নিজের অন্তরে ও বাহিরে পরস্পর বিরোধী অবাক করা চিন্তা ও কর্ম মানুষের। হায় বন্ধু! মেসেঞ্জারে, ওয়াটস আপে, বিভিন্ন লেখায় আপনি আপনারা কি লিখেছেন বা লিখছেন আগের কমেন্টে আর এখন পরেরটাতে কি লিখলেন বা লিখছেন নিজেই জানেন না। তাই বলি, খেয়াল ক'রে থাকলে বুঝতে পারবেন! পরপর একই সময় একই বিষয়ে একই লোক দুটো দূ'রকম মন্তব্য করছেন। একবার বলছেন আদি অনন্তকাল ধরে মা, ঠাকুমাদের দেখছি ঈশ্বরের উপর ভক্তি তাই আমরাও তাদের অনুসরণ করছি আবার পর মূহুর্তে খোঁচা মেরে বলছেন আমরা তো পারছি না এই পুজো বন্ধ করতে দেখুন আপনি বন্ধ করতে পারেন কিনা।
প্রশ্ন বা আলোচনার বিষয় ছিল মায়ের পুজো পদ্ধতি প্রসঙ্গে পুজো বন্ধ প্রসঙ্গে নয়। আর জেনে রাখুন বহু নারকীয় প্রথা ধর্ম ও ঈশ্বরের পুজার সঙ্গে, নামের সঙ্গে আজ সমার্থক হ'য়ে দাঁড়িয়েছে। আর বন্ধ কালের নিয়মেই একদিন না একদিন হ'য়ে যাবে। কাউকে কিছু করতে হবে না। যেমন ধর্ম ও ঈশ্বরের নামে বহু কুসংস্কার ও কুপ্রথা কালের দাবিতে বন্ধ হ'য়ে গেছে। এসেছে জীবনের সমস্ত দিকের চিন্তা ভাবনার ক্ষেত্রে নতুন সকাল। কুসংস্কার ও কুপ্রথার অন্ধকার ভেদ ক'রে উঠেছে সংস্কার ও সুপ্রথার নতুন সূর্য।
যাই হ'ক বরাবরের মত এবারও আমার প্রশ্নের উত্তর তো কেউ দিলেন না উলটে কুসংস্কার ও কুপ্রথা কে আঁকড়ে ধরে কুতর্ক ও ঝগড়া ক'রে চলেছেন সবাই। আমি কিন্তু যারা যারা আমাকে আমার লেখার বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়েছেন তাদের সকলকে লাইন ধ'রে উত্তর দিয়ে যাচ্ছি আর তার প্রতিফল এই আর্টিকেল। এবারও একজনের মন্তব্যের জবাব দিচ্ছি। একজন বললেন, আমি কেন সবাইকে বোঝাতে চাইছি? আর একজন বললেন, আপনি কি আপনার ধারণা সবাইকে মানতে বলছেন নাকি আপনি বললেই আমরা সবাই আপনার কথা মানবো? প্রথম কথা আমি কাউকেই বোঝাতে যাইনি। আমি কি কাউকে বোঝাতে গেছিলাম? আমি আমার ভাবনা কিছু প্রশ্ন আকারে প্রকাশ করেছিলাম। দ্বিতীয়তঃ এই পুজোর সমর্থনকারী প্রায় সবাই কোমর কষে নেবে পড়লেন আমার বিরুদ্ধে। পুজোর কর্মকর্তা ও ভক্তদের খুশী করতে আমার বিরুদ্ধে গ্রুপ তৈরি ক'রে কথার জাল বুনলেন, কম বেশী ঈশ্বর নিয়ে জ্ঞানগর্ভ মন্তব্য ছুড়ে দিলেন আর সবাই তাড়িয়ে তাড়িয়ে তা উপভোগ করলো। সেটা কি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আপনাদের দ্বারা সবাইকে বোঝানোর মধ্যে পড়ে না? এক্ষেত্রেও কি তাহ'লে আপনার ও আপনাদের ধারণা কি সবাইকে মানতে বলছেন? ঠিক তেমনি আপনি বা আপনারা বললেই আপনার বা আপনাদের কথা সবাই মানবে না। একজন তেড়ে মেরে বললেন, যার যার নিজের নিজের ভক্তি। ঠিক কথা কিন্তু নিজের নিজের ভক্তির ব্যাপার বললেই সেটা গ্রহণযোগ্য ও সর্বজনীন হয় না। ঈশ্বরের উপর ভক্তি আর নৃশংস ভয়ংকর নারকীয় হত্যালীলার মধ্যে দিয়ে ঈশ্বর পুজা এক জিনিস নয়। স্বর্গ নরক তফাৎ। ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি মানুষকে ক্লীবত্ব ও দুর্ব্বলতা দান করে না। কারও মা, ঠাকুমা যদি রক্ত, হাড়, মাংস দিয়ে ঈশ্বরকে পূজো দেওয়া সত্য ও সঠিক ব'লে মনে ক'রে থাকেন তাহ'লে তারা মিথ্যাকে, অপবিত্রতাকে এতদিন পুজোর নামে আবাহন করেছেন। ভক্তির নামে দুর্বলতাকে প্রশ্রয় দিয়েছেন, মূঢ়তাকে আলিঙ্গন করেছেন। মা, ঠাকুমারা (যদিও ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে) ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি আর মিথ্যাচারকে একাকার ক'রে একই আসনে বসাতে চেয়েছেন। আর যদি কারও মা, ঠাকুমা তাই হ'য়ে থাকেন তার বংশধরও সেই মিথ্যা, অপবিত্রতার ট্রাডিশন সমানে যোগ্যতার সঙ্গে দক্ষতার সঙ্গে ব'য়ে চলেছেন, অনুসরণ ক'রে চলেছেন। আর ভগবানে বিশ্বাসী কি বিশ্বাসী না সেটা আমার আলোচ্য বিষয় ছিল না; আলোচ্য বিষয় ছিল মায়ের পুজোর নামে রিপু তাড়িত ভন্ড ভক্তের ও ভোগী পূজারীর নারকীয় নৃশংস হত্যালীলা সমর্থনযোগ্য কিনা। ধর্মভীরু, দূর্বল, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, অজ্ঞ মা, ঠাকুমা থেকে শুরু ক'রে পরবর্তী প্রজন্মের অন্ধবিশ্বাস যুগ যুগ ধ'রে ভন্ড ভক্ত, পূজারীদের ও আয়োজকদের কাছে অক্সিজেন সাপ্লাই ক'রে এসেছে ও বর্তমান প্রজন্মের দ্বারা পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চারিত হ'য়ে চলেছে আপনাদের অজান্তেই। তাছাড়া এইধরনের ভক্তরা ভগবানে বিশ্বাসী হ'লেই বা কি আর না হ'লেই বা কি ধান্ধাবাজ জগত প্রজন্মের পর প্রজন্মকে কাজে লাগায় তাদের স্বার্থ পূরণের স্বার্থে।
ক্রমশঃ
(লেখা ৩রা মে'২০২২)
All reactions
Wednesday, May 3, 2023
প্রবন্ধঃ কোন্নগড়ে শকুন্তলা কালী মায়ের পুজো ও সৎসঙ্গীবৃন্দ (৮)
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment