ছবিটি আমি নীচে দিলাম।
যাই হ'ক, আমাদের সৎসঙ্গীদের কি এখনও ভেবে দেখার সময় আসেনি? বছরের পর বছর, বছরের পর বছর ঘরে ঘরে সৎসঙ্গ হ'য়ে চলেছে, প্রতি বছর বিরাট বড় বড় উৎসব হ'য়ে চলেছে, এত মন্দির, এত ঋত্ত্বিক, এত যাজক, এত অধ্বর্যু, পাড়ায় পাড়ায়, রাজ্যে রাজ্যে, দেশে-বিদেশে এত কোটি কোটি সৎসঙ্গী, এত দীক্ষিত তবুও মানুষ এক এবং অদ্বিতীয়ের যে কোনও শরিক নেই, তিনি যে শরিক পছন্দ করেন না সেই সামান্য জ্ঞান্টুকুও নেই। প্রায় প্রতিটি সৎসঙ্গীর ঘরে, এমনকি ঋত্বিক, যাজক, অধ্বর্যুদের ঘরেও শ্রীশ্রীঠাকুরের আসনে বহু দেবদেবীর, বহু মহাপুরুষের ছবি একাসনে বিদ্যমান। ঘরে গৃহপ্রবেশ করার আগে কিংবা কোন শুভ কার্য শুরু করার আগে নারায়ণ পুজো হ'লে এরাই জীবন্ত রক্তমাংসের নারায়ণকে বাদ দিয়ে একটা মেলা থেকে কিনে আনা শিল্পীর আঁকা নারায়ণের ফটোকে বসিয়ে ভক্তি সহকারে সযত্নে নানা উপাচারে পুজো করে। আর কেউ কেউ বা দূরে একপাশে অযত্নে শ্রীশ্রীঠাকুরের ফটো বসিয়ে রাখে 'সাপও মরে লাঠিও না ভাঙে' মানসিকতায়। আবার তারপর এরাই শ্রীশ্রীঠাকুরের উৎসব মঞ্চে দাঁড়িয়ে ও ঘরে ঘরে সৎসঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে জীবন্ত নারায়ণ ব'লে ভাষণ দেয়। এদের দ্বৈত চরিত্রে সাধারণ সৎসঙ্গীরা বিভ্রান্ত এবং এদের থেকেই সাধারণ সৎসঙ্গীরা এই শিক্ষায় শিক্ষিত হয়, ভয়ংকর দূর্বলতার শিকার হয় এবং এই সমস্ত তথাকথিত বক্তা ভক্তেরা হ'য়ে যায় পক্ষান্তরে সাধারণ সৎসঙ্গীদের গুরু, পথপ্রদর্শক আর শ্রীশ্রীঠাকুর হ'য়ে যান বলির পাঁঠা। তখন পঞ্চ ভূতের ফাঁদে পড়ে ব্রহ্মার যেমন অবস্থা হয় তেমনি এইসমস্ত বালখিল্য ভক্তদের মাঝে পড়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের চরম শোচনীয় অবস্থা হয়।
সবাইকে এক আসনে বসিয়ে ঈশ্বরের অপমান অজ্ঞানতার পরিচয়। জীবাত্মা, মহাত্মা আর পরমাত্মার তফাৎ জানা না থাকলে নিজেও মরে, অন্যকেও মারে। পুরুষোত্তম আর সাধক পুরুষ এক নয়। ঈশ্বর আরাধনা ও ঈশ্বর উপলব্ধি জন্ম জন্মান্তরের সংস্কার। সবার জন্য সব বিষয় নয়। যার যতোটুকু জ্ঞান তার ততটুকুই সীমাবদ্ধতা আর তা'তেই সীমাবদ্ধ থাকা ভালো যতক্ষণ না পূর্ণ জ্ঞান হচ্ছে ততক্ষণ এরকম প্রচার না করায় ভালো। আগুন আলো দেয় আবার পুড়িয়ে খাক ক'রে দেয়। না জেনে আগুনে হাত দিলে হাত পোড়ে তা'তে আগুনের কিছু করার থাকে না।
তাই যারা জেনেবুঝে এমন করে, শত বোঝালেও যারা বুঝতে চায় না, নিজের বুদ্ধিতে অটল থাকে, নিজের বুঝ নিয়ে গোঁ ধ'রে বসে থাকে তারা ভয়ংকর অজ্ঞানতা ও দূর্বলতার শিকার তা'তে কোনও সন্দেহ নেই। তাই এদের শ্রীশ্রীঠাকুরের সত্যানুসরণে বলা ধর্মরাজ্যে ঢোকবার অধিকার পর্যন্ত নেই, ঠাকুরের যাজন করা দূরের কথা। এরা নিজেরাও মরে, অন্যকেও মারে, সমাজ, সভ্যতার করে ক্ষয়। এদের অনুসরণ করা, সঙ্গ করা, এদের কথা শোনা সাধারণ সৎসঙ্গীদের কাছে ভয়ানক বিপদের সংকেত। এরা ঝোলের লাউ, অম্বলের কদু। এদের অবস্থান সবেতেই। তাই এরা শ্রীশ্রীঠাকুরের বিরুদ্ধে, শ্রীশ্রীঠাকুরের আত্মজ শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে গত ৫৫ বছর ধ'রে কুৎসা, গালাগালি, নিন্দা, সমালোচনা, অপমান, অশ্রদ্ধার যে ভয়ংকর ঝড় ব'য়ে চলেছে তার বিরুদ্ধে এরা 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতায় অবস্থান করে, শত চড়েও মুখ ফুটে 'রা' কাটে না; উল্টে প্রেম-ভালোবাসার জ্ঞানের বন্যা ছোটায়। নিজের হাতে বিচারের ভার না নেওয়ার ও শ্রীশ্রীঠাকুরের হাতে বিচারের ভার সেই কথা স্মরণ করিয়ে চুপ করিয়ে দিতে চায়। নিজেও কিছু মিষ্টভাষ্যে স্পষ্টবাদী হবে না অন্যকেও হ'তে দেবে না, বাধা
দেবে, প্রয়োজনে বিরুদ্ধে চলে যাবে। আলোচনা করাও যাবে না এরা এত জ্ঞানী, কিছু প্রশ্ন তুলে ধরলেই বিজ্ঞের মতো প্রেমিক প্রেমিকা সেজে প্রেম বিলাতে আসবে আর নিজেদের সীমিত জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করতে আসবে ঠাকুরের বাণীকে হাতিয়ার ক'রে ভুল ব্যাখ্যায়। আবার ঐ সমস্ত নিন্দনীয় পোষ্টে বহু সৎসঙ্গী লাইক আর লাভ সাইনের ও জয়গুরুর বন্যা বইয়ে দেয়। এরা 'সৎসঙ্গ' ও শ্রীশ্রীঠাকুর বিরোধীদের প্রধান শক্তিশালী পৃষ্টপোষক।
তাই, আমার সাধারণ সরল সহজ সৎসঙ্গী গুরুভাইবোন সাবধান। ঘুম ভেঙে জেগে উঠুন, চোখ কান খোলা রাখুন, পড়ুন, জানুন, বুঝুন, খবর রাখুন, বিচার করুন নিরপেক্ষভাবে আপনার প্রিয়পরম রক্ষা করার জন্য।
No comments:
Post a Comment