Powered By Blogger

Wednesday, May 10, 2023

খোলা চিঠিঃ বিশ্বজিৎবাবুকে (৩)

বিশ্বজিৎ এর বিশ্বরূপ দর্শন ও বিশ্বজয়!! 
বিশ্বজিতবাবু, আপনি লিখেছেন আমার মাধ্য্যমে সকল ইষ্টপ্রাণ দাদা ও মায়েদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চান আর রেখেওছেন । আমার ভাবলে অবাক লাগে একটা মানুষের চিন্তাভাবনা, কথাবার্তার মধ্যে এত বৈষম্য কেন? আপনি কাদের ইষ্টপ্রাণ দাদা ও মা বলছেন!? আমার মাধ্যমে যাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাইছেন তারা তো সবাই মূল কেন্দ্র পন্থী তাহ’লে তারা কি ক’রে আপনার মতে ইষ্টপ্রাণ হ’লো? আপনারা তো ঠাকুরের আত্মজ প্রথম সন্তান পরমপ্রিয় আদরের বড়খোকা সৎসঙ্গ জগতের সবার প্রিয় পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দাকে মানেননি, পুজ্যপাদ বর্তমান সংঘাচার্য শ্রীশ্রীদাদাকে মানেননা, পূজনীয় বাবাইদাদাকে নিয়ে আপনাদের গাত্রদাহ হয়, অবিনবাবুতো আপনাদের কাছে সেদিনের ছোকরা তাহ’লে আপনি আমার মাধ্যমে যাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাইছেন তারা সবাই কোটি কোটি তো মূল কেন্দ্রের অনুগামী তাহ’লে তারা আপনার কাছে ইষ্টপ্রাণ দাদা ও মা হ’লো কিভাবে? আপনি বা আপনারা যাঁদের মানেন না তাঁদের যারা মানে, শ্রদ্ধা করে, হৃদ মাঝারে রেখে অবনত মস্তকে নতজানু হ’য়ে পুজা করে তারা তো আপনাদের কথা অনুযায়ী ইষ্টপ্রাণ হওয়ার কথা নয় তাহ’লে ইষ্টপ্রাণ বলছেন কেমন ক’রে আর তাদের কাছেই বা কেমন ক’রে আমার মাধ্যমে প্রশ্ন রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন? এটাকে কি দ্বিচারীতা বলে না বিশ্বজিৎবাবু? আর আপনি ভাবলেন কি ক’রে মূল কেন্দ্র অনুসারী বড়দা, দাদা, বাবাইদাদাঅন্তপ্রাণ ঠাকুরের কোটি কোটি শিষ্য আপনার মত একজন বালখিল্যের প্রশ্নের গুরুত্ব দেবেন?
যাইহ’ক আপনি লিখেছেন কেন আমার মত পরমভক্তরা রিচিপ্রসাদদের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করিনি। এর উত্তরে বলি আপনার কথামত একজন পরমভক্ত কি ক’রে সত্যের প্রতিবাদ করে? আচ্ছা ঠাকুর কেন বলেছিলেন কেষ্টদাকে, “মন্দিরের আশেপাশে কুৎসিত লোকের আনাগোনা বেশী, সাবধান থেকো তা’ থেকে।“ আচ্ছা বিশ্বজিৎবাবু পৃথিবীতে বিশেষত ভারতে সবচেয়ে টাটকা হাতে গরম ব্যবসা কি জানেন? নিশ্চয়ই জানেন। তবুও বলি তা’ হ’লো ধর্ম ও ঈশ্বর! আপনি কি মনে করেন যারা ঠাকুরের জীবদ্দশায় ঠাকুরকে মানসিক কষ্ট যন্ত্রণা দিয়ে ঠাকুরকে ত্যাগ ক’রে ঠাকুরের ফটো মাথায় ক’রে নিয়ে ঠাকুরের আত্মজকে অপমান লাঞ্ছনা ক’রে নীল শেয়ালের মত ঠাকুরের মহান ভক্ত সেজে ‘জয়গুরু, বন্দে পুরুষোত্তমম’ ধ্বনি দিয়ে বেরিয়ে পড়ে প্রথমে মিশনারি নাম পরে নাম পরিবর্তন ক’রে ঠাকুরের নাম লিখে আলাদা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে এবং ইষ্টকে আয়ের উপকরণ বানিয়ে সাধারণ মানুষের সরলতা, অজ্ঞানতা ও দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ঠাকুরবাড়ির অনুপস্থিতির সুযোগকে মোক্ষম হাতিয়ার ক’রে চরম ব্যবসা ফেঁদে বসে তাদের সেই প্রতিষ্ঠান পবিত্র স্থান? সেই প্রতিষ্ঠানে লিখিত ঠাকুরের নামে প্রাণ আছে? সেইখানে উচ্চারিত ঠাকুরের বীজ নাম কি জীবন্ত বিশ্বজিৎবাবু? সেখানে যারা সাধন ভজন করে বলছেন কার সাধন ভজন করে তারা? তারা যদি আপনার লেখা অনুযায়ী সৎসঙ্গের প্রবর্তক, বিশ্বব্রহ্মান্ডের মালিক, পরম কারুণিক, যুগ পুরুষোত্তম, পরম প্রেমময়কে উপাস্য, শ্রেয় আচার্য্য, সদগুরু মনে ক’রে যদি সাধন ভজনই করে তাহ’লে তারা তাঁর মূল কেন্দ্র দেওঘর থেকে বিচ্ছিন্ন কেন? যদি তারা ঠাকুরেরই সাধন ভজন করে তাহ’লে সাধন ভজনের ফল উল্টো কেন? কেন তারা ঠাকুরের সবচেয়ে প্রিয় হৃদয়ের ধন প্রথম সন্তান আদরের বড়খোকা, সৎসঙ্গ জগতের শ্রেষ্ঠ পুরুষ সৎসঙ্গের চোখের মণি সবার প্রিয় শ্রীশ্রীবড়দাকে মানে না, শ্রদ্ধা করে না? কেন তারা ঘোর কলি যুগের হনুমান ঠাকুরের পরম শ্রেষ্ঠ ভক্ত শ্রীশ্রীবড়দাকে গালিগালাজ করে? কেন তারা মূল কেন্দ্রের বর্তমান সঙ্ঘাচার্য শ্রীশ্রীদাদার বাপ বাপান্ত করে? কেন শ্রীশ্রীবাবাইদাদার সম্পর্কে কটুক্তি করতে তাদের জিভ কাঁপে না? এই পরম প্রেমময়ের সাধন ভজনের এবং প্রেমের নমুনা? আপনি আপনার লেখাতে অজান্তেই একটা ঠিক কথা লিখে ফেলেছেন তা হ’লো ‘সৎসঙ্গের প্রবর্তক’। হ্যাঁ আমিও বলছি আপনি ঠিকই বলেছেন ঠাকুর ‘সৎসঙ্গ’-এর প্রবর্তক কিন্তু “শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ” বা অন্য কোনও নাম সহযোগে সৎসঙ্গের প্রবর্তক নয়। এবার বলুনতো বিশ্বজিৎবাবু কোন যুক্তিতে প্রতিবাদ করবো? প্রতিবাদ করার মত কোনও সুযোগ রেখেছেন না আছে?
আপনি আপনার চিঠিতে লিখেছেন রিচিপ্রসাদ ও তার শিষ্যদের পায়ে ধ’রে, হাত জোড় ক’রে অনুরোধ করেছেন ফেসবুকে এগুলো প্রচার না করতে কারণ ফেসবুক কোটি কোটি মানুষ ফলো করে আর তারা সৎসঙ্গ নিয়ে হাসাহাসি করবে। আমি বলি কি আপনি যদি ন্যায়ের পথে থাকেন, ঠাকুরের নির্দেশিত পথে অটুট অচ্যুত অস্খলিত ভাবে চলেন তাহ’লে কে রিচিপ্রসাদ আর কেই বা তার শিষ্য যে তাদের পায়ে ধরবেন, হাত জোর করবেন? কেন? কিসের জন্য? আপনি কি লুকিয়ে রাখতে চাইছেন যে রিচিপ্রসাদকে অনুরোধ করেছেন ফেসবুকে যেন প্রচার না করে? আপনার কিসের ভয়? সত্য জানুক না লোকে। কোনটা সত্যি কোনটা মিথ্যে জানুক না ফেসবুক ফলোয়াররা? ভয় কি? হাসাহাসি করুক না। আপনি তো সৎ ও সত্যের পথে আছেন, ফেসবুকের মধ্যে দিয়ে মানুষ অসৎ ও অসত্যকে বুঝে নিক, চিনে নিক, জেনে নিক না। আপনার এত দরদ কেন সৎসঙ্গের জন্য? আপনি তো ‘সৎসঙ্গ’-এর কেউ না। আপনি তো মূল স্রোত থেকে বেরিয়ে যাওয়া, মূল কেন্দ্র বহির্ভূত মিশনারি তথা ‘শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ কেন্দ্র’-এর সঙ্গে যুক্ত একজন। তবে এটা স্পষ্ট জেনে রাখুন ‘সৎসঙ্গ’ নিয়ে কেউ হাসাহাসি করে না বা করবে না, হাসাহাসি করে বা করবে ‘শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ’ বা অন্য কোনও সৎসঙ্গ ও তাদের ক্রিয়াকলাপ নিয়ে। আপনি লিখেছেন আপনি রিচিপ্রসাদকে অনুরোধ করেছেন যেখানে ত্রুটি হয় সেখানে এসে সংশোধন ক’রে দিতে। সংশোধন!? কে ত্রুটির সংশোধন করবে? কে এত বড় মহাশক্তিমান? আছে নাকি আপনাদের মিশনারি কেন্দ্রে আপনার বা আপনাদের ত্রুটি ধরিয়ে দেওয়ার মহান ব্যক্তিত্ব, শক্তিমান সিদ্ধপুরুষ? আর কার সাধ্য আছে যে জেগে ঘুমায় তাকে জাগাবার? আর কাকেই বা জানাবে যে ‘তোমার এই ত্রুটি, ঐ ত্রুটি? ঠাকুরের কি বলা আছে জানেন তো, ঠাকুর বলেছেন, “জানার যার প্রবৃত্তি আছে তাকে জানানো যায়। অনেকের আবার ঝোঁক থাকে কিছুতেই বুঝবে না, মাথায় নেবে না, তাদের কিছু করা যায় না।“
ক্রমশঃ
( লেখা ১০ই মে'২০১৭ )

No comments:

Post a Comment