সেবারটা ছিল ২০১১ তৃতীয়বারের জন্য বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর পৌরসভা দখলের নির্বাচন। সেই নির্বাচনে 'বেকুব আমি'-র মহিলা ওয়ার্ড-এর প্রার্থী কে হবে এই ছিল বিচার্য বিষয়। যেহেতু দ্বিতীয়বারের নির্বাচনে প্রায় নিশ্চিত জয়ী ওয়ার্ড-এর প্রার্থীর পরাজয় ঘটেছিল সেইহেতু সেই প্রার্থীর পুনরায় টিকিট পাওয়া নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। নিশ্চিত জয়ের প্রবল হাওয়া সত্ত্বেও পরাজয় ঘটেছিল অন্তর্দ্বন্ধের কারণে। সেই অন্তর্দ্বন্ধের রেশ তীব্র হ'য়ে উঠেছিল তৃতীয়বারের নির্বাচনে সেই নিশ্চিত জয়ী ও পরিকল্পিতভাবে পরাজয়ী প্রার্থীর পুনরায় টিকিট পাওয়া নিয়ে। দ্বন্ধ এতটাই তীব্র আকার ধারণ করে যে প্রার্থীর নাম নির্বাচন নিয়ে প্রবল বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছোয়। অথচ যার নাম নির্বাচনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বাদবিতণ্ডা অপমান চলছে 'বেকুব আমি'-র বিরুদ্ধে সেই প্রার্থী কিন্তু সেই মিটিংয়ে অনুপস্থিত। ব্যাপারটা যেন অনেকটা সেই প্রবাদের মত, "যার বিয়ে তার হুঁশ নেই, পাড়াপ্রতিবেশির ঘুম নেই"!
যাই হ'ক মিটিং যখন শেষ হ'লো তখন রাত বারোটা। চিৎকার চেঁচামেচি শেষে যখন সবাই চলে গেল তখন প্রার্থীকে ফোন ক'রে জানিয়ে দিল ওয়ার্ড সভাপতি যে চূড়ান্ত সভায় তাঁর নামই চূড়ান্ত হয়েছে সর্বসম্মতিক্রমে। মনে মনে তখন 'বেকুব আমি' ভাবলো, সত্যি সভাপতি! কি অদ্ভুত চরিত্র! কথাটা বললাম এইজন্য, যখন চূড়ান্ত বাদবিতণ্ডা চলছে প্রতিবাদীদের কণ্ঠে তখন নিশ্চুপ হ'য়ে বসেছিল সভাপতি। বিগত দীর্ঘ পরপর আয়োজিত মিটিংয়ে আলাপ আলোচনায় স্থির হ'য়েছিল যার নাম সকলের উপস্থিতিতে তখন প্রতিবাদীরা সেদিন কোনও ঝামেলা করেনি, তোলেনি কোনও প্রশ্ন অথচ বাদবিতন্ডার সময় সেই বিষয়ে কেউ দৃষ্টিপাত করলো না বিন্দুমাত্রও! আর যতক্ষণ তীব্র বিরোধিতা চলছিল, আর পারদ চড়ছিল চড়চড় ক'রে প্রার্থীর নাম বাদ যাবার সম্ভাবনা নিয়ে ততক্ষণ সভাপতি অদ্ভুত দক্ষতায় ভারসাম্য বজায় রেখে চলছিল দু'পক্ষের মাঝে অর্থাৎ যে পক্ষ জিতবে সেইদিকেই হেলে পড়বে! আর হ'লোও তাই! অর্থাৎ 'বেকুব আমি'-র যুক্তির কাছে হার মেনে বিরোধীরা হৈচৈ শেষে চলে যাবার পর সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধ জয়ের সংবাদটা জানিয়ে দিল তড়িঘড়ি প্রার্থীকে যুদ্ধ জয়ের সেনাপতির মত? 'বেকুব আমি' গন্ধ পেয়ে গেল আগাম তেলের! কিন্তু চুপ ক'রে গেলাম না বোঝার ভান ক'রে।
বেকুব আমির যুক্তিটা কি ছিল? যুক্তিটা ছিল যেহেতু প্রার্থী পরীক্ষিত, জনগণের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণিত, সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হ'লেও সে পরাজয় জনগণদ্বারা প্রত্যাখ্যাত পরাজয় নয়, সেই পরাজয় দলীয় অন্তর্দ্বন্ধের কারণে তাই সেই প্রার্থীকে বাতিল ক'রে নতুন কোনও মুখকে এনে পুনরায় ওয়ার্ড প্রতিপক্ষের হাতে উপহার বা ভেট হিসেবে তুলে দেওয়ার মত রাজনৈতিক অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ গ্রহণ আর জেনেশুনে বিষ করেছি পান একই রকম! আর যেখানে রাজ্য জুড়ে তীব্র ঝ'রো হাওয়া মিউনিসিপ্যালিটিতে ক্ষমতায় আসীন রাজনৈতিক দলের অনুকূলে! তাই মিলেমিশে কাজ করলে খুব সহজেই জয়লাভ করা যাবে কোনও এক্সট্রা এফর্ট দেওয়ার দরকার পড়বে না। আর যদিও বা অন্তর্দ্বন্দ্ব বজায় থাকে তাহলে ঝড়ের তীব্রতার গতিবেগকে কাজে লাগিয়ে ও সেই গতিবেগের আত্মতুষ্টিতে না ভুগে অতন্দ্র প্রহরীর মত চোখকান খোলা রেখে একটু এক্সট্রা এফর্ট দিয়ে চাষাদের চাষ করা প্রচন্ড পরিশ্রমের ফসল ঘরে বা গোলায় তুলে আনতে হবে লুটেরাদের লুট করার পরিকল্পনাকে আন্তরিকভাবে ছলে-বলে-কৌশলে সবরকম ভাবে মোকাবিলা ক'রে।
যাই হ'ক যুক্তিটা ছিল এইরকম। আর পরবর্তীতে ঠিক সেইভাবে পথ চলে চাষা তার রক্তঘাম ঝরা পরিশ্রমের ফসল লুটেরাদের আক্রমণ ছলে-বলে-কৌশলে প্রতিহত ক'রে নিশ্চিন্তে, নির্ভিগ্নে ঘরে তুলে আনতে পেরেছিল। যদিও উত্তরপাড়া অঞ্চলে বরাবরই শান্তিতেই ভোট হয়। আর এই ওয়ার্ডে তো সবাই সমস্ত রাজনৈতিক দলের কর্মীরা একসঙ্গে মিলেমিশে শান্তিপূর্ণভাবেই নির্বাচনী কাজ এগিয়ে নিয়ে যায়। এটা উত্তরপাড়ার চিরকালীন ঐতিহ্য। উত্তরপাড়া বিধানসভা বা পৌরসভার নির্বাচনে লড়াই যা হয় ভিতরে ভিতরে তা পরস্পর নিজেদের দলের মধ্যেই হ'ক আর প্রতিপক্ষের সঙ্গেই হ'ক। মোকাবিলা যা কিছু রাজনৈতিকভাবেই হয়। এই ঐতিহ্য বজায় রেখেছে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কর্মীরা। উত্তরপাড়া রাজনৈতিক আঙিনায় রোল মডেল হ'তে পারে। আর এরজন্য রাজনৈতিক শাসকবৃন্দ এই রোল মডেলকে উৎসাহ উদ্দীপনা দিয়ে রাজ্য বা দেশজুড়ে সমস্ত এলাকায় কাজে লাগাতে পারে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কর্মকর্তাদের অন্ততঃ এই কথাটা আন্তরিকভাবেই মনে রাখতে হবে ও রক্ষা করতে হবে। আর ঠিক এই পদ্ধতিতেই উত্তরপাড়া-কোতরং মিউনিসিপ্যালটির ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত দলের এই মহিলা ওয়ার্ডের প্রার্থী তৃতীয়বারের নির্বাচনে প্রথম দুবারের ব্যর্থতার পর জয়লাভ করেছিল। কিন্তু কি ছিল সেই ফল্গুধারা-র মত ব'য়ে চলা আক্রমণের চোরাস্রোতে!
নির্বাচনী প্রচার কাজে অংশ নেওয়া কর্মীদের মধ্যে একটা অংশ 'ধরি মাছ না ছুঁই পানি'-র মত প্রতিক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিল। প্রচার কাজকে ব্যাহত করার জন্য যা যা উপায় অবলম্বন করার দরকার তাই তাই গ্রহণ করেছিল, গ্রহণ করেছিল হাসিমুখে কোনরকম সরাসরি বিরোধে না গিয়েই! আমি আছি তোমার সঙ্গে কিন্তু থেকেও কোথায় জানি নেই! আমি আছি তোমার সঙ্গে, আছি শয়নে-স্বপনে-জাগরণে তোমার সঙ্গে কিন্তু আছি তোমার মাথার ফোঁড়া হয়ে! আমি আছি তোমার সঙ্গে, আছি সর্বক্ষণ তোমার সাথেসাথে পাছেপাছে কিন্তু আছি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে পরামর্শের নামে মেইন লাইন থেকে ডিরেইল্ড ক'রে কর্ড লাইনে চালিত করতে, আর তা হাসিমুখেই তোমার লড়াইয়ের সাথী হ'য়ে! আমি আছি তোমার সঙ্গে, আছি তোমার প্রতিটি কথাতেই 'হ্যাঁ হ্যাঁ' হয়েই কিন্তু দিনের শেষে কার্যক্ষেত্রে 'না না' হ'য়ে! আমি আছি তোমার সঙ্গে, আছি প্রতিটি গৃহীত সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হ'য়ে কিন্তু সিদ্ধান্ত কার্যকরী করার ক্ষেত্রে আমি আছি কুম্ভকর্ণ হ'য়ে! আমি আছি তোমার সঙ্গে, আছি প্রতিটি প্রোগ্রামের সাথী হ'য়ে, কিন্ত আছি আমি সেই প্রোগ্রামকে ব্যর্থ করার ঘোর চক্রান্তে ফল্গুধারা-র চোরা স্রোত হ'য়ে!
কিন্তু এতসব সত্ত্বেও 'বেকুব আমি'-দের বেকুবী (?) কর্মকান্ডের তীব্রতা সেইসমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে মোকাবিলা ক'রে ক্রিয়ার বিন্দুমাত্র প্রতিক্রিয়া তত্ত্বে না গিয়ে নীরবে স্লো বাট স্টেডি কাজের মাধ্যমে উত্তর দেওয়ার তত্ত্বের উপর দাঁড়িয়ে ছিনিয়ে নিয়ে এসেছিল জয়!
তারপরে এসেছিল ধীরে ধীরে সেইদিন, 'চাষা চাষ করে আনন্দে আর লুটেরা লুট করে পরমানন্দে আর বেকুব আমি'-র আঁটি হ'য়ে পড়ে থাকা কথার বাস্তবরূপ!
প্রার্থী জিতে আসার কয়েকদিন পরেই বেনো জলের মত কমিশনার তথা পার্টি অফিস নতুন মুখে ভরে গেল! এমনভাবে তারা কথা বলতে লাগলো, মিশতে লাগলো জেতা প্রার্থীর সঙ্গে যেন মনে হ'লো বহুদিনের পুরোনো পরিচিত রাজনৈতিক কর্মী! শরীরী ভাষা, মুখের বোল বোঝাতে চাইলো যেন সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে জয়ী মহিলা প্রার্থীর এরাই ছিল সর্বক্ষণের যোদ্ধা! 'ম' 'ম' করতে লাগলো অফিস ঘর সুযোগ সন্ধানীদের ভিড়ে কি এক অজানা গন্ধে! ক'দিন আগেই যে অফিস ঘর ছিল হাতে গোনা মাত্র কয়েকজনের জীবনকে বাজি রেখে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার লাশকাটা ঘর সেই ঘর আজ মধুমক্ষী-তে ভরে গেছে! প্রমোটিং আর কন্ট্রাকটিং কাজের সঙ্গে যুক্ত লোক আজ সামনের সারিতে কমিশনারকে ঘিরে! কেবা প্রাণ আগে করিবেক দান তার শুরু হ'য়ে গেছে প্রতিযোগিতা! বাইকের পিছনে বসে ছুটে চলেছে কমিশনার। নতুন আগত প্রত্যেকেই দু'চাকা নিয়ে রেডি অনুরোধ করার আগেই বাড়ি থেকে মিউনিসিপ্যাল অফিস কিংবা পার্টি অফিস আবার পার্টি অফিস থেকে ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থান হ'য়ে আবার বাড়ী নিয়ে যাবার জন্য।
এমনিভাবেই চলতে লাগলো দিন! শুরু হ'লো নতুন খেলা! পার্টি তথা কমিশনারের অফিস স্থানান্তরের প্রক্রিয়া! গত দুটো টার্মে যে ঘর থেকে কাজকর্ম পরিচালিত হয়েছিল সেই ঘরকে আর উপযুক্ত ব'লে মনে হ'লো না জয়ী প্রার্থীর! আসলে কারণটা ছিল অন্য। পুরোনো গুরুত্বপূর্ণ চাষাদের কাজ শেষ, চাষ শেষে ফসল ঘরে তোলা হ'য়ে গেছে এখন আর জমি চাষের দরকার নেই, দরকার আবার পরবর্তী নির্বাচনের আগে তাই গুরুত্বহীন ক'রে দিতে হবে চাষাকে আর ভেঙে দিতে হবে পুরোনো সেট আপ! কারণ এখন আর, "মানুষ আপন টাকা পর, যত পারিস মানুষ ধর" তত্ত্বের কোনও মূল্য নেই, এখন মূল্য 'টাকা আপন মানুষ পর, যত পারিস টাকা ধর' তত্ত্বের! কারণ কাল কে দেখেছে, পরবর্তী সময় আমার জন্য কি এই সুযোগ আর নিয়ে আসবে দ্বিতীয়বার!? তাই সময় নষ্ট করা বেকুবী! বেকুবী পিছন ফিরে দেখা! কে পিছনে থাকলো, কে পিছনে প'ড়ে গেল সেদিকে তাকাবার সময় নেই! মনে রাখতে হবে সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না? যা করার, যা কামাবার কামিয়ে নাও, করে নাও সময়ের সদ্ব্যবহার। আর তার জন্য সাজাতে হবে ঘর, মজবুত ঘর যাতে অন্ততঃ ৫ বছর টেকে সেই ঘর!
একেই বলে চতুর আমি আর বেকুব আমি-র ফারাক। বেকুব আমি চিরকাল বেকুব আর চতুর আমি চিরকাল চতুর! বেকুব আমি বেইমানি আর অকৃতজ্ঞতার ঢোল পেটায় আর চতুর আমির কানে সেই ঢোলের শব্দ প্রবেশ করে না! সে কান দিয়ে দ্যাখা আর চোখ দিয়ে শোনাকে রপ্ত ক'রে নেয় রাতারাতি কমিউনিস্টদের কামিয়েনিস দর্শনে পোক্ত হবার জন্য!
যাই হ'ক এটা নতুন কিছু নয়, এই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে সৃষ্টির প্রারম্ভ থেকে কমবেশী আর চলবেও ধ্বংসের শেষ দিন পর্যন্ত সে যেই আসুক না কেন মসনদে। তাই বোধহয় বলে, যে যায় লংকায় সেই হয় রাবণ! ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়! তাই বলি, ঠগ বাছার কোনও দরকার নেই আর মসনদে বসলেই যে রাবণ হ'য়ে যায় এমন বিরুদ্ধ কথায় বিশ্বাস হারাবারও কোনও প্রয়োজন নেই কারণ মনে রাখতে রাবণের পরে বিভীষণ কিন্তু সিংহাসনে বসেছিল! হে বেকুব আমি! সমঝদার কে লিয়ে ইশারা কাফি হোতা হ্যায়!
কিন্তু যে পাকা ধানটা লুট ক'রে নিয়ে গেল লুটেরা সে সম্পর্কে একটু আলোকপাত করি। নির্বাচনে জিতে আসার কিছুদিনের মধ্যে পার্টি অফিস তথা কমিশনারের অফিস একেবারে ভেঙে গেল আর অফিস স্থানান্তরিত হ'লো কমিশনারের বাড়িতে তারপর বেশ কিছুদিন বাড়িতে বসে কাজ চালাবার পর পুনরায় অফিস চলে এলো বাড়ির বাইরে সম্পূর্ণ অন্য এক জায়গায়। পরিষ্কার হ'য়ে গেল অফিস স্থানান্তরের কারণ! বোঝে সে প্রাণ বোঝে যার!ততোদিনে নিজের মত ক'রে গড়ে উঠেছে অফিস, নতুনদের নিয়ে নতুন টিম! পুরোনো 'বেকুব আমি' রা যারা পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারলো না তারা তলিয়ে গেল তলানিতে! যদিও টার্গেট ছিল বিশেষ 'বেকুব আমি'!
যাই হ'ক, বাড়ি থেকে যখন কাজ হচ্ছিল তখন প্রয়োজনে প্রথম প্রথম যেতে হ'তো 'বেকুব আমি'-কে কমিশনারের বাড়ি। সেখানে যেটা সবচেয়ে বিস্মিত করেছিল তা হ'লো, যে সবচেয়ে বেশি প্রার্থীর প্রার্থিপদের বিরুদ্ধে এবং নির্বাচনে বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তলে তলে অপারেশন চালিয়েছিল এবং প্রথমবারের নির্বাচনেও প্রার্থীকে হারাবার জন্য অন্তর্ঘাতে জড়িত ছিল একেবারে মিষ্টি মুখে মাখনে ছুরি চালাবার মত সেই 'চতুর আমি' হ'য়ে উঠেছে জয়ী প্রার্থী অর্থাৎ নির্বাচিত কমিশনারের খাস লোক, প্রিয়জন তার ভালো মানুষীর মিষ্টি মুখোশটাকে কাজে লাগিয়ে! স্তম্ভিত হ'য়ে গেল 'বেকুব আমি' ঐ পরমানন্দে লুট করার লুটেরাকে ভয়ঙ্করভাবে কমিশনারের বিভিন্ন অফিসিয়াল কাজে সক্রিয় অবস্থায় কমিশনারের গৃহের অফিসে কমিশনারের একেবারে কাছের লোক হ'য়ে যাওয়া দেখে! তারও কিছুদিন পর 'বেকুব আমি' বোবা হ'য়ে গেল সম্পূর্ণভাবে এই খবর শুনে যে, মিউনিসিপ্যাল অফিসে কমিশনারের সুপারিশে ছেলেটির চাকরি হ'য়ে গ্যাছে! খবর শোনার পর মনে হয়েছিল, সত্য বন্ধু! কি বিচিত্র এই মানুষ আর মানুষের চরিত্র! আর বিবেক বলেছিল, হে বেকুব আমি! তুমি বেকুব ব'লে কি সবাই বেকুব হবে!? আর চাকরি তো সবারই দরকার! যাক একটা বেকার ছেলের তো চাকরি হ'লো। মনে আনন্দ হ'লো ছেলেটার চাকরীটা হওয়াতে।
সেই যে 'বেকুব আমি' চাটুকার, সুযোগ সন্ধানী, নেপোদের ভিড়ে ঠেলা খেতে খেতে পিছনে হারিয়ে গেল, হারিয়ে গেল আত্মসম্মানবোধের প্রাবল্য-এ, সেই পিছনে হারিয়ে যাওয়া সেই প্রাক নির্বাচনে মান-সম্মান হারানো, প্রচন্ড পরিশ্রমে লড়াই ক'রে ঘরে-বাইরে বিরোধীদের হাত থেকে ছিনিয়ে আনা প্রার্থী পদ ও ওয়ার্ড ছিনিয়ে আনা 'বেকুব আমি'-টার দিকে প্রার্থী একবারও ফিরে তাকালো না 'টাকা আপন মানুষ পর, যত পারিস টাকা ধর' তত্ত্বে, দর্শনে মুগ্ধ, আপ্লুত হ'য়ে! দেখতে দেখতে চলে গেল পাঁচ পাঁচটা বছর। এসে গেল পরবর্তী চতুর্থ বারের নির্বাচন। আর সেই চতুর্থবারের নির্বাচনে আবার এলো ন্যাড়া বেলতলায় বারবার যায়-এর মত 'বেকুব আমি'-র পুনরায় যোগদান!!!!!!!!!!!!
'বেকুব আমি' কেন এমন বেকুবী করলো!?
ক্রমশঃ
( ১৯শে জুন'২০২০ )
No comments:
Post a Comment