"আমরা ভাসি কথার স্রোতে, তুমি বলো জীবন দিতে।"---শ্রীশ্রীঅবিনদাদা।
'শ্রীশ্রীঅবিনদাদা' অনেক আগেই তাঁর যৌবনের শুরুতেই আমাদের বিরাশী সিক্কার এক থাপ্পর কষিয়ে আমাদের চরিত্রের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন স্বরচিত গানের কলির মধ্যে দিয়ে।
তিনি বলেছিলেন, "দয়াল, তুমি বল জীবন দিতে আর আমরা ভাসি কথার স্রোতে।" সেই কথার স্রোতে ভাসা আমরা সৎসঙ্গীরা এখনও কথার স্রোতে ভাসার প্রমাণ রেখে চলেছি ফেসবুকের বিভিন্ন প্রোফাইলে ভালোবাসার তীব্র দামামা বাজিয়ে। ফল্গুনদীর মতো ব'য়ে চলেছে আমার ভালোমানুষির আবরণে আমার ভিতরে আমার অজান্তে তলে তলে কথার স্রোতে ভাসা শয়তানি স্রোত। শয়তানি প্রবৃত্তি এক ভালোমানুষের ভালোবাসার মোড়কে নিজেকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে মিষ্টি মুখের মধুর হাসি আর চাহনিতে ভরিয়ে আমার অন্তরে চোরের মতো লুকিয়ে থেকে আমাকে দিয়ে শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে ভালোবাসার নাটক রচনা করিয়ে নিয়ে চলেছে ও অভিনয়ের নিখুঁত প্রমাণ দিয়ে চলেছে প্রেম ভালোবাসার এক তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে।
আমার ভিতরে বাস করছে রিপ্রোডাক্টিভ ক্লোনিং প্রক্রিয়ায় তৈরী হওয়া ক্লোনিং জীবের মত ক্লোনিং ভালোবাসা। ফলে আমরা নিজেরাই বুঝতে পারছি না আমার বুকের ভেতরে অবস্থিত ভালোবাসার আসল আর নকলের তফাৎ। আসল ছেড়ে নকলেতে মনটা মজে আছে আমাদের। ফলে ভগবানের ভালোবাসা, হাসি আর শয়তানের ভালোবাসা, হাসি একই রকম হ'য়ে আমার বুকের ভেতরে জন্ম নিয়ে আমার সামনে প্রতিমুহূর্তে উপস্থিত হচ্ছে। কখনও কখনও বা শয়তানের ভালোবাসা, হাসি ভগবানের ভালোবাসা ও হাসির চেয়েও মিষ্টি মধুর হ'য়ে যাচ্ছে; আর তা হয়ে যাচ্ছে রূপে, গুণে, আচার-আচরণে, কথা-বার্তায়, ব্যবহারে সবেতেই। ফলে সাধারণ মানুষ, অতি সাধারণ মানুষ, সহজ-সরল ভালো মানুষ, বোকা মানুষ, ধর্মভীরু মানুষ, আবেগ তাড়িত ভারসাম্যহীন মানুষ আমার ভেতরের শয়তানী ভালোবাসা ও ভগবানের ভালোবাসার মধ্যে তফাৎ করতে পারছে না প্রকৃতি সঞ্জাত মুক্তো আর চাষের মুক্তোর মধ্যে তফাৎ করতে না পারার মতন, পারছে না সুন্দরবনের গাছে গাছে প্রাকৃতিক মধু যাকে Raw Honey ( কাঁচা মধু ) বলে, তাঁর সঙ্গে Processing Honey (প্রক্রিয়াজাত মধু )-র তফাৎ করতে না পারার মতো।
সুন্দরবনের গাছে গাছে মৌমাছি মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত বিভিন্ন ফুল থেকে সংগ্রহ করা মধু মৌচাকে জমা করে তাকে Raw Honey ( কাঁচা মধু ) বলে এবং বাক্সের মধ্যে পোষা মৌমাছি দিয়ে তৈরী করা মধুকে Processing Honey (প্রক্রিয়াজাত মধু ) বলে। এই দুই মধু খাঁটি হ'লেও গুণের অনেক তফাৎ থাকে। তাই যেটা আমি বলতে চেয়েছি তা' হ'লো বাজারে প্রাপ্ত এই দুই মধুর তফাৎ ধরতে পারা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। এই দুই মধুর পার্থক্য ধরতে পারা তো দূর অস্ত বাজারে চিনি, গুড়, কেমিক্যাল মেশানো মধুর নামে যে গরল খাওয়ানো হয় তাই-ই ধরতে পারে না মানুষ। মাঝে মাঝে দেখা যায় বালতি ভর্তি চিনি, গুড়, কেমিক্যাল, রঙ মেশানো তরল পদার্থের মধ্যে একটা চাক ডুবিয়ে দিয়ে তাতে কয়েকটা মরা মাছি ছড়িয়ে দিয়ে মাথায় ক'রে পাড়ায় পাড়ায়, বাড়ির দরজায় দরজায় হাঁক দিয়ে যায় 'খাঁটি মধু, চাক ভাঙা মধু' ব'লে। আর, বোকা মানুষ, অজ্ঞানী মানুষ তা' খাঁটি মধু ভেবে, বিশ্বাস ক'রে কিনে নেয় পরম মমতায়, ভালোবেসে। এই মধুই যখন মানুষ চিনতে পারে না তখন Raw Honey (কাঁচা মধু) ও Processing Honey (প্রক্রিয়াজাত মধু)-এর মধ্যে তফাৎ ধরবে কি করে? ঠিক তেমনি আমি তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা সৎসঙ্গি, আমার ভেতরে শয়তানের হাসি ভগবানের চেয়েও মিষ্টি হ'য়ে চোখে মুখে, আচারে-ব্যবহারে ফুটে উঠেছে আর ছড়িয়ে পড়েছে দিকে দিকে সাধারণ দীক্ষিত মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্যে।
যাই এক, যেটা আমি বলতে চেয়েছিলাম সেটা হ'লো ভালোবাসার কথা, শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে ভালোবাসার কথা। সেটা হ'লো অবিনদাদাকে, অবিনদাদার কথাবার্তা ও কার্যধারাকে বুঝতে পারার কথা।
প্রথমে তাঁর কথাবার্তা ও কার্যধারার কথা বলি। এর আগের পোষ্টে আমি শ্রীশ্রীঅবিনদাদার কথাবার্তা ও কার্যধারা সম্পর্কে বলেছি।
শ্রীশ্রীঅবিনদাদাও শ্রীশ্রীঠাকুরের মতো সময়ের অনেক আগেই এসেছেন। শ্রীশ্রীঠাকুর এসেছিলেন ভবিষ্যৎ পৃথিবীর নকশা আমাদের হাতে তুলে দিতে। কলি যুগ শেষে সত্য যুগে প্রবেশের Transitional period চলছে এখন। এই সত্য যুগে প্রবেশের ক্রান্তিকালের মানুষ যারা সত্য যুগে প্রবেশ করবে তাদের জন্য প্রবেশের Complete Blue print ( সম্পূর্ণ নীল নকশা) তিনি দিয়ে গেছেন। আর কিছু লাগবে না। এবার শুধু সেই নীল নকশা বাস্তবায়নের ব্যাপার। কলি যুগ থেকে সত্য যুগে প্রবেশের পথ তৈরীর চলবে ভয়ংকর প্রস্তুতি। এই ভয়ংকর প্রস্তুতি কল্পনার অতীত। জানতো শ্রীশ্রীঠাকুরের কুকুর এ যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ পরম ভক্ত শ্রীবড়দা, জানতো জন্মসিদ্ধ পুরুষ শ্রীশ্রীদাদা, জানে বর্তমান শ্রীশ্রীআচার্যদেব, শ্রীশ্রীঅবিনদাদার মতো ঈশ্বরকোটি পুরুষ।
তাই শ্রীশ্রীঠাকুরকে সময়ের এত আগে আসতে হয়েছে। তাই তিনি ব'লে গেছিলেন, যা দিয়ে তিনি গেছেন আগামী দশ হাজার বছর আর আর কিছু লাগবে না, আর আসতে হবে না। ঐ ভাব যখন মলিন ও ম্লান হ'য়ে যাবে, উবে যাবার মতো হবে, বিকৃতিতে আচ্ছন্ন হ'য়ে উঠবে তখন মানুষকে ঈশীস্পর্শে সঞ্জীবিত ক'রে তোলবার জন্য তিনি আবার মানুষ হ'য়ে আসবেন, মানুষের মধ্যে তাদেরই একজন হ'য়ে বিচরণ করবেন, আর নিজের আচরণ দিয়ে প্রতি পদক্ষেপেই দেখিয়ে দেবেন, কেমন ক'রে মানুষ ঈশ্বরের হ'য়ে চলতে পারবে সব কিছুর মধ্যে।
শ্রীশ্রীঠাকুর স্থুল শরীর ছেড়ে চলে যাবার পর শ্রীশ্রীঠাকুরের ঔরসজাত ও কৃষ্টিজাত সন্তান, কলিযুগের শেষে নুতন রূপে আবির্ভূত এ যুগের হনূমান, অর্জুন, উপগুপ্ত, সেন্ট পল, আলি, নিত্যানন্দ, বিবেকানন্দ ইত্যাদি ভক্তদের সম্মিলিত রূপ শ্রীশ্রীঠাকুরের কুকুর পরম ভক্ত শ্রীশ্রীবড়দার হাত দিয়ে শুরু হয়েছিল সেই নীল নকশার ক্ষেত্র প্রস্তুতের কাজ, যা শ্রীশ্রীদাদা, বর্তমান শ্রীশ্রী আচার্যদেবের মাধ্যমে প্রবাহিত হ'য়ে চলেছে ক্ষুদ্র থেকে বৃহতের দিকে ধীরে ধীরে। সেই ক্ষেত্র প্রস্তুতের কাজ যা আপাতদৃষ্টিতে বিতর্কিত, সমালোচিত হ'য়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে চলেছে সাধারণ আপামর দীক্ষিতদের মনে কথার স্রোতে ভাসা বিরোধীদের ক্লোনিং ইষ্টপ্রাণতার ঝলকে।
এইসমস্ত ঘরে-বাইরে ক্লোনিং ইষ্টপ্রাণ ব্যক্তিকে চেনা ও তাদের দ্বারা পরিবেশিত নকল মধুর স্বাদ আর প্রকৃত ইষ্টপ্রাণ ব্যক্তিকে চেনা ও তাঁদের পরিবেশিত আসল মধুর স্বাদের মধ্যে তফাৎ করার, পার্থক্য ধরতে পারার ক্ষমতা আমাদের মতো সাধারণ, অতি সাধারণ আই কিউ ( I Q ) লেবেলের অধিকারী সৎসঙ্গীদের পক্ষে সম্ভব নয়। এ যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ভক্ত পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দাকে একইসঙ্গে ঔরসজাত ও কৃষ্টিজাত সন্তান ক'রে নামিয়ে এনেছিলেন শ্রীশ্রীঠাকুর এবারে। কেন তিনি একইসঙ্গে নামিয়ে এনেছিলেন তা রহস্যময় হ'লেও শ্রীশ্রীঠাকুরে সমর্পিত প্রকৃত ইষ্টপ্রাণ, অকপট, করার তীব্র স্রোতে ভেসে চলা নীরব কর্মী মাত্রই জানতে পারেন, বুঝতে পারেন সেই রহস্যের কিঞ্চিৎ। তাঁরাই চিনতে পারে, বুঝতে পারে শ্রীশ্রীঠাকুরের ব'লে যাওয়া "তাঁ'তে অচ্যুত – সশ্রদ্ধ – আনতি-সম্পন্ন, প্রবুদ্ধ-সেবাপ্রাণ,তৎবিধি ও নীতির সুষ্ঠু পরিচারক ও পরিপালক, সানুকম্পি-চর্যানিরত , সমন্বয়ী সামঞ্জস্য - প্রধান,পদনির্লোভ , অদ্রোহী , শিষ্ট-নিয়ন্ত্রক, প্রীতিপ্রাণ" সর্বশ্রেষ্ঠ ভক্তটিকে। এ ছাড়া কারু পক্ষে সম্ভব নয়।
শ্রীশ্রীবড়দার নেতৃত্বে শ্রীশ্রীঠাকুরের দিয়ে যাওয়া সেই নীল নকশার ( Blue print ) ক্ষেত্র প্রস্তুতের কাজের ধাবমান গতির রহস্যময়তায় ঘেরা তাৎপর্য অন্তঃসলিলা ফল্গু নদীর মতো। তা বোঝা সাধারণ সৎসঙ্গীদের পক্ষে সম্ভব নয়।
আর, ক্লোনিং ইষ্টপ্রাণ ব্যক্তিরা বিভিন্ন চ্যানেল খুলে ভিডিওর মাধ্যমে নকল মধু পরিবেশন ক'রে যতই বিরুদ্ধ প্রচার করুক না কেন, যতই সাধারণ সৎসঙ্গী ও অদীক্ষিত মানুষের মগজ ধোলাই ক'রে 'সৎসঙ্গ'-এর উল্কার গতিতে ছুটে চলা রথকে থামানোর চেষ্টা করা হ'ক না কেন সেই ক্ষেত্র প্রস্তুতের কাজের ধারা ও গতিবেগের তীব্রতা যা ব'য়ে চলেছে শ্রীশ্রীবড়দা থেকে শুরু ক'রে শ্রীশ্রীদাদা, শ্রীশ্রীআচার্যদেব ও শ্রীশ্রীঅবিনদাদার মধ্যে দিয়ে তা' রুদ্ধ হওয়ার নয়।
এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে যায় শ্রীশ্রীঠাকুরের কথা, "এইবার করিবো লীলা অতি চমৎকার, আমিই বুঝিতে নারি, অন্যে কি বা ছাড়।"
এইকথা তো স্বয়ং শ্রীশ্রীঠাকুর ব'লে গেছেন তার মর্মার্থ ঘরে-বাইরে আমি, আপনি বুঝবো কি ক'রে ও বিরোধীরা বা অন্যেরা বুঝবে কিভাবে?
এবার আসি আলিপুরদুয়ারের ভিডিও প্রসঙ্গে। ভিডিও তুলতে, ছবি তুলতে বারণ করেছিলেন স্বয়ং শ্রীশ্রীঅবিনদাদা। এবং বলেছিলেন অনুষ্ঠানের দিন মঞ্চের ওপর দাঁড়িয়ে, বলেছিলেন তাঁকে দর্শন করতে, প্রণাম করতে, নিবেদন করতে ভালোবেসে যারা এসেছিলেন তাঁদের সকলের উদ্দেশ্যে। তাঁতে বিরোধীদের ও অন্যান্যদের গাত্রদাহ হচ্ছে কেন? কেন গায়ে মানে না আপনি মোড়লের মতো ফেসবুকে ও ভিডিওর মাধ্যমে সেই অনুষ্ঠানের বক্তব্যের বিরোধীতা করা হচ্ছে? এটা কি অনধিকার চর্চা নয়? ভিডিওতে শ্রীশ্রীঅবিনদাদার বিরোধীতা করার জন্য এত মাখো মাখো ক'রে কথার ফুলঝুড়িতে ক্লোনিং ইষ্টপ্রাণতায় নকল মধু পরিবেশন করার এত প্রয়াস, এত কান্না, এত আব্দার-আবেদন কেন? কে বা কারা কপট চাতুরী করছে আর বদনে হরি হরি বলছে?
এবার আসি আমার গুরুভাইবোনেদের কাছে সরাসরি কিছু প্রশ্ন ও একটা আবেদন নিয়ে।
১) শ্রীশ্রীঅবিনদাদা যখন বলেছেন ভিডিও না করতে, ছবি না তুলতে তাহ'লে আমরা ভিডিও করি কেন? ছবি তুলি কেন?
২) তাঁর অনুমতি নিয়েই তো করতে পারি, তুলতে পারি, তাই না?
৩) আর যখন সমস্ত ভিডিও ডিলিট করা হ'লো তখন কেন এখনো বিভিন্ন প্রোফাইলে ভিডিওর খন্ড খন্ড অংশ প্রকাশ করা হচ্ছে?
৪) কেনই বা আমরা বিরোধীদের সুযোগ ক'রে দিচ্ছি, "কেন খন্ড খন্ড অংশ প্রকাশ করছেন, হিম্মত থাকলে পুরো ভিডিও প্রকাশ করুন"---এই কথা বলার?
৫) ভিডিওর কেন খন্ড খন্ড অংশ প্রকাশ করবো?
৬) যদি ভিডিও প্রকাশ করিই তাহ'লে পুরো ভিডিও কেন প্রকাশ করি না।?
৭) অসুবিধা কি আছে পুরো প্রকাশ করার?
৮) ঐ ভিডিওতে আপত্তিজনক কিছু আছে নাকি?
৯) খন্ড খন্ড ভিডিও প্রকাশ করার মধ্যে দিয়ে কি আমরা সৎসঙ্গীরা, শ্রীশ্রী অবিনদাদাকে যারা আমরা ভালোবাসি তারাই ঘুরিয়ে প্রমাণ করছি না যে ঐ পুরো ভিডিওতে আপত্তিকর কিছু ছিল?
১০) বিরোধীদের হাত কি আমরা শক্ত করছি না?
১১) আমরাই কি বিরোধীদের সমালোচনা করার অস্ত্র তুলে দিচ্ছি না?
১২) আমরাই কি শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে তাঁর নির্দেশ না-মেনে তাঁকে অসম্মান করছি না?
১৩) এর পরেও কি আমরা দাবী করতে পারি আমরা শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে আমাদের জীবনের চেয়েও বেশী ভালোবাসি?
১৪) এটা কি সেই শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী "ঋষি বাদ দিয়ে ঋষিবাদের আরাধনা শুরু হয়েছে" কথার একইরকম অর্থবহনকারী "ঋষিবাদ বাদ দিয়ে ঋষির আরাধনা শুরু হয়েছে" কথার অনুরূপ হ'লো না?
১৫) এটা কি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের সেইসময়ের ভক্তমন্ডলীদের বলা "আমরা দেশবন্ধুকে মানি, কিন্তু তাঁর দর্শন মানি না" কথার মতো হ'লো না?
১৬) শেষ প্রশ্ন, মিডিয়ার হাতে ভিডিও গেল কি ক'রে? আমরা সৎসঙ্গীরা কি মিডিয়ার হাতে ভিডিও তুলে দিয়েছি? তাঁদের কি কোনও প্রতিনিধি ছিল? আমরা সৎসঙ্গীরা শ্রীশ্রীঅবিনদাদার সঙ্গে বেইমানি ক'রিনি তো? এটাই আমার শেষ প্রশ্ন।
শ্রীশ্রীঠাকুর এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন, "একটা মানুষকে ভালোবাসি কিন্তু তাঁর কথা ভালোবাসি না, একটা মানুষকে অর্ধেক ভালোবাসি, অর্ধেক ভালোবাসি না, এটা কি ক'রে সম্ভব হয় তা' আমি জানি না।"
তাই, পরিশেষে আমি অনুরোধ করবো, আমরা যেন এমন না হ'ই। যদি
মনে করি, ভিডিও অসাধারণ, অভূতপূর্ব, অসামান্য, অতুলনীয়, অপূর্ব তাহ'লে নিজেরা তাঁর নির্দেশ অমান্য ক'রে ভিডিও খন্ড খন্ড ক'রে প্রকাশ না ক'রে শ্রীশ্রীঅবিনদাদার কাছে নিবেদন করতে পারি, ভালোবেসে আবেদন, আব্দার করতে পারি ঐ অমূল্য সম্পদ ভিডিও প্রকাশ করতে দেওয়ার জন্য। অনুমতি দেওয়া না-দেওয়া একান্তই তাঁর ব্যাপার। আমরা তা' মাথা পেতে মেনে নেব।
কিন্তু কাউকে যদি ভালোবাসি, তবে তাঁকে পুরোপুরি ভালোবাসবো। তিনি যাই-ই বলবেন তাই মেনে চলবো। এক পায়ে যদি দাঁড়িয়ে থাকতে বলেন তিনি, তাহ'লে আমরা বাচ্চা-বুড়ো, কিশোরকিশোরী, যুবকযুবতী, প্রৌঢ়-প্রৌঢ়া, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সবাই এক পায়েই দাঁড়িয়ে থাকবো। ইয়ং জেনারেশনের উদ্দেশ্যে বলবো, ফেসবুকে তাঁকে ভালোবাসি, ভালোবাসা জানাই লক্ষ কোটি হ্যাশ ট্যাগের মাধ্যমে, এ দেখে ভালো লাগে, খুব ভালো লাগে; তার থেকে আরো ভালো লাগে ও লাগবে আমরা কোটি কোটিতে যদি উদ্ভিন্ন হ'য়ে উঠি তাঁর মুখনিঃসৃত প্রতিটি কথা মেনে চলার মধ্যে দিয়ে, আমরা যদি আমাদের চরিত্র দিয়ে তাঁর গার্ডওয়াল হ'য়ে উঠতে পারি আগামী দিনগুলিতে নিজ নিজ এলাকায় দেশে-বিদেশে, শহরে-নগরে, গ্রামে গঞ্জে, পাহাড়ে-সমুদ্রে যেখানেই যে থাকি না কেন।
আসুন, আমরা ভয়ংকর গার্ড ওয়াল হ'য়ে উঠি শ্রীশ্রীঅবিনদাদার, যার ভয়ে কাল নত হয় এমন গার্ড ওয়াল, কেননা শ্রীশ্রীঠাকুরের কলি যুগ থেকে সত্য যুগে প্রবেশের যে Blue print ( নীল নকশা ), সেই নীল নকশা বাস্তবায়িত হ'তে চলেছে তাঁর রেতধারার মধ্যে দিয়ে। তিনি লীলা করবেন রেত ধারার মধ্যে দিয়ে আগামী দশ হাজার বছর এবং ট্রাঞ্জিশনাল পিরিয়ড-এর শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। তিনি এসেছেন, রেতধারার মধ্যে দিয়ে আবার লীলা করবেন শ্রীশ্রীবড়দা থেকে শ্রীশ্রীঅবিনদাদা ও তাঁর পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে দিয়ে।
আসুন, শপথ নিই আজ, আমরাও আসবো জন্মে জন্মে তাঁর ভয়ংকর গার্ড ওয়াল হ'য়ে, হওয়ার সৌভাগ্য নিয়ে, যে গার্ড ওয়ালের ভয়ে কাল নত হ'য়ে থাকবে। জয়গুরু।
( লেখা ১০ই ফেব্রুয়ারী'২০২৪)