Powered By Blogger

Friday, July 5, 2024

প্রবন্ধঃকরার মানুষ ও কথার মানুষ!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে রঙ্গ তামাশা চলছে ব'লে কিছু অনুগামী বিভ্রান্ত। ঠাকুরকে নিয়ে রঙ্গ তামাশা আজ নতুন বিষয় নয়। ঠাকুর থাকাকালীন এই রঙ্গ তামাশা তীব্র আকার ধারণ করেছিল। ঠাকুর থাকাকালীন যার নেতৃত্ব দিয়েছিল 'শনিবারের চিঠি'। পরবর্তী সময়ে শনিবারের চিঠির লেখক অশ্রুসজল কণ্ঠে ঠাকুরের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। 'শনিবারের চিঠি' প্রতি শনিবার প্রকাশিত হ'তো আর সেদিন এই বিশেষ দিনের বিশেষ চিঠি প্রকাশিত হবার কারণে পত্রিকা কাগজ বিক্রি হ'তো স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ! আর তার জন্য 'শনিবারের চিঠি' লেখকের অর্থ প্রাপ্তি ছিল আকর্ষণীয়। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে কেচ্ছা ছিল এই চিঠি জনপ্রিয়তা ও কাগজ বিক্রির আকর্ষণীয় বিষয়! আর তাই কাগজ কর্তৃপক্ষ লেখককে উৎসাহ দিতেন নিত্য নূতন ঠাকুরকে নিয়ে জোর ক'রে মিথ্যে কেচ্ছার খবর তৈরি ক'রে প্রকাশ করার! প্রতি শনিবার সেই চিঠির বিষয় ঠাকুরকে জানালে ঠাকুর হাসিমুখে তা গ্রহণ করতেন! প্রত্যুত্তরে হাসি মুখে শুধু বলতেন, গালাগালি, নিন্দা, সমালোচনা করে হ'লেও তো তারা আমার নাম নিচ্ছে, কি বলেন কেষ্টদা!


ঠাকুর কোনোদিন এর বিন্দুমাত্র প্রতিবাদ করেননি! যে যত নিন্দা, গালাগালি, কুৎসা করেছে, অপবাদ রটিয়েছে ঠাকুর তাকে ততবেশি ভালোবেসেছেন, আশ্রয় দিয়েছেন! তিনি ঈশ্বর কি ঈশ্বর না সে প্রশ্নের চেয়েও হাজার গুণ বড় প্রশ্ন তিনি কি মানুষ!? এত অত্যাচার, এত ক্ষয়ক্ষতি, কানে গরম সীসা ঢেলে দেওয়ার মত এত ঘৃণ্য কুৎসা, নিন্দা, গালাগালি ঠাকুরকে করার পরেও, এমনকি তাঁকে হত্যা করার গভীর ষড়যন্ত্র জানার পরেও তিনি গভীর ভালোবাসায় সব ক্ষমা করে দিয়েছেন, ক্ষমা করে তাকে বুকে টেনে নিয়েছেন, তাকে নানাভাবে জীবনে বেঁচে থাকার জন্য, বেড়ে ওঠার জন্য প্রত্যাশাহীন সাহায্যের দু'হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন!!!! এত সহ্য শক্তি! এত ধৈর্য শক্তি! এত ভালোবাসা! এত দয়া! এত প্রেম! এও কি সম্ভব কোনও মানুষের পক্ষে!? এও কি বিশ্বাসযোগ্য!? এমন মানুষ পৃথিবীর আর কোথায় ছিল সেইসময়!? কোথায় বা আছে এমন মানুষ বর্তমান পৃথিবীতে!? এমন মানুষের তো কথা শুনেছি ত্রেতা যুগে, দ্বাপর যুগে! এরাই কি তাহ'লে ঈশ্বর!? এরাই কি তাহ'লে সৃষ্টির মূল পিতামাতা!? তা নইলে এত অন্তহীন, তুলনাহীন, বিকল্পহীন সহ্যশক্তি, ধৈর্যশক্তি, ভালোবাসা, দয়া, মায়া, প্রেম, ক্ষমা আসে কোথা থেকে!?


আর এই অন্তহীন শক্তির ট্র্যাডিশন ব'য়ে চলেছে ঠাকুর পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মধ্যে আন্তঃসলীলার মত!!!!! যার প্রকাশ দেখতে পায় ঠাকুরের এবারের নানাবিধ লীলার শ্রেষ্ঠ লীলা পিতাপুত্রের লীলার মধ্যে দিয়ে!!! যে দেখেনি সে জানে নি, সে বোঝেনি, সে অনুভব করতে পারেনি এই মহাশক্তির ক্রমবহমানতা!!!!!!!! দেখতে হ'লে, জানতে হ'লে, বুঝতে হ'লে, অনুভব করতে হ'লে আসতে হবে দেওঘরে তাঁর পরমধামে! সঙ্গ করতে হবে অসীম সহ্য ধৈর্য শক্তি নিয়ে!!!!!!!!!!! তবে দেখতে পাবেন পরম পিতার লীলা পিতাপুত্রের লীলার মধ্যে দিয়ে কেমনভাবে ব'য়ে যাচ্ছে, ব'য়ে যাচ্ছে অলৌকিকতার সমস্ত সীমাকে ভেদ ক'রে তাঁদের মধ্যে দিয়ে!!! কি অসীম ভালোবাসায়, প্রেমে তাঁরা মুখ বুজে সহ্য করছেন পরমপিতার মত হাসিমুখে নিন্দুকের নিন্দা, কুৎসিতের কুৎসা, শয়তানের শয়তানি!!!!!!


তাই আপনারা যারা ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারের নিন্দা, কুৎসা শুনে অধৈর্য হ'য়ে পড়ছেন, বিরক্ত হচ্ছেন, হচ্ছেন উত্তপ্ত তাদের উদ্দেশ্যে বলি, আপনারা আপনাদের প্রত্যয়কে দৃঢ় করুন। পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবাবাইদাদার কথা বলি, বাবাইদাদা একদিন বলেছিলেন আমায়, "ঠাকুরকে লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, অপমান সহ্য করতে হয়েছে আর তাঁর সন্তান হ'য়ে আমাদের করতে হবে না? ঠাকুরকে নিজে যখন নাজেহাল হ'তে হয়েছে আর আমরা তাঁর সন্তান হ'য়ে আমাদের নাজেহাল হতে হবে না? কারো কোনও অভিযোগের উত্তর দেবেন না, কোনও সাড়া দেবেন না। আপনার কিন্তু অভিযোগকে খণ্ডন করা আর উত্তর দেওয়া কাজ নয়। কোনও অভিযোগ, প্রশ্নের জবাব না দিয়ে নিজের কাজ ঠিকঠিক ক'রে যান" ইত্যাদি ইত্যাদি।" 

তাই ঠাকুর যা করতে বলেছেন তা আগে জানুন আর তারপর তা নিজের মধ্যে আগে আসুন রূপায়িত করি আর তারপর বৃহত্তর পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ি। ঐ যে একটা গান আছে "ওরা যা খুশি বলে বলুক ওদের কথায় কি আসে যায়? ওরাই রাতের ভ্রমর হ'য়ে নিশিপদ্ম-র মধু যে খায়"! তাই baseless, negative বিষয় নিয়ে চিন্তা করার সময় কোথায়!? সময় নেই! Be positive, do positive & have positive!!!!!!! ঠাকুর করার মানুষ খুঁজেছেন, কথার মানুষ নয়! তাই ওদের নিয়ে আর ওসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করবেন না। খবর রাখুন অসম্ভব দ্রুত গতিতে ঠাকুরের কাজ হ'য়ে চলেছে শ্রীশ্রীআচার্যদেবের নির্দেশে আর শ্রীশ্রীবাবাইদাদার প্রেরণায়, প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণে। অতএব don't worry, be happy. আসুন আমরাও ঐ কর্মযজ্ঞে নিজেদের উৎসর্গ করি। জয়গুরু।
( লেখা ৬ই জুলাই, ২০১৯)

5

No comments:

Post a Comment