Powered By Blogger

Saturday, April 6, 2024

প্রতিবেদনঃ একাডেমিক মিট ও শ্রীশ্রীঅবিনদাদা।

গত ৮ জুলাই'২৩ শনিবার পরম পূজ্যপাদ শ্রী শ্রীআচার্য্যদেবের আশীর্বাদে ও পরম পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীঅবিনদাদার নির্দেশে দেওঘরে সৎসঙ্গে আয়োজিত একাডেমিক মিট-এ ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু প্রফেসর, স্কলার ও ছাত্র উপস্থিত ছিলেন।

এই মিটে আমার ব্যক্তিগত উপলব্ধি শ্রীশ্রীঠাকুর তাঁর সমগ্র জীবনে যা যা ব'লে গেছেন তাঁর হাজার হাজার বাণী ও কথোপকথন সম্বলিত নানা গ্রন্থে তা ইমপ্লিমেনটেশনের সময় শুরু হ'য়ে গেছে। এই ইমপ্লিমেনটেশনের অর্থাৎ বাস্তবায়নের যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তা প্রমাণ ক'রে শ্রীশ্রীঠাকুরের কথাঃ "আমার সৎসঙ্গের প্রকৃত আন্দোলন বাংলার বুক থেকে হবে না। হবে বাংলার বাইরে থেকে।"
তারই প্রমাণ পেলাম এবারে একাডেমিক মিটে। বাংলার বাইরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে কত অন্য ভাষাভাষীর ছেলেমেয়েরা যে এসেছে শ্রীশ্রীঅবিনদাদার ডাকে তা ভাবা যায় না; অবাক ক'রে দিল আমাকে!!!

মাত্র অল্প কিছু সময়ের জন্য বক্তব্য রাখলেন শ্রীশ্রীঅবিনদাদা। আসাম, ত্রিপুরা আর উড়িষ্যা ও অন্যান্য রাজ্য থেকে আসা ছেলেমেয়েদের উদ্দেশ্যে অবিনদাদার ১০মিনিটের ভাষণ হৃদয় মাঝে ঝড় তুলে দিল। একাডেমিক মিটের কি উদ্দেশ্য ও কি করণীয় তা সংক্ষেপে জানিয়ে ও বুঝিয়ে দিলেন সহজ সরল ভাবে হিন্দিতে।
কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা শুধু জ্ঞানগর্ভ ভাষণ আর নীতিকথার কচকচানিতে অভ্যস্ত বাঙ্গালীর বোধহয় এই সংক্ষিপ্ত ভাষণে মন ভরলো না। কি করা যাবে আর কথার স্রোতে ভাসা বাংগালীর। করার স্রোতে ভাসা অন্য রাজ্যের ছেলেমেয়ের তুলনায় কথার স্রোতে ভাসা বাগ্মীপ্রবর বাঙালি ছেলেমেয়েদের তাদের পূর্বপুরুষের কথার কচকচানির ঐতিহ্য ভোলা কি এতই সহ্জ? তার ওপর প্রতিদিন রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের মঞ্চ জুড়ে দাপাদাপি আর কথার বোমা ফাটানো দেখে দেখে নিজের অজান্তেই বাংলার বর্তমান প্রজন্ম জেনে গেছে, বুঝে গেছে সার কথা যে এ রাজ্যের জনগণ কথার স্রোতে ভেসে যাওয়াতেই আনন্দ পায়, করার স্রোতে সাঁতার কাটতে গেলেই সলিল সমাধি।
তাই বাংলার মহাজ্ঞানী মহাজন যে পথে করে গমন সেই পথেই চলতে চায় বাংলার বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা। ঘন্টার পর ঘন্টা নেতানেত্রীদের মঞ্চের ওপর দাঁড়িয়ে তাল জ্ঞানহীন, মাত্রাহীন, ভিত্তিহীন, অর্থহীন, রুচিহীন, শালীনতাহীন মিথ্যের বোমা ফাটিয়ে ও নিরন্তর মিথ্যের চাষ করতে করতে প্রসঙ্গ থেকে প্রসঙ্গে সরে যাওয়া ভারসাম্যহীন বক্তৃতা ধৈর্য ধ'রে শুনতে শুনতে তারা আজ ভালো কথা শোনার ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলেছে ভালো লাগা ঐ কারবাইড পাকা আমের স্বাদের মতন গাছ পাকা আমের স্বাদ ভুলে। তারা জেনে গেছে শুধু বাপ-মা তুলে আল-বাল-ছাল বকাই আজ বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতি। বাংলার মানুষ আজ না ক'রেই পেতে চায় সবকিছু। তাই সবচেয়ে সহজ পথ রাজনীতি।
পরমপিতার দরবারেও তাই ঐ ট্রাডিশান সমানে চলুক চায় বাঙ্গালী। তাই শ্রীশ্রীঅবিনদাদার ১০মিনিটের ভাষণ তাদের কাছে ছিল অপ্রত্যাশিত! মূল কথা বিজ্ঞান বিভুতির প্রতিটি বাণী অধ্যায়ন, গবেষণা ও তার বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকরণ শুরু হ'ক এই ছিল শ্রীশ্রীঠাকুরের আশ্চর্য পঞ্চম পুরুষ নবীন প্রজন্ম শ্রীশ্রীঅবিনদাদার আহ্বান নবীন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে। এই একটি বছর ধ'রে চলবে এই কর্মযজ্ঞ এবং আবার দেখা হবে সামনের বছর এই দিনে এই ছিল তাঁর বেঁধে দেওয়া সময়। শ্রীশ্রীঅবিনদাদার বক্তব্যে বারবার উঠে এসেছে আসাম, ত্রিপুরা ও উড়িষ্যার ছেলেমেয়েদের অগ্রণী ভূমিকার কথা। একবারও মুখে আসেনি বাংলা তথা বাঙ্গালীর নাম!!!!!!
তাই গতিক দেখে মনে হয়,সৎসঙ্গ ঠিক নিখুঁত লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীকে মাথায় নিয়ে বাস্তবায়নের পথে,
"আমার সৎসঙ্গের প্রকৃত আন্দোলন বাংলার বুক থেকে উঠবে না। শুরু হবে বাংলার বাইরে থেকে।"
( লেখা ১০ই মার্চ, ২০২৩ )

No comments:

Post a Comment