Powered By Blogger

Friday, March 3, 2023

প্রবন্ধঃ নেতাজী ও বাঙালি!

ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান নেতাজীকে নিয়ে একটা লেখায় মন্তব্য করেছিলাম। মন্তব্য করেছিলাম নেতাজীর বেডরুমে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ফটো রাখা নিয়ে ছবি সহ একটা পোষ্টকে কেন্দ্র করে। সেই মন্তব্যকে ঘিরে শুরু হ'য়ে যায় অশ্লীল গালাগালি। 

মন্তব্য ছিল নিম্নরূপ:

নেতাজী সব বুঝেও শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে গুরুপদে বরণ ক'রে নিতে পারেননি। পারেননি নিজের পিতামাতার গুরুকে চিনতে। শ্রদ্ধা ভক্তি অবশ্যই তিনি করতেন ঠাকুরকে কিন্তু জীবনের দাঁড়া হিসেবে তাঁকে জীবনে গ্রহণ ক'রে উঠতে পারেননি, স্থান দিতে পারেননি জীবনের কেন্দ্রে। ঠাকুরের ফটো অবশ্যই রেখেছিলেন ঘরে কিন্তু হৃদ মাঝারে রেখে উঠতে পারেননি। নেতাজীর মত মানুষ যাঁর পিতামাতা ঠাকুরের দীক্ষিত ছিলেন তাঁর ঠাকুরকে প্রশ্নশূন্য ও দ্বিধাহীন চিত্তে জীবনের কেন্দ্রে বসাতে সময় হ'লো না এর থেকে দুর্ভাগ্য আর কি হ'তে পারে!? নেতাজী বিবেকানন্দের অনুগামী ছিলেন কিন্তু আমরা কোথাও পাই না তিনি রামকৃষ্ণের অনুগামী ছিলেন! তিনি তিন তিনবার ঠাকুর দর্শনে এসেছিলেন কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাঁকে চিনতে পারেননি। স্বাধীনতার উত্তাল হাওয়া তাঁকে মাতাল ক'রে ছুটিয়ে নিয়ে বেরিয়েছিলেন! তামাম দেশবাসীর দুর্ভাগ্য তিনি যদি ঠাকুরকে তাঁর পিতামাতার মত দ্বিধাহীন চিত্তে জীবনের কেন্দ্রে বসাতেন তাহ'লে দেশ আজ ল্যাংড়া হ'য়ে পঙ্গু হ'তো না! তিনি ঠাকুরের কাছে এলেন, ঠাকুরকে দেখলেন কিন্তু জানলেন, বুঝলেন কিনা জানি না কিন্তু একথা সত্য তিনি নিজের জীবনে ধরলেন না ঠাকুরকে, ঠাকুরের জীবন দর্শনকে! এই ফাঁক তাঁকে ফাঁকির ফাঁকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে আমাদের থেকে, ভারতবাসীর থেকে কোথায় কোন অন্ধকারে যে নিয়ে গিয়ে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি ক'রে দিয়ে গেল যা আজও আমাদের ব'য়ে নিয়ে বেড়াতে হচ্ছে!!!!!!!! ঠাকুরকে যদি তিনি গ্রহণ করতেন, জীবনের কেন্দ্রে বসাতেন, তাঁর নির্দেশ মত চলতেন, নিজেকে পরিচালিত করতেন তাহ'লে দেশ তথা বিশ্ব এক দেশ তথা বিশ্বনেতাকে পেত আর গোটা পৃথিবীতে নতুন যুগের সূচনা হ'তো যা আজ বি-রা-ট ক্ষতিতে পরিণত হ'লো!!!!! নেতাজীর মত মানুষেরা যদি ঠাকুরকে চিনতে না পারেন তাহলে তার ক্ষয়ক্ষতি তো পরবর্তী প্রজন্মকে বইতে হবে যা ব'য়ে চলেছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম!!!!!!
উপরের এই মন্তব্যকে ঘিরে শুরু হ'য়ে যায় জ্ঞানে, গরিমায়, বংশ মর্যাদায় অসামান্য গুণের অধিকারী এক শ্রেণীর বালখিল্য নেতাজী প্রেমীদের নেতাজীর প্রতি, নেতাজীর দেশপ্রেম ও দেশভক্তির প্রতি প্রেম-ভালোবাসার উজ্জ্বল নিদর্শন!!!!!!
সত্য বন্ধু! কি বিচিত্র এই বাঙালি জাত!! পৃথিবীতে একটা জাত আছে যারা একই সঙ্গে বিশ্বের দরবারে প্রশংসিত ও কলঙ্কিত!!! এই জাতের মানুষের মুখ দিয়ে, কলম দিয়ে বেরোয় "আমার সোনার বাংলা! আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়ি নদীটির তীরে এই বাংলায়, বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে চাই না" ইত্যাদি হীরে জহরত দিয়ে মোড়া সুগন্ধিতে ভরপুর মন মাতানো, প্রাণ জুড়ানো শব্দের মালা আবার এই বিচিত্র জাতের এক শ্রেণীর মানুষের মুখ দিয়ে, কলম দিয়ে বেরোয় বাংলা, ভারত তথা বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় বাঙালী শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের উদ্দেশ্যে উচ্চারিত "ল্যাওড়া, বাড়া, পোঁদে পুরুষোত্তম, বাচ্চা পয়দা, মাল, গাঁজাখোর ইত্যাদি ইত্যাদি দিয়ে মোড়ানো বাছা বাছা দুর্গন্ধযুক্ত বাংলা শব্দের সম্ভার এবং কটূক্তিতে ভরা নানা নোংরা কথার ফুলঝুরি!!!!!!!! এরা সবাই বাঙালী!!!!!!! আবার এদের মত শরীরে মনে আত্মায় নোংরা ভাষার অধিকারী এবং সবজান্তা বাংলা ও বাঙালির কলঙ্কিত বিচিত্র বাঙালি জীবেরা নেতাজীর মত বাংলা তথা ভারত রত্নের মূল্যায়ণ করে!!!!!!! এই অদ্ভুত বাঙালি জাতটার মানুষেরাই আজকের গিরগিটি বাঙালির মত সেদিনও বাংলার তথা ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান নেতাজীকে বলাৎকার ক'রে ক'রে দেশের ভিতরে ও বাইরে জেরবার করেছিল আর সুযোগ ক'রে দিয়েছিল তাঁর শত্রুদের!!!!! এই বাংলার বুকে ভারত তথা বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, দেশবন্ধু, রামমোহন, মধুসূদন, বঙ্কিমচন্দ্র, বিবেকানন্দ ইত্যাদি ইত্যাদিদের মত মহান মহান বাঙালি আত্মাদের কম হেনস্থা হ'তে হয়নি এই অদ্ভুত বাঙালি জাতটার হাতে, এঁদের বলাৎকার ক'রে ক'রে পেছন মেরে শেষ ক'রে দিয়েছিল এই বালখিল্য অদ্ভুত বাঙালি জাতটা, এদের হাতে কম অপমানিত ও লাঞ্ছিত হ'তে হয়নি ইনাদের! গালাগালি, অশ্লীল-কুশ্লীল কাঁচা কাঁচা মুখরোচক ভাষায় ক্ষতবিক্ষত হ'তে হয়েছে এই বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান ঈশ্বরের জীবন্ত রূপ মহাপ্রভু ও রামকৃষ্ণকে!!!!! তাই বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় পুরুষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে বলাৎকার করবে এ আর এমন কি বিস্ময়ের ব্যাপার! এই বলাৎকারের রক্ত তো বংশপরম্পরায় ব'য়ে চলেছে এদের রক্তে! সেই মহান বাঙালির মহান ট্র্যাডিশন সমানে ব'য়ে চলছে আজও আর যাবেও আগামীতে ধ্বংসের শেষ দিন পর্যন্ত। এদের ধারণা এরা সব বোঝে, সব জানে অন্যেরা সব চার অক্ষর। এদের মুখ দিয়ে দুর্গন্ধযুক্ত গালাগালি বের হ'তে বিন্দুমাত্র সময় লাগে না, দ্বিধাবোধ হয় না। এরা ভাবে এরা অশ্লীল ভাষা প্রয়োগের একচেটিয়া এজেন্সি নিয়ে নিয়েছে আর কেউ গালাগালি দিতে পারে না বা জানে না। ওই পোস্টে অনেক মন্তব্যকারী ছিল যারা ইচ্ছে করলেই প্রত্যুত্তরে অশ্লীল-কুশ্লীল ভাষার বন্যা ছুটিয়ে দিতে পারে কিন্তু দেয় না! দেয়নি বা দেয়না এটা তাদের গুরু শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের দেওয়া পবিত্র সুসংস্কার। আর এই পবিত্র সুসংস্কারকে এরা দুর্বলতা ভাবে। এরা এইসমস্ত সুসংস্কারে সংস্কৃত পবিত্র আত্মাদের মুখোমুখি হয়নি তাই জানে না এদের আসল রূপ! আর এদের মত নিকৃষ্টতম ঘৃণ্য আত্মারাই আবার নেতাজীর মত মহান আত্মাদের হ'য়ে ওকালতি করে!!!!!!!!! সত্য বাঙালি! কি বিচিত্র এই জাত!! গোটা ভারত তথা বিশ্বের মানুষরা এই অদ্ভুত জাতটাকে এই সমস্ত মানুষদের জন্য ঘৃণা করে, কটূক্তি করে, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে।
(লেখা ৪ই মার্চ'২০২০)

No comments:

Post a Comment