Powered By Blogger

Saturday, September 24, 2022

প্রবন্ধঃ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর: প্রশ্নঃ ১৭

সাধন প্রক্রিয়া ও শ্রীশ্রীঠাকুর!

শ্রীশ্রীঠাকুর প্রদর্শিত সাধন প্রক্রিয়ার কথা লিখেছেন একজন প্রশ্নকর্তা! লিখেছেন, শ্রীশ্রীঠাকুর যে সাধন প্রক্রিয়ার কথা বলেছেন সেই প্রক্রিয়া ভিন্ন অন্য প্রক্রিয়ায় সাধন সম্পূর্ণ সংবিধান বহির্ভূত! আর প্রকৃত সাধন প্রক্রিয়া অনুসরণের কারণে তাদের দীক্ষিত মানুষের সংখ্যা নগন্য ব'লে উল্লেখ করেছেন।

প্রশ্নকর্তারা যে প্রশ্ন রেখেছেন তার জবাবে বললাম, আপনি কোন সাধন প্রক্রিয়ার কথা বলছেন? শ্রীশ্রীঠাকুরের কোনও গোপন সাধন প্রক্রিয়া আছে নাকি!? 

কোনো উত্তর পাওয়া গেলো না! পরবর্তি সময়ে আবার জিজ্ঞেস করলাম, শ্রীশ্রীঠাকুর কোন সাধন প্রক্রিয়ার কথা বলেছেন যেটা আপনার বা আপনাদের মত বালখিল্য ঋষিরা জানেন, পালন করেন অথচ বাকি কোটি কোটি ঠাকুরের শিষ্যরা জানেন না, জানেন না ঠাকুরের পরমপ্রিয় আত্মজরা!? 

আর, আপনারা ঠাকুরের সাধন প্রক্রিয়ার বড়বড় কথা বলেন অথচ আপনারা পালন করেন তো? এই আপনাদের পালনের নমুনা!? দীর্ঘ ও সংক্ষিপ্ত প্রার্থনার কচকচি দীর্ঘ ৫০ বছর ধ'রে যত্নের সঙ্গে পালন ক'রে আপনারা এক একজন বড় সাধক-এ পরিণত হয়েছেন! তার প্রমাণ আমরা প্রতিনিয়তই পাচ্ছি ও অদিক্ষিত মানুষেরা পেয়ে চলেছে। আপনাদের সাধনার ঠাকুর নির্দেশিত সাধন প্রক্রিয়া আপনাদের এমন জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে যে আপনারা, আপনাদের পথপ্রদর্শকরা এক একজন ঠাকুর বিশেষজ্ঞ হ'য়ে উঠেছেন, ঠাকুরের ২৫ হাজার বাণীর নিখুঁত বিশ্লেষক আপনারা এক একজন, জাগতিক, মহাজাগতিক সমস্ত বিষয়ের উপর ঠাকুরের অচিন্তনীয়, অভূতপূর্ব, অকল্পনীয় অফুরন্ত কথার ঝর্ণার অন্তরস্থিত অর্থ উপলব্ধি ও দিব্যদৃষ্টির অধিকারী শক্তিশালী মহাসাধক, মহান জীবন এক একজন যে যাদের মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে ঠাকুরের পরম আত্মজ, পরম আদরের বড়খোকা, ভক্ত কুলের সর্বশ্রেষ্ঠ পরম ভক্ত এ যুগের শ্রীশ্রীহনুমান, কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের চোখের মণি ঠাকুরের সত্যানুসরণ গ্রন্থের জীবন্ত চলমান রূপ শ্রীশ্রীবড়দার বিরুদ্ধে কুৎসা, কটূক্তি, গালাগালি অবলীলায়, চরম অবহেলায়! আপনারা এক একজন এমন ঠাকুরপ্রেমী যে ঠাকুরের জীবন্ত চলমান 'সত্যানুসরণ' শ্রীশ্রীবড়দাকে নিন্দা, অপমান, অশ্রদ্ধা, ঘৃণ্য সমালোচনা করতে আপনাদের বুকে বাধে না! এমনই রসকষহীন বিবেক বর্জিত সাধক আপনারা যাদের সাধন প্রক্রিয়া ঠাকুর নির্দেশিত আর জীবনযাপন শয়তান নির্দেশিত! আপনারা এমনই ঠাকুর অনুগামী যারা চরণ পূজার অনুগামী আর চলন শয়তান অনুসারী! যারা মুখ লুকিয়ে প্রকাশ্যে ফেসবুককে হাতিয়ার ক'রে শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে শুধুই হিংসার পিত্ত উগলে তীব্র অম্ল বমন করে, সংঘাতের আগুন জ্বালায় আর ঘৃণার বিষ ছড়ায় তারা নাকি পরম প্রেমময়ের দীক্ষিত!? তারা সৎসঙ্গী!? তারা মহান প্রেমিক পুরুষের প্রেমী সন্তান!? তারা গুরুভাই!? যারা ঠাকুর সৃষ্ট 'সৎসঙ্গ'-এর বর্তমান পরিচালক পরম পূজ্যপাদ আচার্যদেব শ্রীশ্রীঅশোকদাদাকে, কোটি কোটি সৎসঙ্গীর প্রেরণার আশ্রয়স্থল শ্রীশ্রীবাবাইদাদাকে, ইয়ং জেনারেশনের হার্টবিট শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে নিজের অনিয়ন্ত্রিত, কদচারী জীবনের নোংরা পচা দুর্গন্ধযুক্ত মল ছেটাতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না, সামান্যতম পাপ বোধ হয় না, সাপের ফণার মত লকলকে বিষাক্ত জিভ দিয়ে শুধু তাঁদের উপর বিষ নিক্ষেপ করে তারা বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় জীবন্ত ঈশ্বর, সৃষ্টিকর্তা পরমদয়াল পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের অনুগামী, দীক্ষিত, সৎসঙ্গী গুরুভাই!?!?!?!?!?!?!? এই তাদের ঠাকুর নির্দেশিত সাধন প্রক্রিয়ার নমুনা, উদাহরণ!? এই তাদের দীর্ঘ প্রার্থনার ফল ও তাদের ফসল!? যারা শারীরিক, মানসিক ও আত্মিকভাবে অশুদ্ধ, অসদাচারী, যাদের মুখ দিয়ে সাপ, ব্যাঙ, ইঁদুর, ছুঁচোর মত কথা বেরোয়, যারা তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে শুধু বড় বড় কথার বোমা ফাটায় আর আচরণ যাদের বিষাক্ত সাপের মত তারা ঠাকুর প্রতিষ্ঠার কথা বলে!? তারা ঠাকুর মিশনের পতাকাবাহী!? মানুষ কি এতই চার অক্ষর যে তাদের এই ধান্দাবাজি, ভন্ডামী বুঝতে পারছে না, ধরতে পারছে না!? শ্রদ্ধা-সম্মান, প্রেম-ভালবাসা, স্নেহ-মায়া-মমতা, মিষ্টতা-কোমলতা, সহজতা-সরলতা ইত্যাদির লেশমাত্র যাদের জীবনের অভিধানে নেই তারা করবে ঠাকুরের 'বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠা'-র দর্শনের প্রচার!? যাদের চোখ-মুখ-হৃদয় অবগুণে ভরা, নরকের কীট তারা স্বর্গের দেবদূত, ঠাকুরের এক ও একমাত্র পরম ভক্ত, ঠাকুরে লীন হ'য়ে যাওয়া, একাকার হ'য়ে যাওয়া শ্রীশ্রীবড়দার কাজের করবে বিচার!? করবে সমালোচনা!? এমনই আহাম্মক! এমনই বেকুবের দল!! আর, আরো সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় এরাই আবার লজ্জার মাথা খেয়ে ফেসবুকের মাধ্যমে শ্রীশ্রীবাবাইদাদাকে চিঠি লেখে!!!!!! 

আর এরা লিখেছেন এদের দীক্ষিতের সংখ্যা নগন্য। আমার জিজ্ঞাস্য, আপনাদের দীক্ষিত সংখ্যা নগন্য কেন? কেন কেউ আপনাদের কাছে দীক্ষা নিচ্ছে না? কেন আপনাদের, আপনাদের ঋত্বিকদের গ্রহনযোগ্যতা নেই মানুষকে যাজন করার? আপনারা ঠাকুরের অবিকৃত মূল সাধন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত পরম ভক্তকুল আপনারা জানেন না যাজনের প্রকৃষ্ট উদাহরণ নিজের জীবন!? আপনাদের জীবন দেখে কেউ আকৃষ্ট হচ্ছে না কেন ঠাকুরের দীক্ষা নেওয়ার!? কেন কেউ ঠাকুরকে আপন ক'রে নেবার নেশায় উন্মত্ত হচ্ছে না আপনাদের দেখে!? আপনারা নিজেরা দীর্ঘ সময় ধরে প্রত্যহ সকাল সন্ধ্যে নিয়মিত দীর্ঘ প্রার্থনা করেন তো!? বাপের বেটার মত বিবেককে সাক্ষী রেখে বুকে হাত দিয়ে মাথা উঁচু ক'রে বুক টানটান ক'রে জোর গলায় বলতে পারবেন তো হ্যাঁ আমি/আমরা সবাই সকল গুরুভাইবোন সকাল-সন্ধ্যে প্রতিদিন দীর্ঘ সময় ধরে দীর্ঘ প্রার্থনা ধৈর্য সহকারে করি!

মানুষকে বোকা ভাবেন নাকি? এত ভক্তি! এত ভালোবাসা! এত প্রেম! এত টান! এত ধৈর্য ও সহ্য শক্তি!? এত ডেডিকেশন যে পূর্ণাঙ্গ প্রার্থনায় ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ধরে ঠাকুরের পুজোপাট!? হ্যাটস অফ! হ্যাটস অফ আপনাদের ভন্ডামী ভক্তির! আপনারা ভক্ত নাকি ভন্ড!? কথাটা বললাম, বলতে বাধ্য হলাম এইজন্য যে, এত ভক্তি, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, প্রেম বর্ষণের পরেও আপনাদের দেখে লোকে দীক্ষা নিতে, ঠাকুরকে জীবনে আপন ক'রে নিতে পারে না!? কেন সত্যের উপর দাঁড়িয়ে এত পিছিয়ে পড়ছেন!? কেন আপনাদের সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে না!? এক্ষেত্রে কার দোষ!? কেন আজ কোটি কোটি দীক্ষিত লোকে ভরে যাচ্ছে মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ'!? কেন আপনাদের কাছ থেকে সরে এসে মূল স্রোতে আবার ফিরে আসছে মানুষ!? কেন আপনারা ধরে রাখতে পারছেন না মানুষকে!? আপনাদেরই কথানুযায়ী কেন দিন দিন নগন্য হ'য়ে পড়ছে আপনাদের দীক্ষিতের সংখ্যা!? উত্তর কি এখন!?

পরম প্রেমময়ের আঙিনায় প্রেমের বদলে ঠাকুর আত্মজদের বিরুদ্ধে এত হিংসা, এত ক্রোধ, এত ঘৃণা, এত কুৎসা, এত নিন্দা, এত সমালোচনা যেখানে, সেখানে নগন্য না হ'য়ে সচেতন মানুষে আপনাদের হিংসার আঙিনা ভরিয়ে দেবে ঠাকুর!? আপনি/আপনারা কি খবর রাখেন আপনাদের দ্বারা বহু পথভ্রষ্ট মানুষ ঠাকুরের দয়ায় মূল স্রোতে ফিরে এসেছে ও আসছে!? নগন্য হ'তে হ'তে একেবারে শূন্যে গিয়ে ঠেকবে সেদিন সমাগত। সেদিনের অপেক্ষা করুন। অবশ্য সেই লজ্জার দিন আপনি যাতে দেখে যেতে না পারেন তার প্রার্থনা করুন, যদি ঠাকুর শোনেন।

আর ঠাকুরকে অবিকৃত রাখার কথা বলেছেন আমাকে। ঠাকুরকে অবিকৃত রাখার দায়িত্ব তো ৫০ বছর ধ'রে আপনাদের পূর্বপুরুষ নিয়েছেন এবং আপনারা তা বজায় রেখে চলেছেন। কেন আর পারছেন না!? ঠাকুর কি আপনাদের হাতে তথাকথিত লোক দেখানো ভণ্ডামিতে ভরা মিথ্যের প্রাসাদে আর অবিকৃত থাকতে চাইছেন না? ঠাকুর কি তাঁর ভালোবাসাময় পুণ্যভূমিতে যেখানে তিনি (দেওঘরে) জীবনের বাকি দিনগুলি কাটিয়েছেন সেইখানেই বিকৃত থাকতে চাইছেন!? কি জানি! সময় কি উত্তর দিচ্ছে দাদা!? জেনে রাখুন, সময় সবসে বড়া বলবান!!!!!!!

(লেখা ৬ই অক্টোবর'২০১৯)

No comments:

Post a Comment