বাণীটি হ’লো,
ইষ্ট, গুরু-পুরুষোত্তম
প্রতীক, গুরু-বংশধর
রেতশরীরে সুপ্ত থেকে
জ্যান্ত তিনি নিরন্তর।
এই বাণী নিয়ে বেশ হাসতে হাসতে খিল্লির মেজাজে জ্ঞান গম্ভীর তত্ত্ব কথা শোনালেন তারা চ্যানেলে বসে। শোনালেন অত্যন্ত অসম্মান অশ্রদ্ধাজনিত শরীরী ভাষায়। শ্রীশ্রীঠাকুর আত্মজ শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের সবাই এদের কাছে খিল্লির পাত্র। অবাক লাগে আবার এদের কাছেই এদের চ্যানেলেই শ্রীশ্রীঠাকুরের অন্য দুই আত্মজদের পরিবারের শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিরা শ্রীশ্রীঠাকুরের জীবন দর্শনের ও শ্রীশ্রীঠাকুরের ব'লে যাওয়া ব্যষ্টি জীবন, সমষ্টি জীবন, সমাজ জীবন, রাষ্ট্র জীবন বৃদ্ধির ওপরে ইন্টারভিউ দেয়।
পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সারা জীবন ধ’রে বলে যাওয়া প্রেম-ভালবাসা, সম্মান-শ্রদ্ধা-ভক্তির গুষ্টির তুষ্টি ক’রে এরা ইষ্টের পতাকা বহন ক’রে চলেছে। আর এদের পৃষ্টপোষক বহু ইষ্টপ্রাণ ভক্তপ্রাণ বাগ্মীপ্রবর ভক্তপ্রবর প্রবীণ সৎসঙ্গী নামধারী অদ্ভুত জীব এদেরই চ্যানেলে ব’সে শ্রীশ্রীঠাকুরের গুণকীর্তন করে। প্রেম-ভালোবাসা-ভক্তির ফোয়ারা ছুটিয়ে কথার স্রোতে ভেসে বদ্ধ পচা দুর্গন্ধময় পরিবেশ রচনা ক’রে চলেছে। যে পরিবেশের কথা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলে গিয়েছিলেন বহু বছর আগে সেই ১৯৩৭ সালের ২৫শে ডিসেম্বর। এই জন্যই তাঁদের দ্রষ্টাপুরুষ বলে। তিনি বলেছিলেন,
“নাগিনীরা চারি দিকে ফেলিতেছে বিষাক্ত নিশ্বাস,
শান্তির ললিত বাণী শোনাইবে ব্যর্থ পরিহাস—’
তাই, এই চারিদিকে ৫৫ বছর ধ’রে বিষাক্ত নিঃশ্বাস ফেলা মিথ্যেবাদী, নিন্দুক, অশ্রদ্ধা ও অপমান প্রদর্শনকারী, নীচ মানসিকতাসম্পন্ন, ইর্ষাকাতর, পরশ্রীকাতর মানুষদের মুখে শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রেম-ভালবাসা-ভক্তি ও শান্তির ললিত বাণী ঠাট্টা, তামাশা, কৌতুকে পরিণত হয়েছে।
পরবর্তী পংক্তিতে কবিগুরু বললেন,
বিদায় নেবার আগে তাই
ডাক দিয়ে যাই
দানবের সাথে যারা সংগ্রামের তরে
প্রস্তুত হতেছে ঘরে ঘরে।
তিনি দ্রষ্টাপুরুষ ছিলেন, তাই তিনি দেখতে পেয়েছিলেন ভবিষ্যৎ পৃথিবী। আর বিদায় নেবার আগে সাবধান ক’রে দিয়েছিলেন বর্তমান পৃথিবীকে সেই দৈববাণীর মতো, তোমারে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বললেন, “ তুমি যা করছো বা ক’রে রেখেছো ভগবান তাই গ্রাহ্য করবেন আর সেগুলির ফলও পাবে ঠিক তেমনি।“ এই কথা বলার পর তিনি বলেছিলেন,
আমার এই কথা আগে আমার উপর প্রযোজ্য তারপর অন্যের উপর। এরপরেই বলেছিলেন,
“ যা ইচ্ছা তাই করবে তুমি তা’ করলে রে চলবে না, ভালো ছাড়া মন্দ করলে পরিস্থিতি ছাড়বে না।“
আর, এরই প্রতিধ্বনি হিসেবে বিজ্ঞানের ভাষায় একই কথা বলা আছে, “Every action has opposite and equal reaction.”
তারই ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।
তাই বিচার তাঁর ওপর। আমি কোনও বিচারক হ’তে আসিনি। আমি শুধু বিশ্লেষণ ক’রে দেখছি ও দেখাতে চাইছি প্রতিটি ভিডিওতে বিরোধীদের প্রচারগুলি ও প্রচারের ভাষা ও শরীরি ভাষাগুলি। নিজে দেখতে ও দেখাতে চাইছি বিশ্লেষণের মাধ্যমে কে বা কারা ও কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক। কারণ বিরোধীরা শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারকে শ্রীশ্রীঠাকুরের ১৯৬৯ সালে দেহ রাখার পর থেকেই ৫৫ বছর ধ’রে নানা বিষয়ে মিথ্যে অভিযোগ এনে শ্রীশ্রীবড়দাকে অশ্রদ্ধা অপমান নিন্দা কুৎসা গালাগালি ক’রে তাঁকে বিকৃত প্রচারকারী আখ্যা দিয়ে নিজেদের অবিকৃত সত্য প্রচারকারী হিসেবে ভূষিত ক’রে নিজেরাই বিচারকের আসনে বসে গেছে। তাই সময় এসেছে কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক তা জানার। দুধ কা দুধ আর পানি কা পানি দেখে নেবার, বুঝে নেবার সময় এসে গেছে তামাম সৎসঙ্গীদের।
আর যা করার,তা' সময় করে অর্থাৎ তিনিই করেন। কারণ সময় সবসে বড়া বলবান। Time is the great healer.
সময় মহান নিরাময়কারী।
তারই ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।
তাই বিচার তাঁর ওপর। আমি কোনও বিচারক হ’তে আসিনি। আমি শুধু বিশ্লেষণ ক’রে দেখছি ও দেখাতে চাইছি প্রতিটি ভিডিওতে বিরোধীদের প্রচারগুলি ও প্রচারের ভাষা ও শরীরি ভাষাগুলি। নিজে দেখতে ও দেখাতে চাইছি বিশ্লেষণের মাধ্যমে কে বা কারা ও কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক। কারণ বিরোধীরা শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারকে শ্রীশ্রীঠাকুরের ১৯৬৯ সালে দেহ রাখার পর থেকেই ৫৫ বছর ধ’রে নানা বিষয়ে মিথ্যে অভিযোগ এনে শ্রীশ্রীবড়দাকে অশ্রদ্ধা অপমান নিন্দা কুৎসা গালাগালি ক’রে তাঁকে বিকৃত প্রচারকারী আখ্যা দিয়ে নিজেদের অবিকৃত সত্য প্রচারকারী হিসেবে ভূষিত ক’রে নিজেরাই বিচারকের আসনে বসে গেছে। তাই সময় এসেছে কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক তা জানার। দুধ কা দুধ আর পানি কা পানি দেখে নেবার, বুঝে নেবার সময় এসে গেছে তামাম সৎসঙ্গীদের।
আর যা করার,তা' সময় করে অর্থাৎ তিনিই করেন। কারণ সময় সবসে বড়া বলবান। Time is the great healer.
সময় মহান নিরাময়কারী।
যাই হ’ক এবার দেখা যাক বাণী পরিবর্তনের ব্যাপারটা। দেখা যাক, আদতে কে বা কারা বাণী
পরিবর্তন করেছে ও কি উদ্দেশ্যে করেছে।
‘স্মৃতি-তীর্থে’ গ্রন্থে শ্রদ্ধেয় প্রফুল্ল কুমার দাসদা এই বাণীর উপরে যে কাঁটাছেঁড়া ক’রে নোতুন রূপে বাণীকে প্রকাশ করেছেন যতি চিহ্নের ব্যবহার ক’রে সেই পরিবর্তিত বাণীর ওপর দেবাশীষবাবু ও সৌভিকবাবু বেশ বিজ্ঞের মতো শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হেয় ক’রে তাদের বক্তব্য রেখেছেন তাদের ভিডিওতে। প্রফুল্লদা কর্তৃক মনগড়া খেয়াল খুশীমতো পরিবর্তিত নিজের বাণী “প্রতীক, গুরু-বংশধর” ও শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী “প্রতীক গুরু বংশধর” এই দুই বাণীকে দেবাশীষবাবু ও সৌভিকবাবু বেশ বেদজ্ঞ পন্ডিতদের মতো প্রফুল্লদাকে ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ মনে ক’রে প্রফুল্লদার মনগড়া মুখ নিঃসৃত বাণীকেই স্বয়ং শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী হিসেবে ধ’রে নিয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের মুখনিঃসৃত বাণীকেই বলাৎকার করতে করতে ঠাকুর আত্মজ শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের খিল্লি উড়িয়েছেন চ্যানেলে বসে। তাদের ব্যাখ্যা ইষ্ট, গুরু-পুরুষোত্তম মানে গুরুপুরুষোত্তমই ইষ্ট। প্রতীক, গুরু-বংশধর মানে গুরু-বংশধর তাঁর প্রতীক অর্থাৎ গুরুর বংশধরমাত্রেই ইষ্টের প্রতীক। এরা যেটা বলছে সেটা হ’লো প্রফুল্লদার দ্বারা পরিবর্তিত বাণীর ব্যাখ্যা। যদি তাই-ই হ’য়ে থাকে তাহ’লে তা ঠাকুর স্বয়ং কেন ক'রে গেলেন না? আর ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ প্রফুল্লদার ধারণা ও ব্যাখ্যাকারীদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী বংশধরমাত্রেই যদি প্রতীক হ’য়ে থাকে তাহ’লে ইতিহাসের বুকে এর আগে শ্রীশ্রীঠাকুর ৭ বার এসেছিলেন, তা কোনওবারই কি তাঁর বংশধরদের সবাই তো দূরের কথা কেউ একজনও তাঁর চলে যাবার পর প্রতীক হ’য়ে বিরাজ করেছেন ইতিহাসের বুকে? দেখাতে পারবেন প্রফুল্লদার এই ইচ্ছাকৃত মনগড়া অবৈধভাবে পরবর্তিত বাণীর সপক্ষে প্রমাণ?
যাই হ'ক দেবাশীষবাবু ও সৌভিকবাবু বলেছেন, রামকৃষ্ণ মিশনের মতো 'সৎসঙ্গ' নাকি ইষ্ট একজন আর গুরু আর একজন এরকম ক'রে নিয়েছিল এই বাণীকে নিয়ে। প্রফুল্লদা নাকি একেবারে ক্লিয়ার ক'রে দিয়ে গেছেন। তা' আসুন দেখি প্রফুল্লদা কি ক্লিয়ার ক'রে দিয়ে গেছেন এবং কি রসদ যুগিয়ে দিয়ে গেছেন এদের।
শ্রীশ্রীঠাকুরের বলা বাণী যেটা অনুশ্রুতি গ্রন্থের ১ম খন্ডের ‘ধর্ম্ম’ বিষয়ের ৬৬ নম্বর বাণীতে আছে তা হ’লো ""ইষ্টগুরু পুরুষোত্তম, প্রতীক গুরু বংশধর"। ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ প্রফুল্লদার মতে ও তাঁর অনুসারী বেদজ্ঞ পন্ডিত দেবাশীষবাবু ও সৌভিকবাবুর ব্যাখ্যা মূল বাণী অনুযায়ী 'প্রতীক গুরু বংশধর' মানে প্রতীক হচ্ছে শুধু বড় ছেলের বংশধর। তারা বলছেন, এর মানে, বড় ছেলের বংশধর শুধু ইষ্টের প্রতীক।। কিরকম মনগড়া ব্যাখ্যা দেখুন। ‘প্রতীক গুরু বংশধর’ বলতে শুধু বড়দার বংশধরদের বোঝাচ্ছে এদের মতে। প্রতীক গুরু বংশধর বলতে অন্য কোনও বংশধরদের বোঝাচ্ছে না। আপনারা যারা আমার ভিডিও শুনছেন তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করুন এটার মানে তাই দাঁড়াচ্ছে কিনা। আর যদি তাই মানে দাঁড়ায় তাহ’লে সেই মানে দাঁড় করানোর দায়টাও তাহ’লে স্বয়ং ঠাকুরের। এইখানে হস্তক্ষেপ করার সাহস পেলেন কোথা থেকে প্রফুল্লদা ও ব্যাখ্যাকারীরা?
যোগ্য ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ প্রফুল্ল দাসদার যোগ্য উত্তরসূরি বেদজ্ঞ পন্ডিত দেবাশীষবাবু ও সৌভিববাবু। কারণ প্রফুল্ল দাসদা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটাকে নিজের মনের মতো ক’রে অবৈধভাবে গড়ে নিয়েছেন যাতে শ্রীশ্রীবড়দাকে কলঙ্কিত করা যায় এবং তার যোগ্য উত্তরসূরি দেবাশীষ ও সৌভিকবাবু নিজেদের বৃত্তি-প্রবৃত্তির চাহিদা ও পছন্দ অপছন্দ অনুযায়ী মনগড়া ধারণায় অভিভূত থেকে দূর্বল পর্যবেক্ষেণ শক্তি ও দুর্বল বিচার শক্তি দ্বারা সর্ব্বজ্ঞ পন্ডিতের মতো গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের মানসিকতায় শ্রীশ্রী বড়দা ও তাঁর পরিবারকে নোংরাভাবে অভদ্র ভাষায় আক্রমণ করেছে শ্রীশ্রীঠাকুরের বিকৃত বাণীকে ভাসা ভাসা ভাবে ব্যাখ্যা ক’রে। সৎসঙ্গের মধ্যেও কাউকে কাউকে দেখেছি এমন ব্যাখ্যার পক্ষে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখতে অর্থাৎ প্রফুল্লদার দ্বারা পরিবর্তিত বাণীর ঐ "ইষ্ট, গুরু-পুরুষোত্তম, প্রতীক, গুরু-বংশধর" লাইনকে সমর্থন ক'রে বক্তব্য রাখতে। এবং পরে শুধরেও নিয়েছেন। আমরা অনেকেই মিসগাইড হয়েছি প্রফুল্লদার এই ব্যাখ্যায়। কারণ প্রফুল্লদা সৎসঙ্গের রত্ন স্বরূপ ছিলেন। তাই তাঁর কথার বিশ্বাসযোগ্যতা আমরা সৎসঙ্গীরা অস্বীকার করতে পারিনি। কারণ অত তলিয়ে দেখার মতো গবেষক মন আমাদের সবার নেই। এই ভিডিও সবাই ধৈর্য নিয়ে দেখবে না সেটাও আমি জানি। তবুও কেউ না কেউ প্রশ্ন তো তুলবেই, আজ না-হয় কাল গবেষকের দৃষ্টিতে। যদি দেখে ভালো ক'রে পুরো ভিডিওটা তবে জটিল চক্রান্তের একটা ধারণা হবে।
‘স্মৃতি-তীর্থে’ গ্রন্থে শ্রদ্ধেয় প্রফুল্ল কুমার দাসদা এই বাণীর উপরে যে কাঁটাছেঁড়া ক’রে নোতুন রূপে বাণীকে প্রকাশ করেছেন যতি চিহ্নের ব্যবহার ক’রে সেই পরিবর্তিত বাণীর ওপর দেবাশীষবাবু ও সৌভিকবাবু বেশ বিজ্ঞের মতো শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হেয় ক’রে তাদের বক্তব্য রেখেছেন তাদের ভিডিওতে। প্রফুল্লদা কর্তৃক মনগড়া খেয়াল খুশীমতো পরিবর্তিত নিজের বাণী “প্রতীক, গুরু-বংশধর” ও শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী “প্রতীক গুরু বংশধর” এই দুই বাণীকে দেবাশীষবাবু ও সৌভিকবাবু বেশ বেদজ্ঞ পন্ডিতদের মতো প্রফুল্লদাকে ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ মনে ক’রে প্রফুল্লদার মনগড়া মুখ নিঃসৃত বাণীকেই স্বয়ং শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী হিসেবে ধ’রে নিয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের মুখনিঃসৃত বাণীকেই বলাৎকার করতে করতে ঠাকুর আত্মজ শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের খিল্লি উড়িয়েছেন চ্যানেলে বসে। তাদের ব্যাখ্যা ইষ্ট, গুরু-পুরুষোত্তম মানে গুরুপুরুষোত্তমই ইষ্ট। প্রতীক, গুরু-বংশধর মানে গুরু-বংশধর তাঁর প্রতীক অর্থাৎ গুরুর বংশধরমাত্রেই ইষ্টের প্রতীক। এরা যেটা বলছে সেটা হ’লো প্রফুল্লদার দ্বারা পরিবর্তিত বাণীর ব্যাখ্যা। যদি তাই-ই হ’য়ে থাকে তাহ’লে তা ঠাকুর স্বয়ং কেন ক'রে গেলেন না? আর ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ প্রফুল্লদার ধারণা ও ব্যাখ্যাকারীদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী বংশধরমাত্রেই যদি প্রতীক হ’য়ে থাকে তাহ’লে ইতিহাসের বুকে এর আগে শ্রীশ্রীঠাকুর ৭ বার এসেছিলেন, তা কোনওবারই কি তাঁর বংশধরদের সবাই তো দূরের কথা কেউ একজনও তাঁর চলে যাবার পর প্রতীক হ’য়ে বিরাজ করেছেন ইতিহাসের বুকে? দেখাতে পারবেন প্রফুল্লদার এই ইচ্ছাকৃত মনগড়া অবৈধভাবে পরবর্তিত বাণীর সপক্ষে প্রমাণ?
যাই হ'ক দেবাশীষবাবু ও সৌভিকবাবু বলেছেন, রামকৃষ্ণ মিশনের মতো 'সৎসঙ্গ' নাকি ইষ্ট একজন আর গুরু আর একজন এরকম ক'রে নিয়েছিল এই বাণীকে নিয়ে। প্রফুল্লদা নাকি একেবারে ক্লিয়ার ক'রে দিয়ে গেছেন। তা' আসুন দেখি প্রফুল্লদা কি ক্লিয়ার ক'রে দিয়ে গেছেন এবং কি রসদ যুগিয়ে দিয়ে গেছেন এদের।
শ্রীশ্রীঠাকুরের বলা বাণী যেটা অনুশ্রুতি গ্রন্থের ১ম খন্ডের ‘ধর্ম্ম’ বিষয়ের ৬৬ নম্বর বাণীতে আছে তা হ’লো ""ইষ্টগুরু পুরুষোত্তম, প্রতীক গুরু বংশধর"। ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ প্রফুল্লদার মতে ও তাঁর অনুসারী বেদজ্ঞ পন্ডিত দেবাশীষবাবু ও সৌভিকবাবুর ব্যাখ্যা মূল বাণী অনুযায়ী 'প্রতীক গুরু বংশধর' মানে প্রতীক হচ্ছে শুধু বড় ছেলের বংশধর। তারা বলছেন, এর মানে, বড় ছেলের বংশধর শুধু ইষ্টের প্রতীক।। কিরকম মনগড়া ব্যাখ্যা দেখুন। ‘প্রতীক গুরু বংশধর’ বলতে শুধু বড়দার বংশধরদের বোঝাচ্ছে এদের মতে। প্রতীক গুরু বংশধর বলতে অন্য কোনও বংশধরদের বোঝাচ্ছে না। আপনারা যারা আমার ভিডিও শুনছেন তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করুন এটার মানে তাই দাঁড়াচ্ছে কিনা। আর যদি তাই মানে দাঁড়ায় তাহ’লে সেই মানে দাঁড় করানোর দায়টাও তাহ’লে স্বয়ং ঠাকুরের। এইখানে হস্তক্ষেপ করার সাহস পেলেন কোথা থেকে প্রফুল্লদা ও ব্যাখ্যাকারীরা?
যোগ্য ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ প্রফুল্ল দাসদার যোগ্য উত্তরসূরি বেদজ্ঞ পন্ডিত দেবাশীষবাবু ও সৌভিববাবু। কারণ প্রফুল্ল দাসদা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটাকে নিজের মনের মতো ক’রে অবৈধভাবে গড়ে নিয়েছেন যাতে শ্রীশ্রীবড়দাকে কলঙ্কিত করা যায় এবং তার যোগ্য উত্তরসূরি দেবাশীষ ও সৌভিকবাবু নিজেদের বৃত্তি-প্রবৃত্তির চাহিদা ও পছন্দ অপছন্দ অনুযায়ী মনগড়া ধারণায় অভিভূত থেকে দূর্বল পর্যবেক্ষেণ শক্তি ও দুর্বল বিচার শক্তি দ্বারা সর্ব্বজ্ঞ পন্ডিতের মতো গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের মানসিকতায় শ্রীশ্রী বড়দা ও তাঁর পরিবারকে নোংরাভাবে অভদ্র ভাষায় আক্রমণ করেছে শ্রীশ্রীঠাকুরের বিকৃত বাণীকে ভাসা ভাসা ভাবে ব্যাখ্যা ক’রে। সৎসঙ্গের মধ্যেও কাউকে কাউকে দেখেছি এমন ব্যাখ্যার পক্ষে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখতে অর্থাৎ প্রফুল্লদার দ্বারা পরিবর্তিত বাণীর ঐ "ইষ্ট, গুরু-পুরুষোত্তম, প্রতীক, গুরু-বংশধর" লাইনকে সমর্থন ক'রে বক্তব্য রাখতে। এবং পরে শুধরেও নিয়েছেন। আমরা অনেকেই মিসগাইড হয়েছি প্রফুল্লদার এই ব্যাখ্যায়। কারণ প্রফুল্লদা সৎসঙ্গের রত্ন স্বরূপ ছিলেন। তাই তাঁর কথার বিশ্বাসযোগ্যতা আমরা সৎসঙ্গীরা অস্বীকার করতে পারিনি। কারণ অত তলিয়ে দেখার মতো গবেষক মন আমাদের সবার নেই। এই ভিডিও সবাই ধৈর্য নিয়ে দেখবে না সেটাও আমি জানি। তবুও কেউ না কেউ প্রশ্ন তো তুলবেই, আজ না-হয় কাল গবেষকের দৃষ্টিতে। যদি দেখে ভালো ক'রে পুরো ভিডিওটা তবে জটিল চক্রান্তের একটা ধারণা হবে।
আসুন আমরা দেখে নিই শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীর ওপর কলম চালানোর মত অহংকার, ঔদ্ধত্ব আর ধৃষ্টতা প্রকাশকারী শ্রীশ্রীঠাকুরের নারায়ণী কেরানী শ্রুতিধর শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদার মনগড়া বাণীর প্রেক্ষাপট সঠিক কিনা। যার ওপর দাঁড়িয়ে বাণীর অর্থ বিকৃত ক'রে বাণী বিকৃতির অপবাদ দিয়ে যাচ্ছে শ্রীশ্রীবড়দাকে।
ইষ্ট, গুরু-পুরুষোত্তম
প্রতীক, গুরু-বংশধর
রেতশরীরে সুপ্ত থেকে
জ্যান্ত তিনি নিরন্তর।
ঠিক এরকমভাবে বাণীটা আছে শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদার বই ‘স্মৃতি-তীর্থে’। বইটি প্রথম প্রকাশ হয় ১৮ই অক্টোবর ১৯৯১ সালে বিজয়া দশমীর দিন শ্রীশ্রীঠাকুরের শুভ ১০৪তম জন্মোৎসব উপলক্ষে। আজ থেকে অর্থাৎ ২০২৪ সাল থেকে ৩৩ বছর আগে। আর, দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ হয় ৫ বছর পর ১৯৯৬ সালে।
আর,
ইষ্টগুরু-পুরুষোত্তম
প্রতীক গুরু বংশধর,
রেত-শরীরে সুপ্ত থেকে
জ্যান্ত তিনি নিরন্তর। ৬৬
এই বাণীটা আছে অনুশ্রুতি ১ম খন্ডের ‘ধর্ম্ম’ বিষয়ের ৬৬ নম্বর বাণীতে। এই বইটি প্রথম প্রকাশ হয় ১৯৪৯ সালে অর্থাৎ আজ থেকে (২০২৪) ৭৫ বছর আগে এবং শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদার বই ‘স্মৃতি তীর্থে’ প্রকাশের (১৯৯১) ৪২ বছর আগে। শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদা দেহ রেখেছেন ২০০৬ সালে ৯৪ বছর বয়সে। অর্থাৎ তাঁর মৃত্যুর ১৫ বছর আগে ১৯৯১ সালে তিনি তাঁর গ্রন্থ ‘স্মৃতি-তীর্থে’ প্রকাশ করেছিলেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৭৯ বছর। সেই বইয়ে আছে এই বাণীটার ব্যাখ্যা।
১৯৪৯ সালে অনুশ্রুতি ১ম খন্ড বই যখন প্রকাশ হয় তখন শ্রীশ্রীঠাকুরের বয়স ছিল ৬১ বছর। আর শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদার বয়স ছিল ৩৭ বছর।
৭৯ বছর বয়সে তিনি ‘স্মৃতি তীর্থে’ বইয়ে প্রকাশ করলেন এই বাণীটা নানা যতি চিহ্ন প্রয়োগ করে। অর্থাৎ প্রফুল্লদার সেই ৩৭বছর বয়সে প্রকাশিত হওয়া বইয়ের বাণী ৪২ বছর পর অর্থাৎ ৭৯ বছর বয়সে তাঁর নিজের বই ‘স্মৃতি তীর্থে’ গ্রন্থে প্রকাশ করলেন ঠাকুরের বাণীটা পরিবর্তন ক’রে শব্দের মধ্যে কমা, হাইফেন ইত্যাদি যতি চিহ্নের প্রয়োগ ঘটিয়ে নিজের বাণী রূপে, যখন শ্রীশ্রীঠাকুর দেহ রূপে অবস্থান করছেন না, তখন। শ্রীশ্রীঠাকুরের দেহ রাখার ২২ বছর পর অর্থাৎ ঠাকুর দেহ রেখেছেন ১৯৬৯ সালে+২২ বছর অর্থাৎ ১৯৯১ সালে আলাদা ক’রে ‘স্মৃতি-তীর্থে’ বই ছাপিয়ে তাঁকে নোতুন ক’রে এই বাণীটা যতি চিহ্ন সহ প্রকাশ করতে হ’লো। কেন? কেন প্রফুল্লদাকে হঠাৎ ৭৯ বছর বয়সে লিখতে হ’লো তার ‘স্মৃতি তীর্থে’ বইয়ে এই ছড়া প্রসঙ্গে, আমি উনার লেখাটা পড়ে শোনাচ্ছি, তিনি লিখেছেন,
“এই ছড়াটির শ্রুতিলিখন আমি পাবনায় লিখি। যেমন শুনি তাতে উপরোক্ত রকমে বিরামচিহ্ন প্রকরণ হওয়া উচিত। এর মানে এই যে, গুরুপুরুষোত্তমই হলেন ইষ্ট। এবং গুরুপুরুষোত্তমের বংশধর হলেন তাঁর প্রতীক যাঁকে দেখলে তাঁর স্মৃতির উদ্দীপন হয়। বংশধরদের মধ্যে শারীরিক সাদৃশ্য অল্পবিস্তর থাকে। তিনি বীজ শরীরে পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে জাগ্রত থাকেন। তাই তাঁর বংশধরদের আমাদের বিহিত ভক্তি শ্রদ্ধা করা উচিত। অর্থাৎ ঘুরিয়ে তিনি যা বললেন।
প্রফুল্লদা তাঁর বয়ানে কি বললেন, “যেমন শুনি তাতে উপরোক্ত রকমে বিরামচিহ্ন প্রকরণ হওয়া উচিত।“ হঠাৎ কেন তাঁর ৭৯ বছর বয়সে ঠাকুরের দেহ রাখার ২২ বছর পর মনে হ’লো এই বাণীতে যতি চিহ্ন বা বিরাম চিহ্ন যোগ হওয়া উচিত? শ্রীশ্রীঠাকুরের যখন ৬১ বছর বয়স ও শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদার বয়স ৩৭ বছর বয়স সেই সময় যখন অনুশ্রুতি ১ম খন্ড ছড়ার বই প্রথম প্রকাশ হয় তখন কেন প্রফুল্লদা বই প্রকাশ হওয়ার আগে শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে এই “ইষ্ট গুরু-পুরুষোত্তম” বাণীতে যতি চিহ্ন ব্যবহার করা উচিত, এই উচিত কথা তুলে ধরলেন না? তিনি কি তাঁর এই শেষ বয়সে আসা এই 'উচিত' প্রশ্নের সংশয় নিয়ে ঠাকুরের সঙ্গে ১৯৪৯ সালে আলোচনা করেছিলেন? এবং পরবর্তী সময়ে এই বাণী প্রকাশের সময় সাল ১৯৪৯ থেকে ১৯৬৯ সাল ঠাকুরের মহাপ্রয়াণের সাল বা বছর। এই ২১ বছর ঠাকুরের সঙ্গে সংগ করার সময় পর্যন্ত তখন কি তাঁর এই যতি চিহ্নের কথা মাথায় এসেছিল? তিনি কি এই ২১ বছরে একবারও তাঁর এই যতি চিহ্ন থাকা উচিত এই কথা তুলে ধরেছিলেন বা বাণীটা নিয়ে কখনো আলোচনা করেছিলেন ঠাকুরের সঙ্গে? এতদিন পর কেন তাঁর মাথায় এলো? এবং কি উদ্দেশ্যে এলো? কেন তিনি ১৯৬৯ সালে ঠাকুরের দেহ রাখার ২২ বছর পর অর্থাৎ ১৯৯১ সালে এবং ১৯৪৯ সালে প্রথম ছড়ার বই অনুশ্রুতি ১ম খন্ড বই প্রকাশের দীর্ঘ ৪২ বছর পর ১৯৯১ সালে তিনি ‘স্মৃতি তীর্থে’ বই প্রকাশ ক’রে তা’তে এই কথা বললেন? হঠাৎ প্রফুল্লদার মনে হ’লো বাণীতে যতি চিহ্ন যুক্ত হওয়া উচিত? এই যতি চিহ্ন ব্যবহার উচিত কিনা সেটা শ্রীশ্রীঠাকুরের মনে হয়নি? এই বাণী প্রসঙ্গে কি ঠাকুরের আলাদা ক’রে কোনও ব্যাখ্যা করা আছে?
ইষ্ট, গুরু-পুরুষোত্তম
প্রতীক, গুরু-বংশধর
রেতশরীরে সুপ্ত থেকে
জ্যান্ত তিনি নিরন্তর।
ঠিক এরকমভাবে বাণীটা আছে শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদার বই ‘স্মৃতি-তীর্থে’। বইটি প্রথম প্রকাশ হয় ১৮ই অক্টোবর ১৯৯১ সালে বিজয়া দশমীর দিন শ্রীশ্রীঠাকুরের শুভ ১০৪তম জন্মোৎসব উপলক্ষে। আজ থেকে অর্থাৎ ২০২৪ সাল থেকে ৩৩ বছর আগে। আর, দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ হয় ৫ বছর পর ১৯৯৬ সালে।
আর,
ইষ্টগুরু-পুরুষোত্তম
প্রতীক গুরু বংশধর,
রেত-শরীরে সুপ্ত থেকে
জ্যান্ত তিনি নিরন্তর। ৬৬
এই বাণীটা আছে অনুশ্রুতি ১ম খন্ডের ‘ধর্ম্ম’ বিষয়ের ৬৬ নম্বর বাণীতে। এই বইটি প্রথম প্রকাশ হয় ১৯৪৯ সালে অর্থাৎ আজ থেকে (২০২৪) ৭৫ বছর আগে এবং শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদার বই ‘স্মৃতি তীর্থে’ প্রকাশের (১৯৯১) ৪২ বছর আগে। শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদা দেহ রেখেছেন ২০০৬ সালে ৯৪ বছর বয়সে। অর্থাৎ তাঁর মৃত্যুর ১৫ বছর আগে ১৯৯১ সালে তিনি তাঁর গ্রন্থ ‘স্মৃতি-তীর্থে’ প্রকাশ করেছিলেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৭৯ বছর। সেই বইয়ে আছে এই বাণীটার ব্যাখ্যা।
১৯৪৯ সালে অনুশ্রুতি ১ম খন্ড বই যখন প্রকাশ হয় তখন শ্রীশ্রীঠাকুরের বয়স ছিল ৬১ বছর। আর শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদার বয়স ছিল ৩৭ বছর।
৭৯ বছর বয়সে তিনি ‘স্মৃতি তীর্থে’ বইয়ে প্রকাশ করলেন এই বাণীটা নানা যতি চিহ্ন প্রয়োগ করে। অর্থাৎ প্রফুল্লদার সেই ৩৭বছর বয়সে প্রকাশিত হওয়া বইয়ের বাণী ৪২ বছর পর অর্থাৎ ৭৯ বছর বয়সে তাঁর নিজের বই ‘স্মৃতি তীর্থে’ গ্রন্থে প্রকাশ করলেন ঠাকুরের বাণীটা পরিবর্তন ক’রে শব্দের মধ্যে কমা, হাইফেন ইত্যাদি যতি চিহ্নের প্রয়োগ ঘটিয়ে নিজের বাণী রূপে, যখন শ্রীশ্রীঠাকুর দেহ রূপে অবস্থান করছেন না, তখন। শ্রীশ্রীঠাকুরের দেহ রাখার ২২ বছর পর অর্থাৎ ঠাকুর দেহ রেখেছেন ১৯৬৯ সালে+২২ বছর অর্থাৎ ১৯৯১ সালে আলাদা ক’রে ‘স্মৃতি-তীর্থে’ বই ছাপিয়ে তাঁকে নোতুন ক’রে এই বাণীটা যতি চিহ্ন সহ প্রকাশ করতে হ’লো। কেন? কেন প্রফুল্লদাকে হঠাৎ ৭৯ বছর বয়সে লিখতে হ’লো তার ‘স্মৃতি তীর্থে’ বইয়ে এই ছড়া প্রসঙ্গে, আমি উনার লেখাটা পড়ে শোনাচ্ছি, তিনি লিখেছেন,
“এই ছড়াটির শ্রুতিলিখন আমি পাবনায় লিখি। যেমন শুনি তাতে উপরোক্ত রকমে বিরামচিহ্ন প্রকরণ হওয়া উচিত। এর মানে এই যে, গুরুপুরুষোত্তমই হলেন ইষ্ট। এবং গুরুপুরুষোত্তমের বংশধর হলেন তাঁর প্রতীক যাঁকে দেখলে তাঁর স্মৃতির উদ্দীপন হয়। বংশধরদের মধ্যে শারীরিক সাদৃশ্য অল্পবিস্তর থাকে। তিনি বীজ শরীরে পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে জাগ্রত থাকেন। তাই তাঁর বংশধরদের আমাদের বিহিত ভক্তি শ্রদ্ধা করা উচিত। অর্থাৎ ঘুরিয়ে তিনি যা বললেন।
প্রফুল্লদা তাঁর বয়ানে কি বললেন, “যেমন শুনি তাতে উপরোক্ত রকমে বিরামচিহ্ন প্রকরণ হওয়া উচিত।“ হঠাৎ কেন তাঁর ৭৯ বছর বয়সে ঠাকুরের দেহ রাখার ২২ বছর পর মনে হ’লো এই বাণীতে যতি চিহ্ন বা বিরাম চিহ্ন যোগ হওয়া উচিত? শ্রীশ্রীঠাকুরের যখন ৬১ বছর বয়স ও শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদার বয়স ৩৭ বছর বয়স সেই সময় যখন অনুশ্রুতি ১ম খন্ড ছড়ার বই প্রথম প্রকাশ হয় তখন কেন প্রফুল্লদা বই প্রকাশ হওয়ার আগে শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে এই “ইষ্ট গুরু-পুরুষোত্তম” বাণীতে যতি চিহ্ন ব্যবহার করা উচিত, এই উচিত কথা তুলে ধরলেন না? তিনি কি তাঁর এই শেষ বয়সে আসা এই 'উচিত' প্রশ্নের সংশয় নিয়ে ঠাকুরের সঙ্গে ১৯৪৯ সালে আলোচনা করেছিলেন? এবং পরবর্তী সময়ে এই বাণী প্রকাশের সময় সাল ১৯৪৯ থেকে ১৯৬৯ সাল ঠাকুরের মহাপ্রয়াণের সাল বা বছর। এই ২১ বছর ঠাকুরের সঙ্গে সংগ করার সময় পর্যন্ত তখন কি তাঁর এই যতি চিহ্নের কথা মাথায় এসেছিল? তিনি কি এই ২১ বছরে একবারও তাঁর এই যতি চিহ্ন থাকা উচিত এই কথা তুলে ধরেছিলেন বা বাণীটা নিয়ে কখনো আলোচনা করেছিলেন ঠাকুরের সঙ্গে? এতদিন পর কেন তাঁর মাথায় এলো? এবং কি উদ্দেশ্যে এলো? কেন তিনি ১৯৬৯ সালে ঠাকুরের দেহ রাখার ২২ বছর পর অর্থাৎ ১৯৯১ সালে এবং ১৯৪৯ সালে প্রথম ছড়ার বই অনুশ্রুতি ১ম খন্ড বই প্রকাশের দীর্ঘ ৪২ বছর পর ১৯৯১ সালে তিনি ‘স্মৃতি তীর্থে’ বই প্রকাশ ক’রে তা’তে এই কথা বললেন? হঠাৎ প্রফুল্লদার মনে হ’লো বাণীতে যতি চিহ্ন যুক্ত হওয়া উচিত? এই যতি চিহ্ন ব্যবহার উচিত কিনা সেটা শ্রীশ্রীঠাকুরের মনে হয়নি? এই বাণী প্রসঙ্গে কি ঠাকুরের আলাদা ক’রে কোনও ব্যাখ্যা করা আছে?
আর শ্রীশ্রীঠাকুর স্বয়ং জানতেন না এই যতি চিহ বাদ পড়ার কথা। শ্রীশ্রীঠাকুর তো প্রতিটি কথা, প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি লাইন বলার সময় বক্তব্য বিষয়ে ব্যবহৃত শব্দের অর্থভেদে, শব্দের অর্থানুযায়ী, যতি চিহ্নের প্রয়োগ অনুসারে কোথাও জোর দিয়ে, কোথাও হালকা ভাবে, কখনও দ্রুত, কখনো বা ধীর গতিতে বাণী, ছড়া, বক্তব্য বলতেন যাতে অনুলেখকদের কোনও অসুবিধা না হয় বুঝতে ও লিখতে। এতটাই তিনি সতর্ক ও যত্নশীল ছিলেন, যা অভূতপূর্ব!!! এছাড়া বাণী, ছড়া, বক্তব্য বিষয় সবটাই ছাপাবার আগে ঠাকুরকে পড়ে শোনানো হ’তো। শোনার পড়ে তাঁর সম্মতিতে, তাঁর অনুমোদনের পর ছাপানো হ’তো। তখন কি ঠাকুর বলেছিলেন এই যতি চিহ্ন ব্যবহারের কথা? কিংবা প্রফুল্লদা তখন কি এই যতিচিহ্ন প্রয়োগ সম্পর্কে তাঁর উচিতের কথা জানিয়েছিলেন ঠাকুরকে? সেই সময়ে ১৯৪৯ সালে প্রকাশিত বই অনুশ্রুতি ১ম খন্ড কি ছাপাবার আগে বাণীগুলি ঠাকুরকে দেখানো হয়নি? না দেখিয়ে ছাপিয়েছিল? কিংবা বই ছাপিয়ে বেরোবার পর ঠাকুরকে দেখানো হয়নি? তখন কি প্রফুল্লদার চোখে পড়েনি এই বিকৃতি? তখন শ্রীশ্রীবড়দা পন্থী ছিলেন ব'লে তা চোখে পড়েনি? বা পড়লেও চোখ বন্ধ ক’রে ছিলেন? আর অন্তর্যামী সর্ব্বজ্ঞ শ্রীশ্রীঠাকুর সব দেখে চুপ ক’রে ছিলেন? ইংরেজী ১৯৪৯ সাল, বাংলা ১৩৫৬ সালে আজ থেকে ৭৫বছর আগে যখন অনুশ্রুতি ১ম খন্ড ছড়ার বই প্রথম প্রকাশ পায় সেই বইয়ের ভুমিকা লিখেছিলেন শ্রীকৃষ্ণপ্রসন্ন ভটাচার্য্য ও শ্রী প্রফুল্ল কুমার দাস দু'জনেই যৌথভাবে। সেখানে গ্রন্থের ভুমিকায় তাঁরা লিখছেন, “প্রায় সময়ই আমরা তখন শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে থাকতাম----বিভিন্ন মানবের গূঢ় জীবনের সংস্পর্শে ও অপূর্ব নিয়ন্ত্রণে তিনি যে বিচিত্র অভিজ্ঞতা কখনও আলাপে, কখনও আলোচনায়, কখনও ছড়ায় প্রকাশ করতেন, সে কথাগুলি যথাসাধ্য আমরা দুজনেই সংগ্রহ করতাম।“
এই প্রসঙ্গে মনে প্রশ্ন জাগে, শ্রদ্ধেয় শ্রীকৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য্য ওরফে কেষ্টদা যখন প্রফুল্লদার সঙ্গে একইসঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী লিখিত ভাবে ধ’রে রাখার কাজে যুক্ত থাকতেন এবং এই গ্রন্থের ভুমিকা যখন যৌথ ভাবে লেখা হয়েছিল তখন কেষ্টদা কি এই বাণীতে যতি চিহ্ন প্রয়োগ করা উচিত-অনুচিত প্রসংগে কোনও বক্তব্য কখনও কি কোথাও অনুশ্রুতি ১ম খন্ড প্রকাশ হওয়ার পর ১৯৪৯ সাল থেকে কেষ্টদার মৃত্যুর বছর ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত এই দীর্ঘ ১৪ বছরে শ্রীশ্রীঠাকুর থাকাকালীন কখনও কি তিনি তাঁর সহযোগী অনুলেখক শ্রীপ্রফুল্লদার সঙ্গে এই বাণীর যতি সংক্রান্ত প্রয়োগের ব্যাপারে কোনও আলোচনা করেছিলেন বা কোথাও সে সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুরকে, শ্রীশ্রীবড়দাকে বা কাউকে বলেছিলেন কিংবা লিখিত আকারে রেখে গেছিলেন? আছে সেরকম কোনও প্রমাণ? সেই সময়ে কি প্রফুল্লদার মাথায় আসেনি এই যতি চিহ্ন সম্পর্কিত উচিত-অনুচিত প্রশ্ন?
এই প্রসঙ্গে মনে প্রশ্ন জাগে, শ্রদ্ধেয় শ্রীকৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য্য ওরফে কেষ্টদা যখন প্রফুল্লদার সঙ্গে একইসঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী লিখিত ভাবে ধ’রে রাখার কাজে যুক্ত থাকতেন এবং এই গ্রন্থের ভুমিকা যখন যৌথ ভাবে লেখা হয়েছিল তখন কেষ্টদা কি এই বাণীতে যতি চিহ্ন প্রয়োগ করা উচিত-অনুচিত প্রসংগে কোনও বক্তব্য কখনও কি কোথাও অনুশ্রুতি ১ম খন্ড প্রকাশ হওয়ার পর ১৯৪৯ সাল থেকে কেষ্টদার মৃত্যুর বছর ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত এই দীর্ঘ ১৪ বছরে শ্রীশ্রীঠাকুর থাকাকালীন কখনও কি তিনি তাঁর সহযোগী অনুলেখক শ্রীপ্রফুল্লদার সঙ্গে এই বাণীর যতি সংক্রান্ত প্রয়োগের ব্যাপারে কোনও আলোচনা করেছিলেন বা কোথাও সে সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুরকে, শ্রীশ্রীবড়দাকে বা কাউকে বলেছিলেন কিংবা লিখিত আকারে রেখে গেছিলেন? আছে সেরকম কোনও প্রমাণ? সেই সময়ে কি প্রফুল্লদার মাথায় আসেনি এই যতি চিহ্ন সম্পর্কিত উচিত-অনুচিত প্রশ্ন?
আর, ১৯৮৩ সালে অনুশ্রুতি ১ম খন্ড তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশ পায়। সেই সংস্করণে ভুমিকা লিখেছিলেন শ্রদ্ধেয় দেবীপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় দাদা। সেই সময় প্রফুল্লদা বেঁচে ছিলেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৭১ বছর। আর শ্রীশ্রীবড়দার বয়স ছিল ৭২ বছর। শ্রদ্ধেয় দেবীদা সেই ভূমিকায় লিখছেন,অনুশ্রুতি প্রথম খন্ডের তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হ'লো। এই সংস্করণে প্রতিটি ছড়া মূলের সাথে ভালোভাবে মিলিয়ে দেখা হ'লো। তখন প্রফুল্লদার এই যতি চিহ্ন সংযুক্তির কথা, এই পরিবর্তনের কথা মনে হয়নি? এই বিষয়ে দেবীদার কিছু বলা আছে?
আবার, ১৯৮৮ সালে শ্রীশ্রীঠাকুরের ১০০ বছর পূর্ণ হ’লে পরে সেইসময় শ্রীশ্রীঠাকুরের ১০০তম জন্ম উৎসব পালন উপলক্ষে রাত নটার সময় দূরদর্শনে একটা প্রতিবেদন সম্প্রচারিত হয়েছিল। সেই সম্প্রচার অনুষ্ঠানে ‘সৎসঙ্গ’-এর পক্ষ থেকে প্রফুল্লদা শ্রীশ্রীঠাকুরের ১০০ বছর পূর্ণ হওয়ার পবিত্র দিনে ঠাকুর সম্পর্কে স্মৃতিচারণের দায়িত্বে ছিলেন। সেইসময় প্রফুল্লদার বয়স ছিল ৭৬ বছর। তখন তিনি ‘সৎসঙ্গ’-এর সংগেই যুক্ত ছিলেন এবং সৎসঙ্গ-এর হ’য়ে দূরদর্শনে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। সেই সময় শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মশতবার্ষিক সংস্করণ রূপে এই গ্রন্থের চতুর্থ সংস্করণ বের হয়েছিল। সেদিন প্রফুল্লদার মনে হয়নি এই বাণীতে যতি চিহ্ন ব্যবহার হওয়া উচিত?
পরমপুজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা দেহ রাখেন ১৯৯৪ সালে ৮৩ বছর বয়সে পুরী ঠাকুরবাড়িতে ৫ই আগষ্ট সন্ধ্যাবেলায়। আর শ্রীপ্রফুল্লদার মৃত্যু হয় ২০০৬ সালে ৯৪ বছর বয়সে। অর্থাৎ শ্রীশ্রীবড়দার দেহ রাখার ১২ বছর পরে। প্রফুল্লদার বই ‘স্মৃতি-তীর্থে’ প্রকাশ হয় ১৯৯১ সালের ১৮ই অক্টোবর। শ্রীশ্রীবড়দার দেহ রাখার ৩ বছর আগে। তখন বড়দার বয়স ৮০ বছর। আর প্রফুল্লদার বয়স ৭৯ বছর। সমসাময়িক। শ্রীশ্রীবড়দা জীবিত থাকাকালীন শ্রীপ্রফুল্লদা কি শ্রীশ্রীবড়দার সঙ্গে বাণীতে যতিচিহ্ন প্রয়োগ করা উচিত-অনুচিত প্রসঙ্গে কোনও আলোচনা করেছিলেন? আছে এমন কোনও তথ্য? থাকলে প্রফুল্লদা তাঁর ‘স্মৃতি-তীর্থে’ গ্রন্থে উল্লেখ করেননি কেন?
শ্রীশ্রীঠাকুরের অন্য সন্তান শ্রীশ্রীকাজলদাদার সঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুরের অনুপস্থিতিতে এতবড় পরিবর্তন নিয়ে, পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিষয়ে এবং ইংগিতপূর্ণ পরিবর্তনে কোনও আলোচনা করেছিলেন? ক'রে থাকলে পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীকাজলদাদার কি এই বাণী সম্পর্কে ও যতি চিহ্ন সহ বাণী পরিবর্তন সম্পর্কে কোনও বক্তব্য ছিল? প্রফুল্লদা একা এতবড় সিদ্ধান্ত নিলেন, এবং যে বাণী সম্পর্কে নিলেন তা’তে তিনি যে অর্থ ও ইঙ্গিতপূর্ণ বিতর্কের সূচনা করলেন তা’তে সৎসঙ্গ জগতে কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের মধ্যে বিরাট প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়ে সংঘাতের বীজ পুঁতে দিয়ে গেলেন নাকি? কেন এমন করলেন শ্রীশ্রীঠাকুরের ‘নারায়ণী কেরানী’ শ্রুতিধর শ্রীপ্রফুল্ল দা? যা আজ সুযোগসন্ধানী বিরোধীরা নানা চ্যানেলের মাধ্যমে বাণীর বিকৃত অর্থ প্রচার ক’রে চলেছেন, ক'রে চলেছেন শ্রীশ্রীবড়দার বিরুদ্ধে শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী পরিবর্তনের মতো ঘৃণ্য অপবাদ দিয়ে?
শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী পরিবর্তন কে করলেন? শ্রীশ্রীবড়দা করলেন নাকি শ্রীশ্রীপ্রফুল্লদা স্বয়ং শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী পরিবর্তনের মতো দুঃসাহসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন? শ্রীপ্রফুল্লদা নিজেই বলছেন তাঁর গ্রন্থ ‘স্মৃতি-তীর্থে’ যে, “এই ছড়াটির শ্রুতিলিখন আমি পাবনায় লিখি। যেমন শুনি তাতে উপরোক্ত রকমে বিরামচিহ্ন প্রকরণ হওয়া উচিত।“ তিনি বলছেন, ‘উচিত’। উচিত শব্দ প্রয়োগ করেছেন। তিনি একথা বলেননি, যে বাণীটি আমি শ্রীশ্রীঠাকুরের কথা মতো বিরতি চিহ্ন সহযোগে লিখি এবং পরবর্তীতে যতি চিহ্ন বাদ দিয়ে সেই বাণী বিকৃত করা হয়েছে। তিনি তাঁর মত ব্যক্ত করেছেন তাঁর বোধের ওপর দাঁড়িয়ে যে, “বিরামচিহ্ন প্রকরণ হওয়া উচিত”। তা'তে কি শ্রীশ্রীঠাকুরের অনুমোদন ছিল এমন কথা কোথাও বলেছেন প্রফুল্লদা? এরকম কি দরকার ছিল? কোন অধিকারে তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী পরিবর্তনের সাহস দেখালেন? কি ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন প্রফুল্লদা? কি অক্সিজেন যুগিয়ে গেলেন সুযোগসন্ধানী বিরোধীদের জন্য সর্ব্বজনশ্রদ্ধেয় শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রিয় নারায়ণী কেরানী তথা শ্রুতিধর শ্রীপ্রফুল্ল দাস মহাশয়? এই ‘স্মৃতি-তীর্থে’ গ্রন্থে প্রকাশিত সংশোধিত বাণী নিয়ে সুযোগ বুঝে চ্যানেলে চ্যানেলে বিরোধীরা বাণীর অর্থ বিকৃত ক'রে, বিকৃতির অপবাদ দিয়ে চলেছেন শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে। শ্রীশ্রীঠাকুরের অবর্তমানে প্রফুল্লদার ‘স্মৃতি তীর্থে’ গ্রন্থে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রকাশিত শ্রীশ্রীঠাকুরের এই বিকৃত বাণীকে হাতিয়ার ক’রে সুযোগসন্ধানী বিকৃত রুচির মানসিকতার অধিকারী মিথ্যেবাদী কপট অসৎ নিন্দুকেরা আচার্য প্রথা ও আচার্য পরম্পরাকে কলুষিত করার মোক্ষম সুযোগ পেয়ে শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারকে কলঙ্কিত করতে ও সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠানকে কালিমালিপ্ত করতে তীব্র প্রয়াসে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদা শেষ বয়সে এসে গ্রন্থ ছাপিয়ে নিজের মনগড়া ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর দাঁড়িয়ে উচিত-অনুচিত শব্দ প্রয়োগে ঠাকুরের বাণীকে বিকৃত ক’রে জনমানসে ও সৎসঙ্গীদের মধ্যে বিভ্রান্তির বীজ পুঁতে ভয়ংকর সর্ব্বনাশা ধ্বংসের যদি উদাহরণ রেখে যান তাহ’লে সাধারণ সৎসঙ্গী কাকে বিশ্বাস করবে? প্রত্যেকের স্বাধীনতা আছে তাঁর নিজস্ব বক্তব্য রাখার। কিন্তু শ্রীশ্রীঠাকুরের গুরুত্বপূর্ণ কর্মীরা কেন এমন অবৈধ অন্যায় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন যাতে শ্রীশ্রীঠাকুর, সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠান ও সৎসঙ্গীদের ওপর ভয়ংকর আঘাত এসে পড়ে? কেন প্রধান প্রধান ভক্তেরা এমন কাজ করবেন যাতে মনুষ্যত্বের ভিত লুপ্ত হ'য়ে যাবার উপক্রম হয়?কেন তিনি এমন করলেন? কে দেবে এর উত্তর? সাধারণ সৎসঙ্গী যারা সহজ সরল কোনও খোঁজ খবর রাখে না, বই পড়ার বা শোনার ধৈর্য যাদের নেই, যারা সাথে পাছে থাকে না অথচ নিন্দাকথা, মিথ্যে কথা শুনলেই যাদের কান ভারী হ’য়ে যায়, যাদের এত গভীরে গিয়ে সুক্ষ্মভাবে যুক্তির ওপর দাঁড়িয়ে সবটা দেখার চোখ নেই, যারা চিলে কান নিয়ে গেছে শুনে কানে হাত না-দিয়ে চিলের পিছনে ছুটে চলে, যাদের কোনও কিছুতেই কন্সিস্টেন্সি নেই, ধারাবাহিকতার অভাব, বৃত্তি-প্রবৃত্তির চাহিদা ও পছন্দ অপছন্দ অনুযায়ী যারা মনগড়া ধারণায় অভিভূত থাকে, যাদের পর্যবেক্ষেণ শক্তি ও বিচার শক্তি দুর্বল, যারা আর্ত, অর্থার্থী, সেই সমস্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ সৎসঙ্গীদের মানসিক অবস্থা সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুরের নারায়ণী কেরানী শ্রুতিধর শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদা জানতেন না। জানতেন না সুযোগসন্ধানী ছেদকেরা সৎসঙ্গীদের বিভ্রান্ত করার সুযোগ পেয়ে যাবে এর ফলে? তাহ’লে কি শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদার ৭৯ বছর বয়সে বুদ্ধি বিপর্যয় হয়েছিল? তাহ’লে তিনি কি কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন? তাহ’লে কি তাঁর শ্রীশ্রীবড়দার সঙ্গে কোনও মতবিরোধ ছিল যার ফল স্বরূপ তিনি ৮,৮২৯টা ছড়ার মধ্যে এই বাণীটাই বেছে নিলেন কেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই? এই বাণীতেই ও এই একটা বাণীতেই তিনি যতি চিহ্ন প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন? কেন তিনি এই বাণীটাতে যতি চিহ্নের প্রয়োগ ঘটালেন? শ্রীশ্রীঠাকুরের জীবদ্দশায় দীর্ঘ ২০ বছর সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও কেন তিনি তাঁর এই বাণী সম্পর্কিত প্রশ্নের সমাধান করলেন না? কেনই বা তিনি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ৪ বছর শ্রীশ্রীবড়দার জীবোদ্দশায় এই বাণী নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পেয়েও আলোচনা করলেন না? এরকম নানা প্রশ্ন নিয়ে আজকের এই ভিডিও শেষ করলাম। বিচারের ভার ও গ্রহণ-বর্জনের ভার আপনাদের হাতে। নমস্কার। জয়গুরু।
আবার, ১৯৮৮ সালে শ্রীশ্রীঠাকুরের ১০০ বছর পূর্ণ হ’লে পরে সেইসময় শ্রীশ্রীঠাকুরের ১০০তম জন্ম উৎসব পালন উপলক্ষে রাত নটার সময় দূরদর্শনে একটা প্রতিবেদন সম্প্রচারিত হয়েছিল। সেই সম্প্রচার অনুষ্ঠানে ‘সৎসঙ্গ’-এর পক্ষ থেকে প্রফুল্লদা শ্রীশ্রীঠাকুরের ১০০ বছর পূর্ণ হওয়ার পবিত্র দিনে ঠাকুর সম্পর্কে স্মৃতিচারণের দায়িত্বে ছিলেন। সেইসময় প্রফুল্লদার বয়স ছিল ৭৬ বছর। তখন তিনি ‘সৎসঙ্গ’-এর সংগেই যুক্ত ছিলেন এবং সৎসঙ্গ-এর হ’য়ে দূরদর্শনে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। সেই সময় শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মশতবার্ষিক সংস্করণ রূপে এই গ্রন্থের চতুর্থ সংস্করণ বের হয়েছিল। সেদিন প্রফুল্লদার মনে হয়নি এই বাণীতে যতি চিহ্ন ব্যবহার হওয়া উচিত?
পরমপুজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা দেহ রাখেন ১৯৯৪ সালে ৮৩ বছর বয়সে পুরী ঠাকুরবাড়িতে ৫ই আগষ্ট সন্ধ্যাবেলায়। আর শ্রীপ্রফুল্লদার মৃত্যু হয় ২০০৬ সালে ৯৪ বছর বয়সে। অর্থাৎ শ্রীশ্রীবড়দার দেহ রাখার ১২ বছর পরে। প্রফুল্লদার বই ‘স্মৃতি-তীর্থে’ প্রকাশ হয় ১৯৯১ সালের ১৮ই অক্টোবর। শ্রীশ্রীবড়দার দেহ রাখার ৩ বছর আগে। তখন বড়দার বয়স ৮০ বছর। আর প্রফুল্লদার বয়স ৭৯ বছর। সমসাময়িক। শ্রীশ্রীবড়দা জীবিত থাকাকালীন শ্রীপ্রফুল্লদা কি শ্রীশ্রীবড়দার সঙ্গে বাণীতে যতিচিহ্ন প্রয়োগ করা উচিত-অনুচিত প্রসঙ্গে কোনও আলোচনা করেছিলেন? আছে এমন কোনও তথ্য? থাকলে প্রফুল্লদা তাঁর ‘স্মৃতি-তীর্থে’ গ্রন্থে উল্লেখ করেননি কেন?
শ্রীশ্রীঠাকুরের অন্য সন্তান শ্রীশ্রীকাজলদাদার সঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুরের অনুপস্থিতিতে এতবড় পরিবর্তন নিয়ে, পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিষয়ে এবং ইংগিতপূর্ণ পরিবর্তনে কোনও আলোচনা করেছিলেন? ক'রে থাকলে পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীকাজলদাদার কি এই বাণী সম্পর্কে ও যতি চিহ্ন সহ বাণী পরিবর্তন সম্পর্কে কোনও বক্তব্য ছিল? প্রফুল্লদা একা এতবড় সিদ্ধান্ত নিলেন, এবং যে বাণী সম্পর্কে নিলেন তা’তে তিনি যে অর্থ ও ইঙ্গিতপূর্ণ বিতর্কের সূচনা করলেন তা’তে সৎসঙ্গ জগতে কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের মধ্যে বিরাট প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়ে সংঘাতের বীজ পুঁতে দিয়ে গেলেন নাকি? কেন এমন করলেন শ্রীশ্রীঠাকুরের ‘নারায়ণী কেরানী’ শ্রুতিধর শ্রীপ্রফুল্ল দা? যা আজ সুযোগসন্ধানী বিরোধীরা নানা চ্যানেলের মাধ্যমে বাণীর বিকৃত অর্থ প্রচার ক’রে চলেছেন, ক'রে চলেছেন শ্রীশ্রীবড়দার বিরুদ্ধে শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী পরিবর্তনের মতো ঘৃণ্য অপবাদ দিয়ে?
শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী পরিবর্তন কে করলেন? শ্রীশ্রীবড়দা করলেন নাকি শ্রীশ্রীপ্রফুল্লদা স্বয়ং শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী পরিবর্তনের মতো দুঃসাহসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন? শ্রীপ্রফুল্লদা নিজেই বলছেন তাঁর গ্রন্থ ‘স্মৃতি-তীর্থে’ যে, “এই ছড়াটির শ্রুতিলিখন আমি পাবনায় লিখি। যেমন শুনি তাতে উপরোক্ত রকমে বিরামচিহ্ন প্রকরণ হওয়া উচিত।“ তিনি বলছেন, ‘উচিত’। উচিত শব্দ প্রয়োগ করেছেন। তিনি একথা বলেননি, যে বাণীটি আমি শ্রীশ্রীঠাকুরের কথা মতো বিরতি চিহ্ন সহযোগে লিখি এবং পরবর্তীতে যতি চিহ্ন বাদ দিয়ে সেই বাণী বিকৃত করা হয়েছে। তিনি তাঁর মত ব্যক্ত করেছেন তাঁর বোধের ওপর দাঁড়িয়ে যে, “বিরামচিহ্ন প্রকরণ হওয়া উচিত”। তা'তে কি শ্রীশ্রীঠাকুরের অনুমোদন ছিল এমন কথা কোথাও বলেছেন প্রফুল্লদা? এরকম কি দরকার ছিল? কোন অধিকারে তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী পরিবর্তনের সাহস দেখালেন? কি ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন প্রফুল্লদা? কি অক্সিজেন যুগিয়ে গেলেন সুযোগসন্ধানী বিরোধীদের জন্য সর্ব্বজনশ্রদ্ধেয় শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রিয় নারায়ণী কেরানী তথা শ্রুতিধর শ্রীপ্রফুল্ল দাস মহাশয়? এই ‘স্মৃতি-তীর্থে’ গ্রন্থে প্রকাশিত সংশোধিত বাণী নিয়ে সুযোগ বুঝে চ্যানেলে চ্যানেলে বিরোধীরা বাণীর অর্থ বিকৃত ক'রে, বিকৃতির অপবাদ দিয়ে চলেছেন শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে। শ্রীশ্রীঠাকুরের অবর্তমানে প্রফুল্লদার ‘স্মৃতি তীর্থে’ গ্রন্থে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রকাশিত শ্রীশ্রীঠাকুরের এই বিকৃত বাণীকে হাতিয়ার ক’রে সুযোগসন্ধানী বিকৃত রুচির মানসিকতার অধিকারী মিথ্যেবাদী কপট অসৎ নিন্দুকেরা আচার্য প্রথা ও আচার্য পরম্পরাকে কলুষিত করার মোক্ষম সুযোগ পেয়ে শ্রীশ্রীবড়দা ও তাঁর পরিবারকে কলঙ্কিত করতে ও সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠানকে কালিমালিপ্ত করতে তীব্র প্রয়াসে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদা শেষ বয়সে এসে গ্রন্থ ছাপিয়ে নিজের মনগড়া ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর দাঁড়িয়ে উচিত-অনুচিত শব্দ প্রয়োগে ঠাকুরের বাণীকে বিকৃত ক’রে জনমানসে ও সৎসঙ্গীদের মধ্যে বিভ্রান্তির বীজ পুঁতে ভয়ংকর সর্ব্বনাশা ধ্বংসের যদি উদাহরণ রেখে যান তাহ’লে সাধারণ সৎসঙ্গী কাকে বিশ্বাস করবে? প্রত্যেকের স্বাধীনতা আছে তাঁর নিজস্ব বক্তব্য রাখার। কিন্তু শ্রীশ্রীঠাকুরের গুরুত্বপূর্ণ কর্মীরা কেন এমন অবৈধ অন্যায় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন যাতে শ্রীশ্রীঠাকুর, সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠান ও সৎসঙ্গীদের ওপর ভয়ংকর আঘাত এসে পড়ে? কেন প্রধান প্রধান ভক্তেরা এমন কাজ করবেন যাতে মনুষ্যত্বের ভিত লুপ্ত হ'য়ে যাবার উপক্রম হয়?কেন তিনি এমন করলেন? কে দেবে এর উত্তর? সাধারণ সৎসঙ্গী যারা সহজ সরল কোনও খোঁজ খবর রাখে না, বই পড়ার বা শোনার ধৈর্য যাদের নেই, যারা সাথে পাছে থাকে না অথচ নিন্দাকথা, মিথ্যে কথা শুনলেই যাদের কান ভারী হ’য়ে যায়, যাদের এত গভীরে গিয়ে সুক্ষ্মভাবে যুক্তির ওপর দাঁড়িয়ে সবটা দেখার চোখ নেই, যারা চিলে কান নিয়ে গেছে শুনে কানে হাত না-দিয়ে চিলের পিছনে ছুটে চলে, যাদের কোনও কিছুতেই কন্সিস্টেন্সি নেই, ধারাবাহিকতার অভাব, বৃত্তি-প্রবৃত্তির চাহিদা ও পছন্দ অপছন্দ অনুযায়ী যারা মনগড়া ধারণায় অভিভূত থাকে, যাদের পর্যবেক্ষেণ শক্তি ও বিচার শক্তি দুর্বল, যারা আর্ত, অর্থার্থী, সেই সমস্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ সৎসঙ্গীদের মানসিক অবস্থা সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুরের নারায়ণী কেরানী শ্রুতিধর শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদা জানতেন না। জানতেন না সুযোগসন্ধানী ছেদকেরা সৎসঙ্গীদের বিভ্রান্ত করার সুযোগ পেয়ে যাবে এর ফলে? তাহ’লে কি শ্রদ্ধেয় প্রফুল্লদার ৭৯ বছর বয়সে বুদ্ধি বিপর্যয় হয়েছিল? তাহ’লে তিনি কি কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন? তাহ’লে কি তাঁর শ্রীশ্রীবড়দার সঙ্গে কোনও মতবিরোধ ছিল যার ফল স্বরূপ তিনি ৮,৮২৯টা ছড়ার মধ্যে এই বাণীটাই বেছে নিলেন কেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই? এই বাণীতেই ও এই একটা বাণীতেই তিনি যতি চিহ্ন প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন? কেন তিনি এই বাণীটাতে যতি চিহ্নের প্রয়োগ ঘটালেন? শ্রীশ্রীঠাকুরের জীবদ্দশায় দীর্ঘ ২০ বছর সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও কেন তিনি তাঁর এই বাণী সম্পর্কিত প্রশ্নের সমাধান করলেন না? কেনই বা তিনি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ৪ বছর শ্রীশ্রীবড়দার জীবোদ্দশায় এই বাণী নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পেয়েও আলোচনা করলেন না? এরকম নানা প্রশ্ন নিয়ে আজকের এই ভিডিও শেষ করলাম। বিচারের ভার ও গ্রহণ-বর্জনের ভার আপনাদের হাতে। নমস্কার। জয়গুরু।
No comments:
Post a Comment