Powered By Blogger

Sunday, December 31, 2023

প্রবন্ধঃ বাংলাদেশে শ্রীশ্রীঠাকুরের ফেলে আসা সম্পত্তির বর্তমান অবস্থা। (দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব )

সত্ত্বার সত্ত্বা পরম সত্ত্বা, অস্তিত্বের অস্তিত্ব পরম অস্তিত্ব, কারণের কারণ পরমকারুণিক, পুরুষোত্তম, পরমপিতা, সদগুরু, বিশ্বব্রহ্মান্ডের মালিক, সৃষ্টীকর্তা জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের এই যে বিশাল সম্পত্তি এই সম্পত্তি তাঁর প্রকৃত উত্তরাধিকারীর কাছে ফিরিয়ে দেওয়া যে কোনও সরকারের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে পরে। এখানে রাষ্ট্রপ্রধানের দয়া বা করুণার কোনও জায়গা নেই। আর তা যদি থাকে তা হবে জীবন্ত ঈশ্বরের প্রতি অহংকার ও ঔদ্ধত্ব প্রদর্শন। রাষ্ট্র যদি পরের সম্পদ হরণ করে তাহ'লে সেই দেশের জনগণের বড় একটা অংশ রাষ্ট্রের পরোক্ষ মদতে সেই শিক্ষায় শিক্ষিত হ'য়ে ওঠে। ফলে সেই দেশের ও দেশের সরকারের পরিণতি হয় ভয়ঙ্কর। পাকিস্তান দেশ ও সরকারের জোর করে শ্রীশ্রীঠাকুরের সম্পত্তি দখল তাদের পতনের কারণ। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারও এই ব্যাপারে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে ৭০ বছর পার ক'রে দিল। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র The greatest phenomenon of the world. সেই সর্ব্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় বাংলাদেশের মাটিতে জন্মেছিলেন এটা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরাট গর্ব। বাংলাদেশীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম ও সংখ্যালঘু হিন্দু, খ্রীষ্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী জনগণ এই ব্যাপারে গর্ব করতে পারে যে তাদের দেশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিস্ময়ের বিস্ময় সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় সর্বশক্তিমান, সর্বদর্শী, সর্বজ্ঞ, সর্বত্র বিরাজমান জীবন্ত ঈশ্বর, সদ্গুরু, পুরুষোত্তম, পরমপিতা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। কিন্তু দুই বাংলার বাঙালির আজ এতটাই দুর্ভাগ্য যে তারা বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়কে চিনতে পারল না, তারা এতটাই অভাগা যে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ট বিস্ময় বাঙালি হ'য়ে বাংলাদেশে জন্মেছিলেন বাঙ্গালিরা ও তাদের পূর্বপুরুষরা তাঁকে চিনতে পারেনি, জানতে পারেনি তিনি কে? তারা আসল ফেলে দিয়ে নকল নিয়ে মত্ত ছিলেন ও আছেন। তাঁকে তো ধ'রে রাখতে পারেনি, প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেনি কোনও প্রতিভাবান, ক্ষমতাবান, জ্ঞানী, পন্ডিত, প্রাজ্ঞ বাঙালি; এমনকি তাঁর ফেলে যাওয়া সম্পত্তি তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়ার সৎ চেষ্টাও করেনি ও কোনও আন্দোলনও সংগঠিত করেনি তাঁরা।
কিন্তু যেদিন শ্রীশ্রীঠাকুরের বিপুল সম্পত্তি শ্রীশ্রীঠাকুর প্রতিষ্ঠিত দেওঘরের মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ'-এর হাতে সমর্পিত হবে সেদিন ভারত তথা বিশ্বের কোটি কোটি সৎসঙ্গী বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মৌমাছির মতো ঝাঁকে ঝাঁকে সৎসঙ্গী বিশাল ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়বে বাংলাদেশের পাবনা জেলার হিমাইতপুরের শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মস্থানে। সেদিন চেয়ে চেয়ে দেখবে গোটা বাংলাদেশ সহ গোটা বিশ্ব। সেদিন সমগ্র বিশ্বের হিন্দু, মুসলিম, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ ইত্যাদি ইত্যাদি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের দীক্ষিত সৎসঙ্গী, ইষ্টপ্রাণ মানুষ, ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকে ভরে যাবে বাংলাদেশ। পূণ্যতীর্থ হ'য়ে উঠবে বাংলাদেশের পাবনা জেলার হিমাইতপুরের পবিত্র মাটি। ব্যবসা, বাণিজ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে বাংলাদেশ। অর্থ শক্তিতে ভরপুর ও বিরাট শক্তিশালী হ'য়ে উঠবে বাংলাদেশ।
আর যদি এর উল্টো অবস্থায় অবস্থান করে বাংলাদেশ সরকার যদি শ্রীশ্রীঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত পাবনার হিমায়েতপুর মানসিক হাসপাতাল ক্যাম্পাসে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের স্মৃতি বিজড়িত বিশ্ববিজ্ঞান কেন্দ্রের স্থান ধ্বংস করার, চিহ্ন লুপ্ত করার চেষ্টা করে, আত্মসাৎ করার চেষ্টা করে শ্রীশ্রীঠাকুরের ( ১৩৩-২৫ একর জমি ও নির্মিত ভবন ) বিশাল সম্পত্তি-------যা ইতিমধ্যেই আত্মসাৎ হ'য়ে চলেছে; সুনিপুন তৎপরতায় লোডার রড, এ্যাংগেল, দরজা জানালা খুলে নিয়ে ভেঙে ফেলার চক্রান্ত চলেছে-------- তাহ'লে শেষের সেদিন ভয়ংকর অপেক্ষা করছে।
যাই হ'ক এই ব্যাপারে বহু আগেই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার (এন ডি এ) বিদেশ মন্ত্রী প্রয়াতা নেত্রী শ্রীমতি সুষমা স্বরাজের সুদক্ষ নেতৃত্বে আলোচনা ক'রে বিষয়টিকে জটিলতা মুক্ত করার উদ্যোগ নেয়। কেন্দ্রীয় সরকারের (এন ডি এ) হস্তক্ষেপে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার ও সরকারের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি শেখ হাসিনা এই ব্যাপারে উদ্যোগ নেন এবং যথাশীঘ্র সম্ভব সুপ্রীম কোর্টকে অনুরোধ করেন যত দ্রুত সম্ভব মামলাধীন এই বিষয়টির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে। এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশমন্ত্রী শ্রীমতি সুষমা স্বরাজ দ্রুত হস্তক্ষেপ করেন এবং তাঁর আন্তরিক প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ এবং হস্তক্ষেপে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনায় হিমঘরে পড়ে থাকা গুরুত্বপূর্ণ দলিল দিনের আলোয় উন্মোচিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের ও সুপ্রীম কোর্টের প্রতিনিধি দল এই ব্যাপারে বাংলাদেশে দায়িত্ব প্রাপ্ত সৎসঙ্গ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন ও দেওঘরে এসে শ্রীশ্রীদাদা থাকাকালীন মূল কেন্দ্র পরিদর্শন করেন ও প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ্য সংগ্রহ ক'রে যান। এবং পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট বিগত ৩১শে মে ২০১৮ ইং (বৃহস্পতিবার) শ্রীশ্রীঠাকুর প্রতিষ্ঠিত মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ'-এর পক্ষে তাদের রায় দেন। এবং ডি,সি, সাহেবকে বলা হয়, অনতিবিলম্বে জায়গার দখল বুঝিতে দিতে
কিন্তু যতদূর জানা যায়--------পাবনা জেলার হিমাইতপুরের স্থানীয় ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্রে কিছু সৎসঙ্গী ও অদীক্ষিত ক্ষমতাবান কিছু মানুষ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে--------বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের আইনী জটিলতায় কোনও এক স্তরে আটকে আছে। এই ব্যাপারে ভারত সরকারের একটু কড়া পদক্ষেপ ও আন্তরিক উদ্যোগ এবং বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় সরকারী প্রশাসনের ও সুপ্রিম কোর্টের তৎপরতায় বিষয়টির সমাধানে প্রকৃত সাহায্য হ'তে পারে। সম্প্রতি ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রীযুক্ত অমিত শাহ দেওঘর 'সৎসঙ্গ' আশ্রম পরিদর্শনকালে বর্তমান শ্রীশ্রীআচার্যদেব তাঁর কাছে এই বিষয়টি সমাধানে সাহায্য প্রার্থনা ও অনুরোধ করেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সম্মতিসূচক আগ্রহ প্রকাশ করেন।
আশা করা যায় লোকসভা নির্বাচন (২০২৪) পরবর্তী খুব শীঘ্রই দুই দেশের সরকারের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মধুরেণ সমাপয়েৎ হবে।
আমার জানাটুকু শেয়ার করলাম। সাম্প্রতিক আপ ডেট জানা নেই। জানলে শেয়ার করবো।
(লেখা ২৭শে অক্টোবর'২০২৩)

No comments:

Post a Comment