Powered By Blogger

Sunday, January 12, 2020

নেগেটিভ ও পজেটিভ!

নেগেটিভ নেগেটিভ আর পজিটিভ পজিটিভ আর একই সঙ্গে কুৎসিত কুৎসিত আর সুন্দর সুন্দর। নেগেটিভের মধ্যে যেমন পজিটিভ নেই ঠিক তেমনি পজিটিভের মধ্যে নেগেটিভ নেই। একইরকম ভাবে সুন্দরের মাঝে কুৎসিত থাকতে পারে না ঠিক তেমনি কুৎসিতের মাঝে সুন্দরের অবস্থান নেই। আর তাই সেই অযোগ্য ও অপাত্র স্থানে সময় ব্যয় ও পরিশ্রম নিরর্থক। এইখানে ঠাকুরের বাণী স্মরণ করতে পারি। ঠাকুর বলেছেন, " অযোগ্যে ও অপাত্রে করিলে দান, দাতা গ্রহীতা দুইই ম্লান। আসলে আমরা যদি ভেবে দেখি রাবণের ব্যাপারটা তাহ'লে কি  দেখবো? দেখবো, রাবণ জানতেন সীতা স্বয়ং রাম রূপী বিষ্ণুর স্ত্রী তবুও তিনি সেই চরম অন্যায় কাজটা করতে দ্বিধাবোধ করেননি। আর, শিশুপালের মধ্যে কি কোনও সুন্দর খুঁজে পেয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ? তিনি জেনেশুনেই ১০০টা অপরাধ ক্ষমা ক'রে তাকে পরিবর্তনের সুযোগ দিয়েছিলেন,আর সেই সুযোগ দিয়েছিলেন লোকশিক্ষার জন্য। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি শিশুপাল। দুর্যোধনের ক্ষেত্রেও কি তাই হয়নি? অনেকবার যুদ্ধ আটকাবার জন্য শ্রীকৃষ্ণ চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি যুদ্ধের আগের মুহূর্তেও তিনি পাঁচ ভাইয়ের জন্য পাঁচটা গ্রাম চেয়েছিলেন কিন্তু চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী। দুর্যোধন তার উত্তরে কি ঔদ্ধত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন তা সবারই জানা। স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণকে জীবন্ত নারায়ণ জানা সত্ত্বেও শ্রীকৃষ্ণের মুখের ওপর বলতে দ্বিধা করেনি দুর্যোধন যে, "বিনা যুদ্ধে নাহি দিবো সুচাগ্র মেদিনি।" আর তখনই শ্রীকৃষ্ণ তাঁর পাঞ্চজন্য শঙ্খে ফুঁ দিয়েছিলেন যুদ্ধ শুরু করার জন্য। আর এই পাঞ্চজন্য বাজাবার আগে কি বলেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ, জানেন কেউ? কি বলেছিলেন এই কথা গীতায় বা কোথাও লেখা নেই। গভীর নিস্তব্ধতার অন্তরের অন্তস্থলে ডুব দিয়ে কান পাতলে আজও খুব সুক্ষভাবে শুনতে পাওয়া যাবে তিনি গভীর বিতৃষ্ণায় ক্ষোভে বিরক্তিতে ব'লে উঠেছিলেন, 'তবে তাই হ'ক চার অক্ষর'। Don't take it otherwise. It is my, only my realization. জুডাসকে কি বলবেন? প্রভু যীশুকে হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের প্রধান সহযোগী ছিলেন এই জুডাস। আপনারা বন্ধুরা দেখুন, হজরতের বেলায় কি ঘটেছিল। কুরাইশরা তাঁকে সমাজে একঘরে ক'রে দিয়েছিলেন ও অবরুদ্ধ ক'রে রেখেছিলেন। ইসলাম প্রচারে ইটের আঘাতে ভয়ঙ্গকরভাবে রক্তাক্ত হন তিনি এবং অনেকবার তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এমনকি কুরাইশরা যখন তাঁর সঙ্গে আপোষ করার চেষ্টা করেন তখন প্রভু মহম্মদ কিন্তু তাঁর আদর্শের জন্য তা মেনে নেয়নি, তাঁর আদর্শকে ঘায়েল ক'রে চুক্তির মাধ্যমে কোনও রফা করেননি। রামকৃষ্ণকে পাগল বলতে মানুষ দ্বিধা করতো না। আর ঠাকুরের জীবদ্দশায় ঠাকুর কি কষ্ট পেয়েছিলেন, ঠাকুরের আশ্রমের উপর কি নির্মম, নিষঠুর অত্যাচার হয়েছিল সে সব দুঃখের কথা অনেকেই জানেন।

তাই বলছিলাম, নেগেটিভ নিংড়ে পজিটিভ কিছু পাবো না আর পজিটিভ নিংড়েও নেগেটিভ কিছুই পাবো না। নেগেটিভ ও পজিটিভ সবটাই ঐ বায়োলজিক্যাল ব্যাপার। যেমন, শিশুপাল, দুর্যোধন, দুঃশাসন, জুডাস, কুরাইশ ইত্যাদি ইত্যাদিরা এরা বায়োলজিক্যালি নেগেটিভ এদের মধ্যে থেকে নিংড়ে পজিটিভ কিছুই পাবো না; ঠিক তেমনি রত্নাকর, দস্যু সল, জগাই মাধাই, অশোক ইত্যাদি ইত্যাদি এরা বায়োলজিক্যালি পজিটিভ; পরিবেশগত কারণে এদের মধ্যে সাময়িক নেগেটিভিটির প্রকাশ দেখা গিয়েছিল কিন্তু উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত পরিবেশে অরিজিন্যাল বায়োলজিক্যাল মেক আপের উত্তরণ ঘটে। তাই ব্যাপারটা ঠাকুরের কথা অনুযায়ী শুধু Generous pose অর্থাৎ উদারতার ভঙ্গী নিয়ে সবটা দেখলে চলবে না। দেখবার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে চার আল দেখে চলছি কিনা; বাস্তবের মাটি থেকে যেন পা উঠে না যায়। জয়গুরু।

No comments:

Post a Comment