Powered By Blogger

Friday, September 30, 2022

প্রবন্ধঃ আমরা কেমন ভাবে চলবো।

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৃষ্ট 'সৎসঙ্গ'- এর প্রধান আচার্যদেব পরম পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দাকে জিজ্ঞেস করা হ'লো,

শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী, "অন্যায়কে সহ্য ক’রতে চেষ্টা কর, প্রতিরোধ ক’রো না, শীঘ্রই পরম মঙ্গলের অধিকারী হবে” ---এ-কথার অর্থ কী ?

শ্রীশ্রীবড়দা বললেন, তোমার প্রতি কেউ অন্যায় করলে তা সহ্য কর। আমি তাই ক’রে থাকি, কিন্তু অপরের ক্ষেত্রে কেউ অন্যায় করলে তা প্রতিরোধ করতেই হবে । ‘সত্যানুসরণ’ কার জন্য ? যে পড়ছে তার জন্য । নিজের প্রতি অন্যায় সহ্য করা দুর্বলতার লক্ষণ নয় । এটা সবল হৃদয়ের লক্ষণ । কথায় বলে, ‘যে সয় সে রয়’ । কিন্তু একটা পিপীলিকা বা পশুপক্ষীর উপরও কেউ আক্রমণ ক’রলে সেখানে রুখে দাঁড়াতে হবে---তা’ না করাই দুর্বলতা, ভীরুতা । হিংসাকে হিংসা দ্বারা প্রতিরোধ কর । হিংসাকে হিংসা কর---হিংসাভাবকে দূর কর ।

শ্রীশ্রীঠাকুর দেহ ত্যাগ করার আগে ও পরে শ্রীশ্রীবড়দার উপর কত অন্যায় যে করা হয়েছে, কত হিংসা করা হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। আজকের যে সমস্ত বিশ্বজুড়ে সৎসঙ্গের সূর্য মাথার উপর জ্বলজ্বল ক'রে জ্বলছে আর তার রশ্মি ছড়িয়ে পড়েছে দিক থেকে দিগন্তে, আলোয় আলোকিত হ'য়ে উঠেছে স্বর্গ, মর্ত, পাতাল এই সৎসঙ্গকে বুক দিয়ে আগলে রেখেছিলেন কে? ঠাকুরের দেহ ত্যাগের পর চরম অপমান, লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, অপবাদ, অশ্রদ্ধাকে দিনের পর দিন সহ্য ক'রে চোখের মণির মত কে রক্ষা করেছিলেন ঠাকুরের স্বপ্নের সৎসঙ্গকে!? 

এই দুঃখ, কষ্ট, জ্বালা, যন্ত্রণাকে বুকের গভীরে পাথর চাপা দিয়ে রেখেছিলেন সৎসঙ্গ জগতের সকলের আদরের, শ্রদ্ধার, ভালোবাসার মানুষ শ্রীশ্রীবড়দা, কাউকেই বুঝতে দেননি তিনি পাহাড় প্রমাণ এই কষ্ট, যন্ত্রণা, অপমান, অশ্রদ্ধা! নীরবে সহ্য করেছেন অন্যায়, অত্যাচার! আর প্রাণ দিয়ে, সমস্ত জীবন নিংড়ে দিয়ে সেদিন রক্ষা করেছিলেন ঠাকুরের বড় সাধের 'সৎসঙ্গ' কে! কাউকে কিছু বলেননি, কোনও উত্তর দেননি; শুধু মুখ বুঝে লক্ষ্যে অবিচল থেকে ঠাকুরের দেওয়া কাজ, দায়িত্ব পালন ক'রে গেছিলেন! বোঝে সে, প্রাণ বোঝে যার!!!!! 

আজ সব ইতিহাস। শুধু সেই ট্রাডিশান সমানে বয়ে চলেছে তাঁর আত্মজদের মধ্যে আর সৎসঙ্গকে আগলে রেখেছেন দুই বলিষ্ঠ কঠিন হাতে পরম স্নেহে, ভালোবাসায় বর্তমান আচার্যদেব শ্রীশ্রীদাদা, শ্রীশ্রীবাবাইদাদা ও শ্রীশ্রীঅবিনদাদা!!!!!!!!

তাঁদের সবার রাতুল চরণে জানাই হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা ও কোটি কোটি প্রণাম। আর আমরা সৎসঙ্গীরা ইষ্টপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ঠাকুরকে নিয়ে  কেমন ভাবে চলবো তার নিশানা পায় তাঁদের চলার মধ্যে। দয়ালের স্বপ্ন পূরণে তাঁদের চলনায় হ'ক আমাদের সবার চলনা।------প্রবি।

(লেখা ৬ই নভেম্বর'২০২১)

প্রবন্ধঃ ঠাকুরবাড়ি বা ঠাকুর মন্দির দর্শন ও আমরা!

পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র যখন ইহলোকে শরীরী লীলা করেছিলেন সেইসময় বাংলাদেশে এবং পরবর্তী সময়ে দেশভাগের কারণে দেওঘরে অবস্থান কালে দেশবিদেশের বিভিন্নক্ষেত্রের বহু বিখ্যাত মানুষ ঠাকুরবাড়ি এসেছিলেন ঠাকুর দর্শনে, ঠাকুরের সঙ্গে কথা বলতে। জীবনের এমন কোনও দিক বা বিষয় ছিল না যা নিয়ে ঠাকুরের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা হয়নি। যা লিপিবদ্ধ আছে গ্রন্থের প্রতি ছত্রে ছত্রে। ঠাকুরের দেহ রাখার পর থেকে অদ্যাবধি সেই ট্রাডিশন সমানে চলেছে! 

এর থেকে কি মনে হয়? এইসব নামীদামী বিখ্যাত, গুণী মানুষেরা ঠাকুরের কাছে এসে ঠাকুরকে বা ঠাকুর মন্দিরে গিয়ে ঠাকুরকে ধন্য করেছেন? নাকি নিজেরা ধন্য হয়েছেন? আমি, আপনি কি জানি ঠাকুর দেহ রূপে থাকাকালীন ভারত তথা সারা বিশ্বের কারা কারা তাঁর দর্শনে এসেছিলেন? আপনি, আমি কি জানি কে সেই ব্যক্তি যিনি ঠাকুরকে বলেছিলেন, "আমার দেশে সব আছে শুধু আপনাকে আমার দেশের দরকার। আপনি চলুন আমাদের দেশে। ডঃ রাধাকৃষ্ণন আমার বন্ধু আমি তাঁর সঙ্গে কথা ব'লে আপনাকে আমার দেশে নিয়ে যাবার সব ব্যবস্থা করবো। আপনি চলুন ঠাকুর আপনি না করবেন না। আপনার সব পরিকল্পনা আমার দেশের সরকারের সঙ্গে কথা বলে পূরণ করবো।"

কিন্তু ঠাকুর তার উত্তরে বলেছিলেন, "আপনি আমাকে মাথায় ক'রে যেখানে নিয়ে যাবেন আমি আপনার সঙ্গে সেখানে সেখানে যাবো।"  ঠাকুরের এই "আমাকে মাথায় ক'রে............" কথার অন্তর্নিহিত অর্থ কি তা আমরা জানি? ঠাকুর যদি একবার ইচ্ছা প্রকাশ করতেন তাহ'লে আজ কি হ'তো ভাবলেই মাথা ঘুরে যায়। তাঁর সমস্ত স্বপ্ন তো বাস্তবায়িত হ'তোই সঙ্গে সঙ্গে আমরা ভারতবাসী হারাতাম আমাদের দেশের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ গৌরব। আর আমেরিকা হ'য়ে যেত চিরকালীন বিশ্বের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ ধনী ও শক্তিশালী দেশ। যদিও নিঃসন্দেহে গোটা বিশ্ব উপকৃত হ'তো এতে!

আজ যখন একান্তে ভাবি সেইসব কথা তখন অশান্ত মন ব'লে ওঠে, কেন ঠাকুর তুমি চলে গেলে না!? তখন বুকের ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে একাকার হ'য়ে যায়। ইস! দয়াল! কেন তুমি গেলে না!? কেন তুমি গেলে না!? একবার তুমি দেশ ছাড়া হয়েছো, তোমার ঘর বাড়ি, জমি জায়গা, তোমার আশ্রমে তৈরী স্বয়ং সম্পূর্ণ ছোট্ট ভারত যা দেখে গান্ধীজী বলেছিলেন, এ যে আমার স্বপ্নে দেখা ভারত যা এখানে গড়ে উঠেছে, সেই ছোট্ট ভারত দখল ক'রে নিয়েছিল দেশভাগের পর একটা দেশের সরকার! সেই দেশের নাম পাকিস্থান! একটা দেশের সরকার যদি লুঠেরা হয় তাহ'লে সেই দেশের সাধারণ মানুষের চরিত্র কি হ'তে পারে তা সহজেই অনুমেয়! দেশের একজন বললো না যে, না, The greatest phenomenon of the world SriSri Thakur Anukulchandra-এর সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়া হ'ক; এটা আমাদের দেশের পক্ষে কলঙ্ক, অপরাধ। সেদিন ভারত সরকার পাকিস্তান সরকারকে বলতে পারতো, অনুরোধ করতে পারতো যে, পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমানে বাংলাদেশ) শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সমস্ত সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়া হ'ক। না, তা ভারত সরকার করেনি। এমনকি আজ ৫০ বছর স্বাধীন হ'য়ে গেছে যে দেশ বাংলাদেশ সেই দেশের সরকার পর্যন্ত গড়িমসি ক'রে কাটিয়ে দিল ৫০ বছর। দ্রুততার সঙ্গে হস্তক্ষেপ ক'রে সম্পত্তি হস্তান্তরের বিষয়টা সমাধান করার যে দরকার ছিল বা আছে তা নিয়ে মাথা ঘামাবার প্রয়োজন মনে করে না কোনও সরকার বা সেই দেশের সুধী সমাজ এইটা আজ প্রমানিত। কারণ দয়াল তুমি ঈশ্বর নও; তুমি তো শুধু হিন্দুদের ধর্মগুরু! যেমন মহম্মদ ঈশ্বর নন, শুধু মুসলমানদের ধর্মগুরু! পূর্ব পাকিস্তান ও বর্তমান বাংলাদেশ তো মুসলমানদের দেশ! মানবজাতীর দেশ নাকি! কোনও দেশ ও দেশের সরকার মানে না তুমি কোনও সম্প্রদায়ের নও, তুমি মানবজাতির জন্য যুগে যুগে বারবার ধরাধামে আবির্ভুত হও!

 যদিও 'কোনদিন না হওয়ার চেয়ে দেরীতে হওয়াও ভালো'-প্রবাদের বাস্তব প্রতিফলন দেখা গিয়েছে বর্তমান ভারত সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের গ্রহণ করা পদক্ষেপ ও উদ্যোগের ক্ষেত্রে। দেখা যাক দীর্ঘ ৭৪ বছর ও ৫০ বছর পথ পরিক্রমার মন্থন শেষে কি অমৃত আর কি-ই বা বিষ উঠে আসে!   

তাই মন বলে, চীৎকার ক'রে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে মন বলতে চায়, দয়াল! তুমি কি আর একবার দেশছাড়া হ'তে পারতে না!? কি ক্ষতি হ'তো তুমি যদি সেদিন চলে যেতে আমেরিকা!? সেদিন তো তোমাকে এই বাংলাও (পশ্চিমবঙ্গ) ঠাঁই দেয়নি! কুৎসা, নিন্দা, অপমান, বদনাম, গালাগালি, কলঙ্ক, অশ্রদ্ধা, অপমান ইত্যাদি ছাড়া------- যা এখনও পেয়ে চলেছো ------আর কি পেয়েছো এই বাংলায় বাঙ্গালীর কাছে!? কত ঠগ জোচ্চর ধর্ম্মের আলখাল্লা গায়ে চাপিয়ে আধ্যাত্মিক গুরু সেজে আমেরিকা গিয়ে আমেরিকানদের বোকা বানিয়ে মৌরসি পাট্টা জমিয়ে বসেছিল তাহ'লে তুমি কেন গেলে না দয়াল! তুমি কেন গেলে না!? আজ এই প্রশ্ন কাকে করবো? তুমি তো নেই সশরীরে তাই তোমার অশরীরী সুক্ষ্ম দেহের উদ্দেশ্যে এই লেখার মধ্যে দিয়ে আমার এই প্রশ্ন রাখলাম। যদিও সেইসব ঠগ জোচ্চরদের পরিণতি হয়েছিল ভয়ংকর! আমেরিকা থেকে লাথি মেরে তাড়িয়ে দিয়েছিল সেই সমস্ত ভন্ড ঠগ জোচ্চর ধর্ম্মগুরুদের প্রায় ল্যাংটা ক'রে এক কাপড়ে ভারতে! এতে কি ভারতের মান বেড়েছিল? প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে দেশ নেতাদের কাছে। ভারতের অসম্মান কি দেশের জনগণের, দেশ নেতাদের নয়? দেশ কি কোনও ব্যবস্থা নিয়েছিল বা নেয় এসব ক্ষেত্রে?

কিন্তু ঠাকুর তুমি যদি যেতে সেদিন সেই ভক্তের আকুল আহ্বানে আমেরিকা তাহ'লে কি হ'তো সেখানে? ঠাকুর তুমি যদি যেতে তাহ'লে আজ তোমার স্বপ্ন মৃত মানুষের দেহে প্রাণ সঞ্চার যার বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের নাম দিয়েছিলে স্বয়ং তুমি 'ভাইব্রোমিটার' সেই যন্ত্র তুমি থাকতে থাকতেই আবিস্কার হ'য়ে যেত! আজ কত মানুষ না মরেও মরে গেছে ব'লে দেহ সৎকার হ'য়ে যাচ্ছে! আর তোমার স্বপ্ন 'ভাইব্রোমিটার' যন্ত্র আবিস্কার হ'য়ে গেলে সেই যন্ত্রের সাহায্যে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ তাদের মরে যাওয়া স্বামী, স্ত্রী, বাবা, মা, পুত্র, কন্যা, ভাই বোন, বন্ধু বান্ধব আত্মীয়স্বজন, পাড়াপ্রতিবেশী সবাই তার প্রিয়জনদের আবার ফিরে পেত! যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটে যেত মানব সমাজে!!!!!!! কিন্তু তুমি গেলে না দয়াল!

তুমি যদি যেতে আমেরিকা তাহ'লে তোমার আরও একটা সর্ব্বশ্রেষ্ঠ অত্যাশ্চর্য স্বপ্ন 'শান্ডিল্য বিশ্ববিদ্যালয়' আজ আমেরিকার বুকে মাথা উঁচু ক'রে দাঁড়াত! সারা বিশ্বের মানুষ সেই অত্যাশ্চর্য বিস্ময় স্বর্গীয় পবিত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঈশ্বরের বাসস্থান দেখবার জন্য ছুটে ছুটে আসতো জ্ঞান বুভুক্ষু মানুষ!!!! কারণ জ্ঞানী মাত্রই জানে, Knowledge rules the world! বিশ্বের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সর্ব্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান 'শান্ডিল্য বিশ্ববিদ্যালয় আজ আমেরিকার আকাশে মাথা তুলে যদি দাঁড়াত তাহ'লে সত্যি সত্যিই আমেরিকা জ্ঞান বলে বলি হ'য়ে গোটা বিশ্বকে রুল করতো। শান্ডিল্য বিশ্ববিদ্যালয় কেমন হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে ঠাকুর সহজ সরলভাবে এককথায় বলেছিলেন, একজন মানুষ যখন শান্ডিল্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথ দিয়ে ঢুকে বেরিয়ে  যাবার সময় দুপাশ দেখতে দেখতে যেতে যেতে যখন অপজিট গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবে তখন আপনা আপনিই সে একজন শিক্ষিত, মস্ত বড় জ্ঞানী মানুষ হ'য়ে বেরিয়ে যাবে। কি অপূর্ব! শুধু ঘুরতে এসেই এমন শিক্ষায় শিক্ষিত হ'য়ে যাবে কোথায় আছে তার নিদর্শন সারা বিশ্বে!? হে দয়াল! তুমি যদি যেতে আমেরিকা তাহ'লে আজ অজ্ঞতা ও অজ্ঞানতার কারণে যে দেশ, যে মানুষ অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে, ধ্বংস হ'য়ে যাচ্ছে তাহ'লে সেই দেশ, দেশের মানুষ এবং সারা বিশ্বের মানুষ চোখ খুলে দেখবার জন্য, অজানাকে অচেনাকে জানার জন্য, চেনার জন্য সব কিছু ফেলে ছুটে ছুটে আসতো আমেরিকা!!!!!! কিন্তু তা আজ হ'লো না। আজ আফসোস রয়ে গেল! তুমি কিন্তু গেলে না দয়াল!!!!! 

সেদিন যদি তুমি আমেরিকা যেতে তাহ'লে আমেরিকার বিজ্ঞানিদের সাহায্যে আবিস্কার হ;য়ে যেত পৃথিবীর সেই সেন্ট্রাল পয়েন্ট যেখান থেকে নির্গত হচ্ছে অন্তহীন বিদ্যুৎ যার দৌলতে সারা বিশ্ব আলোয় আলোকিত হ'য়ে যেত চিরকালের জন্য; মিটে যেত বিদ্যুৎ সমস্যা। হে দয়াল! তুমি গেলে না তাই তোমার ব'লে যাওয়া বিজ্ঞানের এই সূত্র বাস্তবায়িত হ'লো না!  দয়াল! তুমি গেলে না কেন? না যাওয়ার পিছনে হয়তো কোনও গূঢ় কারণ আছে যা আমার মত মূর্খ মানুষ ধরতে পারে না। 

এমনিভাবেই আরও আরও আরও বিজ্ঞানের উপর কত অকল্পনীয় সূত্র     ( Clue) যে তুমি দিয়ে গেছ দয়াল তার ইয়ত্তা নেই। সেইগুলি নিয়ে যদি গবেষণা হ'তো তাহ'লে এতদিনে ভারত আবার জগত সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লাভ ক'রে নিত। কিন্তু দেশের শাসক তোমাকে সাধারণ একজন ধর্মগুরু মনে ক'রে বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছে। আর তুমি যদি দয়াল আমেরিকা যেতে তাহ'লে দেখতে তোমায় মাথায় ক'রে নিয়ে সার্বিক উন্নতিতে বিশ্বের মধ্যে প্রকৃত সেরা দেশ (এমনিতেই সেরা) হ'য়ে যেত আমেরিকা!

ঘরে বসে অনাহত নাদের সাহায্যে শত্রু দেশের গোপন অস্ত্র ভান্ডার ধ্বংসের যে নীল নকশা ( অ্যান্টি অ্যাটম বোম্ব ) তুমি বর্ণনা করেছিলে, যে অনু পরমাণুর বর্ণনা তুমি দিয়েছিলে খালি চোখে আর তা দেখতে পাওয়ার জন্য যে বৈজ্ঞানিক সুত্র দিয়েছিলে, যে পারমাণবিক বন্দুকের কথা ( Atomic gun) বলেছিলে মানুষকে এই পোড়া দেশে তা যদি তুমি আজ আমেরিকা যেতে তা বহু আগেই আবিস্কার হ'য়ে যেত। আবিস্কার হ'য়ে যেত বিজ্ঞানের নানা অজানা দিক।

আজও ক্যান্সার রোগের ওষূধ আবিস্কার হ'লো না। যদি তুমি যেতে আমেরিকা তাহ'লে তোমার দেওয়া ফর্মুলা  যে ফর্মূলায় তুমি শ্রদ্ধেয় প্যারীদাকে দিয়ে ওষূধ বানিয়ে ক্যান্সার রোগীকে সুস্থ ক'রে তুলেছিলে, যে ওষুধ বের করার জন্য শ্রদ্ধেয় হাউজারম্যানদা তাঁর দেশ আমেরিকায় চেষ্টা চালিয়েছিলেন সেই চেষ্টার ফলস্বরুপ ব্যবসায়ীমহল সেই ওষুধের পেটেণ্ট নিজেদের কাছে রাখার দাবীতে রাজী হয়েছিল কিন্তু হাউজারম্যানদা তাতে রাজী হননি কিন্তু দয়াল তুমি যদি আমেরিকা চলে যেতে সেদিন হয়তো সেই দেশের সরকার তোমার কথায় রাজী হ'য়ে সেই ওষুধ বের ক'রে ফেলতো। আজ তৈরী হ;য়ে যেত ক্যান্সারের ওষুধ! দেশে দেশে ঘরে ঘরে কত লক্ষ কোটি মানুষ আজ বেঁচে যেত ভয়ংকর ক্যান্সার রোগের হাত থেকে। মানুষ আজ কত অসহায় মৃত্যুর কাছে দয়াল! মানুষ আজ কত অসহায়!!

তাই কোনও নেতানেত্রী বা প্রশাসনিক প্রধান যদি ঠাকুর মন্দিরে বা কেন্দ্রে আসে তাতে তাঁর এবং তাঁর ও তাঁদের আসার কারণে তাঁদের ও দেশবাসীর মঙ্গল হয়। তাঁরা ও দেশবাসী ধন্য হন। কারণ এই আসাযাওয়ার ফলে ঠাকুর সম্পর্কে, ঠাকুরের দর্শন, উদ্দেশ্য ইত্যাদি সম্পর্কে তাঁদের একটা ধারণা জন্মালেও জন্মাতে পারে আর তাতে তাঁদের মানসিক বিপ্লব ঘটে যেতে পারে কোন এক সুন্দর সকালের শুভ মুহূর্তে আর তার শুভ ফল সামগ্রিকভাবে সুদূরপ্রসারী হয়।

আজ যখন দেখি আমেরিকায় ভার্চুয়াল উৎসব উপলক্ষে (USA national satsang congregation 2021(virtual) আচার্যদেব শ্রীশ্রীদাদার আশীর্বাদে পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীঅবিনদাদার ব্যবস্থাপনায় ঠাকুরের ইংরেজী বাণী 'PEACE PEACE PEACE BE YE PEACEFUL' নিয়ে গান তৈরি করা হয় তখন স্বাভাবিকভাবেই আগামী ঠাকুরবাড়ির ছবিটা ভেসে ওঠে যেদিন বিদেশী ভক্তদের আগমনে সারা দেওঘর ভেসে যাবে, তিল ধারণের জায়গা থাকবে না। এমনিভাবে তৈরী হবে আরও আরও ঠাকুরের ইংরেজী বাণী দিয়ে গান আর ইংরেজী গানে মাতিয়ে তুলবে দেওঘর সৎসঙ্গ তথা পৃথিবীর আকাশ বাতাস বিদেশী ভক্তের দল। এমনিতেই এখন উৎসবগুলিতে লক্ষ লক্ষ অগুন্তি মানুষের মাথায় গিজগিজ করে ঠাকুরবাড়ি আর তখন মনে পড়ে, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের কারণে ঠাকুর সৎসঙ্গ-এর সেইসময়ের ভ্যালুয়েশন অনুযায়ী পাবনায় দেড় কোটি টাকার সম্পত্তি ফেলে দিয়ে এক কাপড়ে চলে এসেছিলেন বর্তমান ভারতের দেওঘরে। ঠাকুর স্বাধীনোত্তর দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরুর কাছে ৬০০০ হাজার বিঘা জমি চেয়েছিলেন পুনরায় তাঁর স্বপ্নের সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য। কিন্তু সেই সময় জহরলাল নেহরু ঠাকুরের ইচ্ছা পুরণের পক্ষে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার পানাগড়ে ৬০০০ হাজার বিঘা জমি প্রদানের জন্য সম্মতি জানালেও দুর্ভাগ্যবশত পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় শ্রী বিধান চন্দ্র রায় রাজী হননি ঠাকুরকে ৬০০০ হাজার বিঘা জমি প্রদান করতে। বিধানচন্দ্র রায় চেয়েছিলেন ঠাকুরকে ৮০০ বিঘা জমি দিতে কিন্তু ঠাকুর সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন। শ্রীশ্রীঠাকুর চলে যান তৎকালীন বিহার বর্তমান ঝাড়খন্ডের দেওঘরে। আবারও বাংলা বঞ্চিত হয় জীবন্ত ঈশ্বরের নবরুপকে তার বুকে ঠাঁই দিতে।এক বাংলা ছেড়ে আর এক বাংলায়ও আশ্রয় পেল না দয়াল! একবুক যন্ত্রণা, দুঃখ ও অপরাধবোধ নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে দুই বাংলার বাঙ্গালিকে যতদিন সৃষ্টি থাকবে! যে বাংলা স্বয়ং ঈশ্বরের জীবন্ত রুপকে আশ্রয় দিতে পারে না তার বুকে সে দেবে মানুষকে আশ্রয়!? অতি মূর্খও বিশ্বাস করে না একথা। শ্রদ্ধেয় বিধানচন্দ্র রায়ের মতন অতি গুণী মানুষও সেদিন বুঝতে পারেননি ঠাকুরের স্বপ্ন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, ঠাকুর কেন চেয়েছিলেন ৬০০০ হাজার বিঘা জমি; সেখানে সাধারণ বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে গলা পর্যন্ত ডুবে থাকা আম বাঙ্গালী বুঝবে কেমন করে!?

যাই হ'ক, সেদিন আমি থাকবো না হয়তো আবার আমি আসিব ফিরে দয়ালের নীড়ে মানুষের ভিড়ে দাঁড়িয়ে দেখবো সেদিন যেদিন গোটা বিশ্ব ভেঙ্গে পড়বে দেওঘরের বুকে আর মানুষ বুঝতে পারবে সেদিন ১৯৪৭ সালে দেশভাগের কারণে কেন ঠাকুর ৬০০০ হাজার বিঘা জমি চেয়েছিলেন ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর কাছে!!! সেদিন আগামী বাংলা ও বাঙ্গালী লজ্জায় মুখ ঢাকতে এক টুকরো কাপড়ও পাবে না। সেদিন লজ্জায় রক্তিম বাংলার উত্তরসূরীদের মুখ দেখবে বাকী ভারত তথা বিশ্ববাসী!!!! কারণ ঠাকুর নিজেই বলে গেছেন, "আমার সৎসঙ্গ-এর আন্দোলন বাংলা থেকে উঠবে না, বাংলার বাইরে থেকে উঠবে।"

তাই বলি, আমার সৎসঙ্গী গুরুভাইবোন পাহাড় যদি অহঙ্কার বশতঃ মহম্মদের কাছে না আসে মহম্মদ নিজে যান সেই পাহাড়ের কাছে যেমন গিয়েছিলেন মূর্খ ঠাকুর রামকৃষ্ণ বিদ্যার সাগরের কাছে।  যতবার তিনি এসেছিলেন-------আটবার এসেছিলেন রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ সর্বশেষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র রুপে -------- ততবারই অর্থাৎ আটবারই এমন উদাহরণ তিনি রেখে গেছেন! 

তাতে কে ধন্য হন বা হয়েছিলেন?

( লেখা ৩০শে সেপ্টেম্বর'২০২১) 

Sunday, September 25, 2022

প্রবন্ধঃ তর্পণ ও পিতৃপুরুষ।

আজ তর্পণের দিন ছিল এইদিনে গঙ্গার পবিত্র জলে দাঁড়িয়ে পুরোহিতের মন্ত্রোচারণের মাধ্যমে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ জল নৈবেদ্য নিবেদন করা হয় যে জল পুত্রের হাতে গ্রহণ করার জন্য সারা বছর অপেক্ষা ক'রে থাকেন তৃষ্ণার্ত পিতৃপুরুষ আর নেবে আসেন যমলোক থেকে সেই জল গ্রহণ করার জন্য। সেই তর্পণ সম্পর্কে দু'একটা জিজ্ঞাস্য। যদি কেউ উত্তর জেনে থাকেন তাহ'লে আমাকে জানালে আমি বাধিত হবো। আমার বাবা মা নেই। গত হয়েছেন বহু বছর। জানি না তারা এখন কোথায় আছেন। যমলোকে আছেন না স্বর্গলোকে দয়ালধামে আছেন নাকি আবার মনুষ্য জন্ম নিয়ে চলে এসেছেন এই ধরাধামে কিছুই জানি না। তাই পরমপিতার কাছে তাদের জন্য প্রতিদিনই প্রার্থনা করি তারা যেখানেই থাকুন তোমার ছত্রছায়ায় যেন থাকে। তারা যদি আবার এসে থাকেন এই ধরাধামে মানুষ রূপে তাহ'লে তারা যেন তোমার চরণতলে আবার স্থান পায়; তোমার মহামন্ত্র লাভ করে। তোমারই দীক্ষায় যেন দীক্ষিত হয়। 

এটা তো গেল একটা দিক কিন্তু একটা প্রশ্ন মনে জাগলো যদি কেউ কিছু মনে না করেন আর আমার অজানা দিকটা উন্মোচিত ক'রে দেন তাহ'লে চির বাধিত থাকবো। যদিও জানি না কতজন জ্ঞানী লোকের কাছে এই লেখা পৌঁছোবে। তবুও প্রশ্নটা করেই ফেলি।

প্রশ্নটা হ'লো যমলোক থেকে যদি তিনি নেবে আসেন আর তর্পন জল গ্রহণ করেন তাহ'লে কি আমার পিতা স্বর্গলোকে ছিল না? ছিল না দয়ালধামে? তাহ'লে কেন আমরা বলি আমার পিতার স্বর্গলাভ হয়েছে, আছেন পরমপিতার চরণতলে দয়ালধামে? যমলোক কি দয়ালধাম? যমলোককেই কি স্বর্গলোক বলা হয়? যদি তিনি পুনরায় মানুষ রূপে জন্মগ্রহণ ক'রে না থাকেন তাহ'লে তো তার আত্মা যমলোক থেকে নেবে এসে পুত্রের হাতে জল গ্রহণ করবেন আর যদি ইতিমধ্যেই তিনি আবার মনুষ্য রূপে জন্মগ্রহণ ক'রে থাকেন তাহ'লে তিনি কি ক'রে তর্পনের সময় যমলোক থেকে নেবে আসবেন? আর কি করেই বা তিনি তর্পণের সময় পুত্রের নিবেদিত জল গ্রহণ করবেন? তবে কি নূতন শরীর গ্রহণ করার পর তিনি সেই নতুন রূপের শরীর থেকে বেরিয়ে তর্পণ জল গ্রহণ করার জন্য ফিরে যান? আর তর্পণ জল গ্রহণ ক'রে আবার ফিরে আসেন নতুন শরীরে? এই বিষয়টি আমার জানা নেই। জানার তাগিদেই এই লেখা। জয়গুরু।

প্রবন্ধঃ মহালয়ার ভোরে প্রার্থনা।

দয়াল কোনোদিনই ভয়াল হয়নি। কথাটা বলার ইচ্ছা ছিল না তবু্ও বললাম। একটু অন্যভাবে বলা যেতে পারে দয়াল ভয়াল হয়েছে কিন্তু সময়ে হয়নি। আমি বৃত্তি-প্রবৃত্তির ঘেরাটোপে থাকা মানুষ। আমি আমার মত সময়ের হিসেব করি। আর দয়ালের সময়ের হিসেব দয়ালের মত। যুগে যুগে দুষ্টরা রাজত্ব ক'রে গেছে আর তার ফল ভোগ করেছে ভাঙাচোরা বৃত্তি-প্রবৃত্তির ঘেরাটোপে আবৃত মানসিক অসুস্থ দূর্বল মানুষ। এর জন্যে সাধারণরাও দায়ী। সমস্ত রকম দুর্বলতা যে পাপ (অন্তত দীক্ষিতরা) তা জানা সত্বেও সেখান থেকে তারা মুক্ত হ'তে পারেনি। পারেনি বললে ভুল হবে পারার জন্য চেষ্টাও করেনি। কিন্তু দয়াল যেদিন ভয়াল হয়েছে সেদিন সব শেষ। ভালোরাও শেষ, দুষ্টরাও শেষ। সব যুগেই তার প্রমাণ আছে। কুরুক্ষেত্র, মহাভারত ইত্যাদি তার জ্বলন্ত সাক্ষী। হে দয়াল! এ যুগ শিশুপালেদের যুগ নয় যে একশোটা অপরাধ তুমি ক্ষমা করবে। ভয়ংকর দুষ্টকে সংশোধনের সুযোগ দেবে। আজ মহালয়া। দয়াল তুমি মাকে পাঠাচ্ছো। কোথায় পাঠাচ্ছো? মাকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে মা! তুমি কখন অসুর বধ করতে এসেছো? যখন সৃষ্টি শেষ হ'তে চলেছিল তখন। তাই নয় কি? ভুল বললাম? তার আগে পর্যন্ত অসুর মহিসাসুরা দাপটে ত্রিভুবন কাপিয়েছে! চালিয়েছে ধ্বংসলীলা! কোন বাপের বাড়িতে তুমি আসছো মা!? কোন মাটিতে তুমি পা রাখতে আসছো তুমি!? এ বাড়ি, এ মাটি কি শান্ত, ঠান্ডা, পবিত্র? তুমি কি জানো তোমার পুজো আয়োজনের পিছনে কতজনের চোখের জল আছে? কিভাবে অর্থ সংগ্রহ হয়েছে? আর চলবেও পরপর নানা নামের আরাধনার অছিলায়। চলবে তোমার কন্যা সরস্বতী পুজো পর্যন্ত। চলবে মাইকে মাইকে আসুরিক হুংকার। তোমার পুজোয় এখন আর আকাশে বাতাসে ঢাকের আওয়াজ ভেসে আসে না। আসে না তোমার নামে মন্ত্রোচ্চারণ। কখনো সখনো ঢাক বাজে। তাও কুয়োর ব্যাং-এর মত প্যান্ডেলের ভিতরে আস্তে আস্তে। কোথাও কোথাও মাইকে ভেসে আসে মহালয়ার ঢংয়ে উৎকট গলায় তীব্র চীতকারে তোমার মন্ত্রোচ্চারণ। আর মাইকে বাজে চটুল গানের হুহুঙ্কার। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। তা নগন্য। আর ব্যতিক্রম ব্যতিক্রমই। তার প্রভাব সমাজে বহির্জগতে পড়ে না। তুমি তো সব জানো মা। তোমার কি অজানা? তোমায় জানানোর মতো ধৃষ্টতা আমার যেন না হয়। দয়ালের দয়ায় এ বোধটুকু অন্তত আমার হয়েছে। কারা তোমায় স্বাগত জানাবে? কাদের পৌরহিত্যে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে তোমার বোধন হবে? অপবিত্র পাপী হাতের বোধনে তুমি সাড়া দাও!? কই তুমি তো একবারো ট'লে ওঠো না!? প্রাণহীন লাশের মত পুজো নাও! কেন? তাহ'লে আমি বুঝবো কি ক'রে আমি সমাজের একজন কেউকেটা পাপী!? 


মা আর একটা কথা বলি তোমায়। এবার তুমি এত আগে, মহালয়ার আগে, প্রায় একমাস আগে এলে কেন মা!? প্রায় প্যান্ডেল রাস্তাঘাট আলোয় আলো! আলোর সাজে সেজে উঠেছে চারপাশ! আলো ঝলমল পরিবেশ ভালো লাগে নিশ্চয়ই। যদিও তা সাময়িক। এমনিতে তো সমাজ মিথ্যা, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার, ব্যভিচারের ঘোর অন্ধকারে ডুবে আছে তার মধ্যে দই-এর স্বাদ ঘোলে মেটাবার মতো অসময়ের কৃত্রিম আলোয় যতটা শ্বাস নেওয়া যায় ততটাই লাভ। একেবারে না পাওয়ার চেয়ে  মরিচীকায় ডুবে মরা ভালো। যে কদিন বাচা যায়। তবে মা বলতে পারো এই আগে আসা শাস্ত্রমতে এ কোন নিয়ম? যাক গিয়ে শাস্ত্র তো মানুষই বানায়। এবারও মানুষ বানিয়েছে। সত্য যুগে মুনি ঋষিরা বানিয়েছিল। এ যুগ ঘোর কলি যুগ। ঘোর কলি যুগে না হয় বৃত্তি-প্রবৃত্তির ঘেরাটোপে অবস্থিত রিপুরসে জাড়িত অদ্ভুত জীবেরা আধুনিক মারণাস্ত্রের মত আধুনিক মারণ শাস্ত্র বানিয়েছে!!!


যাই হ'ক, হে দয়াল যারা কোনোদিনই সংশোধন হওয়ার নয় এ যুগ তাদের যুগ। সেই যুগে জন্ম বিকৃত সংশোধনহীন ভয়ংকর শিশুপালদের একশোটা অপরাধ সংশোধন হওয়ার সুযোগ দেওয়া দয়ালের দরবারে ঘোর অবিচার। এ কথা বলার জন্য দয়াল আমায় ক্ষমা ক'রে দিও। যখন তোমার অনুসারী, তোমার অনুগামী, তোমার দীক্ষিতরা তোমার হাজার বলা সত্ত্বেও সংশোধনের 'স' পর্যন্ত সীমারেখা পার হয়নি বরং বহু অনুগামী বহাল তবিয়তে তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে এলাকায় এলাকায় মন্দিরে কেন্দ্রে তোমার নামে সাদা পোশাকে ক্ষমতা দখল ক'রে ভণ্ডামি ক'রে বেড়াচ্ছে সেখানে সমাজে সীমাহীন ঔদ্ধত্বে দাপটে বিচরণকারী অদীক্ষিতদের কাছে সংশোধন আশা করা বাতুলতা মাত্র! তাই তোমার দীক্ষিত সন্তান যারা অসহায় অভাবী তোমার কথামতো তোমার পথে চলতে পারে না কিন্তু বেইমানী নেমকহারামী ক'রে তোমার সাথে ভণ্ডামি করে নি, করে না; যারা আজও ডান হাতের রোজগারে তা খুদকুঁড়া হ'লে পরিবারের মুখে তুলে দেয়, নিজে মুখে তোলে কিম্বা যারা সংসারের জ্বালা সইতে না পেরে, স্ত্রী সন্তানের অভুক্ত করুণ মুখের দিকে চেয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে অসৎ পথ অবলম্বন করে শুধু দু'মুঠো মোটা অন্ন তুলে দেবে ব'লে, আর যারা বেকুবের মত ভন্ড, বেইমান, অকৃতজ্ঞ, নেমখারামীদের বিশ্বাস করেছে, নির্ভর করেছে সেই সমস্ত সরল বেকুব ভক্তদের অন্তত তুমি রোগ, শোক, গ্রহদোষ, বুদ্ধি বিপর্যয়, দারিদ্রতা থেকে রক্ষা ক'রো। শেষের সেদিন তাদের যেন ভয়ংকর না হয়। সমাজের অত্যাচারী ব্যভিচারীদের বিচারের ভার রইলো তোমার ওপর। এই-ই আমার তোমার চরণে আকুল প্রার্থনা।---প্রবি।

Saturday, September 24, 2022

কথার স্রোতঃ ৬

দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের মুখে ঠাকুরের কথা শুনে আকৃষ্ট হন মহাত্মা গান্ধী। দেশবন্ধুর মতো অসাধারণ প্রতিভাশালী শক্তিমান মহান নেতা যাঁকে ইষ্ট পদে বরণ করেছেন তাঁকে স্বচক্ষে দেখার বড় কৌতুহল ছিল মহাত্মাজীর। দেশবন্ধুর মৃত্যুর পর ১৯২৫ সালের ২৩শে মে তিনি পাবনা আশ্রমে এলেন। মহাত্মাজী যখন আশ্রমে এলেন তখন জনারণ্যে আশ্রমপ্রাঙ্গণ ভরে গেল। তিনি ঠাকুর জননী মনোমোহিনী ও সৎসঙ্গের কর্মীবৃন্দের সঙ্গে আশ্রমের বিভিন্ন স্থান ঘুরলেন। আশ্রমের কুটীর, শিল্পাগার, বিজ্ঞানকেন্দ্র, তপোবন বিদ্যালয় কারখানা, তড়িৎভবন, কলাভবন ঘুরে ঘুরে সবই দেখলেন। আশ্রমিক পরিবেশ দেখে তিনি বিস্ময়ে ব'লে ওঠেন, "আমি যে ভারতের স্বপ্ন দেখেছি ইতিমধ্যে তা এখানে গড়ে উঠেছে।"

 

"মহাত্মাজী জননী মনোমোহিনী দেবীর স্নেহল মাতৃত্ব এবং মহীয়সী ব্যক্তিত্বে খুবই মুগ্ধ হয়েছিলেন। ভারতের বিভিন্ন স্থানে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ঠাকুর ও সৎসঙ্গ বিষয়ে আলোচনাকালে তিনি মায়ের খুব প্রশংসা করেন। মা সম্পর্কে তাঁর অবিষ্মরনীয় উক্তি - 'I have never seen such a masterful woman of such wonderful personality in my life' (এমন বিষ্ময়কর ব্যক্তিত্ব-সম্পন্না মহীয়সী নারী জীবনে আমি কখনও দেখি নাই।)"


মৃত্যুকালীন অসুস্থ অবস্থায় দেশবন্ধু মহাত্মা গান্ধীকে তার গুরুর সর্বব্যাপী গভীর জ্ঞান ও অসাধারণ অভূতপূর্ব মস্তিষ্কের কথা জানিয়ে অনুরোধ করেছিলেন একবার যেন তিনি শ্রীশ্রীঠাকুর দর্শনে যান। মৃত্যু শয্যায় মহাত্মাজী দেশবন্ধুকে কথা দিয়েছিলেন শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করবেন। আর দেশবন্ধুর মৃত্যুকালীন আন্তরিক একান্ত অনুরোধে ঠাকুর সম্পর্কে গভীর বিষ্ময় জন্ম নিয়েছিল মহাত্মাজীর মনে। দেশ-জাতি সমাজ গড়তে হলে ধর্ম ও শ্রীশ্রীঠাকুরের মত দ্রষ্টাপুরুষের যে একান্ত প্রয়োজন এবং একমাত্র পথ দেশবন্ধুর মনে এই গভীর বিশ্বাস দেখে তিনি খুবই বিস্মিত হন। এরপর ঠাকুরের সঙ্গে মহাত্মাজীর সাক্ষাৎ হয় কলকাতায়। ঠাকুর অসুস্থ শুনে তিনি দেখতে আসেন তাঁকে।

সেখানে উভয়ের দীর্ঘ সময় বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়।

  

প্রশ্নঃ দেশবন্ধুর প্রাণের মানুষ ও পাবনা হিমাইতপুর নামক অখ্যাত গ্রামে মহাত্মা গান্ধীর স্বপ্নের ভারত গড়ে তোলা মানুষ The greatest phenomenon of the world SriSriThakur Anukulchandra কে মহাত্মাজী কি জীবনে গ্রহণ করেছিলেন? 

প্রবি।

কথার স্রোতঃ ৫

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস তিন তিনবার এসেছিলেন সৎসঙ্গ আশ্রমে শ্রীশ্রীঠাকুর দর্শনে। তার সঙ্গে দেশের স্বাধীনতার বিষয়ে গভীর ও দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল। নেতাজীর মা-বাবা দুজনেই শ্রীশ্রীঠাকুরের 

দীক্ষিত ছিলেন। ঠাকুরের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় তিনি স্বীকার করেন মানুষ তৈরীর জন্য বিবাহ সংস্কারের প্রয়োজন  কিন্তু এ দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ। 

ঠাকুর দৃপ্তকন্ঠে বলেছিলেন,  "দীর্ঘ সময় তো নেবেই। আমরা তো এতদিন পর্যন্ত জাতির বা সমাজের স্থায়ী কল্যাণের জন্য কিছুই করিনি। বহু গলদ জমে গেছে। সাফ করতে সময় নেবে বৈকি ? কোন Shortcut Programme (সংক্ষিপ্ত কর্মসূচী) এ জাতির সত্যিকার কল্যান হবে বলে আমার মনে হয় না।"

কিন্তু এই নির্ম্মম সত্য জানা সত্বেও নেতাজী দেশবন্ধুর মতো নিজেকে ঠাকুরের চরণে সঁপে দেননি। প্রশ্নঃ তিনি কি তার মাতাপিতার মত শ্রীশ্রীঠাকুরকে জীবনে গ্রহণ করেছিলেন?

প্রবি।

কথার স্রোতঃ ৪

১৯২৬ সালে ঠাকুরের জন্মোৎসবের সময় তপোবন বিদ্যালয়ের বিশেষ অনুষ্ঠানে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় পাবনা সৎসঙ্গ আশ্রমে এসেছিলেন। সেখানে তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরের সাথে দীর্ঘ আলোচনা করেন। শ্রীশ্রীঠাকুর তাকে বিয়োগান্তক রচনার পরিবর্তে মিলনাত্মক ও জীবনমুখী সাহিত্য লেখার জন্যে উৎসাহ দেন।৷ 

শ্রীশ্রীঠাকুর তাকে বলেছিলেন,

"সমাজ পচে গিয়েছে সত্য কিন্তু তাই বলে অমরা যদি দুঃখের চিত্র, হতাশার ছবি, বিকৃত মনস্তত্ত্বের অভিব্যক্তি লোকের সামনে তুলে ধরি তবে কারও কোন উপকারই আমরা করতে পারিনা। সাহিত্যিকের দায়িত্ব গঠনমূলক চিত্র তুলে ধরা, যার ফলে তারা হতাশার মধ্যে আশা ও দুঃখের মধ্যেও পায় শান্তির ঈঙ্গিত। বাস্তববাদের সঙ্গে যদি আদর্শবাদের সমন্বয় না থাকে তবে কোন সুফলই হবেনা। আদর্শ চরিত্র রূপায়ন করলে তা থেকে মানুষ পাবে উদ্দীপনা - বাস্তব অসুবিধা এবং ভাগ্য বিপর্যয়কে প্রতিহত করে দাঁড়াতে চেষ্টা করবে। সাহিত্যিক যদি পাঠকের মনে ভরসার সৃষ্টি করতে না পারে, কল্যাণের ঈঙ্গিত দিতে না পারে তবে সে সাহিত্যের মূল্য কতটুকু?" 

ঠাকুরের স্নেহময় প্রেমল কন্ঠের প্রজ্ঞাদীপ্ত কথাগুলি অবাক বিষ্ময়ে শুনছিলেন শরৎচন্দ্র। তাঁর এতদিনের লালিত চিন্তার স্রোত যেন থমকে দাঁড়াল। কাতরকন্ঠে বললেন শরৎচন্দ্র "এমন করে কখনও তো ভাবিনি ঠাকুর, এতদিন ভাবনার ধারাটাই ছিল উল্টো রকমের। সমস্যাটা তুলে ধরেছি, ভেবেছি সমাজ সংস্কারক করবে তার সমাধান। এখন কি আর শেষ সময়ে অন্য ভাবের রচনা সৃষ্টি করতে পারব?"

ব্যথাহীন কন্ঠে কথাগুলো বলে ঠাকুরের জ্যোতির্ময় মুখের দিকে তাকালেন শরৎচন্দ্র।

ঠাকুর ভরসাদীপ্ত কন্ঠে বললেন - "অবশ্যই পারবেন। এখনই লেগে পড়েন।"

অনুশোচনার সুরে শরৎচন্দ্র খুব আফসোস করে বললেন - "ঠাকুর আমার জীবনের প্রথম উপন্যাস লেখার আগে কেন আপনার কাছে এলাম না"

 উল্লেখ্য যে আশ্রম থেকে ফেরার পর শরৎচন্দ্র মিলনাত্মক উপন্যাস " বিপ্রদাস" রচনা করেন।"

অনুশোচনার আগুনে পোড়া কথাসাহিত্যিক শ্রীশ্রীঠাকুরের কথামত শেষজীবনে মিলনাত্মক উপন্যাস লিখেছিলেন সত্য কিন্তু প্রশ্ন জাগে মনে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে কি জীবনে গ্রহণ করেছিলেন শরৎচন্দ্র ? 

প্রবি।

কথার স্রোতঃ ৩

একবার শ্রীশ্রীঠাকুর প্রফুল্লদাকে বলেছিলেন সাহিত্যিক প্রেমেন্দ্রনাথ মিত্রের সঙ্গে শান্ডিল্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা সম্বন্ধে আলোচনা করতে বলেন। আলোচনা চলাকালীন প্রেমেন্দ্রনাথ মিত্র বললেন, "দেশে তো এত বিশ্ববিদ্যালয় আছে, আবার একটা নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের দরকার কি?" প্রফুল্লদা তার উত্তরে সংক্ষেপে যা বলেছিলেন তার মর্মার্থ  ছিল, "পুরুষোত্তমের অসাম্প্রদায়িক বিজ্ঞানসম্মত দীক্ষাভিত্তির উপর গড়ে উঠবে এই শিক্ষার ভিত।" প্রফুল্লদার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শুনে প্রেমেনবাবু বলেছিলেন,  "সংক্ষেপে অনেক কথায় আপনি গুছিয়ে বলেছেন। আর মহাপুরুষের সঙ্গসাহচর্যের কোনো বিকল্প হয় না। অমনতর মানুষই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। এই ধারাটা যেন বজায় থাকে। ঠাকুরের ব্যক্তিত্ব যে এত প্রেম ও প্রেরণাময় তা' আমার জানা ছিল না। আপনাদের উচিৎ দেশবিদেশের সুধীদের তার সামনে নিয়ে আসা।" প্রফুল্লদা বললেন, "আপনি দেখে গেলেন, জেনে গেলেন, আপনিও লক্ষ্য রাখবেন এদিকে।" উত্তরে প্রেমেনবাবু বলেছিলেন, নিশ্চয়ই।  

প্রশ্নঃ সাহিত্যিক প্রেমেন্দ্রনাথ মিত্র কি বিশ্ববিদ্যালয় গঠনে লক্ষ্য রেখেছিলেন? সেই অসীম প্রেম ও প্রেরণাময় ব্যক্তিত্বকে কি জীবনে গ্রহণ করেছিলেন?

প্রবি।

কথার স্রোতঃ ২

একবার হোম মিনিষ্টার বি. এন. দাতার এসেছিলেন উৎসবের সময়। শ্রোতারা ছিল সব বাংলাভাষাভাষী। তিনি তখন তা দেখে ঠাকুরের কাছে একজন দোভাষী চাইলেন যাতে তিনি ইংরেজিতে যা বলবেন সঙ্গে সঙ্গে মুহূর্তে বাংলা ক'রে বলবে। শ্রীশ্রীঠাকুর প্রফুল্লদাকে দায়িত্ব দিলেন আর বললেন, "ভাল ক'রে কবি। দাতার সাহেবের কথায় অডিয়েন্সকে পাগল ক'রে দিবি। ধন্যি ধন্যি পড়ে যাবে দাতার সাহেবের।" উৎসবের মিটিংয়ে মঞ্চে দাতার সাহেব বলার সঙ্গে সঙ্গে প্রফুল্লদাও তোড়ে ব'লে যেতে লাগলেন। উপস্থিত সমবেত ত্রিশ হাজার শ্রোতার হাততালি আর থামে না। বক্তৃতার পর কেষ্টদা বিস্ময়ে অভিভূত হ'য়ে প্রফুল্লদাকে বললেন প্রশংসাসূচক অনেক কথার শেষে বললেন, "মনে হচ্ছিল গুরুগত প্রাণ কোনো ভক্তের বক্তৃতার তর্জমা হচ্ছে!" সে কথা শুনে শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, " মূকং করোতি বাচালং পঙ্গুং লঙ্ঘয়তে গিরিম। যৎকৃপা তমহং বন্দে পরমানন্দ মাধবম।"


প্রশ্নঃ মনে হওয়া গুরুগত প্রাণ ভক্ত হোম মিনিষ্টার বি এন দাতার কি শ্রীশ্রীঠাকুরকে জীবনে গ্রহণ করেছিলেন?

প্রবি।

কথার স্রোতঃ ১

একবার পার্লামেন্টারিয়ান অনন্তশায়নম আয়েঙ্গার এসেছিলেন আশ্রমে। তার সঙ্গে ঠাকুরের দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছিল। শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গে কথা ব'লে তিনি মুগ্ধ হ'য়ে গিয়েছিলেন! যাবার সময় অনন্তশায়নম শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদাকে বলেছিলেন --- " ঠাকুর পৃথিবীর এক অদ্বিতীয় পুরুষ।" 

অদ্বিতীয় কথার মানে কি? 

কিন্তু পৃথিবীর সেই অদ্বিতীয় মানুষটিকে কি অনন্তশায়নম জীবনে গ্রহণ করেছিলেন? প্রবি।

প্রবন্ধঃ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর: প্রশ্নঃ ২০

'শ্রীশ্রী' ব্যবহার।

এইসমস্ত বারো হাত কাকুরের তেরো হাত বীচির মত বেঢপ প্রশ্নকর্তারা কেন শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীঅশোকদাদা ইত্যাদির নামের আগে শ্রীশ্রী ব্যবহার করা হয় তাই নিয়ে এরা জোঁকের মত পিছনে পড়ে গেল! মনে হচ্ছিলো যেন প্রশ্ন ক'রে ক'রে শরীরের সব রক্ত টেনে নেবে! কথাবার্তার মধ্যে কেমন একটা পাগলাটে ভাব! কথার মাঝে মাঝে তাল কেটে প্রসঙ্গের বাইরে চলে যায়, প্রশ্নের সঙ্গে উত্তরের কোনও মিল নেই, জিততেই হবে এমন একটা গোঁয়ার গোবিন্দ ভাব! মূল কেন্দ্রের সব ভুল!  মূল কেন্দ্রের সব ঠাকুর নির্দেশিত পথের বিরোধী পদক্ষেপ! এদের অজ্ঞানতার ঔদ্ধত্ব এতদূর পৌঁছেছে যে তারা শ্রীশ্রীবড়দার তীব্র সমালোচনা করে!? শ্রীশ্রীবিবেকদাদা ও শ্রীশ্রীকাজলদাদাকে শ্রীশ্রীবড়দার উপরে স্থান দিয়ে প্রচার করে যে শ্রীশ্রীবড়দা শ্রীশ্রীঠাকুরের স্থলাভিষিক্ত হ'য়ে ব'সে পরিবার-পরিজনসহ শ্রীশ্রীঠাকুর বিরোধী, শ্রীশ্রীঠাকুরের নীতি বিরোধী কাজ ক'রে চলেছেন এবং ঠাকুরকে বিকৃত করছেন আর শ্রীশ্রীবিবেকদাদা ও শ্রীশ্রীকাজলদাদা ও তাঁদের উত্তরসূরীরা অবিকৃতভাবে ঠাকুরকে মাথায় নিয়ে প্রচার ক'রে চলেছেন!!!!! 


প্রশ্নকর্তারা অবিকৃতভাবে ঠাকুরকে প্রচার করছেন, ঠাকুরের আলোচনাকে মুখ্য রেখে এগিয়ে চলেছেন! এই অবিকৃতভাবে এগিয়ে চলার মধ্যে দীর্ঘ ও সংক্ষিপ্ত প্রার্থনা, ইষ্টভৃতি মন্ত্র, আচার্য সম্বোধন ইত্যাদি কয়েকটা বস্তাপচা অদ্ভুত বিষয়ের মত একটা অদ্ভুত 'বিষয়'  হ'লো ঠাকুর ছাড়া আর কারও নামের আগে দুটো 'শ্রী' ব্যবহার করা যাবে না। তারা ঠাকুর ছাড়া আর কারও নামের আগে দুটো 'শ্রী' ব্যবহার করেন না। দুটো 'শ্রীশ্রী' শুধু ঠাকুরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ও বৈধ বাকী সব অপ্রযোজ্য ও অবৈধ! এরকম আরো অনেক ভিত্তিহীন প্রশ্নের ঝড় তুলে ঠাকুরের ফটো মাথায় নিয়ে ঠাকুরের মিশনকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে এইসমস্ত গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল-এর দল আর গায়ে পড়ে অকারণ অশ্লীল বাক্য প্রয়োগে পায়ে পা লাগিয়ে ফেসবুকে মুখ ঢেকে ঝগড়া ক'রে চলেছে! সেই যে ঠাকুরের সামনে দিয়ে মাথায় ঠাকুরের ফটো নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলো ভন্ড কপট শক্ত ভক্তের দল আজ থেকে ৫০বছর আগে সেই মাথায় ফটো নিয়ে চলার ট্রাডিশন আজও সমানে চলেছে! সেই যে ঠাকুর শরীরী অবস্থায় থাকাকালীন ঠাকুরের শেষ বয়সে ঠাকুরকে কাঁদিয়ে চোখের জলে ভাসিয়ে ঠাকুরের সামনে দিয়ে ঠাকুরের ফটো মাথায় নিয়ে বিরাট ভক্ত সেজে 'বন্দে পুরুষোত্তমম' ধ্বনি তুলে বেরিয়ে গিয়েছিল ঠাকুরের সৃষ্ট সংগঠন 'সৎসঙ্গ'-কে ভেঙে নতুন দল তৈরি করবে বলে অর্থ ও ক্ষমতার লোভে সেই মাথায় ফটো নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার তিক্ত স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে ও অম্লান রাখতে মাথায় ফটো নিয়ে শোভাযাত্রার অতি ভক্তির ভণ্ডামির ও পাপের ট্র্যাডিশন আজও ব'য়ে চলেছে তারা, তাদের উত্তরসূরীরা শোভাযাত্রায় আর পায়ের তলার মাটি যে ধীরে ধীরে সরতে সরতে ভবিষ্যৎ গভীর অন্ধকার খাদের সৃষ্টি হ'য়ে চলেছে সেদিকে হুঁশ নেই! এই মাথায় ফটো নিয়ে শোভাযাত্রার ভন্ডামির পাপের স্মৃতি এরা বহন ক'রে চলেছে দয়ালের অমোঘ ভয়াল অঙ্গুলি হেলনে!!!!!! একেই বলে কর্মফল!!!!!! এটাই বোধহয় বিধাতার নিখুঁত বিচার!

যাই হা'ক, আমি তাদের বললাম, আপনারা নামের আগে 'শ্রীশ্রী' ব্যবহার নিয়ে যে অযৌক্তিক যুক্তি তর্কের ঝড় তুলে বাজার গরম করতে চেষ্টা করছেন সাধারণ ভক্তদের মাঝে ৫০ বছর যাবৎ সেই ঝড়ে আপনাদের নিজের ঘরই ভেঙে চুরমার!!!!! ভালো ক'রে নিজেদের ঘরটার চারপাশে চোখ মেলে দেখুন কি এক ভয়ংকর বিপদ ঘন্টার আওয়াজ ভেসে আসছে, দিচ্ছে অশনি সংকেত!!! ভন্ড, কপট সাধু সাবধান!

'শ্রীশ্রী' ব্যবহার সম্পর্কে আমার বোধ যতটুকু ততটুকু তুলে ধরার চেষ্টা করলাম নিম্নে।

জীবনের পরতে পরতে যাদের চরিত্রে অসাধারণ ভগবদদত্ত গুণ প্রকাশিত হয়, যাদের জীবন ঠাকুরের শ্রীচরণে সমর্পিত, যাদের জীবনে ঠাকুর ছাড়া আর কিছু নেই, যাদের জীবনটাই যাজন, যাদের জীবন ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক, যাদের শত বাধা-বিপত্তি, আঘাত, নিন্দা, কুৎসা, গালাগালি, কুৎসিত সমালোচনা, বিত্ত-বৈভব, প্রশংসা, প্রচার ইত্যাদি কোনও কিছুই ইষ্টপ্রতিষ্ঠা এবং ইষ্টস্বার্থরক্ষা ও স্বার্থপ্রতিষ্ঠায়, তাঁর সেবায়, তাঁর আজ্ঞা পালনে থামাতে পারে না, লক্ষ্যচ্যুত করতে পারে না, লক্ষ্য বস্তুতে না পৌঁছনো পর্যন্ত যারা বিপরীত অন্য কিছু দেখতে পায় না, শুনতে পায় না, ঠাকুরের অসীম-অনন্ত জ্ঞান যাদের জীবনে, যাদের চরিত্রে সমাহিত সেই সমস্ত ঠাকুর অন্ত প্রাণ, ঠাকুরের কুকুররূপী সেবাপ্রাণ মানুষের ক্ষেত্রে নামের আগে দুটো 'শ্রীশ্রী' ব্যবহার করা যেতে পারে। এই বিশেষ বিষয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের বলাগুলি একবার তলিয়ে দেখা যেতে পারে!

শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, "কারও নামের আগে একাধিক 'শ্রী' দেওয়ার উদ্দেশ্য হ'লো------ওর দ্বারা তাঁর অসামান্যতা ও বিশেষ বিভূতি সূচিত করা। 'শ্রী' মানে সেবা। ভগ এসেছে ভজ-ধাতু থেকে, ভজ ধাতুর একটা প্রধান অর্থ হ'লো সেবা, তাই ভগবান মানে বলা যায় সেবাবান। সত্তাসম্বর্দ্ধনী সেবা অর্থাৎ পরিপালন, পরিপোষণ ও পরিরক্ষণই যাঁর জীবন,-বৈশিষ্ট্য, তিনিই ভগবান। যিনি এই সেবা-বৈশিষ্ট্য-সম্পন্ন, তিনিই হ'লেন মানুষের মুখ্য সেবনীয়, অর্ঘ্যণীয় মানুষ-ভগবান। তাই তাঁর নামের গোড়ায় একাধিক 'শ্রী' যোগ ক'রে জানিয়ে দেওয়া হয় যে তিনি আমাদের সেব্যপরম।" 

তাই জন্য বলে ভক্ত-ভগবান সমার্থক! জন্মজন্মান্তরের সাধনার পরিক্রমা শেষে জীবাত্মা মহাত্মায় উত্তীর্ণ হয় তারপর যখন অদম্য অচ্যূত অস্খলিত অনুরাগ উদ্দীপনা উৎসাহ ভক্তি ভালোবাসা প্রেম একানুরক্তি নিয়ে পরোমাত্মায় বিলীন হ'য়ে যায় তখন ভক্ত ভগবান এক হ'য়ে যায়!  তখন সেই ভক্তের মধ্যে অসামান্যতা ও বিশেষ বিভূতি সূচিত হয়। ভক্ত-ভগবান আর টাকার এপিঠ-ওপিঠ সমার্থক হ'য়ে পড়ে! এই প্রসঙ্গে একটা সুন্দর গল্প আছে।

পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীরামচন্দ্র যখন তাঁর পত্নী সীতা মাতা কে নিয়ে অযোধ্যায় ফিরে আসেন তখন তিনি তাঁর সঙ্গে আসা সাথী যারা সীতামা-কে উদ্ধারের জন্য দীর্ঘ কঠিন সময়ে পাশে থেকে সাহায্য করেছিলেন সেই পরম বন্ধু, পরম সাথীদের একে একে দেশবাসীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন। এই পরিচয় চলাকালীন যখন হনুমানকে পরিচয় করাতে যান তখন আবেগ ভালোবাসা কৃতজ্ঞতায় প্রভু রামচন্দ্রের কথা বন্ধ হ'য়ে যায়, গলা দিয়ে স্বর বের হচ্ছিল না, শুধু দু'চোখ দিয়ে বেরিয়ে আসছিল অশ্রুধারা! পরম মমতায় হনুমানের দিকে নির্বাক নিশ্চল তাকিয়ে কেঁদে চলেছিলেন রামচন্দ্র! সবাই অবাক হ'য়ে দেখছিল সেই দৃশ্য! অনেকক্ষন পর অনেক কষ্টে অশ্রু সজল চোখে কান্না ভেজা গলায় দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, এ আমার পরম ভক্ত হনুমান! হনুমানকে যে ভালোবাসে না সে আমাকে ভালোবাসে না! ভক্ত-ভগবানের অপূর্ব এক মিলনান্তক দৃশ্য! সেদিন উপস্থিত সবার চোখে ছিল জল! ঠিক একইরকমভাবে ত্রেতাযুগের পুনরাবৃত্তি দেখতে পায় আমরা ঘোর কলিযুগে পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীরামচন্দ্রের নবরূপ পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের জীবনে! শ্রীশ্রীঠাকুর তাঁর পরমভক্ত এ যুগের হনুমান শ্রীশ্রীবড়দা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বললেন, যে আমাকে প্রণাম ক'রে বড়খোকাকে প্রণাম করে না আমি তার প্রণাম গ্রহণ করি না। এস ওয়াজেদ আলীর বিখ্যাত উক্তি এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেলো, "সেই ট্র্যাডিশন সমানে ব'য়ে চলেছে।" একবার পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীকাজলদা ঠাকুরকে প্রণাম ক'রে বসার পর ঠাকুর কাজলদাকে বলেছিলেন, কি রে বড়দাকে প্রণাম করলি না!? উত্তরে সেদিন শ্রদ্ধেয় কাজলদা বলেছিলেন, বড়দা তো এখানে নেই! সেই কথা শুনে ঠাকুর কাজলদাকে বলেছিলেন, এখানে বড়দা নেই তো কি হয়েছে তার আসন তো আছে! সেখানে প্রণাম করবি। আর একবার ঠাকুর শ্রদ্ধেয় কেষ্টদা সহ অন্যান্য ভক্তদের বলেছিলেন, বড়খোকা যখন আমার এখানে আসে তখন আপনারা উঠে দাঁড়ালে আমার ভালো লাগে। আবার একবার কথাপ্রসঙ্গে ঠাকুর তাঁর জীবনী লেখা সম্পর্কে বলেছিলেন, আমার বায়োগ্রাফি লিখতে পারে দু'জন। একজন কেষ্টদা, অন্যজন বড়খোকা। সম্পূর্ণ বায়োগ্রাফি লিখতে পারে বড়খোকা।

এই সমস্ত ঘটনা প্রমাণ করে ভক্ত-ভগবানের সম্পর্ক একাকারের অন্তর্নিহিত কারণ। প্রমাণ হয় শ্রীশ্রীবড়দা কে!? প্রমান হয় শ্রীশ্রীবড়দা আর শ্রীশ্রীঠাকুরের গভীর সম্পর্ক আর তখনই ভগবানে সমাহিত প্রাণ পরম ভক্তের নামের আগে 'শ্রীশ্রী' ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা যায়। কথায় আছে, বোঝে সে, প্রাণ বোঝে যার!!!!! 

তাই বড়দা, অশোকদাদা, বাবাইদাদার নামের আগে কেন 'শ্রীশ্রী' ব্যবহার হয় বা করা হবে তার মর্মার্থ বোঝে সে যার প্রাণ বোঝে। 

পরবর্তী প্রশ্নের উত্তর এরপর।

(লেখা ১১ই অক্টোবর'২০১৯)

প্রবন্ধঃ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর: প্রশ্নঃ ১৯

আচার্য ব্যাখ্যা, শ্রীশ্রীঠাকুর মূল্যায়ণ ও ছবি বিক্রি।

প্রশ্নকর্তারা আমাকে লিখেছেন আচার্য শব্দের ব্যাখ্যা দেওয়ার মত আমার ক্ষমতার ভান্ডার শূন্য। শ্রীশ্রীঠাকুরকে মূল্যায়ণ করতে পারে একমাত্র তারাই! ঠাকুরের রেফারেন্স সহ তারাই পারে আচার্য শব্দের ব্যাখ্যা দিতে ও শ্রীশ্রীঠাকুরের মূল্যায়ণ করতে আর শ্রীশ্রীঠাকুর মূল্যায়ণ আমাদের মত আত্মপ্রতিষ্ঠাকারী ব্যক্তিদের বিষয় নয় সেটা তাদের বিষয়, তাদের পথপ্রদর্শকদের বিষয়। আর কোনও কিছু স্বাধীন মত বা চিন্তা ব্যক্ত করলেই ঠাকুরের 'রেফারেন্স দিন, রেফারেন্স দিন' ব'লে চিল চিৎকার শুরু ক'রে দেয়! আর সবচেয়ে অবাক করা বিষয় ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের দেওঘরের দোকানে দোকানে ফটো বিক্রিও তাদের জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারছে, তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে ফটো বিক্রি নিয়েও আপত্তি তুলতে লজ্জা করছে না, দ্বিধা করছে না!!!!!!

এর উত্তরে বললাম, আচার্য শব্দের ব্যাখ্যা আপনি/আপনারা দেবেন সে তো ভালো কথা, দিন না! কিন্তু, আছে আপনার/আপনাদের সেই মুরোদ, সেই বিশ্বাস, সেই প্রত্যয়!? আর আমার ভান্ডার শূন্য হবার কথা বলেছেন তাহ'লে কান খুলে শুনে রাখুন আমার ভান্ডার কোনোদিনই শূন্য হবে না। আপনি তো দূর কথা আপনাদের কারও হিম্মত নেই আমার ভান্ডার শূন্য করে! এ ভান্ডার পরমপিতার ভান্ডার! যার সাপ্লাই অনবরত অন্তহীন ফল্গুধারা-র মত! হ্যাঁ ঠিক তাই! আপনি দেবেন আচার্য শব্দের ব্যাখ্যা!?!?!? এখনও পর্যন্ত একটা উত্তরও মাথা উঁচু ক'রে দিতে পারেননি আপনারা! আপনার/আপনাদের প্রতিটি মন্তব্যের লাইন ধ'রে ধ'রে উত্তর দিয়ে চলেছি অথচ আমার একটা কথারও জবাব দিতে পারেননি, পাশ কাটিয়ে গেছেন আর আমাকে দোষারোপ করছেন ভিত্তিহীন যুক্তিহীন কথার জাগলারী ক'রে ক'রে!

আরে বালখিল্য ঋষিকুল! শ্রীশ্রীঠাকুরের মূল্যায়ণ করবেন আপনি/আপনারা!? যাদের মুখের ভাষা নোংরা, কুৎসিত, মুখ দিয়ে ঠাকুর পরিবারের বিরুদ্ধে কুৎসিত ভাষার সাপ, ব্যাঙ, ইঁদুর, ছুঁচো বেরোয়, যাদের কথাবার্তা পড়লেই বোঝা যায় বিশৃঙ্খলা আর উচ্শৃঙ্খলায় ভরা অন্তর, যারা প্রকাশ্যে সজ্ঞানে ঠাকুর প্রতিষ্ঠার নামে ঠাকুরকে, ঠাকুর পরিবারকে রাস্তায় নাবিয়ে নিয়ে আসে তারা করবে শ্রীশ্রীঠাকুরের মূল্যায়ণ!?!?!? 

জানেন কি ঠাকুর কি বলেছিলেন তাঁর বায়োগ্রাফি কে লিখতে পারে? না জানলে যান শ্রদ্ধেয় শ্রীশ্রীকাজলদার কাছ থেকে জেনে আসুন। মূল্যায়ণ করবেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের!? আস্তে কন দাদা/দাদারা, শুনলে ঘোড়ায় হাসবো! ৫০ বছর ধ'রে মূল কেন্দ্র থেকে বিচ্যুত হ'য়ে, মুখ্য বিষয় থেকে মুখ ঘুরিয়ে, ঠাকুরের লক্ষ্য থেকে সরে গিয়ে মৌরসি পাট্টা জমিয়ে কায়েমী স্বার্থকে বজায় রাখার ঘৃণ্য প্রয়াসে অন্ধেরা গলিতে ঘুরে ঘুরে তুচ্ছ বিষয়ে জাবর কেটে চলেছেন! এইজন্যই বলে, কথায় আছে, বারো হাত কাঁকুরের তেরো হাত বিচি!!!!!!

তা দাদা, এতবড় ঠাকুর ভক্ত, ঠাকুরকে অবিকৃতভাবে প্রতিষ্ঠার উপাসক হ'য়েও এখনও পর্যন্ত ভাব জাগলো না!? আর কবে জাগবে!? নিজের কোনও উপলব্ধি, অনুভূতি হয়নি এখনও পর্যন্ত যার উপর দাঁড়িয়ে দুটো অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন!? এখনও পর্যন্ত এতটুকুও উপলব্ধি হ'লো না যে ঠাকুর আত্মজদের বিরুদ্ধে কুৎসা মহাপাপ!? এই কথা যে আপনাদের পথপ্রদর্শকদের আপনাদের শেখানো উচিত ছিল সেই সহজ সরল উপলব্ধিও হ'লো না আজ পর্যন্ত!? হবে না আর এই জীবনে! দুর্ভাগ্য আপনাদের!!! কথায় কথায় শুধু ধার করা বইয়ের কথা!? কথায় কথায় রেফারেন্স রেফারেন্স ব'লে উন্মাদের মত চিল চিৎকার!? দাদা, ঠাকুরের কথা যে সত্য হ'য়ে গেল!!!!!!!! বই পড়ে পড়ে যে বই হ'য়ে গ্যাছেন দাদা! বইয়ের মূল এসেন্স তো মজ্জাগত হ'লো না এখনও! আর কবে হবে!? ঘাটে গেলে!? দেখুন জলজ্যান্ত সামনাসামনি আর একটা রেফারেন্স দিলাম আপনাদের! ঠাকুর কি বললেন, "বই প'ড়ে বই হ'য়ে যেও না, তার essence (সার)-কে মজ্জাগত করতে চেষ্টা কর।" 

তা আপনারা কি মজ্জাগত করেছেন? শ্রীশ্রীবড়দা, বড়দা পরিবার এবং মূল কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত দীক্ষিতদের বিরুদ্ধে নিন্দা করা, কুৎসা করা, ব্যঙ্গ করা, টিটকারি দেওয়া, ঠেস দিয়ে কথা বলা, অশ্লীল গালাগালি করা, তীক্ষ্ণ 'র' সমালোচনা করা, অশ্রাব্য কুশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণ করা, ষড়যন্ত্র করা ইত্যাদি নরকের দুর্গন্ধকে মজ্জাগত করেছেন!? 

এগুলি অনুকূল ঠাকুরের শিক্ষা না প্রতিকূল ঠাকুরের!?

ঠাকুর পরিবারের ছবি বিক্রি হচ্ছে তাতেও আপনাদের শরীর জ্বলে যাচ্ছে!?!? এ তো সাংঘাতিক ব্যাধি, সংক্রামক ব্যাধি মশাই!!!!!!!! বর্তমান অত্যাধুনিক যুগে এসব কি গরুরগাড়ির যুগের কথাবার্তা?!?!? এটাতেও আপনাদের জ্বালা!? তা আপনারাও যাদের মানেন তাঁদের ফটো তুলুন না, তুলে দেওঘরের বাজারে ছাড়ুন না যেমন এখন ফেসবুকে ছাড়েন! ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বাড়াতে তো কোনও বুদ্ধি দিতে পারবেন না, তাদের ব্যবসা খাওয়ার মানসিকতা কেন!? কেন পেটে লাথি মারার এত তীব্র বাসনা!? পাগল হ'য়ে গেছেন নাকি!?  এত ভোঁতা কেন!?এত অস্থির কেন!? কোনও কিছু গ্রহণ করবার মানসিকতা বন্ধ্যা হ'য়ে গেছে!? ঠাকুরের মত মহাসমুদ্রকে এত মেপেছেন অথচ এতো এলোমেলো জীবন!?

ঠাকুরের পূর্ণাঙ্গ প্রার্থনা করা ও ঠাকুরকে আচার্য ব'লে মানার পরেও আচরণে কোনো উন্নতি বা পরিবর্তন হ'লো না!? ভয় নেই! এগিয়ে যান। ঠাকুর আছেন! ঠাকুর দেখছেন!!

এরপরে পরবর্তী প্রশ্ন।

(লেখা ৯ই অক্টোবর'২০১৯) 

প্রবন্ধঃ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর: প্রশ্নঃ১৮

আচার্য ও অধ্যক্ষ!

প্রশ্নকর্তা তেড়েমেরে ঝাঁঝিয়ে উঠে আমাকে বললেন, "আপনাদের মত আমাদের কোনও আচার্য নেই, আছেন অধ্যক্ষ! শ্রদ্ধেয় কাজলদা ও শ্রদ্ধেয় বিদ্যুৎদা আমাদের অধ্যক্ষ!  আচার্য একজনই! আমাদের আচার্য স্বয়ং ঠাকুর! আচার্য দু'জন হয় না। আপনারা ঠাকুর ছাড়া অন্যকেও আচার্য কেন মানেন, কেন ঠাকুর ছাড়া অন্যের নামের পূর্বে শ্রীশ্রী ব্যবহার করেন, সংক্ষিপ্ত প্রার্থনা কেন, ইষ্টভৃতির মূল মন্ত্র পালন কেন করেন না, সপ্তার্চ্চি-পঞ্চবর্হি কেন মানেন না, স্বস্তয়নীর তিন টাকা বাদে বাকি টাকা কি করেন" ইত্যাদি ইত্যাদি নানা কৌতূহলী প্রশ্নের অনধিকার চর্চার ঝড় বইয়ে দিয়ে মিথ্যে আনন্দের সুখ সাগরে ভাসতে থাকে! আর মনে মনে মনকলা খেতে খেতে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে ভাবে: আহা! কি দিলাম! একেবারে ঠেসে দিয়েছি! গলা পর্যন্ত দিয়েছি! আর এই সমস্ত আবাল প্রশ্নের বান ছোঁড়ে মেঘনাদের মত প্রোফাইলে মুখ লুকিয়ে! আর উত্তর দিলেই হুক্কা হুয়া হুক্কা হুয়া ক'রে তেড়ে আসে একসঙ্গে অনেকগুলি কলিযুগের মেঘনাদ! আর এসেই ঠাকুরবাড়ির বিরুদ্ধে এলোপাথাড়ি বহুদিনের পুরোনো দুর্গন্ধযুক্ত মলরুপী প্রশ্নের বাতকর্ম শুরু ক'রে দেয়! এত দুর্গন্ধ যে অন্নপ্রাশনের ভাত উঠে আসবে! আর প্রশ্নের উত্তরে উত্তর সহ পাল্টা প্রশ্ন যখন ধেয়ে যায় তখনই শুরু হ'য়ে যায় অশ্লীল ব্যক্তি আক্রমণ! এই-ই প্রশ্নকর্তাদের ঠাকুর প্রেমের, ভক্তির ও ভালবাসার জীবন্ত চরিত্র! এই-ই ঠাকুরকে আচার্য মানার এদের পরিচয়!! এই-ই এদের পূর্ণাঙ্গ প্রার্থনা করার নমুনা!!! এই-ই এদের ইষ্টভৃতি, স্বস্তয়নী, সপ্তার্চি, পঞ্চবর্হি পালনের জীবন্ত জ্বলন্ত উদাহরণ!!!!

যাই হ'ক এদের বক্তব্যকে সামনে রেখে আমি বললাম, 

কোন স্কুলে বা কলেজে পড়েন যে স্কুল বা কলেজের অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় শ্রীশ্রী কাজলদা এবং শ্রদ্ধেয় শ্রী বিদ্যুৎ রঞ্জন চক্রবর্তীদাদা একসঙ্গে দু'জনই!? আপনার কথামত বর্তমানে অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় শ্রীবিদ্যুৎ রঞ্জন চক্রবর্তীদা তাহলে শ্রদ্ধেয় শ্রীশ্রীকাজলদা কি পদে আছেন? আপনাদের সংগঠনে দুইজন অধ্যক্ষ!? আপনারা ঠাকুর পরিবারের বাইরে ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের চেয়েও অনেক উচ্চমার্গীয় দক্ষ, যোগ্য, জ্ঞানী ভক্তমণ্ডলী আছেন ব'লে নিজের ঢাক নিজে পেটাবার মত ঢাক পিটিয়ে শ্রীশ্রীবড়দাকে ছোট করবার, নিচা দেখাবার দুঃসাহস দেখিয়েছেন! তা' ঠাকুর পরিবারের বাইরে ঐরকম যোগ্য ও দক্ষ ভক্তপ্রাণ থাকা সত্ত্বেও ঠাকুর পরিবারের লোককে অধ্যক্ষ হিসাবে মনোনীত করেছেন কেন!? আপনারা যে না-মানা ও না-জানার গর্ভজাত তা আপনাদের আচরণই ফুটিয়ে তোলে! এই না-মানার সংস্কার আপনাদের কোথায় টেনে নাবিয়েছে তার একটা ছোট্ট উদাহরণ দিই।

আপনি ও আপনারা এমনই ঠাকুরকে মানেন যে না-মানার সাধনা করতে করতে আপনাদের ঠাকুর যে ব্যবহার, যে চরিত্র, যে আচরণ, যে কথা, যে ভাষা অপছন্দ করতেন সেই পথে হাঁটতে হাঁটতে আপনারা ভুলে গেছেন কাকে কি সম্বোধন করতে হয়! দেখুন, আপনি/আপনারা শ্রদ্ধেয় শ্রীশ্রীকাজলদাকে ও শ্রীবিদ্যুৎ রঞ্জন দাদাকে একবার শ্রদ্ধেয় কাজলদা ও বিদ্যুৎদা বলেছেন আর একবার বিদ্যুৎ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেছেন!!!!! শ্রদ্ধেয় কেষ্টদাকে শ্রদ্ধেয় কৃষ্ণ প্রসন্ন ভট্টাচার্য বলেছেন, লিখেছেন! নামের আগে যে 'শ্রী' ও নামের শেষে যে দাদা সম্বোধন করতে হয় সেই বোধটুকু পর্যন্ত লুপ্ত হ'য়ে গেছে!!!!!! শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির নামের আগে একটা 'শ্রী' যারা ব্যবহার করার শিক্ষা পায়নি, যারা সৎসঙ্গ সমাজের যে রীতি দাদা ও মা সম্বোধন সেই রীতি অনুযায়ী দাদা সম্বোধন করার ঐতিহ্য বহন ক'রে চলে না তারা দুটো 'শ্রীশ্রী' ব্যবহার নিয়ে কূটকচালির তুলকালাম করবে এতে আর আশ্চর্যের কি আছে! এটাই তো স্বাভাবিক! এটাই তো সত্য! এটা আর কিছু নয় ফাঁকিবাজি ও কপটতা-র চরম নিদর্শন! কর্মহীন অতি ঠাকুর প্রেমের পরিণাম! ছেঁদো স্বভাব নিয়ে শুধু ৫০ বছর ধ'রে কথার কূটকচালিতে থেকে গেলেন আর ছেঁদা খুঁজে গেলেন মানুষের আর দিনের শেষে হ'য়ে গেলেন মস্তবড় আপনারা এক একজন ছেঁদা বিজ্ঞানী!!!! 

যাই হ'ক আলোচ্য বিষয়ে আসি। 

আপনি/আপনারা ঠাকুরের সোনার সৎসঙ্গীদের বিভ্রান্ত করবার জন্য, বিভ্রান্ত ক'রে ক'রে বইয়ে যাওয়া পবিত্র গঙ্গার জলের মত ঠাকুরের 'বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠা'-র সৎসঙ্গ আন্দোলনের বইয়ে যাওয়া মূল স্রোত থেকে সরিয়ে এনে গঙ্গার মূল ধারা থেকে বেরিয়ে আসা বদ্ধ খালের স্রোত হীন পচা গঙ্গার জলের মত স্রোত হীন, আন্দোলনহীন, বদ্ধ পচা প্রাণহীন আন্দোলনের গন্ডির মধ্যে ফেলতে চাইছেন আর কলুর বলদের মত ৫০বছর ধ'রে ঐ এক বস্তাপচা গ্রহণযোগ্যতাহীন বুলি "আচার্য, শ্রীশ্রী, সংক্ষিপ্ত প্রার্থনা" ইত্যাদির ভিত্তিহীন অস্তিত্বহীন লেজ ধ'রে ঘুরে ঘুরে মরছেন চাক্কি পিসিং এন্ড পুশিং ক'রে ক'রে!

আচ্ছা আপনার/আপনাদের কথামত আচার্য সম্পর্কিত প্রশ্নে জিজ্ঞেস করি, ঠাকুর শ্রদ্ধেয় শ্রী কেষ্টদাকে কেন ঋত্বিকাচার্য করলেন? ঠাকুর একমাত্র যদি ইষ্ট হন, ঠাকুর যদি আচার্য হন, গুরু হন তাহ'লে তিনিই যে ঋত্বিক সেটা জানেন কি!? দীক্ষা যে তিনিই দেন সেটা জানা আছে কি? ঋত্বিক নামধারীরা যে শুধুমাত্র তাঁর নির্বাচিত প্রতিনিধি তা জানা আছে কি? তাঁর অনুমোদিত পাঞ্জাধারী ও পাঞ্জাদানকারীরাই একমাত্র দীক্ষা দেওয়া ও দীক্ষা দেওয়ার অধিকার দেওয়ার অধিকারী তা জানেন তো!? তাহ'লে ঠাকুরই ইষ্ট, আচার্য, গুরু যদি হন সেইমত ঠাকুরই হ'লেন আমার ঋত্বিক! তাহ'লে ঠাকুরই যদি আমার ঋত্বিক হন আর যদি তাঁর সাহায্যকারীরা পি. আর ও এস. পি. আর হন তাহ'লে কেন শ্রদ্ধেয় কেষ্টদা ঋত্বিকাচার্য অর্থাৎ ঋত্বিকদের আচার্য হবেন!? তাহলে ঠাকুর ভুল করেছিলেন!? ঠাকুর ভুল!? ঠাকুর পাগল!? ঠাকুর নেশাগ্রস্ত ছিলেন!? অবশ্য আপনারা, আপনাদের পূর্বসূরীরা ঠাকুরের শেষের দিনগুলি নিয়ে এইরকম প্রচারও করেছিলেন যে ঠাকুরের নাকি মাথা কাজ করছে না!!!!!!! এতটাই অস্পর্ধা, ঔদ্ধত্ব ছিল আপনাদের পূর্বসূরীদের!!!! আর যে অস্পর্ধা ও ঔদ্ধত্বের পরিচয় দিয়ে চলেছেন আজও! এসব করেছিলেন আপনাদের পূর্বসূরীরা পরম পূজ্যপাদ আচার্যদেব শ্রীশ্রীবড়দাকে সরিয়ে দিয়ে নিজেদের কায়েমী স্বার্থকে বজায় রাখতে, ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত 'সৎসঙ্গ'-এর দখল নিতে, ক্ষমতার দখল নিতে! ৫০ বছর ধ'রে কলুর বলদের মত এই ক্ষমতা দখল লাভের ঘানি টেনে যাবার ফল কি ফললো আপনার/আপনাদের স্টাডি কি বলে!? 

শ্রদ্ধেয় শ্রী কৃষ্ণ প্রসন্ন ভট্টাচার্যদা যদি ঋত্বিকদের আচার্য হন তাহ'লে শ্রীশ্রীবড়দার সৎসঙ্গীদের আচার্য হ'তে দোষ কোথায়!? শ্রদ্ধেয় কেষ্টদাকে ঋত্বিকাচার্য কেন করেছিলেন তা' ঠাকুর জানেন। আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে আমি যতটুকু বুঝি, ঋত্বিকদের কেমন হওয়া উচিত, ঋত্বিকদের আচার-আচরণ-ব্যবহার কেমন হবে, ঋত্বিকদের জ্ঞান-গরিমা, যজমান দের সঙ্গে সম্পর্ক কি রকম হওয়া উচিত এককথায় ঠাকুর ঋত্বিক সম্প্রদায়কে যেমন দেখতে চেয়েছিলেন তেমন হ'য়ে ওঠার জন্য যা যা দরকার তেমন তেমন ঠাকুর নিজে ক'রে দেখিয়ে ও করিয়ে কেষ্টদাকে তৈরি করেছিলেন আর তাই কেষ্টদা ক'রে  যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা ক'রে গেছেন, হ'য়ে ওঠার চেষ্টা করেছেন নিরন্তর, জীবনভর! পরিণতিতে ঠাকুর সমস্ত ঋত্বিকদের পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন ঋত্বিকদের আচার্য ক'রে। তাই তিনি ছিলেন ঋত্বিকাচার্য! 

ঠিক তেমনি ঠাকুর পরবর্তী ঠাকুর সৃষ্ট এই বিশাল সংগঠন 'সৎসঙ্গ'-কে, ঠাকুরের মিশনকে, ঠাকুর দর্শন, ঠাকুরের 'সৎসঙ্গ' আন্দোলনকে সামনে দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ-অপ্রত্যক্ষভাবে রক্ষা করা, বৃদ্ধি করা, বিশ্বব্যাপী সমস্ত জনগোষ্ঠীর কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য, কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের ঠাকুরের ভাবে ভাবিত ক'রে তোলার জন্য, প্রয়োজনানুপাতিক কঠোর-কোমল হাতে হাল ধ'রে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ঠাকুরের আচরণে আচরণসিদ্ধ, জ্ঞানে সমৃদ্ধ, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন মানুষ দরকার বা নেতা দরকার অর্থাৎ একজন ঠাকুরের জীবন্ত চলমান 'সত্যানুসরণ' দরকার যাকে আমরা আচার্য বলি সেই তিনি হলেন ঠাকুরের পরমপ্রিয় আদরের প্রথম সন্তান প্রাণের বড়খোকা, সৎসঙ্গ জগতের কোটি কোটি সৎসঙ্গীর  চোখের মণি, ভালবাসার মানুষ, সবার বড়ভাই সৎসঙ্গ জগতে স্বীকৃত 'শ্রীশ্রীবড়দা'!!!!! সেই শ্রীশ্রীবড়দা-ই আমাদের আচরণ ক'রে ক'রে প্রতিমুহূর্তে নিজে ঠাকুরের কুকুর হ'য়ে শিখিয়েছেন কেমন ক'রে ঠাকুরকে ভালোবাসতে হয়, আমাদের শিখিয়েছেন কেমন ক'রে ইষ্টের মানুষ হ'য়ে উঠতে হয়, কেমন ক'রে ঠাকুরের কুকুর হ'য়ে উঠে প্রকৃত মানুষ হ'য়ে উঠতে হয়, কেমন ক'রে ঠাকুরের ইচ্ছা, স্বপ্নকে বাস্তবায়িত ক'রে তুলতে হয়, কেমন ক'রে তীব্র অনুভূতিসম্পন মানুষ হ'য়ে উঠতে হয়, কেমন ক'রে তীব্র ভয়ঙ্কর প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ধীর স্থির হ'য়ে নেতৃত্ব দিতে হয়, কেমন ক'রে ধৈর্য ধ'রে সহ্য করতে হয় নিন্দা, ঘৃণা, কুৎসা, গালাগালি, সমালোচনা, কেমন ক'রে মাথা ঠান্ডা রেখে প্রতিপক্ষের কাছে ঢাল হ'য়ে উঠে নিজেকে ও সবাইকে রক্ষা করতে হয়, কেমন ক'রে ভালোবাসাময় মানুষ হ'য়ে উঠতে হয়!!!!!!! ঠাকুরের বাণী " ঈশ্বরেরই কুকুর তুমি নিষ্ঠা শেকল গলায় বাঁধা, ডাকলে তুমি কাছে আসো নইলে থাকো দূরেই খাড়া"---র মূর্ত রূপ শ্রীশ্রীবড়দা! তিনি শিখিয়েছেন কি ক'রে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়, শক্তিশালী ক'রে তুলতে হয়! তিনি শিখিয়েছেন কেমন করে ইষ্টস্বার্থ রক্ষার্থে ও ইষ্টস্বার্থ প্রতিষ্ঠায় আপ্রাণ হ'য়ে উঠতে হয়, কৌশলী হ'য়ে উঠতে হয়, হ'য়ে উঠতে হয় নিরাশী-নির্মম! আরো আরো অনেক কিছু শিখিয়েছেন! ইষ্টস্বার্থ প্রতিষ্ঠায় কেমন ক'রে আপোষহীন লড়াইয়ের উদাহরণ হ'য়ে উঠতে হয় হাতে কলমে করে করিয়ে সমগ্র সৎসঙ্গ সমাজকে শিখিয়েছেন এ যুগের হনুমান, অর্জুন, নিত্যানন্দ, বিবেকানন্দরূপী শ্রীশ্রীবড়দা!!!!! তাই তিনি আমাদের আচার্যদেব! আর তিনি তাঁর জ্বলন্ত জীবন্ত উদাহরণ রেখে গেছেন আমাদের কাছে আচার্যদেব শ্রীশ্রীঅশোকদাদাকে আমাদের সামনে! আচার্য পরম্পরার মধ্যে দিয়ে এবার ঠাকুর লীলা করছেন, করবেন ঘোর কলিযুগের শেষ দিন পর্যন্ত, যতদিন পর্যন্ত না কলিযুগ শেষে সত্যযুগে প্রবেশ করছে তাঁর সৃষ্ট সৃষ্টি!!!!!

এরপর পরবর্তী প্রশ্ন।

(লেখা ৮ই অক্টোবর'২০১৯)

প্রবন্ধঃ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর: প্রশ্নঃ ১৭

সাধন প্রক্রিয়া ও শ্রীশ্রীঠাকুর!

শ্রীশ্রীঠাকুর প্রদর্শিত সাধন প্রক্রিয়ার কথা লিখেছেন একজন প্রশ্নকর্তা! লিখেছেন, শ্রীশ্রীঠাকুর যে সাধন প্রক্রিয়ার কথা বলেছেন সেই প্রক্রিয়া ভিন্ন অন্য প্রক্রিয়ায় সাধন সম্পূর্ণ সংবিধান বহির্ভূত! আর প্রকৃত সাধন প্রক্রিয়া অনুসরণের কারণে তাদের দীক্ষিত মানুষের সংখ্যা নগন্য ব'লে উল্লেখ করেছেন।

প্রশ্নকর্তারা যে প্রশ্ন রেখেছেন তার জবাবে বললাম, আপনি কোন সাধন প্রক্রিয়ার কথা বলছেন? শ্রীশ্রীঠাকুরের কোনও গোপন সাধন প্রক্রিয়া আছে নাকি!? 

কোনো উত্তর পাওয়া গেলো না! পরবর্তি সময়ে আবার জিজ্ঞেস করলাম, শ্রীশ্রীঠাকুর কোন সাধন প্রক্রিয়ার কথা বলেছেন যেটা আপনার বা আপনাদের মত বালখিল্য ঋষিরা জানেন, পালন করেন অথচ বাকি কোটি কোটি ঠাকুরের শিষ্যরা জানেন না, জানেন না ঠাকুরের পরমপ্রিয় আত্মজরা!? 

আর, আপনারা ঠাকুরের সাধন প্রক্রিয়ার বড়বড় কথা বলেন অথচ আপনারা পালন করেন তো? এই আপনাদের পালনের নমুনা!? দীর্ঘ ও সংক্ষিপ্ত প্রার্থনার কচকচি দীর্ঘ ৫০ বছর ধ'রে যত্নের সঙ্গে পালন ক'রে আপনারা এক একজন বড় সাধক-এ পরিণত হয়েছেন! তার প্রমাণ আমরা প্রতিনিয়তই পাচ্ছি ও অদিক্ষিত মানুষেরা পেয়ে চলেছে। আপনাদের সাধনার ঠাকুর নির্দেশিত সাধন প্রক্রিয়া আপনাদের এমন জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে যে আপনারা, আপনাদের পথপ্রদর্শকরা এক একজন ঠাকুর বিশেষজ্ঞ হ'য়ে উঠেছেন, ঠাকুরের ২৫ হাজার বাণীর নিখুঁত বিশ্লেষক আপনারা এক একজন, জাগতিক, মহাজাগতিক সমস্ত বিষয়ের উপর ঠাকুরের অচিন্তনীয়, অভূতপূর্ব, অকল্পনীয় অফুরন্ত কথার ঝর্ণার অন্তরস্থিত অর্থ উপলব্ধি ও দিব্যদৃষ্টির অধিকারী শক্তিশালী মহাসাধক, মহান জীবন এক একজন যে যাদের মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে ঠাকুরের পরম আত্মজ, পরম আদরের বড়খোকা, ভক্ত কুলের সর্বশ্রেষ্ঠ পরম ভক্ত এ যুগের শ্রীশ্রীহনুমান, কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের চোখের মণি ঠাকুরের সত্যানুসরণ গ্রন্থের জীবন্ত চলমান রূপ শ্রীশ্রীবড়দার বিরুদ্ধে কুৎসা, কটূক্তি, গালাগালি অবলীলায়, চরম অবহেলায়! আপনারা এক একজন এমন ঠাকুরপ্রেমী যে ঠাকুরের জীবন্ত চলমান 'সত্যানুসরণ' শ্রীশ্রীবড়দাকে নিন্দা, অপমান, অশ্রদ্ধা, ঘৃণ্য সমালোচনা করতে আপনাদের বুকে বাধে না! এমনই রসকষহীন বিবেক বর্জিত সাধক আপনারা যাদের সাধন প্রক্রিয়া ঠাকুর নির্দেশিত আর জীবনযাপন শয়তান নির্দেশিত! আপনারা এমনই ঠাকুর অনুগামী যারা চরণ পূজার অনুগামী আর চলন শয়তান অনুসারী! যারা মুখ লুকিয়ে প্রকাশ্যে ফেসবুককে হাতিয়ার ক'রে শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে শুধুই হিংসার পিত্ত উগলে তীব্র অম্ল বমন করে, সংঘাতের আগুন জ্বালায় আর ঘৃণার বিষ ছড়ায় তারা নাকি পরম প্রেমময়ের দীক্ষিত!? তারা সৎসঙ্গী!? তারা মহান প্রেমিক পুরুষের প্রেমী সন্তান!? তারা গুরুভাই!? যারা ঠাকুর সৃষ্ট 'সৎসঙ্গ'-এর বর্তমান পরিচালক পরম পূজ্যপাদ আচার্যদেব শ্রীশ্রীঅশোকদাদাকে, কোটি কোটি সৎসঙ্গীর প্রেরণার আশ্রয়স্থল শ্রীশ্রীবাবাইদাদাকে, ইয়ং জেনারেশনের হার্টবিট শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে নিজের অনিয়ন্ত্রিত, কদচারী জীবনের নোংরা পচা দুর্গন্ধযুক্ত মল ছেটাতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না, সামান্যতম পাপ বোধ হয় না, সাপের ফণার মত লকলকে বিষাক্ত জিভ দিয়ে শুধু তাঁদের উপর বিষ নিক্ষেপ করে তারা বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় জীবন্ত ঈশ্বর, সৃষ্টিকর্তা পরমদয়াল পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের অনুগামী, দীক্ষিত, সৎসঙ্গী গুরুভাই!?!?!?!?!?!?!? এই তাদের ঠাকুর নির্দেশিত সাধন প্রক্রিয়ার নমুনা, উদাহরণ!? এই তাদের দীর্ঘ প্রার্থনার ফল ও তাদের ফসল!? যারা শারীরিক, মানসিক ও আত্মিকভাবে অশুদ্ধ, অসদাচারী, যাদের মুখ দিয়ে সাপ, ব্যাঙ, ইঁদুর, ছুঁচোর মত কথা বেরোয়, যারা তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে শুধু বড় বড় কথার বোমা ফাটায় আর আচরণ যাদের বিষাক্ত সাপের মত তারা ঠাকুর প্রতিষ্ঠার কথা বলে!? তারা ঠাকুর মিশনের পতাকাবাহী!? মানুষ কি এতই চার অক্ষর যে তাদের এই ধান্দাবাজি, ভন্ডামী বুঝতে পারছে না, ধরতে পারছে না!? শ্রদ্ধা-সম্মান, প্রেম-ভালবাসা, স্নেহ-মায়া-মমতা, মিষ্টতা-কোমলতা, সহজতা-সরলতা ইত্যাদির লেশমাত্র যাদের জীবনের অভিধানে নেই তারা করবে ঠাকুরের 'বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠা'-র দর্শনের প্রচার!? যাদের চোখ-মুখ-হৃদয় অবগুণে ভরা, নরকের কীট তারা স্বর্গের দেবদূত, ঠাকুরের এক ও একমাত্র পরম ভক্ত, ঠাকুরে লীন হ'য়ে যাওয়া, একাকার হ'য়ে যাওয়া শ্রীশ্রীবড়দার কাজের করবে বিচার!? করবে সমালোচনা!? এমনই আহাম্মক! এমনই বেকুবের দল!! আর, আরো সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় এরাই আবার লজ্জার মাথা খেয়ে ফেসবুকের মাধ্যমে শ্রীশ্রীবাবাইদাদাকে চিঠি লেখে!!!!!! 

আর এরা লিখেছেন এদের দীক্ষিতের সংখ্যা নগন্য। আমার জিজ্ঞাস্য, আপনাদের দীক্ষিত সংখ্যা নগন্য কেন? কেন কেউ আপনাদের কাছে দীক্ষা নিচ্ছে না? কেন আপনাদের, আপনাদের ঋত্বিকদের গ্রহনযোগ্যতা নেই মানুষকে যাজন করার? আপনারা ঠাকুরের অবিকৃত মূল সাধন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত পরম ভক্তকুল আপনারা জানেন না যাজনের প্রকৃষ্ট উদাহরণ নিজের জীবন!? আপনাদের জীবন দেখে কেউ আকৃষ্ট হচ্ছে না কেন ঠাকুরের দীক্ষা নেওয়ার!? কেন কেউ ঠাকুরকে আপন ক'রে নেবার নেশায় উন্মত্ত হচ্ছে না আপনাদের দেখে!? আপনারা নিজেরা দীর্ঘ সময় ধরে প্রত্যহ সকাল সন্ধ্যে নিয়মিত দীর্ঘ প্রার্থনা করেন তো!? বাপের বেটার মত বিবেককে সাক্ষী রেখে বুকে হাত দিয়ে মাথা উঁচু ক'রে বুক টানটান ক'রে জোর গলায় বলতে পারবেন তো হ্যাঁ আমি/আমরা সবাই সকল গুরুভাইবোন সকাল-সন্ধ্যে প্রতিদিন দীর্ঘ সময় ধরে দীর্ঘ প্রার্থনা ধৈর্য সহকারে করি!

মানুষকে বোকা ভাবেন নাকি? এত ভক্তি! এত ভালোবাসা! এত প্রেম! এত টান! এত ধৈর্য ও সহ্য শক্তি!? এত ডেডিকেশন যে পূর্ণাঙ্গ প্রার্থনায় ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ধরে ঠাকুরের পুজোপাট!? হ্যাটস অফ! হ্যাটস অফ আপনাদের ভন্ডামী ভক্তির! আপনারা ভক্ত নাকি ভন্ড!? কথাটা বললাম, বলতে বাধ্য হলাম এইজন্য যে, এত ভক্তি, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, প্রেম বর্ষণের পরেও আপনাদের দেখে লোকে দীক্ষা নিতে, ঠাকুরকে জীবনে আপন ক'রে নিতে পারে না!? কেন সত্যের উপর দাঁড়িয়ে এত পিছিয়ে পড়ছেন!? কেন আপনাদের সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে না!? এক্ষেত্রে কার দোষ!? কেন আজ কোটি কোটি দীক্ষিত লোকে ভরে যাচ্ছে মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ'!? কেন আপনাদের কাছ থেকে সরে এসে মূল স্রোতে আবার ফিরে আসছে মানুষ!? কেন আপনারা ধরে রাখতে পারছেন না মানুষকে!? আপনাদেরই কথানুযায়ী কেন দিন দিন নগন্য হ'য়ে পড়ছে আপনাদের দীক্ষিতের সংখ্যা!? উত্তর কি এখন!?

পরম প্রেমময়ের আঙিনায় প্রেমের বদলে ঠাকুর আত্মজদের বিরুদ্ধে এত হিংসা, এত ক্রোধ, এত ঘৃণা, এত কুৎসা, এত নিন্দা, এত সমালোচনা যেখানে, সেখানে নগন্য না হ'য়ে সচেতন মানুষে আপনাদের হিংসার আঙিনা ভরিয়ে দেবে ঠাকুর!? আপনি/আপনারা কি খবর রাখেন আপনাদের দ্বারা বহু পথভ্রষ্ট মানুষ ঠাকুরের দয়ায় মূল স্রোতে ফিরে এসেছে ও আসছে!? নগন্য হ'তে হ'তে একেবারে শূন্যে গিয়ে ঠেকবে সেদিন সমাগত। সেদিনের অপেক্ষা করুন। অবশ্য সেই লজ্জার দিন আপনি যাতে দেখে যেতে না পারেন তার প্রার্থনা করুন, যদি ঠাকুর শোনেন।

আর ঠাকুরকে অবিকৃত রাখার কথা বলেছেন আমাকে। ঠাকুরকে অবিকৃত রাখার দায়িত্ব তো ৫০ বছর ধ'রে আপনাদের পূর্বপুরুষ নিয়েছেন এবং আপনারা তা বজায় রেখে চলেছেন। কেন আর পারছেন না!? ঠাকুর কি আপনাদের হাতে তথাকথিত লোক দেখানো ভণ্ডামিতে ভরা মিথ্যের প্রাসাদে আর অবিকৃত থাকতে চাইছেন না? ঠাকুর কি তাঁর ভালোবাসাময় পুণ্যভূমিতে যেখানে তিনি (দেওঘরে) জীবনের বাকি দিনগুলি কাটিয়েছেন সেইখানেই বিকৃত থাকতে চাইছেন!? কি জানি! সময় কি উত্তর দিচ্ছে দাদা!? জেনে রাখুন, সময় সবসে বড়া বলবান!!!!!!!

(লেখা ৬ই অক্টোবর'২০১৯)

প্রবন্ধঃ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর। প্রশ্ন ১৬

ভুল ও ঠাকুর পরিবার সমার্থক!

প্রশ্নকর্তা ও কর্তারা ভুল আবিষ্কার করেছেন। ভুল আবিষ্কার করেছেন ঠাকুর আত্মজদের মধ্যে!!!!! ভুল করেছেন ও করছেন শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর স্নেহের ভালোবাসার ধন শ্রীশ্রী অশোকদাদা, শ্রীশ্রীবাবাইদাদা এমনকি শ্রীশ্রীঅবিনদাদা! আপনি যখন এতদূর পর্যন্ত উপলব্ধিতে পৌঁছেছেন তখন আর চিন্তা কি!? কিসের ভাবনা!? আপনার/আপনাদের বোধ যখন এত স্ট্রং, এত স্বচ্ছ তখন এত হতাশা কেন!? কেন ৫০ বছর ধ'রে হতাশার কান্না কেঁদে চলেছেন আপনারা!? ঠাকুর আত্মজরা যখন অন্ধকারে রয়েছেন ব'লে আপনার/আপনাদের উপলব্ধি হয়েছে, যখন কোটি কোটি ভক্ত শিষ্য যেটা বুঝতে পারছে না তখন সেই বিষয়টি আপনি/আপনারা কত সহজেই বুঝতে পেরেছেন, অভিজ্ঞতা লাভ হ'য়েছে আপনার/আপনাদের তখন সেখানে এত ব্যর্থতার দীর্ঘ নিঃশ্বাস পড়ছে কেন!? কেন ঘোর অন্ধকারে গলাকাটা লাশের মত মাটিতে পড়ে ছটফট করছেন !? এত উপলব্ধির গভীরে পৌঁছে গেছেন আপনি/আপনারা, নির্ভুল-নিখাদ জ্ঞানের আলোর সন্ধান পেয়েছেন অথচ ঠাকুরের উপর বিশ্বাস, ভরসা নেই!? আপসোস না ক'রে, হতাশ না হ'য়ে দেখুন না ঠাকুর কি করেন? আপনি/আপনারা কেন বিচারের ভার নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন? আপনি/আপনারা কেন বিচারকের আসনে নিজেকে বসিয়েছেন? এত উপলব্ধি, এত অভিজ্ঞতা, এত জ্ঞান অর্জন করেছেন আর এই উপলব্ধি হয়নি যে নিজের অজান্তে একটা ঔদ্ধত্বপূর্ণ অহংকার আপনার/আপনাদের কথাবার্তার মধ্যে ফণা তুলে ছোবল মেরে চলেছে ঠাকুর আত্মজদের বুকে, প্রকারান্তরে ঠাকুরের বুকে!?!?!? আপনার/আপনাদের এত জ্ঞান? আপনি/ আপনারা ঠাকুরের সব বই পড়ে ফেলেছেন, ঠাকুরের সব বিষয়ের উপর বলা হাজার হাজার বাণীগুলি জানা হ'য়ে গ্যাছে অথচ ঠাকুরের পরম আদরের বড় সন্তান বড়খোকা, এ যুগের হনুমান, বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের বড়ভাই, ঠাকুর ও সৎসঙ্গ-এর চোখের মণি শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের সন্তানরা কিচ্ছু বোঝেন না, কিচ্ছু জানেন না, কোনও উপলব্ধি, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা নেই!!!!!!? ঠাকুর এত দয়াময় যে আপনাকে/আপনাদের এমন শক্তি দান করেছেন যে তাঁর আত্মজদের উপর আপনি আপনার/আপনাদের জ্ঞানের, আপনার/আপনাদের উপলব্ধির, আপনার/আপনাদের অভিজ্ঞতার চাবুক চালান হিংসার মসনদে বসে!? এত উপলব্ধি হয়েছে আর এই উপলব্ধি হয়নি হিংসার আগুনে যাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারতে চাইছেন আপনারা সবাই পাগলের মত সেই হিংসার আগুন তো জ্বলছে আপনার/আপনাদের বুকের মধ্যে আর সেই আগুনে পুড়ে যে ছাই হ'য়ে যাচ্ছে বুকের ভিতর, পুড়ে খাক হ'য়ে যাচ্ছে জীবন-যৌবন সেদিকে খেয়াল নেই!? খেয়াল নেই বন্ধু! শেষের সেদিন কিন্তু ভয়ঙ্কর! দেখুন কেমন উজান বেয়ে তরতড়িয়ে এগিয়ে চলেছে, গ্রাস ক'রে ফেলছে গোটা বিশ্বকে ঠাকুরের নিজের হাতে তৈরি 'সৎসঙ্গ' পিতাপুত্রের অকল্পনীয়, অভাবনীয়, অচিন্তনীয়, অভূতপূর্ব লীলার মধ্যে দিয়ে!!!!!!! সব, চারপাশ সব ভেসে যাবে এই লীলা, মহালীলার চোরাস্রোতে! ফল্গুধারার মত ব'য়ে যাচ্ছে, ব'য়ে যাবে আর পদ্মার ভাঙ্গনে গোটা গ্রামকে গ্রাস করার মত গোটা বিশ্বকে গ্রাস ক'রে ফেলছে ও ফেলবে একদিন সৎসঙ্গ আর সৎসঙ্গের পেটের মধ্যে ঢুকে যাবে গোটা বিশ্ব ঠাকুরের রেখে যাওয়া নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নেতৃত্বে!!!!!!! রেতধারার মধ্যে দিয়ে পিতাপুত্র রূপে এবারের এই ভয়ঙ্কর লীলা!!!! এই লীলার রথ এগিয়ে চলেছে, যে বা যারা এই রথকে বাধা দেবে, থামাতে চেষ্টা করবে তাদের সলিল সমাধি ঘটবে এই রথের চাকার তলায়!!!!!! নিরাশি নির্মমভাবে চলবে তাঁর অপারেশন!!!!!!!! এই অপারেশনের সার্জেন স্বয়ং পরম পিতা! তাই সবাই সাবধান! সব সাধু সাবধান!!!

এই কথা মানতেও পারেন আবার নাও মানতে পারেন! গ্রহণ-বর্জন আপনার/আপনাদের ব্যক্তিগত। কিন্তু সত্য চিরকাল সত্য!!!!!!!!

(২রা অক্টোবর'২০১৯)

প্রবন্ধঃ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর। প্রশ্ন: ১৫)

অধ্যক্ষ সম্বোধন ও শ্রী ব্যৱহার।

প্রশ্নকর্তা আমাকে বেশ তেজের সঙ্গে বিশেষণ সহযোগে ঝাঁঝিয়ে বললেন মশাই আপনাদের মত আমাদের আচার্য হয় না, আমাদের অধ্যক্ষ; আর আমাদের অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় কাজলদা ও শ্রদ্ধেয় বিদ্যুৎ রঞ্জন চক্রবর্তী। 

আমি বললাম, আপনি বলতে পারেন কোন স্কুলে বা কলেজে পড়েন যে স্কুল বা কলেজের অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় কাজলদা এবং শ্রদ্ধেয় বিদ্যুৎ রঞ্জন চক্রবর্তীদাদা। আপনার কথামত বর্তমানে অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় শ্রীবিদ্যুৎ রঞ্জন চক্রবর্তীদা তাহলে শ্রদ্ধেয় শ্রীকাজলদা কি পদে আছেন? আপনাদের সংগঠনে দুইজন অধ্যক্ষ!? আপনারা ঠাকুর পরিবারের বাইরে অনেক উচ্চমার্গীয় দক্ষ, যোগ্য, জ্ঞানী ভক্তমণ্ডলী থাকা সত্ত্বেও ঠাকুর পরিবারের লোককে অধ্যক্ষ মনোনীত করেছেন কেন!? কথাটা বললাম এইজন্য যে আপনি নিজেই আপনার আমাকে করা মন্তব্যগুলিতে শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আক্রমণ করতে গিয়ে বারবার এই উচ্চমার্গীয় ভক্তদের উদাহরণ টেনে এনে তাঁদের সঙ্গে তুলনা ক'রে ঠাকুর আত্মজদের ছোট করতে চেয়েছিলেন! তাই কথাটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশ্নটা করলাম। আপনারা যে না-মানার গর্ভজাত তা আপনাদের আচরণই ফুটিয়ে তোলে! কেননা আপনারা শ্রীশ্রী ব্যবহার নিয়ে যে অযৌক্তিক যুক্তি তর্কের ঝড় তুলে বাজার গরম করতে চেষ্টা করছেন ৫০ বছর যাবৎ সেই ঝড়ে নিজের ঘরই ভেঙে চুরমার!!!!! আপনি ও আপনারা এমনই ঠাকুরকে মানেন যে না-মানার সাধনা করতে করতে আপনাদের ঠাকুর যে ব্যবহার, যে চরিত্র, যে আচরণ, যে কথা, যে ভাষা অপছন্দ করতেন সেই পথে হাঁটতে হাঁটতে আপনারা ভুলে গেছেন কাকে কি সম্বোধন করতে হয়! দেখুন, আপনি শ্রদ্ধেয় শ্রীবিদ্যুৎ রঞ্জন দাদাকে শ্রদ্ধেয় বিদ্যুৎ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেছেন!!!!! শ্রদ্ধেয় কেষ্টদাকে শ্রদ্ধেয় কৃষ্ণ প্রসন্ন ভট্টাচার্য বলেছেন! শ্রী ও দাদা ব্যবহার করেননি। এটা আর কিছু নয় অতি ঠাকুর প্রেমের পরিণাম! ছেঁদো স্বভাব নিয়ে শুধু ৫০ বছর ধ'রে কথার কূটকচালিতে থেকে গেলেন আর ছেঁদা খুঁজে গেলেন মানুষের আর দিনের শেষে হ'য়ে গেছেন মস্তবড় আপনারা এক একজন ছেঁদা বিজ্ঞানী!!!! 

ক্রমশ:।

এরপর পরবর্তী প্রশ্ন।

(২৭শে সেপ্টেম্বর'২০১৯)

প্রবন্ধঃ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর। প্রশ্ন ১৪

কুৎসা ও শ্রদ্ধেয় সম্বোধন!?

এই প্রশ্নকর্তারা আমাকে যতগুলি কমেন্ট করেছে প্রতিটি কমেন্টের প্রতিটি লাইনের উত্তর তাদের দিয়েছি, দিয়ে যাচ্ছি ও দিয়ে যাবো। এবং তাদের পাল্টা প্রশ্ন রেখেছি, রাখছি ও রাখবো কিন্তু এই প্রশ্নকর্তারা একটা প্রশ্নেরও উত্তর দেন নি, আর দিতে পারবেনও না তা জানি আর না দিয়ে প্রসঙ্গ পাল্টে অন্য প্রসঙ্গে চলে যায় ধূর্তের মতন আর পাল্টা গালাগালি, কুৎসার বাজার খুলে বসে এরা! 

হে প্রশ্নকর্তা! যত ইচ্ছা গালাগালির অলংকারে ভরিয়ে দিয়ে লিখুন, প্রশ্ন করুন! গালাগালি দিয়ে লিখেছেন আবোল তাবোল লেখার কলম থামাতে। তা বলি কি একটু ধৈর্য ধরুন, অসহিষ্ণু হবেন না। সময়মত আপনাদের সব সমাপ্ত হবে আর আপনাদের  প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার শেষ হ'লে স্বাভাবিকভাবেই আমি কলম থামিয়ে দেবো। আপনাকে বিরক্তি প্রকাশ করতে হবে না। উত্তেজিত হ'য়ে রক্তচাপ বেড়ে গেলে সারা জীবন রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ খেয়ে যেতে হবে। সারা জীবন ওষুধ খেয়ে কি বাঁচা যায়!? মানুষ কখন রেগে যায়? কখন উত্তেজিত হ'য়ে গালাগালি করে? তা একটু যাদের বোধবুদ্ধি আছে তারা বুঝতে পারে, ধরতে পারে। আর আপনারা যারা আমাকে সহ্য করতে না পেরে অকথ্য কুকথ্য গালিগালাজ করেন সেই সবাই এই এক চরিত্রের! আর সচেতন পাঠক মাত্রই দুধ কা দুধ, আর পানি কা পানি বুঝে নিতে পারে, আলাদা ক'রে নিতে পারে খাঁটি দুধ আর জল মেশানো দুধ! আপনাদের আর আমার উভয়ের কমেন্ট পড়ছেন, পড়েছেন  দীক্ষিত-অদিক্ষিত পাঠককুল। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের প্রেমের পতাকার তলায় ঘৃণার নিশ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে ঠাকুর আত্মজ শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা উগরে দিয়ে তাঁদের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন!!!!!!!! পাপ! মহাপাপ!!

বাহঃ!!!!!! এই না হ'লে বাপকা বেটা!? প্রবাদ আছে, "বাপকা বেটা সহিস কা  ঘোড়া, কুছ নেহি তো থোড়া থোড়া।"  পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে বাপ-বেটার শিক্ষা-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের!!!! আপনাদের পূর্বপুরুষরা যা করেছেন আপনারা সেই মহাপাপী কুজন যে পথে করে গমন-এর মত পূর্বপুরুষদের ভন্ডামির বোঝা ব'য়ে চলেছেন! একদিকে দিচ্ছেন শ্রীশ্রীবড়দাকে ও ঠাকুর আত্মজদের তীব্র গালাগালি, করছেন প্রকাশ্যে কুৎসা, নিন্দা, সমালোচনা আবার পরবর্তীতে বলছেন শ্রদ্ধেয় বড়দা, শ্রদ্ধেয় অশোক দাদা ইত্যাদি!!!!!!!! কেন!? কেন এই ভণ্ডামি!? কেন এই চালাকি!? কেন এই কপট মানসিকতা!? কেন এই ঘৃণ্য চরিত্র!? কে শেখাচ্ছে এই সব!? মনে রাখবেন, সময় সবকিছুর নিখুঁত উত্তর দেবে! সময় সবসে বড়া বলবান!!

হ্যাটস অফ প্রশ্নকর্তা আপনাদের!!!!!!! কখন যে কি রূপ দেখবো! 

ক্রমশ:

এরপরে পরবর্তী প্রশ্ন।

(লেখা ২৬সেপ্টেম্বর '২০১৯)

প্রবন্ধ! কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর। প্রশ্ন ১৩

 মানা-না মানা ও অধ্যক্ষ চয়ন।

কয়েকজন প্রশ্ন করেছেন: আপনি কি আমাদের মূর্খ ভাবেন? আপনি আমাদের যা গেলাবেন আমরা তাই গিলবো? আপনি নিজেকে পন্ডিত ভাবেন?

আমি তাদের বললাম:

কে বলেছে আপনি/আপনারা মূর্খ!? কার এত জ্ঞান আছে যে আপনাদের বলবে মূর্খ!? আমি আপনাদের আর কি গিলাবো? যা গেলার তো গিলে বসে আছেন! বসে গ্যাস অম্বলে ছটফট করছেন! মুখ ভর্তি, পেট ভর্তি হ'য়ে আছে আপনাদের! একটুও আর জায়গা নেই যে একটু তাঁর চলনামৃত দেবো! চরণামৃতে যাদের মাথা, পেট ও মুখ ভর্তি তাদের কেউ কি আর কিছু গেলাতে পারে, না গেলাতে যাবে!? কার ঘাড়ে ক'টা মাথা আছে চরণামৃত রসের আমেজে ডুবে থাকা ভরপুর নিষ্ঠা বিহীন গোঁয়ার জীবনকে চলনামৃত রস গেলাবে!? এ ব্যাপারে আমি শুধু বলতে পারি, আমি নিজেকে যেমন পন্ডিত ভাবি না তেমনি নিজেকে লেন্ডিতও ভাবি না। শুধু ভাবি, পুরুষোত্তমের প্রধান সহচর, প্রধান ভক্ত শ্রীশ্রীবড়দাকে যারা এভাবে অপমান করতে পারে, লাঞ্ছনা করতে পারে, পারে অশ্লীল ভাষা প্রয়োগে তীব্র আক্রমণ, তারা মূর্খ!? তারা তো অসীম অনন্ত জ্ঞানের অধিকারী! কে বলেছে আপনাদের শ্রীশ্রীবড়দাকে আচার্য ব'লে মেনে নিতে? আপনাকে বা আপনাদের তো দূরের কথা আপনাদের পথপ্রদর্শকদের কি বলেছে? বলেনি। সবসময় একটা কথা জেনে এসেছি ঠাকুর আর ঠাকুরবাড়ি থেকে মানা আর না মানা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি মানতেও পারি, নাও মানতে পারি। শ্রীশ্রীবাবাইদাদা আমাদের প্রতিনিয়ত বুঝিয়েছেন, বুঝিয়ে চলেছেন যে, গ্রহণ-বর্জন একান্তই আমার ব্যক্তিগত বিষয়। ঠাকুরের কাছে এটাও জেনেছি, মানা আর জানা দুই ভাই। একটা আসলে আর একটা আপনা থেকেই এসে যায়! মানতে গেলে জানতে হবে আর জানতে গেলে মানতে হবে। যে কোনও একটা রাস্তা দিয়ে শুরু করতে হবে চলা। আপনি/আপনারা মানেন না তাই জানেন না! আপনি জানেন না তাই মানেন না! না মানার ও না জানার শিক্ষা এবং মানতে ও জানতে না চাওয়ার জন্মগত প্রবণতা আপনাদের অশিক্ষিত করেছে আর না মানা ও না জানার দুর্ভাগ্য করেছে আপনাদের অমানুষ! তাই আপনার/আপনাদের নির্দ্বিধায়, নিঃসঙ্কোচে শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারকে কলঙ্কিত করতে বুক কাঁপে না, হাত কাঁপে না তাঁদের উদ্দেশ্যে নোংরা অশ্লীল অপমানকর উক্তি লিখতে! ঠাকুর কি আমাদের এই শিক্ষায় শিক্ষিত করতে এসেছিলেন!? কে বলেছে পুরুষোত্তম বংশ ছাড়া অধ্যক্ষ মর্যাদা পেতে পারে না? নিজেদের মনগড়া বৃত্তি-প্রবৃত্তির চুলকানিতে ভরা ভুলভাল কথা লেখেন কেন? আপনাদের প্রশ্নের উত্তরে আমি উত্তর দিয়ে যে প্রশ্ন আপনাদের কাছে  রেখেছিলাম সেই প্রশ্নের এখনও পর্যন্ত একটাও উত্তর দিয়েছেন? চোরের মত, নির্লজ্জের মত কথার ট্র্যাক ঘুরিয়ে দেন কেন? আপনার/আপনাদের প্রত্যেকটি কথার, প্রত্যেকটি লাইনের উত্তর দিয়েছি আর যখন প্রশ্ন করেছি তখন 'উত্তর দেওয়ার দরকার মনে করি না' ব'লে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যান! কেন? বাপের বেটার মত উত্তর দিন আমার এই প্রশ্নের: আপনারা লিখেছেন, "ঠাকুরবাড়ির বাইরে ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের থেকেও অনেক উচ্চমার্গীয় জ্ঞানী তপস্বী মহান পুরুষ আছেন যাদের অনায়াসেই অধ্যক্ষ করা যায়।" তিনারা কারা নাম বলছেন না কেন? ঠাকুর পরিবারের বাইরে অধ্যক্ষ হবার মত যদি উচ্চমার্গীয় অসীম জ্ঞানের অধিকারী কোনও মহাপুরুষ থেকেই থাকে তবে কেন তাদের কাউকে আপনাদের অধ্যক্ষ করেননি!? কেন করেছেন ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের!? নাকি আপনাদের অধ্যক্ষ ঠাকুরবাড়ির বাইরের কোনও সদস্য!? শ্রদ্ধেয় শ্রীশ্রীকাজলদাদা, শ্রীবিবেকদাদা ও অন্যান্য শ্রদ্ধেয় দাদারা ঠাকুর আত্মজ নন!?  মুখে কথা বলেন নাকি অন্য মুখে কথা বলেন!? আর ইনবক্সে কেন আসবো!? প্রকাশ্যে বলতে অসুবিধা কোথায়!? যিনি দক্ষ, যোগ্য, তাঁকে তুলে ধরতে গোপনীয়তা অবলম্বন করতে হবে কেন!? সত্যকে চাপা দিয়ে রাখা যায় নাকি!? সূর্যকে ঢেকে রাখা, লুকিয়ে রাখা যায় নাকি!?কোথায় শিখেছেন এসব অজুহাত নির্ভর জালি কথা!? জালি কথায় চোস্ত হ'য়ে গ্যাছেন একেবারে!!!!!!!। আপনারা লিখেছেন ওই সমস্ত উচ্চমার্গীয় যোগ্য, দক্ষ ব্যক্তিরা আপনাকে/আপনাদের উনাদের প্রচারের জন্য রাখেননি। কথাটা একশো ভাগ সত্য মেনে নিলাম তাহ'লে কি ধ'রে নেবো ঠাকুরবাড়ির বিরুদ্ধে, ঠাকুর আত্মজ শ্রীশ্রীবড়দা ও বড়দা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে কুৎসা, গালিগালাজ করার জন্য আপনাদের রেখেছেন!? কারণ ফেসবুকে সবকিছুই তাঁরা দেখছেন অথচ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠতে পারে তো, নাকি? এই ৫০বছরে একবারও যদি ঠাকুর সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান 'সৎসঙ্গ' ও ঠাকুর আত্মজ শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের উপর আপনাদের 'না মানা'--র এই নোংরা অকারণ আচরণ, ব্যবহার, ভাষা ইত্যাদির বিরোধিতা আপনাদের পথপ্রদর্শকরা করতেন তাহলে আপনারা এতটা নিচে নাবতে পারতেন না! এই প্রশ্ন আপনারা জনসমক্ষে নিজেরাই তুলে দিয়ে তাঁদের কলঙ্কিত, ছোট করছেন না তো!? কলঙ্কিত করার মুর্খামি করছেন না তো!? তাঁদের নিন্দিত, সমালোচিত করার ষড়যন্ত্রের কোনও ঘৃণ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না তো!? ভেবে দেখবেন আপনারা অন্ততঃ একটিবার!

ক্রমশ:

এরপর পরবর্তী প্রশ্ন।

(২৫শে সেপ্টেম্বর'২০১৯)

প্রবন্ধ! কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর: প্রশ্ন ৪

মতের অমিল ও অসহিষ্ণুতা।

লেখালেখিকে কেন্দ্র ক'রে মতের আদান প্রদান একটা স্বভাবিক প্রক্রিয়া। মতের মিল হ'তেও পারে আবার নাও হ'তে পারে। এটাও স্বাভাবিক প্রক্রিয়া মাত্র। গ্রহণ-বর্জন দাতা-গ্রহীতা উভয়ের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় ত্রুটি থাকা বা না থাকা সেটা ব্যক্তি নির্ভর। এই মতের আদান প্রদানের মধ্যে সুস্থ-অসুস্থ মানসিকতার প্রতিফলন ঘটে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতও হয় বটে। এই গ্রহণ-বর্জন, মিল-অমিল, মানা-না মানা ইত্যাদি সব ব্যাপারটাই প্রতিটি ব্যক্তির মানসিকতা, দৃষ্টিভঙ্গি, জীবন ধারণ, শিক্ষা, রুচি, পরিবেশ, সঙ্গ, অসহিষ্ণুতা এবং সর্বোপরি ইগো নামক একটা ভয়ঙ্কর সংক্রামক ব্যাধি যা প্রায়শঃই অনিরাময়যোগ্য (নিরাময়ের এক ও অদ্বিতীয় উপায়, পথ বা পথ্য হ'লো পাহাড়কে মহম্মদের কাছে আসা) ইত্যাদিকে ঘিরে আবর্তিত হয়। 

যাই হ'ক আমার বিভিন্ন লেখাকে কেন্দ্র ক'রে প্রশংসা-নিন্দার বলয় তৈরি হয়েছে! প্রশংসা যেমন আনন্দ দেয়, শরীর-মনকে প্রফুল্ল ক'রে তোলে ঠিক তেমনি নিন্দা, কুৎসা, গালাগালি আঘাত হ'য়ে বুকে বাজে।

একজন প্রশ্ন করলেন, অন্যের মতের সঙ্গে আপনার মতের মিল না হ'লেই কথার প্রহার করবেন? আমি জিজ্ঞেস করলাম, কার মতের সঙ্গে আমার মতের মিল হয়নি? কে সে? কার কথা বলছেন? তখন কথা ঘুরিয়ে দিয়ে বললেন, সে যেই হ'ক, আপনি কথার প্রহার করতে পারেন কিনা বলুন? আমি বললাম, আরে বাবা! এ তো অদ্ভুত ব্যাপার! ধর নেই, লেজ নেই, পেটি দেখে বলো দেখি এটা কি জীব! ব্যাপারটা তাই হ'লো নাকি!? ওপার থেকে অনেকক্ষন কোনও কমেন্ট নেই! অনেকক্ষন পর ভেসে উঠলো কমেন্ট বক্সে, আপনি একটা বিষাক্ত সাপ!

আমি লিখলাম, আপনি ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখুন আপনি উত্তেজিত হ'য়ে কিসের প্রহার করলেন! আপনি কি অন্যের হ'য়ে জোয়াল টানছেন? নাকি আপনি নিজেই সেই ব্যক্তি যার মতের সঙ্গে আমার মতের মিল না হওয়ায় এই আক্রমণ? কারণ যাদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমার কথার চাবুক সেটা ঘুরে দিক পরিবর্তন ক'রে আপনার দিকে ঘুরে গিয়ে আপনাকে অসহিষ্ণু ক'রে তুললো! কেন? তাহ'লে কি ধ'রে নিতে হবে এই আপনিও তাদের একজন!? ছুপা রুস্তম! এটা কি "চোরের মন বোঝকার দিকে" হ'লো না? হ'লো নাকি, "ঠাকুর ঘরে কে? আমি কলা খাইনি!" আপনার প্রশ্নগুলি কি প্রবাদের মত হ'য়ে গেল না!? 

এখন প্রশ্ন হচ্ছে কোনটা মত? কুৎসা, নিন্দা, গালাগালি, উগ্র কুৎসিত সমালোচনা কি মতের মধ্যে পড়ে? অসহিষ্ণু মানুষের সঙ্গে কি মতের আদান প্রদান চলতে পারে? মতের আদান প্রদানের মধ্যে কি তর্ক চলে? মত বিনিময়ে কি হারজিতের কোনও স্থান আছে? মত বিনিময় কি জ্ঞানের পরিধি বিস্তারের অন্তরায় নাকি সম্পর্কে ফাটলের কারণ? মত বিনিময় কি লক্ষ্যহীন ও লক্ষীছাড়া অসভ্য বর্বরোচিত হয়? কারও প্রতি কারও অশ্লীল মন্তব্যের (?) পরিপ্রেক্ষিতে যদি কেউ সেই অশ্লীল মন্তব্যের বিরুদ্ধে কড়া কথার চাবুক চালায় তাহ'লে কি সেই কড়া কথার প্রহারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবার জন্যে মতের দোহাই দিয়ে মিল-অমিলের প্রশ্ন তুলে ধরতে হবে!? 

যাক, যার পাঁঠা সে লেজে কাটবে কি মাথায় কাটবে সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার! 

তবে সে দিনও বেশিদূর নেই একদিন আসবে যেদিন নিজের পাঁঠা ব'লে যেমন ইচ্ছা কাটবো তাও নিষিদ্ধ হবে। কারণ সভ্যতার অগ্রগতি অন্তহীন!!!!!!!

(লেখা ১২সেপ্টেম্বর'২০১৯)

প্রবন্ধঃ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর: প্রশ্ন ২

লেখায় উপমা প্রয়োগ!

কোন বিষয়কে কেন্দ্র ক'রে লেখালেখির সময় স্বাভাবিকভাবেই কিছু প্রবাদ বা উপমা প্রয়োগ করেন লেখক-লেখিকারা। যদিও আমি কোনও লেখক নই, ওই মাঝে মাঝে সামাজিক প্রেক্ষাপটে চোখের সামনে কিছু যখন ভেসে ওঠে তখন শব্দ দিয়ে দু'একটা মালা গেঁথে ফেলি আর সেগুলি আমার টাইম লাইনে পোষ্ট ক'রে দিই; এই যা মাত্র। ফেসবুককে মনে করেছিলাম সামাজিক আন্দোলনের একটা স্ট্রং মাধ্যম! ভেবেছিলাম ফেসবুকের মধ্যে দিয়ে সমাজকে সচেতন করার জন্য একটা সুসংবদ্ধ উচ্চমার্গীয় গণ আন্দোলন গড়ে তোলা যাবে! যদিও সেই আশায় এখনো পুরোপুরি ভাটা পড়েনি, কারণ আশায় মরে চাষা! কিন্তু ফেসবুক যদিও সেই আশা এখনো জাগিয়ে তুলতে পারেনি। উল্টে বিপরীত প্রতিক্রিয়া প্রবল! মিথ্যাচার, ব্যক্তিগত কুৎসিত আক্রমণ, দলীয় ক্ষুদ্রতর স্বার্থে প্রচার ইত্যাদি ইত্যাদির রমরমা প্রদর্শনে ফেসবুক অলংকৃত ক'রে রেখেছে! তবুও আমার বিশ্বাস ফেসবুককে জন সমাজের সর্বদিকের সুশিক্ষার শক্তিশালী মাধ্যম করা যেতে পারে তা সে যতই নেগেটিভ আবহাওয়া প্রবল হ'ক না কেন।

যাই হ'ক, এই আশাকে জাগিয়ে রাখার প্রয়াসে মাঝে মাঝে চেষ্টা করি মনের কিছু ভাবকে ছড়িয়ে দিতে। এমনই কোনও কোনও লেখাকে কেন্দ্র ক'রে কেউ কেউ আমায় প্রশ্ন করেন, আমি যে উপমা সহযোগে আমার লেখা পোস্ট করি তা কাউকে বলা উচিত কিনা। আমি তাদের সবিনয়ে জিজ্ঞেস করতে চাই, কোন ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য ক'রে আমি কি কথা বলেছি? কাউকে নাম ধ'রে কি পোষ্টে উল্লেখিত বক্তব্য পোষ্ট করেছি? ফেসবুক পাঠক বা প্রশ্নকর্তা কি বলতে পারবেন কাকে উদ্দেশ্য ক'রে আমি আমার লেখার মধ্যে উপমা বা প্রবাদ প্রয়োগ করেছি?! সমষ্টিকে জড়িয়ে সামাজিক প্রেক্ষাপটের উপর দাঁড়িয়ে, সামাজিক, রাজনৈতিক, শিক্ষা ও ধর্মীয় অবস্থানের উপর ভিত্তি ক'রে কবি, লেখক, শিল্পী ইত্যাদি সমাজ সচেতন ব্যক্তিত্বরা ভুত, বর্তমান, ভবিষ্যতের উপর কবিতা লেখে, গল্প-উপন্যাস-নাটক রচনা করে, ছবি আঁকে, ছবি তৈরি করে। সেখানে কি তাঁরা সামগ্রিক পরিবর্তনের দিশা দেখানোর লক্ষ্যে কোনও একক ব্যক্তি বা বস্তুকে আক্রমণ করে? নাকি পচে যাওয়া, গোদ হ'য়ে ফুলে যাওয়া বা হঠাৎ খতরনাক টিউমারে পরিণত হওয়া ব্যবস্থাটাকে আক্রমণ করে? সমষ্টিকে হাতিয়ার করে নাকি শুধুই ব্যষ্টি নির্ভর মানসিকতা পোষণ করে?! আচ্ছা, সমাজে আতঙ্ক ছড়ানো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে আতংকবাদী বললে কি সমাজের সমস্ত মানুষকেই আতংকবাদী ঘোষণা করা হয়? 

আর একটা কথা না ব'লে পারছি না; যে বা যারা সমাজে দুর্গন্ধযুক্ত বাতকর্ম ক'রে সমাজজীবনকে দূষিত ক'রে তোলে তাদের উদ্দেশ্যে যদি উপমা বা প্রবাদ প্রয়োগ করা হয় তাতে দোষ বা অপরাধ কোথায়!? 

তাই যারা আমাকে উপমা প্রয়োগ যুক্তিযুক্ত কিনা সে বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন তাদের একটা কথায় বলতে পারি আর পারি সেই উপমা প্রয়োগেই!!!!!!

সেই কথায় আছে অর্থাৎ প্রবাদ বলে, "অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ"!!!!!!!!! তাই নাকি!?

প্রবন্ধঃ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর। প্রশ্ন ১২

ইতিহাস, রেফারেন্স ও ভাববাণী।

যখনই শ্রীশ্রীঠাকুর ও শ্রীশ্রীঠাকুরের বলা বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয় তখন উপলব্ধি, অভিজ্ঞতা, অনুভূতির উপর দাঁড়িয়ে কোনও মতামত দিলে এইসমস্ত জন্মবিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন স্বঘোষিত সৎসঙ্গীরা আলোচনায় চনা ঢেলে দেয় ইচ্ছাকৃতভাবে জোর ক'রে উল্টোপাল্টা প্রসঙ্গ বহির্ভুত কথা চুইংগাম-এর মত টেনে এনে! আর তারপরেই কথায় না পেরে পিছু হ'ঠে গিয়ে ইতিহাস লিখছি ব'লে কটাক্ষ করে। আর আপনার 'ভাববাণী' শুনতে চাই না; ঠাকুরের রেফারেন্স দিন' ব'লে আলোচনাকে গুলিয়ে দিতে সবাই একজোট হ'য়ে সচেষ্ট হ'য়ে পড়ে! সব কথায় 'ঠাকুর রেফারেন্স কোথায়, ঠাকুর রেফারেন্স কোথায়' ব'লে হল্লা মাচিয়ে দেয় ফেসবুক জুড়ে! 

তাদের উদ্দেশ্যে বলি,

আমি ইতিহাস লিখেছি ব'লে আপনারা কটাক্ষ করেছেন! কিন্তু আপনি/আপনারা কি লিখেছেন ও লিখছেন!? ভূগোল না বিজ্ঞান? আপনারা যখন জোর ক'রে উচ্ছের পায়েস গেলানোর মত ভুলভাল ভূগোল, বিজ্ঞান লিখে চলেন তখন নিজেদের খেয়াল থাকে না কি লিখছেন বা লিখেছেন!? "নিজের বেলায় আঁটিসাটি অন্যের বেলায় দাঁত কপাটি!?" আপনাদের চরিত্রের উপরে একটা রেফারেন্স দিলাম! প্রবাদের সাথে চরিত্রের স্বভাব মিলিয়ে নেবেন, দেখবেন একেবারে নির্ভুল নিখুঁত মিল!

আর কিসের রেফারেন্স? রেফারেন্স কোথায় দিতে হয় তাও জানেন না? অথচ পান্ডিত্য ফলাতে কলম বাগিয়ে বসেছেন!? নিজের অভিজ্ঞতা, উপলব্ধি ও সত্যকে তুলে ধরতেও রেফারেন্স দিতে হবে নাকি!? রেফারেন্সও তো কারও বক্তব্য বা মতামত নাকি!? তথ্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে রেফারেন্স দরকার হয় ব'লে আমার আপনার করা প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর দিলেও সেখানে সবসময় 'রেফারেন্স রেফারেন্স' ব'লে বালখিল্য-এর মত চেঁচিয়ে উঠছেন কেন!? ব্যালান্স হারিয়ে কি লিখছেন তার হুঁশ নেই অথচ বড় ভক্ত ও জ্ঞানী সেজে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। আপনাদের প্রত্যেকের শেয়ালের মত এক রা! প্রত্যেককেই দেখেছি আলোচনার টেবিলে বসার যোগ্যতা নেই অথচ আলোচনায় কোণঠাসা হ'লেই ইতিহাস লিখছি ব'লে খোঁটা দিতে অভ্যস্ত! আরে দাদা শ্রীশ্রীঠাকুর নিজেই একটা বিশাল ইতিহাস! আর সেই বিশাল জীবনের কর্মকান্ডের উপর আলোচনা করবেন তা যেমন তেমন সংক্ষিপ্ত হবে!? গবেষণা লব্ধ অভিজ্ঞতা, উপলব্ধি, অনুভূতির উপর দাঁড়িয়ে বিশ্লেষণাত্মক আলোচনা হবে না!? আর তা হ'তে গেলেই স্বাভাবিকভাবেই লেখা দীর্ঘ হবে, যাকে আপনারা বিরক্তির অম্ল ঢেঁকুর তুলে বলবেন 'ইতিহাস'। আরে দাদা, কুত্তার পেটে কি আর ঘি সহ্য হয়!? সেই প্রবাদ দিয়ে চরিত্রের রেফারেন্স দিলাম। আর 'ঠাকুর রেফারেন্স দিয়ে কথা বলুন' 'ঠাকুর রেফারেন্স দিয়ে কথা বলুন' ব'লে  ফাটা রেকর্ডের মত বেজে চলেছেন! যেমন ৫০ বছর ধ'রে দুর্গন্ধযুক্ত বাতকর্ম ক'রে চলেছেন। নিজে বাতকর্ম করলে দোষ নেই, কিন্তু অন্যের বেলায় রে রে ক'রে তেড়ে আসবেন!? বাহঃ! হ্যাটস অফ!!

উনাদের ওখানেও শিক্ষা দেওয়া হয় ব'লে বুক বাজিয়ে বললেন আমাকে। 

তা আমি বলি, আপনাদের ওখানেও শিক্ষা হয় এটা ঠিক কথা আপনার, কিন্তু কি শিক্ষা হয় আর তা কতটা উচ্চমানের, কতটা ঠাকুরের ভাবাদর্শকে রক্ষা ক'রে শিক্ষা দান করা হয় তার প্রমাণ আপনাদের ঠাকুরবাড়ির সমস্ত সদস্যদের বিরুদ্ধে করা কমেন্টের অসভ্য, অশ্লীল, জংলী-জানোয়ারের মত  ভাব, ভাষা! 

আরে দাদা, এই এক বস্তাপচা কথা প্রার্থনা, শ্রীশ্রী ব্যবহার, আচার্য ইত্যাদি এলার্জি হ'য়ে দাঁড়িয়েছে আপনাদের আর ৫০বছর ধ'রে ফাটা রেকর্ডের মত বাজিয়ে চলেছেন!!!!!! কেন কেউ গ্রহণ করছে না আপনাদের এই অস্বাস্থ্যকর কথা!? এটা ভেবে দেখেছেন কি? আরে দাদা! আহাম্মকের মতন কথা বলেন কেন? 

আর এদের গাত্রদাহ, হিংসা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে এরা দেওঘরের দোকানে দোকানে ব্যবসায়ীরা কি বিক্রি করবে তার ওপরও প্রশ্ন তোলেন, আপত্তি জানান! 

এরা সব এক একজন বালখিল্য ঋষি! দোকানে দোকানে কি বিক্রি হবে, কার ছবি বিক্রি হবে না হবে তা ব্যবসায়ীদের ব্যাপার! এটা তাদের ব্যবসায়িক কৌশল! ঠাকুর বাড়ি ঠিক ক'রে দেয় নাকি!? 

আর এক জ্বালা এদের পুড়িয়ে মারছে দীর্ঘ ৫০ বছর! মুখ পোড়া বাঁদরের মতন পুড়ে কালো হ'য়ে গ্যাছে এদের চোখমুখ! পুড়ে খাক হ'য়ে যাচ্ছে এদের অন্তর! তা হ'লো 'আচার্য' শব্দ! তা, 'আচার্য' শব্দের উপর তো আরো অনেক অনেক বাণী আছে, কথোপকথন আছে ঠাকুরের সেগুলি এরা পড়েছেন নাকি সেই ৫০বছর আগে বাছা বাছা বাণী দিয়ে শুরু হ'য়েছিল বাংলা ও বাঙালিদের ঠাকুরবিরোধী যে নোংরা চক্রান্ত সেগুলিই এখনও হাতিয়ার!? এখনও বমন হ'য়ে চলেছে সেই বাছাই করা ঠাকুরের বাণী!?

আর আমার ভাববাণীর কথা বলেছেন! তা উনারা আমাকে যে প্রশ্নগুলি ক'রে খোঁচা মারার চেষ্টা করেন অথচ সফলতার মুখ দেখতে পান না, ব্যর্থ হ'য়ে মুখ থুবড়ে পড়েন শুরুতেই সেই প্রশ্নগুলিও তো তাদের কোনো ভাবের উপর দাঁড়িয়ে নির্গত! নয় কি! কি বলেন প্রশ্নকর্তারা!? 

আমি বলি, যার যেমন ভাব, তার তেমন লাভ। আর যেমন সংগ তেমন ভাব! 

ক্রমশ:

এরপর পরবর্তী প্রশ্ন।

(২৪শে সেপ্টেম্বর'২০১৯)

Friday, September 23, 2022

প্রবন্ধঃ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর। ১১

কেন্দ্র  বিরোধী ও বর্তমানের ঠাকুর পরিবার এবং ক্ষমা।

ছবিহীন, নাম-গোত্রহীন, পরিচয়হীন প্রশ্নকর্তারা যখনই ঠাকুর বিষয়ক কোনও পোস্ট করি বা মন্তব্য করি তখনই রে রে ক'রে তেড়ে আসে সেই ৫০ বছর ধ'রে সযত্নে লালিত-পালিত বস্তাপচা প্রশ্নের ভান্ডার নিয়ে! আর যখনই সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করি তখনই প্রসঙ্গ পরিবর্তন ক'রে অন্য প্রসঙ্গে চলে যায় আর আবার কিছুক্ষণ পর ঘুরে এসে বালখিল্য-এর মত ভিত্তিহীন প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়। এইভাবে প্রসঙ্গ থেকে প্রসংগান্তরে চলতে চলতে একসময় শুরু হ'য়ে যায় ঠাকুর আত্মজ শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে কুৎসিত আক্রমণ! আর এটা করে পরিকল্পিতভাবেই! এমনকি এই আক্রমণে অবাক করার বিষয় মায়েরাও উৎসাহের সঙ্গে যুক্ত হন!!!! অবশেষে যখন কথার খেই হারিয়ে যায় তখন শুরু হয় সরাসরি অশ্লীল ভাষায় আমার প্রতি গালিগালাজ। ঠাকুর সৃষ্ট মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ'-এর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানাবে কিন্তু তখন তাদের কেন্দ্র বিরোধী আখ্যা দিলেই ক্ষিপ্ত হ'য়ে নানা বিশেষণ সহযোগে বলবে, 'স্তাবক', মেরুদন্ডহীন, ব্যক্তিত্বহীন, দাদাদের পা-চাটা আত্ম মর্যাদাহীন পুরুষ' ইত্যাদি ইত্যাদি! এইসব ব'লেও যখন গায়ের জ্বালা মেটে না তখন ঠাকুর বাড়ির মায়েদের বিরুদ্ধে যেরকম কটু কথা বলতে মুখে বাধে না এদের ঠিক তেমনি আমার পরিবারের ক্ষেত্রেও তাই। তখন ভাবি, এদের পথ প্রদর্শকদের কি এরা সত্যিই শ্রদ্ধা করে, সম্মান করে!!!!! এদের পথপ্রদর্শকদের গায়ে কি এই নোংরা দুর্গন্ধযুক্ত কালি লাগছে না!? তিনারা কি কলঙ্কিত হচ্ছেন না!? মনুষ্য সমাজ কিভাবে নেবে এঁদের!? নাম-গোত্রহীন, পরিচয়হীন, ছবিহীন না-মর্দদের কে অধিকার দিল এঁদের কলঙ্কিত করার!? পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীকাজলদাদা ও তাঁর পরিবার এবংপূজ্যপাদ  শ্রীশ্রীবিবেকদাদার শ্রদ্ধেয় উত্তরসূরীরা কি ভেবে দেখবেন না অন্তত একবার প্রকাশ্যে ফেসবুক জুড়ে কি ক'রে চলেছে এই সমস্ত মানুষ(?)! নাকি ভেবে দেখার এখনও সময় আসেনি!? 

যাই হ'ক এমনি এক প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। ঠাকুর সৃষ্ট 'সৎসঙ্গ'-এর তীব্র ঘৃণ্য বিরোধীতার উত্তরে এদের 'কেন্দ্র বিরোধী' আখ্যা দিলে নানা অশ্লীল কটূক্তি সহ এরা পাল্টা যে প্রশ্ন উত্থাপন করে সেই প্রশ্নের গালাগালির অংশ বাদ দিয়ে প্রশ্ন তুলে ধরলাম।

এদের প্রশ্ন, "কেন্দ্র বিরোধী বলতে আমি কি বোঝাতে চেয়েছি?"

এরা জানতে চেয়েছেন, 

"কেন্দ্র কি শ্রীশ্রীঠাকুর না বর্তমানের ঠাকুর পরিবার?" 

উত্তর: আমাদের জীবনের লক্ষ্য বা গোল বা কেন্দ্র শ্রীশ্রীঠাকুর। সেই লক্ষ্যে বা গোলে বা কেন্দ্রে পৌঁছবার জন্য ঠাকুর সৃষ্ট মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ' হ'লো মিলন স্থল। জীবনের সেই লক্ষ্যে বা গোলে পৌঁছবার জন্য সেতু হলেন শ্রীশ্রীবড়দা আর ঠাকুরের মিলন স্থল মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ'-এ সমবেতভাবে মিলিত হ'য়ে ঠাকুরকে প্রকৃষ্টভাবে আপন ক'রে নেওয়ার জন্য হাতেকলমে নিখুঁত চলনায় চলার যে আচরণ আমরা শিখি যেখানে সেই কেন্দ্র হ'লো শ্রীশ্রীঠাকুর পরিবার!!!!!!!!

আর স্বয়ং ঠাকুর সৃষ্ট এই কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ' কে যে বা যারা মানে না, অস্বীকার করে, অপদস্ত করে, কুৎসা-সমালোচনা করে, ঠাকুরের 'মিশন' বিশ্ব ব্যাপী এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ'-কে চলার পথে বাধা সৃষ্টি করে যে বা যারা তারাই কেন্দ্র বিরোধী।

আর "বর্তমানের ঠাকুর পরিবার" কথাটা লিখেছেন!

বর্তমানের ঠাকুর পরিবার বলতে কি বোঝাতে চাইছেন? অদ্ভুত এক মানসিকতা!

এ আবার কি রকম বোকা কথা!? ঠাকুর পরিবার আবার অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ হয় নাকি!! তাঁর রেতধারা ব'য়ে চলেছে বংশপরম্পরায়! এটাও আবার বলতে হবে নাকি!? আশ্চর্য!!!!!! ঠাকুরের বাণী পড়েননি? 

"ইষ্টগুরু পুরুষোত্তম প্রতীক গুরু বংশধর

রেত:শরীরে সুপ্ত থেকে জ্যান্ত তিনি নিরন্তর।"

এই রেত শরীরে পিতাপুত্রের লীলা চলবে একেবারে কলিযুগ শেষে সত্যযুগে প্রবেশের ট্রানজিশনাল পিরিয়ড পর্যন্ত! সত্যযুগে সৃষ্টিকে প্রবেশ করিয়ে তবে ঠাকুর পরিবারের ছাড়!!!! এ এক ভয়ঙ্করতম ভবিষ্যৎ ভয়াবহ দুঃখের পৃথিবীতে কঠিন, কঠোর পরিক্রমা! দুঃসাহসিক ঘাত-প্রতিঘাতে পরিপূর্ণ নেতৃত্ব!! শ্রীশ্রীঠাকুর স্বয়ং পিতাপুত্রের লীলার মধ্যে দিয়ে নেতৃত্ব দেবেন! কে দেবে সেই ঘোর অন্ধকারময় সমস্যা জর্জরিত, জৈবি সংস্থিতিতে ক্ষতবিক্ষত, চরম সীমাহীন উচ্শৃঙ্খল বিশৃঙ্খল কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য-এর আগুনে পুড়ে, জলসে খাক হ'য়ে যাওয়া আগামী পোড়া পৃথিবীতে নির্বাক নিশ্চল ভাবে নেতৃত্ব!? আছে নাকি কেউ!? তাই তিনি এবার এই ঘোর কলিযুগে নেবে এলেন তাঁর পরম ভক্তকে সাথে নিয়ে একেবারে সন্তান রূপে। কারণ তিনি জানতেন, তিনি জানেন তাঁর ভক্তমণ্ডলী তাঁর মিশন রথকে কিভাবে ভিতর থেকে ধ্বংস করতে পারে! তাই তিনি নিয়ে এলেন তাঁর পরমভক্ত শ্রীশ্রীহনুমানকে প্রথম সন্তান আদরের বড়খোকা ও সৎসঙ্গ জগতের কোটি কোটি চোখের মণি শ্রীশ্রীবড়দা রূপে!!!!! ভক্ত ও ভগবানের এ এক অপূর্ব, অভাবনীয়, অচিন্তনীয়, অভূতপূর্ব এক রহস্যময় লীলা! যা আগে কখনও হয়নি! এ লীলা বোঝা বড় কঠিন! দুর্বোধ্য!! এ লীলা চলবে এবার সত্যযুগ পর্যন্ত! তাঁর প্রতি অস্খলিত, অটুট, অচ্যুৎ টান, একাগ্রতা তৎসহ তাঁর অপার করুণা, দয়া ছাড়া এই অভূতপূর্ব লীলা বোঝা সম্ভব নয়! তিনি অসীম! তিনি অনন্ত! তাঁর লীলাও আদিম, অনন্ত! বোঝে সাধ্য কার!? 

সেই শ্রীশ্রীহনুমান, শ্রীশ্রীনিত্যানন্দ, শ্রীশ্রীবিবেকানন্দ রূপী শ্রীশ্রীবড়দাকে ও শ্রীশ্রীবড়দা পরিবারকে অপমান, লাঞ্ছনা, নিন্দা, কুৎসা, গালাগালি করাকেই শ্রীশ্রীঠাকুরের মূল কেন্দ্র বিরোধিতা বলে!!!! আশা করি বোধগম্য হয়েছে। অবশ্য গোঁ ধরা মানুষের বোধগম্য হওয়া আর পাহাড় কথা বলা সমান!!!!!! 

নিরাকার ঈশ্বরের সর্বোত্তম লীলা এবারের এই ভয়ঙ্কর রহস্যময় আকার রূপে তাঁর নবরূপের নবকলেবর শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের মধ্যে দিয়ে প্রকট হ'লো, হ'লো তাঁর প্রায় ২৫হাজার বাণী আর অসংখ্য কথোপকথনের মধ্যে দিয়ে আর সেই বাণীর জীবন্ত চলমান রূপ হলেন বিশ্বের কোটি কোটি সৎসঙ্গীর আদরের বড়ভাই পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা!

যাই হোক প্রশ্নকর্তারা আমাকে লিখেছেন আমাদের নাকি ক্ষমা নেই!

তার উত্তরে বলি, কিসের ক্ষমা? কি জন্য ক্ষমা? কে করবে না ক্ষমা? কেন করবে না ক্ষমা? ক্ষমা করা, না করার প্রশ্ন উঠছে কেন? যারা ঠাকুর সৃষ্ট 'সৎসঙ্গ'-এর বিরুদ্ধে, ঠাকুরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পাল্টা বিরোধী সংগঠন তৈরি করে, যারা শ্রীশ্রীবড়দাকে মানে না, অশ্রদ্ধা-অপমান করে, করে গালিগালাজ ও অশ্লীল কটূক্তি আর অশ্রাব্য কুশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণ করে তাঁর পরিবারের সবাইকে আর তারা বলছে ক্ষমা করার কথা!!!! এরা যে ঠাকুরের গ্রন্থ পড়েন না, কোনও ঠাকুরের কাজ করেন না শুধু চিল কান নিয়ে গ্যাছে শুনে কানে হাত না দিয়ে, আকাশের চিলের পেছন পেছন দৌড়ান, ভিত্তিহীন পাগলের প্রলাপের মত কথার ঘাই মারেন তা এদের ভারসাম্যহীন কথা শুনলেই বোঝা যায়! এরা শুধু জানে ভাঙতে। কোন কিছু আজ পর্যন্ত এরা গড়তে পারেনি। শুধুই বিষবৃক্ষ বপন ক'রে গ্যাছে বছরের পর বছর! অমৃতবৃক্ষকে উৎপাটিত করার অন্যায়, ঘৃণ্য চেষ্টা ক'রে গ্যাছে দীর্ঘ ৫০বছর ধ'রে আর ব্যর্থ হ'য়ে হতাশায় জর্জরিত হ'য়েছে আর হাতে তুলে নিয়েছে ঠাকুর পরিবারকে জনসমক্ষে সবরকম ভাবে অপদস্ত, অপমানিত, লাঞ্ছিত করার নানারকম ঘৃণ্য কৌশল! 

আমাদের ক্ষমা আছে কি নেই তার বিচারের ভার নিজের হাতে তুলে নিয়েছে এইসমস্ত বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে আপাদমস্তক ডুবে থাকা ষড়রিপুর টানে ক্ষতবিক্ষত স্বঘোষিত সৎসঙ্গীরা! 

এদের উদ্দেশ্যে বলি, এত ঔদ্ধত্ব!? এই আপনাদের ঠাকুর জ্ঞান!? এই শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছেন আপনাদের পথ প্রদর্শকদের দ্বারা!? এ তো প্রতিকূল ঠাকুরের শিষ্যের মত কথা, জ্ঞান, অনুভূতি, উপলব্ধি!!! যাক যা ভালো বোঝেন আপনি/ আপনারা শুনুন, দেখুন, ভাবুন, বলুন ও করুন! আপনারা স্বাধীন।

ক্রমশঃ।

এরপরে পরবর্তী প্রশ্ন।

(লেখা ২৪শে সেপ্টেম্বর'২০১৯)

প্রবন্ধঃ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর। প্রশ্ন ১০

পেশীশক্তি ও যুক্তিবাদ।

এই প্রশ্নকর্তারা আমাদের পেশীশক্তির কথা তুলেছেন। কেন মুখ লুকিয়ে ছদ্মনামে কটু প্রশ্নের পর কটু প্রশ্নের বাণ ছুঁড়ছেন আর ঠাকুরবাড়ির বিরুদ্ধে গালাগালির বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন তা জানতে চাইলে এদের মধ্যে একজন লিখেছেন, আমাদের নাকি নেটওয়ার্ক খুব স্ট্রং আর তাই কোন গুরুভাইদের দ্বারা নাকি নিগৃহিত হ'তে হ'তে বেঁচে গ্যাছেন! তাই আত্মরক্ষার্থে ও সত্য প্রচারের স্বার্থে তারা নাকি ফেসবুকে নিজেদের ছবি পোস্ট করেন না, পরিচয় গোপন রাখেন! কি অদ্ভুত! পরম প্রেমময়ের প্রেমের দরবারে এরা কতটা নীচে নাবতে পারেন ও চরম হতাশাগ্রস্থ তার প্রমান এই পেশীশক্তির কথা উচ্চারণ! 

প্রশ্ন জাগে,

* ঠাকুরের দরবারে পেশীশক্তি!? 

* কেন আপনারা নিগৃহীত হয়েছিলেন গুরুভাইদের হাতে?

* কি কারণ? এমনি এমনি অকারণে নিগৃহীত!? 

* এক হাতে তালি বেজেছিল?

* আপনার/আপনাদের কোনও দোষ ছিল না?

* দীর্ঘ দিন ধ'রে আপনাদের ঠাকুরবাড়ির বিরুদ্ধে ঘৃণ্য বিরোধিতা কি প্রকাশ্য রাস্তায় নাবিয়ে এনেছিলেন যার পরিণতিতে পেশীশক্তি প্রসঙ্গ উত্থাপন?

* পেশীশক্তি প্রসঙ্গ উত্থাপন আজ আপনাদের ঠাকুরবাড়ির বিরোধীতার নতুন মিথ্যে নোংরা হাতিয়ার ও কৌশল?

* কেষ্ট দাস ও সজনীকান্ত মহোদয়দের কোন পেশীশক্তি কাবু করেছিল!? 

* পেশীশক্তিতে তারা শেষ হয়েছিল নাকি কর্মফলে!? 

* কর্মফলে বিশ্বাস হারিয়েছেন?

বিশ্বাস হারাবেন না। আপনাদের জন্যও কর্মফল অপেক্ষা করছে। 

এরপরে আপনি বলবেন আমাদের কর্মফলের কথা। হ্যাঁ! আমরাও কর্মফলের অপেক্ষায় আছি।

প্রশ্নকর্তারা যুক্তিবাদের চর্চা করেন লিখেছেন। তারা আমাকে লিখেছেন তারা যুক্তির উপর দাঁড়িয়ে আলোচনা করেন ও রেফারেন্স সহ যুক্তি প্রয়োগ করেন!

প্রশ্নকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন:

* ক্ষমতা দখল, মিথ্যের  গালাগালি কবে থেকে যুক্তিবাদের ভিত্তিভূমি হ'লো!? 

মনে পড়ে গেলো সেই কথা, "একি কথা শুনি আজ মন্থরার মুখে!?" 

ঠাকুরের দেহ রাখার সঙ্গে সঙ্গে ঠাকুরের পরমপ্রিয় আদরের বড়খোকা সৎসঙ্গীদের চোখের মণি এ যুগের হনুমান শ্রীশ্রীবড়দার নেতৃত্বে যখন 'সৎসঙ্গ'-এর জয়যাত্রা শুরু হ'লো ও আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলো তখন আপনাদের পূর্বসূরী ক্ষমতালোভীরা ক্ষমতা দখলের লোভে, 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠানকে কুক্ষিগত করার বাসনায়, শ্রীশ্রীবড়দাকে নিজেদের ইচ্ছেমত পিছন থেকে চালাবার দুঃসাহসিক প্রচেষ্টায় নিজেদের কায়েমী স্বার্থকে বজায় রাখার জন্য জোট বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়লেন সাধারণ সৎসঙ্গীদের বিভ্রান্ত করার জন্য আপনাদের এই বস্তাপচা উপরি চকচকে যুক্তিবাদকে সামনে রেখে! 

প্রশ্নকর্তারা আমাকে লিখেছেন,  "এমন বহু গুরুভ্রাতা আছেন যাদের জীবনযাপন, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব তথা আলোচনায় ঠাকুর পরিবারের বহু ব্যক্তিত্বকে হার মানায়"।

তাদের উদ্দেশ্যে বলি,

হে প্রশ্নকর্তা! যে আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বদের কথা বলছেন, যাদের বড় করতে গিয়ে ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের ছোট করছেন ভুলে যাবেন না আপনাদের সেই আজকের আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বদের চেয়েও জাঁকজমকপূর্ণ অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সেদিনও ছিল! ভুলে যাবেন না সেদিন যে সমস্ত শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন তাঁদের তুলনায় আজকে আপনাদের যারা আছেন যাদের কথা গর্বভরে বলছেন তাঁরা নগন্য। সেদিন শ্রীশ্রীবড়দাকে যারা চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে অনেক ঠাকুরের লীলাসঙ্গী তো ছিলই এমনকি যতি ঋত্বিকও ছিলেন! এসব তথ্য জেনে নেবেন আপনাদের পথ প্রদর্শকদের কাছ থেকে। কোথা থেকে জানবেন!? কেউ আছে নাকি আপনাদের আশেপাশে!? আছে তো "কাল কা যোগী, ভাতকে বলে অন্ন" প্রবাদের মত মানুষ যারা দুঃসাহস দেখায়, অস্পর্ধা রাখে ঠাকুর আত্মজদের বিরুদ্ধে শুধু ফেসবুকে কুৎসা, নিন্দা, গালাগালি, অশ্লীল শব্দে সমালোচনা করার! 

আমার সবিনয় প্রশ্ন আপনাদের, 

কারা সেই অসাধারণ ব্যক্তিত্ব যারা ঠাকুর পরিবারের ব্যক্তিত্বদেরও হার মানায়!? নামগুলি বলবেন!? তাঁরা নিজেরা কি আপনাকে এই ঔদ্ধত্বপূর্ণ অহংকারী কথা বলেছেন না বলতে বলেছেন!? ঠাকুরের রক্ত বাহিত ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের থেকেও নিজেদের স্বঘোষিত আচার্য ও উচ্চমার্গীয় ব'লে যদি কোনও কেউ দাবী করেন বা করতেন কিংবা আপনার/আপনাদের মত কোনও গুরুভ্রাতা(?) তাদের মনে করেন বা করতেন অথচ তাদের সেই আসনে বসাননি তাহ'লে এটা জেনে রাখুন যদি তেমন কেউ বসতেন প্রধান হ'য়ে তাহ'লে এতদিন যাও বা টিমটিম ক'রে টিকেছিল তার সলিল সমাধি ঘটতো সেই শুরুতেই, মুখ থুবড়ে হাঁটু ভেঙে 'দ' হ'য়ে পরে থাকতো ঘোর অন্ধকার শ্মশানে। ভাগ্যিস শ্রদ্ধেয় পূজ্যপাদ বিবেকদাদা ও কাজলদাদা ছিলেন মাথার ওপরে!!!!!! আর এখন আপনারা দায়িত্ব নিয়ে তাঁদেরও সলিল সমাধিতে পাঠাবার জন্য কোমর বেঁধে উঠে পড়ে লেগেছেন শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীঅশোকদাদা, শ্রীশ্রীবাবাইদাদা ও অবিনদাদা এবং এমনকি ঠাকুর পরিবারের মায়েদেরও বিরুদ্ধে নানারকমের বিভিন্ন ধরণের কুৎসিত গালাগালি, কুৎসা, নিন্দার অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে!!!!!!!! 

কথায় আছে, মহাজ্ঞানী মহাজন যে পথে করে গমন, ঠিক সেরকম  হে আমার প্রশ্নকর্তা! আপনারাও আপনাদের মহাজ্ঞানী মহান জনদের পথ অনুসরণ ক'রে চলুন। দেখুন শেষের সেদিন ভয়ংকর হয় না মধুর হয়। সেদিনের অপেক্ষা করুন।

ক্রমশ:।

এরপরে পরবর্তী প্রশ্ন।

(লেখা ২৩শে সেপ্টেম্বর'২০১৯)

প্রবন্ধঃ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর। প্রশ্ন ৯

স্তাবক বৃত্তি!

প্রশ্নকর্তারা আমাকে আমার স্তাবক বৃত্তি নিয়ে কথা তুলেছেন আর লিখেছেন আমি ঠাকুর বাড়ির স্তাবকতা করছি! আর কারা বলছেন!? যারা বলছেন তারা নাকি ঠাকুরের দীক্ষিত ও অবিকৃত পথের অনুসারী! তাদের নাকি কারও কোনোরকম স্তাবকবৃত্তির ইচ্ছে নেই তারা তাদের পথপ্রদর্শক শ্রদ্ধেয় কাজলদা, শ্রদ্ধেয় বিবেকদা ও তাঁদের শ্রদ্ধেয় দাদাদের পক্ষে কোনও স্তাবক বৃত্তি পোষণ করেন না ও পছন্দ করেন না। তাদের কারও স্তাবক বৃত্তি আছে কি নেই সেই প্রসঙ্গে তার সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে যিনি বা যারা আমার সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসবেন তাদের সঙ্গে কিন্তু যাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা হচ্ছে না, আলোচনা করিনি, করছি না বা করতে চাই না তাদের সঙ্গে স্তাবক বৃত্তি নিয়ে আলোচনায় আমি রাজি নই।

আমার প্রশ্নকর্তাদের কাছে আমি বলতে চাই, অন্যের হ'য়ে স্তাবক বৃত্তি, অন্যের কুৎসা, সমালোচনা আপনাদের থাকতে পারে আমার সেই রুচি নেই। অন্যের কাজের প্রশংসা করতে পারি, আলোচনা করতে পারি কিন্তু স্তাবক বৃত্তি পালন-পোষণ নয়; অবশ্য প্রশংসা আর স্তাবক বৃত্তিকে আপনি ও আপনারা এক চোখে দেখেন কারণ প্রশংসা আপনাদের কালচারে ও রক্তে নেই, থাকলে অন্ততঃ ঠাকুর আত্মজদের বিরুদ্ধে কুৎসার দামামা বাজাতেন না! মুখ, জিভ সহ সমস্ত শরীর আপনাদের পাপে নীল হ'য়ে গ্যাছে আর সেই ভয়ে মুখ দেখাতে পারেন না, নাম প্রকাশে আপনারা ভীত, সন্ত্রস্ত! 

আর স্তাবক বৃত্তি? 

তা আমার একটা ছোট্ট প্রশ্ন, আপনারা যারা শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের বিরোধিতা করছেন ৫০বছর ধ'রে কুৎসা, নিন্দা, গালাগালি, অপমান, অশ্রদ্ধা, সমালোচনাকে হাতিয়ার ক'রে আর যাদের হ'য়ে করছেন সেটা তাদের হ'য়ে স্তাবকতা নয়!? 

আপনারা আমার লেখনীর উপর কটাক্ষ করেছেন। লিখেছেন, আমার লেখনী শক্তি দিয়ে আপনাদের প্রভাবিত করতে পারবো না। আমি বলি, এই একটা কথা একদম ঠিক বলেছেন, খাঁটি বলেছেন! কারণ যাদের স্বয়ং ঠাকুর পারেননি তাঁর লেখনী শক্তি দিয়ে প্রভাবিত করতে, তাঁর অসীম অনন্ত মনোমুগ্ধকর প্রেম-ভালোবাসা দিয়ে, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি দিয়ে তাদের প্রভাবিত করতে যে আমি পারবো না এই কথাটা সমস্ত সৎসঙ্গী সমাজ এককথায় মেনে নেবে। কারণ রামায়ণ, মহাভারতের যুগেও স্বয়ং রাম, কৃষ্ণও পারেননি রাবণ, রাবণের বংশধর, অনুগামী এবং কৌরব ও কৌরবপক্ষদের শেষদিন পর্যন্ত বোঝাতে, যেমন পারেননি আপনাদের পূর্বসূরিদের এই ঘোর কলিযুগে স্বয়ং শ্রীশ্রীঠাকুর! যে পাপের বোঝা ব'য়ে চলেছেন আপনারা উত্তরসূরীরা!!!!!

আপনারা প্রশ্নকর্তারা এও লিখেছেন আপনারাও লেখনী শক্তিতে ও কথনে প্রবল দক্ষ! এই কথাটাও ঠিক লিখেছেন। তার প্রমাণ গোটা বাঙালি সমাজ ও যারা বাংলা পড়তে ও বুঝতে পারে সেই সমাজ পাচ্ছে প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে ফেসবুক নামক মিডিয়ার মধ্যে দিয়ে; যে মহান সুযোগ পায়নি আপনাদের পূর্বসূরীরা। কিন্তু ভুলে যাবেন না আপনাদের থেকেও প্রবল পরাক্রমশালী লেখক ও বক্তা ছিলেন সেই ঠাকুরের সময়ে! জানেন তো তাদের নাম? ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ আছে সেই বিখ্যাতদের নাম! আপনারা জানেন তবুও নামগুলো বলি, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হ'লেন স্বনামধন্য কেষ্ট দাস ও শনিবারের চিঠির শক্তিশালী কলমচি সজনীকান্ত দাস! তাঁরা কি পেরেছিলেন তাঁদের প্রবল লেখনী শক্তি ও কথনে ঠাকুরের জয়রথ ঠেকাতে!? তাঁদের পিছনে যে প্রবলপরাক্রম শক্তি মদদ দিয়েছিল তারা কি পেরেছিল শ্রীশ্রীঠাকুরকে কলঙ্কিত করতে? সেসময়ের অনেক অনেক বড় বড় জ্ঞানী পন্ডিত বিদগ্ধ ব্যক্তিত্ব ছিলেন যারা সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন ঠাকুর আত্মজ, ঠাকুরের প্রথম সন্তান আদরের বড়খোকা শ্রীশ্রীবড়দাকে !!!!  কি হয়েছিল তার পরিণতি? আপনারা ব্যক্তিস্বার্থে, ক্ষমতার দখল নিতে, কায়েমী স্বার্থ বজায় রাখতে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের নিজের হাতে তৈরি 'সৎসঙ্গ'-এর পাল্টা সংগঠন তৈরি ক'রে যে মরণ পথে যাত্রা শুরু করেছিলেন আজ থেকে ৫০ বছর আগে আপনারা ঠাকুরের সেই পরমভক্তকুল ও তাদের উত্তরসূরীরা শ্রীশ্রীবড়দাকে শ্রীশ্রীঠাকুরের মত কলঙ্কিত ক'রে তাঁর বিজয়রথকে থামাতে পারেন কিনা সেই চেষ্টা ক'রে দেখতে পারেন। 

ক্রমশঃ।

পরবর্তী প্রশ্ন এর পরে।

(লেখা ২৩শে সেপ্টেম্বর'২০১৯)

প্রবন্ধঃ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর: প্রশ্ন ৮

সত্য স্বীকার ও গ্রহণ এবং তার পরিণতি!

এই অদ্ভুত বিকৃত মানসিকতাসম্পন্ন ছদ্মনামধারী, ছবিহীন ভিনগ্রহের জীবের মত প্রাণীরা আমাকে লিখেছেন, তাদের সত্যকে যদি স্বীকার করি, স্বীকার ক'রে নিয়ে ঠাকুরের নির্দেশ মত প্রার্থনা, ইষ্টভৃতি আর শুধুমাত্র ঠাকুরকে আচার্য হিসেবে বিবেচনা করি তাহ'লে ঠাকুর বাড়ির আশ্রয় ও ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হবো আর্থিক দৈন্যতার শিকার হবো যেমন নাকি ঘটেছে বহু মানুষের জীবনে! 

তাদের কাছে আমার প্রশ্ন: 

১) কোন সত্যের কথা বলছেন? সমুদ্রের বালুচরের উপর গড়ে ওঠা সত্য?

২) সমুদ্রের বালুচরের উপরে গড়ে ওঠা সত্যের উপর দাঁড়িয়ে কি পার্মানেন্টলি কিছু গড়া যায়? বাস্তব কি বলে? আপনারা গড়তে পেরেছেন না পারছেন? বালি দিয়ে তৈরি ঘর প্রকৃতির নিয়মে সমুদ্রের জলে গলে গিয়ে সমুদ্রে মিশে যাবে না তো? এ সমুদ্র মানুষের সমুদ্র কিন্তু! দেখেছেন মানুষের সমুদ্র!? চোখ মেলে দেখুন! ঠাকুরের কথামতো পদ্মার ভাঙনের মত ধীরে ধীরে গোটা পৃথিবী সৎসঙ্গের পেটের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে! দেখার চোখ আছে? মিথ্যাচারে অবসেসড হ'য়ে নেই তো!!!!!!

৩) কারা কারা ঠাকুর বাড়ির আশ্রয় ও ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হ'য়েছেন আর কারা আর্থিক দৈন্যতার শিকার হয়েছেন তাদের নামগুলো বলবেন?

৪) আজ শৈশব থেকে এই প্রৌঢ়ত্বের দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় ঠাকুরবাড়ির আশ্রয় ও ভালোবাসার যে রূপ দেখেছি সেই রূপ কি আপনারা দেখেছেন?

৫) কুয়োর ব্যাঙের মত কুয়োয় থেকে অন্তহীন আকাশের পরিমাপ করতে এসেছেন?

৬) কোন আর্থিক দৈন্যতার শিকার হবার কথা আমায় বলছেন?

৭) ঠাকুরবাড়ি আমার ও আমার সংসারের আর্থিক দায় নিয়েছেন এই বালখিল্য খবর আপনাদের কে দিল?

৮) কোন প্রার্থনা, ইষ্টভৃতি ও আচার্যের কথা বলছেন? আপনারা যে প্রার্থনার কথা বলেন সেই প্রার্থনা করতে কেউ বারণ করেছে নাকি আপনাদের? ইষ্টভৃতির মন্ত্র আপনাদের মনের অভিভূত অবস্থাকে ত্রাণ করতে পেরেছে কি ৫০বছরে? আচার্য কথার মানে জানেন? 'আচার্য'-এই বিষয়ের উপর বাছা বাছা বাণী যেগুলি আপনাদের বৃত্তি-প্রবৃত্তির সঙ্গে খাপ খায় সেই কয়েকটি ছাড়া বাকি বাণী পড়েছেন?

৯) আপনারা আপনাদের সত্যকে স্বীকার ক'রে নিয়ে ঠাকুরের নির্দেশ মত প্রার্থনা, ইষ্টভৃতি আর ঠাকুরকে শুধুমাত্র আচার্য বিবেচনা ক'রে কতদূর ঠাকুরের মিশনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছেন সেটা ভেবে দেখেছেন?

১০) ঠাকুরের কোন নির্দেশের কথা বলছেন? কোন নির্দেশ শুধু আপনাদের পথপ্রদর্শকরা জানেন, আপনারা জানেন আর ঠাকুরের আত্মজ পরমপ্রিয় আদরের বড়খোকা, বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের লক্ষ্য শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে পৌঁছবার সেতু, ঠাকুর পরবর্তী নিশ্চিন্ত নিরাপদ পরম আশ্রয়, ঠাকুর সৃষ্ট 'সৎসঙ্গ'-কে রক্ষা করার এক এবং একমাত্র কঠিন কঠোর বর্ম, ঠাকুরের জীবন্ত চলমান সত্যানুসরণ, প্রানের বড়ভাই ও এ যুগের হনুমান  শ্রীশ্রীবড়দা জানতেন না, শ্রীশ্রীদাদা জানেন না, জানেন না শ্রীশ্রীবাবাইদাদা ও ঠাকুরবাড়ির সদস্যরা এমনকি মূল কেন্দ্রের কোটি কোটি প্রায় ৫ কোটি অনুগামী জানেন না!? শুধু আপনারা কুয়োর ব্যাঙের দল জানেন?

তারা শ্রদ্ধেয় বিবেকদা ও কাজলদার কথা লিখেছেন। লিখেছেন, শ্রদ্ধেয় বিবেকদা ও শ্রদ্ধেয় কাজলদা কেউই উনাদের আরাধ্য ও নন, আচার্যও নন!

আমার প্রশ্ন:

১)  শ্রীশ্রীঠাকুর ছাড়া আরাধ্য আবার কেউ আছেন নাকি!? থাকলে সে কে!? বোকাবোকা আর মনগড়া বালখিল্য কথা বলেন কেন!? আর ব'লে নিজেকে নিজে মূর্খ আর ছোট প্রমাণ করেন কেন!?

২) 'আচার্য' শব্দে আপনাদের ছোট বড় সকলের এলার্জি আছে! কেন? আর এই এলার্জি ইনফিউরিরিটি কমপ্লেক্স থেকে। আপনাদের বিক্ষুব্ধদের, মূল কেন্দ্র ও শ্রীশ্রীবড়দা বিরোধীদের কে পরিচালনা করেন? কেউ একজন আছেন তো? নাকি যে যেমন ইচ্ছা চলেন? তাঁকে মেনে চলেন তো? তাঁকে কি বলেন? কি ব'লে সম্বোধন করেন? কিছু একটা তো বলেন? আচার্য না বলুন অধ্যক্ষ, মহারাজ বা প্রধান কিম্বা ইংরেজিতে প্রিন্সিপ্যাল, প্রেসিডেন্ট বা চেয়ারম্যান একটা কিছু তো বলেন, নাকি? তা নিয়ে মূল কেন্দ্র বা মুলকেন্দ্রের বৈধ দীক্ষিত সৎসঙ্গীরা কোনোদিন কিছু বলেছে? বলেনি তো? তা আপনাদের এত গায়ের জ্বালা কেন? আপনারাও শ্রদ্ধেয় কাজলদাদাকে আচার্য বলুন না, কে বারণ করেছে? কেউ করেছে? করেনি তো? তা হ'লে এত গাত্রদাহ কেন!? যিনি আপনাদের প্রধান তিনি কি আপনাদের সকলকে ৫০বছর ধ'রে আচরণ ক'রে ক'রে এইসব আচরণ শিখিয়েছেন নাকি!? তাঁকে বা তাঁদের এইভাবে সমাজের বুকে নেকেড করছেন কেন? তাঁদের প্রতি এই আপনাদের ভালবাসা? এই আপনাদের শ্রদ্ধা-সম্মান জ্ঞাপনের নমুনা, বোধ!? 

৩) 'আচার্য' শব্দ অর্থের ভিন্নতা, ব্যাপকতা ও বিশালতা কতদূর বিস্তৃত, কত গভীরে নিহিত তা জানেন কি? জেনে নিন আগে তারপরে আসবেন আলোচনার টেবিলে।

৪) আপনার আমার ইচ্ছেমত যাকেতাকে সংঘ প্রধান করা যায় নাকি!? শাস্ত্রমতে ঠাকুর পরবর্তী ঠাকুর সৃষ্ট 'সৎসঙ্গ' পরিচালনার দায়িত্ব কার ওপর বর্তায়, কার অধিকার তা জানেন কি? না জানলে পড়াশুনা করুন কিংবা আপনাদের প্রধানদের কাছ থেকে জেনে নিন।

উনারা লিখেছেন কোনও উদ্দেশ্য সাধনের জন্য উনারা আমাকে প্রশ্ন করেননি অথচ ব্যঙ্গাত্মক কটু প্রশ্নের পর প্রশ্ন ক'রে ক'রে বিব্রত করার, উত্যক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে গ্যাছেন! তা তাদের কোনও উদ্দেশ্য সাধন করার ইচ্ছা থাকুক আর না থাকুক তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না আর এইভাবে কাউকে ডিরেইল্ড করা যায় না, নিজেরাই ডিরেইল্ড হ'য়ে অবশেষে দুর্দশার গভীর খাদে নিমজ্জিত হয়, হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে সমূলে হবে।

ক্রমশ:

পরবর্তী প্রশ্ন এরপরে।

(লেখা ২৩শে সেপ্টেম্বর'২০১৯)