জ্ঞানের ও সঙ্গীতচর্চার শেষ হচ্ছে ঈশ্বরের অস্তিত্বের অনুসন্ধান ও ঈশ্বর লাভ। জ্ঞানের উচ্চমার্গে পৌঁছে মানুষের মনে একটা অহঙ্কার জন্মায়। সে অহঙ্কার স্থুল হ;ক আর সুক্ষ্মই হ'ক। পৃথিবী জুড়ে ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সব জ্ঞানী পুরুষই এই অহঙ্কারের শিকার। আর সঙ্গীত ঈশ্বরের কাছে পৌঁছনোর সবচেয়ে সহজ উপায় ও মাধ্যম। কথিত আছে তানসেন সংগীত মূর্চ্ছনায় ঈশ্বরকে বাধ্য করেছিলেন বৃষ্টি নাবিয়ে আনতে। ঈশ্বরের ক্ষিধে সবার থাকে না, ইচ্ছে করলেই ঈশ্বরের চর্চা করা যায় না, ঈশ্বরকোটি পুরুষ ছাড়া ঈশ্বরের ক্ষিধে, ঈশ্বরের চর্চা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। আর এ এক জন্মের ব্যাপার নয়। জন্মজন্মান্তরের চর্চার ব্যাপার। যা বায়োলজিক্যাল মেক আপের মধ্যে থাকে। তবে চেষ্টা করলে অনেক কিছুই হয়, হাঙরেরও দাঁত দেখতে পাওয়া যায়। তবে জন্মবিজ্ঞান আলাদা বিষয়। যারা সংগীতচর্চার মধ্যে দিয়েও ঈশ্বরের সন্ধান পায় না, ঈশ্বরের উপস্থিতি অনুভব করতে না পারে তাদের সংগীত চর্চা বৃথা। তাদের সংগীত কেউ মনে রাখে না।
আর, প্রবাদ আছে, Knowledge rules the world. কোন নলেজ? যে জ্ঞান অহঙ্কারের জন্ম দেয়, ইগোকে স্ট্রং করে, বিনয়ের সঙ্গে শ্রেষ্ঠের পায়ে মাথা নত করতে দেয় না, শিশুর সারল্য নিয়ে মানুষের মাঝে মিশে যেতে দেয় না, ছোটোকে বড় আর বড়কে আরও বড় করতে শিক্ষা দেয় না ইত্যাদি সেই জ্ঞান জ্ঞান নয়, বাচক জ্ঞান মাত্র। বাচক জ্ঞান বিশ্বকে রুল করে না। রুল করা মানে বাহুবলে দুর্বল মানুষকে, অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা দেশকে দাবিয়ে রাখা নয়। যা অর্থবলে বলীয়ান হ'য়ে, বিশেষ জ্ঞানকে ধ্বংসের কাজে প্রয়োগ ক'রে শক্তি অর্জনের মাধ্যমে আমেরিকা সহ অন্যান্য শক্তিশালী দেশগুলি দুর্বল দেশের অসহায় মানুষগুলোর ওপর ক'রে থাকে। কিন্তু তাদের কেউ মনে রাখে না। মুছে যায় মানুষের ইতিহাস থেকে। কিন্তু হাজার হাজার বছর ধ'রে মানুষের হৃদয়ে গেঁথে আছে ঈশ্বর সন্ধানী প্রেমী মানুষ।
( লেখা ১০ই মে, ২০২৩ )
No comments:
Post a Comment