Powered By Blogger

Monday, February 27, 2023

কবিতা/গানঃ মাথা তোমার যায় ঘুরিয়ে।

মাথা তোমার যায় ঘুরিয়ে, আর, মন যায় হারিয়ে;
এসো বন্ধু আমার কাছে,
কেন ঘাবড়াও, কেন ঘাবড়ে যাও?
নাম করে আসান মুশকিল,
বদলে যায় মেহফিল!
সকাল-সন্ধ্যে নাম যে করে
তার জীবন হাসে খিলখিল।
শোন শোন শোন, আরে বাবা শোন
এই হৃদয়ে থাক তুই মন
তুই আমার-ই, আমারই সন্তান
কিসের এত ভয় ,
কাকে করিস ভয়?
তুই আমারই তনয়
কেন পাও ভয়?
তুই শক্তির তনয় !!

ভালবাসায় ঝগড়া ,
সংসার ভেঙ্গে টুকরা;
সব ঝামেলা দূর হ'ঠে যায়
নাম যখন হয় তাগড়া।
শোন শোন শোন, আরে বাবা শোন
এই চরণে রাখ তোর মন,
লাখ দুঃখের একটাই দাওয়াই
এসো না নাম গ্রহণ করি।
কেন ঘাবড়াও, কেন ঘাবড়ে যাও?

চাকর কিম্বা মালিক,
লিডার কিম্বা পাবলিক;
প্রভুর সামনে মাথা নোয়াও
কি রাজা কি সৈনিক!
শোন শোন শোন, আরে বাবা শোন
রাঙা চরণে থাক তুই মন;
লাখো দুঃখের একটাই দাওয়াই
এসো না গ্রহণ করি ।
কেন ঘাবড়াও, কেন ঘাবড়ে যাও?
মাথা তোমার যায় ঘুরিয়ে, আর মন যায় হারিয়ে;
এসো বন্ধু আমার কাছে, কেন ঘাবড়াও?
কেন ঘাবড়ে যাও?

(লেখা ২৮শে ফেব্রুয়ারী'২০১৩)
No photo description available.
All reaction

Friday, February 24, 2023

উপলব্ধি ২৪: মূল গ্রন্থ ও অনুবাদ এবং পাঠ।

বাংলায় ধর্মগ্রন্থ বা ঈশ্বরের বাণী পাঠ বা খুৎবা পড়া নিয়ে আহসানদার (Ahsan Ullah Abm) বক্তব্য ভালো লাগলো। "খুৎবা' একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ বকতৃতা করা বা ভাষণ দেওয়া। জুমার নামাজ ও দুই ঈদের নামাজে খুৎবা পড়া হয়। শুক্রবারে নামাজের আগে খুৎবা অর্থাৎ বক্তব্য পেশের সময় ঈশ্বরের প্রশংসা, এক এবং অদ্বিতীয়ের ঘোষণা, মহানবী হজরতের প্রতি দরুদ অর্থাৎ সম্মানজ্ঞাপক প্রণাম নিবেদন এবং উপস্থিত সাধারণ মানুষের প্রতি উপদেশ প্রদান করা হয়। সাধারণত খুৎবা আরবি ভাষায় প্রদান করা হয়। আহসানদার বক্তব্য ''খুৎবা বাংলায় পাঠ করা হ'ক'' অবশ্যই গ্রহণযোগ্য। তাঁর বক্তব্য এর ফলে অর্থাৎ "মাতৃভাষাতেই মানুষ সহজেই তাঁর স্রষ্টাকে বুঝতে পারবে এবং ধর্মের ব্যাখ্যা যার যার মাতৃভাষাতেই বেশী কার্যকর।"

আহসানদার বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়েই বলতে চাই, বাংলায় অবশ্যই খুৎবা করা যেতে পারে এবং সব ভাষাতেই সব মূল গ্রন্থ থেকে পাঠ কিম্বা উপদেশ প্রদান করা যেতে পারে এবং উচিত; যদি সেই মূল গ্রন্থের অনুবাদ যথাযথ হয়। দেখা গেছে যত কিছুর ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে অনুবাদকের অনুবাদের ত্রুটিতে, অনুবাদের ভুলে। যে কেউ অনুবাদকের ভুমিকা গ্রহণ ক'রে মহান হ'য়ে গেছে। অনুবাদকও আর এক অর্থে সাধক। মূল গ্রন্থ থাকে অবিকৃত। যে ভাষায় মূল গ্রন্থ লেখা হয় সেই ভাষা ভালো ক'রে জানা থাকলে, আর যদি থাকে অনুবাদকের অর্থাৎ সাধকের সাধনার উচ্চ স্তরে বিচরণ তাহ'লে সেই গ্রন্থের বিষয় ও বিষয়ের অন্তর্নিহিত অর্থ পরিষ্কার ক'রে ফুটে ওঠে অনুবাদকের মনশ্চক্ষে, বিষয়ের স্পষ্ট ছবি বোঝা যায়, ধরা পড়ে তা পাঠকের কাছে। অনুবাদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে মূল ভাষার উপর দখল না থাকার কারণে এবং মূল বক্তব্যের ভাবের গভীরে প্রবেশ করার যোগ্যতা ও দক্ষতা না থাকার কারণে সমস্ত মূল বিষয় যুগ যুগ ধ'রে অজ্ঞ অনুবাদকের বিজ্ঞ মানসিকতার কারণে ছাগল হ'য়ে গেছে ছাগলী আর ছাগলী হ'য়ে গেছে ছাগল। তাই দক্ষ ও যোগ্য অর্থাৎ যার ভাষার উপর অর্থাৎ যে ভাষায় লেখা হয়েছে সেই ভাষার উপর এবং যে ভাষায় অনুবাদ করা হবে সেই ভাষার উপর এবং যার লেখা তাঁর জীবন দর্শনের উপর এবং তাঁর অর্থাৎ মূল লেখকের জীবনের উপর নিবেদিত প্রাণ স্বরূপ যে সারেন্ডার সেই সারেণ্ডার না হ'লে অনুবাদকের জীবনের উপর, মনের মধ্যে সেই মূল ভাবের প্রভাব পড়বে না, সৃষ্টি হবে না সেই ভাব অনুযায়ী ভাব আর তার ফলে লেখায়, অনুবাদে বিচ্যুতি ও বিকৃতি আসবেই আসবে। যা হ'য়ে এসেছে হাজার হাজার বছর ধরে। তাই যত পারা যায় মূল গ্রন্থ পাঠ করার চেষ্টা করা উচিত, ভাষা শেখা উচিত, সাধনার স্তর পার হওয়া উচিত তারপর বৃহত্তর মানব সমাজের জন্য অর্থাৎ সাধারণ মানুষের জন্য, সাধারণ মানুষের জানার জন্য, পড়ার সুবিধার জন্য, বোঝার জন্য, শিক্ষার জন্য অনুবাদকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া উচিত নতুবা ফাঙ্কেন্সটাইনের জন্ম হবেই হবে।
এতটাই গুরুত্বপূর্ণ অনুবাদকের ভূমিকা। তারপর সেই নিখুঁত অনুবাদ পাঠ করা উচিত যে অনুবাদে ঈশ্বর স্বয়ং বিরাজ করেন। বিরাট, মহান এক দায়িত্ব বহন ক'রে নিয়ে চলে অনুবাদক সভ্যতার অগ্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার ও সচল রাখার জন্যে।
আহসানদার কথা সময়োপযোগী এবং বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।


(২৪শে ফেব্রুয়ারী'২০১৮)

কবিতাঃ দিব্যি বিন্দাস আমি আছি।

কে বলবে কোনটা ঠিক?
যে যেমন পারছে তেমন বলছে,
ব্যাখ্যা করছে যেমন তেমন
নিজের মত যেমন খুশী!
কে বলবে কোনটা বেঠিক?
যে যেমন পারছে তেমন করছে,
চলছে বলছে পাশ কাটিয়ে এদিকওদিক।
তোমার পাঠা তুমি কাটো
আমার পাঠা আমি
মাথায় কাটি পোঁদে কাটি
কার বাপের কি?
আমি স্বাধীন আমার সত্তা নিয়ে বাঁচি।
সবাই বলছে আমি দ্রষ্টাপুরুষ
কার চেয়ে কম আছি?
গীতা বাইবেল হাদিস কোরান
বেদ উপনিষদ যত পুরাণ
আমার মত আমি তাদের ব্যাখা ক'রে বাঁচি।
চৈতন্য চরিত, ত্রিপিটক, কথামৃত আরও সব
আছে গ্রন্থ যত তোমার আমার মাঝে
সব জেনেছি সব বুঝেছি
মরি না আমি আর লাজে।
বুক ফুলিয়ে ব্যাখ্যা করি মাথা উঁচিয়ে চলি
আমিই তিনি, আমিই উনি
আমার মাঝে প্রকট তিনি
ঘরের ভিতর ঘরের বাইরে
দেশ ছাড়িয়ে বিদেশ জুড়ে
একথা গলা ফাটিয়ে শিরা ফুলিয়ে বলি।
কে মানল আর না মানলো,
কে বুকে টানলো আর কে লাথি মারলো
তার ধার ধারি না আমি;
জনগন আমার চার অক্ষর
আর আমি শালা নিরক্ষর
ধর্ম বলো রাজনীতি বলো
দীক্ষা বলো আর শিক্ষা বলো
সব ঘটেতেই কাঠালি কলা, সবেতেই আমি আছি
আমি স্বাধীন আমার সত্ত্বা নিয়ে বাঁচি।
আমি খাই, আমি পড়ি, আমি নাচি, আমি বাঁচি
পরের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে দিব্যি আমি আছি।
শালা বিন্দাস আমি আছি।


(লেখা ২৪শে ফেব্রুয়ারি'২০২২)

Thursday, February 23, 2023

কবিতাঃ ঈশ্বর সত্য! ঈশ্বর সুন্দর!!

রাম বিনা আরাম হারাম হ্যায় ঠিক তেমনি
অনুকূল বিনা জীবন প্রতিকূলে ধায়।
তাই তো বলি, হে দয়াল!
তোমায় ঘিরে যত মনের ইচ্ছা দিও পূরণ ক'রে;
ইহকাল পরকাল থাকি যেন তোমার চরণ ধ'রে,
আর, চলি যেন তোমার চলন আমার চলন ক'রে।
সাধ আমার অনন্ত, সাধ আমার অসীম।
সাধ্য আমার অন্ত, সাধ্য আমার সসীম।
প্রভু তুমি রুধিরাতে ব'য়ে চলো রিমঝিম, রিমঝিম।।
মন বলে, প্রাণ বলে বারবার একই কথা,
ঈশ্বর একমাত্র সত্য, ঈশ্বর বিনা বাকী সব মিথ্যা।
ঈশ্বর একমাত্র আশ্রয়, ঈশ্বর ছাড়া সব নিরাশ্রয়।
ঈশ্বর একমাত্র আনন্দ, ঈশ্বর বিহীন বাকী সব বিষয়
সাময়িক অবশেষে নিরানন্দ।
ঈশ্বর একমাত্র সুন্দর, ঈশ্বর বাদ দিয়ে জীবন কুৎসিত।
ঈশ্বর নিখুঁত ও সঠিক, ঈশ্বরবিহীন বাকী সব যা কিছু
ভুল ও বেঠিক; জীবন জুড়ে শুধু খিটখিট, মারপিট।
আর ঈশ্বর মানে? রক্তমাংসসংকুল জীবন্ত ঈশ্বর।।

(লেখা ২৩শে ফেব্রুয়ারী'২০১৮)

কবিতাঃ শয়তানের হাসি।

প্রতারিত না হ'য়েও যদি মনগড়া কল্পনায় 
কাউকে প্রতারক ভেবে সুখ পাও 
সেই সুখ একদিন অসুখে পরিণত হ'য়ে 
জাহান্নামের আগুনে পুড়িয়ে মারবে 
একথা জেনো নিশ্চয়ই।
কারও মিষ্টি মিষ্টি কথায় প্রভাবিত হ'য়ে 
আপাত কঠিনকে ভুল ক'রে 
প্রতারক, অবিশ্বাসী ভেবে 
বন্ধুকে শয়তান আর মিষ্টি কথার শয়তানকে 
বন্ধু ভেবে নিজের সর্বনাশ ডেকে এনো না।
সাবধান হও বন্ধু! 
শয়তানের হাসি ভগবানের চেয়েও মিষ্টি, সুন্দর!
(লেখা ২৩শে ফেব্রুয়ারী'২০১৯)

কবিতাঃ সেই একাকীত্ব, সেই নিঃসঙ্গতা!

গভীর এক শূন্যতা যেন গ্রাস করছে ক্রমশঃ চারপাশ,
নেবে আসছে খাঁ খাঁ দুপুরের শ্মশান নিস্তব্ধতা!
অনেক দূর থেকে হাঁড়িচাচা পাখির কণ্ঠস্বর
নিস্তব্ধতা ভেঙে খানখান ক'রে ভেসে এলো
নিস্তব্ধতাকে আরও জমাট ক'রে দেবে বলে।
মনে হ'লো যেন ভাঙ্গা বুকের ভেতর থেকে
হাঁফ ধরা একাকিত্বের এক কণ্ঠস্বর
নিস্তব্ধতার বুকে ভেসে উঠে বলছে,
বন্ধু! তুমি ভালো আছো? আমি ভালো নেই।
তবু্ও অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে
গভীর নিঃসঙ্গতাকে সাথী ক'রে
কে যেন ব'লে উঠলোঃ সবাই আজ একা, নিঃসঙ্গ।
সবার খোঁজ নাও।
তাই তোমায় এই খাঁ খাঁ করা নিস্তব্ধ শ্মশান দুপুরে
ডেকে উঠে বলি, বন্ধু! তুমি ভালো আছো?
আমিও আজ একাকী তুমিও তাই।
কিন্তু একাকী হ'লেও সাথে আছে দয়াল!
তাই এই একাকিত্ব মাঝেও মনে হয়,
কে যেন আছে সাথে, পাশে!
এই নিঃসঙ্গ নিস্তব্ধ দীর্ঘ রাস্তা হেঁটে চলেছি একা
শুধু মাঝে মাঝে মনে হয়, কে যেন ব'লে ওঠেঃ
ডর কিস বাত কি? ম্যায় হু না।
আকেলা কৌন বোলা? হাম হ্যায় না।
একবুক দীর্ঘ শ্বাস টেনে নিয়ে আবার হেঁটে চলি
নিঃসঙ্গ আমি নিস্তব্ধ দুপুরে একেলা।
কিন্তু বন্ধু তুমি? তুমি ভালো আছো তো বন্ধু?
ভালো থেকো, সুখে-আনন্দে থেকো বন্ধু।
শুধু মাঝে মাঝে বিষাদে ভরা মন বলতে চায় তোমায়,
কি লাভ হ'লো বন্ধু সব ভেঙ্গে দিয়ে!? কি পেলে বন্ধু!?
দিন শেষে ভোরের সকালে পড়ন্ত বিকেলের
সেই বিষন্নতা, সেই একাকিত্ব ছাড়া!?
মনে পড়ে সেইসব পুরোনো দিনের কথা বন্ধু!?
সেই দল বেধে ইষ্ট ও ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠায় বেড়িয়ে পড়া?
মাঠঘাট পেরিয়ে আড্ডা জমিয়ে সবাই মিলে ধরা করা?
'মানুষ আপন টাকা পর' তত্ত্বে হ'য়ে মশগুল শুধু ছুটে চলা?
শুধু যেদিকে যাই, যেদিকেই তাকায় শুধু জীবনের হাতছানি!
আর আজ আবার 'টাকা আপন মানুষ পর' সেই চিরাচরিত
পুরোনো হাঁফধরা দমবন্ধকরা তত্ত্বের পথ ধরা, করা, বলা!
আর পরিশেষে দিনশেষে সেই একাকিত্ব,
বন্ধু সেই নিঃসঙ্গতা!!!! নিঃসঙ্গ মৃত্যুর হাতছানি!
কি লাভ হ'লো বন্ধু সব ভেঙ্গে দিয়ে!? কি পেলে বন্ধু!?


(লেখা ২৩শে ফেব্রুয়ারী'২০২২)

অন্তর্যামী ও সর্বজ্ঞ! (১)

"মন্দিরের আশেপাশে কুৎসিত লোকের আনাগোনা বেশী সাবধান থেকো তা থেকে।"---শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র।
এই কথাটা ঠাকুর তাঁর একজন ভক্ত শিষ্যকে উদ্দেশ্য ক'রে বলেছিলেন।
একদিন এক শিষ্য আশ্রমে এসে ঠাকুরকে প্রণাম করতে এসেছেন। ঠাকুরকে প্রণাম ক'রে উঠতেই ঠাকুর সেই শিষ্য কখন এসেছেন, কোথায় উঠেছেন, খেয়েছেন কিনা ইত্যাদি খোঁজ নিলেন। তার উত্তরে সেই শিষ্য ঠাকুরকে জানালেন যে সে এসেমাত্রই তাঁকে প্রণাম করতে এসেছেন। তখন ঠাকুর তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তার সঙ্গের ব্যাগ জিনিসপত্র ইত্যাদি কোথায়। সেই কথার উত্তরে তিনি জানালেন যে, সেই সমস্ত বাইরে রেখে প্রণাম করতে এসেছেন। তখন ঠাকুর সেই শিষ্যকে বলেছিলেন, শিগগিরই বাইরে গিয়ে জিনিসপত্র নিয়ে ঘরে গিয়ে রেখে স্নান, খাওয়া, বিশ্রাম ক'রে তারপরে আসতে। এই কথা শুনে ঠাকুরকে প্রণাম ক'রে সেই ভক্ত শিষ্য বাইরে বেড়িয়ে গেলেন।
সেদিন তার যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে ঠাকুর কেষ্টদাকে বলেছিলেন, "মন্দিরের আশেপাশে কুৎসিত লোকের আনাগোনা বেশী; সাবধান থেকো তা থেকে।"
এখন আমার নিজেকে নিজের প্রশ্নঃ কেন আমি এই কথা লিখলাম?

উত্তরঃ লিখলাম এইজন্য যে সেই ছোটবেলা থেকে এই দীর্ঘ ৬৭বছর বয়স পর্যন্ত সৎসঙ্গ জগতে যা দেখলাম তা ঠাকুরের এই বলার সঙ্গে কতটা গভীর নির্মম মিল তা মিলিয়ে নেবার জন্য। অভিজ্ঞতার কষ্টি পাথরে ঘষে দেখে নিতে চায় মন-হৃদয় ঠাকুর কতটা অন্তর্যামী, কতটা সর্বজ্ঞ।


প্রথমত বলি অন্তর্যামী যে কেউ হ'তে পারে। একাগ্রতার সঙ্গে ত্রিনয়নে মন স্থির ক'রে বিষয়বস্তুতে একটু ধ্যানস্থ হ'লেই এই ক্ষমতা অর্জন সম্ভব। আর কারও প্রতি বা কোনও কিছুর প্রতি ভালোবাসা অকৃত্রিম ও তীব্র হ'লেও সেই ভালোবাসার পাত্র বা বিষয় সম্পর্কে আগাম ধারণা করার ক্ষমতা অর্জন হয়। যেমন মায়ের সন্তানের প্রতি বা মানুষের প্রিয়জনের প্রতি। কিন্তু সর্বজ্ঞ জীবন্ত ঈশ্বর ব্যতিত কেউ হ'তে পারে না। তাই শুধু অন্তর্যামী বললে সৃষ্টিকর্তা শ্রীশ্রীঠাকুরকে ছোট করা হয়। সর্বজ্ঞ একমাত্র জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীরামচন্দ্র, শ্রীশ্রীকৃষ্ণ, শ্রীশ্রীবুদ্ধ, শ্রীশ্রীযীশু, শ্রীশ্রীমহম্মদ, শ্রীশ্রীমহাপ্রভু, শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ ও সর্বশেষ জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। এঁরাই হ'লেন একমাত্র সর্বজ্ঞ মানুষ পরমপিতা পুরুষোত্তম।
যাই হ'ক ঠাকুরের "মন্দিরের আশেপাশে..................সাবধান থেকো তা থেকে" এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমার অভিজ্ঞতা কি বলে দেখা যাক। প্রচুর অভিজ্ঞতার মধ্যে থেকে কয়েকটা অভিজ্ঞতা মাত্র তুলে ধরবো যাতে পাঠকের ধৈর্যচ্যুতি না ঘটে। অবশ্য এখন আর পাঠক নেই এবং থাকলেও পাঠকের সংখ্যা সীমিত ও রঙ্গীন গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ। তবুও সচেতন ইষ্টপ্রাণ ভক্তদের জন্য আমার এই লেখা।
মন্দিরের আশেপাশে নয় একেবারে মন্দিরের অন্দরমহলে বহাল তবিয়তে বিচরণ করা কয়েকজন চলনে বলনে আলো ঝলমলে ইষ্টপ্রাণ(?) সৎসঙ্গীর কুৎসিত আচরণের কথা তুলে ধরবো একে একে।
এক প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক সৎসঙ্গীর আচরণের কথা আগেও একবার বলেছিলাম আবার মনে করিয়ে দিই। একবার তাঁর চেম্বারে গিয়েছিলাম হার্টের চিকিৎসার জন্য স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে। সেখানে ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করছিলাম। কিছুক্ষণ পরে ডাক্তারবাবুর কম্পাউন্ডার এসে নাম লিখে নিয়ে যান। আর এর কিছুক্ষণ পর এসে আগাম নিয়ে যান ডাক্তারবাবুর ভিজিট। এইটাই সিস্টেম। কিন্তু আমার সঙ্গে ভাঙ্গানি না থাকায় আমি পাশের অপেক্ষারত পেশেন্টের সঙ্গে ৫০০ টাকার ভাঙ্গানি আছে কিনা এই বিষয়ে কথা বলছিলাম। আর সেই অপরাধে (?) রীতিমত ধমকে উঠলেন ঐ ব্যক্তি। তারপর ডাক্তারবাবুর ভিজিটের জন্য ৫০০ টাকা নিয়ে পর্দা সরিয়ে ওপাশে চলে গেলেন এবং একটু পরে এসে আমাকে ২০০ টাকা ফেরত দিলেন। তখন আমি তাকে আমাকে অপমান করার কারণ জিজ্ঞেস করলাম আর তার উত্তরে তিনি আমার সঙ্গে আরও রুঢ় ভাষায় অপমান করে চুপ ক'রে বসে থাকতে বললেন। আমি স্তম্বিত হ'য়ে যায় এই ঘটনায়! ডাক্তারবাবুর কম্পাউন্ডার হিন্দিতে আমাকে ধমকাচ্ছেন আর আমি তার প্রতিবাদে এই ধরণের আচরণের কারণ জিজ্ঞেস করছি। ঠিক সেইসময় ঘরের মাঝখানে পর্দা দিয়ে ভাগ করা ঘরের ওপাশ থেকে ডাক্তারবাবুর রাগান্বিত গলা শোনা গেল। গম্ভীর গলায় উত্তেজিত কন্ঠে পর্দা দিয়ে ঘেরা ঘর থেকেই কোনও কিছু না জেনে, না শুনে, না দেখেই তিনি তার সহযোগী কম্পাউন্ডারকে হিন্দিতে কড়া নির্দেশ দিলেন পেশেন্টকে টাকা ফেরত দিয়ে চেম্বার থেকে বের ক'রে দেবার। এবং সেই নির্দেশ মত ডাক্তারবাবুর সহযোগী পর্দা ঠেলে ভেতরে ঢুকে টাকা এনে আমার হাতে গুঁজে দিয়ে বেড়িয়ে যেতে বললেন। আমি এরকম অপ্রত্যাশিত ঘটনায় অবাক হ'য়ে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ধীরে ধীরে ঘরের বাইরে বেরিয়ে এলাম। চোখ ভ'রে গেল জলে। এই বয়সে অকারণ এরকম অপমান তাও ডাক্তারবাবুর কাছ থেকে! এর চেয়েও যা আমাকে স্তম্বিত করেছিল তা হ'লো ডাক্তারবাবু একজন সৎসঙ্গী! একজন ঋত্বিক!! আচার্যদেবের চিকিৎসা করেন!!! সৎসঙ্গ মেডিকেল কনফারেন্সে জীবনে সুস্থ ও নীরোগ থাকার জন্য ঠাকুর নির্দেশিত পথে চলার আবেদন করে!!!! আর, নামধ্যান, প্রার্থনা, ইষ্টভৃতি ও মানুষকে ভালোবাসার যে প্রেস্ক্রিপশান ঠাকুর দিয়েছেন সেই প্রেস্ক্রিপশান নিখুঁতভাবে ফলো করার কথা বলেন!!!!! এমন অমানবিক আচরণ কোনও ডাক্তার করেছে ব'লে আমার জানা নেই। কোনও পেশেন্টকে চেম্বার থেকে অকারণ অপমান ক'রে বের ক'রে দেবার ঘৃণ্য ঘটনার বিচার নিজের হাতে নেবার শিক্ষা ঠাকুর আমাদের দেননি তাই নিজেকে সংযত করার শক্তি অর্জন করেছিলাম আর ছেড়ে দিয়েছিলাম ঠাকুরের ওপর বিচারের ভার; সঙ্গে ঠাকুরের কাছ থেকে শেখা ঠাকুরের ওপর বিচারের ভার ছেড়ে দেবার সঙ্গে সঙ্গে তার জন্য মঙ্গল প্রার্থনা করেছিলাম ঠাকুরের কাছে।
এই ঘটনায় মনে পড়ে যায় ঠাকুরের উপরে উল্লেখিত
"মন্দিরের আশেপাশে........................সাবধান থেকো তা থেকে" বাণীর সত্যতার কথা। অন্তর্যামী ও সর্বজ্ঞ-তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই ঘটনা! আরও মনে পড়ে ঠাকুরের বাণী, "মুখেতে আছে, ব্যবহারে নাই সেই শিক্ষার মুখে ছাই"।
(লেখা ২৩শে ফেব্রুয়ারী'২০২১)
ক্রমশঃ অন্তর্যামী ও সর্বজ্ঞ! (২)

উপলব্ধিঃ ............সোনার দিন, শুভ সকাল!

কাশ্মীরের পুলওয়ামার সন্ত্রাসবাদী হামলার পর গোটা দেশ ফুঁসলেও নোংরা রাজনৈতিক চাপানোতরের নোংরা খেলার সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে দেশ জুড়ে, চলেছে ৭০বছর ধ'রে! চলেছে বিরামহীন! সেনাদের ওপর জঙ্গি আক্রমণ কাশ্মীরে আজ আর নতুন কিছু নয়। নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে সেনাদের ওপর পাথরবৃষ্টি! কাশ্মীরে সেনা যখন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে তখন সেনাদের হাত ধ'রে টানা, ধাক্কা মারা, পিঠে চাঁটি মারা, দৌড় করানো ইত্যাদির ভিডিও দেখে গোটা দেশ আশ্চর্যান্বিত!

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এতে আশ্চর্যের কি আছে? এটাই তো স্বাভাবিক। পাড়ে এসে তরী ডুবে যাবার মত যে দেশ রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে, আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে, প্রাণত্যাগের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতাকে তালুবন্দী ক'রে ফেলেছিল ঠিক সেই মুহূর্তে ব্রিটিশের কাছ থেকে ভিক্ষা হিসাবে স্বাধীনতাকে গ্রহণ করার সময়েই বিশ্ব জুড়ে এটাই সবাই জেনে গিয়েছিল যে ভারত নামে একটা পোলিও আক্রান্ত দেশের জন্ম হ'লো যে দেশের কাছে দেশের প্রথম সরকার আজাদ হিন্দ সরকারের কোনও গ্রহণযোগ্যতা ও মান্যতা নেই এবং নেই ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেতাজি সুভাষচন্দ্রের কোনও ঠাঁই দেশের নেতৃত্বে! একটা ভিক্ষা হিসাবে পাওয়া একটা পোলিও আক্রান্ত দেশের সেনাদের ভাগ্যে এর থেকে আর কি বেশি সম্মান জুটতে পারে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্রিটিশ দ্বারা তৈরি দেশের বিতর্কিত অংশ কাশ্মীরে!? ৭০ বছরের উপর একটা দেশের নেতৃত্ব খোঁড়া ঘোড়ার মত ছুটে চলেছে দেশজুড়ে! আজ পর্যন্ত কোনও নেতা কেন পারলো না সিনা টানটান ক'রে দাঁড়িয়ে সত্যের মুখোমুখি হ'তে!? কেন ভারত পারলো না আন্তর্জাতিক শক্তিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রণার পাশে দাঁড় করাতে!? কেন? কেন দেশের মধ্যে কোনও না কোনও দেশের লবীর লবিবাজি আর কথাবাজি চলে আসছে ৭০বছর ধ'রে!! এর উত্তর কে দেবে? দেশের স্বার্থে কেউ দেবে কি? কবে আসবে সেই সোনার দিন, শুভ সকাল কেউ জানে না!!!!!!!!!


(লেখা ২৩শে ফেব্রুয়ারী'২০১৯)

উপলব্ধিঃ স্মৃতির মালা!

তখন সবে স্কুলের গন্ডি পার হ'য়ে কলেজ জীবনে পা রেখেছি। সাল সম্ভবত ১৯৭১। টগবগে টাটকা যৌবন! প্রতিদিনের ভয়ঙ্কর খবর রেডিওতে শুনে, কাগজে প'ড়ে প্রচন্ড ঘৃণায় কুঁকড়ে যাচ্ছি! প্রতিদিন চিৎকার ক'রে আকাশের দিকে দু'হাত তুলে বলছি, হে ঈশ্বর! আমরা মানুষ!? দেশজুড়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় তীব্র থেকে তীব্রতর হ'য়ে উঠছে। ইন্দিরা সরকারের কাছে দাবি উঠছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর প্রত্যাঘাতের। সংসদ তোলপাড়, বিধানসভায় ঝড়। পথেঘাটে প্রতিবাদের, প্রতিশোধের মিছিল মিটিং। বাংলাদেশে পাকিস্তানের নারকীয় বর্বরতার ঘটনা প্রকট হ'য়ে উঠেছিল বাংলাদেশের মায়েদের উপরে বীভৎস, নারকীয়, দানবীয় বিকৃত অত্যাচার! যে অত্যাচারের নমুনায় বনের হিংস্র পশুরা লজ্জা পেয়ে বনের গভীরে মুখ লুকিয়েছিল! সেইসময় 'জয় বাংলা' ব'লে একটা সিনেমা বেরিয়েছিল। সিনেমায় নারীদের উপর পাক সেনাদের ভয়ঙ্কর নৃশংসতা এখন এই ১৯৭১ থেকে ২০১৯ অর্থ্যাৎ প্রায় ৪৮ বছর পরেও চোখের সামনে ভেসে ওঠে মনে পড়লেই!!! সেদিন সেই যৌবনে একটা কথা বুঝতে পেরেছিলাম? যা আজও এত বছর পরেও এতটুকু পাল্টায়নি! তা হ'লো 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' যার ট্র্যাডিশন আজও হ'য়ে চলেছে সমানে!!!! পুলওয়ামার ঘটনাও সেই একই বার্তা দেয়----- 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা'! সেদিনও ছিল বাংলাদেশের উপর, বাংলাদেশের মায়েদের উপর অত্যাচার করা অত্যাচারী দরিন্দাদের পাশে মানবতার পূজারীরা, যেমন আজও আছে!!!! আবার দেখানো হ'ক সেই সিনেমা 'জয়বাংলা', ফিরে আসুক সেদিনের দিনগুলিতে প্রকাশিত ভয়াবহ নরকের দৃশ্য সম্বলিত পত্রিকাগুলো, পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের অত্যাচারের ছবিগুলি! হে আমজনতা! পুরোনো সেই দিনের কথা ভুলবি কিরে হায়! বারবার ফিরে আসুক সেই চোখে দেখতে না পারা লজ্জাজনক, দুঃখজনক, যন্ত্রণাময় অত্যাচারের দৃশ্যগুলো আজকের যুবসমাজের কাছে। তারা দেখুক, জানুক, বুঝুক পাকিস্তানের সেইদিনের বিষাক্ত রক্তের ধারা ব'য়ে চলেছে আজও সমান তালে!। তাই বাংলাদেশের নাম হওয়া উচিত ছিল 'ইজ্জতস্থান!!!!!! কিন্তু কেউ আজ আর অতীতকে মনেও রাখে না। তাই যারা মারা যায়, অত্যাচারিত হয়, অপমানিত হয়, লাঞ্চিত হয়, তীব্র ইজ্জৎ লুন্ঠিত হয় যাদের তাদের যন্ত্রণার ধার ধারে না কেউ, সবাই ব্যস্ত মানবতা, শান্তি ও উদারতার পতাকা ওড়াতে!

ভাঁড় মে যায় নারী! শালা ভাঁড়ে খাও ফেলে দাও!
চতুর্দিকে দরিন্দাদের পক্ষে মানবতার পতাকা ওড়াও।
হে জওয়ান! জন্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা কবে!!!!!
এ অমৃত কথা বোকা কবে বোধগম্য হবে!? হ!হ!হ!!!
তাই মন কেঁদে উঠে গেয়ে ওঠে,
কেউ কারও নয় বন্ধু! কেউ কারও তো নয়!
এ ভবে তুমি এলে একা যাবে একা ভাই!
কেউ কারও নয় বন্ধু! কেউ কারও তো নয়!
ভাই বলো, বন্ধু বলো, ঘাত প্রতিঘাত
এ ভবেতে তুমি একা সাথী প্রাণনাথ!
মাতা বলো, পিতা বলো, স্বামী স্ত্রী পুত্র কন্যা
পরমপিতা চললে বিনা কেউ কারও তো না!
ক্রমশঃ

(লেখা ২৩শে ফেব্রুয়ারী'২০১৯)

উপলব্ধি ২৪ঃ কালীয় দমন!

ঈশ্বর হ'লেন ভালোবাসার সমুদ্র আর সেই সমুদ্র হ'লেন ঈশ্বরের মূর্ত রূপ রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ ও সর্বশেষ শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। ঈশ্বরের মূর্ত রূপ সেই ভালোবাসার সমুদ্রে যে ডুব দিয়েছে তার সর্বাঙ্গে লেগেছে ভালোবাসার রেণু। সে আর ভালো না বেসে পারে না কাউকে। সবাইকে সে ভালোবাসে নইলে যে তাঁকে ভালোবাসা মিথ্যে হ'য়ে যায়। অন্যকে ভালোবাসতে পারে না, শ্রদ্ধা, সম্মান করতে পারে না সে ভালোবাসা মিথ্যে ভালোবাসা, কপট ভালোবাসা। সে ভালোবাসার মধ্যে আছে ধান্ধাবাজি আর আত্মপ্রতিষ্ঠার ভয়ঙ্কর চুলকানি। যে ঐ ভালোবাসার মূর্ত রূপের মধ্যে ডুব দিয়েছে অর্থাৎ ঐ সমুদ্রে অবগাহন স্নান করেছে সে ভালোবাসার রসে এমন টইটম্বুর হ'য়ে থাকে যে রসগোল্লার মত নরম তুলতুলে ও মিষ্টিতে ভরপুর হ'য়ে যায়। যতই কঠিন কঠোর নিন্দা, সমালোচনা, অপমান, অপযশ ইত্যাদির আঘাত আসুক না কেন ভালোবাসার রসে টইটম্বুর মনে, হৃদয়ে কিছুতেই তার ধাক্কা এসে পড়ে না, পড়লেও সামান্য টোলও খায় না; ব্লটিং পেপারের মত সব শুষে নেয়। ভালোবাসাময় মানুষ যেমন নরম মনের হয় ঠিক তেমনি হয় ভয়ঙ্কর কঠোর এবং সেই কঠোরতা প্রয়োজনের সময় দ্বিপ্রাহরিক প্রখর সূর্যের তেজ নিয়ে আছড়ে পড়ে প্রতিপক্ষের উপর আর সেই পড়াটাও হয় তারই মঙ্গলের জন্যে। ভালোবাসাকে যারা দুর্বলতা মনে ক'রে ভালোবাসাময় মানুষকে উপেক্ষা করে, তাচ্ছিল্য করে, করে লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, অপমান তার পরিণতি হয় ভয়ঙ্কর দুঃখজনক, কষ্টময়। ঈশ্বরকে ভালোবাসি, ঈশ্বরের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছি, ঈশ্বরের মূর্ত রূপ রক্তমাংসসংকুল গুরুরুপী জীবন্ত ঈশ্বরের নামে জয়ধ্বনি দিই জয়গুরু ব'লে অথচ প্রতিমুহূর্তে আমার আচরণ, আমার স্বভাব, আমার কথাবার্তা, আমার ভাষা, আমার ব্যবহার, আমার চরিত্র, গুরুভাইয়ের সঙ্গে গুরুভাইয়ের আচরণ, এককথায় আমার জীবন আমার গুরুরুপী জীবন্ত ঈশ্বরের পরাজয়ের কারণ হ'য়ে উঠছে সেদিকে নজর দিই না, নজর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করি না, আমল দিই না, গুরুত্ব দিই না, গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করি না অথচ আমি তাঁর পরমভক্ত, ঈশ্বরের দাস, ঈশ্বরকে আমি খুব খুব ভালোবাসি!!!!!!!!!

তাহ'লে আমি কি ঈশ্বরের মূর্ত রূপ ভালোবাসার সমুদ্রে অবগাহনরত কালীয় নাগ!? যদি তাই হয় তাহ'লে কালীয় দমন অনিবার্য।
সাধু সাবধান।
(২৩শে ফেব্রুয়ারি' ২০১৮)

উপলব্ধি ২৩ঃ বাসযোগ্য বিশ্ব ও সুকান্ত/পথ কোথায়?

সকালে ঘুম ভেঙে বাগানে এসে দাঁড়িয়েছি। ভোরের ঠান্ডা হাওয়া চোখেমুখে তাঁর আদর মাখানো হাত বুলিয়ে দিচ্ছে যেন! গায়ে পাতলা একটা চাদর জড়িয়ে উপভোগ করছি ভোরের আকাশ, ভোরের বাতাস। চারদিক নিস্তব্ধ, চুপচাপ। খুব ভালো লাগে নীরবতা। কোথাও কোনও শব্দের উচ্ছৃঙ্খলতা নেই এই ভোরে। একটা মোটা বিড়াল মটকা মেরে পড়ে রয়েছে পাঁচিলের উপরে। একজন দু'জন পথচারী চলে গেল পাশের রাস্তা দিয়ে। একটু পরেই নিস্তব্ধতা খানখান হ'য়ে ভেঙে ছড়িয়ে পড়বে চারপাশ। তাই ঈশ্বরের উপস্থিতি উপভোগ ক'রে নিতে চাই সাত তাড়াতাড়ি। কিন্তু ছন্দপতন ঘটলো বাড়ীর পাশে পার্কের দিকে তাকিয়ে দেখলাম এই ভোরে একটা বাচ্চা ছেলে পার্কে এসেছে বস্তা কাঁধে ভোরভোর প্লাস্টিক কুড়িয়ে নিতে। ছেলেটির দিকে তাকিয়ে মনে হ'ল এত ভোরে কেন? পরমুহূর্তে মনে হ'ল প্রতিযোগিতার বাজার এই প্লাস্টিক, কাগজ কুড়ুনিদের মধ্যেও। তাই ছেলেটি এই ভোরে যখন আর সবার বাড়ীর বাচ্চারা ঘুমোচ্ছে নিশ্চিন্তে বিছানায় মায়ের কোলে কিম্বা চাদরে তলায় তখন এই বাচ্চা ছেলেটি বেরিয়ে পড়েছে প্রতিযোগিতার বাজারে এগিয়ে থাকবে ব'লে। অসহায় আমি এই ভোরে ছেলেটির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে হ'ল চোখের কোনাটা ভিজে গেল। তখনি ভেসে উঠলো সুকান্তের মুখ আর মনে পড়লো কবিতার লাইন দু'টি।
"এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি—
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গিকার।"----সুকান্ত।
কিন্তু কি ভাবে? কোন পদ্ধতিতে? কি সেই ফর্মুলা, যে ফর্মুলায় এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করা যাবে? নব জাতকের কাছে সুকান্তের মত আমিও দৃঢ় অঙ্গীকার ক'রে যেতে চাই, বাকী যতদিন আর আছি এই পৃথিবীতে এ বিশ্বকে আগামী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য ক'রে যাব আমি। কিন্তু প্রশ্ন জাগে মনে সেই বাসযোগ্য ক'রে যাওয়ার নীল নকশা কি সুকান্ত দিয়ে গেছিলেন? কেউ জানেন কি? যদি জানেন কেউ আমাকে জানালে চিরবাধিত হব তার কাছে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন ভাষাভাষীর কবিকুল আমরা যারা প্রতিদিন প্রতিনিয়ত রাতের ঘুম নষ্ট ক'রে জীর্ণ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপে ভরা পৃথিবীর ছবি তুলে ধরার কঠিন যজ্ঞের পুরোহিত হ'য়ে শক্ত শক্ত শব্দমালা গেঁথে কবিতার সৌধ গড়ে তুলি প্রাণপাত ক'রে, নিজের জীবনকে বাজি রেখে পার হ'তে চাই এই ভয়ঙ্কর পৃথিবীর গভীর অন্ধকার এ কি শুধুই তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে রঙ্গিন চশমায় দুনিয়াকে দেখার নেশা? নিজেকে প্রশ্ন করি, বিবেক, এ কি নাম যশের পেয়ালায় নিজেকে ডুবিয়ে দিয়ে আত্মপ্রতিষ্ঠার নেশায় চু্‌র, মাতাল হ'য়ে পথ চলা? আজ কত বছর হ'য়ে গেল এ বিশ্ব বাসযোগ্য হ'ল কি? কেন হ'ল না? নাকি হ'তে নেই? ওসব কথার কথা? বলতে হয় বলা? কবিতা, ছড়া লিখতে হয় লেখা? সেই কবে থেকে কত কবি, সাহিত্যিক কবিতা, গল্প, উপন্যাস রচনা ক'রে চলেছেন; প্রাবন্ধিক প্রবন্ধ রচনা ক'রে চলেছেন, শিল্পী ছবি এঁকে চলেছেন, বক্তা কণ্ঠনালী ফুলিয়ে চেঁচিয়ে চলেছেন। সবার বিষয় কি? বিষয় সেই নিপীড়িত, শোষিত, অত্যাচারিত মানুষ আর মানুষ আর মানুষ!!!!!!! সবাই আমরা কাঁদছি মানুষের জন্য। যুগ যুগ ধরে কাঁদছি। এই কান্না ছড়িয়ে পড়ছে আকাশে বাতাসে বিশ্বজুড়ে; অশ্রু হ'য়ে ঝ'রে পড়ছে কলমের, তুলির ডগায় আর কণ্ঠনালীতে! তারপর আবার সব শান্ত, গভীর নিস্তব্ধতা চরাচর জুড়ে! এ' কেই বলে বোধহয় ক্ষণিক বিরতি পরবর্তী আরো ভয়ানক ভূকম্পের জন্যে!
মানুষের কষ্ট, মানুষের যন্ত্রণা, মানুষের দারিদ্রতা, মানুষের প্রতি মানুষের অমানবিক আচরণ, অত্যাচার, নিপীড়ন এ সবই কি মানুষের কাছে আয়ের উপকরণ? আত্মপ্রতিষ্ঠার উপকরণ? মানুষের প্রতি মানুষের নির্মম অত্যাচারের বর্ণনায় কলমের ডগায়, তুলির আঁচরে বাস্তবতা প্রকাশের প্রয়াসে উঠে আসে নারীর নগ্ন শরীরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ শব্দে ও ছবিতে, কালিতে ও রঙে! এ কি প্রয়োজনের অছিলা নাকি অবদমিত বৃত্তিপ্রবৃত্তি!? মানুষের যন্ত্রণার হাহাকার এমন হৃদয়কে বিদীর্ণ করে যে তা কান্নায় প্রতিফলিত হ'য়ে ছড়িয়ে পড়তে চায় জীব জগতে সবার মাঝে! আর ছড়িয়ে পড়তে পড়তে তা হাত বাড়ায় ঈশ্বরের দিকে, আর ঈশ্বরকেও ব'লে ফেলি, ঈশ্বর তুমিও কাঁদো!!!!!!! যেন ঈশ্বর এক আহাম্মক; আমার কান্নায় তিনি কাঁদেন, আমার বলায় তাঁর চোখ খোলে, তিনি দেখতে পান!!!!! এতবড় আহাম্মক আমি!
যাক যেটা বলতে চেয়েছিলাম সেটা বলি। আমার মনে হ'ল সমস্ত পন্ডিত সমাজ সিনেমায়, নাটকে, গানে, কবিতায়, ছড়ায়, গল্পে, উপন্যাসে, প্রবন্ধে, চিত্রকলা ইত্যাদি ইত্যাদিতে মানুষের প্রতি মানুষের অত্যাচারের, নির্মমতার বিরুদ্ধে সেই কবে থেকে সুকান্তের মত লড়াইয়ের কথা ব'লে নতুন সূর্য ওঠার, নতুন এক স্বর্গ রচনার, বাসযোগ্য এক পৃথিবী গড়ে তোলার কথা ব'লে এসেছে এবং ব'লে যাচ্ছে নব্য কবি, সাহিত্যিক, শিল্পীরা তাঁদের নানা কঠিন শব্দজালে, রঙের আঁচড়ে, জটিল ও দুর্বোধ্য ঢঙে!!!!!
সেইসব আশ্বাসের বাণীর মাঝে আমি চোখ মেলে দেখি বারেবারে, খুঁজে দেখি পথ। ঠুকরে ঠুকরে অবশেষে নিজেকেই দেখি নিজেকে সেইখানে; মনে হয় সেই আমি যেন ঐ এক চড়ুইপাখি যে আয়নায় পথ খুঁজে খুঁজে হয়রাণ হ'য়ে বলে, পথ কোথায়! পথ কোথায়!! পথ কোথায়!!!
(লেখা ২৩শে ফেব্রুয়ারী'২০১৮)

Wednesday, February 22, 2023

কবিতাঃ আমার ভাবনা আর তোমার ভাবনা।

যার যেমন লাগে ভালো সে তেমনভাবে ঠাকুর পুজুক গো!
আমার লাগে ভালো বড়দা যেমন ভাবে ঠাকুর পুজে তেমন গো।
ঠাকুর আর বড়দা, বড়দা আর ঠাকুর সমার্থক
যেমন হনুমানে-রামে, কৃষ্ণ-অর্জুনে তফাৎ নিরর্থক!
তোমার যদি লাগে ভালো সীতা মাইয়া ছেড়ে পূজিতে রাম, পূজো তুমি!
আমার লাগে ভালো পূজিতে রাম-সীতা, ঠাকুর-বড়মার অপূর্ব যুগল মূর্তি!!
সীতা ছেড়ে তুমি পূজো রাম!? এ কেমন তোমার দুর্বুদ্ধি!
বড়মা ছাড়া ঠাকুর পূজো? হ'ক দলিত দুর্মতি।
মা সারদা ছেড়ে ঠাকুর রামকৃষ্ণেরে কেউ পারে ভাবিতে, বেকুব!?
বড়মাকে মুছে দিয়ে যাও ঠাকুর পূজিতে!? আহাম্মকি ভক্তি অহেতুক!
হনুমান নেই রাম আছে!? বিবেকানন্দ বিনা রামকৃষ্ণ!?
তেমনি বড়দা ছাড়া ঠাকুর!?
নিতাই ছাড়া নিমাই আর অর্জুন ছাড়া কৃষ্ণ! হয়েছে নাকি কখনও?
বড়মা-বড়দাকে বাদ দিয়ে ঠাকুর পূজো তুমি!? এ কেমন ভক্তির লক্ষণ!?
অতি ভক্তি আর চোরের মায়ের বড় গলা যেমন।
শ্রেষ্ঠ ভক্তের নমুনা!?
বড়দাকে গালি দিয়ে ঠাকুর প্রেমের কথা বলে 
আর বড়মাকে ছেঁটে দিয়ে ঠাকুর প্রতিষ্ঠার ধুয়ো তোলে!
ঘোর কলির এই জমানা!
এখন আর এক ধরণের ভক্ত দেখা যায়
যারা শ্রীশ্রীঠাকুর লিখতে লজ্জা পায়!
লেখে শ্রীশ্রীঅনুকূল চন্দ্র!!
শ্রীশ্রীঠাকুর লিখতে লজ্জা পায় যারা
রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থায়
ঠাকুর সাহিত্য যুক্ত করবে তারা!!!
এমনই মোদের ভাগ্য মন্দ।
রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠাকুর সাহিত্য পড়াবে কারা!?
শ্রীশ্রীঠাকুর লিখতে লজ্জা পায়
আর আচরণহীন শিক্ষক যারা!?
শ্রীশ্রীঠাকুর বলতে লজ্জা পায় কারা?
শ্রীশ্রীঠাকুরের "মুখেতে আছে ব্যবহারে নাই"-এর
পথ প্রদর্শক যারা!?
তোমার ভাবনা তোমার একান্তই
আর আমার ভাবনা একান্তই আমার
আমার ভাবনা নিয়ে আমি কাটি 
আর তোমার ভাবনা নিয়ে তুমি কাটো সাঁতার; 
ভবসাগর হও পার। 










Tuesday, February 21, 2023

প্রবন্ধঃ আমার জন্মদিন ও আমি!

আজ ২০শে ফেব্রুয়ারী আমার জন্মদিন! আজকের দিনে যারা যারা আমাকে আমার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাদের সকলের জন্য এই দিনে আমি পরমপিতার রাতুল চরণে সর্বাঙ্গীন মঙ্গল প্রার্থনা করি। আজকের দিনে এই দিনে অবতরণ করেছি আমি এই পৃথিবীতে তাই সেই অর্থে আমিও অবতার! কিন্তু আমি অবতারি নই! এই পৃথিবীতে যে বা যারাই এবং যা কিছুই নেবে এসেছে মাটির বুকে সে বা তারাই এবং সবকিছুই অবতরণ অর্থে অবতার! আর যিনি আমাদের এই মাটির বুকে অবতরণের উৎস অর্থাৎ আমাদের সৃষ্টি করেছেন তিনি অবতারি এবং অবতারি স্বয়ং ঈশ্বর, সৃষ্টিকর্তা! আর আমাদের মাঝে অর্থাৎ সৃষ্টির মাঝে স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা নিজেও অবতরণ করেছেন আর করেছেন মানুষ রূপে আট আটবার। সেই অবতরণ অর্থে আমাদের মত তিনিও অবতার। কিন্তু অবতার হয়েও তিনি অবতারের উর্দ্ধে। তাই তিনি অবতারি বা সৃষ্টিকর্তা! সেই মনুষ্য রূপী অবতার হয়েও অবতারি বা সৃষ্টিকর্তা অর্থাৎ জীবন্ত ঈশ্বর হলেন রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মোহাম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ ও সর্বশেষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র!! বাকি সব তা সে যে বা যেই হ'ক, জীবাত্মায় হ'ক আর মহাত্মায় হ'ক সে বা তারাই অবতার। অবতার আর অবতারির মধ্যে প্রভেদ জানলাম ঠাকুরের কাছে এসে। জীবন্ত ঈশ্বরকে অবতার বললে তাঁকে ছোটো করা হয়। এই বোধ, এই জ্ঞান যাঁর কাছে পাওয়া তিনি হলেন The greatest phenomenon of the world SriSriThakur Anukul Chandra. এতদিন আমরা তাঁকে জেনেছি, বলেছি অবতার। ঠাকুর এসে আমাদের সূক্ষ্ম তফাৎ ধরিয়ে দিয়ে গেলেন। এরকম অনেক অনেক কিছুরই বহু হাজার হাজার বছরের ভুল বা অসম্পূর্ণ ধ্যান ধারণার সূক্ষ্ম অতি সূক্ষ্ম তফাৎ তিনি ধরিয়ে দিয়ে গেছেন, জ্ঞানের রাজ্যে চুলের মত ফাঁক তিনি ভরাট ক'রে দিয়ে গেছেন!!!!! তাই কথায় আছে, Knowledge rules the world.


আজ আমার জন্মদিন। আমার জন্মদিনে যারা যারা আমাকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানিয়েছে, করেছে মঙ্গল প্রার্থনা তাদের সকলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। কিন্তু একটা সত্যি কথা না বললে নিজের কাছে নিজেকে অপরাধী ব'লে মনে হয়। প্রথমতঃ আজ আমার যে জন্মদিন সেই কথাটাই আমার মনে ছিল না। ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারলাম কালকে রাতে, বারোটার পর। আর মনে থাকার কথাও না। কোনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব নই যে জন্মদিন মনে থাকবে বা ধুমধাম ক'রে পালন করতে হবে। আর মনে না থাকার অনেক কারণ আছে।


যাই হ'ক এবারে আসল কথায় আসি। আসলে আমার জন্মদিন আজকে নয়। আমার প্রকৃত জন্মদিন ২৩শে অক্টোবর। কিন্তু এখন ২০শে ফেব্রুয়ারি হ'য়ে গেছে অফিশিয়াল জন্মদিন। ছোটবেলায় আমি খুব শান্ত প্রকৃতির ছিলাম। আমার জনম কুষ্টির নাম পবনকুমার। আর সেই নাম অনুযায়ী আমার প্রকৃতি ছিল পবনকুমারের মত। সেইজন্য আমার মা আমাকে ছয় বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি ক'রে দেয়। তখনও আমার ছয় বছর পূর্ণ হ'তে আট মাস বাকি ছিল। যেহেতু আমি খুব শান্ত প্রকৃতির ছিলাম সেইজন্য আমার মা আর আমাকে ঘরে বন্দী ক'রে রাখাকে যুক্তিযুক্ত মনে করেনি। স্কুলে ভর্তি ক'রে দেওয়ায় সঠিক মনে করেছিলেন। কয়েক ঘন্টা তো স্কুলে বন্দী থাকবো আর তাহ'লে সেই কয়েক ঘন্টা হনুমানি ভালোবাসা থেকে মার মুক্তি! আর সেই যে এগিয়ে এলো আমার আট মাস জন্মদিন তাই রয়ে গেল আজ পর্যন্ত অফিশিয়াল স্ট্যাম্প সহ। সেই যে স্কুল ফাইনাল পরীক্ষার সময় ফর্ম ফিল আপ করেছিলাম সেইখানে ওই এগিয়ে আসা জন্মদিন ২০শে ফেব্রুয়ারীর উপর অফিশিয়াল স্ট্যাম্প পড়ে গেছিল। এই হ'লো আমার একটা চাপা পড়া সত্য ও মনে না থাকার অনেক কারণের একটা কারণ।


এবার আসি অন্য কারণে। আচ্ছা এই যে আমার জন্মদিন উপলক্ষ্যে অনেকের ভালোবাসা আমি পেলাম তা আমি এই পৃথিবীর বুকে জন্ম নিয়ে কি করেছি? ছোট থেকে আজ এই পর্যন্ত কত বসন্ত পার হ'য়ে এই যে এই বছরের বসন্তের দরজায় এসে দাঁড়ালাম তা আমি এত বছর কি করেছি? মানুষ, সমাজ, দেশ কার জন্য কি করেছি!? অন্যদিকে আমি কি আমার বাবামায়ের ভালো ছেলে হ'তে পেরেছি!? হ'তে পেরেছি ভালো ভাই? ভালো স্বামী? ভালো পিতা? ভালো বন্ধু? ভালো প্রেমিক? (যদিও আমার মত কাঠখোট্টা লোককে কেউ প্রেম করেনি ও আমার দ্বারা প্রেম হ'য়ে ওঠেনি), সমাজ বা দেশের ভালো নাগরিক!? যদি এগুলোর একটাও কিছু হ'তে না পারি, একটারও উত্তর পজিটিভ না হয় তাহ'লে আমি কেন জন্মালাম!? কি হবে আমার জন্ম তারিখ দিয়ে!? আমার জন্মদিন পালন কেন করবো!? আমি কি এই সমাজের বোঝা নই!? আমাকে দিয়ে কার কি উপকার হয়েছে!? কারও কোনও কাজে, কোনও প্রয়োজনে আমি এসেছি!? কেউ কি আমার দ্বারা কোনোদিন উপকৃত হয়েছে!? আমার চারপাশের লোকজন কি আমাকে তাদের জীবনের নির্ভরযোগ্য একজন মনে করে!? আমি কি দিয়েছি আমার পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব,আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীকে!? আমি কি কারও স্বার্থ হ'য়ে উঠতে পেরেছি নাকি সকলকে নিজের স্বার্থে খালি পেতে চেয়েছি আর কাজে লাগিয়েছি? আচ্ছা আমি আমার নিজের জীবনকেই বা কি দিয়েছি!? আমার আমি আমাকেই ভয় পায় নাতো!? আমাকে নিয়ে আমার এই জীবন, আমার আমি বিরক্ত নয়তো!?


আজ আমার জন্মদিন! যখন ফেসবুকের মধ্যে দিয়ে জানতে পারলাম আজ আমার জন্মদিন তখন কেন জানি না নিজের অজান্তেই একটা হাসি খেলে গেল ঠোঁটের কোণে! কিন্তু বুঝতে পারলাম না হাসিটা কিসের! আনন্দের, হতাশার নাকি ব্যঙ্গ হাসি! ফেসবুক, ফোন ও সামনাসামনি জন্মদিনের শুভেচ্ছা শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল কেন এরা আমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে!? আমি কি সত্যি সত্যিই শুভেচ্ছা, ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য!? আমার জন্মদিনের তারিখ মনে না থাকার কারণ কি এইটাই যে আমি বিশেষ দিনের বিশেষ শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা পাওয়ার অযোগ্য!? আমি জন্মেছি কেন সেইটাই কি আমি জানি!? আমি কি সত্যি সত্যিই আমার এই জীবনটাকে প্রকৃত উপভোগ করতে পারছি!? আমি কি সকলের মাঝে মিশে গিয়ে সকলের সাথে একাত্ম হ'য়ে জীবনটাকে উপভোগ করছি!? আমি কি একবারও ভেবে দেখেছি আমার কেন জন্ম হয়েছে!? আমার জীবনে বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার জন্য যা যা প্রয়োজন তা পাওয়ার জন্য কি আমি সচেষ্ট!? তা পেতে গেলে আমার চারপাশের যে বা যারা বা যা কিছু আছে সেই সবকিছুর সাথে মিলনের মধ্যে দিয়ে, কর্মের মধ্যে দিয়ে যে পেতে হবে তা কি আমি জানি!? আমার বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার জন্য যে চাহিদার ভিতর দিয়ে আমি যাই সেই চাহিদা পূরণ করার জন্য আমাকে সেই অনুযায়ী কর্মের অনুসরণ করা প্রয়োজন এবং সেই অনুসরণ কি আমি করি!? আমার পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে, আমার পরিবেশকে কি আমি আমার অনুকূল ক'রে তুলে আমার জীবনের চাহিদাগুলিকে মেটাবার তাগিদে চাহিদা অনুযায়ী কর্মের ভিতর দিয়ে আমার জীবনকে পরিচালনা করি!? এই পরিচালনা করার সময় আমি জীবন বিধ্বংসী কোনও পথ অবলম্বন করি নাতো!? হিংসা, নিচতার পথ ধরে চলি নাতো!? কারও ক্ষতি করি নাতো!? কাউকে তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করি নাতো!? অন্যকে মেরে নিজে বাঁচতে চাই নাতো!? বড়োকে ছোটো আর ছোটোকে আরও ছোটো করি নাতো!? মনের অনুসরণ করি নাতো!? বিবেকের ডাক শুনিতো!? বিবেককে অনুসরণ করি তো!?


যদি উপরিউক্ত প্রশ্নগুলির উত্তর আমার বাঁচা-বাড়ার উল্টো পথে চলে তাহ'লে আমার জন্মদিন পালন করা তো দূরের কথা আমার জন্মদিন ব'লে কোনও দিন নেই!!!! শুধু সকলকে একটা কথায় বলতে পারি, এই যে আমি জন্মেছি এতে তো আমার কোনও হাত নেই তাই সব বন্ধুদের বলবো, মনে করো আমি নেই!


এই নেই আমি বিদায় নেবার আগে বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়কর পুরুষ পুরুষোত্তম জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের বাণী স্মরণ ক'রে এই লেখা শেষ করছি। শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন,
"তুমি কেন জন্মেছ মোটা ভাবেও কি দেখেছো?
থাকাটাকে কি উপভোগ করতে নয়-----
চাহিদা ও কর্মের ভিতর দিয়ে----
পারস্পরিক সহবাসে----
প্রত্যেক রকমে?
(লেখা ২১শে ফেব্রুয়ারী'২০২০)

উপলব্ধি ২১ঃ তুমি কেন জন্মেছো?

আজ আমার জন্মদিন। কাল রাত্রিরে প্রথম ইন্দু মাধব তালুকদারদা ও দীপালোক বন্দ্যোপাধ্যায়দার আগাম জন্মদিনের শুভেচ্ছা পেয়ে আমার জন্মদিনের কথা জানতে পারলাম। আমার মনে ছিল না। আর মনে রাখার মত আমি তেমন কোনও ব্যক্তিও নই। আর মনে ছিল না তার অন্য কারণও বোধহয় কয়েকদিন পরপর কয়েকটা অনুষ্ঠান আয়োজন করা নিয়ে খুবই ব্যস্ত ছিলাম, ছিলাম খুব উৎকন্ঠার মধ্যে। শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি ছিল কিন্তু অবসাদ ছিল না শরীরে ও মনে। তাই ভুলেই গেছিলাম জন্মদিনের কথা। তারপর সকাল থেকে একে একে অনেকে মনে করিয়ে দিতে লাগলো আমার জন্মদিনের কথা। ভালোবাসা, শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দিলো শরীর-মন। ছেলেমেয়ে ফেসবুকে জন্মদিন নিয়ে লিখলো। সন্ধ্যেবেলায় মিলনদা, অভিজিৎদা, জয়ন্তদা, করুণভাই ইত্যাদি গুরুভাইয়েরা এলেন জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে। কেউ দিলেন রজনীগন্ধা ফুল হাতে তুলে, কেউ দিলেন মিষ্টি, আবার কেউ বা দিলেন গরম গরম চপ। দারুণ জমে গেল সন্ধ্যেটা। গল্প আর চা, চপ, মিষ্টি আর আড্ডায় কখন যে সময় গড়িয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না। রাত ১১টায় সবাই বিদায় নিয়ে চলে গেল।
রাতের খাওয়া শেষে এসে বসেছি বিছানায়। একে একে মনের মধ্যে ভিড় ক'রে এলো সবার ভালোবাসা আর শুভেচ্ছার কথা। এখন ফাঁকা ঘর। সবাই রাতের বিছানায় আশ্রয় নিয়েছে। আমি বসে বসে ভাবছি আমার আজকের দিনের কথা। আমি জন্মেছি। মনে পড়ে গেলো আমার জন্ম দিন সংক্রান্ত একটা ব্যাপার। শুনেছিলাম, ছোটবেলায় নাকি এত দুরন্ত ছিলাম, এত পরিণত ছিলাম যার ফলে আমাকে ৬ বছর বয়স হওয়ার অনেক আগেই নাকি বয়স বাড়িয়ে ৬ বছর দেখিয়ে স্কুলে ভর্তি ক'রে দেওয়া হ'য়েছিল। সেটা আর কোনোদিনই চেঞ্জ করা হয়নি। সেই বয়সই আমার আজকের বয়স। আমি শুনেছি ৮/৯ মাসের তফাৎ। যাই হ'ক। যাক কুষ্টি দেখে বের করতে হবে।
আমি জন্মেছি। তা সে কয়েক মাস আগেই হ'ক আর পরেই হ'ক আমি জন্মেছি। সেই ছোট থেকে এত বছর যে দিনটাকে জেনে এসেছি আমার জন্মদিন সেই দিনটাই আপাতত আমার জন্মদিন। প্রশ্ন এইসব দিন টিন নিয়ে নয়, প্রশ্ন আমার অন্য জায়গায়। আমি জন্মেছি তা আগেই হ'ক আর পরেই হ'ক সেটা ঠিক আজ যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে চারপাশে তখন মনের মধ্যে কে যেন টোকা মেরে চুপিচুপি কানে কানে ফিসফিস ক'রে বলে গেলো, তুমি কেন জন্মেছো? আমি থতমত খেয়ে গেলাম। মুহূর্তে মাথার মধ্যে তোলপাড় শুরু হ'য়ে গেল। কি করি কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। কি জানি একটা মনের মধ্যে এসেই পর মুহুর্তে মিলিয়ে যেতে চায়। ভাবতে লাগলাম। অবশেষে ভাবতে ভাবতে মনে পড়ে গেল বিশ্বের বিস্ময় সর্বশ্রেষ্ট বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের জন্মবিষয়ক অনেক কথা। মনে পড়ে গেলো তাঁর অনেক বাণীর মধ্যে একটা অমোঘ বাণী।
শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন,
"তুমি কেন জন্মেছো
মোটা ভাবেও কি দেখেছো?
থাকাটাকে কি উপভোগ করতে নয়------
চাহিদা ও কর্মের ভিতর দিয়ে-------
পারস্পরিক সহবাসে-----
প্রত্যেক রকমে?
তেমনি বুঝছ না
ভগবান কেন সৃষ্টি করেছেন?
উত্তর কি এখন?
নিজেকে অনুভব করতে
উপভোগ করতে---বিশ্বে
প্রত্যেক অনুপাতে, দেওয়ায় নেওয়ায়,
আলিঙ্গনে, গ্রহণে,
কর্ম্ম বৈচিত্রে নয় কি?
সত্যি সত্যিই আজ জীবন সায়াহ্নে এসে মনে হ'ল, আমি কি সত্যি সত্যিই আমার এই জীবনের কাটিয়ে আসা দীর্ঘ সময়ের থাকাটাকে উপভোগ করতে পেরেছি না পারছি!? উপলব্ধি হ'লো, আমার চাহিদা দিয়ে, আমার কর্ম দিয়ে, পারস্পরিক মিলনের মধ্যে দিয়ে প্রত্যেক রকমে আমার থাকাটাকে কি উপভোগ করতে পেরেছি!? পেরেছি কি বিশ্বের প্রত্যেকটি তাঁর সৃষ্টির মধ্যে নিজেকে অনুভব করতে!?
কি চিন্তা করছো প্রকাশ!!!!! নামেই শুধু হ'য়ে রইলে প্রকাশ! পারলে না তাঁকে প্রকাশ ক'রে নিজে প্রকাশিত হ'তে!!!!!!!

(লেখা ২১শে ফেব্রুয়ারী'২০১৮)

Sunday, February 19, 2023

MODI SAID: Netaji -------------

 On Netaji's birth anniversary, Modi said, "Netaji had said 'give me blood, I'll give you freedom'. I tell you 'give me 60 months at the Centre, I'll give you a life of peace and happiness'. Wow!!!!! After long long times that old but evergreen delightful smell of spirited scorching volume with full of innocent approaching of hopes and confidence in order to the country men is being heard again by another strong man of India Mr. Narendra Modi. Is it a reiteration of thrilling past history!!!! Which is nothing but a thrilling blowing wind from the frozen lake. How far Mr Narendra Modi is eligible, competent and efficient as a carrier of vibration of that immortal act of addressing of Netaji i don't know but within 66years after independence not a single person of political world in India did dare to spread that invigorating smell like mountain air of our beloved evergreen Netaji by uttering the saying "I will give you a life of peace and happiness" which is imparting strength and vitality to the mind & heart of the retrograde countrymen!!!!! Netaji all time greatest tragic personality of the world! Netaji the greatest forgotten patriot of our country! Netaji Born! No one can be made Netaji! All these i know very well but i don't know when & how the countrymen will see the reflection of the character of Netaji which is full of valour, heroism, prowess, strength and courage! So suddenly like vernal breeze as if it is seemed that some one awaken us by uttering the second thoughts of our beloved Netaji. Hats of Mr Narendra Modi for your courage of sayings and reminding again once our Netaji!!!!

( Written on 20th FebruyarI' 2014)

No photo description available.

কবিতা ও গান।

 কিছু ছবি আছে মনটা উদাস করে দেয়!!!!! এই ছবিটা-ও তেমনি একটা ছবি!

মনে হয় ছবিটার ওই ফাঁকা দিগন্তে যেখানে সূর্য চুপি চুপি নেবে এসেছে জল আয়নায় তার মুখচ্ছবি দেখবে বলে সেখানে আমি একা, সম্পূর্ণ একা !!!! মনের মাঝে কে যেন বলে উঠল, কেউ কি আছে আমার সাথী হবে? আমি বললাম, কেঊ নেয়! আসা আর যাওয়ার সময়ও কেউ কি থাকে? থাকে না! আবার কে যেন বলে ঊঠল মনের মাঝে, থাকে বোধহয়! আমি বললাম, কে? ছবির দিগন্তের ওপার থেকে কে যেন বলে উঠল, ভেসে এলো এক মধুর সঙ্গীত, আদি নেই, অন্ত নেই তুমি আর আমি! প্রশ্ন নেই, উত্তর নেই তুমি আর আমি! পিতা নেই, মাতা নেই তুমি আর আমি। ভাই নেই, বন্ধু নেই তুমি আর আমি! আমি চমকে উঠলাম! ছবির দিগন্তের ওপারে সবুজ বনানী মাঝে তাকিয়ে থাকতে থাকতে প্রাণ আমার ডুকরে কেঁদে উঠল। গেয়ে উঠলাম আপন মনে প্রকৃতি মাঝে হারিয়ে যেতে যেতে......।।
এ জীবন শুধুই তোমার জন্য
তুমি ছাড়া নেই আর অন্য!
তোমার নামে প্রাণ আমার বন্য!
তোমার নাম কেবলি আমার অন্ন!
তোমার নামে প্রাণে প্রাণে
জাগে শিহরণ,
তোমার নামে ওঠে প্রাণে
নামের অনুরণন!
তোমার নামে প্রাণে, মধুরতা আনে!
তুমি আমার-ই!
এ জীবন শুধুই তোমার জন্য
তুমি ছাড়া নেই আর অন্য!
মনের মাঝে উঠল বেজে
নামের গুঞ্জন,
প্রাণে প্রাণে নামের পরশ
হৃদয় অনুরঞ্জন!
নবরুপে তুমি, আমার জীবন স্বামী
তুমি সবার-ই!
এ জীবন শুধুই তোমার জন্য
তুমি ছাড়া নেই আর অন্য!
তোমার দয়ার পরশ পেয়ে
প্রাণ হ’ল আকুল!
তোমার দরশন লাগি
হৃদয় আমার ব্যাকুল!
তোমার নাম আর তুমি,
অভেদ জানি;
আমি তোমার-ই!!
এ জীবন শুধুই তোমার জন্য
তুমি ছাড়া নেই আর অন্য!!

(লেখা ২০শে ফেব্রুয়ারী'২০১৪)
No photo description available.

কবিতাঃ কিসের প্রতিবাদ!

কিসের প্রতিবাদ!? কার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ!? কেন প্রতিবাদ!?
যেদিকে তাকাই সেদিকেই তো দেখি নিজেকে অন্যরূপে নিখাদ!
পায়ে পায়ে এগিয়ে চলি, এগিয়ে চলি সামনের দিকে;
দিন শেষে অবশেষে দেখি আলো নেই কোথাও, অন্ধকার চতুর্দিকে!
নিজের ছায়া বড় হ'য়ে হ'য়ে ক্রমশঃ ফেলছে আমাকে ঢেকে!
'কোথায় খোঁজ আধাঁর? সে যে ঘেরে ছায়া হ'য়ে তোমার'! 
বলল কে যেন ডেকে!
রসগোল্লার মত ডুবে আছো রিপু রসে 
আর বৃত্তি-প্রবৃত্তি টান মারে কষে!
মাঝে মাঝে যুদ্ধ যুদ্ধ ব'লে অম্ল ঢেঁকুর তুলে মারছো হাঁকডাক!
তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে আয়েশে আবেশে কলমে সমাবেশে!!
জন্মজন্মান্তর নিজেকে দিয়েছো ফাঁকি, 
আবার আসতে হবে ফিরে বৈকি!
ঋণ শোধের তরে, বারেবারে, যতদিন না উৎসমুখে চাইছো মাফি।
কার সঙ্গে লড়াই? লড়াই লড়াই ব'লে লম্পঝম্প মেরে করছি বড়াই?
এ যে ছায়াযুদ্ধ নিজের সঙ্গে নিজের প্যাঁচ জিলিপির আড়াই!
যুদ্ধের বিরুদ্ধে মানবতার আওয়াজ তুলে কাঁপিয়ে দিচ্ছ দিক দিগন্ত!
ধর্ম আর রাজনীতির নোংরা খেলায় দেশের অভ্যন্তরে প্রতিদিন
প্রতিনিয়ত মরছে যে মানুষ তার কেন নেই প্রতিবাদ? নেই অন্ত?
ক্রমশঃ।
(লেখা ২০শে ফেব্রুয়ারী'২০১৯)

কবিতাঃ ভালো থাকো তুমি তোমাতে!

কিসের প্রতিবাদ!? কার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ!? কেন প্রতিবাদ!?
যেদিকে তাকাই সেদিকেই তো দেখি নিজেকে অন্যরূপে নিখাদ!
পায়ে পায়ে এগিয়ে চলি, এগিয়ে চলি সামনের দিকে;
দিন শেষে অবশেষে দেখি আলো নেই কোথাও, অন্ধকার চতুর্দিকে!
নিজের ছায়া বড় হ'য়ে হ'য়ে ক্রমশঃ ফেলছে আমাকে ঢেকে!
'কোথায় খোঁজ আধাঁর? সে যে ঘেরে ছায়া হ'য়ে তোমার'!
বলল কে যেন ডেকে!
রসগোল্লার মত ডুবে আছো রিপু রসে
আর বৃত্তি-প্রবৃত্তি টান মারে ক'ষে!
মাঝে মাঝে যুদ্ধ যুদ্ধ ব'লে অম্ল ঢেঁকুর তুলে মারছো হাঁকডাক!
তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে আয়েশে আবেশে কলমে সমাবেশে!!
জন্মজন্মান্তর নিজেকে দিয়েছো ফাঁকি,
আবার আসতে হবে ফিরে বৈকি!
ঋণ শোধের তরে, বারেবারে, যতদিন না উৎসমুখে চাইছো মাফি।
কার সঙ্গে লড়াই? লড়াই লড়াই ব'লে লম্পঝম্প মেরে করছি বড়াই?
এ যে ছায়াযুদ্ধ নিজের সঙ্গে নিজের প্যাঁচ জিলিপির আড়াই!
যুদ্ধের বিরুদ্ধে মানবতার আওয়াজ তুলে কাঁপিয়ে দিচ্ছ দিক দিগন্ত!
ধর্ম আর রাজনীতির নোংরা খেলায় দেশের অভ্যন্তরে প্রতিদিন
প্রতিনিয়ত মরছে যে মানুষ তার কেন নেই প্রতিবাদ? নেই অন্ত?
আজও মহাভারতের ভীষ্মরা আছো মহাসুখে
বহাল তবিয়তে চর্ব্য চষ্য লেহ্য পেয় মুখে
আজও ধৃতরাষ্ট্ররা অন্ধ সাজো আত্মায়-শরীরে-মনে
ঘুণ পোকারা বাঁধছে বাসা সমাজ সভ্যতার অভ্যন্তরে
পদ্মার ভাঙনের মত নীরবে নিঃশব্দে সমূলে ধ্বংসের তরে।
বন্ধু! আছো ঘুমিয়ে নিশ্চিন্তে আরামে তাত্ত্বিক আমেজে
নেশাগ্রস্থ তুমি শুধু তোমার বিত্ত বৈভবের সম্পদে মজে
'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' তত্ত্বে
আছো ডুবে তুমি ভুলে গিয়ে তোমার শেষের সেদিন
আর তোমার পরবর্তী প্রজন্মে!
ঠিক আছে বন্ধু! ভালো থাকো তুমি তোমাতে!
(লেখা ২০শে ফেব্রুয়ারী'২০২১)

প্রবন্ধঃ নীল রঙ

ছবির মধ্যে উল্লিখিত নারীর অপরূপ বর্ণনা ছবির নীল রঙের মত মনের আঙিনাকে নীলাভ স্বপ্নময় এক আলোয় ভরিয়ে দিল! নীল স্বপ্নসাগরে ডুবে থাকতে থাকতে মনে হ'ল এই সুধারস পানে আবার বিষ নেইতো!?
অনেকক্ষণ ডুব দিয়ে থাকতে থাকতে একসময় ভেসে উঠে মনে হ'ল এক ফোঁটা চোনা যেমন এক কড়াই দুধ কেটে দেবার জন্য যথেষ্ট ঠিক তেমনি ছবিতে বর্ণিত নারীর বাকী সব সৌন্দর্য্যের সলিল সমাধি ঘটে যখন নারী ভীষণ রেগে গিয়ে উদম করে দেয় নিজেকে নিজেই। তাই 'নারী তুই উদম হলি.........ভীষণ রেগে' এটা নারীর সৌন্দর্য্যের ভূষণ তো নয়ই এটা সংসারে সংসারে ছড়ায় তীব্র দূষণ। যার ফল পরবর্তী উগ্র বিশৃঙ্খল মস্তিষ্কের প্রজন্মের উত্থান। রাগ ভালো, তার থেকেও আরো ভালো অনুরাগ। রাগ মানে নিয়ন্ত্রণের লক্ষণরেখা ডিঙ্গিয়ে নিজেকে একেবারে উদম করা নয়। নিজেকে নিজে যদি কেউ প্রকাশ্যে উদম করতে চায় তাহ'লে কারো কিছু করার থাকে না। এটা আত্মহত্যার সমান। তবে সৃষ্টি ও প্রিয়জনকে রক্ষা কিম্বা আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে ভীষণ রেগে উদম হয়ে নারীর মা কালীর রুপ ধারণ করার ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই যেটা প্রথমে মনে আসে তা' হ'ল,
" ওঁ কালি! কালি! মহাকালি! কালিকে! পরমেশ্বরি।
সর্বানন্দকরে! দেবি! নারায়ণি নমোহস্তুতে"।
একমাত্র এই ক্ষেত্রে ছবিতে বর্ণিত নারীর ভূষণগুলির মধ্যে নারীর 'উদম হওয়া রাগ' গ্রহনীয় অন্যথায় সংসারের সুখ শান্তির স্বার্থে তা' বর্জনীয়।


(লেখা ১৯শে জানুয়ারী;'২০১৫)
No photo description available.

প্রবন্ধঃ ক্ষমতার চেয়ার!

বাম, ডান আজ আর আলাদা কোনো অস্তিত্ব নয়, ‘ক্ষমতা’ নামক শরীরের দুই অঙ্গ, দুই হাত। এতদিন পর দেরীতে হলেও সত্য প্রকাশ হ’ল। সত্য স্বীকারোক্তি সময়ের অপেক্ষা মাত্র। বাম ডান তত্ত্ব ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে মানুষকে বিভ্রান্ত করার দলীয় প্রক্রিয়া মাত্র। যুগ যুগ ধরে তত্ত্বের অজুহাতে ক্ষমতা দখলের গিলোটিনে মানুষকে হতে হয়েছে বলি। জনতার দরবারে উদারতার ভঙ্গি নিয়ে বাম ডান একে অপরকে হেয় করে দেখাতে চেয়েছে ছোটো বড়র নির্লজ্জ বাহাদুরি। উন্নত সমাজ গঠনের জন্য ফর্মুলা অর্থাৎ সমাজ ব্যবস্থার সর্বোচ্চ উন্নত তত্ত্বের একমাত্র তারাই অধিকারী বাম ও ডান উভয়ে এই দাবী করে থাকে। আবার এদের মধ্যেই অনেক ভাগ। ছোটখাটো ভাগ গুলি ক্ষমতা নামক ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মত ক্ষমতা নিঃসারক বাটের দুদিকে ঘুরে মরে। আর চার অক্ষর জনগণ ডান-বামের ঘোড়েল তত্ত্বের কচকচানি বোঝে না। হাওয়া মোরগের মত এদের পিছনে ঘুরতে থাকে অনবরত। যেখানে ক্ষমতা লাভের গন্ধের লেশমাত্র নেই, সম্ভাবনা শূন্য সেখানেই এরা অর্থাৎ সুযোগ সন্ধানীরা, ক্ষমতা লোভীরা সমাজের বৃহত্তর স্বার্থ দেখিয়ে চরম উদারপন্থী হয়ে যায়, ডান-বাম, উচু-নীচু, ধনী-গরীব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সমস্ত স্তরের মানুষের জোটের প্রয়োজনীয়তা চোখের সামনে তখন ভেসে ওঠে; শরীরে, মনে, আত্মায় আপাদমস্তক তত্ত্ব কথার কঠিন বর্মকে দূরে সরিয়ে, রীতিনীতিকে জলাঞ্জলি দিয়ে, লাজলজ্জাকে শিকেয় তুলে রেখে ডান, বাম হাতের সঙ্গে রাজ্য বাঁচাবার, বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে রক্ষা করবার নামে সবচেয়ে শক্তিশালী হাত অজুহাতকে মূলধন করে মিঠে তামাকের সুগন্ধের মত তাত্ত্বিক আমেজে ভরপুর হয়ে বাচ্চা ভুলাবার মত কথার ফুলঝুরি ছুটিয়ে মানুষকে আবার বারবার মুর্গা বানিয়ে ক্ষমতার দখল নিতে চায়। আর আম আদমি ‘Don’t estimate the power of common man’ –এর সুড়সুড়িতে নিজের কুড়ি ইঞ্চি বুককে ৪০ ইঞ্চি বুক মনে করে উট পাখির মত মাথা উঁচিয়ে হাঁটতে থাকে রাজ্য জয়ের ভঙ্গিতে নিজেকে আলেকজান্ডার মনে করে। আর ক্ষমতা যার ঝোলাতে ঢোকার চুপিসারে গিয়ে ঢূকে পড়ে। ‘পুনঃ মূষিক ভব’-র শিকার হয়ে আবার রুপকথার রাজকন্যার মত রুপোর কাঠির ছোঁয়ায় গভীর নিদ্রায় ঢলে পড়ে আমার মত চার অক্ষর আম আদমি আগামী কোনো এক ‘সমাজ কো বদল ডালো’ তত্ত্বের ফেরিওয়ালারুপী রাজপুত্রের হাতের সোনার কাঠির ছোঁয়ায় জেগে উঠবে বলে! সমাজ কো বদল ডালো তত্ত্বের ফেরিওয়ালারা গুনগুন করে গান গেয়ে বেড়ায়-------

‘ক্ষমতা’ আমার ধ্যান, ‘ক্ষমতা’ আমার জ্ঞান
‘ক্ষমতা’ লাভই আমার জীবনের যা’কিছু;
সেথা নেই জেনো বিবেক, নেই কোনো আবেগ
নেই কোনো ভালো-মন্দ, চিন্তা-ভাবনার আগুপিছু।
‘ক্ষমতা’ দখলে জেনো আমার নেই কোনো মায়া-মমতা
নেই নীতি, নেই রীতি, সেথা নেই কোনো ভব্যতা-সভ্যতা।
পেতে ক্ষমতার চেয়ার আমি করি না কেয়ার আম জনতার;
মোল্লার দৌড় যেমন মসজিদ তেমনি জানা আছে দৌড়
লড়াই-এর ময়দানের চার অক্ষর আম জনতার ক্ষমতার।
জনতার প্রতি নেই মমতা, নেই পিরিতের কোনো বাড়াবাড়ি
হে জনতা তোমার ক্ষমতা শুধু আমার ‘ক্ষমতা’ লাভের সিঁড়ি।
‘ক্ষমতা’ আমার হয়ে রম্ভা, হয়ে উর্ব্বশী ত্রি-নয়ন মাঝে
নাচে দুলিয়ে সুডৌল, কাঁপিয়ে গোল গোল অনাবৃত সাজে!
তা’ দেখে মগ্ন, হয়ে নগ্ন, নেশাগ্রস্থ আমি
নাচি তিড়িং-ভিড়িং, নাচি তা-ধিনা-ধিনধিন
আমি ক্ষমতালোভী লাজলজ্জাহীন।
(লেখা ১৯শে ফেব্রুয়ারীI'২০১৬)

আমি ক্ষমতালোভী লাজলজ্জাহীন।
No photo description available.
All

প্রবন্ধঃ কিছু কথা।

সৎসঙ্গী গুরুভাইবোনেরা সাবধান! সৎসঙ্গী নাম নিয়ে ঢুকে পড়ছে সৎসঙ্গীদের ঘরে ঘরে ছদ্মবেশী শয়তান! ঢুকে পড়ছে কেন্দ্রে, মন্দিরে, সৎসঙ্গে, উৎসবে-অনুষ্ঠানে! চতুর্দিকে সৎসঙ্গের নামে, উৎসবের নামে সৎসঙ্গীদের কাছে কালেকশনে নেবে পড়ছে তারা! এখন চতুর্দিকে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের প্রচুর দীক্ষিত, লক্ষ লক্ষ দীক্ষিত। এই সুযোগে নেবে পড়েছে সুযোগ সন্ধানী দল ভক্ত সেজে। খুব মিষ্টি মানুষ তারা! শয়তানের হাসি ভগবানের চেয়েও মিষ্টি! একথা মনে রেখো তোমরা!! অভিজ্ঞতার উপর দাঁড়িয়ে বললাম একথা। আমার মনে হ'লো তাই বললাম একথা। বদনাম হচ্ছে ঠাকুরের, বদনাম হচ্ছে সৎসঙ্গের! বদনাম হচ্ছে সাধারণ ভালো ইষ্টপ্রাণ প্রকৃত সৎসঙ্গী গুরুভাইবোনেদের! সেইসবের ধার ধারে না তারা। তাদের এক ও একমাত্র লক্ষ্য সাধারণ সৎসঙ্গী। সাধারণ ভাঙাচোরা সৎসঙ্গীরা এদের শিকার! সাধারণ সৎসঙ্গীরা অর্ঘ্য সংগ্রহকে সরল মনে নেয়। ঠাকুরের প্রতি ভক্তি ভালোবাসা ও দুর্বল হৃদয়ের কারণে তারা অর্ঘ্য দেওয়াকে পবিত্র কাজ হিসেবে নেয়! আর সেই সুযোগ নেয় ধান্দাবাজ অর্থলোলুপ চরিত্রহীন কামুক প্রকৃতির সৎসঙ্গী নামধারী কপট ভন্ড মানুষ। এরা মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে ঢুকে পড়ে অন্দরমহলে! এরা সাধারণ সৎসঙ্গীদের খুব প্রিয় হয়। আমাদের মত স্পষ্ট কাঠখোট্টা সৎসঙ্গীরা সাধারণ মানুষের মন জয় করতে পারে না। আমরা সমালোচিত ও নিন্দিত হ'ই। আর তা হ'ই এদের কারণে। এদের প্রভাব অত্যন্ত প্রবল সাধারণ সৎসঙ্গীদের উপর। এদের অসাধারণ সম্মোহনী শক্তি! এরা সাধারণ সৎসঙ্গীদের প্রিয় হবার জন্য সৎসঙ্গীদের সমস্ত রকমের দুর্বলতা, দোষ, ভুলকে সমর্থন করে, প্রশ্রয় দেয় ঠাকুরের নানারকম ভুলভাল কথা ব'লে। এরা কথায় পটু ও চতুর হয়। তাই এরা জানে কোন কথার সমর্থনে, কোন কথার প্রশ্রয়ে সাধারণ সৎসঙ্গীদের মন জয় করা যায়। আর তাছাড়া দুর্বল মন ও হৃদয়ের মানুষ সবল হৃদয়ের মানুষের থেকে দূরে থাকতে ভালোবাসে। তারা ভালোবাসে বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে সুড়সুড়ি দেওয়া কথাবার্তা। তাই তারা তাদেরই পছন্দ করে যারা তাদের সব কথায় সায় দেয়, সমর্থন করে। ভন্ড কপট ধান্দাবাজ ব্যবসায়ী মনোভাবাপন্ন ভক্তমন্ডলী সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ সরল বোকা দুর্বল ধর্মভীরু বৃত্তিভোগী রিপু তাড়িত ভক্তকে স্পষ্টবাদী ইষ্টমাতাল খোলা মনের ভক্তপ্রাণের বিরুদ্ধে ভুল বুঝিয়ে ফায়দা তুলে নেয়, নেয় আখের গুছিয়ে! ইষ্টভৃতি, অর্ঘ্য, প্রনামীর টাকা সংগ্রহ করার জন্য এরা মুখ্য ভূমিকা নেয়। সাধারণ ভক্তমন্ডলী ইষ্টভৃতি, অর্ঘ্য, প্রনামীর টাকা ভক্তিভরে সরল বিশ্বাসে এদের হাতে তুলে দেয়। তারপর এরা খোঁজও নেয় না টাকা যথাস্থানে পৌঁছেছে কিনা। খোঁজ নেবার প্রয়োজনও বোধ করে না এরা। কারণ ঠাকুরের প্রেমের কথা, ইষ্টপ্রাণতার বাহারী চমক সাধারণ ভাঙাচোরা সৎসঙ্গীদের মোহমুগ্ধ ক'রে রাখে! সেই মোক্ষম সুযোগকে হাতিয়ার ক'রে ইষ্টকে, ঠাকুরকে আয়ের উপকরণ হিসেবে কাজে লাগিয়ে রোজগার করা এই সমস্ত কপট ভন্ড ভক্তমন্ডলী রমরমা ব্যবসা ফেঁদে বসেছে! এরা সরল সাদাসিধা ভাঙাচোরা সৎসঙ্গীদের মুর্গা বানিয়ে আজ তাদের কষ্টের টাকা ইষ্টের নামে হাতিয়ে নিয়ে পকেট খরচা এমনকি সংসার চালানোর উপায় ক'রে নিয়েছে! এর জন্য দায়ী কে? ঠাকুর? সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠান? নাকি আমাদের সরলতার নামে মহা বেকুবী? কোনটা? আমরা জানি না শ্রীশ্রীঠাকুর আমাদের সাবধান ক'রে দিয়ে বলে গেছিলেন, "কেষ্টদা মন্দিরের আশেপাশে কুৎসিত লোকের আনাগোনা বেশী, সাবধান থেকো তা থেকে"! আমরা কি এই সব কথা জেনেছি? নাকি জেনে মেনেছি? সাবধান হয়েছি? এবং অন্যদের সাবধান করেছি!? 'কালকের যোগী ভাত কে বলে অন্ন' এমন ভক্তরা এলাকায় এলাকায় ইষ্টপ্রাণতার এমন লম্প দিয়ে ঝম্প মারে যে এদের ইষ্টের প্রতি, ঠাকুরের প্রতি ভক্তি, প্রেম, ভালোবাসা ভক্তশ্রেষ্ট হনুমানকেও হার মানায়, হার মানায় হনুমানের ঐতিহাসিক লাফ কে! ঠাকুর এই সমস্ত ভন্ড মানুষদের আয়ের উপকরণ। এইসমস্ত লোক দেখানো ভক্তির অধিকারী কিচ্ছু না করা দীক্ষিতরা(?) সৎসঙ্গীদের মধ্যে নিজেদের ভেস্টেড ইন্টারেস্ট ব্যবসা-বাণিজ্যকে প্রসারিত ক'রে ক্ষমতা কায়েম করার জন্য সর্বাঙ্গ সাদায় ঢেকে শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢুকে পড়ার মত ভালো মানুষের বোরখা পড়ে কেন্দ্রে, মন্দিরে, সৎসঙ্গীদের ঘরে ঘরে ঢুকে পড়ে! তারপর সুযোগ বুঝে ফাঁকা ঘরে মোক্ষম দাঁও মেরে ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে মিষ্টি স্বরে জয়গুরু ব'লে কেটে পড়ে আবার পরবর্তী দিনের বা পরবর্তী শিকারের খোঁজে! এরা অসম্ভব ধৈর্য্যশীল হয়! ঘন্টার পর ঘন্টা চুপ ক'রে ধৈর্য্য ধ'রে বসে থাকতে পারে! কিছুতেই স্থান ত্যাগ করে না! সুযোগের অপেক্ষায় থাকে শিকারী জন্তুর মত! সুযোগ পাওয়া মাত্র অত্যন্ত ক্ষিপ্রতায় ছোবল মারে! এরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে অতি দ্রুত চোখের পলক পড়ার আগেই প্রতিপক্ষকে কথার মুন্সিয়ানায় সম্মোহিত ক'রে টাকা হাতিয়ে কেটে পড়ে! এরা হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ সৎসঙ্গীদের ঘরে ঘরে ঢুকে যায় যার যা ব্যবসা, যার যা আয়ের সোর্সকে ফুলে ফেঁপে ঢোল ক'রে তোলার জন্য! তাই সাধারণ সৎসঙ্গী গুরুভাইবোন আমার, সাবধান! এদের হাতের পুতুল হবেন না। নিজেকে এদের ঠাকুরকে ব্যবসার উপকরণ বানাবার বোড়ে হ'তে দেবেন না। আর আমার এই লেখাকে শুধু 'জয়গুরু' ব'লে মন্তব্য ক'রে ছেড়ে দেবেন না। আপনারা সতর্ক হলেই আমার এই লেখা সার্থক হবে। কারণ এইসমস্ত ধান্দাবাজি ভক্তমন্ডলী আমার উপর ক্ষুব্ধ হবে। আপনারা লক্ষ লক্ষ সাধারণ ভালো সৎসঙ্গীরা আমার এই লেখায় উপকৃত হ'লে আমি আনন্দ পাবো এবং ঠাকুর ভীষণ খুশী হবেন!!!!!! অনেক অভিজ্ঞতা থেকে একথা বললাম। নিতেও পারো আবার নাও নিতে পারো। শ্রীশ্রীবাবাইদাদা বলেন, গ্রহণ বর্জন ব্যক্তিগত ব্যাপার। জয়গুরু।
(লেখা ১২৯শে ফেব্রুয়ারী'২০২০)

কবিতাঃ সবাই অপরিহার্য? তাই কি?

হাত দিয়েই তো ধরতে হয় কাস্তে, বাঁচতে! নয় কি?
আর কাস্তে দিয়েই কাটতে হয়, তা পাকা ফসল
হোক আর আগাছাই হোক যা কিছু সব বাকি।
পদ্মই হ’ক আর জোড়া ফুলই হ’ক তোমায় আমায়
ধরতে হবে তা হাতেই; আর কাস্তের বেলায় যা ইচ্ছা তাই
তুমি আমি বলবো সবাই, ‘যত দোষ, নন্দ ঘোষ’;
এমনটা হয় না-কি! মাতব্বরি সব তা’তেই!
আছে ফুল, আছে হাত আর আছে একটা কাস্তে;
বলতে পারো কেউ, কোনটা ছেড়ে কোনটা নেবে
যদি চাও জীবনে বাড়তে আর বাঁচতে? ফুল, কাস্তে
আর হাত তিনেতেই আছে বাঁচা-বাড়ার মন্ত্র;
কার হাতে তুমি রাখবে হাত আর কাকে দেবে বাদ?
হাত ধরে কাস্তে চষে মাটি ফোটে ফুল বাঁচতে
তিনেতেই আছে যে শক্তি অপার, জেনো অফুরন্ত।

(লেখা ফেব্রুয়ারী'২০১৯)


No photo description available.
All reaction