Powered By Blogger

Saturday, May 13, 2023

প্রবন্ধঃ : লৌকিক-অলৌকিক।

আজ একটা পোষ্ট চোখে পড়লো। যেখানে বলা হচ্ছে কোন এক সন্ন্যাসী নাকি ভয়ঙ্কর আগুনের মধ্যে থেকেও তাঁর সর্বাঙ্গে কোনও পোড়া লাগেনি। এই দৃশ্য দেখার জন্য নাকি মিডিয়া সেখানে ভিড় করেছে। আর সেই ঘটনাকে সামনে রেখে শুরু হ'য়ে গেছে সনাতন ধর্মের মাহাত্ম্য। এ নাকি একমাত্র সনাতনী ধর্মেই সম্ভব। অর্থাৎ আর কোনও ধর্মে সম্ভব নয়। আমার ধর্ম সনাতন ধর্ম পৃথিবীর সব ধর্মের সেরা ধর্ম। এইভাবে বিতর্কের সূত্রপাত হ'য়। তারপরে তা ডালপালা ছড়িয়ে বিকৃতির জন্ম দেয়।

প্রথমতঃ ধর্ম কখনো বহু নয়। ধর্ম এক। তা দেশ কাল পাত্র ভেদে আলাদা আলাদা হয় না, তা এক ও অভিন্ন। সনাতন মানে? সনাতন যা চিরন্তন, যা শাশ্বত, যা নিত্য, চিরস্থায়ী ও অপরিবর্তনীয়। যেমন আকাশের সূর্য, চন্দ্র, তারা, গ্রহ, নক্ষত্র চিরন্তন। যেমন শুক্রানু ও ডিম্বানুর মিলনে আমার যে বায়ো লজিক্যাল মেক আপ (জৈবী সংস্থিতি) আমাকে ধ'রে রেখেছে তা চিরন্তন ধর্ম অর্থাৎ সনাতন ধর্ম। তা এই সনাতন ধর্ম কি সমগ্র সৃষ্টি মধ্যে শুধু ভারতবর্ষ আর হিন্দুদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য? অন্য দেশের অন্য মতের মানুষের জন্য কি প্রযোজ্য নয়? অন্য মত বললাম এইজন্যে যে ধর্ম কখনো বহু হয় না।
The greatest phenomenon of the world শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ধর্ম্ম সম্পর্কে সমস্ত ভুল, অন্ধ, কুসংস্কারাছন্ন, অবৈজ্ঞানিক ধ্যান ধারণাকে ভেঙে দিয়ে পরিস্কার সহজ সরল ক'রে বললেন,

"ধর্ম্মকে জানা মানেই বিষয়ের মূল কারণকে জানা; আর, তাই জানাই জ্ঞান।"
যেমন এই যে ঘটনাটা, একজন সন্ন্যাসী ভয়ঙ্কর আগুনের মধ্যে থেকেও তাঁর সর্বাঙ্গে কোনও পোড়া লাগেনি। এটা যদি সত্য হয়, তাহ'লে দেখতে হবে, খুঁজে বের করতে হবে কেন তাঁর গাঁয়ে আগুন লাগা সত্ত্বেও গা পোড়েনি। কেন গায়ে আগুন লাগেনি। এই যে আগুন না লাগা বিষয়টা এই বিষয়টার মূল কারণ কি আমাকে জানতে হবে। এর পিছনে একটা কারণ আছে। সেই কারণটাকে জানতে পারলেই ধর্মকে জানা হ'য়ে যাবে। আগুনের ধর্ম জ্বালিয়ে দেওয়া, পুড়িয়ে দেওয়া। আগুনের মধ্যে জ্বালিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা সেই ক্ষমতাটা সে ধ'রে আছে। ঠিক তেমনি কোন কারণটা শরীরকে ঘিরে ধ'রে রেখেছে যার ফলে আগুন সেখানে ব্যর্থ হচ্ছে? সেই কারণটাকে জানতে পারলেই রহস্যের সমাধান হ'য়ে যাবে। সেই কারণটাকে জানা মানে ধ'রে রাখাকে জানা অর্থাৎ ধর্মকে জানা।

তাহ'লে এক্ষেত্রে ধর্ম কি? ধর্ম বা ব্রহ্ম তখনি বুঝতে পারবে যখন অভাব মানুষকে ছোবল মারে। তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন,

"অভাবে পরিশ্রান্ত মনই ধর্ম্ম বা ব্রহ্ম জিজ্ঞাসা করে, নতুবা করে না।"
যখন মানুষ অভাবে ক্লান্ত হয়, বিধ্বস্ত হয় তখন সে বাঁচবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। ক্লান্ত বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে চায়, অভাব কাটিয়ে আবার বাঁচতে চায়, বেড়ে উঠতে চায়। এই যে মানুষের জীবনে অভাব আসে তার কারণ তার মধ্যে ভাব নেই। অ মানে নেই অর্থাৎ নেই ভাব, অভাব। তাই আজ আমাদের ঘরে ঘরে অভাব। আমি কি ক'রে বাঁচবো, কি ক'রে বেড়ে উঠবো অর্থাৎ বৃদ্ধি পাবো, কি করলে অভাব বলতে চলতি অর্থে অর্থকষ্ট থেকে, টানাটানি থেকে মুক্ত হবো তা ভাবিনি।

তাই যে কর্মই করো না কেন সেই কর্মের সাথে ভাব করতে হয়, ভাব বিনিময় করতে হয়, সেই কর্ম নিয়ে ভাবতে হয়। সেই কর্মের সাথে সবসময় লেগে থাকতে হয়, কর্মের উপযুক্ত হয়ে উঠতে হয়। ঈশ্বর যেমন সর্বত্র বিদ্যমান অর্থাৎ সব জায়গায় তাঁর উপস্থিতি আছে, তিনি আছেন সর্বত্র ঠিক তেমনি আমিও আমার কর্মের সঙ্গে সবসময় বিদ্যমান অর্থাৎ আমার উপস্থিতি আছে, আমি আছি, সক্রিয়ভাবেই আমি আছি, লেগে আছি, যুক্ত আছি।

এই যে বাঁচার আকুল কান্না, আপ্রাণ চেষ্টা এই চেষ্টা থেকেই সে কোনও একটা কিছুকে ধ'রে বাঁচতে চায়, একটা অবলম্বন চায়। ডুবে যাবার সময় একটা খড়কুটো পেলেও তাকে আঁকড়ে ধ'রে বাঁচতে চায়। আবার উঠে দাঁড়াতে চায়, বেড়ে উঠতে চায় শূন্য থেকে নোতুন ভাবে। তখন সে নিজেকে নিজে জিজ্ঞেস করে কি ধ'রে সে বাঁচবে, কেমন ক'রে সে বেড়ে উঠবে। তখন তার মধ্যে ভাবের জন্ম হয়। তখন সে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে, ভাবো, ভাবো, ভাবতে থাকো, ভাবতে থাকো আর কর্মের সাথে ভাব করো, বন্ধুত্ব করো, কর্মের সঙ্গে যুক্ত হও, সবসময় লেগে থাকো। এইভাবেই ধরে থাকা বা ধর্ম্ম এবং বৃদ্ধি পাওয়া বা ব্রহ্ম জিজ্ঞাসা আসে।

শ্রীশ্রীঠাকুর আরও বললেন, যার উপর বিষয়ের অস্তিত্ব তাই ধর্ম্ম; যতক্ষণ তা' জানা যায় নাই, ততক্ষণ বিষয়কে ঠিক ঠিক জানা হয় নাই। যার উপর যা' কিছু-সব দাঁড়িয়ে আছে তাই ধর্ম্ম; আর, তিনি পরমপুরুষ।

যেমন জল। জলের অস্তিত্ব বলতে আমরা বুঝি অর্থাৎ H²O হলো জলের রাসায়নিক সংকেত। যেখানে দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু এবং ১ টি অক্সিজেন পরমাণু নিয়ে জল গঠিত। তাহ'লে জল এই বিষয়টার অস্তিত্ব হ'লো H²O অর্থাৎ H²O জলকে ধ'রে আছে। যতক্ষণ H²O জানতে পারছি না ততক্ষণ জল বিষয়টাকে ঠিক ঠিক জানতে পারছি না। এক্ষেত্রে H²O ওপর দাঁড়িয়ে আছে জল আর H²O হ'লো জলের ধর্ম। H²O জলকে ধ'রে আছে। আবার জল তৃষ্ণা মেটায়। জলের ধর্ম হ'লো তৃষ্ণা মেটানো। আমার তৃষ্ণা মেটানোকে ধ'রে রেখেছে ধর্ম। তাই জলকে পানি, ওয়াটার ইত্যাদি যে নামেই অভিহিত করিনা কেন একে ধ'রে রাখার যে অস্তিত্ব তা ভিন্ন ভিন্ন নয়, একটাই অস্তিত্ব H²O আর তৃষ্ণা মেটানো।

তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, ধর্ম্ম কখনও বহু হয় না, ধর্ম্ম একই আর তার কোন প্রকার নেই। মত বহু হ'তে পারে, এমন কি যত মানুষ তত মত হ'তে পারে, কিন্তু তাই ব'লে ধর্ম্ম বহু হ'তে পারে না। হিন্দুধর্ম্ম, মুসলমানধর্ম্ম, খৃষ্টানধর্ম্ম, বৌদ্ধধর্ম্ম ইত্যাদি কথা আমার মতে ভুল, বরং ও-সবগুলি মত। কোনও মতের সঙ্গে কোনও মতের প্রকৃতপক্ষে কোনও বিরোধ নেই, ভাবের বিভিন্নতা, রকমফের----একটাকেই নানাপ্রকারে একরকম অনুভব। সব মতই সাধনা বিস্তারের জন্য, তবে তা' নানাপ্রকারে হ'তে পারে; আর, যতটুকু বিস্তারে যা' হয় তাই তার অনুভূতি, জ্ঞান। তাই ধর্ম অনুভূতির উপর।"

ধর্ম মানে আজগুবি গাঁজাখুরি গল্প নয়। ধর্ম মানে দর্শন অর্থাৎ কারণ, অস্তিত্ব, মৌলিক বিধান। ধর্ম আর বিজ্ঞান সমার্থক। তাই বলে philosophy is the science of science. যদি সন্ন্যাসীর কাহানী সত্য হয় তাহ'লে দেখতে হবে এর পিছনে কারণ কি আছে। কোনও কিছুই অলৌকিক নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত এর কারণের কারণ পরম কারণ জানা না যাচ্ছে ততক্ষণ তা অলৌকিক। আর যখনই সেই কারণ উন্মোচিত হয়, হাতের মুঠোয় চলে আসে তখনই তা হয় লৌকিক। আর যদি মিথ্যা থাকে তাও ধরা পড়ে যায় বিজ্ঞান অর্থাৎ বিশেষ জ্ঞানের আলোকে যাকে আমরা ধর্ম বলি। আমরা ধর্ম শব্দের ইংরেজী বলি Religion. ধর্ম আর রিলিজিয়ন এক কথা নয়। ধর্ম কথার গভীরতা গভীর, বিস্তৃত, অসীম ও অনন্ত। যার সঙ্গে ধ'রে রাখার সম্পর্ক নিহিত। যেমন জলকে ধ'রে রাখে H2O, জলের ধর্ম্ম তৃষ্ণা মেটানো, আগুনের ধর্ম্ম আলো ও তাপ দেওয়া, বরফ ঠান্ডা আর সেখানে রিলিজিয়ন পুনরায় লেগে থাকার কথা বলে। ল্যাটিন Religare (রেলিগেয়ার) অর্থাৎ Re + ligare থেকে Religion শব্দের উৎপত্তি। রেলিগেয়ারের অর্থ হ'লো বাঁধন, "কিছুর সাথে কিছু বেঁধে রাখা", মানব এবং ঐশ্বরিক, "কানেক্ট করা" Re অর্থাৎ পুনরায় আর ligare(লিগার) অর্থ যুক্ত করা বা হওয়া। সুতরাং জন্মের পরে ঈশ্বরের সঙ্গে পুনরায় যুক্ত করা বা হওয়া কে Religion বলে। এ সবই জেনেছি সর্ব্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়কর পুরুষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের কাছে।

যাই হ'ক, আমরা অদ্ভুত অদ্ভুত কান্ড ঘটতে দেখি অহরহ যার কোনও ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না। টোটালি হার্ট বিট বন্ধ তথাপি মানুষ মৃত নয় অবিশ্বাস্য এই ঘটনাও আমরা টিভিতে দেখেছি। যদিও জানি না তা কতটা সত্যি আর কতটা মিথ্যে। আমরা দেখেছি অবিশ্বাস্য ঘটনা অ্যাসিড দিয়ে স্নান করতে, অ্যাসিড ভর্তি কাঁচের চৌবাচ্চায় মানুষকে ডুবে বসে থাকতে! তেমনি অত্যাশর্য অবিশ্বাস্য বহু বহু বিজ্ঞানের কথা বলে গেছেন বিশ্বের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। তাঁর ভাইব্রোমিটার প্রকল্প (মৃত মানুষের দেহে প্রাণ সঞ্চার) তার মধ্যে অন্যতম অত্যাশর্য বিজ্ঞান!

আগুন সব পুড়িয়ে খাক ক'রে দেয় কিন্তু সন্ন্যাসীকে স্পর্শ করতে পারেনি। যদি এক্ষেত্রে উলটো হ'য়ে থাকে তবে বুঝতে হবে এর পিছনে কিছু একটা বিশেষ জ্ঞান আছে যা মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে, জ্ঞানের বাইরে। আমরা ইতিহাসে প্রহ্লাদের কাহিনী জানি। তাঁকেও আগুনে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল কিন্তু কিচ্ছু হয়নি। আপাত অবাস্তব অলৌকিক ঘটনা তাঁকে ঘিরেও ঘটেছিল। পাগলা হাতির পায়ের তলায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল, পাহাড় থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল, সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। কিন্তু কোনও কিছুই তাঁর অস্তিত্বকে নিভিয়ে দেওয়া তো দূরের কথা, স্পর্শ পর্যন্ত করতে পারেনি। এইগুলিকে গাঁজাখুরি গল্প ব'লে গাঁজাখোরেরা বলতে পারে কিন্তু সত্যসন্ধানী রহস্যসন্ধানী জিজ্ঞাসুরা কখনও এমন সস্তাভাবে ভাবে না। শ্রীশ্রীঠাকুর সবসময় তাঁর মায়ের কথা তুলে ধ'রে বলতেন,"যেখানেই দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখো ভাই, পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন।" অর্থাৎ ছাই ব''লে তাকে অবজ্ঞা ক'রো না, উপেক্ষা ক'রো না। হ'ক ছাই তবুও খুঁজতে খুঁজতে একদিন পরশ পাথর পেলেও পেয়ে যেতে পারো। শ্রীশ্রীঠাকুর কত হাজার হাজার বিচিত্র অত্যাশ্চর্য অভূতপূর্ব কথা বলেছেন যা পন্ডিত, জ্ঞানী, বিজ্ঞ অর্থাৎ প্রাজ্ঞদের বোধবুদ্ধির বাইরে। সেখানে দু'পাতা বালখিল্য বিজ্ঞান পড়া আবালদের শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিয়ে সমালোচনা, নিন্দা প্রমাণ করে যে এদের মোল্লার মত দৌড় যা মসজিদ পর্যন্ত কিংবা এরা আদার ব্যাপারী অথচ জাহাজের খোঁজ রাখতে চায় বা এদের অবস্থা উটের চিৎ হ'য়ে শোওয়ার মত কিংবা মেথর যদি গুয়ের বালতি মাথায় ক'রে নিয়ে যেতে যেতে ভাবে যে মাথায় ক'রে সে খেজুর গুড়ের বালতি নিয়ে যাচ্ছে তাহ'লে যা হয় এদেরও দু'পাতা প্রাইমারি স্কুলের বিজ্ঞানের চটি বই পড়ে ভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের অসীম জলরাশীর মত বা অন্তহীন মহাশূন্যের মত বিজ্ঞানের এরা প্রতিনিধি বা সত্ত্বাধিকারী।

এই যে সন্ন্যাসীর গায়ে আগুনের স্পর্শ না লাগা, সম্পূর্ণ রকমে হার্ট বিট বন্ধ হ'য়ে যাওয়া সত্ত্বেও বেঁচে থাকা, অ্যাসিড দিয়ে স্নান করা বা অ্যাসিডের চৌবাচ্চায় ডুবে বসে থাকা, শ্রীশ্রীঠাকুরে ভাইব্রোমিটার প্রকল্প যা কিনা মৃত মানুষের দেহে প্রাণ সঞ্চার, নিজের শরীর থেকে বেড়িয়ে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নিজের কাজ সেরে আবার নিজের শরীরে প্রবেশ করা ইত্যাদি ইত্যাদি নানা আজব অত্যাশ্চর্য অভূতপূর্ব বিষয়ের মধ্যে পড়ে গিয়ে যখন উন্নত জ্ঞানী মানুষ হাতড়ে মরে তখন মনে পড়ে যায় ইংরেজী ভাষার সর্ব্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক, কবি, নাট্যকার শেক্সপিয়রের হ্যামলেট নাটকের সংলাপ
"There are more things in heaven and earth, Horatio, than are dreamt of in your philosophy." এর ভাবার্থ হ'লো, "স্বর্গ ও পৃথিবীর মাঝখানে আরও বহু জিনিস আছে, হোরেশিও, যা তোমার দর্শনের পাল্লার বাইরে ও অতীত।"
এই সংলাপ ছিল আমার দয়াল ঠাকুর শ্রীশ্রীঅনুকূলচন্দ্রের অন্যতম প্রিয় সংলাপ; যা তিনি প্রায় সময়ই আওড়াতেন।

এ সব কিছুই সবজান্তা মানুষের অহঙ্কারকে চূর্ণ করে। মানুষ যে সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির একটা ক্ষুদ্র সৃষ্টি তা মানুষ জ্ঞানের অহঙ্কারে ভুলে যায়। তাই প্রতি পদে পদে মুখে পাছায় লাথ খায়। কেউ কেউ লাথ খেয়ে ক্ষুদ্র ও স্বল্প জীবনের শেষ প্রান্তে এসে শুধরে গিয়ে চেষ্টা করে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বা অনুভূতি পুর্ণ বা উপলব্ধিবান মানুষে পরিণত হওয়ার।

আজ পর্যন্ত ধর্মজগতের ভন্ড ধান্দাবাজ ধার্মিক যা কিছু অলৌকিক কান্ড ঘটিয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়েছে নিজের আখের গুছিয়ে নিতে ধর্ম বা ঈশ্বরকে সামনে রেখে তারা তা করেছে বিজ্ঞানকে হাতিয়ার করেই। তাই একশ্রেণীর মানুষের ধর্মের ওপর বিশ্বাস গেছে নষ্ট হয়ে। তারা সবেতেই বুঝরুকি মনে করে, সবাইকেই ভন্ড মনে করে। আর, এই যে ভন্ডামি যারা করে তা' করে সাধারণ কুসংস্কারাছন্ন, অজ্ঞ, মূর্খ, দূর্বল ধর্মীয় ভীরু মানুষের দৌলতে। আর সবেতেই বুঝরুকি মনে করে যারা তারা অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী।

তাই ধর্ম্ম আর বিজ্ঞান, লৌকিক-অলৌকিক, বিশ্বাস-অবিশ্বাস, সত্য-মিথ্যা, সৎ-অসৎ সব ঘেঁটে ঘ হ'য়ে গেছে। 'ঘ' হ'য়ে নিজের দোষে। কারও দোষ নয়, আমারই দোষ। কারণ আমি চাইনি আমার অজ্ঞানতার অন্ধকারে বন্ধ চোখ জ্ঞান কাঠির স্পর্শে খুলতে। শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, তোমার জন্য তুমি নিজে দায়ী। জয়গুরু।
******************************************************
 

No comments:

Post a Comment