Powered By Blogger

Monday, July 31, 2023

প্রবন্ধঃ মেডিকেল ছাত্র শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র!

আচ্ছা যারা ফেসবুকে ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের মেডিকেলে ডাক্তারি পড়া নিয়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন, যারা গালাগালি করছেন ডাক্তারি পড়া মিথ্যে বলে, কেউ বা বলছেন ঠাকুর চারবার মেডিকেলে ফেল মেরেছিল, আবার মেডিকেল কলেজের Alumnai section-এ alumnus হিসেবে নাম থাকা সত্বেও তারা ঠাকুরের ডাক্তারি পড়া নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যে প্রচারের নানা প্রশ্ন তুলে সাধারণ মানুষকে এমনকি সৎসঙ্গীদের মধ্যেও বিভ্রান্তের বিষ ঢেলে চলেছে তাদেরকে বলা যেতেই পারে কে বললো ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র মেডিকেলে চার বার ফেল করেছিল? এই প্রচারের মধ্যে আবার ডাক্তারও আছে! তাদের বলা যেতেই পারে, একজন ডাক্তার ডাক্তার হ'য়ে নিজের প্রফেশনের মানুষকে অপমান করা যায়? বলা যেতেই পারে একজন ডাক্তারি সার্টিফিকেট না পেয়েও যে অসাধারণ দক্ষতায় চিকিৎসা জগতে চমৎকারী দেখিয়েছেন যা আজ ইতিহাস হ'য়ে আছে, যার আজ থেকে ১০০বছর আগে কোনও নির্দিষ্ট ফিস ছিল না, গরিবের থেকে ফিস নিতেন না, আর কোনও ফিস না চাইতেই চিকিৎসা বাবদ ১০০টাকা ফিস দিত সেই সময়ের যে বিত্তবানরা, ভালোবেসে খুশিতে মাথার মণি ক'রে রাখতো যাঁকে, শ্রদ্ধায়, স্নেহে, যত্নে যাঁর প্রতিটি ইচ্ছা পূরণ করার জন্য প্রাণপাত করতো সেই ডাক্তারি সার্টিফিকেট না থাকা মানুষের সার্টিফিকেটে সমৃদ্ধ শারীরিক ও মানসিক ডাক্তার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার অনুকূলকে অপমান করছেন!? আর বলা যেতেই পারে আচ্ছা আজ থেকে ১০০ বছর আগে ১০০টাকা ফিস আজ ১০০ বছর পরে ২০২০সালে কত টাকা!? আজকের সবচেয়ে নামী দামী ডাক্তারের ফিস কত? ডাক্তারবাবুরা বলবেন? আর এত মারাত্মক পসার থাকতে সেই সময়ের একশ্রেণীর ডাক্তারদের চরম বিরোধিতা সত্বেও তিনি সেই ডাক্তারদের সম্বন্ধে প্রশংসা ক'রে তাদের কাছেই রোগীদের পাঠাতেন চিকিৎসার জন্য! কেন? ডাক্তারবাবুরা বলবেন? বলবেন তার ঘৃণ্য সমালোচকেরা? কেনই বা তিনি সেই তাঁর ডাক্তারি তীব্র পসারকে উপেক্ষা ক'রে, প্রবল আর্থিক হাতছানিকে অবহেলা ক'রে ডিস্পেন্সারির দায়িত্ব তাঁর পার্ষদ অনন্ত মহারাজের উপর ছেড়ে দিয়ে চিকিৎসা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন?

ঠাকুর সম্পর্কে আপনারা জানেন ঠাকুর পাশ করেছিল কি ফেল করেছিল? ঠাকুরের ডাক্তারি পড়ার ইতিহাস জানেন? কিভাবে তিনি ডাক্তারি পড়ার জন্য চান্স পেয়েছিলেন বা কেন পেয়েছিলেন? একজন স্কুল ফাইনাল পরীক্ষায় না বসা ছাত্র কি ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেতে পারে? তা কি সম্ভব? কি ক'রে এমন অসম্ভব সম্ভব হ'লো? কি ক'রে মেডিকেল প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ প্রধান ঠাকুরের ডাক্তারি পড়ার আবেদন মঞ্জুর করলেন? তাঁর ডাক্তারি পড়ার ছাড়পত্রে অনুমোদন দিলেন? কি সেই রহস্য? কেন তিনি ডাক্তার তকমা নিলেন না? কেন তিনি ডাক্তারি ফাইনাল পরীক্ষায় সমস্ত পেপার পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও মৌখিক পরীক্ষায় তিনি কেন নিজেকে অকৃতকার্য হ'তে দিলেন? তিনি কি মৌখিক পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন নাকি পরীক্ষকের রোষের কারণ হয়েছিলেন? তাঁকে কি ফেল করানো হয়েছিল? কি ছিল সেই রোষের কারণ? কেন তাঁকে ফেল করানো হয়েছিল? তিনি কি মৌখিক পরীক্ষায় পরীক্ষকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি? অসমর্থ ছিলেন? কেন তা ডাক্তারি পড়া ছাত্রদের কাছে আলোচনায় উঠে আসে না? কেন দেশে এই নিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় চর্চা হয় না? আজ পর্যন্ত তার আর কোনও রেকর্ড আছে ইতিহাসের বুকে? যদি থাকে তাহলে তা কেন আছে বা কি ক'রে তা সম্ভব ? এমন হাজারো প্রশ্ন উঠে আসতে পারে! যেমন উঠে আসতে পারে তাঁর জীবনের নানাদিকের রহস্যময় অবস্থান নিয়ে! যেমন কেন তিনি পূর্ববাংলা বর্তমান বাংলাদেশ থেকে চলে এলেন? কেন তিনি এই বাংলায় তাঁর নুতন বৃন্দাবন গড়ে তুললেন না? কেন তিনি বললেন আমার সৎসঙ্গের আন্দোলন বাংলা থেকে উঠবে না, বাংলার বাইরে থেকে উঠবে? কেন তিনি বললেন যা দিয়ে গেলাম আগামী দশ হাজার বছরের মধ্যে আর কিছু লাগবে না? কেন তিনি 'বড়খোকা, বড়খোকা' ব'লে অস্থির হ'য়ে পড়তেন? কেন তিনি ব'লে গেলেন 'রেত শরীরে সুপ্ত থেকে জ্যান্ত তিনি নিরন্তর?' কেন তিনি এবার রামকৃষ্ণ রূপে দেহ ছেড়ে যাবার পর এত তাড়াতাড়ি ২ বছর ২৯ দিনের মাথায় এলেন? এরকম বহু কেন, কেন, কেন নিয়ে প্রশ্ন আছে যা সময়মত একে একে তুলে আনা যাবে!

যাই হ'ক যারা ঠাকুরের মেডিকেলে পড়া নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে চলেছেন, প্রশ্ন তুলেছেন ঠাকুরের বয়স, মেডিকেলে পড়ার সাল আর মেডিকেল স্থাপনের সাল নিয়ে, আর এই বিতর্কিত প্রশ্ন তুলে সাধারণ ছাত্রছাত্রী ও মানুষের মনে অকারণ সন্দেহ, ঘৃণার জন্ম দিয়েছেন, দিয়ে চলেছেন তারা যদি জানতেন মেডিকেলে পড়ার ইতিহাস, মেডিকেল কলেজের ইতিহাস, খোঁজ নিতেন তাহলে শ্রদ্ধায় ভক্তিতে ভালোবাসায় মাথা নত হ'য়ে যেত তা তাদের ঠাকুরের প্রতি রাগ যে কারণেই হ'ক না কেন! অবশ্য জন্মবিকৃতদের কথা আলাদা। জানি না কতটুকু আর কিই বা তারা জানেন!

যাই হ'ক বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়কে নিয়ে এমন মন্তব্য বাঙালি হিসেবে নিজেকে বড় ছোট মনে হ'য়। কারণ বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় বাঙালি ছিলেন!!!!!! অবাঙালীদের কাছে আর বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের বাঙালিদের মুখ দেখাতে লজ্জা লাগে যে বাঙালিরা সেই ঠাকুরের প্রথম জীবন থেকে আজ ১৩২ বছর পার হ'য়ে যাওয়া পর্যন্ত ঠাকুরকে শুধু অপমান আর অপমান, লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, অপবাদ সহ্য করে যেতে হ'লো!! সহ্য ক'রে চলেছে তাঁর ব্যক্তিগত, বিবাহিত, সাংসারিক, পারিবারিক ইত্যাদি নিয়ে ক'রে চলা অসহ্য গালিগালাজ! কানে গরম তরল সীসা ঢেলে দেওয়া তার থেকেও অনেক-অনেক আরামদায়ক! যা ঠাকুরের দীক্ষিত গুরুভাইবোন বিশেষতঃ যুবসম্প্রদায় বিন্দুমাত্র বোঝার ক্ষমতা রাখে না। যদিও ব্যতিক্রম আছে। আর যারা অপমান করছে তারা কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই করছে আর করছে তাতে সামিল হ'য়ে অদিক্ষিত ইয়ং সম্প্রদায় কিছু না জেনে, না বুঝেই জোশে, হতাশায়! কিন্তু দুঃখের বিষয়, এর জন্যে কোন অদিক্ষিত বাঙালি এলিট সমাজের কোনও বাঙালি প্রতিবাদ করেনি। যাক, ইতিহাস বড়ই নির্ম্মম! আর নির্ম্মম ইতিহাস লেখা থাকবে বাঙালির! একদিন মানুষ বুঝতে পারবে কেন ঠাকুর বলেছিলেন "আমার সৎসঙ্গের আন্দোলনের ঢেউ বাংলার বুক থেকে উঠবে না। বাংলার বাইরে থেকে উঠবে।" ( লেখা ৩১শে জুলাই'২০২০)
প্রবি।

কবিতাঃ মরণ স্তব্ধ করে!!!!!

ভাগ্যিস কেউ কখনো বলেনি 'এসো'!
ভাগ্যিস তাই যাওয়া হয়নি কোথাও!
আর তাই নিশ্চিত 'ভুল' নিয়ে যায়নি
আমায় ভুলিয়ে ভুলভুলাইয়ার আঙিনায়!!
জানালায় চোখ রেখে বসে থাকা যায়
আদি অনন্তকাল সৃষ্টির পানে চেয়ে!
'অমল' হ'য়ে যদি না বসো।
'বিশের' যৌবন ভরা থাকে বিষে?
অমৃত হ'য়ে যায় বিষ তাঁর পরশে!
কার সে ডাক বন্ধু? যে ডাকে সুদীর্ঘ
পথ হ'য়ে যায় নাতিদীর্ঘ!?
কয়েকটা পদক্ষেপ পৌঁছে দেয়
দূর-প্রসারিত দুর্গম পথ শেষে!!??
কার সে ডাক? যে ডাকে এত আকর্ষণ!!!
পলক গতিতে চলে যাও আসমুদ্র হিমাচল
মাড়িয়ে নির্দ্বিধায়! পার হ'য়ে যাও
ঝোড়ো হাওয়াকে সাথী ক'রে
অবহেলায় অবলীলায়! জল ও স্থল!!!!
ভাগ্যিস কেউ কখনো বলেনি 'চলো'
এমন ক'রে আমায়!
অস্থির চঞ্চল আমি ঐ নিশিডাকে
ভাগ্যিস যায়নি ভেসে
নিশ্চিত নরকের আঙ্গিনায়।
আর যদি আসে তাঁর ডাক !?
সে ডাকও দুর্বার, দুর্নিবার্য!
নিষ্পেষিত করে সত্ত্বা অনিবার্য!
কৃষ্ণগহ্বর ভেদ ক'রে আসে সে ডাক!
আসে সে ডাকের তীব্র আলো, তাপ-উত্তাপ!!
শুনে সেই তমসার পার অচ্ছেদ্যবর্ণ
মহানপুরুষের ডাক প্রশ্নহীন, যুক্তিহীন ঝাঁপ
দেবো মরণ স্তব্দ ক'রে!!!!!!!!!!
( ৩১শে জুলাই'২০১৭)

Thursday, July 27, 2023

উপলব্ধি ৫০ঃ ঠাকুর ও আমরা।

প্রায় সময় দেখি কেউ ঠাকুরের (শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র) কোনও বিষয় নিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট করলে যেমন ‘জয়গুরু’ ‘ধন্যবাদ’ ইত্যাদি পজিটিভ মন্তব্য ভেসে আসে ঠিক তেমনি কিছু মন্তব্য ভেসে আসে নেগেটিভ আর তাও আবার গুরুভাইদের কাছ থেকে। তারা পোষ্টের বিষয়বস্তু সংশোধন ক’রে দিতে চায় অতি ভক্তি ও অতি জ্ঞানীর পরাকাষ্ঠা হিসাবে। সংশোধন ভালো কিন্তু সংশোধনের জন্য দম থাকতে হবে যথেষ্ট এটা যেন সংশোধনকারীরা মনে রাখে। কিছু গুরুভাই আছে তারা নিজেদের ঠাকুরের শুধু দীক্ষিত যে বলে তা নয় তারা ভীষণ নিজেদের ঠাকুর প্রেমী ও ইষ্টপ্রাণ এবং ইষ্টপ্রতিষ্ঠা ও ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠার নিষ্ঠাবান কর্মী ব’লে মনে করে আর তাই তারা পোষ্ট করা বিষয়ের প্রসঙ্গ থেকে বেরিয়ে গিয়ে ব্যাক্তিগত আক্রমণে চলে যায়। আবার কেউ কেউ তো ঠাকুর পরিবারের বিরুদ্ধে তীব্র অশ্লীল বিষোদ্গার ক’রে ঠাকুর প্রেমে ভেসে গিয়ে ঠাকুর প্রেমের বাণ ডেকে আনে। এইরকম পরিস্থিতিতে যার বিরুদ্ধে এমন আক্রমণ হয় তারা নড়ে যায় এবং তর্ক ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে। তখন এই সুযোগে কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের অদীক্ষিত নারী পুরুষ তীক্ষ্ণ অশ্লীল মন্তব্য ছুড়ে দেয় ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারের উপর। এক্ষেত্রে তখন নিজের উপরেই নিজের রাগ হয়। মন ব’লে, আমরা সত্যিই কি ঠাকুরের, ঠাকুর মিশনের যোগ্য, দক্ষ ও শিক্ষিত পতাকাবাহী!?
যাই হ’ক, কারও নেগেটিভ মন্তব্যে ন'ড়ে গেলে নিজের বিশ্বাসের প্রতি সন্দেহের প্রশ্ন এসে যায়। প্রত্যেকের স্বাধীন মতামত আছে তা সে মতামত অমৃত বহন ক'রে আনতে পারে আবার নরবর ব'য়ে আনতে পারে। যার যেমন শিক্ষা, যার যেমন রুচি, যার যেমন বংশমর্যাদা, যার যেমন পূর্ব জন্মের সুকৃতি, যার যেমন পারিবারিক ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ সে তেমন ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া দেয়। এখন যে যেটা গ্রহণ করবে। সবাই আজকাল পন্ডিত তা সেই আলোচ্য বিষয় সম্বন্ধে তার জ্ঞান থাকুক আর নাই থাকুক; মন্তব্য তাকে করতেই হবে। আর এক ধরণের মানুষ আছে যারা আলোচ্য বা প্রকাশিত বিষয়ের অন্তর্নিহিত অর্থ ধরতে বা বুঝতেই পারে না অথচ গভীর মন্তব্য করার ইচ্ছা জাগে। এগুলি করে হীনমন্যতা থেকে। একটা ভালো পোষ্ট তাকে নীচা দেখাতেই হবে যেমন ক'রে পারি। প্রশংসা দিতে বা করতে বুকে ব্যাথা লাগে। আর এক ধরণের মানুষ আছে যারা লেখা ভালো ক'রে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে না পড়েই হড়বড়ি আলটপকা মন্তব্য ক’রে নিজেকে সাজাতে চায় ময়ূরপুচ্ছধারী কাকের মত। তাই এইসব মানুষের জন্যে সব বিষয় বা সব বাণী সব জায়গায় সম্মান ও গুরুত্ব পায় না। পোষ্ট করা বিষয়ের বিষয়বস্তু এক; আর কারও কারও সেই বিষয় থেকে একেবারে ১৮০ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে উল্টোপথে হেঁটে মন্তব্য আর এক; এসব দেখে ঠাকুরের কথা মনে পড়ে যায় , “অপাত্রে, অযোগ্যে করিলে দান, দাতা গ্রহীতা দুইই ম্লান।“ এছাড়া অবাক লাগে যখন দেখি ঠাকুরের দীক্ষিত অথচ ঠাকুরকে আম ধর্মীয় গুরুদের আসনে বসিয়ে নির্দ্বিধায় ও অবলীলায় আলোচনা করে!!!!!!! ঠাকুরের দীক্ষিত অথচ ঠাকুর সম্পর্কে, ঠাকুরের মিশন সম্পর্কে, ঠাকুরের দর্শন সম্পর্কে, ঠাকুরের বাণী সম্পর্কে, ঠাকুরের জীবন সম্পর্কে, ঈশ্বর, গুরু, ধর্ম, মত ইত্যাদি সম্পর্কে তিল মাত্র জ্ঞান ও ধ্যান ধারণা নেই অথচ ঠাকুর ও ঠাকুরের বিষয় নিয়ে, ধর্ম, ঈশ্বর, গুরু ইত্যাদি বিষয় নিয়ে পোঙা পন্ডিতের মত আলোচনার আসরে হাজির হ'য়ে যায় গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের মত!!!!! এমন বিদগ্ধ পন্ডিতরা কাউকেই রেহাই দেয়না ও দেয়নি সে বিশ্বের যত বড় পন্ডিত হ'ক না কেন। এরা বিরাট জ্ঞানী পন্ডিত, এদের হিমালয় সমান জ্ঞান আর মহাসমুদ্রের মত গভীর ও ব্যাপ্ত দৃষ্টি!!! এরা এতটাই মহান আত্মা যে এরা মহাত্মা তো দূরের কথা পরমাত্মাকেও অবলীলায়, অবহেলায় সামনে পিছনে বলাৎকার ক'রে দিতে দ্বিধা করে না। তাই ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে এদের কুৎসিত ভাষা প্রয়োগ দেখে মনে পড়ে যায় ঠাকুরের আরও একটা বাণী, "বাক ও ব্যবহার এই দুটো জিনিসের মধ্যে Whole creation( সমগ্র সৃষ্টি) নিহিত আছে। তাই মানুষকে চেনা যায় তার বিভিন্ন অবস্থার বাক্য ও ব্যবহার দিয়ে।" তাই এখানে যারা ঠাকুরের দীক্ষিত ও অদীক্ষিত মন্তব্যকারী বিভিন্ন পোষ্টের বিষয়বস্তু নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবার নিয়ে যে ভাষা প্রয়োগ করে এবং যেসব নোংরা ছবি পোষ্ট করে এবং নির্দ্বিধায় যারা বলতে পারে পৃথিবীর সবাই নীলছবি দেখে তাদের চেনার জন্য ঠাকুরের এই বাণী যথেষ্ট। আর ঠাকুরের শিষ্য হিসাবে ও একজন গুরুভাই হিসেবে অন্য গুরুভাইদের যারা গুরুভাই হিসাবে গুরুভাইকে অকপটভাবে প্রকৃত সম্মান করে, শ্রদ্ধা করে, ভালোবাসে তাদের বলছি ঠাকুরের ও ঠাকুর পরিবারের সম্মান রক্ষা করার দায়িত্ব আপনার-আমার। তাই অযথা যেন আমরা তর্কে না যাই আর গেলেও যথেষ্ট পরিমাণে তৈরী হয়েই যেন যাই কারণ ঠাকুর হ'লেন বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়!!!!! তাই তাঁর সম্পর্কে পোষ্ট করা বিষয়বস্তু সম্পর্কে ও তাঁর সম্পর্কে কথাবার্তা বলার ক্ষেত্রে তাঁর সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল থাকা জরুরী এবং যাদের সঙ্গে কথা বলছি, মত বিনিময় করছি তা সে দীক্ষিত-অদীক্ষিত যেই হ'ক, তাদের রুচি, শিক্ষা ইত্যাদি সম্পর্কে সাবধান ও সতর্ক থাকা খুবই জরুরী। আপনার-আমার ঠাকুরকে ও ঠাকুর পরিবারকে আপনি-আমি রক্ষা করতে না পারলে কার দায় পড়েছে ঠাকুরের ও ঠাকুর পরিবারের ইজ্জৎ রক্ষা করার????? তাই সাধু সাবধান। স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনা ক’রে যেন কথা বলি ও তাঁর বিষয় পোষ্ট করি। সব কথার যেমন উত্তর দেবো না, ঠাকুরের সব বিষয় ল্যাজা মুড়ো বাদ দিয়ে যত্রতত্র যখন তখন যেন পোষ্ট না করি।
(লেখা ২৮শে জুলাই'২০১৮)

প্রবন্ধঃ পিছন ফিরে দেখা ও সামনে দেখা!

জীবন সম্পর্কে, সৃষ্টি সম্পর্কে, সৃষ্টির স্থিতি ও লয় সম্পর্কে, বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠা সম্পর্কে নানা প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্যে মানুষ গরুর গাড়ির যুগে ফিরে যেতে চায়! ফিরে যেতে চায় মানুষ বেদ পূরাণের যুগে!!! ফিরে যেতে চায় এমনকি ঠাকুরের অনেক মন্ত্রশিষ্যও!!!!!! এই পিছন ফিরে দেখা ও সামনে দেখা এই দুই দেখার কোন দেখার মধ্যে দিয়ে যাবে এই ক্ষণস্থায়ী জীবন!? প্রশ্ন জাগে মনে!
সব প্রশ্নের উত্তর সময়োপযোগী ও সহজ সরল ক'রে ব্যাখ্যা দিয়ে গেছেন ঠাকুর যার বিকল্প কোথাও নেই কারণ সময় না হ'লে তা দেওয়া যায় না কারণ সেই সমস্ত অসীম অনন্তের বিশ্লেষণ মূলক ব্যাখ্যা সাধারণ মানুষের পক্ষে তার সীমায়িত বোধ দিয়ে বোঝা, অনুধাবন করা সম্ভব নয়। ঠাকুরের বলা এমন অনেক অনেক কিছু আছে যার ইঙ্গিত মানব ইতিহাসের জ্ঞান ভান্ডারের কোথাও নেই, এমনকি তিনি নিজেও এর আগের রূপে অনেকবার এসেও বলেননি কারণ বলার সময় হয়নি ব'লে। তিনি যখনই কিছু বলেছেন সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাঁর পরম ভক্তদের বলেছেন তাঁর বলার সমর্থনে কোথায় কি বলা আছে তা খুঁজে দেখতে! এই খুঁজে দেখতে দেখতে ঠাকুরের চারপাশের ভক্তমন্ডলী এক একজন বিরাট পন্ডিত মানুষে পরিণত হয়েছিলেন!!!!!! যখনই সেইসমস্ত ঠাকুরে উৎসর্গীকৃত প্রাণ ঠাকুরকে ঠাকুরের বলার সমর্থনে খুঁজে পাওয়া মণি মুক্তো ঠাকুরের সামনে উপস্থাপিত করতেন তখন ঠাকুর শিশুর সারল্যে হাসি-গানে মেতে উঠতেন!!!!!! আর যদি কোথাও মিল খুঁজে না পেতেন তাঁরা তখন ঠাকুর তাঁদের উদ্দেশ্যে বলতেন, এই মুখ দিয়ে পরমপিতা যখন একবার কওয়ায় দিছেন তখন আর আমার কিছু করার নাই। আর ঠাকুর মাঝেমাঝেই বলতেন, যা দিয়ে গেলাম আগামী দশ হাজার বছরের মধ্যে কিছু লাগবে না!!!!!! আবার কখনো কখনো বলতেন, আর কিছু বাকি আছে নাকি কেষ্টদা? যদি থাকে তো বলেন এইবেলায় ক'য়ে দিয়ে যায়। এইরকম বহু ইঙ্গিত তিনি দিয়ে গেছেন যা সমঝদারোকে লিয়ে ইশারা কাফি হোতা হ্যায়!!!!!! তাই ঘোর কলি যুগের ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে পিছন ফিরে দেখা আর গরুর গাড়ির যুগে ফিরে যাওয়ার অর্থ ঠাকুর কে, তিনি কেন, কি জন্যে এসেছিলেন, কি দিয়ে গেলেন, কেনই বা তিনি এত তাড়াতাড়ি এলেন, কেন এবার জ্ঞানের মহাসমুদ্রের মধ্যে আমাদের ফেলে দিয়ে গেলেন, কেনই বা তিনি যা দিয়ে গেলেন তা কিঞ্চিৎ বুঝতে আরো ১০০বছর লাগবে ইত্যাদি প্রশ্ন সম্পর্কে বিন্দুমাত্র কোনও ধারণা না থাকা!!!!!!!! তাই তো ঠাকুর দুঃখ ক'রে বলেছিলেন, যত দ্রুততার সঙ্গে তোমাদের যা করতে বলেছিলাম ততটাই শিথিলতার সাথে তা গ্রহণ করলে! আর একজন্মে তিনি যা দিয়ে গেলেন আমাদের মতন সীমাহীন ভাঙাচোরা মানুষদের পক্ষে হাজারবার জন্মালেও তা পড়ে শেষ করা ও বোঝা সম্ভব না; করা তো দূর কি বাত!!!!!!! তাই বেদ, পুরাণ, শাস্ত্রতাস্ত্র পড়ে সময় নষ্ট করার কোনও মানে হয় না, ওসব বিলাসিতা ও বাতুলতা মাত্র আর ঠাকুরের কথায় "তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে আছো মণি!?" কারণ এই জীবন অল্প ক'দিনের জন্য তাই সময় নষ্ট করার সময় কোথায় দাদা!? পড়তেই যদি হয়, অধ্যয়নের গভীরে ডুবই যদি দিতে হয়, জানতেই যদি হয়, শাস্ত্রতাস্ত্র পড়া যদি মুখে মারিতং জগৎ না হয়, কথার কথা যদি না হয় আর যদি সম্ভব হয় তাহ'লে ঠাকুরের বি-শা-ল সাহিত্য-দর্শন-বিজ্ঞান সমুদ্রে ডুব দিন! তখন দেখতে পাবেন শাস্ত্র-শস্ত্র, বেদ-পুরাণ ইত্যাদি ইত্যাদি সব সব ভেসে যাচ্ছে বানের জলে ভেসে যাওয়ার মত। আর যা বললাম, ঠাকুরের কথায়, যত ডুববেন তত বেমালুম হবেন!!!!!! তল, কূল, ঠাঁই, থই পাবেন না!!!!!!!!!! তাই আসুন সুর ক'রে গেয়ে উঠি, 'তোমার মুখপানে চেয়ে থাকি শুধু, তৃষ্ণা মেটে এ সুখা জীবনের!!!!!! জয়গুরু।-----------প্রবি।
(লেখা ২৮শে জুলাই'২০১৯)

কবিতাঃ বনশাই ও শিশু।

বনসাই ক'রে রেখেছো যারে
চার দেওয়ালের বদ্ধ ঘরে
তার বোবা বেদনা কে বুঝিতে পারে!
ড্রয়িংরুমের বাড়াও শোভা
অতি আধুনিকা আর বিরাট শিক্ষিত তুমি
খেয়ালখুশির জাহাজে চড়ে!
বনসাই ক'রে রেখেছো যারে তুমি
সে যে চায় যেতে ছুটে খোলা আকাশের তলে
মাটির 'পরে চায় মাটিরে করিতে চুমি!
তা কি বুঝিতে পারো তুমি?
সে যে জড়াতে আকাশেরে চায়
শাখে শাখে পাতায় পাতায়
ক্লান্ত শ্রান্ত পথিকেরে চায় দিতে শান্তি
কলকাকলিতে ভরা ডালে ডালে যারা
গুঞ্জনে গুঞ্জনে তোলে তান জাগায় প্রাণ
সুরে সুরে আনে ক্রান্তি সেই তাদেরি দিতে চায়
অসহায় বনসাই তার বুকের 'পরে বসার আসনখানি!
ঠিক তেমনি তোমার ছোট্ট শিশুটিরে
ভুলভুলাইয়ার ঘুলঘুলির ছোট্ট নীড়ে
জানালার ধারে রেখেছো দাঁড় করায়ে
বাহিরের জগত হ'তে দূরে অনেক দূরে
একাকি অনেক খেলনার ভিড়ে!
জানালা দিয়ে দৃষ্টি যায় ছুটে দূরে অনেক দূরে
সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকা ফ্ল্যাট বাড়ি আর
নারিকেল সুপারি গাছের মাথার পরে
নীচে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা আপন মানুষটিরে
হাত দিয়ে ডেকে বলে, ডাদু, ঐ নাকেল গাছ!
দাদু মাথা নেড়ে হাত বাড়িয়ে কাল্পনিক
কোলে তুলে বলে, যাবে নাকি ডাদুভাই
ঐ নাকেল সুপুরি গাছের তলে?
'আচ্চি দাঁড়াও' ব'লে জানালা থেকে যায় নেবে নীচে
অতঃপর কিছু সময় কেটে ভেসে আসে কান্নার স্বর
'ডাদু ডাদু' বোল সাথে অবশেষে চাপা পড়ে যায়
থেমে যায় স্বর বনসাই হ'য়ে অন্ধকার ঘরের কোণে!
( লেখা ২৮শে জুলাই'২০২১)

Wednesday, July 26, 2023

প্রবন্ধঃ ওল্ড ইজ গোল্ড!

ধর্ম শব্দ যদিও তার গৌরব হারিয়ে আজ মলিন হ'য়ে গেছে তবুও ওল্ড ইজ গোল্ড! সোনার আংটি বাঁকা ট্যারা হ'লেও তা সোনার আংটি! পুরোনো হ'লে একটু মেজেঘষে নিতে হয় খালি। ঠিক তেমনি ধান্দাবাজ ধার্মিক আর মূর্খ দুর্বল ধর্মভীরু মানুষের জন্য ধর্ম শব্দ তার উল্টো ভুল প্রয়োগের কারণে কৌলিন্য হারালেও ধর্মের মূল অর্থ তার আভিজাত্য হারায়নি! ধর্ম ধর্মই! আর ধর্মহীন মানুষ সমাজের বোঝা! মানুষ শ্রেষ্ঠ হয় তখনই যখন সে ধর্মের মূল অর্থকে জীবনের সাথী ক'রে নিয়ে চলে, তা সে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান আর যে সম্প্রদায়ের, পৃথিবীর যে প্রান্তের যেই হ'ক না কেন!

ধর্ম পালন আর ঈশ্বরকে ভক্তি যারা না বুঝে, না জেনে শুধু অর্থহীন আচার, প্রাণহীন উপাচার ও অমূলক ভয়ভীতি থেকে করে তারা উপরে সবল হ'লেও ভিতরে দুর্বল, উপরে দারোগা মার্কা হ'লেও ভিতরে রোগা ও মানসিক রোগগ্রস্ত ও শারীরিক নানা রোগে ভর্তি একতাল মাংসের দলা! যা আমার আপনার চারপাশ ঘিরে ফেলে গিজগিজ করছে! দম ফেলার উপায় নেই! তাই বললাম, মূর্খ, দুর্বল ও ধর্মভীরু মানুষেরাই ধর্ম ও ঈশ্বরের সঙ্গে বেইমানি করেছে, করেছে মানুষের সর্বনাশ! সুযোগ ক'রে দিয়েছে ধর্ম ব্যবসায়ীদের? এর থেকে নাস্তিক ভালো!!!!!!!

ধর্ম পালন আর ধর্মকে মেনে চলা মানে যদি অনন্তকাল পুরনোকে বুকে আঁকড়ে নিয়ে চলা বোঝায় বা যা কিছু পুরাতন, যা কিছু প্রবীণ তাকে যুগোপযোগী ক'রে নেওয়া পাপ ব'লে মনে হয় আবার পুরোনো বলেই তাকে না জেনে, না বুঝে সনাতন সনাতন ব'লে হাঁক পেরে অন্ধের হস্তী দর্শনের মত জ্ঞানী পন্ডিত সেজে ব'সে সনাতন ধর্মের পতাকা উড়িয়ে সবার অভিভাবক হ'য়ে মাথায় চড়ে বসতে চায় বা নিজ হীন স্বার্থ পূরণে কিম্বা কারণ ছাড়াই না বুঝে, না জেনে ধর্মীয় মূল রীতিনীতি ডাস্টবিনে আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলে দিতে চায়, দিতে চায় বিসর্জন, নতুনকে চায় অস্বীকার করতে, সংস্কারের নামে কুসংস্কারকে ধর্মের নামে তৈল মর্দন ক'রে চলে তাহ'লে ধ'রে নিতে হবে ঐ লোক দেখানো ধর্মপালন ভণ্ডামি ছাড়া কিছুই নয়, ঈশ্বরের প্রতি ধর্মাত্মাদের হাইটেক বেইমানি, নেমকখারামির নিদর্শন!

ধর্ম পালন ও ধর্মীয় আচরণ যদি শুধু মূর্তি পূজা, আচার সর্বস্ব আর হৈচৈ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, মূর্তি পূজা বা ধর্মীয় আচার আচরণের পিছনের যৌক্তিক বিজ্ঞান সম্মত কারণ মানুষ না জানে, না বোঝে বা না জানতে চায় বা না বুঝতে চায় তাহলে মানুষের এই অজ্ঞতা, এই মূর্খতা, এই দুর্বলতাকে হাতিয়ার ক'রে, সম্বল ক'রে যারা এই মূর্তি পূজা ও ধর্মীয় আচার আচরণকে ব্যবসার উপকরণ বানিয়ে নিজেদের সাম্রাজ্য বৃদ্ধি ক'রে চলেছে, মানুষকে নানা মূর্তি ও মূর্তির অন্তর্নিহিত অর্থকে বুঝতে না দিয়ে, অনুধাবন করতে না দিয়ে বন্ধ্যা চরণ পূজায় মাতিয়ে তুলেছে যুগ যুগ ধ'রে, মাতিয়ে তুলেছে কিছু না ক'রেই শুধু তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে কিংবা শুধু ঈশ্বর ভগবানকে ফুল বেলপাতা চন্দন ধুপধুনো দিয়ে পুজো করার মধ্যে দিয়ে পাওয়ার বুদ্ধিকে তোল্লা দিয়ে, মাতিয়ে তুলছে ধর্মীয় সভ্যতার সমস্ত রকম যুগোপযোগী অগ্রগতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, পিছন দেখিয়ে তারাই সমাজ সভ্যতার পূজারী? তারাই ধর্মের শেষ কথা?

ধর্ম, সনাতন ধর্ম, হিন্দু ধর্ম বা অন্যান্য ধর্ম কি মুষ্টিমেয় সেই ধর্মের তথাকথিত কিছু ধর্মীয় নিম্নমানের ব্যক্তিত্বের একচেটিয়া পৈতৃক সম্পত্তি!? বা সেই ধর্ম নামক সম্পত্তির অভিভাবক? তারাই সমস্ত রামায়ণ, মহাভারত, শাস্ত্র, বেদ, পুরাণ, গীতা, কোরআন, বাইবেল ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি সমস্ত ধর্মগ্রন্থ পড়ে ফেলেছে? অর্থ বুঝে গেছে? ঈশ্বর, ভগবান, আল্লা বা যে নামেই সৃষ্টিকর্তাকে ডাকা হ'ক না কেন সেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর কি কারও বা কোনও সম্প্রদায়ের কি কারও ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত সম্পদ যা ভোগ করা তাদেরই একচেটিয়া অধিকার? তারাই ধর্ম পালনের ক্ষেত্রে সম্প্রদায় বিশেষ অনুযায়ী তামাম সাধারণ মানুষকে আদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে ঈশ্বরের মত এক ও একমাত্র ক্ষমতার ও সমাজ সভ্যতার ভালো মন্দের অধিকারী? তাদের বালখিল্য কথায় সমস্ত মানবসমাজকে উঠতে হবে? বসতে হবে? চলতে হবে? তারা ধর্মের জায়গীরদার!?
আর ধর্মের বিরুদ্ধে যারা জেহাদ ঘোষণা করেছে, ধর্মকে আফিম ব'লে মানুষকে ধর্ম থেকে, ধর্মনীতি থেকে সরিয়ে এনে অবৈজ্ঞানিক সাম্যবাদ ও সাম্যবাদের নীতিতে আস্থা স্থাপন করাতে চেয়েছে, আস্থা স্থাপন করাতে চেয়েছে এক ইউটোপিও রাষ্ট্র ব্যবস্থার উপর, যারা রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রনীতির উপর সমাজ ও সভ্যতার অগ্রগতিকে, জীবন যাপনের, বাঁচা-বাড়ার নীতিকে দাঁড় করাতে চেয়েছে, রাষ্ট্র নামক একটি অদ্ভুত প্রাণহীন যন্ত্রের দাস বানাতে চেয়েছে, বানাতে চেয়েছে বা ক'রে তুলতে চেয়েছে রাষ্ট্রের সমস্ত মানুষকে রাষ্ট্রের নামে ঘুরিয়ে নাক দেখাবার মত আল্টিমেট রাষ্ট্রের পিছনের কিছু ক্ষমতাবান মানুষের হাতের পুতুল, তারাই কি শেষ কথা? তারাই কি মানবজাতি ও মানবসভ্যতা রক্ষার ও তার নিখুঁত শ্রীবৃদ্ধির এক ও একমাত্র রূপকার?
রাষ্ট্রের সর্বময়কর্তা বা পরিচালক যারা সূর্য ও সূর্যের কিরণকে এক আসনে বসায়, কিরণকেও সূর্য ব'লে মনে ক'রে সূর্যের আরাধনা করে অর্থাৎ ঈশ্বর, ভগবান, আল্লা বা গড যে যে নামেই ডাকুক না কেন সেই এক ও অদ্বিতীয় ঈশ্বরের নরমাংসরূপী জীবন্ত ঈশ্বরকে সূর্য ও সূর্যের কিরণের মত ঈশ্বরের নানা গুণের খন্ড খন্ড আধারকে অর্থাৎ তেত্রিশ কোটি দেবদেবীকে জীবন্ত ঈশ্বরের সঙ্গে একই আসনে বসিয়ে একই গুরুত্বের সঙ্গে পুজো করে তারা কি মনে করে তারাই প্রকৃত ঈশ্বর পূজারী ও ধর্মের রক্ষক!? তাই কি!?
আবার কেউবা ধর্মকে হাতিয়ার ক'রে ধর্মের নামে, ধর্ম পালনের নামে অধর্মকেই পালন পোষণ ক'রেছে বা করছে, নানারকম ধর্মীয় আচরণের নামে বা মোড়কে অধর্মকেই ধর্ম ব'লে প্রতিষ্ঠা করেছে যুগ যুগ ধ'রে ও ক'রে চলেছে নিজেদের মৌরসি পাট্টা বজায় রাখার জন্য! তারা কি এতই শক্তিমান যে এর বিরুদ্ধে হাজার বলা সত্বেও একইরকম ভাবে তারা ধর্মের নামে অধর্মকে হাতিয়ার ক'রে, ধর্মীয় কুসংস্কারকে মূলধন ক'রে অধর্মের সাম্রাজ্য স্থাপন ক'রে ব'সে পায়ের উপর পা তুলে সাধারণ মানুষের মাথার ওপর সপাটে চাঁটি মেরে, পশ্চাতে পদাঘাত ক'রে তাদেরই দিয়ে দুধ দুইয়ে ঘি বানিয়ে দুধ ঘি মাখন খাচ্ছে আর ঢেঁকুর তুলছে আর তারপরেই গভীর নিদ্রায় গা এলিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে নাক ডাকতে ডাকতে! এই ট্র্যাডিশন সমানে ব'য়ে চলেছে যুগ যুগ ধ'রে! কোনোদিনই কি মানুষের অন্ততঃ যারা জীবন্ত ঈশ্বরকে গ্রহণ করেছে তাদের ঘুম ভাঙবে না!?
তা যাই হ'ক, যারা স্বঘোষিত ধর্মের রাখোয়ালা, যারা রাষ্ট্রব্যবস্থার ধর্মীয় পরিচালক, যারা ধর্ম ও ঈশ্বর বিরুদ্ধ তাদের জন্য কি সৃষ্টি-স্থিতি-লয়ের যে মূল মরকোচ, মূল মেকানিজম ধর্ম ও ঈশ্বর তা কি ভুল ও ইচ্ছাকৃত ভুল ব্যবহারের ফলে কৌলিন্য হারালেও আভিজাত্য হারায়?
না! না!! না!!! ওল্ড ইজ গোল্ড এন্ড গোল্ড ইজ গোল্ড আল্টিমেট গোল্ড!!!!!
প্রবি।
(লেখা ২৭শে জুলাই'২০২০)
No photo description available.
All reacti

কবিতাঃ সম্পর্ক

ঘরে ঘরে সব সম্পর্ক আজ ভেঙ্গে চুড়মার!
দাদুনাতি, পিতামাতা, স্বামীস্ত্রী, পিতাপুত্র, মাতাকন্যা,
ভাইভাই, বোনবোন, ভাইবোন, বন্ধুবন্ধু, প্রতিবেশীপ্রতিবেশী!
ওরে মন পাগল! তুই কেন এমন করিস!? কেন রেষারেষি?
কেন হ'স তুই এই পাপ কাজের হাতিয়ার?
গোঁজামিলে ভরিয়েছো নিজের জীবন
আর এখন মেলাচ্ছো অঙ্ক গোঁজামিলে সন্তানের জীবন?
মন তুমি ধন্য! তুমি অনন্যা!
তুমি বন্য! বাধ ভাঙ্গা বন্যা!
কে তোমায় রুখবে? কে তোমায় জিজ্ঞেস করবে,
মন! কেন সমস্ত সম্পর্ক ভেঙ্গে করো চুরমার?
কেন এত সঙ্ঘাত? কেন দু'দিনের জন্যে আসা জীবন
করছো বরবাদ!? সন্তানের নিষ্পাপ মুখের দিকে চেয়ে
একবারও কি করে না ইচ্ছা বলতে, চলো নিজেকে পাল্টাই,
করি সব পরিত্যাগ জীবন মাঝে যা কিছু আছে ভুল অন্যায়।
নোংরা কালো ঝুলে ভরা জীবন নিয়ে নিজের
যাও ঝাড়তে ঝুল অন্যের জীবনের!?
নিজের জীবনের ভুলে ভরা প্রতি পদক্ষেপ নিয়ে
হাঁটিহাঁটি পা চাও শেখাতে সন্তানের?
ছয় রিপু রসে টইটম্বুর জীবন
নীচতা কুটিলতার কালকূট বিষে ভরা মন
তবে কিসের আশায় কার ভরসায় চাও গড়তে
প্রাণাধিক প্রিয় শিশু সন্তানের ভবিষ্যৎ জীবন?
পারস্পরিক সব পবিত্র সম্পর্ক আজ ভেঙ্গে চুরমার
অহং পাথরের নির্ম্মম কঠিন আঘাতে।
মন! একবার ভেবে দেখো তুমি
তোমার ছায়া ক্রমশ তোমার চেয়ে দীর্ঘ হ'য়ে ফেলছে
তোমায় ঢেকে আর ভয়ে যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত মন
অন্ধকার অন্ধকার ব'লে অতর্কিতে ক'রে উঠছো
হিতাহিত জ্ঞানশূন্য চীৎকার নিজের ছায়া নিজে দেখে!
এখনও সময় আছে, মন! ফিরে চলো নিজ নিকেতন!
ছোট্ট দেবশিশুর জন্য খুঁজে নাও বাঁচাবাড়ার অমৃত ধন।
কোথায় সেই নিকেতন? কি সেই অমৃত ধন?
মন! ইষ্টের চরণতল সেই নিকেতন
জীবন খুঁজে পাবে যেথায়।
আর মন! ইষ্টের চলন----- নাও তারে আপন ক'রে
------স্বপারিপার্শ্বিক বাঁচাবাড়ার সেই-ই অমৃত ধন!
(লেখা ২৭শে জুলাই'২০২১)

Tuesday, July 25, 2023

গানঃ আলোক ঝর্ণা বহিছে জীবনে

আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
প্রভুর স্পর্শে কত আনন্দরস বহিয়া যায় ডুবন্ত জীবনে।
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
মিউজিক
পান করে আমার আমি প্রাণ (পরাণ) ভরিয়া
সদা সুপ্ত রহে যৌবন গতি
নিত্য প্রেম বহে জীবনে যৌবনে।
আনন্দধারা বহিছে জীবনে
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে।
মিউজিক
বসিয়া আছি আমি প্রভু তোমারি ধ্যানে
আত্মনিমগন তোমারি কারণে
চারিদিকে বাজে শুনি তোমারি বাঁশরী
আমার আমি তাতে ডুবে মরি
জীবন ভরিয়া লই অমৃত সুরা পানে
আনন্দধারা বহিছে জীবনে।
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে।
মিউজিক
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
মিউজিক
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
প্রভুর স্পর্শে কত আনন্দরস বহিয়া যায় ডুবন্ত জীবনে।
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে।
(লেখা ২৬শে জুলাই'২০২১) ( আনন্দধারা বহিছে জীবনে রবীন্দ্র সঙ্গীত সুর)


গানঃ চল মিনি দেওঘর যাবো।

প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে ৪
চল মিনি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে২
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
প্রাণমন ভরিয়া। ২
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে ৪
প্রাণ বলে রাম রাম
মন বলে পলায় যাম
বিবেক বলে, দিব প্রাণারাম!
ও রাধেশ্যাম আঁখি দিয়া কাঁদাইলি আরাম!
চল মিনি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
প্রাণমন ভরিয়া।২
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে।২
বাঁচাবাড়া যেমন তেমন
নেপোয় মারা কাম গো
হায় রাধেশ্যাম! দয়া করি বাঁচাইলি পরাণ।
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে ৪
চল মিনি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
মনপ্রাণ ভরিয়া।২
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে।২
দয়াল আমার বাঁচার আশ
বেড়ে ওঠার তাল গো
পরম বাপে মাঙ্গে যদি
সঁপে দিব প্রাণ গো।২
চল মিনি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
প্রাণমন ভরিয়া।২
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে।২
হাওয়া বয় ঝির ঝির
পরাণ কাঁপে তির তির
দয়াল মুখে মিষ্টি হাসির ঝিলিক!
হায় দয়াল বাপরে
হাসি দিয়া জড়াইলি আমায়
আমার দয়াল বাপরে!
চল মিনি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
প্রাণমন ভরিয়া।২
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে।২
(লেখা ২৬শে জুলাই'২০২১)

Sunday, July 23, 2023

প্রবন্ধঃ অশনি সঙ্কেত

বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নে বর্ণিত ঠাকুরের এই বাণী কতটা নির্ম্মম সত্য তা আজ ফেসবুক ব্যবহারকারী তা সে দীক্ষিত হ'ক আর না হ'ক বুঝতে পারছেন! কিন্তু দুঃখ এই, ভয়ঙ্কর যে ভবিষ্যতের অশনি সংকেত দেখা যাচ্ছে এর মধ্যে দিয়ে সেই সংকেত বা ইঙ্গিত দেখতে পেয়েও সমাজের এলিট সমাজ আজ চুপ! বাংলার কৃষ্টি, বাংলার সংস্কৃতির যে ভয়াবহ বিপর্যয় নেবে আসতে চলেছে তার ইঙ্গিত পাওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন মস্তিস্ক থাকা সত্ত্বেও তারা 'আমার গায়ে আচঁ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতা নিয়ে দিব্যি আরামে তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে আছে!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে একশ্রেণীর বিপদগামী বিকৃত মানসিকতাসম্পন্ন নারীপুরুষ বিশেষতঃ বাঙালি যুবসমাজ অশ্লীল ভাষায় ঠাকুরকে গালিগালাজ ক'রে মানসিক তৃপ্তি খুঁজে নিচ্ছে! ভিটামিন প্রোটিন সমৃদ্ধ গালাগালিতে আকাশ বাতাস বিষাক্ত ক'রে তুলে নিজেকে ও নিজের পরিবারের ও পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎকে নরকের দোরগোড়ায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে! এইজন্য তারা বিন্দুমাত্র ভীত চিন্তিত নয়! সাধারণ অবিবাহিত যুবকযুবতী যৌবনের পাগলা ঘোড়ায় চেপে উচ্শৃঙ্খল বিশৃঙ্খল জীবনের অধিকারী হ'য়ে একের পর এক অকথ্য কুকথ্য ভাষায় ঠাকুরের, ঠাকুর পরিবারের চৌদ্দগুষ্টির শ্রাদ্ধ ক'রে চলেছে ফেসবুক নামক মিডিয়ায়! যার থেকে কানে গরম সীসা ঢেলে দেওয়া আরামদায়ক!!!! আর এরা সবাই বাঙালি!

আবার এর মধ্যে কিছু আছে যারা নিজেদের বলছে তারা নাকি সৎসঙ্গী!!!!! প্রকাশ্যে শ্রীশ্রীঠাকুরের জ্যেষ্ঠ আত্মজকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ক'রে তাঁর পরিবারকে কলুষিত ক'রে ঠাকুরপ্রেমী সাজতে তাদের এতটুকু দ্বিধা নেই!

এছাড়া ভাবলেও অবাক লাগে এক মা ঠাকুরকে অবলীলায় অবহেলায় বীভৎস ভাষায় গালাগালি ক'রে আমাকে কমেন্টে লিখছেন যে তার সন্তানকে হত্যা ক'রে নিজের হাতে মাটিতে পুঁতে দেবেন যদি সে কখনো সৎসঙ্গী হয়! এক মা বলছেন, সৎসঙ্গী হওয়ার থেকে মরে যাওয়া ভালো তার সন্তানের! এক বাবা বলছেন, আমি ও আমার ছেলে একসঙ্গে দুজনে মিলে বোকা----- অনুকূলের ------টিপি, ----------মারি!!!!!!! কয়েকটা মাত্র উদাহরণ তুলে দিলাম শুধু অনুভব ও উপলব্ধির জন্য। আর এই তুলে দেওয়ার জন্য ঠাকুর ও আপনাদের সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।

স্তম্ভিত হ'য়ে যেতে হয় এদের বায়োলজিক্যাল মেক আপ দেখে! স্তম্ভিত হ'য়ে যেতে হয় এদের চারপাশের পরিবেশ দেখে? কোন পরিবেশে এরা বড় হচ্ছে!? এরকম বায়োলজিক্যাল মেক আপ কি ক'রে হ'লো!? এর কি কোনও বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা আছে!? জন্মবিজ্ঞানের বিজ্ঞানীরা কি বলেন!? কৃষ্টিগত ভয়ঙ্কর পরাভবের জন্য পন্ডিত সমাজ কি বলেন!? এই বীভৎস পরাভবের ফলে চারপাশের উদ্ভূত কুৎসিত সংস্কৃতির পরিবেশের জন্য পরিবেশবিদরা কি বলেন!? কোন পরিবেশ এরা রচনা করছে আগামী পৃথিবীর ও আগামী প্রজন্মের জন্য!? সমাজের এলিট সমাজের কি কোনও দায় নেই!?

এদের নোংরা মুখের নোংরা ভাষায় পাল্লা দিতে না পেরে জড়িয়ে যাচ্ছে কিছু সৎসঙ্গীও! এলাকায় এলাকায় উৎসবের নামে কোনও কোনও উৎসব মণ্ডপে দেখা গেছে সৎসঙ্গ শেষে গান বাজনার নামে বেলেল্লাপনা! দেখা গেছে উৎসব কর্তাদের উৎসবের মূল অনুষ্ঠান শেষে আর তাদের কোন দায় বা দায়িত্ব নেই উৎসব শেষের অনুষ্ঠান নিয়ে! কারণ তাদের হাত পা বাঁধা শেষের অনুষ্ঠানের আয়োজকদের কাছে! কিসের জন্য হাত পা বাঁধা!? এমনও দেখা গেছে উৎসব হয়েছে, মূল অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে, তারপর শুরু হয়েছে বাউল গানের অনুষ্ঠান! সেই অনুষ্ঠানের দেহতত্ত্বের দোহাই দিয়ে দ্বৈত অর্থের অজুহাতে পরিবেশন হচ্ছে শ্রীশ্রীঠাকুরের আদর্শ বর্জিত অশ্লীল ইঙ্গিতপূর্ণ যৌন সুড়সুড়ি-তে ভরপুর মাতাল গান! আর সেই গান উপভোগ করছে নারীপুরুষ নির্বিশেষে! মঞ্চের সামনে মাল খেয়ে উদোম নৃত্য করছে ছেলেছোকরা! সামনে চেয়ারে বসে লাল চোখে তা উপভোগ করছে দাদা ও সাঙ্গপাঙ্গরা! আর মঞ্চে সাজানো ফটো থেকে শ্রীশ্রীঠাকুর, শ্রীশ্রীবড়মা, শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীঅশোকদাদা ও শ্রীশ্রীবাবাইদাদা তা দেখছেন সৎসঙ্গের সকাল থেকে অনুষ্ঠিত বাঁচাবাড়ার অনুষ্ঠানের সমাপ্তি!

কথায় আছে শেষ ভালো যার সব ভালো তার। কিন্তু শেষে ভালো হচ্ছে কি মন্দ হচ্ছে তা দেখার আর দরকার পড়েনি অনুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত, অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত দায়িত্বপূর্ণ সৎসঙ্গী ঋত্বিক, যাজক, অধ্বর্যু, বক্তা, গায়ক এবং সৎসঙ্গী দাদা ও মায়েদের! এরা সবাই তখন ততক্ষণে নিরাপদ আশ্রয় ঘরে পৌঁছে হাতপা ধুয়ে খেয়েদেয়ে নিশ্চিন্ত নিদ্রাসুখের ব্যবস্থায় ব্যস্ত অনুষ্ঠান আয়োজনের, গান ও বক্তৃতার তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে তুলতে!!!! এর কি প্রতিক্রিয়া হ'তে পারে তার জন্য কোনও মাথাব্যথা নেই এদের! বিশেষ ক'রে ইয়ং সৎসঙ্গী জেনারেশনের! তারা অনুষ্ঠান থেকে শরীরে-মনে-আত্মায় অক্সিজেন, ভিটামিন, প্রোটিন নিয়ে ঢুকে পড়েছে ঘরে অতএব আর কোনও দরকার নেই!

এরকম বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে চলেছে সৎসঙ্গীদের মধ্যে আমিত্ব প্রতিষ্ঠার প্রতিযোগিতায়! আর এদের সুযোগ নিয়ে শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢুকে পড়ার মত সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিচ্ছিন্নতাবাদী ঠাকুর বিরোধীরা সৎসঙ্গী সেজে ঢুকে পড়ছে ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারকে কলঙ্কিত করার জন্যে! আর 'কালকের যোগী ভাতকে বলে অন্ন' প্রবাদের মত কাল দীক্ষা নিয়েই আজ বি-শা-ল ঠাকুরপ্রেমী, ঠাকুরভক্ত হ'য়ে পাগলের মত আবেগে ভেসে পড়ছে! এরা জানে না আবেগ ভালো, আবেগে ভেসে যাওয়া ভালো নয়! এরা আবেগে ভেসে গিয়ে ঢুঁশ দিয়ে বেরোচ্ছে বকনা বাছুরের মত সমাজের এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত ঠাকুরের আদর্শ, ঠাকুরের মিশন, ঠাকুরের কথা, ঠাকুরের বলা, ঠাকুরের ইচ্ছা, ঠাকুরের স্বপ্ন, ঠাকুরের কান্না, ঠাকুরের বুকের ব্যথা, ঠাকুরের চাহিদা, ঠাকুরের নির্দেশ, ঠাকুরের আদেশ, ঠাকুরের বিধান, ঠাকুরের নীতি ইত্যাদি কিছুই বিন্দুমাত্র না জেনে মূর্খের মত আর তারপরে ঝিমিয়ে পড়ছে কিছুদিন পরে, নইলে নিজেদের মধ্যে জড়িয়ে পড়ছে বাকবিতণ্ডাতে! জড়িয়ে পড়ছে জিলিপির প্যাঁচহীন সরল সাধাসিধেভাবে চলা আবেগে ভেসে যাওয়া কিছু সৎসঙ্গী! জড়িয়ে পড়ছে আমিত্ব প্রতিষ্ঠাতে উন্মাদ কিছু সৎসঙ্গী! জড়িয়ে পড়ছে ক্ষমতা দখলের লোভে লোভী কিছু সৎসঙ্গী! জড়িয়ে পড়ছে সমাজে অর্থ, মান, যশ, শিক্ষা, সভ্যতায় পিছিয়ে পড়া অবস্থা থেকে সামাজিক প্রতিষ্ঠা ও এলাকায় পরিচিত ব্যক্তিত্ব হওয়ার লোভে পাঞ্জা হাতিয়ে বিশেষ সৎসঙ্গী হওয়ার নীচ মানসিকতায়! জড়িয়ে পড়ছে ঠাকুরকে আয়ের উপকরণ ক'রে নিয়ে রোজগারের মানসিকতায়!

আর এই সুযোগে সুযোগসন্ধানীরা হ'য়ে উঠেছে সক্রিয়।
সুযোগ সন্ধানীরা সাধারণ সরলমতি সম্পন্ন সাদাসিধে মানুষকে বিপথগামী ক'রে তুলবার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে ফেসবুকে গালাগালির অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রে রে ক'রে! তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছে বাংলার বুকে বাঙালি হ'য়ে হিন্দুধর্ম, সনাতন ধর্ম্ম, ঈশ্বর, দেবদেবী, নারী জাতির মর্যাদা রক্ষা করবার মহান দায়িত্ব নিয়ে! তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছে মুষ্টিমেয় কয়েকজন বাঙালি (তার মধ্যে কিছু সাজা বাঙালিও আছে) ফেক আইডি খুলে, মুখ লুকিয়ে, নাম ভাঁরিয়ে ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারের বিরুদ্ধে সীমাহীন গালাগালি ও অশ্লীল শব্দের মালা গেঁথে কুৎসা, নিন্দা, অশ্রদ্ধা, অপমানের বান ডাকার মহান ব্রত নিয়ে! আর লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি সৎসঙ্গীরা যারা ফেসবুক করেন তারা দেখছেন তা নীরবে! আর ফেসবুকে যারা ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবার, ঠাকুরের আদর্শ, ঠাকুরের মিশন নিয়ে কিছু লেখালেখি করেন সেখানে তারা আসেন আর সেই লেখার সঙ্গে পোস্ট করা ঠাকুরের ফটোতে প্রণাম, জয়গুরু জানিয়ে আর লাইক দিয়ে দায় সারেন! পড়েনই না! জানার চেষ্টায় করে না এই লেখায় বাঘ-ভাল্লুক কি আছে! পড়ার, জানার, চেনার, বোঝার ইচ্ছা, চেষ্টা যতদিন না হবে ততদিন ঐ শয়তানের দল, কুচক্রী সুযোগ নিয়ে যাবে ঠাকুরকে আক্রমণ করতে। এই লেখার ক্ষেত্রেও তাই হবে! জয়গুরু আর লাইকের বন্যা বইবে! কিন্তু মতের আদানপ্রদান হবে না নিজেদের মধ্যে উল্টে দেখা যাবে এই লেখাতেও চলে আসবে গালাগালির ফেরিওয়ালারা অশ্লীল দুর্গন্ধযুক্ত গালাগালি ফেরি করার জন্য! আর সৎসঙ্গীরা মিনিমাম পজিটিভ মন্তব্য করতেও এগিয়ে আসবে না! ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে!
তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন,
অমিয়বাণী।
"যা'রা ধর্ম্মের মর্য্যাদা রক্ষা করতে জানে না,
গুরুজনের মর্য্যাদা রক্ষা করতে জানে না,
নারীর মর্য্যাদা রাখতে জানে না,
অসহায়, শিশু ও নিরাশ্রয়দিগের
আশ্রয় হ'তে জানে না,
তা'রা ঈশ্বর ও প্রেরিতদিগকে অবজ্ঞা করে,
তা'রা ঈশ্বরদ্রোহী,
প্রেরিতদ্রোহী,
দেশদ্রোহী ও গণদ্রোহী,
বিষাক্ত তা'দের সংশ্রব,
এর অপনোদন যদি না কর----
দুর্দ্দশা দুর্ম্মদ আলিঙ্গনে
তোমাদের অবসান
অতিসম্ভব ক'রে তুলবে।" ৪৪।
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র।
(আচার-চর্য্যা)
( লেখা আ৪শে জুলাই'২০২০ )
প্রবি।

Friday, July 21, 2023

খোলা চিঠি আমার সেই বন্ধুদের প্রতি।

ভুল, ভুল, ভুল!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!! সবই ভুল বন্ধু আমার। ঈশ্বর বা আল্লা বা গড  কাউকে কম, কাউকে বেশী দেয়নি বন্ধু। হ্যাঁ, তবে জন্ম বিজ্ঞান বলে একটা বিজ্ঞান আছে যেটা সৃষ্টির শ্রেষ্ট জীব মানুষ তার আধা জ্ঞানের অহঙ্কারে মানতে চায় না। ঈশ্বর বা গড বা খোদার ওপর খোদগারি করা এই আধাজ্ঞানী মানুষের জন্মগত স্বভাব, যে স্বভাব রক্তের দোষের কারণে মজ্জাগত হ'য়ে গেছে। এই অল্পজ্ঞানী, আধাজ্ঞানী পন্ডিত, বুদ্ধিজীবী, বিজ্ঞানী, সমাজকো বদল ডালোর পূজারী মানুষেরা পশুর ক্ষেত্রে জন্ম বিজ্ঞান মানে কিন্তু নিজেদের বেলায় অর্থাৎ মানুষের জন্মের ক্ষেত্রে জন্ম বিজ্ঞান মানে না। 

যাই হোক, বন্ধুরা আমার কঠিন জন্ম বিজ্ঞান বা জীবন দর্শন প্রসঙ্গে চলে গেছিলাম। সহজ করে বলতে পারি রবীন্দ্রনাথ, নজরুলরা জন্মায়। ঘ'ষে মেঝে পরিশ্রম ক'রে রবীন্দ্রনাথ বা নজরুল হওয়া যায় না, কিন্তু স্কুলের হেডমাষ্টার হওয়া যায় এটা নিশ্চয়ই ক'রে বলতে পারি। যদি সব জন্মগত হ'ত তাহ'লে সবাই 'আমার সেই ক্ষমতা বা গুণ নেই' বলে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকতো। তাই সংস্কার যেমন আছে ঠিক তেমনি পরিশ্রম, চেষ্টা ব'লে একটা কথা আছে আর সেটার ওপরই জোর দেওয়া হয় ও জোর দেওয়া উচিত। 

তাই বলি, বাজাতে বাজাতে যেমন বায়েন, গাইতে গাইতে যেমন গায়েন ঠিক তেমনি লিখতে লিখতে দেখবেন একদিন লেখক হ'য়ে গেছেন। লেখক হবার মানসিকতা নিয়ে লিখতে যাবেন না কিছু। ছোট ছোট ক'রে লিখে যান, যেমন এই comments গুলি করছেন, ঠিক তেমনি নানারকম বিষয় আছে আপনার চারপাশে সেগুলি ধরে ধরে ছোট ছোট ক'রে লিখে ফেলে দিন আপনার Timiline-এ বা comments box-এ। দেখবেন আপনার অজান্তে আপনার হাতের ক্ষমতা, আপনার হাতের কলম কথা বলতে শুরু ক'রে দিয়েছে। আর হঠাৎ একদিন সুন্দর সকালে দেখবেন আপনি নিজেকে অন্যরকম ভাবে আবিষ্কার করেছেন। অসম্ভব ব'লে কোন কথা নেই এই পৃথিবীতে। ঠিক তেমনি আপনার জীবনের অভিধানেও(Dictionary) অসম্ভব ব'লে কিছু রাখবেন না। ঈশ্বর, আল্লা বা গড-এর নাম স্মরণ ক'রে শুরু ক'রে দিন আর পিছন ফিরে তাকাবেন না আমি নিশ্চয়ই ক'রে বলছি জয় আপনার হবেই হবে!!!!!
( লেখা ২২শে জুলাই'২০১৪ )

কবিতাঃ নিশানা।

আচ্ছা এ সবই তো তোমার!
এই গ্রহ, নক্ষত্র, আকাশ, বাতাস
এই গ্রহের পাহাড় পর্বত, নদনদী, গাছপালা, জীবজন্তু,
পোকামাকড়, পশুপাখি সবই তো তোমার!
এই গ্রহ, নক্ষত্র ছাড়িয়ে ব্রহ্মান্ড পেরিয়ে
আরও যে হাজার লক্ষকোটি ব্রহ্মান্ড সবই তো তোমার!
এই পৃথিবী নামক আমাদের বিশাল গ্রহের মাঝে
এই যে আমার চোখের সামনে ছোট্ট একটুকরো জমি
এই জমি কার!? এই জমি কি নয় তোমার!?
এই জমির ওপর কার অধিকার!?
শেষমেশ সব জমির মত দিন শেষে অবশেষে
এই জমির-ও মালিক কি প্রমোটার!?
এই জমির ওপর কি নেই তোমার কোনও অধিকার!?
তুমি তো জানো এই বিশাল অন্তহীন অস্তিত্ব মাঝে
আমি ক্ষুদ্র, অতি ক্ষুদ্র এক অস্তিত্ব।
আর বিশাল পারাপারাহীন জগত মাঝে
দৃষ্টিগোচর হীন আমার ছোট্ট বিন্দুসম পরমাণু জগত!
আমি যে অসহায়। তুমি ছাড়া কে হবে আমার সহায়!
চোখের সামনে দেখতে হবে ধীরে ধীরে গ্রাস ক'রে নেবে
ইটের জঙ্গল এই ছোট্ট তোমার জমির আকাশ বাতাস!?
দমবন্ধ করা ইটের স্তুপ কেড়ে নেবে অক্সিজেন ভরা
বিশুদ্ধ বাতাস!? আকাশ হ'য়ে যাবে নিরুদ্ধেশ!?
এই যে কাঁঠাল, বাতাবি, বেল, নারিকেল, পেয়ারা
গাছেদের ভিড়ে গন্ধলেবুর মৌতাত গন্ধে প্রাণ হ'তো মাতোয়ারা!
আর কলাগাছের পাতার ছায়ায় ঘেরা রকমারি ফুলের গন্ধে
এই ছোট্ট জমির উপর দাঁড়িয়ে থাকা গৃহস্থের দাওয়া
নিত আশ্রমিক চেহারা! পথচলতি মানুষ বলতো তাই-ই!
কত মানুষ এসে বসতো দাওয়ায়, ঘরের ছাওয়ায়!
তোমার ছবির সামনে নত মাথে ব'সে
কত ক্লান্ত শ্রান্ত শরীর নিত বুক ভরে শ্বাস মাতাল হাওয়ায়!
কত গান, কত তান, কত বোলতাল
হাতে হাতে বাজতো খোল করতাল
গানে কীর্তনে উঠতো মেতে সবাই
হাসি আনন্দে তোমার কথাকলিতে
আঁধার কেটে ভাসতো তারা আলোর বন্যায়!
এ স্মৃতিচিহ্ন কি সব যাবে মুছে!?
সব যাবে বিলীন হ'য়ে
সময়ের কাল গহ্বরে ইটের পিঞ্জরে !?
ভালোবাসাময় এই ছোট্ট গৃহস্থের দাওয়া থেকে
মুছে যাবে তোমার সব নিশানা!?
তাই কি কখনো হয়!? হয়েছে কখনো!?
জীবন খুঁজে পাবো যেথায় তা কি কখনো
ইটের জঙ্গলে হারায়!?
মন বলে, হারায় না! হারায় না!! কখনো হারায় না!!!
(লেখা ২২শে জুলাই'২০২১)

Thursday, July 20, 2023

কবিতাঃ 'চায়ের সাথে তোমাকে চাই'

শর্মিলার মিষ্টি মধুর আহ্বান কিন্তু গভীর অর্থবহ হৃদয়নন্দন জীবনদর্শন!!!!!!!!!!!! শর্মিলার এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বলেছিলাম শর্মিলাকে, "দেরী হয়ে গেছে। তাছাড়া অনেক দূর!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!" উত্তরে শর্মিলা শান্ত স্নিগ্ধ উচ্ছল মধুরতায় হৃদয় নাড়িয়ে দিয়ে বলেছিল, "একা আসলে হবে না উমাকে সঙ্গে আনতে হবে সাথে............হা হা হা হা।"
বন্ধুর এমন আমন্ত্রণের নয়ননন্দন post আর হিমেল অভিব্যক্তি সাথে বুদ্ধিদীপ্ত হৃদয় নাড়ানো জবাব আমাকে সৃষ্টিনেশায় মাতিয়ে দিল। এমন সৃষ্টির মজাই আলাদা। তাই শব্দফুল দিয়ে গেঁথে ফেললাম একটা ছোট্ট মালা আর সেই মালা উপহার হিসাবে পাঠিয়ে দিলাম এই FB-এর মাধ্যমে শর্মিলার ড্রইংরুমের টেবিলে। আর এই তো জীবন আর ছোট ছোট মজার সৃষ্টির মাঝে জীবনকে প্রকৃতই উপভোগ!!!!! তাই এমন সৃষ্টির অন্তরালে মানে মালা গাঁথার পিছনে যার উপস্থিতি তাকে আলাদা মর্যাদা না দিলে সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মন মেতে ওঠে না!!!!!!!!! তাই শর্মিলার জন্য এই post আমার Timeline-এ আলাদা গুরুত্ব পেল তার বাককে মানে কথাকে সম্মান জানাতে। কারণ কথায় আছে "বাক-ই ব্রহ্ম"!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
একা মানে যদিও জানি বোকা,
আর একা আসা মানে
বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যা বেলায়
উমাকে দেওয়া হবে ধোকা!
তা হয় না-কি!!!!!!?????
কিন্তু প্রশ্ন জাগে মনে
বৃষ্টি স্নাত সন্ধ্যায় 'চায়ের সাথে
তোমাকে চাই' মধুর আহ্বানে
বন্ধুর সাথে থাকতে একাকি
মন চাই না ছাড়তে এই মওকা!!
একা মানে যদিও জানি বোকা।
কিন্তু বন্ধু আমার-------------
কে বাজাবে শুভ সন্ধ্যায় বিজয়ের শঙ্খ?
মেলানো কঠিন জীবনের এই জটিল অঙ্ক!!!!!!!
( ২১শে জুলাই'২০১৪)

কবিতাঃ মা! তুমি সাবধান!!

মা! ভবিষ্যৎ ভয়ংকর! ভয়ংকর চারপাশ!
আগুন হ'য়ে উঠছে ক্রমশ পৃথিবী!
জঞ্জালে জঞ্জালে ভরে গেছে বিশ্ব,
ভরে গেছে জঞ্জালের দুর্গন্ধে আকাশ বাতাস!
কবি সুকান্ত বলেছিলেন,
"প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি।"
জঞ্জাল সরেছে কি?
বিশ্ব শিশুর বাসযোগ্য হয়েছে কি?
সরেনি। হয়নি। আরো বেড়েছে! আরো জমেছে!
বাড়তে বাড়তে জমতে জমতে পাহাড় প্রমাণ
জঞ্জালে আজ নাভিশ্বাস উঠছে পৃথিবীর!
সেই পাহাড় প্রমাণ জঞ্জালে বিশ্বের সব শিশু
আজ চেয়ে আছে জুলজুল নিষ্পাপ চোখে পরম বিশ্বাসে
তাদের একমাত্র বিশ্বস্ত পরম আশ্রয় মায়ের মুখের দিকে!
কেন জঞ্জাল সরেনি? কেন হয়নি বাসযোগ্য? প্রশ্ন জাগে মনে!
প্রশ্ন জাগা কি অন্যায়? অপরাধ, অযৌক্তিক?
এ প্রশ্ন কাকে করবো? কে শুনবে?
শিশু জঞ্জালে জন্ম নেবে নাকি জঞ্জালে বড় হবে,
বিশ্ব শিশুর বাসযোগ্য হ'য়ে উঠবে কি উঠবে না
---কার আছে অন্তরে সেই বেদনা? সায়নাসের মত অসহ্য মাথাব্যথা?
যে বিশ্বাসে ভর ক'রে অসুস্থ কবি
দেখেছিল স্বপ্ন জঞ্জাল সরাবার
সেই বিশ্বাসের উত্তরসূরিরা কি রেখেছে
তাঁর সেই বিশ্বস্ত বিশ্বাসের মান?
সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত!
'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা'
--এই ভাবনা সবার!
কবির বিশ্বস্ত বিশ্বাস হয়েছে হচ্ছে প্রতিমুহূর্তে
ধর্ষিত বলাৎকৃত নির্ম্মম নিষ্ঠুর উল্লাসে!
কারো নেই সেই চরিত্র বিশ্বে যে চরিত্র
থামায় সেই উল্লাস বাঁচায় বিশ্বাস এই বিশ্বে।
কারো জানা নেই সেই পথ যে পথে যাবে সরে
পাহাড় প্রমাণ জঞ্জাল, হ'য়ে উঠবে বিশ্ব বাসযোগ্য
শিশু হাসি আনন্দে নিশ্চিন্তে যেথায় বাঁচেবাড়ে।
আজ যে মা শিশুর জন্ম দিল সেই শিশুর যত্নে সে বেসামাল।
তার বড় হওয়ার ভাবনায় চিন্তাময়, যত্নশীল।
কোথায় সেই পরিবেশ?
কোথায় সেই উপাদান বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার?
আজকের যে শিশু হাসি আনন্দে উঠছে বেড়ে
সে কি জানে চতুর্দিকে অপেক্ষা করছে
ঘোর আঁধার তার জন্যে ভবিষ্যতের তরে!?
সে কি জানে নিষ্পাপ হাসিমুখে টলোমলো পায়ে দিনরাত
এগিয়ে চলেছে যে সময়ের দিকে সেখানে অপেক্ষা করছে
তাকে গ্রাস করবে ব'লে গভীর ভয়ংকর এক খাদ!?
সে জানে না। সে শিশু। নিষ্পাপ এক দেব সন্তান!
কিন্তু মা!? মা কি জানে? বা জানার চেষ্টা করে?
সন্তান স্নেহে বাৎসল্যে সে ভাবে, কল্পনার রঙ্গিন বোনে জাল
প্রিয় আত্মজের জন্যে সকাল বিকাল!
সব বাবা মা-ই ভাবে, "সন্তান থাকুক মোর দুধেভাতে!"
কিন্তু বাস্তব কি বলে?
সন্তান থাকে ডুবে, সাঁতার কাটে
দুঃখের সাগরে দিনেরাতে!
মায়ের আদরের কলিজা কাঁদে
আলোহীন পথহীন আঁধারে একাকী।
কেন কাঁদে?
কাঁদে যেমনতেমনভাবে গোঁজামিলে মেলানো জীবন অঙ্কের ফলে!
কে দায়ী?
গোঁজামিলে বড় হ'য়ে ওঠা সেদিনের নিষ্পাপ শিশু
নাকি কুসংস্কারে সংস্কৃত মা?
গোঁজামিলে মেলাতে চায় শিশুর জীবন অঙ্ক মা
বাৎসল্য রসে ডুবে ডুবিয়ে সন্তানে তাবিজে মাদুলে
তুকতাক ঝাড়ফুঁকে বাবাজী মাতাজীর সাহচর্য্যে।
লাল হলুদ কালো নানা রঙের সুতো হাতে গলে
শনি রাহু কেতু জ্যোতিষ বিদ্যার হলুদ আলোর তলে
সফলতা চায় করতে হাসিল শিশুর আত্মবিশ্বাসকে পায়ে দ'লে।
আধুনিকা মা মানে না জীবন্ত ঈশ্বর মানে অমূর্ত ভগবানে!
মানে না জীবন্ত আদর্শ মানে অলীক মায়ায় ঘেরা শয়তানে!
আলোময় রুপময় রসময় বাঁচা বাড়ার
ঝলমলে পথ আছে যে জীবন্ত আদর্শে
সেই আদর্শের পথ চায় না নিতে নিষ্পাপ শিশুর মূর্খ মা
কুটকচালিতে ভরা রিপু তাড়িত অতি আধুনিকা
অতিবোদ্ধা বন্ধু ডাইনি মায়েদের কুপরামর্শে।
বাৎসল্যের নামে তাচ্ছিল্যে পালনে পোষণে থাকে মত্ত সন্তানে।
বাঁচা বাড়ার উল্টো চালে চ'লে
আনতে চায় সুন্দর সকাল শিশুর জীবনে!
আর, কবি সুকান্ত? সে কোন পথে আনতে চেয়েছিল
সুন্দর সকাল নিষ্পাপ শিশুর জন্যে?
কোন পথে চেয়েছিল সরাতে জঞ্জাল?
চেয়েছিল বাসযোগ্য ক'রে তুলতে বিশ্বকে শিশুর কোন পথে?
সে পথ কি ঈশ্বরের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা সাম্যবাদের পথ?
সে পথ কি ধর্মকে আফিম ব'লে প্রচার করা মিথ্যের পথ?
নাকি অন্য কোনও পথে? জানি না।
জানি না আমি তাঁর মনের অভ্যন্তরে
ছিল কিনা লুকিয়ে থাকা অন্য কোনও পথ।
তবে যে বাদ বা যে ইজম-ই থাকুক না কেন বিশ্বকে
ক'রে তুলতে শিশুর বাসযোগ্য
জীবন্ত ঈশ্বরের জীবনবাদ বা লাইফইজম ছাড়া
বাকী সব বাদ অসম্পূর্ণ ত্রুটিপূর্ণ উপভোগ্য।
নির্ভেজাল এই সত্য শিশুর মায়ের কাছে
মানা না মানা ব্যক্তিগত সম্পূর্ণ এক্তিয়ারভুক্ত।
কিন্তু এ-কথা রাখি যেন মনে দিন শেষে অবশেষে
ভুল আর মিথ্যে পথে বড় হ'য়ে ওঠা কালকের শিশুর
আজকের বুকের গহিনে চাপা পড়া কান্না যেন
বৃদ্ধা মায়ের বুকে না বাজে শয়নে স্বপনে জাগরণে।
কাঁচায় না নুইলে বাঁশ পাকায় ক'রে যেমন টাঁসটাঁস
ঠিক তেমনি সেদিনের ভুলের প্রায়শ্চিত্তের
আর থাকবে না সুযোগ সাথী হবে শুধু চোখে জল আর দীর্ঘশ্বাস।
মায়ের স্বপ্ন, 'মোর সন্তান থাকুক দুধেভাতে'
যেন চোখের জলে হ'য়ে একাকার অহরহ যেন
হ'য়ে হাহাকার না বাজে বুকের মাঝে দিনেরাতে
জানালার সামনে থমকে যাওয়া পৃথিবীকে
দেখতে দেখতে এ সংসার ছেড়ে যাবার আগে ।
শোনো ছোট্ট শিশুর মা!
বলি, মা! তুমি সাবধান!!
জীবন্ত ঈশ্বর দয়াল অনুকূল ডাকছে তোমায়
শোনো তুমি তাঁর কাতর আহ্বান!
জীবন খুঁজে পাবে সেথায় নিশ্চিত
তোমার আদরের প্রাণাধিক সন্তান!
( ২১শে জুলাই'২০২১)



Wednesday, July 19, 2023

কবিতার রিভিউ

চৌধুরীদা, 

মুগ্ধ হ'য়ে গেলাম!!!! '............পথিক সাবধান! পদক্ষেপ ভুল হ'লে পথের কি দোষ?' আমায় মোহিত ক'রে দিল!!!!! আর মোহিত অবস্থায় লিখে ফেললাম আপনার কবিতার একটা রিভিউ! আপনার কবিতার ঐন্দ্রজালিক মোহে আমি ঘেরাও হ'য়ে আছি। আর থাকতেও চাই অনেকক্ষণ!!!!

'ভুল' কত মানুষের জীবনকে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে! একটা ছোট্ট অথচ মারাত্মক ভুলে মানুষের জীবনে নেবে আসে ভোরেই বিকেলের ফুলের মত পরিণতি, অবস্থা! যার জীবনে যত ভুল কম তার জীবনে তত বেশী সুখ! 'ভুল' মানুষকে হাতছানি দিয়ে ডাকে অশরীরী প্রেতাত্মার মত! 'ভুল' মানুষকে ভুলিয়ে নিয়ে গিয়ে ভুলভুলাইয়ার গহ্বরে নিয়ে ফেলে আর ভুল পদক্ষেপে কুকর্ম্মে জড়িয়ে দেয় আষ্ঠেপৃষ্ঠে! তাই সত্যিই আমিও বলি কবির মতন সঙ্গে একটু সংযোজন ক'রে, 'প্রণয়ের পথিক শুধু নয়, সবাইকে বলি, সাবধান!

এবার বলি, এই জীবনে ভুলে মারাত্মক ভাবে দগ্ধ বহু পরিচিত-অপরিচিত জনের মুখে বলতে শুনেছি, এর থেকে কি বাঁচার কোন উপায় নেই? কবির কবিতার পথ ধরে হাটতে হাটতে বলি, কি আর করা যাবে। পদক্ষেপ যখন ভুল হয়েই গেছে, ফিরে আসা যদি আর নাই হয় তখন মাঝপথে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে কি লাভ আর কি লাভ মাঝপথে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে? কথায় আছে ভাবিয়া করিয়ো কাজ, করিয়া ভাবিয়ো না। ভেবে যখন কাজ করা হয়নি তখন ভুল ক'রে ফেলার পর আর সেই ভুল ভেবে ভেবে ক্লান্ত, হতাশ, আর বিধস্ত না হ'য়ে একবার আকাশের দিকে মুখ তুলে কান্নায় বুক ফাটো ফাটো ক'রে 'হে ঈশ্বর ক্ষমা করো আর বাড়িয়ে দাও তোমার বরাভয় হাত' ব'লে দু'হাত বাড়িয়ে দাও তাঁর দিকে আর গভীর বিশ্বাসে শেষবারের মত উঠে দাঁড়াও শরীরে-মনে সর্ব্বশক্তি নিয়ে। তারপর গভীর বিশ্বাসে ঐ দশদিক ঘেরা মোহের ইন্দ্রজালকে ছিড়ে ফেল দু'হাত দিয়ে একটানে এক নিশ্বাসে আর এগিয়ে যাও তাঁর নামে ধ্বনি দিতে দিতে সামনের দিকেই। দেখবে সামনের ঐ নরকের পথ তাঁর নামের ইন্দ্রজালে অদৃশ্য হ'য়ে স্বর্গের পথ খুলে গেছে, সামনের ঘোর অন্ধকার কেটে গিয়ে ফুটে উঠেছে ভোরের নরম স্নিগ্ধ আলো কোন জাদুবলে আর সামনের নিশ্চিত শ্মশান ঢেকে গেছে স্বর্গের পারিজাত গাছের ফুলে ফুলে!!!!!!!!!!!!!!! জীবন থেকে পালিয়ে গেছে কোন মন্ত্রবলে শয়তান!!!!!!!!! বন্ধু, পথের কোন দোষ নেই একথা ঠিক, যেমন ঠিক কবির কথা 'পদক্ষেপ ভুল'। শুধু সাবধান ক'রে দিই বন্ধু, তাঁর দয়ায় নিশ্চিত মৃত্যুকে জয় ক'রে তোমার ভুল কর্ম্মের জন্য অনুতাপ ক'র কিন্তু সাবধান আবার দ্বিতীয়বার যেন পদক্ষেপ ভুল ক'রে অনুতপ্ত হ'তে না হয়! কারণ দ্বিতীয়বার ভুলে নিশ্চিত মৃত্যু!!!!

এই প্রসঙ্গে The greatest phenomenon of the world Sri Sri Thakur Anukul Chandra-এর একটা কথা মনে পড়ে গেল "Repent, but see that you have not to repent again. When you will be repentant for your misdeeds, at that very moment you will be pardoned by the Supreme Father, and you will understand it by the heavenly consolation you find in your heart. That will make you courteous, peaceful and cheerful. It should be understood that he who repents but commits the same blunder again, must fall soon into deadening misery. To repent in words only is not repentance at all. It is rather an obstruction to feeling repentance at heart. When real repentance comes, all its signs express themselves in varying degrees."

(অনুতাপ কর; কিন্তু স্মরণ রেখো যেন পুনরায় অনুতপ্ত হ'তে না হয়। যখনই তোমার কুকর্ম্মের জন্য তুমি অনুতপ্ত হবে, তখনই পরমপিতা তোমাকে ক্ষমা করবেন, আর ক্ষমা হ'লেই বুঝতে পারবে, তোমার হৃদয়ে পবিত্র সান্তনা আসছে, আর তাহ'লেই তুমি বিনীত, শান্ত ও আনন্দিত হবে। যে অনুতপ্ত হ'য়েও পুনরায় সেই প্রকার দুষ্কর্ম্মে রত হয়, বুঝতে হবে সে সত্বরই অত্যন্ত দুর্গতিতে পতিত হবে। শুধু মুখে-মুখে অনুতাপ অনুতাপই নয়, ও আরও অন্তরে অনুতাপ আসার অন্তরায়। প্রকৃত অনুতাপ এলে তা'র সমস্ত লক্ষণই অল্পবিস্তর প্রকাশ পায়।)
(লেখা ২০শে জুলাই'২০১৪)

তামজিদ চৌধুরী
জীবন না যদি ফেরে আর-
মাঝ পথে গিয়ে,
ঠায় কি দাঁড়িয়ে থাকা যায়?
যদি ঘেরা থাকে দশ দিক-
ঐন্দ্রজালিক মোহে,
প্রনয়ের পথিক সাবধান!
পদক্ষেপ ভুল হলে-
পথের কি দোষ?

প্রবন্ধঃ কোথায় পাবো তাঁরে!?

সকাল হ'তে না হ'তেই একরাশ দুঃখের অন্ধকার নিয়ে হাজির হ'লো নিভে যাওয়া সূর্য। মনে মনে বিরক্ত হ'লেও মুখে তা প্রকাশ করলাম না। সবে দিন শুরু হয়েছে, হাতে অনেক কাজ; তদুপরি সকাল সকাল কারও মনাকাশে দুঃখের মেঘ দেখতে কারই বা ভালো লাগে। যাই হ'ক, অনেকদিন পর পুরোনো বন্ধু বাড়ি এসেছে তাই ঘরে ডেকে নিয়ে বসালাম। কিছুক্ষণ চুপ ক'রে থাকার পর নীরবতা ভেঙে সূর্য মুখ তুলে বললো, কেমন আছিস? ভালো আছি, বলতেই সূর্য বললো, বেশ আছিস না! কথাটায় যেন একরাশ বিস্ময় ঝ'রে পড়লো, ফুটে উঠলো চোখেমুখে। তারপর চললো টানা গল্প। গল্পের সিঁড়ি বেয়ে একে একে উঠে এলো পুরোনো দিনের নানা গল্প, নানা কথা। উঠে এলো যৌবনের পাগলা ঘোড়ায় চেপে ছুটে বেড়ানো সেই পুরোনো দিনের কথা; তারপর ঘর, সংসার, স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, চাকরী ইত্যাদি ইত্যাদি। আলোচনার মাঝপথে দেখলাম নিভে যাওয়া সূর্যের মুখের ছবি। ক্রমশঃ আরও ফ্যাকাশে হ'য়ে যেতে লাগলো সূর্যের মুখ যখন দাম্পত্য জীবনের সিঁড়িতে এসে দাঁড়ালো সকালের আড্ডা। মনটা বিষন্ন হ'য়ে গেল সকালের ঝলমলে আলোয়। ইতিমধ্যে স্ত্রী এসে চা-নাস্তা দিতে দিতে জিজ্ঞেস করলো, কেমন আছেন সূর্যদা? ম্লান হেসে সূর্য কাঁপা কাঁপা গলায় বললো, ভা-ভালো। তারপর ছেলেমেয়ে কেমন আছে, কি করছে, বৌদি কেমন আছে ইত্যাদি নানা কথার শেষে স্ত্রী বললো, একদিন বৌদিকে নিয়ে আসুন না, অনেকদিন দেখা সাক্ষাৎ হয়নি। সূর্য ক্লান্ত চোখ মেলে মুখ তুলে শুধু নীরব চেয়ে রইলো।
তারপর এক দীর্ঘ আলোচনা শেষে নিভন্ত সূর্য আবার নূতন ক'রে জ্বলে ওঠার প্রেরণায় আবার আসবে ব'লে উঠে দাঁড়ালো। হাসি হাসি মুখে ফিরে গেল সূর্য। আমি আমার দাম্পত্য জীবনের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে চেয়ে রইলাম সূর্যর চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে আর ভাবলাম...............

'বিবাহ' মানে বিশেষভাবে বহন। চার হাত মিলনের প্রথম দিন থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রী পরস্পর পরস্পরকে পারিপার্শ্বিক সহ বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার পথে বিশেষভাবে বহন করে নিয়ে যাবার নামই বিবাহ। নারী-পুরুষের গতানুগতিক, নূতনত্ববর্জিত, মামুলি একসঙ্গে থাকা, সময় কাটানো, দৈহিক মিলন, সন্তান জন্ম ইত্যাদির নাম বিবাহ নয়। নিজের অনিয়ন্ত্রিত বৃত্তি-প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণ, ভোগ বিলাসিতা, বাসনা-কামনা মেটানোই 'বিবাহ' নয়। 'বিবাহ' একটা বন্ধন, বিবাহ একটা প্রবাহ, বিবাহ একটা ধারা যা দুজন অপরিচিত নারী-পুরুষকে নিরন্তর আরো থেকে আরোতর সর্বাঙ্গীণ শ্রীবৃদ্ধির পথে নিয়ে যায় নির্মল, নির্ভেজাল, নিঃস্বার্থ প্রেম-ভালোবাসার অটুট বাঁধনে বেঁধে নিয়ে। সফল বা সার্থক বিবাহিত গৃহস্থ-জীবনের এ হেন তুক, কৌশল লাভ হয় বিবাহ পূর্ববর্তী ' পারিপার্শ্বিক বেঁচে থাকা বেড়ে ওঠা'র প্রকৃত শিক্ষা লাভের মধ্যে দিয়ে। যে শিক্ষাদান, শিক্ষাদানের প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাদাতা আজ বিলুপ্ত।

তাই সুখী আনন্দময় বিবাহিত জীবনের বা দাম্পত্য জীবনের জন্য, সুখী সংসারের জন্য হঠাৎ এক ঝলক দখিনা বাতাসের প্রয়োজন। যে বাতাস জীবনকে দমবন্ধ অসহনীয় পরিবেশ থেকে মুক্তি দিতে পারে।
কোথায় পাবো সেই বাতাস?

মহাসিন্ধুর ওপার থেকে ভেসে আসছে সেই বাতাস আর বাতাসে ভেসে আসছে সেই ধ্বনিঃ

তমসার পার অচ্ছেদ্যবর্ণ মহান পুরুষ ইষ্টপ্রতীকে আবির্ভূত!
যদবিদাচরণে তদুপাসনাতেই ব্রতী হই,
জাগ্রত হও, আগমন কর,
আমরা যেন একেই অভিগমন করি।

কোথায় পাবো তাঁরে?
"খুঁজতি থাকো মণি, খুঁজতি থাকো! কোথায় ডুব দিয়ে কোথায় ভাসি ওঠে তার ঠিক কি!! খুঁজতি থাকো মণি, খুঁজতি থাকো !!!!!! "
( লেখা ২০শে জুলাই'২০১৭)

চিঠিঃ আমার ফেসবুক বন্ধুরা!

জানার ইচ্ছা থেকে এই চিঠি পোষ্ট। বিশেষ ক'রে আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড সার্কেলে যারা মুসলিম বন্ধু আছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা ক'রে জানতে চাই বীথি আখতারের আঁকা পোষ্ট নিয়ে বিতর্ককে কেন্দ্র ক'রে ওঠা প্রশ্নগুলি সম্পর্কে। প্রায় সময় এই শিল্পীর আঁকা সুন্দর সুন্দর ছবি দেখতে পাই। আর পোষ্টের সঙ্গে দেখতে পাই আঁকা ছবিকে নিয়ে ফেসবুকে মুসলিম পাঠকদের পোষ্ট বিরোধী মন্তব্য। তারা পোষ্টে মন্তব্য করছেন ইসলামে ছবি আঁকা নিষিদ্ধ, হারাম, অন্যায় ইত্যাদি কিন্তু কেন নিষিদ্ধ, কেন হারাম, কেন অন্যায় সেগুলি তুলে ধরার প্রয়োজন মনে করছে না এবং এই হারাম, নিষিদ্ধ প্রসংগে স্বয়ং হজরত রসুল কি বলেছেন তারও কোনও প্রামাণ্য বক্তব্য তুলে ধ'রে তাদের মন্তব্যকে জোরালো ক'রে তুলতে পারেননি। শুধু হাওয়াই ভাসিয়ে দেওয়া মন্তব্যের উপর নির্ভর ক'রে নিজেকে ও অন্যদেরও বিভ্রান্তির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তাই পোষ্টে উঠে আসা বীথি আখতারের বিভিন্ন ছবি আঁকার বিরুদ্ধে মন্তব্য সম্পর্কে আমার কৌতুহলি কয়েকটি প্রশ্ন। প্রশ্ন আমার ফেসবুক মুসলিম বন্ধুদের কাছে। অন্য সম্প্রদায়ের বন্ধুদের কাছে যদি উত্তর থাকে তাহ'লেও স্বাগতম। দয়া ক'রে যদি ফেসবুকে গুণী বন্ধুরা এই আলোচনায় যুক্তিসঙ্গত অংশগ্রহণ করেন তাহ'লে সমৃদ্ধ হ'ই। নমস্কার।
প্রশ্নঃ
১) সত্যি সত্যিই কি ইসলামে ছবি আঁকা নিষিদ্ধ?
২) ইসলাম কি মানুষের বা জীবদের ছবি আঁকা অনুমোদন করেন না?
৩) হজরত রসুল কি ছবি আঁকা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন?
৪) ইসলামে ছবি আঁকা হারাম?
৫) ইসলামে যদি ছবি আঁকা নিষিদ্ধ হ'য়ে থাকে বা হজতর রসুল যদি ছবি আঁকা নিষিদ্ধ ঘোষণা ক'রে থাকেন বা ছবি আঁকা হারাম ব'লে থাকেন তাহ'লে কেন ছবি আঁকা হারাম? কেন নিষিদ্ধ? এর পিছনে কারণ কি? কোন অন্তর্নিহিত মঙ্গল কারণের জন্য হজরত রসুল এই বিষয়ে সতর্কতা জারী করেছেন?
৬) কোরানে এর স্পষ্ট উল্লেখ আছে কি?
৭) অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ একমাত্র প্রামাণ্য ধর্মগ্রন্থ গীতা, ত্রিপিটক, বাইবেল, চৈতন্য চরিতামৃত, কথামৃত-এ কি এর সমর্থনে কিছু বলা আছে? অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন।
প্রশ্ন ক্রমশঃ
আসুন উপরিউক্ত প্রশ্নে একটু আলোচনার গোলটেবিলে বসা যাক। ছবি সুন্দর কি সুন্দর নয় এখানে সেটা আলোচনার বিষয় নয়। বিষয় বীথি আখতারের আঁকা ছবি নিয়ে প্রায়শই উঠে আসা বিরোধী মন্তব্যের গভীরতা ও সারতা নিয়ে। যারা মানবতাবাদী ও সত্যি সত্যিই মানবজাতিকে অজ্ঞানতার গভীর অন্ধকার থেকে বের ক'রে এনে জ্ঞানের আলোর সন্ধান দিতে চান, জ্ঞান সমুদ্রে অবগাহন করাতে চান সেই প্রণম্যদের কাছে আবেদন আসুন একটু স্বাস্থ্যকর মতামত শেয়ার করি। কারণ জ্ঞানই পারে মানুষকে অজ্ঞানতা থেকে মুক্তি দিতে। আর কথায় আছে, Knowledge rules the world এবং "অজ্ঞানতাই দুঃখের কারণ।"
( ২০শে জুলাই'২০২১)

Tuesday, July 18, 2023

কবিতাঃ হামিম ফারুকের প্রতি.........

রক্ত মাংসের বুকে কাঁপন ধরে!?
এ যে পাষান হৃদয়।
এরই তরে ফারুকের হৃদয় কাঁপে,
ভাবাবেগে হয়ে ওঠে মন সদয়।
রোবোটিক বুকে প্রেম ভালোবাসা!!!!!!!
বৃথা আর বেকুবী এ চাওয়া!!!
ওখানে সুক্ষ্ম অনুভুতির জায়গা নেই কোনো,
ফারুক শান্ত হও, হও সমাহিত।
বন্ধু তোমায় ডাকিছে, আমার কথা শোনো
জীবন নিয়ে ছিনিমিনি আর হত্যার চুলকুনি-র
তীব্র ঝাঁঝালো বিষে দহিছে যে কায়!
কেউ আছে এমন এ পৃথিবীতে?
যে দেবে শান্তির উপায়!!!!!!!!!!!!!!
শুনতে পাচ্ছ-ও-ও-ও??????
কেউ আছো-ও-ও-ও এমন??????????????

Sunday, July 16, 2023

প্রবন্ধঃ বাংলা ও বাঙালি!

বাংলা ও বাঙালীর আজ একি অবস্থা! টিভি খুললেই গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ের একই দৃশ্য। টিভি আজ মানসিক যন্ত্রণা ও রক্তচাপ বাড়াবার, মানসিক অবসাদে ডুবে যাবার মোক্ষম মাধ্যম! যদি ধীরেধীরে রক্তচাপ বাড়াতে চাও, মানসিক অবসাদে চাও চুপি চুপি চাও শিকার হ'তে তাহলে নাও টিভি সিরিয়াল আর নিউজ চ্যানেলকে বুকে জড়িয়ে! কি অনায়াসে, অবলীলায়, অবহেলায় টিভি চ্যানেলে চ্যানেলে ঘর ভাঙার, সমাজ সভ্যতা ভাঙার সিরিয়াল হ'য়ে চলেছে! মিথ্যার বেসাতি ক'রে চলেছে নিউজ চ্যানেলে চ্যানেলে বাংলার বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়! মানুষ ও সমাজের বৃহত্তর স্বার্থকে বলাৎকার ক'রে নির্দ্বিধায় নিজ ক্ষুদ্র স্বার্থকে অতি যত্নে লালন পালন ক'রে চলেছে নির্লজ্জের মত বাংলার সব ক্ষেত্রের এলিট সমাজ!
হায়! বাংলা ও বাঙালি! বাংলার বুকে আজ বাংলা তথা দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় বাঙালি বাঙালির দ্বারা লাঞ্ছিত, কলঙ্কিত, নিন্দিত, উপেক্ষিত, বঞ্চিত!!!!!!! বাংলা কি আজ তার ঐতিহ্য হারিয়ে গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে চলেছে? কোনোদিনই কি আর ফিরে আসবে না বাংলা ও বাঙালির সেই গৌরবময় দিনগুলি!? কোনোদিনই কি আর দেখতে পাবে না, জানতে পারবে না বাংলার আগামী প্রজন্ম বাংলার ঐতিহ্যাশালী ইতিহাসের সেই গৌরবময় অধ্যায়!? বাংলার বুকে কি আর সেই মহান জগৎ বিখ্যাত বাঙালির পদচিহ্ন পড়বে না!? দেখা কি যাবে না আর সেই সোনার দিনের সোনার বাংলার সোনার ছেলেদের মত বাংলার আকাশে সোনার মত উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক-এর ঝলক!? শোনা কি যাবে না আর তাঁদের পদধ্বনি!? আজকের প্রজন্ম কি নিয়ে বাঁচবে!? আগামী প্রজন্ম কার বা কাদের হাত ধ'রে বাঁচা-বাড়ার স্বপ্নে বিভোর হ'য়ে মহাসিন্ধুর ওপার থেকে ভেসে আসা সঙ্গীতের সুরে গেয়ে উঠবে নবজীবনের গান!? এ যে এক ঘোর অন্ধকারের ঘন মেঘ ঢেকে দিয়েছে বাংলার আকাশ, বিষ নিঃশ্বাস বিষাক্ত ক'রে তুলেছে বাংলার বাতাস!!!!! কোথায় যাবে আজ বাংলা, কি করবে বাঙালি!? আজকের প্রজন্মকে যদি বলা হয় বর্তমান বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণকারী বাঙালি মহামানবদের নাম স্মরণ করার, যদি বলা হয় একজনের নাম বলো, পারবে? পারবে না!!!!! সেই ঘুরে ফিরে 'থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোড়' করার মত রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দের নাম বলেই শেষ আজকের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত প্রজন্ম!!!! অনেকে তাও জানে না! কেন এমন হ'লো? কেন এমন অবক্ষয়, বিপর্যয়!? যে খাঁটি আর্য্য রক্তধারা ব'য়ে চলেছিল বাঙালির রক্তে সেই রক্ত এত দূষিত, এত অপবিত্র!? এত বেইমানি আর অকৃতজ্ঞতার বদরক্ত ব'য়ে চলেছে আর্য্য কৃষ্টিতে সিক্ত, জারিত করা বাঙালীর রক্তে!? কেন এমন হ'লো!? কেন বাঙালি আজ উপেক্ষিত, অপমানিত!? কার দোষ? কে দায়ী?

আসলে এটা দেখা গেছে ব্রিটিশ পূর্ব ও পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে যে কোন বিষয়ে বাঙ্গালীদের উত্থান অন্যদের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাঙ্গালীদের শৌর্য, বীর্য, মেধা, মননশক্তি, লড়াকু মনোভাব হজম করতে পারেনি ব্রিটিশ শাসিত ভারতে রাজশক্তি ও স্বাধীনতার লড়াই-এ যুক্ত চালিকাশক্তি।

কিন্তু ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। যেমন সুভাষচন্দ্র বাঙ্গালী হলেও জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্ব্বিশেষে সবার নেতাজী হয়ে উঠেছিলেন। সেই উত্থান বিশ্বশক্তি মেনে নিতে পারেনি। আজও তার রেশ বয়ে চলেছে। পৃথিবীর মানচিত্রে 'বাংলাকে' রাষ্ট্র হিসাবে চিহ্নিত করার রুপকার দেশপ্রেমিক মুজিবর রহমানকে দেশপ্রেমিক মাত্রই সবাই সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করে; কিন্তু এর চরম মূল্য দিতে হয়নি কি? রবীন্দ্রনাথ বিশ্বকবি, পৃথিবীর সমস্ত ভাষাভাষির সংস্কৃতিমনস্ক মানুষ তাঁকে ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে কিন্তু তাকেও বুর্জোয়া কবি আখ্যা পেতে হয়েছে। কাজী নজরুল ইসলাম ভারতের স্বাধীনতার লড়াই, ধর্ম্ম, ঈশ্বর সমস্ত বিষয়ে 'বাংলা ও বাঙ্গালী'র প্রতীক, পৃথিবীর মানব সভ্যতার বুকে উজ্জ্বল ধ্রুবতারা সেই মানবতার পূজারি, পরিপূর্ণরুপে আত্মসমর্পণকারী ঈশ্বর প্রেমিক নজরুলকেও যবন, কাফের আখ্যা পেতে হয়েছিল।

আসলে বাঙ্গালীর অফুরান জীবনী শক্তিকে ভয় পায় না এমন শয়তান জগতে নেই আর সেই জীবনী শক্তিকে সমীহ করে, শ্রদ্ধা করে, ভালোবাসে, পুজা করে জগতের সমস্ত ভগবান। বাঙ্গালীকে বুঝতে হবে বাঙ্গালীর রক্তে বয়ে যাচ্ছে আজও পবিত্র আর্য্য রক্তধারা। বাঙ্গালী সহনশীল, বাঙ্গালী উদার; বাঙ্গালী প্রেমিক, বাঙ্গালী মজাদার। বাঙ্গালী দুরন্ত, বাঙ্গালী যোদ্ধা; বাঙ্গালী বীর, বাঙ্গালী বোদ্ধা। বাঙ্গালী পরাক্রমী, বাঙ্গালী শক্তিমান; বাঙ্গালী বরেণ্য, বাঙ্গালী রুচিবান। এই-ই তো বাংলা ও বাঙ্গালীর বৈশিষ্ট্য।

এই কথা ভুলে গেল কি ক'রে বাঙালি!! কি ক'রে পদস্খলন হ'লো এমন ঐতিহ্যের গরিমা থেকে!? এখনকি ভাবার সময় আসেনি!? এখনও কি ঘুরে দাঁড়াবার সময় আসেনি!? এখনও কি সময় আসেনি স্মৃতিবাহী চেতনা শক্তিকে জাগাবার!? এখনও কি বাঙালী তার কাঁকড়ার চরিত্র ত্যাগ ক'রে উঠে দাঁড়াবে না!? এখনও কি বাঙালী নিজেদের অতীত উজ্জ্বল গৌরবকে ফিরিয়ে আনতে নিজের বিবেকের আয়নায় মুখ দেখবে না!? দেখবে না নিজের ক্ষতবিক্ষত দগদগে পুঁজ রক্তে ভরা ঘিনঘিনে ঘায়ে ভরা চরিত্রের দিকে!? আদর্শহীন বৃত্তি-প্রবৃত্তির রসে ডুবে থাকা দলদলে জীবন থেকে কি আর কোনোদিনই ফিরে আসবে না বাঙালী!! তাহ'লে কি এটাই ধ'রে নিতে হবে যে গোটা বাঙালী জাতি আজ বায়োলজিক্যালি ডিফেক্টের শিকার!? জন্মবিজ্ঞানে গলদ ঢুকে গ্যাছে!?

তাই বাংলা ও বাঙ্গালীর কুৎসা, নিন্দা, অপবাদ, সমালোচনার একটাই জবাব, আরো আরো দুরন্ত দুর্দমনীয় বেগে বাংলা ও বাঙ্গালীর বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন রেখে জগৎ সভায় ধর্ম্ম, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, কৃষি, শিল্প, বিজ্ঞান, রাজনীতি, সমাজনীতি ইত্যাদি সমস্ত দিক দিয়ে বিধির বিধান মেনে বাংলা ও বাঙ্গালীর উত্থান তীব্র হ'ক, মজবুত হোক, দৃঢ় হোক। আসুক আরো আরো আরো জয়, জয়, জয়!!!!!!!!!!!

(লেখা ১৭ই জুলাই ২০১৯)

Wednesday, July 12, 2023

কবিতাঃ দাও আশ্রয়!

তোমায় ভালোবাসি, খুব ভালোবাসি।
ভালবাসতে ইচ্ছে করে তাই ভালোবাসি।
কিছু পাওয়ার বিনিময়ে তোমায় ভালোবাসি?
তুমি আমায় ভালোবাসবে ব'লে ভালোবাসি?
তোমায় ভালোবেসে আমি ঠকবো ভেবে
তোমায় কি আমি ভালোবাসি?
তোমায় ভালোবেসে যদি আঘাত পাই
তাই ভেবে কি তোমায় ভালবেসেছি?
তোমায় ভালোবাসতে গিয়ে কি হিসেব ক'রে পা ফেলেছি?
না! কোনোটাই না! আমার যে ভালবাসতে ইচ্ছে ক'রে
তাই আমি তোমায় ভালোবাসি।
ভালোবাসি শর্তহীন, প্রত্যাশাহীন।
ভালোবাসার বিনিময়ে আমার কোনও চাহিদা নেই,
নেই কোনও পাওয়ার আশা।
ভালোবাসার বাসায় আমার থাকতে ভালো লাগে অহরহ রাত্রিদিন
তাই আমি তোমায় ভালোবাসি।
ভালোবাসার রসে সিক্ত মনপ্রাণ নেশাগ্রস্থ আমি
আমি তোমায়, তোমার সবকিছুকে ভালোবাসি।
বিনিময়ে কোনদিন কিছু চাইনি, চাইবোও না তোমার কাছে।
তুমি কি আমায় ভালোবাসবে না?---একথাও কোনদিন তোমায়
আমি বলবো না।
তুমি আমায় ভালোবাসবে কি ভালোবাসবে না,
গ্রহণ করবে কি প্রত্যাখ্যান করবে
সে কথা ভেবে তো তোমায় আমি ভালোবাসিনি!
আমি তোমায় ভালোবাসি, তোমার সব কিছু ভালোমন্দ, সুখদুঃখ,
আলোআঁধার সব কিছু নিয়ে যে আমি তোমায় ভালোবেসেছি!
আমার ভালোবাসায় তো কোনও ফাঁকফোকর নেই!
নেই কোনও লখীন্দরের বাসর ঘরের চুলের মত সরু ছিদ্র!
আমি তোমায়, তোমার ও তোমার চারপাশের সবকিছুকে ভালোবাসি,
ভালবাসতে চাই তোমায় পরম স্নেহে পরম মমতায়
প্রত্যাশাহীন স্বার্থহীন গভীর ভালোবাসায়।
কারণ আমি যে তোমার,
পরম ভালোবাসার গর্ভস্থ সন্তান!
কিন্তু জানি না আমি সেই ভালোবাসার মত
আমি তোমায় ভালবাসতে পারি কিনা!
মাঝে মাঝে ভাবি হে দয়াল!
হে পরমপ্রেমময়! হে ভালোবাসাময় মহাসমুদ্র!
তুমি তোমার ভালোবাসার মহাসমুদ্রে
যেথায় জীবন খুঁজে পাবো
সেথায় আমায় টেনে নাও, দাও আশ্রয়!
(লেখা ১৩ই জুলাই'২০২১)

Tuesday, July 11, 2023

চিঠিঃ রাজু শিলক রাজুকে খোলা চিঠি।

প্রকাশ দা শ্রী শ্রী ঠাকুরের একটি দিব্য বাণী আছে যা আপনি কখনও চোখ বোলাননি মনে হয়। আপনি দাড়ি রেখে বেশ ভদ্র গোছের হ য়ে গেছেন ম নে হ য়। কিন্তু ভাষা আপনার খুব সুন্দর; পুরুষ্কার পাওয়ার যোগ্য আপনি। পাশে যদি আমি বা আমরা থাকতাম তাহ লে সম্মানি মালা পড়িয়ে দিতাম। ঠাকুরের বাণীটি হল "কাউকে যদি বলিস কিছু সংশোধনের তরে গোপনে তা বুঝিয়ে বলিস সমবেদনা ভরে।" আপনারা যারা বড়দা,অশোকদা,বাবাইদা ও অবিনদা শিষ্য তারা আবার ঠাকুরের বাণীর দিকে খেয়াল ক রে না তাই বল্লাম ভালো থাকবেন। জয়গুরু।----রাজু শিলক রাজু।


রাজু শিলক রাজু ,
আমার সঞ্জয় কান্তিদের উদ্দেশ্যে লেখা আমার আগের পোষ্টে আপনার কমেন্ট পড়লাম আর সেই কমেন্ট এখানে উপরে তুলে দিলাম সকলের অবগতির জন্য; সঙ্গে আপনাকে আমার খোলা চিঠি পাঠালাম।
আপনি ঠিকই বলেছেন কথাটা, তবে একটু বেঠিক আছে তা' হ'ল ঠাকুরের একটা নয় হাজার হাজার বাণী আছে যা আমার চোখে পড়েনি এবং আরও পরিস্কার ক'রে বললে যেটা বলতে হয় তা হ'ল আপনারও চোখে পড়েনি আর যদি তাঁর বাণীর মধ্যে কোনও কোনও বাণী আপনার চোখে পড়েও থাকে সেই বাণী আপনার মর্মে পৌছোয়নি। চোখে পড়লে কিম্বা মর্মে পৌছোলে তার বহির্প্রকাশ হ'তো আপনার জীবনে; যা আপনার এই কমেন্টের কোথাও সেই মর্মে পৌঁছনোর সামান্যটুকু আলো ফেলেনি। আমি যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমার ঐ সঞ্জয় কান্তিদেদাকে লেখা চিঠিটা পোষ্ট করেছিলাম সেই উদ্দেশ্যটা আমি আমার করা পোষ্টের উত্তরে গগনদা যে কমেন্ট করেছিলেন সেই কমেন্টের উত্তরে লিখেছিলাম। আমার সেই উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। আপনি সঞ্জয় কান্তিদার লেখার গুণমুগ্ধ পাঠক আলোচনার টেবিলে এসেছেন। আর আলোচনার টেবিলে এসেই প্রমাণ ক'রে দিয়েছেন আপনি কতটা অকপট ঠাকুর প্রেমিক!!!!!!!!!!
রাজু শিলক রাজু, আপনি আলোচনার টেবিলে এসে কি প্রমাণ করলেন? আপনি ঠাকুরের বাণী তুলে বললেন যদি কাউকে সংশোধন করতে হয় তাহ'লে ঠাকুর বলেছেন তা' গোপনে বুঝিয়ে বলতে আর সমবেদনা ভরে বলতে। আপনি নিজে কি করলেন? কথায় আছে, 'আপনি আচরি ধর্ম, পরেরে শেখায়।' আপনি নিজেই প্রমাণ করলেন আপনার নিজের চরিত্র বা জীবন কতটা আচরণশীল আর কতটাই বা 'মুখে মারিতং জগত'!!!!!!!!! আপনি লিখেছেন, ঠাকুরের একটা দিব্য বাণী আছে, যে বাণীটাতে আমি চোখ বোলাইনি; কিন্তু বাণীটা উল্লেখ ক'রে আপনি প্রমাণ করলেন আপনি বাণীটার উপরে বেশ ভালোমতই চোখ বুলিয়েছেন!!!!!! চোখ বুলানোর নমুনাটা কিরকম? তা' রাজু শিলকদাদা 'দিব্য বাণী'র দিব্য বলতে কি বুঝায়? নিশ্চয় জানেন? নাকি লেখার হয় লেখেন? কমেন্ট পড়েতো তা মনে হয়না মানে বুঝে লেখেন। কারণ সহজ কথায় দিব্য মানে যদি সুন্দর, স্বর্গীয় বোঝায় তাহ'লে আপনার কমেন্টের মধ্যে তো তা' ফুটে উঠলো না!!!!!!! ঠাকুরের বাণী যেটা আপনি উল্লেখ করেছেন সেই বাণীটা সত্যিই সুন্দর, মনোহর, স্বর্গীয় কিন্তু আপনার হাতে পড়ে সেই বাণীটার বলাৎকার হ'য়ে তার মর্যাদা হারালো না-কি? কিরকম মর্যাদা হারালো? পরবর্তীতে দেখুন হারানোর রকমটা।
রাজু শিলক রাজু, আপনি মিডিয়ার মধ্যে দিয়ে প্রকাশ্যে ঠাকুরের বাণীটাতে বলা 'গোপনীয়তা ও সমবেদনা ভরে বুঝিয়ে বলা' এই নির্দেশগুলি কি সুন্দর ভাবে Maintain করলেন; তাই না? বাহবাঃ কি সুন্দর আপনার গোপনীয়তা ও কি সুন্দর আপনার সমবেদনা নিয়ে বুঝিয়ে বলা!!!!! হ্যাটস অফ আপনাকে। আপনি কি বললেন প্রকাশ্যে? প্রকাশ্যে আমার দাড়ি রাখা চেহারা নিয়ে, ভদ্র হওয়া নিয়ে কি সুন্দর টিপ্পনী কাটলেন!!!!! কি সুন্দর আপনার জীবনে, আপনার কথায় ঠাকুরের জীবনের প্রতিফলন!!!! তাই না? আমিও কিন্তু আপনার চেহারা নিয়ে, আপনার মুখশ্রী নিয়ে 'ক্যাপশান' ফিরিয়ে দিতে পারতাম আর সে ক্ষমতা আমার আছে কিন্তু ঠাকুরের শিক্ষা আমাকে তা' করতে বাধা দিয়েছে। আপনি লিখেছেন আমার লেখার ভাষা আপনার কাছে এত সুন্দর পুরস্কার যোগ্য মনে হয়েছে যে আপনি বা আপনারা পাশে থাকলে সম্মানী মালা পড়িয়ে দিতেন। কে কাকে সম্মানী মালা পড়ায় রাজু শিলকদাদা? আপনি কার হ'য়ে কলম ধরেছেন? সঞ্জয় কান্তি দে-র হ'য়ে? সঞ্জয় কান্তিদার যে লেখার উপর আমি আমার পোষ্ট করা লেখাটা লিখেছিলাম সঞ্জয়দার সেই লেখাটা পড়েছিলেন? জানি না পড়েছিলেন কিনা। কিন্তু আপনার এই মন্তব্য পড়ে এটা বুঝতে অসুবিধা হয় না যে আপনিও সঞ্জয়দার গোত্রের। তাই সঞ্জয় কান্তিদে দাদার ঠাকুর পরিবার বিরোধী জঘন্য, ঘৃণ্য লেখাটা আপনার ভালো লেগেছে আর আমার লেখাটায় আপনার গাত্রদাহ হয়েছে এবং হচ্ছে। কারণ আপনিও ঠাকুর পরিবার বিরোধী শয়তানের সহচর। আর তাই আমার চেহারা নিয়ে কটুক্তি করতে আপনার রুচিতে বাধে না, আমাকে শয়তানি কাঁটার মালা পরাতে পারলে আনন্দে লম্ফ দিয়ে ঝম্প মারতেন। কিন্তু ঝম্প মেরে কোথায় গিয়ে পড়তেন তা' কিন্তু আপনি বা আপনারা জানেন না। ঠাকুরের কথা ভাঙিয়ে মুখে মারিতং জগত দর্শনে জীবন চালানোর জন্য মানুষকে ঠকানোর পেশাটা ভালোই রপ্ত করেছেন। ঠাকুর ভালোবাসি কিন্তু ঠাকুরের আত্মজদের ভালোবাসি না, ঠাকুর মানি আর ঠাকুরের আত্মজদের মানি না, ঠাকুরের কথা মানি কিন্তু ঠাকুরের কথা অনুসরণ ক'রে চলাকে মানি না; ঠাকুরকে শ্রদ্ধা করি, ভক্তি করি কিন্তু তাঁর প্রিয়পরম আত্মজদের শ্রদ্ধা করি না, ভক্তি করি না সেই মানুষের মুখে আবার ঠাকুরের কথা!!!??? এতটাই নিজেদের চালাক, বুদ্ধিমান ভাবেন যে আপনারা ছাড়া বাকী সব কোটি কোটি মূল কেন্দ্রের অনুগামী চারঅক্ষর, তারা গান করে (Do)? ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে, ঠাকুরের প্রথম সন্তান পরমপ্রিয় শ্রীশ্রী বড়দা এবং ঠাকুর পরিবারের বাকী সদস্যদের সম্পর্কে যে বা যারা কটূক্তি, নোংরা ভাষা প্রয়োগ করে এবং করতে যাদের বিবেকে বাধে না, জিভ কাঁপে না তারা ঠাকুরের শিষ্য!!!!!???? তারা ঠাকুরের কৃষ্টিজাত সন্তান!!!!???? তারা ঠাকুরের মিশনকে এগিয়ে নিয়ে যাবে!!!??? তারা ঠাকুরের স্বপ্ন পূরণের কারিগর!!!??? মনে পড়ে গেল বাংলাদেশের বিখ্যাত কুট্টিদের একটা চুটকি, "........আস্তে কন দাদা, ঘোড়ায় শুনলে হাসবো।" বাংলাদেশের মানুষ মাত্রই জানে কুট্টিদের কথা, এই কথা। তাই আপনাদের অর্থাৎ আপনাদের মত ঠাকুর পরিবার বিরোধী ঠাকুরের কপট ভন্ড শয়তানের শয়তানি রক্ত বহনকারী শক্ত ভক্তদের কথায় মানুষ আর হাসেও না, কাঁদেও না, ঘৃণাও করে না। আপনাদের নিয়ে ঠাকুরের কোটি কোটি শিষ্য আলোচনা তো দূরের কথা ফিরেও তাকায় না আপনাদের দিকে; তা' আপনারা যতই কাঁসর ঘন্টা ঢাক ঢোল পিটান না কেন। তাঁর কাজ তিনি নিজে 'সৎসঙ্গ দেওঘর' মূল কেন্দ্রে অবস্থিত তাঁর পরমপ্রিয় আত্মজদের মধ্যে দিয়ে দুর্দমনীয় বেগে দুর্জ্ঞেয় শক্তিতে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন বিশ্বব্যাপী। আচার্যদেব শ্রীশ্রীঅশোকদাদা বললেন, "ছুটে চলেছে তাঁর রথ, যে উঠে পড়ার পড়ুক, নইলে পড়ে থাকবে পিছনে।" তাই রাজু শিলকদাদা, আপনাদের কাজে, কথায় আর মানুষ হাসে না এইজন্যই আপনাদের ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠা আর ইষ্টস্বার্থরক্ষার শয়তানি ও ভন্ডামিপূর্ণ কাজ দেখে আর কথা শুনে কুট্টি আপনাদের মান-সম্মান রক্ষার্থেই বলেছেন, " আস্তে কন কর্তা, আপনাদের কথা শুনলে ঘোড়ায় হাসবো।' আর ঘোড়াদের হাসি শুনেছেন? চলে যান কুট্টিদের আস্তানায়; তারা আপনাকে, আপনাদের নিয়ে যাবে ঘোড়াদের ঘোড়াশালে আর শুনিয়ে দেবে ঘোড়াদের হিহিহি হাসি।
রাজুদাদা, আপনি আপনার কমেন্টের শেষের দিকে কি লিখেছেন? আপনি লিখেছেন, "আপনারা যারা বড়দা, অশোকদা, বাবাইদা ও অবিনদা শিষ্য তারা আবার ঠাকুরের বাণীর দিকে খেয়াল ক'রে না"। এই হচ্ছে আপনার জ্ঞান, এই আপনার ভালোবাসা, শ্রদ্ধা!!!!!!!! আপনার ঠাকুরের প্রতি এত প্রখর শ্রদ্ধা যে আপনি পূজনীয়দের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে ব্যর্থ ও অক্ষম। কি অশ্রদ্ধা ভরে আপনি লিখে দিতে পারলেন 'বড়দা, অশোকদা........ইত্যাদি."!!!!!!! আমরা কি লিখি? আমরা নামের আগে লিখি 'শ্রীশ্রী'। আবার আপনার ঠাকুর সম্পর্কে পান্ডিত্য কি রকম দেখুন। আপনি লিখলেন আমরা সবাই নাকি বড়দা,অশোকদা,বাবাইদা ও অবিনদার শিষ্য!!!!!!!!!! কি লিখলেন এটা? কে বললো এ কথা আপনাকে যে আমরা ঠাকুরের আত্মজদের শিষ্য? ঠাকুরের আত্মজদের ভালোবাসলে, শ্রদ্ধা ও সম্মান করলে তাদের শিষ্য হ'য়ে যায় এ নোংরা শিক্ষা আপনার কোন হিতাকাঙ্ক্ষী আপনাকে দিল? আপনি যদি আপনার ছেলের বাপ হ'য়ে থাকেন আর আপনার ছেলে যদি তার কাকা জ্যাঠাদের অর্থাৎ আপনার ভাই দাদাদের শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালোবাসে তাহ'লে আপনার ভাই দাদা কি আপনার ছেলের বাপ হ'য়ে যায় নাকি আপনার ছেলে আপনার ভাই দাদার ছেলে হ'য়ে যায়? কোনটা? বাপ বাপই থাকে আর কাকা জ্যাঠা তাঁদের নিজ নিজ অবস্থানেই সসম্মানে বিরাজ করেন; এটা মনে রাখবেন। এতটা নীচে নিজেকে নাবিয়ে নিয়েছেন যে কথাবার্তার কোনও ব্যালান্স নেই? ব্যালান্স থাকে না কারণ অহরহ বৃত্তি-প্রবৃত্তির কামড়ে অস্থির আপনি বা আপনারা। মাথার ঘায়ে কুকুর পাগল, এমন অবস্থা আপনাদের। রিপুর তাড়নায় দিক্বিদিক জ্ঞানশূন্য হ'য়ে এইসব অসম্মানজনক কমেন্ট করবেন আবার ঠাকুরের মূল কেন্দ্রের অনুগামীদের কাছে ভালোবাসা ও সম্মান পেতে চাইবেন? আপনার ঠাকুরের বাণীর দিকে এত খেয়াল যে নিজেই বেখেয়াল হ'য়ে পড়েছেন!!!!! সঞ্জয় কান্তিদের লেখাটা আবার ভালো ক'রে পড়ুন আর সঞ্জয়দার লেখার উত্তরে সঞ্জয়দাকে লেখা আমি যে খোলা চিঠিটা লিখেছিলাম সেটা আবার পড়ুন ভালো করে। তারপর বিবেকের দ্বারস্থ হ'য়ে কলম ধরুন।
রাজু শিলকদাদা, আপনি লিখেছেন আপনি ও আপনারা আমায় সম্মানী মালা দিতেন। প্রথম কথা আপনি বা আপনারা আমায় মালা দেবেন কি করে? মালা দিতে হ'লে তো আমাদের মাঝে আসতে হবে; তা নাহ'লে দেবেন কি করে? তো আপনি বা আপনারা আসবেন কি করে? আপনাদের তো ধর্মরাজ্যে ঢোকবার অধিকারই জন্মায়নি। কে দেবে অনুমতি? ধর্মরাজ্যের মাঝে অধর্মরাজ্যের লোকেদের তো প্রবেশাধিকারই নেই। তা' আপনার বা আপনাদের আমাকে মালা দেবার স্বপ্ন পূরণ তো এ জন্মে হবে না। স্বপ্ন পূরণ করতে হ'লে কঠিন প্রায়শ্চিত্ত ক'রে শুদ্ধ হ'য়ে নতুন ভাবে দ্বিজত্ব লাভ ক'রে তারপর আমাদের মাঝে এসে আমাকে সম্মানী মালা পরাতে হবে। আপনাদের তো নরকেও ঠাই হবে না!!!!!!! ঠাকুরের কথা অনুযায়ী 'কাল ও কর্মের জালে তো ভুগতে হচ্ছে ও হবে আপনাদের দাদা'!!!!!! এ তো আমার কথা নয়। স্বয়ং ঠাকুরের কথা। আচ্ছা বলুন তো, আপনাকে তো চিনলাম তা' আপনারা কারা? কেন আপনাদের নরকেও ঠাই হবে না? কেন কাল ও কর্মের জালে ভুগতে হবে? ইষ্টস্বার্থধ্বংসকারী সেই কেষ্ট দাসের বংশধর বা অনুগামী বা সেই ঠাকুর জীবিত থাকতে ঠাকুরকে ত্যাগ ক'রে ঠাকুরের ফটো মাথায় ক'রে 'বন্দে পুরুষোত্তমম' ধ্বনি তুলে বেরিয়ে গিয়ে ঠাকুর প্রেমী সেজেছিল যারা আপনারা তাদের, সেই ট্রাডিশানের ধারক ও বাহক? আপনি, আপনারা সেই তাদের বংশধর, অনুগামী যারা ঠাকুরের আত্মজ, প্রথম সন্তান, ঠাকুরের প্রাণ, ঠাকুরের পরম প্রিয় ভক্ত, ঠাকুরের কুকুর, ঠাকুরের স্বপ্ন, ঠাকুরের বাণীর জীবন্ত রূপ, ঠাকুরের মিশনকে, ঠাকুরের আগামী পৃথিবী রচনার Blue Print- বাস্তবায়নের ভিত্তি রচনার এক ও একমাত্র রূপকারকে, এ যুগের ঠাকুরের হনূমানকে, শ্রীশ্রীবড়দাকে তাঁর জীবদ্দশায় পদে পদে চরম অপমান, নিন্দা, কুৎসা করেছিল? যারা দিয়েছিল সীমাহীন লাঞ্চনা, যন্ত্রণা, দুঃখ, কষ্ট, ব্যথা-বেদনা আপনারা তাদের প্রবক্তা? আপনারা সেই তাদের, যারা প্রতিদিন মায়ের কাছে গান গাইতো, মন্ত্র জপতো "দে মা লণ্ডভণ্ড করে, লুটে পুটে খায়" তাদের, সেই ভন্ড কপট আত্মস্বার্থপ্রতিষ্ঠার প্রথমসারির কান্ডারিদের উত্তরসূরি? যারা সেই মাথায় ফটো নিয়ে 'বন্দে পুরুষোত্তমম' ধ্বনি তুলছেন আজও; যারা ঠাকুরের আত্মজদের অপমান, লাঞ্ছনা, কুৎসা, নিন্দা ক'রে মাথায় ফটো নিয়ে মিছিল ক'রে আজও প্রমাণ করতে মরীয়া যে তারা ঠাকুরের পরম ভক্ত!!?? আপনি বা আপনারা তারা? যদি তাই হয় তাহ'লে অপেক্ষা করুন সেই দিনের, "তোর খেয়াতে মাঝিই যে নেই, শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর"!!!!!
রাজু শিলকদাদা আপনি আমাকে ভালো থাকার কথা লিখেছেন এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ঠাকুরের দয়ায় ও শ্রীশ্রীবড়দা, আচার্যদেব শ্রীশ্রীঅশোকদাদা, শ্রীশ্রীবাবাইদাদা ও শ্রীশ্রীঅবিনদাদার আশীর্বাদে ভালো আছি, খুব ভালো আছি, আনন্দে আছি। কিন্তু দাদা ঠাকুরের কথা যে খোঁচা দেয় এই ভালো থাকার মাঝে। ঠাকুর বললেন, "পড়শীরা তোর নিপাত যাবে তুই বেঁচে সুখ খাবি বুঝি, যা ছুটে যা তাদের বাঁচা তারাই যে তোর বাঁচার পুঁজি"। আপনার বা আপনাদের নির্মম ভবিষ্যৎ দেখে তো নিজে আর একা ভালো থাকতে পারি না দাদা। তাহ'লে তো ঠাকুরের কথা অমান্য করা হয়। অন্তত অন্যকে ভালো থাকার বা ভালো রাখার চেষ্টা তো করতে পারি। এবার আমার সেই চেষ্টা অন্যের কাছে গ্রহণযোগ্যও হ'তে পারে কিম্বা বর্জনযোগ্যও হ'তে পারে। সেটা তার বা তাদের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় বা ব্যাপার। আসুন নরকের পথ ত্যাগ ক’রে স্বর্গের পথে যাত্রা করি আর শ্মশানে যাবার যে রথে চড়ে বসেছেন সেই রথ থেকে নেবে আসুন আর উঠে পড়ুন অমর ধামে যাবার রথে। পরিবার পরিজন নিয়ে সত্যিকারের ভালো থাকবেন; আসুন এখনও সময় আছে--------
“দ্রোহ-লোভের বাঁধন ছিঁড়ে ইষ্টতপে ঝাঁপিয়ে পড়
নইলে গতি কুম্ভীপাকেঃ শেষের সেদিন ভয়ংকর।“
আমি এই ভালো থাকার কথাটা বললাম এইজন্য যে, আপনি আমাকে লিখলেন, "আপনারা যারা বড়দা, অশোকদা, বাবাইদা ও অবিনদা শিষ্য তারা আবার ঠাকুরের বাণীর দিকে খেয়াল ক রে না তাই বল্লাম ভালো থাকবেন।" আপনার এই লেখার মধ্যে পরিস্কারভাবে ভেসে উঠেছে শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীঅশোকদাদা, শ্রীশ্রীবাবাইদাদা ও শ্রীশ্রীঅবিনদাদার প্রতি তীব্র বিদ্বেষ, রাগ, ক্ষোভ, ঘৃণা.........ইত্যাদি। আপনি আপনার লেখার মধ্যে বলতে চেয়েছেন বা বোঝাতে চেয়েছেন যে আমরা ঠাকুরের বাণীর দিকে খেয়াল রাখি না, আমরা খেয়াল রাখি ঠাকুরের আত্মজদের প্রতি। এই কথায় প্রমাণ করে আপনি ঠাকুরের আত্মজদের মুখে ঘুরিয়ে জুতো মারলেন, থুথু ছেটালেন। ঠাকুরের একান্ত প্রিয় পরম ভক্ত শ্রীশ্রীবড়দার বুকে সরাসরি লাথি মারলেন আর ড্যাম কেয়ার মনোভাব নিয়ে করলেন তুচ্ছ- তাচ্ছিল্য, অবজ্ঞা, অবহেলা, অশ্রদ্ধা ও অপমান ঠাকুরের পরিকল্পিতভাবে রেখে যাওয়া আর দশ হাজার বছর না আসার কান্ডারিদের প্রতি!!!!!! ধিক! আপনার, আপনাদের এই মানব জনম আর ধিক্কার আপনাদের এই জন্মে ঠাকুরকে পাওয়ার ভাগ্যকে! আপনি বা আপনারা এতই ঠাকুরের প্রতি খেয়াল রেখে রেখে এতবড় বিদ্বান পণ্ডিত হয়ে গেছেন, এতবড় ঠাকুর প্রেমী, ঠাকুর ভক্ত, যোগী, ধ্যানী, গোঁসাই-গোবিন্দ, ঋষি, মহর্ষি, সাধু, মহাপুরুষ হ'য়ে গেছেন, এতবড় দিব্যদৃষ্টি, দূরদৃষ্টির অধিকারী হ'য়ে গেছেন যে আপনারা ঠাকুরের আত্মজ, ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধাচরণ করতে, কুৎসা করতে, অপমান, নিন্দা, কটূক্তি করতে আপনাদের এতটুকু বুক কাঁপে না, মনে অনুশোচনা হয় না এত বড়ো বীরপুরুষ আপনি বা আপনারা!!!!!!!!!!!!!!!!! যে জিভ দিয়ে ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের কুৎসা করেন আপনাদের সেই জিভে কামড় পড়ে না ঠাকুরের বুকে ব্যথা দেওয়ার সময়!!!!!!! ঠাকুরকে এতই ভালোবাসেন আপনি ও আপনারা যে কিসে ঠাকুরের সোয়াস্তি, কিসে আনন্দ, কিসে দুঃখ, কিসে ব্যথা তা বোঝেন না!? এতটাই বৃত্তি-প্রবৃত্তির অধীন আপনারা? বন্ধু আমার, দাদা আমার একবার ঝাঁক মেরে দেখুন ভিতরটা দেখবেন শ্মশানের নীরবতা নিয়ে খাঁ খাঁ করছে বুকের ভিতরটা। আর সেই শ্মশানে হু হু ক’রে বয়ে যাচ্ছে হতাশা, ব্যর্থতা আর পরাজয়ের উষ্ণ বাতাস!!!!!!!
একটা প্রবাদ বাক্য মনে করিয়ে দিয়ে লেখা শেষ করলাম, "কখনো না হওয়ার চেয়ে দেরীতে হওয়াও ভালো।" দেরী হলেও আসুন মূল স্রোতে এবং সৎ ও সত্য পথে আর এই ক্ষণস্থায়ী জীবনকে তাঁর নির্দেশিত পথে চালিত ক'রে ক'রে তুলুন ধন্য আর প্রকৃত উপভোগ করুন জীবনকে আচার্য্য সান্নিধ্যে এসে। এসে দেখুন কি অপূর্ব সুন্দর মিষ্টি মানুষ উনারা!!! সঙ্গ করুন, চাক্ষুস করুন, উপলব্ধি করুন ঠাকুর তাঁর রেত শরীর নিয়ে কি অপূর্ব লীলা করে চলেছেন তাঁর উত্তরসূরিদের মধ্যে দিয়ে!!!!! এ দৃশ্য যে না দেখেছে তাকে বোঝানো সম্ভব নয়। এ বোঝে সেই, প্রাণ বোঝে যার। জয়গুরু।
( লেখা ১১ই জুলাই ২০১৭)

Monday, July 10, 2023

প্রবন্ধঃ নির্ভর করুন, নির্ভর করুন, নির্ভর করুন!

সৎসঙ্গ ঠিকমত হয় না, একঘেঁয়ে গান, অল্প সময় ঠাকুরের কথা হয় তাও ঘুরে ফিরে একই কথা, থোড় বড়ি খাড়া খাড়া বড়ি থোড়! যারা ঠাকুরের কথা শুনতে যায় তাদের তৃপ্তি হয় না! প্রতি সৎসঙ্গে গাইতে পারুক আর না পারুক, বলতে পারুক আর না পারুক তাদের গাইতে দেবার, বলতে দেবার কোনও মানে হয় না ইত্যাদি ইত্যাদি কথাগুলি শুনতে হয় সৎসঙ্গী বন্ধুদের কাছে, দাদা ও মায়েদের কাছে! তারা যারপরনাই বিরক্ত কিন্তু কিছু বলতে পারে না। তাই তারা আমার নানা লেখা পড়ে আমাকে মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে তাদের ক্ষোভ জানায়। তাই তাদের উদ্দেশ্যে আমার আজকের এই লেখা।
বক্তাদের এই অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি একেবারে সঠিক। সৎসঙ্গ আজ আখড়া বাজিতে পরিণত হয়েছে। ব্যাপারটা 'পড়েছো মোগলের হাতে খানা খেতে হবে একসাথে' এরকম হ'য়ে দাঁড়িয়েছে। কিছুই উপায় নেই। সৎসঙ্গ করার উদ্দেশ্য কি, না জানে যারা সৎসঙ্গ দেয় তারা, না জানে সৎসঙ্গ পরিচালনা করে যারা তারা! যদিও আমি সবার কথা বলছি না; ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে তবে তা ঐ 'ব্যতিক্রম'! 'সৎসঙ্গ' বাড়ির সত্য নারায়ণ পুজো আর শনিপুজার মত হ'য়ে দাঁড়িয়েছে। সৎসঙ্গ দিলে বাড়ির মঙ্গল হয় অতএব বাড়িতে একটা সৎসঙ্গ দাও আর হাঁউ মাউ কাউ ক'রে কোনরকমে ১ঘন্টা খুব বেশী হ'লে ১-৩০ঘন্টা টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাও, ব্যাস তাহ'লেই বাড়ির মঙ্গল হ'য়ে যাবে!!!! তারপরে প্রসাদ নিয়ে বাড়ি যাও! সেই সৎসঙ্গে আমরা পুরুষ যারা সাদা জামা কাপড় পড়ে সামনে আলো ক'রে বসেছিলাম সেইসমস্ত সৎসঙ্গ জগতের স্বঘোষিত কেউকেটারা সামনে বসে থাকা মায়েদের সামনে, পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা দাদাদের সামনে, ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের সামনে যাজনের নামে আধ খেঁচড়া, ভাঙা ভাঙা, ভুলভাল, অসম্পূর্ণ পরস্পর সম্পর্কহীন কথা আউড়ে নিজেকে বড় ভক্ত সাজিয়ে হামবড়াই চালে ছক্কা চালিয়ে দিলাম ভেবে মনে মনে মনকলা খেয়ে সাথে প্রণাম, প্রণামী আর প্রসাদ (p3) নিয়ে বেরিয়ে এলাম! কাল যে দীক্ষা নিয়েছে আজ সে বড় ভক্তের ভূমিকা পালন করছে আর মনে মনে ভাবছে বিরাট সৎসঙ্গ করে এলাম! আবার কেউ কেউ ভাবছে এ তো বেশ বড়ো কমিউনিটি এখানে ব্যবসা বাড়াবার বিরাট সুযোগ! একবারও ভেবে দেখবার প্রয়োজন মনে করি না যে,
সৎসঙ্গ অধিবেশন ঠাকুর কেন চালু করেছিলেন!?
সৎসঙ্গ করে এলাম নাকি বটতলার কীর্ত্তন পার্টি ক'রে এলাম!?
সৎসঙ্গে কারা ছিল!?
মায়েদের সংখ্যা বেশী ছিল নাকি দাদাদের সংখ্যা!?
মায়েদের সংখ্যা যদি বেশী থাকে তাহ'লে কেন বেশী!?
দাদাদের সংখ্যা যদি কম থাকে তাহ'লে কেন কম!?
মায়েরা বা দাদারা যারা ছিল তারাই বা কি পেল!?
তারা কি সত্যি সত্যিই আনন্দ পেল!?
পথ পেল!? সমাধান পেল!?
ইয়ং জেনারেশন কি ছিল!?
বাড়ির ইয়ং ছেলে বা মেয়েটা কি ছিল!?
বাড়ির কর্তা বা কর্ত্রী কি ছিল!?
কেন বাড়ির ছেলে বা মেয়েরা সৎসঙ্গে উপস্থিত থাকে না!?
তাদের কাছে কেন সৎসঙ্গ ভালো লাগে না!? উপভোগ্য নয়!?
বাড়ির মা কি সৎসঙ্গ উপভোগ করতে পেরেছে!?
নাকি সৎসঙ্গী দাদাদের আপ্যায়নের ঠেলায় ঘেমেনেয়ে অস্থির হ'য়ে বাড়ির মঙ্গল কামনায় পরিশ্রমকে হাসিমুখে বাড়ির 'শনিপুজো, সত্যনারায়ণ পুজো, লক্ষীপুজো, বিপদতারিণী পুজো, মনসা পুজো, সন্তোষী পুজো, মুশকিল আসান পুজো ইত্যাদি ইত্যাদি ব্রত পালনের মত ধর্মানুষ্ঠান ভেবে নিয়ে মুখ বুজে সহ্য করেছে!?
অদীক্ষিতরা (যদি কেউ এসে থাকে) সৎসঙ্গ সম্পর্কে কি ধারণা নিয়ে ফিরে গেল!?
দীক্ষিত-অদীক্ষিত সৎসঙ্গ শেষে সৎসঙ্গ অধিবেশন ও অন্যান্য ধর্মানুষ্ঠানের মধ্যে কোনও ফারাক খুঁজে পেল!?
কাল দীক্ষা নিয়ে আজ খুব উদ্দীপিত ও উত্তেজিত আবার কাল নিষ্প্রভ ও অনুত্তেজিত! কেন!?
এইসব বিষয় কি আমরা ভেবে দেখি!?
দেখি না! কেন দেখি না!?
কেন ভেবে দেখি না সৎসঙ্গ কি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হ'য়ে উঠছে!? সৎসঙ্গ কি প্রাণবন্ত হচ্ছে!?
সৎসঙ্গের মধ্যে দিয়ে কি ঠাকুরের ইচ্ছা, স্বপ্ন, মিশন পূরণ হচ্ছে!?
আমরা কি ভেবে দেখি, কেন যোগ্য ও দক্ষ ঠাকুর অনুগামীরা পিছনের সারিতে চলে যাচ্ছে!?
কাদের জন্য যোগ্য ও দক্ষ অনুগামীরা সৎসঙ্গ থেকে উচ্ছেদ হ'য়ে যাচ্ছে!?
যাদের জন্য উচ্ছেদ হ'চ্ছে তারা কি ভেবে দেখে তাদের এই অপরাধ, অন্যায়-এর কথা ও এর পরিণতি!?
তারা কি ভেবে দেখে তাদের এই নোংরা ও ঘৃণ্য পদক্ষেপের জন্য সৎসঙ্গের কি বিরাট ক্ষতি হচ্ছে ও ঠাকুর কি পরিমান ব্যাথা পাচ্ছে!?
এই উচ্ছেদ হওয়ার জন্য কি যোগ্য ও দক্ষ অনুগামীরা নিজেরা কি দায়ী!?
নিজেরা দায়ী হ'লে কেন দায়ী, কি জন্যে দায়ী তা কি তারা ভেবে দেখে নাকি অন্যকে দায়ী করে!? কিংবা নিজেদের কি শুধরে নিই বা নেবার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করি!?
এরকম অনেক কিছু আমরা ভেবে দেখি না!
আমরা কি ভেবে দেখি,
গান যে গাইছে তার গান মানুষের ভালো লাগছে কিনা!?
আমরা কি ভেবে দেখি আমরা যারা ঠাকুরের কথা বলছি তা ঠাকুরকে মানুষের কাছে ঠিকঠিক পৌঁছে দিচ্ছে কিনা!?
আমরা কি ভেবে দেখি যারা গান বা বক্তৃতা শুনছে তারা কি গান শুনে বা বক্তৃতা শুনে তৃপ্তি পাচ্ছে কিনা!?
এছাড়াও আরও অনেক কিছু আছে!
সৎসঙ্গে বসে ঠাকুরের সামনেই পাশের জনের সঙ্গে গল্প করছি!
সৎসঙ্গে ফোন আসছে, ফোন রিসিভ করছি, ফোনে নির্দ্বিধায় কথা বলে যাচ্ছি!
সৎসঙ্গে বসে বসেই 'একে বলতে দেবো না, ওকে গাইতে দেবো না' প্ল্যান করছি!
সৎসঙ্গ এক ঘন্টা থেকে দেড় ঘন্টা হ'তে না হতেই ঘড়ি দেখা শুরু হ'য়ে যাবে সে যতই কেউ ভালো গান করুক আর বক্তৃতা করুক না কেন!
কেউ একটু ভালো গাইলেই বা ভালো বললেই তাকে ঘড়ি দেখে সময়ের দোহাই দিয়ে নিষ্ঠাবান ভক্তের ভক্তির আতিশয্যে থামিয়ে দিই!
আজকের প্রজন্ম বলে সৎসঙ্গ ১ঘন্টা থেকে খুব বেশি হ'লে ১-৩০ঘন্টা! এর বেশী হ'লে সেটা সৎসঙ্গ নয়, জলসা! এরা জানেই না শ্রীশ্রীবড়দা সৎসঙ্গ দেড় ঘন্টা থেকে দু'ঘন্টার কথা বলেছেন!
তাই কেউ যদি একটু অন্যরকম কিছু ভাবে বা ভাবতে চায় তাহ'লে তাকে পিছনে ঠেলে দাও! পিছনে ঠেলে দাও পাঞ্জার জোরে কিম্বা টাকার জোরে! যদি থাকতে চাও তাহ'লে পিছনে পিছনে ঘুরতে থাকো! আর যদি আত্মসম্মান বা আত্মমর্যাদাবোধ বেশী থাকে তাহ'লে দরজা খোলা আছে সোজা রাস্তা দেখে নিতে পারো! নিজে থেকে যদি রাস্তা দেখে নিতে পারো তো ভালো নাহ'লে রাস্তা দেখিয়ে দেওয়ারও চ্যালা চামুন্ডা মজুত আছে! সৎসঙ্গ পতাকার তলায় থেকে ব্যবসা বাড়ানো, পাঞ্জার ধান্ধায় ব্যস্ত থাকা অদক্ষ, অযোগ্য চ্যালা চামুন্ডারা দক্ষ ও যোগ্য লোককে দেবে খেদিয়ে!
প্রশ্ন হচ্ছে যারা গুণী মানুষ, শিক্ষিত ভদ্র মানুষ তারা এইসব আহাম্মকি কি মেনে নেবে!? গুণী মানুষ, শিক্ষিত মানুষ পরিবেশ খোঁজে! তারা শান্ত, স্নিগ্ধ পরিবেশ চায়! তাঁরা সবার সামনে যে কোনও পরিবেশে অদক্ষ, অযোগ্য পরিচালকের হাতে অসম্মানিত হ'তে চাইবেন কি!? চাইবেন না! এমন গুণী মানুষ সৎসঙ্গে কোনভাবে যদি এসে উপস্থিত হয় আর তাঁকে গান, বক্তৃতা পরিবেশনের সময় স্থান, কাল, পাত্র হিসাবে চলতে না শেখা অযোগ্য, অদক্ষ পরিচালক যদি ঘড়ি ধ'রে চলতে শেখায় তখন স্বাভাবিকভাবেই সেই গুণী মানুষটি ছন্দ হারিয়ে বসে এবং পরবর্তীতে তাঁর আর আসার ইচ্ছা থাকে না!
তাই সবার স্থান সব জায়গায় নয়! গভীর জলের মাছ গভীর জলে আর কম জলের মাছ কম জলে স্বাভাবিক থাকে আর এর উল্টো হ'লেই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এইজন্য স্থান, কাল, পাত্র অনুযায়ী সৎসঙ্গও বিশেষ হ'য়ে ওঠে! ঘরে ঘরে ছোট ছোট সৎসঙ্গের সঙ্গে সঙ্গে বাইরে প্রকাশ্যে বিশেষ বিশেষ স্থানে বিশেষ সৎসঙ্গ আয়োজনের প্রয়োজন হয়! সেই প্রয়োজন মাথায় রেখে 'বিশেষ সৎসঙ্গ'-এর আয়োজন শুরু করি বিভিন্ন স্থানে!
বেশ কয়েক বছর এইভাবে চলার পর ২০১৫ সালের ১০ই অক্টোবর সকালবেলায় শ্রীশ্রীবাবাইদাদার কাছে নিবেদন করি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে এই 'বিশেষ সৎসঙ্গ' আয়োজনের কথা! নিবেদন করি শেষ আয়োজিত 'বিশেষ সৎসঙ্গ'-এর প্রণামী জমা করার কথা! এর আগে আয়োজিত 'বিশেষ সৎসঙ্গ'-এর প্রণামী কখনো 'সৎসঙ্গ সংগীত সন্ধ্যা', কখনো বা সেই অঞ্চলের কোনো গুরুভাইয়ের নামে জমা পড়েছিল। ১০ই সেপ্টেম্বর সকালবেলায় বাবাইদাদার শ্রীচরণে নিবেদন করলে তিনি ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ্যে এই বিশেষ সৎসঙ্গ আয়োজনের কথা শুনে খুশী হ'য়ে বলেন, "বিশেষ সৎসঙ্গ ব'লে কোনও কথা নেই! প্রতিটি সৎসঙ্গ-ই যেন বিশেষ হ'য়ে ওঠে! এই অল্প কথার মধ্যে দিয়ে বাবাইদাদা অনেক কথায় বলে দিয়েছিলেন সেদিন! বোঝে সে, প্রাণ বোঝে যার! বাবাইদাদাকে সেদিন আরও বলেছিলাম, এই বিশেষ সৎসঙ্গ কখনো কখনো দু'ঘন্টারও অনেক বেশী হ'য়ে যায়! আমি কি কিছু ভুল করছি, দোষ করছি? সেই কথা শুনে তিনি বলেছিলেন, কি হয় সেখানে? দু'ঘন্টার উপরে কি করেন? আমি চুপ ক'রে থাকি। কিছুক্ষন পর তিনি নিজেই ব'লে উঠলেন, গান হয়, কীর্ত্তন হয়, ঠাকুরের কথা আলোচনা হয়; আর কি হয়! কিসের দোষ? দোষ কিসের? কোনও দোষ হয়নি! তবে ঠাকুরের নির্দেশমত চলা উচিত। আর সৎসঙ্গ যাতে প্রাণবন্ত হয় সেদিকে নজর রাখবেন।আমি বললাম, সৎসঙ্গে প্রচুর লোকের সমাগম হয়! ভালো শিল্পী, বক্তা সেখানে সঙ্গীত, ঠাকুরের কথা পরিবেশন করে। তখন তিনি হাসি মুখে বললেন, খুব ভালো! সবসময় লক্ষ্য রাখবেন সৎসঙ্গ শেষে মানুষ যেন আনন্দ নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়! তারপরে আরো অনেক কথা বললেন। প্রণামী ফিল্যান্ট্রোফি অফিসে জমা করে দিতে বললেন। আর তখনই আশীর্বাদ নেবে এলো ভদ্রকালীর উপর! জন্ম হ'লো ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্রের! তারপরে 'সৎসঙ্গ, দীক্ষা, ইষ্টভৃতি' এই তিন বিষয়ের ওপর দাঁড়িয়ে চলার নির্দেশ দিলেন। এই তিন বিষয়ে তিনি বিস্তারিত আলোচনা ক'রে বুঝিয়ে দিলেন আমায় কি করতে হবে!
সেই থেকে আজও চলে আসছে বাবাইদাদার নির্দেশ মত ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্রের পথ পরিক্রমা! প্রতি মাসের শেষ রবিবার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে প্রকাশ্যে বিভিন্ন ক্লাবের হলঘরে, পুজো মণ্ডপে, মাঠে হ'য়ে আসছে 'বিশেষ সৎসঙ্গ'! প্রচুর দীক্ষিত-অদিক্ষিতদের আগমনে জমে ওঠে সৎসঙ্গ! সৎসঙ্গ শেষে চা-সিঙ্গাড়া সঙ্গে মিষ্টি, কচুড়ি, আলুরদম দিয়ে প্যাকেট পরিবেশন করা হয় উপস্থিত ভক্তমণ্ডলীর মধ্যে! সবচেয়ে ভালো লাগে যখন সৎসঙ্গ শেষে আশপাশের বাড়ি থেকে দৌড়ে দৌড়ে আসে বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েরা! তাদের চিৎকার আর হাসিতে খিলখিলিয়ে ওঠে সৎসঙ্গ পরিবেশ! বড় আনন্দ দেয় মনে শিশুদের নির্মল উপস্থিতি!
এই 'বিশেষ সৎসঙ্গ' অনুষ্ঠান এগিয়ে চলে ঠাকুরের "মানুষ আপন টাকা পর, যত পারিস মানুষ ধর" এই বাণীর উপর দাঁড়িয়ে! কারও কাছ থেকে অর্ঘ্য সংগ্রহ করা হয় না! স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে যদি কেউ এগিয়ে এসে ঠাকুরের অনুষ্ঠানের জন্য অর্ঘ্য দেয় সশ্রদ্ধ চিত্তে তা গ্রহণ করা হয়।
এর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে এই পথ পরিক্রমার সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তাদের ঘরে ঘরে মাসে একদিন ঠাকুর নিয়ে ও বাবাইদাদার নির্দেশ 'সৎসঙ্গ, দীক্ষা, ইষ্টভৃতি' নিয়ে আলোচনার জন্য 'সান্ধ্য বৈঠকি আড্ডা!' প্রার্থনা দিয়ে শুরু হয় আড্ডা তারপর গানে-গানে, আলোচনায় জমে ওঠে 'বৈঠকি আড্ডা'! সঙ্গে থাকে কোলড্রিঙ্কস, চা, নমকিন, সিঙ্গাড়া, মিষ্টি, কচুড়ি, আলুরদম, ছোলার ডাল, লুচি, গুগনী, পায়েস ইত্যাদি ইত্যাদি যেদিন যেমন!!!!!
ঠিক এমনিভাবেই হবে সামনে বড়মার জন্মমাস উপলক্ষে শ্রাবণ মাসে সন্ধ্যাবেলায় কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তা মায়েদের শ্রাবনী আড্ডা!
এর সঙ্গে আরও একটা জিনিস হয় তাহ'লো মাঝে মাঝে উদ্যোক্তা কর্মীদের জন্মদিনে ঠাকুর স্মরণ ও মনন!
একইরকম ভাবে একই প্রক্রিয়ায় শ্রীশ্রীবাবাইদাদার আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে জন্ম হয় 'খড়দা সৎসঙ্গ কেন্দ্র'! কেন্দ্রের পরিচালনায় এই 'বিশেষ সৎসঙ্গ'-এর আয়োজন হ'য়ে চলেছে ২০১৭সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে গঙ্গার ওপারে উত্তর ২৪পরগণা জেলার খড়দহ অঞ্চলে। বাবাইদাদার আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে তাঁর নির্দেশ মত খড়দা অঞ্চলে অনুষ্ঠিত প্রথম 'বিশেষ সৎসঙ্গ'-এর প্রণামী জমা দিয়ে সেই অর্ঘ্য প্রশস্তি বাবাইদাদাকে দেখালে তিনি আমাকে খড়দা অঞ্চলের সকল গুরুভাইবোনেদের ওই পবিত্র অর্ঘ্য প্রশস্তি দেখাতে বলেন এবং সকলকে নিয়ে মিলেমিশে চলার নির্দেশ দেন! খড়দার মাটি পবিত্র মাটি! সেই মাটিতে গড়ে উঠেছে বহু মন্দির! বহু বছরের প্রাচীন সেই মন্দিরগুলি ইতিহাসের বহু ঐতিহ্যের স্বাক্ষর বহণ ক'রে চলেছে! খড়দার সেই পবিত্র মাটিতে স্থাপিত মন্দিরগুলিতে ঘুরে ঘুরে হ'য়ে চলেছে প্রতি মাসের তৃতীয় রবিবার পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সৎসঙ্গ। এ এক অদ্ভুত অনুভূতি
সকলের জ্ঞাতার্থে জানাই যে, ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্র আর খড়দা সৎসঙ্গ কেন্দ্র একই সঙ্গে একই পদ্ধতিতে ঠাকুরের কাজ ক'রে চলেছে! প্রতি মাসের শেষ রবিবার ভদ্রকালীতে এবং খড়দায় তৃতীয় রবিবার 'বিশেষ সৎসঙ্গ'অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন স্থানে। দুই পারে ঠাকুরের প্রতিটি রূপের জন্মদিন পালন করা হয় এবং 'পুরুষোত্তম বন্দনা' নামে বিশেষ সৎসঙ্গের আয়োজন করা হয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে! সেখানে তাঁর প্রতিটি রূপের ফটো সুদৃশ্য রূপে সজ্জিত করা হয় এবং পুরুষোত্তম বন্দনা পাঠের মধ্যে দিয়ে 'বিশেষ সৎসঙ্গ' অনুষ্ঠিত হয়! দুই কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে শ্রীশ্রীঠাকুরের 'বনভোজন' উৎসব পালন হয় ২০১৮ সালে খড়দা লক্ষী নারায়ণ জিউ-এর মন্দিরে তথা 'সোনার মন্দিরে'! এ ছাড়া বাবাইদাদার শুভ জন্মদিনও পালিত হয় মহা ধুমধামে!!
প্রচুর বাধা বিপত্তির মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলেছে তাঁর মিশন রথ শ্রীশ্রীবাবাইদাদার উৎসাহে, প্রেরণায়, আশীর্বাদে ও পরামর্শে! বাধা আসতে থাকে বিভিন্ন দিক দিয়ে বিভিন্নভাবে! বাধা আসতে থাকে গুরুভাইদের কাছ থেকে!!!!!! সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিদ্রুপ মিশ্রিত খোঁচামারা প্রশ্ন তোলে অদীক্ষিত মানুষ! বাধা সামনে এসে পাহাড় হ'য়ে দাঁড়ায়!
যেমন,
১) 'বিশেষ সৎসঙ্গ' শব্দ ব্যবহার নিয়ে গুরুভাইদের বিদ্রুপ ও কটূক্তি!
২) প্রকাশ্যে সৎসঙ্গ কখনো হয়নি, সৎসঙ্গের নামে জলসা হচ্ছে!
৩) ১ ঘন্টা থেকে ১-৩০ঘন্টার সৎসঙ্গের পরিবর্তে ২ ঘন্টা, ২-৩০ ঘন্টা,
৩ ঘন্টার ফাংশন হচ্ছে!
৪) ঋত্বিক বিহীন সৎসঙ্গ হচ্ছে!
৫) ঋত্বিক বা পাঞ্জাছাড়া সৎসঙ্গ পরিচালনা অবৈধ ও পাপ!
৬) পরিবার নিয়ে ব্যবসা ফেঁদে বসেছে!
৭) ভদ্রকালী ও খড়দা অঞ্চলে পাল্টা সৎসঙ্গের আয়োজন!
৮) অন্য কেন্দ্রের সহায়তায় সৎসঙ্গের বিরোধীতা!
৯) গুরুভাইবোনদের, শিল্পী, বক্তা ও পাঞ্জাধারীদের আসতে বাধা
দান!
১০) কোথায় এত টাকা পাচ্ছে?
ইত্যাদি ইত্যাদি.........
শ্রীশ্রীবাবাইদাদাকে সমস্ত বিষয় নিবেদন করলে তিনি বলেন,
১) যে কোনও মানুষ যদি কোনও প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয় আর সে যদি চেষ্টা করে তার দ্বারা মহৎ কাজ হয়।
২) বাধা যদি না থাকলো তাহ'লে আপনি কর্ম করলেন না। কর্ম করা মানেই হচ্ছে আপনি কিছু না কিছু বাধার মুখোমুখী হবেন। যখন দেখবেন বাধাহীন কাজ হচ্ছে তার মানে কর্ম আর ঠিকঠাক হচ্ছে না।
৩) সবার সাথে ভালো ব্যবহার রাখবেন।
৪) কারোর কোনও অভিযোগের উত্তর দেবেন না, কোনও সাড়া দেবেন না।
৫) আপনার কিন্তু অভিযোগকে খণ্ডন করা আর উত্তর দেওয়া কাজ নয়।
৬) আমি যদি উপযুক্ত হ'ই এবং তিনি যখন আমাকে উপযুক্ত মনে করেছেন তাঁর বিষয়ে কথা বলার জন্য, কাজ করার জন্য তাহ'লে আমার ওটাই লক্ষ্য। আগে ঠাকুরের কাজ শেষ ক'রে নি তারপর যদি সময় থাকে তখন আমি অন্য বিষয়ে মাথা ঘামাবো।
৭) সবাইকে encourage করবেন। যারা আপনাকে বাধা দিচ্ছে তাদের সাথে নিত্য সম্পর্ক রাখবেন। কখনোই তাদেরকে তাচ্ছিল্য করবেন না। তাদের বিপদকালে প্রয়োজনের সময় সবসময় পাশে দাঁড়াবেন।
৮) ঠাকুরকে নিজে যখন নাজেহাল হ'তে হয়েছে আর আমরা তার সন্তান হ'য়ে আমাদের নাজেহাল হ'যে হবে না!?
৯) সবার সাথে যোগাযোগ রাখবেন। আপনার দিক থেকে যেন কোনও অন্যায্য কিছু উৎপাদন না হয়।
১০) সাধন চক্রবর্তীদার (হুগলি জেলার প্রাক্তন সেক্রেটারি) সাথে কথা বলতে হয় যে এইক্ষেত্রে আমরা কি করতে পারি। বলেন যে একটা মানসিক দ্বন্দ্ব তৈরী হচ্ছে।। একজনের বোধ আরেকজন নিতে পারছে না। কথা ব'লে মিমাংস ক'রে নেন। তাদেরকে আমন্ত্রণ করুন যাতে তারা এসে সবার সাথে যুক্ত হ'য়ে বুঝতে পারেন সমস্যাটা কোথায়! যতক্ষণ না জলে নামছি বুঝতে পারি না যে তলায় পাঁক আছে! ওপর থেকে দেখে বোঝা যায় না যে তলায় পাঁক হ'য়ে আছে! দেখে মনে হয় ওপর থেকে জল টলটল করছে, নামলে বুঝতে পারবেন যে পাঁকের মধ্যে পড়েছেন।
আজ চার বছর হ'তে চললো শ্রীশ্রীবাবাইদাদার অমৃত পরামর্শ মাথায় নিয়ে প্রতি মুহূর্তে তাঁর নির্দেশ স্মরণে ও মননে ঠাকুরের স্বপ্ন পূরণে আমরা এগিয়ে চলেছি। সৎসঙ্গ যাতে প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয় হয় ও সমাজ পরিবর্তনের মাধ্যম হ'য়ে ওঠে সেইজন্য আমি ঠাকুরের ওপর নির্ভর ক'রে আছি।
পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবাবাইদাদা আমাকে বলেছিলেন, তাঁর ওপর নির্ভর করুন, নির্ভর করুন, নির্ভর করুন।
শেষ। প্রবি।
( লেখা ১১ই জুলাই'২০১৯ )

Wednesday, July 5, 2023

প্রবন্ধঃ আমার দয়াল ঠাকুর ও আমার আচার্যদেব। (১)

এই যে আমি প্রায় বিপদ সীমার শেষ প্রান্ত থেকে ফিরে এলাম এই ফিরে আসা কি ক'রে সম্ভব হ'লো!? কে ফিরিয়ে আনলো? ডাক্তার? ওষুধ? ঠাকুর না আচার্যদেব? এর উত্তর দেওয়ার আগে দেখে নিই বিপদটা কি ছিল আমার?

আমার অন্যান্য বিপদের কথা এখানে আলোচনা ক'রে লেখাকে দীর্ঘ করতে চাই না। শুধু রোগ নিয়ে যে বিপদের মুখোমুখি হয়েছিলাম সেই রোগ সংক্রান্ত বিপদ্গুলির কথায় শুধু বলবো এখানে এই প্রবন্ধে।
তার আগে ব'লে রাখি জাগতিক জীবনে আমার শ্রীবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সেই ছোটো থেকে আজ পর্যন্ত কোনও সুখই আমাকে রাঙাতে পারেনি। জীবন জুড়ে ছোটোকে বড় আর বড়কে আরো বড় করার ঠাকুর দর্শনে বিশ্বাসী আমি শুধু বাড়ির খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো অন্যের মই হ'য়েই বেঁচে আছি আজ পর্যন্ত।

সালটা সম্ভবত ২০১৫ হবে। বর্তমান শ্রীশ্রীআচার্যদেব তখন দর্শন দিতেন শ্রীশ্রীবড়দার বাড়ি যাওয়ার পথে ঠাকুর বাংলো থেকে বেরিয়েই পাশে যে গেট সেই গেটের ভিতরের বিশাল যে ফাঁকা জায়গা সেইখানে নির্দিষ্ট বসার জায়গায় এবং আচার্যদেব শ্রীশ্রীদাদার নির্দেশেই তাঁকে নিবেদন করার পরিবর্তে বর্তমান আচার্যদেবকে সব নিবেদন করা হত সেই সময়।

সেইসময় কোনও একদিন সকালে শ্রীশ্রীআচার্যদেবকে আমার স্ত্রী আমার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা প্রসঙ্গে বলেছিল, "আমি অন্যের মই হয়েই কাটিয়ে দিয়েছি আমার রাজনৈতিক সারাটা জীবন। মই হিসেবে সবাই ব্যবহার করে আর কাজ মিটে গেলে কেউ খোঁজ রাখে না।" এ কথার উত্তরে সেদিন আচার্যদেব রাজনীতির সঙ্গে আর যুক্ত না থাকার কথা আমায় বলেছিলেন। বলেছিলেন পুরো সময়টায় ঠাকুরের কাজে যুক্ত থাকতে। আর হাসতে হাসতে বলেছিলেন, "রঙ করেন কেন? রঙ করবেন না। সাদা চুল আর দাঁড়ি দেখে আপনাকে কেউ আর ডাকবে না নতুবা আপনার মুক্তি নেই।" চারপাশে একটা হাসির রোল উঠেছিল।

অনেকদিন পর বেশ ভালো লাগছিল, নিজেকে হালকা বোধ হচ্ছিলো সেই মুহুর্ত থেকে। মুহূর্তে যেন একটা বিরাট অসহ্য চাপ নেবে গেল মাথা থেকে। যে চাপ কোনও ডাক্তার, কোনও ওষুধ, কোনও জাগতিক সুখ এতদিন নাবাতে পারেনি। একটা পাহাড় হ'য়ে চেপে বসেছিল মাথার ওপর। সেদিন বেশ ফুরফুরে পাখির পালকের মতো হালকা বোধ হচ্ছিলো শরীরটা সেই মধুময় আলোময় রূপময় সকালে। অনুভব করলাম একটা দিব্য জ্যোতি যেন সেই দেবোপম শরীর থেকে বিচ্ছুরিত হ'য়ে আমাকে স্নান করিয়ে দিচ্ছে! আমি তৃপ্ত হলাম, শান্ত হলাম। তখন আমি তাঁকে হাত জোড় ক'রে প্রণাম ক'রে বললাম, 'আজ্ঞে তাই হবে। আর আজ থেকে নিজের মই নিজে হলাম।'
তখন তিনি শ্রদ্ধেয় শান্তিদাকে ডেকে কিছু নির্দেশ দিয়ে দিলেন আমার জন্য। প্রণাম ক'রে উঠে এলাম সেখান থেকে। সেই থেকে শ্রদ্ধেয় শান্তিদার সঙ্গে অন্তরঙ্গতা।

প্রথমে স্ত্রীর উপর বিরক্ত হ'লেও পরে বুঝেছিলাম আচার্যদেবকে বলা আমার সম্পর্কে স্ত্রীর সেই কথার আল্টিমেট উপকারিতা। সেই শুরু হ'লো মানসিক নিরাময় প্রক্রিয়া! আমি ধীরেধীরে সম্পূর্ণ রূপে মসৃণ ভাবে রাজনীতি থেকে মুক্ত ক'রে নিলাম নিজেকে। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে কোনও জটিলতার সৃষ্টি হ'লো না, সৃষ্টি হ'লো না কোনও টানাপোড়েন, হ'লো না কারও সঙ্গে কোনও বিরোধ, মনোমালিন্য। এখনও পুরোনো সবার সঙ্গে সুন্দর মসৃণ সম্পর্ক আমার!

এখানে অলৌকিক রহস্য কোথায় জানি না। তবে দীর্ঘদিন পরে নিজেকে স্বাভাবিক ও হালকা বোধ হ'লো। এটাকে কি বলবো? মানসিক চিকিৎসা? জানি না। তবে তিনি যে বাকসিদ্ধ পুরুষ এবং তাঁর সাক্ষাৎ দর্শন, সঙ্গলাভ, পরামর্শ, উপদেশ, নির্দেশ গ্রহণ ও পালন সমস্যা সমাধানের ও মুক্তির উপায় তা বাস্তবভাবে অনুভূত হ'ওয়া শুরু হ'লো।

কিন্তু একটা জিনিস বুঝলাম পরবর্তী সময়ে, অন্যের মই হওয়া যত সহজ ও সম্ভব নিজের মই নিজে হওয়া ততটাই কঠিন ও অসম্ভব। কখনো কখনো মনে হয় অবাস্তবও!! এখানে দয়ালের দয়া, আচার্যদেবের প্রত্যক্ষ আশীর্বাদ, পরামর্শ ছাড়া নিজের মই নিজে হওয়া এবং সমস্ত রকম কঠিন ভয়ংকর সমস্যা, রোগ এমনকি নিশ্চিত মৃত্যু থেকে মুক্ত হওয়া একপ্রকার অসম্ভব। দয়ালের উপর বকলমা দিয়ে নিজের মই নিজে কি ক'রে হ'তে হয় আর বকলমাই বা কি ক'রে দিতে হয় তার আচার আচরণ স্বয়ং আচার্যদেব শিখিয়ে দেন। তাই তিনি আমার ও আমাদের আচার্যদেব। 
( লেখা ২৭শে নভেম্বর'২০২২ )
ক্রমশঃ