সেই ট্রাডিশন আজও সমানে চলেছে।
সে আজ অনেক বছর আগের কথা। ১৯৬৯ পরবর্তী। বর্তমান সঙ্গীত ধারার বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখা লেখকের আর্টিকেলের বিরুদ্ধে সেই আর্টিকেলের প্রয়োজনীয়তা ও যৌক্তিকতা নিয়ে বিশ্লেষণ মূলক প্রশ্ন তোলার জন্য যে বা যারা আমাকে গালাগালি করেছে তাদের কমেন্টে তখন সম্ভবত তারা জন্মায়নি। তার মধ্যে একজন বাচ্চা গুরুভাই সীমা ছাড়িয়ে গেছে। তাই যে বা যারা আমাকে কটুক্তি করেছে তারা জানে না সেই সময় কত সামান্য সামান্য ছোটো ছোটো ইস্যুকে বড় ক'রে বিরোধীরা শ্রীশ্রীবড়দার বিরুদ্ধে ছক সাজিয়েছিল। আর সেই ছক ১৯৬৯ এর আগে থেকেই সাজানো শুরু হ'য়ে গেছিল। শুধু সময়ের অপেক্ষা। আর সেই অপেক্ষার অবসান হয়েছিল ঠাকুর দেহ রাখার সঙ্গে সঙ্গেই। সেই ঠাকুর পরবর্তী শ্রীশ্রীবড়দার আচার্য পদে অভিষিক্ত হওয়ার পর থেকে। এক গুরু ভাইয়ের আমার এর আগের লেখায় আমাকে কটাক্ষ ক'রে বলা "নেই কাজ তো খৈ ভাজ"-র মত সেদিনও শ্রীশ্রীবড়দাকে নিয়ে খৈ ভাজা হয়েছিল বড়দা বিরোধীদের দ্বারা যা আজও হ'য়ে চলেছে। আমাকে কটাক্ষ করা সেই মন্তব্যের উত্তরে আমি বলতে চাই যে আমি কিন্তু খৈ ভাজিনি প্রকাশ্যে ফেসবুকের মত স্ট্রং মিডিয়ায় বর্তমান সৎসঙ্গ সঙ্গীত ধারার বিরুদ্ধে। খৈ ভেজেছিল একজন সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ গুরুভাই। বর্তমান সৎসঙ্গ সঙ্গীত সংক্রান্ত বিরুদ্ধ মনোভাবের যে খই ভাজা হয়েছিল এক গুরুভাইয়ের দ্বারা ফেসবুকে সেই ভাজা খৈয়ের বিরুদ্ধে অকারণ অহেতুক খৈ ভাজার প্রয়োজনীয়তা ও যৌক্তিকতার প্রশ্নে খৈ রূপ শব্দ ভাজার লেখকের কাছে তার লেখার প্রতিটি লাইনের বিশ্লেষণ তুলে ধ'রেছিলাম মাত্র। আর তার পরিপ্রেক্ষিতে লেখকের দিক থেকে এবং তার অনুগামীদের দিক থেকে ছুটে এসেছিল কটুক্তির অগ্নিবাণ। সবার সব সঙ্গীত ভালো না লাগতেই পারে। ভালো লাগা আর না লাগা ব্যক্তি নির্ভর। কিন্তু তা নিয়ে অর্থাৎ সেই ব্যক্তি বিশেষের ভালো না লাগার ছোট্ট ইস্যুকে বিরাট ইস্যু বানিয়ে হাওয়া গরম করার জন্য ফেসবুকের মত স্ট্রং মিডিয়ার ময়দানে নেবে পড়া অপরাধ, অযৌক্তিক, সঙ্ঘ বিরুদ্ধ ব'লে মনে হয়নি সেই আমাকে ' কাজ নেই তো খই ভাজ' ব'লে কটাক্ষ করা গুরুভাইয়ের। আমাকে কটাক্ষ ক'রে কমেন্ট করা সেই গুরুভাই আরও লিখেছিলেন "ছোটো ছোটো ইস্যুকে বিরাট ক'রে দেখানো হচ্ছে।" বর্তমান সঙ্গীত ধারার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তোলা সেই সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ গুরুভাইয়ের ভূমিকা তার কাছে বিরাট ইস্যু ব'লে মনে হয়নি। সেটা তার কাছে ছোটো ইস্যু মনে হয়েছে আর সেই লেখকের ফেসবুকে লেখা আর্টিকেলে বর্তমান সৎসঙ্গ সঙ্গীত ধারার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তোলার অকারণ প্রয়োজনীয়তা ও যৌক্তিকতা নিয়ে বিশ্লেষণ ক'রে আমার লেখাকে মনে হয়েছে তার বিরাট ইস্যু। তাই আমাকে কটাক্ষ ক'রে আমার লেখায় মন্তব্য করা "কাজ নেই তো খই ভাজ" বলা তার কাছে ঠিক মনে হয়েছে। সেদিনও সেই ১৯৬৯ পরবর্তী সময়ে শ্রীশ্রীবড়দা গৃহীত ছোটো ছোটো নন ইস্যুগুলিকে নিয়ে বেছে বেছে ঠাকুরের বাণীর সাহায্য নিয়ে বিরাট ইস্যু ক'রে তোলা হয়েছিল। সেদিনও শ্রীশ্রীবড়দা বিরোধীদের এবং বিরোধীদের অনুগামীদের বড়দার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অকারণ বিরাট ক'রে তোলা ছোট্ট ইস্যুগুলিকে ছোটো ব'লে মনে হয়নি বরং শ্রীশ্রীবড়দার গৃহীত পদক্ষেপকে সেদিন ছোট্ট ইস্যুর পরিবর্তে বিরাট ইস্যু ক'রে তোলা হয়েছিল। যা আজও শ্রীশ্রীবড়দা পরবর্তী শ্রীশ্রীদাদার সময়ে ভয়ংকরভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে এবং দেশ বিদেশে যা আজ ব্যাধির মত ছড়িয়ে পড়েছে। সেদিনও যারা শ্রীশ্রীবড়দা গৃহীত ছোটো ছোটো নন ইস্যুগুলিকে বিরাট ইস্যু ক'রে তুলেছিল তারা সবাই ছিল পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুরের সোনার সৎসঙ্গী। 'সোনার সৎসঙ্গী' কথা শ্রীশ্রীঠাকুর মুখনিঃসৃত। সেই সোনার সৎসঙ্গীরাই সেদিন ছোটো ছোটো নন ইস্যুগুলিকে বিরাট ক'রে তুলে ধ'রে ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে শ্রীশ্রীবড়দাকে অস্থির ক'রে তুলে কোণঠাসা করার খেলায় মেতে উঠেছিল শ্রীশ্রীঠাকুর থাকতেই এবং শ্রীশ্রীঠাকুরকে তার শেষ দিনগুলিতে কঠিন যন্ত্রণা আঘাত দিয়েছিল। পরবর্তী দীর্ঘ সময় শ্রীশ্রীবড়দাকে তার শেষ দিন পর্যন্ত কি অসহনীয় কষ্ট যন্ত্রণা দিয়েছিল এই সোনার সৎসঙ্গীরা তা পুরনো সৎসঙ্গী মাত্রেই জানে। আজকের অতি উৎসাহী ইয়ং সৎসঙ্গীরা তা জানে না। আজকের মত সেদিনও সেই সময়ের বিরোধী সৎসঙ্গীদের কাছে শ্রীশ্রীবড়দা গৃহীত সেই সমস্ত ছোটো ছোটো নন ইস্যুগুলি সলিড যুক্তিপূর্ণ বিরাট ইস্যু ছিল যা তাদের মতে কখনোই অগ্রাহ্য করা যায় না। এবং এর প্রতিবাদ করা উচিত। এবং তীব্র প্রতিবাদ ক'রে ছিল এবং আজও করে চলেছে। সবাই স্বাধীন। সবার বাক স্বাধীনতা আছে। প্রতিবাদ করতেই পারে যেমন আজও সৎসঙ্গের সঙ্গীত ধারার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে ও হ'য়ে চলেছে। কিন্তু সেই অকারণ অহেতুক ছোট্টো ইস্যুকে নিয়ে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বিরাট ইস্যু ক'রে তুলে ধ'রে যে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে সেই প্রতিবাদের বিষ পরিণতি ধীরে ধীরে সঞ্চারিত হ'য়ে সৎসঙ্গ মিশনের কি ভয়ংকর ক্ষতি করতে পারে আগামীতে তার তিল সমান ধারণা করার শক্তি আজকের প্রতিবাদীদের ও প্রতিবাদীদের অনুগামীদের নেই। সম্ভবত সাধারণ সৎসঙ্গীদেরও এই বিরুদ্ধ প্রচারের ভবিষ্যৎ কত খারাপ হ'তে পারে তা ধারণা করার শক্তিও নেই। সেদিন শ্রীশ্রীবড়দা মুখ বন্ধ রেখে সব সহ্য করেছিলেন। যে সহ্য করার ট্রাডিশন শ্রীশ্রীদাদা থেকে শুরু ক'রে আজ বর্তমান আচার্যদেবের মধ্যে প্রতিফলিত হ'য়ে শ্রীশ্রীঅবিনদাদার মধ্যে সঞ্চারিত হ'য়ে চলেছে। সঞ্চারিত হ'য়ে চলেছে চুপ থেকে সক্রিয় কর্ম করার রীতি। সঞ্চারিত হ'য়ে চলেছে শ্রীশ্রীঠাকুরের সত্যানুসরণ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ ক'রে যাওয়া বাণী "যে করে বেশী বলে কম সেই প্রথম শ্রেণীর কর্মী"-র নীতি। আর সবশেষে শুধু এটুকুই বলতে পারি শ্রীশ্রীঠাকুর স্পষ্ট ক'রে ব'লে দিয়েছেন, " তুমি যা করছো বা ক'রে রেখেছো ভগবান তাই-ই গ্রাহ্য করবেন আর সেগুলির ফলও পাবে ঠিক তেমনি।"-----------প্রবি।(লেখা ৬ই সেপ্টেম্বর'২০২২)
No comments:
Post a Comment