Powered By Blogger

Wednesday, December 18, 2024

কবিতাঃ সময় ও দয়াল আমার।

সময় যে কখন কোথায় নিয়ে যায়,
সময় যে কখন কি নেয় ছিনিয়ে!
সময় যে কখন কি সাজিয়ে রাখে,
সময় যে কখন কি দেয় ফিরিয়ে!
সময় যে কখন কি লিখে রাখে
সময় যে কখন কি রূপ নেয়!
সময় যে কখন কি আঁকে
কেউ জানি না আমরা তা হায়!


কোথায় জন্ম, কোথায় মৃত্যু,
কোথায় শৈশব, যৌবন, বড় হওয়া!
আর কোথায় বা বিকেলের ফুল হয়ে
দিন কাটানো, অচেনা অজানার বুকে
অবশেষে ঝ'রে পড়া!! কেউ কি জানো তা?


মন ভাঙে তাই শরীর ভাঙে। শরীর ভাঙে
তাই ঘরে ফিরে যাওয়ার ডাক আসে।
এমনিভাবে কান্না হ'য়ে ঝ'রে পড়ে
না পাওয়ার বেদনা সব আকাশে বাতাসে।
একাকী ব'সে কখনো বারান্দায় রোদ্দুরে,
কখনও বা নির্জনতায় ঘেরা বাতায়নে
শীতের বিষন্ন দুপুরে স্মৃতি হ'য়ে ভেসে আসে
যত মনের মণিকোঠায় সযত্নে পরতে পরতে
রক্ষিত ছবি দেখি আর ভাবি, ভাবি আর ভাসি
আঁখিজলে স্মৃতির অতল তলে হারিয়ে।


স্মৃতি মধুর কিন্তু বড় বেদনাময়।
দুঃখ, বেদনা অন্তরে চাপা যত যাতনা
ফিরে ফিরে আসে নিস্তদ্ধ, নির্জনতা মাঝে
নিয়ে যেতে চায় অলীক মায়ায় ঘেরা সাজে
আর ফিক ক'রে শয়তানী হাসি হেসে বলে,
যাওয়ার সময় হয়েছে আয় চলে আয়!


হঠাৎ কে যেন ভয়ংকর হুঙ্কারে বেরিয়ে আসে
কালাপাহাড় হয়ে বুকের ভেতর থেকে আর
ত্রাসে সন্ত্রাসে ভিতর বাহির কাঁপিয়ে আকাশের
বুক চিঁড়ে প্রচন্ড রাগত স্বরে ব'লে ওঠে
চোখ পাকিয়ে বিস্ময়ে দৃপ্ত কর্কষ কন্ঠে,
শালা! কেন মরছো অভিমানে কুরে কুরে?
দুঃখ, বেদনা আর হতাশায় চাও যেতে মরে?
কে কার? কার জন্য কে? তুমি কার? কে তোমার?
কেন বাজাও অকারণ ব্যর্থতার বিন?
কার জন্যে ভেবে ভেবে মরছো রাত্রদিন?
সময়কে সময়ের কাজ করতে দাও
আর তুমি করো তোমার কাজ।
জানি সময় সবসে বড়া বলবান;
তার থেকেও বলবান তোমার ঠাকুর।
সময়কে কে দেখেছে? কেউ দেখেনি;
তুমিও কখনো দেখনি।
কিন্তু ঠাকুরকে তুমি দেখেছো,
পড়েছো তাঁর শত সহস্র অভয় বাণী।
ঠাকুরকে যদি না দেখে থাকো তবে
আচার্যদেবকে দেখেছো, দেখেছো তাঁর
অপূর্ব দেহ সৌষ্ঠব, মিষ্টি মধুর কণ্ঠস্বর
আর ভুবন ভোলানো তাঁর রূপকথার হাসি!
শুনেছো তাঁর ভরসা দীপ্ত সমস্যা সমাধানী।
তাহ'লে ভয় কি? ডর কিস বাত কি?
দয়াল তোমার বলছে হেঁকে,
হাম হ্যায় না! ম্যাঁয় হুঁ না!
শালা! শুনতে কি পাওনা।
এতদিন তোমার সাথী ছিল যারা
সকাল থেকে সন্ধ্যে সত্যি ভেবে তাদের
ছিল মিথ্যের পিছনে আহাম্মকি ঘুরে মরা!
মধু ছিল ভরা তোমার ঘড়া ঘড়া তাই ছিল
পাছে পাছে ঘোরা আর সবল কাঁধে দিয়ে ভর
ছিল সুপ্ত ইচ্ছা, পাড়ে উঠে পড়া।
তা'তে ক্ষতি কি? "জীবনের অথৈ নদী
পার হয় তোমাকে ধ'রে দুর্বল মানুষ যদি?"
তোমায় ধ'রে পায় যদি কেউ জীবন খুঁজে
পাক না, পরে তোমায় ছেড়ে যাক না;
দোষের কি? অথৈ নদী পেরিয়ে তুমি তারে
তুলে দিলে তো পাড়ে! এমনিভাবে ধ'রে
ঘরে যদি ফেরে তোমার প্রিয় আত্মজন
জীবন খুঁজে পাবে সেথায় দয়াল প্রভু
আছেন যেথায়! এর থেকে জীবনে আর
প্রাপ্তি আছে কিছু কি তোমার?
বলতে পারো আমার সুজন?


তাই ওঠো, জাগো, হ'ক শুরু আবার
তোমার পরশে জুড়িয়ে যাক অশান্ত হৃদয়,
মরা প্রাণে আসুক জোয়ার দয়ালের নামে
নতুন ক'রে জাগাও প্রাণ সবার। ( লেখা ১৮ই ডিসেম্বর/২০২৩)

No comments:

Post a Comment