আজ দশমী! মহা দশমী!!
মা যাবে ফিরে তার বাড়িতে হিমালয়ে
যেখানে গরীব স্বামী আছে বসে অপেক্ষায়
বউয়ের পথ চেয়ে।
'যেতে নাহি দিব তোমারে, নবমী নিশি যেওনা ফুরায়ে'
ব'লে কেঁদেছিল যারা তারা চেয়েছিল
এমন আনন্দ যাকে ঘিরে সেই মাকে আরও কিছুদিন
কাছে রাখতে ধরে।
কিন্তু সময় বড় নিষ্ঠুর;
নিয়ম মেনে যেতেই হবে চলে
কারণ এ তো আর ঘরের মা নয়
যারে রাখবো বেঁধে ঘরে আঁচলে জড়িয়ে কোলে!
এ তো মাটির মা আসে জলে ভিজে
আবার যাইও জলে ধুয়ে!
রাখবে কেমনে তারে হৃদমাঝারে ধ'রে?
মা আমার গরীব ঘরের ঘরণী;
গাছের ছাল বাকল ছাড়া অন্য কিছুই পড়েনি।
মাথার উপর ছাদ আছে বটে পাহাড় দিয়ে ঘেরা
শক্ত পোক্ত কঠিন ভারি কিন্তু নয়কো
গয়না দিয়ে মোরা!
রুখো শুকো হলেও তা' অমল ধবল প্রকৃতির কোলে!
যেথায় সবাই মিথ্যে গয়না সাজে মোরা
যাবো একদিন চলে।
আজ দশমী! মহা দশমী!!
মা যাবে ফিরে তাঁর বাড়িতে হিমালয়ে
গরীব স্বামী হাঁক দিয়ে বলেছিল,
বৌ যাসনে ওরে মিথ্যে সাজের চল্লিশ কোটি টাকার
রুপো দিয়ে ঘেরা ঘরে!
যেথায় ছাল বাকলের ঘরে পঁচাশ কোটির
সোনা দিয়ে তৈরী শাড়ি দেবে তোমায় পড়িয়ে!
মাথার খোপা আর হাতে কানে যেথায় থাকে
বাঁধা বনফুল সেথায় দেবে চড়িয়ে
পঁচিশ কেজি সোনা দিয়ে তৈরী সোনার মুকুট,
বাজুবন্ধ আর দুল!
যাবি ওরে তুই চারদিনের তরে,
মিথ্যে গয়নার চাপে সেথায় যাবিই যে তুই মরে।
জগন্মাতা যে, তারে দেয় বিত্তবৈভব বইতে!
স্বামী ভোলা ব'লে পারবি কি তুই মিথ্যে ভার এত সইতে!?
স্বামী ভোলা ব'লে পারবি কি তুই মিথ্যে ভালোবাসা এত সইতে?
কেন যাবি তুই সেথায়? তোরে পুজে নাকি কেউ ছাই!
তুই বৌ, হাতটি ধরার তখন থাকবে না সেথায় কেউ।
থীম আর হৈ হুল্লোড়ে ভরা নারীপুরুষের ভিড়ে
ছেলেমেয়ে নিয়ে পড়বি চাপা সেথায়।
তোরে ছেড়ে আমি একা কেমনে বাঁচি বল?
তুই যে আমার প্রাণ ভোমরা, তুই যে আমার বল!
পুজো তো কেউ করেনা ওরে বউ,
পুজোর নামে সেথায় চলে বেচাকেনার মৌ!
পাহাড় তলে প্রকৃতির কোলে বউ
আছি মোরা চারজনে বেশ
চারটি দিনের তরে কেনও শুধুশুধুই
বাপের বাড়ি খাবি খাবি শেষমেশ!?
পাহাড় ডাকে হাত বাড়িয়ে,
বউ হেথা নেই কোনও কোলাহল
সেথায় বাঁচি চল মোরা
বউ সেথায় বাঁচি চল।
( লেখা ২০শে অক্টোবর' ২০১৮)
No comments:
Post a Comment