রফিক ভাইকে নিয়ে লেখাটা post করার পর অনেক comments, message যেমন এসেছে তেমন অনেক পরিচিত জনের ফোনও পেয়েছি।
প্রত্যেককেই রফিকের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। অনেকের অনেক প্রশ্নের
উত্তর একসঙ্গে দেবার জন্য এই লেখাটা post করলাম। রফিক ভাই যেটা করেছে সেটা বিবেকের ডাকে
সাড়া দিয়ে করেছে। বিবেকের ডাকে যারা সাড়া দেয় তাঁরা কখনোই প্রচারের জন্য করে না। ইতিহাস
তাই বলে। আর এটা আমার বিলক্ষণ জানার মধ্যেই পড়ে। বিদ্যাসাগর, কর্ণ, তুলসীদাস, কবীর
ইত্যাদি আরো অনেক অনেক মহাপুরুষদের জীবন তাই বলে। এঁরা এঁদের দানের কথা নিজের মুখে
কোনদিনও বলেননি। তাহ’লে আমরা জানলাম কোথা থেকে? এঁরা বলেন না। নিজেদের ঢাক এঁরা
নিজেরা পেটান না। কথায় আছে, “Empty vessels sound much” Too much talk ends in
nothing. “অসারের তর্জন
গর্জনই সার”। কারা নিজেদের ঢাক নিজেরা পেটায় এ-থেকে তা বোঝা যায়। কিন্তু রফিকরা তো
এর বিপরীত তাই যাদের জন্য রফিকের মত মানুষেরা করেন তাদেরই দায়িত্ব, সামাজিক
দায়িত্ব থেকে যায় এঁদের কথা সমাজের কাছে তুলে ধরার। এঁরা খুশি বা অখুশি হবেন কিনা
সেদিকে তাকিয়ে সামাজিক দায়বদ্ধ মানুষেরা সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে সত্য প্রচারে
পিছিয়ে আসেন না কিম্বা এঁদের খুশি করার
জন্যও সামাজিক দায়বদ্ধ মানুষেরা কোনও প্রচারে লিপ্ত হন না। সামাজিক দায়িত্ববোধ,
কর্তব্যবোধ থেকেই এঁরা এই সমস্ত মহৎ মানুষদের জন্য যা করার করেন। এঁদের জীবনের কথা
প্রচার নাহ’লে মানুষ সমাজের জন্য, মানুষের জন্য বা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ভাল কাজ
করার উৎসাহ, প্রেরণা পাবে কোথা থেকে? আর বন্ধুরা আমার আমি তো সমাজের জন্য, মানুষের
জন্য তেমন কোনো ভাল কাজ করতে পারিনি কিছু না’হয় রফিক ভাইয়ের কথা কিছুটা প্রচার
ক’রে কিছু না’ করতে পারার গ্লানিটা পুষিয়ে নিলাম! এঁদের মতো মহান মানুষদের মঙ্গল
যজ্ঞে না’হয় জীবন দেবতা প্রভু রামের সেতুবন্ধন কাজে কাঠবিড়ালির ভুমিকার মত আমিও
সামান্য ভুমিকা পালন করলাম! আজকের অসভ্যতার যুগে কেউ কারও ঢাক পেটানো তো দুরের কথা
কারো প্রশংসাজনক কাজকে কবরস্থ করতে বা করাতে তৎপর তীব্র ষষ্ট রিপুজ্বরে
আক্রান্তরা। আর রফিক ভাইয়ের মতো মানুষেরা যেমন কাউকে বলেন না নিজের ভালো কাজের
প্রশংসা বা প্রচার করতে ঠিক তেমনি কেউ যদি স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তাঁর ভালো কাজের
প্রচার করে তা’তে তাঁরা অখুশি বা রুষ্ট হন না, এ আমার গভীর বিশ্বাস। প্রত্যেকেই নিজের
ভালোকাজের জন্য প্রশংসা শুনতে ভালোবাসেন। এটা স্বাভাবিক ও স্বতঃসিদ্ধ। ব্রিটিশরা
দু’শো বছর রাজত্ব করে গেছে এ-দেশটাতে। আমরা গোলামী করেছি দু’শো বছর। তাই তাদের ছেড়ে যাওয়া খারাপ জিনিসটাই আমরা
নিয়েছি আর তা’হ’ল divide & rule এবং অন্যান্য আরো অনেক কিছু। কিন্তু ভালোগুলি
নিতে পারিনি। কি কি গুনের অধিকারী হ’লে একটা জাত প্রায় পুরো পৃথিবীটাতেই রাজত্ব
করেছিল তা’ আমরা কোনদিন ভেবে দেখিনি। দেশটাকে স্বাধীন করার নেশাতেই আমরা মেতে
থেকেছি। ভেবে দেখিনি তাঁরা চলে গেলে কাদের ওপর বহু ভাষা, বহু জাতি, বহু সম্প্রদায়,
বহু ধর্ম্ম-এর এতবড় দেশটাকে চালাবার ভার দেবো! ইংরেজদের অনেক গুণের কথা নাইবা
বললাম। অনেক গুণের মধ্যে একটা বড় গুণ ছিল ব্রিটিশদের তা’ হ’ল অন্যের ভালো কাজের
প্রশংসা করা, তারিফ করা, বাহবা দেওয়া, মান্যতা বা স্বীকৃতি দেওয়া। প্রশংসা করা ছিল
তাদের রক্তে! আমরা সেটা তাদের থেকে নিতে পারিনি। বুক বাজিয়ে বলতে পারিনি, তুলে
ধরতে পারিনি সত্যকে সত্য বলে হীনমন্যতা ও পরশ্রীকাতরতার দরুণ। তথাকথিত উদারতার
দোহাই দিয়ে, কথার ঝিকিমিকিতে নিষ্ক্রিয় ভালোমানুষ থাকার মানে রফিক ভাইদের মত
মানুষদের প্রকৃত দাদাগিরি জানতে, চিনতে না দেওয়া এবং পরবর্তীকে, পরবর্তী প্রজন্মকে
তাঁদের মত হ’তে না দেওয়া। রফিকের মত মানুষেরা যা করেছে বা করছে সেটাই তো প্রকৃত
দাদাগিরি! তাই না?
ফেসবুক বন্ধুরা আমার তাই আসুন এবং এসো আমরা
সবাই মিলে এই দাদাগিরি কথা তুলে ধরি, পৌঁছে দিই ঘরে ঘরে। সমস্বরে বলি রফিক ভাই দেশ
তোমায় যা দিয়েছে, দেশের মানুষ তোমায় যা দিয়েছে, ভগবান বা আল্লা তোমায় যা দিয়েছেন
তুমি ফিরিয়ে দিয়েছো তা’ তোমার দেশকে, তোমার দেশের মানুষকে। দেখিয়েছো প্রকৃত
দাদাগিরি! তোমায় দেখে প্রেরণা পেয়ে এগিয়ে আসুক অন্য আরো সবাই। তুমি বাংলাদেশের
রত্ন! দেশ তোমায় ‘বাংলাদেশ রত্ন’ উপাধি দিক না দিক তুমি আমাদের কাছে ‘বাংলাদেশ
রত্ন’!!
Thank you for this post.
ReplyDelete