Powered By Blogger

Monday, December 16, 2024

প্রবন্ধঃ তাই-ই হ'ক!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের পুনরায় আসা নিয়ে একটা বিতর্কিত লেখা পড়লাম। সেখানে লেখক লিখেছেন তিনি এর স্বপক্ষে অনেক কষ্ট ক'রে অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছেন সেগুলির প্রকাশে নাকি অনেক ঝামেলা ও গন্ডগোল হয়েছে সেইজন্য যে সব তথ্য সংগ্রহ করেছেন সেগুলির পুনরায় প্রকাশে নিষেধ আছে! এর উত্তরে যেটা প্রথমে মনে হ'লো তা হ'লো এর কোনও অথেনটিসিটি আছে তো? নাকি কারও মনগড়া কথা তথ্য ব'লে চালানো হচ্ছে? লেখকের কি মনে হয় এমন সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লেখকের যদি চোখে পড়ে থাকে আর কারও চোখে পড়লো না!? সবাইকে কি লেখক মূর্খ ও ঠাকুরবাড়ির অন্ন খাওয়া দালাল ভাবেন? লেখক কি মনে করেন প্রায় সারা বিশ্বে প্রায় ১০কোটিতে পৌঁছে যাওয়া মূল কেন্দ্র দ্বারা দীক্ষিত অনুসরণকারীদের মধ্যে কেউ নেই স্বাধীনচেতা ইষ্টপ্রাণ!? লেখক কতদিনের দীক্ষিত তা আমি জানি না তবে আমার জন্ম থেকে আজ এই বয়স পর্যন্ত যা দেখে এসেছি নিজের চোখে, যা শুনেছি নিজের কানে, যা বুঝেছি নিজের, সম্পূর্ণ নিজের বোধবুদ্ধি দিয়ে তা কিন্তু কারও চেয়ে কম নয় বরং বেশিই বলতে পারি; যদিও এই বেশি বলার জন্য লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। আর যদিও এই 'বেশি' শব্দ প্রয়োগ সজ্ঞানে জেনেবুঝেই করেছি।


এবার আসি অন্য কথায়। লেখক কষ্ট ক'রে ঠাকুরের পুনরায় আসার স্বপক্ষে যা সংগ্রহ করেছেন তা যদি অথেন্টিক হ'য়ে থাকে তাহলে তা মানুষের মঙ্গলের জন্য, সৎসঙ্গীদের চোখ খোলার জন্য দুধকে দুধ আর জল কে জল ব'লে জানার, চেনার ও বোঝার জন্য কেন সর্বসমক্ষে বলতে পারা যাবে না, তুলে ধরা যাবে না!? কার ভয়!? কিসের ভয়!? কার নিষেধ!? কিসের নিষেধ!? কেন লুকোচুপি!? কেন এই গোপনীয়তা!? কেন খোলামেলা কথা হবে না!? ঠাকুরকে অবিকৃতভাবে তুলে ধরতে কেন গোপনীয়তার আশ্রয় নিতে হবে!? কেন মানুষের কাছে বলতে দ্বিধা হবে!? মুখে কালি পড়বে!? সত্য তুলে ধরতে যদি মুখে কালি পড়ে পড়ুক!!! যদি মাথায় বাজ পড়ে পড়ুক! আমি প্রস্তুত সেই বাজ মাথায় নিতে! কিসের লজ্জা!? কিসের ভয়!? কেন ভয় পাবো!? মনে রাখতে হবে আমিও পরমপিতার সন্তান! সত্য কথা বলতে, প্রচার করতে, বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে কেন মুখে কালি পড়বে!? কেন ঘৃণা হবে!? কেন লজ্জা হবে!? কেন ভয় হবে!? তাহলে কি কোনও দুর্বলতা লুকিয়ে রয়েছে!? রয়েছে কোনও পাপবোধ!? ঠাকুর যদি আমার জীবন জুড়ে থাকে, আমার ভিতরে থাকে তাহলে সবসময় আমার মুখ দিয়ে, আমার চিন্তাভাবনায়, চলায় বলায় শয়নে-স্বপনে-জাগরণে ঠাকুর ঠাকুর বেরোবে! লেখক নিশ্চয়ই সত্যানুসরণে বলা ঠাকুরের কথা পড়েছেন?


শ্রীশ্রী ঠাকুর বললেন,
"যে কর্ম্ম মানুষের কাছে ব'লতে মুখে কালিমা পড়ে, তা'ক'রতে যেও না। গোপন যেখানে ঘৃণা-লজ্জা-ভয়ে সেইখানেই দুর্বলতা, সেইখানেই পাপ।"
এবার আসি শ্রীশ্রীঠাকুরের আবার আসা প্রসঙ্গে।
আমি সোজাসুজি লেখকের কাছে জানতে চাই এবং লেখককে সমর্থন ক'রে যারা 'জয়গুরু আর লাইক দিয়ে এবং দারুণ লিখেছেন, অনেক কিছু জানতে পারলাম, সত্য চাপা থাকে না' ইত্যাদি ইত্যাদি নানারকম হালকা, চলতি, ভিত্তিহীন, মুখরোচক মন্তব্য ক'রে লেখকের লেখাকে দায়সারা গোছের সম্মান, ভালোবাসা জানায় তাদের কাছে জানতে চাই---------- আর ফেসবুকে এটা ট্রেন্ড যাই-ই লেখ না কেন জয়গুরু আর লাইকের বাইরে জানার জন্যে, শেখার জন্যে, চর্চা করার ও বোধের ঘরকে মজবুত করার জন্যে দীক্ষিতদের মধ্যে কোনও ইচ্ছা বা আগ্রহ নেই। তবে যারা শ্রীশ্রীঠাকুর বিরোধী অদিক্ষিত মানুষ এবং দীক্ষিত সৎসঙ্গী(?) অথচ শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবার বিরোধী জন্মবিকৃত মানুষ আছে এইসমস্ত উভয় দিকের মানুষ সকলের প্রবল ইচ্ছা বা আগ্রহ ঝ'রে পড়ে শ্রীশ্রীঠাকুর, শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীদাদা, শ্রীশ্রীবাবাইদাদা ও শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে অকথ্য-কুকথ্য, অশ্লীল-কুশ্লীল ভাষায় মন্তব্য করতে, গালিগালাজ, নিন্দা, অপমান-অশ্রদ্ধা, সমালোচনা করতে! এমনকি এরা এতটাই নরকের কীট যে এরা ঠাকুর পরিবারের মায়েদের বিরুদ্ধেও নোংরা কথার কামান দাগে আর এই ট্রেন্ড এতটাই বিষাক্ত ও ভয়াবহ যে এদের মধ্যে দাদাদের সঙ্গে সঙ্গে মায়েরাও আছে!!------------ ঠাকুর নিজের মুখে কোথায় বলেছেন, "আমি শীগ্রই আবার আসছি!?" কোন বইয়ে!? ঠাকুর কোন কোন জায়গায়, কোন কোন বাণীতে, কোন কোন গ্রন্থে আবার শীঘ্রই আসবেন বলেছেন তার রেফারেন্স সহ তুলে ধরলে খুশি হব, জানতে পারবো আর সেইমত লেখকের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। লেখক তার লেখার সমর্থনে লিখেছেন নেটের সাহায্যে 'ভৃগু কুষ্টির বিবরণ' ও 'ভৃগু সংহিতা ও শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র' দেখে নিতে! আমি কারও গণনা বা কোনও কুষ্টি নিয়ে বিচারের জন্য টেবিল টক করতে বসিনি বা বসতে চাই না। আমার সে সব বকোয়াস ইচ্ছাও বিন্দুমাত্র নেই! আমি সোজাসাপ্টা জানতে চাই শ্রীশ্রীঠাকুরের মুখনিঃসৃত কথা তাঁর আবার নিজের আসা সম্পর্কে! ঈশ্বর শ্রীকৃষ্ণ নিজের মুখে বলে গেছেন 'যখনই ধর্মের গ্লানি ও অধর্মের উত্থান হয় এবং সাধুদের পরিত্রাণ ও শয়তানকে বিনাশের দরকার হবে তখনই তিনি আসবেন! প্রভু যীশু বলে গেছেন, আমি আসবো! আবার আসবো! মহাপ্রভু নিজের মুখে বলেছিলেন আবার আসার কথা যা চৈতন্যচরিতামৃত-এ আছে! ঠাকুর রামকৃষ্ণ নিজের মুখে বলেছিলেন "আমি খুব শীঘ্রই আসছি! আমি যাবো আর আসবো! ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক কথা অনেকরকমভাবে ইঙ্গিত দিয়ে গেছিলেন যা তাঁর কথামৃতে আছে; শ্রীশ্রীঠাকুরের ঠিক তেমন ইঙ্গিত কোথায় কোন বইয়ে, কোন বাণীতে, কোন কথোপকথনে লিপিবদ্ধ আছে, সে কথা লেখক জানান আমাদের! যে শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদা ঠাকুর রামকৃষ্ণের পরম ভক্ত সেই রামকৃষ্ণের আসার ইঙ্গিত পেয়ে পাগলের মত খুঁজতে খুঁজতে তাঁকে নতুন রূপে শ্রীশ্রীঠাকুরের মধ্যে আবার পেয়েছিলেন, তিনি ইচ্ছা করলে যে কোনও মঠে মহারাজ হ'য়ে বসতে পারতেন কিন্তু রামকৃষ্ণ পাগল প্রফুল্লদা তা করেননি! পাগলের মত ঠাকুর রামকৃষ্ণের কথার মত খুঁজতে খুঁজতে প্রফুল্লদা তাঁর গুরু ঠাকুর রামকৃষ্ণকে আবার এইজন্মেতেই পেয়েছিলেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের মধ্যে! সেই প্রফুল্লদা যিনি দীর্ঘ ৩০বছর ঠাকুরের পরম দায়িত্ব পালন করেছিলেন, ঠাকুরের দেহ রাখার পর ৩৭বছর বেঁচে ছিলেন সেই প্রফুল্লদা ঠাকুরের আসার খবর কি পেয়েছিলেন!? তাঁর অনুলিখিত ২২খণ্ডের 'আলোচনা প্রসঙ্গে'-এর কোথাও কি এমন ইঙ্গিত আছে!? দেখাতে পারবেন লেখক!?
যাই হ'ক, শেষ কথা বলি, ঐ মানুষগুলির নাম আমি মুখে আনতে চাই না,
যারা নিজেদের সৎসঙ্গী পরিচয় দিয়ে শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারবর্গ সম্পর্কে অত্যন্ত নোংরা ভাষায় কথা বলেন আমার জানা নেই তাদের সঙ্গে সৎসঙ্গীরা কথা বলেন কি ভাবে!? কি ভাবে মূল কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত সৎসঙ্গীরা এইসমস্ত বিকৃতদের তাদের পেজে এলাও করেন নোংরা মন্তব্য করার!? এডমিনরা কি ঘুমিয়ে থাকেন!? তাহলে পেজ খোলার দরকার কি!? অবাক লাগে শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারবর্গ সম্পর্কে অত্যন্ত কদর্য ভাষায় কুৎসা রটনাকারী এইসমস্ত বায়োলজিক্যালি ডিফেক্ট মানুষগুলো সম্পর্কে শ্রদ্ধেয় বিবেকদার পরবর্তী শ্রদ্ধেয় দাদাদের ও শ্রদ্ধেয় কাজলদার কোনও শাসন, অনুশাসন আছে কি নেই!? তাহলে কি ধরে নেব মহাভারতের পরম জ্ঞানী ও মহাবীর ভীষ্ম-রা যুগে যুগে ফিরে আসেন পুরুষোত্তমের সঙ্গে সঙ্গে!?!?!?!?


আর যদি দয়াল শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র আবার নেবে আসেন তাহলে অসুবিধে কোথায়!? কেউ বলেছে অসুবিধা বা আপত্তির কথা!? এই পুনরায় আসার প্রসঙ্গের সঙ্গে ঠাকুর পরিবারের কুৎসা করার সম্পর্ক কোথায়!? তিনি আবার আসবেন কি আসবেন না তা কি আমার আপনার বা কোনও লেখকের চাওয়া না চাওয়ার উপর নির্ভর করে!? তিনি যদি আবার নাবার প্রযোজন মনে করেন তাহলে কারও বাবার ক্ষমতা আছে তা লুকিয়ে রাখার? নাকি বাধা দেবার? আর তিনি আবার আসবেন কিনা তার থেকে তিনি যা যা আমাদের করতে বলে গেছেন তা করা ও সেদিকে নজর দেওয়ায় কি ইষ্টপ্রাণতার লক্ষণ নয়!? সৎসঙ্গী পাঠকেরা সত্যি করে ভেবে বলুন তো ঠাকুর দেহ রাখার পর দীর্ঘ ৫০ বছর যাবৎ এই বড়দা বিরোধীরা ঠাকুরের কাজ কি করেছেন আর শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারবর্গের গুষ্টির কি তুষ্টি ক'রেছেন ও ক'রে চলেছেন!? এরা শ্রদ্ধেয় বিবেকদা ও শ্রদ্ধেয় কাজলদাদার ইষ্টপ্রতিষ্ঠা ও ইষ্টের স্বার্থ প্রতিষ্ঠার সৈনিক!?!?!?!? যদি তাই-ই হয় তাহ'লে ঠিক আছে, তাই-ই হ'ক।
কারণ বিচারের ভার আপন হাতে নিতে ঠাকুর বারণ করেছেন।
আজ এই পর্যন্ত। জয়গুরু।
( লেখা ২৩শে জুন'২০২০)

No comments:

Post a Comment