পুরুষ তার অসংযত ভালোবাসার জন্য ইতিহাসের বুকে বহু অঘটন ঘটিয়েছে। এই সমস্ত অঘটনের পিছনে ভালোবাসার থেকে বেশী ছিল যৌন আকর্ষণ-উন্মাদনা। এর জন্য দায়ী বিধাতার দেওয়া অসহায় নারীর রূপ, শরীরের যৌন আবেদন। আর দায়ী ভালোবাসার নামে পুরুষের কপট উচ্ছৃঙ্খল চরিত্র, বিশৃঙ্খল জীবন। রিপু তাড়িত বৃত্তি-প্রবৃত্তির বৃত্তে ঘুরে মরা পুরুষ নারীকে ভালোবাসার নামে করেছে নারীর সঙ্গে ছলনা। এর জন্যে নারীও কম দায়ী নয়। নারীও তার রূপকে হাতিয়ার ক'রে শরীরী আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে পুরুষকে করেছে উত্তেজিত, করেছে লালায়িত। স্বাভাবিকভাবে পুরুষ বহুগামী। নারী একগামী। উভয় ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। এক নারীতে পুরুষ সন্তুষ্ট নয়। বহুগামী পুরুষকে রিজেক্ট করার শক্তি নারীর আছে কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সেই শক্তি সে কাজে লাগায় না। আর লাগালেও পুরুষ তার পুরুষালী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নারীর পিছনে তার বালখিল্য বীরত্ব ফলায়।
আর, নারীর জন্য যে পুরুষ জীবন বাজী রাখে নারীকে লাভ করার জন্য নারীর সে কথা মনে থাকে না, মনে রাখে না। সেই পুরুষকে সে তার রূপ, যৌবন ও শরীরী যৌন আকর্ষণ দিয়ে নিজের স্বার্থ পূরণের স্বার্থে কাছে ধ'রে রাখার চেষ্টা করে যেখানে ভালোবাসার বিন্দুমাত্র গন্ধ থাকে না। ফলে পুরুষ আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে। আবার নারীর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। যে নারী পুরুষের জন্য সমস্ত কিছু ত্যাগ ক'রে পুরুষের সঙ্গে অজানার পথে পাড়ি দেয় সেখানে পুরুষ সেই ত্যাগের মূল্যও দেয়নি, দেয় না; সে তার ব্যক্তিগত যৌন স্বার্থ পূরণে থাকে মত্ত।
এর জন্যেই ছিল সমাজে নারীর পর্দা প্রথার প্রচলন, নানা বিধিনিষেধ শুধুমাত্র নারীকে উচ্ছৃঙ্খল বিশৃঙ্খল পুরুষের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এবং ছিল উভয়ের বিশেষতঃ পুরুষের জীবনে জীবন্ত সর্ব্বশ্রেষ্ট ইষ্ট বা আদর্শ গ্রহণ প্রথা।
আসলে নারী-পুরুষের ভালোবাসা-টাসা কিছুই না, ভালোবাসার নামে পুরোটাই ইনফ্যাচুয়েশান। নারী-পুরুষ উভয়ে ভালোবাসার প্রকৃত অর্থ সম্পর্কে অজ্ঞাত থাকে। থাকে শুধু ভালোবাসার নামে তীব্র শরীরী আকর্ষণ। অজ্ঞাত থাকে কারণ উভয়েই আদর্শহীন ইষ্টহীন জীবনের অধিকারী। তাই তারা ভালোবাসার মধ্যে ভালোতে বাস করার অর্থ ও পথ খুঁজে পায় না। ফলে নারী-পুরুষ উভয়ে উভয়ের ভালোতে বাস করার মধ্যে দিয়ে যে ভালোবাসা সেই জ্ঞান থেকে বঞ্চিত হয়।
এই জ্ঞান লাভের জন্যই ভালোবাসাময় জীবন্ত সর্ব্বশ্রেষ্ট ইষ্ট বা আদর্শ এককথায় জীবন্ত ঈশ্বরের প্রয়োজন হয়।---প্রবি।
No comments:
Post a Comment