শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিয়ে বর্তমানে আলোচনা ফেসবুকে তুঙ্গে। সৎসঙ্গীরা অর্থাৎ শ্রীশ্রীঠাকুরের দীক্ষিতরা শ্রীশ্রীঠাকুরের কথা, বাণী, ছড়া তুলে ধরছে, নিজেদের অনুভব, অনুভূতি, উপলব্ধি প্রকাশ করছে। সৎসঙ্গীরা অর্থাৎ ঠাকুরের দীক্ষিতরা, কেন এই কথা বললাম? কারণ যারা দীক্ষিত নয় অথচ সৎ-এর সঙ্গী অর্থাৎ প্রতিটি অস্তিত্বের সঙ্গী, অস্তিত্বের অস্তিত্ব পরম অস্তিত্বের সঙ্গী, ঈশ্বরের সঙ্গী তাঁরাই সৎসঙ্গী, তা সে যে দেশের, যে ভাষাভাষীর, যে সম্প্রদায়ের হ'ক না কেন। এই সৎসঙ্গীরাও ঈশ্বরের কথা ফেসবুকে পোষ্ট করে। তারা তাদের গুরুদের অর্থাৎ ঈশ্বরের উপাসকদের কথা তুলে ধরেন, আবার এদের মধ্যে যারা শ্রীশ্রীঠাকুরের পূর্ববর্তী শ্রীশ্রীরামচন্দ্র থেকে শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণ অর্থাৎ রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু ও রামকৃষ্ণ যে যে রূপের দীক্ষিত সেই সেই রূপের দীক্ষিত অনুগামীরা সেই সেই পুরুষোত্তমের বাণীর সাথে সাথে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের বাণী, কথাও পোষ্ট করে, শেয়ার করে, মন্তব্যও করে। আবার এর মধ্যে বহু আছে বিশেষ ক'রে স্বঘোষিত শ্রীকৃষ্ণ প্রেমী ও শ্রীকৃষ্ণ প্রেমী সনাতনীরা। হঠাৎ ফেসবুকে ঝাঁপিয়ে পড়েছে স্বঘোষিত গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল সনাতনীর দল ও কৃষ্ণপ্রেমীর দল। চারিদিকে শুধু সনাতন, সনাতন, সনাতন গেল গেল রব। কৃষ্ণ বাঁচাও, কৃষ্ণ বাঁচাও হল্লা। কেন? কি হ'লো হঠাৎ সনাতন ধর্মের ও স্বঘোষিত সনাতনীদের ও কৃষ্ণপ্রেমীদের?
তারা এমনই উগ্র বিরোধীতা করে যেন এই স্বঘোষিত শ্রীশ্রীকৃষ্ণপ্রেমীরা, সনাতনীরাই একমাত্র হিন্দু ধর্মের মাইবাপ। এই স্বঘোষিত সনাতনী ও শ্রীকৃষ্ণপ্রেমীরা পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণের একমাত্র রাখোয়ালা। এদের হাবভাব সনাতন ধর্ম ও পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণ এদের সিকিউরিটি নিযুক্ত করেছে ও এরাই একমাত্র সনাতন ধর্মের ও শ্রীকৃষ্ণের এজেন্ট। তাই তারা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের নামে মুখে যা আসে তাই ব'লে যায়। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও সৎসঙ্গ, সৎসঙ্গীরা কৃষ্ণ মানে না। মন্দিরে কৃষ্ণের ছবি রাখে না। হরির গুণগান গায় না। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিন্দা, কুৎসা, গালাগালি, অশ্রদ্ধা, অপমান করে, অপবাদ, হুমকি দেয়। এরা অধর্মীয় আচরণ ক'রে, মুখ দিয়ে টাট্টি কা মাফিক ঘৃণ্য নিন্দনীয় কথা ব'লে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে বহাল তবিয়তে সিঁদুর, চন্দনে নিজেকে লেপ্টে নিয়ে, গেরুয়া সাজে সেজে গলায় হাতে নানা পাথরের মালা চাপিয়ে ধার্মিক সেজে অন্ধকার জগতের নিকৃষ্ট লোকেদের মত ধর্ম জগতে ব'সে শ্রীকৃষ্ণের প্রবচন শোনায়, গীতা পাঠ করে, বেদের কথা বলে। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় তা প্রচার ক'রে বেড়ায়।
অথচ যারা সেইসব কথা শোনে সেইসমস্ত সাধারণ সীমাহীন ভাঙাচোরা অজ্ঞ, মূর্খ, দুর্বল, ভীরু, কাপুরুষ, অজ্ঞানী, কুসংস্কারাছন্ন শ্রোতারা বুঝতেই পারে না যে, বেদে যে হীন, নিকৃষ্ট, দুশ্চরিত্র, বদমাশ, লম্পট, শয়তান চরিত্রের বর্ণনা দিয়ে গেছেন বেদজ্ঞ পন্ডিতরা, পুরুষোত্তম, পরমপিতা, সদগুরু, সৃষ্টিকর্তা জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীকৃষ্ণ গীতার ১৮অধ্যায়ে যে অসৎ চরিত্রের বর্ণনা দিয়েছেন তা শ্রোতাদের জানা না থাকায়, নিজেরা অধ্যয়ন না করার ফলে এই স্বঘোষিত বদনাশ সনাতনী ভন্ডরাই যে সেইসমস্ত চরিত্রের অধিকারী মানুষ, তা তারা ধরতে পারে না। ফলে সৎ, সত্য, জীবন্ত ঈশ্বর বারবার নিন্দিত হন, অপমানিত হন, কলঙ্কিত হন অসৎ, মিথ্যা, নকল ঈশ্বর ও ঈশ্বরপ্রেমীদের দ্বারা। এর জন্য দায়ী আম ভক্তমন্ডলী।
আর, বিরোধীরা তো আছেই, এদের মধ্যে প্রবল সক্রিয় বিরোধী হচ্ছে তারা যাদের স্বার্থে ঘা লেগেছে, ল্যাজে পা পড়েছে। আবার কিছু মানুষ আছে যাদের কাজ হচ্ছে শুধু গালাগালি ক'রে যাওয়া, নিজেদের হতাশা, ব্যর্থতা ঢাকতে তারা গালাগালি করে। আরও আছে যারা কেন গালাগালি করে, কেন কুৎসা করে তারা তা জানে না, লোকেদের কথা শুনে গালাগালি করে, বিচার ক'রে দেখে না যাদের কথা শুনে প্রভাবিত হ'য়ে গালাগালি করলো তাদের গালাগালি করার পিছনে উদ্দেশ্য ও রহস্যটা কি? এছাড়া সৎসঙ্গীদের মধ্যে একদল আছে যারা নিজেদের সৎসঙ্গী ব'লে, ঠাকুরের ফটো মাথার ওপরে তুলে নিয়ে, বুকে নিয়ে মিছিল করে যেমন তেমন পোশাকে ঐ চৈত্র সংক্রান্তিতে দরজায় দরজায় ঘুরে বেড়ানো 'বাবা তারকনাথের চরণে সেবা লাগে, মহাদেব' ধ্বনি দিয়ে বেরোনো মানুষদের মত যারা পথেঘাটে, মাঠেময়দানে উৎসবে অনুষ্ঠানে ঠাকুর পরিবারকে গালাগালি ক'রে ভক্তি ছোটায়, ছোটায় ঠাকুর প্রেম। আর, কানে দিয়েছি তুলো, পিঠে বেঁধেছি কুলো আর মুখে লাগিয়েছি তালা এইভাবে সজ্জিত হ'য়ে বসে থাকে জড় পদার্থের মত ঠাকুরের আম ভক্তমন্ডলী। এখানেই ঠাকুরের কষ্ট আর হেরে যাওয়া। এত লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি সৎসঙ্গী অথচ বলিষ্ঠ গার্ড ওয়াল বিনা অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে সৎসঙ্গীদের প্রেমের ঠাকুর, ভালোবাসার ঠাকুর।
আবার বহু গিরিগিটি মানুষ আছে যারা সৎসঙ্গীদের পোষ্টে এসে ভালোমানুষের মত পোষ্টদাতার পোষ্টের বিষয়ে সব ঠিক আছে বলে, পোষ্টের সমর্থন করে আবার কথার মারপ্যাঁচে কথা বলতে বলতে শেষে এসে সুকৌশলে ঠাকুরের নিন্দা ও কুৎসা ক'রে যায়। এদের মত বহু গিরিগিটি মানুষ আছে যারা মুহুর্তে মুহুর্তে ভোল পাল্টাচ্ছে, পাল্টাচ্ছে রঙ। এই মুহুর্তে ঠাকুর ঠিক তো পরমুহুর্তেই একেবারে ১৮০ডিগ্রি উল্টে গিয়ে ঠাকুরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেয়, কলঙ্ক লেপন ক'রে। আর, দুঃখের ও লজ্জার বিষয় এরা সবাই বাঙালী। এদের মধ্যে একসময়ের বহু ধান্দাবাজ বাঙালী আছে যারা সৎসঙ্গে এসেছিল, দীক্ষা নিয়েছিল নিজেদের ধান্দা পূরণ করতে। ধান্ধায় ব্যর্থ হ'য়ে তারা এখন বিরোধীতায় নেবেছে।
তাই এদের উদ্দেশ্যে বলি, যদি পোষ্টের বিষয় ঠিক থেকেই থাকে, যদি সবই ঠিক আছে তবে আবার ঘোমটার তলায় খেমটা নাচ কেন? নিজেকে নিজেই বলাৎকার করে কেন? সবই ঠিক আছে আবার ঠিক নেই এরকম দোকলা চরিত্রের দ্বিচারিতা কেন? কেন নিজের কথার নিজেই বিরোধীতা করে এরা ফেসবুকে? কারণ এরা অসহিষ্ণু ও একচক্ষু হরিণের চরিত্রের অধিকারী। তাই এদের লোকদেখানো জ্ঞানগর্ভ কথাগুলি ফাঁপা কলসীর মত। আর, রাবড়ি খচ্চররাই এমন জ্ঞানগর্ভ ভাষণ দেয়।.
তাদের মুখ থেকে হীরে, মণিমুক্তো, সোনাদানা বেরোবার পরিবর্তে সাপ, ব্যাঙ, ছুঁচো ইত্যাদির মত নোংরা দুর্গন্ধযুক্ত কথা বের হয়; যাকে হিন্দিতে টাট্টি কা মাফিক বাত বলা হয়। এই সমস্ত ধর্মেও আছি ও জিরাফেও আছি দোকলা চরিত্রের লোকেরা তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। মন্তব্য দেখলেই বোঝা যায় এদের ধর্ম সম্পর্কে দৌড় কতদূর। এরা ঠাকুরকে গালাগালি ক'রে ভিডিও করে। হাজার হাজার লোক এদের ভিডিও দেখে আর এরা ঠাকুরকে আয়ের উপকরণ বানিয়ে ভিডিও ক'রে রোজগার করে। ঠাকুরকে গালাগালি দিয়ে, কুৎসা, নিন্দা, বদনাম ও চরিত্র হনন ক'রে এরা পাপের পয়সা কামায়।
কোনও বিষয় নিয়ে বা কারও বিষয় নিয়ে কথা বলার সময় তা সে যে বিষয়ই হ'ক না কেন সে বিষয়ে অধ্যায়ণ করতে হয়, করতে হয় গবেষণা তারপর তার ভিতরের খারাপ বা ভালো দিক তুলে ধরতে হয় গবেষকের মত। রিপুতাড়িত চরিত্র নিয়ে বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে আবদ্ধ জীবনের অধিকারী জীবন বালখিল্য বটতলার চটি বইয়ের জ্ঞান নিয়ে নালা নর্দমায় ঘাই মেরে মহাসমুদ্রের বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়া করা আর বাচ্চা ছেলের ভয়ংকর বোমা নিয়ে নাড়াচাড়া করার মত দুর্বুদ্ধি ও দুর্ভাগ্য একই ব্যাপার এবং এদের শেষের মুহূর্ত ভয়ংকর হ'য়ে দাঁড়ায় দিনের শেষে।
যাই হ'ক, এরা এত সন্ন্যাস, সন্ন্যাসী, সন্ন্যাস ধর্ম, ত্যাগ, সংসার, ভোগ, যোগ, যোগের পথ, মায়া, দীক্ষা, ঋষি, সিদ্ধপুরুষ, রাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে এত জ্ঞানের ফোয়ারা ছোটায় যে ফেসবুকে বন্যা হ'য়ে যাবার যোগার। এত ধর্মপ্রাণ, ঈশ্বরসম্বন্ধীয় জ্ঞানী পুরুষ এরা যে ফেসবুক ছেয়ে গেছে। মাঝে মাঝে এদের কমেন্টে জ্ঞানের ফুলঝুড়ি দেখে, ভিডিওতে জ্ঞানের রোশনাই দেখে হতভম্ব হ'য়ে যাই! অবাক হ'য়ে ভাবি এদের ধর্ম ও ঈশ্বর জগত সম্পর্কে, গুরুদের সম্পর্কে, সাধকদের সাধনা সম্পর্কে, রাজনীতি সম্পর্কে কি অসাধারণ জ্ঞান। অথচ ধর্মজগত দু'নম্বরই থেকে গেল। সাধারণ মানুষ যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেল।
তাই, বালখিল্য স্বঘোষিত সনাতনী ও শ্রীশ্রীকৃষ্ণপ্রেমী, যারা সিঁদুর, চন্দন, গেরুয়া কাপড়, পাথরের ও ফুলের মালায় কিম্ভূতকিমাকার সেজে কুয়োর ব্যাঙের মত কুয়োর ভিতর থেকে আকাশ দেখা জ্ঞান নিয়ে ক্যামেরার সামনে ব'সে ভিডিও ক'রে ক'রে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে গালাগালি দেয়, জ্ঞান দেয় আর যারা ফেসবুকে নেট থেকে কপি পেষ্ট করা বক্তব্য পোষ্ট করে, অর্থ না বুঝেই বালখিল্য জ্ঞানগর্ভ কমেন্ট ক'রে ক'রে শ্রীশ্রীঠাকুরকে নীচা দেখায়, অপমান, অশ্রদ্ধা করে, সেইসমস্ত অভাগা, জন্মভ্রষ্ট স্বঘোষিত সনাতনী ও শ্রীশ্রীকৃষ্ণপ্রেমীদের জন্য পরমপিতা পুরুষোত্তম সদগুরু জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের কাছে মঙ্গল প্রার্থনা ক'রে সনাতনী ও শ্রীশ্রীকৃষ্ণপ্রেমীদের কাছে তাদের বলা বক্তব্য থেকে কয়েকটি বিষয় জানতে চাই এই লেখার মাধ্যমে।
১) সন্ন্যাস, সন্ন্যাসী ও সন্ন্যাস ধর্ম কি?
২) ত্যাগ মানে কি?
৩) সংসার অর্থ কি?
৪) শোক, লোভ, মোহ, কামনা, বাসনা ত্যাগ করা যায়? কিভাবে?
৫) ভোগের জগত কি বা কোনটা?
৬) ভোগের জগত ত্যাগ করা কাকে বলে?
৭) যে ভোগই করলো না, ভোগ কি তা জানলোই না সে আবার ত্যাগ করবে কি?
৮) ভোগের জগত ত্যাগ ক'রে যোগের মার্গ অবলম্বন করতে বলছেন তা যোগ কি? যোগের মার্গ অর্থ কি? মার্গ কোথায়?
৯) চারপাশের প্রতি যদি আমার মায়ায় না থাকলো তাহ'লে আমি কি জন্যে জন্মেছি? অসাড় বোধহীন, অনুভূতিহীন, অভিজ্ঞতাহীন, উপলব্ধিহীন বই পড়ে বইয়ের এসেন্সকে না বুঝে বই হ'য়ে তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে আধ্যাত্মিকতার ঘোমটার তলায় মুখ লুকিয়ে চুপি চুপি পেগের পর পেগ গলায় ঢেলে ঢুলু ঢুলু চোখে নিজের মাথার বাল নিজে ছিঁড়তে জন্মেছি? মায়া কি? মায়া থেকে মুক্তিই বা কি? মুক্তি কা'কে বলে?
১০) দীক্ষা কি? কার দীক্ষা নেব? কেন নেব? ঋষি অর্থ কি বা কাদের বলে?
১১) সিদ্ধ সন্ন্যাসী কে বা কারা? সিদ্ধপুরুষ, সিদ্ধ সন্ন্যাসী কথার অর্থ কি?
১২) সিদ্ধ সন্ন্যাসীদের কোন কাজটা সংসারের জন্য মঙ্গল কাজ? যারা নিজেরা সংসার করলো না, যাঁদের কোনও সাংসারিক অভিজ্ঞতা নেই তারা সংসার ধর্ম পালন সম্পর্কে, সংসারের মঙ্গল সম্পর্কে জ্ঞান দেবেন? আর, যদি দেনও বা সবাই দেবেন?
১৩) ধর্মজগতে যত মহারাজ, ব্রহ্মচারী, বাবা, সাধক, সাধিকা, যোগী, সাধু, সন্ন্যাসী, মহাপুরুষ ইত্যাদি যারা আছেন তাঁরা আর শ্রীশ্রীরামচন্দ্র থেকে শ্রীশ্রী,ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র অর্থাৎ রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ ও সর্ব্বশেষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র একই মর্যাদার? সমগোত্রের? সাধু, সন্ত, মহাপুরুষ, সন্ন্যাসী ইত্যাদিদের সঙ্গে এঁদের তুলনা? পুরুষোত্তমদের সঙ্গে এঁরা একই আসনে বসার যোগ্য? মহাত্মা আর পরমাত্মা এক? যোগী, জ্ঞানী, গোঁসাই, গোবিন্দ, সাধক আর পুরুষোত্তম এক? পিতা আর সন্তান এক? গুরু আর সদগুরু এক? সৃষ্টিকর্তা আর তাঁর সৃষ্টি এক?
১৪) ঠাকুর রামকৃষ্ণদেব স্ত্রীকে মা বলেছেন ও স্ত্রীকে মায়ের মত পূজা করেছিলেন ও শ্রীশ্রীঠাকুর দু'টো বিয়ে করেছেন ব'লে শ্রীশ্রীঠাকুরকে নীচা দেখায়। ঠাকুর রামকৃষ্ণ কেন মা বলেছেন স্ত্রীকে? মা আর স্ত্রীর মধ্যে পার্থক্য কি?
১৫) শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র দু'টো বিয়ে করেছিলেন ব'লে কটুক্তি, কুৎসা করেন আবার বিশ্বগুরু জগৎপিতা মহেশ্বর-এর নাম তুলে সন্ন্যাস তত্ত্বের জাহির ক'রে বালখিল্য আধ্যাত্মিকতার ফোয়ারা ছোটান সনাতনীরা, শ্রীকৃষ্ণের মহিমার ধ্বজা ওড়ান সনাতনীরা তা এদের জিজ্ঞাস্য বিশ্বগুরু জগৎপিতা মহেশ্বর ক'টা বিয়ে করেছিলেন? শ্রীকৃষ্ণের ক'টা বউ ছিল? কেন এতগুলো বিয়ে করেছিলেন? আর, বিশ্বগুরু জগৎপিতা ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর থাকেনই বা কোথায়?
১৬) শ্রীশ্রীঠাকুরের সন্তানদের এক এক মন্দিরের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে কটু মন্তব্য করেছেন এরা। শ্রীশ্রীঠাকুরের কোন কোন সন্তান কোন কোন মন্দিরের দায়িত্বে আছেন জানাবেন? আর, দায়িত্বে যদি থেকেও থাকে সেটা কি অপরাধ? আপনাদের পিতা আপনাদের তাঁর তৈরী বাড়ির দায়িত্ব দিয়ে যাননি? আপনারা যদি দুই তিনভাই হ'ন তাহ'লে পিতার বাড়ি ভাগাভাগি ক'রে রক্ষা করেননি? নাকি তা' প্রমোটারের হাতে দিয়ে দিয়েছেন অনেক বেশী টাকা পাওয়ার লোভে পিতার স্মৃতির ----মেরে? এ বেলায় ধর্ম কোথায় থাকে? এ বেলায় ধর্ম অনুকূল থাকে ও রক্ষা পায়? আর, ঠাকুরবাড়ির বেলায় হ'য়ে যায় প্রতিকূল ব্যাপার? না জেনে অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়লেই হ'লো, তাই না সনাতন ধর্ম রক্ষাকারী স্বঘোষিত সনাতনীরা আমার?
১৭) ঠাকুরবাড়ির বিভিন্ন মন্দিরের দায়িত্ব সেই সেই মন্দিরের ইষ্টে উৎসর্গীকৃত, ইষ্টে অচ্যুত, অস্খলিত, অটুট ইষ্টপ্রাণ কর্মীদের হাতেই থাকে, তাঁরাই রক্ষণাবেক্ষণ করেন বিশ্বজুড়ে 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার কেন্দ্র ও মন্দির। আর, ঠাকুরের সন্তানদের এক একটা মন্দিরের দায়িত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে অজ্ঞানতার ওপর দাঁড়িয়ে যে ওঁচা মন্তব্য ক'রে চলেছেন ফেসবুকে সনাতনীরা আর রাজব্যবস্থা বা রাজতন্ত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন, তুলনা করেছেন network marketing বলে, তা মন্তব্যকারী স্বঘোষিত সনাতনীদের আমার জিজ্ঞাস্য,
অ) রাজব্যবস্থা বা রাজতন্ত্র বা network marketing বলে যেটা বলা হচ্ছে সেটা কি অনুন্নত, অসভ্য, অন্ধকারাছন্ন, স্বৈরাচারী ব্যবস্থা ছিল?
আ) আর, বর্তমানে যাকে প্রজাতন্ত্র বা গণতন্ত্র বলা হচ্ছে, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার কথা বলছেন ইনারা, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় জনগণের রায়ে প্রতিনিধি নির্বাচনের কথা বলছেন, বলছেন প্রতিনিধিত্ব মূলক নেতাব্যবস্থা, সেই প্রজাতন্ত্র বা গণতন্ত্র, গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রতিনিধি নির্বাচন ও প্রতিনিধিত্ব মূলক নেতাব্যবস্থা কি ত্রুটিহীন, নিখুঁত? রাজব্যবস্থা বা রাজতন্ত্রের চেয়েও উন্নত ব্যবস্থা যেখানে প্রজারা সুখে আছে, আনন্দে আছে, শান্তিতে আছে?
ই) নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রতিনিধি নির্বাচন ও প্রতিনিধিত্ব মূলক নেতাব্যবস্থা এবং দেশ, রাজ্য, জেলা ও অঞ্চলভিত্তিক এলাকায় এলাকায় সমস্ত ক্ষেত্রের প্রশাসনিক স্তরে নেতাতন্ত্র কি রাজব্যবস্থা বা রাজতন্ত্রের প্রতিনিধি রাজা বা জমিদারদের চেয়েও সরকারী ব্যবস্থা ও দেশ, রাজ্য, জেলা, মিউনিসিপ্যাল ও পঞ্চায়েত স্তরের প্রতিনিধিত্বকারী নেতানেত্রীরা প্রজাদের, জনগণ বা গণতান্ত্রিক অধিকারপ্রাপ্ত নাগরিকদের খুব সুখে, শান্তিতে, আনন্দে রেখেছে?
যাই হ'ক আপনারা জুতো পেটা ক'রে গরু দান করার মত বদমাইশি বুদ্ধিতে কাউকে ছোটো করা আপনাদের লক্ষ্য না ব'লে আবার কথার টুইস্ট করেন, কথার টুইস্ট ক'রে ঘোমটার তলায় খেমটা নাচ নাচেন। ভালো করছেন আপনারা, আপনাদের যা ভালো মনে হয়েছে। সবশেষে জন্মমৃত্যুর চক্র থেকে বেড়িয়ে আসার কথা বলেছেন ইনারা। বলেছেন, এর জন্য ভোগী হ'লে হবে না, যোগী হ'তে হবে। তা সনাতনীদের ও ঠাকুর বিরোধীদের আমারও শুধু একটাই জিজ্ঞাস্যঃ আপনি, আপনারা যারা বড় বড় লম্বাচওড়া জ্ঞানের কথা ব'লে ঢাক পেটাচ্ছেন আপনারা তারা ভোগী নন তো? আপনি/আপনারা যোগী তো? আপনি/আপনারা সংসারী নন তো? আপনি/আপনারা সন্ন্যাসী তো? আপনি/আপনারা সংসারের মায়ায় বন্দী নন তো?
আগে নিজেকে একবার নিজের বিবেকের আয়নায় দেখুন, আপনি কি? আপনার চরিত্র, আপনার জীবন, আপনারা চলন, আপনার বলন, আপনার চিন্তা, আপনার কর্ম কেমন। দেখুন আপনার কুৎসিত মুখটা কতটা কুৎসিত। তারপর না হয় অন্যের বিচার হবে।
তাই বলে, আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শেখায়। আজ এই পর্যন্ত। নমস্কার, জয়গুরু।