Powered By Blogger

Thursday, May 25, 2023

উপলব্ধি ৩৯।

হাইকোর্টের রায় ও শিক্ষা ব্যবসা।

কথায় আছে, "পড়েছো মোগলের হাতে খানা খেতে হবে একসাথে।" ঠিক তেমনি শিক্ষা বেওসায়ীর হাতে পড়েছো যখন তখন তো তার গুনাগার দিতেই হবে। অবশ্য মোগলের হাতের খানা খারাপ না; মোগলের মোগলাই খানা বেশ ভালোই লাগে আর এখন তো সেই খানার রমরমা ব্যাপার। রেপসিড তেল আর পাম তেল তা যে তেলই হ'ক না কেন রেপ আর পাম্প ক'রে ক'রে ভাজাটা ভালোই হয়। ঠিক তেমনি শিক্ষা বেওসায়ীর শিক্ষাদানের রকমসকম বেশ রেপিং আর পাম্পিং ক'রে ভাজা লাল মোগলাই আর রোলের মতো একেবারে ঝাঁ চকচকে!!!! খেতে তো প্রথমে ভালোই লাগে তখন কি আর কেউ পরবর্তী সময়ের লিভার ফাংশান ডিসঅর্ডার, পেটের যন্ত্রণা, পাতলা পায়খানার কথা কেউ ভাবে? ভাবে না। অবশ্য অনেক বুদ্ধিমান মানুষ আছে ডানহাতে মোগলাই বা রোল তো বামহাতে হজম, পাতলা পায়খানা, গ্যাস, অম্বল ইত্যাদির নানাবিধ ঔষধ যেমন ইউনিয়েমজাইম, O2, গ্যাসপ্যাজ, টপসিড বা জিনট্যাক/র‍্যানট্যাক নিয়ে নিশ্চিন্তমনে সেই মোগলের খানা খেয়ে রসনা তৃপ্ত করে। 

আজ শিক্ষার অঙ্গন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাঁদরকে পাহারাদার হিসাবে নিযুক্ত করার মত আজ শিক্ষা প্রসারের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির দেখভালের দায়িত্ব পড়েছে বাঁদররূপী বেওসায়ীদের হাতে। তাতে স্বাভাবিকভাবেই রাজার যে হাল হ'য়েছিল সেই হালই হ'য়েছে আজ শিক্ষার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির। আজ সবচেয়ে বড় ব্যবসা শিক্ষা। শিক্ষা আজ পণ্য হ'য়ে দাঁড়িয়েছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ছাত্র ভর্তির জন্য চলছে প্রতিযোগিতা, চলছে ছাত্র ভর্তির নানারকম ফন্দিফিকির। একেবারে নার্সারি থেকে শুরু ক'রে উচ্চ পর্যায়ের ডিগ্রি অর্জন ও তার পরবর্তী চাকুরী লাভের জন্য চলছে ছাত্র ভর্তির বেচাকেনা। এই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হওয়ার জন্য যাদের কোমরে জোর আছে তারা ঐ বাঁ হাতে প্রতিষেধক নিয়ে মোগলাইয়ারের স্বাদ মেটাবার মত এই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করাবার বন্দোবস্ত ক'রে নিয়েই ভর্তি করায় আর যাদের সেই বাঁ হাতি ঔষধির ব্যবস্থা থাকে না অথচ এই সমস্ত ঝাঁ চকচকে প্রতিষ্ঠানে ছেলেমেয়েদের পড়াতে চায় তাদের অবস্থা হয় ঐ প্রতিষেধক ছাড়া মোগলাই বা রোল খাওয়ার খেসারত স্বরুপ পরবর্তী অবস্থার মত। এইভাবে নন স্টপ অর্থাৎ বিরামহীন মোগলের খানা বা ফাস্ট ফুড খাওয়ার পরিণতিতে যে মাল্টি অর্গান ফেইলিয়র অর্থাৎ নানা দেহযন্ত্র বিফল হয় তাদের কাজ করতে তখন শেষের সেদিন হয় ভয়ংকর! ঠিক তেমনি হয় সাধারণ মানুষের এই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ ভালো কিছু পাওয়ার আশায় পড়ানোর ইচ্ছার পরিণতিও হয় ভয়ংকর কষ্টদায়ক। এই কষ্ট যাদের বাঁ হাতে ঔষধের ব্যবস্থা আছে তাদেরও হয় সেই হওয়াটা হয়তো সবসময় চোখে ধরা পড়ে না যা অন্যভাবে তার খেসারত দিতে হয় সেটা ভুক্তভোগীরাই অনুভব করতে পারে যে অনুভব অন্তঃসলিলার মত বুকের গভীরে প্রবহমান।

যাই হ'ক হাইকোর্টের রায়ে মানুষের নাকি কিছুটা হ'লেও স্বস্তি এসেছে। গরমের ছুটিতে স্কুলগুলির দু'মাসের ফি না নেওয়ার যে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট সেই রায় দিয়ে বেওসায়ীর বেওসায়ী বুদ্ধিকে থামানো যাবে না। অভিভাবক মহলের খুশী হ'য়ে লাভ নেই। এই সমস্ত মানসিক ব্যাধি। অনিয়ন্ত্রিত রিপু তাড়িত, বৃত্তি-প্রবৃত্তির ছোবলে ক্ষতবিক্ষত বেওসায়ী মানুষের ক্ষতবিক্ষত লোভী মানসিকতাকে থামানো যাবে না। যেমন কত রোগের ওষুধ আবিস্কার করবে বিজ্ঞানিরা? কত ওষুধ দিয়ে রোগ সারাবে ডাক্তাররা? প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে নানারকম অদভুত অদভুত রোগের সৃষ্টি হচ্ছে যার কূলকিনারা করতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে ডাক্তার, বিজ্ঞানিরা। প্রতিদিন ওষুধ খেয়ে সেরে উঠছে মানুষ পর মুহূর্তে আবার সেই রোগে আক্রান্ত হ'য়ে শয্যাশায়ী হ'য়ে পড়ছে অবশেষে অকালে মৃত্যুপথের যাত্রী হচ্ছে। রোগের ঔষুধ আবিস্কার হ'লেও নকল ঔষুধ খেয়ে আর হাতুড়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় ও ভুল ঔষুধ খেয়ে মারা যাচ্ছে প্রতিদিন কত রোগী। সৎ, দক্ষ ও শুভানুধ্যায়ী চিকিৎসকের অভাবে ও মানবিকতাসম্পন্ন ঔষুধ ব্যবসায়ীর অভাবে আজ মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। কোথায় যাবে আজ মানুষ? সেই ঘুরে ফিরে এক কথা, "পড়েছো মোগলের হাতে, খানা খেতে হবে একসাথে।" তাই অভিভাবকদের এই হাইকোর্টের রায়ে খুশী হ'য়ে লাভ নেই কারণ আইন ক'রে রিপু দমন করা যায় না তার ওপর ভারতের আইন ব্যবস্থা!!!!!!

যাই হ'ক এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে The Greatest phenomenon of the world SriSri Thakur Anukul Chandra শারীরিক চিকিৎসা থেকে সরে এসে মানসিক ও আত্মিক চিকিৎসার কাজে হাত দিয়েছিলেন মানুষকে পারিপার্শ্বিকসহ বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার জন্য। ঠিক তেমনি আজ শিক্ষা ব্যবস্থার এই হাল দেখে ঠাকুর শিক্ষা সম্পর্কে বলে গেছেন তাঁর বহু বাণী, করিয়েছেন আমাদের শিক্ষার সঠিক মার্গ দর্শন।

তাই, হাইকোর্ট যে রায়ই দিক না কেন চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী। গরমের ছুটিতে দু'মাস ফি নেবে না শিক্ষা বেওসায়ীরা কিন্তু বাকি দশ মাসে কোনও না কোনও অজুহাতে এই দু'মাসের টাকা তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় ক'রে নেবেই কি নেবে। কোনও উপায় নেই এই শিক্ষা ব্যবসার বেওসায়ীদের হাত থেকে মুক্তির। এ এক ঘোর অন্ধকার শিক্ষার বেশ্যাকরণ। সাধারণ মধ্যবিত্ত ও গরীব ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য কোনও ছাড় নেই সরকারের তরফেও। বাড়ি, গাড়ি কেনো সরকারী লোন আছে, আছে অল্প ইন্টারেস্টে ব্যাঙ্ক লোন কিন্তু উচ্চ শিক্ষার জন্য আছে ফুল সিকিউরড মোটা ইন্টারেস্টের (১৪% ও ততোধিক) ব্যাঙ্ক লোন সে গরীব হ'ক আর বড়লোকই হ'ক না কেন, কোনও ছাড় নেই, নেই সরকারী শিক্ষা দপ্তরের সদিচ্ছা, দয়া, মায়া, উদ্যোগ। শিক্ষা আজ লাভজনক ব্যবসা আর ছাত্রছাত্রী সেই ব্যবসার বোড়ে। তাই হায়কোর্টের রায় ঐ কাগজেই বন্দী হ'য়ে থাকবে কোনওদিন সূর্যের আলোর মুখ দেখবে না। আদর্শহীন শিক্ষাব্যবস্থার পরিণতি যা হবার তাই-ই হয়।
(লেখা ২৫শে মে' ২০১৮)

No comments:

Post a Comment