Powered By Blogger

Thursday, November 14, 2024

প্রবন্ধঃএ, আর, রহমানের 'পিপ্পা' ছবি বিতর্ক।

কাজী নজরুল ইসলামের গান 'কারার ওই লৌহ কপাট' সংবাদের শিরোনামে। বিখ্যাত সুরকার এ, আর, রহমান তাঁর প্রযোজনায় তৈরী 'পিপ্পা' ছবিতে গানটি ব্যবহার করেছেন নিজের সুরে। আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। পক্ষে বিপক্ষে ধুন্দুমার। ফলে সিনেমাটা প্রচারের আলোয় চলে এসেছে বিনা আয়াসে অল্প সময়ের ব্যবধানে।
বিতর্ক শুরু হয়েছে গানটির সুর নিয়ে। নজরুলের ঐতিহাসিক গানটি ১৯৭১ সালে ভারত-পাক যুদ্ধের উপর আধারিত ছবি 'পিপ্পা'-তে ব্যবহার করা হয়েছে। আর নজরুল গানটি লিখেছিলেন তখন ১৯২১ সাল। স্বাধীনতা আন্দোলনের বিদ্রোহের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে দেশ জড়ে। বিদ্রোহকে স্তিমিত করতে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশকে গ্রেপ্তার করেছে ব্রিটিশ পুলিশ। তাঁকে জেলে আটকে রেখেছিল ব্রিটিশরা। সেই সময়েই রক্ত গরম করা এই গানটি লিখেছিলেন কাজি নজরুল ইসলাম।
এই গান সৃষ্টির প্রেক্ষাপটটা আগে আমাদের জানা দরকার। কোন মানসিকতার ওপর দাঁড়িয়ে দোর্দন্ডপ্রতাপ ব্রিটিশ রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা ক'রে প্রকারান্তরে পদদলিত ক'রে এরকম জেলখানার দরজা ভেঙে ফেলার মতো বেআইনি কাজের জন্য জনগণকে উসকে দেওয়া যায়। সরকারী দিক থেকে এই আইন ভাঙ্গার উৎসাহ দেওয়া যে কোনও কর্মকান্ড দেশদ্রোহী কাজ।
দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ তখন জেলবন্দী। সেই সময় তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে নজরুলের কাছেই তাঁরই সম্পাদিত সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘বাংলার কথা’র জন্য কবিতা লেখার অনুরোধ আসে। সেই অনুরোধ পেয়েই দেশপ্রেমে উজ্জীবিত বৃটিশের অত্যাচারের বিরুদ্ধে নজরুল ইসলাম জেলখানার কপাট ভেঙে বন্দীদের মুক্তির কথা মাথায় রেখেই রক্ত গরম করা 'কারার ঐ লৌহ কপাট ভেঙ্গে ফেল কররে লোপাট' গানটি রচনা করেন। ঐ গানের কথা ও সুরে অত্যাচারী ধ্বংসের কালাপাহাড় হ'য়ে ওঠার স্মেল ও ব্জ্রনির্ঘোষ আহ্বান ধ্বনি আজও কানে ভেসে আসে।
আর, এ, আর, রহমানের প্রযোজনা ও সুরে এবং রাজা মেননের পরিচালনায় 'পিপ্পা' ফিল্ম তৈরী হয় ১৯৭১ সালে ভারত-পাক যুদ্ধের উপর ভিত্তি ক'রে। 'পিপ্পা’ ছবিটি মূলত ৭১-এর বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। ১৯৭১ সালের সেই লড়াইয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাশে পেয়েছিল ভারতকে। গরিবপুরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য নিয়ে পাকিস্তানের ট্যাঙ্কের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল ভারতীয় ট্যাঙ্ক। ভারতীয় সেনা অফিসার বলরাম সিং মেহেতার লেখা বই ‘দ্য বার্নিং চ্যাফিস’ অবলম্বনে তৈরী এই ছবি। অর্থাৎ লেখকের চোখ দিয়ে দেখার উপর ভিত্তি ক'রে বইটি তৈরী করা হয়েছে। আর সেই দেখার ওপর নির্ভর ক'রে তৈরী করা ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে নজরুলের কালজয়ী অমর সৃষ্টি। এই গান যে কোনও নির্ম্মম অত্যাচারের অচলায়তনের কপাট ভাঙ্গার, উপড়ে ফেলার শপথ গ্রহণের গান।

আমরা যেন ভুলে না যায় এ গানের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাঙ্গালীর আবেগ; কোনও হিন্দু মুসলমানের নয়। আর জড়িয়ে রয়েছে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের অত্যাচারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে যুক্ত উৎসর্গিত প্রতিটি প্রাণের।

এই 'পিপ্পা' ছবিতে নজরু
লের গানে এ, আর, রহমানের নোতুন সুর সৃষ্টির মধ্যে তৎকালীন সময়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ভয়ংকর অত্যাচারের নির্ম্মমতা, যন্ত্রণার দীর্ঘশ্বাস, মুক্তিযুদ্ধের যন্ত্রণা, পাকিস্তানি সেনা আর তাদের পদলেহী বিশ্বাসঘাতক দেশদ্রোহীদের হাতে প্রায় ৩-৪ লক্ষ নারীর ইজ্জৎ লুট ও হত্যা, রিফিউজিদের কান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া হত্যা ও ১০০ বুদ্ধিজীবীকে নির্ম্মম ভাবে হত্যা, সবমিলিয়ে প্রায় ৩০লক্ষ মানুষের ওপর পাশবিক অত্যাচার, নির্মমতা ও নির্বিচারে যন্ত্রণাদায়ক হত্যা ইত্যাদির বিন্দুমাত্র অনুভূতির স্মেল ভেসে আসে না ও এই নির্মমতা ও দানবের বিরুদ্ধে সমুদ্র গর্জনের মতো আছড়ে পড়ার হুঙ্কার ও কালাপাহাড়ি ভয়ানক আহ্বান ধ্বনি ভেসে আসে না।

এই কালজয়ী "কারার ঐ লৌহ কপাট........." গান বহু শিল্পী গেয়েছেন। গেয়েছেন তাঁদের তাঁদের অনুভূতি, গায়কী ভঙ্গি ও গলার টেক্সচার অনুযায়ী। গানের কথার অন্তর্নিহিত যে ভাব, অর্থ, শব্দের যে ওজন ও সেই অনুযায়ী সুর সব কিছু মিলিয়ে গলার ভয়েস মড্যুলেশন সহ গানটি গায়ক গায়িকা বিশেষে জনপ্রিয় হয়।

এরকম পরীক্ষামূলক পরিবর্তন আমরা প্রায়ই দেখে থাকি। বিশ্বজুড়ে ভুরি ভুরি পরীক্ষামূলক পরিবর্তন হয়েছে শিল্প সৃষ্টির ক্ষেত্রে। আলোচনার সুবিধার জন্য উদাহরণ দু'একটা দেওয়া যেতে পারে।

যেমন ধরুন ১) মহালয়া। বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের মহালয়া অনুষ্ঠানে চন্ডীপাঠের কাহিনী আজও সুবিদিত। বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের ‘মহিষাসুরমর্দিনী’র পরিবর্তে ১৯৭৬ সালে উত্তমকুমারের ‘দুর্গা দুর্গতিহারিনী’ অনুষ্ঠানের পরিণতি কি হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গবাসী মাত্রেই জানে। সেদিন যারা মহালয়ার নবরূপ 'দেবিং দুর্গতিহারিণীম' অনুষ্ঠানের পিছনে ছিলেন তাঁরা সবাই ছিলেন প্রথিতযশা রচয়িতা ডঃ ধ্যানেশনারায়ণ চক্রবর্তী, সংগীত পরিচালক হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, গীতিকার শ্যামল গুপ্ত এবং ভাষ্যপাঠে স্বয়ং উত্তমকুমার। গানের ক্ষেত্রে ছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে, মান্না দে, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, আরতি মুখোপাধ্যায়, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়, নির্মলা মিশ্র, উৎপলা সেন, অনুপ ঘোষাল, তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়, শিপ্রা বসু, বনশ্রী সেনগুপ্ত, হৈমন্তী শুক্লা, অসীমা মুখোপাধ্যায়, পিন্টু ভট্টাচার্য, শৈলেন মুখোপাধ্যায় প্রমুখরা। তবুও মুখ থুবড়ে পড়েছিল নোতুন রূপে আবির্ভূত মহালয়া। ত্রুটি কি ছিল না ছিল সেসব নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রবন্ধ দীর্ঘ হ'য়ে যাবে। এককথায় মানুষের ভালো লাগেনি, মন জয় করতে পারেনি, শিহরণ জাগাতে পারেনি মস্তিষ্কে-শরীরের কোষে কোষে, শিরা-উপশিরায় অযথা উত্তমকুমারের নামে প্রচারিত উত্তমকুমারের মহালয়া। এই মহালয়ার পিছনে ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক অবস্থান। সেসব আলোচনা এখানে নিরর্থক। যদিও ঐ রাজনৈতিক অবস্থানের কারণেই এতবড় অপমানজনক বিতর্কের জন্ম হয়। তবে সেই অনুষ্ঠানে উত্তমকুমারের যোগদান ছিল কয়েক মিনিটের। উত্তমকুমারের বিরোধীদের ছিল তাঁকে হেয় করার এটা মোক্ষম সুযোগ। আজও ১৯৩২ সাল থেকে শুরু ক'রে ২০২৩ সাল পর্যন্ত একটানা ৯১ বছর পরেও বিরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের আলোআঁধার রাতে ব্রাহ্ম মুহূর্তের ভোরের মহালয়া মানুষের শরীরে-মনে ও প্রাণে মৃতসঞ্জীবনী সুরার কাজ করে।
উদাহরণ ২) উত্তমকুমার অভিনীত 'এন্টনি ফিরিঙ্গী' পুনরায় নির্মাণ হয়েছিল। সেখানে এন্টনির ভুমিকায় অভিনয় করেছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। বইটা সবারই ভালো লেগেছিল কিন্তু এন্টনির চরিত্রে উত্তমকুমার ছিলেন অপ্রতিদ্বন্ধী। সামগ্রিকভাবে উত্তমকুমারের এন্টনি ফিরিঙ্গিকে ভুলিয়ে দিতে পারেনি প্রসেঞ্জিতের এন্টনি ফিরিঙ্গি। এন্টনি ফিরিঙ্গির কথা উঠলেই লোকের চোখেমুখে উত্তমকুমারের এন্টনির কথা মনে পড়ে, ভেসে ওঠে অনিন্দ্যসুন্দর ঐ অপূর্ব মুখাবয়ব!


৩) রবীন্দ্রনাথের "যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে........." গানের কথায় ধরা যাক। এই গান প্রায় সমস্ত শিল্পীই গেয়েছেন। কিন্তু হিন্দি ছবি 'কাহিনী'তে অমিতাভ বচ্চনের কন্ঠের মাধুর্য, গভীরতা এককথায় ভয়েস মডিউলেশন সঙ্গে বিশাল শেখরের অনবদ্য সুর সংযোজনে তৈরি "যদি তোর ডাক শুনে........." গান শ্রোতার মনে-প্রাণে অন্য এক মাত্রা যোগ ক'রে দিয়েছে। আবার অন্যদিকে খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত শিল্পী শ্রেয়া ঘোষালও এই গান গেয়েছেন কিন্তু কোনও দাগ রেখে যেতে পারেননি শ্রোতার মনে।


৪) রবীন্দ্রনাথের এই গানই কথা ও সুরের কিছু কিছু অদলবদল ঘটিয়ে নোতুন ভাবে, নোতুন আঙ্গিকে গেয়েছেন নচিকেতা চক্রবর্তী। তাঁর গান "যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবেই নাকি.একলা চলতে হয়......" জনমানসে তেমন কোনও দাগ কাটতে পারেনি।


৫) যেমন আমরা যদি দেখি সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা সিরিজ। সেখানে আমরা দেখতে পাবো জটায়ু চরিত্রে (লালমোহন গাঙ্গুলি) বিভিন্ন সময়ে সত্যজিৎ রায় ও সন্দীপ রায়ের পরিচালনায় বিভিন্ন অভিনেতা অভিনয় করেছেন। এদের মধ্যে সর্বপ্রথম হলেন সন্তোষ দত্ত। এছাড়া আছেন রবি ঘোষ, অনুপকুমার, বিভু ভট্টাচার্য ইত্যাদি। হিন্দি টেলিছবি 'কিসসা কাটমান্ডু কা'তে জটায়ুর চরিত্রে অভিনয় করেন অভিনেতা মোহন আগাসে। কিন্ত জটায়ু চরিত্রে সন্তোষ দত্ত আজও ইতিহাস হ'য়ে আছে। পরবর্তী অভিনেতারা বিখ্যাত শক্তিমান অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও সেই সন্তোষ দত্তের মিথে পরিণত হওয়া জটায়ু চরিত্রের মধ্যে প্রবেশ করতে পারেননি কেউই। সন্তোষ দত্তের 'জটায়ু' স্বয়ং বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকা জীবন্ত চরিত্র; যে চরিত্রে অন্যরা অভিনয় করেছেন মাত্র। আর সন্তোষ দত্ত যেন বাস্তবের গোয়ন্দা লেখক জটায়ু। কিন্তু ফেলুদা চরিত্রে যারা যারা অভিনয় করেছেন সেই চরিত্রে তাঁদের অভিনয় করা নিয়ে কোনও তুলনামূলক বিশেষ আলোচনার কোনও অবকাশ নেই।
৬) ঠিক তেমনিভাবে আমরা আবার দেখতে পাই সত্যজিৎ রায়ের তৈরী অভুতপূর্ব অপ্রতিদ্বন্ধী বিখ্যাত ছবি 'নায়ক'। যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন মহানায়ক উত্তমকুমার। যা আর কেউ করতে সাহস করেনি। হয়তো বা কেউ ভবিষ্যতে আস্পর্ধা দেখাতে পারে। তা সে দেখাতেই পারে, তার সে অধিকার আছে, আছে স্বাধীনতা কিন্তু ইতিহাস সৃষ্টি হবে কি হবে না তা' তখন সময় বলবে। শোনা যায় এই নায়ক চরিত্রে অভিনয় করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন বিখ্যাত শক্তিমান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় যিনি সত্যজিৎ রায়ের প্রায় সব ছবির প্রথম পছন্দ। তথাপি তিনি এই চরিত্রটি নির্মাণ করেছিলেন মহানায়ক উত্তমকুমারের কথা ভেবেই।
পরীক্ষানিরীক্ষা সব সময় হয়ে এসেছে। পুরোনো দিনের নাম করা হিন্দি গান রিমিক্স হয়ে বের হয়ে চলেছে প্রতিনিয়তই। কখনো সফল হয়েছে, হচ্ছে, কখনো বা ব্যর্থ। একবার জনমানসে কোনও কিছু গভীরভাবে দাগ কেটে গেলে তাকে নোতুনভাবে, নোতুন আঙ্গিকে যদি আবার তৈরী করা হয় প্রায়শই তা মানুষের মন জয় করতে ব্যর্থ হয়। হয়তো বা মাইন্ড সেট একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হ'য়ে দাঁড়ায় কখনো কখনো। তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ইতিহাস সৃষ্টির পিছনে যে মৌলিক কারণগুলি থাকে সেই কারণগুলি ভেদ করা কখনোই সম্ভব হয় না যদি না তাকে ভেদ করা যায়। তাই ইতিহাস অটোমেটিক সৃষ্টি হয়, জোর ক'রে কখনো ইতিহাস সৃষ্টি করা যায় না।
তাই এ, আর, রহমানের সুরে নোতুন আঙ্গিকে তৈরী হওয়া গান "যদি তোর ডাক শুনে........." তৈরী হ'তেই পারে আর তা' নিয়ে বিতর্ক হ'তেই পারে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হ'তেই পারে। প্রতিক্রিয়া, মিশ্র প্রতিক্রিয়া স্বাস্থ্যকর হ'তে পারে। তবে এ নিয়ে অকারণ ক্ষোভ বিক্ষোভ, বাদ-বিবাদ-প্রতিবাদ, ক্ষমা চাওয়া ইত্যাদির কোনও দরকার আছে ব'লে মনে হয়না। কারণ গ্রহণ ও বর্জন মানুষের হাতে। মানুষই শেষ কথা। যদিও মানুষের বোধ, বুদ্ধি, অনুভূতি, রুচি ইত্যাদির ওপরও অনেক কিছু দাঁড়িয়ে আছে। যেমন সত্যজিৎ রায়ের ছবি তৈরী হয় গভীর শিল্পবোধ নিয়ে। সেই ছবিকে সম্মান জানায় বিশ্বের তাবড় তাবড় বিদগ্ধ বিচারক মন্ডলী কিন্তু জনগণের কাছে তার বাজার মূল্য শূন্য।
যদিও বাঙ্গালীর সবেতেই গেল গেল রব। আর এই গেল গেল রব, ক্ষোভ-বিক্ষোভ, আন্দোলন, বাদ-বিবাদ-প্রতিবাদ সব অর্থহীন নিরাপদ ভূমিতে। এর থেকে অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা জর্জরিত বিষয় আছে আমাদের চারপাশে যেগুলি নিয়ে কোনও হেলদোল নেই।
তাই সমস্ত ক্ষোভ বিক্ষোভ ভুলে, বাদ-বিবাদ-প্রতিবাদ শিকেয় তুলে রেখে আসুন সবকিছু আমরা ছেড়ে দিই সময়ের হাতে। বরং লক্ষ্য রাখি, যত্নশীল হ'ই, সতর্ক থাকি যে সৃষ্টি মানব সভ্যতাকে, কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে, মনুষ্যত্বের মূল বুনিয়াদকে ধ্বংস করছে, ক'রে চলেছে অবিরাম গতিতে সেদিকে। সেদিন কোনও বালখিল্য আন্দোলনের, ক্ষোভ-বিক্ষোভ, বাদ-বিবাদ-প্রতিবাদের নাটক বাঁচাতে পারবে না মানবজাতিকে।
তাই আসুন নকল ছেড়ে আসলেতে মন মজায়।----প্রবি।
( লেখা ১৫ই নভেম্বর'২০২৩)

All reaction
May be an image of 3 people and text that says 'RSVP AND ROY KAPUR FILMS PRESENT PIPPA DIRECTED BY RAJA KRISHNA MENON OOUCED RONNIE SCREWV SCREWVALA ALA AND SIDDHARTH ROY KAP 1971. A NATION COMES OF AGE.'

No comments:

Post a Comment