Powered By Blogger

Tuesday, April 16, 2024

খোলা চিঠি ১ ধনঞ্জয় চন্দ্র দেবনাথকে।

স্বপন রাই পদ্মলোচনের লেখার তীব্র বিরোধিতা ক'রে আপনি আপনার যে মতামত ফেসবুকের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন তা চোখে পড়লো আর সেটা পড়লাম। আপনি স্বপন রাই পদ্মলোচনের লেখাটাও তুলে ধরেছেন সেটাও পড়লাম। আপনি লিখেছেন আপনার লেখার ইচ্ছা ছিল না তবুও আপনি লেখার চেষ্টা করেছেন। কারণ হিসাবে বলেছেন স্বপন রাই পদ্মলোচনের ঐ লেখা ইষ্টস্বার্থ প্রতিষ্ঠার বিরোধী এবং ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠার বিরোধী যা তা দেখে এবং শুনে চুপ ক'রে থাকা অন্যায় হবে ব'লে আপনার মনে হয়েছে তাই ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও আপনি কলম ধরেছেন। আপনার এই অনিচ্ছাকৃত লেখার বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবেই কলম ধরলাম। কারণ ঠাকুরের অঙ্গনে বসে ভাবের ঘরে চুরি করা আর ঘোমটার নীচে খেমটা নাচ দেওয়া আমার রুচি বিরোধী। আপনি একদিকে বলেছেন স্বপন রাই পদ্মলোচন যা লিখেছে সেটা আপনার বোধ অনুযায়ী ইষ্টস্বার্থবিরোধী আর সেখানে প্রতিবাদ না ক'রে চুপ ক'রে থাকা অন্যায় আর যদি তাই হয় তাহ'লে আবার লেখার ইচ্ছা নেই ব'লে ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে বিনয়ের ঢেঁকুর তুলেছেন; কেন? যদি মনে করেন ইষ্টস্বার্থ বিঘ্ন হচ্ছে আর তার জন্য রুখে দাঁড়াবার দরকার তাহ'লে রুখে দাঁড়ান। রুখে দাঁড়ালে হয় বীর বিক্রমে রুখে দাঁড়ান যাতে ঠাকুরের কথা অনুযায়ী "যদি শত্রুতা করতেই হয় তবে প্রচন্ড হতে হবে, যেন শত্রুরও চমক লেগে যায়" আর তা না হ'লে ঠাকুরের কথানুযায়ী "বিচারের ভার, শাস্তির ভার আপন হাতে নিতে যেও না, অন্তরের সহিত পরমপিতার উপর ন্যস্ত করো, ভালো হবে"----দুটোর যে কোনও একটা করুন। ঝোলের লাউ আর অম্বলের কদু হ'য়ে লাভ নেই। আপনি যখন প্রকাশ্যে ফেসবুকের মত স্ট্রং মিডিয়াকে বেছে নিয়েছেন দায়িত্ব নিয়ে ঠাকুর পরিবারের বিরুদ্ধে কুৎসা ক'রে ঘোর কলি যুগে নিজেকে ঠাকুরের মিশন প্রতিষ্ঠার বিরাট সিদ্ধপুরুষ, জ্ঞানীপুরুষ, যোগীপুরুষ ব'লে প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করার তখন দায়িত্ব নিয়েই আপনার ইষ্টপ্রাণতার ভন্ডামির বিরুদ্ধে কলম ধরলাম।
আপনি লিখেছেন আপনার মনে হয় না স্বপন রাই পদ্মলোচন যা লিখেছেন তার জন্য গুরু পরিবার দায়ী। অর্থাৎ আপনার বোধ, বুদ্ধি, জ্ঞান, পান্ডিত্য, জপ, তপ, নামধ্যান এককথায় সাধনার তীব্রতা এত উচ্চমার্গের যে আপনার মুখে ঠাকুর পরিবার দায়ী কি দায়ী নয় এতবড় বিচার বিশ্লেষণ করার শক্তি আপনি অর্জন ক'রে ফেলেছেন!!! আপনার ধৃষ্টতা দেখে অবাক হ'য়ে যায়, অবাক হ'য়ে যায় এত গভীর বোধ শক্তি, তীব্র ইষ্টপ্রাণতা যার সে জানে না "তোর খেয়াতে মাঝিই যে নেই শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর" কথাটা!!!!
আপনি স্বপন রাই পদ্মলোচনের মত আরও দাদাদের ঠাকুরবাড়ির ঠাকুরের আত্মজদের সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য ও সত্য তুলে ধরার জন্য অপরাধের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়ে নিজে বিচারক হ'য়ে বসে তাদের বিচার করছেন আর জুতো মেরে গরু দান করার মত ঠাকুর বাড়ীর দাদাদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার ক'রে মনের ঝাল মেটাচ্ছেন আবার লোক দেখানো ভয়ঙ্কর কপট চরিত্রে দাদাদের উদ্দেশ্যে 'পূজনীয়' শব্দ ব্যবহার করছেন!!!!! বাঃ!!!!! কি অপূর্ব চরিত্র!!!!!!! আপনার বয়স কত জানি না, কবে দীক্ষা নিয়েছেন তাও জানি না, ঠাকুরের লীলাসঙ্গীদের সংগে মেলামেশা দূরের কথা তাঁদের দেখেছেন কিনা জানি না, ঠাকুরবাড়ি জীবনে গেছেন কিনা তাও জানি না, ঠাকুরের আত্মজদের সঙ্গ করা, তাঁদের কথা শোনা তো দূরের কথা তাঁদের চাক্ষুস দেখেছেন কিনা তাও জানি না তবে এটা পরিষ্কার বুঝতে পারছি আপনি বেইমান-অকৃতজ্ঞদের উত্তরসূরি! আপনি লিখেছেন স্বপন রাইদের মত লোকেরা "ঠাকুরকে গৌণ ক'রে অন্য একজনকে মুখ্য ও কেন্দ্র করার জন্য প্রতিদিন এরকম কিছু না কিছু লিখে ভক্তদের অন‍্য এক জগতের সন্ধান দিচ্ছে"। আচ্ছা ধনঞ্জয়বাবু "অন্য একজনকে মুখ্য ও কেন্দ্র করা" বলতে আপনি কার কথা বলতে চেয়েছেন? নামটা বলুন। ঘোমটা পড়ে খেমটা নাচ নাচ্ছেন কেন? ঘোমটা সরিয়ে খেমটা নাচ বন্ধ ক'রে সরাসরি বলুন বাপের বেটার মত নামটা। কে সেই একজন যাকে মুখ্য ও কেন্দ্র ক'রে ঠাকুরকে বাদ দিয়ে, গৌণ ক'রে কোটি কোটি শিষ্য মেতে উঠেছে? আপনিই একমাত্র সচেতন, বুদ্ধিমান, সজাগ, চালাক, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন জ্ঞানী ও যোগী সিদ্ধপুরুষ যিনি সত্য দেখতে পান, জানতে পারেন, বুঝতে পারেন, চিনতে পারেন আর বিশ্ব জুড়ে বাকী কোটি কোটি ঠাকুরের অনুগামী সব চার অক্ষর, গান করে!! তাই না? 'চার অক্ষর আর গান করে' মানে নিশ্চয়ই জানেন কারণ আপনার মত মসিহারা ঠাকুরের মিশন প্রতিষ্ঠার অ্যাসেট, রত্ন, হীরে, জহরৎ!!!!! আপনারাই ভবিষ্যৎ ভয়ঙ্কর পৃথিবীর ঘোর কলি শেষে সত্য যুগ আগমনের রূপকার, স্রষ্টা!!!!!! তাই 'চার অক্ষর আর গান করা' ভক্ত মানে নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন। আপনাকে জানাই সেলাম!!!! জানাই আভূমি প্রণাম হে সত্যদ্রষ্টা ঋষি কলিযুগের ধনঞ্জয়!!!!
আপনি ঠাকুরের পরমপ্রিয় আত্মজ দাদাদের অলৌকিক লীলা ও দয়ার কথা নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন, এতবড় আপনি ঠাকুর প্রেমী!!!!!!!!!! এতবড় আপনার আস্পর্ধা!!!!!! যাঁদের সম্পর্কে ঘৃণ্য কটুক্তি করতে, ব্যঙ্গ করতে আপনার বিবেক বাধা দিল না তাঁদের সম্পর্কে, তাঁদের সাধনলব্ধ ক্ষমতা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জানা আছে আপনার? কতটুকু জানেন আপনি? এত অহঙ্কার!? ঠাকুর পরিবারের শ্রদ্ধাস্পদ ঠাকুরের আত্মজদের প্রতি আপনার এ হেন নীচ, ইতর, নিকৃষ্ট, হীন ও ঘৃণ্য ব্যবহারে সায় আছে আপনার পিতামাতার, আপনার নিকটজনের? আপনার পিতামাতা আপনার মত কৃতঘ্ন সন্তানকে সন্তান ব'লে পরিচয় দেয়? আপনি বা আপনারা তো রত্নাকর দস্যুর চেয়েও ভয়ঙ্কর আর অভাগা। রত্নাকরের আপনজনরা তার কুকর্মের দায় ঘাড়ে নেয়নি। একা হ'য়ে গেছিল রত্নাকর, একথা ভুলে যাবেন না। এমনই ছিল তার প্রিয়জনরা উন্নত চরিত্রের। আশা করি আপনিও শেষের দিনে একা হ'য়ে যাবেন, কেউ থাকবে না পাশে হাতটি ধরার। ঠাকুরের সবচেয়ে প্রিয়, পরমপ্রিয় সৎসঙ্গের চোখের মণি আসমুদ্রহিমাচলব্যাপি সৎসঙ্গীদের প্রিয় বড়দা, এ যুগের হনূমান, নবরুপী বিবেকানন্দ, ঠাকুরের আদরের বড়খোকা শ্রীশ্রীবড়দার বুকে যারা শাবল চালিয়েছিল, যারা অপমান, লাঞ্ছনা, কুৎসা, নিন্দায় ক্রমাগত চরম বিরোধিতা করেছিল তাদেরই উত্তরসূরি আপনি যোগ্য হাতে তাদের সেই কলঙ্কের ব্যাটন হাতে তুলে নিয়েছেন ঠাকুর পরিবারের ঠাকুরের আত্মজদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করার জন্য, কুৎসা, অপমান, লাঞ্ছনা করার জন্যা। ঠাকুর পরিবারের ঠাকুর আত্মজদের প্রতি এত রাগ, এত ঘৃণা, এত হিংসা, এত পরশ্রীকাতরতা!? এত তীব্র ঘৃণ্য সমালোচনা!? এর পরেও আপনি ঠাকুরের সামনে বসেন!? ঠাকুরের গ্রন্থ থেকে ঠাকুরের কথা তুলে ধ'রে মানুষকে ইষ্টপ্রাণতা ও ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠার পাঠ শেখান!? মুখ দিয়ে ইষ্টপ্রাণতা, ইষ্টপ্রতিষ্ঠা ও ইষ্টস্বার্থরক্ষার কথা বলতে গিয়ে হীরে, মণি, মুক্তো বেরিয়ে আসার পরিবর্তে সাপ, ব্যাঙ, ইঁদুর, ছুঁচো বেরিয়ে আসছে খেয়াল করছেন কি? এর পরেও আপনাকে সন্তান পরিচয় দিতে বা অন্য কোনও পরিচয় যদি থেকে থাকে তা দিয়ে নিজেরাও কি কলঙ্কিত হ'য়ে থাকতে চাইবে ইতিহাসের বুকে আপনার পিতামাতা বা প্রিয়জনেরা? ঠাকুরের সামনে বসে একবার ভাবুক কথাগুলি আপনার পিতামাতা বা প্রিয়জনেরা। দেখতে পাবে যদি দেখার অন্তর থাকে, যদি একদিনের জন্যও বা একমুহূর্তের জন্যও ঠাকুরকে ভালোবেসে থাকে তাহ'লে নিশ্চয়ই দেখতে পাবে ঠাকুরের মুখ, সারা শরীর ব্যথায় ব্যাথায় নীল হ'য়ে আছে তাঁর আদরের পরমপ্রিয় আত্মজদের উপর আপনাদের তীব্র কশাঘাতে। আপনি এত বড় সাধক, এত বড় জ্ঞানী, পন্ডিত, এতবড় যোগী, ধ্যানী, গোঁসাই, গোবিন্দ হ'য়ে গেছেন আর আপনি জানেন না ঠাকুরের ঘোড়ার গাড়িতে চড়া ও ঘোড়ার পিঠে চাবুক মারার কাহিনী? জানেন? জানেন কি এর অন্তর্নিহিত রহস্য? যাক গিয়ে আপনার পাঁঠা আপনি ল্যাজে কাটুন, মাথায় কাটুন, সেটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে এটা জেনে রাখুন আপনার বা আপনাদের দ্বারা এ জীবনে আর রত্নাকরের মত প্রায়শ্চিত্ত ক'রে বাল্মিকি হ'য়ে ওঠা আর হবে না। কারণ রত্নাকর দস্যু হ'লে কি হবে বায়োলজিক্যালি তিনি ছিলেন রত্নের আকর! আর আপনি বা আপনাদের গোড়াতেই গলদ। এ জন্মে আর কিছু হবার নেই। এই পাপ রত্নাকরের পাপকে হার মানায় শুধু তাই নয়, এই পাপকে রত্নাকরের পাপও ভয়ঙ্কর ভয় পায়! এ যে ব্রহ্ম হত্যার থেকেও বড় কোনও পাপ থেকে থাকে সেই পাপ!!!!!!! মাথায় সর্পাঘাত!!!!! তাগা বাঁধার কোনও জায়গায়ই নেই। এ যে নষ্ট বীজে নষ্ট চারাগাছ জন্মানোর তত্ত্ব!!!! দেখুন যদি ঠাকুর দয়া করেন, দয়া করেন মূল স্রোতে ফিরে এসে তাঁর আত্মজদের আশীর্বাদে প্রায়শ্চিত্তের যদি কোনও বিধান থেকে থাকে তাহ'লে প্রায়শ্চিত্ত ক'রে জন্মজন্মান্তরের পাপ থেকে মুক্ত হ'য়ে শুদ্ধ হবার, যা আমার জানা নেই।
আচ্ছা, ঠাকুরের সৎসঙ্গের উদ্দেশ্য কি এবং বাস্তবে দয়াল কি চেয়েছিলেন সেটা প্রশ্ন করেছেন আপনার লেখায়। আমি বলি কি প্রশ্ন না ক'রে আপনিই বলুন না সৎসঙ্গের উদ্দেশ্য কি এবং দয়াল বাস্তবে কি চেয়েছিলেন বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি 'চার অক্ষর ও গান করা' ঠাকুরের ভক্তদের। আপনি বা আপনাদের মত মহর্ষি মহাপুরুষরা এদের না ব'লে দিলে এই চার অক্ষর, গান করা ভক্তদের কে বোঝাবে বলুন? কে পথ দেখাবে এই সমস্ত বেকুব বলদদের!? ঠাকুরবাড়ির ঠাকুরের আত্মজ যারা আপনার কথানুযায়ী গুরু ও ইষ্টের শত্রু, তাঁরা? আপনিই শুধু জানেন, আপনিই শুধু বই পড়েন যে ঠাকুর বহু জায়গায় বিভিন্নভাবে ব'লে গেছেন যে "ইষ্টই আমাদের একমাত্র কেন্দ্র ও উপাস্য" কিন্তু একথা বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি বরাহনন্দনরা জানে না। এরা এমনই অন্ধ বরাহনন্দন যে শালা ঠাকুরের কোনও বই টই পড়া তো দূরের কথা চার অক্ষররা কোনও খোঁজই রাখে না। আর চোখে তো পড়বেই না কারণ শালারা তো অন্ধ।
আপনি এত উচ্চমার্গের সাধক পরমভক্ত হনূমান হ'য়ে গেছেন যে, আপনি ঠাকুরের 'আলোচনা প্রসঙ্গে' গ্রন্থের রেফারেন্স তুলে দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে ঠাকুরের আত্মজরা গুরু বা ইষ্টের শত্রু, আর তাঁদের মাথা খারাপ!!!!! বাঃ! বাঃ!! দারুণ!!!!! আপনি সত্যি সত্যিই ইষ্টপ্রাণ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের পরমভক্ত ঘোর কলির কৃষ্ণভক্ত অর্জুন!!!!!
ক্রমশঃ।
( ৪ই এপ্রিল, ২০১৮)

No comments:

Post a Comment