'DON'T UNDERESTIMATE THE POWER OF A COMMON MAN'
– এই কথাটা কেন ঠিক? লাতিন শব্দগুচ্ছ ‘জনসাধারণের বাণী যদি ভগবানের বাণী’ হয় তাহ’লে স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ মানুষের ক্ষমতাকে অস্বীকার করা, প্রকৃত ক্ষমতা অপেক্ষা কম ক্ষমতা ভাবা নেহাতই মূর্খামি! ভগবানের বাণী মানে সর্ব্বশক্তিমানের বাণী! আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে সর্ব্বশক্তিমানের ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করবে কে? সর্ব্বশক্তিমান তো এক এবং অদ্বিতীয়! আর ‘সমাজ কো বদল ডালো’ তত্ত্বে বিশ্বাসীদের কাছে তো জনগণই ঈশ্বর, জনগনই সর্ব্বশক্তিমান! তাঁরা জনগনকেই ঈশ্বরের আসনে বসান। আলাদা ক’রে ঈশ্বরের অস্তিত্ব তাঁরা বিশ্বাস করেন না এবং মানেন না। আর জনগনকেই যে ঈশ্বরের আসনে বসান তার পেছনেও আছে সেই সর্ব্বশক্তিমান ঈশ্বরের আসনে নিজেকে বসাবার গোপন অভিপ্রায় ও অভিসন্ধি! তাহ’লে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে জনগণের ক্ষমতাকে underestimate করে এতবড় শক্তিমান কে? কৈশোর পেরিয়ে যেদিন যৌবনে পা রেখেছিলাম সেদিন থেকে যৌবনের পাগলা ঘোড়ায় চেপে ছুটতে ছুটতে চলে গেছি বনে-বনান্তরে, শহরে-নগরে, গ্রামে-গঞ্জে; পেরিয়ে এসেছি শিক্ষা-সংস্কৃতি, নাটক, গান, খেলা ও শরীর চর্চা, রাজনীতি, ধর্ম্ম ইত্যাদি বিভিন্ন প্রাঙ্গণ এই বয়স পর্যন্ত আর নিজেকে নিজে শুধু একটা প্রশ্নই করেছি কৌতূহলবশতঃ, কোন জনসাধারণের বাণী ভগবানের বাণী? সারা জীবন ধ’রে যা দেখেছি, যা শুনেছি, যা বুঝেছি এবং যা অনুভব করেছি সেই অভিজ্ঞতার ওপর দাঁড়িয়ে মেলাতে পারিনি এই প্রবচন বা বহু প্রচলিত ‘ভগবানের বাণী’ এই উক্তি বা তকমাকে জনসাধারণের সঙ্গে! মেলাতে পারিনি সাধারণ মানুষের অসীম ক্ষমতাকে আমার দেখা, শোনা, বোঝা এবং অনুভব করা, হয়তো অন্য অনেকের চেয়ে কম হ’তে পারে কিন্তু এই জীবনের আজকের দিন পর্যন্ত যতটুকু অভিজ্ঞতা লাভ করেছি সেই অভিজ্ঞতার সঙ্গে। আজ পর্যন্ত যতগুলি প্রাঙ্গণে আমি পদচারণা করেছি সবজায়গায় দেখেছি সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক বৃত্তি-প্রবৃত্তি। যে বৃত্তি-প্রবৃত্তি আজকের জননায়ক কালকের স্বৈরাচারীর মূলধন। এই মূলধনের জন্যই যে সাধারণ মানুষকে আজ সর্ব্বশক্তিমান ব’লে সুড়সুড়ি দিয়ে ঈশ্বরের সিংহাসনে বসায় সাধারণ মানুষের মাঝে সাধারণ মানুষ হ’য়ে লুকিয়ে থাকা অনিয়ন্ত্রিত বৃত্তি-প্রবৃত্তির বিষাক্ত ছোবলে ক্ষতবিক্ষত আপাত নখদন্তহীন ভয়ংকর ভালো মানুষ নেতৃত্বের সুবাদে, সেই মানুষকেই ওই নেতৃত্ব জ্ঞানতঃ underestimate ক’রে আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলে দেয় নির্ম্মম-নির্দয়ভাবে কুকুরসম ঘৃণ্য বস্তু ম’নে ক’রে। আর বেড়ালের পশ্চাতে ফুঁ দিয়ে ফুলানো নকল বাঘের মত শক্তিমান সাধারণ মানুষ হাওয়া বেড়িয়ে যাওয়া নেতানো বেলুনের মত চুপসে গিয়ে পড়ে থাকে বর্জ্য পদার্থের মত। কেন এমনটা হয়? কি সেই স্বাভাবিক বৃত্তি-প্রবৃত্তি যার জন্য সাধারণ মানুষ অসীম ক্ষমতাসম্পন্ন সর্ব্বশক্তিমান হওয়া সত্ত্বেও এমন অপমানজনক পরিণতির শিকার হয়? প্রবাদ আছে ‘সব ভালো তার, শেষ ভালো যার’। স্বৈরাচারী শাসকের কথা বাদ দিলাম, সাধারণ মানুষ যদি শক্তিমান হয় আর তার শক্তিতেই যদি বিরাট পরিবর্তন হয় তাহ’লে সেই পরিবর্তনের পরও তার কেন শেষ ভালো হয় না? তার বাণী যদি ভগবানের বাণীই হয় তাহ’লে কেন তার সেই সূর্যের মত অমোঘ সত্য বাণী তাকে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলার গভীর অন্ধকারে ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে না? তখনি মনে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন জাগে, একটা অন্ধ কি আর একটা অন্ধকে পথ দেখাতে পারে? অন্তত একটা খোঁড়া লোকও দরকার একজন অন্ধকে কিছুটা পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবার জন্য। ঠিক তেমনি একজন অজ্ঞানী আর একজন অজ্ঞানীকে জ্ঞানচক্ষু দান করতে পারে? অন্তত একজন আধা জ্ঞানীর দরকার একজন অজ্ঞানীকে কিছুটা ঝাপসা হ’লেও দৃষ্টি দিতে। আর ঝাপসা দৃষ্টি দিয়ে আর যাই হ’ক শেষ রক্ষা হয়না। শেষের সেদিন ভয়ংকর হয়। তাহ’লে সাধারণ মানুষ শক্তিমান হ’ল কি ক’রে আর জনগণের বাণী ভগবানের বাণীই বা কি ক’রে হ’ল? সর্ব্বশক্তিমান ঈশ্বর বা ভগবানই তো পুর্ণজ্ঞানী! আর জনগণ যদি পূর্ণজ্ঞানীই হবে তাহ’লে জনগণের বা মানবজাতির বা সমাজের আজ এই শোচনীয় অবস্থা কেন? আর তাও সেই অবস্থার Tradition চলেছে সমানে যুগ যুগ ধরে!!! কেন?
আজ পর্যন্ত পরিচিত-অপরিচিত, চেনা-অচেনা, জানা-অজানা, আত্মীয়-অনাত্মীয়, শত্রু-মিত্র, ভাই-বন্ধু যত মানুষের সংস্পর্শে এসেছি পুর্বে বলা শিক্ষা-সংস্কৃতি থেকে শুরু ক’রে ধর্ম্ম-রাজনীতির প্রাঙ্গণ পর্যন্ত, দেখেছি সবাই আমার মতই ভাঙাচোরা কিম্বা আরও স্পষ্ট ক’রে বললে বলতে পারি চূড়ান্ত ভাঙাচোরা। আরও দেখেছি এই ভাঙাচোরা জীবনকে জোড়া লাগাবার বা সারাবার কোনও ইচ্ছেও নেই এই ভাঙাচোরা মানুষগুলোর। দেখেছি সবাই যে যার নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত। কে কাকে পিছনে ফেলে, ল্যাং মেরে, বুকে লাথি মেরে, পিছনে বেইমানি-অকৃতজ্ঞতার ছুরি চালিয়ে, বিশ্বাসঘাতকতার বিষাক্ত ছোবল হেনে এগিয়ে যাবে তার চূড়ান্ত ঘৃণ্য এক প্রতিযোগিতা চলছে। কেউ কাউকে সহ্য ক’রতে পারছে না। লোকদেখানো মিষ্টি একটা হাসি মুখে মেখে সবাই সবার সঙ্গে মিশছে। এদের দেখে চমকে উঠেছি, দেখেছি কি ভয়ংকর এক সত্য অন্ধকার সর্ব্বাঙ্গে মেখে উঠে আসছে গভীর অন্ধকারের পাতাল ভেদ ক’রে। সেই সত্য, শয়তানের হাসি ভগবানের চেয়েও মিষ্টি। গিরগিটি-কাঁকড়া চরিত্রের অধিকারী সাধারণ শক্তিমানের দল! মুহুর্তে চোখ ওলটাতে ওস্তাদ জনসাধারণের বাণী ভগবানের বাণী-র দল! আমার মত বোকা মানুষ, সরল মানুষ, সাধাসিধে মানুষ, বেকুব মানুষ, লেখাপড়া না-জানা মানুষ, অক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ, অশিক্ষিত মানুষ, অজ্ঞানী মানুষ, লোভী মানুষ, অহংকারী মানুষ, পরশ্রীকাতর মানুষ, অলস মানুষ, স্বার্থপর মানুষ, নীচ মনের মানুষ, বিকৃত মানসিকতার মানুষ, কামুক মানুষ, ধান্দাবাজ মানুষ, বেইমান-অকৃতজ্ঞ-বিশ্বাসঘাতক শয়তান মানুষে কিলবিল করছে শক্তিমান সাধারণ মানুষের রুপে! এঁরা powerful common man! এঁদের বাণী ভগবানের বাণী! এঁরাই যুগের পরিবর্তন আনে নরককে স্বর্গে পরিণত করবে ব’লে, আবার সেই পরিবর্তনকে অচলায়তনে পরিণত করেন এই শক্তিমান সাধারণ মানুষেরাই! তাই সত্যিই ওই film-র dialogue-এর মত আমিও বলছি, “DON’T UNDERESTIMATE THE POWER OF A COMMON MAN”. এই powerful common man-দের মূলধন ক’রেই ক্ষমতাই অধিষ্ঠিত হয় আজকের জননায়ক কালকের স্বৈরাচারী শক্তি। আবার এই powerful common man-দের সহায়তায় ‘দশচক্রে ভগবান ভূত’-র মত অর্থাৎ দশজন শয়তান চক্রান্ত ক’রে ভগবান নামক মানুষটাকে যেমন ভূতে পরিণত করে ঠিক তেমনি প্রকৃত জননায়ক-কেও খলনায়কে পরিণত করে স্বৈরাচারী শক্তি। এরা বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে ডুবে থাকা সাধারণ মানুষকে মিষ্টি হেসে Don’t underestimate the power of a common man-এর সুড়সুড়িতে তাতায়। এরাই অনিয়ন্ত্রিত রিপু জ্বরে আক্রান্ত, ভারসাম্যহীন বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে জর্জ্জরিত আমাদের মত অতি সাধারণ মানুষকে ‘Vox populi vox dei’, জনসাধারণের বাণী ভগবানের বাণী, The voice of the people is the voice of the God এই আখ্যায় ভুষিত ক’রে সর্ব্বশক্তিমান ঈশ্বরের অপমান তো করেই সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষকে ঈশ্বরের আসনে বসিয়ে মিথ্যে তোয়াজে, ফাঁপা খোশামোদির আফিমের নেশায় বুঁদ ক’রে দেয়। ‘Vox populi vox dei’ , Don’t underestimate the power of a common man’ এই সমস্ত শব্দ ভাঙাচোরা সাধারণ মানুষের কাছে আফিম!!!!
আজ পর্যন্ত পরিচিত-অপরিচিত, চেনা-অচেনা, জানা-অজানা, আত্মীয়-অনাত্মীয়, শত্রু-মিত্র, ভাই-বন্ধু যত মানুষের সংস্পর্শে এসেছি পুর্বে বলা শিক্ষা-সংস্কৃতি থেকে শুরু ক’রে ধর্ম্ম-রাজনীতির প্রাঙ্গণ পর্যন্ত, দেখেছি সবাই আমার মতই ভাঙাচোরা কিম্বা আরও স্পষ্ট ক’রে বললে বলতে পারি চূড়ান্ত ভাঙাচোরা। আরও দেখেছি এই ভাঙাচোরা জীবনকে জোড়া লাগাবার বা সারাবার কোনও ইচ্ছেও নেই এই ভাঙাচোরা মানুষগুলোর। দেখেছি সবাই যে যার নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত। কে কাকে পিছনে ফেলে, ল্যাং মেরে, বুকে লাথি মেরে, পিছনে বেইমানি-অকৃতজ্ঞতার ছুরি চালিয়ে, বিশ্বাসঘাতকতার বিষাক্ত ছোবল হেনে এগিয়ে যাবে তার চূড়ান্ত ঘৃণ্য এক প্রতিযোগিতা চলছে। কেউ কাউকে সহ্য ক’রতে পারছে না। লোকদেখানো মিষ্টি একটা হাসি মুখে মেখে সবাই সবার সঙ্গে মিশছে। এদের দেখে চমকে উঠেছি, দেখেছি কি ভয়ংকর এক সত্য অন্ধকার সর্ব্বাঙ্গে মেখে উঠে আসছে গভীর অন্ধকারের পাতাল ভেদ ক’রে। সেই সত্য, শয়তানের হাসি ভগবানের চেয়েও মিষ্টি। গিরগিটি-কাঁকড়া চরিত্রের অধিকারী সাধারণ শক্তিমানের দল! মুহুর্তে চোখ ওলটাতে ওস্তাদ জনসাধারণের বাণী ভগবানের বাণী-র দল! আমার মত বোকা মানুষ, সরল মানুষ, সাধাসিধে মানুষ, বেকুব মানুষ, লেখাপড়া না-জানা মানুষ, অক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ, অশিক্ষিত মানুষ, অজ্ঞানী মানুষ, লোভী মানুষ, অহংকারী মানুষ, পরশ্রীকাতর মানুষ, অলস মানুষ, স্বার্থপর মানুষ, নীচ মনের মানুষ, বিকৃত মানসিকতার মানুষ, কামুক মানুষ, ধান্দাবাজ মানুষ, বেইমান-অকৃতজ্ঞ-বিশ্বাসঘাতক শয়তান মানুষে কিলবিল করছে শক্তিমান সাধারণ মানুষের রুপে! এঁরা powerful common man! এঁদের বাণী ভগবানের বাণী! এঁরাই যুগের পরিবর্তন আনে নরককে স্বর্গে পরিণত করবে ব’লে, আবার সেই পরিবর্তনকে অচলায়তনে পরিণত করেন এই শক্তিমান সাধারণ মানুষেরাই! তাই সত্যিই ওই film-র dialogue-এর মত আমিও বলছি, “DON’T UNDERESTIMATE THE POWER OF A COMMON MAN”. এই powerful common man-দের মূলধন ক’রেই ক্ষমতাই অধিষ্ঠিত হয় আজকের জননায়ক কালকের স্বৈরাচারী শক্তি। আবার এই powerful common man-দের সহায়তায় ‘দশচক্রে ভগবান ভূত’-র মত অর্থাৎ দশজন শয়তান চক্রান্ত ক’রে ভগবান নামক মানুষটাকে যেমন ভূতে পরিণত করে ঠিক তেমনি প্রকৃত জননায়ক-কেও খলনায়কে পরিণত করে স্বৈরাচারী শক্তি। এরা বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে ডুবে থাকা সাধারণ মানুষকে মিষ্টি হেসে Don’t underestimate the power of a common man-এর সুড়সুড়িতে তাতায়। এরাই অনিয়ন্ত্রিত রিপু জ্বরে আক্রান্ত, ভারসাম্যহীন বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে জর্জ্জরিত আমাদের মত অতি সাধারণ মানুষকে ‘Vox populi vox dei’, জনসাধারণের বাণী ভগবানের বাণী, The voice of the people is the voice of the God এই আখ্যায় ভুষিত ক’রে সর্ব্বশক্তিমান ঈশ্বরের অপমান তো করেই সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষকে ঈশ্বরের আসনে বসিয়ে মিথ্যে তোয়াজে, ফাঁপা খোশামোদির আফিমের নেশায় বুঁদ ক’রে দেয়। ‘Vox populi vox dei’ , Don’t underestimate the power of a common man’ এই সমস্ত শব্দ ভাঙাচোরা সাধারণ মানুষের কাছে আফিম!!!!
অনেকদিন ধ’রে একটা কথা বুকের মধ্যে তোলপাড় করছিল, ওলটপালট ক’রে দিচ্ছিল জীবনটাকে। তাহ’লে কার বাণী ভগবানের বাণী? যার বাণীতে নরক থেকে মর্ত, মর্ত থেকে স্বর্গে পরিণত হয় পৃথিবী, যার বাণীতে পশুত্ব থেকে মনুষ্যত্ব, মনুষ্যত্ব থেকে দেবত্বে উত্তরন ঘটে মানুষের সে-কি এই শক্তিমান সাধারণ মানুষ বা জনসাধারণ? ঠিক এরকম এক সময়ে চোখে পড়ল The greatest phenomenon of the world SriSri Thakur Anukul Chandra-এর একটা Explanation. তিনি ‘Vox populi vox dei’ (জনসাধারণের বাণী ভগবানের বাণী)–র পরিবর্তন ক’রে বলেছেন, ‘Vox expletory vox dei’, (পরিপূরকের বাণীই ভগবানের বাণী)।
‘জনসাধারণের মনোজগতে বিপ্লব কে আনবে’ এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, “বিপ্লব ভাল, কিন্তু বিপ্লবটা হওয়া চাই অমৃতবর্ষী। বিষ-বিপ্লব ভাল না। বিদ্রোহ জিনিসটা ভাল না। অবশ্য for becoming (বৃদ্ধির জন্য) যা’, তাকে আমরা বিদ্রোহ বলি না। বিপ্লব মানে, ভাসিয়ে দেওয়া। বাঁচা-বাড়ার অনুকূল ভাবধারায় সারা দেশকে ভাসিয়ে দিতে হবে। তাই বলি অমৃত-বিপ্লবের প্রয়োজন আছে। বিপ্লব চাই, দানা বাঁধানোর কারিগর চাই। ওরা বলতো Vox populi vox dei (জনসাধারণের বাণী ভগবানের বাণী) কিন্তু সাধারণ মানুষ জানে না, কিসে তাদের ভাল হবে। তাদের প্রবৃত্তি অনুযায়ী ব্যবস্থা হ’লেই তারা মনে করে সর্বোত্তম ব্যবস্থা হ’লো। তাতে তাদের যে সর্বনাশও হ’য়ে যেতে পারে, তা’ তারা বোঝে না। একদল চোরকে যদি আইন করতে দেওয়া যায়, তারা চুরির অনুকূলে আইন ঠিক করবে। ওদের বুদ্ধিই অমনতর, তাই আমার মনে হয়, প্রবৃত্তি-পরতন্ত্রি অজানদের বুদ্ধি বিচারের উপর প্রাধান্য না দিয়ে পূরণ পুরুষ যারা, তাঁদের বাণীর উপর প্রাধান্য দেওয়া ভাল। আমি তাই বলছি Vox expletory vox dei. (পরিপূরকের বাণীই ভগবানের বাণী)।
তিনি আরো বলেছেন, "পূরণ-পুরুষ মহানদের বাণী ও নির্দেশমত যদি সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালিত হয় তাহ’লে আর কোন খাঁকতি থাকে না। ভগবান বলতে আমরা বুঝি ঐশ্বর্য, বীর্য, যশ, শ্রী, জ্ঞান, বৈরাগ্য-----এই ষড়গুণের সমাবেশ যাতে আছে, এমনতর মানুষ। বৈরাগ্য না থেকে ঐশ্বর্য থাকলে মানুষ ঐশ্বর্যে আবদ্ধ হ’য়ে পড়ে; আবার ঐশ্বর্য না থেকে বৈরাগ্য থাকলে সে বৈরাগ্য হয় নিষ্প্রভ। ষড়গুণের সুসমাবেশের ভিতর দিয়ে মানুষ পূর্ণতা-স্পর্শী হ’য়ে ওঠে; অর্থাৎ, ওতে ক’রে পরিবেশ সহ ব্যষ্টির বাঁচা-বাড়ার পথ অবাধ হয়। তাই, অমনতর সমাবেশ যাঁদের ভিতর, তাঁদের আমরা যুগে যুগে ভগবান ব’লে পূজা করি। বলি ভগবান রামচন্দ্র, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, ভগবান বুদ্ধ, ভগবান মনু, ভগবান শ্রীচৈতন্য, ভগবান রামকৃষ্ণ ইত্যাদি। শুনেছি God (ভগবান) হয়েছে good থেকে। শিবও যা’, Godও তাই। ভগবানের অবতার মানে মঙ্গলের অবতরণ। জাতির উন্নতি যদি চাই, তবে মূর্ত মঙ্গল যিনি তাঁর শরণাপন্ন হ’তে হবে”।
তাই আমাদের প্রয়োজন অমৃত বিপ্লবের জন্য, আমাদের দানা বাঁধানোর জন্য এমন একজন পূরণ-পুরুষ কারিগর। আর তখনই common man-এর power কা’কে বলে তা’ দেখতে পাবে জগত।
তাই দোলনচাঁপা, সত্য অপ্রিয় হ’লেও যত তাড়াতাড়ি তা’ মেনে নেওয়া যায় এবং মেনে নিয়ে অনুসরণ করা যায় ততই নিজের ও সকলের মঙ্গল। সমাজের মঙ্গল। মানবজাতির মঙ্গল। নতুবা সবটাই সৎসঙ্গের প্রধান আচার্যদেব শ্রীশ্রীবড়দার বলা কথা, “ফুটো বালতিতে জল ঢালার মত। সে একটা ফুটোও ফুটো, দশটা ফুটোও ফুটো। একটা ফুটো দিয়ে আস্তে আস্তে আর দশটা ফুটো দিয়ে তাড়াতাড়ি। জল কিন্তু বেরিয়ে যাবে”।
এখন মানা না-মানা সবটাই ব্যাক্তিগত ব্যাপার। শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র একটা অত্যন্ত সহজ-সরল কথা বলেছেন, “মানা আর জানা দুই ভাই। মানতে হ’লে জানতে হবে, আর জানতে হ’লে মানতে হয়”!!
ক্রমশঃ