা।
আর দেবতা কথার মানেই হ'চ্ছে----যিনি, যে বা যা'রা মানুষের প্রয়োজনকে পূরণ ক'রে, তাদের পরিপোষণের স্বার্থ হ'য়ে দাঁড়িয়ে কৃতজ্ঞ অর্ঘ্যের অধিকারী হয়েছেন। ওই রকম পূজা, পার্ব্বণ যা'-কিছু হিন্দুদের ----তা ভগবৎ-অনুগ্রহ-সম্পন্নদেরই। ভগবান পূজার একমাত্র চিজই হ'চ্ছে জ্যান্ত পুতুল ওই পয়গম্বর, পীর, ঋষি, আদর্শ বা ইষ্ট। দেবতা মানে যিনি দীপ্তি পান।"
তাই মা দুর্গা পূজার অর্থ দেবতা বা hero-দের পূজা।
এছাড়া শ্রীশ্রীঠাকুর বিসর্জন সম্পর্কে বললেন, "বিসর্জন মানে বিশেষভাবে সৃজন। সেই অর্থে মায়ের বিসর্জন হয় না। হয় মাকে নোতুনরূপে নিজের ঘরে নিজের মায়ের মধ্যে বিশেষভাবে সৃষ্টি, বিশেষভাবে রচনা বা নির্মাণ।
দয়াল পরমপিতা আমার আমাদের বলেছেন, ওঠো, জাগো, চোখের জল মোছো। হতাশা, অবসাদ ঝেড়ে উঠে দাঁড়াও। মাকে বিসর্জন দেবে মানে তাঁকে নিরঞ্জন নয়, তাঁকে জলে নিক্ষেপ নয়। বিসর্জন মানে মাকে বিশেষভাবে সৃজন। অর্থাৎ আবার নোতুনভাবে নিজের জীবনে, নিজের চরিত্রে মাকে, মায়ের গুণাবলী, তাঁর বৈশিষ্ট্য ও চরিত্রকে বিশেষভাবে সৃষ্টি করা, রচনা বা নির্মাণ করা। আর তখনই মূর্তি পূজার সার্থকতা। নতুবা সবটাই বৃত্তি- প্রবৃত্তির পূজো। উচ্ছৃঙ্খল বিশৃঙ্খল বকোয়াস।

দূর্গাপূজা ২০২৩ঃ একাদশীর নিবেদন।

শুভ বিজয়ায় শপথ,

শুভ বিজয়ায় সবাইকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই। আসুন সবাই একবার মন দিয়ে শ্রীশ্রীদাদার কথা পড়ি ও শুভ বিজয়ায় শ্রীশ্রীঠাকুর, শ্রীশ্রীবড়মা, শ্রীশ্রীআচার্যদেব, শ্রীশ্রীদাদা, শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে প্রণাম জানাই ও শ্রীশ্রীদাদার কথামতো চলার শপথ গ্রহণ করি।
দয়ালের কাছে জেনেছি মা দুর্গা মানে আপনার আমার ঘরের মা। ঘরের মাকে বাদ দিয়ে মা দূর্গার আরাধনা অর্থহীন ও বৃথা। তাই মা দূর্গার বিসর্জন হয় না। দয়াল বললেন, বিসর্জন মানে বিশেষভাবে সৃজন। সেই অর্থে মায়ের বিসর্জন হয় না। হয় মাকে নোতুনরূপে নিজের ঘরে, নিজের মায়ের মধ্যে বিশেষভাবে সৃষ্টি, বিশেষভাবে রচনা বা নির্মাণ।

তাই আজকে এই বিজয়ার বিশেষ দিনে বিশেষভাবে সবার ঘরে ঘরে, সবার জীবনে, সবার চরিত্রে রচিত হ'ক মায়ের উপস্থিতি, সৃষ্টি হ'ক তীব্র উদ্দীপনায় নিজের মায়ের প্রতি অকৃত্রিম, অকপট ভালোবাসা। সার্থক হ'ক জীবন, সার্থক হ'ক দশমী, উপভোগ করুন মায়ের বিসর্জন প্রকৃত অর্থে অকপট অকৃত্রিম হৃদয়ে পরস্পরের সঙ্গে ভালোবাসা দেওয়ায়-নেওয়ায়, আলিঙ্গনে-গ্রহণে।

এই শুভ দিনে শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করি ও শপথ নিই আমরা যেন শ্রীশ্রীদাদার কথা মতো নিজেরা চলতে পারি ও সবাইকে চলতে অনুপ্রাণিত করতে পারি। জয়গুরু।

দূর্গাপূজা ২০২৩ঃ শুভ দশমীর নিবেদন,

আজ শুভ দশমী। আজ মায়ের বিসর্জন।
আজ মা দুর্গা চলে যাবে। বাবা এসেছে মাকে নিয়ে যেতে। তাই সবার মন খারাপ। ঘরে ঘরে বিষাদের ছায়া। কাল বৃষ্টি হ'য়ে মাকে নিয়ে শেষ আনন্দ মাটি হয়ে গেছে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে। সবার মন খারাপ ছিল শেষ দিনে। তবুও সন্ধ্যেবেলা বৃষ্টি না থাকায় মানুষ নেমেছে পথে। কিন্তু মায়ের পুজো যেখানে মাঠে হয়েছে সেখানে পুজোর আনন্দ হয়েছে মাটি। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে কাদা জল। কারণ অনেক প্যান্ডেলের মাথায় ত্রিপল দেওয়া হয়নি আবহাওয়া ভালো থাকার জন্য দূরদর্শিতার অভাবের কারণে। ফলে বৃষ্টির জল ঠাকুরের সামনের ঘেরা দেওয়া জায়গাকে করেছে জল কাদাময়।

যাই হ'ক, মানুষ সেই কষ্টের মধ্যে যতটা পেরেছে আনন্দ করেছে। কিন্তু আনন্দের সময় যদি একটু মায়ের কথা মনে থাকতো, একটু মায়ের কাছে প্রার্থনা করতো, গুরুভাইবোনেরা দয়ালের মুখ মনে রাখতো, দয়ালের কাছে আকুল প্রার্থনা করতো যাতে নবমীর আগের দিন ও রাতগুলি যেমন সুন্দর আলো ঝলমলে পরিবেশে আনন্দের মধ্যে কেটেছে তেমন যেন মধুরেণ সমায়েৎ হয়। তখন তো আনন্দ করেছে, ঝলমলে পোশাকে ঘুরেছে বেড়িয়েছে, নানারকম ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার খেয়েছে পথে ঘাটে হোটেলে রেষ্টুরেন্টে তখন কি মনে থেকেছে বিপর্যয়ের কথা? থেকেছে মনে দয়ালের মুখ, নাম? মনে থাকেনি, থাকে না। তাই যা হবার হয়েছে। সম্মিলিত আকুল প্রার্থনা ঈশ্বরকে বাধ্য করে নিশ্চিত সিচুয়েশন পাল্টে দিতে। কিন্তু তা হয়নি মাকে, দয়ালকে অকপট অকৃত্রিম ভালোবাসার অভাবে।
আজ দশমী। আর কিছুক্ষণ পর মা বিদায় নেবে। বেজে উঠবে বিসর্জনের বাজনা। চোখের জলে বিদায় দিতে হবে মাকে। কিন্তু বাবা এসেছে মাকে নিতে। দয়াল পরমপিতা আমার আমাদের বলেছেন, ওঠো, জাগো, চোখের জল মোছো। মাকে বিসর্জন দেবে মানে তাঁকে নিরঞ্জন নয়, তাঁকে জলে নিক্ষেপ নয়। বিসর্জন মানে মাকে বিশেষভাবে সৃজন। অর্থাৎ আবার নোতুনভাবে তাঁকে সৃষ্টি করা, রচনা বা নির্মাণ করা।
দয়ালের কাছে জেনেছি মা দুর্গা মানে আপনার আমার ঘরের মা। ঘরের মাকে বাদ দিয়ে মা দূর্গার আরাধনা অর্থহীন ও বৃথা। তাই মা দূর্গার বিসর্জন হয় না। দয়াল বললেন, বিসর্জন মানে বিশেষভাবে সৃজন। সেই অর্থে মায়ের বিসর্জন হয় না। হয় মাকে নোতুনরূপে নিজের ঘরে, নিজের মায়ের মধ্যে বিশেষভাবে সৃষ্টি, বিশেষভাবে রচনা বা নির্মাণ।
তাই আজকে এই বিজয়ার বিশেষ দিনে বিশেষভাবে সবার ঘরে ঘরে, সবার জীবনে, সবার চরিত্রে রচিত হ'ক মায়ের উপস্থিতি, সৃষ্টি হ'ক তীব্র উদ্দীপনায় নিজের মায়ের প্রতি অকৃত্রিম, অকপট ভালোবাসা। সার্থক হ'ক জীবন, সার্থক হ'ক দশমী, উপভোগ করুন মায়ের বিসর্জন প্রকৃত অর্থে অকপট অকৃত্রিম হৃদয়ে পরস্পরের সঙ্গে ভালোবাসা দেওনায়-নেওয়ায়, আলিঙ্গনে-গ্রহণে।
দয়ালের প্রতি তিলমাত্র বিশ্বাসে গভীর বিশ্বাস, ভরসা রেখে আপ্রাণতার সঙ্গে নির্মল ভালোবাসায় সরলতাপূর্ণ হৃদয়ে আজ তাঁর কাছে প্রার্থনা করুন নির্মল হৃদয়ে,
হে দয়াল, তুমি আমার ঘরে থাকো, বিশেষভাবে আমার ঘর তোমার উপস্থিতিতে আলোময়, রূপময়, মধুময়, রসময় হ'য়ে উঠুক, বিশেষভাবে তোমার গুণাবলীর সৃজন হ'ক অর্থাৎ রচনা হ'ক, সৃষ্টি হ'ক, নির্মাণ হ'ক আমার ঘরে, আমার পরিবার ও পরিবারের সবার জীবনে, চরিত্রে। শিব যেখানে পার্বতী সেখানে। নারায়ণ যেখানে সেখানেই মা লক্ষী।
যা চাইবে তাই-ই পাবে। জয়গুরু।

দূর্গাপূজা ২০২৩ঃ নবমীর নিবেদন,

আজ একটা পোষ্ট চোখে পড়ল যা সস্তা, মুখরোচক ও সুড়সুড়ি মার্কা। এইসব বিরক্তিকর দূর্বল, ভীরু, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, কিছু না ক'রে ফোকটে অলৌকিক উপায়ে পাওয়ার মানসিকতার অধিকারী মানুষের কাছে এই সমস্ত পোষ্টের মূল্য ও গ্রহণযোগ্যতা অপরিসীম। যুক্তিবাদী ধর্মপ্রাণ মানুষের কথা তাদের ভালো লাগে না, তাদের এড়িয়ে চলে এই সমস্ত ধর্মরাজ্যে অধিকার না পাওয়া ভীরু, দূর্বল, কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও না ক'রে ফোকটে অলৌকিক উপায়ে পাওয়ার মানসিকতা সম্পন্ন মানুষ।
পোষ্টের বিষয় হ'লো "এড়িয়ে যাবেন না, এক মুহূর্তেই ভাগ্য পরিবর্তন"। একটা মৃতদেহের ছবি (সম্ভবত)। বুকের মাঝখানটা অদ্ভুত রকমের। এই ছবি দেখে এড়িয়ে গেলে ভালো হবে না। আর এড়িয়ে না গিয়ে লাইক সাইন বা শেয়ার করলে একমুহূর্তেই ভাগ্য পরিবর্তন হবে। এরকম নানা দেবদেবী নিয়ে পোষ্ট আছে। আছে নানা অলৌকিক কর্মকান্ডের ক্যাপশান। এইসব পোষ্টে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ লাইক বা লাভ সাইন পড়ে আর কমেন্ট থাকে 'জয় মা, জয় বাবা' ইত্যাদি। আর একদিনে কয়েক ঘন্টায় বা কিছু সময় পড়ে সবাই লাখোপতি বা ক্রোড়পতি হ'য়ে যায়।

যাই হ'ক এসব নিয়ে আমি যদিও মাথা ঘামায় না; তথাপি আমাকে মাথা ঘামাতে হ'লো। আর মাথা ঘামাতে হ'লো নবমীতে। কারণ এসব পোষ্ট সৎসঙ্গীরা শ্রীশ্রীঠাকুরের নাম দিয়ে তৈরী পেজে পোষ্ট করে ও পোষ্ট করতে অন্যকে এলাও করে। এডমিনরা পোষ্টদাতাদের কুসংস্কারাছন্ন ঠাকুর দর্শন পরিপন্থী বিষয়কে পোষ্ট করতে সানন্দে ছাড় দেয়।
নবমীর সকালে দেখা এই পোষ্ট 'এক মুহূর্তেই ভাগ্য পরিবর্তন' বিষয় সম্পর্কে গুরুভাইবোনেদের সচেতন ও সতর্ক করতে নবমীর নিবেদন হিসেবে ল্যাপটপে আঙ্গুল রাখলাম।

আমার প্রশ্ন সৎসঙ্গীদের কাছে ''এক মুহূর্তেই ভাগ্য পরিবর্তন' হয়ে গেলে তাহ'লে আর শ্রীশ্রীঠাকুরকে জীবনে কি দরকার? কি দরকার ছিল তাঁর দীক্ষা নেবার? কি দরকার তাঁর ইষ্টভৃতি করার? কি দরকার তাঁর 'স্বতঃ অনুজ্ঞা' পাঠ করার? কি দরকার সকাল বিকাল প্রার্থনা করার? কি দরকার সৎসঙ্গে যাওয়ার আর বাড়িতেই বা কি দরকার সৎসঙ্গ দেওয়ার? সৎসঙ্গ তো শনি সত্যনারায়ণ পুজো বা কীর্তন পার্টি ডেকে হরি নাম সংকীর্তন করানো নয়; তাই না? অবশ্য যারা নাম কা ওয়াস্তে শ্রীশ্রীঠাকুরকে ধরেছে তাদের কাছে শনি, সত্যনারায়ন পুজো কি অন্যান্য পুজো আর খোল করতাল নিয়ে হরি নাম সংকীর্তন করা ছাড়া 'সৎসঙ্গ' আলাদা কোনও মাহাত্ম্য রাখে না। আর কিই বা দরকার শ্রীশ্রীঠাকুরের নামে পেজ খুলে সংস্কার আর কুসংস্কারকে মিক্স ক'রে সৎসঙ্গীদের মাঝে পেশ করার আর তাদের দুর্বল, ভীরু, কুসংস্কারাছন্ন শরীর-মন-আত্মাকে আরও দূর্বল, আরও ভীরু ও কুসংস্কারাচন্ন ক'রে তোলার?? যদি এসব এক মুহূর্তেই ভাগ্য পরিবর্তন করার সহজ সস্তা তুক থেকে থাকে তাহ'লে কি দরকার এই পেজে এসব পোষ্ট করার? সরাসরি 'এক মুহূর্তেই ভাগ্য পরিবর্তন' এই নামে পেজ খুলে এসব অলৌকিক উপায়ে কার্যসিদ্ধির প্রচার করলেই তো হয়; তাই নাকি? শ্রীশ্রীঠাকুরের নামে পেজের সাহারা নিয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের বদনাম করার কি আছে? শ্রীশ্রীঠাকুর কি এসব সমর্থন করতেন? কেন সৎসঙ্গী হ'য়ে ঠাকুর বিরোধী কার্যকলাপ? কেন সৎসঙ্গীদের শ্রীশ্রীঠাকুরের আদর্শ, দর্শন থেকে সরিয়ে কুসংস্কারের দিকে আরও ঠেলে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন? কে দিয়েছে এই দায়িত্ব? কে দিয়েছে এই অধিকার? কে দিয়েছে এই সমস্ত বালখিল্য আজব গাঁজাখুরি বটতলার পর্ণগ্রাফির মতো নীচ ধারণা সৎসঙ্গীদের ইঞ্জেক্ট করার লাইসেন্স? নবমীর পূণ্য সকালেই সৎসঙ্গীদের সাবধান ক'রে দিয়ে বলছি পরমপিতার ধৈর্য ও সহ্য শক্তির পরীক্ষা নেবেন না। দয়ালের ভয়াল রূপ কি ভয়ংকর মর্মান্তিক তা জানা নেই তাই; আর জানা নেই ব'লে দয়ালের ভয়াল রূপের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে তাও নয়। বিচার নিশ্চিত। সাধু সাবধান! সাজা সৎসঙ্গী সাবধান।

যাই হ'ক, আমার গুরুভাইবোনেরা আজ মায়ের শেষ দিন। পরমপিতা দয়াল আমার রওনা দিয়েছেন মাকে নিয়ে যেতে। আসুন একবার দয়ালের প্রতি তিল মাত্র বিশ্বাসও যদি থাকে সেই তিলমাত্র বিশ্বাসে গভীর বিশ্বাস, ভরসা রেখে যেন সেই তিল পরিমাণ বিশ্বাসে একটুও আঁশের মতো কোনও সন্দেহ না থাকে, না থাকে সেই বিশ্বাসের প্রতি অহংকার, অধৈর্য্য, অবহেলা, অনাগ্রহ, অলসতা, অক্রিয়তা ও বিরক্তি বরং আপ্রাণতার সঙ্গে নির্মল ভালোবাসায় সরলতাপূর্ণ হৃদয়ে আজ নবমীর সারাদিনে একবার যে কোনও সময়ে নিরালায় নিভৃতে দয়ালের সামনে বসুন আর বলুন, হে দয়াল তুমি যেও না চলে, তুমি আমার ঘরে থাকো, বিশেষভাবে আমার ঘর তোমার উপস্থিতিতে আলোময়, রূপময়, মধুময়, রসময় হ'য়ে উঠুক, বিশেষভাবে সৃজন হ'ক অর্থাৎ রচনা হ'ক, সৃষ্টি হ'ক, নির্মাণ হ'ক আমার ঘর, পরিবার ও পরিবারের সবার জীবন। কারণ বিসর্জন মানে পরিত্যাগ নয়, নয় নিক্ষেপ, নয় নিরঞ্জন। বিসর্জন মানে মাকে দয়ালকে বিশেষভাবে সৃজন। আর সেই সৃজন নিজের ও নিজের পরিবারের জীবনে, নিজের ঘরে, নিজের পারিপার্শ্বিকে।

পরম দয়াল শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে যা শিখেছি, যা জেনেছি, যা বুঝেছি, যা উপলব্ধি করেছি, যে অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হয়েছি তাই-ই তুলে ধরলাম আপনাদের কাছে যদি আপনাদের একটুও কাজে লাগে, তাঁর দয়ায় ভরে যায় জীবন ও সংসার।
তাই দয়ালের কথা দিয়েই শেষে বলি, "গভীর বিশ্বাসে সবই হ'তে পারে। বিশ্বাস কর, _______সাবধান! অহংকার, অধৈর্য্য ও বিরক্তি না আসে______যা' চাও তাই হবে।" জয়গুরু।

দূর্গাপূজা ২০২৩ঃ অষ্টমীর নিবেদন,

অষ্টমীর শুভ সকাল। সমস্ত গুরুভাইবোন ও ফেসবুক বন্ধুদের জন্য পরমপিতার শ্রীচরণে জানাই,

হে দয়াল, শুভ অষ্টমীর সকালে মহাঞ্জলির সময়ে তুমি তাদের মায়ের চরণে অঞ্জলিতে উৎসর্গিত প্রার্থনা পূরণ ক'রে দিও।

আজ মহা অষ্টমী। সকাল থেকে পাশের প্যান্ডেল থেকে মাইকে ভেসে আসছে মহা অষ্টমীর পুজোর মন্ত্র। ভেসে আসছে মাঝে মাঝে অঞ্জলি দেওয়ার জন্য ঘোষণা। ভেসে আসছে অঞ্জলির পবিত্র মন্ত্র। সঙ্গে বহু মানুষের প্রতিধ্বনি। মাইকে যে মন্ত্র ভেসে আসছে সেই মন্ত্র মহা অষ্টমীর পুজোর মন্ত্র নাকি অঞ্জলির কোন তা মন্ত্র জানি না। সেই মন্ত্র পাঠের সময় মন্ত্রশেষে ভেসে আসছে "---------- তস্মৈ শ্রীগুরবৈ নমঃ।" পুজোর মন্ত্র বা অঞ্জলির মন্ত্র সম্পর্কে আমার কোনও ধারণা নেই। কেন মায়ের পুজোর মন্ত্রে বা অঞ্জলিতে বারবার গুরু বন্দনা ঠিক বুঝতে পারলাম না। এই গুরুটা কে যাকে প্রণাম জানাচ্ছে তা আমি জানি না। শাস্ত্রে পুজোর নানা মন্ত্রে যে গুরুবন্দনা আছে এবং প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে গুরুবন্দনায় কাকে কোন গুরুকে প্রণাম জানাচ্ছে, সেই গুরু কোথায় থাকেন, কোন রূপে থাকেন, মূর্ত না অমূর্ত রূপে সেটা জানার ইচ্ছে ছিল কিন্তু কা'কে জিজ্ঞেস করব" যাকে জিজ্ঞেস ক'রে প্রশ্নের উত্তর পাবো সেই মানুষ খুঁজে পেলাম না। অবশেষে কথায় কথায় আমার পরিচিত এক ব্রহ্মণ পূজারীকে জিজ্ঞেস করলাম তিনি পুজোর ব্যস্ততায় পড়ে জানাবেন ব'লে দ্রুত চলে গেলেন।

আর একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম। মাঝে মাঝে ভেসে আসছে, বলো দূর্গা মাঈ কি। প্রত্যুত্তরে ভেসে আসছে , জয়। মনে মনে ভাবলাম, দূর্গা মাঈ কি -র বদলে দূর্গা মা কি হয় কিনা। সবটাই কেমন যেন হিন্দিয়ানার ছাপ পড়ে গেছে মনে হ'লো। বাঙ্গালিয়ানা বোধ হয় লুপ্ত পেতে চলেছে বাংলায়। কি জানি বোধহয় ভুল ভাবছি।

যাই হ'ক এসব কুটকচালিতে গিয়ে কোনও লাভ নেই। যা হচ্ছে হ'য়ে যাক, যে যা চাইছে হ'ক। আজকের শুভ অষ্টমীতে মাইকে ভেসে আসছে অঞ্জলির আবেদন। যারা অঞ্জলি দিলেন বা দেবেন তাদের বলি, আপনারা মায়ের কাছে অঞ্জলির সময় দু'হাত জোর ক'রে দেবতার উদ্দেশ্যে যে ফুল, জল অর্পন করবেন সেই সময় অঞ্জলি বা পুজোর অর্থ বুঝুন না বুঝুন সেই সময় নিজের বা কারও জন্য কোনও প্রার্থনা করবেন না। অঞ্জলি শেষে প্রণাম করার সময়ে মাকে আপনার পবিত্র মনোবাসনা নিবেদন করুন মা নিশ্চয়ই সন্তানের সেই ইচ্ছা পূরণ করবেন। আসলে মায়ের কাছে বা যে দেব দেবীর কাছে ভক্ত পৃথিবীর যে প্রান্তে তার আকুল প্রার্থনা জানায় সেই প্রার্থনা এসে পড়ে দয়ালের চরণে। তা সেই অজ্ঞানী, মূর্খ, অশ্রদ্ধা বা কুৎসাকারী, তর্কবাগীশ বা আর্ত, অর্থাথী, জিজ্ঞাসু, জ্ঞানী যে ভক্তই হ'ক সেই ভক্ত তাঁকে গ্রহণ করুক বা না করুক, মানুক বা না মানুক, শ্রদ্ধা বা অশ্রদ্ধা, প্রেম বা ঘৃণা ইত্যাদি যাই করুক আর না করুক দয়ালের চরণেই তার সেই মায়ের চরণে অঞ্জলিতে নিবেদিত ফুল, জল ইত্যাদি এবং প্রার্থনা এসে পড়ে। সেই দয়াল হলেন সর্বশক্তিমান, সর্বদর্শী, সর্বজ্ঞ, পুরুষোত্তম পরমপিতা একমেবাদ্বিতীয়ম জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীরাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ ও সর্বশেষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। এ মানা আর না-মানা, গ্রহণ ও বর্জন ব্যক্তিগত। তবে শ্রীশ্রীঠাকুরের কথা অনুযায়ী জানা আর মানা দুই ভাই। জানতে গেলে মানতে হবে আর মানতে গেলে জানতে হবে। জানার পথ ধ'রে গেলে অবশেষে মানা আসে। আর, মানার পথ দিয়ে গেলে জানা আসে। লক্ষ্যে পৌঁছোতে গেলে যে কোনও একটা পথ ধ'রে যেতে হবে। নতুবা সব বকোয়াস। তাই তর্ক নিষ্প্রয়োজন।

তবে যেটা বলবার জন্য এই লেখা তা হ'লো, আজকের মহা অষ্টমীর এই পূণ্য দিনে নবমী আসার আগে মায়ের কাছে যা চাইবেন অকপট হৃদয়ে চেয়ে নিন। মা আজ কল্পতরু। কাল বাদে পরশু পরমপিতা আসবেন মাকে নিয়ে যেতে। তাই মাকে নিয়ে যাবার আগে ভগ্ন হৃদয়ে মায়ের কাছে নিবেদিত সব প্রার্থনা পূরণ ক'রে দিয়ে যাবেন। আজ মায়ের কাছে যা চাইবেন তা পরমপিতা পূর্ণ করে দেবেন। মায়ের কাছ থেকে আজ কেউ খালি হাতে ফিরে যাবে না। আজ পরমপিতা অবশ, বিহ্বল। মা ছাড়া পরমপিতা অসম্পূর্ণ। মা রূপে পরমপিতা আসেন আমাদের মনোবাসনা পূরণ করার জন্য। পরমপিতাই পরমমাতা। পরমমাতাকে অঞ্জলি দেওয়া মানেই পরমপিতার চরণে অঞ্জলি। আর তখন যদি পরমপিতাকে ভুলে যায় গুরুভাইবোনেরা তখন প্রার্থনা পূরণ হয় না।

আর সবচেয়ে মূল কথা, আজ মনে কোনোরকম কারও প্রতি দ্রোহভাব রাখবেন না অর্থাৎ কারও অনিষ্টাচরণ, অপকার; শত্রুতা, কলহ, বিরুদ্ধতা; পরাভব, কারও সমালোচনা, নিন্দা, কুৎসা ইত্যাদি পরমপিতার অপছন্দ কোনও কাজ করবেন না, মনে ঠাঁই দেবেন না। অকপট, পবিত্র হৃদয়ে, সরল নির্মল মনে মায়ের কাছে আজকের এই মহাষ্টমীর পূণ্য দিনে প্রার্থনা করুন। যা প্রার্থনা করবেন তাই পাবেন। তবে শর্ত একটাই, একদিনের জন্য হ'লেও হৃদয়ে মনে পবিত্র হ'ন, নির্মল হ'ন। অলমিতি বিস্তারেণ।

সবাই ভালো থাকুন, বিন্দাস থাকুন, আনন্দে থাকুন, পুজো এনজয় করুন।

দূর্গাপূজা ২০২৩ঃ সপ্তমীর নিবেদন,

শুভ সকাল। শুভ সপ্তমী। দয়ালের কাছে প্রার্থনা করি শুভ সপ্তমীতে সবার জীবন আনন্দে ভরে উঠুক, হ'য়ে উঠুক ঝলমলে।
আর দয়াল ঠাকুরের বার্তা আসুন একবার মন দিয়ে পড়ে নিই। আপনি পড়ুন ও সবাইকে পড়ান, পড়তে বলুন।
"সজাগ থেকো,
কারণ কখন প্রিয়পরম আসবেন-----
তা'র ঠিক নেইকো,
তুমি হয়তো আশা করনি যখন্‌
তখনই এসে পড়বেন।"---শ্রীশ্রীঠাকুর।

আপনার ঘর সাজিয়ে রাখুন, জানালা দরজা খুলে দিন, আলো, হাওয়া আর সুগন্ধিতে ভরিয়ে দিন ঘর। পজিটিভ চিন্তার হাওয়ায় ভরিয়ে রাখুন ঘর তাঁর আসার জন্য। হাসিমুখে থাকুন তিনি এলেন বলে। গরীব দুস্থ কেউ এলে তাকে খালি হাতে ফিরিও না। তাকে কিছু দিও। কে জানে কৌন রূপসে নারায়ণ মিল যায়। আর দয়াল প্রভুর জন্য তুলে রেখো যা হ'ক কিছু অর্ঘ।

পুজোর দিনগুলিতে শিশুরা হেসে উঠুক ঘরে ঘরে। শিশুরা আনন্দ পেলে মা সবচেয়ে বেশী খুশী হবেন। কারণ দয়াল ঠাকুর শিশুদের মধ্যেই অবস্থান করেন। তাই শিশুরা যেন কোনও অবস্থাতেই আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয়। তারা যেন এই আনন্দের দিনে কান্নাকাটি না করে। তাদের দিকে স্পেশাল নজর দিন। তারা আনন্দ করছে মানে দয়াল আপনার ঘরে আছেন, আছেন, আছেন। সত্য-সত্য-সত্য, তিন সত্য। দেখবেন সবাই প্রকৃত আনন্দ যাকে বলে সেই আনন্দ পাবেন।

দূর্গাপূজা ২০২৩ঃ ষষ্ঠীর নিবেদন।

আজ ষষ্ঠী। আমার সমস্ত ফেসবুক বন্ধুদের জানাই শুভ ষষ্ঠীর শুভ সকাল। আজকের এই শুভ সকালে মায়ের চরণে প্রণাম জানিয়ে সকলের শুভ কামনা ক'রে শুরু করছি শুভ ষষ্ঠীর এই নিবেদন।
আবহাওয়া দপ্তর সুখবর শুনিয়েছে পুজোয় দুর্যোগের কোনও আশঙ্কা নেই। আশঙ্কা নেই কোনও বৃষ্টির। দয়ালের কাছে প্রার্থনা করি বাচ্চা থেকে বুড়ো, সবাই চুটিয়ে আনন্দ করুক পুজোর এই চারদিন। তবে বড্ড কম আনন্দ করার পক্ষে মাত্র এই চারদিন। কত লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই পুজো আয়োজন হয়। আর দেখতে দেখতে কেটে যায় চারদিন। তার ওপর যদি থাকে বৃষ্টি তাহ'লে তো গোদের ওপর বিষফোঁড়া। যাই হ'ক, মা যেতে না যেতেই নোতুন নোতুন রূপে মা আসবেন আবার ঘরে ঘরে পাড়ায় পাড়ায়; তাই বিদায়ের দুঃখের মাঝে আছে আনন্দের হাতছানি।

যাই হ'ক দয়ালের কাছে প্রার্থনা জানাই পুজোর এই কয়দিন আমার পরিচিত ও অপরিচিত গুরুভাইবোনেরা, সমস্ত অদীক্ষিত বন্ধুরা সবাই ভালো থাকুক, খুব ভালো থাকুক। পরিবারের সবাই মিলেমিশে হাসি আনন্দ উপভোগ করুক। শান্তি সম্প্রীতির হাওয়া ব'য়ে যাক দেশজুড়ে।
গুরুভাইবোনেদের ও সকল বন্ধুদের কাছে আবেদন, আমার দয়ালের মুখের নির্মল সরল মিষ্টি হাসিটা দেখুন আর লেখাটা একটু সিরিয়াসলি পড়ুন।
পুজোর সময় এই ৫দিন ও তার আগে ও পরে কত অঘটন ঘটবে আপনার আমার চারপাশে ঘরে ঘরে। ছেলেমেয়ে, নারীপুরুষের কত রকম সর্বনাশ হবে তার হিসাব কে রাখে। প্রতিবার এই পুজোর দিনগুলিতে কত নারীপুরুষ, কত পরিবার নিজের ভুলে চোখের জল ফেলে আজও বেঁচে আছে। আমার গুরুভাইবোনেদের কাছে অনুরোধ আনন্দ করুন, বিন্দাস আনন্দ করুন, উৎসব এনজয় করুন। কিন্তু ঠাকুরকে জড়িয়ে নিয়ে করুন। মুহুর্তের জন্য ভুলবেন না ঠাকুরকে, ভুলতে দেবেন না পরিবারের কাউকে। মাথা থেকে যেন সরে না যায় ঠাকুর শত আনন্দেও। বেসামাল বৃত্তি-প্রবৃত্তি যেন ঠাকুর থেকে সরিয়ে নিয়ে না যায় আপনাকে দূরে। পুজোর আনন্দে রিপুগুলি অর্থাৎ কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য যেন আপনার প্রশ্রয় পেয়ে বেসামাল না হ'য়ে ওঠে। নিজেকে বিবেকের আয়নায় দেখুন। মনে মনে নিজেকে, নিজের অনিয়ন্ত্রিত আচরণকে, বিশৃঙ্খল স্বভাবকে, খারাপ ব্যবহারকে নিজে শাসন করুন। শয়তানকে কোনও সুযোগ দেবেন না আপনার ও আপনার প্রিয়জনের জীবনে ও ঘরে প্রবেশ করার ও ছোবল মারার। সতর্ক থাকবেন। দ্রোহভাব অর্থাৎ কারও প্রতি অনিষ্টাচরণ, অপকার; শত্রুতা, কলহ, বিরুদ্ধতা ইত্যাদি মনেও স্থান দেবেন না। রাগকে কন্ট্রোল করুন দক্ষতার সাথে নিজের স্বার্থেই। নিজের ইগোকে প্রাধান্য দিয়ে অহেতুক অকারণ ক্রোধকে ডেকে এনে পরিবারের শান্তি নষ্ট করবেন না। প্রকৃতই দয়ালকে মাথায় নিয়ে আসুন আমরা সবাই শ্রীশ্রীবড়দা ও শ্রীশ্রীবড়মার মতো হ'য়ে উঠি। সবাইকে ভালোবাসুন।
আরও বলি, পুজোর দিনগুলিতে ঠাকুরের মতন মিষ্টি হ'য়ে উঠুন । তাঁর মিষ্টি মধুর নির্মল হাসি আপনার ঠোঁটে মেখে রাখুন। মিষ্টি মধুর হ'য়ে উঠুন ঠাকুরের মতো চাউনিতে, কথায়, চলনে আর সবার মনের ব্যথা ঘুচিয়ে দিন এই পুজোর আনন্দের দিনগুলিতে।

আবার বলছি, দয়ালের দয়ার সরল হাসিমুখটা দেখুন ও সবাইকে দেখতে অনুরোধ করুন। দয়ালের মিষ্টি সরল নির্মল হাসিটা নিজের ঠোঁটে বসিয়ে নিন। সকাল থেকে রাত্রি পুজোর দিনগুলি আনন্দে নিজের মতো ক'রে খুশী মনে বাবামা, স্বামীস্ত্রী, পুত্রকন্যা, ভাইবোন সকলে মিলেমিশে ঠাকুরকে মাঝখানে রেখে পুজোর দিনগুলি চুটিয়ে আনন্দ নিংড়ে নিন। ভুলেও অশান্তিকে, অমঙ্গলকে ঘরে প্রবেশ করতে দেবেন না। ঘরের পরিবেশ হাওয়া পজিটিভ রাখুন। মাথা ডিপ ফ্রিজের মতো ঠান্ডা রাখুন। বাচ্চাদের ঘরে চুটিয়ে আনন্দ করতে দিন । তাঁদের আনন্দে বাধা দেবেন না ও বাধা হ'য়ে দাঁড়াবেন না। শৈশব চলে গেলে তারা আর শৈশব ফিরে পাবে না। আর আপনিও শিশুদের নিয়ে আনন্দ করার জন্য তাদের শিশুকাল পাবেন না। সময় দ্রুত চলে যায়। শিশুরা যেন কোনও অবস্থাতেই মন খারাপ ক'রে বসে না থাকে। তাদের দিকে নজর রাখুন। আপনার সন্তানের সঙ্গে, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সবাই মিলে হাসিমুখে ফটো তুলুন পুজোর চারদিন। বাইরের খাবার যত পারবেন কম খাবেন। পারলে ঘরে তৈরী ক'রে খান। পয়সা বাঁচবে, পেটও বাঁচবে। আর খেলে তৎক্ষণাৎ বাড়িতে গ্যাস, অম্বল, আমাশা ও হজমের ওষুধ রাখুন। হোমিওপ্যাথি নাক্স ভোম ২০০, কার্বো ভেজ ২০০, মার্ক সল ২০০ রাখুন। ভালোমন্দ মসালাযুক্ত খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে কয়েক ফোঁটা খেয়ে ফেলুন দয়ালকে স্মরণ ক'রে সকালে ও রাতে। এলোপ্যাথি মেট্রোজিল ৪০০, ফেমোসিড ৩০, O2, ইউনিয়েমজাইম হাতের কাছে রাখুন। ঘরে ও বাইরে একটু খাওয়া উল্টোপাল্টা বাড়াবাড়ি হ'য়ে গেলেই হাতের সামনে রাখা ওষুধ খেয়ে নিন দয়ালের নাম নিয়ে খাওয়ার পরেই। তবে এই কয়দিন বাইরে ও ঘরে খাওয়ার একটু ব্যালান্স রাখুন।
যাই হ'ক, পুজোর দিনগুলির প্রতিটি মুহুর্ত প্রকৃত ঠাকুরকে সাথে নিয়ে আনন্দ উপভোগ করুন। প্রতিজ্ঞা করুন পুজোর দিনগুলি পরিবারের সঙ্গে কাটাবেন ও সবাই মিলে অকৃত্রিম আনন্দ উপভোগ করবেন।
মহাষষ্ঠীর শুভ সকালে দয়ালের কাছে প্রার্থনা করি,
হে জীবন্ত ঈশ্বর দয়াল ঠাকুর আমার, আমার পরিচিত অপরিচিত গুরুভাইবোনেরা ও সকল ফেসবুক বন্ধুরা সবাই ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক, আনন্দে ভরপুর থাকুক, ভুলত্রুটি ও ক্ষতিহীন সফর হ'ক সবার এই চারদিন। তোমার প্রতি বিশ্বাস আসুক, আসুক ভরসা ও নির্ভরতা। তোমায় ভালোবেসে সবাই ধন্য হ'ক। কারণ তুমি যে প্রেমময়! তুমি যে ভালোবাসার মহাসমুদ্র। জয়গুরু।

দূর্গাপূজা ২০২৩ঃ পঞ্চমীর নিবেদন।

এই ভিডিও তৈরীর রূপকার ভিডিও দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন ঠান্ডা মাথায় ভিডিওর বিষয় ভাবতে ও নকল ডিম খাওয়ার হাত থেকে সাবধান থাকতে। ভিডিওকারীকে ধন্যবাদ এই ভিডিও দেখানো ও সাবধান করার জন্য।

এই ভিডিও রূপকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমি তাঁকে ঠান্ডা মাথায় ভাবতে বলি, কোন জিনিস আর বাকী আছে নকল বানানোর? সত্যি মিথ্যে কিনা জানি না চাল, ডাল, তেল, মাংস, বাঁধাকপি, দুধ, ছানা, পনির ইত্যাদি ইত্যাদি সব জিনিস নকল বানানো হচ্ছে দেখা যায় আপনার মতো করা ভিডিওতে। যে কেউ এইসব ভিডিও দেখতে পায় নেট সার্চ করলেই।

তাই নকল ডিম তৈরী এ আর এমন আশ্চর্যের কি? মানুষ নকল তৈরী ক'রে ফেলছে বিজ্ঞানীরা ক্লোন পদ্ধতিতে। পুরুষের পশ্চাদ্দেশে বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পদ্ধতি আবিস্কারে রত বিজ্ঞানীরা! মানুষের সব কাজ এমনকি মানুষের অসাধ্য কাজও ক'রে ফেলবে এমন উন্নত প্রায় মানুষ এমন নকল রোবট মানুষ তৈরী ক'রে ফেলেছে মানুষ। একশভাগ পুরোপুরি যৌন চাহিদা মেটানোর জন্য মানুষ তৈরী ক'রে ফেলেছে একেবারে নিখুঁত উন্নত প্রচন্ড অনুভূতি সম্পন্ন পুতুল নারীপুরুষ! তাও নেট সার্চ করলেই দেখা যায়। সেখানে নকল ডিম এ আর এমন কি কথা?

যাই হ'ক, এই নকল ডিম তৈরীর ভিডিও এখানে তুলে ধরলাম পঞ্চমীর সকালে কারণ হাজার হাজার পুজো প্যান্ডেলে লক্ষ লক্ষ ডিম বিক্রি হবে পুজোর এই কয়দিন। যদিও শুরু হ'য়ে গেছে পথেঘাটে বিক্রি ডিমের নানা রেসিপি নিত্যদিনের মতো; তবে ডিম বিক্রি হবে নিত্যদিনের তুলনায় অনেক অনেক বেশী। কারণ এই কয়দিন পথে হাজার লক্ষ লোকের ঢল।

তাই, আমার আবেদন ভিডিও মেকারদের কাছে এই ভিডিও মানুষের কাছে পাঠানোর সাথে সাথে এই সমস্ত তথ্য সঙ্গে যেখানে তৈরী হচ্ছে এই ডিম সেই ছবি ও সেখানকার ঠিকানা পাঠিয়ে দিন না সরকার, পুলিশ প্রশাসন, মানবাধিকার সংগঠন, কোর্ট ইত্যাদি জায়গায় যেখানে এর প্রতিকার হ'লেও হ'তে পারে। সরকারী ভাবে সাবধান করছে না কেন জনসাধারণকে সচেতন করতে সরকার? কেন জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সংবাদ মাধ্যম টিভিতে, কাগজে, হাটেবাজারে, মাঠেঘাটে প্রচার করছে না এই ভয়ংকর কর্মকান্ড সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে? কতক্ষণ লাগে এগুলি বন্ধ করতে? সাধারণ মানুষের কি ক্ষমতা আছে মাফিয়া ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার? ডিম তৈরীর যে প্রক্রিয়া দেখাচ্ছেন সেটা যেখান থেকে ভিডিও করেছেন সেই জায়গা ও কারখানার ছবি এবং লোকজনের ছবি এবং যারা জড়িত তাদের ছবি ফাঁস করুন না প্রকাশ্যে। তুলে দিন তথ্যপ্রমাণ অপরাধ দমন শাখার হাতে। এইসব ভিডিও ক'রে এখনও পর্যন্ত 3.1k লাইক ও 1.1k শেয়ার হ'য়ে কি লাভ হয়েছে? এই অপরাধ বন্ধ হয়েছে? মানুষ সচেতন হয়েছে? মানুষের পক্ষে সম্ভব তফাৎ ধরতে পারা? যেটা সহজ সরকারী কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে এই মারণযজ্ঞের জন্য মৃত্যুদন্ড দেওয়া তা না ক'রে গোড়া কেটে আগায় জল দিয়ে কি হবে? যত্তসব লোকদেখানো বকোয়াস।

কার দোষ? অসৎ ব্যবসায়ীদের? জনগণের? সংবাদ পরিবেষণ কারীর? সংবাদ মাধ্যমের? জনপ্রতিনিধির? রাজনৈতিক দলের? পুলিশ প্রশাসনের? অপরাধ দমন শাখার? নাকি সরকার ও সামাজিক সুরক্ষা যোজনা বিভাগ? অপরাধ দমন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও আধিকারিক? খাদ্য দপ্তর? কে? কে দায়ী? কার দায়িত্ব এই খাদ্যে ভেজাল যা মৃত্যুদন্ডনীয় অপরাধ সেই অপরাধের ভয়ংকর ক্ষতি থেকে সাধারণ গরীব জনগণকে বাঁচাবার? কেউ আছে? কেউ নেই। এ তোমার আমার ভাগ্য। যা কিছু কষ্ট, যা কিছু যন্ত্রণা সব ভাগ্যদোষে। ভাগ্যদোষে আজ আমাদের এই অবস্থা।

তবে হ্যাঁ উপায় একটা আছে। আছে বাঁচার উপায়। হয় খেয়ো না এইসমস্ত পথেঘাটে, হোটেলে রেষ্টুরেন্টে খাবার (এই কিছুদিন আগেও দেখেছো রেষ্টুরেন্টে, হোটলে ভাগারের সব জীবের মাংসের কারবার। বিচার কি হয়েছে? কিছু হয়েছে? হয়নি)।

নতুবা খাও, বিন্দাস খাও, আনন্দে খাও, খেতে খেতে চারপাশের পুজোর ঝাঁ চকচকে সিচুয়েশন এনজয় করো। আর খেয়ে বিপদে পড়লেই চলে যাও ধর্মজগতে। সেখানে আছে বাঁচার উপায়। তা হ'লো ধর্ম, ঈশ্বর, ভগবান তথা হাজারো দেবদেবীর মন্দির, পুজোপাট নানা ধর্মীয় আচরণ।

খেয়ে বিপদে পড়লেই চলে যাও কোনও মন্দিরে। চড়াও ভোগ। যজ্ঞ, পুজোপাট-এর আয়োজন করো। চলে যাও কোনও সাধুবাবা, বাবাজী, মাতাজী, ধর্মাত্মার কাছে। ধর্মকথা শোনো। শোনো প্রবচন। এ তোমার কর্মফল। এ তোমার পাপের বিচার। দুধ, ঘি খাওয়াতে হবে না শিশুদের পরিবর্তে দুধ, ঘি, ফুল, বেলপাতা, চন্দন চড়াও দেবতার মাথার ওপর। এ তোমার গ্রহের ফের। আকাশের ভগবান ও গ্রহ দেবতাদের সন্তুষ্ট করো। নানা রঙের পাথর ও আংটি, তাবিজ, মাদুলি, লাল সুতো কালো সুতো, লোহা ধারণ করো হাতে ও কোমরে। ধূপ ধুনো ইত্যাদি ইত্যাদি নানারকম দ্রব্য ঘরে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে সেই ধোঁয়ায় বাস্তু দোষ খন্ডন করো, অশুভ আত্মা তাড়াও। বিশ্বজুড়ে ধর্মজগতে আরও অনেক অনেক নানা বিভিন্ন উপায় আছে। সেগুলি জেনে নাও। পাগলের মতো, উন্মাদের মতো, অন্ধের মতো সেগুলি অনুসরণ করো। অভীষ্ট ফল পাবেই। মনোকামনা, বাসনা পূর্ণ হবেই সেইসব কর্মকান্ডের চমৎকারিত্বে। শরীর, মন সুস্থ হ'য়ে যাবে। খাদ্যে ভেজালের মধ্যে দিয়ে শরীরের নষ্ট হ'য়ে যাওয়া লিভার, কিডনি ইত্যাদি অঙ্গ সব ভালো হয়ে যাবে ধর্মজগতের আঙিনায় ধর্মীয় জগতের মানুষের কল্যানে, তাঁদের কর্মকান্ডের ও আকাশের ঈশ্বর, অমূর্ত ও বোবা ভগবান ইত্যাদির চরণপূজার অলৌকিক চমৎকারিত্বে। রোগ, শোক, গ্রহদোষ, বুদ্ধিবিপর্যয় ও দরিদ্রতা থেকে মিলবে নিশ্চিত মুক্তি। কোনও চিন্তা নেই। মা এসেছেন! মায়ের কাছে প্রার্থনা করো, আবেদন করো, সমস্ত বিপদ থেকে মা দশ হাতে রক্ষা করবেন, উদ্ধার করবেন তোমাদের। মাভৈ!!!!!!!!!

এছাড়া জানি না আর কোনও পন্থা আছে কিনা খাদ্যে ভেজালকারী মাফিয়াদের হাত থেকে বাঁচার।

Saturday, December 30, 2023

কবিতাঃ ২০১৯ স্বাগত!

পুরোনোকে বিদায় দিয়ে নতুনকে জানাতে স্বাগত
রাস্তা থেকে ডিস্কোথেক উচ্ছাস উন্মাদনা সর্বত্র!
ঘরে বাইরে চলছে জমিয়ে আড্ডা আর খাওয়াদাওয়ার
পরিকল্পনা! রাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাচ্চা থেকে বুড়া,
ছুঁড়ি আর ছোড়া সবার বাড়ছে জল্পনা আর কল্পনা!
কলকাতা নাকি তিলোত্তমা!? ক্যালকাটা ক্লাব আর স্পেস সার্কেল,
সিসিএফসি, ক্যালকাটা বোট ইত্যাদি ক্লাব তার নমুনা!
জেলা থেকে শহর আজ পার্ক স্ট্রিটে একাকার!
নতুন বছর ২০১৯ কে স্বাগত জানাতে তিলোত্তমা তৈরি আবার!
মার ছক্কা আর টান ভদকা সাথে খাও মাংস কালিয়া পোলাও
জিন শেরী শ্যাম্পেন রাম ডুবে থেকে নাও আরাম
সাথে স্বপ্ন পরীদের নিয়ে টুক ক'রে ডুব দিয়ে আঁধারে পালাও!
২০১৯ তোমায় স্বাগত! বৃত্তি প্রবৃত্তির সুরশুড়িতে ভরা
অনেক মজা আর আনন্দ আগত! ২০১৯ তোমায় স্বাগত!

উপলব্ধিঃ ধ্বংস আসন্ন।

ইশ্বরবিশ্বাসীরাই বিশ্বাস করে না ঈশ্বর স্বয়ং মানুষ রূপে মানুষের মাঝে জন্ম নেন। হিন্দুরা তেত্রিশ কোটি দেবদেবীতে বিশ্বাসী। তারা জ্যান্ত ঈশ্বরে ততটা আগ্রহী বা আসক্ত নয় যতটা তীব্র আগ্রহ বা আসক্ত অমূর্ত বা বোবা ভগবানে অর্থাৎ যে ভগবানকে দেখা যায় না বা যে ভগবান কথা বলতে পারে না সেই ভগবান বা ঈশ্বরে তারা বিশ্বাসী ও আসক্ত। তারা মূর্তি পূজায় বিশ্বাসী কিনা জানি না তবে বেশ আনন্দ পায়, ফুর্তি করে মূর্তি পূজা নিয়ে; যে আনন্দ পায় না রক্তমাংসের জীবন্ত ঈশ্বরে।

আর যারা মূর্ত অর্থাৎ রক্তমাংসের জীবন্ত ঈশ্বর বা ভগবানে বিশ্বাস করে তারা তাঁর কথা বিশ্বাস করে না। ঈশ্বর যে আবার আসবেন ব'লে বারবার বলে যান সে কথা তারা জানে না, আর যারা জানে তারা মানে না তাঁর আবার আসা নোতুন রূপকে। হিন্দুধর্মের ইশ্বরবিশ্বাসীরা অমূর্ত ভগবান বা আকশের ঈশ্বরকে বেশী মানে, বিশ্বাস করে। আর ঈশ্বর বিশ্বাসীদের ঈশ্বর বিশ্বাস ভয় বা দুর্বলতাকে আশ্রয় ক'রে। তাদের ভক্তি ভয়ে ভক্তি। হিন্দুধর্মাবলম্বী ঈশ্বর বিশ্বাসীরা রক্তমাংসের ঈশ্বরে ভয় বা বিশ্বাস করে না বা রাখে না। আবার অন্য ধর্মাবলম্বীরা তাদের জীবন্ত ঈশ্বরকে ঈশ্বরের পুত্র, ঈশ্বরের মেসেঞ্জার ইত্যাদি ব'লে মনে করে স্বয়ং ঈশ্বর মনে করে না আর মনে করে সেখানেই তাদের আসা শেষ আর আসবে না। রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ, অনুকূল রূপে আট আটবার আসা সত্ত্বেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন ও হচ্ছেন বোঝাতে ঈশ্বরবিশ্বাসীদের যে তিনি একজনই বারবার এসেছেন আর বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন বা হচ্ছেন তাঁর অনুগামীদের দ্বারাই। ঈশ্বরের বর্তমান জীবন্ত রূপ বারবার তাঁর পূর্বরূপকে স্বীকার করার কথা বা মানবার কথা বলে গেছেন। ব'লে গেছেন তাঁর পূর্বপূর্ব রূপকে মাথায় নিয়ে বর্তমান রূপকে গ্রহণ করার কথা। কিন্তু কে মানে কার কথা? অনেক ঈশ্বর ভক্ত আছেন যারা নিজেরাই ঈশ্বর সেজে ঈশ্বরের আসনে বসে গেছেন। অনেক সাধক আছেন যারা বুঝেও না বোঝার মতো থাকেন। ঈশ্বরকে, ঈশ্বরের কথাকেই বালখিল্য বানিয়ে দিয়ে ঈশ্বর বিশ্বাসী ভক্তমণ্ডলী নিজেরাই সর্বজ্ঞ সেজে বসে গেছে।

কেন এমন হ'লো? এর কারণ কি?

এমন হ'লো কারণ এই যুগ হ'লো ঘোর কলি যুগ। এ যুগে ধর্ম এক ভাগ আর অধর্ম তিন ভাগ। তাই প্রকৃত ধর্মজ্ঞানীরা ও প্রকৃত ঈশ্বরবিশ্বাসীরা এ যুগে সংখ্যালঘু। আর নাস্তিক বা ধর্ম ও ঈশ্বর অবিশ্বাসী বা অধর্মাচারীরা এবং তথাকথিত ভীরু ও মানসিক দুর্বল, ঈশ্বরে ভয়ে ভক্তি ও ঈশ্বরের কাছে নিতেই লেলিহান অজ্ঞানী মূর্খ ভক্তের দল সংখ্যাগুরু। আর এই দ্বিতীয় শ্রেণীর সংখ্যাগুরুর জন্য প্রথম শ্রেণীর সংখ্যাগুরুর দল আরও সুযোগ পেয়ে যায় তাদের অধর্মের রথ ভয়ংকর তীব্র গতিতে চালাতে। তাই কলি যুগের তিন ভাগ অধর্মের কাছে এক ভাগ ধর্মের দমবন্ধ অবস্থা। আর তার ফলে তখনি নেবে আসে মহা বিপর্যয়, ধ্বংসের মহাপ্রলয়। যা আসন্ন।
(৩১শে ডিসেম্বর'২০২২)

উপলব্ধি। কোয়ালিটি আর কোয়ান্টিটি।

চারদিকে যা চলছে তা কবিগুরুর দেখানো পথেই চলছে। তাঁর কথায় বলতে পারি,
"আমরা সবাই রাজা আমাদেরই রাজার রাজত্বে।"
কবিগুরুর একনিষ্ঠ ভক্ত শিষ্য বলেই না তাঁর কথা মেনে চ'লে বিষ পান ক'রে আনন্দে গেয়ে উঠি,

"আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান
প্রাণেরও আশা ছেড়ে সঁপেছি প্রাণ
আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান।"

একেই বলে কোয়ান্টিটি মা কোয়ান্টিটি! আর কোয়ালিটি দাদা কোয়ালিটিই। ঠাকুরই তো বলেছেন দোয়ারে দীক্ষা দিতে, বাকীটা ঠাকুর বুঝে নেবেন। কোয়ান্টিটি থেকে কোয়ালিটিতে উদ্ভিন্ন হ'তে সময় লাগবে বৈকি! কি আর করা যাবে? তাই অন্যের চরকায় তেল না দিয়ে নিজের চরকায় নিজে তেল দাও না বাবা; তাইলেই তো হয়। নিজের চরকা যে তেলের অভাবে জং পড়ে ঝুরঝুরে হ'য়ে ঝ'রে পড়ে যাচ্ছে সেদিকে একটু নজর দাও না বাবা তাহ'লে যে চরকাটা বেঁচে যায়; তাই নয় কি? যার যা ইচ্ছা তাই করুক। যার যাকে ভালো লাগে লাগুক। ঠাকুর ছেড়ে যার যার প্রতি প্রেম জাগে জাগুক।

শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন,
"বাসতে ভাল এসেরে তুই বাসলি ভাল কা'রে,
প্রতিদানেও তাই পাবি তুই মজলি নিয়ে যারে।"

এই দৃশ্য আমরা হামেশাই দেখতে পাই মন্দিরে মন্দিরে।

যাই হ'ক, শ্রীশ্রীআচার্যদেব বললেন, "প্রদীপের নীচে অন্ধকার থাকে থাকুক। সেইটা প্রদীপের অন্ধকার; শিখার নয়। শিখা আলো দেখাচ্ছে সামনে।" প্রদীপের নীচের অন্ধকার তো আমার লক্ষ্য নয়। আমার লক্ষ্য প্রদীপের আলো। সেই আলো সামনে আলোকিত ক'রে পথ দেখাচ্ছে। যার ইচ্ছা সেই আলো দেখে দেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে আর যার প্রদীপের নীচের অন্ধকারের দিকে লক্ষ্য সে সেই অন্ধকারে গহীন গহ্বরে ডুবে যাবে। তাঁর শেষের সেদিন ভয়ংকর অন্ধকার। দয়ালের ভয়াল রূপের বিরাশী সিক্কার এক বিশাল থাপ্পড় অপেক্ষা করছে তার জন্য। তাই ওসব দেখাদেখি ছেড়ে আসুন ততক্ষণ দেখি নিজেকে কোয়ালিটি সৎসঙ্গী ক'রে তুলতে পারি নাকি। একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েন দাদা ও মায়েরা।

শ্রীশ্রীদাদার লিখে যাওয়া গানের কথা স্মরণ ক'রে লেখা শেষ করছি।
শ্রীশ্রীদাদা বললেন,
"ওরা যা বলে বলুক, ওরা যা করে করুক
তোমার পথে চরণ আমার টলবে না।"
( ৩০শে ডিস্রম্বর' ২০২২ )

Wednesday, December 27, 2023

গানঃ আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে

আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে।২


তোমার চোখের মায়াবী আলো
আমার বুকে যেমনি এলো
অমনি আমার হৃদয়খানি
ভালোবাসায় গেল ভরে।।
আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে।

তোমার মুখের মধুর হাসি
দেখে নয়ন জলে ভাসি।
মধুর হাসির গভীর ছোঁয়ায়
ঢেউ তোলে হৃদ মাঝারে।।
আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে।



ভালো আছি ভালো রেখো
ঐ রাঙা চরণে ঠাই দিও;
রেখো তোমার চরণ যুগল
অধমের এই বুকটাতে।
আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে।২






Sunday, December 24, 2023

উপলব্ধিঃ তাত্ত্বিক আমেজ!

তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে আছো মণি তাত্ত্বিক আমেজেই ডুবে থাকো! তাত্ত্বিক আমেজ মানেই গরম কাপড়ে নিজেকে জড়িয়ে নিয়ে চুকচুক ক'রে সূরা পান করা আর ঢুলুঢুলু চোখে রঙিন স্বপ্ন দেখা। পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ টেনশন বিহীন আরামদায়ক কাজ হ'লো তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে দিনরাত ভুলভাল তত্ত্ব কথার জাবর কাটা আর জাবর কাটা! তাত্ত্বিক আমেজ মানেই নিজে কিছু না ক'রে অন্যকে খোঁচা মেরে মেরে অন্তঃসারশূন্য জ্ঞানগর্ভ কথার ফুলঝুরি ছোটানো! তাত্ত্বিক আমেজ মানেই অন্যের ঘাড়ে বন্দুক রেখে আন্দাগুনদা কথার ট্রিগার টেপা। তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে আছো মণি? তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে থেকে কখন যে সকাল কেটে দুপুর ঘনিয়ে শেষের সেদিনের সন্ধ্যে নেমে আসে তার খেয়াল থাকে। তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা মানুষ হঠাৎ হঠাৎ ক'রে ঘুমের ঘোরে লাফ দিয়ে ওঠার মত বিপ্লবী হ'য়ে উঠে দিগ্বিদিক জ্ঞান শূন্য হ'য়ে পা ছুঁড়তে থাকে! তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা মন শেষের দিনে হ'য়ে ওঠে ভারাক্রান্ত এক সের থেকে এক মন! তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা জীবন শীতের বিকেলে ধোঁয়া ওঠা চায়ে চুমুক দিয়ে ফুলের বাগানে বাগান চর্চায় মাততে চায়। এই তো জীবন! তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা নেশাগ্রস্থ জীবন!!
(লেখা ২৪শে ডিসেম্বর'২০১৯)

Saturday, December 23, 2023

কবিতা/গানঃ তোরা আয় আয় আয় সবাই মিলে আয়

তোরা আয় আয় আয় সবাই মিলে আয়
দয়াল প্রভুর চরণ তলে
(তোরা) সবাই মিলে আয়।
দয়াল প্রভুর তরে পরাণ কেমন করে
হাসি আর আঁখিতে মন কেড়ে নেয়।
আয় আয় আয় সবাই মিলে আয়।
দয়াল প্রভুর চরণ তলে তোরা
সবাই মিলে আয়।

দয়াল প্রভুর হাসিতে হৃদয় হারায়
মিষ্টি মধুর বুলি তে পরাণ জুড়ায়
প্রেমের বারিষ ঝরে দুঃখ ব্যথা হরে
ব্যথাহারী দয়াল প্রভু ডাকছে যে তোমায়।
ব্যথাহারী দয়াল প্রভু ডাকছে যে আমায়।

জামতলার ওই ঘরে দয়ালে শুধায়
প্রাণে ব্যথা দিলে তোমার কেমন বলো হয়?
আঁখি জলে ভাসে তবু দয়াল প্রভু হাসে
কান্না ভেজা গলায় প্রভু বুকেতে জড়ায়।

প্রেম মদিরায় ভাসে দয়াল প্রেমময় নাম
প্রেমের জোয়ার তুলে চলো দেওঘর ধাম
দিঘরিয়া পাহাড়ে দারোয়ার জলেতে
বাতাসে আর ঢেউয়ে নাচে অনুকূল নাম।

শাখে শাখে পাখি ডাকে মিষ্টি মধুর সুরে তে
কত শোভা চারিদিকে আকাশে বাতাসে
দয়াল প্রভুর হাসিতে মুক্তো ঝ'রে পড়ে
সেই হাসিতে জুড়ায় হৃদয় দেহ-মন প্রাণ।


(তোরা আয় আয় আয়---- মনমোহিনী নন্দন ---- সুরে)

কবিতা/গানঃ শরীর ভাঙা মন ভাঙা

শরীর ভাঙা মন ভাঙা হৃদয় ভাঙা হয়
ইষ্ট টানে প্রবল হ'লে বৃত্তি ভাঙা হয়।

আগুন জ্বলে আগল ভাঙা হয় যে প্রাণে প্রাণে
হয়রানিতে ভাঙা জীবন (হয়) জোড়া ইষ্টটানে
বুকেতে ঐ বুক ভাঙা প্রেমের সুরা বয়
ইষ্ট টানে প্রবল হ'লে বৃত্তি ভাঙা হয়।

জনমে হয় সুরত ভাঙা বলো তো কখন?
আগল ভাঙা রিপুর তালে বৃত্তি প্রবল যখন
আঁতুড় ঘরে জীবন ভাঙা প্রথম প্রভাতে
দয়াল যখন থাকে না ঐ ঘরে দিনেরাতে
তাঁর অভাবে সুর ছাড়া যে জীবন ভাঙা হয়।
ইষ্ট টানে প্রবল হ'লে বৃত্তি ভাঙা হয়।

(শিমূল রাঙা পলাশ রাঙা গানের সুরে)


কবিতা/গানঃ মর্মে মর্মে শরমে মরি যে

মর্মে মর্মে শরমে মরি যে কি দিয়ে পুজিব এ বেলা?
হারিয়ে জীবন শেষেতে এখন তব চরণে ভিড়িয়েছি ভেলা।
তুমি যে দয়াল বিধিও ভয়াল তুমি যে প্রেমের ধারা
তোমার বাঁশরি তোমার ইশারা করে মোরে গৃহছাড়া।
কুসুম যেমন পাপড়ির বুকে তেমনি আমাতে তুমি
তোমার চরণে সঁপেছি জীবন শুধু তুমি আর আমি।

বুকের পাঁজরে জ্বালি যে আগুন সে বজ্রানল যে তুমি
আঁধার রাতে ঝড় বাদলেতে বাড়িয়ে হাতখানি
নিয়েছো জড়ায়ে বুকেতে আমায় শুনিয়ে আশার বাণী।
তোমারে হেরিয়া পেয়েছি আমার বাঁচার দিশাখানি।
কুসুম যেমন পাপড়ির বুকে তেমনি আমাতে তুমি
তোমার চরণে সঁপেছি জীবন শুধু তুমি আর আমি।

'বৃত্তি রঙ্গিন আমারই জীবন তোমারই চরণ তলে
হৃদয় আমার কাঁপে যে তোমার মুখপানে চেয়ে চেয়ে।
তোমারি চলন তোমারি বলন প্রাণেতে আরাম আনে
জপি তব নাম গাহি তব গান আমারি মনের বীণাতে।
কুসুম যেমন পাপড়ির বুকে তেমনি আমাতে তুমি
তোমার চরণে সঁপেছি জীবন শুধু তুমি আর আমি।

শয়নে স্বপনে তুমি জাগরণে থাকো যে তুমি দয়াল
শিরায় শিরায় পাই যে তোমায় তুমি বিনা আমি বেহাল।
তুমি যে প্রাণ ভোমরা আমার তুমিই যে জীবন স্বামী
লহ মোর প্রণাম জপি তব নাম জীবন জুড়ে শুধু তুমি।
কুসুম যেমন পাপড়ির বুকে তেমনি আমাতে তুমি
তোমার চরণে সঁপেছি জীবন শুধু তুমি আর আমি।
(বর্ণে গন্ধে ছন্দে গীতিতে সুরে লেখা)

কবিতা/গানঃ প্রেম পেলে না প্রভু।

ও ও ও
প্রেম পেলে না প্রভু।
প্রেম দিলে যে শুধু
আমি যে বড়ই পাপী।
আমি কি নিয়ে বাঁচি।
প্রেম পেলে না প্রভু।

প্রেম পেলে না
পেলে না, পেলে না প্রভু
প্রেম দিলে যে শুধু
প্রেম পেলে না প্রভু
প্রেম দিলে যে শুধু
আমি যে বড়ই পাপী।
আমি কি নিয়ে বাঁচি ।
প্রেম দিলে যে শুধু।

ও ও ও
তুমি যে বাজাও বাঁশি
প্রেমের বাঁশি পড়ায় ফাঁসি,
মধু ভরা ঐ হাসি
আমি কি নিয়ে বাঁচি?
প্রেম পেলে না প্রভু
প্রেম দিলে যে শুধু
আমি কি নিয়ে বাঁচি?
প্রেম পেলে না প্রভু।

আঁখি তোমার দেখায় দিয়া
আঁধারেতে আমার হিয়া
আমি যে আজ একাকী
আমি যে বড়ই পাপী।
আমি কি নিয়ে বাঁচি?
প্রেম পেলে না প্রভু
প্রেম দিলে যে শুধু
আমি কি নিয়ে বাঁচি?
প্রেম পেলে না প্রভু।

আলোময় তুমি প্রভু
আমার তরে আঁধার শুধু
রূপে রসে আছো তুমি
আমি কি নিয়ে বাঁচি?
দেখা দিলে না প্রভু।

(মন দিলে না সখি সুরে লেখা)

কবিতা/গানঃ তুমি জীবন দিলে

তুমি জীবন দিলে মরণ নিলে তার নেইকো তুলনা।
তুমি যে আমার প্রাণ ভোমরা তাই তো জানতাম না।২
কত ভালবাসো আমায় তুমি তাইতো বুঝতাম না ২
তুমি আমার প্রাণ ভোমরা তাই তো জানতাম না।
তুমি জীবন দিলে মরণ নিলে তার নেইকো তুলনা।
তুমি আমার প্রাণ ভোমরা তাই তো জানতাম না।


ভালো বাসা দিলে আশা দিলে ঝড়বাদলে (হাত) ছেড়ে দিলে না
তোমার দয়ায় জীবন হয় যে মধুর তাই তো বুঝতাম না।
আঁধার রাতে ঐ যমের হাতে ছেড়ে দিলে না ২
হঠাৎ এসে (হাত বাড়িয়ে) নিলে তুলে মরতে দিলে না।
তুমি জীবন দিলে মরণ নিলে তার নেইকো তুলনা।
তুমি যে আমার প্রাণ ভোমরা তাই তো বুঝতাম না।২

তোমার দেওয়া জীবন (আমার) দিলাম তোমায় ফিরিয়ে
অশ্রুজলে (দয়াল) চরণ তোমার দিলাম মুছিয়ে।
তাই তোমার চলার পথে জীবন আমার দিলাম বিছিয়ে
(দয়াল) প্রভু আমার বুকে তোমার চরণ যুগল রাখো সাজিয়ে।।
তুমি জীবন দিলে মরণ নিলে তার নেইকো তুলনা।
তুমি আমার প্রাণ ভোমরা তাই তো বুঝলাম না।২

(তুমি দুঃখ দিলে গানের সুরে লেখা------)


Wednesday, December 20, 2023

কবিতা: সরল অংক!

জীবনটা কিন্তু সরল অংক 
শুধু শুধুই তাকে করছি বা করেছি জটিল!
অঙ্কের যত নিয়ম কানুন 
ক'রে দিয়ে জীবন থেকে বাতিল!
জীবনের অঙ্কটা কিন্তু সরল 
যদি না জন্মবিজ্ঞানে থাকে ভুল!
যে জীবন জন্মালো তার কি দোষ? 
তাকে কিন্তু দিতে হবে মাশুল!
জীবনটা কিন্ত অংক সরল 
তাকে গোঁজামিল দিয়ে চাইছি মেলাতে
না মিললে পরে জীবন অংক 
দিচ্ছি দোষ সমাজ ব্যবস্থাকে!
দিচ্ছি দোষ শিক্ষা ব্যবস্থার, 
দিচ্ছি দোষ রাজনীতি আর ধর্মের
কিন্তু দেখছি না দোষ আমার-তোমার, 
দেখছি না দোষ জীবনযাপনের!
মুষ্টিবদ্ধ হাত নিয়ে আজ যে শিশু জন্মায় 
কোথায় দোষ, কোথায় ত্রুটি
কাল যখন তার মুষ্টিবদ্ধ হাত 
আলগা হ'য়ে নিচে ঝুলে যায়!?
জীবন কিন্তু এক সরল অংক 
যে সরলরেখায় চলে।
মেইন লাইন ছেড়ে কর্ড লাইনে 
চলে যায় বাপ-মায়ের ভুলে।
বাপ-মাকে বুঝতে হবে 
ছেলের জীবন মাঝে এত ত্রুটি কিসের?
জন্মগত ত্রুটি আর পরিবেশগত ত্রুটির মাঝে 
ফারাক নয় উনিশ-বিশের!
পরিবেশগত ত্রুটির মাঝে বড় হওয়া জীবন 
যদিও শোধরানো যায়,
ফিরে আসে মেইন লাইনে। 
কিন্তু জন্মবিজ্ঞানে থাকলে ত্রুটি
শোধরানোর নেই কোনও বিধান 
বিধাতার জন্ম আইনে!
তাই তো বলি, 
জীবন কিন্তু একটা সরল অংক
ক'রো না তাকে বেমতলবে অকারণ জটিল
শেষের সেদিন হবে কিন্তু ভয়ঙ্কর ভয়াবহ কুটিল!
( লেখা ২১শে ডিসেম্বর'২০১৯)

Wednesday, December 13, 2023

কবিতাঃ বহে আনে মরণ?


ঈশ্বর পূজার নামে বৃত্তি পূজায় 
তুমি দিচ্ছ তেড়ে শান;
বৃত্তি প্রবৃত্তির গিঁটের গেঁড়োয়
হবে কিন্তু খানখান। বন্ধু! সাবধান।

জীবন তরী যদি বাঁধা আছে তোমার 
ঠাকুর অনুকূলে
তবে জীবন জুড়ে কেন
ঘনায় অন্ধকার!?
কেন জীবন যায় ব'য়ে 
বাঁচা-বাড়ার প্রতিকুলে!?

তাঁর মিশন রথের দড়ি ধ'রে 
মারছো কেন টান!?
তাঁর চলাই যে তোমার চলা,
সেই চলার পথে বাধা হ'য়ে 
কেন করছো মৃত্যুকে আহ্বান!?

ঠাকুর আর আমার মাঝে
নেই কেউ, নেই তুমি;
তেমনি ঠাকুর আর তোমার মাঝেও 
নেই কেউ, নেই আমি। 
তাই আজও হ'য়ে একাত্ম 
আছি তুমি আর আমি!!

প্রাজ্ঞতা দিয়ে আমার লাভ কি 
যদি সেই প্রাজ্ঞতা শেখায় অশ্রদ্ধা, 
শেখায় আমায় ভাঙন!? 
এই জীবন ব'হে লাভ কি 
যদি জীবন ব'হে আনে মরণ!?
( লেখা ১৩ই ডিসেম্বর;'২০১৭)_









প্রবন্ধঃ ৩৭৭ ধারা কী

(ভারতীয় দণ্ডবিধি)
• যে কোনও ব্যক্তি স্ব-ইচ্ছায় কোনও পুরুষ, মহিলা বা পশুর সঙ্গে প্রকৃতির নিয়মবিরুদ্ধ যৌন ক্রিয়ায় লিপ্ত হলে তার সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন বা ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও জরিমানা হতে পারে।

এখন প্রশ্ন............
কোন ব্যক্তি স্ব-ইচ্ছায় পুরুষ বা মহিলার সঙ্গে প্রকৃতির নিয়ম বিরুদ্ধ যৌন ক্রিয়ায় লিপ্ত হ’তে পারে কিন্তু পশুর ক্ষেত্রে স্ব-ইচ্ছা ব্যাপারটা কি রকম ঠিক পরিষ্কার হ’ল না। স্ব-ইচ্ছা ব্যাপারটা তো উভয়ত!

একজন পুরুষ একজন পুরুষের সঙ্গে, একজন নারী একজন নারীর সঙ্গে স্ব-ইচ্ছায় প্রকৃতির নিয়ম বিরুদ্ধ যৌন ক্রিয়ায় লিপ্ত হ’লে ধরে নিতে হবে উভয়পক্ষেই সম্মতি আছে। সেক্ষেত্রে স্ব-ইচ্ছায় মিলিত হওয়া সত্ত্বেও তার শাস্তির বিধান আছে তা’ না-হয় মানা গেল কারণ বলা হচ্ছে তা’ প্রকৃতি বিরুদ্ধ। কিন্তু একটা পশু কি ক’রে যে কোন ব্যক্তির সঙ্গে প্রকৃতি বিরুদ্ধ যৌন সম্পর্কে সম্মতি দেবে বা প্রকৃতি বিরুদ্ধ যৌন সম্পর্কে নিজের ইচ্ছে আছে তা বোঝাবে? ব্যাপারটা বোঝা গেল না। সেক্ষেত্রে স্ব-ইচ্ছা ব্যাপারটা একতরফা অর্থাৎ প্রকৃতি বিরুদ্ধ তো বটেই সঙ্গে শক্তি প্রয়োগ জড়িত। এবং সেটা অবশ্যই মানুষের ওপর বর্তায় কারণ কোন পশু স্ব-ইচ্ছায় মানুষের সঙ্গে বল প্রয়োগে যৌন ক্রিয়ায় লিপ্ত হ’য়েছে এমন ঘটনা প্রকৃতির বুকে পৃথিবীতে কোথাও ঘটেছে এমন নজির জানি না আছে কিনা। উপরন্তু মানুষ তার অসুস্থ রোগগ্রস্থ বিকৃত কামনায় পশুকে প্রকৃতি বিরুদ্ধ যৌন ক্রিয়ায় লিপ্ত হ’তে জোর ক’রে বাধ্য করেছে শোনা যায়! যে কোন ব্যক্তির প্রকৃতি বিরুদ্ধ পশুর ক্ষেত্রে যৌন সম্পর্ক বলতে কি বোঝায়? মানুষে মানুষে প্রকৃতি বিরুদ্ধ যৌন সম্পর্ক আর মানুষে পশুতে যৌন সম্পর্ক কি একই সারিতে, একই মাত্রায় বিচারাধীন? মানুষের মধ্যে সমলিঙ্গতে যৌন সম্পর্ক যদি অপরাধ হয় তাহ’লে মানুষে-পশুতে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে কি বলা হবে? শুধু অপরাধ না-কি অন্য আরও কিছু? আর কেনই বা মানুষে-পশুতে যৌন সম্পর্ক অপরাধ হবে? এ-ক্ষেত্রেও কি মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ নয়? উভয় ক্ষেত্রেই কি একই অপরাধ, একই আইন, একই রায় প্রযোজ্য? মানুষে-পশুতে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে কার ইচ্ছে প্রাধান্য পায়? উভয়ের ইচ্ছের প্রকৃতি কি এক? পশুর ইচ্ছের ক্ষেত্রে যদি কখনো উন্নত প্রতিফলন ঘটে আর মানুষের ক্ষেত্রে যদি প্রকৃতি বিরুদ্ধ ও নিম্ন ইচ্ছের প্রতিফলন ঘটে সেক্ষেত্রে আইন কি চোখে দেখবে ব্যাপারটাকে? এ-ক্ষেত্রে মৌলিক অধিকারের দাবী সম্পর্কে আইন কি বলছে? সমাজবিজ্ঞানে বর্ণিত মানুষ আর পশুর মধ্যে আচরণ, চালচলন, হাবভাব, ব্যবহার অর্থাৎ বিহেভিরিয়াল সায়েন্স এবং বায়োলজিক্যাল-এর যে সমীকরণ সেই অনুযায়ী আইন রচনা বা শাস্তি বিধান কি সম পর্যায়ের? মানুষ ও পশুর আবিধানিক অর্থ অনুযায়ী পশুর মধ্যে মানুষের আচরণ আর মানুষের মধ্যে পশুর আচরণ-এর ক্ষেত্রে আইন কি বিধান দেবে?
(১৩ই ডিসেম্বর'২০১৩)

কবিতাঃ তুমি আছো সাথে

ঈশ্বর, তুমি আমাকে সফল মানুষ ক’রে দাও
আমার যা আছে তাই দিয়ে শূন্যতাকে ভরিয়ে;
ভরিয়ে যা কিছু অসম্পূর্ণতা
সংসার সমুদ্রে ভাসানো জীবন তরীর,
ক্ষমা ক’রে যত দীনতা, কোলে তুলে নাও।

অকূল সমুদ্রে হারিয়ে জীবনের দিশা
চতুর্দিক হ’তে ধেয়ে আসে ঘোর অমানিশা
ঘোর বিপদে আমি দিশাহারা
তুমি অন্ধকারে আলোর প্রদীপ জ্বালাও।

বিপদে তুমি না করিলে দয়া
না দিলে আশ্রয়, এ দয়াহীন সংসারে
কে করিবে রক্ষা তুমি ছাড়া দয়াময়?

ভাগ্যের কশাঘাতে ক্ষতবিক্ষত
ভাগ্য ব’লে যদি কিছু থাকে;
ব্যর্থতা মুচকি হেসে বলে,
জীবন খুঁজে ম’রছো অবিরত
অন্ধকার মৃত্যুর রাতে!

দরিদ্রতা হানে বিষাক্ত ছোবল
অজ্ঞতা চিরসাথী হ’য়ে বলে--------
শুনেছো কি ঐ কলরোল?
‘মৃত্যু’ শিয়রে তুলেছে ফণা
শোন ঐ অন্তিম ধ্বনি,
বলো হরি হরিবোল।

ঘরে বাইরে মেলেনা সাহারা
বাড়ায় না কেউ হাত;
আমি একা বসে আছি তব পথ চেয়ে
কবে এসে কোলে তুলে নেবে ব’লে
কেটে যায় বিনিদ্র রাত।

গ্রহরা না-কি দিয়েছে হানা
চারিপাশে করিছে হুঙ্কার
তাঁদের করতে হবে না-কি শান্ত,
করতে হবে তার প্রতিকার।

প্রভু তোমারে বেসেছি ভালো
নিয়েছি তোমার দীক্ষা মন্ত্র,
ভাবি কিসের ভয়, কাহার ভয়
জানি না কোনও গ্রহ নক্ষত্র;
গ্রহের বিগ্রহ তুমি জানি আমি
তুমি অসীম অনন্ত!
তোমার গর্ভ থেকে জন্মে যা কিছু
তোমাতেই হয় লীন,
তোমারি মায়ায় ভরে আছে চারিপাশ
নীহারিকা মাঝে নীল নীলিমায়
হ’য়ে আছো তুমি অন্তরীণ!

ব্যর্থতার গহ্বর থেকে
হে দয়াময় তুলে নাও আমায়
তোমারি ছোঁয়ায় হ’ক মৃত্যু
গ্রহের যত ষড়যন্ত্র,
পথ খুঁজে ফিরি, পথ নাহি মেলে
আমি ক্লান্ত, পথশ্রান্ত।

ভ্রান্ত পথের হ’য়ে পথিক
আমি জীবন খুঁজে ফিরি
জীবন নাহি মেলে সেথায়
মৃত্যু সারিসারি!
বুদ্ধি বিপর্যয়ে প্রভু আজ
আমি ধ্বস্ত বিধ্বস্ত।
তবুও আমি আজ জানান দিতে চায়
গভীর বিশ্বাসে দৃঢ় কন্ঠে
হ’য়ে মুক্ত চিত্ত!
তুমি আছো সাথে তাই ন'ই আশাহত,
ন'ই ত্রস্ত।
তুমি বরাভয় হ’য়ে আছো আমার সম্মুখে
আমি আশ্বস্ত।

তুমিই সত্য, তুমিই শুভ
তুমিই সুন্দর আমার জীবন রথ!
এই জীবন রথের আরোহী আমি
নিশ্চিহ্ন আজ মৃত্যুর আছে যত পথ।
জীবন খুঁজে পাবো হেথায়
এসো ছাড়ি সবে
যে আছো যেথায় দলেদলে
জীবন জুড়ে আছে যত মৃত্যুর মত
নির্ম্মম নিমেষে সেসবে পায়ে দ’লে।
(১৩ই ডিসেম্বর;'২০১৪)

কবিতাঃ শুধু তুমি!

তুমি ছাড়া কিছু নেই, কেউ নেই মাথায়!
মাথা ভর্তি চুল ছিল, ভুল ছিল, ছিল জমাট ধুল;
আর ছিল ভুলভুলাইয়ার ঘুলঘুলির ঝুল।

এখন চুল?
তাও নেই, আর তাই নেই চুল ভরা ধুল
আর ধুলে ভরা ভুলভুলাইয়ার ঝুল।

তাহ'লে মাথায় কি আছে?
যা হ'তে পারে জবর-খবর!
মাথায় কি আছে তা তুমি জানো
আর জানি আমি; এতে নেই কোনো ন্যাকামি।
জবর-খবর হ'ক আর না হ'ক নেই কোনো গোবর
এ কথা হলফ ক'রে বলতে পারি আমি।

হ্যাঁ আছে!
আছে শুধু মাথা ভর্তি টাক, কিন্তু
টাকের ভেতর নেই কোনো হাঁকডাক।
টাক আছে নেই টাকা,
তাই নেই কোনও কারও চোখ বাঁকা; কিন্তু
আছে চুলহীন টাকের চাকচিক্য! শালা আধিক্য।
তাই মন বলে তুমি আছো,
আছো শুধু তুমি এই মাথায়;
নেই কোনও আর অন্য কিন্তু-পরন্তু।

তুমি আছো তাই আমি আছি
আর আছে মগজ জুড়ে------
"শৃন্বন্তু বিশ্বে অমৃতস্য পুত্রা।"
আর তুমি নেই আমিও নেই,
আছে শুধু অন্তহীন মৃতস্য যাত্রা!
( লেখা ১৩ই ডিসেম্বর'২০১৮)

কবিতাঃ মরতে যদি হয়.......

মরতেই যদি হয় তো তোমার জন্য মরবো;
নইলে কেন মরবো? আর কার জন্যে মরবো?
কে সে বা কি সে মহান যার জন্যে অল্প দিনের
জন্য আসা এই পৃথিবী ত্যাগ করে চলে যাবো!?
যাবো চলে আসার সময় সঙ্গে করে নিয়ে আসা
ছয় ভৃত্যের ওপর প্রভুত্ব না করেই!?

মরতে যদি হয় তো তোমার জন্য মরবো।
তোমার থেকে কে এত ভারী আর কেই বা মহামূল্য
এই সৃষ্টি মাঝে!? কে সে বা কি সে যার প্রেমে হ'য়ে
মাতাল আমি করবো প্রবেশ সীতার মত পাতাল
আর হাসি হাসি পরবো ফাঁসি দেখবে জগতবাসী
দেখবে এ যুগের ক্ষুদিরামের হাল!?

মরতে যদি হয় তো তোমার প্রেমে মরবো
আর করতে যদি হয় ভোগ তোমায় করবো।
প্রেম! কি সেই প্রেম? সুন্দরী রমণীর প্রতি
নাকি দেশমাতৃকার প্রতি প্রেম!?
ভোগ! কি সেই ভোগ? ষড়রিপু তাড়িত উদ্দাম
জীবন ভোগ নাকি সেবার ছলে আমিত্ব ভোগ?
তোমায় বিনা যে বা যা কিছু প্রেম আর সেবা
সে প্রেম, সে সেবা জানি মিথ্যা!
তুমি বিনা যা কিছু এই জগতে হায় ভোগের বস্তু পাই
জানি সে ভোগ ভোগ নয় উপ ভোগ জীবন মাঝে যা বৃথা।
তাই মরতেই যদি হয় আর করতেই যদি হয় ভোগ খুব
তোমার প্রেমে মাতাল আমি তোমার তুমি মাঝে দিলাম ডুব।
পিছে পিছে আসে আসুক উর্বশী রম্ভার হেমাঙ্গ প্রেম!
আসে আসুক যদি আসে দেশপ্রেম!
(লেখা ১৩ই ডিসেম্বর'২০১৮)

কবিতাঃ ভালোই যদি বাসি..........

আমি তোমার কাছেই যদি আসলাম তবে
তোমার মনের মতো হলাম না কেন!?
যদি ভালোইবাসলাম তোমায় তবে কেন
তোমার ভালোতে করলাম না বাস!?
ভালোবাসা কি স্বার্থবাহিত? কি সে স্বার্থ?
তোমায় পাবার আশা যদি ভালোবাসা হয়
সে ভালোবাসা জানি দেহজ নয়; স্বার্থ সেথায়
আছে জানি; হায়! জীবের আত্মা পরমাত্মায়
মিলাতে চায়!
যদি মন বাগিচায় তোমায় দিলাম ঠাঁই
তবে কেনও ফুটলো না ফুল, মাটি হ'লো না
সিক্ত সেথায়!? 'হৃদ মাঝারে রাখবো
তোমায় ছেড়ে দেব না' ব'লে গাইলাম গান আর
ভালোবাসার নামে উঠলো বেজে নাগিন সাজে
তড়িৎ বেগে দেহের বীণায় কাম-কামিনীর তান!?
এই গান শুনে বৃক্ষ মাঝে স্বর্গে ফোটে পারিজাত ফুল!
আর সেই গানেই কোমর দোলায় যেথায় সেথায়
চোখের তারায় জাগিয়ে নেশা ফোটায় কামুকতার শূল!
তোমার প্রেমে মাতাল আমি নেচে ওঠে মনপ্রাণ
নাচের তালে শরীর নাচে কামকলা ফুটে ওঠে
তোমার প্রতি এই ভালোবাসার টান!?
ভালোই যদি বাসি তোমায়
এমন কেন জীবন কাটাই!!!!!
( ১৩ই ডিসেম্বর-২০১৮)

Tuesday, December 12, 2023

প্রবন্ধঃ নেগেটিভ ও পজিটিভ।

নেগেটিভ নেগেটিভ আর পজিটিভ পজিটিভ আর একই সঙ্গে কুৎসিত কুৎসিত আর সুন্দর সুন্দর। নেগেটিভের মধ্যে যেমন পজিটিভ নেই ঠিক তেমনি পজিটিভের মধ্যে নেগেটিভ নেই। একইরকম ভাবে সুন্দরের মাঝে কুৎসিত থাকতে পারে না ঠিক তেমনি কুৎসিতের মাঝে সুন্দরের অবস্থান নেই। আর তাই সেই অযোগ্য ও অপাত্র স্থানে সময় ব্যয় ও পরিশ্রম নিরর্থক। এইখানে ঠাকুরের বাণী স্মরণ করতে পারি। ঠাকুর বলেছেন, " অযোগ্যে ও অপাত্রে করিলে দান, দাতা গ্রহীতা দুইই ম্লান। আসলে আমরা যদি ভেবে দেখি রাবণের ব্যাপারটা তাহ'লে কি দেখবো? দেখবো, রাবণ জানতেন সীতা স্বয়ং রাম রূপী বিষ্ণুর স্ত্রী তবুও তিনি সেই চরম অন্যায় কাজটা করতে দ্বিধাবোধ করেননি। আর, শিশুপালের মধ্যে কি কোনও সুন্দর খুঁজে পেয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ? তিনি জেনেশুনেই ১০০টা অপরাধ ক্ষমা ক'রে তাকে পরিবর্তনের সুযোগ দিয়েছিলেন,আর সেই সুযোগ দিয়েছিলেন লোকশিক্ষার জন্য। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি শিশুপাল। দুর্যোধনের ক্ষেত্রেও কি তাই হয়নি? অনেকবার যুদ্ধ আটকাবার জন্য শ্রীকৃষ্ণ চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি যুদ্ধের আগের মুহূর্তেও তিনি পাঁচ ভাইয়ের জন্য পাঁচটা গ্রাম চেয়েছিলেন কিন্তু চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী। দুর্যোধন তার উত্তরে কি ঔদ্ধত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন তা সবারই জানা। স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণকে জীবন্ত নারায়ণ জানা সত্ত্বেও শ্রীকৃষ্ণের মুখের ওপর বলতে দ্বিধা করেনি দুর্যোধন যে, "বিনা যুদ্ধে নাহি দিবো সুচাগ্র মেদিনি।" আর তখনই শ্রীকৃষ্ণ তাঁর পাঞ্চজন্য শঙ্খে ফুঁ দিয়েছিলেন যুদ্ধ শুরু করার জন্য। আর এই পাঞ্চজন্য বাজাবার আগে কি বলেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ, জানেন কেউ? কি বলেছিলেন এই কথা গীতায় বা কোথাও লেখা নেই। গভীর নিস্তব্ধতার অন্তরের অন্তস্থলে ডুব দিয়ে কান পাতলে আজও খুব সুক্ষভাবে শুনতে পাওয়া যাবে তিনি গভীর বিতৃষ্ণায় ক্ষোভে বিরক্তিতে ব'লে উঠেছিলেন, 'তবে তাই হ'ক চার অক্ষর'। Don't take it otherwise. It is my, only my realization. জুডাসকে কি বলবেন? প্রভু যীশুকে হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের প্রধান সহযোগী ছিলেন এই জুডাস। আপনারা বন্ধুরা দেখুন, হজরতের বেলায় কি ঘটেছিল। কুরাইশরা তাঁকে সমাজে একঘরে ক'রে দিয়েছিলেন ও অবরুদ্ধ ক'রে রেখেছিলেন। ইসলাম প্রচারে ইটের আঘাতে ভয়ঙ্গকরভাবে রক্তাক্ত হন তিনি এবং অনেকবার তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এমনকি কুরাইশরা যখন তাঁর সঙ্গে আপোষ করার চেষ্টা করেন তখন প্রভু মহম্মদ কিন্তু তাঁর আদর্শের জন্য তা মেনে নেয়নি, তাঁর আদর্শকে ঘায়েল ক'রে চুক্তির মাধ্যমে কোনও রফা করেননি। রামকৃষ্ণকে পাগল বলতে মানুষ দ্বিধা করতো না। আর ঠাকুরের জীবদ্দশায় ঠাকুর কি কষ্ট পেয়েছিলেন, ঠাকুরের আশ্রমের উপর কি নির্মম, নিষঠুর অত্যাচার হয়েছিল সে সব দুঃখের কথা অনেকেই জানেন।
তাই বলছিলাম, নেগেটিভ নিংড়ে পজিটিভ কিছু পাবো না আর পজিটিভ নিংড়েও নেগেটিভ কিছুই পাবো না। নেগেটিভ ও পজিটিভ সবটাই ঐ বায়োলজিক্যাল ব্যাপার। যেমন, শিশুপাল, দুর্যোধন, দুঃশাসন, জুডাস, কুরাইশ ইত্যাদি ইত্যাদিরা এরা বায়োলজিক্যালি নেগেটিভ এদের মধ্যে থেকে নিংড়ে পজিটিভ কিছুই পাবো না; ঠিক তেমনি রত্নাকর, দস্যু সল, জগাই মাধাই, অশোক ইত্যাদি ইত্যাদি এরা বায়োলজিক্যালি পজিটিভ; পরিবেশগত কারণে এদের মধ্যে সাময়িক নেগেটিভিটির প্রকাশ দেখা গিয়েছিল কিন্তু উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত পরিবেশে অরিজিন্যাল বায়োলজিক্যাল মেক আপের উত্তরণ ঘটে। তাই ব্যাপারটা ঠাকুরের কথা অনুযায়ী শুধু Generous pose অর্থাৎ উদারতার ভঙ্গী নিয়ে সবটা দেখলে চলবে না। দেখবার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে চার আল দেখে চলছি কিনা; বাস্তবের মাটি থেকে যেন পা উঠে না যায়। জয়গুরু।
(লেখা ১২ই ডীসেম্বর;২০১৭)

Sunday, December 10, 2023

প্রবন্ধঃ কৃষি বিল ও আমরা (৫)

কেন্দ্রীয় সরকারের আনা কৃষি বিল তিন ধরনের বাজার সৃষ্টি করলো।
১) মান্ডি ( কিষাণ মান্ডি বা কৃষক বাজার, যেখানে ক্রেতা-বিক্রেতা সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে ফসল কেনাবেচা করতে পারে। এমন একটা বাজার যেখানে ফড়েরা ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে দৌরাত্ম করতে পারে না। এর ফলে চাষিরা হয় স্বাবলম্বী ও ফসলের ন্যায্য দর পায় এবং ক্রেতারাও ন্যায্য মূল্যে ফসল কিনতে পারে ফড়েদের এড়িয়ে।)
২) চুক্তি চাষ ( এই কৃষি বিল আইনেই চুক্তি চাষের কথা বলা হয়েছে। আইনে কী ভাবে কৃষক ও ক্রেতার মধ্যে চুক্তি হবে তার একটা রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। এই আইন অনুযায়ী কৃষকরা চুক্তি মেনে চাষ শুরু করার আগেই ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে দাম নির্ধারণ করবে। কী ভাবে সরবরাহ করা হবে, গুণমান ইত্যাদির কথা থাকবে সেই চুক্তিতে। ওই চুক্তির ভিত্তিতেই দু’পক্ষ লেনদেন করতে বাধ্য থাকবে।) ও
৩) মান্ডির বাইরের বাজার। ( মান্ডি অর্থাৎ কৃষক বাজার থাকছে কিন্তু কৃষকের দায় থাকবে না তার পণ্যকে মান্ডিতেই অর্থাৎ কৃষক বাজারেই বিক্রি করার। কৃষি পণ্য চলাচলের উপর রাজ্যের আর কোনও অধিকার থাকবে না। মান্ডির বাইরে কৃষিপণ্য লেনদেনের উপর কোনও সেস বা কর বসানোর অধিকারও আর থাকবে না রাজ্যগুলির।)
মান্ডি তৈরি হয়েছিল ফড়েরা যাতে কৃষকদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করতে না পারে। বিক্রেতা অর্থাৎ কৃষক আর ক্রেতার মাঝে বাধা হ'য়ে দাঁড়াতে না পারে। কৃষকদের বাধ্য করতে না পারে যাতে ফসল সরাসরি বিক্রেতাকে বিক্রি না ক'রে ফড়ের মাধ্যমে বিক্রি করে। প্রশ্ন জাগেঃ
১) কিন্তু তা কি বাস্তবে সত্যি সত্যিই পুরণ হয়েছিল?
২) নানান আইন থাকা সত্ত্বেও কি ফড়েরা ছোটো কৃষকদের শিকার
করেনি?
২) কিন্তু এই বিল কি এই গ্যারান্টি দিতে পারবে যে কোনও অবস্থাতেই
ফড়েরা ছোটো চাষিদের ভবিষ্যতে বাধ্য করতে পারবে না? শিকার
করতে পারবে না?
৩) আর যদি কোনভাবে ফড়েরাই সেই দিনের শেষে ছোট চাষীদের ব্ল্যাক
মেল করার মূল কারিগর হ'য়ে ওঠে, সমস্ত কিছুর মূল নিয়ন্ত্রক হ'য়ে
ওঠে তাহ'লে সেই ছোটো চাষিদের রক্ষার জন্য সরকার ঢাল হ'য়ে
দাঁড়িয়ে ফড়েদের কঠোর কঠিন নির্মম সাজা দিতে পারবে তো?
৪) এর জন্য কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কি?
৫) বড় ধনী কৃষকরাই ছোটো কৃষকদের গিলে খাবের জন্য পরোক্ষে ফড়ের ভুমিকায় অবতীর্ণ হবে না তো?
স্বাধীনতার ৭৩ বছর ধ'রে যে গাদ্দা জমে আছে দেশের ট্যাঙ্কিতে তা সাফ হওয়ার নয়।
গাদ্দা! গাদ্দা!! বহুত গাদ্দা!!!
(লেখা ১০ই অক্টোবর'২০২০)

Friday, December 8, 2023

প্রবন্ধঃ কৃষি বিল ও আমরা (৪)

কৃষকের জন্য শুধু নয় গরীব, মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী আম জনতার দুঃখ কষ্টের জন্য কুম্ভীরাশ্রু শুধু আজ নয় স্বাধীনতার আগে এবং পড়ে ৭৩ বছর ধ'রে ঝ'রে পড়েছে ও পড়ছে এবং আগামিতেও পড়বে। আর আগামী প্রজন্ম আজকের প্রজন্মের মত বুঝুক না বুঝুক প্রতিবাদের রাস্তায় নামবে যেমন আজকের প্রজন্ম তার পূর্ববর্তী প্রজন্মের শিকার। মাঝখান থেকে সেই প্রবাদ আবার স্বমহিমায় জ্বলজ্বল ক'রে ওঠে "নেপোয় মারে দই, আমে দুধে মিশে গিয়ে (আম জনতার) আঁটি হ'য়ে পড়ে থাকা"।
তেমনি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য যেমন চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তৈলবীজ ইত্যাদি আম জনতার অতি আবশ্যক পণ্য এই কৃষি বিলের কারণে আজ আর আম জনতার কাছে অতি আবশ্যক পণ্য নয়। এর ফলে এইসমস্ত পণ্য উৎপাদন করা, তাকে গুদামজাত করা এবং বিক্রি করার উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ রাজ্যের আর রইলো না। রইলো না আপতকালীন বন্টন ও প্রয়োজনে দাম নিয়ন্ত্রণে রাশ টানার কোনও অধিকার। এই বিলের ফলে এখন থেকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ব্যাপারে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা কেন্দ্রের হাতে চলে গেল। এই কারণে বিরোধী দল কেন্দ্রের আম জনবিরোধী নীতির জন্য আন্দোলনে পথে নেবেছে।
প্রশ্নঃ ১) প্রতিদিনের অতি আবশ্যকীয় এইসমস্ত পণ্য কোনদিন আম
জনতা সুলভ মুল্যে পেয়েছে?
২) স্বাধীনতার ৭৪বছরে কোনদিন কোন রাজ্য সরকার এইসমস্ত
প্রতিদিনের আবশ্যকীয় পণ্য আম জনতার কথা চিন্তা ক'রে
ব্যাপক হারে উৎপাদন করা ও তাকে ভবিষ্যতের জন্য
গুদামজাত করা এবং যাতে দাম তার সীমা ছাড়িয়ে না যায় ও
আম জনতার নাভিশ্বাস না ওঠে তার জন্য ভীষনভাবে
ইমারজেন্সি মানসিকতায় কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে?
৩) তাহ'লে আজ কেন্দ্রের হাতে অত্যাবশ্যক পণ্য আইন থাকা
নিয়ে এত চিন্তা, মাথাব্যথা কেন? কিসের জন্য?
৪) এতদিন রাজ্যের হাতে এই অত্যাবশ্যক পণ্য আইন থাকায় কি
কৃষক স্বার্থ সুরক্ষিত ছিল?
এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেল ৭০দশকের কথা। সেইসময়ে কংগ্রেসি শাসনকালে পশ্চিমবঙ্গে কম্যুনিস্ট পার্টির আন্দোলনে গণনাট্যের সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা মনে পড়লো। সেইসময় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠিত হত নাট্য প্রতিযোগিতা এবং তাতে অংশগ্রহণ করা ছিল দারুণ উত্তেজনার। সেইসময় যে নাটকগুলি নিয়ে উপস্থিত হতাম বিভিন্ন নাট্য প্রতিযোগিতায় রাজ্যে কংগ্রেসি পট পরিবর্তনে সেইসব নাটক নাট্য আন্দোলনে বিরাট ভুমিকা পালন করেছিল। নাট্যকার অরুণ চক্রবর্তীর সেইসব সাড়া জাগানো নাটক যেমন হচ্ছেটা কী?, ছররা, স্বপ্ন-যন্ত্রণা-রাজপথ, আমলাদের গামলা গামলা বুদ্ধি ইত্যাদি নানা আলোড়ন সৃষ্টিকারী সাড়া জাগানো নাটক যারা সেই সময়ের সাক্ষী তারা জানে কি অসাধারন সব নাটক অভিনীত হ'তো গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-বন্দরে! আজ সেই দিন আর নেই, আছে শুধু স্মৃতি! সেই স্মৃতির আঙ্গিনায় ভেসে ওঠে আজকের মূল্যবৃদ্ধির পরিস্থিতিতে প্রয়াত অরুণ চক্রবর্তীর আরও একটা আকাশ বাতাস কাঁপানো নাটকের নামঃ দামস্ট্রং মূল্যফোস্কার চন্দ্রাভিযান! সেই সাতের দশকে দাম এমন স্ট্রং হয়েছিল, মূল্যবৃদ্ধি এমন ফোস্কা ফেলেছিল শরীরে যে দাম আর মূল্য স্ট্রং হ'য়ে ফোস্কা ফেলতে ফেলতে পাড়ি দিয়েছিল চাঁদের বুকে নীল আর্মস্ট্রং-এর মত! আজ মনে পড়ে সেই নাট্য আন্দোলনের দিনগুলির কথা। তাতে কি হয়েছিল? সরকার বদল হয়েছিল কিন্তু বদল হয়নি শোষণের মানসিকতা! শুধু ছিল কথার হাই, যা আজও সেই ট্রাডিশান সমানে চলেছে! দু'মুঠো খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য কখনোই নিয়ন্ত্রণে থাকেনি, রাখার চেষ্টাও করেনি কোনদিন কোনও সরকার।
আর আজ দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা ও না রাখা নিয়ে, কৃষকদের স্বার্থ নিয়ে আন্দোলন নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। তাই এই কৃষি বিল কৃষকের মঙ্গল হবে কি অমঙ্গল ডেকে আনবে তা আবার সেই সময় জবাব দেবে।
কথায় আছেঃ আশায় মরে চাষা!
ক্রমশঃ।
( লেখা ৯ই ডিসেম্বর' ২০২০)

প্রবন্ধঃ কৃষি বিল ও আমরা (৩)

কৃষি বিল আমরা সাধারণ মানুষ বুঝি না ও বুঝতে পারি না। কৃষি বিল কেন কোনও বিলই আম জনতা বোঝে না। তার উপর তাকে যদি কায়েমি স্বার্থে জটিল ক'রে দেওয়া হয়! কৃষি বিলে চুক্তি চাষের কথা বলা হয়েছে। চুক্তির ভিত্তিতে কৃষক ও ক্রেতা দুই পক্ষই লেনদেন করতে বাধ্য থাকবে।

চুক্তিতে কি আছে?
১) চাষ শুরুর আগে ক্রেতা ও বিক্রেতা (কৃষক) দুই পক্ষই ফসলের দাম ঠিক করে নেবে।
২) কিভাবে ফসল সরবরাহ করবে তা ঠিক ক'রে নেবে।
৩) ফসলের গুণমান নিয়েও হবে কথা।
প্রশ্নঃ ১) দামের ঊর্ধ্ব ও নিম্নসীমা কিছু আছে কি? চাষী একটাকা পেলে ক্রেতা কি তা ১০০টাকায় বেচবে? নাকি তারও একটা সীমা থাকবে?

কিন্তু দাম ঠিক করার ব্যাপারে যাতে কৃষকরা কোনও অবস্থাতেই বঞ্চিত না হয় তা ক্রেতা বা বড় কৃষকের দুষ্ট বুদ্ধিতেই হ'ক, প্রাকৃতিক বিপর্যয়েই হ'ক, শাসক বা রাজনৈতিক দল ও নেতার চক্রান্তেই হ'ক কোনও অবস্থাতেই চাষের ন্যায্য দাম পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হয় কৃষক তা সে ছোটো বড় যে কৃষকই হ'ক না কেন তার জন্য কোনও কড়া নিশ্চিত ফাঁকহীন ব্যবস্থা আছে কি?

প্রশ্নঃ ২) যদি ক্রেতা বা বিক্রেতা চুক্তি ভঙ্গ করে কোনও মজবুত কারণ ছাড়া তার জন্য বিলে কড়া ব্যবস্থা কি বিলে আছে?


প্রশ্নঃ ৩) আইন আদালতের প্রশ্নে (চুক্তি ভঙ্গ যদি আইনি পর্যায়ে যায়) কৃষকের জন্য সরকারী আইনি সাহায্য বরাদ্দ আছে কি?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজী বলেছেন, সরকার কৃষকের সুরক্ষার সমস্ত দিকটাই দেখবে। দেখবে যাতে কৃষকের স্বার্থ ক্ষুন্ন না হয়।
কিন্তু দেশের আম জনতা তা সে শ্রমিক-মজুর-কৃষক যেই-ই হ'ক না কেন সবাই ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পায়। ৭৩ বছর ধ'রে সরকারী-বেসরকারী আগুনে জনগণের পশ্চাদদেশ পুড়ে কালো হ'য়ে দগদগে ঘা হ'য়ে গ্যাছে আর কোনও সরকার, মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি কারও কথায় আর বিশ্বাস করে না আম জনতা। আর সরকার বিরোধী দল আরও ভয়ঙ্কর হ'য়ে দেখা দেয় জনগণের কাছে তা জনগণ ৭৩ বছর ধ'রে সরকার পালটে পালটে দেখেছে। আর আশাও করে না ভাঙাচোরা জনগণ। কারণ সেই রামও নেই, নেই সেই অযোধ্যা।
ক্রমশঃ।

প্রবন্ধঃ কৃষি বিল ও আমরা (২)



কৃষি বিল নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরে নিট ফল লাভ কার? আন্দোলন ও বন্ধ ঘোষণার মধ্যে দিয়ে লাভ বা লোকসান কার হ'লো? জনগণের? কৃষকদের? নাকি রাজনৈতিক দলগুলির? যে কোনও বন্ধ বা ধর্মঘটে দেশের সম্পদের যে ক্ষতি হয়, ক্ষতি হয় মানুষ সম্পদের তাতে আন্দোলনের সার্থকতা কোথায়? আর কবে চেতনা জাগ্রত হবে? এইভাবেই কি দেশ খোঁড়াতে খোঁড়াতে ৭৩ বছর পরেও এগিয়ে যাবে? আমরা কি কোনদিনও জানতে পারবো না দেশের স্বার্থে সরকার দ্বারা গৃহীত বিলের সার্বিক সার্থকতা কোথায়? শুধুই দলগুলির নিজেদের স্বার্থে আম জনগণকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ক্ষেপিয়ে দিয়ে স্বার্থসিদ্ধি চলবে? এইসব জটিল বিষয় কি সাধারন মানুষ বোঝে? কেন বোঝানো হয় না? আর সব বিষয় কি বোঝানো যায়? দেশের ও দশের ক্ষতি হবে জেনেও কেন জনগণকে বিভ্রান্ত ক'রে ক্ষেপানোর রাজনীতি? কবে দেশের সার্বিক উন্নয়নে দেশের নেতৃবৃন্দ এক হবে? কবে জনগণ দেশের নেতৃবৃন্দের ক্ষেপানোর রাজনীতি বুঝবে? কবে দেশের বুদ্ধিমান মানুষ চাটুকারিতা মুক্ত জীবনের অধিকারী হবে? যাই হ'ক আমার ফেসবুক বন্ধুরা যারা কৃষি বিলের সমর্থনে বা বিরোধিতায় কলম ধরেছেন তারা কি একটু বুঝিয়ে দেবেন শিক্ষকের ভুমিকায় হাজির হ"য়ে এই বুঝতে না পারা অসহায় ছাত্রকে?
প্রশ্ন ২) কৃষি বিলে কি মান্ডি ব্যবস্থার অবসান ঘটলো? মান্ডির বাইরে কৃষি
থেকে আয়ের কোনও উপায় থাকল না রাজ্যের হাতে; তাই কৃষক
আন্দোলনের নামে নিজেদের স্বার্থে এই কেন্দ্র বিরোধী আন্দোলন?
নাকি মান্ডিই ছিল একমাত্র কৃষকের স্বাস্থ্যকর আয়ের প্রকৃষ্ট
ব্যবস্থা আর সেই ব্যবস্থার অবসানের জন্য সত্যিকারের কেন্দ্র
বিরোধী আন্দোলন? নাকি নিজেদের পায়ের তলার মাটি খুঁজে
পাওয়া ও ফিরে পাওয়ার মরীয়া চেষ্টা?
ক্রমশঃ

প্রবন্ধঃ কৃষি বিল ও আমরা! (১)

কৃষি বিল ঠিক না ভুল এইসমস্ত জটিল প্রশ্ন ঠিক বুঝতে পারিনি বা পারি না; যেমন বুঝতে পারছিলাম না নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সম্পর্কিত প্রশ্নে পক্ষ-বিপক্ষ বাদানুবাদের যৌক্তিকতা। আসলে বুঝতে পারছিলাম না কেন? বুঝতে পারছিলাম না নাকি বুঝতে দেওয়া হচ্ছিল না? কারণ যখনই দেশে কেন্দ্রে বা রাজ্যে যে সরকার ছিল সেই সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত আজ পর্যন্ত কোনও বিরোধী দল দেশের দশের স্বার্থে তা যতই মঙ্গলজনক হ'ক না কেন মেনে নেয়নি আম জনতার স্বার্থে দলের কায়েমি স্বার্থকে অক্ষুন্ন রাখতে।
এবারেও প্রতিবারের মত সরকার গৃহীত কৃষি বিলের বিরোধিতায় বিরোধীরা একজোট এবং সঙ্গবদ্ধভাবে তারা ভারতবন্ধ ঘোষণা করে। পশ্চিমবঙ্গের বুকেও তার রেশ পড়ে। চিরাচরিত রাস্তা প্রতিবাদের শেষ অস্ত্র সেই ধর্মঘট আজ তার মান সম্মান ইজ্জত কৌলীন্য হারিয়ে ঘেয়ো কুত্তার পরিচয়ে এসে দাঁড়িয়েছে। ধর্মঘটকে আজ আর কেউ পাত্তা বা গুরুত্ব দেয় না। ফেক্লু রাস্তার কুত্তার হাল হ'য়েছে ধর্মঘটের। যে কেউ যে কোনও বিষয়ে যে কোনও সময়ে ধর্মঘট ডেকে দিলেই হ'লো! জনগণ সাড়া দিক আর নাই দিক ধর্মঘট ডাকা দিনগুলি সফল হওয়ার জন্য আভিনন্দন বারতা পৌঁছে যাবে জনগণের কাছে সঠিক সময়ে!
যাই হ'ক সব আন্দোলনই চাপা পড়েছে, পড়ে ও পড়বে। এই কৃষি বিল পাশ করা নিয়ে সমস্ত কায়েমি স্বার্থ রক্ষাকারী পক্ষ চুপ হ'য়ে যাবে যথাসময়ে! কাউকে কিচ্ছু করতে হবে না।।
শুধু আমি কয়েকটা প্রশ্ন করতে চাই ও উত্তর জানতে চাই। ফেসবুক বন্ধু কেউ কি ব'লে দেবেন?
প্রশ্নঃ ১) রাজ্যের হাত থেকে কৃষি গেল কেন্দ্রের অধিকারে।
তাতে কার ক্ষতি হ'লো আর কার লাভ হ'লো? কৃষকের নাকি
রাজ্যের?
এই ধর্মঘট পালনে কার সুবিধা হ'লো? কৃষকের নাকি রাজ্যের?
আর রাজ্যগুলি ও রাজনৈতিক দলগুলি কৃষকের স্বার্থে নাকি
নিজেদের স্বার্থে এই বিলের বিরোধিতা করছেন?
প্রশ্নঃ ২) মান্ডি ব্যবস্থার অবসান হ'লো কিসের ও কার স্বার্থে?
প্রশ্ন ২ এর বাকী জিজ্ঞাস্য পরবর্তী পোস্টে।
ক্রমশঃ

Tuesday, December 5, 2023

কবিতাঃ প্যারালাইজড সভ্যতা--------

বক্তা আছে শ্রোতা নেই
লেখক আছে কিন্তু পাঠক নেই
বলছে নেতা, বলছে নেত্রী
কিন্তু কাজ করার নেই কোনো কর্মী!
ধর্মক্ষেত্র শিক্ষাক্ষেত্র সবক্ষেত্রেই
সবাই বলছে যা সব অসম্পূর্ণ!
বলছে ভুল, শেখাচ্ছে ভুল কারণ
তাদের ভুলে ভরা জীবন সম্পূর্ণ!
রাজনীতি নোংরানীতি নয়কো রাজার নীতি
ছল-চাতুরী, চুরি-চামারী, ধান্দা আর মিথ্যার বেসাতি!
কেন!? কেন এমন হয়? কারণ
বিধির নিয়ম সবার জন্য
শুধু মানুষের জন্য নয়!
কুকুর বিড়াল গাছপালা পোকামাকড়
টিকটিকিটাও বলছে 'ঠিক ঠিক'
প্রকৃতির নিয়মকে ধরো! কিন্তু মানুষ বলছে, বেঠিক!
মানুষ নিজেই বিধি! বিধির বিধানের চেয়েও বড়!
বিধির বিধানে উল্টো নজির
মানুষ এমন শক্তিমান বিধিকে পায় না ভয়!
বিধির বিধান তাই আজ আর মানুষের জন্য নয়।
বর্ণাশ্রম ধ্বস্তন্যস্ত!
উপর পড়ছে নিচে, নিচ উঠছে উপরে
যা ইচ্ছে তাই করছে মানুষ, খুঁড়ছে কবর
আর পড়ছে নিজেই নিজের খোঁড়া কবরে!
পা করছে মাথার কাজ, মাথা করছে পায়ের
হাত করছে পেটের কাজ, পেট করছে হাতের!
প্রকৃতির নিয়ম উল্টে দিতে সবাই সদাই ব্যস্ত!
'চতুর্বরণ্যং ময়া সৃষ্ট্যং----' তত্ত্ব আজ বিলুপ্ত!
বিপর্যস্ত জন্মবিজ্ঞান, বিধ্বস্ত প্রকৃতি!
কল্পবিজ্ঞান জনম মাঝে মারছে ঘাই,
জন্ম নিচ্ছে সেথায় বিকৃতি!
প্রকৃতির নিয়মে চলছে সবাই
গাছ, পশু, পাখি থেকে টিকটিকি
মানুষের জন্মের বেলায় নিয়ম প্রকৃতির নয়
নিয়ম বুদ্ধিজীবীর! কারণ মানুষ শ্রেষ্ঠ জীব
জীব-জগৎ-জীবন-কারণ মাঝে মানুষ ব্যতিক্রমী!!
তাই যা হচ্ছে হ'ক কারন দেশ জুড়ে চলছে খেলা বিধি ভঙ্গের!
হাতে-ভাতে-কাপড়ে মারছে-মরছে সবাই, অপেক্ষা ভয়ঙ্কর ধংসের!!
দুর্যোধনেরা লম্প দিয়ে ঝম্প মারে, আজও দুঃশাসনেরা নারীর কাপড়ে মারে টান!
ভীষ্মরা আজও রাজসভায় চুপ ক'রে থাকে
নীতির কচকচিতে প্যারালাইজড সভ্যতা, শিক্ষা-চেতনা ম্রিয়মান!!
-----------প্রবি। ( লেখা ৫ই ডিসেম্বর'২০১৯)

Saturday, December 2, 2023

প্রবন্ধঃ ডঃ প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির অপমানজনক নৃশংস মৃত্যু।

ডঃ প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির অপমানজনক নৃশংস মৃত্যুর প্রতিবাদ, বিচার আজকের এই ভারতে হবে না এটা নিশ্চিত। কোনোদিন যদি আবার এই ভারতে আর্য্য সমাজ ব্যবস্থা ফিরে আসে, রাম রাজ্য কায়েম হয় তাহ'লে সেদিন এইরকম নৃশংস অপমানকর মৃত্যুর সম্ভাবনা কল্পনাতেও আসবে না আর যদি কোনও কারণে দুর্ঘটনা ঘটেও থাকে তাহ'লে বিচার শুধু নয় দ্রুত কঠিন বিচার থাকবে অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু এই নৃশংস মানসিকতার মোকাবিলায় নারীর কর্তব্য সম্পর্কে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সরাসরি স্পষ্ট বললেন,

"ধর্ষণমুখী যদিই বা হ'স
পরাক্রমী মেয়ে,
মারবি না হয় মরবি তখন
রাখিস কীর্তি ছেয়ে।"
-----------শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল।

আজকের নারীরা বুঝে নিক তাদের কি রকম জীবনের অধিকারী হ'তে হবে। স্বয়ং ঈশ্বর মানুষের রূপ ধ'রে এসে সরাসরি খোলামেলা ঘোষণা করলেন এইরকম পরিস্থিতিতে নারীদের কি করণীয়। তিনি স্পষ্ট দ্বিধাহীন চিত্তে মেয়েদের বললেন পরাক্রমী হ'তে। বললেন, এইরকম অপমানজনক পরিস্থিতিতে দ্বিধাহীন চিত্তে বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের কাছে কীর্তি ছেয়ে যেতে! আর এই কীর্তি কোনো দয়ামায়ার কীর্তি নয়, পরাক্রমী মেয়ের এই দরিন্দাদের মেরে মরার কীর্তি আর মারার যদি কোনও উপায় না থাকে তাহ'লে এই দরিন্দা নামর্দদের কাছে আত্মসমর্পণ নয় সরাসরি মৃত্যুকে আলিঙ্গনের কীর্তি! যেমন আজও ইতিহাস হ'য়ে আছে চিতোরের রাজপুত রমণীদের অগ্নিকুণ্ডে আত্মবলিদানের কাহিনী। আশা করি দেশের নারী সমাজ, লেখাপড়া জানাওয়ালা নারী একবার শ্রীশ্রীঠাকুর সম্পর্কে কিছু মন্তব্য করার আগে তাঁর বিস্ময়কর জীবনে আলোকপাত করবে। ------প্রবি।
(লেখা ২রা ডিসেম্বর'২০১৯)

প্রবন্ধঃ নারীপুরুষ বা স্বামীস্ত্রী উভয়ের সম্পর্ক।

প্রায় সময়ই দেখি স্ত্রীর স্বামীর প্রতি মনোভাব কেমন হবে তা' নিয়ে নানারকম লেখা প্রকাশ হ'তে। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের দৃষ্টিতে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত সে সম্পর্কে লেখাগুলি প্রকাশ হয়। লেখাগুলি অনেক সময় একতরফা হওয়ার কারণে বিতর্কের সূত্রপাত হয়। শ্রীশ্রীঠাকুর সম্পর্কে অদীক্ষিত ও দীক্ষিতদেরও মাঝখানে ভুল বা অসম্পূর্ণ ধারণার সৃষ্টি হয়। 

আর তাছাড়া নারী ও পুরুষের জীবন সম্পর্কে, তাদের উভয়ের প্রতি উভয়ের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে, সম্পর্ক বা আচরণ কেমন হবে ইত্যাদি সমস্ত বিষয়েই উভয়ের সম্পর্কেই ঠাকুর তাঁর হাজার হাজার বাণী, কথোপকথনের মধ্যে ব'লে গেছেন। আমাদের নারী-পুরুষ উভয়ের উচিত আমি যদি পুরুষ হ'ই কিম্বা নারী হ'ই তাহ'লে আমার সম্পর্কে ঠাকুর কি বলেছেন সেটা আগে জানা ও সেইভাবেই আগে হাতে কলমে ক'রে সেইরকম হ'য়ে ওঠা। নারীর সম্পর্কে কি ব'লে গেছেন ঠাকুর সেটা আমাদের দেখার বা বলার আগে আমি পুরুষ আমার সম্পর্কে তিনি কি বলেছেন সেটা আগে জানা, বোঝা ও করা; তারপর আমি সেইরকম হ'য়ে ওঠার পরে যদি সময় থাকে তারপরে নাহয় নারীর কেমন হ'য়ে ওঠা উচিত সে সম্পর্কে বলা যেতে পারে। আর এটা নারীর ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। কিন্তু দেখা যায় প্রায় সব ক্ষেত্রেই তা লেখার ক্ষেত্রেই হ'ক আর যাজনের জন্য বলার ক্ষেত্রেই হ'ক নারীর হ'য়ে ওঠা, পুরুষের প্রতি নারীর দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে পুরুষ বক্তব্য রাখে কিম্বা ঠাকুর পুরুষের প্রতি নারীর আচরণ, ব্যবহার, সম্পর্ক স্থাপন ইত্যাদির ক্ষেত্রে কি বলেছেন সে সম্পর্কে বাণী তুলে ধরার প্রবণতা পুরুষের প্রায়শঃই লক্ষ্য করা যায়। তাই কথায় আছে, 'আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শেখায়'। আলোচনা যেন এমন জায়গায় না যায়, এমন একতরফা না হয় যাতে মানুষ ঠাকুর সম্পর্কে অহেতুক ভুল ধারণার বশবর্তী হয়। তাই আগে পুরুষের উচিত পুরুষের ধর্ম কি, পুরুষের সম্পর্কে ঠাকুর কি বলেছেন তাই জানা আর নারীর উচিত নারীর ধর্ম কি, নারীর সম্পর্কে ঠাকুর কি বলেছেন তা' জানা আর জানার পরেই উভয়ের তা' আচরণ সিদ্ধ হ'য়ে ওঠার প্রয়োজন, নচেৎ সেগুড়ে বালি। 

এটা যেন আমরা ভুলে না যায় ঠাকুরের যত সব বাণী সব আমার জন্য। একবার ঠাকুর তৎকালীন সমস্ত প্রধান প্রধান ভক্ত মন্ডলীকে জিজ্ঞেস করেছিলেন তাঁর এই হাজার হাজার বাণী কার জন্য? তখন সবাই বলেছিলেন এইসব হাজার হাজার বাণী, ছড়া, কথোপকথন সব দেশবাসীর জন্য, বিশ্ববাসীর জন্য, মানবজাতির জন্য। ঠাকুর এই কথায় খুশী হননি। তখন তিনি তাঁর আদরের বড় খোকা আমাদের সকলের প্রাণাধিক প্রিয় শ্রীশ্রীবড়দাকে ডেকে বলেছিলেন, বড় খোকা এরা কি কয়? তখন শ্রীশ্রীবড়দা বলেছিলেন, কি বাবা? ঠাকুর বলেছিলেন, আমি নাকি হাজার হাজার বাণী দিয়েছি এই সব বাণী কার জন্য? তখন এ যুগের হনূমান পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা হাঁটু গেড়ে হাতজোড় ক'রে বলেছিলেন, এই সব বাণী আমার জন্য। এই কথা শুনে ঠাকুর উল্লাসে আনন্দের আতিশয্যে উল্লসিত হ'য়ে উঠে উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ঐ দ্যাখেন! দ্যাখেন! শোনেন! বড়খোকা কি কয়? বড়খোকা কি কয়?

তাই আবার বলি, (কারো কারো মতে) স্বামীস্ত্রীর সম্পর্কে যদি স্বামী গুরুর আসনই নিয়ে থাকে আর স্ত্রী যদি শিষ্যার আসনের অধিকারী হয় তাহ'লে আগে গুরুকে প্রমাণ করতে হবে সে গুরু হবার উপযুক্ত কিনা; তবেই শিষ্যার কাছে তার গুরুগিরির গুরুত্ব পায় নতুবা তার গুরুগিরির অধিকারই নেই আর কাউকে শিষ্যা করা তো দূরের কথা তার কোনও অধিকারই নেই কাউকে শিষ্যা হিসাবে ভাবার। স্বামী বা গুরুকে এটা মাথায় রাখতে হবে, স্ত্রী যদি তার শিষ্যা হয় তাহ'লে সেই শিষ্যাই একাধারে আবার তার গুরু বা মাতা। নতুবা এসব কথার কোনও মূল্য নেই। এখানে একতরফা বা পক্ষপাতিত্বের কোনও প্রশ্ন নেই। এই জ্ঞান বা বোধ যার নেই সেই স্বামী যেন গুরুগিরি করার কথা স্বপ্নেও না ভাবে। স্বামীস্ত্রী উভয়কেই মনে রাখতে হবে কেউ কারও থেকে ছোটও নয়, বড়ও নয়। উভয়েই নিজের নিজের ক্ষেত্রে মহান। উভয়েই পরমপিতার সন্তান। উভয়েই ঈশ্বরের রূপ। ঈশ্বরের অর্ধনারীশ্বর রুপের কথা যেন আমরা অন্তত ধার্মিকরা (?) ভুলে না যায়। উভয়েই নিজ নিজ বৈশিষ্ট্যে বিশিষ্ট স্থান অধিকার ক'রে রয়েছে। নারী যদি তার মাতৃত্বকে সার্থক করতে চায় তাহ'লে যেমন তাকে স্বামীতে গুরুত্ব আরোপ করতেই হবে ঠিক তেমনি একইরকমভাবে স্বামী যদি তার পিতৃত্বকে সার্থক করতে চায় তাহ'লে তাকেও তার স্ত্রীতে গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। সৃষ্টির বুকে একতরফা একার জ্বলজ্বল ক'রে জ্বলার কোনও জায়গায় নেই। মাতৃত্ব বা পিতৃত্ব লাভের ক্ষেত্রে কখনোই স্বামী যেন না ভাবে আমার গুরুত্ব স্ত্রীর চেয়ে বেশী বা কখনোই কোনও স্ত্রী যেন না ভাবে আমার গুরুত্ব স্বামীর চেয়ে বেশী। সুসন্তান লাভের জন্য, বায়োলজিক্যালি নিখুঁত সন্তান জন্ম লাভের জন্য নারীপুরুষ দুজনেরই ভুমিকা অসীম ও সমান গুরুত্বপূর্ণ। স্ত্রী যেমন পোষণ দেবে স্বামীকে, ঠিক তেমনি স্বামীর ক্ষেত্রেও একইরকম ফর্মুলা। স্বামী ঠিক তেমনি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে স্ত্রীর প্রতি সাড়া দেবে, স্ত্রীকে পোষণ দেবে। ঠাকুরের একটা বাণী আছে যার অর্থ, সীতা বা সতীর মত যদি বউ পেতে চাও, তাহ'লে রাম বা শিবের মত হও। জয়গুরু।
( লেখা ২রা ডিসেম্বর'২০১৭_

Article: If Allah/God holds us who will kill us,

If Allah/God holds us who will kill us,
And
If Allah/God kills us then who will save us?

It is, we used to say that if Allah holds us who will kill us, and if Allah kills us then who will save us? Actually these sayings are wrong. Because It is natural and eternal truth that Allah hold everybody, every object becomes manifest from HIS womb. It is the point of view in the reverse manner according to the vision of the greatest phenomenon of the world Sri Sri Thakur Anukul Chandra that whether we hold HIM or HIS hand or not. If we hold HIS holy hand then who the hell will kill us? And if we ignore, reject, deny HIM; in a whole word we kill HIM then who the next of Almighty will save us? Allah, Lord doesn’t kill anybody. All we are son of Allah. He creates everybody, nourishes everyone and saves all of us. But we, the ungrateful and selfish perfidious sons of Allah or Supreme Being are killing HIM in every moment by ignoring HIM & explaining distortedly HIS sayings in accordance to our vested interests and wishes by neglecting HIS repeated caution & signal of coming to the holy land of the earth again & again in the highest form of human being within HIS all creations. HE loves me, loves you and loves HIS every creation, because HE is a Supreme Father of all creations. Then so what is my benefit if I don’t love HIM, don’t admit and accept HIS next new presence, if I don’t surrender myself in HIS crimson feet as HE wants and likes to have from us? If we kill HIM who is the powerful in this world I mean in HIS creations will save us? We, the offspring of might, son of Supreme Being, are killing HIM every day, every moment by creating the sectarian conflict and dividing HIS new living manifestation of the next. We are blind due to the darkness of deep ignorance, vast lack of knowledge and this intense darkness has been over crowded throughout the human beings heart, mind and life due to hard egoistic attitude. Where there is ignorance there is ego and where there is ego there is ignorance belongs. HE comes again and again, waits for us with full of tears of eyes and says come and be attached to your living master or lord as all the past prophets are consummated in the divine Man of present.
( লেখা ২রা ডিসেম্বর'২০১৫)