Powered By Blogger

Tuesday, February 22, 2022

প্রবন্ধঃ সুপ্রিমকোর্ট বনাম শাহীনবাগ অসহযোগ আন্দোলন!

(প্রকাশ, ২২শে ফেব্রুয়ারী'২০)

দিল্লির শাহীনবাগের জনবহুল রাস্তা আটকে সিএএ ও এন আর সি বিরোধী আন্দোলন আজ দু'মাসের উপর চলছে। রাস্তা আটকে আন্দোলনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট ইমিডিয়েট রায় দেয়; রায় দেয় অবরোধ তুলে ফেলার। কিন্তু আন্দোলনকারীরা এতটাই উদ্ধত তারা দেশের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রায়কে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিতে দ্বিধা করেনি, করেনা! 


আমার দেশে আমার সুপ্রীমকোর্টের বিরুদ্ধে এমন আচরণ স্বপ্নেও ভাবেনি আমার দেশের মানুষ! যা কিনা পাকিস্তানের মাটিতে জন্মলগ্ন থেকে বাসা বেঁধেছিল! সুপ্রিমকোর্টকে আজ নপুংসক বানিয়ে ছাড়ছে কে বা কারা! সুপ্রিমকোর্ট অবমাননার বিরুদ্ধে সময় থাকতে সচেতন মানুষ ঘুম ভেঙে উঠুন! 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতা শেষে নাবিয়ে নিয়ে আসবে একদিন ভয়ঙ্কর শয়তানের হামলা! সেদিন আফসোসের শেষ থাকবে না। আগামী প্রজন্মকে ধ্বংসের খাদের কিনারায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করাচ্ছে যারা তাদের বিরুদ্ধে আজকের সচেতন প্রজন্ম ও প্রবীণ নাগরিকবৃন্দ ঘুম ভেঙে জেগে উঠুন। নীরব দর্শক সেজে আগামী প্রজন্মের কাছে অপরাধী হ'য়ে বেঁচে থাকার চেয়ে আজই নেবে আসুক মহাপ্রলয়! শেষ হ'য়ে যাক একসঙ্গে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। 


সেদিন দেশকে স্বাধীন করবার জন্য ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যে 'Non Co-operation movement (অসহযোগ আন্দোলন)-এর বীজ বপন করেছিলেন মহান কর্মযজ্ঞ-এর নিদর্শন হিসাবে মহাত্মা গান্ধী তার ফলস্বরূপ আজ রাজ্যে রাজ্যে, জেলায় জেলায়, ঘরে ঘরে অসহযোগিতার দামামা বেজে চলেছে! অফিসে-কাছাড়িতে, স্কুলে-কলেজে, দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠানে, মাঠে-ঘাটে সর্বত্র আজ পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে চলছে অসহযোগিতা! কেউ কাউকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় না! প্রায় প্রত্যেকের মধ্যে '--------মারাক, ঘটি হারাক, আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' ঘৃণ্য মানসিকতা! একটা পরশ্রীকাতরতার বিষাক্ত হাওয়া তীব্র বেগে ব'য়ে চলেছে ভারতের আকাশে-বাতাসে! আর পশ্চিমবঙ্গের কথা যত না বলা যায় ততই ভালো! যেদিকে যাই আর তাকাই শুধুই অসহযোগিতার বাতাবরণ! আজ থেকে ৯৬ বছর আগে যুগপুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের সঙ্গে মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন নিয়ে আলাপচারিতায় অসহযোগের ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে বলেছিলেন, "ব্রিটিশ চলে গেলেও এই অসহযোগ কিন্তু রাজপথ থেকে একেবারে রান্নাঘর পর্যন্ত পৌঁছে যাবিনি!" আজ দিনের  প্রখর সূর্যের আলোর মত সত্য হ'য়ে উঠেছে সত্যদ্রষ্টা যুগপুরুষোত্তম নররূপী নারায়ণ জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সেদিনের ভবিষৎ বাণী! আজ সত্যি সত্যি রাস্তার নোংরার মত অসহযোগ রাজপথ থেকে রান্নাঘরে এসে ঢুকে পড়েছে! বিষাক্ত ক'রে দিয়েছে রান্নাঘরের রান্নার পরিবেশ! আর সেই রান্নাঘরের রান্না খেয়ে আমরা শরীরে-মনে-আত্মায় ব'য়ে বেড়াচ্ছি সেই অসহযোগিতার বিষবাষ্প স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও প্রজন্মের পর প্রজন্ম আর ব'য়ে বেড়াবো জাতির পিতার পুঁতে যাওয়া অমৃতবৃক্ষের ফল খেতে খেতে!!!!!!!


সেদিন জাতির পিতা(?) মহাত্মা গান্ধী দেশকে স্বাধীন করার জন্য যে অসহযোগিতার পথের উপর দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দেশকে সেইদিন সেই পথ আগামীতে কি ভয়ঙ্কর উপহার নিয়ে হাজির হবে দেশবাসীর কাছে তা তিনি তাঁর দূরদৃষ্টি দিয়ে অনুধাবন করতে পারেননি, যেমন পারেননি নেতাজী তাঁর ও তাঁর বিশাল ব্যাপক কর্মকান্ডের পরিণতি কি হতে পারে! আর তার কুফল ভোগ করছে আজ দেশবাসী আর সুফল ভোগ করছে আজকের ভারতের দূরদৃষ্টিহীন সবজান্তা উদ্ধত উচ্শৃঙ্খল-বিশৃঙ্খল বৃত্তি-প্রবৃত্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত পথপ্রদর্শক তথা সব ক্ষেত্রের অগ্রণী মানব সমাজ। ঠিক তেমনি আজকের শাহীনবাগ দেশের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল আর দেশ চুপ! চুপ দেশের এলিট সম্প্রদায়! দেশের নেতৃবৃন্দ যার যার ভেস্টেড ইন্টারেস্টে আকণ্ঠ ডুবে রয়েছে! কিন্তু দেশে কি কোনও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সৎ সমাজ সচেতন মানব নেই যে বা যারা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিশ্চিত ভয়ঙ্কর ধ্বংস থেকে বাঁচাতে পারে!? কেন কোনও নাটক, গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস রচিত হয় না, আঁকা হয় না ছবি, তৈরি হয় না কোনও চলচিত্র!?!?!? মহাভারত কি ফিরে ফিরে আসে!? দুর্যোধন, দুঃশাসনরা কি চিরকাল রাজসভা আলোকিত ক'রে রাখে!? সমাজ, দেশ, সভ্যতাকে নিয়ন্ত্রন ও পরিচালনা করে!? ভীষ্মরা কি চিরকাল ঠুঁটো জগন্নাথ হ'য়ে বসে থাকবে আর চুপ ক'রে দেখবে আগামী ধ্বংসের বীজ বপন!? এমন 'কর্মনাই চিন্তাসৎ' মহান  ভীষ্মদের, ভুল পথপ্রদর্শক মহাত্মাদের কি প্রয়োজন আমাদের মত আনপর গাঁওয়ারের দেশে গাঁওয়ারদের জন্য!?!?!?!

No comments:

Post a Comment