Powered By Blogger

Sunday, April 21, 2024

খোলা চিঠীঃ তুহিন বাবু!

তুহিন বাবু!

কিসের জন্য রুখে দাঁড়াবার ডাক দিল 'রক্তাক্ত বাংলা' ঠিক বুঝতে পারলাম না। ভারত কি সাম্রাজ্যবাদী শক্তি বা দেশ? ভারতের চরিত্রের ইতিহাস কি তাই বলে? ভারতবর্ষ কোনদিনও কি কোন দেশ আক্রমণ করেছে? ভারতের বুকে আবহমান কাল ধ'রে বর্হিশক্তির আক্রমণ কি ভারতের ইতিহাসবিদরা বা মানুষেরা ভুলে গেছেন? ভারতের অন্তরাত্মা কি ম'রে গেছে যে সে তার অতীত গৌরব, ঐশ্বর্য ভুলে সাম্রাজ্যবাদীর ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে? অযৌক্তিক, অনৈতিক, অমানবিক, অন্যায়, অসভ্য, অশালীন, অসৎ দাবী ভারতের জীবন চরিত্রকে কলঙ্কিত করেছে এমন নজীরবিহীন ঘটনা যদি জানা থাকে তাহ'লে জানাবেন, বাধিত থাকব। আর দামাল ছেলের কথা বলা হচ্ছে, তা' দামাল ছেলে মানে কি অশিক্ষিত, অমার্জিত, অনিয়ন্ত্রিত, অদুরদর্শী, অসামাজিক, বোধবুদ্ধি রহিত? দালালদের ওপর নির্ভর ক'রে, ভরসা ক'রে ভারতের মত ঐতিহ্যশালীদেশ, বৃহৎ শক্তি বাংলাদেশের মত ছোট্ট একটা দেশ বা দেশের জমি দখল করার সাহস দেখায় এই যদি ব্যারিষ্টার তুহিনবাবুর জ্ঞান বা যুক্তি হয় তা'হ'লে তুহীনবাবু আপনি জেনে রাখুন এই বালখিল্য জ্ঞান বা যুক্তি দিয়ে আর যাই হোক আপনি দেশ রক্ষার যোগ্য পাহারাদার বা সৈনিক হ'তে পারবেন না। আর যার ওপর বাংলাদেশী ভাই-বোনেরা নির্ভর করুক আপনার মত অদুরদর্শী দেশপ্রেমিকের ওপর নির্ভর করতে পারে না, পারা উচিৎ নয়। দেশ বা দেশের জমি দখল করার জন্য আরও অনেক জটিল ও জন্ডিস ভয়ংকর পন্থা আছে এটা ভুলে যাবেন না, যদি আপনি প্রকৃত দেশপ্রেমিক হ'ন! কারণ সাধারণ মানুষের ধন, মান, প্রাণ রক্ষা করার সামাজিক বিরাট দায়িত্ব কিন্তু আপনাদের মত শিক্ষিত মানুষদের। উলুখাগড়ার মত জনগণের প্রাণ হারাবার দায়িত্ব আপনারা শিক্ষিত মানুষেরা নিশ্চয়ই নেবেন না। আর অবাস্তববাদী হ'য়ে লাভ নেই। মশা হ'য়ে হাতীর সঙ্গে লড়তে যাবার মানসিকতা আর যাই হ'ক সুস্থ মানসিকতা নই, পাগলের প্রলাপ মাত্র! যদি লড়তেই হয় তা'হলে সমশক্তি বা প্রতিপক্ষের চেয়ে বেশী, অধিক বেশী শক্তি অর্জন করতে হবে। তা না-হলে আজ যে ভুত প্রতিবেশী দেশ ভারতের মধ্যে দেখতে পাচ্ছেন, যে দেশ আপনার দেশের জন্য আজও এবং যতদিন চন্দ্র, সুর্য থাকবে ততদিন পর্যন্ত গর্ভযন্ত্রনা অনুভব করে এবং করবে সেই দেশ নয় প্রতিবেশী অন্য দেশ যে দেশের সঙ্গে কোনো জন্মসম্পর্ক নেই সেই দেশের ভুত দেখতে পারবেন আগামীতে। আর এটা স্পষ্ট জেনে রাখুন সেই ভুতকে মাথা থেকে নাবাবার কোন ওঝা পাবেন না পৃথিবীতে। ফিরে আসতে হবে সেই গর্ভধারীনীর কাছে! মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ কোনদিন বায়োলজিক্যালী সমান হয়না! সমানতো দুরের কথা, অবাস্তব কথা; ধারেকাছেও আসতে পারেনা।! সাধু সাবধান! আপনি তো ব্যরিষ্টার! আপনার চেয়ে বলিষ্ট ও নির্ভুল যুক্তি অন্য পেশার সঙ্গে নিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষে সচরাচর সম্ভব না হওয়াই সম্ভব! আর সাধারণ মানুষের কথা না-হয় বাদ-ই দিলাম। আপনাকে সঠিক পথে দেশকে, দেশের মানুষকে পরিচালিত করতে হবে। প্রশ্ন তুলতে হবে দুই দেশের মানুষের সামনে কেন ভারত বাংলাদেশের ভুমি দাবী করার সাহস পেয়েছে? কেন দাবী করছে? দাবী করলেই হ'ল? মগের মুল্লুক না-কি? কি অধিকার আছে ভারতের এই দাবীর পেছনে? আর দাবী করলেই ভারত তা পেয়ে যাবে? ন্যয্য-অন্যয্য দাবী বলে কিছু থাকবেনা।ভারতের বুকে সেই ঐতিহ্যশালী শোণিতধারা কি লুপ্ত হ'য়ে গেছে যে ভারতের এ-হেন অযৌক্তিক অন্যায় (যদি হয়) দাবীর প্রতিবাদে ভারতের অভ্যন্তরে প্রতিবাদ উঠবে না? আন্তর্জাতিক চোখ কি আজ অন্ধ? আর যদি দখলের প্রশ্নই ওঠে সে প্রশ্ন তো অনেক আগেই সেই ১৯৭১ সালেই উঠতে পারতো। যদি ভারত সেদিন ভারতের অধীনেই রেখে দিত বাংলাদেশকে, কি করতে পারতো সেদিনের সেই ভুমিষ্ঠ দেশ বাংলাদেশ? কি করতে পারতো সেদিনের পাকিস্থান? কি করতে পারতো সেদিনের আন্তর্জাতিক শক্তি? বাংলাদেশ তো ভারতেরই অঙ্গ, ভারতেরই গর্ভযন্ত্রণা! মা-ছেলের না-হয় আবার মিলন হ'ত? বিবেকে হাত দিয়ে বলুন তো সেই সম্পর্ক, সেই বিচ্ছেদ আদৌ বুকের মধ্যে সামান্যতম ব্যাথা তোলে কিনা? ব্রিটিশের Divide & Rule-এর বিষাক্ত বিষ আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বইছে এ-কথা কি অস্বীকার করতে পারি? সেই সময়ের ইতিহাস, সেই সময়ের ছবি, সেই বিন্দাস করায়ত্তের সুযোগ, দখলের সুযোগ যা ইচ্ছে করলেই নিতে পারতো ভারত ,তা কি ভুলে গেছে উভয় দেশের মানুষ !? তাহ'লে আজ এই প্রশ্ন এত উঠছে কেন?????? কে তুলছে? কারা তুলছে?? কেন তুলছে?? কিভাবে তুলছে?? কোন এঙ্গেল থেকে তুলছে?? এর পেছনের দুরভিসন্ধি কি? কে বা কারা এর নায়ক? এখনতো বাংলাদেশের অবস্থান দেখে মনে হচ্ছে, British ভালই করেছিল দেশটাকে ভাগ ক'রে দিয়ে, ভালোই করেছিল বাংলাকে তখন টুকরো করে দিয়ে পাকিস্থানের সঙ্গে যুক্ত করে দিয়ে আর ভারত ভুল করেছিল সন্তানের লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, অপমান, অত্যাচার, মৃত্যু, ইজ্জত ও সতীত্ব হরণ সহ্য না ক'রে। তা না-হ'লে তো আজকের বাংলাদেশের জন্ম হ'ত না! আর জন্ম না হ'লে আজকের ভারত বিদ্বেষের জন্ম হ'ত না। এটা চিরন্তন সত্য যে, নাড়ীর টান, নাড়ী ছেঁড়ার যন্ত্রণা মায়ের-ই, তা সন্তানের নয়।
No photo description available.

No comments:

Post a Comment