Powered By Blogger

Sunday, July 12, 2020

প্রবন্ধঃ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও ফেসবুকে বাঙালি (১)।

ফেসবুকে কত কিছুই দেখি। দেখি নানা মানুষের মুখ। বাচ্চাবুড়ো, যুবকযুবতী নানা নারীপুরুষের মুখ! দেখি প্রকৃতির নানা সুন্দর, কুৎসিত, আনন্দ, দুঃখ ভরা, অবাক করা, মজার মজার দৃশ্য! পড়ি কত শত অশ্লীল, সুশ্লীল, দুর্বোধ্য, সহজবোধ্য কবিতা, প্রবন্ধ, ছোট ও অনু গল্প। পড়ি ছোটো ছোটো ইংরেজী বাংলা কোটেশান। পড়ি অনেক কিছুই। ভালো লাগে, আনন্দ পাই। সময় কেটে যায় কোন ফাঁকে, বুঝে ওঠার আগেই দেখি নতুন দিনের শুরু, সূর্য হাসছে পূব আকাশে! আবার কখনো কখনো এমন কিছু পড়ি, এমন কিছু চোখে পড়ে তখন মন ভারাক্রান্ত হ'য়ে পড়ে। কালো মেঘের ফাঁকে আটকে যায় সূর্য! দিন ফুরোবার আগেই নেবে আসে অন্ধকার!

চোখ বন্ধ ক'রে বসে থাকি। চোখের সামনে ভাসতে থাকে মন ভারাক্রান্ত হওয়ার, মন ঝুলে পড়ার, অবসাদে শরীর ভারী হ'য়ে ওঠার লেখাগুলি। লেখাগুলি কখনো অসম্পূর্ণ ও শূন্যতায় ভরপুর, কখনো হতাশাগ্রস্ত দিকশূন্যপুরের নিশানা বহনকারী, কখনো অশ্লীল ও অপমান অশ্রদ্ধাপূর্ণ কুৎসিত ভাষাযুক্ত! দেখি সমাজের ধর্ম, রাজনীতি, শিক্ষা, ক্রীড়া ইত্যাদি বিভিন্ন সম্মানীয় ব্যক্তিত্বদের নিয়ে, প্রাতঃস্মরণীয় মহামানবদের সম্পর্কে, তথা হইতে আগত মহান পুরুষ ইষ্টপ্রতীকে আবির্ভুত পুরুষোত্তমদের সম্পর্কে কটু মন্তব্য ও তাঁদের এডিট করা অশ্লীল ছবি! কখনো কখনো দেবদেবীদের নিয়েও চলে অন্য ধর্মের মানুষের কটূক্তি ও অশ্লীল চিত্র প্রদর্শন।

একটা নিখুঁত ছবি ভেসে ওঠে চোখের সামনে! পৃথিবী যে নিখুঁত লক্ষ্যে অভ্রান্ত নিশানায় এগিয়ে চলেছে ধীর অথচ দৃঢ় পদক্ষেপে ধ্বংসের দিকে, আগামী মানব প্রজাতির বিলুপ্তির দিকে তার স্বচ্ছ ছবি ভেসে ওঠে মন ক্যামেরায়! কষ্ট হয়, একটা যন্ত্রণাময় ঘোর লাগা অবস্থার শিকার হ'ই! আর তখনি মনে ঝড় ওঠে, আর আছড়ে পড়ে মনের তটে! ভিতর থেকে কে যেন ভয়ংকর শব্দে সিংহ গর্জনে হামলে পড়তে চায়! আবার পরমুহূর্তেই মন বলে, ফিরে চলো মন নিজ নিকেতনে!

তাই ফিরে এলাম নিজের নিকেতন অর্থাৎ ঘরে! ফিরবো ঘরে কোথায় এমন ঘর!? নিকেতন অর্থাৎ ঘর সেথায় যেথায় থাকেন স্বয়ং জীবন্ত ঈশ্বর! ঘরে ফিরে বসি শান্ত মনে আর ভাবি মানুষ কেন এমন হয়!? কেন মানুষ মানুষের প্রতি এমন অসভ্যের মত, অমানুষের মত আচরণ করে!? কেন করে!? কোনও কারণ ছাড়া কি ক'রে একজন আরেকজনকে অপমান, অশ্রদ্ধা, অশ্লীল গালাগালি, নিন্দা, কুৎসা করে!? কি ক'রে একজন আরেকজনের সম্পর্কে বিন্দুমাত্র না জেনে, না দেখে, না বুঝে, না শুনে আবার কানে দেখা আর চোখে শোনা মানসিকতায় কটু মন্তব্য করে!? তাহলে কি জন্মগত দোষ নাকি পরিবেশের দোষ!? আরও অবাক হ'য়ে যায় যখন দেখি ঠাকুরের শিষ্য, ঠাকুরের জন্য বুক ফাটছে, ঠাকুর ঠাকুর ক'রে এলাকায় লাফিয়ে বেড়াচ্ছে, জগৎ মাতিয়ে তুলছে আবার পরমুহূর্তেই ঠাকুর পছন্দ করেন না, ঠাকুর দর্শন বিরোধী এমন কথা, ছবি, লেখা ইত্যাদি জিনিসে লাইক দিচ্ছেন, মন্তব্য করছেন, শেয়ার করেছেন, কোমর বেঁধে নেবে পড়ছেন প্রচারের উদ্দেশ্যে!!!!! এর থেকে প্রমাণ হয় ঠাকুর কি পছন্দ করতেন আর করতেন না সে সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধ্যান বা ধারণা নেই!!!!!!! কিংবা জানা থাকলেও চরিত্রে তার প্রতিফলন নেই!!!!!!!

যাই হ'ক এরকম ঘৃণ্য, নিচ, দুর্গন্ধযুক্ত মানসিকতা নিয়ে বিশ্বের সর্বকালের বিস্ময়ের বিস্ময় সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে অশ্লীল পোস্ট চোখে পড়ল! প্রায় সময় ঠাকুর বিরোধী ঘৃণ্য মন্তব্য চোখে পড়ে। আর সেই সমস্ত মন্তব্যের সবাই বাঙালি। দুঃখের বিষয় ঐ সমস্ত অশ্লীল অশ্রাব্য কটু ঘৃণ্য মন্তব্যের মধ্যে নারীরাও ভয়ঙ্কর ভূমিকা পালন ক'রে চলেছেন! এই একটা বিষয়ে নারী আর পুরুষ সমান সমান শুধু নয় অনেক ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষদেরও ছাড়িয়ে গেছে!!!!!!

আসুন একবার দেখে নিই পুরুষ, বিশেষত নারীজাতি ঠাকুরকে নিয়ে কি ধরণের অশ্লীল, অশ্রাব্য মন্তব্য করে, তার ছবিতে কি ধরণের অশ্লীল এডিট করে আর তার উত্তরে উত্তরটাই বা কি!?

আমি যাদের যাদের সঙ্গে ঠাকুর ও তাঁর সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে করা কটূক্তি ও এডিট করা ছবি পোস্ট করা সম্পর্কে আলোচনা করেছি সে সম্পর্কে যতটুকু মনে আছে তা তুলে ধরার চেষ্টা করছি। শুধু তাদের নামগুলো তুলে ধরলাম না তাদের সামাজিক অবস্থান নষ্ট না হওয়ার কারণে। যদিও এইসমস্ত মানুষগুলোর মনে হয়না আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদাবোধ আছে।

ঠাকুরকে নিয়ে একটা ছবি পোস্ট হয়েছে দেখতে পেলাম। সেই ছবিটার শেয়ারের সংখ্যা ইতিমধ্যে প্রায় ৬০০ কাছাকাছি পৌঁছে গেছে এবং সেই ছবি ও ছবিতে যে বক্তব্য লেখা হয়েছে সেই ছবি ও বক্তব্যের সমর্থনে লাইক, ইমোজি ও জবরদস্ত ঘৃণ্য কটু মন্তব্য হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আর সেই লাইক ও মন্তব্যের প্রায় সবাই নারী। আর মন্তব্যের প্রায় সব মন্তব্যই ঠাকুর ও ঠাকুরের সম্পর্কে বিন্দুমাত্র না জেনেই। ছবির বক্তব্য বিষয় ঠাকুর নাকি নারী বিদ্বেষী, নারী বিরোধী! বক্তব্য প্রাণখুলে মনগড়া সাজানো কথায় ভরা! কখনো বা ঠাকুরের বাণী বা বক্তব্যের অন্তর্নিহিত অর্থ না বুঝেই, অনুধাবন না করেই উপরি ভাসাভাসা খুশিমত, নিজের বৃত্তিপ্রবৃত্তিকে খুশি করার তাগিদে ইচ্ছেমত বালখিল্য শব্দ দিয়ে ভরা!!!! আরও আশ্চর্যের বিষয় এরা নারীপুরুষ প্রায় সবাই বাঙালী!!!! এদের মধ্যে অনেক নারী আছে যাদের জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিতে অস্বীকার করে, অনেক আছে বক্তব্যের সত্যতা যাচাই না ক'রেই বক্তব্যের স্বপক্ষে ঠাকুরের বিরুদ্ধে কটু মন্তব্য করার জন্য প্রশ্ন করাতে যুক্তিসঙ্গত উত্তর দিতে না পেরে রেগে গিয়ে আমাকেই কটু কথা শোনাতে দ্বিধা করে না। এর মধ্যে পুরুষরা আবার এই নারীদের সমর্থনে বীরপুঙ্গব সেজে ঢাল হ'য়ে দাঁড়ায় হাসির খোরাক হ'য়ে!!!!

যাই হ'ক ছবিটা ঠাকুরের। আর ঠাকুরকে সবুজ রং দিয়ে পড়ানো হয়েছে ব্লাউজ! আর বক্তব্য ছিল, ঠাকুর নারী বিরোধী! এছাড়া আরো কিছু আপত্তিকর বক্তব্য ছিল ঠাকুরের প্রতিষ্ঠান 'সৎসঙ্গ'-এর বিরুদ্ধে।

সেই ছবি ও বক্তব্য বিষয়ে আমার তাদের কারো কারো সঙ্গে হওয়া আলোচনার বিষয় তুলে ধরলাম। আমার তুলে ধরা উত্তরের মধ্যেই তাদের মন্তব্য কি ছিল তা একটু মন দিয়ে পড়লেই সহজেই পাঠকপাঠিকা বুঝতে পারবে।

এখন আসি তাদের যার যার সঙ্গে আমার ফেসবুকে যে যে আলোচনা হয়েছিল সেই প্রসঙ্গে। একে একে পরবর্তী "শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও ফেসবুকে বাঙ্গালী (২)" লেখায় তুলে ধরছি সেই কথোপকথন।

ক্রমশঃ।

No comments:

Post a Comment