Powered By Blogger

Thursday, December 5, 2024

কয়েকটি কথাঃ সুপ্রিতী ধরের পাপ।

সুপ্রিতী ধরের উপর অনেকের রাগ দেখলাম তাদের মন্তব্যে ঝরে পড়েছে। রাগটা কার উপরে ঠিক বুঝলাম না। তবে এটা বোঝা গেল একটা চাপা রাগ থেকে এই লেখাগুলি লেখা হয়েছে। উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপার মতন হয়ে গেল ব্যাপারটা। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে অনেক অযৌক্তিক যুক্তির পশরা সাজিয়ে বক্তব্যকে দাঁড় করানোর অহেতুক অসফল চেষ্টা হয়েছে মাত্র। সমাজের অনেক অন্যায়কে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরে আর একটা অন্যায়কে ডিফেন্ড করা ও সরাসরি অন্যায়কে অন্যায় বলতে না পারা আর যাই হোক বাহাদুরির পর্যায়ে পড়ে না এবং সুস্থ মানসিকতার পরিচয় বহন করে না। একজন সমাজের একটা অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই তাকে কথার মারপ্যাঁচে সমাজের অন্য আরও অন্যায়ের যে অন্যায়ের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্কই নেই সেই অন্যায়ের সমর্থক করে তুলতেই হবে নিজেকে আরও বড় সাচ্চা প্রতিবাদী হিসাবে জাহির করার জন্য, এতে আর যাই হোক নিজেকে সাচ্চা প্রতিবাদী সাব্যস্ত করা যায় না। যেমন যায় না শাক দিয়ে মাছ ঢাকা। নিজের লেখাকে মূল্যবান করে তোলার জন্য নারী-পুরুষের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়কে, শব্দকে শালীনতার মোড়কে অশালীন ভাবে প্রয়োগ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা হয়নি সমালোচকদের। বাহাদুরের বাহাদুরির ভঙ্গিতে সিরিয়াল তৈরীর বেশ্যাবুদ্ধিজীবীদের দায় চাপিয়ে দিয়েছেন প্রতিবাদীর উপরে। বাহাদুরের বাহাদুরিই বটে!!!!!!!! যে অন্যায়ের প্রতিবাদের জন্য অন্যায়কারীরা আজ নিজেদের ভুল বুঝতে সক্ষম হয়েছে, নিজেদের ভয়ংকর ক্ষমাহীন চরম ভুল সম্পর্কে আজ তারা লজ্জিত, যারা আজ তাদের মায়ের মুখোমুখি হতে গিয়ে তাদের চোখে ওই মূর্তি ভেসে উঠছে, যারা আজ লিখিতভাবে তাদের নোংরা কাজের জন্য গোটা নারী তথা মানব জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে, যে বা যারা আজ এই প্রতিবাদকে তাদের ঘুমন্ত মনুষ্যত্বকে, চেতনাকে, সুস্থ মানসিকতাকে, তাদের ভয়ংকর অজ্ঞানতাকে জাগাবার হাতিয়ার বলে মনে ক'রে সশ্রদ্ধ চিত্তে, অনুতপ্ত হৃদয়ে গ্রহণ করেছে, এই প্রতিবাদীকে 'মা' বলে সম্বোধন করে জীবনের অন্ধকার পথ থেকে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেছে সেই প্রতিবাদকে, সেই প্রতিবাদীকে প্রতিবাদীর সমালোচকদের মনে হয়েছে 'পাতি প্রতিবাদ আর বিকৃত মস্তিষ্ক'!!!!!!!!!!!!!!! বাঃ চমৎকার বন্ধু! চমৎকার বিশ্লেষণ!!!!!!!!!!! আপনি বা আপনারা যে অন্যায়কারীর সমর্থনে প্রতিবাদীকে উলঙ্গ করতে, প্রতিবাদীর প্রতিবাদকে লোকের সেন্টিমেন্ট জাগাবার পাতিকথা বলে অভিহিত করেছেন সেই অন্যায়কারীর সমর্থন আপনি বা আপনাদের মতন 'আশ্চর্য জীব' রা পাবেন তো ? এই প্রসঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই মনে পড়ে গেল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা কবিতাঃ "অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে যেন তৃণ সম দহে"। আপনাদের মতন সমাজকে শুদ্ধ করার মহান পূজারীদের চেতনার জন্য ঐ অনুতপ্ত অপরাধী ছেলেটির পোষ্ট করা বয়ান ও ঐ প্রতিবাদী মায়ের উদ্দেশ্যে লিখিত বক্তব্য এখানে তুলে ধরলাম।
"প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি পুরো জাতির কাছে এবং ফেসবুক হোল্ডারদের কাছে।
আরো ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আমার শ্রদ্ধেয় নারী জাতির কাছে।
আমি জানি আমিসহ বন্ধুরা মিলেযে কাজটি করেছি তা ক্ষমার অযোগ্য।
তারপরেও আমাকে আপনাদের একজন সন্তান, আপনাদের একজন ভাই বা বন্ধু হিসেবে নিয়ে আমাদেরকে ক্ষমা করবেন।
আমি জানি আমরা যে কাজটি করেছি এই জঘন্য কাজের জন্য আমাদেরকে হয়তো সন্তান, ভাই বা বন্ধু হিসেবে মেনে নিতে আপনাদের অনেক কষ্ট হবে।
তারপরেও অামরা অামাদের কৃতকর্মের ভুল অনুধাবন করতে পারায় অামরা লজ্জিত। সেই সাথে লজ্জিত অামাদের পিতা মাতা এবং আত্মীয়- স্বজন।
অামরা বুঝতে পেরেছি, মানবতার অাদালতে অাপনাদের দেওয়া সাজা। এই সাজা যে এতো কঠিন হবে তা যদি অাগে বিন্দুমাত্র উপলব্ধি করতে পারতাম, তাহলে এধরনের একটি জঘন্য কাজে জড়িত হতাম না।
অামরা কাজটি করার পর অামাদের ভুল বুঝতে পেরেছি। অামরাও এখন অাপনাদের সাথে একই সুরে প্রতিবাদের সাথে একমত পোষণ করছি এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের কাজ অামাদের বা অন্য কোন পুরুষ দ্বারা সংঘটিত না হয় তার জন্য সতর্ক থাকবো বলে কথা দিচ্ছি। অাবারও অাপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। অাশা করি অাপনারা অামাদের এই কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা করবেন। অাপনাদেরকে বিনয়ের সাথে শ্রদ্ধা জানিয়ে শেষ করছি”।
ছেলেটি আরও লিখেছে, “মেম, আমাদের বাবা-মা আমাদের এই ঘটনাটা নিয়ে আমাদের অনেক অপমান করেছেন। এমন কী তারা আমাদেরকে ছেলে হিসেবে বলতেও লজ্জা পাচ্ছেন। মেম, আজকে বাইরে বের হয়ে আমি মানুষকে মুখ দেখাতে পারিনি। সবাই নানান কথা বলছেন। সবার কাছে ঘৃণার পাত্র হয়ে গেছি। মেম, বিশ্বাস করেন, আমরা যদি জানতাম এই ছবিটা এমন প্রবলেম করবে আমরা কখনোই তা তুলতাম না। মেম, আপনি আমার মায়ের মতো। আজকে আমার মায়ের মনে যে কষ্টটা বইছে আমি আগে জানলে কখনোই এই কাজটা করতাম না। মেম, আমাদের ছবিটা দয়া করে রিমুভ করে আমাদেরকে ভুল শুধরানোর সুযোগ দিন"।
( লেখা ৬ই ডিসেম্বর'২০১৫)

No comments:

Post a Comment