Powered By Blogger

Wednesday, May 10, 2023

খোলা চিঠিঃ বিশ্বজিৎবাবুকে (৪)

বিশ্বজিৎ এর বিশ্বরূপ দর্শন ও বিশ্বজয়!! 

বিশ্বজিৎবাবু, আপনি লিখেছেন রিচিপ্রসাদ আপনাকে বা আপনাদের সম্পর্কে একটা কথা বলে তাহ’লো ‘আপনি বা আপনারা বিকেন্দ্রিক, সৎসঙ্গের শত্রু, নরকের কীট; সৎসঙ্গী নন আর সৎসঙ্গের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই’। আমি বলি আপনি বা আপনারা রিচিপ্রসাদের দেওয়া বিশেষণগুলি কিনা জানি না কিন্তু এটা সত্যি আপনি বা আপনারা সৎসঙ্গী নন। কেন নন বলি। কারণ,
১) প্রথমতঃ আপনি বা আপনারা ঠাকুরের দীক্ষা নিলেও ঠাকুরের মূল কেন্দ্র দ্বারা প্রাপ্ত সৎনামের দীক্ষিত নন।
২) যার হাত দিয়ে দীক্ষা নিয়েছেন তিনি সিদ্ধ নন।
৩) যিনি দীক্ষা দিচ্ছেন তিনি সৎনামে দীক্ষা দেবার অধিকারী নন।
৪) তাকে পাঞ্জা কে দিলেন? তিনি পাঞ্জাধারী ঋত্বিক নন।
৫) অসিদ্ধ পাঞ্জায় দীক্ষা সিদ্ধ হয় না।
৬) স্বঘোষিত ঋত্বিক ঋত্বিক নন।
৭) সৎসঙ্গী মাত্রেই সৎ অর্থাৎ ঠাকুরের সঙ্গে যুক্ত, ঠাকুরের সমস্ত ভালোলাগার সঙ্গে যুক্ত। আর আপনাদের পূর্বসূরিরা তাঁর সবচেয়ে প্রিয়, সবচেয়ে ভালোলাগার ধন বড়খোকা সৎসঙ্গ জগতের চোখের মণি সবার বড়ভাই অর্থাৎ সকলের বড়দাকে মানেন নি, অশ্রদ্ধা, অপমান করেছেন আর আপনাদের পূর্বসূরিদের মত ফটো মাথায় ক’রে নিয়ে যাওয়া ভন্ড, ধান্দাবাজ ভক্তদের জন্য জীবিত অবস্থায় জীবনের শেষ দিনগুলিতে ঠাকুরকে তাঁর প্রিয় প্রথম সন্তানের এহেন লাঞ্ছনা সহ্য ক’রে একবুক ব্যথা নিয়ে নীরবে নিভৃতে চোখের জলে বুক ভাসিয়ে চলে যেতে হয়েছে। আর তাঁর চলে যাওয়ার পর আপনাদের পূর্বসূরিদের চরম সীমাহীন প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে করতে তীব্র মানসিক যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত হ’তে হ’তে ঠাকুরের হৃদপিণ্ড ‘সৎসঙ্গ’ কে চোখের মণির মত বুক দিয়ে আগলে রেখে শক্ত মাটির ওপর দাঁড় করিয়ে অনেক কষ্ট, অনেক জ্বালা বুকে নিয়ে চলে গেছেন শ্রীশ্রীবড়দা। এরপর অশোকদাদা, বাবাইদাদা এমনকি অল্পবয়সী অবিনবাবুকেও আপনারা রেহাই দেননি। এরপরও বলবেন আপনাদের পূর্বসূরিরা সৎসঙ্গী ছিল এবং আপনারা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণকারীরা সৎসঙ্গী!? এরপরও বলবেন আপনাদের পূর্বসূরিরা ঠাকুরের দীক্ষিত শিষ্য ছিল এবং আপনারা ঠাকুরের দীক্ষিত শিষ্য!? ঐ যে বাংলাদেশের কুট্টিরা কি জানি বলে, ‘আস্তে কন বাবু, ঘোড়ায় শুনলে হাসবো”! ঠিকই মানুষে আর আপনাদের কর্মকান্ড দেখে হাসে না হাসলে ঘোড়ায় হাসবে কারণ সবাই জানে “নেপোয় মারে দৈ।“
আপনি লিখেছেন হিমাইতপুর ঠাকুরের আশ্রমে নিন্দা, সমালোচনা শেখায় না। ঠিকই বলেছেন, কেন শেখাবে? চোরের মায়ের বড় গলার মত শয়তানের হাসি ভগবানের চেয়েও মিষ্টি জানেন তো? মুখ লুকোতে হবে তো! প্রেমের কথা না বললে চলে! যারা জীবন্ত ঠাকুরকে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে তাঁর ফটো মাথায় নিয়ে বেরিয়ে এসে ‘বন্দে পুরুষোত্তমম’ ধ্বনি তুলে মিথ্যা প্রেমের কথা বলে, বিষ প্রেমের ফোয়ারা ছোটায় তারা আবার বলছে নিন্দা, সমালোচনা শেখায় না! প্রেমের মূর্ত পুরুষের বুকে যারা হিংসার ছুরি বিঁধেছে তারাই আবার প্রেমের কথা বলছে? আলেকজান্ডারের মত বলতে ইচ্ছা করছে, ‘সত্য বিশ্বজিৎ! কি বিচিত্র এই ধর্মজগৎ! আর কি বিচিত্র এই ধার্মিক মানুষ!’
আপনি লিখেছেন রিচিপ্রসাদকে আপনি বলেছেন উভয়ের মধ্যে মতান্তর হ’তে পারে কিন্তু হিমাইতপুর আর দেওঘর আসা যাওয়ার মধ্যে দিয়ে উভয়ের ভুলগুলি শুধরে নিতে পারবেন। বিশ্বজিৎবাবু কোন ভুলটা আগে শুধরাবেন সেটা ভাবুন আর ক’টা ভুল শুধরাবেন? আর ভুলে ভরা জীবন কি অন্যের ভুল শুধরাতে পারে? আপনি কবে দীক্ষা নিয়েছেন বিশ্বজিৎবাবু? কার হাতে দীক্ষা নিয়েছেন? ঠাকুরকে দেখেছেন? শ্রীশ্রীবড়দাকে দেখেছেন? শ্রীশ্রীঅশোকদাদাকে দেখেছেন? বাবাইদাদাকে? অবিনবাবুকে? তাদের কারও সঙ্গ করেছেন? কথা বলেছেন? নাকি দূর থেকেই সমালোচনা, নিন্দা, গালিগালাজ করছেন? দূর থেকেই না দেখে, না জেনে, না শুনে মতামত দিয়ে যাচ্ছেন? এই সম্পর্কে ঠাকুরর বাণীটা জানেন তো? “উপর উপর দেখেই কিছু ছেড়ো না বা কোন মত প্রকাশ ক’র না। কোনও কিছুর শেষ না দেখলে তা’র সম্বন্ধে জ্ঞানই হয় না, আর না জানলে তুমি তা’র বিষয়ে কি মত প্রকাশ ক’রবে?” ভুল কে ধরিয়ে দেবে আপনার? নাকি আপনার কোনও ভুল নেই? রিচিপ্রসাদ ভুল ধরাবে? আমি ধরাবো? নাকি আপনি বা আপনাদের সদ্য খুন হওয়া স্বর্গীয় নিত্যানন্দ পান্ডের মত ভাগ্যহীনরা? কে সেই মহাশক্তিধর ব্যক্তি----- আমি জানতে চাইছি আপনার কাছে------ যে রিচিপ্রসাদদের এবং আপনাদের ভুল ধরাবে? আপনি এও লিখেছেন “আমাদের রাস্তাটা ভিন্ন হ’তে পারে কিন্তু লক্ষ্যটা এক।“ ভিন্ন রাস্তাটা কি আর ‘লক্ষ্যটা এক’ সেটা কি বিশ্বজিৎবাবু একটু বলবেন? আপনি কি মনে করেন আপনাদের ভিন্ন রাস্তা দিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছোতে পারবেন? কোন লক্ষ্যে পৌঁছবেন? ইষ্টের বুকে ইষ্টক দিয়ে মেরে পাট পাট ক’রে দিয়ে আবার স্বপ্ন দেখছেন লক্ষ্যে পৌঁছবেন? ইষ্টের ঐ ক্ষতবিক্ষত বুক দিয়ে গলগল ক’রে রক্ত বেরোচ্ছে বিশ্বজিতবাবু আর ঐ রক্ত পায়ে মাড়িয়ে বলছেন ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠা আর ইষ্টস্বার্থরক্ষা করবেন? কিসের নেশায় নেশাগ্রস্থের মত কথা বলছেন? কোন ব্রান্ডের মদ? নামসুধা না-কি পাতি বিপিনবাবুর কারণসুধা! কোনটা? তবে নামসুধাতে মনে হয় না আর আপনাদের মত মরা মানুষেরা বেঁচে উঠবে। তার থেকে বরং বিপিনবাবুর কারণ সুধায় গ্যারান্টি আছে। ঐ যে কি আছে না গানটা, “বিপিনবাবুর কারণসুধা মেটায় জ্বালা মেটায় ক্ষুধা, মরা মানুষ বাঁচিয়ে তোলে এমনি কি তার যাদু; বিপিনবাবুর কারণসুধা।“
ক্রমশঃ ( ১০ই মে' ২০১৭ )

No comments:

Post a Comment