যাইহোক ধর্ম্ম প্রতিষ্ঠানে বা ধর্মীয় গুরুদের দ্বারা সাধারণ ভক্ত বিশেষত নারীদের ওপর যে ধরণের লজ্জা ও দুঃখজনক ঘটনা ঘটে চলেছে তাতে একটা কথা স্বভাবতই মনে আসে এই সমস্ত ভুক্তভোগী ভাঙাচোরা মানুষগুলির অতিরিক্ত সরলতা, আবেগ, বিশ্বাস, নির্ভরতা ইত্যাদি চারিত্রিক বিশেষত্ব এদের সর্ব্বনাশের মূল কারণ। এ প্রসঙ্গে The greatest phenomenon of the world Sri Sri Thakur Anukul Chandra-এর তাঁর ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলা কথাগুলি স্মরণীয়।
একবার এক ভক্ত ঠাকুরকে দর্শন ও প্রণাম করতে এসেছিলেন। সেই ভক্ত সঙ্গে নিয়ে আসা ব্যাগ সুটকেস ইত্যাদি বাইরে রেখে এসে যখন ঠাকুরকে প্রণাম করছিলেন তখন ঠাকুর সেই ভক্ত কখন এসেছেন, কোথায় উঠেছেন, কিছু খেয়েছেন কিনা, বিশ্রাম করেছেন কিনা ইত্যাদি খোঁজ নিলেন। এর উত্তরে সেই ভক্ত মানুষটি জানালেন যে তিনি এইমাত্র এসেছেন এবং এসেই প্রথমে তিনি ঠাকুর দর্শন ও প্রণাম করতে এসেছেন। যখনই কেউ বাইরে থেকে ঠাকুর দর্শন ও প্রণাম করতে আসতেন তখনি ঠাকুর প্রথমেই তাকে তার থাকা, খাওয়া, বিশ্রাম করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেন তারপর যখন তরতাজা হয়ে সামনে আসতেন তখন তার কোনও কথা বা সমস্যা থাকলে শুনতেন। ঠিক তেমনি ঐ আগুন্তুক ভক্তের ঐ কথা শুনে ঠাকুর তাকে প্রথমে ঘর ঠিক করে, স্নান করে, খাওয়া দাওয়া সেরে, বিশ্রাম করে তারপর তাঁর কাছে আসতে বললেন এবং সঙ্গে কোনও ব্যাগ সুটকেশ ইত্যাদি কিছু দেখতে না পেয়ে তাকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। এর উত্তরে সেই ভক্ত মানুষটি জানালেন যে গেটের বাইরে ব্যাগ সুটকেশ রেখে তবেই তিনি দর্শন ও প্রণাম করতে এসেছেন। একথা শুনে ঠাকুর অত্যন্ত বিচলিত হ’য়ে পড়লেন এবং তাকে শিগিগিরি সেইস্থানে ফিরে যেতে বললেন এবং তার সামগ্রী যথাস্থানে রেখে তারপর স্নান, খাওয়া ও বিশ্রাম শেষে আসতে বললেন। এই কথা শুনে সেই ভক্ত ঠাকুরকে বলেছিলেন যে তিনি তো ঠাকুরবাড়িতে এসেছেন, তার প্রিয়পরমের কাছে এসেছেন তাহলে তার ভয় কোথায়? এর উত্তরে ঠাকুর যা বলেছিলেন তা’ বাণী আকারে পৃথিবী জুড়ে সমস্ত ধর্ম্ম ও ঈশ্বর বিশ্বাসী সাধারণ সরল সিধেসাধা ভাঙাচোরা মানুষের কাছে চিরস্মরণীয়। পরমপ্রেমময় ঠাকুর চকিতে সোজা হ’য়ে বসে সেই ভক্ত মানুষটিকে সাবধান করে দিয়ে বললেন,
“মন্দিরের আশেপাশে কুৎসিত লোকের আনাগোনা বেশী, সাবধান থেকো তা’ থেকে”।
আজ শুধু মনে হয় এই কথা যদি ঐ বিদেশিনী বা অন্যান্য লাঞ্ছিত, অপমানিত, উৎপীড়িত, প্রতারিত, ধর্ষিত মানুষগুলোর কাছে পৌঁছে দেওয়া যেত তাহ’লে হয়তো বা তারা মানুষ, ধর্ন্ম, ঈশ্বর ও বাস্তব পরিস্থিতি-পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হ’ত এবং তথাকথিত ধর্ম্মীয় ও ঈশ্বরপ্রেমী ভন্ড কুৎসিত মানুষগুলোর হাত থেকে রক্ষা পেত।
(লেখা ৯ই মার্চ'২০১৫)
No comments:
Post a Comment