হে আচার্যদেব লহ প্রণাম!
দেখি তোমার মাঝে দয়ালের বিচ্ছুরণ অবিরাম!
দয়ালের চলা, দয়ালের বলা, চোখ, নাক, মুখের
যত ষোলকলা আনে ঝলক পলকে পলকে
তব মুখপানে আচারে আচরণে যেন সীতারাম!
আমার বুকের মাঝে ওঠে দয়ালের ঝড়
প্রশস্থ বুক আমার দয়ালের বাড়ি, দয়ালের ঘর!
দয়াল আমার মাথার 'পরে, দয়ালে আমার দাড়ি
তাঁর নামের তরী চেপে দেব দয়াল দেশে পাড়ি।
কে দিল মোরে এই ইশারা? কি ক'রে পেলাম এই সাড়া?
তুমি যদি না থাকতে মোর আচার্যদেব
আমিও হ'তাম দিশাহারা, হতাম দয়ালের ঘরছাড়া।
হে আচার্যদেব! তুমি লহ মোর প্রণাম!
হে আচার্যদেব! পরাণে পরাণে তব গুণগানে
জেগে ওঠে ভালবাসার হিল্লোল!
দিক হ'তে দিকে আসে ছুটে ছুটে ওঠে কলরব
ভারত ও বহির্বিশ্বের যত ভাষাভাষি আসে কাছাকাছি
শুনি ঐ পদধ্বনি, শুনি ভেসে আসে দেওঘরের কল্লোল!
কেমনে বাসিব ভালো তাঁরে
হৃদয়ে কেমনে জ্বালিবো তাঁর আলো
দয়াল প্রভুর তরে আচারে আচরণে ক'রে করিয়ে
হে আচার্যদেব! শেখাও মোদের,
শেখাও তাঁর মতো হ'তে ভালো।
দয়াল প্রভু শেখালো মোদের আচারে আচরণে সযতনে
শয়নে স্বপনে জাগরণে স্মরণে মননে
ইষ্ট মোদের জীবন দাঁড়া, তিনিই জীবন মেরু,
আঁধার কেটে যখন উঠবে সূর্য ফুটবে আলো
আসবে নোতুন ভোর তাঁকে স্মরণ ক'রে তুমি
ইষ্টার্ঘে জীবন করো শুরু, সিক্ত হবে তোমার
শুষ্ক জীবন নিশ্চিত, হবে শীতল শুষ্ক ভুমি মরু!
এক ও অদ্বিতীয় ইষ্টকে কেমনে বাসিবো ভালো
আচারে আচরণে ক'রে করিয়ে দয়াল মোদের শেখালো!
হে দয়াল! আমার জীবনস্বামী!
রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মোহাম্মদ, মহাপ্রভু আর রামকৃষ্ণ
এক ও অদ্বিতীয় ইষ্ট তাঁরাই, একথা শেখালে তুমি;
শেখালে তুমি কেমনে বাসিবো ভালো জীবন্ত ইষ্টেরে,
কেমনে পুজিব তাঁর চরণ, তুমি প্রভু শেখালে মোদের
চলনহারা চরণ পুজা মরণ!
হে দয়াল! তাই তোমার রাতুল চরণ চুমি।
তাই তুমি আচার্য! তুমিই পুজ্য, তুমিই ধ্রুবতারা!
মোদের আর নেই কেউ আরাধ্য, নেই কেউ তোমা ছাড়া।
হে দয়াল! তুমি তো শেখালে মোদের
বাসিতে ভালো জীবন্ত এক ও অদ্বিতীয় ইষ্টেরে
তোমারে কেমনে বাসিবো ভালো তা শেখাবে কে?
কে শেখাবে নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় তোমারে ভালোবাসিতে?
তুমিই ধ্যান, তুমিই জ্ঞান, তুমিই জীবন সর্বস্ব!
কে শেখাবে মোদের সে কথা, তুমিই একমাত্র আদর্শ?
কেমনে করিবো তোমার যত স্বপ্ন পূরণ?
কেমনে পুরিব তোমা আশ?
কেমনে করিব তোমার স্বর্গ রচনা?
কেমনে করিবো অশুভ নাশ!?
এ কথা শেখালো মোদের আচারে আচরণে
ক'রে করিয়ে শয়নে, স্বপনে, জাগরণে সযতনে
মোদের শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীদাদা আর শ্রীশ্রীবাবাইদাদা
তাই তো তিনারা 'সৎসঙ্গ'-এর আচার্যদেবতা!!
হে আচার্যদেবতা !
তুমি শেখালে মোদের আচারে আচরণে
কেমন ক'রে থাকবে দয়াল সবার পরাণে পরাণে।
শেখালে তুমি, কেমন ক'রে তাঁরে রাখবো বুকে,
বুকে কেমনে জ্বালবো তাঁর আলো,
তাঁরে ভালোবাসার বর্ণ পরিচয় শেখালে মোদের
হে আচার্য! শিশুর মতন জড়িয়ে বুকে,
নিজের বুকের পাঁজর জ্বালিয়ে নিয়ে
ঘোর আঁধারে তুমি পথ দেখিয়ে চলো।
অন্যের অন্যায্য আচার আচরণ যখন তুফান তোলে
আমার মনের মাঝে, অন্তরে বাহিরে হৃদমাঝারে,
বরাভয় হাতে হে আচার্যদেব! তুমি এসে বলোঃ
হও সাবধান! করো পূরণ যতটুকু ফাঁক
আছে তোমার জীবনে তোমা আর তাঁর মাঝে।
সেই ফাঁকে বাসা বাঁধে যত বিষাক্ত পোকামাকড়
আর ময়লা জমে মনে; ছোবলে আর দুর্গন্ধে
ক্ষতবিক্ষত আর ওষ্ঠাগত প্রাণ দয়াল
পারে না থাকিতে সেই অসুস্থ প্রাণে।
তুমি না থাকিলে হে আচার্যদেব! কে শেখাতো মোদের
এমনক'রে দয়ালকে ভালোবাসার কথা!?
আচারে আচরণে সেই ভালোবাসা ফুটিয়ে তোল
নিজ জীবনে আর ক'রে করিয়ে শেখাও প্রাণে প্রাণে
তাই তো তুমি সবার আচার্যদেব! তুমি মোদের দেবতা!!
হে আচার্যদেব! দয়াল যে স্বয়ং অবতারি,
তিনিই ব্রহ্মা, তিনিই বিষ্ণু, তিনি ভোলা মহেশ্বর,
তিনিই মোদের এক ও অদ্বিতীয় জীবন কান্ডারি!
দয়াল আর আমার মাঝে নেই কেউ কোথাও,
নেই আর কোনও কিছু, দয়াল আছে আর আমি আছি
নেই কোথাও কেউ মাঝখানে আর আগুপিছু।
এ সব কথা শেখালো কে? কে শোনালো এই বেদবাণী?
আচরণে সিদ্ধ আচার্যপুরুষ তুমি শেখালে মোদেরে
শেখালো তোমার মধুর চলনখানি!
মিষ্টি ক'রে বললে তুমি, শেখালে সযতনে
জীবন মাঝে আছে শুধু দয়াল-দয়াল আর দয়াল
শয়নে-স্বপনে আর জাগরণে! এর মাঝে আর কিছু নাই
নাই আর কেউ; যদি থাকে জেনো যেনতেন প্রকারেণ
জীবন হবে ভয়াল আর ডাকবে পিছে ফেউ!!!
তুমি শিখিয়েছো মোদের যে যা করে করুক,
প্রাণ যার যা চায় বলুক তুমি চেও না ওদিক পানে,
শুনো না ওসব কথা কানে, দিলে ওদিকে মন
প্রিয়পরম দয়াল তখন যাবে ফিরে, রইবে একলা পড়ে।
তবুও ওরা কোলাহলে ভরা আত্মপ্রতিষ্ঠার তরে
করে ঘেউ ঘেউ বাচালের মতো বকে যে কেউ
অনিষ্ট চিন্তায় নিজেরা নিজেদের মারে আর মরে।
তোমার বিরুদ্ধে অস্ত্র শানায় সকাল থেকে সন্ধ্যে
ভুল কথার বাজায় সানাই, বিষ ঢালে তারা প্রাণে প্রাণে।
আচার্য কথার মিথ্যে ভুল বিকৃত ব্যাখ্যা করে
সকাল সন্ধ্যে তোমাকে মুখ্য ক'রে।
হে আচার্যদেব! তুমি বলেছিলে মোদের
যদি বন্ধুকে বিপদের দিনে দাও পাঁচ টাকা
তবে বিপদের দিনে দিও দশ টাকা তোমার শত্রুদের!
তার প্রয়োজনে ছুটে যেও পাশে যে করেছে তোমার ক্ষতি
দিও না প্রাণে তার দেওয়া ব্যথা ফিরায়ে তারে সযতনে
রেখো না স্মরণে মনের কোনে গোপনে সেই কথা
শয়নে স্বপনে জাগরণে শান্ত হ'ক পবিত্র তব মতিগতি।
হে আচার্যদেব! নিলাম শপথ রাখবো আমি তোমার কথা
জানিয়ে তোমার চরণে আমার প্রণতি।
---প্রবি।
( লেখা ৯ই মার্চ'২০২৩ )
No comments:
Post a Comment