Powered By Blogger

Tuesday, January 24, 2017

কোনটা ঠিক? কোনটা বেঠিক?



স্বাধীনোত্তর ৭০বছরে দেশে কটা এমন ঘটনা ঘটেছে যাতে আম জনতার স্বার্থে প্রায় সমস্ত বিরোধী দল সরকার বিরোধী সিদ্ধান্তে জোট বেঁধে প্রতিবাদে সংসদ ভবনের দুই কক্ষে, রাষ্ট্রপতি ভবনে খোলা আকশের নীচে সরব হয়েছিল বা হয়েছে? মনে পড়ে কারও? কারও কাছে তথ্য থাকলে দয়া রে জানাবেন। আমার কাছে মাত্র দুটি তথ্য আছে। একঃ ভারতবর্ষের প্রাক্তন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর শাসনকালে ১৯৭৫ সালের ২৫শে জুন মধ্য রাত্রে নেওয়া সিদ্ধান্ত জরুরী অবস্থাঘোষণা। যাকে তৎকালীন বিরোধীরা গণতন্ত্র হত্যা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার ভয়ংকর পদক্ষেপ লে ঘোষণা করেছিলেন। দুইঃ ভারতবর্ষের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর কালো টাকার বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। যাকে বিরোধীরা আম জনতার উপর নেবে আসা একনায়কতন্ত্রের স্বৈরাচারী অত্যাচার একই সঙ্গে অঘোষিত জরুরী অবস্থা জারী করার সঙ্গে তুলনা করেছেন। সেদিন শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করার খেসারত দিতে হয়েছিল। আর আজ বিরোধীদের অভিযোগ অনুযায়ী নরেন্দ্র মোদীর কালো টাকার বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করার নামে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে যে অঘোষিত জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছেন তার জন্য কি খেসারত দিতে হয় তার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। স্বাধীনোত্তর ভারতবর্ষের সংসদে যে দলই দেশ শাসনের দায়িত্বে থাকুক না কেন ক্ষমতাসীন দল ৭০ বছর রে যেভাবে দেশ চালিয়েছে, যে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সব সিদ্ধান্তই কি আম জনতার স্বার্থে নেওয়া হয়েছিল? ৭০ বছর রে গৃহীত আর কোনও সিদ্ধান্তই কি আম জনতার স্বার্থ বিরোধী ছিল না? শুধুমাত্র আমার জানা এই দুটি গৃহীত সিদ্ধান্তই ছিল আম জনতার স্বার্থ বিরোধী? সত্যি সত্যিই কি এই দুই সিদ্ধান্ত আম জনতার স্বার্থ বিরোধী আম জনতার স্বার্থকে আঘাত করেছিল বা করেছে? ৭০ বছর রে দেশের নেতৃত্বে যারা ছিলেন তাঁরা সবাই দক্ষতা যোগ্যতার সাথে সততাকে অবলম্বন রে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন? টিভিতে চ্যানেলে চ্যানেলে শুনি ঘটনা সম্পর্কে সর্বঘটে কাঁঠালি কলার মত সর্ববিষয়ে পন্ডিত বিশ্লেষকদের বিশ্লেষণ। শুনি যুক্তি-অযুক্তির তর্ক-বিতর্ক! শুনি আম জনতার ওপর জোর রে চাপিয়ে দেওয়া নানাজনের নানা বিশ্লেষণের রঙিন মোড়কে মোড়া দৃষ্টিভঙ্গি। শুনি মিছিল-মিটিং- জনপ্রতিনিধিদের স্বার্থপূরণের স্লোগান আর ভাষণ। কোনটা ঠিক? কোনটা বেঠিক? লোকতন্ত্রের বোরখার আড়ালে একনায়কতন্ত্র না-কি প্রকৃত এক নায়ক তন্ত্র?

শুভ নববর্ষ ও কিছু উপলব্ধি (২০১৭)!!!!



দুঃখিত বন্ধু! এবার শুভ নববর্ষ (২০১৭) জানাতে পারলাম না তোমাকে আমার প্রিয়জন সবাইকে। Surgical strike on Black Money & Fake Currency-এর কারণে জনজীবন বিধ্বস্ত, বিপর্যস্ত ক্ষতবিক্ষত। নোটবন্দী মানুষের জীবন পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছে। তাই এবার বন্ধু তোমায় নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে পারলাম না। মন ভারাক্রান্ত। মন ভারাক্রান্ত বন্ধু শুধু নোটবন্দীর কারণে নয় মন ভারাক্রান্ত বিপর্যস্ত এই কারণে যে গতকাল নতুন বছরের আগমনে সারাদেশ জুড়ে যে আনন্দের বন্যা বয়ে যেতে দেখলাম, আলোর রোশনাই, আতস বাজির ঝিলিক, শব্দ বাজির ধামাকায় দেশকে আন্দোলিত 'তে দেখলাম, নাচে-গানে, হাত-পা-মাথা-কোমর দোলানোর যে কসরৎ দেখলাম---- সারা দেশ না হয় ছেড়ে দিলাম সেগুলি নাহয় টিভিতে দেখেছি কিন্তু আমার বাড়ীর আশেপাশে, উত্তরপাড়া শহর জুড়ে পাড়ায় পাড়ায়, ক্লাবে ক্লাবে, অলিতে গলিতে, মাঠে ঘাটে রঙ্গীন আলো, নানা রঙ বেরঙের বেলুন, আতস বাজির ঝলকানি, শব্দ বাজির ধামাকা সহযোগে যে আনন্দের উন্মাদনা দেখলাম--- তাতে মন আনন্দে ভরে যাওয়ার পরিবর্তে বিহ্বল হয়ে গেলাম, গুলিয়ে গেলাম তাহ'লে কোনটা সত্যি, কোনটা ঠিক!!?? হাতে কারও টাকা নেই, ব্যাঙ্কে টাকা নেই, এটিএমে কোনও টাকা নেই, নিজের টাকা ব্যাঙ্কে থাকা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট এমাউন্ট ছাড়া বেশী টাকা তোলার উপায় নেই, টাকার অভাবে বাজার, দোকান, ব্যবসা সব অচল, টাকার অভাবে মেয়ের বিয়ে দিতে পারছে না, টাকার অভাবে ডাক্তারের ফিস দিতে পারছে না রোগীর বাড়ির লোকজন, হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যাহত, কলে কারখানায় বিভিন্ন কর্মস্থলে টাকার যোগানের অভাবে কাজ হারাচ্ছে শ্রমিক, টাকার যোগানের অভাবে বিয়ে বন্ধ, পড়াশোনা বন্ধ, চিকিৎসা বন্ধ, চাষ আবাদ বন্ধ, শিল্প বন্ধ, ব্যবসা বন্ধ, ট্রেনে, বাসে, ট্যাক্সি, অটো ইত্যাদি ইত্যাদিতে সফর বন্ধ, চতুর্দিকে সব সব বন্ধ; যেন গোটা দেশ জুড়ে এক অলিখিত বন্ধ। বর, কনে, ছাত্র ছাত্রী, যুবক যুবতী, প্রৌঢ় প্রৌঢ়া, বৃদ্ধ বৃদ্ধা, শ্রমিক, কৃষক সমস্ত স্তরের মানুষ নোটবন্দীর কারণে মানসিক অবসাদে, যন্ত্রণায় হয় মারা যাচ্ছে নাহয় আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে একমাত্র মুক্তির উপায় হিসাবে। এসব দেখে শুনে আমি কনফিউজড!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!! কোনটা ঠিক!? কোনটা বেঠিক!? কোনটা সত্যি!? কোনটা মিথ্যে!? এত টাকার যোগানের অভাবে, নোটবন্দীর মত অনর্থক, অসংগত চার অক্ষরি পদক্ষেপের কারণে যখন গোটা দেশ, দেশের জনজীবন পঙ্গু 'য়ে পড়েছে, ল্যাংড়াচ্ছে, খোঁড়াচ্ছে; অন্ধত্বের কারণে হাতড়ে বেড়াচ্ছে যখন দেশের লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি অসহায় মানুষ ঠিক সেই সময় নতুন বছরের আগমনে গোটা দেশ, দেশের জনজীবন রাজ্যে-রাজ্যে গোটা দেশ জুড়ে হাটে-মাঠে-বাটে, ক্লাবে-প্রতিষ্ঠানে, রেষ্টুরেন্টে-হোটেলে-মোটেলে, পাড়ায়-পাড়ায়, ফ্ল্যাটে-ফ্ল্যাটে, বাড়িতে-বাড়িতে এখানে সেখানে যত্রতত্র রংবেরং-এর বেলুন, আলোর রোশনাই, আতসবাজির ঝিলিক, শব্দবাজির ধামাকার মাঝে কেক, প্যাষ্টির বাহার, রঙ্গিন পানীয়ের ছররা, পোলাও বিরিয়ানি বা পরোটা সাথে কালারফুল মুর্গমুসল্লমের এলাহি পরিবেশনার মাঝে কোথায় যে হারিয়ে গেল নোটবন্দীর মৃত্যু যন্ত্রণা, কোথায় যে ভ্যানিস 'য়ে গেল টাকার অভাব-অভিযোগ----- টিভির পর্দায়, আমার শহর, পাড়া, বাড়ির আশেপাশে এসব দেখতে দেখতে হতভম্ব আমি তাই ভুলে গেলাম, কনফিউজড 'য়ে গেলাম সবাইকে শুভ নববর্ষ বা হ্যাপি নিউ ইয়ার জানাতে!!!!!!!!!! টাকার তীব্র অভাবের মাঝে শুভ নববর্ষের নামে এতসব চরম সীমাহীন বিলাসিতা কি 'রে সম্ভব!!!!!!!!!!!!!! নব বর্ষের হাত 'রে কি রূপকথার আলাদিন নেবে এলো দেশের গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-নগরের বুকে মুক্তির দিশারী 'য়ে?????? বাস্তবতা বোঝার ক্ষমতা হারিয়ে তাই বিহ্বল আমি আজ দুঃখিত বন্ধু! আমি দুঃখিত শুভ নববর্ষ জানাতে!!!!!!!!