Powered By Blogger

Friday, March 31, 2023

প্রবন্ধঃ ইউটোপিয়া।

মাঝে মাঝে মনে হয় সব ইউটোপিয়া। সব কল্পকথা! কল্পলৌকিক বিবরণ! বাস্তবের সঙ্গে কোনও মিল নেই। কল্পলোকের বিবরণ সমৃদ্ধ এক আবহে আচ্ছন্ন হ'য়ে আছি। শুধু আশায় মরে চাষার মতো বৃথা এক স্বপ্ন নিয়ে যেন বেঁচে আছি। মনে হয় সব মিথ্যা মিথ্যা মিথ্যা! দয়াল মিথ্যা! দয়ালের কথা মিথ্যা!! দয়ালের পৃথিবী মিথ্যা!!! শুধু সত্য চারপাশের ধান্দাবাজ কপট অধর্ম্ম কুকর্মকারী মানুষ আর ধান্দাবাজ পৃথিবী। এ ছাড়া আর কোনও সত্য নেই। সত্য ব'লে যা বলা হয় বা হ'য়ে থাকে তা সব সব সব মিথ্যা মিথ্যা মিথ্যা।

এখন সব কল্পলোকের কথা ব'লে মনে হয় তাই আর অত উৎসাহ পাই না। বয়স হ'লো, দেখলাম অনেক, বুঝলাম তার থেকেও বেশী। চিনলাম গিরগিটির থেকেও ভয়ঙ্কর বহুরূপী সৎসঙ্গী। যার বা যাদের বহুরূপী রূপ দেখে গিরগিটিও ভয় পায়। লজ্জা পায় তাদের বহুরূপের সঙ্গে ভয়ঙ্কর ভয়াবহ বহুরূপী মানুষের তুলনা করা হয় ব'লে।
আর আজ তাই নির্ম্মম সত্য দেখে দেখে সব ইউটোপিয়া মনে হয়। মনে হয় মিথ্যা এক সুরম্য স্থান যাকে কল্পলোক বা কল্পস্বর্গ বলে, সেখানে বসবাস করেছি এতদিন। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর প্রকাশ্যে বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় সৎসঙ্গ আয়োজনে যে পরিকল্পিত বাধা পেয়েছি ও অবশেষে সৎসঙ্গীদের দ্বারা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে দানা বেঁধে ওঠা সৎসঙ্গ আন্দোলনকে ভেঙে চুড়মার ক'রে দিতে দেখেছি তা জন্মজন্মান্তর আমার সাধনার অভিজ্ঞতার ফসল হ'য়ে থাকবে। যদি আমি অকপটভাবে একটুও দয়ালকে ভালোবেসে থাকি। হয়তো আবার আসবো আমি ভবিষ্যৎ ভয়ঙ্কর আগুন পরিবেশে এই অভিজ্ঞতাকে সাথী ক'রে।

যাই হ'ক, আগে তো মানুষ অকপট ও ইগো মুক্ত হ'ক তারপর তো তাঁর কাজ। কথার স্রোতে ভেসে মুখে তাঁর গান গাইছি, "ছাড় রে মন কপট চাতুরী----" আর পাশের গুরুভাইকে কনুইয়ের গুঁতো মেরে বলছি, কেমন দিলাম ওকে, ব--ল।

এ আমার তিক্ত অভিজ্ঞতা।

প্রবন্ধঃ এ কিসের অশনি সংকেত????

দেখতে দেখতে অনেকগুলি বসন্ত পার হ'য়ে এলাম। এই লেখাও যখন লিখছি তখনও বসন্তের ঠান্ডা বাতাস এসে গায়ে তার নরম হাত বুলিয়ে দেয়। আজ আর লিখতে ভালো লাগে না বা ইচ্ছে করে না। মনে হয় অরণ্যে রোদন। আর সত্যি সত্যিই তাই। আর অপ্রিয় সত্য কথা কারই বা ভালো লাগে?

যাই হ'ক বসন্ত বা বাসন্তীর ঠান্ডা নরম হাতের আদর ভালো লাগে, ভীষণ ভালো লাগে। কিন্তু সময়টা খারাপ তার ওপর বয়স হয়েছে। বসন্ত কি বাসন্তি তার নরম হাত বুলাতে বুলাতে অবশেষে গা না আবার গরম হ'য়ে যায়। তখন আর এক ভোগান্তি। যা এই বয়সকালের পক্ষে কখনই মঙ্গলজনক নয়।

যাই হ'ক, এই এতগুলো বসন্ত বা বাসন্তিদের তো পার হ'য়ে এলাম। দেখতে দেখতে ঘেন্না জন্মে গেছে। ঘেন্না জন্মে গেছে বসন্তের মাঝে চারপাশের ক্রিয়াকলাপ দেখে। বিশেষ ক'রে যখন এই দীর্ঘ বসন্তের মাঝে ঠাকুরের সোনার সৎসঙ্গীদের দেখি। যখন দেখি কি বিন্দাস আছে এই সৎসঙ্গীরা যারা ধর্ম্মেও আছে ও জিরাফেও আছে চরিত্রের। আর সেই সংখ্যাটাও নেহাৎ কম নয়! বিরাট বিপুল বিশাল একটা সংখ্যা। সাধারণ, অতি সাধারণ থেকে অসাধারণ সব স্তরের সব বয়সের সৎসঙ্গী তারা। কি মসৃণভাবে নিপুণতার সঙ্গে অত্যন্ত কৌশলী হ'য়ে তারা মিষ্টি মুখের মধুর হাসি ছড়িয়ে তোতাপাখির মতো ঠাকুরের বাণী, ঠাকুরের কথা আউড়ে যাচ্ছে মন্দিরে সৎসঙ্গে বসে আর আউড়ে যাচ্ছে ঠাকুরেরই সাবধান বাণী "দেবতার পায়ে মাথা খুঁটে তুই ফাঁকিতে বাগাতে চাস মাল, ঠাকুর তোর এতোই বেকুব ফাঁকি দেখে নয় সামাল" আর "তুমি যা করছো বা ক'রে রেখেছো ভগবান তাই-ই গ্রাহ্য করবে আর সেগুলির ফলও পাবে ঠিক তেমনি।" বাণীর বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না ক'রে, ফুঁ দিয়ে, তুড়ি মেড়ে উড়িয়ে দিয়ে ঠাকুরকে ভাঙ্গিয়ে নিজের ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার তৈরি ক'রে যাচ্ছে! এ এক অদভুত সন্ধিক্ষণ!

সবচেয়ে খারাপ লাগে যখন দেখি কেউ কোনও লেখা লেখে কোনও বিষয়ের ওপর ফেসবুকে বা অন্যান্য জায়গায় তখন লেখার সেই বিষয়, বিষয়ের ভাব, ভাষা, শব্দচয়ন, এমনকি ব্র্যাকেটে ইংরেজী শব্দগুলো পর্যন্ত ঠাকুরের রঙে রাঙানো আর তা নিজের মৌলিক রচনা ব'লে চালিয়ে দিচ্ছে ফেসবুকে, ম্যাগাজিনে, পত্রিকায়। এমনকি বই পর্যন্ত ছাপিয়ে ফেলছে। কিন্তু একবারও লেখার মধ্যে ঠাকুরের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছে না বা ঠাকুরকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না। সম্পূর্ণটাই নিজের চিন্তা ভাবনার ওপর দিয়ে সৃষ্টি ব'লে চালিয়ে দিচ্ছে আর এলাকার সৎসঙ্গী মহলে ও বৃহত্তর সমাজে একজন বুদ্ধিজীবী কেষ্টবিষ্টু সেজে বসছেন। এদের লেখাগুলি পড়লেই ঠাকুরের ভাব ভাষা পরিস্কার ভেসে ওঠে। যারা ঠাকুরের গ্রন্থ অধ্যয়ন করেছেন তারা পরিস্কার বুঝতে পারেন আমার এই লেখার সত্যতা।

তাই ভাবি ঠাকুর তোমাকে ভাঙ্গিয়ে কতজন কতভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করছে, আখের গুছিয়ে নিচ্ছে আর তুমি খালি আজও একাকী বসে কেঁদে চলেছো, কে কোথায় আছো আমায় কেউ মানুষ ভিক্ষা দিতে পারো? আমায় মানুষ ভিক্ষা দাও, আমায় মানুষ ভিক্ষা দাও ব'লে। তোমার সেই বুক ফাটা হৃদয় নিঙড়ানো কান্না কারও কর্ণগোচর হচ্ছে না। চাপা পড়ে যাচ্ছে সেই সতীদাহ-এর সময়ে বিকট ঢাক ঢোল কাঁসর ঘন্টার আওয়াজের আড়ালে সেই আগুনে পুড়ে মরা সদ্য বিধবার ভয়ঙ্কর যন্ত্রণাময় ভয়াবহ কান্নার মতো সাজা সৎসঙ্গীদের ভিড়ের বিশৃঙ্খল কোলাহলে।

হে দয়াল! তুমি তো জানো এ ঘোর কলি যুগ। এ যুগে তুমি আর কি আশা করতে পারো? তুমি এও জানো, কথায় আছে, "পড়েছো মোগলের হাতে খানা খেতে হবে একসাথে। আর পঞ্চ ভুতের ফাঁদে ব্রহ্মা পড়ে কাঁদে।" তেমনি 'সাজা সৎসঙ্গীদের হাতে সাজতে হবে তোমাকে। আর, সৎসঙ্গী মাঝে দয়াল পড়ে কাঁদে।' এও ভবিতব্য।

এ কিসের অশনি সংকেত????

কবিতাঃ যদি না-------

যদি এপারে না দিলে আশ্রয়
তোমার চরণতলে সত্যধামে;
চাই না তোমার দয়া আর প্রশ্রয়
পেতে ঠাঁই পরপারে মরধামে।

যদি এপারে না দিলে অধিকার
করিতে তোমার প্রচার এ জীবনে
চাই না লভিতে জনম আরবার
চাই না দয়া আর তোমার
শয়নে-স্বপনে-জাগরণে।

যদি না পারি ভালোবাসিতে তোমায়,
না পারি ভালোবেসে হ'তে পাগল
করিতে পাগল তোমায় এপারে প্রভু
তবে যাক মুছে ভালোবাসা চিরতরে
জীবন থেকে মোর যেন না বাসিতে হয়
ভালো কাহারেও আগামীতে জনমে জনমে কভু।

Saturday, March 25, 2023

প্রবন্ধঃ সরকার ও প্রশাসনের প্রতি!

তাদের হাতে একদিনের জন্য দিন প্রশাসন!

করোনার আক্রমণের এই কঠিন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সচেতন প্রচন্ড সিরিয়াস বুদ্ধিমান মানুষ যারা আছে তাদের হাতে একবার অন্ততঃ একবার দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক দায়িত্ব দেওয়া হ'ক! তাদের খুঁজে বের করা হ'ক তৎপরতার সঙ্গে যারা ভয়ানক ভয়ঙ্কর ভয়াবহ বিষম সিরিয়াস! অন্ততঃ আর্জেন্সি ও ইমার্জেন্সি ভিত্তিতে। তারপর আপনারা আবার নিজেদের হাতে নিয়ে নেবেন দায়িত্ব! যদিও জানি যে সম্ভব নয়। আপনারা যে যে দলেরই হ'ন না কেন আপনারা কোনও যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিকে তুলে আনবেন না, সামনে জায়গা দেবেন না! এই হীনমন্যতা চিরকালের! তবুও বললাম। যদি আকবরের মত কোনও সম্রাট ভুল ক'রেও তাঁর নবরত্ন নিয়ে এসে যায় আবার সিংহাসনে!
যাই হ'ক, করোনা ভাইরাসে লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি সাধারণ মানুষ মরার চেয়ে একদিনে সেইসমস্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন শোধ-বোধহীন মানুষ তা সে হিন্দু হ'ক, মুসলমান হ'ক, খ্রিষ্টান হ'ক আর যে বা যাই-ই ধর্মের হ'ক গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে মেরে ফেলা হ'ক! অন্ততঃ কিছু মানুষ যারা সরকারের প্রশাসনের নির্দেশিকা মেনে চলছে তারা বাঁচুক! একজন দু'জন চার অক্ষরের দ্বারা পরিবেশ নষ্ট হওয়ার জন্য মৃত্যুর মিছিল ডেকে আনার জন্য বাকি সবাই দুঃখ পাবে কেন!? কেন সেই সমস্ত বাচাল উদাসীন সীমাহীন উচ্শৃঙ্খল বিশৃঙ্খল মানুষের প্রতি সরকারের এত ভয় বা চিন্তা!? পুলিশকে দেখছি মানুষকে মারছে কিন্তু সেই সমস্ত মানুষের চোখে মুখে ভয়ের লেশ মাত্র নেই! পুলিশ মারছে নাকি মারার অভিনয় করছে!? পুলিশকে দেখে কেউ ভয়ে সিঁটিয়ে যাচ্ছে না! প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত ইতিবাচক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সত্ত্বেও একদল তা অনিচ্ছাকৃতই হ'ক, না জেনেবুঝেই হ'ক, কিংবা ষড়যন্ত্র ক'রেই হ'ক বানচাল ক'রে দেবার জন্য সচেষ্ট! তাদের সম্পর্কে ভাবতে, সিদ্ধান্ত নিতে এত শিথিলতা কেন!? কেন সরকার প্রশাসনের আদেশ-নির্দেশ মেনে চলা অসহায় নির্দোষ নাগরিকের প্রতি সরকারের তৎপরতায় ঢিলেমি!? সংখ্যাগুরু বাধ্য জনতার প্রতি দায় আছে কি নেই সরকার প্রশাসনের!? অবাধ্যকে এত ছাড় প্রশ্রয় কেন!? কেন তারা সরকারি নির্দেশিকাকে ভয় পাবে না!? কবে আসবে সেই কঠোর-কোমল, নির্মম-নরম রাষ্ট্রপ্রধান!? শাহীনবাগে বা আরও অন্য কোথাও সরকারের আদেশ-নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মারণ রোগকে জনসমাজে জেনেবুঝে ছড়িয়ে দেওয়ার কার্যক্রম নেওয়ার জন্য কেন সরকারকে এত সময় ভাবতে হ'লো তাদের জন্য!? দেরি হ'লো তাদের প্রতি কড়া ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নিতে!? কাকে ভয়!? কিসের ভয়!? ভয়ংকর মারণ ভাইরাস কি হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ইত্যাদি দেখে!? এতে সরকারের নপুংশতা প্রমাণ হ'লো না!? এর জন্য যেটুকু বা যতটুকু ক্ষতি হ'লো তার দায় সরকার পক্ষ নেবে তো!? কবে আসবে সেই নেতৃত্ব যেদিন এইসমস্ত বদমাশ শয়তান ধান্দাবাজ মানুষ সে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান ইত্যাদি যেই হ'ক না কেন সরকারের শুধুমাত্র ঘোষণাকেই ভয় পাবে, আতঙ্কে ঘরে ঢুকে যাবে, কাজে কিছু করতে হবে না! কবে এমন ভয়াবহ রাতের ঘুম ছুটে যাওয়া অভিজ্ঞতা হবে দেশের এইসমস্ত মুষ্টিমেয় বালখিল্য শয়তান চার অক্ষরদের!? সে দিন কবে আসবে!? ১৩০কোটির দেশে একজনও কি প্রচণ্ড ক্ষমতাসম্পন্ন সৎ সাহসী দক্ষ যোগ্য দূরদর্শী জ্ঞানী চরিত্রবান দায়িত্ববান আদর্শবান ঈশ্বর বিশ্বাসী ভালোবাসাময় পবিত্র হৃদয়ের মানুষ, কথার মানুষ রাজনৈতিক ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ নেই!? ১৩০কোটির দেশে এমন মানুষের অভাব!? কেন!? কি বলেন দেশের কবি, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, সমাজসেবী ইত্যাদি সমাজের যত এলিট সম্প্রদায়!? মহাভারতের পুনরাবৃত্তি!? কৌরবের রাজ সভার ভীষ্ম, দ্রোনো, কর্ণ ইত্যাদি এলিটদের নীরবতার পুনরাবৃত্তি!? তাই আর কি করা যাবে!? মহাভারতের ধ্বংসের পুনরাবৃত্তি তো অবশ্যম্ভাবী, শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র! আমার মত বালখিল্য আরও যারা সমাজ সচেতন পাগলা------- আছে তাদের হাতেই না হ'ক ছেড়ে দেওয়া হ'ক দেশের শাসনভার। কিছু হবে না তা নিশ্চিত কিন্তু অভিজ্ঞতা তো হবে। কিন্তু তাদের খুঁজে বের করুক সরকার প্রশাসন যারা যোগ্য ও দক্ষ, সৎ ও সাহসী, আদর্শবান ও চরিত্রবান, ঈশ্বরবিশ্বাসী ও দেশপ্রেমী আগামী ধ্বংসের কথা ভেবে।
(লেখা ২৫শে মার্চ'২০২০)

প্রবন্ধঃ হে দয়াল! বাঁচাও! আমাদের বাঁচাও!!

আজ দেশের সামনে মহা দুর্যোগ! এই দুর্যোগে মানুষ আজ ভীত সন্ত্রস্ত হ'লেও একশ্রেণীর মানুষ কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা গৃহীত লক ডাউন নির্দেশ মানছে না! দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষ এই নির্দেশকে উপেক্ষা ক'রে পথে নেবে পড়ছে! পথে নেবে পড়ছে কেন? প্রয়োজনে নাকি অপ্রয়োজনে!? প্রয়োজনে যারা নাবছে তাদের কথা নাহয় আলাদা। কিন্ত যারা অপ্রয়োজনে পথে নাবছে? তাদের মানসিকতা কি? কোন মানসিকতায় তারা এই নির্দেশকে অমান্য করছে? যারা একান্তই প্রয়োজনে পথে নাবছে তারা সম্ভব হ'লে প্রয়োজনকে সীমিত করুক। নিতান্ত প্রয়োজন না হ'লে পথে যেন পা না রাখে তারা। আর পথে পা রাখলেও সরকারী নির্দেশিকাকে সম্মান জানিয়ে পথে পা রাখুক নিজের, নিজের পরিবারের ও পরিবেশের স্বার্থে। আর যারা নিছক মজা করার মানসিকতায় এই মারণ ব্যাধিকে নিয়ে খেলা করছে তারা কি মানসিক রুগী নাকি অসীম সাহসী!? নাকি তারা জীবনভর সবকিছুকেই ক্যাজুয়ালী নিয়ে এসেছে জীবনে? এই লক ডাউন অর্থাৎ ঘর বন্দী জীবন মানুষের কাছে জেলবন্দীর মত মনে হচ্ছে। যারা সারা জীবন বিশেষতঃ পুরুষ জাত রোজগারের উদ্দেশ্যে দিনের বেশীরভাগ সময় বাইরে কাটায় এবং কাজ শেষেও যারা ঘরের বাইরে নিছক আড্ডা বা সময় কাটানোর জন্য কিংবা অন্য কোনও কাজে যুক্ত থাকার জন্য ঘরের বাইরে বেশিরভাগ সময় নির্বাহ করে, খাওয়া, স্নান করা আর রাতের ঘুম ছাড়া ২৪ঘন্টার বেশীর ভাগ সময়টাই নিজের ঘরের চার দেওয়ালের বাইরে কাটায় তারা আজ ঘর বন্দী! হঠাৎ দীর্ঘ দিনের এই বন্দী জীবন মানিয়ে চলা আর নেশাগ্রস্ত মানুষের উইথড্রয়াল মুহূর্ত সমান! এই সমস্ত মানুষকে একটু বুঝিয়ে শুনিয়ে, কিছুটা প্রশাসনিক শাসনে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হ'লেও যারা সব কিছুকেই 'কারার ওই লৌহ কপাট, ভেঙে ফেল কররে লোপাট' দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে, সেই মানসিকতায় নেয় বা সব কিছুতেই রাজনীতি করার সুযোগ খোঁজে, যারা ওইসব বোঝানো টোঝানোর ধার ধারে না, ওইসব পদক্ষেপকে দুর্বলতা ব'লে মনে করে তাদের জন্য সরকার বা প্রশাসনকে সিরিয়াসলি ভেবে দেখতে হবে। তারা একপ্রকার মানসিক ভারসাম্যহীন ও জৈবি সংস্থিতিতে গন্ডগোল আছে। আর এই মুষ্টিমেয় মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষগুলোর জন্য ১৩০কোটির ওপর নেবে আসবে দুর্যোগ, দুর্ভোগ কেন!? তার জন্য কি দায়ী নয় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের উদাসীনতা ও অদূরদর্শীতা!? দায়ী নয় দ্রুত সঠিক মজবুত দৃঢ় আপোষহীন সিদ্ধান্ত নেবার অক্ষমতা!? কেন সরকার বৃহত্তর স্বার্থে বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না!? দীর্ঘদিনের গোলামী মানসিকতা!? দীর্ঘদিনের কঠোর বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত নিতে না পারার বদভ্যাস!? ৭০বছরেও কেন দেশের এইসমস্ত মানসিক ভারসাম্যহীন ধান্দাবাজ মানুষগুলো ভয় পেতে শিখলো না, ভালোবাসতে শিখলো না দেশের শাসন ব্যবস্থা ও তার শাসককে!? কে দায়ী!? কারা দায়ী!? কে দোষী!? কার দোষ!? এর উত্তর কে দেবে!? কার দেওয়া উচিত!? যারা দেশকে, রাজ্যকে শাসন করার ভার নিয়েছিল বা নিয়েছে, যারা বুদ্ধিকে জীবিকা ক'রে জীবন নির্বাহ করেছে বা করেন তারা শুধু দেখবে? উত্তর দেবে না?
যাই হ'ক, দেশ তথা বিশ্বের সামনে এই করোনা নামক মারণ ব্যাধির মহা দুর্যোগ থেকে কি মুক্ত হবে না মানবজাতি!? হবে, নিশ্চয়ই হবে। মানুষের সৃষ্ট এই মহাদুর্যোগের মোকাবিলা ক'রে জয়ী হবে মানুষ! সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তাঁর সৃষ্ট সন্তানদের অহংকারী উচ্শৃঙ্খল অসদাচারী জীবন যাপনে ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত হ'লেও একেবারে মুখ ফিরিয়ে রাখেন না! তাঁর দুঃখ বা কষ্ট একটাই তিনি সমস্ত কিছুর সমাধান জানলেও জোর ক'রে কাউকে দিয়ে কিছু করাতে পারেন না। যতক্ষণ না মানুষ নিজে বাঁচতে ও বাড়তে চাইবে ততক্ষণ তিনি অসহায়, ঠুঁটো জগন্নাথ! তাই জগন্নাথের কোনও হাত নেই! তিনি সমস্ত কিছুকে দু'হাত দিয়ে ধরেই আছেন, আগলে আছেন কিন্তু অহংকারে মত্ত মানুষ তাঁকে ধরে নেই, তাঁর হাত ছিটকে মানুষ আজ নিজেকেই মনে করেছে সব কিছুর সে নিজেই স্রষ্টা ও নিয়ন্তা! দেশের জমিদার থেকে জমাদার, দ্বীপপাল থেকে পঙ্গপাল সবাই নিজেকে মনে করে আমিই সর্বশ্রেষ্ঠ, আমিই প্রধান, আমার উপরে কেউ নাই, নাই অন্য কোনও অস্তিত্ব! আবার এই সমস্ত অহংকারী সবজান্তা ঈশ্বর অবিশ্বাসী ঘেতো মানুষ বিপদকালে দ্বারস্থ হয় আংটি, পাথর, তাবিজ, মাদুলি, তুকতাক, ঝাড়ফুঁক, লালসুতো-নীলসুতো-কালোসুতো, বাবাজী-মাতাজী, শনি-রাহু-কেতুর দরবারে! মাথা নত ক'রে হাজির হয় বোবা ভগবানের মন্দিরে মন্দিরে! বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে আকণ্ঠ ডুবে থাকা রিপু তাড়িত ভারসাম্যহীন বিশৃঙ্খল উচ্শৃঙ্খল গণ্ডিস্বার্থী মানুষ আবার মানবতার কথা বলে, বলে মানুষের বাঁচার কথা, বেড়ে ওঠার কথা, সাম্যের কথা! অসহায় গরীব দুর্বল মানুষের দুঃখ, ব্যথা, কষ্ট এদের ক্ষমতা দখলের আধার, রোজগারের উপকরণ! অপ্রিয় হ'লেও এ সত্য, মহাসত্য! মানুষের ইতিহাসে যখনই মানুষের অস্তিত্বের সংকট দেখা দিয়েছে, মানুষ কষ্ট, যন্ত্রণা পেয়েছে ও পায় স্বাধীন সুজলং সুফলং শস্যং শ্যমলং দেশে জন্মেও তখন বোঝা যায় সেই দেশের মাথায় কেমন মানুষ আছে বসে, যে আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে! তখন মনে পড়ে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের কথা:
ইষ্ট নাই নেতা যেই
যমের দালাল কিন্তু সেই।
গণ্ডিস্বার্থী হবে যে
নকল নেতা জানিস সে।
লোক পূরণ উপেক্ষি যে
গণ্ডিস্বার্থী ধরে,
শিষ্ট নেতা নয়কো সে-জন
নকল হয়েই মরে।
মানুষকে সইতে নারে
যে-জন তা'দের বয় না,
লাখ মোড়লি ঝাঁকুক না সে
নেতা তা'রে কয় না।
এ তো গেলো শাসকের কথা। কিন্তু এই শাসকই বা এমনতর জনগণ আবার যখন প্রকৃতির মারের কাছে দিশেহারা হ'য়ে সব হারিয়ে পাগলের মত মাথা নিচু ক'রে সেই প্রকৃতির কাছে অর্থাৎ স্রষ্টার দ্বারস্থ হয় নিজের লাজ লজ্জা, অহংকার, জ্ঞান-বিজ্ঞানকে পিছনে রেখে তখন সেই অবস্থা দেখলে মনে হয় মানুষ কত স্বার্থপর, ধান্দাবাজ! আর এই অবস্থা তখনই হয় যখন দুর্দশাতে কাবু হয় মানুষ। তাই এই প্রসঙ্গেও ঠাকুর বললেন,
দুর্দশাতে কাবু যখন বৃত্তিও কাবু তা'য়,
বাঁচার টানে মানুষ তখন বিধির পথে ধায়।৫৯
আবার যখন বিধির পথে অর্থাৎ নিয়ম শৃঙ্খলার পথে চলতে চলতে চিত্ত শক্তিশালী হ'য়ে ওঠে তখন আবার যে কে সেই কুত্তার ল্যাজে পরিণত হয় মানুষ। তাই এই অবস্থা সম্পর্কে ঠাকুর বললেন,
বিধির পথে তুষ্টি পেয়ে চিত্ত সবল হ'লে
বৃত্তি-ধান্দার স্বার্থ নিয়ে আবার ছুটে চলে।৫৯
আর এইভাবে চলতে চলতে আল্টিমেটলি ধ্বংসের মুখে চলে যায়। তাই ঠাকুর বললেন,
এমনি ক'রে ওঠা-পড়ায় মরণ মুখে ধায়,
ইষ্ট-উৎসর্জ্জনে কিন্তু সবই পাল্টে যায়।৫৯
এর মধ্যেও তিনি আশার আলো দেখিয়েছেন। মানুষ যদি ইষ্ট অর্থাৎ মঙ্গলময় ঈশ্বরের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে, নিজের সব কিছু ইষ্টের সেবায় দান করে তাহ'লে সমস্ত কিছু পরিবর্তন হ'য়ে যায়! যা কিছু জীবন বিধ্বংসী সব জীবন গড়ার উপকরণ হ'য়ে যায়!
আজ যখন দেশ সর্বনাশের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে তখন রাষ্ট্রধর্ম্ম যদি পালন না হয়, রাষ্ট্রের শাসন দন্ড যদি শিথিল হাতে ধরা থাকে তখন লোকশাসন তার পক্ষে অসম্ভব হ'য়ে ওঠে। তখন সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া ভুল হ'য়ে যায়। তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন,
রাষ্ট্রশাসনদন্ড দেশের চললে শিথিল পায়,
শিষ্ট দলি' অজ্ঞ বেকুব লোকশাসনে ধায়।৪১
আজ যখন মৃত্যু শিয়রে হানা দিয়েছে তখনও মানুষ সমস্ত কিছুকে হালকাভাবে নিচ্ছে, কোনও কিছুরই গুরুত্ব অনুধাবন করার চেষ্টায় করছে না! ভাবনা চিন্তায় অদ্ভুত এক শিথিলতা! যেন মনে হচ্ছে জ্যান্ত মরা মানুষ! আবার আন্দোলনের নামে সীমাহীন নিদারুণ উচ্শৃঙ্খলা দেশের মাটিতে হ'য়ে চলেছে! হ'য়ে চলেছিল স্বাধীনতার নামে শাহীনবাগে, পার্ক স্ট্রিটে। আর সিদ্ধান্ত নিতে হিমশিম খাচ্ছিলো দেশ ও রাজ্য নেতারা! অবাক লাগে এই ভয়ঙ্কর ছোঁয়াচে রোগকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে স্বাধীনতার নামে একশ্রেণীর উচ্শৃঙ্খল আন্দোলনকারী সংকীর্ণ গন্ডিস্বার্থীর ভালোর নামে নিজেদের রাজ প্রতিষ্ঠার নাকি ডাক দিয়ে চলছিল! আর তা চুপচাপ দেখছিল রাজ্য ও দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেতারা, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এই জন্মমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে! মনে পড়ে গেল ঠাকুরের সাবধান বাণী:
অবাধ ভালো করতে পারাই স্বাধীনতা কয়,
উচ্শৃঙ্খলের প্রশ্রয় পাওয়া স্বরাজ কিন্তু নয়।২৭
এরা নাকি এই ভয়ঙ্কর অবধারিত মৃত্যুর সময় দেশের সেবা করছে! এই প্রসঙ্গে ঠাকুর বললেন,
দেশের সেবার ধুয়ো ধ'রে জানিস কি যে করলি তা',
কী পেতে কী করতে হয় আছে কি তার দর্শীতা?
যাই হ'ক এমনিভাবেই অনেক আগেই অনেক রকম ভাবে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সাবধান ক'রে দিয়ে গেছেন মানুষকে। কিন্তু মানুষ তা মানলো না আর দেশের নেতৃবৃন্দ তাঁকে দিল না দেশ গড়ার, মানুষ গড়ার শ্রেষ্ঠ কারিগরের স্বীকৃতি! তবুও আজ তাঁর কোটি কোটি অনুগামী সৎসঙ্গীরা তাঁর কাছে আকুল প্রার্থনা জানাচ্ছে, হে দয়াল! তুমি ছাড়া এই সর্বনাশের সময়ে আর কেউই নেই আমাদের বাঁচায়! তুমি আমাদের বাঁচাও দয়াল! তুমি আমাদের বাঁচাও!!
(লেখা ২৫শে মার্চ'২০২০)

Thursday, March 23, 2023

Religion & Dharma

Religion and Dharma have been most important subject in the present circumstances of assembly election in west Bengal. But we, specially the elite people of the society should not ignore the truth.

In true sense or meaning Religion is not at all harmful in any era or time. The degeneration of Religion began at that moment when Religion according to its real inner meaning was not used in human life as well as social life rather it was used from the sense or intellect of not doings and religion and dharma is not at all same or hold similar meaning. Both have separate deep rooted meaning.

But the matter of grief is Who cares or bothered about the truth!? Let the society, country and public go to hell.------probi.
(Written 23rd March'2021)

Tuesday, March 21, 2023

কবিতাঃ হেসেহেসে মিলেমিশে।

কারো সাহায্য ছাড়া কিছু করা কঠিন, 
শারিরিক-মানসিক কষ্টের, যন্ত্রণার 
এ কথা জেনো বন্ধু তুমি সত্য 
কিন্তু কোনও কিছুই অসম্ভব নয়
যদি হও লক্ষ্যে অটল, অচ্যুত মত্ত।
ইষ্টকাজে কাউকে বাধা দিয়ে আটকে রাখা যায় 
কিছুদিন কিন্তু নয় চিরদিন। 
কিন্তু চিরদিনের জন্য ইষ্টের কাছে 
তুমি হ'য়ে গেলে অপরাধী
আর নিজের কাছে হ'য়ে যাবে হীন।
তোমার সাহায্য চেয়েছি ব'লে তুমি
ইষ্টের কাজ করছো আত্মপ্রতিষ্ঠা
আর বুক ভরা অহঙ্কার নিয়ে;
দিন শেষে যেদিন জীবন সূর্য যাবে হেলে
দেখবে সেদিন বিষন্নতা তোমায় করেছে গ্রাস
চারিদিকে শূন্যতা আর একা তুমি,
নেই কেউ কোথাও তোমার আশেপাশে
একাকীত্বের মাঝে যাচ্ছো ক্রমে ক্রমে ঝিমিয়ে।
আজ তুমি অর্থ-মান-যশের উন্মাদে মত্ত
দোর্দন্ডপ্রতাপে তুমি হিতাহিত জ্ঞান শূন্য
চুপিসারে আসছে পিছে যে ঝড় হবে বিপর্যস্ত,
পরিবার পরিজন নিয়ে হবে তুমি নিশ্চিত বিপন্ন।
তাই বলি, বন্ধু! 
দু'দিনের জন্য তো আছি এই পৃথিবীতে
ইষ্টপ্রতিষ্ঠার কাজে হেসে হেসে
এসো মিলেমিশে কাটিয়ে দিই দু'জনাতে।

 

কবিতাঃ সৎসঙ্গীদের প্রতি।

ভয় কি তোর ভাইরাসে করোনার!?
করোনা নামক দৈত্যটিকে 
নাম আগুনে জ্বালিয়ে মার, পুড়িয়ে মার।
মহাশক্তি ঘুমায় তোর হৃদয়ে 
তুই কেনরে ভয়ে মরিস! 
করোনা নামক মৃত্যুদূতে 
নাম আগুনে পুড়িয়ে মারিস।
রাস্বা নামে জয়গুরু ব'লে দে না ঝাঁপ!
করোনার মরণ দুয়ারে পড়বে ঝাঁপ!!
যে যা বলে বলুক, যে যা করে করুক;
তোমার বুকের মাঝে আছে যে নাম, মহানাম; 
সেই নামের তাপে করোনা পুড়ে মরুক!!
করোনার ঔষধ সদাচার আর মহৌষধ তাঁর বীজনাম! 
নামামৃতে করো করোনা ভাইরাসকে খানখান!
নাম করো, নাম করো, নাম করো ভাই!
নাম আগুনে করোনা ভাইরাস হবে পুড়ে ছাই!!
দিয়েছিলে কথা তুমি হ'য়োনা কথার খেলাপি;
করোনা ভীতি শুধু নয়,
নাম থেরাপিতে কাটবে মহাভীতি, যমভীতি!
নিঃশ্বাসে-প্রশ্বাসে করো নাম, গাও নাম,
করো নাম অবিরাম আবৃত্তি!
করোনা-য় ক'রো না ভয়, হ'য়ো না আত্মঘাতী!
দয়ালের নাম অমৃত করো পান 
কাটবে অকাল যমভীতি!!
করোনা নিয়ে ক'রো না হেলাফেলা, 
ক'রো না অবহেলা, জেনে নাও এবেলা 
করোনার চ্যালেঞ্জ জেনো মন্ত্র 'ক'রো না' 
আর 'বীজনাম' মহানাম নহেলে পে দহেলা!
চীন থেকে এলো ভারতে মৃত্যুদূত করোনা 
আর চীনের প্রতি ভারতের আছে করুণা! 
কারণ পরম করুণাময় পুরুষোত্তম  মানুষ রূপী 
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের দেশ ভারত! 
তাই তাঁর কাছে আসুন প্রার্থনা করি 
তাঁর সৎনামে বাঁচুক জগৎ!
( লেখা মার্চ'২১'২০২০০) 





কবিতাঃ কেউ কি নেই

কেউ কি ভালোবাসার কথা বলবে না!?
কেউ কি প্রেমের বাতাস ছড়াবে না!?
কেউ কি নেই প্রেম ভালোবাসার জন্য জীবন বলি দেবে?
সবাই রেগে আছে! ঘরে বাইরে সবাই তপ্ত, উত্তপ্ত!
সবাই ছড়াচ্ছে ক্ষোভের আগুন!
সত্যি হ'ক আর মিথ্যা হ'ক,
বানিয়ে বানিয়ে হ'ক আর ইতিহাস ঘেঁটে হ'ক
সবাই আজ হিতাহিতজ্ঞানশূন্য!
ধর্ম, শিক্ষা, রাজনীতি
সব নীতির আঙিনায় ধুন্ধুমার।
মিছিলে মিটিংয়ে মাইকে হুংকার,
আলোচনার টেবিলে হুংকার,
মিডিয়ায় হুংকার, কবিতায়, সাহিত্যে হুংকার!
কলমের ডগায় আগুন,
রঙ তুলিতে, সিনেমায় নাটকে গানে আগুন!
শুধু বাদ প্রতিবাদে মার কাটারি আগুনে হুংকার!
সত্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা, মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্য,
সৎ-এর বিরুদ্ধে অসৎ আর অসৎ-এর বিরুদ্ধে সৎ,
হিংসার বিরুদ্ধে অহিংসা, অহিংসার বিরুদ্ধে হিংসা
সবাই আজ খড়্গহস্ত!
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি!
এলিট সমাজ হয় মুখে কুলুপ আটা ভীষ্ম
নতুবা নিজ নিজ এজেণ্ডায় মুখর!
বিদ্রোহ বিপ্লবের তুলছে তুফান।
হে মানব! শান্ত হও।
চিত্ত শান্ত স্নিগ্ধ রাখো উত্তাপের মাঝে।
মিথ্যার বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, 
অসৎ-এর বিরুদ্ধে হও মুখর,
জ্বালাও আগুন কিন্তু মনে রেখো
সেই মুখরতায় যেন বিষাক্ত নিশ্বাস না ছড়িয়ে পড়ে,
নিয়ন্ত্রণহীন আগুনের ভয়াবহতায়
জ্বলে খাক না হ'য়ে যায় মনুষত্বের মূল বুনিয়াদ।
এসো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হও,
কঠোর কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তোলো,
কড়া হাতে দমন করো অন্যায়কে 
কিন্তু ন্যায়ের ওপর দাঁড়িয়ে,
হিংসাকে রুখে দাও 
পাথুরে মনোভাবে কিন্তু হিংসা দিয়ে নয়।
হিংসাকে হিংসা করো দয়ালের আহবানে
আর নিজের ওপরে হওয়া অন্যায়কে সহ্য করো।
কিন্তু রুখে দাও, দমন করো, নিকেশ ক'রে দাও
অন্যের ওপর হওয়া অন্যায়কে, নির্মম নিষ্ঠুরতাকে।
আর প্রেম ভালোবাসায় ভরিয়ে দাও বিশ্ব চরাচর।
শয়নে স্বপনে জাগরণে ধ্বনিত হ'ক
আর চরিত্রে গড়ে উঠুক
প্রেমময় জীবন্ত ঈশ্বরের বাণীঃ
প্রেমকে প্রার্থনা করো আর হিংসাকে দূরে রাখো।
এমন কেউ কি নেই?
( লেখা ২১শে মার্চ'২০১২ )

কবিতাঃ সীম অসীম।

সীমার মাঝে তুমি অসীম
আর অসীমের বুকে খোঁজো সীম!
সীমার মাঝে হয়ে অসীম
বুকের মাঝে তুলছো ঝড় রাতদিন!
আর বলছো আমায়-----
অসীমের মাঝে থাকো তুমি
হ’য়ে চিরদিন সসীম!
যদিও জানি এ অসম্ভব----
দুর্বার অসীমের আকর্ষণ ঠেকিয়ে
সীমার কাছে থাকা অধীন।
সীমার মাঝে তুমি হ’য়ে আছো অসীম
আর বলছো আমায়------
সীমার মাঝে অসীমের গভীরতা কি মাপা যায়?
সীমা লঙ্ঘনে আপত্তি তোমার আর
তাই প্রশ্ন তোলও মার্জিত-অমার্জিতের।
কিন্তু,
গভীরতায় হাবুডুবু না খেলে গভীরতার
মান থাকে কি? সে তো একাকি!
একা বোকা নয় কি?
সীমার মাঝে ক’রে অবস্থান
গভীরতার বুকে ঢেউ তোলা আর
সোনার পাথর বাটি সমান।
তুমি অসীম, তুমি অনন্ত, তুমি সোনা!
সীমা লঙ্ঘনে তুমি ক’রো না আমায় মানা।
সীমার আগল ভেঙে অসীমের বুকে
তুলবো আমি ঝড়;
আর গভীরতার বুকে
সাঁতরে আমি তুলবো বিশাল ঢেউ
ধ্বনি তুলে বমবম হরহর!!!!!!
তবে নিরালা-নিবেশের পাঁচিল তুলে
অশ্লীল হব’ আমি
ঝড় আর ঢেউকে ক’রে সাথী।
এসো তুমি হে প্রিয়ে!
এসো হে অসীম!
এসো ভেঙে দিয়ে রেখা
সীমার মাঝে তুমি একাকি।
( লেখা মার্চ'২১ ২০১৭ )

নেতানেত্রীর বয়ান!

ভারতের ১৬তম সাধারণ লোকসভা নির্বাচনের পূর্বে রাজনৈতিক নেতানেত্রীর গুরুত্বপূর্ণ বয়ান। 

"নেতা নয়, দেশে বিকল্প নীতি প্রয়োজন। নীতির ভিত্তিতে সরকার গড়তে হবে"। –বুদ্ধদেব।

"নেতা দেশ বদলতা নেহী, জনতা দেশ বদলতা হ্যায়”...- রাহুল গান্ধী।
‘ব্যক্তি নয়, দল বড়’। -মমতা বন্দোপাধ্যায়।

"Give me 60months at the centre; I'll give you a life of peace and happiness".... নরেন্দ্র মোদী।

( লেখা ১৯শে মার্চ'২০১৪ )

  

Friday, March 17, 2023

প্রবন্ধঃ মানুষ-১

সেদিনটা ছিল শনিবার। ব্যাংকের কাজে যেতে হয়েছিল কলকাতা। পার্ক স্ট্রীটের জীবন দীপ বিল্ডিংয়ের এস বি আই শাখা ছিল গন্তব্যস্থল। দুপুরবেলা বেরিয়ে ছিলাম। পাঁচটার মধ্যেই ফ্রি হ'য়ে গিয়েছিলাম। কাজ শেষে গিয়েছিলাম এক্সাইড মোড়ের হলদিরামে। সঙ্গে ছিল পরিবার। ছেলে-মেয়ে-বউ আর ছিল আমার ভাইপোর ছোট্ট ১০বছরের নাতনি। আমি সচরাচর কোথাও যাই না কিন্তু এরকম অল্প সময়ের কোনও কাজে বেরোলে আর সেদিন যদি বাড়িতে সবাই থাকে তখন একসঙ্গে বেরোনো হয়। ছেলেমেয়েরা জোর করে বেরোবার জন্যে কিন্তু রাস্তাঘাটের ঝামেলা, প্রতিনিয়ত যানজট, অকারণ হঠাৎ হঠাৎ মিছিল-মিটিং ইত্যাদির কারনে বাইরে বেরোনোর ইচ্ছেটাই ম'রে গ্যাছে তবে ঠাকুরের কাজে বেরোতে দ্বিধা করি না। আর যদি বেরোয় তাহ'লে সঙ্গে ওই নাতনি থাকবেই।

যাই হ'ক ব্যাংকের কাজ শেষে পড়ন্ত বিকেলের ঠান্ডা হাওয়ায় হলদিরামের দোকানে সিঙ্গাড়া, ঢোকলা, পাপরিচাট, মিষ্টি, আইসক্রিম ইত্যাদি খেয়ে (যদিও আমি একটা সিঙ্গাড়া খেয়েছিলাম মাত্র; আজকাল ভয় লাগে খেতে কিন্তু লোভ আছে ষোলআনা) যখন বাড়ি ফেরার জন্য গাড়ির দিকে এগোচ্ছি তখন নাতনি বললো, তার গা বমি বমি করছে। গাড়িতে আসবার সময় একবার বলেছিল তার শরীরটা কেমন কেমন করছে, বলেছিল এসি বন্ধ ক'রে দিয়ে জানলা খুলে দিতে তখন অতটা বিষয়টা গ্রাহ্য করিনি। আসলে ওর ওই গাড়ির জানালা বন্ধ জায়গা ভালো লাগে না। যাই হ'ক ব্যাপারটা তখন সেরকম কোনও অসুবিধার কারণ ঘটায়নি কিন্তু এখনকার ব্যাপারটা মনে হ'লো আলাদা। গা গুলিয়ে উঠছে দেখে একটা ছোট স্প্রাইট কিনে দিলাম। তারপর হাঁটতে লাগলাম গাড়ির দিকে। একটু পরেই দেখলাম আমার নাতনি নিজের থেকে এগিয়ে গেল রাস্তার একটা কোনায় আর সেখানে গিয়ে বমি করতে লাগলো। আমি তাকে বুকে পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম। তারপর তার বমি বন্ধ হ'য়ে গেল। বললো, দাদাই এখন ভালো লাগছে। মুখে তার হাসি ফুটে উঠলো। দেখলাম বমিতে কিছুই নেই; যা বেরিয়েছে মনে হ'লো আইসক্রিম সব বেরিয়ে গ্যাছে।

এবার আসি আসল কথায়। এরকম এক অবস্থায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে নিজেকে বড় অসহায় মনে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল এই অবস্থায় একটু জল পেলে ভালো হ'তো কিন্তু কোথায় জল পাবো! ভাবছিলাম তাহ'লে রাস্তার ধারে রেস্টুরেন্ট গুলোতে আমাকে যেতে হয়। ঠিক এরকম অবস্থায় রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলোর মাঝখান থেকে বেরিয়ে এলেন একজন মানুষ! কাছে এসে বললো, একটু জল দেবো? তাঁর দিকে তাকিয়ে মনে হ'লো যেন সামনে এসে দাঁড়িয়েছে এক দেবদূত! আমি এই অসহায় অবস্থার মধ্যে যেন মনে হ'লো হাতে চাঁদ পেলাম! বললাম, হ্যাঁ একটু দিন না। ভদ্রলোক গাড়ির দরজা খুলে একটা জলের বোতল বের ক'রে আমার হাতে দিল। আমি সেই বোতলের জল দিয়ে আমার নাতনির চোখেমুখ ভালো ক'রে ধুয়ে দিলাম তারপর কুলকুচি ক'রে মুখ ধুয়ে নিয়ে একেবারে ফ্রেস হ'য়ে গেল। তারপরে হাসি মুখে বললো, দাদাই, আমার এখন ভালো লাগছে। আর জল লাগবে না। আমি বোতলটা ভদ্রলোকের হাতে ফিরিয়ে দিলাম। কৃতজ্ঞতা জানাবার সেই মুহূর্তে ভাষা খুঁজে পেলাম না। শুধু খুব আন্তরিকভাবে হাসিমুখে বললাম, ধন্যবাদ। ভদ্রলোক জবাবে শুধু একটা নির্মল হাসি ফিরিয়ে দিলেন। আমরা গাড়ির দিকে এগিয়ে গেলাম। গাড়িতে উঠে বসে যখন গাড়ি ঘুরিয়ে ওই ভদ্রলোক যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন তাঁর পাশ দিয়ে যাবার সময় তাঁর সঙ্গে দেখা হ'লো আমি হাত তুলে তাঁকে বুক ভরা অভিবাদন জানালাম আর আমার নাতনি তাঁর দিকে তাকিয়ে হাসি মুখে হাত নাড়লো। তিনিও প্রত্যুত্তরে হাসিমুখে হাত নাড়ালেন। গাড়ি ধীরে ধীরে তাঁকে পেরিয়ে এগিয়ে গেলো আর ছুটে চললো বাড়ির দিকে।

ফিরতে ফিরতে শুধু মানুষটার মুখটা ভেসে উঠছিল। ভাবছিলাম, মানুষ মানুষের জন্যে কথাটা মিথ্যে নয়! পরমপিতার শ্রীচরণে তাঁর সর্বাঙ্গীন মঙ্গল প্রার্থনা করলাম। আর সেদিন কিভাবে কৃতজ্ঞতা জানাব বুঝতে পারছিলাম না কথাটা ঘুরপাক খাচ্ছিল মনের মধ্যে আর তাই আজ লিখে ফেললাম সেদিনের দেখা মানুষটার কথা। অল্প সময়ের জন্য পুরো মনটা কেড়ে নিয়েছিল যে মানুষটি তাঁর কথা লিখে মনটা জুড়িয়ে নিলাম মাত্র। জানি না এই লেখা তাঁর চোখে পড়বে কিনা!
( লেখা ১৮ই মার্চ' ২০১৯ )

প্রবন্ধঃ ভুমিপুত্র কে বা কারা?

মানুষ জানতে চায়! কেউ জবাব দেবেন?

ভারত কি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হ'য়ে যাবে আবার!? আজ থেকে ৭৪ বছর আগে দেশ স্বাধীন হওয়ার সময়েই ভারতকে ভেঙ্গে দু'টুকরো ক'রে দিয়ে চলে গিয়েছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। ব্রিটিশ দেশ থেকে চিরদিনের জন্য চলে যাবার আগে প্রত্যক্ষভাবে শাসন করার পরিবর্তে অপ্রত্যক্ষভাবে তার উপস্থিতি বজায় রাখার ঘৃণ্য এক খেলা রচনা করেছিল দেশটাকে দু'টুকরো ক'রে দিয়ে হিন্দু মুসলমানের মধ্যে চিরদিনের জন্য সাম্প্রদায়িক ঘৃণার লড়াই লাগিয়ে দিয়ে। যে ঘৃণা আজ ৭৪ বছর পরও ব'য়ে চলেছে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে; যা অন্য সম্প্রদায়ের মধ্যে সংক্রামিত হয়েছে ও হয়ে চলেছে ধীরে ধীরে। ভারত ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হবার আবার কি কোনও গোপন আন্তর্জাতিক চক্রান্ত চলছে? সেই যে শত্রুতার ডিম পেড়ে গেল ব্রিটিশ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে যা আজ ৭৪বছর ধ'রে ভারত পাকিস্তানের মধ্যে এবং ইদানিং ভারত বাংলাদেশের মধ্যে যত্নের সঙ্গে লালিত পালিত হ'য়ে ফুটে চলেছে তার প্রতিফলন কি অর্থাৎ সেই শত্রুতার ডিম কি তা দিয়ে দিয়ে ফুটিয়ে তোলার ঘৃণ্য দায়িত্ব রাজ্যে রাজ্যে বিভিন্ন ভাষাভাষীর মধ্যে পড়ছে? সেই ৭৪বছর আগে ঘৃণ্য দেশভাগের পরিকল্পনার সময়ে The greatest phenomenon of the world SriSri Thakur Anukulchandra দেশের তৎকালীন নেতৃবৃন্দের কাছে সৎসঙ্গের পক্ষ থেকে বার্তা পাঠিয়ে সাবধান ক'রে দিয়েছিলেন; বলেছিলেন, "Dividing compromise is the hatch of animoysity. ( ভাগ ক'রে সমাধান করার অর্থ তা দিয়ে শত্রুতার ডিম ফুটানো)।
আজ আমরা প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে সত্যদ্রষ্টা পুরুষ রক্তমাংসের জীবন্ত ঈশ্বরের বলে যাওয়া সাবধান বাণীর জ্বলন্ত প্রমাণ দেখতে পাচ্ছি। ব্রিটিশদের দ্বারা দু'টুকরো ক'রে ভাগ ক'রে দিয়ে যাওয়া দেশ পরবর্তীতে তিন টুকরো হ'লো। আগামীতে আরও টুকরো হওয়ার অশনি সঙ্কেত কি আমরা দেখতে পারছি না!? এতটাই আমরা উদাসীন!? আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা!? আঁচ কি সত্যি সত্যিই আমাদের গায়ে লাগবে না? পূর্বের দেশ ভাঙ্গার ভয়ংকর আঁচ কি আমাদের গায়ে লাগছে না!? সেদিন ধর্মের নামে দেশ ভাগ হয়েছিল নির্লজ্জভাবে দেশের উচ্চশিক্ষিত ক্ষমতালোভীদের হাত ধ'রে বিশ্বের সবচেয়ে সভ্য ও শৃঙ্খলিত জাত ব'লে স্বীকৃত ব্রিটিশদের প্রত্যক্ষ মদতে। আর আজ কিসের অশনি সঙ্কেত দেখতে বা শুনতে পাচ্ছি আমরা? আমরা কি আজ কালা ও অন্ধ হ'য়ে গেছি? অনেক উদাহরন আছে। একটা উদাহরন দিলেই বিষয়টা পরিস্কার হ'য়ে যাবে।
গতকাল একটা নতুন রাজনৈতিক দলের জন্ম হ'লো। নামঃ ভূমিপুত্র অধিকার পার্টি। এখন নতুন নতুন রাজনৈতিক দলের জন্ম হওয়াটা দু' আঙ্গুলে চুটকি বাজানোর মত হ'য়ে গেছে। যখন যেখানে যে পারছে একটা রাজনৈতিক দলের জন্ম দিচ্ছে এবং পিছনে মজবুত মদদের দৌলতে ক্ষমতায়ও এসে যাচ্ছে। আর এর ফলস্বরুপ সাধারণ মানুষের কি লাভ, কি ক্ষতি হচ্ছে তা দেখার দরকার পড়ছে না কোনও রাজনৈতিক দলের, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের! পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস, সিপিএম ক্ষমতায় ছিল, বর্তমানে তৃণমূল ক্ষমতায় আছে। ভবিষ্যত ঠিক করবে আগামী নির্বাচনের পরে কে পশ্চিমবঙ্গকে দেখভাল করার জন্য দায়িত্ব পাবে আর না পাবে। যেই-ই পাক সেটা পরের কথা। আগে ও বর্তমানে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা কি সব ভূমিপুত্র ছিল না? পশ্চিমবঙ্গের ভুমিতে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদের দ্বারা কি পশ্চিমবঙ্গের ভূমিপুত্রদের অধিকার রক্ষা করা হয়নি? তা হ'লে কাদের অধিকার রক্ষা করা হয়েছিল? পশ্চিমবঙ্গের ভূমিপুত্রদের অধিকার রক্ষা না ক'রে অন্য রাজ্যের ভূমিপুত্রদের অধিকার রক্ষা করা হয়েছিল? ভূমিপুত্র কারা? বাংলায় বাঙ্গালিরাই কি শুধু ভূমিপুত্র? বাংলায় বাংলাদেশ থেকে আসা বাঙ্গালিরা কি ভূমিপুত্র? বাংলায় ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা বিভিন্ন ভাষাভাষী, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অবাঙ্গালীরা কি ভূমিপুত্র? তাদের পরবর্তী বংশধর যারা এই বাংলায় জন্মেছে, এই বাংলায় বড় হয়েছে ও হচ্ছে, এই বাংলায় পড়াশুনা করেছে ও করছে, এই বাংলায় বাঙালীর সাথে বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হয়েছে ও হচ্ছে তারা সবাই কি বাংলার ভূমিপুত্র? বাংলার হিন্দুরাই কি শুধু ভূমিপুত্র? নাকি মুসলমানরাই ভূমিপুত্র? বাংলায় যারাই বাস করে তারাই কি ভূমিপুত্র? বাংলায় যারা জন্মায় তা বাঙালি, বিহারী, অসমিয়া, ওড়িয়া ইত্যাদি যেই হ'ক না কেন সেই বাঙালি ও ভূমিপুত্র? নাকি শুধু বাঙ্গালিরাই ভূমিপুত্র? বাংলা কার বা কাদের রাজ্য? কোনও সরকারই কি ভূমিপুত্রদের জন্য কোনও কাজই করেনি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ অবধি? তাই বহিরাগতদের আটকাতে নতুন ক'রে স্পেসিফিক ভূমিপুত্র ইস্যুতে নতুন রাজনৈতিক দলের জন্ম হ'লো? এর ফলে ভবিষ্যতে দূর ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভূমিপুত্র ইস্যুতে ভয়ংকর খেসারত দিতে হবে না তো? ভোট এতটাই বালাই যে বিচ্ছিন্নতার মতবাদকে আঁকড়ে ধ'রে ভূমিপুত্রের ইস্যুকে সামনে এনে ভয়াবহ আগুন নিয়ে খেলায় মেতে উঠতে হবে? রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠিত দলগুলো ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা কি ভূমিপুত্রদের দল ও ভূমিপুত্রদের নেতানেত্রী নয়? তাহ'লে আবার আলাদা ক'রে ভূমিপুত্রের অধিকারের অজুহাতে নতুন রাজনৈতিক দলের জন্ম কেন? কেন? কেন?
জবাব দেবেন কেউ? বাংলার মানুষ জানতে চায়।
( লেখা ১৮ই মার্চ'২০২১ )

Thursday, March 16, 2023

উপলব্ধিঃ আমরা বাঙ্গালী!

প্রবাদ আছে, সময়ের একটা সেলাই ন'টা সেলাইকে বাঁচায়। আরও একটা কথা আছে, 'পি পু ফি শু'; এর মানে কি? এর মানে পিঠ পুড়ে যাচ্ছে ফিরে শো'। আজ আমরা অতীত থেকে কোনও শিক্ষা নিইনি। অতীতেও দেশভাগ ও আরো স্পষ্ট ক'রে বললে বলা যেতে পারে বাংলা ভাগের সময়েও সঠিক সময়ে অশনি সঙ্কেতের টের পাইনি বা পেলেও সময়মত দ্রুততার সঙ্গে তীব্রভাবে সিরিয়াসলি সোচ্চার হইনি, ব্যবস্থা নিইনি আর তাই আমাদের হারাতে হয়েছে অনেক কিছু, হারাতে হয়েছে অনেক মানুষ সম্পদ। সময়ে একটা সেলাই না করার ফলে আরো ন'টা সেলাই আমাদের করতে হচ্ছে বর্তমানে। সেদিনও আমরা 'পিপুফিশু' মানসিকতার ছিলাম আর আজও তাই-ই আছি। ঘরে আগুন লাগার পরেও আমরা বাঙ্গালী শুয়ে আছি। আর শুয়ে আছি চরম অকল্পনীয় আলস্যতায়। এটা আলস্যতা বললে কম বা ভুল বলা হবে। এটা মেরুদন্ড ভাঙ্গা অসুস্থ বাঙালীর চিরকালীন অসুস্থতা। আর এই অসুস্থতা বাঙ্গালীর তা সে হিন্দু বাঙ্গালী হ'ক, মুসলমান বাঙ্গালী হ'ক বা খ্রিষ্টান বাঙ্গালী ইত্যাদি যে ধর্মের বা যে সম্প্রদায়ের বাঙ্গালী হ'ক না কেন এই রোগ বাঙ্গালীর জৈবী সংস্কৃতির মধ্যে ঢুকে গেছে। সঠিক সময়ে সঠিক প্রতিবাদ তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা, চায়ের কাপে, কাগজে কলমে মেকী ভুলভাল বিপ্লবের তুফান তোলা বাঙ্গালী কোনদিনই করতে পারেনি আর পরবর্তীতে অনেক অপদার্থ ভন্ড কপট সন্যাসীতে গাজন নষ্ট হওয়ার মত অযোগ্য অদক্ষ বৃত্তি প্রবৃত্তিতে আপাদমস্তক ডুবে থাকা বাঙ্গালী নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বের কারণে নেতৃত্ব হ য ব র ল হ'য়ে আন্দোলন, প্রতিবাদ হঠকারিতায় পৌঁছে গেছে যা আমরা অহরহ দেখেছি দেখছি আমার চারপাশে ও দেশের কোণে কোণে আর যার ফল ভুগতে হয়েছে, ভুগতে হচ্ছে ও ভুগতে হবে আরও চরম নির্মমতায় আগামীতে আগামী বাঙ্গালী প্রজন্মকে; যার জন্য দায়ী থাকবে পূর্বের ও আজকের ঘুমিয়ে থাকা বাঙ্গালী প্রজন্ম। আমরা সেই বাবু বাঙ্গালী রয়ে গেছি "আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা।"
(লেখা ১৬ই মার্চ'২০২২)

Wednesday, March 15, 2023

কবিতাঃ হে নারী! বলো কে আছে পাশে অবশেষে?

হে নারী! শুধুই কি তুমি নারী!
তুমি কন্যা, তুমি ভগ্নী,
তুমি প্রেমিকা, তুমিই পত্নী।
সংসার মাঝে নারী তুমি কান্ডারি।
তুমিই বন্ধু, তুমি জীবন সাথী।
জীবন মাঝে আঁধার রাতে
নারী তুমি মোর ঘরবাতি।
নারী তুমি কি শুধুই নারী!
তুমি অভয়া, তুমি অদিতি
তোমার ছায়া তোমার মায়ায়
জাগে হৃদয়ে প্রেম ও প্রীতি!
নারী তুমি কখনও সেলিব্রেটি,
কখনও বা তুমি বিত্তশালিনী,
তুমি অনন্যা, কখনও বা
নারী তুমি ক্ষমতা মালিনী!
নারী দিবসে তুমিই মুখ্য, তুমিই প্রধানা
জীবন যুদ্ধে বরাভয় হাতে তুমি
দাঁড়াও এসে পাশে হ’য়ে বীরাঙ্গনা!
তোমার অঙ্গে জ্বলে শত দিবাকর
হে নারী হতাশার মাঝে তুমি
প্রাণে তোলো ঝড়!
জগত মিথ্যা জেনো তুমি বিনা।
নারী তুমি কি শুধুই নারী!
বহুরুপে সম্মুখে তুমি হে নারী
তারি মাঝে শ্রেষ্ঠ রুপে তুমি মাতা! তুমি জননী!
নারী তুমি প্রাণ ক’রে দান হয়েছো ধন্য
এত কিছুর মাঝেও তবুও হ;য়ে আছো
আজও তুমি পণ্য! হে নারী তুমি বরেণ্য।
কে বানায় পণ্য তোমায় হে নারী
তা কি তুমি জানো? আঁধার রাত
সর্পিল আনাগোনা, কোন বিশ্বস্ত হাত
করে বেচাকেনা জিসম তোমার ক’রে পণ্য?
সে কি শুধুই পুরুষ??????
নাই নাই নাই ঠাই কোনোখানে ঠাই নাই
আছো পড়ে বাতায়নে হ’য়ে শুধু ছাই!
সময় ফুরোলে পঞ্চভূতে যাবে মিশে
তাচ্ছিল্য আর তীব্র অবহেলায়।
সুধী সমাজ হেঁকে বলে,
পণ্য হ’য়ে সদাই ছিলে
গানে গল্পে ছবিতে আর কবিতায়!
জিসম তোমার পণ্য করে গণ্যমান্য
গানে, গল্পে, কবিতার পরতে পরতে
শিল্পীর ছবিতে তুলির ছোঁয়ায়!
প্রতি অঙ্গ তোমার হ’য়ে পতঙ্গ নাচে কবির
কলম আর শিল্পীর তুলির শিশ্নে!
শিল্পের টানে কবিতার ভানে তারা জাগরণে
বিনি কেটে চলে, চলে শয়নে স্বপনে
তোমার শরীরী উপত্যকায় ভাঁজে ভাঁজে নির্দ্বিধায়
গভীর অর্থপূর্ণ শব্দের ঢেউ তুলে
সৃষ্টির নামে উত্তরহীন প্রশ্নে!
হে নারী-----
বলো কে আছে পাশে অবশেষে?
( লেখা ১৪ই মার্চ'২০১৭ )

Tuesday, March 14, 2023

চিঠিঃ উদ্দীপনবাবুকে খোলা চিঠি।






উদ্দীপনবাবু, আপনার লেখা পড়লাম। পড়ে বুঝলাম আপনার বাবা, মা-র দেওয়া নাম যথার্থই সার্থক হয়েছে। আপনি আপনার জেলাসির উদ্দীপনাকে আর ঠেকিয়ে রাখতে না পেরে লেখার শুরুতেই প্রমাণ করেছেন আপনি কারও উত্থান, সুখ্যাতি সহ্য করতে পারেন না। বিবেকানন্দের উত্থানে যে আপনার গাত্রদাহ হয় আর সেই দাহকে যে আপনি বাঙালি জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন সেটা আপনার তথ্যভিত্তিক আলোকপাতের অজুহাতে আপনার লেখার মধ্যে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। বিবেকানন্দের শিকাগো ধর্ম মহাসভার বক্তৃতার প্রচারকে আপনার কানে বেসুরো ও শ্রুতিকটু লেগেছে আর আপনার সেই বেসুরো কানকে সমগ্র বাঙালির কান বানিয়ে দিতে চাওয়ার ব্যর্থ প্রচেষ্টা করেছেন! কি অদ্ভুত বিকৃত মানসিকতা! আর রামকৃষ্ণের প্রতি এমনি জ্বালা যে ‘রামকৃষ্ণ মিশন’ প্রতিষ্ঠানকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য দৃষ্টিতে দেখেছেন। যে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আপনি সেই প্রতিষ্ঠানকেই কটাক্ষ করেছেন!সেই প্রতিষ্ঠানের প্রাণপুরুষ, সেই প্রতিষ্ঠানের প্রাণপুরুষের অতি প্রিয়জনের চরিত্র নিয়ে নির্মম বলাৎকার করতে বিবেক এতটুকু কেঁপে ওঠেনি! এটাকে কি বলে? যে পাতে খায় সেই পাতেই হাগে!? ভয়ংকর হেগো চরিত্র! অভিধানের ‘অকৃতজ্ঞ আর বেইমান’ শব্দের জ্বলন্ত উদাহরণ শরদিন্দু উদ্দীপন!

আপনার মনে হয়েছে দেওঘরের রামকৃষ্ণ মিশনের লাইব্রেরিতে বিবেকানন্দের উপর যে বইগুলি রয়েছে সেগুলি সব ভেজাল। আর সেই ভেজাল বইগুলির উপর রিসার্চ ক’রে আপনি রামকৃষ্ণ আর বিবেকানন্দকে বলাৎকার করতে বাপের বেটার মত বুক টানটান ক’রে ময়দানে নেবে পড়লেন হৈ হৈ করতে করতে। আপনাকে হ্যাটস অফ! আপনাকে আমি নিশ্চিত বলতে পারি আপনি যাদবপুর বা অন্য যে কোনো দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভেজাল বিশেষজ্ঞের মোটা টাকার চাকরী পেয়ে যেতে পারেন। চেষ্টা ক’রে দেখতে পারেন। আচ্ছা আপনি কি শূদ্র? ব্রাহ্মণ্যবাদের উপর এত ক্ষিপ্ত কেন? আচ্ছা ঠিক ক'রে ভেবে বলুন তো কোনও সত্যকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কি কোনও চেষ্টা করতে হয়? সত্য তো চিরকাল সত্য! তাকে আবার প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করতে হয় না-কি? বেদান্ত দর্শন এতই ঠুনকো না-কি যে তার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বিবেকানন্দকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখাতে হবে? আর পুনঃ প্রতিষ্ঠার কথা ওঠে কখন? এটাকি কোনও লুপ্তপ্রায় কোনও প্রজাতি না-কি যে তাকে নতুন ক’রে ব্রিডিং করাতে হবে? আর তাছাড়া বিবেকানন্দতো দূরের কথা স্বয়ং রামকৃষ্ণও মিথ্যেকে পুনঃ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। ওহো ভুলেই গেছিলাম যে আপনারা রামকৃষ্ণকেও ছেড়ে কথা বলেন না। যাই হ’ক বেদান্ত দর্শনের মধ্যে যদি জীবন বৃদ্ধির কোনও মালমশালা না থাকে, বেদান্ত দর্শন যদি ফাঁপা দর্শন হয় তাহ’লে উদ্দীপনবাবু তাকে শত চেষ্টা করলেই কি তাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা যায়? না-কি তার কোনও গ্রহণযোগ্যতা থাকে? এটা তো একটা বাচ্চা ছেলেও বোঝে আর আপনার মত বেদবিৎ বোঝেন না? এটা এমনকি ব্যাপার যে তথ্য দিয়ে আপনার আলোকপাত করতে হবে? জীবনের উদ্দীপনাকে এভাবে নষ্ট করছেন কেন উদ্দীপনবাবু? আর আপনি আলোকপাত করলেই বা কে আপনার কথা নিচ্ছে সেটাও ভেবে দেখা বুদ্ধিমানের কাজ নয় কি? না-কি আপনি সেই সস্তা পথ অবলম্বন করেছেন জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার? সমাজের শ্রদার্হ ব্যক্তির চরিত্র হননের মাধ্যমে ‘বিতর্কিত চরিত্র’ হিসাবে নিজেকে তুলে ধ’রে সমাজে রাতারাতি প্রতিষ্ঠা পেতে চান? এটা নিশ্চয়ই জানা আছে, ‘সস্তার তিন অবস্থা’। তিনটে অবস্থা কি কি নিশ্চয়ই জানা আছে? তাহ’লে সাধু সাবধান!
আপনি লিখেছেন ১৮৮১ সালে নরেন্দ্রনাথ রামকৃষ্ণের খোঁজ পান এবং রামকৃষ্ণের মধ্যে জীবনের অন্তিম গতি ও মুক্তির পথ খুঁজে পান। অর্থাৎ আপনি বলতে চেয়েছেন বিবেকানন্দ ফরাসী বিপ্লব, মন্তেস্কুর “L’Esprit des lois”, রুশোর “Social Contact” ভলতেয়রের “Doctrine of Enlightened” কার্ল মার্ক্স-এর “Das Kapital” (1859) চার্লস ডারউইনের “Evolutinism” এবং “Origin of Species”(1871-1872), হারবার্ট স্পেনসারের বিবর্তনবাদ এবং “Education” ইত্যাদি ইত্যাদি যুগান্তকারী চেতনাকে, চেতনা জাগরণকারী মহাত্মাদের বাদ দিয়ে এক অখ্যাত পাগল নিরক্ষরের মধ্যে জীবনের গতি ও মুক্তি খুঁজে পান। অতএব আপনি যেটা আপনার অজ্ঞাতেই বলতে চেয়েছেন তা’ হ’ল ‘রতনে রতন চেনে’। গোটা পৃথিবী জুড়ে যখন নবজাগরণের ঢেউ আছড়ে পড়ছে তখন তাকে বাদ দিয়ে বিবেকানন্দ অধ্যাত্মবাদের যে পথ বেছে নিলেন তাকে আপনি মেনে নিতে পারেননি। মেনে নিতে পারেননি তার কারণ কি উদ্দীপনবাবু? আমি আপনার লেখা পড়ে যা বুঝলাম তা’ হ’ল সেই বাঙ্গালীর চিরকালের রোগ ‘পরকীয়া প্রেম’! পরকীয়া প্রেমে এত মত্ত যে সাপকে দড়ি ব’লে গলায় পেঁচিয়ে নিয়েছেন। পরিণতিতে নিশ্চিত যা হবার তাই হবে; অতীতে হয়েছেও। এত জানেন আর পরকীয়া প্রেমের পরিণতি সারা বিশ্বে ছেড়ে দিন আপনার পশ্চিমবঙ্গে তথা ভারতে কি হাল হয়েছে জানেন না? কাউকে কিছু করতে বা বলতে হবে না উদ্দিপনবাবু। আপনার ক্ষেত্রেও তাই হবে। শেষের ভয়ংকর সেদিনের অপেক্ষা করুন। শুধু Wait & See! নিজের মধ্যে থেকেই একদিন উত্তর পেয়ে যাবেন।
ফরাসী বিপ্লব থেকে প্রাক বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত নবজাগরণের সময় বলেছেন। সেই নবজাগরণ কি দিয়েছে মানুষকে? বিজ্ঞানের গবেষণা মানুষের বুদ্ধিকে এমনই ক্ষুরধার ক’রে তুলেছিল যে রাজতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র, পুঁজিবাদ চিরতরে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হ’য়ে গেছে ডাইনোসরের মত; তাই না উদ্দীপনবাবু? পুরোহিততন্ত্রের ধ্বংস হওয়ার কথা বলেছেন। আপনার কথামত হরিচাঁদের যোগ্য সন্তান গুরুচাঁদের নেতৃত্বে যে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক আন্দোলন শুরু হয়েছিল সেই মতুয়া আন্দোলন পুরোহিততন্ত্র থেকে মুক্ত ছিল তো? না-কি এখনও আছে? গির্জাগুলি অজ্ঞতার আঁতুড় ঘর ছিল ব’লে আপনার লেখায় উল্লেখ করেছেন তো সেই আঁতুড় ঘরগুলি কি সেই সময়ের ইউরোপের গণআন্দোলনের ঢেউ-এ ভেসে গেছিল চিরতরে না-কি এখনও বহাল তবিয়তে বিদ্যমান? আপনি আমেরিকার ‘মে বিপ্লব’-এর কথা বলেছেন; তো সারা পৃথিবীতে ‘মে বিপ্লব’-এর বর্তমান চিত্র কি উদ্দীপনবাবু? কি উত্তর এখন? কেন এমন হ’ল বা হয়? তাহ'লে বিবেকানন্দ এই সব কিছুর মধ্যে সত্য দেখতে, সত্যকে খুঁজে নিতে ভুল করেছিল কি?
আপনি লিখেছেন উপরে বর্ণিত মহান ব্যক্তিদের বিষয়গুলিকে বিবেকানন্দ অগ্রাহ্য করেছিলেন। ব্রাহ্মণ্য ধর্ম অর্থাৎ অধ্যাত্মবাদের মধ্যেই তিনি মোক্ষ খুঁজে পেয়েছিলেন। আচ্ছা উদ্দীপনবাবু আপনি আমায় বলুন তো আপনি যে মানুষের সামাজিক-রাজনৈতিক সমতা, স্বতন্ত্রতা ও ভ্রাতৃত্বের সংগ্রামের কথা বলেছেন-----যে সংগ্রাম থেকে বিবেকানন্দ মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন............ সেই সংগ্রাম আজকের মানুষকে কি দিয়েছে? সামাজিক-রাজনৈতিক সমতা পেয়েছে মানুষ? কিসের স্বতন্ত্রতার কথা বলতে চেয়েছেন? পেয়েছে মানুষ? আপনি পেয়েছেন? ভ্রাতৃত্বের সংগ্রামের কথা বলেছেন আপনি আর বিবেকানন্দকে নীচা দেখাবার, টেনে নীচে নামাবার ঘৃণ্য নীচ খেলায় মেতেছেন আপনি! এই কি আপনার ভ্রাতৃত্ব বোধ জাগাবার উন্নত মানসিকতার নমুনা? এটাকে কোন সংস্কৃতি বলে? ‘বড়কে ছোটো করো, আর ছোটোকে আরও ছোটো ক’রে লাথি মেরে পাতালে ঢুকিয়ে দাও’----এই সংস্কৃতির জনক কে? আপনি না-কি আপনার বা আপনাদের শ্রদ্ধেয় হরিচাঁদ মহারাজ জী না-কি হরিচাঁদজীর যোগ্য সন্তান শ্রদ্ধেয় গুরুচাঁদজী? আপনি ব্রাহ্মণ্যবাদ না মানুন চতুর্বর্ণ মানেন না? আপনি চতুর্বর্ণের কোন বর্ণের মধ্যে পড়েন? মনে হয় প্রকৃতির কোনও বর্ণের মধ্যেই পড়েন না। যাই হ’ক আপনি লিখেছেন সারা পৃথিবীর মানুষ যখন শৃঙ্খল ভাঙ্গার প্রতিজ্ঞা নিয়ে একটি স্বপ্নের প্রভাতের অপেক্ষা করছে তখন বিবেকানন্দ সন্ন্যাসের পথ বেছে নিয়েছেন। উদ্দীপনবাবু সারা পৃথিবীর মানুষ কিসের শৃঙ্খল ভাঙ্গার প্রতিজ্ঞা নিয়েছিল? শৃঙ্খল ভাঙ্গতে পেরেছিল কি? স্বপ্ন প্রভাত পেয়েছিল কি? না-কি অপেক্ষায় অপেক্ষায় দিন ,মাস, বছরের পর বছর কেটে গেছে? সন্ন্যাসের পথকে আপনি কি চোখে দেখেন? যারা শৃঙ্খল ভাঙ্গার প্রকৃত প্রতিজ্ঞা নিয়েছিল.................. সেই সময় তা’ ভুল হ’ক বা ঠিক হ’ক সে কথা না হয় তোলা রইল পরবর্তী গভীর আলোচনার জন্য..................তারাও কি প্রকারান্তরে সন্ন্যাসী ছিলেন না? সন্ন্যাসী মানে জানেন তো? আপনার লেখার পরতে পরতে বিবেকানন্দকে শুধু খোঁচা আর খোঁচা, খোঁচা আর খোঁচা!!!!!! প্রাণভরে ঝাল মিটিয়েছেন যেন মনে হচ্ছে বিবেকানন্দ ছিলেন আপনার জাত শত্রু!!!!!! আপনি লিখেছেন, বিবেকানন্দ ব্রাহ্মণদের প্রতিষ্ঠিত মঠ, মন্দিরে অবস্থান করেছিলেন বেদান্তবাদ প্রচারের জন্য; আর সেইজন্য একটি কমন্ডুলু, লাঠি এবং প্রিয় গ্রন্থ গীতা বগলে ক’রে দিগবিজয়ে বেড়িয়ে পড়েছিলেন। কি সুন্দর ‘কমন্ডুলু, লাঠি, প্রিয় গ্রন্থ, বগল, দিগবিজয়’ ইত্যাদি তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের বাক্যবাণ, অপূর্ব ব্যঙ্গোক্তি! যদি শিখতে হয়, ক্লাস নিতে হয় তো আপনাদের কাছেই নেওয়া উচিত যে কিভাবে একজনকে টেনে ভাগাড়ে এনে ফেলা যায়। কিন্তু যারা বুদ্ধিমান তারা জানে যে, যারা অন্যকে ভাগাড়ে টেনে নাবায় তারা ভাগাড়েরই বাসিন্দা, তারা ভাগাড়ের গুয়ের মধ্যেই বাস করে; তাদের বলে ‘গুয়ে দা’। তাই তারা ‘গুয়ে দা’ আখ্যা নেবার মত মুর্খামি করে না। আপনার জৈবীসংস্থিতির মধ্যে স্থিত বিশৃঙ্খল উদ্দীপনা আপনাকে বুদ্ধিমান হ’তে দিল না; আর দেবেও না কোনোদিন যদি জৈবীসংস্থিতির মধ্যে কোনও ভুল থেকে থাকে! উদ্দীপনবাবু আপনি এক কাজ করুন আপনার বা আপনাদের মতুয়া ধর্মকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কান ফাটানো............... যা কিনা কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙ্গানোর আওয়াজকেও হার মানায়.................. শব্দ দূষণকে অগ্রাহ্য ক’রে, সমাজ, সভ্যতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ঢাক, ঢোল, কাঁসা ইত্যাদি নানা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে বিবেকানন্দের মত আপনিও দিগবিজয়ে বেড়িয়ে পড়তে পারেন। দেখুন না বিবেকানন্দের মত বিশ্বজয় হয় কিনা! বিশ্বজয় না হ’লেও বাংলার ছোটোখাটো একটা অঞ্চল জয় হ’লেও হ’তে পারে, আপনার ভাগ্যেও বিড়ালের মত শিকে ছিঁড়লেও ছিঁড়তে পারে। বিবেকের আনন্দ লাভ না হ’লেও মনের আনন্দ লাভ হ’য়ে 'মনানন্দ' হ’য়ে উঠলেও উঠতে পারবেন। সারা পৃথিবীতে আপনার ধর্মকে ছড়িয়ে দিয়ে রামকৃষ্ণ আর বিবেকানন্দকে যুক্তি তর্কের বিচারকাঠিতে বলাৎকার ক’রে শ্রদ্ধেয় হরিচাঁদজী, গুরুচাঁদজীকে সর্বশ্রেষ্টের আসনে বসাতে পারেন। দেখুন না, মহানন্দজী! ‘পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন’।
বিবেকানন্দের সন্ন্যাস গ্রহণের কারণ হিসাবে আপনি আপনার অতি উর্বর মস্তিষ্ক প্রসূত কিছু মনগড়া তথ্য তুলে প্রমাণ করেছেন উত্তেজিত মস্তিষ্ক আর বৃথা আড়ম্বরযুক্ত কল্পনা থেকে ‘অশ্বডিম্ব’-ই প্রসব হয় আর তাই আপনি প্রসব করেছেন। আপনি ব্রাহ্মণ্যবাদীদের বিরুদ্ধাচরণ করতে রামমোহন ও বিদ্যাসগরের কথা তুলে ধরেছেন, তুলে ধরেছেন তাঁদের আন্দোলনের কথা। কিন্তু তুলে ধরেননি তারা জাতে কি ছিল। আপনি হয়তো জানেন না কিম্বা ভুলে গেছেন কিম্বা ছুপা রুস্তমের মত এড়িয়ে গেছেন যে এরাও কিন্তু কুলীন সম্ভ্রান্ত বংশীয় ব্রাহ্মণ ছিলেন। ব্রাহ্মণরা যদি কিছু বাড়াবাড়ি ক’রে থাকে তো ‘লোহে লোহে কো কাটতা হ্যায়’ তত্ত্বে এই সমাজসচেতন নিষ্ঠাবান প্রখর বাস্তব জ্ঞানসম্পন্ন ব্রাহ্মণরাই গোঁড়া, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, বই পড়ে বই হ’য়ে যাওয়া, বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে আপাদমস্তক ডুবে থাকা চালকলা সর্বস্ব ব্রাহ্মণদের বিরুদ্ধে কঠোর হস্তে রুখে দাঁড়িয়ে প্রমাণ করেছিলেন ব্রাহ্মণদের প্রকৃত পরিচয়, প্রকৃত চরিত্র কি।
আপনি লিখেছেন শ্রদ্ধেয় হরিচাঁদজীর চন্ডাল বিদ্রোহ, স্বাধিকার আন্দোলন, শ্রদ্ধেয় গুরুচাঁদজীর রাজনৈতিক আন্দোলন, মহাত্মা জ্যোতি রাও ফুলে ও মা সাবিত্রী ফুলের সামাজিক আন্দোলনে শূদ্র সমাজে এমন গণ জাগরণ ঘটে যে তার ভয়ে ব্রাহ্মণ সমাজ শূদ্র সমাজকে বাগে এনে হিন্দু ধর্মকে বাঁচানোর জন্য একজন জলচল শূদ্র নরেন্দ্রনাথকে স্বামী বিবেকানন্দ বানিয়ে ছেড়েছেন। আচ্ছা আপনি নরেন্দ্রনাথকে জলচল শূদ্র বললেন কেন? আপনি বা আপনার হরিচাঁদজী, গুরুচাঁদজী, জ্যোতি রাওজী ইত্যাদিরা কোন শূদ্র? এরা কি জলচল শূদ্র নয়? যদি না হয় কেন নয়? আর যদি হয় তাহ’লে কেন তাঁরা জলচল শূদ্র? শূদ্রদের মধ্যেও তাহ’লে উঁচুনিচু আছে? না-কি আপনি শূদ্রদের মধ্যে উঁচুনিচুর বিভাজনের রেখা টেনে দিলেন? কোন কোন গুণের অধিকারী হ’লে জলচল শূদ্র হওয়া যায়? এখানে তাহ’লে আপনি জাতিভেদ তো দূরের কথা স্বজাতিভেদ প্রথাকেও মেনে নিলেন ও স্বীকৃতি দিলেন? আর প্রকৃতিগত শূদ্র বর্ণের মধ্যেও বিভাজনের রেখা টেনে ‘জলচল শূদ্র’ বলার মধ্যে দিয়েও প্রমাণ দিলেন যে শূদ্রদের চরিত্রের মধ্যেও গুণ ও কর্ম অনুযায়ী উঁচুনিচু আছে তাই আপনি নিজের অজান্তেই স্বীকৃতি দিলেন গীতার সেই “চতুর্বর্ণং ময়া সৃষ্টং, গুণ কর্ম বিভাগশঃ” উক্তির অন্তর্নিহিত গভীর অর্থকে। এর থেকে কি প্রমাণ হয় শরদিন্দুবাবু? এর থেকে কি প্রমাণ হয় না আপনি নামে শরদিন্দু অর্থাৎ শরৎকালের অতিশয় সুন্দর ও উজ্জ্বল চাঁদ হওয়া সত্ত্বেও চাঁদের কলঙ্কের মত আপনি কাজে অতিশয় কুৎসিত ও অনুজ্জ্বল এক ভয়ংকর কলঙ্কিত চরিত্র?
আপনি রাজাগোপালাচারীর বক্তব্যকেও ব্যঙ্গার্থে আলোকপাত করেছেন। আর যদি ধরেই নিই যে শ্রদ্ধেয় রাজাগোপালাচারী ব্যঙ্গার্থেই ব’লেছেন, ‘বিবেকানন্দ হিন্দু ধর্মকে বাঁচিয়েছেন, ভারতকে বাঁচিয়েছেন’ তাহ’লে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে তিনি নিজের অজান্তেই ঠিক কথাটা ব’লে ফেলেছেন। আচ্ছা আপনি কোন ধর্মের? যদি হিন্দু ধর্মের না হন তাহ’লে কোন ধর্ম আপনার? আপনার ধর্ম কি শূদ্রদের নিয়ে তৈরী কোনও নূতন ধর্ম? আচ্ছা সমস্ত শূদ্ররা কি আপনাদের ধর্মে অংশগ্রহণ করেছেন? যদি না ক’রে থাকে তবে কেন করেনি? আপনারা, আপনাদের ধর্ম, আপনাদের ধর্ম প্রবর্তক মানবজাতির সমস্ত শূদ্রদের একচেটিয়া অভিভাবক? আপনি আপনার লেখায় প্রমাণ করতে চেয়েছেন নরেন্দ্রনাথ দত্তকে স্বামী বিবেকানন্দ বানানো হয়েছে চতুর্বর্ণ সমাজকে অটুট রাখার জন্য। আমায় একটা কথার উত্তর দেবেন? বিড়ালের পশ্চাতে ফুঁ দিয়ে ফুলিয়ে বিড়ালকে কি বাঘ বানানো যায় না-কি বাঘকে কখনো জোর ক’রে বিড়াল বানানো যায়? কারো পশ্চাতে ঠেকান দিয়ে কি জোর ক’রে কাউকে চিরদিন দাঁড় করিয়ে রাখা যায়? মিথ্যে দিয়ে কিছুকে বা কাউকে চিরন্তন সত্যতে পরিণত করা যায়? না-কি চিরন্তন সত্যকে মিথ্যের বেসাতি ক’রে চিরন্তন মিথ্যেতে পরিণত করা যায়? সার্কাসের জোকার চিরকাল জোকারই থেকে যায় উদ্দীপনবাবু; মুখে চোখে রঙ চং মেখে লোক হাঁসানোই তার কাজ! এটাই তার জীবনের ট্র্যাজেডি। আপনারও কি তাই হ’ল না?
যাই হ’ক আপনি নানা তথ্য ঘেঁটে প্রমাণ করতে চেয়েছেন বিবেকানন্দ শিকাগো ধর্মসভার অবৈধ প্রোডাক্ট আর তাঁর মার্কশিট তুলে ধ’রে প্রমাণ করতে মরিয়া হ’য়ে উঠেছেন যে বিবেকানন্দ অত্যন্ত নিম্নস্তরের নৈতিকতা বর্জিত সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন একটা মোটা দাগের চরিত্র মাত্র আর তাঁর ভাবমূর্তি একটা মিথ ছাড়া আর কিছু নয়। আপনি মার্কশিট তুলে ধ’রে কি প্রমাণ করতে চেয়েছেন উদ্দীপনবাবু? আপনি কি খবর রাখেন না রবীন্দ্রনাথের কোনও মার্কশিট ছিল না? শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মানিক বন্দোপাধ্যায়, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, দয়ানন্দ সরস্বতী (আপনি যার কথা লিখেছেন) ইত্যাদির ইত্যাদির মত আরও অ-নে-ক মনীষীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কি ছিল? আপনার মার্কশিট কি? আপনিও তো কম বড় সমাজ সংস্কারক নন? তাছাড়া আপনি কি আপনার জীবন দিয়ে প্রমাণ পাননি এখনও যে জীবনে স্কুলের লাস্ট বেঞ্চের ছেলে বা স্কুলের গণ্ডির মধ্যে না পৌছোতে পারা ছেলে তথাকথিত ফাস্ট বেঞ্চের ছেলেকে অ-নে-ক পিছনে ফেলে ভবিষ্যৎ জীবনের পরীক্ষায় সফলতার শিখরে পৌঁছে গেছে? রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দের উপরে এত রাগ আপনার, আপনাদের? কেন? একজন শূদ্র শূদ্র হ’য়ে একজন প্রকৃতির বিধানকে, বিধাতার বিধিকে ভেঙ্গে চুরমার করার ব্রত নিয়ে আবির্ভূত হওয়া, তথাকথিত উদারতার ভঙ্গী নিয়ে উদয় হওয়া শুদ্রনেতার মধ্যে জীবনের অন্তিম গতি ও মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অদ্ভুতভাবে একজন মূর্খ, পাগল ব্রাহ্মণের মধ্যে খুঁজে পেয়েছে মুক্তির পথ, সত্যের পথ; একজন ব্রাহ্মণের পদলেহণ করেছে আর ব্রাহ্মণ্যবাদ ও চতুর্বর্ণ-এর পক্ষে দাঁড়িয়েছে সেই জন্য আপনার মত শূদ্রদের এত রাগ? যাক গিয়ে, দেখুন এই শূদ্র সুড়সুড়ি দিয়ে সমস্ত শূদ্রজাতীকে আপনার, আপনাদের মত, পথ ও গুরুর পক্ষে আনতে পারেন কিনা! আপনি আপনার ভাষা, আপনার সম্বোধন, আপনার কথা বলার ভঙ্গী দিয়ে এটা প্রমাণ করেছেন যে শূদ্ররা যথার্থই অসভ্য, বর্বর, জংলী, অশিক্ষিত।
যাইহ’ক আমিও সেই সোনার দিনের অপেক্ষায় রইলাম যেদিন শূদ্ররা আপনাদের নেতৃত্বে গোটা বিশ্বে না হ’ক অন্তত বাংলাদেশে রাজ করবে!!!!!!!!!!!

( লেখা ২৭শে ফেব্রুয়ারী'২০১৭ )
বিবেকানন্দ এবং কিছু ভিত্তিহীন প্রচার

SARADINDU-UDDIPAN.BLOGSPOT.COM
বিবেকানন্দ এবং কিছু ভিত্তিহীন প্রচার
শি কাগো ধর্মমহাসভা নিয়ে বিবেকানন্দের সুখ্যাতির অন্ত নেই। প্রচারের ঢাকটির মাত্রারিক্ত শব্দ বাঙালীর কানে এমন ক্যাকাফোনির ঝঙ্কার তু

কবিতাঃ বড়একা লাগে.........

বড় একা লাগে এই-ই আকাশে,
অহং-এরও খেলা আকাশও পাড়ে!
লেখালেখির মাঝে ডুবে থাকি আমি
ভুলে গিয়ে সব যত বেদনাকে,
কে দেবে বলে আমায়
অহং-এরও খেলা কেন নিশিদিন
অহরহ ঘটে চলে এই-ই আকাশে!?
এই-ই তো বেশ আছি
একা একা থাকা,
বন্ধুরা ! সব ভালো থেকো,
থাকো ভালো দূরে নিরাপদে
মুছে দিয়ে সব গ্লানি,
যত অহং-এরও খেলা
এই আকাশও পাড়ে!
( লেখা ১৪ইমার্চ'২০১৪ )

কবিতাঃ বাড়ি' তো নয়..................!

'বাবার বাড়ি এই গাঁয়ে,
শ্বশুর বাড়ি ঐ।
দু’ দুটো ‘বাড়ি’ তো নয়! ‘স্বর্গ’ নারী!
তুমি বিনা যারে শ্বশান কই!
সারা জীবন ঘর সাজালি ঐ দুই বাড়িতে,
আপন করে নিলি সবে, হৃদ মাঝারে সুর তুলিতে!
যেমন ফুলের সুবাস ছড়িয়ে দখিনা বাতাস
মৃদুমন্দ বয়,
তেমনি ‘বাড়ি’ তো নয় ‘স্বপনপুরী’!
আলোর নাচন, হাসির কাঁপন যেন সোনাঝুরি!
তুমি বিনা ‘শ্বশান নীরবতা’-য়
কাঁদে হৃদয়। বলে, পরাণ কেমনে রয়?

বাবার ছায়া আর হ’য়ে মধুময় মায়া,
কাটাও শৈশব আর কৈশোর কায়া।
যৌবনে জাগাও স্বামীর পরাণ,
সন্তানেরে কোলে ক’রে করেছো মানুষ
হ’য়ে নিজে খানখান!
ছেলেরে করো আশীর্বাদ, দাও বরাভয়,
শেষের দিনেও হ’য়ে সাহারা!
নারী! জীবনভর সবারে দিলে যে তুমি পাহারা!!
সবারে বোঝালে তুমি, নারী তুমি অভয়!
আর বোঝালে সার সত্য সবার তুমি 'মই'!
নারী! তুমি বিনা বাড়ি কারে কই?
তুমি বিনা একেলা কেমনে রই?????
(লেখা ১৪ইমার্চ' ২০১৫)

বাংলাদেশ সরকার ও শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মস্থান।

বাংলাদেশ সরকার শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত এক ও একমাত্র প্রতিষ্ঠান 'সৎসঙ্গ'  এর পরিবর্তে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নয় এমন এক প্রতিষ্ঠান 'শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ' -এর হাতে ঠাকুরের জন্মস্থান হস্তান্তর করেছে। এই সংগঠনের পরিচালক কে বা কারা?
যারা শ্রীশ্রীঠাকুর প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান 'সৎসঙ্গ'-কে মানে না, ঠাকুরের বড় আদরের প্রথম সন্তান বড় খোকাকে মানে না, ঠাকুরের প্রথম সন্তানকে অপমান অবহেলা অবজ্ঞা অশ্রদ্ধা অমান্য করে তারা এই সংগঠনের পরিচালক? তারা সৎসঙ্গী? তারা ঠাকুরের মন্ত্র শিষ্য? তারা ঠাকুরের মিশনের পতাকাবাহী? তারা ঠাকুরকে মানে? একজন লিখেছেন "'আসলে তারা ঠাকুরকে মানে কিন্তু...............।"

এখানে 'কিন্তু' শব্দের পরে লেখক যা লিখেছেন তাতে তিনি ঐ সমস্ত ধান্দাবাজদের বিরোধিতা করেছেন এটা ঠিক; কিন্তু 'ঠাকুরকে মানা' প্রসঙ্গে একটা ভুল বার্তা দিয়ে ফেলেছেন। সেই সম্পর্কে বলি, আচ্ছা এটা কি ক'রে হয় যারা ঠাকুরকে মানে অথচ তাঁর ভালোলাগা আর ভালোবাসার মানুষকে, জিনিসকে মানে না!? এটা ঠাকুরের সত্যানুসরণে ব'লে যাওয়া বাণীর মত হ'য়ে গেল না-কি? ঠাকুর সত্যানুসরণে কি বললেন? " ভারতের অবনতি সেদিন থেকে শুরু হয়েছে যেদিন থেকে ঋষি বাদ দিয়ে ঋষিবাদের আরাধনা শুরু হয়েছে।" আর ঘোর কলি যুগের সৎসঙ্গীদের অবনতি সেদিন থেকে শুরু হয়েছে যেদিন থেকে 'ঋষিবাদ' অর্থাৎ ঋষির কথা বা ঠাকুরের কথা, ঠাকুরের ভালোলাগা, ঠাকুরের পছন্দ, ঠাকুরের ইচ্ছা, ঠাকুরের স্বপ্ন, ঠাকুরের মিশন ইত্যাদি সব বাদ দিয়ে শুধু ঋষি বা ঠাকুরের আরাধনা শুরু হয়েছে। তাই এরা সৎসঙ্গী নয়, এরা অ সৎসঙ্গী। এরকম সব যুগে সব কালে হয়েছে। যেমন স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় দেশবন্ধুর অনুগামীরা দেশবন্ধু সম্পর্কে বলেছিলেন, "আমরা দেশবন্ধুকে মানি কিন্তু তাঁর ফিলজফি বা দর্শন মানি না। ঠাকুর সেই কথার উত্তরে বলেছিলেন , আমি একটা মানুষের অর্ধেক মানি আর এক অর্ধেক মানি না, এ কেমন কথা? এমন হয় না-কি? এতে কপটতা ও ভন্ডামির চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে যেমনটা হয়েছে এই সমস্ত মূল কেন্দ্র বিরোধী অসৎসঙ্গীদের। তারা ঠাকুর মানে, ঠাকুরের সত্যানুসরণ নিয়ে বিকৃতভাবে প্রকাশ করে কিন্তু ঠাকুরের জীবন্ত চলমান সত্যানুসরণ শ্রীশ্রীবড়দাকে মানে না। সেই সময়ের এই সমস্ত ভন্ড কপট অ সৎসঙ্গীরা জানতো ঠাকুর প্রয়াণের পর সাময়িক অস্থিরতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে যদি না আখের গুছিয়ে নিতে পারি তাহ'লে কঠিন কঠোর শ্রীশ্রী বড়দার হাতে রাশ চলে গেলে এ জন্মে আর হবে না। তাই 'দে মা লন্ডভন্ড করে, লুটে পুটে খায়' তত্ত্বে বিশ্বাসী হায়েনার দল আচার্য্য পরম্পরা তত্ত্বের শিকলে বাঁধা পড়বে তা কখনো হয়? রক্তে যাদের দোষ আছে, বায়োলজিক্যাল মেক আপ-এ যাদের গন্ডগোল হ'য়ে আছে এই পরাধীনতা তারা কি মেনে নিতে পারে? কখনো পারে না। এই সমস্ত ঘর শত্রু দুঃশাসনরা বড়দাকে মানবে কি ক'রে? অনুসন্ধান ক'রে দেখুন দেখতে পাবেন এরা নিজেদের জীবনেই নিজের বড়দাকে সম্মান করতে পারেনি কোনোদিন, শ্রদ্ধার আসনে কোনোদিন নিজের বড় ভাইকে বসাতে পারেনি। আরও অনুসন্ধান করলে দেখতে পাবেন হয় এরা সন্তানহীন/ সন্তানহীনা নাহয় এরা নিজের প্রথম সন্তানকে কোনোদিন ভালোবাসতে পারেনি। এরা এতটাই জন্মবিকৃত যে জীবনে 'কিন ফিলিংস' ব'লে, সুক্ষ্ম অনুভুতি বা তীক্ষ্ণ বোধ ব'লে যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ আছে সেটাই মৃত। তাই এদের সন্তান থাকলেও প্রথম সন্তানের গুরুত্বই বোঝে না, বোঝার ক্ষমতাই জন্মগত ভাবে এদের নেই। তাই এদের নিয়ে আলোচনা করা মানে নিজেকে এদের বিকৃত মানসিকতার পর্যায়ে নামিয়ে আনা।

তাই একথা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে এরা কোনোদিনই ঠাকুরকে মানে নি; ঠাকুরকে শুধু মানার ভান করেছে আখের গুছিয়ে নিতে বংশ পরম্পরায়।


আর বাংলাদেশ সরকার এদের হাতে ঠাকুরের জন্মস্থান হস্তান্তর করার পিছনে একটা গভীর রাজনৈতিক কৌশল কাজ করেছে। কিছুদিন আগে 'শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ' আখড়ার একজন নির্ম্মম ভাবে খুন হয়েছিল। এই নিয়ে অনেক রাজনৈতিক, সামাজিক চাপানউতোর হয়। বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। কায়েমিস্বার্থরক্ষাকারী সুযোগসন্ধানীরা মিশনারীদের সঙ্গে জোট বেঁধে আসরে নেবে পড়ে ঘোলা জলে মাছ ধরবার আশায়। কিন্তু তাদের সেই আন্দোলন, প্রচেষ্ঠা সার্থক হয়নি, সফল হয়নি সংবিধান বহির্ভূত ক্ষমতার উৎস হ'য়ে ওঠার দম্ভে, লোভে। আর এই বিশৃঙ্খল প্রবনতাকে চাপা দেবার মানসিকতায়, হিন্দুদের খুশি করবার তাগিদেই চটজলদি বাংলাদেশ সরকারের ধর্মনিরপেক্ষতার তকমা বজায় রাখার তাগিদেই বাংলাদেশ সরকার রাতারাতি আগুপিছু কিছু না ভেবেই ভারতের দেওঘরে অবস্থিত ঠাকুরের মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ'-এর সাথে কোনোরকম আলোচনা, তদন্ত না ক'রেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, যা কিনা আজ না হয় কাল বাংলাদেশ সরকারকে তাদের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ পুনর্বিবেচনা করতেই হবে। কারণ ইতিহাস বড়ই নির্ম্মম।
( লেখা ১৪ই মার্চ'২০১৭ )

উপলব্ধি ২৯ঃ মেয়েদের প্রেম ও বাউনডুলে ছেলে!!!

আক্রম শেখ মানিকদার ছোট্ট লেখা "মেয়েরা কখনোই সাধু পুরুষের প্রেমে পড়ে না.........ছন্নছাড়া, বাউনডুলে ছেলেদের অগ্রাধিকারে রাখে............... সাধু পুরুষদের জন্য মেয়েদের মনে প্রেম না, স্রেফ করুণা জন্মে।"

লেখাটা পড়লাম। পড়ে মনে হ'ল লেখাটার উপসংহার যদি টানি তাহ'লে কিন্তু দুঃখ, ব্যথা, বেদনাকেই বহন ক'রে চলতে হবে। আক্রমদা যেন একটা শব্দ দিয়ে তৈরি ঢিল ছুঁড়ে মারলেন আমার মনোজগতে। খেলে গেল তরঙ্গ, নাড়া দিল স্মৃতিবাহী চেতনায়! ভেসে উঠলো মনের আয়নায় শ্রীশ্রীঠাকুরের টুকরো টুকরো কথা আর স্মৃতি হাতড়ে মনে এলো যা তাই লিখলাম।

নারী ও পুরুষ প্রকৃতিই একটা যেন আরেকটার পরিপূরক। একটা শান্ত, সমাহিত আরেকটা উদ্দাম, উচ্ছ্বাস। এর ব্যতিক্রমও অবশ্যই আছে আর তাই তা ব্যতিক্রম। শ্রীশ্রীঠাকুরের কথা অনুযায়ী একটা যেন ঢেউ এর উদ্বেলায়িত অবস্থা আরেকটা অববেলায়িত অবস্থা। উদ্বেলায়িত যেন পুরুষ আর অববেলায়িত যেন নারী। উদ্বেলায়িত অর্থাৎ উচ্ছ্বসিত, উচ্ছ্বলিত অবস্থা হ'ল পুরুষ আর অববেলায়িত অর্থাৎ ঢেউয়ের নেমে যাওয়া অবস্থা হ'ল নারী। নেমে যাওয়া ঢেউ এর উপর ভর দিয়ে উথলিত অর্থাৎ স্ফীত ঢেউ-এর উঠে দাঁড়ানো। নারী সেই অববেলায়িত সত্ত্বা অর্থাৎ শান্ত স্থিতিভুমি। এই স্থিতিভুমি অর্থাৎ নারীর উপর দাঁড়িয়ে পুরুষের উত্থান। তাই প্রকৃতিগতভাবেই নারী শান্ত আর পুরুষ উদ্দাম। তাই, নারী বৈশিষ্ট অনুযায়ী তার বিপরীত বৈশিষ্ট উদ্দামতাকেই পছন্দ করে। আর পুরুষও ঠিক তার উল্টো। এটাই স্বাভাবিক, এটাই বাস্তব।

যাই হ'ক, নারীকে এটা মাথায় রাখতে হবে যে তাই ব'লে উদ্দামতা, উচ্ছলতা, উথলতা ইত্যাদি মানেই ছন্নছাড়া, বাউনডুলে অর্থাৎ উচ্ছৃঙ্খলতা বা বিশৃঙ্খলা নয়। আর শান্ত স্থিতিভুমি মানে কি বোধবুদ্ধিহীন স্থবির? তা নয়। তাই নারী তার বৈশিষ্ট অনুযায়ী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে পুরুষ খুঁজে নিতে চায়। এই খুঁজে নেওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষেত্র যেন ভুল না হয় নারীর।

আর এই অন্তর্নিহিত অর্থ না বুঝে যদি বোঝার ভান ক'রে অজ্ঞানতাকে জ্ঞান ব'লে মনে ক'রে ছন্নছাড়া বাউনডুলে পুরুষদের নারী অগ্রাধিকার দেয় তাতে সাধু পুরুষের কি কিছু এসে যায় নাকি তাতে সাধু পুরুষদের কোনও ক্ষতি হয়? কি আর করা যাবে, ক্ষতি যাদের হবার তাদেরই হয় আর এই ক্ষতির জন্য সাধু পুরুষদের মনে ঐ মেয়েদের জন্য দুঃখের সংগে সংগে করুণাও হয়। এই ধরণের মেয়েরা ব'লেই থাকে আমাদের ইচ্ছাটা আমাদেরই তাই আমরা ইচ্ছের ডানা মেলে উড়বই। তা উড়তেই পারে কারণ সবাই স্বাধীন, সবারই ব্যক্তি স্বাধীনতা আছে; খালি দেখতে পাওয়া যায় যে দিনের শেষে এদের অবস্থা হয় জটায়ুর মত। আজকের রাবণরুপী ছন্নছাড়া বাউনডুলে শয়তানের কোপে ডানা কেটে পড়ে থাকা জটায়ুর মত করুণ অবস্থা হয় যখন তখন শুধু একটাই কথা মনে আসে এরা রবীন্দ্রনাথের বড় প্রিয় ভক্ত। রবীন্দ্রনাথের "আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান, প্রাণেরও আশা ছেড়ে সঁপেছি প্রাণ আমি..." কবিতার এরা জীবন্ত রূপ। রবীন্দ্রনাথ কেন এই কবিতা লিখেছিলেন কিম্বা এদের নিয়েই লিখেছিলেন কিনা তা আমার জানা নেই শুধু জানা আছে কাঠ খেলে আলমারি, ড্রেসিং টেবিল ইত্যাদি ফার্নিচারের যে কোনও একটা মলত্যাগ হবেই। এরা তথাকথিত সেয়ানা, চালাক, বুদ্ধিমতী, লেখাপড়াজানাওয়ালা কিম্বা একেবারেই বোকা, বেকুব প্রকৃতির যারা কাঠ খায় আর ............।

আর এটাও বলতে পারি কোনও প্রকৃত বুদ্ধিমতী, চালাক, শিক্ষিত মেয়ে এ কাজ করে না। তাই কথায় আছে, 'ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিয়ো না।'

এটা যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবে মেয়েরা ততই তাদের জন্য মঙ্গল।
( লেখা ১৪ইমার্চ'২০১৮ )

Monday, March 13, 2023

প্রবন্ধঃ ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র নাকি সম্প্রদায় নিরপেক্ষ রাষ্ট্র?

বর্তমান দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা মনকে অস্থির ক'রে তোলে।


রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভের মানসিকতা আজ ভয়ংকর ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। দেশ জুড়ে শয়ে শয়ে রাজনৈতিক দলের জন্ম হচ্ছে বছরের পর বছর। আর প্রত্যেক দলে ভাগ হ'য়ে যাচ্ছে জনগণ! বিদেশী শক্তি ওঁত পেতে বসে আছে কখন চিলের মত ছোঁ মেরে নিয়ে যাবে আবার সেই ২০০ বছর আগের ব্রিটিশ শক্তির মত দেশটাকে এক্টুকরো মাংস পিন্ডের মত। আর আবার কলোনিতে পরিণত করবে দেশটাকে। আবার ভেঙ্গে আরো টুকরো টুকরো ক'রে ছিবড়ে ক'রে দেবে দেশটাকে। সেই আশায় বসে আছে বিশ্বের বৃহৎ শক্তিসম্পন্ন দেশগুলি। আর তার জন্য শুরু হয়েছে তীব্র ধর্মান্ধতা। প্রকট হ'য়ে উঠছে ধর্ম সংকট ও সাম্প্রদায়িক বিভেদ।


আজ যদি সত্যি সত্যিই ভারতের রাজধর্ম পাল্টে যায় তাহ'লে এর জন্যে দায়ী কে? বর্তমান শাসক? দেশের সমস্ত নেতৃবৃন্দ? জনগণ? নাকি ভারত ভাগের নাটের গুরুরা? কার বিরুদ্ধে দোষ বা অপরাধের তকমা সাঁটবেন? কে দোষী? কে অপরাধী? ভাগ ক'রে দেশটাকে কে বা কারা চক্রান্ত ক'রে জাহান্নামের পথে হাত ধ'রে ঠেলে দিয়েছিল? তাদের বিচার হবে না? দেশ যখন ভাগ হয় তখন কেন ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হয়েছিল? আর হয়েছিল হয়েছিল অদ্ভুত ভাবে কেন দেশটা ভাগ হয়েছিল? ভৌগোলিক সীমারেখা কেন দেশটাকে ত্রিভঙ্গ ক'রে দিয়েছিল? দেশে তখন পন্ডিত জ্ঞানী গুণী ব্যক্তির অভাব ছিল? কেন সবাই চুপ ছিল? কেন অদ্ভুত ভাবে কোন যুক্তিতে বাংলাকে ভাগ ক'রে পূর্ব পাকিস্তানের সাথে যুক্ত করা হয়েছিল? পূর্ব বাংলাকে অদ্ভুতভাবে ভাগ ক'রে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে যুক্ত করার পিছনে কি শুধু ধর্মের ভিত্তি ছিল? আরো বড়, অনেক বড় চক্রান্ত ছিল না? তখনই যদি ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হ'য়ে দু'টুকরো হ'য়েছিল তো কেন ভারত উদারতা দেখিয়েছিল? তখনই কেন হিন্দু রাষ্ট্র হ'লো না? যদি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান মানবতার ধর্মের ধার না ধারে তাহ'লে কেন ভারত একা মানবতার ধ্বজা তুলে ধরার ন্যাকামো ক'রে চলেছে? যদি সত্যি সত্যিই মানবতা রাজধর্ম হ'য়ে থাকে ভারতের তাহ'লে মানবতার স্বার্থে, মানবতাকে রক্ষা করতে কেন ৭০বছর বলিষ্ঠ কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি? কার বা কাদের স্বার্থে? কাকে খুশী করার জন্য তথাকথিত ধর্ম নিরপেক্ষতাকে রক্ষা ক'রে চলেছিল ভারত? ধর্ম নিরপেক্ষতার আড়ালে কাদের খুশী ক'রে চলছিল ভারত সরকার এতদিন? কার বা কাদের অঙ্গুলি হেলনে ভারত ৭০ বছর তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজা উড়িয়ে সব ধর্মের সাধারণ আম মূর্খ জনতাকে বোকা বানিয়ে ক্ষমতার শিখরে বসেছিল? পাকিস্তানের রাজধর্ম যদি ইসলাম হ'য়ে থাকে, বাংলাদেশের রাজধর্ম ইসলাম হ'য়ে থাকে, আফগানিস্তানের রাজধর্ম ইসলাম হ'য়ে থাকে তাহ'লে ভারতের রাজধর্ম কি হওয়া উচিত ছিল? কেন ভারত একা মহান সাজবে? মহানতার দোহাই দিয়ে, সুযোগ নিয়ে আর কতদিন ভারতকে আঙ্গুল তুলে মিথ্যের বেসাতি ক'রে বলা হবে, ভারত তুমি অপরাধী? পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান যদি সংখ্যাগরিষ্ঠের জোরে ইসলামিক দেশ হ'তে পারে তাহ'লে ভারত কেন সংখ্যাগরিষ্ঠের জোরে হিন্দু রাষ্ট্র হ'তে পারবে না? এই সেদিন বাংলাদেশ ভারতের সাহায্যে স্বাধীন হ'লো আর স্বাধীন হ'য়েই ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার পদাঙ্ক অনুসরণ না ক'রে পাকিস্তান, আফগানিস্তানের মত তাদের পথ অনুসরণ ক'রে ইসলামিক রাজধর্মকে গ্রহণ করলো? কেন বাংলাদেশ ভারতের মত মহান মানবতা প্রেমী হ'লো না? কেন ভারতের মত রাজধর্ম মানবতা হ'লো না? কেন বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষিত হ'লো না? কেন বাংলাদেশের ঘোষিত ধর্ম ইসলাম হ'লো? এসবের পিছনে কে বা কারা লুকিয়ে আছে? কে বা কারা দেশটাকে টুকরো ক'রে দিয়ে গিয়েছিল কিন্তু একটা সুতো দেশের পিছনে বেঁধে দিয়ে সুতোটা নিয়ে চলে গিয়েছিল ভয়ে দেশ ছেড়ে? কারা বছরের পর বছর সংখ্যালঘুদের ভয় দেখিয়ে চলেছে? মুষ্টিমেয় কয়েকজন মানুষ কেন সব ধর্মের মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি ক'রে বছরের পর বছর কায়েমী স্বার্থকে বজায় রেখে আখের গুছিয়ে চলেছে? কেন সব ধর্মের বুদ্ধিজীবীরা হয় চুপ ক'রে থাকে 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতায় নতুবা কারও না কারও কাছে অর্থ-মান-যশের লোভে? কেন তারা অন্যায়কে অন্যায় জেনেও মদদ দিয়ে চলে বছরের পর বছর? আর তার খেসারত দিতে হয়েছে পরবর্তী প্রজন্মকে, বছরের পর বছর আপনাকে-আমাকে!কেন দেশটা ভাগ হ'লো দাদা? কেন সেদিন দেশপ্রেমিকরা চুপ ক'রে ছিলেন? কেন সেদিন মহাত্মারা কোনও মন্তব্য করেননি? কেন সেদিন নেতাজীকে দেশের অভ্যন্তরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি? কেন সেদিন হঠাৎ করেই জিগির উঠেছিল হিন্দু-মুসলমানের ভাগ-বাটোয়ারার? সেদিন যদি পূর্ব বাংলাকে পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে অন্যায়ভাবে অনৈতিক পদ্ধতিতে জোর ক'রে কিম্ভুতকিমাকার ভৌগোলিক সীমারেখা তৈরি ক'রে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যুক্ত ক'রে দেওয়া না হ'তো, যদি ভারতের সঙ্গে পশ্চিমবাংলার সাথে যুক্ত থাকতো তাহ'লে কি আজ বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হ'তো? এই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মগজ কার ছিল দাদা? কেন সেদিন বাংলাকে ভাগ করা হয়েছিল? কি উদ্দেশ্য ছিল এর পিছনে? ধর্মকে সামনে রেখে বাংলা ভাগের পিছনে যে গোপন এজেন্ডা ছিল রাজনৈতিক নেতাদের সেই গোপন এজেন্ডার শিকার কি সার্বিক ভাবে বাঙালি হয়নি? বাঙালির মধ্যেও কি বিশেষতঃ হিন্দু বাঙালি, মুসলিম বাঙালি নিয়ে সংকীর্ণ মনোভাব ছিল না? যার সুযোগ নিয়েছিল অন্য সম্প্রদায়ের লোকেরা ও বিশেষ করে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী দেশ? কেউ কি আজ পর্যন্ত প্রশ্ন তুলেছে, যে দেশকে ব্রিটিশ দু'শো বছর ধ'রে ভোগ করেছে সেই দেশের মানুষের সঙ্গে যাওয়ার আগে বিশেষ ক'রে বাঙালির সঙ্গে কেন এমন বিমাতৃসুলভ আচরণ করলো? কেন দেশটাকে ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে এমন নির্মমভাবে ভেঙে টুকরো টুকরো ক'রে দিয়ে গেল? যার ফল ভোগ করছে তিন দেশের সাধারণ মানুষ!!!!
এর উত্তর কি?

হয় বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ইত্যাদি পড়শী দেশের মত ভারত ধর্ম ভিত্তিক দেশ হ'ক। ভারত হিন্দু রাষ্ট্র হ'ক। নতুবা বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ইত্যাদি দেশও ভারতের পদাঙ্ক অনুসরণ ক'রে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষিত হ'ক। আর নয়তো ব্রিটিশের মুখে ঝামা ঘষে দিয়ে আবার পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির মত পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ভারত এক হ'য়ে আবার আগের মত অখন্ড ভারতবর্ষ হ'ক এবং ব্রিটিশকে তার দেশ ভাঙ্গার ঘৃণ্য চরিত্রকে মনে করিয়ে দিয়ে জানান দিক ভারতবর্ষ এক হ;য়ে মিলেমিশে থাকার চরিত্র।
আর যদি সেদিন কখনো আসে এবার যেন আর ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে অখন্ড ভারতবর্ষ গড়ে না ওঠে। সেদিন যেন অখন্ড ভারতবর্ষ বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র সম্পর্কে বলা কথা অনুসরণ করে। দীর্ঘ ৭০বছর একটা ভুলের উপর দাঁড়িয়ে ভারত নামক দেশটা চলেছে! এত পন্ডিত, এত মহাত্মায় ভরা দেশ এই ভুল ধরতে পারেনি! আর বললেও ভুলকে ভুল ব'লে স্বীকার করেনি! তার ফল তো দেশবাসীকেই ভুগতে হবে। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বললেন, ধর্ম নিরপেক্ষ কথাটা আমার মতে ভুল। ধর্ম কখনও নিরপেক্ষ হ'তে পারে না। বরং সম্প্রদায় নিরপেক্ষ দেশ কথাটা হ'তে পারে।তাই অখন্ড ভারতবর্ষ যতদিন না হচ্ছে ততদিন ভারত সরকারের কাছে আবেদন আসুন শ্রীশ্রীঠাকুরের বলা 'সম্প্রদায় নিরপেক্ষ দেশ' এই বিষয়টিকে ভেবে দেখুন, আলোচনা করুন, ভুল ব্যাখ্যা থেকে দেশকে, দেশের মানুষকে বাঁচান, পথ দেখান দেশকে, বিশ্বকে, বিশ্ববাসীকে। দেশ সোজা পথে হাঁটা শিখুক। ধর্ম নিরপেক্ষ কথাটা ভুল তা দেশের মানুষ, বিশ্বের মানুষ জানুক। মূলে হাত দিন। সাংবিধানিক গলদ দূর করুন। ঘোষণা হ'ক 'ভারত সম্প্রদায় নিরপেক্ষ রাষ্ট্র'। অনেক নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণের মত শব্দের রুটে গিয়ে রুট মিনিংয়ের ওপর দাঁড়িয়ে বৈপ্লবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করুক ভারত সরকার।
( লেখা ১৩ইমার্চ'২০২১)

প্রবন্ধঃ প্রেম ও ধর্ম

ভাসা ভাসা ভাবে কোনোকিছু দেখা আমাদের তথাকথিত এলিট সমাজের বৈশিষ্ট্য। দিদি নং ওয়ানের সঞ্চালিকাও তাই করেছেন। এই ব্যাপারটাকে Superficial thoughts দিয়েই ব্যাখ্যা করেছেন। যা এলিট সমাজের কাছে স্বাভাবিক। চেতনার গভীরে যাবার সামাজিক প্রেক্ষাপট এতটাই ক্ষীণ হ'য়ে পড়েছে চতুর্দিকের চটজলদি পাওয়ার তাগিদে ভিড় করা তথাকথিত শিক্ষিত মানুষের ভিড়ে যে এই প্রেমের সম্পর্কের মধ্যে অসাম্য বা অস্বাভাবিক কিছু দেখতে পাননি সঞ্চালক, প্রেমিক-প্রেমিকা তথা উপস্থিত দর্শকবৃন্দ। সঞ্চালিকা এর মধ্যে খাঁটি প্রেম দেখতে পেয়েছেন। দেখতে পাননি পুরুষটির মধ্যে খাঁটি প্রেমের অজুহাতে কাজ বাগাবার জন্য নিজের ধর্ম বা নিজের পিতৃদত্ত নাম পরিবর্তন করার মত ঘৃণ্য মানসিকতা, দেখতে পাননি কাজ বাগাবার পরে নিজের ভালোবাসার মানুষের সামনে প্রতারণার মুখোশ খুলে ফেলে নিজের ধর্মে বা নিজের পিতৃদত্ত নামে পুনরায় ফিরে আসার মত ব্যাক্তিত্বহীন, না মরদের পাতলা চরিত্র। দেখতে পাননি ভালোবাসার মানুষটাকে নিজের ধর্মে, নিজের পিতৃদত্ত নামে থেকে যাবার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবার মত প্রেমিক পুরুষের মধ্যে উদারতার মানসিকতা অভাব। দেখতে পাননি বিয়ের পরেই বা বিয়ের আগেই বা প্রেম জমে যাবার পরেই বা সম্পর্ক স্থিত হবার পরেই নিজের ধর্মে বা নিজের সম্প্রদায়ে ভালোবাসার মানুষটিকে কনভার্ট করার মৌলবাদী মানসিকতা। দেখতে পাননি নাম পরিবর্তনের এফিডেবিটের পিছনে মূল কারণের ছবি।

আর মেয়েটির মানসিকতার মধ্যে কি দেখলাম? পতিব্রতা হিন্দু নারীর মত স্বামীর সব চাহিদা মেনে নিয়ে, নিজেকে স্বামীর কাছে অর্পণ ক'রে প্রমাণ করলেন স্ত্রী হিসাবে তিনি তার পিতৃদত্ত 'অর্পিতা' নাম সার্থক করেছেন। প্রমাণ করলেন স্বামীর দোষত্রুটি, প্রতারণা, কপটতা দেখেও না দেখা আদর্শ স্ত্রীর পরিচয়। কিন্তু স্ত্রী হিসাবে প্রমাণ করতে পারেননি আদর্শ স্ত্রীর পরিচয় হ'ল স্বামীর মঙ্গলহেতু স্বামীর দোষ, ত্রুটি, ভুল, অন্যায় স্বামীর কাছে তুলে ধ'রে স্বামীকে মঙ্গলের পথে চালিত করা। আর আদর্শ নারী হিসাবে সেই দৃঢ়তা দেখাতে পারেননি স্বামীর কাছে, সেই শিক্ষা তুলে ধরতে পারেননি সমাজের কাছে যে ভালোবেসে বিয়ে করতে গিয়ে বা কারও স্ত্রী হওয়ার জন্য নিজের ধর্ম, নিজের সম্প্রদায়, নিজের সংস্কৃতি, নিজের পিতৃ পরিচয় ত্যাগ করার প্রয়োজন পড়ে না। আদর্শ স্ত্রী হওয়ার জন্য অন্য ধর্মে কনভার্টেড হ'য়ে নিজের বিশ্বস্ততা প্রমাণ করতে হয় না। এই মেকী, মিথ্যে, কপট ভালোবাসা আর যাই হ'ক ভবিষ্যৎ সুস্থ মজবুত সম্পর্কের ভিত হ'তে পারে না। এতে মানুষ হিসাবে জীব জগতের মাঝে নিজের অস্তিত্বকেই টেনে নীচে নাবানো হয় যা কিনা নিজের কাছে নিজের অর্থাৎ মনুষত্বের চরম অপমান। দিদি নং ওয়ানের ঘটনাটির বিবরণ যদি সত্য হ'য়ে থাকে তাহ'লে উভয়ের প্রেম মানুষের কাছে, সমাজের কাছে দিশাহীন প্রেম হ'য়ে রইলো। উভয়ের প্রেম অমর হ'য়ে থাকতো যদি দুজনেই দুজনের ধর্ম, দুজনের সম্প্রদায়ের Identity বজায় রেখেই স্বামী-স্ত্রীর জীবনযাপন করার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতেন আর সেটাই হ'তো আদর্শ স্বামীস্ত্রীর, আদর্শ সম্প্রদায় নিরপেক্ষ সমাজ গঠনের জ্বলন্ত উদাহরণ। যাই হ'ক পরবর্তী সময়ে কেউ এই লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে আশা করি যদি কেউ ভিন্ন ধর্মে অর্থাৎ ভিন্ন সম্প্রদায়ে সংসার বাঁধে।
(লেখা ১৩ইমার্চ'২০১৭)

কবিতা/গানঃ স্বপ্ন! যাবো বাড়ি---

স্বপ্ন, যাবো বাড়ি তোমার!
ফিরে যাবো বাড়ি আমার!
প্রভু তোমার কাছে
যাবো ফিরে এইবার!!

ফিরে যাবো তোমার ভুবনে
ছুঁয়ে যাবো রাতুল চরণে
সদা প্রাণের গন্ধ বুকে তোমার স্বপনে!
কাছে যাবো ফিরে এইবার।

বৃত্তির বাঁধন ছিঁড়ে নাড়ীর টানে
যাবো ফিরে প্রভু তোমার পথে;
রঙিন অনেক দারুণ বোধের
স্বপ্ন ভরা দু'চোখ নিয়ে!!
(লেখা ১৩ইমার্চ'২০১৮)

ফিরে যাবো তোমার ভুবনে
ছুঁয়ে যাবো রাতুল চরণে
সদা প্রাণের গন্ধ বুকে তোমার স্বপনে!
কাছে যাবো ফিরে এইবার।২

Saturday, March 11, 2023

কবিতাঃ কেউ ছিল না যেদিন

সমাজসেবা পয়সার বিনিময়ে হয় না।
আন্তরিকতা সাথে হৃদয়ের স্বচ্ছতা 
না থাকলে কেউ তার সুফল পায় না।
হিংসা এমনই জিনিস
তাকে বাড়তে দিলে বেড়েই যায়;
কোনও ভালো কাজ করেও না,
করতেও দেয় না; শুধুই কথার বিষাক্ত হাই!
কেউ ভালো কাজ করলে বাধা দেয়,
করতে দেয় না যারা;
ভবিষ্যৎ তাদের ঘোর অন্ধকারে ভরা!
কে করবে ভালো কাজ আর কেনই বা করবে?
কাঁকড়ার চরিত্র নিয়ে মারামারি ক'রে মরবে!?
অতীতের সাহায্য ও দিনগুলি ভুলে যাও?
অনিত্য ঝলমলে বর্তমান নিয়ে থাকো ব্যস্ত
নেশাগ্রস্থের মত! 
ভবিষ্যতে কি অপেক্ষা করছে দেখে নাও!
কথায় আছে:
কাজের বেলায় কাজী কাজ ফুরোলে পাজি!
পাজির পাঁজিতে জেনো আছে 'শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর'
বলতে পারি এ কথা রেখে বাজি!!
আজ তোমার দিন তাই ভুলে গেছো
আর পড়ে না মনে সেইদিন!
কেউ ছিল না তোমার সাথে যেদিন!!
( লেখা ১১ই মার্চ'২০২১)

ভালোবাসা কারে কয়?

ঈশ্বর মানে ভালোবাসা। শত্রুমিত্র, ধনী গরীব, শিক্ষিত অশিক্ষিত এককথায় তাঁর সৃষ্ট মানুষ সহ সৃষ্টির সমস্ত কিছুকে ভালোবাসা।

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বলেন, ভালোবাসা মানে ভালোতে বাস করা অর্থাৎ ভালো মানে ঈশ্বর, ইশ্বরে বাস করা।

ভালোবাসা মানে ভালো বাসা। ঈশ্বরের শ্রীচরণ এক ও একমাত্র ভালো বাসা। সেই ভালো বাসাতে বাস করা। সেই বাসা অর্থাৎ তাঁর শ্রীচরণে বাস ক'রে তাঁর চলন আয়ত্ত করা, তাঁর চলন নিজের চলন ক'রে তোলা।
(লেখা ১১ই মার্চ'২০২১)

গানঃ এলে না, এলে না----

এলে না, এলে না, প্রভু তুমি এলে না
এত যে ডাকি তোমায় তবু এলে না গো,
এত যে ডাকি তোমায় তবু এলে না।২

আমি তোমায় বাসি ভালো
জীবনের চেয়েও ভালো
আমি তোমায় ভালোবাসি
জীবনের চেয়েও বেশী
প্রভু নয় তা ছলনা।
এত যে ডাকি তোমায় তবু এলে না গো।
এত যে ডাকি তোমায় তবু এলে না। ২

চাঁদ সত্য, সূর্য সত্য, প্রভু সত্য আরও
প্রভুর চেয়ে বেশী সত্য কে আছে বলো।
আমি যারে ভালোবাসি 
(সে) সত্যের চেয়েও সত্য বেশী
চলনে তাঁর বাঁচার নিশানা।
তুমি যে এত ভালো জানা ছিল না গো,
তুমি যে এত ভালো জানা ছিল না। ২

মা গুরু, বাবা গুরু, দয়াল গুরু আরও
দয়ালের চেয়ে বড়ো কে আছে বলো। 
আমি যারে বাসি ভালো আঁধারেতে জ্বালায় আলো
বন্ধু, নয় তা ছলনা। 
একথা বন্ধু আমার তোমরা ভুলো না গো,
এ কথা বন্ধু আমার তোমরা ভুলো না। ২
প্রভুরে----, প্রভুরে----, প্রভুরে------

( দিলো না, দিলো না, নিলো মন দিলো না)


Thursday, March 9, 2023

প্রবন্ধঃ বৃন্দাবনে মার্কিন মহিলাকে ধর্ষণ।

বৃন্দাবনের ধর্মীয় সংস্কৃতিতে মার্কিন মুলুক থেকে আসা বিদেশিনীর বয়ান ও হাসপাতালের শারীরিক পরিক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী এটা জানা গেল যে মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু মথুরা পুলিশ এই ধর্ষণের ব্যাপারে নিশ্চিত নয়। পুলিশের কাজ পুলিশ করেছে, পুলিশের মত দিয়েছে রায়। তাই বলে কি পুলিশকে দোষ দেওয়া বিদেশিনীর বা আমাদের শোভা পায়? কে কোথায় ধর্ষণ হ’ল, কোন নারী কোথায় তিনদিন বা আরো বেশিদিন নিখোঁজ হয়ে গেল, কার কোথায় শ্লীলতাহানি হ’ল, কোন নারীকে কোন রাবন তুকে নিয়ে গেল এইসব খবরে এখন আর চমক নেই ভারতে। বরং এগুলি না হওয়াটাই চমক! প্রশ্ন অন্য জায়গায়। এই যে ভারতের বিভিন্ন স্থানে ধর্ম্মের বা ঈশ্বরের আঙিনায় প্রতিনিয়ত ঈশ্বর প্রেমে মগ্ন ও ধর্ম্মীয় ভাবাবেগে আপ্লুত নারী ভক্তদের ওপর ধর্ম্মীয় বা ঈশ্বরে বিশ্বাসী(!?) ব্যক্তিদের দ্বারা যে যৌন হেনস্থা হচ্ছে তার সমাধান কোথায়? মার্কিন মুলুক থেকে হরি নামরসে মাতোয়ারা হয়ে বৃন্দাবনের আঙিনায় ছুটে আসা বিদেশিনী কিম্বা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্ম্মীয় প্রতিষ্ঠানে শারীরিক মানসিক নানাবিধ জটিল সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে পাওয়ার জন্য ছুটে যাওয়া দেশিবিদেনীদের ওপর যে যৌন অত্যাচার হয়ে চলেছে তার জন্য কে বা কারা দায়ী? এর প্রতিকার-ই বা কোথায়? প্রতিদিন টিভির দৌলতে আজ আমরা দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে চলা ঘটনা, ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে জেনে যাই। কোনও ঘটনা-ই আজ আর আমাদের অজানা নয়। ভারতের বিভিন্ন ধর্ম্মীয় গুরু ও গুরুমাদের বা স্বঘোষিত ঈশ্বরদের দ্বারা ঘটিত নানা অধর্ম ও কুকর্মের সঙ্গে সঙ্গে নারী কেলেঙ্কারির বহু ঘটনাই টিভি, রেডিও, কাগজ ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। এইসব ঘটনা আমরা পুরুষরা যেমন জানি তেমনি নারীরাও জানে। তারপরেও নারীর ওপর বিরামহীন যৌন হেনস্থা হয়েই চলেছে!

যাইহোক ধর্ম্ম প্রতিষ্ঠানে বা ধর্মীয় গুরুদের দ্বারা সাধারণ ভক্ত বিশেষত নারীদের ওপর যে ধরণের লজ্জা ও দুঃখজনক ঘটনা ঘটে চলেছে তাতে একটা কথা স্বভাবতই মনে আসে এই সমস্ত ভুক্তভোগী ভাঙাচোরা মানুষগুলির অতিরিক্ত সরলতা, আবেগ, বিশ্বাস, নির্ভরতা ইত্যাদি চারিত্রিক বিশেষত্ব এদের সর্ব্বনাশের মূল কারণ। এ প্রসঙ্গে The greatest phenomenon of the world Sri Sri Thakur Anukul Chandra-এর তাঁর ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলা কথাগুলি স্মরণীয়।
একবার এক ভক্ত ঠাকুরকে দর্শন ও প্রণাম করতে এসেছিলেন। সেই ভক্ত সঙ্গে নিয়ে আসা ব্যাগ সুটকেস ইত্যাদি বাইরে রেখে এসে যখন ঠাকুরকে প্রণাম করছিলেন তখন ঠাকুর সেই ভক্ত কখন এসেছেন, কোথায় উঠেছেন, কিছু খেয়েছেন কিনা, বিশ্রাম করেছেন কিনা ইত্যাদি খোঁজ নিলেন। এর উত্তরে সেই ভক্ত মানুষটি জানালেন যে তিনি এইমাত্র এসেছেন এবং এসেই প্রথমে তিনি ঠাকুর দর্শন ও প্রণাম করতে এসেছেন। যখনই কেউ বাইরে থেকে ঠাকুর দর্শন ও প্রণাম করতে আসতেন তখনি ঠাকুর প্রথমেই তাকে তার থাকা, খাওয়া, বিশ্রাম করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেন তারপর যখন তরতাজা হয়ে সামনে আসতেন তখন তার কোনও কথা বা সমস্যা থাকলে শুনতেন। ঠিক তেমনি ঐ আগুন্তুক ভক্তের ঐ কথা শুনে ঠাকুর তাকে প্রথমে ঘর ঠিক করে, স্নান করে, খাওয়া দাওয়া সেরে, বিশ্রাম করে তারপর তাঁর কাছে আসতে বললেন এবং সঙ্গে কোনও ব্যাগ সুটকেশ ইত্যাদি কিছু দেখতে না পেয়ে তাকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। এর উত্তরে সেই ভক্ত মানুষটি জানালেন যে গেটের বাইরে ব্যাগ সুটকেশ রেখে তবেই তিনি দর্শন ও প্রণাম করতে এসেছেন। একথা শুনে ঠাকুর অত্যন্ত বিচলিত হ’য়ে পড়লেন এবং তাকে শিগিগিরি সেইস্থানে ফিরে যেতে বললেন এবং তার সামগ্রী যথাস্থানে রেখে তারপর স্নান, খাওয়া ও বিশ্রাম শেষে আসতে বললেন। এই কথা শুনে সেই ভক্ত ঠাকুরকে বলেছিলেন যে তিনি তো ঠাকুরবাড়িতে এসেছেন, তার প্রিয়পরমের কাছে এসেছেন তাহলে তার ভয় কোথায়? এর উত্তরে ঠাকুর যা বলেছিলেন তা’ বাণী আকারে পৃথিবী জুড়ে সমস্ত ধর্ম্ম ও ঈশ্বর বিশ্বাসী সাধারণ সরল সিধেসাধা ভাঙাচোরা মানুষের কাছে চিরস্মরণীয়। পরমপ্রেমময় ঠাকুর চকিতে সোজা হ’য়ে বসে সেই ভক্ত মানুষটিকে সাবধান করে দিয়ে বললেন,
“মন্দিরের আশেপাশে কুৎসিত লোকের আনাগোনা বেশী, সাবধান থেকো তা’ থেকে”।
আজ শুধু মনে হয় এই কথা যদি ঐ বিদেশিনী বা অন্যান্য লাঞ্ছিত, অপমানিত, উৎপীড়িত, প্রতারিত, ধর্ষিত মানুষগুলোর কাছে পৌঁছে দেওয়া যেত তাহ’লে হয়তো বা তারা মানুষ, ধর্ন্ম, ঈশ্বর ও বাস্তব পরিস্থিতি-পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হ’ত এবং তথাকথিত ধর্ম্মীয় ও ঈশ্বরপ্রেমী ভন্ড কুৎসিত মানুষগুলোর হাত থেকে রক্ষা পেত।

(লেখা ৯ই মার্চ'২০১৫)

প্রবন্ধঃ নির্বাচন, ধর্ম ও ঈশ্বর পূজা।

নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই ধর্মপ্রাণ হ'য়ে পড়ছে সমস্ত দলের প্রার্থীরা। মন্দিরে মন্দিরে সেজে উঠছে বিগ্রহ! মন্দির-মসজিদ-গির্জা ইত্যাদি সব যেখানে যা আছে ছোটো বড় ঠাকুর দেবতার স্থান তা সে দালান হ'ক আর বটতলা হ'ক সেজে উঠছে! সেজে উঠছে নানা রঙে, নানা ঢঙে! বালাই ষাট! ভোট বড় বালাই! বড়ই দায়!

কাল যাচ্ছিলাম গঙ্গার ওপারে লঞ্চে ক'রে খড়দা যাবো ব'লে। একজন খিটকেল মার্কা আধা পরিচিত লোক আমাকে দেখে 'জয়গুরু' ব'লে জিজ্ঞেস করলো কোথায় যাচ্ছি। আমি 'জয়গুরু' ব'লে আমার গন্তব্যস্থল বললাম। সে কথা শুনে সে বললো, 'সৎসঙ্গে'? আমি মৃদু হেসে ঘাড় নাড়লাম। তারপর একেবারে বিনয়ের সঙ্গে বললো, "দাদা, নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে তত মন্দিরে-মসজিদে-গির্জায় সমস্ত ধর্মস্থানে ঈশ্বরের কাছে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের" এই পর্যন্ত ব'লে একটু থেমে গিয়ে হ্যা হ্যা ক'রে ইঙ্গিতপূর্ণ বাঁকা দৃষ্টিতে হেসে বললো, ------- আটকে যাচ্ছে! আমি শুনেও না শোনার ভান ক'রে একটু বিরক্ত হ'য়ে জোরে পা ফেলে এগিয়ে গেলাম সামনের দিকে।

আজকাল বেশী কথা বলার ইচ্ছেটাই যেন হারিয়ে ফেলেছি। বিশেষ ক'রে 'জয়গুরু' শব্দটা শুনলে সেই লোকের সঙ্গে কথা বলার উৎসাহ উদ্দামতাটা যেন কেমন যেন স্তিমিত হ'য়ে যায়, ঝিমিয়ে যায়! বিশেষ ক'রে সেই সৎসঙ্গীদের মুখে 'জয়গুরু' শুনলে এমনটা হ'য়ে থাকে যাদের দেখে কবি সুকান্তর 'অবাক পৃথিবী' কবিতাটা মনে পড়ে। ভেসে ওঠে চোখের সামনে কবির এই কবিতা লেখার সময়ের মুখটা। বারো লাইনের একটা কবিতায় তৎকালীন মানুষ, মানুষের স্বভাব, সমাজ ও সভ্যতা দেখে তিনি নয় নয়বার অবাক শব্দটা লিখেছেন! বর্তমান সৎসঙ্গীদের দেখে একই রকম অবস্থা আমারও। 'জয়গুরু'-র উত্তরে 'জয়গুরু' বলতে ইচ্ছে করে না। কখনও কখনও সৎসঙ্গীদের 'জয়গুরু'-র উত্তরে মুখ দিয়ে উৎসাহে-উদ্দীপনায় 'পরাজয়গুরু' শব্দটা বেরিয়ে আসে। 'পরাজয়গুরু' শুনে থতমত খেয়ে যায় সামনের জন! অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে আমার মুখের দিকে। পরে মাথা চুলকাতে চুলকাতে চ'লে যায় 'কি হ'লো ব্যাপারটা?' এইভেবে। এরকম ভাবতে ভাবতে কিম্বা মনে মনে একটা জম্পেশ খিস্তি দিয়ে চলে যায়। অনেকে আছে 'পরাজয়গুরু' শুনে 'ব্যাপারটা কি হ'লো? কথাটা কি বললো?' না বুঝেই নিজের ধান্দার উদ্দেশ্যে চলে যায়। আসলে এরা বুঝতে পারা, না পারা সব মানুষেরা ব্যস্ত নিজের বৃত্তি-প্রবৃত্তির প্রবল টানে।

প্রশ্ন জাগতে পারে পাঠক মহলে বিশেষ ক'রে সৎসঙ্গী মহলে, এমন কেন হয়? ঐ খিটকেল মার্কা লোকটাকেই বা 'জয়গুরু' কেন বললাম?
প্রথম প্রশ্নের উত্তরে বলতে পারি, এমনটা হয় অর্থাৎ 'জয়গুরু'-র উত্তরে 'জয়গুরু' বলতে ইচ্ছে করে না তার কারণ এখন সব গুরুদের শিষ্যরাই পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে দেখা হ'লে জয়গুরু বলে এবং অন্য গুরুর পরিচিত শিষ্যদেরও জয়গুরু বলে। 'জয়গুরু' এখন আর সৎসঙ্গীদের একচেটিয়া সম্পত্তি নয়। 'জয়গুরু' এখন ইউনিভারসাল ওয়ার্ড, আন্তর্জাতিক বা সার্বজনীন শব্দ। 'জয়গুরু' এখন পথ চলতি কথা। এছাড়া 'জয়গুরু' শব্দটা এখন একটা খিল্লি শব্দ হ'য়ে দাঁড়িয়েছে পথেঘাটে একশ্রেণীর ছেলেমেয়ের কাছে এবং টিভিতে অংশগ্রহণকারী 'বি' গ্রেড তথাকথিত সেলিব্রিটিদের কাছে। আর 'জয়গুরু'-র উত্তরে ভেসে আসে তাদের মুখে 'এনজয় গুরু'। আর উৎসাহের সঙ্গে এই 'জয়গুরু' বা 'এনজয় গুরু' বলার ধরণ, তার মুখভঙ্গী, শরীরের ভাষা আজও কানে বাজে, চোখে ভেসে আসে। বিশেষ ক'রে যখন কেউ 'জয়গুরু' বলে।

আর সৎসঙ্গীদের মধ্যে যখন কেউ 'জয়গুরু' বলে তখন তাদের (ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে, তবে বেশীরভাগ) প্রতিদিনকার ঠাকুরকে নিয়ে যে জীবন চলনা, যে কপট ভক্তি, কেন্দ্রে কেন্দ্রে যে দুরারোগ্য 'আমি প্রধান, আমি প্রধান' ব্যাধি, যে আচার্য না মানার প্রবণতা কিম্বা লোকদেখানো আচার্য মানার ঠগবাজি, শিষ্য সেজে ঠাকুরকে আয়ের উপকরণ বানিয়ে যে ভক্তিবাজি সেসব দেখে মনে প্রশ্ন জাগে আমরা প্রতিমুহূর্তে আমাদের অসৎ ধান্দাবাজি কপট চলনা দিয়ে, মিথ্যাচার ক'রে ঠাকুরের সঙ্গে যখন বেঈমানি করছি, করছি নেমকহারামী, ঠাকুরের দয়ায় ভরপুর হওয়ার পরও হচ্ছি অকৃতজ্ঞ, কৃতঘ্ন তখনও তাদের 'জয়গুরু'-র উত্তরে আমাকে বলতে হবে 'জয়গুরু'? জয়গুরু মানে গুরুর জয় হ'ক। আমার জীবন যখন বলছে আমি প্রতিমুহূর্তে আমার গুরুর পরাজয়ের ডঙ্কা বাজাচ্ছি, গুরুকে হারিয়ে দেবার পথ প্রশস্থ করছি তখন কি আমার মুখে 'জয়গুরু' বলা শোভা পায়? এটা কি গুরুর সঙ্গে মিথ্যাচার নয়? তাই সেইসমস্ত মিথ্যাচার করা মানুষগুলোর মুখে যখন শুনি 'জয়গুরু' শব্দ তখন এর উত্তরে মাঝে মাঝে বেড়িয়ে পড়ে এককথায় 'পরাজয়গুরু' শব্দ। কারণ গুরুর কি জয় হচ্ছে? গুরুর কি আমাদের কারণে প্রতিনিয়ত পরাজয় হচ্ছে না? এতসব প্রশ্ন করার ইচ্ছে জাগে না।

দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে বলতে পারি, ঐ খিটকেল মার্কা লোকটাকে 'জয়গুরু' বলার কারণ আধা পরিচিত লোকটি সৎসঙ্গী নয়। খড়দহে ঠাকুরের কাজে যাতায়াত করার সুবাদে বহু মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়, ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। তেমনি লঞ্চ যাত্রী হিসেবেও দু'পারের ঘাট সংলগ্ন বহু মানুষের সঙ্গে কমবেশি পরিচিত মুখের সঙ্গে দেখা হয়। সামান্য হাসি বিনিময়, হাত দেখানো, ভালো আছি, জয়গুরু ইত্যাদি অল্পবিস্তর হ'য়ে থাকে যাতায়াতের পথে। ঠিক তেমনি পরিচিত, আধা পরিচিত অদীক্ষিত সৎসঙ্গী নন এমন মানুষের মুখে 'জয়গুরু'-র উত্তরে জয়গুরু বলা উচিত ব'লে মনে করি আর তাই বলি। আর আধা পরিচিত বা পরিচিত অদীক্ষিত কারও 'জয়গুরু' বলার সময় অবশ্যই তাদের 'জয়গুরু' বলার ধরণ স্বাভাবিকভাবেই মার্কিং করা হ'য়ে থাকে আর তার উপরই নির্ভর করে জবাব দেওয়া না দেওয়া। যদিও তেমন বিসদৃশ আচরণ করার সুযোগ পাওয়ার কোনও সম্ভাবনাও থাকে না তাদের। উত্তর দেওয়া-না দেওয়া প্রশ্নকর্তার গ্রহণযোগ্যতার উপর নির্ভর করে।

যাই হ'ক, যতই ঐ খিটকেল মার্কা লোকটার বিদ্রুপাত্মক কথা "দাদা! নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে------------আটকে যাচ্ছে" না শুনে বা না শোনার ভান ক'রে এগিয়ে যায় না কেন ঐ কথাটা কানের মধ্যে বেজেই চলেছে সেদিন থেকে। তাই আজ লিখতে বসলাম মাথা থেকে বোঝাটা নামাবার জন্য।

নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ঈশ্বরের চরণ পূজার রমরমা নতুন কিছু নয় এটা বরাবরের একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া মাত্র। এটা সবক্ষেত্রেই হ'য়ে থাকে। কি ধর্ম, কি শিক্ষা, কি ক্রীড়া, কি চাকরি, কি ব্যবসা, কি সিনেমা, নাটক, যাত্রা, অভিনয় ইত্যাদি ইত্যাদি সবক্ষেত্রের মত রাজনৈতিকক্ষেত্রেও চরণ পূজার চলন অবিসংবাদিত। ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাছে এবং কিছু না ক'রে পাওয়ার মানসিকতার মানুষদের কাছে ঈশ্বরের চরণ পূজা হাজার বছরের জন্মজন্মন্তরের আদত। আর যারা ধর্ম মানে না, ঈশ্বরের অস্তিত্ব মানে না, হিন্দু ধর্মের দেবদেবী নিয়ে কটুক্তি করে, বিকৃত পোষ্ট করে ফেসবুকে যেমন শিবলিঙ্গে কনডোম পড়ানো আবার সেই পোষ্টের পক্ষে দাঁড়িয়ে নানারকম অজুহাত খাড়া ক'রে সাফাই গায় যারা তারা ভুলে যান ফেসবুকে পোষ্ট করা ছবিতে শিবলিঙ্গে কনডোম পড়াচ্ছে যে বুলাদি সেই বুলাদির বিজ্ঞাপন ছিল এইচআইভি আর এইডস সংক্রমণ নিয়ে। সরকারি এই অ্যানিমেটেড চরিত্রটি এইচআইভি আর এইডস সংক্রমণ নিয়ে অবিরাম সচেতনতার বার্তা বিলিয়ে চলতেন ১৯৯৮ সাল থেকে ৷ তাহ'লে কি শিবলিঙ্গ এইচআইভি আর এইডস সংক্রমণ ছড়ায় যার জন্য অ্যানিমেটেড চরিত্র বুলাদিকে দিয়ে ঐ লিঙ্গের মাথায় কনডোম পড়াতে হ'লো অভিনেত্রী তথা নির্বাচনী প্রার্থী সায়নী ঘোষকে!? কি বলেন অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের ঐ বুলাদিকে দিয়ে শিবলিঙ্গের মাথায় কনডোম পরানো পোষ্টের স্বপক্ষে বিশ্লেষণকারীরা? ভোটের লড়াইয়ে জেতার জন্য সেই ইশ্বরকে না মানা, ধর্মকে না মানা অবিশ্বাসীরা, বামপন্থীরা লুকিয়ে বাড়িতে পুজো দেয়, ঈশ্বরকে কলঙ্কিত করতে বুক ও হাত পা না কাঁপা অভিনেত্রী ও অন্য মানুষেরা আবার মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়ে নির্বাচনী প্রচারের যাত্রা শুরু করে। সেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ঈশ্বরকে নিয়ে ল্যাজেগোবরে হ'তে এদের লজ্জা লাগে না, দ্বিধা করে না। এরা ঈশ্বরের চলন পুজোর ধার ধারে না। এদেরই বা দোষ কোথায়? এরা তো এদের পূর্বপুরুষের কাছ থেকেই এই শিক্ষা পেয়ে এসেছে। ভালো শিক্ষা থেকে খারাপ শিক্ষার সংক্রমণ বেশী ও দ্রুতগতিতে ছড়ায় এবং ছড়ায় তা বংশ পরম্পরায়। তাই সাবধান হ'তে হয়, সাবধান থাকতে হয়। পরবর্তী বংশধর, পরবর্তী প্রজন্ম এই লিঙ্গে কন্ডোম পরানো ছবি দেখে দেখে শিখে যায় লিঙ্গ কি? লিঙ্গের কাজ কি? লিঙ্গ দিয়ে কি হয়? লিঙ্গে কেন কনডোম পরানো হয়? লিঙ্গে কনডোম পরালে কি হয়? বুলাদি কে? বুলাদি কেন লিঙ্গে কনডোম পড়ালো? কনডোমের সাফল্য কিসের ওপর নির্ভর করে? এরকম হাজারো প্রশ্ন নিয়ে বড় হবে আগামী বংশধর, আগামী প্রজন্ম।

ঠিক তেমনি সৎসঙ্গীদের কাছেও (ব্যতিক্রম আছে। ব্যতিক্রম ব্যাতিক্রমই আর ব্যতিক্রমরাই ঠাকুরের আশা) ফুল বেলপাতা ঘট ধুপধুনো প্রদীপ চন্দন তুলসীই ইত্যাদি সেই শেষ কথা। এইসমস্ত উপকরণ সাথে সেই পুরোহিত প্রথার মাধ্যমে সৎসঙ্গীদের মন্ত্র পাঠ, সেই পাঁচালি পাঠ সহযোগে আকুতি ভরা হৃদয়ে সেই চরণ পূজার হাজার রকম রকমারিতে সেজে উপেক্ষার হৃদয় দিয়ে চলন পূজার জলাঞ্জলি দিয়ে ঠাকুরের মনের মত সোনার মানুষ হ'তে গিয়ে আমরা তাঁর সোনার সৎসঙ্গীরা হ'লাম গরু।

আসলে চলন পূজার ধার কেউ ধারে না। শুধুই মিথ্যাচার আর ঢাকঢোল পিটিয়ে চরণ পূজা! চরণ পূজা!! চরণ পূজা!!!
( লেখা ১০ই মার্চ'২০২১)

All r

Wednesday, March 8, 2023

কবিতাঃ শান্তি নেবে আসুক----

মা! তুমি চোরের মা নও,
তুমি যে তোমার সন্তানের মা!
যদিও জন্ম দিলেই হয় না মাতা,
মা হওয়া নয়কো সহজ কথা,
এ কথা জানি; তবুও তুমি মা! মা!! মা!!!
এ কথা আমি মানি।
শুধু বলি, চোরের মায়ের বড় গলা,
মিথ্যে হ'ক এ বুলি।
তুমি সন্তান! চোর, গুন্ডা, অসৎ,
নাকি বদমাশ, শয়তান তা জানি না,
জানা প্রয়োজন এ কথাও আমি মানি না,
জানার একটুও দরকার নেই, নেই ইচ্ছে
শুধু জানি তুমি পরমপিতার সন্তান!!
আর তাই তোমায় আমি ভালোবাসি।
ভালোবাসি বলেই তোমার কাছে
আমার একান্ত অনুরোধ আর দাবী আছে
শান্ত হ'ক তোমার চীৎকার, দাপাদাপি।
ব্যাস আর কিছুই চাই না, এতেই আমি হ্যাপি।
দুর্নীতি, অবনতি যা হয় হ'ক,
স্কুলে-কলেজে, অফিস-কাছারিতে
ধর্ম্ম প্রতিষ্ঠানে আর রাজনীতির আঙ্গিনায়
ঘরে-বাইরে আর কলে কারখানায়
একটু নীরবে হ'ক, হ'ক নিরালায়,
নিভৃতে গোপনে প্রেম ভালোবাসায়,
শান্তি নেবে আসুক সমাজে, দেশে
ঘরে-বাইরে দিনেরাতে।

Sunday, March 5, 2023

কবিতাঃ আলো ফুটুক। কেটে যাক দুঃস্বপ্নের রাত।

হে বিপ্লবী! হে বিজ্ঞানী! সমাজ সংস্কারক, মানব দরদী, হে পূজারী!
মানবজাতি ধ্বংসের তুমিই ঈশ্বর অবিশ্বাসী ভয়ঙ্কর আনাড়ি কান্ডারি।
কোনও মন্তব্য করার আগে একবার থমকে দাঁড়াও
আর কি বলছো, কাকে বলছো দেখে নাও, বুঝে নাও!
অর্থ-মান-যশের অহংকারে ছুটছো তুমি যেন পাগলা ঘোড়া
স্রষ্টার বুকে করছো পদাঘাত অন্তরে বাহিরে জড়িয়ে অহংমেখলা।
টাকা আসবে টাকা যাবে ধ'রে রাখতে পারবে না
চলন চরিত্র ঠিক না হ'লে ভোগ করতে পারবে না!
জ্ঞানের পাখনা মেলে যাও উড়ে গ্রহ থেকে গ্রহে বুধে মঙ্গলে
অসভ্যতা আজ সভ্যতা, দুর্গতিই প্রগতি আর দুর্নীতি উন্নতির
হাতিয়ার হ'য়ে ছুটে চলেছে জ্ঞানের হাত ধ'রে অমঙ্গলে। 
ধর্ম্ম ঈশ্বর মানো না তুমি তোমরা তাতে কুঠারাঘাত করো
জালি ধর্ম্ম আর জালি বোবা ঈশ্বরে মোহগ্রস্থ মানুষ সাথে
তোমরাও তাতে জান্তে-অজান্তে ডুবে মরো।
The greatest phenomenon of the world:
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র।
আর, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ লজ্জা: বাংলা ও বাঙালি! ভাগ্য মন্দ!!
তাঁকে মানো না তুমি-তোমরা, কারণ তাঁকে জানো না;
আর জানো না বলেই তুমি-তোমরা তাঁকে মানো না।
কুৎসা আর গালাগালিতে মলিন করো তাঁর জীবন
তোমার আমার তরে এসেছিলেন যিনি হরণ করিতে মরণ।
আর, অহং বোধের প্রাবল্যে তুমি বলবান হে মহাশয়, মহাশয়া
ঠাকুর নিয়ে মাতাল হৃদয়ে পায় না আশ্রয় অসহায়-অসহায়া।
ঠাকুর ভাঙ্গিয়ে তুমি তোমার প্রভাব প্রতিপত্তি বাড়াও!
তাঁর নামের আড়ালে ঐশ্বর্যের পাহাড় তুমি বানাও!
রাজনীতির যোগসাজশে ঠাকুরকে বানিয়ে চাটনি
ঠাকুরের মাথায় ভাঙো কাঁঠাল সন্তানকে রাখতে দুধে ভাতে
মাতাল তুমি নবযুগের ঈশ্বরী পাটনী।
অসহায় মূর্খ দুর্বল ভক্ত যে জন তোমারে মহান ভাবে!
তাদের চোখে দাও ধুলো তুমি হাতে নিয়ে লাঠি মোক্ষম চাবিকাঠি
সেজে ভক্তপ্রাণ সাদা কাপড়ে আর হাবেভাবে!
ঠাকুরের বাণী-কথার ব্যাখ্যা করো এতবড় পন্ডিত তুমি!?
মনের আয়নায় নিজের জীবন দেখো দেখতে পাবে ফাঁকির খনি!!
ঠাকুরের বাণী, কথার অনুবাদ, ব্যাখ্যা করতে যেও না যদি সিদ্ধ না হও
সিদ্ধ হ'লে কথা যাবে কমে সিদ্ধপুরুষ আচার্যদেবের যদি শরণ নাও!
নিজের জীবনটাই ঠাকুরের বাণী, কথার মূর্ত রূপ হ'য়ে উঠুক!
আচার্যদেবের সান্নিধ্যে জীবন মাঝে তোমার
সেই বাণী-কথার মর্মার্থের আলো ফুটুক!!
পরকাল ডাকছে তোমায় ছেড়ে যেতে হবে ইহকাল
আজ না-হয় কাল; ওপারে গেলে দেখতে পাবে
পরকাল কত ভয়ানক ভয়াল!!
এখনো সময় আছে বন্ধু! 
আচার্য মাঝে নাও শরণ দয়ালের 
প্রায়শ্চিত্ত করো তুমি তোমার মহাপাপের।
সৎসঙ্গী আমি বাড়িয়ে দিলাম আমার হাত
ধরো হাত, আসুক সুদিন কেটে যাক দুঃস্বপ্নের রাত।

কবিতাঃ এই তুমি কে তুমি?

তুমি তুমি করো রাত্রিদিন
এই তুমি কে বলো দেখিনি!?
শরীরী নাকি সেই অশরীরী!
মনের মাঝে ঝড় তোলা
হৃদয় জুড়ে থাকা ছায়াবর্তিনী?
স্বপ্নে আসা অবয়ব
স্বপ্ন ভেঙ্গে হয়ে যায় শব!
জানা আছে সে সব?
ভিজিয়ে সে সোনা শরীর জলধর,
বয়ে যাবে অবশেষে হয়ে সরোবর?
ভুতের রাজা দিল কি সে বর?
মধু খেয়ে ফুলে ফুলে ওড়া প্রজাপতি,
ধ্যানমগ্ন হতে হতে সাথী হয় ক্ষতি?
সত্যি কি এ ভীষণ অতি?
রুপের টানে অমানুষ হ'লে,
জীবন কি হয় ছারখার?
যার টানে এ বিষম বোঝা যাও বয়ে,
সে-কি বোঝে হৃদয় যাতনা তার???
( লেখা ৬ই মার্চ' ২০১৪)

উপলব্ধিঃ ২৬ ফেসবুক ও ঠাকুরের বাণী।

ঠাকুরের সমস্ত বাণী স্থান, কাল ও পাত্র অনুযায়ী সৃষ্টি হয়েছে আর তার পরিবেশনও হওয়া উচিত স্থান, কাল ও পাত্র অনুযায়ী। তাহ'লে অযথা বিতর্ক তৈরী হয় না। মাথায় রাখতে হবে আমার কাছে ঠাকুরের মূল্য বিরাট বলেই সমস্ত মানুষের কাছেই তাঁর মূল্য বিরাট ও বিতর্কহীন; তা কিন্তু নয়। ঠাকুরের যারা দীক্ষিত বা অনুগামী নয় তাঁদের কাছে প্রসঙ্গবহির্ভূত হঠাৎ হঠাৎ ফেসবুকে প্রকাশিত আপাত বিতর্কিত বাণীর গ্রহণযোগ্যতা নাও থাকতে পারে কারণ তাদের ঠাকুর সম্পর্কে ধারণা কম বা একেবারেই নেই। তাই ফেসবুকের মতন ওপেন মিডিয়াতে হঠাৎ হঠাৎ এমন বাণী পোষ্ট করার অর্থ সেধে বিতর্ককে আহ্বান করা। ঠাকুরের আসা ও তাঁর অবস্থান ঠাকুরের প্রকৃত আসার সময়ের অনেক অনেক আগে হ'য়ে গেছে আর তা হয়েছে তাঁর ইচ্ছাতেই। এই যে তিনি এত Advance এসেছেন তারও কারণ আছে। ঠাকুর তাঁর প্রকৃত আসার সময়ের অনেক অনেক আগে এসেছেন বলেই তাঁকে বর্তমান সময় বুঝতে পারবে না, তাঁর আসাকে মর্যাদা দিতে পারবে না। তাই যতটা সম্ভব তাঁর অনুগামী শিষ্যরা যেন তাঁকে অযথা বিতর্কিত ক'রে না তুলি। আমরা যারা তাঁর শিষ্য বা অনুগামী তারাই জানি না তাঁর আগমনের উদ্দেশ্য ও কারণ এবং তাঁর ভবিষ্যৎ রুপরেখা। আমরা তাঁর অনুগামী শিষ্যরা যদি তাঁর মিশন পরিপূরণ করতে না পারি তাহ'লে আমরা তাঁর অপদার্থ সন্তান এবং এর জন্য তিনি সশরীরে থাকাকালীন বহু কষ্ট, যন্ত্রণা, ব্যথা, বেদনা পেয়েছিলেন এবং এখনও তিনি পেয়ে চলেছেন আচার্য পরম্পরায় রেত শরীরে। তাঁর অনেক বাণী আছে যেগুলি অনায়াসেই পোষ্ট করা যেতে পারে। উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে তিনি অকারণ অনেক লাঞ্ছিত, অপমানিত হয়েছেন এবং তাঁর আত্মজরাও হয়েছে এবং এখনও হচ্ছেন সেই একই উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে। অনুপযুক্ত পরিবেশের কারণে রাজাধিরাজ মহারাজ তিনি ভিখিরির মত জীবন যাপন করেছেন নিজের দেশে, মাতৃভূমিতে। বর্তমান পরিবেশের পক্ষে ঠাকুরকে বোঝা সম্ভব নয়, সম্ভব নয় বৃত্তি প্রবৃত্তিতে ডুবে থাকা ও রিপু তাড়িত এবং তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা সীমাহীন ভাঙাচোরা মানুষের পক্ষে আর সাধারণ মানুষের কথা না হয় বাদই দিলাম। তাই যে বাণী মানুষকে ইষ্টকে গ্রহণ করা ও মেনে চলার সহজ বোধ গজাতে সাহায্য করে আপাতত তাই-ই না হয় পোষ্ট হ'ক ফেসবুকে, আলোচনা হ'ক সহজবোধ্য বিষয়গুলি নিয়ে বাকিগুলি সময়োপযোগী পরিবেশন করা যেতে পারে। জয়গুরু।
(লেখা ৬ই মার্চ'২০১৮)

আত্মকথন!

নিজেকে নিজে প্রশ্ন করি, আচ্ছা আমি ঠিক আছি তো?

রাজনীতি ক্ষেত্রে, ধর্ম ক্ষেত্রে, ক্রীড়া ক্ষেত্রে, শিক্ষা ক্ষেত্রে ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সবাই সবাই-এর দিকে আঙ্গুল তুলছি! এমনকি এই সৎসঙ্গ ক্ষেত্রেও সৎসঙ্গীরাও সবাই সবাইকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছি। নিজে কাঁচের ঘরে ব'সে অন্যের কাঁচের ঘরে ঢিল ছুঁড়লে কি হ'তে পারে তা সহজেই অনুমেয়। ঠিক তেমনি নিজেকে কোন কাঠগড়ায় দাঁড় করায় তার ঠিক নেই অন্যকে তাদের কৃত কর্মের জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছি!

অন্যদের ছেড়ে দিয়ে বিশেষ ক'রে একজন সৎসঙ্গী হিসেবে নিজের ক্ষেত্রে যদি এই আলোচনাকে তুলে ধরি তাহ'লে নিজেকে নিজের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে, ঠাকুর কি তাই চেয়েছিলেন নাকি? ঠাকুর কি তাঁর সমগ্র জীবনে যে হাজার হাজার বাণী দিয়েছেন সেই বাণীর কোথাও, বিভিন্ন গ্রন্থে অজস্র বিভিন্ন বিষয়ের যে কথোপকথন ধরা আছে সেই কথোপকথনের কোথাও আছে নাকি এমন কোনও দৃষ্টান্ত যা কিনা চালুনির স্বভাব আয়ত্তের কথা বলে? নিজেকে নিজে প্রশ্ন করি,

প্রকাশ! যখন তুমি ঠাকুরের কথা বলো তখন নিজে তুমি তা আচরণ করো তো?
যখন তুমি গুরুভাইবোনেদের সংস্পর্শে আসো তখন তুমি নিজে শরীরে-মনে-চরিত্রে, কথায়-আচরণে পরিশুদ্ধ থাকো তো?
যখন তুমি ঠাকুরের কথা বলো তখন তা ঠাকুরের কথা বলা হয় তো নাকি নিজের কথা বলা হয়?
যখন তুমি ঠাকুরের কথা বলো তখন বলাগুলি ঠাকুরের বলা তা স্বীকার করো তো?
যখন তুমি মন্দিরে, জনসভায়, সৎসঙ্গে বিচরণ করো তখন তোমার মুখের ভাষা, তোমার বডি ল্যাংগুয়েজ বিনয় সরলতা ও শালীনতার মোড়কে আবৃত থাকে তো?
যখন তুমি মঞ্চে ঠাকুরের কথা বলো তখন কথা শেষে নীচে নেমে আসার পরে মঞ্চ থেকে, মানুষ থেকে দূরে সরে যাও তো? নাকি বাহবা পাওয়ার আশায় মঞ্চের আশেপাশে মানুষের মাঝে ঘুরঘুর করো? নিজেই ভক্তমণ্ডলী মাঝে ঠাকুর সেজে বসো? কে কতটা তোমার কথায় অনুপ্রাণিত হ'য়ে ঠাকুর ভাবে ভাবিত হ'লো, ঠাকুরকে গ্রহণ করার জন্য উদ্বুদ্ধ হ'লো সেটা না দেখে, তোয়াক্কা না ক'রে নিজেই প্রণাম, প্রণামী, প্রসাদ (p3) পাওয়ার লোভে ঠাকুর সেজে বসো না তো?
ঠাকুরের কথা বলার আগে ঠাকুরের জীবন, ঠাকুরের দর্শন, ঠাকুরের মিশন, ঠাকুরের গ্রন্থ ইত্যাদি জেনে, পড়ে, বুঝে, উপলব্ধি ক'রে বলো তো? অন্তত জানার, পড়ার, বোঝার, উপলব্ধি করার চেষ্টা করো তো?
ঠাকুরের বক্তা সাজো না ভক্ত হও কোনটা?

যখন তুমি কাউকে কথা দাও কথা রাখো তো?

যখন তোমার পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনও অসহায় মানুষকে তার সমস্যার সাহায্যের জন্য তোমার কাছে পাঠানো হয় ঠাকুরবাড়ী থেকে অর্থাৎ আচার্যদেব বা বাবাইদাদা বা অন্য কোনও পূজনীয় দাদাদের মাধ্যমে তখন সেই অসহায় ব্যক্তির দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দাও তো? নাকি বিরক্ত হও? নাকি নামমাত্র বুড়ি ছোঁয়া দায়ছাড়া গোছের দায়িত্ব পালন ক'রে ঘাড় থেকে বোঝা নাবিয়ে তাকে মাঝ রাস্তায় ছেড়ে দাও? পরে খবর নাও তার? মনিটরিং করো? আর তারপরে মঞ্চে গলা ফাটাও ঠাকুরের নামে জ্ঞানের ঘন্টি বাজিয়ে দরদী কন্ঠে?
যখন তুমি ঠাকুরের কাজে নিমগ্ন থাকো তখন তুমি ছোটোকে বড় আর বড়কে আরো বড় করো তো?

বড়কে ছোটো আর ছোটোকে আরও ছোটো ক'রে লাথি মেরে পাতালে ঢুকিয়ে দাও না তো?
যখন তুমি ঠাকুরের সাদা পোশাকের আবরণে নিজেকে ঢেকে রাখো তখন শরীরে-মনে, হাবেভাবে গুরুভাইবোনেদের কাছে ঠাকুর সেজে যাও না তো?
যখন তুমি তোমার চারপাশে মানুষের মাঝে ঠাকুর জগতে থাকো তখন ঠাকুর সম্পর্কে যা বলো তা আচরণে নিজে করো তো? নাকি তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে মিথ্যে আমেজের সুরা পান করো?
যখন তুমি কোন লেখা লেখো তখন লেখার মধ্যে ঠাকুরের বলা, ঠাকুরের মত, ঠাকুরের কথা, ঠাকুরের ভাবকে ঠাকুরের ব'লে লেখার মধ্যে স্বীকৃতি দাও তো?

লেখার মধ্যে অন্যের লেখা, অন্যের বক্তব্যকে তুলে ধরার সময় লেখার মধ্যে ইনভার্টেড কমা দাও তো? নিজেকে মিথ্যে পন্ডিত সাজাবার ঘৃণ্য প্রয়াসে চালাকির আশ্রয় নাও না তো? লেখকের নাম তুলে ধরোতো? তুলে ধরলেও তুলে ধরার মধ্যে ইচ্ছাকৃত কৌশলী পদক্ষেপ থাকে না তো যাতে পাঠক বুঝতে না পারে? ব্যাপারটা সাপও মরলো লাঠিও ভাংলো না এমন হয় না তো?

তোমার আচরণে, তোমার কথায় কেউ ব্যথা বা অপমানিত বোধ করে না তো?
যখন তুমি ঠাকুরের কাজ নিয়ে থাকো তুমি নিজের হাতে কাজ ক'রে অন্যকে করাও তো? নাকি জমিদার সেজে শুধু হুকুম চালাও?
মন্দিরের হর্তাকর্তা সেজে মন্দিরকে পৈতৃক সম্পত্তি ভেবে সাধারণ গুরুভাইবোনেদের উপর ছড়ি ঘোরাও না তো?

কেউ তোমার জন্য কিছু করলে তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকো তো? ষোলো আনি ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করো তো? অকৃতজ্ঞ বেঈমান নেমকহারাম হও না তো?

প্রকাশ! তুমি সৎসঙ্গী! সৎসঙ্গ ও সৎসঙ্গী কথার মানে জানো তো? আর তা নিজের ওপর, নিজের আচরণে, কথায় বার্তায় প্রয়োগ করো তো? মিথ্যে ক্ষমতা দখলের লোভে অন্য সৎসঙ্গীর সঙ্গে অসৎ সঙ্গীর মত আচরণ করো না তো? নিজে ইষ্টভৃতি করো তো? অন্যকে করতে উৎসাহিত করো তো? অন্যে করছে কিনা তা খোঁজ নাও তো? নিজে নামধ্যান করোতো? অন্যকে করতে বলো তো? পাড়াপ্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখো তো? নিজে কোনও অসৎ কাজ করো না তো? অসৎ কথা বলো না তো? অসৎ কাজে প্রশ্রয় বা উৎসাহ দাও না তো? নেগেটিভ চিন্তা, নেগেটিভ আলোচনাকে প্রশ্রয় বা উৎসাহ দাও না তো? কাউকে ঠকাও না তো? কারও বিরুদ্ধে কুৎসা করো না তো? কাউকে গালি দাও না তো? তোমার কারণে কারও সামান্যতম ক্ষতি হয় এমন কোনও পদক্ষেপ নাও না তো?

প্রকাশ! তুমি তোমার পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল তো? স্ত্রী-পুত্র-কন্যা, বাবা-মা, ভাইবোন পরিবারের সবার প্রতি সহানুভূতিশীল তো? সবার জন্য ঠাকুরের কাছে মঙ্গল কামনা করো তো? তোমার প্রতিবেশী, তোমার গুরুভাইবোন, তোমার বন্ধুবান্ধব, পরিচিত-অপরিচিত সবার প্রতি কিছু করতে পারো আর না পারো প্রয়োজনের সময় অন্তত সহানুভূতিটুকু দেখাও তো?

প্রকাশ! ঠাকুর ব্যথা পায় এমন কোনও কাজ, এমন কোনও আচরণ, এমন কোনও চিন্তা, এমন কোনও ভাবনা করো না তো? এমন কোনও কথা বলো না তো? এমন কোনও পদক্ষেপ নাও না তো? নিজে একশোভাগ ঠিক থেকে ঠাকুর বিরোধীদের প্রতি প্রয়োজনে কঠোর হও তো? কঠোর হ'লেও পুনরায় তাদের প্রতি প্রয়োজনে কোমল হ'তে দ্বিধা নেই তো?

শেষ কথা বলি প্রকাশ! ঠাকুরের কাজ করতে গিয়ে ঠাকুরের মন্দির, ঠাকুরের গাড়ি, ঠাকুরের সম্পত্তিতে ভোগ বিলাসিতায় ডুবে যাও না তো? ঠাকুরের টাকাপয়সা সংক্রান্ত বিষয়ে পরিচ্ছন্ন থাকো তো? স্বচ্ছতা মেইনটেন করো তো?
প্রকাশ! জীবন দু'দিনের! কাল সকাল কেমন যাবে কেউ জানে না! কিছুই নিয়ে যেতে পারবে না। খালি হাতে এসেছিলে খালি হাতেই ফিরে যেতে হবে সব পিছনে ফেলে রেখে তাই সাধু সাবধান! এই অমূল্য জীবন চলে গেলে আর দয়ালের কাজ করার সুযোগ পাবে না। আর আচার্যদেব শ্রীশ্রীদাদার নির্মম অপ্রিয় সত্য কথাটা মনে রেখো প্রকাশ!
মনে রেখোঃ "শেষের সেদিন ভয়ংকর! তোর খেয়াতে মাঝিই যে নেই শেষের সেদিন ভয়ংকর।"
( লেখা ৬ই মার্চ'২০২১)