Powered By Blogger

Saturday, September 17, 2022

প্রবন্ধঃ কয়েকটি জিজ্ঞাস্যর উত্তর।

ক'দিন ধ'রে অনেকেই জানতে চাইছে ফোনে, ওয়াটস আপে একটা বিষয়। বিষয়টা ফেসবুক ঘিরে। ফেসবুকে কিছুদিন ধ'রেই সৎসঙ্গীদের একাংশ পোষ্ট ক'রে চলেছে এমন কিছু কিছু বিষয় যা নিয়ে নতুন ক'রে শুরু হয়েছে বিতর্ক। 

বিষয় আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদা ও পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে নিয়ে। 

পোষ্টগুলিতে আচার্যদেবের ফটো দিয়ে ক্যাপশনে বলা হচ্ছে "পরম পুরুষোত্তম নররূপী নারায়ণ, জীব উদ্ধারে দয়া ক'রে প্রভু দেন দরশন" ইত্যাদি। আর এগুলি যারা করছে তাদের মধ্যে অনেক পাঞ্জাধারী ও স্বস্ত্যয়নীধারী গুরুভাইও আছেন। আর এগুলোর প্রভাব পড়ছে ইয়ং জেনারেশনের ওপর। আরও আশ্চর্যের বিষয় এই ধরণের পোষ্ট যারা করছে বা যারা শ্রদ্ধেয় দাদাদের নিয়ে ঠাকুর সমকক্ষ ধারণা পোষণ করেন এবং তা প্রচার ক'রে বেড়ান তারাও আবার সবাই ইয়ং জেনারেশন অন্তর্ভুক্ত। ফলে বিতর্ক তুঙ্গে ও ইয়ং জেনারেশন দ্বিধাবিভক্ত। এদের মধ্যে বেশিরভাগ ঠাকুরবাড়ি ও পূজনীয় দাদাদের থেকে অনেক দূরে অবস্থানরত। ফলে আজকের যারা ফাস্ট জেনারেশন তারা বিশেষ ক'রে যারা নবাগত ও ইষ্টপ্রাণ তারা প্রবীণ সৎসঙ্গীদের বিশেষ ক'রে পাঞ্জাধারী ও স্বস্ত্যয়নীধারী সৎসঙ্গীদের দ্বারা প্রভাবিত হন এবং তাদের প্রায় দেবতার আসনে বসিয়ে তাদের কথার স্রোতে ভেসে গিয়ে পক্ষ বিপক্ষ রঙে রাঙিয়ে উঠছে আর তার ফলে যা ক্ষতি হওয়ার হ'য়ে যাচ্ছে। আর এ হ'য়ে এসেছে শ্রীশ্রীবড়দা আমল থেকে। 

আমাকে যারা বিভিন্ন সময় এই সম্পর্কে জানতে চেয়ে মেসেজ করে বা ফোন করে তাদের চেষ্টা করি আমার বোধ অনুযায়ী বোঝাবার যা আজ আর্টিকেল হিসেবে এখানে তুলে ধরলাম তাদেরই অনুরোধে যাতে আরও অনেকের এই সম্পর্কে ধারণা ক্লিয়ার হয়। তাদের যা বলেছি তা হ'লো, 

'তোমার বা তোমাদের কি মনে হয় স্বস্ত্যয়নী নিলেই সে কেউকেটা হ'য়ে গেছে? তুমি বা তোমরা কি মনে করো আমরা যারা স্বস্ত্যয়নীধারী তারা সবাই নিখুঁত স্বস্ত্যয়নী পালন করি? তোমার কি মনে হয় আমরা সবাই স্বস্ত্যয়নীর পাঁচটি নীতি পালন করি? আমাদের চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখো তো আমাদের চেহারায় স্বস্ত্যয়নীর প্রথম নীতি ফুটে ওঠে কিনা! অন্য চারটি নীতি বাদ দিলাম। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে।  আর ব্যতিক্রম অবশ্যই ব্যতিক্রম। আর ব্যতিক্রম আছে বলেই সৎসঙ্গ জগৎ আজ ফুলে ফুলে বিকশিত।  আবার চেহারায় সৌন্দর্য প্রকাশ পেলেও আচরণ ১৮০ ডিগ্রী উল্টো।  আর ঋত্বিক, যাজক, অধ্ব্যর্যু সম্পর্কে যা বলা আছে ঋত্বিক বইয়ে তার সঙ্গে কি এদের জীবনের মিল খায়? এখনও পর্যন্ত সৎসঙ্গীরা তো পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে এবং নেয়। এমনকি বহু ঋত্বিক পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম নেয়; তাও আবার সৎসঙ্গে ব'সে ঠাকুরের সামনে! এবারের রাজ্য ভিত্তিক দেওঘরে যে কর্মী সম্মেলন হ'লো ১৫ই আগষ্ট পর্যন্ত সেখানে প্রতিদিন সকাল ৯টায় আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদার সামনে রাজ্যের ঋত্বিক, যাজক ইত্যাদি কর্মীদের জমায়েত হ'তো। আচার্যদেব তাদের সামনে বক্তব্য রাখতেন। তারপর আনন্দবাজারের বিল্ডিংয়ে হ'তো মেইন মিটিং তিনটের সময়। সেখানে শ্রীশ্রীঅবিনদাদা উপস্থিত থাকতেন। ১২ তারিখ সম্ভবত ছিল আসামের দিন। পরদিন ছিল বিহারের। সেখানে কর্মীদের উদ্দেশ্যে আচার্যদেবের বক্তব্য উপস্থিত যেসব কর্মীরা শুনেছে তারা সম্ভবত আর মুখ খুলতে সাহস পাবে না। প্রতিদিনই আচার্যদেব কর্মীদের সামনে নিজের মনোভাব ব্যক্ত করতেন। 

যাই হ'ক, এবার আসি অন্য কথায়। পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীঅবিনদাদার ফটো সৎসঙ্গে রাখা বা আসনে রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ও উঠতেই পারে। আচার্যদেব শ্রীশ্রীদাদার সময়ও সৎসঙ্গে শ্রীশ্রীবাবাইদাদার ফটো রাখা নিয়ে বিতর্ক তৈরী হয়েছিল। এমনকি কোনও কোনও সৎসঙ্গে শ্রীশ্রীবাবাইদাদার ফটো সৎসঙ্গে সাজানো আসন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং দৃষ্টিকটুভাবে তা করেছিল ঋত্বিক, যাজক মিলিতভাবে।  এই তিক্ত অভিজ্ঞতাও আমার আছে। আর আজ তারাই আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদার সামনে ভক্তিতে গদগদ!!!!! তাই ঋত্বিক ব'লে আলাদা ভাবার কিছু নেই। তাদের আলাদা ট্রিটমেন্ট দেওয়ার কিছু নেই। তাদের আর সাধারণ সৎসঙ্গীদের মধ্যে ছোটো বড়োর বিভাজনের রেখা টানার কিছু নেই। সম্মান শ্রদ্ধা আলাদা বিষয় আর ঠাকুরের দরবারে দীক্ষিতদের মধ্যে কাউকে ছোটো আর কাউকে বড়ো ভাবা সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। তাদের সম্মান করবো, শ্রদ্ধা করবো, প্রয়োজন হ'লে সামর্থানুযায়ী তাদের ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেব কিন্তু সৎসঙ্গে কেউই বড় নয়, কেউ ছোটো নয়। সম্ভবত যারা ১২ তারিখ উপস্থিত ছিলেন সেদিন আচার্যদেবের বলা "ঠাকুরের সামনে আমরা ঋত্বিক, যাজক, অধ্ব্যর্যু ও সাধারণ সৎসঙ্গী সবাই এক এবং একসঙ্গে ওঠা, বসা, খাওয়া ইত্যাদি পালনে একত্ববোধ জেগে ওঠে" ইত্যাদি এই এক ও একত্ববোধ সম্পর্কে তার বলা প্রতিদিনই যারা শুনেছে তারা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি।

যারা দীক্ষিত গুরুভাইবোনেদের মধ্যে ছোটো বড় বিশেষ বিভাজনের রেখা টানেন এবং যারা পাঞ্জাধারী ও স্বস্ত্যয়নীধারী হওয়ার কারণে বিশেষ মর্যাদার আসনে বসতে চান সাধারণ সৎসঙ্গীদের মাঝে, বাড়িতে, মন্দিরে তারা কেউই পাকা সৎসঙ্গী নয়। এমনও দেখেছি মন্দিরে এবং বহু বাড়িতে সৎসঙ্গে ভান্ডারার প্রসাদ গ্রহণে স্বস্ত্যয়নী যারা তাদের আলাদা প্রসাদ গ্রহণের ব্যবস্থা আর সাধারণ দীক্ষিতদের আলাদা ব্যবস্থা। এরা সবাই কার্বাইড পাকা। গাছ পাকা নয়। গাছ পাকা ফলের আলাদা রঙ, আলাদা স্বাদ, আলাদা মিষ্টি, আলাদা গন্ধ, আলাদা রূপ!!!!  আর কার্বাইড পাকা ফল দেখলেই বোঝা যায়, চেনা যায়। উপলব্ধিবান, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জ্ঞানী মানুষ মাত্রেই এই তফাৎ ধরতে পারে। হয়তো সাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায় কার্বাইড পাকারা কিন্তু শেষ রক্ষা হয় না; ডাষ্টবিনই হয় এদের শেষ আশ্রয়। এদের শেষের সেদিন ভয়ংকর। 

ঠাকুর বলেছেন, "যেভাবে জীবন বলী দেবে তেমনই জীবন লাভ করবে।" যার যেমন করা, যতটুকু করা ঠাকুরের বলা অনুযায়ী নিখুঁতভাবে তার ততটুকুই অনুভূতি, ততটুকুই জ্ঞান। এদের ভক্তি অতিভক্তি, আবেগতাড়িত লাগামছাড়া বেসামাল ভক্তি। ভক্তির আতিশয্যে এরা মূলের সঙ্গে অন্যের তফাৎ হারিয়ে ফেলে। একধরনের ভক্তি আছে তা হ'লো ব্যাভিচারী ভক্তি। এরা ভারসাম্যহীন। এরা প্রকৃতপক্ষে কাউকেই ভালোবাসে না। না মূলকে ভালোবাসে, না ডালপালাকে ভালোবাসে। এরা নিজের বৃত্তি-প্রবৃত্তিকে ভালোবাসে। যেখানে যে কথায় এদের বৃত্তি প্রবৃত্তি পোষণ পায় সেখানে এরা ভক্তি শ্রদ্ধা ভালোবাসার ব্যাপারে একেবারে পাকা সোনা যেখানে বৃত্তি প্রবৃত্তি পোষণ পায় না সেখানে এরা খড়্গহস্ত।  তখন তারা ঠাকুরের কথাতেও পালটা যুক্তি দেখায়। এটা আর কিছুই নয় প্রকৃত সাধনার অভাব। যদি এরা ঠাকুরের গ্রন্থ পড়ে থাকে তাহ'লে হয় এরা বই পড়া সাধু। বই পড়ে বই হ'য়ে গেছে; বইয়ের মূল এসেন্সকে এরা গ্রহণ করতে পারেনি। নয়তো কয়েকটা বই পড়ে কিম্বা অন্যের মুখে ঝাল খেয়ে খেয়ে পরোক্ষ আধা জ্ঞানের অধিকারী হ'য়ে অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী হ'য়ে বসেছে সৎসঙ্গ জগতে। কিচ্ছু করার নেই। ঠিক তেমনি প্রকৃত ভক্তের বিভ্রান্ত হওয়ারও কিচ্ছু নেই। মাথায় রেখো এটা ঘোর কলি যুগ। সামনে আরও আরও ভয়ঙ্কর দিন আসছে। সেদিন তুমি আমি থাকবো না কিম্বা নতুনভাবে জন্ম নিয়ে আসবো ঐ ভয়ঙ্কর দিনগুলোতে জ্বলেপুড়ে মরার জন্য। তাই সাবধান!  যা তৈরী হওয়ার নীরবে তৈরী হও পরবর্তী দিনগুলো ও পরবর্তী জন্মের জন্য। 

আর, প্রকৃত ভক্ত মাত্রেই ভগবান। যার ভজনা করা যায় সেই ভগবান। তুমি আমিও ভগবান হ'তে পারি। সাধনার উচ্চমার্গে পৌঁছে যদি যেতে পারো তাহ'লে তোমার মধ্যে যে ভগবানত্ব প্রকাশ পাবে তাতে তোমারও ভজনা করা যেতে পারে। বৃদ্ধির রাস্তা সবার জন্য খোলা আছে। তবে উত্তরণের জন্য, উন্নয়নের জন্য একটু পূর্ব সংস্কার কাজ করে, সাহায্য করে। যেমন শ্রীশ্রীবাবাইদাদা, শ্রীশ্রীঅবিনদাদা এরা জন্মগতভাবে উচ্চমার্গের পুরুষ, ঈশ্বরকোটি পুরুষ। তাই সেই অর্থে এরা ভগবান।

পুরুষোত্তম আর ভগবান শব্দের মধ্যে আসমানজমিন ফারাক আছে, যেমন ফারাক আছে সর্বজ্ঞ আর অন্তর্যামী শব্দের মধ্যে। যেমন পরমপিতা আর পিতা শব্দের মধ্যে তফাৎ পায় আমরা। যেমন স্পষ্ট তফাৎ বোঝা যায় স্রষ্টা আর আবিষ্কর্তার মধ্যে। যেমন আমরা তফাৎ পায় সদগুরু আর গুরুর মধ্যে। 

যাই হ'ক পাঠক এবার তুমি নিজেই বুঝে নাও কে পুরুষোত্তম আর কেইবা ভগবান। কে সর্বজ্ঞ আর কে অন্তর্যামী তাও বুঝতে পারবে সহজেই। সর্ব্বজ্ঞ অর্থাৎ যিনি সব জানেন আর অন্তর্যামী অর্থাৎ যিনি অন্তরের কথা জানেন। অন্যের অন্তরের কথা তুমি একটু যত্নশীল হ'লেই জানতে পারবে। মা যেমন সন্তানের অন্তরের কথা বুঝতে পারে মাতৃত্বের স্বাভাবিক নিয়মেই। কিন্তু এই জগতের এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড-এর ভূত ভবিষ্যৎ বর্তমান সব জানেন একমাত্র সৃষ্টিকর্তা পুরুষোত্তম আর তিনিই তাই সর্বজ্ঞ। এছাড়া আর কেউই সর্ব্বজ্ঞ হ'তে পারে না, অন্তর্যামী হ'তে পারে। ঠিক তেমনি আমরা জাগতিক সবাই পিতা, পরমপিতা ন'ই। আবার আমরা আবিষ্কর্তা হ'তে পারি কিন্তু স্রষ্টা ন'ই। যেমন গুরু হ'তে পারি কিন্তু সদগুরু ন'ই। যদিও ঠাকুর গুরু হ'তেও বারণ করেছেন; বলেছেন গুরুমুখ হও। 

আবার ভালোবাসা এমন জিনিস অনেক সময় নিজের অজান্তে ভারসাম্য হারিয়ে যায়। যারা ঠাকুরকে দেখেনি, ঠাকুরের  ভালোবাসার কথা, দয়ার কথা, অন্তহীন অফুরন্ত জ্ঞানের কথা জেনেছে, পড়েছে, পড়ার মধ্যে দিয়ে ঠাকুরের প্রতিটি মুহূর্তের চলা, বলা, ওঠা, বসা, হাসি, কথা, চাউনি, হাত ও হাতের আঙুল নাড়ানোর ভঙ্গি ইত্যাদি অনুভব ক'রে মনের মণিকোঠায় সযত্নে আগলে রেখেছে তারা দইয়ের স্বাদ ঘোলে মেটাবার মতো ঠাকুরের বংশধরদের মধ্যে ঠাকুরের সেই ঝলক দেখতে পায়! আবার ঠাকুর ধরাও দেন বংশধরদের মধ্যে। যেমন সূর্য আর সূর্যের কিরণ! আমরা বর্ষার সময় গাছপালার দিকে তাকালেই ব্যাপারটা পরিস্কার বুঝতে পারবো। গাছগাছালিতে ঘেরা বাড়ি বা মন্দিরে বৃষ্টি হ'য়ে যাওয়ার পরে যদি ঘুরে দেখি কি দেখতে পাবো? দেখতে পাবো, বৃষ্টি থেমে গেছে। বৃষ্টির জলে স্নান ক'রে আনন্দে হাসছে চারপাশের গাছগাছালি। বৃষ্টির জলে ধুয়ে গেছে সর্বাঙ্গের ধুলিকনা। পরিস্কার চকচক করছে গাছের ছোটোবড় পাতা। বৃষ্টিস্নাত পাতার উপরে এসে পড়েছে সূর্যের আলো। বৃষ্টিস্নাত আলো ঝলমলে গাছগাছালিতে ঘেরা বাড়ি বা মন্দির সংলগ্ন বাগানকে যেন মনে হয় এক মায়াময় স্বপ্নপুরী। বৃষ্টির জলে ভেজা চারিদিকের গাছগাছালিতে ঘেরা আলোছায়াময় পরিবেশে ঘুরতে ঘুরতে চোখে পড়বে গাছের পাতা থেকে ঝ'রে পড়ছে টুপটুপ ক'রে জলের ফোটা। মনে হচ্ছে যেন বৃষ্টি  পড়ছে। না, তা নয়; আসলে গাছের নীচে বৃষ্টি পরে পড়ে। সেইখানে হঠাৎ যদি চোখে পড়ে দেখতে পাবে গাছগাছালির পাতার ভিড়ে কোথা থেকে যেন ছিটকে আসছে সূর্যের তীক্ষ্ণ আলো! এগিয়ে গিয়ে দেখো দেখতে পাবে চিকচিক করছে হাজারো পাতার ভিড়ে একটা পাতা! কি আছে সে পাতায়!? গাছের হাজারো ডালপালার মাঝে মাথা গলিয়ে যদি আলোয় ঝিলমিল সেই পাতার কাছে যাও দেখবে, সেই আলো ঝলমলে পরিষ্কার পাতার ওপর রয়েছে একফোঁটা জল আর সেই জলকণার ওপর এসে পড়েছে ডালপালার হাজারো পাতার  ফাঁক দিয়ে গলে আসা সূর্যের তীক্ষ্ণ আলো! কি অদ্ভুত মনোরম দৃশ্য!  মাথার ওপরে আকাশের সূর্যটা গোটা নেবে এসেছে তার সমস্ত ঐশ্বর্য, সমস্ত শক্তি নিয়ে ঐ ছোট্ট জলকণার ওপর!! আর সেখান থেকে ছিটকে বেরোচ্ছে আলোর জ্যোতি!!!!! ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশের হাজারো পাতার ওপর! কি অপূর্ব দৃশ্য! হাতের মুঠোয় সূর্য!? চোখের সামনে সূর্য!? এও কি সম্ভব!? ইচ্ছে করলেই ধরতে পারি! কিন্তু না বন্ধু! এ ধরার নয়। এ যে চেয়ে চেয়ে মুগ্ধ বিস্ময়ে দেখার বিষয়! নিবিষ্ট মনে অনুভবের বিষয়! ভালো ক'রে যদি দেখো বন্ধু দেখতে পাবে ঐ ছোট্ট জলকণার মধ্যে যে সূর্য দেখতে পাচ্ছো তার মধ্যে দেখো সূর্যের সাত সাতটা রঙের কি অদ্ভুত মনোরম খেলা! ছিটকে আসছে সাত সাতটা রঙ! ঐ ছোট্ট পাতা তার ছোট্ট শরীর দিয়ে ধ'রে রেখেছে আকাশের ঐ বিশাল সূর্যকে! কে বলে সূর্য মর্ত্যে নেবে আসে না? যে দেখার দেখতে পায়। যার নির্মল স্বচ্ছ চোখ আছে, আছে নোংরা মুক্ত পরিস্কার ঝকঝকে মন, আছে পবিত্র হৃদয় সে পাবে দেখতে ঐ ছোট্ট জলকণার মধ্যে সূর্যের জীবন্ত উপস্থিতি, দেখতে পাবে সূর্য অবস্থান করছে তার সম্পূর্ণতা নিয়ে ঐ ছোট্ট জলকণার মধ্যে! ঐ যে ঠাকুর বলতেন, "আজও লীলা করে গৌড়চাঁদ রায়, কোনও কোনও ভাগ্যবানে দেখিবারে পায়।" 

গাছগাছালির মনোরম পরিবেশে আলোছায়াময় হাজারো পাতার ভিড়ে ঐ বৃষ্টিস্নাত ঝলমলে পাতার ওপর আলোময়, রূপময় ছোট্ট ঐ জলকণা হ'লো সৎসঙ্গের বর্তমান আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদা!!!!শ্রীশ্রীআচার্যদেবের মুখের দিকে তাকালেই দেখতে পাবে এর সত্যতা! শ্রীশ্রীঠাকুর অবস্থান করছেন আচার্যদেবের সর্বাঙ্গে! কথায়, বার্তায়, চলনে, বলনে, চাউনিতে, শরীরী ভাষায়, অঙ্গুলি হেলনে ইত্যাদি প্রতি মুহূর্তে! সূর্য আর সূর্যের যেমন কিরণ! ঠিক তেমনি শ্রীশ্রীঠাকুর আর আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদা!  শ্রীশ্রীঠাকুর পূর্ণমাত্রায় পূর্ণশক্তি নিয়ে অবস্থান করছেন আচার্যদেবের ভিতর কিন্তু আচার্যদেব জানেন তিনি শ্রীশ্রীঠাকুর নন। আমরা যে যাই ভাবি না কেন তাকে নিয়ের তিনি কিন্তু নিজ সিদ্ধান্তে অটল, অচ্যুত এবং তা প্রতি মুহূর্তে প্রকাশিত হয় তার প্রতিদিনের কথায়। কিন্তু আমরা যারা শ্রীশ্রীঠাকুরকে দেখিনি বা যারা শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গ করেছি তারাও ঠাকুরকে পূর্ণমাত্রায় অনুভব করি আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদার ভিতর। সেইজন্যই আচার্য পরম্পরা!!!!!!

যাই হ'ক বন্ধু আমার! পাঠক আমার! এদের কথায় যারা উপরিউক্তভাবে আচার্দেবকে সম্বোধন করে বা প্রচার করে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। বিরক্ত হ'তে পারো বন্ধু কিন্তু রাগারাগি ক'রো না। পারলে বিরক্তও হ'য়ো না। কারণ রাগ, বিরক্তি সাধনার অন্তরায়। তোমারি ক্ষতি।

আজ এই পর্যন্ত।  আবার পরে কথা হবে।

প্রবি।

No comments:

Post a Comment